অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবিকতার মূর্ত প্রতীক

রামেন্দু মজুমদার
এ বছর আমরা আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করব। এ উদযাপন আমাদের আনন্দের, কৃতজ্ঞতা প্রকাশের। কারণ বঙ্গবন্ধু না জন্মালে আমরা একটা স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ পেতাম না। আজো হয়তো ব্যর্থ রাষ্ট্র পাকিস্তানের পশ্চিমা প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর আজ্ঞাবহ হয়ে থাকতে হতো। সে-জীবন আমাদের কেমন হতো, ভাবলেও গা শিউরে ওঠে। আজ যে আমরা বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলতে পারছি, সকলেই ব্যক্তিগত জীবনে ও জাতীয়ভাবে উন্নতি করতে পেরেছি, তার মূল কৃতিত্বের দাবিদার আমাদের রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু। আজ থেকে শতবর্ষ আগে এই মহামানবের জন্ম হয়েছিল আমাদের মুক্তিদাতা হিসেবে পরিগণিত হতে।

এক আশ্চর্য মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মৃত্যুর পরও যিনি আরো বেশি শক্তিশালী।তাঁকে যতবার খাটো করার চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই তিনি আরো বেশি মাথা উঁচু করে স্বমহিমায় দীপ্ত হয়েছেন। যারা তাঁকে ছোট করার চেষ্টা করেছে তারাই উল্টো আরো বেশি খর্ব হয়েছে।

কালে কালে দেশে দেশে মানুষের মুক্তির বারতা নিয়ে যেসব মানুষ আসেন তাঁরা তো ক্ষণজন্মা। লেনিন, মাও সে তুং, ফিদেল কাস্ত্রো, চে গুয়েভারা, ইয়াসির আরাফাত, মহাত্মা গান্ধী, মার্টিন লুথার কিং, নেলসন ম্যান্ডেলা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান – এঁরা বিশ্বে প্রাতঃ888sport app download for androidীয়দের মধ্যে অন্যতম। বঙ্গবন্ধু অজাতশত্রু ছিলেন এমন কথা কেউ বলতে পারবেন না। একটি মহৎ উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে যাঁরাই পৃথিবীতে অগ্রসর হন তাঁদের শত্রু থাকবে না, এটা হতে পারে না। তাঁর শত্রু ছিল। সেসব শত্রু অবশ্যই প্রচণ্ড শক্তিশালী ছিল। সে-শত্রু ছিল দেশ-বিদেশে।

মাত্র পঞ্চান্ন বছরের জীবন। কিন্তু এর মধ্যেই কী বিরাট কাজ করে গেছেন! ১৯৭৫ সাল যদি তাঁর জীবনে না আসত, তিনি যদি বেঁচে থাকতেন আমাদের মাঝে তবে 888sport appsের আদলই অন্যরকম হতো।কোথায় পৌঁছে যেতাম আমরা। তাছাড়া তিনি তো কেবল 888sport appsের মানুষের নেতা ছিলেন না, সারাবিশ্বের নিপীড়িত জনগণের কণ্ঠস্বর ছিলেন তিনি। কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত সে-কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দিয়েছে চিরতরে।

জানি, কোনোভাবেই আজ বঙ্গবন্ধুকে ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু মাঝে মাঝেই ভাবি, যদি তিনি আবার ফিরে আসতেন তাঁর প্রিয় এই বাংলায়? কেমন লাগত তাঁকে দেখতে? বয়স হতো তাঁর একশ। কিন্তু আমাদের হৃদয়ে আঁকা আছে বঙ্গবন্ধুর পঞ্চান্ন বছরের সেই ছবি! কজন বাঙালি এমন সুপুরুষ হন? আজ মনে হয়, যত দিন যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু ততই আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠছেন। কেবল কিছু মানুষ তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে গণ্ডিবদ্ধ করার প্রাণান্তকর চেষ্টায় লিপ্ত। মাঝে মাঝে তাঁদের মুখ থেকেই হঠাৎ করে অন্তরের সত্যি কথাটা অবশ্য বেরিয়ে যায়।

