অশ্রুকুমার সিকদার : শ্রেণিকক্ষে আর্টিস্ট, চিন্তায় আধুনিক

আমাদের কলেজজীবন থেকেই জেনে এসেছি অশ্রুকুমার সিকদার একজন বিশিষ্ট 888sport live football-সমালোচক ও এক অসাধারণ শিক্ষক এবং যাঁর বাগ্মিতাকে সকলেই 888sport apk download apk latest version করে। এহেন প্রবাদপ্রতিম অধ্যাপকের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় আধুনিক 888sport app download apkর দিগ্বলয় গ্রন্থটির পাঠ-অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। সেই থেকে যে শুরু হলো এই 888sport live football-সমাজচিন্তক মানুষটির প্রতি 888sport apk download apk latest version এবং সরাসরি ছাত্র হওয়ার স্বপ্ন ও প্রলোভন, সে-স্বপ্ন কার্যক্ষেত্রে বাস্তবে এসে রূপ নিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র হওয়ার সুবাদে। কোনো এক সোমবার সকাল দশটা ত্রিশ মিনিটে প্রথম পিরিয়ড নিতে শ্রেণিকক্ষে এলেন খাটো, কালো প্যান্ট, হাফ সাদা জামাপরিহিত এক মাস্টারমশাই, যিনি আমাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এবং যাঁকে ঘিরে আমাদের আকর্ষণ, ছাত্র হিসেবে পড়ার স্বপ্ন – সেই অধ্যাপক অশ্রুকুমার সিকদার জীবনানন্দের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk বইটি নিয়ে পড়াতে শুরু করলেন টানা এক ঘণ্টা। সোমবারের এই এক ঘণ্টা ক্লাস করার জন্য কত রোববার আমরা হোস্টেল ছেড়ে বাড়িতে আসতে পারিনি কত কী মিস হয়ে যাওয়ার ভয়ে।
অশ্রুবাবু সকাল সকাল ক্লাস নিতে ভালোবাসতেন। দুপুর দুটোর পর আমরা কখনো দেখেছি ওনাকে লাইব্রেরিতে, আবার কখনো কখনো বাড়িতে না কোথায় যেতেন, আমরা ঠিক বুঝতে পারতাম না। আমাদের সঙ্গে তাঁর একটা সম্ভ্রমমূলক দূরত্ব ছিল। এমএ পড়াকালে একটা ভয়মিশ্রিত 888sport apk download apk latest version আদায় করে নিয়েছিলেন অশ্রুবাবু তাঁর ব্যক্তিত্বপূর্ণ গাম্ভীর্যে। আজকের ছাত্রছাত্রীদের মতো পরীক্ষার আগে কী পড়বো একটা সাজেশন করে দিন – এ-ধরনের বলার মতো সাহস আমাদের তখন ছিল না। শুধু কি তাই, এখন যে-কোনো চাকরির ইন্টারভিউর কল লেটার নিয়ে যেভাবে ছাত্রছাত্রীরা মাস্টারমশাইদের ‘দেখার’ জন্য অনুরোধ করে, অশ্রুবাবুদের কাছে এ-ধরনের অনুরোধ করার সাহস আমরা সঞ্চয় করে উঠতে পারিনি কোনোদিনও। সময় পালটায়, অভাব থেকে যায় অশ্রুবাবুর মতো এক বিরল প্রজাতির শিক্ষকদের। অশ্রুবাবুর মৃত্যুতে মাস্টারমশাইদের এক বিশেষ ঘরানারও শেষ দৃশ্য ক্রমশ প্রকটিত হচ্ছে।
এবার আসি কেমন ছিলেন মাস্টারমশাই অশ্রুকুমার সিকদার। তিনি যখন পড়াতেন 888sport live football-ইতিহাস-সমাজ-সময় মিলেমিশে শ্রেণিকক্ষে এক স্তব্ধতার আবেশ তৈরি করে দিতেন। তপস্বী ও তরঙ্গিণী কাব্যনাটক পড়াতে পড়াতে আমাদের নিয়ে যেতেন টি এস এলিয়টের ভাববিশ্বে, মার্ডার ইন দ্য ক্যাথিড্রাল নাটকের দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরের মধ্যে, চলে যেতেন রবীন্দ্রনাথের ‘পতিতা’ 888sport app download apkর মনোভূমিতে। আমাদের ইন্দ্রিয় সংবেদনে তখন নানা স্পর্শ, আচ্ছন্ন হয়ে থাকত মন, ঘোর কাটিয়ে আবার অপেক্ষা করতাম পরের দিনের ক্লাসের জন্য। জীবনানন্দের 888sport app download apk পড়াতে পড়াতে কখনো যেতেন – এত ড্যাস চিহ্নের ব্যবহার কেন – তার স্বরূপনির্ধারণে। ‘আট বছর আগের একদিন’ ও ‘বোধ’ 888sport app download apkর তুলনামূলক আলোচনায় এমন এক অনুভূতিমালার সামনে হাজির করতেন সেখান থেকে বেরোতে অনেক সময় লাগত আমাদের। ‘ক্যাম্পে’ ও ‘শিকার’ 888sport app download apkর তুলনামূলক আলোচনা যেভাবে পড়িয়েছিলেন, সেই পাঠ-অভিজ্ঞতায় জীবনানন্দ পড়ানোর জন্য আজো আমার মনকে কৌতূহলী করে তোলে। আজ আমার বলতে বাধা নেই, আধুনিক 888sport app download apk পড়তে যিনি শিখিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষে ছাত্রদের পড়াতে যিনি সাহস দিয়েছেন এবং যিনি আমাদের বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন শ্রেণিকক্ষে পড়ানোও একটা ‘আর্ট’ বা ‘888sport live chat’ – তিনিই হলেন আমার মাস্টারমশাই অশ্রুকুমার সিকদার।
পড়াটা একটা ক্রিয়া – এ-কথা অশ্রুবাবুই তো বোঝালেন আমাকে। কী পড়ছো, আর কী লিখছো – এটাই ছিল তাঁর আমাদের কাছে চাওয়া। সন্তুষ্ট করতে পেরেছি কিনা জানি না, তবে আমার সম্পাদিত এবং ইন্দ্রজিৎ : বীক্ষায় ও অনুভবে বইটির রিভিউ বেরিয়েছিল আনন্দবাজার পত্রিকায় বেশ বড় করে; রিভিউ করেছিলেন প্রখ্যাত নাট্য-সমালোচক কুমার রায়। আমি তখন শিলচরের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই। অশ্রুবাবু ফোন করে বললেন, ‘আমি খুশি হয়েছি রিভিউ দেখে, তবে কুমারবাবু তোমার সম্পাদকীয় নিয়ে যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেটি মনে রেখো।’ ছাত্রছাত্রীদের অশ্রুবাবু কত ভালোবাসতেন তার নমুনা অনেক, সে-কথাতেও আসছি পরে, তবে ‘নেট’ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে একবার বেশকিছু ভুল ছিল, স্যারের গোচরে আনতেই সাতদিন পর দেখি আনন্দবাজারে পাঠকের মতামতে এই বিষয়ে নিজস্ব প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ইউজিসিকে সচেতন করেছিলেন।
