স্ব কৃ ত নো মা ন
ক. ছাতিম ফুলের গন্ধ
কোনো কোনো রাতে যখন আমাদের ঘুম আসে না, বিছানায় কেবলই এপাশ-ওপাশ করি, মনের মুকুরে তখন একটি প্রান্তরের 888sport sign up bonus জাগিয়ে তুলি। অনিদ্রা দূরীকরণে 888sport sign up bonus কখনো কখনো কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিন্তু আমাদের তো আরো কত কত 888sport sign up bonus আছে। শৈশবের, কৈশোরের, তারুণ্যের, বন্ধুবান্ধবের, সাবেক প্রেমিকার, বাসর রাতের, স্কুল পালানোর, পৌষের হিম রাতে খেজুরের রস চুরির, গ্রাম্য কিশোরীর প্রেমে পড়ার। এত এত 888sport sign up bonus থাকতে আমরা কেন শুধু সেই প্রান্তরের 888sport sign up bonusটা জাগিয়ে তুলি? কারণ সেই প্রান্তরে পড়ে আছে আমাদের এমন এক 888sport sign up bonus, যার মধ্য দিয়ে আমরা জীবনের সৌন্দর্য বুঝতে শিখেছি। ওই প্রান্তরে আমরা দেখেছি পৃথিবীর সুন্দরতম দৃশ্য – 888sport promo codeর টোলপড়া গালের হাসি। মন্ত্রমুগ্ধের মতো আমরা সেই মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ভাবতাম, ওই টোলের মধ্যেই বুঝি জীবনের গুপ্ত রহস্য লুকিয়ে। সেই রহস্যের টানে রোজ বিকেলে আমরা ছুটে যেতাম সেখানে, সেই বিশাল প্রান্তরে। উত্তরে ও পুবে ত্রিপুরা সীমান্ত, পশ্চিমে 888sport apps, মাঝখানে বিশাল প্রান্তর। কোথাও হাতির পিঠের মতো, কোথাও ঝিনুকের খোলের মতো, কোথাও সমান্তরাল ধু-ধু বালুচরের মতো দক্ষিণে চলে গেছে। কোথায় শেষ হয়েছে কে জানে। আমরা ভাবতাম, ওই প্রান্তরের বুঝি সীমা নেই। পৃথিবীর শেষ সীমানায়, আকাশ যেখানে মাটির সঙ্গে মিশেছে, সেখানেই বুঝি তার শেষ।
প্রান্তরের ঠিক উত্তরে, যেখানে দুই দেশের সীমানা মিশেছে, সরকারি কাগজপত্রে যাকে বলা হয় নো ম্যান্স ল্যান্ড, আমরা প্রথম দেখেছিলাম সেই টোলপড়া গালের অপূর্ব হাসি। প্রতিবছর সেখানে চৈত্রসংক্রাস্তির মেলা হতো। চড়কগাছ ঘোরানো হতো। বিনোদন বলতে তেমন কিছু তো ছিল না আমাদের জীবনে। গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না, টেলিভিশন ছিল না, বছরের দুই ঈদ ছাড়া আনন্দ করার মতো কোনো উৎসবও ছিল না। পারিবারিক কঠোর শাসনের নিগড়ে আবদ্ধ নিরানন্দময় এক ঊষর জীবন। তাই সারাবছর আমরা যে-কটি দিনের অপেক্ষায় থাকতাম চৈত্রসংক্রাস্তির দিন ছিল তার মধ্যে একটি।
দিনটি যখন একেবারে নাগালের মধ্যে চলে আসত, যখন মনে হতো হাত বাড়ালেই ছুঁতে পারব, সুধীর দাসের বাড়িতে যখন ছাতু চিড়া দই মুড়ি খই তিল ও নাড়ুর ধুম পড়ে যেত, আমাদের উত্তেজনার আর সীমা থাকত না। ঘুমাতে পারতাম না সারারাত। রাতকে মনে হতো শত শত মাইল দীর্ঘ কোনো পথ, আমরা দুরন্ত পথিক, অবিশ্রাম হাঁটছি তো হাঁটছিই, অথচ গন্তব্যে পৌঁছতে পারছি না। ঘুমের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে আমরা ঘুমিয়ে পড়তাম। সকালে জেগে পুবের আকাশে দেখতাম হাস্যোজ্জ্বল সূর্য। সারাবছর সূর্যকে কখনো হাসতে দেখতাম না। হাসত শুধু বছরে একবার – চৈত্রসংক্রাস্তির দিন। প্রাণ খুলে। সূর্যটা পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা চলে যেতাম সাড়াসীমার প্রান্তরে, সকাল থেকে যেখানে শুরু হতো চড়কমেলার আয়োজন।