নেতৃত্বের অসাধারণ গুণাবলির বাইরে ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু ছিলেন সাহসী, মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক, সংস্কৃতিমনা ও গরিবের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাঁর এসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আমরা লক্ষ করি তাঁর দুটো আত্মকথায় – অসমাপ্ত আত্মজীবনী কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থে। ভাবতে অবাক লাগে, কারাগারের নির্জন কক্ষে বসে কোনো নোট ছাড়া তিনি তাঁর অসাধারণ 888sport app download for androidশক্তির বলে কীভাবে ইতিহাসের ঘটনাক্রম বর্ণনা করে গেছেন। সেজন্যই আমরা বলি, অসমাপ্ত আত্মজীবনী কেবল বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনকথা নয়, 888sport appsের অসমাপ্ত ইতিহাস। কোথাও নিজেকে বড় করে দেখাবার চেষ্টা নেই। পরমতসহিষ্ণুতা ও ভিন্নমতাবলম্বীর প্রতি 888sport apk download apk latest versionবোধ তাঁর গ্রন্থদুটির অনেক জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর সারাজীবন যদি আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করি তবে দেখব, অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শ থেকে কোনোদিন তিনি বিচ্যুত হননি। যে-শিক্ষা তিনি ছোটবেলায় পেয়েছিলেন, তা-ই লালন করেছেন পরবর্তী জীবনে। বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিজীবনে ছিলেন ধর্মপ্রাণ, কিন্তু এখনকার মতো লোক-দেখানো ধর্মাচরণে তিনি বিশ্বাস করতেন না। ধার্মিক মানুষই অসাম্প্রদায়িক হয়, ধর্মের নামে যারা ভণ্ডামি করে তারাই সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ায়।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে আমরা অনেক ঘটনার মধ্য দিয়ে তাঁর অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের পরিচয় পেয়েছি। ১৯৩৮ সালে যখন বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা এবং শ্রমমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ সফরে এলেন, শেখ মুজিব তখন স্কুলের ছাত্র। তাঁর ওপর ভার পড়েছিল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করার। সে-প্রসঙ্গে তিনি লিখছেন : ‘আমি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী করলাম দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে। পরে দেখা গেল, হিন্দু ছাত্ররা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী থেকে সরে পড়তে লাগল। ব্যাপার কি বুঝতে পারছি না। এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলাম, সেও ছাত্র, সে আমাকে বলল, ‘কংগ্রেস থেকে নিষেধ করেছে আমাদের যোগদান করতে। যাতে বিরূপ সংবর্ধনা হয় তারও চেষ্টা করা হবে। এক্সিবিশনে যাতে দোকানপাট না বসে তাও বলে দেওয়া হয়েছে। তখনকার দিনে শতকরা আশিটি দোকান হিন্দুদের ছিল। আমি এ-খবর শুনে আশ্চর্য হলাম। কারণ আমার কাছে তখন হিন্দু-মুসলমান বলে কোনো জিনিস ছিল না। হিন্দু ছেলেদের সাথে আমার খুব বন্ধুত্ব ছিল। একসাথে গান-বাজনা, খেলাধুলা, বেড়ানো – সবই চলত।’

বঙ্গবন্ধু যখন কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে পড়তেন, তখন গরিব ছাত্রদের জন্যে বেকার হোস্টেলে কতগুলো ফ্রি রুম ছিল। সে-সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু লিখছেন : ‘ইসলামিয়া কলেজে গরিব ছেলেদের সাহায্য করবার জন্য একটা ফান্ড ছিল। সেই ফান্ড দেখাশোনা করার ভার ছিল 888sport apkের শিক্ষক নারায়ণবাবুর ওপর। আমি আর্টসের ছাত্র ছিলাম, তবু নারায়ণবাবু আমাকে খুব ভালবাসতেন। তিনি যদিও জানতেন, আমি প্রায় সকল সময়ই ‘পাকিস্তান, পাকিস্তান’ করে বেড়াই। ইসলামিয়া কলেজের সকল ছাত্রই মুসলমান। একজন হিন্দু শিক্ষককে সকলে এই কাজের ভার দিত কেন? কারণ, তিনি সত্যিকারের একজন শিক্ষক ছিলেন। হিন্দুও না, মুসলমানও না। যে টাকা ছাত্রদের কাছ থেকে উঠত এবং সরকার যা দিত, তা ছাড়াও তিনি অনেক দানশীল হিন্দু-মুসলমানদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে জমা করতেন এবং ছাত্রদের সাহায্য করতেন। এই রকম সহানুভূতিপরায়ণ শিক্ষক আমার চোখে খুব কমই পড়েছে।’