চল্লিশ বছরের বেশি শিক্ষকতা করেছেন অশ্রুবাবু। তবে আমাকে একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘জানো বিকাশ, স্নাতকোত্তরে বিশজন মুসলিম মেয়েকেও পড়ানোর সুযোগ পেলাম না।’ আমি এই তেইশ বছরের শিক্ষকজীবনে প্রায় দুশোর কাছাকাছি মুসলিম মেয়েকে পড়িয়েছি। তাদের চিন্তাজগৎ অনেক পালটে গেছে, লৌকিক নানা সংস্কারকে অতিক্রম করে তাদেরও এসেছে মননে আধুনিকতা। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু মুসলিম ছাত্রছাত্রী এখন স্কুল-কলেজে পড়াচ্ছে। এসব সংবাদে স্যার খুব খুশি হতেন, 888sport promo code শিক্ষা-সংস্কৃতির ব্যাপারে ছিলেন তিনি আদ্যন্ত আধুনিকমনস্ক। ক্লাসঘরে পড়ানোর ব্যাপারে তিনি আজো আমাদের কাছে কিংবদন্তিতুল্য। এমএ পড়ার সময় আমাদের একটা পেপার ছিল ‘আনসিন এসে’ (Unseen Essay)। স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হওয়ার পর জেনেছিলাম এই পেপারটির পরীক্ষক ছিলেন অশ্রুবাবু। এই পত্রে আমার ভালোই নম্বর এসেছিল। পরবর্তীকালে আমাদের আর এক মাস্টারমশাই জানিয়েছিলেন, অশ্রুবাবু নাকি বলতেন – ‘… যেসব মাস্টারমশাই নিজেরা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাননি, তাঁরাই ছাত্রদের কম নম্বর দেন।’ এ-কথার সত্যতা কিছুটা হলেও যে আছে তা আমার শিক্ষকজীবন দিয়ে উপলব্ধি করতে পেরেছি। এমএ পড়ার সময় খ্যাতনামা অধ্যাপিকা সুকুমারী ভট্টাচার্যের বক্তৃতা শুনে যেমন আবিষ্ট হয়েছি, তেমনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের যশস্বী অধ্যাপক পবিত্র রায়ের ‘রবীন্দ্রনাথের নন্দনতত্ত্ব’ শীর্ষক বক্তৃতাটি শোনার পর এক শীতের দুপুরে অশ্রুবাবুকে আমার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলাম, প্রত্যুত্তরে স্যার বললেন – ‘পবিত্রবাবু পণ্ডিত মানুষ।’ এই ‘পণ্ডিত মানুষ’ শব্দটি যেন অশ্রুবাবুর ক্ষেত্রেও ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। কেননা, অশ্রুবাবুর বহু বক্তৃতার শ্রোতা আমি, উজ্জীবনী পাঠশালা থেকে বঙ্গীয় 888sport live football পরিষৎ, মালদা বইমেলা, বাংলা 888sport live football অকাদেমিতে দেখেছি তাঁর অসাধারণ পাণ্ডিত্যের সঙ্গে বাগ্মিতার মিশেলে এক ‘স্বতন্ত্র নির্মাণে’র ভাষা।
একবার মালদা বইমেলা উদ্বোধন করতে এসে বলেছিলেন অল্পক্ষণ, তাতেও ছিল মুগ্ধতার রেশ। এই সময় এক দৃশ্যের কথা আজো আমি ভুলতে পারিনি – অশ্রুবাবু বইমেলা উদ্বোধন করে এসে সেরিকালচারের গেস্ট হাউজে বিশ্রাম নিচ্ছেন। হঠাৎ এক জেলার এক কবি তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থ হাতে দিয়ে তৎক্ষণাৎ একটা ভূমিকা লিখে দিতে বললেন, ওনার পরবর্তী সংস্করণে সেই ভূমিকাটি গ্রন্থে সন্নিবেশিত হবে বলে। ‘না পড়ে রেডিমেড লিখতে পারি না’ বলে অশ্রুবাবু বইটি সেই কবিকে ফেরত দিলেন। মালদাতে এলে স্যারের প্রচুর ছাত্রছাত্রী দেখা করতে আসত। তখন যেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মালদা শাখার একটা রিইউনিয়ন হয়ে যেত। স্যারের সঙ্গে জমাটি আড্ডায় আসতেন সুব্রতদা (প্রধান শিক্ষক), সাজাহানদা (প্রধান শিক্ষক), ইব্রাহিমদা (প্রধান শিক্ষক), সুস্মিতাদি (অধ্যাপিকা), শামসুলদা (কলেজ অধ্যক্ষ), রুমাদি (শিক্ষিকা, প্রয়াত হয়েছেন), রফিকুলদা, সালাম সমু (অধ্যাপক) – আরো কতজনের সঙ্গে থাকতাম আমিও। কত 888sport sign up bonusচারণে আমরা ফিরে যেতাম আবারো যেন জীবনানন্দ দাশের ক্লাসে – ‘তবু কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয়।’ শিলিগুড়িতে ফেরার সময় স্যারের ব্যাগের 888sport free bet বেড়ে যেত, সুব্রতদা, সুস্মিতাদি, রুমাদিরা স্যারকে কত কী যে দিতেন। শুনেছি শিলিগুড়িতে নেমে ম্যাডামকে নাকি মজা করে বলতেন, ‘দ্যাখো কত গুরুদক্ষিণা নিয়ে এসেছি।’ স্যারের খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন থাকত চাটনি কিংবা মালদহের গীতার আচার।
আমার ব্যক্তিগত সমস্যা বা সংকটের দিনে স্যারের চূড়ান্ত মতামত বা পরামর্শকে শিরোধার্য করে এসেছি। যে-কোনো সম্পর্কে ক্ষত বা পচন সৃষ্টি হলে তাকে যে সমূলে উচ্ছেদ করে দেওয়াই মুক্ত হওয়ার একমাত্র পন্থা, সেটি স্যারই আমাকে নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বুঝিয়েছিলেন। নানা বিষয়ে স্যার আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। নানা বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন। ধীরে ধীরে স্যারের রাশভারী ইমেজ সরে গিয়ে স্নেহপ্রবণ অভিভাবকের মতো আমার সঙ্গে নৈকট্য যেন ক্রমশ প্রসারিত হয়েছে। স্যারের পারিবারিক আড্ডায় আমি প্রবেশ করেছি বারবার। ম্যাডাম এবং রিনুদের সঙ্গে সম্পর্ক পারিবারিক স্তরে গিয়ে পৌঁছেছে। স্যার মালদাতেও এসেছেন, আমার কলকাতার ফ্ল্যাটেও এসেছেন। শিলিগুড়িতে নানা কাজে গেলেই স্যারের বাড়িতে যাওয়া এবং গল্প করা ছিল অন্যতম আকর্ষণ। স্যারের বাড়িতে থেকেছি, খেয়েছি। বেশিরভাগই কথা হয়েছে পড়াশোনার জগৎ নিয়ে, ব্যক্তিগত নানা সুবিধা-অসুবিধার কথা নিয়ে। যতবার বাড়িতে গিয়েছি ততবার দেখেছি পাজামা-কুর্তা পরে চেয়ারে পা-দুটো পদ্মাসনের মতো করে কোনো বই পড়ছেন। যাওয়ামাত্র বই বন্ধ রেখে শুরু করতেন নানা প্রসঙ্গ নিয়ে ছোট ছোট কথাবার্তা, ম্যাডাম ব্যস্ত হয়ে উঠতেন আতিথেয়তায়। বছর দেড়েক আগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রিফ্রেশার কোর্সে পড়িয়ে চলে যাই অশ্রুবাবুর সঙ্গে দেখা করতে। আমি তখন জানতাম, স্যার আর চোখে দেখতে পান না, পড়তে পারেন না, বেশিক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকতে পারেন না – এই কষ্টগুলো শুনতে শুনতে এক বিষণœতায় মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠত। দূরভাষে কথা হতো; কিন্তু কেমন আছেন – এ-কথা আর বলার মতো সাহস আমার আত্মশক্তিতে আসেনি। খোঁজ নিতাম স্যারের ভাইঝি দেবারতি, দেবারতির বাবা (স্যারের ভাই), দেবারতির মা (সুনন্দ সিকদার) প্রমুখের কাছ থেকে। ম্যাডামও ফোন করে কখনো কখনো জানাতেন। অনেকদিন ধরে যে-কথা বলতে পারিনি, আজ তাহলে বলেই ফেলি – এখন আমি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ‘ডিআরসি’র সদস্য। বহু সেমিনারে গেছি বক্তা হিসেবে। রিফ্রেশার ওরিয়েন্টেশন কোর্সে রিসোর্স পারসন হিসেবে গেছি। পিএইচ.ডির মৌখিক পরীক্ষা নিতে গিয়েছি। তবু বিভাগের সিঁড়িগুলো দিয়ে উঠতে উঠতে অবচেতনে ছাত্রই হয়ে যাই। শিক্ষকসত্তা ভেতর থেকে কেন যেন সাড়া দেয় না। কারা সব পড়িয়েছেন এই বিভাগে – অশ্রুবাবু, লাহিড়ীবাবু, পুলিনবাবু, তপোধীরবাবু, অচিন্ত্যবাবুদের মতো ভারি ভারি সব নাম। বন্ধুবর নিখিলেশ (রায়) বিভাগীয় প্রধান হিসেবে বেশ কয়েক বছর আগে বিভাগের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে বড় আকারে অনুষ্ঠান করে অনেককে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে আমরা অশ্রুবাবু, পুলিনবাবু, অঙ্কুশবাবুকে পেয়ে ফিরে গিয়েছিলাম এক অনন্য 888sport sign up bonusলোকে। স্যারদের সঙ্গে মিছিল করা, একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া – এক অপূর্ব দৃশ্যানুভূতি। সেই অনুষ্ঠানে প্রথম শোনালেন অশ্রুবাবু ‘আমি অন্ধ হয়ে গেছি, তোমাদের কথা শুনছি কিন্তু তোমাদের কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।’ এত আনন্দের মধ্যে অনেকের চোখ তখন ভিজে গেছে।