সেই মেলাতেই তাকে আমরা প্রথম দেখি। বিকেল তখন সন্ধ্যার কোলে। লাল সালোয়ার-কামিজ পরে, হাওয়াই ওড়নায় বুক ঢেকে, কপালে লাল টিপ পরে, খোঁপায় একটা রাধাচূড়া গুঁজে সে মেলায় এসেছিল। আমরা তো তখন পনেরো-ষোলো বছরের বালক, প্রেমের বোধ তখনো আমাদের মধ্যে পুরোপুরি জেগে ওঠেনি, 888sport promo codeর সুডৌল বুককে তখনো আমরা মাতৃস্তন মনে করতাম, 888sport promo codeর ঊরুসন্ধি তখনো আমাদের কাছে রহস্যের আধার, 888sport promo code মানেই আমাদের কাছে মা, বোন, খালা, ফুপু, চাচি। 888sport promo codeকে স্ত্রী ভাবার মতো দুঃসাহস তখনো আমাদের হয়ে ওঠেনি।
চৈত্রের দামাল বাতাসে ওড়না উড়িয়ে সে আমাদের সামনে এলো। আমরা ভাবলাম, আকাশ থেকে বুঝি পরী নামল! আমরা তার পিঠের ডানাদুটি খুঁজতে থাকি। ঠোঁটের ডগায় চলে আসা কথাটি তাকে আমি না বলে পারলাম না, আপনার ডানা দুটি কোথায় রেখেছেন? ভ্রম্ন বাঁকিয়ে সে আমার দিকে তাকাল। চোখ জ্বালা করে উঠল আমার। ঝলসে যাবে জেনেও আমি তাকিয়ে রইলাম। হাতের পিঠে মুখ ঢেকে সে হাসতে লাগল। সে কী হাসি! যেন পূর্ণিমার জোয়ার নদীর বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে দিচ্ছে ঊষর জমিন। আমরা তার অধর দেখতে পাই না, দাঁত দেখতে পাই না, শুধু দেখতে পাই গালের অনিন্দ্য দুটি টোল। যেন এক গভীর গহবর, যেখানে লুকানো সাত রাজার ধন মণিমাণিক্য। পতঙ্গের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ার ইচ্ছা হয় আমাদের। মরে যেতে ইচ্ছা হয়। আমাদের বুকে একটা দীর্ঘশ্বাস ঘুরপাক খায়। দীর্ঘশ্বাসটার ভাষারূপ দিলে এই দাঁড়ায় – হায়, জীবনে বুঝি কোনোদিন আমরা এরকম একটা টোলপড়া গাল ছুঁয়ে দেখতে পারব না। অতৃপ্ত বাসনা নিয়েই বুঝি আমাদের মরে যেতে হবে।
চড়কগাছটা ঘুরতে শুরু করলে আমাদের ঘোর কাটল। আমাদের চোখ চলে গেল সন্ন্যাসীর দিকে, দড়ি দিয়ে যার শরীর চড়কগাছের সঙ্গে বাঁধা। উলুধ্বনি উঠল শত শত কণ্ঠে। আমরাও হর্ষধ্বনি দিতে শুরু করি। চড়কের বৃত্তটা কয়েক পাক ঘোরার পর এক সন্ন্যাসী গজা, নকুলদানা আর চানাচুর ছিটাতে লাগল। হই-হুল্লোড় করতে করতে আমরা কুড়াই। ডানাহীন পরীর কথা আর খেয়ালে থাকে না। কুড়াতে কুড়াতে যখন সন্ধ্যা নামল, সবাই যখন বাড়ি ফিরতে শুরু করল, সহসা আমাদের মনে পড়ে গেল ডানাহীন পরীর কথা। আমাদের দৃষ্টি ঘুরতে লাগল মেলার মাঠে। কোথাও তাকে দেখতে পাই না। কোথায় গেল? আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বুঝি আকাশে উড়াল দিলো! প্রান্তরের বাতাসে দীর্ঘশ্বাসগুলো ছড়াতে ছড়াতে আমরা বাড়ির পথ ধরি।
পরদিন বিস্ময়ের সঙ্গে আমরা আমাদের পরিবর্তন লক্ষ করি। বিকেলে তো আমাদের কোনো কাজ থাকত না। তখন তো আর পুতুলখেলার বয়স ছিল না। ফুটবল, গোল্লাছুট, হা-ডু-ডুও তো রোজ রোজ খেলতাম না। কিন্তু বিকেলটা তো কাটাতে হবে। নদীর তীরে, রেললাইনের পথ ধরে কিংবা গ্রামের মেঠোপথে হেঁটে হেঁটে আমরা বিকেল কাটাতাম। সেদিন নদীর তীর ডাকল না আমাদের, রেললাইন ডাকল না, গ্রামের মেঠোপথ ডাকল না; আমরা শুনতে পেলাম সাড়াসীমা প্রান্তরের ডাক। আমাদের মনের মুকুরে ভেসে উঠল উত্তর সীমান্তের ছাতিমবৃক্ষ, লাল সালোয়ার-কামিজ, হাওয়াই ওড়না, লাল টিপ, খোঁপায় গোঁজা রাধাচূড়া, টোলপড়া গাল। কেবলই মনে হতে লাগল ডানাহীন পরী ছাতিমতলায় আমাদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। আমরা ছুটে গেলাম নো ম্যান্স ল্যান্ডে, সারা বিকেল জমিনের আলে বসে ছাতিমতলার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। সে এলো না। সন্ধ্যা নামল। প্রান্তরের পাখিরা উড়াল দিলো নীড়ের দিকে। দীর্ঘশ্বাসগুলো বাতাসে ছড়াতে ছড়াতে আমরা বাড়ি ফিরে গেলাম।