একজন সৎ ও গুণী মানুষকে বঙ্গবন্ধু 888sport apk download apk latest version করতেন – কোনোদিন তিনি কোন ধর্মের মানুষ সেটা বিবেচনা করতেন না। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে বঙ্গবন্ধু খুব 888sport apk download apk latest versionর চোখে দেখতেন, তাঁর সাহস ও কর্মকাণ্ড বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। নেতাজি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মজীবনীতে লিখছেন : ‘আমাদেরও ইংরেজের বিরুদ্ধে একটা জাত ক্রোধ ছিল। হিটলারের ফ্যাসিস্ট নীতি আমরা সমর্থন করতাম না, তথাপি যেন ইংরেজের পরাজিত হওয়ার খবর পেলেই একটু আনন্দ লাগত। এই সময় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করে ভারতবর্ষের হিন্দু ও মুসলমান সৈন্যদের দলে নিয়ে ইংরেজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছেন। মনে হত, ইংরেজের থেকে জাপানই বোধহয় আমাদের আপন।আবার ভাবতাম, ইংরেজ যেয়ে জাপান আসলে স্বাধীনতা কোনোদিনই দিবে না। জাপানের চীন আক্রমণ আমাদের ব্যথাই দিয়েছিল। মাঝে মাঝে সিঙ্গাপুর থেকে সুভাষবাবুর বক্তৃতা শুনে চঞ্চল হয়ে উঠতাম। মনে হত, সুভাষ বাবু একবার 888sport appsে আসতে পারলে ইংরেজকে তাড়ানো সহজ হবে।আবার মনে হত, সুভাষবাবু আসলে তো পাকিস্তান হবে না। পাকিস্তান না হলে দশ কোটি মুসলমানের কি হবে? আবার মনে হতো, যে-নেতা দেশত্যাগ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে পারেন তিনি কোনোদিন সাম্প্রদায়িক হতে পারেন না। মনে মনে সুভাষবাবুকে তাই 888sport apk download apk latest version করতাম।’

১৯৪৬ সালের আগস্টে কলকাতায় যে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল তাতে হিন্দু-মুসলমান বহু লোক হতাহত হয়েছিল। সে-সময়ে শেখ মুজিব তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঙ্গা-উপদ্রুত এলাকা থেকে হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সাহায্য করেন। সে-সময়ে রাস্তায় রাস্তায় মৃতদেহ আর পোড়া বাড়িঘর দেখে তাঁর মনে হয়েছে, ‘মানুষ তার মানবতা হারিয়ে পশুতে পরিণত হয়েছে।’ এর পরপরই বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের রিলিফ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজে দিন-রাত প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছেন।

