সৈয়দ আব্দুর রহমান ফেরদৌসী ও আনোয়ারা বেগমের প্রথম সন্তান সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ১৯৩০ সালের ১৪ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র নয় বছর বয়সে মাতৃবিয়োগ ঘটে। তারপর বিধবা খালা দ্বিতীয় মা। তিনি মাতৃস্নেহের অভাব ঘুচিয়ে দেন, মায়ের অভাব সিরাজ বুঝতে পারেননি। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজরা ছিলেন আট ভাই; প্রথম মায়ের চার ভাই এবং দ্বিতীয় মায়ের চার ভাই। অবাক কাণ্ড যে, তাঁরা আট ভাই-ই জন্মগতভাবে 888sport live footballপ্রতিভার অধিকারী, 888sport live footballচর্চায় ব্রতী এবং লেখালেখিতে জড়িত। সিরাজের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম গৃহিণী, কবি এবং তাঁর একটি প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ লাল শিমুলের দিন। তাঁর প্রথম লেখা 888sport alternative link কিংবদন্তীর নায়ক সেভাবে আলোচনায় আসেনি।
বিভিন্ন সূত্র ঘেঁটে সিরাজের প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার তেমন উল্লেখযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। ধরে নেওয়া যায়, তিনি প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন, ‘হলে হবে না হলে নাই’ এমন মনোভাবে। এ-কারণে তাঁর লেখাপড়ার তেমন কোনো জোরালো তথ্য পাওয়া যায়নি। বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ১৯৫০ সালে তৃতীয় বিভাগে বিএ পাশ করেন, বর্তমান লেখকের এটুকু জানার সুযোগ হয়েছে। অলীক পুরুষ 888sport alternative linkের মাধ্যমে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ 888sport live chat888sport live footballে তাঁর যে প্রজ্ঞার গভীরতার প্রমাণ দিয়েছেন, সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অতিশয় গৌণ।
বিএ পাশ করার পর মেদিনীপুরের পানিপারুলে কয়েক মাস সিভিল সাপ্লাই ডিপার্টমেন্টে চাকরি করেন। তারপর কলকাতায় ইত্তেফাক পত্রিকায় সহসম্পাদক হন। ১৯৪৯ সালে দেশ পত্রিকায় ‘আমার বাউলবন্ধুরা’ প্রথম লেখা ছাপা হয়। ১৯৬২ সালে দেশ পত্রিকায় তাঁর গল্প ‘ভালোবাসা ও ডাউন ট্রেন’ প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৯৭১ সাল থেকে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার বার্তা বিভাগে চাকরি শুরু করেন। লেখালেখির শুরুর দিকে তিনি অনেক 888sport app download apk লিখেছিলেন; কিন্তু পরে 888sport app download apkর ময়দান থেকে কথা888sport live footballের ময়দানে তিনি প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন।
তিনি বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। আড়াইশো বই লিখেছেন। নিশিমৃগয়া, নিষিদ্ধ প্রান্তর, প্রেম ঘৃণা দাহ, কামনার সুখ-দুঃখ, আসমানতারা, সীমান্ত বাঘিনী, কৃষ্ণা বাড়ি ফেরেনি, হেমন্তের বর্ণমালা, বসন্ততৃষ্ণা, নিষিদ্ধ অরণ্য, নটী নয়নতারা, প্রেমের নিষাদ, মায়ামৃদঙ্গ প্রভৃতি তাঁর পাঠকনন্দিত 888sport alternative link।
সিরাজের প্রকাশিত প্রথম 888sport alternative link নীলঘরের নটী (১৯৬৬)। এরপর লিখেছেন হিজলকন্যা (১৯৬৭), তৃণভূমি (১৯৭০), মায়ামৃদঙ্গ (১৯৭২), উত্তর জাহ্নবী (১৯৭৪), নিলয় না জানি (১৯৭৬)। তাঁর লেখা কিশোরদের জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজ কর্নেল। তাঁর পরিবারই ছিল শিক্ষা ও সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র। পরিবার থেকেই তাঁর 888sport live footballপ্রজ্ঞা ও প্রতিভার ভিত্তি তৈরি হয়। তিনি যৌবনের প্রারম্ভে লোকনাট্যদল ‘আলকাপ’-এ যুক্ত থাকার কারণে সংস্কৃতিচর্চার আরেকটি প্ল্যাটফর্ম পেয়ে যান এবং এই দলের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, বীরভূম, দুমকা প্রভৃতি এলাকার বিভিন্ন স্তরের ও শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মিশেছেন এবং পরিচিত হয়েছেন তাঁদের জীবনের সঙ্গে। স্বচক্ষে দেখা নানান পেশা, শ্রেণি ও জাতের মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া এবং বিচিত্র নিসর্গকে উপভোগ করার সুবাদে তাঁর লেখার জগৎ বিস্তৃত হয়। আলকাপ দলের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি লেখেন মায়ামৃদঙ্গ নামে আলোচিত ও জনপ্রিয় 888sport alternative link।
তিনি মোট একশ পঞ্চাশটি 888sport alternative link ও তিনশোটি ছোটগল্প লিখেছেন। ২০১২ সালের ৪ঠা সেপ্টেম্বর এই কৃতি লেখকের জীবনাবসান ঘটে।
888sport alternative linkের ভিত্তি
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের অলীক মানুষ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের প্রচলিত ও প্রথাগত ছকভাঙা নতুন ধারায় কোলাজধর্মী ধ্রুপদী 888sport alternative link। কাহিনির ভিত্তিতে রয়েছে ধর্ম ও মার্কসবাদী দর্শনের বাস্তবতার দ্বান্দ্বিকতা, ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনের সক্রিয়তা, ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের সম্প্রদায়গত মতানৈক্য এবং ইসলাম ধর্মের মিথ ও অলীক কল্পনার জটিল রসায়ন। এগুলো ছাড়াও আখ্যান জুড়ে অনুঘটক হিসেবে রয়েছে পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থের বাণী এবং পৃথিবীর বিখ্যাত কবি, 888sport live footballিক ও দার্শনিকের প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অনেক উদ্ধৃতি। বাস্তবতা ও অলীক ঘটনার মিশ্রণে রাঢ় বঙ্গের গ্রামীণ ও ধর্মীয় সংস্কৃতির আবহে চিত্রিত হয়েছে 888sport alternative linkের পটভূমি। কাহিনি সৃষ্টিতেও রয়েছে নানা চমক।
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ জন্মগতভাবে 888sport live chatী ও লেখক সত্তার অধিকারী। রাঢ় বঙ্গের আলো-বাতাস-মাটি ও মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসার মধ্যে একাত্ম হয়ে বড় হয়েছেন। এ-কারণে তাঁর কথা888sport live footballে রাঢ় বঙ্গের মানুষের বাস্তব জীবনাচার এবং নৈসর্গিক রূপমাধুর্য বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে। তিনি শৈশব থেকে বাঁশিতে তুলতে পারতেন মায়াবী সুর। পরবর্তীকালে তাঁর মায়াবী বাঁশির সুরই কলকাতায় বড় বড় লেখক-888sport live chatীর সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করেছে।
জাহিরুল হাসান-রচিত লেখকের প্রামাণ্য জীবনীগ্রন্থ সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ও বাঙালি সমাজ, সোহারাব হোসেন-রচিত 888sport liveগ্রন্থ অলীক মানুষ 888sport alternative linkের অন্দর-বাহির পাঠ এবং সিরাজের ছোট ভাই কবি সৈয়দ হাসমত জালালের সঙ্গে অনুপ্রাণন প্রকাশন কার্যালয়ে তাঁদের পারিবারিক জীবন ও অলীক মানুষ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর জানা যায় যে, তাঁদের পরিবারের পূর্বপুরুষদের ইতিহাস যেমন চমকপ্রদ, ঠিক তেমনি শিক্ষাদীক্ষায় ঐশ্বর্যপূর্ণ। বিত্তবৈভব বলতে ছিল অসংখ্য কেতাব, যেগুলো বাড়িবদলের সময় শুধু বই স্থানান্তরের জন্য কয়েকটি গরুর গাড়ির প্রয়োজন হতো। সিরাজের পিতামহ ছিলেন ধর্মপ্রাণ সুশিক্ষিত, সেকুলার ও আধুনিকমনস্ক ফরাজি মুসলমান। সিরাজের বাবাও ধর্মপ্রাণ সেকুলার মনোভাবের আধুনিক মানুষ ছিলেন, রাজনীতিবিদ এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। নেতাজি সুভাষ বসুর সঙ্গে একই মঞ্চে তাঁর ছবিও রয়েছে। সিরাজের মা আনোয়ারা বেগমের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পারিপার্শ্বিক কারণে দ্বিতীয় শ্রেণিতে থেমে গেলেও পারিবারিক লাইব্রেরিতে থাকা অসংখ্য বই পড়ার সুযোগ হয়েছিল তাঁর এবং তিনি একাগ্রতার সঙ্গে আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষার গ্রন্থাদি পড়তেন। বিয়ের আগে তাঁর অর্থাৎ সিরাজের মা আনোয়ারা বেগমের লেখা পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। আনোয়ারা বেগমের 888sport app download apk, গজল ও 888sport liveাদি তখনকার সময়ের নামিদামি পত্রিকায় ছাপা হতো। সিরাজের বাবা সৈয়দ আবদুর রহমান ফেরদৌসী স্কুলে পড়ার সময় মহাত্মা গান্ধির ডাকে স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। পরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন কি না জানা যায়নি। তিনি তিনশো পৃষ্ঠার অধিক মদিনা থেকে মুর্শিদাবাদ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে তাঁদের পারিবারিক ইতিহাস উৎকীর্ণ হয়েছে। তাঁর তথ্যাদিতে সাতান্ন পুরুষের বংশতালিকা থেকে জানা যায় যে, তাঁদের পরিবারের শিকড় আরব ভূমিতে এবং তাঁরা হজরত আলির বংশধর। বিস্ময়ের বিষয় যে, তাঁদের পারিবারিক ইতিহাস যেন রাজা-বাদশার কিংবা পির-আউলিয়াদের ইতিহাসকেও ছাপিয়ে যায়। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের 888sport alternative link অলীক মানুষ, বৈতালিক, হিজলকন্যা এবং বেশকিছু গল্প নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তাঁর পারিবারিক ইতিহাস এবং জীবন সম্পর্কে জানা অত্যাবশ্যক। অলীক মানুষ 888sport alternative linkের প্রধান চরিত্র বদিউজ্জামান সিরাজের দাদাজির ছায়া অবলম্বনে চিত্রিত। এ কথা লেখক এবং লেখকের ভাই কবি সৈয়দ হাসমত জালালও স্বীকার করেছেন। বদিউজ্জামানের কনিষ্ঠ পুত্র শফিউজ্জামান শফির চরিত্রে সিরাজের বাবার ছায়া কিছুটা দেখা যায়। তবে লেখক এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি। এই দুটি চরিত্র ছাড়াও বদিউজ্জামানের ছোট ভাই ফরিদউজ্জামানের প্রত্যক্ষ ছায়া মেলে সিরাজের পিতামহীর পিতামহ ওস্তাদ সানোয়ার উদ্দিনের মধ্যে। ওস্তাদ সানোয়ার উদ্দিন ছিলেন সংগীতপাগল মানুষ। তিনি সংগীতচর্চার জন্য লখনৌতে গিয়ে বিশজন ওস্তাদের কাছে সংগীত শিখে শাস্ত্রজ্ঞ হয়েছিলেন। তিনি বাবরি চুল রাখতেন এবং গেরুয়া পোশাক পরতেন। এগুলো তাঁর পাঁচ ধার্মিক ছেলে মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা বাবার চুলদাড়ি কেটে দেন এবং তাঁকে গেরুয়া পোশাক ছাড়তে বলেন। ওই সময় তিনি জ্ঞান হারিয়েছিলেন, তাঁর জ্ঞান আর ফেরেনি। ওই চরিত্রটি যেমন বিস্ময়কর তেমনি ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণে 888sport live chat-888sport live footballের নিষ্ঠাবান একজন মানুষের করুণ পরিণতি, একটি মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। ওস্তাদ সানোয়ার উদ্দিনের নাতনি শরিফ-উন-নিসা সিরাজের দাদি। কয়েকটি চরিত্রের মধ্যে তাঁদের পারিবারিক জীবনের ছায়া উপলব্ধি করা যায়। একইসঙ্গে খোসবাসপুর গ্রামের আশপাশের গ্রাম, জল ও অরণ্যভূমি যেমন – দ্বারকা ও ময়ূরাক্ষী নদী, গোকর্ণ হিজল ইত্যাদি এলাকার তৎকালীন নিসর্গের যে-বর্ণনা অলীক পুরুষে উৎকীর্ণ হয়েছে তাতে লেখকের বাল্যজীবনের ঘনিষ্ঠতা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। বিভিন্ন লেখকের মতামত থেকে স্পষ্ট যে, লেখার জন্য লেখকের অভিজ্ঞতার ভিত্তি প্রয়োজন। যাঁর অভিজ্ঞতা যত বেশি তাঁর লেখা তত সমৃদ্ধ। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজও বলেছেন যে, লেখা তো আর আকাশ থেকে পড়ে না। প্রশ্ন উঠতে পারে, অভিজ্ঞতা বলতে কী বোঝায়? যেসব চরিত্র ও কাহিনি সৃষ্টি করা হয় সেসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে? তাহলে লেখকের কল্পনাশক্তি কতটুকু কাজ করে? এসব প্রশ্নের উত্তর তিনিই পাবেন যিনি উত্থাপন করেন বা করবেন। লেখকের শ্রুত একটি শব্দ, একটি ঘটনা কিংবা প্রত্যক্ষকৃত নিসর্গের বর্ণনায় কল্পনার রং চড়ানো ছাড়া কোনো ভালো 888sport live footballকর্ম হতে পারে না। নিজের গ্রাম বা পরিবারের কাহিনি থেকেও ধ্রুপদী ধারার 888sport live football সৃষ্টি হতে পারে। তবে স্বচক্ষে দেখা বা স্বকর্ণে শ্রুত বিষয়কে সরাসরি 888sport live footballের ক্যানভাসে উপস্থাপন করলে সেটি আর 888sport live football থাকে না, সেটা হয়ে যায় 888sport world cup rate, কিংবা খবরের কাগজের খবর। অভিজ্ঞতা থেকে আখ্যানের ছায়াটুকু গ্রহণ করে তারপর নিজের পঠনপাঠন, উপলব্ধি, অর্জিত জ্ঞান ও কল্পনার আলোকে লেখার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ ও ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করেন লেখক, যা হয় পাঠকের কাছে আদৃত। যা দেখা হয় তাই যদি লেখা হয় সেগুলো নিঃসন্দেহে দুর্বল 888sport live football। তবে এমনটি ভাবার কারণ নেই যে, এ-ধরনের 888sport live footballের পাঠক পাওয়া যাবে না; 888sport live footballমান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বা উঠতে পারে। বোদ্ধা পাঠক ও সমালোচকদের কাছে ‘যা দেখা হয় তা লেখা হয়’ – এই ধরনের 888sport live football সমাদর পাওয়ার কথা নয়। ‘বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে রচিত’ যেসব আখ্যান বা গ্রন্থে লেখা থাকে, সেসব দুর্বল 888sport live football, অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্ট। লেখক কতটুকু রং চড়াতে পারলেন, কতটুকু ভাষার ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করতে পারলেন, মাল-মসলায় সুস্বাদু রন্ধনকর্ম হলো কি না – সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গটি এসেছে অলীক মানুষ 888sport alternative linkের প্রধান চরিত্রটি লেখকের দাদাজির ছায়া অবলম্বনে সৃষ্টি – এই কথা থেকে। কিন্তু সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ এই 888sport alternative linkে যে 888sport live chatরস, ভাষার ব্যঞ্জনা, কাহিনির বিন্যাস, চরিত্রগুলোর পারস্পরিক যৌক্তিক বিশ্বস্ত যোগসূত্রতা, দেশ ও কালের বাস্তবানুগ ঘটনাবলি রহস্যময় ক্যানভাসে যে বৈদগ্ধ্যে ও নৈপুণ্যে সৃষ্টি করেছেন, সেটিকে সাধারণ কোনো 888sport live footballকর্ম বলার অবকাশ নেই। তিনি কেবল আকর্ষণীয় কাহিনিই সৃষ্টি করেননি, প্রচলিত ধারার 888sport alternative linkের কাঠামো বা ছক ভেঙে একটি অভিনব কাঠামো বাংলা 888sport live footballে সংযোজন করেছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নতুন কিছু সৃষ্টি করা কোনো সহজ ঘটনা নয়। এই জন্য লেখকের থাকে ঝুঁকি। এই ঝুঁকি নেওয়ার জন্য লেখকের সাহসেরও প্রয়োজন।
888sport alternative linkের কাঠামো বিশ্লেষণ
888sport alternative linkের আলোচনার প্রারম্ভেই এর কাঠামো নিয়ে একটি ধারণা দেওয়া যেতে পারে। আমাদের পঠিত মুদ্রণের গ্রন্থটিতে 888sport free bet দিয়ে কোনো অধ্যায়কে চিহ্নিত না করে একটি প্রতীকী ঘোড়া বা অন্যভাবে বললে গ্রামীণ মেলায় মাটির পুতুল ঘোড়ার প্রতিকৃতি দিয়ে অধ্যায়গুলো সূচিত হয়েছে এবং ঘোড়া প্রতীকসূচিত মোট তেইশটি অধ্যায়ের মধ্যে আরো অনেক পরিচ্ছেদ বা উপঅধ্যায়ের বলয়ে তিনশো কুড়ি পৃষ্ঠায় প্রায় দেড়শো বছরের সময়ের ব্যাপ্তিতে পুরো 888sport alternative linkটি গৌতম রায়ের 888sport live chatমানের প্রচ্ছদে মলাটবন্দি হয়েছে। 888sport live footballবোদ্ধারা কেন অলীক মানুষ 888sport alternative linkকে প্রচলিত ছকভাঙা ও কোলাজ প্রকৃতির বলে থাকেন, তার প্রথম কারণটি হলো – সাধারণত আমরা কোনো 888sport alternative linkের ন্যারেটর বা কথককে দুটি রূপে দেখতে পাই। একটি ‘নামপুরুষ’ বা ‘থার্ড পারসন’ এবং অন্যটি ‘উত্তম পুরুষ’ বা ‘ফার্স্ট পারসন’। একই 888sport alternative linkে সাধারণত কথক বা ন্যারেটর থাকে একজন, হয়তো ‘নামপুরুষ’ নয়তো ‘উত্তম পুরুষ’। ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নয়। যেমন – রবীন্দ্রনাথের চতুরঙ্গ, সতীনাথ ভাদুড়ীর জাগরী, হুমায়ূন আহমেদের শ্যামল ছায়া ইত্যাদি 888sport alternative linkের একেক অধ্যায়ের কথক একেকজন। হালে, এ-বছরের 888sport live footballে নোবেল 888sport app download bd বিজয়ী হান কানের দ্য ভেজিটারিয়ান 888sport alternative linkের তিনটি অংশের একটি অংশ উত্তম পুরুষে বর্ণিত।
উল্লিখিত 888sport alternative linkের তিনটি অংশের প্রতিটি অধ্যায়ের কথক বা ন্যারেটর একজন। অলীক মানুষ 888sport alternative linkে কোন চরিত্র কখন কথকের ভূমিকায় ক্যানভাসে ঢুকেছে তা অনেকটা দুর্বোধ্য। গভীর মনোযোগী পাঠক ছাড়া ন্যারেটরের বিষয়টি দৃষ্টি এড়িয়ে যাবে। এই 888sport alternative linkের কাঠামো বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিভিন্ন অধ্যায়ে বিভিন্ন কথক বা ন্যারেটর। কোন অধ্যায়ে এবং কোন পরিচ্ছদের কথক বা ন্যারেটর কে তা নিচের ছকে দেওয়া হলো :
কথক অধ্যায় ও পরিচ্ছেদ
নামপুরুষ (থার্ড পারসন) ১-৫, ৭-৮, ১০-১১, ১৩ (পরিচ্ছেদ ৩), ১৬ (পরিচ্ছেদ ১), ১৮, ১৯, ২০, ২৪, উপসংহার
পির বদিউজ্জামন ১৩ (পরিচ্ছেদ ১, ৫-৯), ১৬ (পরিচ্ছেদ ৩), ১৮, ২১
শফিউজ্জামান শফি ৬, ৯. ১২, ১৩ (৪ পরিচ্ছেদ), ১৪ (২ ও ৪ পরিচ্ছেদ), ১৫
(২-৩), ১৭, ১৯, ২২, ২৩
রুকু ও কচির সংলাপ (মুখ্য রুকু) ১৪ (১ ও ৩ পরিচ্ছেদ), ১৫ (পরিচ্ছেদ ১ ও ৪), ১৬ (পরিচ্ছেদ ২), ১৮ ও ২৩ (পরিচ্ছেদ ২)
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রচলিত 888sport alternative linkের কাঠামোতে সাধারণত অধ্যায়ে পরিচ্ছেদ থাকে না, বিভাজিত অধ্যায় থাকে। কিন্তু অলীক মানুষে কোনো কোনো অধ্যায়ে কয়েকটি পরিচ্ছেদ রয়েছে এবং কথকেরও পরিবর্তন হয়েছে। অধ্যায় ১৮ এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। এ-অধ্যায়ের কথক নামপুরুষ, বদিউজ্জামান ও সংলাপ (মুখ্যত রুকু)। কোনো কোনো অধ্যায়ে ও পরিচ্ছদে রয়েছে এপিগ্রাম। দুটি ক্ষেত্রে মেটাফিকশনের বৈশিষ্ট্যও পরিলক্ষিত হয়।