নো ম্যান্স ল্যান্ডে তার অপেক্ষায় বসে থেকে কত উৎকণ্ঠিত বিকেল পার করে দিয়েছি তার কোনো শুমার ছিল না। জানতাম কোনোদিন আর তার দেখা পাব না, তবু আমরা প্রতীক্ষায় থাকি। সীমান্তের ওপারেই মহকুমা শহর। ভাবি, নিশ্চয়ই তার বাড়ি সীমান্তের কাছেই। মাঝেমধ্যে ইচ্ছা করত সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ওপারে চলে যাই, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাকে খুঁজি। একটিবার তার টোলপড়া গাল দেখে চোখ জুড়াই। কিন্তু দুই দেশের ব্যাপার, সীমান্তে বিএসএফ পাহারায়, আমাদের ইচ্ছারা তাই নো ম্যান্স ল্যান্ডে মাথা কুটে মরে। তবু একদিন টহলপার্টির ডিউটি বদলের সময় আমরা সীমান্ত পাড়ি দিই। সারা বিকেল সীমান্তের বাড়ি বাড়ি উঁকি মারি। তার দেখা পেলাম না কোথাও। আমাদের ধারণাটা দৃঢ় হলো – সে আসলে মানুষ ছিল না, চড়কমেলায় যেসব পরী আকাশ থেকে নামে সে ছিল তাদেরই একজন।
রোজ বিকেলে সাড়াসীমার প্রান্তরে বসে থাকাটা আমাদের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেল। ততদিনে ডানাহীন পরীর জন্য আমাদের দীর্ঘশ্বাসগুলো হ্রস্ব হয়ে এসেছিল। আমরা আর তার দর্শন কামনা করতাম না। তবু যেতাম। কেননা বিকেল যাপনের জন্য ওই প্রান্তরের চেয়ে ভালো কোনো স্থান ছিল না, এত বাতাস গ্রামের আর কোথাও ছিল না, সূর্যাস্তের এমন অপরূপ দৃশ্য আর কোথাও দেখা যেত না।
হঠাৎ একদিন, তখন হেমন্তের অপরূপ বিকেল, সীমান্তের ছাতিমগাছটায় ফুলের সমারোহ, একদল তরুণীকে ছাতিমতলার দিকে আসতে দেখে আমাদের বুকটা ধড়ফড় করে উঠল। উত্তেজনায় আমরা দাঁড়িয়ে গেলাম। ছাতিমতলায় দাঁড়িয়ে তারা আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকল। বহুদিন ধরে মনের মুকুরে ভাসতে থাকা দৃশ্যের বাস্তব রূপায়ণ দেখে আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই। পরস্পরের মুখের দিকে তাকাই। নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে ডানাহীন পরীও আছে! নইলে আমাদের ডাকবে কেন? কিন্তু আমরা কাছে যাওয়ার সাহস পাই না। ভিনদেশের অজানা-অচেনা মেয়ে, যদি কোনো অঘটন ঘটায়! হাতের ইশারায় উলটো আমরা তাদের ডাকি। প্রত্যাশা করিনি তারা আসবে; কিন্তু এলো। নো ম্যান্স ল্যান্ডের দুই আলে আমরা মুখোমুখি বসলাম। আমাদের মাথার ওপর ভাসছে সাদা মেঘের ভেলা, চারদিকে হেমন্তের বাতাসে দোল খাচ্ছে কাশফুল। আমাদের চোখ খুঁজে বেড়ায় টোলপড়া গালের পরীকে। এতদিনে তার চেহারা ভুলে গেছি, নামটিও জানা নেই, শুধু মনে আছে তার টোলপড়া গালের অপূর্ব হাসি।
যে-মেয়েটির খোঁপায় ছাতিম ফুল গোঁজা, আমি তাকে বললাম, চড়কমেলায় আমরা ঠিক আপনার মতো এক পরীকে দেখেছিলাম। মেয়েটির ভ্রম্ন দুটি ধনুকের মতো বেঁকে গেল। মুখটা হাঁ হয়ে গেল। হাতের পিঠে মুখ ঢেকে সে হেসে উঠল। আমরা চমকে উঠলাম। সেই টোলপড়া গাল! সেই সাত রাজার ধনের গহবর! আমি বলেই ফেললাম, আপনি! কতদিন পর! আপনাকে আমরা কত খুঁজেছি!
