অমলিন

বৈশাখি দুপুরের তপ্ত হাওয়ার মতো অস্বস্তি আর উদ্বেগ কমলাক্ষকে ঘিরে আছে। শুধু একটা মাত্র নাম। সেটুকু জানতে পারলেই স্বস্তির হিমেল স্পর্শ অনুভব করবে কমলাক্ষ। কিন্তু কেউই নামটা সঠিক জানাতে পারছে না। ম্যানেজমেন্ট ওইখানে রহস্যের গাঢ় পর্দা ঝুলিয়ে রেখেছে।

নামটা জানার জন্য কমলাক্ষ চতুর্দিকে চর নামিয়ে দিয়েছে, এমন নয়। তবে আসন্ন অনুষ্ঠানের সঙ্গে যাঁরা কাজের সূত্রে যুক্ত তাঁদের খুব হালকাস্বরে জিজ্ঞেস করেছে, সভার শেষে কে এবার ধন্যবাদ জ্ঞাপন, আই মিন ভোট অফ থ্যাংকস্ দেবে, জানো?

প্রশ্ন একটাই, কিন্তু উত্তর এসেছে একশো রকম। কিছু নাম যে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে না, এমন নয়। কিন্তু সেগুলো আস্ত রটনা। আবার একটু আশংকারও ছোঁয়া আছে নামগুলোতে। এদের মধ্যে কেউ একজন হলেও হতে পারে। নামের তালিকায় কমলাক্ষর নামও আছে।

আবির মিত্র সব জানে। কিন্তু স্পষ্ট বলবে না। এই সংস্থার শক্তিশালী ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত কোম্পানি-সেক্রেটারি মিত্রকে বারণ করে দিয়েছে। অথচ কাজটা কী সামান্য! কর্তৃপক্ষ হয়ত ভাবছেন, অনুষ্ঠানের দিন যে-চমক তৈরি হবে, সেটাই সবচেয়ে মনোরম। আদতে যে তা নয়, একথা কে কাকে বোঝাবে?

কদিন আগে তেতলার করিডরে আবির মিত্রের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কমলাক্ষকে দেখে অত্যন্ত সুভদ্র মানুষটি মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মান জানিয়েছে। তারপর জিজ্ঞেস করেছিল, কেমন আছেন দাদা?

একটু থমকে দাঁড়িয়ে কমলাক্ষ বলেছিল, ভালো।

ভালো শব্দটার ভেতর থেকে চুঁইয়ে এসেছিল খানিক উদাসীনতা। আবির সেটা ধরতে পারেনি, পারলে হয়ত বিস্ময় প্রকাশ করত। আরো ভদ্রতা প্রকাশ করে আবির অন্যদিনের মতো জিজ্ঞেস করেছিল, কমলদা, আপনার লেখালিখি কেমন চলছে?

এই একটা জায়গায় কমলাক্ষ দুর্বল। করপোরেট হাউজের চিফ ইনফরমেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন অ্যাডভাইজারের পদে আসীন থাকার গৌরব কমলাক্ষ কবোষ্ণতার মতো উপভোগ করে। বড় টেবিল-চেয়ারের উচ্চতা ও ঘূর্ণি তাক লাগানোর মতো। টেবিলে তিনটে টেলিফোন, এককোণে কম্পিউটার, সারাঘর কার্পেট দিয়ে মোড়া, দেওয়ালে আধুনিক চিত্রকলা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিরাট ঘরে আবার গেস্টদের বসার লাউঞ্জ। মনোহর রঙের সোফাসেট। এই ঘরে এসে বসামাত্রই কমলাক্ষ অন্যস্তরের মানুষ। কোম্পানির টপ একজিকিউটিভ। চতুর্দিকে সমীহ আর সৌজন্য ওর দিকে ছুটে আসে। তার জন্য ওকে কোনো প্রয়াস করতে হয় না। পদাধিকার এবং চেয়ারই এগুলোর জন্ম দেয়। মুখ্য তথ্য উপদেষ্টা কমলাক্ষ মুখার্জিই আবার একজন নামকরা 888sport live footballস্রষ্টা। গত তিরিশ বছর ধরে গদ্য888sport live footballে তার অবদান এখন আলোচনার বিষয়। অন্তত শ’খানেক জনপ্রিয় গ্রন্থের লেখক কমলাক্ষ ওর এই দ্বিতীয় পরিচয়ে সবচেয়ে তৃপ্ত। বন্ধু-বান্ধব এবং অনুরাগী মহলে ও নিজেই বলে, আমার কাছে লেখার জগৎটা মুক্তির জায়গা। যা কিছু আমি লিখি, লিখতে চেষ্টা করি, তা আমাকে প্রতি মুহূর্তে অন্যভাবে বাঁচিয়ে রাখে। আমার নিজেরই সৃষ্টি আমাকে ছুঁয়ে থাকে সর্বক্ষণ। যে-কমলাক্ষ লেখে সে অন্য মানুষ।