যেহেতু এই কাহিনি 888sport alternative linkের ছকবাঁধা নিয়মে ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর বা নির্মিত হয়নি, অর্থাৎ কাহিনির উত্তরণ, ক্লাইমেক্স এবং নিম্নগামী উপসংহারে সমাপ্তির নিয়ম মানা হয়নি সেহেতু কথকের পরিবর্তনের মাধ্যমে অত্যাবশ্যকীয় রসব্যঞ্জনার সৃষ্টি হয়েছে। শফি ও রুকুর কথন চেতনাপ্রবাহ রীতিতে (stream of conciousness) বর্ণিত হওয়ায় গল্পটি আরো রঙিন হয়ে উঠেছে। শফির বর্ণনায় রুকুর প্রতি তার অনুভূতি এবং রুকুর বর্ণনায় শফির বীরত্বগাথা অভিনব কৌশলে উভয়ের প্রেমাকাক্সক্ষার অন্তর্দহন যতটা শৈল্পিকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, সেটা হয়তো মামুলি বা প্রথাগত কাহিনির বর্ণনায় তেমনভাবে হয়ে উঠত না। শেক্সপিয়রের রোমিও জুলিয়েট এবং বাংলা 888sport live footballে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবি 888sport alternative linkের প্রেমকাহিনির মধ্যে নিতাই-ঠাকুরঝি-বসন্তের (বসন) প্রত্যক্ষ রসায়ন ও মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে বিয়োগান্ত মহৎ প্রেমকাহিনি সৃষ্টি হয়েছে; কিন্তু শফি ও রুকুর মধ্যে প্রত্যক্ষ মিথস্ক্রিয়া বা রসায়ন না থেকেও পারস্পরিক অনুভূতির শেষ বয়সের প্রকাশ এতটা প্রগাঢ়তা লাভ করেছে যা যে-কোনো বিয়োগান্ত প্রেমকাহিনিকে ছাপিয়ে পাঠকের মনে খোদিত হতে বাধ্য এবং এই বর্ণনায় রুকু ও শফি কথক হওয়ায় গল্পটি আরো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
কাহিনি-সংক্ষেপ
আধ্যাত্মিক পির এবং দ্বৈত চরিত্রের বদিউজ্জামানের ধর্মীয় ও সংসারজীবনকে কেন্দ্র করে 888sport alternative linkের কাহিনির বিস্তার। আচার-আচরণে বদিউজ্জামান অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির, গুরুগম্ভীর মনোভাবের স্বল্পভাষী ওহাবী ও ফরাজী আন্দোলনের পরস্পর বিপরীত ধর্মীয় মতাদর্শকে ধারণ করতেন। বনের পাখির মতো তাঁর নির্দিষ্ট সাকিন নেই – ঠাঁইনাড়া হওয়া ছিল তাঁর স্বভাব। ওহাবী ধর্মীয় চেতনা ধারণ করার কারণে বদিউজ্জামান একদিন খরগডাঙার খোঁড়াপিরের আস্তানা ভেঙে দিলেন। পির হিসেবে মানুষের সম্মান অর্জন করতে সক্ষম হন এবং এ-কারণে জমিদার বা ধনাঢ্য মানুষেরা তাঁকে সপরিবারে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করত। তবে সম্পদের প্রতি ছিলেন নির্লোভ ও নির্মোহ। মুরিদদের দেওয়া জিনিসপত্র, টাকা-পয়সা নিজে প্রয়োজনমতো ভোগ করে বাকি বিলিয়ে দিতেন বা মাদ্রাসা ও এতিমখানার জন্য খরচ করতেন। অথচ সম্পদের পাহাড় গড়ার মতো সুযোগ তাঁর ছিল। তাঁর স্ত্রী সাইদা, তিন পুত্র নুরুজ্জামান, মনিরুজ্জামান ও শফিউজ্জামান ওরফে শফি। শফি কিংবদন্তি বিপ্লবী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। নুুরুজ্জামান দেওবন্দে লেখাপড়া করে বড় মওলানা হয়েছিল। মনিরুজ্জামান মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, যাকে লেখক বা শফি অর্ধমানব আর অর্ধপশু হিসেবেও গণ্য করত। তার মুখ দিয়ে সব সময় লালা ঝরত, বাকপ্রতিবন্ধিতা থাকার কারণে একপ্রকার বিকট শব্দ করে মনের ভাব প্রকাশ করত। 888sport alternative linkের শেষের দিকে মনিরুজ্জামান কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিল। খরগডাঙার পিরের থান ভেঙে দিয়ে বদিউজ্জামান পরিবারসহ কুতুবপুর থেকে তল্পি গুটিয়ে সেকেড্ডায় আস্তানার পত্তনের জন্য একদিন রওনা হয়ে পথিমধ্যে একটি গরুগাড়ির ধুরি ভেঙে গেলে তারা মৌলাহাট গ্রামে আটকা পড়েন এবং গ্রামবাসীর অনুরোধে সে-গ্রামেই বসতি স্থাপন করেন। মূলত মৌলাহাট গ্রামের পটভূমিতে 888sport alternative linkের বিস্তার ও পরিসমাপ্তি ঘটে। এই গ্রামে ধনাঢ্য বিধবা 888sport promo code দরিয়া বিবির দুই যমজ কন্যা দিলরুখ ওরফে রুকু এবং দিল আফরোজ ওরফে রোজি। দুজনের মধ্যে রুকু ছিল বুদ্ধিমতী, সপ্রতিভ ও বাটপটু। কিশোরী রুকুর মনে শফির প্রতি ভালোবাসার টান অনুভূত হতো। ঠিক তেমনি কিশোর শফিও রুকুর প্রতি টান অনুভব করত। তাদের ভালোবাসা প্রচ্ছন্ন। দুজনই প্রেমের দহনে দগ্ধ হয়েছে আজীবন। শফি ছিল প্রতিভাবান ও বুদ্ধিদীপ্ত কিশোর। নুরুজ্জামান ও শফিউজ্জামানের সঙ্গে দুই কিশোরীর একসঙ্গে বিয়ে ঠিকও হয়েছিল। কিন্তু বাল্যবিয়েতে বাদ সাধেন শফির শিক্ষাদীক্ষার অভিভাবক দরিয়া বিবির স্বামী তোফাজ্জল চৌধুরীর বন্ধু নবাব বাহাদুরের কাছারির দেওয়ান চৌধুরী আবদুল বারি ওরফে বারু মিয়া। একরোখা দরিয়া বিবির সিদ্ধান্তে নুরুজ্জামানের সঙ্গে রোজির এবং প্রতিবন্ধী মনিরুজ্জামানের সঙ্গে রুকুর একই দিনে বিয়ে হয়। বারিচাচাজির পরামর্শে ছন্নছাড়া শফিকে হরিণমারায় স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। সেখানে খন্দকার হাসমতের বাড়িতে লজিং থেকে হরিণমারা স্কুলে লেখাপড়া করত শফি। ওই গ্রামে পরিচয় হয় গাজি সাইদুর রহমানের সঙ্গে। তারা দুজনই ইংরেজি শিক্ষিত এবং দাপটের সঙ্গে তেজি ঘোড়ায় চড়তেন, ছিল বন্দুকও। শফিকে ধর্মীয় গোঁড়ামির বেড়াজাল থেকে বের করে বাস্তবতা ও আধুনিক জগতের আলো দেখাতে তাদের ভূমিকাই ছিল মুখ্য। শফিকে ইংরেজি স্কুলে পড়ানোর জন্য বারিচাচাজি (বারু মিয়া) তাকে লালবাগ জমিদারের পারিবারিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দিলেন। শফি ইংরেজ খেদাও আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ল। লালবাগ ছেড়ে চলে গেল নুরপুরে। এখানে গোবিন্দের বাড়িতে থাকত। দেখা হলো স্বাধীনবালার সঙ্গে। স্কুলে পড়ার সময় আসমা নামে এক বেগানা 888sport promo codeর প্ররোচনায় শফি কৌমার্য বিসর্জন দিয়েছিল; কিন্তু এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য সে সারা জীবন অনুতপ্ত ছিল। রুকুর প্রেমে দগ্ধ শফি স্বাধীনবালা নামে এক সমকামী 888sport promo codeর প্রতি টান অনুভব করত। আবার কাল্লুর স্ত্রী সিতারার প্রেমের উসকানিতে শফি সাড়া না দিলেও কিছুটা টান অনুভব করত। মূলত শফির জীবনে প্রেম-ভালোবাসা বা যৌনাক্সক্ষার ক্ষেত্রে আসমা ছাড়া আর কোনো প্রমাণ নেই। শফি মোট পাঁচটি খুন করেছিল। দরিয়া বিবির সম্পত্তি কৌশলে নুরুজ্জামান হাতিয়ে নিল এবং নুরুজ্জামান সপরিবারে খুলনায় চলে গেল। খুনের অপরাধে শফির ফাঁসি হলো। রুকুর ছেলের ঘরে নাতি খোকাও ছিল শফির মতো ডানপিটে ও বিপ্লবী। আর নাতনি কচি মেধাবী ও বুদ্ধিমতী, যার জবানে গোঁড়ামির পরিবর্তে আধুনিকতা সুস্পষ্ট, 888sport apkমনস্ক। অসংখ্য উপাখ্যানের ছড়াছড়ি এবং শতাধিক চরিত্রের মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে 888sport alternative linkটি নির্মিত। শফির মৃত্যুর চল্লিশ বছর পর রুকুর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে 888sport alternative linkের পরিসমাপ্তি ঘটে।
চরিত্র বিশ্লেষণ
অলীক মানুষ 888sport alternative linkের চরিত্রগুলো বিচ্ছিন্নভাবে চিত্রিত হয়েছে আবার অনেক চরিত্র নতুনভাবে হঠাৎ যোগসূত্রহীনভাবে আবির্ভূত হয়ে পরে যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। কোনো কোনো চরিত্র এক ঝলক দেখা দিয়ে আবার হারিয়ে গেছে। চরিত্রের 888sport free betও কম নয়, সব চরিত্রকে মনে রাখা অমনোযোগী পাঠকের পক্ষে হয়তো অসম্ভব হতে পারে। সব মিলিয়ে শখানেক চরিত্র 888sport alternative linkের ক্যানভাসে থাকলেও কোনো কোনো চরিত্রের সঙ্গে মাত্র দু-একবার পাঠকের সাক্ষাৎ ঘটে। কোনো চরিত্রের উপস্থিতি একেবারে নেই, তদুপরি পাঠকের মনে চরিত্রটি ছায়া ফেলে এবং প্রশ্নের উদ্রেক করে – চরিত্রটি কোথায় হারালো কিংবা তার অস্তিত্ব কেন চিত্রিত হয়নি! এমন একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র রুকুর ছেলে রফিকুজ্জামান। কৌশলী লেখক হয়তো 888sport live chatের খাতিরে রফিকুজ্জামানকে পর্দায় না এনেও পাঠকের চিন্তা ও ভাবনার জায়গাটি রেখে দিলেন। এদিক থেকে এই ধরনের অনুপস্থিত চরিত্রও 888sport live chatের সৃষ্টি হতে পারে। গ্যাব্রিয়েলা মার্কেজের লাভ ইন দ্য টাইম অফ কলেরা 888sport alternative linkে ফাহমিদার মেয়ে থাকলেও গল্পের আড়ালে রাখা হয়েছে এবং শেষের দিকে একবার পর্দায় আবছা ছায়ার মতো তাকে উপস্থাপন করা হয়েছে। গ্যাব্রিয়েলা আঁটসাঁট গল্পের মধ্যে থেকেছেন, অতিরিক্ত চরিত্র জুড়ে দিয়ে গল্পের শক্ত গাঁথুনিকে শিথিল করা হয়নি।
প্রচলিত ধারায় 888sport alternative linkের প্রধান চরিত্র বা নায়ক বা প্রোটাগনিস্ট শফিউজ্জামান ওরফে শফি এবং নায়িকা দিলরুখ ওরফে রুকু। শফি ও রুকুর ভালোবাসা অনঙ্কুরিত, চাপা কান্নায় তারা দুজনই সিক্ত। কিন্তু লেখক এই চাপা কান্নাকে কিছুটা প্রকাশ করেছেন শফির আত্মকথন ও 888sport sign up bonusচারণের মধ্য দিয়ে। বিমূর্ত অন্তর্দহন যে গভীর অনুভূতির শৈল্পিক ধারায় লেখক 888sport alternative linkজুড়ে চিত্রিত করেছেন তা হয়তো জোলো প্রেমের বর্ণনার চেয়ে অনেক উজ্জ্বল ও জ্যোতি ছড়ানো আলোকছটা। কোথায় যেন অন্তঃশীলা প্রবহমান, কোথায় যেন অনুভূতির শিহরণ!