চোখের মণি দুটো ঘুরিয়ে সে বলল, আমাকে খুঁজেছেন? বলেই হাসতে লাগল। আমরা তার টোলপড়া গালের দিকে তাকিয়ে থাকি। পলক ফেলতে ভুলে যাই। আমরা প্রথমবারের মতো টের পাই সে পরী নয়, মানুষ। কিন্তু ভেবে পাই না মানুষ কী করে এমন সুন্দর হয়। আমাদের বিস্ময় কাটে না। আমাদের চোখে খেলা করতে থাকে এক অধরা স্বপ্ন – আহা, এই ডানাহীন পরীকে যদি সারাজীবনের জন্য কাছে পেতাম! জোছনার রাতে সাড়াসীমার প্রান্তরে যদি তার হাত ধরে হাঁটতে পারতাম!
হয়তো সে আমাদের চেহারা দেখে মনের কথা টের পেয়েছিল। নইলে রোজ রোজ কেন আসত নো ম্যান্স ল্যান্ডে? মুখোমুখি আলে বসে আমরা গল্প করতাম। 888sport apps নিয়ে খুব আগ্রহ ছিল তার। 888sport apps তার পিতৃভূমি। দক্ষিণ অলকানগর গ্রাম। সীমান্ত থেকে বারো মাইল দক্ষিণে। চৌষট্টির দাঙ্গার সময় সপরিবারে ত্রিপুরা পাড়ি দেয় তার দাদাঠাকুর। 888sport apps নিয়ে সে কত যে প্রশ্ন করত আমাদের! 888sport appsে কি ধান হয়? আমগাছে আম ধরে? লিচুগাছে লিচু? 888sport appsেও কি পাখি ডাকে? নিশিরাতে বাঁশি বাজে? 888sport appsের মানুষ কি রবিঠাকুরের গান গায়? জীবনানন্দের 888sport app download apk পড়ে? তার প্রশ্ন শুনে আমরা হাসতাম। বাবার কাছ থেকে শোনা 888sport apps বিষয়ে তার গল্প থামত না। রোজই কোনো না কোনো গল্প শোনাত। শুনতে শুনতে আমাদের খুব বলতে ইচ্ছা করত, আপনি চলে আসুন, আপনাকে বুকের ভেতরে ঠাঁই দেব। কিন্তু বলতে পারতাম না। কারণ 888sport promo code মানে তখনো আমাদের কাছে মা, বোন, খালা, ফুপু, চাচি। তবু একদিন সাহস করে হাসতে হাসতে আমি বলে ফেললাম, জানেন, আপনার গালের টোলটা দেখলে পৃথিবীতে কয়েক হাজার বছর বাঁচতে ইচ্ছা করে। শুনে সে হাসতে লাগল। হাতের পিঠে মুখ ঢেকে। আমরা তার টোলের দিকে তাকিয়ে রইলাম। যেন কেউ আমাদের বাণ-টোনা করেছে। কোনোদিন আর ওই টোল থেকে চোখ ফেরাতে পারব না।
একদিন। বন্ধুদের কেউ প্রান্তরে এলো না। আমি একা। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টি হবে তুমুল। নো ম্যান্স ল্যান্ডে বসে আছি তার অপেক্ষায়। বসে থাকতে থাকতে পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে, অথচ সে আসে না। সূর্য যখন অস্তাচলে, বাতাসের তোড়ে মেঘেরা যখন ছুটছে দিগ্বিদিক, ছাতিমতলায় একটা হাওয়াই ওড়না দেখতে পাই। উড়ছে পতপত। শীতল বাতাসে আমার গা-টা শিউরে উঠল। ছাতিমতলায় ছুটে যেতে ইচ্ছা করল। কিন্তু দিনের আলো তখনো নেভেনি। অন্ধকারের অপেক্ষায় আমি বসে থাকি।
যখন অন্ধকার নামল, চারদিক যখন জনশূন্য হয়ে পড়ল, আমরা দুজন মুখোমুখি দাঁড়ালাম। তার খোঁপায় একটা ছাতিম ফুল। মধুপের মতো আমি খোঁপায় নাক ডুবিয়ে দিই। গাছে হেলান দিয়ে সে দাঁড়িয়ে। তার গালের টোলে আঙুল ঠেকাই। সে মুখ সরিয়ে নেয়। আমি বলি, তোমার টোলের দিকে তাকিয়ে থেকে আমি একজীবন কাটিয়ে দিতে পারব। সে হাসতে লাগল। অন্ধকারে তার টোলটা আমি দেখতে পাই না। খুব মন খারাপ হয় আমার। মনে মনে প্রার্থনা করি, হে মাবুদ, এক ফোঁটা আলো দাও।