আমি তখন শিলচরস্থিত আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে কাজ করি। ২০০৪ সাল নাগাদ হঠাৎ একদিন স্যারের ফোন – ‘তপোধীরের কল্যাণে তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি শুনেছি নাকি খুব সমৃদ্ধ। লাইব্রেরি থেকে বাখতিনের Rabelais and His world এবং ডেভিড লজের After Bakthin : Essays on Fiction and Criticism বই দুটো পারলে নিয়ে এসো।’ গ্রীষ্মাবকাশের ছুটিতে বইদুটো xerox করে স্যারের হাতে বাড়িতে দিয়ে আসি। অশ্রুকুমার শিকদার পড়তে ভালোবাসতেন। যে-কোনো লেখার জন্য প্রচুর পড়াশোনার মধ্য দিয়ে প্রস্তুতি নিতেন। ভাঙা বাংলা ও বাংলা 888sport live football বইটি লেখার সময় সেই চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা আমার আছে। বেশকিছু ইংরেজি 888sport free bet login দিয়ে স্যারকে সহযোগিতা করেছিলাম, তবে খুশি হয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা অধ্যাপকের Bengal Partitioned : Selections from Confidentional Records বইটি আমার সংগ্রহ থেকে পেয়ে।
হঠাৎ একদিন ফোন করে জানালাম, ‘স্যার, সত্যপ্রসাদ সেনগুপ্ত-সম্পাদিত একটি গ্রন্থে আপনার ‘বাংলা 888sport live footballে বিবেকানন্দ’ পড়ে মুগ্ধ হয়েছি।’ স্যার আমাদের এসব প্রশংসাকে খুব একটা পাত্তা দিতেন না, শুনে চুপচাপ থাকতেন; কিন্তু যখন বললাম এই 888sport liveটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়া দরকার। স্যার তৎক্ষণাৎ বললেন, ‘কে এই বই বের করবে?’ 888sport cricket BPL rate শতক প্রকাশনীর কর্ণধার অরুণবাবুকে বললাম, আমি অধ্যাপক অশ্রুকুমার সিকদার মহাশয়ের বাংলা 888sport live footballে বিবেকানন্দ শিরোনামে একটি ছোট বই বের করতে আগ্রহী। অরুণদা মানে অরুণ কুন্ড‍ু বললেন, ‘অশ্রুবাবুর বই, নিয়ে আসুন, নিয়ে আসুন।’ স্যার অনুমতি দিলেন, শুধু বললেন, ‘প্রুফ আমি দেখবো।’ তারপরেই প্রকাশিত হলো বাংলা 888sport live footballে বিবেকানন্দ বইটি। বইটি আকারে ছোট, ভাবনায় উচ্চশ্রেণির। এই উচ্চমানের গ্রন্থটি পাঠকের সমাদার প্রত্যাশা করে। স্যারের সঙ্গে আমার সম্পর্কের গভীরতা অনেকেই জানেন, স্যারের স্নেহ ভালোবাসা, পরামর্শ, পড়াশোনার ব্যাপারে বিভিন্ন মতবিনিময় আমার জীবনে এক পরম পাওয়া। একবার স্যারের বাড়িতে গেছি স্যার এবং ম্যাডাম (মাসিমা বলেই সম্বোধন করি) যৌথভাবে স্যারের ভাইঝি দেবারতি সিকদারকে আমার তত্ত্বাবধানে পিএইচ.ডি করার জন্য সুপারিশ করেন। দেবারতি প্রেসিডেন্সি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্রী। মফস্বলের আমার মতো এক শিক্ষকের কাছে স্যারের এ-উদ্যোগ বা প্রচেষ্টা কেন – ভাবতে শুরু করলাম। পরে জেনেছিলাম, স্যারের এটা একটা দাবি। স্যারের এই অধিকারকে মান্যতা দিয়ে একে কর্তব্য বলব কিনা জানি না একটা সুপ্ত অহংকারও তৈরি হয়েছিল দেবারতির পিএইচ.ডি তত্ত্বাবধানে। দেবারতি দেশভাগের 888sport sign up bonus নিয়ে পিএইচ.ডি সম্পূর্ণ করেছে। স্যার এটা দেখে যেতে পেরেছেন – এটাতেই আমাদের দুজনের আনন্দ। রক্তের সম্পর্কে না হলেও আমি যেন এখন স্যারদের পরিবারেরই সদস্য হয়ে গেছি। স্যারের ছোট কন্যা রিনুকে এমএ পাশ করার পর ‘নেট’ (Net) পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বারবার উৎসাহিত করেও সফল হতে পারিনি। রিনু যখন বলে, ‘দিদি কলকাতায়। আমিও যদি অধ্যাপনা নিয়ে শিলিগুড়ির বাইরে চলে যাই বাবাকে দেখবে কে?’ রিনু শিলিগুড়ির এক স্কুলে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষিকা। বিয়েও করেছে শিলিগুড়ির উদারমনের এক ছেলেকে। বাবাকে দেখভাল করার জন্য ক্যারিয়ারকে সরিয়ে দিয়ে শিলিগুড়িতে থিতু হয়ে যাওয়া – এরকম আত্মত্যাগ, কর্তব্যবোধ আমাকেও শিক্ষিত করেছে; আজকের সময়ে এ যেন ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্তের মধ্যেই পড়ে।
আমরা যখন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, তখন লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে নিজস্ব 888sport live উপস্থাপন এবং মৌখিক পরীক্ষার প্রচলন ছিল। এই 888sport liveপাঠ-প্রক্রিয়ায় আমার বিষয় ছিল – ‘মালদহ জেলার প্রগতিশীল 888sport app download apkচর্চার ধারা’। পরীক্ষক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক অশ্রুকুমার সিকদার এবং অধ্যাপিকা গার্গী দত্ত। স্যার প্রগতিশীল শব্দটা শুনেই একটু আঁতকে উঠে বললেন, ‘মালদায় আবার প্রগতিশীল …।’ মনোযোগসহকারে আমার 888sport live পাঠ শুনলেন। ঘর থেকে বেরোনোর পর আমাকে বললেন, ‘পারলে 888sport liveটি ছাপার ব্যবস্থা করো।’ এমএ পড়াকালীন অশ্রুবাবুর কাছাকাছি যাওয়া এক চরম ভাগ্যের ব্যাপার। একটা ভীতি সব সময় কাজ করত। আমাকে এমফিল পড়তে দেননি। ‘এম.ফিল পড়ে কী হবে? বরং পিএইচ.ডি-র কাজে নেমে পড়ো।’ এমএতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়ার পর ভয়ে ভয়ে স্যারকে প্রণাম করতে গেলাম, প্রণাম নেওয়ার পর বললেন – ‘নম্বরপ্রাপ্তির মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করো।’ আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার পদে যোগ দেওয়ার খবরে শুধু পরামর্শ দিলেন, ‘আধুনিক 888sport live football ও সমালোচনা তত্ত্ব – এই বিশেষ ক্ষেত্রটি নিয়ে পড়াশোনা করে এগিয়ে যাও।’ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওপেন (Open) পোস্টে অধ্যাপক পদে যোগ দেওয়ার আগে স্যারকে এই সংবাদ দিতেই অন্যপ্রান্ত থেকে শুধু বললেন, ‘যে কোনো শিক্ষকের তাঁর ছাত্রের ‘প্রফেসর’ পদে উন্নীত হতে দেখে যাওয়া একটা গৌরবেরই বিষয় বইকি!’
আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকবার অশ্রুকুমার সিকদার সম্মাননা গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কখনো আমার আর এক স্যার অধ্যাপক অঙ্কুশ ভট্টের (উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়) সঙ্গে, কখনো ইংরেজির অধ্যাপক বিনয়কুমারের (বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে। দুটো ক্ষেত্রেই দুই স্যারের স্বাক্ষরসংবলিত চিঠিপত্র নানাজনকে পাঠিয়েও ছিলাম। এই উদ্যোগকে অধ্যাপক রবিন পাল, দেবেশ রায়, অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য প্রমুখ স্বাগত জানিয়ে উৎসাহিত করেছিলেন। কিন্তু দুটো ক্ষেত্রেই নানারকম জটিলতায় এবং কারো কারো আলস্য ও নিরুৎসাহে এবং আমার নানা ব্যস্ততায় এ-প্রকল্প সার্থক হয়ে উঠতে পারেনি। আশা রাখি এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ সচেষ্ট হবে ঋণশোধের জন্য নয় – ঋণ স্বীকারের জন্য। আমাদের মতো প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতা নিয়ে বিভাগীয় প্রধান বন্ধুবর নিখিলেশ এই প্রকল্পকে সফল করতে নেতৃত্ব দিলে খুশি হবো।
অশ্রুবাবু উত্তর-পূর্বের 888sport live football নিয়ে, কারা কোথায়, কী লিখছেন সব বিষয়ে খোঁজখবর রাখতেন। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবাদপ্রতিম অধ্যাপক উষারঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে স্যারের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর। বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট চিন্তক, সমাজভাবুক অধ্যাপক সুজিৎ চৌধুরীর লিখনবিশ্ব নিয়ে তিনি ছিলেন 888sport apk download apk latest versionশীল। স্নেহ ও 888sport apk download apk latest version ছিল অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য ও স্বপ্না ভট্টাচার্য্যরে প্রতি। অশ্রুবাবু ও তপোধীরবাবুর কথা উঠলই যখন, তখন বলেই ফেলি, আমার এই দুই মাস্টারমশাই পুরো জীবনটাই কাটিয়ে দিলেন প্রান্তিক পরিসরে, এই পরিসর থেকে লেখালেখি করে, পাঠকক্রমের আধুনিকতার প্রচলনে, গবেষণার নিত্যনতুন দিকনির্দেশনায়। বাংলা বিদ্যাচর্চার সমালোচনার ধারায় উভয়েই শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, তত্ত্বাবধায়ক, সমালোচক। ব্যক্তিগতভাবে আমি আঞ্চলিকতা দোষে দুষ্ট নই, অবচেতনে এই আঞ্চলিকতা কখনো কখনো ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে চাইলেও তাকে প্রশ্রয় দিয়ে ক্ষেত্র প্রস্তুত করি না। অশ্রুবাবুদের মতো মেধাবীদের জন্য সব দেশই তাঁর স্বদেশ। সেখানে শিলিগুড়ি, 888sport app, কলকাতা একসঙ্গেই মেলামেশা করে। আজকে এই বয়ান লিখতে গিয়ে আমাকে একটু আঞ্চলিক হতেই হচ্ছে, পাঠক আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। কেননা আমাদের উত্তরবঙ্গে অ্যাকাডেমিক লিডারশিপ দেওয়ার মতো হয়তো কেউ কেউ আছেন; কিন্তু আমার কাছে উত্তরবঙ্গের 888sport live football-সংস্কৃতি চর্চার শ্রেষ্ঠ পুরোহিত অশ্রুবাবুই, তিনিই শ্রেষ্ঠ 888sport live football সমালোচক-সমাজচিন্তক। তিনিই আমাদের আশ্রয়, আমাদের অভিভাবক, হ্যাঁ, আমাদের অহংকারেরও নাম। তিনিই রবীন্দ্র-তত্ত্বাচার্য, তিনিই মননে আধুনিক ব্যক্তিত্ব, লেখালেখিতেও ছিল আধুনিকতার সন্ধান। চিন্তার গভীরতায় ও ভাষাজ্ঞানে অদ্বিতীয় আমার স্যার।

‘তোমার সেই বই’
আমার মাস্টারমশাই অশ্রুবাবু যেমন ছিলেন বড়মাপের শিক্ষক, তেমনি বড় হৃদয়বান মানুষ। বড়মাপের জ্ঞানতাপস – এ নিয়ে তো কোনো কথাই নেই। ব্যাপক বা বিপুল অধ্যয়ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাঁর 888sport live football-সমাজ-ইতিহাসনির্ভর গ্রন্থগুলির মধ্যে। তাঁর স্পষ্ট ভাষায় স্বীকারোক্তি – ‘আমি বইজীবী মানুষ’ (শঙ্খবাবুকে লেখা চিঠিতে, ১৯৫৬)। এই বইজীবী মানুষকে তাঁর শেষ জীবনে বই থেকে সরিয়ে রাখল চোখের অসহযোগিতা। যিনি আদ্যন্ত ‘পাঠক’, বিপুল পাঠ-ব্যাপ্তি যিনি চেয়েছিলেন – ‘… সমাধি ফলকে যেন আমার পাঠক পরিচয়টাই খোদাই করা থাকে। এক বইপোকার সেই হোক শক্ত পরিচয়।’ এই বইপড়–য়া শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের কলম থেকে পেয়েছি পনেরোটি বিশিষ্ট 888sport liveগ্রন্থ। 888sport app download apkও লিখেছেন, ছোট্ট একটি 888sport app download apkর বইও আছে (২৫টি 888sport app download apk, ‘শব্দ হরিণ’ থেকে প্রকাশিত)। আধুনিক 888sport app download apk-আলোচনা দিয়েই তাঁর প্রাবন্ধিক সত্তার অভিযাত্রা। প্রথম গ্রন্থ ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাট্যে রূপান্তর ও ঐক্য আর শেষ বই ২০১৩ সালে বেরোয় কিল মারার গোঁসাই। দেশ-বিদেশের 888sport live football-সমাজ-সময়ের ভাষ্য যেমন তাঁর লেখার একটা বড় ক্ষেত্র, তেমনি পাশাপাশি বহমান ছিল রবীন্দ্র-সৃষ্টিলোকের গভীর অনুসন্ধান। সেই সূত্রে আমরা তাঁর কাছ থেকে পেয়েছি উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্রবিষয়ক চারটি গ্রন্থ – রবীন্দ্রনাট্যে রূপান্তর ও ঐক্য (১৯৬৭), রবীন্দ্রনাথ ও রোটেনস্টাইন (১৯৭১), বাক্যের সৃষ্টি রবীন্দ্রনাথ (১৯৮১) এবং কবির 888sport app download apk latest version (১৯৯৮)। আধুনিক 888sport app download apk ও 888sport alternative link নিয়ে আলোচনাগ্রন্থগুলি যতটা কদর পেয়েছে সেই হারে নবীন যদুর বংশ (১৯৯১) এবং কবির 888sport app download apk latest version (১৯৯৮) এই গ্রন্থদুটি পাঠকমহলে ততটা সমাদৃত ও পরিচিতি পায়নি। কারণটিও অজানা, অথচ আমাদের জাগ্রত বিবেক শঙ্খ ঘোষ এবং বিদগ্ধ সমালোচক রবীন পালের কাছে নবীন যদুর বংশ তাঁদের প্রিয় বই বলে চিহ্নিত হয়েছে। এই বইটি সেভাবে পাঠকের কাছে আদরণীয় না হওয়ার আক্ষেপোক্তিতে বন্ধু শঙ্খ ঘোষকে বলতেন – ‘তোমার সেই বই।’