বদিউজ্জামান
বদিউজ্জামানের পুরো নাম ‘হজরত সৈয়দ আবুল কাশেম মুহম্মদ বদি-উজ্-জামান আল্-হুসাইনি আল্-খুরাসানি’, যাকে ভিত্তি করে অথবা অন্যভাবে বলা যেতে পারে, যাকে চিত্রিত করার জন্য অলীক মানুষ 888sport alternative link রচিত। কাহিনি সংক্ষেপে ঠাঁইনাড়া বদিউজ্জামানের চরিত্রের একটি স্কেচ দেওয়া হয়েছে। তিনি স্বভাবে নিভৃতচারী, একাগ্রে প্রার্থনার জন্য মসজিদে একাকী থাকা, মৃদু ও স্বল্পভাষী, নিজ সিদ্ধান্তে অবিচল অটল, দৃঢ় মনোবলের মানুষ নিঃসঙ্গ থাকতে পছন্দ করেন। তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই এতেকাফে কাটিয়েছেন। নির্দিষ্ট একটি স্থানে তাঁকে বেশি দিন থাকতে দেখা যায়নি। বিয়ের আগে তিনি কোনো এক নির্জন পাহাড়ে ধ্যানমগ্ন ছিলেন এবং বিয়ের পর বালিকা বধূকে রেখে পালিয়ে গিয়ে তিন বছর নিরুদ্দিষ্ট ছিলেন। এরপর পদ্মার তীরবর্তী কাঁঠালিয়া গ্রামে সস্ত্রীক বসবাস শুরু করেন। এই গ্রামেই শফির জন্ম এবং শফির তিন বছর বয়সে কাঁঠালিয়া থেকে পোখরায় চলে যান এবং পাঁচ বছর বয়সে পোখরা থেকে বিনুটি-গোবিন্দপুর চলে যান। দশ বছর বয়সে নবাবগঞ্জ, বারো বছর বয়সে কুতুবপুর, ষোলোতে খয়রাডাঙ্গা, সতেরো বছরে খয়রাডাঙ্গা থেকে মৌলাহাট। মৌলাহাট থেকে তিনি নুরপুরও কিছুদিন ছিলেন। সেখানে ইকরাতুনকে বিয়েও করেন। তবে 888sport alternative linkের কাহিনির বিস্তার ও পরিসমাপ্তি মূলত মৌলাহাট থেকে।
বদিউজ্জামানের পোর্ট্রটেটি পুঙ্খানুঙ্খ বিশ্লেষণ করলে হয়তো একটি পুস্তিকা হয়ে যাবে। তাই মোটা দাগে দেখার প্রয়াস চালানো হয়েছে। তাঁর পোর্ট্রেটটি ধার্মিকতার চাদরে চরম বৈরাগ্যের এক প্রতিরূপ। বাংলা 888sport live footballে পির বা বুজুর্গ ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচিত সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর লাল সালু ও চাঁদের অমাবস্যা 888sport alternative link দুটির প্রধান চরিত্র দুটি হিপোক্রেট বা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে চিত্রিত হয়েছে। অলীক মানুষ পাঠের সময় এমন একটি হিপোক্রেট চরিত্রের ছায়া দেখা কিংবা পাঠক প্রত্যাশা করলেও প্রকৃতপক্ষে বদিউজ্জামানের চরিত্রে হিপোক্রেসি ছাপিয়ে সংসারবৈরাগ্য, সম্পদঔদাস্য, কামপ্রবৃত্তিসংযমীর স্বরূপ পরিস্ফুটিত হয়েছে। তিনি ইচ্ছে করলে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলতে পারতেন, রাজার হালে থাকতে পারতেন; কিন্তু তিনি তা করেননি। উপর্যুপরি মানুষের দেওয়া সম্পদ মুক্তহস্তে অন্যদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। অধ্যাত্মবাদের পরম পরাকাষ্ঠা হিসেবে তাঁকে বিবেচনা করা যেত যদি না তিনি ইকরাকে বিয়ে করতেন। ইকরাকে বিয়ে করার মধ্য দিয়ে দুটি বিষয় লক্ষ করা যেতে পারে। প্রথমত ইকরাকে তিনি ধার্মিক বানাতে চেয়েছেন এবং লেখক এও প্রমাণ করেছেন যে, উত্তরাধুনিক ভাবধারায় অ্যাবসুলিউট বলে কিছু নেই। বদিউজ্জামান অসংযত কামপ্রবৃত্তির কারণে ইকরাকে বিয়ে করেননি এবং তাঁর মধ্যে কামুকতার আভাস কোথাও পাওয়া যায় না। তিনি নিজের স্ত্রী-পুত্রদের রেখে মসজিদে থেকে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকতেন, স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের শিথিলতা সারা 888sport alternative linkেই বিরাজমান। তিনি কখনো ফতোয়া দিচ্ছেন, কখনো ধর্মীয় গোঁড়ামিতে বন্দি, আবার কখনো সমাজবাস্তবতাকে আঁকড়ে ধরেছেন। ব্রিটিশদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে – এই বিশ্বাস মনে পোষণ করলেও নিজে সক্রিয়ভাবে কোনো তৎপরতা দেখাননি। তাঁর তিন ছেলের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, স্মার্ট, তুখোড় মেধাবী শফিকে আধুনিক ইংরেজি শিক্ষায় সঁপে দিলেন, যেন সে ইংরেজি শিখে ইংরেজদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে পারে – সে প্রত্যাশায়। তাঁর অন্তরে বিশ্বাসের দুটি ধারা প্রবাহিত : একটি আধ্যাত্মিকতা এবং অন্যটি আধুনিকতা। আধুনিক ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা ধর্মকর্ম করে না, তা জ্ঞাত থেকেও তিনি শফিকে কেন ধর্মীয় লেখাপড়ায় কিংবা ধর্মীয় কাজে উৎসাহিত না করে চৌধুরীর সাহেবের হাতে ছেড়ে দিলেন – এই প্রশ্নটি পাঠকের মনে দেখা দিতে পারে। আবার দেওবন্দে পড়ুয়ারা প্রচ্ছন্ন ভিখারি তৈরি হয় জেনেও তিনি কেন আলীগড়ে না পড়িয়ে বড় ছেলে নুরুজ্জামানকে দেওবন্দে পড়তে পাঠালেন – এই প্রশ্নও দেখা দিতে পারে। নিজে বুজুর্গ পির হয়ে সমাজের মানুষের দায়িত্ব নিয়ে আলোর পথ দেখান ঠিকই; কিন্তু নিজের সন্তানদের প্রতি তিনি কি যথাযথ কর্তব্য পালন করেছেন? শফি কেন তাঁর বাধ্য থাকেনি? পিতা হিসেবে কি তিনি ব্যর্থ? এসব রহস্যাবৃত প্রশ্নের উত্তর পাঠককেই খুঁজে নিতে হবে।
বদি পির নিজে আধিপত্য বিস্তার করতে চাইতেন; কিন্তু তাঁর কথার অবাধ্য হলে সেখানে তিনি আর থাকতেন না। তিনি যখন খয়রাডাঙ্গায় ছিলেন সেখানকার জমিদার আশরাফ খান চৌধুরী তাঁকে পাকা বাড়ি, ইঁদারার সুবিধাসহ জমিজমা দিয়ে থাকতে দিয়েছিলেন। বদি পির গানবাজনা ও খোঁড়া পিরের মাজারে কার্যক্রম হারাম বলে ফতোয়া দিলেন। কিন্তু আশরাফ খান চৌধুরী সংগীতানুরাগী ছিলেন, তিনি গানবাজনা বন্ধ করেননি, মাদ্রাসার ছাত্রদের দিয়ে 888sport alternative link পড়িয়ে তিনি শুনতেন, যা বদি পির মেনে নিতে পারেননি এবং খয়রাডাঙ্গায় এক বছর থেকে মৌলাহাটে এসে থিতু হলেন।
ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপরই তাঁর চরিত্রটি নির্মিত। বদি পির একদিকে শরিয়তপন্থি, অন্যদিকে সংসারবৈরাগী – দুটি পরস্পরবিরোধী বৈশিষ্ট্য তার চরিত্রে বিদ্যমান। ঔদাসীন্য, বৈরাগ্য, আধ্যাত্মিকতা, অলৌকিকতা ইত্যাদি অতীন্দ্রিয়িক বিষয় তাঁর বিশ্বাসের প্রধান ধারা। পক্ষান্তরে জীবনবাস্তবতা এবং কিছুটা রাজনীতির ঈষৎ মিশ্রণ। শেষাবধি শফি বেপথু হওয়ায় তিনি তাকে অভিশপ্ত হিসেবেই ত্যাগ করেন এবং তাকে জীবন ও সংসারমুখী করার কোনো উদ্যোগ নেননি। একজন শরিয়তপন্থি আদর্শ ও মহৎ পিতা হলে পিতৃত্বের মমতা দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল শফিকে নিজের তত্ত্বাবধানে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ তিনি নিতেন। সংসারবৈরাগ্যের কারণে রুকুর মতো বুদ্ধিমতী ও স্মার্ট মেয়েকে, শফির প্রেমিকাকে, প্রতিবন্ধী মনিরুজ্জামানের সঙ্গে বিয়ে দিতেন না। এক্ষেত্রে তিনি বিবেকবর্জিত। এই বিয়ের কারণে রুকু ও শফি দুজনই অন্তর্দহনে আমৃত্যু দগ্ধ হয়েছে। তিনি ইকরাকে বিয়ে করেছেন, আবার তার দ্বিচারিতার কারণে কতল করার হুকুম দিয়েছেন। শরিয়া বিধানে তিনি কতল করেছেন; কিন্তু দেশের আইনে কি তিনি মুক্তি পাবেন? এরকম আরেকটি প্রশ্নও এখানে রয়ে যায়। তারপরও বলা যায়, ইকরাকে কতল করার জন্য তিনি দারুণভাবে অনুতপ্ত এবং মৃত্যুর পর তাঁর নেকির অর্ধাংশ ইকরাকে দিয়ে দেবেন বলে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন। এই ঘটনাটি অলৌকিক ও আধ্যাত্মিকতার আলোকে তিনি মহত্ত্বে উদ্ভাসিত। তাঁর ছোটভাই ফরিদুজ্জামান ছিলেন বুজুর্গ ব্যক্তি; কিন্তু মারফতির গৃহত্যাগী ফকির, তিনি চুলদাড়ি লম্বা করে রাখতেন এবং একদিন বদিউজ্জামান তাঁর চুলদাড়ি কেটে শরিয়তি হতে বাধ্য করলেন। কিন্তু ফরিদ বড় ভাইয়ের কথায় ফিরলেন না এবং পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতেন। তাঁর মা কোনো দিন দেখতে পাননি। অনেকদিন পর বদিউজ্জামানের মসজিদের পাশে তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। তাঁর মৃত্যুতে বদিউজ্জামান অনুতপ্ত ছিলেন।
ময়ূরমুখো ছড়ি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বদি পিরের স্ববিরোধী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। কেননা তিনি মূর্তি বা ছবিকে হারাম বলে ফতোয়া দেন, আবার নিজেই ময়ূরের মুখাঙ্কিত ছড়ি, অর্থাৎ প্রাণীর মূর্তি নিয়ে ঘুরে বেড়ান। জিনকে বাস্তবে তিনি কি কখনো দেখেছেন, নাকি তা অলীকই থেকে গেল, বাস্তবে জিনের কোনো প্রমাণ 888sport alternative linkে না থাকলেও তিনি আমৃত্যু বিশ্বাস করেছেন জিনের অস্তিত্ব। ইসলাম ধর্মানুসারীরা অবশ্যই জিনের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন।
পাহাড়ের গুহায়, বনজঙ্গলের ভেতরে কুটিরে ধ্যানমগ্ন থাকার জন্য তিনি প্রায়ই এতেকাফে বসতেন। এক বৃষ্টিমুখর রাতে স্ত্রীর সান্নিধ্য পেতে মসজিদ ছেড়ে বাড়িতে গেলে সাইদার নিস্পৃহতায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে চপেটাঘাত করে 888sport promo codeর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছেন। তবে ওই মুহূর্তের জন্য একজন পুরুষের এহেন আচরণ অবান্তর নয়, তিনি যদিও পির, তদুপরি। ওই রাতেই তিনি গৃহত্যাগ করে মসজিদে চলে যান। কিন্তু এরপরও শেষ বয়সে স্ত্রীর হাতের রান্না খাওয়ার জন্য তিনি মসজিদ থেকে চিরকুট পাঠিয়েছিলেন; সাইদা নিজের হাতে রান্না করে বোরখা পরে মসজিদে খাবার দিয়ে আসতেন।