আকাশ ডেকে উঠল অকস্মাৎ। বিজলি চমকাতে লাগল ঘনঘন। বৃষ্টি নামতে আর বুঝি দেরি নেই। অস্থির হয়ে উঠল সে। আর দাঁড়াতে চাইল না। তার হাতদুটো মুঠোয় নিয়ে বললাম, কাল আবার আসব। তুমি আসবে তো? সে শুধু বলল, এখন যাব।
সে চলে গেল। আকাশ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে জমিনে পড়তে লাগল। টানা দশদিন চলল তুমুল বৃষ্টি। সাড়াসীমার প্রান্তর ভেসে গেল পাহাড়ি বন্যায়। পানি নামতে লেগে গেল আরো সাতদিন। শুকাতে আরো দশদিন। আমি আবার নো ম্যান্স ল্যান্ডে গিয়ে দাঁড়াই। তার প্রতীক্ষায় থাকি। সে এলো না। রোজ রোজ গিয়ে বসে থাকি। সে আসে না। দিনের পর দিন কেটে গেল, মাসের পর মাস, অথচ সে এলো না। একদিন তার চেহারাটাও 888sport sign up bonus থেকে হারিয়ে গেল। হারাল না শুধু তার টোলপড়া গালের হাসি এবং তার খোঁপায় গোঁজা ছাতিম ফুলের গন্ধ।
খ. মধ্যরাতের উড়াল সংলাপ
আমাদের জীবন বদলে দিয়েছে একটা মানুষ – মার্ক জাকারবার্গ। যোগাযোগ কত না সহজ করে দিয়েছে ফেসবুক। দেশ-বিদেশের চেনা-অচেনা কত হাজার হাজার ফ্রেন্ড। স্ট্যাটাস দিলে লাইক দেয়, কমেন্ট করে। কেউ জানায় সহমত, কেউ দ্বিমত, কেউ প্রশংসা, কেউবা নিন্দা। জীবনে কোনোদিন দেখিনি এমন নর-888sport promo codeরা ইনবক্সে মেসেজ দিচ্ছে – সুপ্রভাত, শুভরাত। জন্মদিনে জানাচ্ছে ফুলেল শুভেচ্ছা। এ-এক মোহের জগৎ। একবার এর মোহে জড়িয়ে গেলে বের হওয়া মুশকিল। জীবনের কত মূল্যবান সময় খেয়ে ফেলছে ফেসবুক, অথচ আমাদের কোনো আফসোস নেই। কেন থাকবে? ফেসবুকে আমরা খুঁজে পাই জীবনের অন্য অর্থ। ফেসবুক আমাদের নিঃসঙ্গ থাকতে দেয় না। যদি মন খারাপের স্ট্যাটাস দিই, সঙ্গে সঙ্গে মন ভালো করার জন্য শত শত কমেন্ট। যদি লিখি শরীর খারাপ, সঙ্গে সঙ্গে শত শত সহানুভূতির কমেন্ট, ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ, পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি।
ফেসবুকে আমার ফ্রেন্ড-888sport free bet ৪৭৬১। কজনকে আমি চিনি? সুবর্ণা চ্যাটার্জিও অচেনাদের একজন। কোনোদিন বলা হয়নি হাই, হ্যালো, শুভসকাল, শুভসন্ধ্যা, শুভরাত। ফ্রেন্ডলিস্টে আছে তাও জানা ছিল না। আমার চল্লিশতম জন্মদিন ছিল সেদিন। রাত বারোটা থেকে আমার ফেসবুক ওয়াল ভরে যেতে লাগল শুভেচ্ছাবাণীতে, ইনবক্সে আসতে লাগল মেসেজের পর মেসেজ। জবাব দিতে গেলে রাত ফুরিয়ে ভোর হবে। আমি আবার রাত জাগতে পারি না। এক রাত জাগলে ঘুম কাবার করতে দুই রাত লেগে যায়। পরিচিত কয়েকজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাই শুয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে ফেসবুকে ঢুকে দেখি ইনবক্সে শত শত মেসেজ। জন্মদিনের শুভেচ্ছা সব। ফ্রেন্ডদের শুভেচ্ছাবাণীর নিচে আমার শেষ স্ট্যাটাসটি চাপা পড়ে গেল। যতজনকে পারলাম ধন্যবাদ জানালাম। সুবর্ণা চ্যাটার্জি একটা লাল গোলাপ ও আমার ছবিসহ আমাকে ট্যাগ করে একটা স্ট্যাটাস দিলেন, ‘শাহীন আকন্দের জন্মদিনে পাঠিয়ে দিলাম আমার বাগানের একটি লাল গোলাপ।’ আমার কৌতূহল জাগল। জন্মদিনে 888sport promo codeর শুভেচ্ছা পেলে কার না ভালো লাগে? ফেসবুক তো ব্যবহার করি 888sport promo codeদের সঙ্গে চ্যাট করার জন্যই। পটিয়ে-পাটিয়ে বিছানায় নেওয়ার জন্যই।