১৯৫২ সালে বন্দি শেখ মুজিব যখন ফরিদপুর জেলে, তখন সেখানে গোপালগঞ্জের ত্যাগী সমাজকর্মী চন্দ্র ঘোষ (ঘোষ নয়, বোস) অসুস্থ অবস্থায় বন্দি ছিলেন। চিকিৎসার জন্যে তাঁকে যখন বাইরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখনকার কথা বঙ্গবন্ধু লিখছেন : ‘চন্দ্র ঘোষ তাঁকে বললেন, ‘আমাকে বাইরের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। আমার তো কেউ নাই। আমি শেখ মুজিবুর রহমানকে একবার দেখতে চাই, সে আমার ভাইয়ের মত। জীবনে তো আর দেখা হবে না।’ সিভিল সার্জন এবং জেলের সুপারিনটেনডেন্ট, তাঁদের নির্দেশে আমাকে জেলগেটে নিয়ে যাওয়া হল। চন্দ্র ঘোষ স্ট্রেচারে শুয়ে আছেন। দেখে মনে হলো, আর বাঁচবেন না, আমাকে দেখে কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, ‘ভাই, এরা আমাকে ‘সাম্প্রদায়িক’ বলে বদনাম দিল; শুধু এই আমার দুঃখ মরার সময়! কোনোদিন হিন্দু-মুসলমানকে দুই চোখে দেখি নাই। সকলকে আমায় ক্ষমা করে দিতে বোলো। আর তোমার কাছে আমার অনুরোধ রইল, মানুষকে মানুষ হিসাবে দেখ। মানুষে মানুষে কোনো পার্থক্য ভগবানও করেন নাই। আমার তো কেউ নাই, আপন ভেবে তোমাকেই শেষ দেখা দেখে নিলাম। ভগবান তোমার মঙ্গল করুক।’ এমনভাবে কথাগুলো বললেন যে সুপারিনটেনডেন্ট, জেলার সাহেব, ডেপুটি জেলার, ডাক্তার ও গোয়েন্দা কর্মচারী সকলের চোখেই পানি এসে গিয়েছিল। আর আমার চোখেও পানি এসে গিয়েছিল। বললাম, ‘চিন্তা করবেন না, আমি মানুষকে মানুষ হিসাবেই দেখি। রাজনীতিতে আমার কাছে মুসলমান, হিন্দু ও খ্রিষ্টান বলে কিছু নাই। সকলেই মানুষ।’

বঙ্গবন্ধু যে সবসময়ে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী ভূমিকা পালন করেছেন, তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানি শাসকদের মদতে পূর্ব পাকিস্তানে, বিশেষ করে 888sport appয় একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। আমি তখন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, থাকতাম তেজগাঁও 888sport live chat এলাকায় আমার বড়ভাইয়ের স্টাফ কোয়ার্টার্সে। দাঙ্গার প্রথম রাতে আমাদের বাসার পাশের রেললাইনে ট্রেন থামিয়ে কয়েকজন 888sport free betলঘু যাত্রীকে হত্যা করা হয়। তাদের আর্তচিৎকারে আমরা সহজেই বুঝতে পারি, বাইরে কী ঘটছে। পরদিন সকালে আমাদের আত্মীয় অধ্যাপক অজিত গুহ বঙ্গবন্ধুকে ফোন করে জানান, আমার এক আত্মীয় পরিবার তেজগাঁওয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছে, তুমি যদি তাদের উদ্ধার করতে পারো।কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি বঙ্গবন্ধু আমাদের বাসায় এসে উপস্থিত। আমাদের বললেন, দু’মিনিটের মধ্যে তৈরি হয়ে আপনারা আমার সাথে চলুন। তিনি একটা জিপ নিয়ে এসেছিলেন, ড্রাইভারের পাশে তিনি বসলেন, পেছনে আমরা সবাই। ড্রাইভারকে নির্দেশ দিলেন কোথাও না থামিয়ে সোজা তাঁর বাসায় যেতে। জিপে যাওয়ার সময় পাশের বস্তি থেকে দু-একটা ঢিল ছোড়া দেখে বুঝলাম কেন তিনি ড্রাইভারকে এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন। বত্রিশ নম্বরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখি শহরের 888sport app এলাকা থেকে কয়েকটি 888sport free betলঘু পরিবারকে তিনি ইতোমধ্যে এনে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখেছেন। বেগম মুজিব পরম যত্নে সবার খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করছেন। সন্ধ্যায় অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী এসে আমাদের তাঁর বাসায় নিয়ে গেলেন।

এই যে মানুষের বিপদে এগিয়ে আসা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকারীদের সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করা, কজন নেতা এ-কাজটি করেন? মুখে বলা সহজ, কিন্তু কাজে করে দেখানো কঠিন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যা বিশ্বাস করতেন, জীবনাচরণে তার প্রতিফলন আমরা দেখতে পেয়েছি।