অলীক মানুষ 888sport alternative linkে বদিউজ্জামানের চরিত্রটি নিঃসন্দেহে একটি অনবদ্য, ব্যতিক্রমধর্মী ও অসামান্য সৃষ্টি।
সাইদা
সাইদার পিতামাতার সংক্ষিপ্ত পরিচয়ে তাকে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। বড় ভাইয়ের পরিচয় বিশাল আকাশে একটি আবছা ক্ষীণ আলোর রেখার মতো পাওয়া যায়। লেখক ক্যানভাসে বেশি জায়গা দিতে নারাজ ছিলেন হয়তো। তার বড় ভাই মাদকাসক্ত মির আবু তৈয়ব প্রতাপশালী, ডাকাত সরদাররা পর্যন্ত তাকে ভয় পেত। দুটি বিয়ে করেন এবং প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন।
ভ্রাতা-ভগ্নির সম্পর্ক অত্যন্ত শিথিল, 888sport alternative linkের পাতায় তাদের দুজনের একবার একটি বিরোধপূর্ণ পরিবেশে সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। এ পর্যন্তই শফির বয়ানে পাওয়া যায়, যখন শফি পান্না পেশোয়ারিকে খুন করে পালিয়ে মামার বাড়িতে আশ্রয় নিতে গিয়েছিল; কিন্তু বৈরী পরিবেশ এবং মামার অনাত্মীয়ের মতো আচরণের কারণে সেখান থেকে চলে যায়। বদিউজ্জামানের স্ত্রী সাইদা পিরের স্ত্রী হিসেবে সর্বংসহা 888sport promo code হয়েও স্বামীর অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে তাকে তিনবার বিদ্রোহ করতে দেখা যায়। আধ্যাত্মিকতার মোড়কে পতিব্রতে নিঃশব্দে স্বামীর অবহেলা ও অবজ্ঞা তিনি মেনে নেননি। তিনি বুকে পাথর চেপে সংসার করেছেন। এই দম্পতির বৈবাহিক জীবনের প্রথম দিকের দিনগুলো লেখক বর্ণনা করেননি। বাল্যবিয়ে হয়েছিল এবং বিয়ের পরই বালিকাবধূকে ফেলে বদি পির তিন বছরের জন্য উধাও। আখ্যানের শুরু তাদের প্রায় মধ্যজীবন থেকে। এ-কারণে দম্পতির প্রেম-ভালোবাসা, সংসারজীবন পর্দার আড়ালে রয়ে গেছে। সমাজবাস্তবতার আলোকে এই 888sport promo code চরিত্রে মহৎ মাতৃত্বের রূপ সফলভাবে পরিস্ফুটিত হয়েছে। আদরের সন্তান শফি বাড়িতে থাকা পর্যন্ত তাঁকে সুখী মা হিসেবে দেখা যায়; কিন্তু শফির বাড়ি ত্যাগের পর থেকে তাঁর মধ্যে অন্তর্দহন সৃষ্টি হয়, যে দহনে তিনি তিলে তিলে দগ্ধ হয়েছেন। সহ্যেরও সীমা থাকে, সেই সীমা অতিক্রান্ত হলে মানুষ ঘুরে দাঁড়ায়। লেখক সযতনে সাইদাকে শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড় করান এবং 888sport live chatনৈপুণ্যে তাকে স্বামীর আশ্রমে অর্থাৎ মসজিদে পাঠিয়ে প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। 888sport promo codeরা যে প্রতিবাদী হতে পারে – এই চরিত্রে তা সামান্য প্রতিফলিত হয়েছে। যদিও আরো তিনটি 888sport promo code চরিত্রকে তিনি বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করেছেন। সাইদার কয়েকটি প্রতিবাদ : প্রথম প্রতিবাদ করেন বাড়ির চাকর দুখু মিয়ার ভাগ্নে ফজুকে বাঁশি বাঁজানোর অপরাধে পিটিয়ে বরইগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হলে। সাইদা রাতে গিয়ে ফজুর বাঁধন খুলে মুক্ত করে দেন। পির বদিউজ্জামান মসজিদে থেকে ইবাদত-বন্দেগি করতেন, স্বগৃহে কদাচিৎ আসতেন। স্বামীকে কাছে পাওয়ার প্রত্যাশায় তিনি প্রতিদিনই অপেক্ষা করতেন। এক বর্ষণমুখর রাতে পির সাহেব স্ত্রীসঙ্গের আশায় বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি এলেও সাইদার নিস্পৃহতায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে চপেটাঘাত করেন। নিস্পৃহতা ছিল সাইদার প্রতিবাদ। প্রতিবন্ধী ছেলে মনিরুজ্জামানের ছেলে হলে মসজিদ থেকে পির বদিউজ্জামান ‘কামরুজ্জামান’ নাম রাখার জন্য একটি কাগজে লিখে সাইদার কাছে পাঠালে তিনি সেটি ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে ওর নাম রাখেন রফিকুজ্জামান। রফিকুজ্জামানকে সংক্ষেপে ‘রফি’ ডাকা হতো। সাইদা ছিলেন অত্যন্ত মানবিক। মসজিদে থাকার সময় রুকুর রান্নার চেয়ে সাইদার রান্নার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করলে সাইদা বোরখা পরে স্বামীর জন্য খাবার দিয়ে আসতেন। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে উষ্ণতা নেই, সম্পূর্ণ 888sport alternative linkে শীতল আবহে দাম্পত্য জীবনকে উপস্থাপন করা হয়েছে। শফির জন্য তাঁর হাহাকার থাকলেও অন্য দুই সন্তানের প্রতি কোনো বৈরী মনোভাব প্রকাশ পায়নি। অবশ্যই শফির জন্য তাঁর আন্তরিক টান বেশি থাকার কথা। কারণ শফি সব সময় মায়ের কাছে ছিল, সে দুরন্ত, স্মার্ট ও প্রতিভাবান এবং কনিষ্ঠ সন্তান। প্রকৃতির নিয়মেই প্রথম ও শেষ সন্তানের প্রতি মা-বাবার বেশি টান থাকে। শফির প্রতিও তাই ছিল। মনিরুজ্জামানের ক্ষেত্রে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে দুয়েকবার উন্নাসিক মনোভাব প্রকাশ পেলেও অবজ্ঞা বা অবহেলা ছিল না, বরং নিজের কষ্টের বহিঃপ্রকাশ ছিল। আদর্শিক ও মানবিক কারণে সাইদা এই 888sport alternative linkের একটি মহৎ চরিত্র।
শফিউজ্জামান ওরফে শফি
পদ্মার তীরবর্তী কাঁঠালিয়া গ্রামে শফির জন্ম, তারপর ঠাঁইনাড়া চলে পরিবারের সঙ্গে। কুতুবপুরে নিসিং পণ্ডিতের পাঠশালায় তার লেখাপড়ার সূচনা, যে পাঠশালায় মুসলমানদের পড়া নিষেধ থাকলেও পির সাহেবের ছেলে হয়তো ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। পণ্ডিতের বেত্রাঘাত তাকে সহ্য করতে হতো। বৃত্তি পরীক্ষার আগেই কুতুবপুর থেকে খয়রাডাঙ্গায় স্থানান্তর, যখন শফির বয়স ষোলো বছর এবং সতেরো বছরে মৌলাহাটে স্থানান্তর। 888sport alternative linkে সতেরো বছর বয়স থেকে মূলত শফির চরিত্রটি বিকশিত হয়েছে। সেই সময়কার বৃত্তি পরীক্ষা বলতে কী বোঝায় তাও আমাদের বোধগম্য নয়। সতেরো বছর বয়সে শফি হরিণমারায় কোন শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল, সেখানে কত দিন ছিল এবং সেখান থেকে লালবাগে কোন শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল – এগুলো অনুল্লেখ থাকায় শফির বয়স ও শিক্ষাদীক্ষার সঙ্গে কার্যকারণ সম্পর্ক স্থাপন করতে ধোঁয়াশা দেখা দিতে পারে। যেহেতু খয়রাডাঙ্গা ও মৌলাহাটে শফি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা অপ্রাতিষ্ঠানিক পাঠ্যক্রমে বা পাঠচক্রেও ছিল না, সেহেতু ধরে নেওয়া যায় সে ঘুরে বেরিয়েছে। বারি চৌধুরীর আবদারের পরিপ্রেক্ষিতে বদি পির শফিকে ‘হরিণমারা প্রসন্নময়ী হাই ইংলিশ স্কুলে’ পাঠান, যেখানে খন্দকার হাসমতের বাড়িতে লজিং থেকে তার লেখাপড়া শুরু হয়।
হরিণমারার থেকে বড় গাজির ইচ্ছায় সে লালবাগ নবাব বাহাদুরের পারিবারিক ইংরেজি শিক্ষা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল নমনীয়, বাঁধাধরা কঠোর নিয়ম ছিল না। শফির চরিত্রের উত্তরণ, অর্থাৎ জীবনের মোড় ঘোরে লালবাগ থেকে। সহপাঠী বিড্ডু এবং কাল্লুর ভাই চুল্লুর সঙ্গে মিশে লালবাগের অলিগলি, এমনকি বেশ্যালয় পর্যন্ত চিনতে শুরু করল, তামাক সেবন করাও শিখল।
888sport alternative linkের প্রাণভোমরা শফিউজ্জামান ওরফে শফি কেন্দ্রীয় চরিত্র, পাঁচটি খুনের আসামি। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। প্রথাগত নিয়মে চরিত্রটির কাহিনিতে বেড়ে ওঠা এবং মৃত্যু দিয়ে 888sport alternative linkের পরিসমাপ্তি টানেননি কুশলী লেখক। শফির চরিত্রটি সৃষ্টিতে লেখকের 888sport app 888sport alternative linkের মতো নয়; এতে রয়েছে স্বাতন্ত্র্য এবং কাহিনি বিন্যাসে লেখকের প্রজ্ঞা ও নিখুঁত 888sport live chatরসবোধ। 888sport alternative linkের প্রথম বাক্যই শফির চরিত্রের : ‘দায়রা জজ ফাঁসির হুকুম দিলে আসামি শফিউজ্জামানের একজন কালো আর একজন শাদা মানুষকে মনে পড়ে গিয়েছিল। এদেশের গ্রামাঞ্চলে শিশুরা চারদিকে অসংখ্য কালো মানুষ দেখতে-দেখতে বড় হয় এবং নিজেরাও কালো হতে থাকে। কিন্তু শাদা মানুষ, যার লোম ভুরু ও চুলও প্রচণ্ড শাদা, ভীষণ চমকে দেয়।’ প্রথম প্যারাগ্রাফটি একই সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ যাতে সম্পূর্ণ 888sport alternative linkের একটি সারগর্ভ নিহিত রয়েছে; 888sport alternative link পাঠ শেষে বাক্যটির গুরুত্ব আরো বেশি করে ধরা পড়ে। কালো মানুষ এবং সাদা মানুষকে পরবর্তীকালে কালো জিন ও সাদা জিন হিসেবে দেখা যায়। কালো জিন পাপের বা শয়তানের প্রতীক এবং সাদা জিন ফেরেশতা বা পুণ্যবানের প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রথম বাক্যে 888sport alternative linkে অতীত বর্ণিত হয়েছে – এমন ধারণা পাওয়া খুব স্বাভাবিক।