এই অন্য মানুষটাই দুর্বল মানুষ। যদিও কমলাক্ষ অফিসের ঘেরাটোপে সেটা প্রকাশ করে না, কিন্তু দুর্বলতা নিজেরই অজান্তে প্রকাশ হয়ে যায়। আবিরও হয়ত সেটা বোঝে। জানে। তাই দেখা হলেই প্রশ্নটা একই ভাষায়, একই ভঙ্গিতে করে, ‘কমলদা, আপনার লেখালেখি কেমন চলছে?’

সেদিন কমলাক্ষ সামান্য তাচ্ছিল্য দেখিয়ে, মৃদু হেসে বলেছিল, ওই একরকম। আমার কাজ আমি করে যাচ্ছি। তবে বড়মাপের লেখক তো আর হতে পারলাম না!

চাপা ব্যঙ্গ এবং আবিরকে খানিকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলে দেওয়ার মতো এমন উত্তরই সেদিন কমলাক্ষ দিয়েছিল, যা ওর স্বভাববিরুদ্ধ। তারপর খানিকটা ভাষাহীন চোখে তাকিয়ে আবিরকে জিজ্ঞেস করেছিল, আমাদের অ্যাওয়ার্ড সেরিমনিটা যেন কবে?

– সাতই মে। সম্ভবত সেদিন পঁচিশে বৈশাখ। আবির একটু বিস্ময় ঝরিয়ে বলেছিল।

কমলাক্ষদের অন্নদাতা এই করপোরেট হাউজ প্রতি বছর ‘বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব’ নামে একটি 888sport app download bd দেয়। সমাজসেবা, 888sport live football, 888sport live chatকলা, ব্যবসা এবং পারফর্মিং আর্ট – এই পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে একজন সেরা ব্যক্তিত্বকে 888sport app download bd দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়। 888sport app download bdের মূল্য ছ’লাখ টাকা। গতবছর একজন নামী ব্যবসায়ী 888sport app download bd পেয়েছিলেন। এবার সম্মানিত হচ্ছেন কবি এবং ঔপন্যাসিক সারস্বত রায় চৌধুরী। সারস্বত বয়েসে নবীন, তবে এক প্রভূত সম্ভাবনাময় স্রষ্টা। ওর নাম যে 888sport app download bdের জন্য নির্বাচিত হয়েছে, কমলাক্ষ সেটা জানে। কিন্তু যা এখনো ওর পক্ষেও জানা সম্ভব হয়নি, সেই রহস্যে ঘেরা এলাকায় পা রেখেছিল কমলাক্ষ, আচ্ছা, আবির, এবারে ভোট অফ থ্যাংকস্ কে দেবেন?

আবির বেশ অপ্রস্তুতে পড়ে গিয়েছিল। ফিকে হেসে বলেছিল, দাদা, আপনি জানেন না, এ হতে পারে?

সহসা গলা চড়ে গিয়েছিল কমলাক্ষের, না, আমি জানি না। ম্যানেজমেন্ট আমাকে না জানালে আমি কীভাবে জানব!

সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানির সেক্রেটারি ওর বৃত্তিগত কুশলতায় সতর্ক হয়ে গিয়েছিল, সরি কমলদা। বাট ইউ আর অলসো আ পার্টি অফ দি ম্যানেজমেন্ট!

– হ্যাঁ, হ্যাঁ। কমলাক্ষ নিজেকে সংযত করেছিল, কিন্তু কোম্পানি কোনো কারণে সিক্রেসির আশ্রয় নিয়েছে। অন্তত এই ব্যাপারটায়। তাই তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম।

আবির মুখে স্মিত হাসি ঝুলিয়ে রেখেও শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। সংবিৎ ফিরে-পাওয়া মানুষের মতো কমলাক্ষ নিজেকে সেই মুহূর্তে খুঁজে পেয়ে গলার স্বর নরম করে বলেছিল, কিছু মনে করো না ভাই। আমি কৌতূহলবশে তোমার কাছে জানতে চেয়েছি। অন্য কোনো কারণ নেই।

প্রতিদিনের মতো তেমনই মাথা ঝুঁকিয়ে আবির হেসেছিল। তারপর নিজের কাজে চলে গেছে। তখনই কমলাক্ষের মনে হয়েছিল, আবির মিত্র নামটা জানে, অন্তত কোম্পানির ডিসিশন ওর অজানা নয়। কিন্তু কোনো অজ্ঞাত কারণে বলবে না।