স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গবন্ধু 888sport appsের সংবিধানে চার মূলনীতির মধ্যে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’কেও অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। আজ কেবল আমাদের দেশে নয়, সারাবিশ্বেই ধর্মের নামে হানাহানি আর হিংসার যে-উন্মত্ততা, তার জন্যে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ যে কত প্রয়োজন, বঙ্গবন্ধু তাঁর দূরদৃষ্টি দিয়ে তা হৃদয়ঙ্গম করতে পেরেছিলেন।

নেতৃত্বের একটা অত্যাবশ্যকীয় শর্ত – সাহস। এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের গানের একটা পঙ্ক্তি মনে পড়ছে – ‘ওরে ভীরু, তোমার হাতে নাই ভুবনের ভার।’ আমরা লক্ষ করি, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত সাহসী, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে তিনি কখনো পিছপা হতেন না। এ প্রতিবাদ তিনি করে গেছেন সারাজীবন। বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানিদের অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদের ফলেই তো আমরা লাভ করেছি স্বাধীন 888sport apps। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কতভাবে তাঁকে প্রতিবাদের পথ থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হয়নি। অখণ্ড পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রিত্বের চেয়ে তাঁর কাছে বড় ছিল বাঙালির অধিকার। ১৯৭১-এর অসহযোগ আন্দোলনের কী পরিণতি হতে পারে, তা নিশ্চয়ই তিনি জানতেন।প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যে আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করছেন, তা বঙ্গবন্ধু ঠিকই বুঝেছিলেন। কিন্তু তিনি সাহসের সঙ্গে গণতান্ত্রিক পথে অগ্রসর হয়েছেন। পাকিস্তানিদের কোনো সুযোগ দেননি তাঁকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করার। স্বাধীনতা ঘোষণা করে বীরের মতোই নিজ গৃহে অবস্থান করেছেন, পরিণতি জেনেই। একাত্তরে পাকিস্তানের বন্দিশালায় মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও সাহস হারাননি, আদর্শচ্যুত হননি। বঙ্গবন্ধুর মতো সাহসী নেতারাই তো দেশে দেশে বিপ্লব করেছেন, মানুষকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করার সংগ্রামে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন।

মানুষের জন্যে, বিশেষ করে গরিব-দুঃখী মানুষের জন্যে বঙ্গবন্ধু সবসময় হৃদয়ে মমতা লালন করতেন।তার অনেক উদাহরণের মধ্যে একটি ঘটনা বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের কথা বলতে গিয়ে এক জায়গায় লিখেছেন :

‘আমি গোপালগঞ্জ যেয়ে দেখি, মুসলিম লীগ মনোনীত প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব ময়দানে সদলবলে নেমে পড়েছেন। তিনি নিজের জীবনেই বহু অর্থের মালিক হয়েছেন। লঞ্চ, স্পিডবোট, সাইকেল, মাইক্রোফোন কোনো কিছুরই তার অভাব নাই। আমার একটা মাইক্রোফোন ছাড়া আর কিছুই নাই।গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া এই দুই থানা নিয়ে আমাদের নির্বাচনী এলাকা। রাস্তাঘাট নাই।যাতায়াতের খুবই অসুবিধা। আমার নির্বাচন চালাবার জন্য মাত্র দুইখানা সাইকেল ছিল। কর্মীরা যার যার নিজের সাইকেল ব্যবহার করত। আমার টাকা-পয়সারও অভাব ছিল। বেশি টাকা খরচ করার সামর্থ্য আমার ছিল না। আমার ফ্যামিলির কয়েকখানা ভাল দেশী নৌকা ছিল তাই ব্যবহার করতে হল।ছাত্র ও যুবক কর্মীরা নিজেদের টাকা খরচ করে আমার জন্য কাজ করতে শুরু করল। কয়েকটা সভায় বক্তৃতা করার পরে বুঝতে পারলাম, ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব শোচনীয়ভাবে পরাজয়বরণ করবেন।টাকায় কুলাবে না, জনমত আমার পক্ষে। আমি যে গ্রামেই যেতাম, জনসাধারণ শুধু আমাকে ভোট দেওয়ার ওয়াদা করতেন না, আমাকে বসিয়ে পানদানের পান এবং কিছু টাকা আমার সামনে নজরানা হিসাবে হাজির করত এবং না নিলে রাগ করত। তারা বলত, এ টাকা নির্বাচনের খরচ বাবদ দিচ্ছে।’