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে, গ্যাব্রিয়েলা মার্কেজের নিঃসঙ্গতার একশ বছর 888sport alternative linkের প্রথম বাক্যটি – ‘Many years later, as he faced the firing squad, Colonel Aureliano Buendía was to remember that distant afternoon when his father took him to discover ice’ সাজুয্য লক্ষ করা যায়। এই বাক্যেও লেখক উপন্যাটির ভেতরের বিষয়বস্তুর ইঙ্গিত দেন। শফিকের বাবা বদিউজ্জামান পরিবারকে নিয়ে খয়রাডাঙ্গা থেকে ঠাঁইনেড়ে মৌলাহাট যাওয়ার পথ ভুলে গেলে একজন অদ্ভুত ধরনের কালো মানুষকে দেখতে পেয়ে পথের সন্ধান করলে সে গরুগাড়ির বহরকে একটি ভুল পথ দেখিয়ে দেয়। লোকটির গলার আওয়াজ ছিল খনখনে ও বিকট। এরপর ভুল পথ থেকে মৌলাহাটে যাওয়ার সঠিক পথটিকে দেখায় একজন সাদা মানুষ, যার কণ্ঠ সুমিষ্ট। ব্যবহার ছিল ও বিনয়ী-ভদ্র। এই কালো ও সাদা মানুষের ঘটনার মধ্য দিয়ে লেখক সমাজের ভালো-মন্দ মানুষের পরিচয় করিয়ে দিলেন, যে-রূপকটি 888sport alternative linkের প্রথম প্যারাতেই উৎকীর্ণ হয়েছে। কালো-সাদা মানুষ দুজনকে ভালো জিন ও খারাপ জিন হিসেবে 888sport alternative linkে বর্ণনা করা হলেও বাস্তবে কি এমন ঘটনা ঘটে? এই দুটি মানুষকেও অলীক মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। শফির ফাঁসির হুকুমের সময় এই দুই মানুষের কথাও মনে পড়েছিল।
খয়রাডাঙ্গা থেকে সাকেড্ডা যাওয়ার পথে গরুগাড়ির ধুরি ভেঙে যাওয়ায় মৌলাহাটের একটি বাড়ির পাশে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ধুরি ঠিক করার জন্য তারা বিরতি নিচ্ছিল। সেই সময় বদিউজ্জামান পিরের খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে অসংখ্য মানুষ তাকে সে-গ্রামেই থাকার জন্য জোরালো দাবি জানায়, যে-দাবিকে তিনি উপেক্ষা করতে না পেরে সেখানেই থাকতে রাজি হন। এই মৌলাহাট গ্রামেই তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ছিলেন।
ধুরি মেরামত করার বিরতিতে পাশে একটি পুকুরে শফি স্নানরতা দুই কিশোরীকে দেখতে পায়। তারা প্রয়াত তোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী ও দরিয়া বিবি দম্পতির যমজ কন্যা দিলরুখ ওরফে রুকু ও দিল আফরোজ ওরফে রোজি। অচেনা পথিকের সঙ্গে দুষ্টুমিভরা কথোপকথনের মধ্য দিয়ে তিনজনের মধ্যে কিছুটা ভাব সঞ্চারিত হয়। তারা স্নান শেষে বাড়ি ফিরে পাশের আয়মনির বাড়িতে শফিকে খেতে দেখে বিস্মিত হয় এবং সেখানেও সামান্য কথাবার্তার মধ্যে ভাববিনিময় হয়।
মৌলাহাট থাকা অবস্থায় তাদের মাঝে মাঝে দেখা-সাক্ষাৎ হতো এবং চপলা ও বুদ্ধিমতী রুকুর সঙ্গে শফির অউন্মোচিত হৃদয়বৃত্তিক কিছুটা ভাব সৃষ্টি হয়। কিশোর বয়সের প্রেম যেরকম হয় – অপ্রকাশিত। ‘মেয়েদের হাতের ছোঁয়া শফিকেও চমকে দিয়েছিল। বিশেষ করে রুকুর হাতের ছোঁয়া। তার মনে হয়েছিল, আরো কিছুক্ষণ হাতটা ধরে থাকল না কেন রুকু?’ দীর্ঘকাল পর অর্থাৎ যৌবনে শফির অনুভূতির প্রকাশ।
শফি দুরন্ত, চৌকস, মেধাবী ও সুদর্শন। নবাব বাহাদুরের কাছারির দেওয়ান চৌধুরী আব্দুল বারির হাত ধরে শফি হরিণমারা স্কুলে ভর্তি হয়। বারি চৌধুরী রুক-রোজির বাবার বন্ধু, রুকুদের বাড়িতেই শফির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তিনি খন্দকার হাসমতের বাড়িতে লজিং থেকে পড়াশোনা করার ব্যবস্থা করে দিলেন। হরিণমারাতেই বড় গাজি সাইদুর এবং ছোট গাজি মাইদুরের (বদি পিরের মুরিদ) সঙ্গে পরিচয় হয় শফির। গাজি সাইদুর ইংরেজি শিক্ষিত, সরকারি চাকুরে। হাসমতের ছেলে তার সহপাঠী রবিউদ্দিন, যে ইতরামিতে দুই কাঠি ওপরে, একসঙ্গে ওদের বৈঠকখানায় থাকত। রবিউদ্দিনের সংস্পর্শেই শফি প্রথম যৌনতার পাঠ গ্রহণ করে। বারি চৌধুরীর ঘোড়া দৌড়ানো ও বন্দুক দিয়ে শিকার করার বিষয়গুলো কিশোর শফিকে প্রলুব্ধ করতে লাগল এবং তার তত্ত্বাবধানে সে প্রশিক্ষিতও হয়ে উঠল। রুকুদের পরিবারে শিক্ষিত, মার্জিত ও রুচিশীল বারি চৌধুরীর প্রভাব থাকায় রুকু ও শফির বাল্যবিয়ে রোধ করে শফিকে অপত্যস্নেহে দেশপ্রেমিক বিপ্লবী হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন এই স্বপ্নদ্রষ্টা; কিন্তু তার প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
হরিণমারা স্কুলে শফির লেখাপড়া ভালো হচ্ছিল না বলে তাকে বড় গাজি লালবাগ ‘নবাব বাহাদুর ইনস্টিটিউটে’ ভর্তি করে দেন। এটি ইংরেজি চর্চার স্কুল। কাল্লু বারি চাচার দেহরক্ষী জাতীয় কোনো লোক। কাল্লুর ছোট ভাই চুল্লুর সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। চুল্লু পিলখানার নোকর ছিল, দুর্ধর্ষ। সহপাঠী বিড্ডু গাঁজা খেত। পতিতালয়ে যেত। এই সম্পর্ক দুটি স্থায়ী হয়নি। বিড্ডুর বাবা ছিল কলকাতার কোনো বাড়ির খানসামা। চুল্লুর সঙ্গে মিশে তামাক টানাসহ অসামাজিক কাজের পাঠ গ্রহণ করেছে। লালবাগে জমিদারের ইংরেজি স্কুলে পড়ার সময় সে সমকামী চরিত্রহীন পান্না পেশোয়ারিকে খুন করে পালিয়ে বেড়াতে শুরু করে। তবে খুনের মোটিফ বিশ্লেষণ করলে সহজে অনুমেয় যে, এই খুন ইচ্ছাকৃত ছিল না। সে দূর থেকে একটি ইট নিক্ষেপ করেছিল; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পান্না পেশোয়ারি নিহত হয়। তখন তার মামা আবু তৈয়বের বাড়িতে গিয়েছিল হয়তো আশ্রয়ের জন্য। কিন্তু আশ্রয় মেলেনি। সেখান থেকে ফেরার পথে দেবনারায়ণের সঙ্গে দেখা হলে সে নুরপুরে চলে যায়। গ্রামটিকে ব্রহ্মপুর বলা হতো। এই গ্রামেই সে ধৃত না হওয়া পর্যন্ত ছিল।
কিশোর বয়সের রুকু ও শফির মধ্যে অপ্রকাশিত প্রেমের অন্তর্দহন ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় যৌবনে। অযাচিত ও আকস্মিকভাবে আসমা নামে (কসবি হিসেবে এলাকায় পরিচিত), গায়ক মেহেরুদ্দিন খামরুর স্ত্রীর সঙ্গে এক দুপুরে পরিচয় হলে আসমার প্ররোচনায় নদীর পাশে ঘনজঙ্গলে শফির কৌমার্যের স্খলন ঘটে। পরবর্তীকালে শফির তিনজন 888sport promo codeর প্রতি আসক্তি প্রকাশ পেলেও প্রেম বা শারীরিক সম্পর্ক কোনোটাই হয়নি। মেঘলা আকাশে বিদ্যুতের ছটার মতো ছিল ওদের প্রতি শফির ভালো লাগার প্রকাশ। রুকুর অপ্রকাশিত ও অদৃশ্য প্রেমে শফি দগ্ধ হয়েছে আমৃত্যু।
শফি মোট পাঁচটি খুন করেছিল। প্রথমে কাল্লুর ছোট বউ সিতারার সঙ্গে সখ্যের কারণে তার সম্ভ্রম রক্ষার্থে এবং নষ্ট চরিত্রের লম্পট পান্না পেশোয়ারিকে। যখন পান্না দুই তরুণকে দিয়ে শরীর টেপাচ্ছিল, তখন শফি দূর থেকে ইট নিক্ষেপ করেছিল ক্ষোভ প্রশমনের জন্য। শফি পরে জানতে পারে, ইটের আঘাতে পান্নার মৃত্যু হয়। শফির দ্বিতীয় খুন স্ট্যানলিকে। দেশপ্রেম ও ইংরেজদের অত্যাচারের চূড়ান্ত প্রতিবাদের মনোবৃত্তিতে স্ট্যানলিকে খুন করে শফি। নুরপুর কুঠির মালিক স্ট্যানলি দাপুটে, ভয়ানক অত্যাচারী ও নির্যাতনকারী ছিল। এই খুন সে একা করেনি। প্রথমে হরিনারায়ণ ত্রিবেদীর পিস্তলের গুলিটি স্ট্যানলির কাঁধে লেগে ঘোড়া থেকে একটি গর্তে গড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় গুলি ফসকে যায়। তখন শফি তাকে তলোয়ার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। অবশ্য স্ট্যানলিকে খুন না করলে দুজনকেই স্ট্যানলির পিস্তলের গুলিতে মরতে হতো।
তৃতীয় খুন আরেক ইংরেজকে। ‘নেটিভ কুত্তা’ বলে গালি দেওয়ার কারণে তাকে গুলি করে হত্যা করে শফি। চতুর্থ খুন কাল্লুকে। কাল্লুকে কেন খুন করেছিল তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি শফি। বরং বারি চাচাজিকে বলেছিল, সে জানে না কেন খুন করেছে। পঞ্চম খুনটি মুন্সিজি – আবদুর রহিম মুন্সিজিকে – যিনি রত্নময়ীকে কন্যাস্নেহে লেখাপড়া করিয়ে বড় করছিলেন। তিনি রত্নময়ীকে জহর আরা ডাকতেন, কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই তাকে ক্রোধের বশে খুন করে শফি। কাল্লু ও মুন্সিজির খুন দুটিতে আলবেয়ার কামুর আউটসাইডার 888sport alternative linkের প্রধান চরিত্রে ম্যুরসোর খুনের প্রতিচ্ছায়া দেখা যায়। মুন্সিজির খুনটি প্রচণ্ড ক্রোধাগ্নির কারণে; কিন্তু কাল্লুর ক্ষেত্রে কোনো কার্যকারণ সম্পর্ক উন্মোচিত হয়নি, বরং ম্যুরসোর মতো ঠান্ডা মাথায় তাকে খুন করা হয়েছে। আউটসাইডার আখ্যানটি অ্যাবসার্ডিটিজমের মোড়কে আবৃত, এখানেও অ্যাবসার্ডিটিজম পরিলক্ষিত হয়।
ব্রাহ্মপুরে দেবনারায়ণ আচার্যের শফি পোশাকে-পরিচ্ছদের হিন্দু বা ব্রাহ্ম ধর্মের মানুষে পরিণত হলেও তার কোনো ধর্ম ছিল না। শফি নিজেই জানিয়ে দিয়েছে তার কোনো ধর্ম নেই। দেবনারায়ণ রাজা রামমোহন রায়-প্রবর্তিত ব্রাহ্মধর্মের অনুসারী ও প্রচারক ছিলেন। এখানে শফি একজন লাইব্রেরিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন করত। একটি ঘোড়াও কিনেছিল। তার হাতে পিস্তল ছিল। দেশপ্রেমিক যামিনী যিনি ইংরেজকে মারতে গিয়ে নিহত হন, তার কন্যা ও স্ত্রী ব্রাহ্মপুরে আশ্রয়ের জন্য এলে শফির সঙ্গে স্বাধীনবালার সখ্য গড়ে ওঠে। রত্নময়ী, যাকে মুন্সিজি জহর আরা ডাকত, সে হিস্টিরিয়ার রোগী ছিল। রত্নময়ীর সঙ্গেও কিছুটা সম্পর্ক হয়েছিল। উন্নাসিক শফির কাছে প্রেম বসন্তের শিমুল তুলার মতোই উড়ে যায়। এই রত্নময়ীই শফির ফাঁসির খবরটি বদি পিরকে নিজের রক্ত দিয়ে লেখা খত (চিঠি) দিয়ে জানায়।