নবীন যদুর বংশ প্রকাশিত হয় ১৯৯১ সালে। এই গ্রন্থে মোট নয়টি 888sport live আছে। তার মধ্যে ‘চারিদিকে নবীন যদুর বংশ’ 888sport liveটির একটি ঐতিহাসিক তাৎপর্য আছে। কেননা ‘সেনসরের তোয়াক্কা না করে অবিকল ছেপেছিলেন’ দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘এমারজেন্সির অন্ধকার সময়ে’, পরিচয় পত্রিকায়, ১৩৮২ বঙ্গাব্দে।
এই গ্রন্থের ‘কথামুখ’ অংশে অশ্রুবাবু লিখছেন – ‘মানুষ চিরকালই নিজের সময়কে সংকটের সময় বলে ভেবে এসেছে; ভেবেছে তাদেরই জীবনের বছরগুলি খেয়ে গেল পঙ্গপালে। মনে হয়েছে, সময়ের জোড় খুলে গেল, ÔThe bright day is done,/And we are for the darkÕ … চিরকালই মানুষ নিজের সময়কে উন্মার্গগামী অন্ধকার সময় ভেবেছে বটে, তবু বিংশ শতাব্দী বিশেষ করে সংকটের কাল। … আধুনিক 888sport live football সংকটের 888sport live football, বিংশ শতাব্দীর 888sport live footballের মর্মে জড়িয়ে আছে Ôapocalyptic forebodingsÕ । … তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির মানুষ শোষণে বিধ্বস্ত, অপরিসীম দারিদ্র্য ও ক্ষুধায় অস্তিত্ব বিপন্ন তাদের। এইসব সংকট ভাঙন বিপন্নতার ভাবনার দ্বারা অনুপ্রাণিত বিংশ শতাব্দীর কিছু 888sport live footballের নমুনা এই সংকলনের 888sport liveগুলিতে আলোচিত হল। সংকটের ভাবনাই 888sport liveগুলির ঐক্যসূত্র।’
বিভিন্ন ভাবনাচূর্ণের এই সংকলন গ্রন্থটিতে অশ্রুবাবুর আগ্রাসী পড়াশোনার জগৎকে যেমন বিনির্মিত হতে দেখি, তেমনি বোর্হেস, কার্পেন্তিয়র, এরেনবুর্গ, দস্তয়েভস্কি, সোলঝেনিৎসিন, হেরমান হেসে থেকে ভারতীয় 888sport live footballের গোপীনাথ মহান্তি, 888sport appsের শক্তিশালী লেখক হাসান আজিজুল হক পর্যন্ত 888sport live footballিকদের সম্পর্কে এক নির্মোহ অভিজ্ঞানের 888sport world cup rate লক্ষ করি। বোর্হেস এবং সোলঝেনিৎসিনকে নিয়ে লেখাদুটি বাঙালি পাঠককে সচেতন করেছিল বোর্হেসের গল্পের অন্তর্মোচনে।
এই সংকলনগ্রন্থের প্রথম 888sport live ‘এরেনবুর্গ – আত্মচরিত’ 888sport liveে অশ্রুবাবু জানাচ্ছেন –
আত্মচরিত শেষ হয় আর 888sport alternative link আরম্ভ হয়, তার সুনির্দিষ্ট সীমারেখা টানা অসম্ভব। এরেনবুর্গের পরিবেশে আত্মচরিত রচনা আরো কঠিন।
ইতিহাসের অন্যতম উপাদান হচ্ছে আত্মচরিত। কিন্তু এরেনবুর্গ সফল হননি আত্মচরিতকে ইতিহাসের অংশ হিসেবে তুলে ধরতে। তবে এই আত্মচরিতের প্রথম খণ্ডে(নবম পরিচ্ছেদে) পারি নগরে লেখকের নির্বাসিত জীবনের বর্ণনা কিংবা এই পারি নগরে যে ভালোবাসা এবং শিক্ষিত স্বভাবের আত্মমুক্তি খুঁজে পেয়েছিলেন সেই সন্ধানেরই বর্ণমালা তাঁর এই আত্মচরিত। এই আত্মচরিতের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল – Ôto bring to life some petrifications of the past with loving eyesÕ… এই শতাব্দীর চেহারা পরিবর্তিত করে দিয়েছেন যেসব কীর্তিমান মানুষ – সেই মানুষের জীবন্ত চরিত্র চিত্রশালা রচনা করা।’ গোটা বিশ্বের এক অস্থির সময়ের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে এবং সংশ্লিষ্ট 888sport live footballিক 888sport world cup rateকে এক অপূর্ব চিত্রমালায় উপস্থাপিত করেছেন এই প্রবল ব্যক্তিত্ব। সেই কারণেই বুঝি শঙ্খবাবু লিখতে বাধ্য হন – ‘অশ্রু যেন এই বইটির মধ্যে গোটা একটা যুগকে ধারণ করে গেছে।’
ছয় খণ্ডেবিন্যস্ত এই বিশালাকার আত্মচরিতে উঠে এসেছে মনুষ্যত্ববোধের পৃথিবী, মানুষের সৃজনশীল বা সৃষ্টি সুখের উল্লাসের জন্য ব্যাপক স্বাধীনতার আর্তি, কেননা স্বাধীনতাহীনতায় কে বা বাঁচিতে চায়। তাই তো এরেনবুর্গ মনে করেন, মননের আগে, চিন্তার আগে বেঁচে থাকা দরকার। এই বেঁচে থাকার দর্শন দার্শনিক দেকার্তের উলটো পিঠের কথা।
চরিতের ‘নবীন যদুর বংশ’ 888sport liveে মহাভারতের মৌষলপর্বের সংকট কিভাবে আধুনিক বাংলা কবিদের বিশেষত জীবনানন্দ, বিষ্ণু দে, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখের 888sport app download apkয় উপস্থাপিত হয়েছে তারই মর্মন্তুদ আলেখ্য। মহাভারতীয় যদুবংশের আখ্যানকে গোলাম কুদ্দুস নির্মাণ করেন এক নিজস্ব রাজনৈতিক অনুষঙ্গে, ‘ইলা মিত্র’ – 888sport app download apkটি তার অন্যতম নিদর্শন। আর কবি শঙ্খ ঘোষের এই সময়ের স্ফুলিঙ্গময় স্বাচ্ছন্দ্য অক্ষরগুলি – ‘সব শেষ হয়ে যাবে, সমস্ত যাদব বংশ, যে-কোনো সবুজ ঘাস/ হাতে নিলে হয়ে ওঠে মুঘল মুদগর ধ্বংসবীজ/ এইবার সময়, সাত্যকি।’ (‘যাদব’) বুদ্ধদেব বসু কাল সন্ধ্যা কাব্যনাটকের মধ্যে যদুবংশ-ধ্বংসের পৌরাণিক আবহকে আধুনিক দৃষ্টিতে বিনির্মিত করেছেন। এই সময়ের চিহ্নকে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর মতো ‘অকাল সন্ধ্যা’ বলেননি, বলেছেন – ‘কাল পর্যায়’। সমালোচক সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় যদু বংশের ধ্বংসের কালচিত্রের মধ্যে দেখতে পান – ‘পরাভূত, ভূমিকা হারার আত্মসান্ত¡না।’ আর অশ্রুবাবু এই ঘটনার মধ্যে দেখতে পান – ‘এক মহান ঔচিত্যবোধ।’ এই মহান ঔচিত্যে ঘুরে ঘুরে ফিরে আসে এক মায়াবৃত্ত।
‘পিতৃভূমির পিতৃপুরুষেরা’ ও ‘বোর্হেসের গোলকধাঁধা’ 888sport liveদুটি মূলত ল্যাটিন আমেরিকার 888sport live footballকর্মের ওপর আধুনিক দৃষ্টিপ্রক্ষেপণ। ‘পিতৃভূমির
পিতৃপুরুষেরা’ 888sport liveটিতে পাঁচটি 888sport alternative linkে বর্ণিত স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে ‘বাস্তব সত্য ও নিহিত সম্ভাবনার উল্লেখযোগ্য কল্পনা-সমৃদ্ধ 888sport live chatমূর্তি’কে অশ্রুবাবু এমন তথ্যসূত্রে সাজিয়েছেন, যা বাংলা 888sport live football-সমালোচনায় এক দিক্সঞ্চারী লেখা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