এমন তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো মানেই হয় না। এক এক সময় কমলাক্ষের একথাই মনে হচ্ছে। এমন তো হতেই পারে, ওকেই শেষ পর্যন্ত কোম্পানি এই সম্মানজনক কাজটার দায়িত্ব দেবে। কেননা, সিনিয়রিটির দিক থেকে এ-সম্ভাবনা তো আছেই। গত বছর পর্যন্ত এই কাজটা করেছেন পার্সোনেল অ্যান্ড এইচ আর ডি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট দীপক সেন গুপ্ত। ভদ্রলোক গত ফেব্রুয়ারিতে অবসর নিয়েছেন। প্রবীণ কর্মচারী হিসেবে কমলাক্ষকে কোম্পানি এবার হয়ত ডাকবে। এবার হয়ত ওর পালা। আগামী দুহাজার ছয়ে কমলাক্ষ চাকরি থেকে বিদায় নেবে। তার আগে এই সম্মানটুকু কি ওর প্রাপ্য নয়?

এই সূচিতীক্ষ্ম প্রশ্নটাই বর্শার মতো কমলাক্ষকে নিয়ত বিদ্ধ করছে। জীবনে সম্মান-888sport app download bd কমলাক্ষ খুব-একটা কম পায়নি, ওর লেখার ভক্তপাঠকের 888sport free betও কম নয়, তবু ওর সমস্ত ইন্দ্রিয় কদিন ধরে টানটান হয়ে আছে। আবার একই সঙ্গে প্রত্যাশা ও উপেক্ষার গোপন দোলাচল। এই করপোরেট হাউজের একজন কর্মী হিসেবে ওর যে প্রতিপত্তি, সেটা আর কমলাক্ষকে কোনো আত্মতুষ্টি বা সান্ত্বনা দিতে পারছে না। বরং এই জগতের বাইরে ওর যে-প্রতিষ্ঠা, সেটাই ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। কমলাক্ষের প্রায়ই মনে হচ্ছে, একজন প্রতিষ্ঠিত 888sport live footballস্রষ্টা হিসেবে, অ্যাওয়ার্ড সেরিমনিতে সকল বিদগ্ধ শ্রোতৃমণ্ডলীর সামনে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করার কাজটুকু ওরই করা উচিত।

অথচ কোম্পানি এ-বিষয়টাকে এখনো পর্দার আড়ালে রেখে দিয়েছে।

দুই

রেড রোড দিয়ে সাধারণত সমস্ত যানবাহনই দ্রুততম বেগে দৌড়ায়। কলকাতার এই সবুজ হৃৎপিণ্ডের ভেতরে ধমনীর মতো যেসব রাস্তা আছে, সেগুলো আশ্চর্যরকম যানজটমুক্ত। এই কটা রাস্তা যানচালকদের কাছে যেন প্রত্যাশিত স্বপ্ন এবং স্বর্গ। ট্রাফিক সিগন্যালের নিষেধ ছাড়া একমাত্র এখানেই কলকাতা সত্যি সত্যি চলমান।

প্রতিদিন কমলাক্ষ রেড রোড ধরে বাড়ি ফেরে। প্রায় দিনই অফিস থেকে বেরোতে বেরোতে সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হয়ে যায়। আসন্ন রাত্রি তখন ময়দানের শ্যামলিমাকে ঢেকে দেয় কালো ওড়নায়। নিয়ন আর হ্যালোজেনের খেলা শুরু হয়ে যায় নির্লিপ্ত সবুজ প্রান্তরে। মহারানি ভিক্টোরিয়ার শ্বেতমর্মর 888sport sign up bonusসৌধকে কুয়াশাচ্ছন্ন মায়াপুরী বলে মনে হয়। বিষণ্ন দৃষ্টিতে দুদিকে বারংবার তাকিয়ে দেখে কমলাক্ষ ওর গাড়ি আলিপুর রোড, বর্ধমান রোড পেরিয়ে ডায়মন্ড হারবার রোডে গিয়ে পড়ে।

তবে যেদিন ও আগে বেরোতে পারে, অন্তত দিনের আলো পুরোপুরি মুছে যাওয়ার আগে, সেদিন কমলাক্ষ রেড রোড পার হয় ধীরগতিতে। ড্রাইভার লোকেন্দ্র সিংকে বলে, তুমি বাঁ-দিক ঘেঁষে খুব আস্তে আস্তে চালাবে। যদি মনে করো, একটু দাঁড়িয়েও থাকবে।