ইংরেজদের ভাষায় অ্যানার্কিস্ট শফি একদিন বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দেখল বাবা এতেকাফে। মসজিদের খাদেম জালাল উদ্দিন তাকে আশ্রয় দিয়েছিল ঠিকই কিন্তু গোপনে পুলিশকে খবর দিয়ে ধরিয়েও দেয়। তারপর বিচার শেষে তার ফাঁসি হয়।
শফিকে পুরোপুরি স্বদেশপ্রেমী বিপ্লবী বলার সুযোগ নেই। সে বিপ্লবী হয়েও হতে পারেনি। পান্না, কাল্লু ও মুন্সিজিকে হত্যার মধ্য দিয়ে নিজেকে সিরিয়াল কিলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। স্ট্যানলিকে হত্যা করে সে আত্মগ্লানিতে ভুগেছে এই কারণে যে, স্বাধীনবালার বাবার প্রতিশোধ নিতে এসে তাকে প্ররোচিত করে খুন করিয়েছিল। যদি স্ট্যানলিকে হত্যার পর সে আত্মগ্লানিতে না ভুগত, তাহলে সেটিও দেশপ্রেমিক বিপ্লবী ক্ষুদিরামসহ অন্য বিপ্লবীদের মতো অনন্য দৃষ্টান্ত হতো। কিন্তু লেখক কেন তাকে সেরকম বিপ্লবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেননি তা অবশ্যই ব্যাখ্যার দাবি রাখে।
নুরুজ্জামান
নুরুজ্জামান দেওবন্দে লেখাপড়া করে মৌলাহাটে এসে নিজেকে বড় মওলানা হিসেবে জাহির করার জন্য আরবি, উর্দু ভাষার মিশ্রণে বিভিন্ন বয়ান দিত, এমনকি পারিবারিক কথাবার্তাতেও আরবি-উর্দু ভাষা ব্যবহার করত। মৌলাহাট মসজিদে ইমামতিও করেছে কিছুদিন। রুকুর যমজ বোন দিল আফরোজ ওরফে রোজিকে বিয়ে করে, সুখের সংসার হয়। রুকু ও মনিরুজ্জামানকে ঠকিয়ে শ^শুরের সম্পত্তি আত্মসাৎ করে খুলনায় স্থানান্তরিত হওয়ার মধ্য দিয়ে একটি শঠ, স্বার্থপর ও লোভী চরিত্র হিসেবে 888sport alternative linkে চিত্রিত হয়েছে।
মনিরুজ্জামান
বদি পিরের মেজো ছেলে মনিরুজ্জামান প্রতিবন্ধী – অর্ধেক পশু অর্ধেক মানুষ হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। কোনো দৈবাৎ ঘটনায় হতো তার প্রতিবন্ধিতা অনেকাংশে কমে গিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। কিন্তু স্ত্রীর মন সে কখনো পায়নি। তবে রুকুকে সে নির্যাতন করেনি, বরং স্বমেহনে নিজের প্রবৃত্তি নিবারণ করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
রফিকুজ্জামান
রফিকুজ্জামান ওরফে রফি মনিরুজ্জামান ও রুকুর একমাত্র ছেলে। কিন্তু এই চরিত্রের কোনো ভূমিকা 888sport alternative linkে নেই। রফিকুজ্জামানও বিপ্লবী ছিল এবং তার স্ত্রী জুলেখা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কচি ও খোকা নামে দুই ছেলেমেয়ে রেখে অকালে মারা যায়। রুকু দুই নাতি-নাতনি নিয়ে বাকি জীবন পার করল। কচি আধুনিকা ও 888sport apkমনস্কা। খোকা বিপ্লবী। কচির সঙ্গে দাদির সংলাপ 888sport alternative linkের অনেক পৃষ্ঠাজুড়ে এবং এই সংলাপের ভিত্তিতে 888sport alternative linkের অনেক কাহিনি বিবৃত হয়েছে। রুকু ও নাতনি কচির কয়েকটি অধ্যায়ের সংলাপে চেতনাপ্রবাহ রীতি অনুসৃত হয়েছে। 888sport alternative linkের চতুর্দশ অধ্যায় থেকে বৃদ্ধ রুকুর সঙ্গে নাতনি কচির কথোপকথনের মধ্য দিয়ে কথক হিসেবে তার অনুপ্রবেশ ঘটে। সংলাপগুলো কাহিনিকে অধিকতর জীবন্ত করে তুলেছে। দাদি-নাতনির সংলাপের ভিত্তিতে অনেক ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে।
দরিয়া বানু, দিল আফরোজ রোজী ও দিলরুখ রুকু মৌলাহাট গ্রামের ধনাঢ্য প্রয়াত তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী দরিয়া বানু বৈষয়িক এবং স্বামীর রেখে যাওয়া বিস্তর সহায়সম্পত্তির মালিক হয়ে নিজেই সবকিছুর দেখভাল করতেন। সংসারের সিদ্ধান্ত তিনি একাই নিতেন – তার ওপর খবরদারির করার কেউ ছিল না। তাঁর সিদ্ধান্তেই যমজ কন্যা দিল আফরোজ রোজী ও দিলরুখ রুকুকে বদি পিরের দুই ছেলে নুরুজ্জামান ও মনিরুজ্জামানের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের বিয়ের পর নুরুজ্জামানকে শ^শুরের জমি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি বাড়ি হওয়াতে সে অনেকটা ঘরজামাই হয়ে রোজীদের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। মনিরুজ্জামানের কাছে রুকুকে বিয়ে দিয়ে তিনি সুখী হতে পারেননি এবং আত্মদগ্ধ হচ্ছিলেন। এই আক্ষেপ ও অনুতাপ থেকে মুক্তির জন্য তিনি ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করেন।
সপ্রতিভ, বুদ্ধিমতী ও পরমাসুন্দরী দিলরুখ ওরফে রুকু সর্বংসহা 888sport promo code যে প্রতিবন্ধী স্বামীর ঘর করেছে বিনা বাক্য ব্যয়ে। তবে ঘর করলেও স্বামীকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি এবং দাম্পত্যজীবনে নিজে নিস্পৃহই থেকেছে, যেন শরৎচন্দ্রের বিলাসীর মতো ফুলদানিতে রাখা বাসি ফুল। শফির প্রতি তার যে আকর্ষণ ছিল এবং মর্মে পীড়িত হতো, বার্ধক্যে এসে তার সংলাপের মধ্য দিয়ে কিছুটা উত্তাপ ছড়িয়েছে। রুকু ছিল নির্মোহ ও নির্লোভ প্রকৃতির, যে কারণে নুরুজ্জামান তাদের সম্পত্তি ভোগদখল করতে পেরেছিল। পক্ষান্তরে দিল আফরোজ ওরফে রোজী নিজে শঠতার আশ্রয় না নিলেও তার স্বামীর শঠতাকে বাধা দেয়নি। তারা উভয়ই মৌলাহাট ছেড়ে একসময় খুলনায় পাড়ি জমায় এবং 888sport alternative linkের ক্যানভাস থেকেও বিদায় নেয়।
888sport app চরিত্র
নবাব বাহাদুরের কাছারির দেওয়ান চৌধুরী আবদুল বারি ওরফে বারু মিয়া ও বড় গাজি চরিত্র দুটি এই 888sport alternative linkে তাৎপর্যপূর্ণ। পূর্বে এই দুটি চরিত্রের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে, তারপরও এখানে আরো কিছু কথা তাদের প্রাপ্য মনে হচ্ছে। বারু মিয়া আধুনিক ও 888sport apkমনস্ক সুশিক্ষিত এবং নিজ এলাকায় প্রভাবশালী। তিনি হাতিঘোড়ায় চলাফেরা করতেন এবং তার বন্দুক ছিল। বারু মিয়া কিংবা বড় গাজির সাংসারিক জীবনের কোনো উল্লেখ নেই 888sport alternative linkে। বড় গাজির সমকামিতার কেলেঙ্কারি ছিল, যার সাক্ষ্য দিয়েছে খন্দকার হাসমতের ছেলে শফির বন্ধু রবিউদ্দিন। কিন্তু বারু মিয়া বিপ্লবী দেশপ্রেমিক ও মানবতাবাদী রূপে চিত্রিত। তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ছিলেন বারু মিয়ার বন্ধু এবং সেই হিসেবে রুকুদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। রুকুদের বাড়িতেই সপ্রতিভ শফিকে দেখে হরিণমারায় ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য পির সাহেবের কাছে আবদার করলে তিনি বারু মিয়ার আবদার ফেলতে পারেননি। বারু মিয়া শফিকে সেখানে ভর্তি করে দিয়ে হাসমতের বাড়িতে লজিংয়ের ব্যবস্থা করে দেন। শফি বারু মিয়ার চালচলন, শিক্ষাদীক্ষার বিভিন্ন আলোচনা, ঘোড়ায় চড়া – এসব জমিদারি কাজকর্ম দেখে প্রভাবিত হয়ে তার পরম ভক্ত হয়ে পড়ে এবং তার মনে বারি চাচাজির একটি ইমেজ তৈরি হয়। একজন মানুষ রূপে মা-বাবার চেয়েও বড় অভিভাবকের স্থান দখল করেন বারু মিয়া। তিনি ছিলেন স্বপ্নদ্রষ্টা। শফিকে তিনি সুশিক্ষিত ও বিপ্লবী বানাতে চেয়েছিলেন; কিন্তু শফি তার অনুগত হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের তৈরি পথেই হাঁটে। বাল্যবিয়েকে নিরুৎসাহিত করার জন্য এবং শফির ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তিনি রুকুর সঙ্গে শফির বিয়ে হতে দেননি। এই ঘটনাটি ভালোর জন্য করলেও ফলাফল দাঁড়িয়েছে হিতে বিপরীত। শেষ বয়সে তিনি বহরমপুরে থিতু হয়ে ওকালতি পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। আধুনিকমনস্ক শিক্ষিত সরকারি চাকুরে বড় গাজি বারু মিয়ার বন্ধু। তিনিও শফির মঙ্গল চেয়েছিলেন এবং লালবাগে নবাব বাহাদুরের ইনস্টিটিউটে ভর্তির জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। দুজনের পরামর্শে শফি লালবাগে এসেছিল। বড় গাজি শফির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক না হলেও তাঁর সিদ্ধান্তের যথেষ্ট গুরুত্ব ছিল। তিনি শেষ বয়সে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।