সুবর্ণার অ্যাবাউটে ক্লিক করে দেখি পেশায় সে শিক্ষক, থাকে কলকাতায়। ফটো অপশনে ক্লিক করে দেখি কয়েকশো ছবি। টাইমলাইন ফটোসে শত শত ছবি, কিন্তু একটিও তার নয়, সব কটি ফুল-পাখি-নদী-অরণ্য-সমুদ্র এবং বিখ্যাত সব ক্রিকেট তারকার। প্রোফাইল পিকচার মাত্র তিনটি। প্রথমটিতে সে কোনো এক মোটেলের বারান্দায় সূর্যাস্তের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে, দ্বিতীয়টিতে গালে হাত দিয়ে ড্রইংরুমের সোফায় বসা এবং তৃতীয়টিতে শাড়ি পরে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। চল্লিশের কম হবে না বয়স, তবে যৌবনের লাবণ্য এখনো অটুট। ফেসবুকে বয়স্ক 888sport promo codeদের সঙ্গে আমি খুব একটা চ্যাট করি না, আমার আগ্রহ তরুণীদের প্রতি। রোজ মধ্যরাতে তরুণীদের ইনবক্সে নক করি। কেউ জবাব দেয়, কেউ দেয় না। একবার কেউ জবাব দিলে তার সঙ্গে জমিয়ে তুলি। ত্রিশোর্ধ্ব কোনো 888sport promo code নক করলে জবাব দিতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু সুবর্ণাকে প্রথম দর্শনেই ভালো লেগে গেল। ধন্যবাদ না জানালেই নয়। তার ইনবক্সে লিখলাম, জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সঙ্গে সঙ্গে তার উত্তর, ওয়েলকাম।
তারপর এক সপ্তাহ আর কথা নেই। আমিও ভুলে গেলাম তার কথা। এক রাতে, শীত পড়ছিল খুব, বউ-বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়েছে, আমার রুমে আমি একা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে চ্যাট করছিলাম। একটা মিথ্যা স্বপ্নের কথা বলে পটানোর চেষ্টা করছি তাকে। স্বপ্নে দেখেছি তার বিয়ে হয়ে গেছে, কিন্তু স্বামীকে তার পছন্দ নয়। বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় সে পালিয়ে এলো আমার বাসায়। লেবু-লবণ ও সেভেন আপ মিশিয়ে আমরা ভদকা খেলাম। বাইরে আষাঢ়ের তুমুল বৃষ্টি। নেশায় চুর আমরা বাসার ছাদে উঠে বৃষ্টিতে ভিজতে লাগলাম।
এই স্বপ্নদৃশ্যের কথা যখন তাকে ইনবক্স করছিলাম তখনই সুবর্ণা চ্যাটার্জির মেসেজ, কেমন আছেন?
ভালো। আপনি?
ভালো কি আর থাকা যায়? যা শীত মাইরি!
কেন? তিনি নেই?
থাকবে না কেন?
তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমান। উত্তাপ পাবেন। হা হা হা।
আপনার হাসিটা সুন্দর।
মিথ্যে কথা। আমার হাসি কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন?
মনের চোখে পাচ্ছি।
তাই? বেশ তো মন ভোলানো কথা বলতে পারেন।
শাড়িপরা ছবিটাতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে আপনাকে।
খুব?