লোকেন্দ্র সিং এতদিনে জেনে গেছে, এই সাহেব রাইটার, কবি। এই সাহেব মেজাজি। এই সাহেব সবার থেকে আলাদা। অতএব লোকেন্দ্র অক্ষরে অক্ষরে কমলাক্ষকে মান্য করে।

আজ এমনই একটি দিন। কমলাক্ষ পৌনে পাঁচটার সময় অফিস থেকে বেরিয়ে পড়ল। কাজ যে ছিল না, তা নয়। তবে কোনো মিটিং ডেইলি শিডিউলে নেই, এমনকী কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট। ওর সচিব মিস বুলবুল দস্তিদার যখন জানাল, ‘স্যার আজকের মতো শিডিউল ওয়ার্কস শেষ’, তখনই কমলাক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাড়ি ফিরে যাবে। পয়লা বৈশাখে ওর যে-888sport alternative linkটি বেরিয়েছে, তাতে বিস্তর ছাপার ভুল। প্রকাশক কথা দিয়েছে; কমলাক্ষ নিজে একবার দেখে দিলে ভুলে-ভরা বইগুলো বাজার থেকে তুলে নিয়ে পঁচিশে বৈশাখে নতুন সংস্করণ নামিয়ে দেবে। এই কাজটা আজ কমলাক্ষ করে ফেলবে। আর ফেলে রাখবে না। নিজের নামের প্রতি অবিচার ও অসম্মান কমলাক্ষ একদম সইতে পারে না।

ডেস্ক ক্যালেন্ডারে চোখ বুলিয়ে কমলাক্ষ এও দেখে নিয়েছে, আজ রাত আটটায় 888sport appsের দুজন কবি ও ছোটগল্পকার ওর সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। ওঁদের কমলাক্ষ নৈশ-আহারেরও নেমন্তন্ন করেছে। ‘অতিথিদের সেরা আপ্যায়নে ওর জুড়ি নেই – লেখক-মহলে রটে যাওয়া এই বাক্যটি কমলাক্ষকে আত্মতৃপ্তিতে ভরিয়ে তোলে।           

যদিও বৈশাখ, সারা কলকাতা জুড়ে দাবদাহের আয়োজন শুরু করেছে প্রকৃতি, তবু ময়দানের রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, জারুল, রুদ্রপলাশ এবং 888sport app গাছের শরীরে এখনো লগ্ন হয়ে আছে, বসন্ত-উৎসবের বর্ণময় উন্মাদনা। শেষ বসন্তের রেশ তাকে এখনো শুষে নিতে পারেনি তপ্ত তৃষিত গ্রীষ্ম। এমনকী ময়দানের ঘাসের নিচে কোথাও কোথাও নীরবে স্তব্ধ হয়ে আছে কয়েক আঁজলা জল।

নীড়ে ফিরে যাওয়ার আগে এমনই একটি ঘাসজলে স্নান সেরে নিচ্ছে গুটিকয় কাক আর একটু দূরে রাজকীয় ঢঙে একটি ধূসর চিল। এমন দুর্লভ চিত্রমুহূর্তের জন্য কমলাক্ষ ময়দানের পৃথিবীতে নিজের গাড়িটাকে প্রায় অচল করে রাখতে চায়। এও একধরনের শখ, অভীপ্সা।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের মূর্তি ছাড়িয়ে, খানিক এগিয়ে গাড়িটাকে রাস্তা থেকে মাঠের মধ্যে নামিয়ে দিল লোকেন্দ্র। কমলাক্ষ খুশি হয়ে ওর পিঠে হাত রাখল। আর তখনই ভূত দেখার মতো চমকে উঠল কমলাক্ষ। অদূরে একটা ঝাঁকড়া, শাখাবিস্তারী শিরিষ গাছের তলায় বসে বই পড়ছে অমলিন। অমলিন গুহ মজুমদার। তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ বছরের তরুণ। ওদেরই অফিসে ব্র্যান্ড প্রোমোটিং নামে একটা সাব ডিপার্টমেন্টে ছেলেটি দু’আড়াই বছর আগে জয়েন করেছে। ভারী শান্ত, ভাবুক টাইপের ছেলে। কমলাক্ষের সঙ্গে নিজে এসে আলাপ করেছিল। কমলাক্ষ ওর চোখের মুগ্ধতা দেখে স্পষ্টতই     বুঝতে পেরেছিল, অমলিন 888sport live footballিক কমলাক্ষ মুখোপাধ্যায়কে দেখতে এসেছে, এই কোম্পানির চিফ পি.আর.এ সাহেবকে নয়।