ইকরাতুন একটি রহস্যময়ী 888sport promo code চরিত্র। ইকরাতুন বা ইকরা চরিত্রটির মাধ্যমে অলীক বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যা এই 888sport alternative linkে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। একসময়ের ডাকাত আবদুলের স্ত্রী ইকরাতুন ছিল হিন্দু, নাম ছিল করুণা। তার পারিবারিক ইতিহাস জানার সুযোগ দেননি লেখক। কীভাবে আবদুলের ঘরে এলো – তার বৃত্তান্ত 888sport alternative linkে নেই। ধরে নেওয়া যায়, যেহেতু আবদুল ডাকাত ছিল তাই অপহরণ হতে পারে। লেখক কি এখানে অসত্যের পতন দেখিয়ে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ভাববাদের আশ্রয় নিয়েছেন? হতে পারে। না হলে আবদুলকে কুষ্ঠ রোগী হিসেবে কেন চিত্রিত করা হলো? ইকরাতুন ছিল ডাইনি, সে অন্ধকার রাতে নগ্ন হয়ে মূর্তিপূজা করত এবং মানুষের চিকিৎসা করত। এটি ছিল তার সংসার চালানোর একটি পথ। স্তম্ভের কাছে, কিংবা শেওড়া গাছের নিচে তাকে নগ্ন হয়ে এলোচুলে নাচতে দেখা যায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগেরও শেষ ছিল না। এজন্য বদি পির তাকে শাস্তিও দিয়েছিলেন। আবদুলের মৃত্যুর পর নুরপুরে গিয়ে সেখানে কারখানায় কাজ করতে শুরু করল ইকরা। ঘটনাচক্রে বদি পির তাকে বিয়ে করলেন সৎ উদ্দেশ্যে। কিন্তু বদি পির যখন এতেকাফে থাকতেন তখন সে ডাইনি হয়ে অর্থাৎ নগ্ন হয়ে আগের কাজকর্ম করত। এই খবর পাওয়ার পর বদি পির তাকে তালাক দিলেন এবং পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে তাকে কতল করার হুকুম দিলেন।
বহরমপুরের উকিল যামিনীবাবু স্বদেশি ছিলেন। তিনি স্ট্যানলিকে হত্যা করতে এসে ব্যর্থ হন, অর্থাৎ পিস্তলের ঘোড়া টানলে গুলি বের হয়নি, পরিণামে স্ট্যানলির হাতে তাকে মরতে হয়। তার মেয়ে স্বাধীনবালা ও স্ত্রী সুনয়নী নুরপুরে দেবনারায়ণের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং এখানেই শফির সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। স্বাধীনবালার শিক্ষাদীক্ষা, চালচলন ও স্মার্টনেসের কারণে শফি কিছুটা টান অনুভব করলে সে পরোক্ষভাবে জানিয়ে দেয় যে, সে সমকামী। শফির অগ্রসর হওয়ার সুযোগকে থামিয়ে দেয়। সাহসী ও স্বাধীনচেতা স্বাধীনবালা দেবনারায়ণের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল স্ট্যানলিকে হত্যার উদ্দেশ্যে। পরে এই কাজটি হরিনারায়ণ ও শফি করে তারই অনুপ্রেরণায়।
অলীক পুরুষ 888sport alternative linkে দেবনারায়ণ একটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র। দেবনারায়ণ রাজা রামমোহন রায়ের প্রচারিত ব্রাহ্মধর্ম প্রচার করতে নিজ গ্রামে মন্দির স্থাপন করে যেখানে সব ধর্মের মানুষকে এক কাতারে আনার চেষ্টা চালান।
কৃতকার্যও হন। এই গ্রামেই গড়ে তোলেন বিরাট লাইব্রেরি, কৃষিকাজের জন্য জমির বন্দোবস্ত নেন, বাঁধ দেন এবং মানুষের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করেন। তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে চিত্রিত হয়েছেন। তিনি সরাসরি বিপ্লবী না হলেও মনেপ্রাণে ইংরেজ বিতাড়নের জন্য অন্যদের সহযোগিতা করতেন।
বাঁকিপুর পাঠশালার শিক্ষক পণ্ডিত গিয়াস উদ্দিন ও তার কন্যা রেহেনা ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন দেবনারায়ণের বাড়ি এসে। গিয়াসউদ্দিনকে শফি দার্শনিক ডাকত। তিনি ছিলেন প্রজ্ঞাবান ও হোমিও চিকিৎসক। তাঁর পাণ্ডিত্যপূর্ণ আলোচনা, শিক্ষাদীক্ষা ও জ্ঞানগরিমার কারণে শফি তার ভক্ত হয়ে যায়। তিনি রেহানাকে শফির কাছে বিয়ে দিতে চাইলে সে প্রত্যাখ্যান করে। শফিকে যে-সময় বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সে-সময় বিয়ের জন্য শফির মানসিক অবস্থাও ছিল না। বিদ্রোহী ও বিপ্লবীদের বিয়ে করার সময় কোথায়?
আয়মনি, রুকু ও রোজীর আয়মনি খালা চরিত্রটি ছোট হলেও 888sport alternative linkের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রুকুদের প্রতিবেশী দরিদ্র পরিবারের মেয়ে আয়মনি, প্রথম শফিকে বাড়ি এনে দুপুরে খাওয়া ব্যবস্থা করেছিল। দরিয়া বিবির সুখে-দুঃখে আয়মনি পাশে থাকত।
কৃষ্ণপুরের ব্রিটিশদের পা-চাটা জমিদার অনন্ত নারায়ণ ছিলেন লম্পট। তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করলেও মুন্সিজি জানান তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। তার কন্যা অত্যন্ত মেধাবী রত্নময়ী ছিল অসুস্থ। অনন্ত বাবুর ধারণা ছিল, তাকে জিনে ধরেছে এবং বদি পিরের কাছে পাঠান জিন তাড়ানোর জন্য। কাজ হয়েছিল কি না জানা যায়নি। তার ছেলে পিতৃবিদ্রোহী হরিনারায়ণ ত্রিবেদী মনে করত, রত্নময়ীর হিস্টিরিয়া ছিল, জিন-ভূত কিছু না। রত্নময়ীকে মুন্সিজি পড়ালেখা করাতেন এবং তাকে জহর আরা নামে ডাকতেন। পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রত্নময়ী রক্ত দিয়ে খত লিখে পির সাহেবকে জানিয়েছিল শফির মৃত্যুর কথা। রক্ত দিয়ে লেখার মধ্য দিয়ে লেখক কি বোঝাতে চেয়েছেন যে, রত্নময়ীও শফিকে ভালোবাসত? অথবা বিপ্লবী হিসেবে অন্য বিপ্লবীকে 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে 888sport app download for android করতে শরীরের রক্ত দিয়ে খত বা চিঠি লিখেছিল। নাকি রক্তের হরফে লিখে একটি প্রতিভাময় তরুণের মৃত্যুর মুহূর্তে পিতার নিস্পৃহতাকে কটাক্ষ করেছিল।
উপরোল্লিখিত চরিত্রগুলো ছাড়াও আরো ছোট ছোট চরিত্র রয়েছে, সেগুলো 888sport alternative linkেন নির্মাণশৈলীতে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সব চরিত্রকে উল্লেখ করলে পাতা ভারী হয়ে যাবে ভেবে তাদের বঞ্চিত করা হলো।
উপসংহার
মানব চরিত্রগুলো ছাড়াও এই 888sport alternative linkের কিছু অমানবীয়, অলীক বা অলৌকিক চরিত্র রয়েছে, যেগুলোর উল্লেখ না করলে 888sport alternative link আলোচনার পূর্ণতা পায় না। এই ধরনের অলৌকক চরিত্রগুলো মধ্যে সাদা জিন ও কালো জিন, পাথরের স্তম্ভ, বাদশাহি সড়ক, ময়ূরমুখো ছড়ি, পাথরের স্তম্ভের পিদিম, শেওড়াগাছ, খোঁড়া পিরের মাজার, পিরের সাঁকো, বৃক্ষ – যে-বৃক্ষ থেকে রক্ত ঝরত, শফির ঘোড়া পাহলোয়ান – যে ঘোড়ার সঙ্গে শফি কথা বলত, ভেড়া – যে ভেড়ার পালে ফেরেশতা আসে, বাঘ – যে-বাঘ মসজিদে এসে সেজদা দিয়ে চলে যায়, কালো সাপ – যে-সাপ গাছ থেকে নেমে লাশকে চুম্বন করে, নীল ঘোড়া ইত্যাদি। কিছু গ্রামের প্রচলিত প্রথা ও মিথের ব্যবহার লক্ষ করা যায়, যেমন – প্রসবের পর ঝাল খেলে রোগব্যাধি কমে যায় ও ব্যথা নাশ হয়, ইকরার বাহন বৃক্ষ, ঈদের নামাজে জিন ইত্যাদি। কাল বা সময়ও এই 888sport alternative linkের চরিত্র হিসেবে বিবেচ্য।
প্রথাগত ছকভাঙা স্বতন্ত্রধারার অনন্যসাধারণ অলীক মানুষ 888sport alternative linkের ইংরেজি 888sport app download apk latest version করা হয়েছে মিথিক্যাল ম্যান নামে। বদিউজ্জামানের চরিত্রটি মিথিক্যাল হিসেবে সফল।
চরিত্রের বিন্যাসে ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে বিভিন্ন ধর্মের অনেক বাণী বা উদ্ধৃতি, দিন-তারিখসহ ঐতিহাসিক তথ্য, পৃথিবীর বিখ্যাত কবিদের 888sport app download apkংশ, বিখ্যাত ব্যক্তিদের প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি, রাজনৈতিক ঘটনাবলি, নিসর্গের বর্ণনা – সেসব উপাদান 888sport alternative linkকে সমৃদ্ধ করেছে। কাহিনির বর্ণনায় বাংলা ভাষা প্রধান হলেও উল্লেখযোগ্যভাবে মিশ্রণ রয়েছে হিন্দি, আরবি, ফার্সি, উর্দু ও ইংরেজি এবং রাঢ় বঙ্গের আঞ্চলিক ভাষার শব্দ ও বাক্য। রাঢ় বঙ্গের লোকভাষার প্রাধান্য 888sport alternative linkটিকে উচ্চ মাত্রা দিয়েছে। শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, 888sport alternative linkের কাহিনি ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হয়নি। কথকের পরিবর্তনের ফলে 888sport alternative link ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে এবং কাহিনিকেও জীবন্ত ও সরস মনে হয়েছে। রুকু ও কচির সংলাপগুলো অতীতের 888sport sign up bonusকে জাগিয়ে তোলার মধ্য দিয়ে বৃদ্ধ রুকুর হাহাকার যেন বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয়েছে। এই সংলাপগুলো যে ধরনের 888sport live chatভাবনা থেকে দিয়েছেন, তা শ্রেষ্ঠ সংযোজন বলে প্রতীয়মান হয়। কেননা, যদি ধারাবাহিক আলোচনা হতো তাহলে এতটা প্রাণ পেত কি না সন্দেহ থেকে যায়। এই 888sport alternative linkে রয়েছে ভাববাদ, বস্তুবাদ, অ্যাবসার্ডিটিজম, অস্তিত্ববাদ, দেশপ্রেম দর্শনের ভিত্তি। চেতনাপ্রবাহ রীতিও কোথাও কোথাও অনুসরণ করা হয়েছে। শোনা যায়, এই 888sport alternative linkে জাদুবাস্তবতার মিশ্রণ রয়েছে। কিন্তু সে-দাবি মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই, বরং বলা যায় অলৌকিক কিংবা অলীক বিষয় এই 888sport alternative linkে রয়েছে, যাকে জাদুবাস্তবতা বলার সুযোগ নেই। এই 888sport alternative linkে ধৈর্যশীল ও অগ্রসর পাঠককে সমৃদ্ধ করার মতো যথেষ্ট চিন্তার রসদ রয়েছে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.