উনিশ শতকের বিখ্যাত ভারততত্ত্ববিদ পণ্ডিত এবং ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী ঔপন্যাসিক হেরমেন হেসে পারিবারিক সূত্রে ‘ভারতবর্ষে’র প্রতি বোধ করেন এক অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণ।’ সংস্কৃত, পালি, মালয়ালম, হিন্দি, কানাড়া, বাংলা ভাষা যেমন জানতেন, তেমনি ভারতীয় গান আর উপকথা তাঁকে নিয়ে গিয়েছিল এক ভারতীয়ত্ববোধে Ñ Ôa wider world, a greater homeland, a more ancient descent, a broader context.Õ এই ভারতীয়তাবোধ থেকেই জন্ম নিয়েছিল Siddhartha নামক 888sport alternative link। আত্মোপলব্ধির মধ্য দিয়ে সিদ্ধার্থ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল – ÔEverything that exists is goodÕ এবং ÔEverything is necessaryÕ । ভারতীয় নটরাজের মূর্তি দেখে হেসের মনে হয়েছিল – Ôthe infinite lurked thereÕ । এই প্রাচ্য প্রতিমার মধ্যেই হেসের সিদ্ধার্থ চরিত্র খুঁজে পেয়েছিল … Ôlife itself full of play, full of pain, full of laughter.Õ হেরমেন হেসের দুই নায়ক সিদ্ধার্থ এবং (The Journey to the East) প্রথমজন ভারতীয় এবং দ্বিতীয়জন ক্যাসটিলিয়ান। দুই নায়কের ভাবাদর্শে প্রাচ্য-প্রতীতি এবং ইউরোপীয় জীবনাচরণ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। ভালোবাসা আর নির্লিপ্ততার এমন মিশ্রিত ছবি আমাদের কাছে খুব সহজলভ্য নয়। সত্যান্বেষণই 888sport live footballের কাজ। হেসের 888sport alternative link পড়ে এই বিশিষ্ট 888sport live footballবোদ্ধা উদ্ঘাটন করেছিলেন 888sport live footballের সত্যদর্শন। অশ্রুবাবুর এই সংকলনটিতে বারবার তাঁর দার্শনিক প্রজ্ঞার পরিচয় পাওয়া যায়, সেই সূত্রেই আত্মজিজ্ঞাসায় দার্শনিক সত্যকে মেলাতে পেরেছেন। এই 888sport liveটি এই সংকলনগ্রন্থে কারো কারো কাছে বেমানান মনে হয়েছে, আবার সামগ্রিক ভাবনার সঙ্গে এই 888sport liveটি সংগতিপূর্ণ হয়নি বলে কেউ কেউ মনে করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে, বিশ্ব888sport live footballের সঙ্গে ভারতীয় 888sport live footballের একটা ঐক্যসূত্র সন্ধানেই ব্রতী হয়েছিলেন বিশ্ব888sport live footballের এই একনিষ্ঠ পড়–য়া। ভাষাজ্ঞান, চিন্তার গভীরতায় বাঙালি পাঠককেও নিয়ে গেছেন সপ্তসিন্ধু দশ দিগন্তের সৃজনবিশ্বের উঠোনে।
888sport alternative linkে সময়ের অভিজ্ঞানকে ভারতীয় জনজীবনের পরিপ্রেক্ষিতে ভাবা হয় এভাবে – Ôall time as of cosmic cycle.Õ আর ঔপন্যাসিক সময়কে চিত্রিত করেন Ômaking the region reflect the central agony of the times.Õ এই দুই ক্ষেত্রেই যে ঔপন্যাসিকের কথা এনেছেন অশ্রুবাবু তিনি হলেন ওড়িয়া ঔপন্যাসিক, ভারতীয় লেখক গোপীনাথ মহান্তি। তাঁর পরজা (১৯৪৬) আর অমৃতের সন্তান (১৯৪৯) 888sport alternative linkদুটিতে উঠে এসেছে উপজাতির জীবন, সময়ের সংকট ও স্তর, আঞ্চলিক পরিপ্রেক্ষিত ও মহাকাব্যিক ব্যাপ্তি। দুটো 888sport alternative linkের সঙ্গে সমালোচক মিলিয়ে দেখতে চেয়েছেন প্রফুল্ল রায়ের ধর্মান্তর 888sport alternative linkটিকে। ওড়িয়া এবং বাংলা দুই শ্রেণির 888sport alternative linkে তৌল হয়েছে আদিবাসী জনজাতির জীবন। দুই শ্রেণির 888sport alternative link রচনার ব্যবধান প্রায় চল্লিশ বছরের, পালটেছে দেশের আর্থ-সমাজবাস্তবতা, তবু আজো পরিবর্তিত হয়নি এই জনজাতির জীবনচক্র। ব্যক্তিগত স্তরে এই আদিবাসী জনজাতিদের কেউ কেউ তাদের অসাম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেও সমবেত উদ্যোগে আজো সেই প্রতিবাদ সংগঠিত হয়নি। ভারতবর্ষে যাবতীয় উপজাতির অস্তিত্ব সংকটের আখ্যান এই দুই 888sport alternative link। সংকটের মুখোমুখি হয়ে এই সাদাসিধে ‘আদমি মানুষগুলির সহিষ্ণু প্রতিরোধের কাহিনি শুধু উপজাতীয়ের কাহিনি থাকে না, শুধু ভারতবর্ষীয়দের কাহিনি থাকে না, হয়ে ওঠে সর্বজনীন, পরাজিত অথচ অপরাজেয়, মানুষের উপাখ্যান।’
মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন এই প্রান্তিক পরিসরের মানুষগুলির জীবনাচরণকে, বিশ্বাসকে, জীবনদর্শনকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন গোপীনাথ মহান্তি। সেই কারণে গোপীনাথের এই লিখন-শৈলীর দর্শন যেমন নিরপেক্ষ, তেমনি সত্যান্বেষণে আত্মার আত্মীয়। শেষ বিচারে 888sport alternative linkদুটি সার্থক আঞ্চলিক 888sport alternative linkের ফ্রেমে ধরা পড়ে – ‘ট্যুরিস্টের ক্যামেরা – কলুষিত চোখ দিয়ে বা সাংবাদিকের চটজলদি নজর দিয়ে, এমনকি সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ববিদের অধ্যয়ন দিয়েও খাঁটি আঞ্চলিক 888sport alternative link লেখা যায় না … প্রগাঢ় সহানুভূতির সঙ্গে পিছিয়ে পড়া মানুষগুলিকে সমকক্ষ মানুষ বলে গণ্য করতে পারলে তবেই সম্ভব হয় সেই তন্ময়তা, যা মহৎ আঞ্চলিক 888sport alternative link রচনার প্রথম শর্ত।’
নবীন যদুর বংশ গ্রন্থটির শেষ 888sport live – ‘হাসান আজিজুল হকের নিজস্ব উপনিবেশ’।
এই 888sport liveে হাসান আজিজুল হককে জগদীশ গুপ্ত এবং মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমগোত্রীয় লেখক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ভাষার মডেলে কমলকুমার মজুমদারের সঙ্গে 888sport appsের এই কথাকারের নৈকট্য বা ‘প্রভাবে’র কথা বলা হয়েছে। যদিও অভিজ্ঞতার 888sport live chatগত প্রতিফলন ছিল হাসান আজিজুল হকের একান্ত নিজস্ব। প্রবৃত্তি, নিয়তি, ক্ষুধা, বাস্তববোধ, তৃষ্ণা এবং বেঁচে থাকার দর্শন – তারই অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেছেন হাসান আজিজুল হকের গল্পের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিশিষ্ট সমালোচক। হাসান আজিজুল হকের ‘উত্তরবসন্তে’ গল্পে সেই বাড়িটার মধ্যে ‘সব কটি মানুষ অসুস্থ’। বাণীর হাতকে কবির মুঠোর মধ্যে নিতে গেলে বাণী শোনায় – ‘আমাদের লোভী করতে নেই। আমাদের কোনো অধিকার নেই জীবনে’, কিংবা ‘অন্তর্গত নিষাদ’ গল্পে – ‘এই ভরা সুখের সংসারে লাথি মেরে লোকটা কড়িকাঠে ঝুলছে’, আবার ‘সমুখে শান্তি পারাবার’ গল্পের নিঃস্ব অনাহারে ক্লিষ্ট পিতা-পুত্রের সংলাপ যে সামাজিক সত্যের কাছে আমাদের নিয়ে যায়, তাতে পাঠক শিউরে ওঠে, খেতে না-পাওয়া পিতা যখন ছেলেকে শোনায় – ‘তারা বাঁচলেই তো মানুষের বাঁচা হয়ে গেল। পচা, ক্ষয়ধরা, কুঁড়ে-লাগা, ট্যারাব্যাঁকা, ন্যাংটো মানুষদের বাঁচতেই বা হবে কেন?’