বাইরে বেশ গরম। পড়ন্ত বিকেল, সূর্য পশ্চিমে ফিরে গেছে, তবু চারদিকে ছড়িয়ে আছে দহনের ভাব। এক মুহূর্ত ভাবল কমলাক্ষ। তারপর নিজের বাতানুকূল গাড়ি থেকে নেমে নিঃশব্দে এগিয়ে গেল অমলিনের দিকে। তরুণটি ওর বইয়ের পাতায় তন্ময়। একেবারে ধ্যানমগ্ন। গাছের তলাজুড়ে ছোট ছোট শিরিষ পাতার মৃত্যুশয্যা। কিশলয়দের জায়গা করে দেওয়ার জন্য পুরনো পাতারা সব ঝরে পড়েছে মাটির বুকে।

আলো আরো কমে এলে হয়ত অমলিন বই বন্ধ করবে। ওর চোখে চশমা আছে। এমন আত্মলীন হয়ে কী পড়ছে অমলিন? আজ কি ও অফিস যায়নি? নাকি কোনো ছুতোয় ছুটির অনেক আগেই কেটে এসেছে? সরকারি অফিসে কাজ না-করার হাজারটা ফাঁক-ফোকর, অজুহাত। পাশাপাশি করপোরেট হাউজগুলো ফাঁকি দেওয়ার পথগুলো প্রায় বৈজ্ঞানিক প্রকৌশলে বন্ধ করে দিচ্ছে। সেই নিবিড় শেকল কেটে বেরিয়ে পড়া কঠিন।

তবু এই মুহূর্তে, এখানে, যেভাবেই হোক অমলিন। কমলাক্ষের অফ হোয়াইট রঙের ট্রাউজার থেকে হয়ত একঝলক আলো ঠিকরে এসে থাকবে। মৃদু চমকে মুখ তুলল অমলিন। এবং তৎক্ষণাৎ গভীর বিস্ময়ে ও ভয়ে ওর বুকের কাছে মুড়ে তুলে-থাকা দুহাঁটুর মাঝখানে বইটা টুপ করে পড়ে গেল।

– স্যার, আপনি! অমলিন উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করেও পারল না।

কমলাক্ষ ওর বিস্ময় এবং ভয় ভাঙাবার জন্য জোরে হেসে উঠে বলল, আরে বোসো, বোসো।

– স্যার, মানে … আমি …। অমলিনের ঠোঁট কাঁপছে।

হাত তুলে ওকে আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে কমলাক্ষ বলল, ঠিক আছে, ঠিক আছে। আজ অফিসে যাওনি। ময়দানের বিকেল উপভোগ করতে এসেছো। এ-ই তো! বুঝতে পেরেছি।

বলতে বলতে কমলাক্ষ ওর পাশে আসনপিঁড়ি হয়ে বসে পড়ল। অমলিন কুণ্ঠিত এবং সেই সঙ্গে হতবাক।

– কী বই পড়ছিলে, এত মনোযোগ দিয়ে? বইটা নেওয়ার জন্য হাত বাড়িয়ে দিল কমলাক্ষ।

যদিও বইটা ওর হাতে তুলে দিল না অমলিন, তবে বলল, স্যার, রবীন্দ্রনাথ।

– রবীন্দ্রনাথ! বিস্ময়ে ভুরু কুঁচকে গেল কমলাক্ষর, অন রবীন্দ্রনাথ, নাকি বাই রবীন্দ্রনাথ?

– ইয়েস স্যার, ওই দ্বিতীয়টা। অমলিন পাংশু মুখে উত্তর দিল।

– কোন বই? এমন অদ্ভুত শহুরে প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝখানে বসে রবীন্দ্রনাথের কোন লেখা পড়ছ?

অমলিন ক্ষীণ স্বরে বলল, ওঁর 888sport app download apkর কালেকশন – পূরবী।

বিস্ময়ে মুখ ঝুলে গেল কমলাক্ষের। এমন অদ্ভুত তরুণ যে কখনো দেখেনি কমলাক্ষ, তা নয়। কিন্তু অমলিন তাদের থেকে কোথায় যেন আরো আলাদা।

– পঁচিশে বৈশাখ একটা ফাংশানে আমাকে আবৃত্তি করতে হবে। তাই বাছাই 888sport app download apkগুলো একবার ঝালিয়ে নিচ্ছি। অমলিনের গলার স্বর আরো যেন অশ্রুত হয়ে এল।