একেবারে ঐশ্বরিয়ার মতো। না না, ঐশ্বরিয়াও আপনার কাছে তুচ্ছ। ঈশ্বর তার নিপুণ হাতে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। পুরাণের দেবী সরস্বতীও সম্ভবত আপনার মতো সুন্দরী ছিলেন।
কী সাংঘাতিক কথা! আপনার চোখে সমস্যা নেই তো? আমার রূপের এত প্রশংসা ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না। সুন্দরী কি আমাকে সত্যি বলা যায়?
আমার দেখা সুন্দরীদের মধ্যে আপনি অন্যতম।
ছবি দেখে কি সব বোঝা যায়?
কেন যাবে না? ছবিটা দেখে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে। চোখদুটোর দিকে একবার তাকালে চোখ ফেরাতে ইচ্ছা করবে না।
হায় ভগবান! আপনার চোখ ঠিক আছে তো?
একদম ঠিক। সত্যি আপনার রূপে আমি অভিভূত। কী অপার সুন্দরের আধার আপনি! প্রকৃতির অপূর্ব সৃষ্টি মানুষ এমন সুন্দর হতে পারে আপনাকে দেখেই জানলাম।
রাখুন তো! ঘুমাবেন না?
একাকী ঘুমাতে ইচ্ছা করছে না।
আমি আসব?
তুমি থাকো সিন্ধুপারে…।
আপনি চলে আসুন আমার দেশে। উত্তাপ দেব।
কম্বলের, না বুকের?
হা হা হা। আসুন তো আগে, তারপর দেখা যাবে।
সেই শুরু। তারপর রোজ মধ্যরাতে তার সঙ্গে চ্যাট করাটা অভ্যাসে পরিণত হলো। রাত দেড়টা-দুটো বেজে যায়, চ্যাটিং চলতেই থাকে, ঘুমানোর কথা খেয়ালে থাকে না। কত কী কথা হয়। রাজনীতি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, ধর্ম, দর্শন, দেশভাগ, এমনকি সেক্স – কোনো কিছুই বাদ যায় না।
একদিন সে আমাকে পাঠাল কোনো এক চিত্রকরের আঁকা সঙ্গমরত দম্পতির তৈলচিত্রের একটি ছবি। ছবিতে 888sport promo codeটির গম্বুজের মতো স্তন দেখে মধ্যরাতে উসকে উঠল আমার কামনা। আমি তাকে লিখলাম, এমন ছবি দেখলে কি মাথা ঠিক থাকে?
চলে আসুন। মাথা ঠিক করে দেব।
ডানা থাকলে উড়াল দিতাম।
ভিসা নিয়ে চলে আসুন না।
দেখা দেবেন তো?
কেন, এতদিনেও বিশ্বাস হচ্ছে না?
না, তা বলিনি।… আচ্ছা দেখি, আগামী মাসে ট্রাই করব। আশা করি শিগগির আমাদের দেখা হচ্ছে।
একটিমাত্র ছবি আমাদের সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠ করে তুলল। এরপর থেকে তার সঙ্গে বেশি চ্যাট হয় 888sport promo code-পুরুষের দৈহিক সম্পর্ক নিয়ে। কীভাবে কথার ফাঁদে ফেলে 888sport promo codeকে বিছানায় নিতে হয় সেই কৌশল তো আমার জানা। কথায় কথায় শুরু হয় ভার্চুয়াল সেক্স। ফেসবুক রেখে ভাইবার অন করে ভিডিও কল দিই। সে আমাকে দেখে, আমি তাকে। কার শরীরের কোথায় তিল, কোথায় জন্মদাগ, কোথায় কত রোম – সব আমরা খুঁটিয়ে দেখি। রাতের পর রাত আমাদের এভাবেই কেটে যায়।
গ. হোটেল শিবাজি ইন্টারন্যাশনাল
কলকাতা যাব যাব করেও যাওয়া হচ্ছিল না। আগরতলায় গিয়েছি বহুবার, কলকাতায় একবারও না। এবারের ভিসা মাল্টিপল। পাক্কা এক বছরের। এরই মধ্যে ছয় মাস চলে গেছে। না গেলে ভবিষ্যতে আর ভিসা পাব না। সিদ্ধান্ত নিলাম এবার যাবই। সুবর্ণা কথা দিয়েছে। একসঙ্গে দুজন হোটেলে থাকব। মূলত এই আশাতেই যাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলি। ইচ্ছা ছিল ট্রেনে যাব, কিন্তু ভিসা বাই এয়ার/ হরিদাসপুর। অগত্যা বাস। 