আমার মনে আছে, খুবই গরিব এক বৃদ্ধ মহিলা কয়েক ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, শুনেছে এই পথে আমি যাব, আমাকে দেখে আমার হাত ধরে বলল, ‘বাবা আমার এই কুঁড়েঘরে তোমায় একটু বসতে হবে।’আমি তার হাত ধরেই তার বাড়িতে যাই। অনেক লোক আমার সঙ্গে, আমাকে মাটিতে একটা পাটি বিছিয়ে বসতে দিয়ে এক বাটি দুধ, একটা পান ও চার আনা পয়সা এনে আমার সামনে ধরে বলল, ‘খাও বাবা, আর পয়সা কয়টা তুমি নেও, আমার তো কিছুই নাই।’ আমার চোখে পানি এলো। আমি দুধ একটু মুখে নিয়ে, সেই পয়সার সঙ্গে আরো কিছু টাকা তার হাতে দিয়ে বললাম, ‘তোমার দোয়া আমার জন্য যথেষ্ট, তোমার দোয়ার মূল্য টাকা দিয়ে শোধ করা যায় না।’ টাকা সে নিল না, আমার মাথায় মুখে হাত দিয়ে বলল, ‘গরিবের দোয়া তোমার জন্য আছে বাবা।’ নীরবে আমার চক্ষু দিয়ে দুই ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়েছিল, যখন তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। সেদিনই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, ‘মানুষেরে ধোঁকা আমি দিতে পারব না।’ এরকম আরো অনেক ঘটনা ঘটেছিল। আমি পায়ে হেঁটেই এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে যেতাম। আমাকে রাস্তায় রাস্তায়, গ্রামে গ্রামে দেরি করতে হতো। গ্রামের মেয়েরা আমাকে দেখতে চায়। আমি ইলেকশনে নামার পূর্বেই জানতাম না, এ দেশের লোক আমাকে কত ভালবাসে। আমার মনের একটা বিরাট পরিবর্তন এই সময় হয়েছিল।’স্বাধীনতার অর্থ বঙ্গবন্ধুর কাছে ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। ১০ই জানুয়ারি ১৯৭২ তাই দেশের মাটিতে ফিরে এসেই তাঁর আবেগঘন ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হিসাবে নয়, নেতা হিসাবে নয়, আপনাদের ভাই হিসাবে বলছি – যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায়, তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে – পূর্ণ হবে না।’

মানুষের জন্যে বঙ্গবন্ধুর যেমন মমতা ছিল, তেমনি ভালোবাসা ছিল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্যে।সর্বার্থে তিনি ছিলেন আপাদমস্তক বাঙালি। বিভিন্ন সময়েই তাঁর জীবন ও কর্মে সংস্কৃতির প্রতি গভীর অনুরাগ আমরা লক্ষ করেছি। প্রায়ই তিনি ঘরোয়া আলাপ-আলোচনা বা জনসভায় বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথের 888sport app download apk থেকে উদ্ধৃতি দিতেন। তাঁর পড়ার ঘরে হাতের কাছেই থাকত সঞ্চয়িতা। ১৯৭১ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির ভাষা-আন্দোলন 888sport app download for android সপ্তাহের উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘বাঙালির স্বাজাত্যবোধকে টুঁটি চেপে হত্যার জন্যে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র বারবার এই অঞ্চলের সংস্কৃতি ও ভাষার উপর আঘাত হেনেছে, আর তাকে প্রাণ দিয়ে প্রতিহত করেছে এদেশের তরুণরা। কিন্তু তাদের মধ্যে বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় ক’জন আছেন? বিবেকের কাছেই তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে। আপনাদের লেখনী দিয়ে বের হয়ে আসা উচিত ছিল এদেশের গণমানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা। স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর সন্তান সূর্য সেনের প্রতি 888sport apk download apk latest version জ্ঞাপনের প্রচেষ্টাই করা হয় নাই। তাঁর কথা বলতে আপনারা ভয় পান। কারণ তিনি ছিলেন হিন্দু। এঁদের ইতিহাস লেখা এবং পাঠ করার জন্যে দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাই। একদিন বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলা যেত না। কিন্তু আজ এই জাতীয়তাবাদ সত্য। একে রোধ করতে পারে এমন কোন ক্ষমতা নাই। এই প্রথমবারের মতো বাঙালি জাতি একতাবদ্ধ হয়েছে। নিজেদের দাবিতে বাঙালিরা আজ ঐক্যবদ্ধ।’