কমলাক্ষ চোখ বড় বড় করে বলল, পূরবী! দাঁড়াও, দাঁড়াও, একসময় পূরবী আমার খুব প্রিয় ছিল। … ওয়েট, ওয়েট, একটা 888sport app download apk অন্তত মনে করতে দাও …। কপালের মাঝখানটা টিপে ধরে ভাবল কমলাক্ষ। তারপর ডানহাত তুলে গলা ছেড়ে বলে উঠল : ‘আজিকার দিন না ফুরাতে / হবে মোর এ আশা পুরাতে – / শুধু এবারের মতো বসন্তের ফুল যত / যাব মোরা দুজনে কুড়াতে। / তোমার কাননতলে ফাল্গুন আসিবে বারংবার,/ তাহারি একটি শুধু মাগি আমি দুয়ারে তোমার।’ … হাঃ, হাঃ, কেমন মনে আছে দেখছ! নাঃ, পড়ো, মুখস্থ করো। তোমাকে ডিসটার্ব করব না। প্যান্ট ঝেড়ে উঠে পড়ল কমলাক্ষ।

তিন

অমলিন সেদিন কমলাক্ষ চলে যাওয়ার পর স্তব্ধ হয়ে অনেকক্ষণ বসে ছিল। এত বড়মাপের লেখক এবং অফিসার বলেই হয়ত এতটা উদার। ইচ্ছে হলেই অমলিনকে কোণঠাসা করে ফেলতে পারতেন। অফিসে না-গিয়ে ছুটি নিয়ে ময়দানে বসে থাকাটা অমলিনের নিজস্ব অধিকারের মধ্যে পড়লেও, কর্মস্থলের অন্যতম পদাধিকারী ওকে জিজ্ঞেস করতেই পারতেন। এমনকী, কৈফিয়ৎ তলব বা মৃদু ভর্ৎসনা করার সুযোগ কমলাক্ষ মুখোপাধ্যায় নিতে পারতেনই। সেই মুহূর্তে ওঁর ইগো প্রবল হয়ে উঠলে অমলিন বিপদে পড়ে যেত।

এক ভয়ংকর বিপদ ও নিজেই তৈরি করেছিল। অমলিন সেদিন মোটেই পূরবী কাব্যগ্রন্থ পড়ছিল না। রবীন্দ্রনাথের এই বইটি সম্পর্কে ওর কোনো সামগ্রিক ধারণা নেই। সঞ্চয়িতায় পূরবীর কিছু 888sport app download apk ও দেখেছে, পড়েছে মাত্র। আসলে অমলিন সেদিন পড়ছিল জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ প্রথমখণ্ড।

কমলাক্ষকে আচমকা ওখানে দেখে অমলিন ঘাবড়ে যায়। বিকেলের বিষণ্ন আলোয় জীবনানন্দ দাশের প্রতিটি পঙ্ক্তি ওর কাছে নতুন অর্থে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। শীত আর হেমন্ত ঋতুতে দুপুরের দিকে অমলিন একটা ঝোলা ব্যাগে জীবনানন্দকে নিয়ে, ট্রেন ধরে ক্যানিং বা ডায়মন্ড হারবার লাইনে কোথাও চলে যায়। কোনো অজানা-অচেনা স্টেশনে নামে। রেললাইনের ধারে যে-অনাবাদি জমি, তারই কোনো একটায় খবরের কাগজ বিছিয়ে বসে। তারপর ঝোলা থেকে কাব্যগ্রন্থ, জলের বোতল, শুকনো খাবার বের করে। অঘ্রান-পৌষের রোদ সহ্য করা যায়। অমলিনকে ছায়া কিংবা আড়াল খুঁজতে হয় না। গ্রামের মানুষ কিংবা মেঠোপথের পথিকরা ওকে দূর থেকে দেখে। একটু হয়ত দাঁড়ায়। তারপর ঔৎসুক্য একতিল পরিমাণ মিটে গেলেই চলে যায়। অমলিন ততক্ষণে জীবনানন্দের গহন গভীরে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। সেদিন ময়দানে তেমনই নিরুদ্দেশ হয়ে গেছিল অমলিন।

ওর জীবনে এমন অদ্ভুত পাগলামোর জন্ম হয়েছে ব্যর্থতা থেকে। সে-ব্যর্থতা 888sport app download apk লেখার ব্যর্থতা। কলেজ-জীবন থেকে যেসব 888sport app download apk লিখে অমলিন চার-পাঁচটা ডায়েরি ভর্তি করে ফেলেছিল, সেগুলো কোথাও ছাপা হয়নি। লিট্ল ম্যাগাজিন থেকে ফেরত এসেছে কিংবা রিগ্রেট লেটার। কবি বিশ্বদীপ বসু ওকে একদিন পরামর্শ দিলেন, তুমি ভাই, জীবনানন্দ খুঁটিয়ে পড়ো। আধুনিক 888sport app download apkর স্পষ্ট চরণধ্বনি আর সূর্যোদয় এই কবির 888sport app download apkয় যেভাবে আছে, ওঁর সমসাময়িকদের কারো মধ্যে নেই। তুমি একটা পথ পাবে।