888sport appর কল্যাণপুর থেকে বাস ছাড়ল সকাল সাতটায়। কলকাতা পৌঁছতে লেগে গেল পাক্কা চোদ্দো ঘণ্টা। এতো সময় লাগবে জানলে কে যেত বাসে? হোটেল ঠিক করে রেখেছিল সুবর্ণা, নইলে সারারাত রাস্তায় কাটাতে হতো। সল্টলেক থেকে একটা অটো নিয়ে ধর্মতলার হোটেল শিবাজি ইন্টারন্যাশনালে যখন পৌঁছি রাত তখন প্রায় দশটা। ফোনে কথা হলো সুবর্ণার সঙ্গে। আগামীকাল আসবে, জানাল সে। ডিনার করে সুবর্ণার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সুবর্ণা এলো পরদিন দুপুরে। তার বাড়ি উত্তর কলকাতায়। দক্ষিণে খুব একটা আসা হয় না। এবার এসেছে কলেজের একটা ট্রেনিংয়ের কথা বলে। দুদিনের জন্য। তার স্বামীর ব্যাংকের চাকরি। খুব একটা সময় দিতে পারে না তাকে। সুবর্ণা তৈরি করে নিয়েছে একটা নিজস্ব জগৎ। কলেজ, ফেসবুক, রান্নাবান্না নিয়েই তার জগৎ। ছবিতে তাকে যেমন দেখেছিলাম বাস্তবে তার চেয়েও সুন্দরী। বয়সের মালিন্য স্পর্শ করতে পারেনি। স্নান সেরে মাথায় তোয়ালে পেঁচিয়ে যখন সে আমার সামনে এলো, ঠিক বিশ্বাস হলো না তার মতো রূপসীর সঙ্গে একই রুমে দুই রাত যাপন করব। আশেস্নষে চুম্বনে সারা বিকেল কাটিয়ে দিলাম আমরা। সন্ধ্যায় হোটেলের বারান্দায় বসে যখন চা খাচ্ছিলাম, সুবর্ণার দৃষ্টি তখন বাগানের দিকে স্থির। ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না কী দেখছিল। আমি বললাম, কী ভাবছ?
ফুলটা দেখে বহুদিন আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল।
কোন ফুলটা?
তর্জনীর ইশারা করে সে বলল, ওই যে ছাতিম ফুল।
তোমাদের বাড়িতে আছে ছাতিমগাছ?
হ্যাঁ। তবে এখানে নয়, গ্রামের বাড়িতে।
কোথায় গ্রামের বাড়ি?
বহুদূর। ত্রিপুরা।
ত্রিপুরা? ত্রিপুরার কোথায়?
বিলোনিয়া মহকুমা।
বিলোনিয়া!
হ্যাঁ। চেনো তুমি?
আমি খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বললাম, তোমার দাদাবাড়ি ছিল দক্ষিণ অলকানগর?
হ্যাঁ। আশ্চর্য! তুমি কীভাবে জানো?
এক মেঘলা রাতে ছাতিমতলায় এক 888sport appsি তরুণ তোমার খোঁপায় নাক ডুবিয়ে বলেছিল, তোমার টোলপড়া গালের দিকে তাকিয়ে থেকে আমি একজীবন কাটিয়ে দিতে পারব।
সুবর্ণা চমকে উঠল। মুখ হাঁ করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
কে তুমি? সুবর্ণার বুকের গভীর থেকে উঠে আসা জিজ্ঞাসা।
আমি তোমার চেহারা ভুলে গিয়েছিলাম। ভুলে তো যাওয়ারই কথা। পঁচিশ বছর তো কম সময় নয়। পৃথিবীর কত কিছু বদলে গেছে। তুমিও। শুধু রয়ে গেছে তোমার টোলপড়া গালের সেই অপূর্ব হাসি। কী আশ্চর্য দেখো, ফেসবুক কীভাবে আমাদের ফিরিয়ে নিয়েছে পঁচিশ বছর আগে।
সুবর্ণার পলক পড়ে না। বিস্ময়ে সে রুদ্ধবাক। চোখদুটো ঘামতে শুরু করেছে তার। অশ্রু যখন বাঁধ ভাঙছিল, আমাকে জড়িয়ে ধরে সে কাঁদতে শুরু করল। তার মাথাটা বুকে নিয়ে আমি হাত বুলাই। আমিও আর কান্না রুখতে পারলাম কই। বিগলিত অশ্রুতে ভেসে যেতে লাগল সুবর্ণার কাঁধ। আমি তার খোঁপায় নাক ডুবিয়ে দিলাম। বহু বছর পর আমার নাকে ঝাপটা দিলো ছাতিম ফুলের মনমাতানো গন্ধ। কিন্তু আমি ঠিক বুঝতে পারি না তার কান্নার কারণ। কেন কাঁদছে সে? ছাতিমতলার সেই মেঘাক্রান্ত সন্ধ্যার জন্য, নাকি পিতৃভূমি অলকানগরের জন্য? r

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.