‘ক্ষুধা’ এবং ‘বাঁচা’ এই নিয়েই হাসান আজিজুল হকের ‘নিজস্ব উপনিবেশ’। অস্তিত্বের সংকট গল্পের পরতে-পরতে। অন্তর্বাস্তব ও বহির্বাস্তবে চারিদিকে ঘুরে বেড়ায় দিনমজুর, ভিক্ষুক, ক্ষুধার জ্বালায় শরীর বিক্রি করতে প্রস্তুত থাকে যুবতী মা। তৃতীয় বিশ্বের 888sport apps নামক এই ভূখ-ের অপাঙ্ক্তেয়, পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্র মানুষদের নিয়েও হাসান আজিজুল হকের ‘নিজস্ব উপনিবেশ’ নির্মাণ। যে-উপনিবেশ – ‘ই পোড়া দ্যাশে কাজ নাই, ইখানে অন্ন নাই, ভদ্দরলোকে ভাত ছিটিয়ে মেয়ে মানুষ ন্যাংটো’ হয়। ক্ষুধার এই 888sport live chat বা খিদের এই হাহাকার, বাঁচার অধিকারের আর্তিকে যেমন প্রকট করে, তেমনি বেঁচে থাকার দর্শন এক শূন্যতা থেকে মুক্তির জন্য অপেক্ষা করে – ‘মূলে আছে বাঁচা, জান্তবভাবে বাঁচা, শিশ্নোদরপরায়ণভাবে বাঁচা, স্থূলতম শারীরিকভাবে বাঁচা এবং সেই বাঁচা থেকে মুক্তির সত্য …।’
জাতিগঠনের মূল উপাদান হচ্ছে ভাষা। সামাজিক-অর্থনৈতিক স্বার্থে বিভিন্ন বেশভুষার তথা বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ কখনো কখনো এক জায়গায় বসবাস করতে বাধ্য হয়। থাকতে থাকতে এই বহু ভাষাভাষী মানুষেরা পরস্পর সম্পর্ক ও পরিচয় স্থাপন করে। এই পরিচয়স্থাপনে ভাষা কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়, আবার ভাষা কখনো কখনো সহায়তা করে। ভাষার এই সহায়তাকে ঘিরেই তৈরি হয় 888sport app download apk latest versionচর্চার ধারা। বাইবেল যেমন ইহুদি জাতির ইতিহাস, তেমনি ব্রিটেনের জনগোষ্ঠীর ইতিহাস ধরা আছে অ্যাংলো স্যাকসন ক্রনিক্যালের মধ্যে। সুতরাং এই ইতিহাসকে জানতে হলে বা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীকে বুঝতে হলে 888sport app download apk latest version সেখানে অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। এই 888sport app download apk latest versionবিদ্যাকে ঘিরেই Cultural Studies -এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ÔTranslation StudiesÕ নামক পাঠক্রম। 888sport app download apk latest versionক যখন প্রাচীন কাব্যের 888sport app download apk latest versionে সচেষ্ট হন, তখন তিনি প্রাচীনতার মনন ও পোশাকপরিহিত হয়ে থাকেন না, যুগোপযোগী হয়ে 888sport app download apk latest versionে সচেষ্ট হন। রাজশেখর বসুর মহাভারত তার বড় প্রমাণ। 888sport app download apk latest versionের লক্ষ্য মূলানুগ হওয়া শুধু নয়, মূলের রস পরিবেশনই তার অন্বিষ্ট। ফলে 888sport app download apk latest version হচ্ছে শঙ্খ ঘোষের কথায় – ‘অনুসর্জন’ বা ‘সৃজনের আনন্দ’। নানা ভাষায় 888sport app download apk লেখা হলেও 888sport app download apk 888sport app download apk latest versionের ক্ষেত্রে সমস্যা যেমন আছে, তেমনি এটাও স্পষ্ট যে, 888sport app download apkর আধুনিকতা অখ- ও অবিভাজ্য। যার বড় উদাহরণ বুদ্ধদেব বসুর বোদলেয়রের 888sport app download apkর 888sport app download apk latest version। বহুকাল ধরে বাংলা 888sport live football ÔImitationÕ বা অনুকরণকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে, আবর্তিত হয়েছে কিন্তু বিবর্তিত হতে পারেনি। এই বিবর্তনের পথে 888sport app download apk latest versionকে সঙ্গ করে বেরিয়ে এলেন বিদ্যাসাগর, বিষ্ণু দে, সুধীন দত্ত, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, অরুণ মিত্র, শঙ্খ ঘোষ প্রমুখ। সেই পথপরিক্রমা থেকে আমরা জানতে পারলাম, 888sport app download apk latest versionকরাও লেখক সম্প্রদায়ভুক্ত এবং তাঁদের এই সৃজনবিশ্ব আর এক সৃষ্টিধর্মিতার নতুন দিগন্তকে উন্মোচিত করল।
বাংলা 888sport live football-সমালোচনায় 888sport app download apk latest versionের তত্ত্ব, 888sport app download apk latest versionের সংজ্ঞা ও স্বরূপ, একই বিষয়ের 888sport app download apk latest version নিয়ে তুলনা-প্রতিতুলনা আলোচনা করেছেন পুষ্কর দাশগুপ্ত, কেতকী কুশারী ডাইসন, অধ্যাপক আহমদ শরীফ, তপোধীর ভট্টাচার্য, চিন্ময় গুহসহ আরো বেশকিছু বিদগ্ধ আলোচক। তবু ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছে, অশ্রুকুমার সিকদারের কবির 888sport app download apk latest version (১৯৯৮) গ্রন্থটি এই বিষয়ে সর্বোৎকৃষ্ট। এটি তাঁর অষ্টম গ্রন্থ। মূলত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বানে তিনটি আমন্ত্রণমূলক বক্তৃতার একত্রীকরণে সজ্জিত এ-গ্রন্থটি। বইটির তিনটি অংশ – ‘888sport app download apkর 888sport app download apk latest version’, ‘কেন 888sport app download apkর 888sport app download apk latest version’ এবং ‘কবির 888sport app download apk latest version’। এই গ্রন্থেও বইজীবী অশ্রুকুমার সিকদারের বিশাল পাঠ্যব্যাপ্তি আবারো প্রমাণিত। অশ্রুকুমার আমাদের শেখালেন – ভাবনাকে ভাষায় প্রকাশ করাও এক ধরনের 888sport app download apk latest version। প্রতিদিনই আমরা কিছু না কিছু 888sport app download apk latest version করি। এই অভিজ্ঞতাকে তাত্ত্বিক পরিসরে এই গ্রন্থে বুঝতে চেয়েছেন অশ্রুকুমার, প্রসঙ্গসূত্রে এসেছে – হফ্মানস্টাল, জর্জ স্টিনার, নবোকভ, সচ্চিদানন্দ প্রমুখের 888sport app download apk latest versionপদ্ধতির অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের কথা। এসেছে জাক দেরিদার অবি888sport app download for androidীয় বাচনের কথা – ÔIt is productive writing called forth by the original textÕ,, সুতরাং 888sport app download apk latest version এমন এক ধরনের রচনা, যা Transcription নয়। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এলিয়টের ‘ÔJourney of the MagiÕ 888sport app download apkর রবীন্দ্রকৃত 888sport app download apk latest version।