নিজের সৃষ্টির আর্তিকে কোনোরকম মায়ামমতা না দেখিয়ে অমলিন পরের দিন থেকেই জীবনানন্দের কাব্যের জগতে ঢুকতে শুরু করে। প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হচ্ছিল। তবে ক্রমশ ওর পক্ষে এটা প্রায় শুদ্ধ আশীর্বাদের মতো হয়ে উঠল। জীবনানন্দের 888sport app download apkয় অমলিন শুধু মগ্ন নয়, ওর জীবন-ভাবনা বদলে যেতে শুরু করেছে। দৃষ্টিভঙ্গিও। একটা কাব্যস্নাত জীবনবোধ অমলিনকে অন্য অমলিন করে তুলছে। ও এখন আর কবিযশ আকাক্সক্ষা করে না, কেবল কয়েকটা ভালো 888sport app download apk, 888sport app download apk হয়ে-ওঠা 888sport app download apk লিখতে চায়।

অপ্রস্তুত অবস্থায় সেদিন কমলাক্ষকে ও মিথ্যে কথা বলেছিল, কিন্তু পরে বিষয়টা ভাবতে ভাবতে বসে অমলিন নিজের কাছে ছোট হয়ে গেছে। কমলাক্ষের মতো বড়মাপের স্রষ্টার সঙ্গে মিথ্যাচারণ করার মধ্যে কোনো গৌরব নেই। ওঁর কাছে অমলিন ক্ষমা চাইবে। অফিসার-কমলাক্ষের সামনে নিজেকে লুকোতে গিয়ে যে-অন্যায়টুকু করে ফেলেছে, লেখক-কমলাক্ষ সেটাকে নিশ্চয় ক্ষমার স্পর্শে মুছে দেবেন।

বুলবুল দস্তিদারকে ফোন করে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্টে নিল অমলিন। তথ্য ও জনসংযোগ উপদেষ্টার দরজা সকলের জন্য সবসময় উন্মুক্ত। এখানে অপেক্ষা করতে হয় না, উপেক্ষাও নয়। বিকেল পাঁচটা কুড়ি মিনিটে কমলাক্ষ ওকে সময় দিয়েছেন। ভেতরে ভেতরে রক্তচাপ ক্রমশ কি বেড়ে যাচ্ছে? এমন তো হওয়ার কথা নয়। অমলিন অস্বস্তি কাটাতে টয়লেটে গেল। আয়নায় নিজের মুখ দেখল এক ঝলক। হিমজলের ট্যাপের তলায় হাত রাখল, চোখে-মুখে জল ছোঁয়াল। ওর চোখের সামনে ভেসে উঠল জীবনানন্দের অবিনশ্বর কিছু পঙ্ক্তি : ‘নক্ষত্রের পানে যেতে-যেতে/ পথ ভুলে বার-বার পৃথিবীর ক্ষেতে/ জন্মিতেছি আমি এক সবুজ ফসল। -/ অন্ধকারে শিশিরের জল/ কানে-কানে গাহিয়াছে গান,-/ ঢালিয়াছে শীতল আঘ্রাণ …’।

কমলাক্ষের সেক্রেটারির সঙ্গে ফিকে হাসি-বিনিময় করে অমলিন ওঁর ঘরে ঢুকল প্রায় যথাসময়ে।

সামান্য অবাক হয়ে কমলাক্ষ জিজ্ঞেস করল, কী ব্যাপার! হঠাৎ আমার সাক্ষাৎপ্রার্থী? আরে বোসো, বোসো।

কোনো ভণিতা না করে একেবারে সোজাসুজি, বাহুল্যহীন ভাষায় অমলিন ওর সেদিনের লুকানো অপরাধের কথা বলল। কমলাক্ষ হতবাক, তুমি তো আচ্ছা সাত্ত্বিক টাইপের ছেলে দেখছি! এটা আদৌ কোনো দোষ নয়। তোমার জায়গায় থাকলে আমিও অপ্রস্তুত হয়ে, দোলাচলে ভুগে এমনই আচরণ করতাম।

নিজেকে আরো খানিক উজাড় করে অমলিন এও জানাল, জীবনের এইসব ছোটখাটো ত্রুটি জমতে জমতে পাহাড় হয়ে যায়। এরাই একসময় হৃদয়জুড়ে অন্ধকার ঘন করে তোলে।