এর আগে ১৯৭১-এর ২৪শে জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান সংগীত888sport live chatী সমাজের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের গণমুখী সংস্কৃতিকে বিকশিত করার উদ্দেশ্যে 888sport live football-সঙ্গীতে কবি-888sport live footballিক-888sport live chatীদের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখকে প্রতিফলিত করতে হবে। সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। তাই মাটি ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণমানুষের সুপ্ত শক্তি ও স্বপ্ন এবং আশা-আকাঙ্ক্ষাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব 888sport live football-সংস্কৃতি। আপনারা ভালোবাসা এবং শান্তির অনেক গান গেয়েছেন। আজ বস্তির নিঃস্ব সর্বহারা মানুষের জন্যে গান রচনার দিন এসেছে। রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের মতো বিপ্লবী গান গাইতে হবে। মানুষের মনে প্রেরণা জোগাতে হবে। যদি এতে বাধা আসে, সেই বাধা মুক্তির জন্যে সাত কোটি বাঙালি এগিয়ে আসবে।’

সংস্কৃতিকর্মীদের জন্যে তাঁর সহমর্মিতার দুটো উদাহরণ এখানে উল্লেখ করতে চাই। ১৯৭৪ সালে বন্যার সময় আমরা থিয়েটার থেকে ‘এখন দুঃসময়’ অভিনয় করে যতদূর মনে পড়ে দুই বা তিন হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিতে গেছি। বঙ্গবন্ধু খুব খুশি হয়ে আমাদের এ সামান্য দান গ্রহণ করে আমাদের অফিস প্রয়োজন কিনা জানতে চাইলেন। আমরা ভাবলাম এখন নতুন দেশে সরকারের কত কিছুর প্রয়োজন, এ সময়ে আমাদের অফিসের জন্যে বাড়ি না হলেও চলবে। তাই তাঁকে আপাতত প্রয়োজন নেই বললাম। তাঁর কত দূরদৃষ্টি ছিল আর আমাদের তার অভাবের কথা ভেবে এখন আফসোস করি। এখন দলের জন্যে বা থিয়েটার স্কুলের জন্যে একটা স্থায়ী ঠিকানার সন্ধানে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।দ্বিতীয় ঘটনাটি আমাদের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু গেছেন রামপুরায় 888sport apps টেলিভিশনের নতুন ভবন পরিদর্শনে। অভ্যর্থনাকারীদের সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তরুণ প্রযোজক আবদুল্লাহ আল-মামুন। তাঁকে দেখে বঙ্গবন্ধু দুহাত মামুনের গালে ধরে আদর করে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী তোমাদের নাটক কেমন চলছে?’ সে-সময়ে কিন্তু প্রমোদ কর ও সেন্সরশিপের আইন কড়াকড়িভাবে প্রয়োগ করার ফলে 888sport appয় নিয়মিত নাট্যচর্চা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মামুন জবাব দিলো, আপনি তো নাটক বন্ধ করে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কারণ জানতে চাইলে মামুন এ দুটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করল। পাশে দাঁড়ানো ছিলেন অর্থমন্ত্রী ড. এ. আর. মল্লিক। তাঁকে বঙ্গবন্ধু বললেন, কি মল্লিক সাহেব, নাটকের লোকেদের কাছ থেকে টাকা না নিলে কি আমার সরকার চলবে না? বঙ্গবন্ধু পরদিনই মামুনকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বললেন। আমি আর মামুন সে-অনুযায়ী গণভবনে গিয়ে হাজির হলাম।আমাদের বন্ধু ড. ফরাসউদ্দীন ছিলেন তখন রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত সচিব। ফরাসভাইকে ডেকে বঙ্গবন্ধু বললেন, আজই রাষ্ট্রপতির আদেশ জারি করে দাও যে, এখন থেকে সৌখিন নাট্যদলগুলোকে কোনো প্রমোদ কর দিতে হবে না আর সেন্সর পুলিশের বদলে 888sport live chatকলা একাডেমিতে একটি নাটক সেন্সর কমিটির মাধ্যমে হবে। মন্ত্রণালয়ে পাঠালে জটিলতা হতে পারে উল্লেখ করে সরাসরি রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির কথা বললেন। তারপরই নাট্যচর্চার ওপর থেকে প্রমোদ কর উঠে গেল এবং নাটকের সেন্সর পদ্ধতি সহজতর হলো। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০০ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নাটক সেন্সর আইন পুরোপুরি বাতিল করেন।