অশ্রুবাবু তাঁর এই ছোট আকারের বইটিতে লিখলেন – ‘888sport app download apk latest versionক হিসেবে রবীন্দ্রনাথের স্বাতন্ত্র্য এইখানে যে তিনিই বোধহয় পৃথিবীর একমাত্র প্রধান লেখক যিনি নিজেই নিজের গল্প নাটক 888sport app download apk অন্য ভাষায়, এ ক্ষেত্রে ইংরেজিতে 888sport app download apk latest version করেছেন।’ তাহলে প্রশ্ন জাগে, কেন গেলেন রবীন্দ্রনাথ ইংরেজি 888sport app download apk latest versionচর্চায়? তার উত্তরে অশ্রুবাবু এই বইটিতে অধ্যাপক শিশিরকুমার দাশের অনুমানকেই মান্যতা দিলেন – ‘… ভারতীয় ও ইংরেজ অনুগামীদের চাপ। … তাঁর লেখার যে-সব ইংরেজি 888sport app download apk latest version অন্যেরা করেছিলেন সেগুলি তাঁকে খুশি করতে পারছিল না বলে তিনি স্বয়ং 888sport app download apk latest versionের কাজে হাত দিয়েছিলেন। তিনি বৃহত্তর পাঠক সমাজের সামনে তাঁর রচনাবৈভব নিয়ে উপস্থিত হোন, বন্ধুদের এই চাপ তাঁর সুপ্ত ইচ্ছাকে হয়তো উসকে দিচ্ছিল।’
ইংরেজি আজো আমাদের কাছে প্রভুত্বের ভাষা, ক্ষমতার ভাষা, স্বভাবতই রবীন্দ্রনাথের মতো মানুষেরও ধারণা ছিল তাঁর বইগুলি ইংরেজিতে অনূদিত না হলে বিশ্বসংসারে পাঠক পাওয়া দুরূহ হতো। একেই শিশিরকুমার দাশ বলেছেন Ôcolonial legacyÕ, আর অশ্রুবাবু রবীন্দ্রনাথের এ-ধরনের মানসিকতাকে দেখেছেন এভাবে – ‘… রবীন্দ্রনাথকে ভারতবর্ষের পরাধীনতার দুর্ভাগ্যজনক ইতিহাস, তার ঔপনিবেশিকতার দীর্ঘ ইতিহাসের সঙ্গে বেদনাদায়ক সমঝোতা করতেই হয়েছিল।’ অশ্রুবাবুর লেখার একটা বড় বিশেষত্ব 888sport live footballের সঙ্গে রাজনীতির, ইতিহাসের, সমাজের, সময়ের অভিজ্ঞানে বিষয়কে পর্যবেক্ষণ করেন। এই গ্রন্থেও রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে 888sport app download apk latest versionের সূত্র ধরে। যে-রবীন্দ্রনাথ নিজস্ব গ্রন্থ প্রচারের প্রলোভনে ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে 888sport app download apk latest versionচর্চায় নিমগ্ন হন, আবার সেই রবীন্দ্রনাথ রোটেনস্টাইনকে পাশ্চাত্য সভ্যতা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন, ‘ÔShines in contrast upon the dark background of the subjection of the other people.Õ প্রথম থেকেই রবীন্দ্রনাথকে আমরা দেখে এসেছি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে। রবীন্দ্রনাথের মধ্যে ফঁধষ বহঃরঃু তাঁর নানা লেখায় নানা ভাবনাচিন্তায় বারবার এসেছে। এই দ্বৈতসত্তাকেই অশ্রুবাবু ভেবেছেন এরকম সিদ্ধান্তে – ‘একদিকে ইংরেজ-শাসনের হিতব্রতী সম্ভাবনা, অন্যদিকে ইংরেজ-শাসনের অন্যায় বিষয়ে সচেতন-সঞ্জাত সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা, এই দুই নিয়ে দ্বন্দ্ব যেমন ভারতের বুর্জোয়াশ্রেণির ছিল, তেমনি সেই শ্রেণির মানুষ রবীন্দ্রনাথের মধ্যেও ছিল।’
রবীন্দ্রনাথ তাঁর ইংরেজি অনুসৃজনগুলোকে মৌলিক 888sport app download apkই বলতে চেয়েছেন। কবির 888sport app download apk latest version গ্রন্থের শেষ পর্যায়ে এসে অশ্রুকুমার সিকদার রবীন্দ্রনাথের বাংলা ও ইংরেজির মূল এবং 888sport app download apk latest versionের রূপ ও রূপান্তরের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্যগুলোকে 888sport apkসম্মতভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রবীন্দ্র-888sport app download apkর 888sport app download apk latest versionচর্চায় উইলিয়াম রাদিচে এবং কেতকী কুশারী ডাইসনের ভূমিকারও সপ্রশংস উল্লেখ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের স্ব-কৃত ইংরেজি Gitanjali -র 888sport app download apk latest versionে বুদ্ধদেব বসু এতটাই আপ্লুত হয়েছিলেন যে, সে-কথারও প্রণিধানযোগ্য উল্লেখ আছে এই গ্রন্থে – ‘… মূলে কিছুটা অবিন্যস্ত ও অযতœসাধিত সেগুলি ইংরেজি 888sport app download apk latest versionের চিকিৎসায় উপকৃত হয়েছে।’
রবীন্দ্রনাথের 888sport app download apk latest versionক-যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে। ১৯২০ সালে টমসন সাহেব রবীন্দ্রনাথকে সাবধান করে জানিয়েছিলেন – ‘… you have increasingly paraphrased instead of translatingÕ, গীতাঞ্জলি-পরবর্তী রবীন্দ্রনাথ যেসব 888sport app download apk latest versionকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন সেই পদ্ধতিকে কেউ কেউ ছায়ানুবাদ বা ভাবানুবাদ বলে চিহ্নিত করেছেন।
এই অভিযোগের সত্যতা রবীন্দ্রনাথের স্বীকারোক্তিতে স্পষ্ট – ‘নিজের লেখা তর্জমায় ভূরি-ভূরি অবিচার করেছি।’ এই অভিযোগ দিয়ে রবীন্দ্রনাথের সৃজনবিশ্বকে খাটো করা কোনোমতেই চলে না। রবীন্দ্রনাথ বাঙালি কবি, বাংলা ভাষায় রচিত সমগ্র সৃজনবিশ্বের নিরিখেই বিচার্য হওয়া উচিত। অশ্রুবাবু তাই এই গ্রন্থের শেষ বাক্যে লেখেন – ‘… আপন ভাষার রাজ্যে তিনি তো সম্রাট।’
সবশেষে আবার আসি ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে, ২০১৭ সালে ‘উত্তরবঙ্গ সারস্বত সম্মাননা কমিটি’র পক্ষ থেকে অনিতা দত্ত হঠাৎ একদিন ফোনে জানাল যে, অধ্যাপক অশ্রুকুমার সিকদারকে ‘উত্তরবঙ্গ সারস্বত সম্মান’ প্রদান করতে আগ্রহী। তুমি বিকাশদা, কথা বলো। স্যারের সঙ্গে কথা বলে অনেক কষ্টে সম্মতি পেলাম। শর্ত একটাই – ‘শিলিগুড়ি থেকে গাড়িতে করে আমাকে নিয়ে যেতে হবে জলপাইগুড়ি।’ ২০১৭ সালের নভেম্বরে জলপাইগুড়িতে এই সম্মান প্রদানের অনুষ্ঠান বসল। শিলিগুড়ি থেকে আমি, স্যার এবং স্যারের ছোট কন্যা গাড়িতে করে জলপাইগুড়িতে পৌঁছলাম। অধ্যাপক আনন্দগোপাল ঘোষের নেতৃত্বে স্যারকে রাজকীয় সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান করা হলো। এই অনুষ্ঠানে স্যারের বহু পুরনো ছাত্রছাত্রী গাড়ি থেকে নামামাত্র হাত ধরে প্রণাম করে মঞ্চে তুললেন। এই অনুষ্ঠান আমার জীবনের এক 888sport app download for androidীয় ঘটনা, কেননা এই মঞ্চে স্যার ‘সারস্বত সম্মান’ পেয়েছিলেন আমার হাত থেকে। এটাই বুঝি স্যারের শেষ মঞ্চ-উপস্থিতি। তার মঞ্চ থেকে মাটিতে নেমে ২০১৯-এর ২১ ফেব্রুয়ারি এই ভাষাসেনানী চলে গেলেন এক অনন্তলোকে। এই লেখা লিখতে গিয়ে চোখ জলে ঝাপসা হয়ে আসছে আবেগে, কষ্টে। তবু স্যার, আপনাকে প্রণাম করে প্রতিদিন বড় হয়ে উঠি। আপনার ছাত্র আমরা, আপনি আমাদের আচার্যসম আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক – এই অহংবোধে জারিত রেখে গেলেন চিরদিনের জন্য। আমার বুক সেলফে জ্বলজ্বল করছে ‘দীপ প্রকাশনে’র পাঁচটি খণ্ডে অশ্রুকুমার সিকদার : গদ্যসংগ্রহ।