অপলকে অমলিনের দিকে তাকিয়ে কমলাক্ষ ভেবে পেল না, ছেলেটা সুস্থ, নাকি মাথা খারাপ! ওর এই সততার পরিমাপ পারিপার্শ্ব কখনো করবে না। জীবন- সম্পর্কে এই দৃষ্টিভঙ্গি অমলিনকে ভোগাবে, আঘাত দেবে। এসব ভেবেও কমলাক্ষ ওকে আশ্বস্ত করল। নিখাদ প্রশংসায় ভরিয়ে দিল অমলিনকে। মনে মনে ঠিক করে রাখল, আগামী পুজো 888sport free betর 888sport alternative linkে অমলিনের চরিত্রটাকেই শব্দের তুলিতে ব্যঞ্জনার রঙে আঁকবে। ওর সঙ্গে আরো গভীরে আলাপ করতে হবে। এমনতর তরুণপ্রাণ এখন দুর্লভ, লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীর মধ্যে একজন।

বিনীত মুখে ওর ঘর থেকে অমলিন বেরিয়ে যেতেই কমলাক্ষ ইন্টারকমে বুলবুলকে বলল, প্লিজ পুট মি টু আবির মিত্র।

তিরিশ সেকেন্ডের মধ্যে কমলাক্ষ পৌঁছে গেল কোম্পানি সেক্রেটারির রুমে, হ্যালো, আবির, আমি কমলাক্ষদা।

– হাঁ দাদা, বলুন। আবিরের গলার স্বরে অতিরিক্ত সম্ভ্রম।

– ডোন্ট টেক ইট আদারওয়াইজ, তোমার কাছে আবারো জানতে চাইছি, হু উইল রেন্ডার দি ভোট অফ থ্যাংকস্? হু?

ওপাশে কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে আবির শব্দ করে হাসল, ওঃ দাদা, আপনাকে নিয়ে পারা গেল না। কোম্পানি ভেবেছিল একটা সারপ্রাইজ দেবে, কিন্তু আপনি যেভাবে আজ জিজ্ঞেস করছেন, তাতে তো নাম বলতেই হবে!

– ইয়েস। কমলাক্ষ আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না, প্রায় বোমার মতো ফেটে উঠে বললেন, পঁচিশে বৈশাখের আর দু’দিন বাকি। অথচ তোমরা বিষয়টাকে নিয়ে অযথা ইয়ার্কি-ফাজলামো মারছ। ব্যাপারটা কী! আমাকেই বা নামটা জানানো হচ্ছে না কেন?

আবির যেন এই প্রতিক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিল, তাই কমলাক্ষের রুক্ষতাকে গণনার মধ্যেই আনল না। বরং ততধিক শান্ত গলায় বলল, দাদা, আমাদের হাউজে এই অনারেবল কাজটি করার জন্য একজনই আছেন। তিনি কমলাক্ষ মুখার্জি। অফিসের বাইরেও যাঁর আলাদা পরিচয় আছে, আইডেনটিটি আছে। হি ইজ দি রাইট পার্সন ফর দি রাইট ওয়ার্ক।

আবিরের মুখ থেকে নিজের নাম শুনে কমলাক্ষ একবিন্দু আপ্লুত হলো না। প্রত্যাশা-অপ্রত্যাশার সীমারেখা কখন যে অবসিত হয়ে গেছে, ওর বুকের ভেতর থেকে! কমলাক্ষ উচ্ছ্বাসহীন শুকনো স্বরে বলল, থ্যাংকস্। … আবির, আমি দুঃখিত। ধন্যবাদ-জ্ঞাপনের কাজটা আমি ভাই পারব না। অন্য কাউকে ভার দাও। সরি।

– সে কী! আবির আকাশ থেকে পড়ল, আপনি ছাড়া … কে পারবে?

– হ্যাঁ, জানি। কিন্তু আমি অপারগ। কমলাক্ষর কণ্ঠস্বর ভারি হয়ে এল, আমার বদলে আমি একজনের নাম বলব। সে এই অফিসেই চাকরি করে। মুহূর্তে অমলিনের মুখ ভেসে উঠল ওর চোখের সামনে। কিন্তু ওর নামটা বলতে গিয়েও কমলাক্ষ টেনে ধরল মুখের রাশ। অমলিন, ওর মতো প্রত্যাশী নয়, কখনো আশাও করে না। এসব মালিন্যের মধ্যে ওকে টেনে আনবে না কমলাক্ষ। অমলিন শব্দের অর্থ ছেলেটার জীবনে আরো সত্য হয়ে উঠুক।

– হ্যালো, কমলদা, শুনুন, এমন সিদ্ধান্ত নেবেন না …। আপনি ছাড়া এ-অফিসে আর কে আছে? আবির ওপাশ থেকে করুণ সুরে অনুনয় করছে ক্রমাগত, কমলদা, প্লিজ!