যাঁরা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সাহচর্য পেয়েছেন তাঁরা নিশ্চয়ই বাংলা ভাষার জন্যে, বাঙালি সংস্কৃতির জন্যে বঙ্গবন্ধুর গভীর অনুরাগের অনেক কথা বলতে পারবেন। আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দেশের তো বটেই, আমাদের 888sport live football-সংস্কৃতির যে প্রভূত অগ্রগতি হতো, সে-বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। রবীন্দ্রনাথের নোবেল 888sport app download bdপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে বাংলা 888sport live football বিশ্ব স্বীকৃতি অর্জন করেছিল আর জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় প্রদত্ত ভাষণের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সুখের কথা, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ভাষা-সংস্কৃতির বিকাশে সমভাবে আগ্রহী।বঙ্গবন্ধুর 888sport sign up bonusকে মানুষের মন থেকে মুছে ফেলার নানা আয়োজন আমরা এদেশে প্রত্যক্ষ করেছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে কি 888sport appsের ইতিহাস লেখা সম্ভব? 888sport appsের পতাকার দিকে তাকালেই তো আমরা লাল সূর্যের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর মুখচ্ছবি দেখতে পাই। বঙ্গবন্ধু ও 888sport apps শব্দদুটি সমার্থক হয়ে গেছে। বিবিসির মতো আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমও যখন শ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্ধারণে শ্রোতাদের মধ্যে জরিপ পরিচালনা করে, তখন অবধারিতভাবে যে-নামটি সকল কৃতী বাঙালির নামের তালিকায় সবার ওপরে উঠে আসে – সে-নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রবীন্দ্রনাথ আমাদের বাংলা 888sport live football-সংস্কৃতির প্রধান পুরুষ। তাঁর সঙ্গে তুলনায় না গিয়েও বঙ্গবন্ধুর অবদানকে আমরা বড় করে দেখছি এ-কারণে যে, তিনি আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন। চূড়ান্ত লক্ষ্যে অবিচল থেকে ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন। ‘দেখি নাই কভু দেখি নাই, আহা এমন তরণী-বাওয়া’ – রবীন্দ্রনাথের গানের এ-চরণ বোধকরি সবচেয়ে সার্থকভাবে প্রযুক্ত হতে পারে বাঙালি জাতির ঝড়ো দিনের কাণ্ডারি শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের প্রতি। জীবনে কোনোদিন মাথানত করেননি, আপস করেননি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক জননায়কের কথা আমরা জানি – যাঁদের সংগ্রাম শেষ পর্যন্ত সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে পারেনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের বিরল সেসব সৌভাগ্যবানের অন্যতম যাঁরা চরম নির্যাতনের মধ্য দিয়েও লক্ষ্য অর্জনের সংগ্রামে এগিয়ে গেছেন, জনপ্রিয়তার তুঙ্গ স্পর্শ করেছেন ও চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছেন। বাঙালিকে আপন আবাসভূমির স্বপ্ন দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’ কেবল আন্দোলনের স্লোগানই ছিল না, ছিল মানুষের প্রাণের আকুতি। তাই বঙ্গবন্ধুই বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক, আমাদের জাতির জনক।