শাকুর মজিদ
১৯৯২ সালে আমি বুয়েটের ফিফথ ইয়ারে উঠেছি। সিনেমা দেখা কমিয়ে দিয়েছি, ভালো লাগে না। একসময় সিনেমা দেখে যখন রিভিউ লেখা আমার প্রায় চাকরি ছিল, মূলত তখন থেকেই সিনেমা দেখার প্রতি আগ্রহ কমে যায়। একবার কাগজে দেখলাম শঙ্খনীল কারাগার নিয়ে ছবি বানানো হয়েছে। এটা মুক্তি পেয়েছে বলাকার ছোটভাই বিনাকা হলে। আমার রুমমেট আখতার। তাঁকে রাজি করালাম, গেলাম সিনেমা দেখতে। এর আগে এই শঙ্খনীল কারাগার নিয়ে নাটক দেখেছি আমাদের কলেজ (ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ) অডিটরিয়ামে। সাদাকালো টিভি। ফেরদৌসী মজুমদার, সুবর্ণা মুস্তাফা, মমতাজউদদীন আহমদ ছিলেন সে-নাটকে। ভালো লেগেছিল। কিন্তু এ-সিনেমা দেখে আমি একেবারেই হতাশ।
888sport alternative link পড়তে গিয়ে আমি যতটুকু ভিজেছিলাম বছর দশক আগে, তার সিকিভাগও স্পর্শ করল না আমাকে। কাহিনিতেও দেখি অনেক ভেজাল। কখনো মনে হয় এটা ’৬৮-৬৯-এর গল্প, কখনো দেখি ১৯৮৯ সালের কাহিনি। সেটের, পোশাকের ক্ষেত্রেও একই গরমিল। তাছাড়া 888sport alternative linkে যে-চরিত্রটা নেই, সেরকম একটা চরিত্রের আমদানি হলো জাফর ইকবালের। চম্পার (ঝুনু) চরিত্র বেড়ে গেছে অনেকটুকু। রাবেয়ার (ডলি জহুর) মূল সংকট 888sport alternative linkে ছিল একটা, এখানে দেখি অন্যটা। এই মেয়েটি কালো বলে তার বিয়ে হতো না, অথচ ডলি জহুরকে মোটেও কালো মেয়ে বলে মনে হচ্ছে না। আমার কাছে সবচেয়ে বেখাপ্পা লাগলো আসাদুজ্জামান নূরকে বানানো হয়েছে ডলি জহুরের ছোট ভাই। দূর, ছবিটা দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
অনেকদিন পরে শুনি এ-ছবিটার জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার হিসেবে জাতীয় live chat 888sport 888sport app download bd পেয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ এবং পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ-ছবিটার বিষয়ে কী একটা আলোচনা সভাও আছে।
আমার মনে হলো, এ-অনুষ্ঠানে গেলে হয়তো হুমায়ূন আহমেদকে দেখা যেতে পারে। বুয়েটের তিতুমীর হল থেকে পাবলিক লাইব্রেরি পায়ে হাঁটা পথ, আমার আবার সাইকেল আছে। আমি একসময় গিয়ে হাজির হই এবং দেখি বেশ লোকজন ওখানে। মঞ্চের ওপর ছবিটির পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, একজন মন্ত্রী এবং হুমায়ূন আহমেদও আছেন।
888sport apps সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় এ-ছবিটি বানিয়েছে। এ-ছবির সংলাপ লিখেছেন স্বয়ং হুমায়ূন আহমেদ। লোকজন এ-ছবিটির ভূয়সী প্রশংসা করল, আমি তার কোনো কিছুই মনে রাখতে পারলাম না। আমার শুধু এটুকুই মনে আছে যে, কাহিনি ও সংলাপ রচয়িতা হিসেবে মঞ্চে বক্তৃতা দিতে এসে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর এ-কাহিনি নিয়ে live chat 888sport নির্মাণ করার জন্য সরকারকে খুবই ধন্যবাদ দিলেন। এক ফাঁকে তিনি বললেন যে, ‘অনেকেই আমাকে জিগ্যাসা করে, এ-ছবিটির স্ক্রিপ্ট লিখে আমি কত টাকা পেয়েছি। আমি তাদেরকে বিশেষ কিছু বলি না, তবে আজ জানিয়ে দিই যে, আমি এই স্ক্রিপ্টটি লিখে ১০ হাজার টাকা পেয়েছি।’
মন্ত্রী মহোদয় মঞ্চে এসে তাঁর বক্তৃতায় বলেন যে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিতব্য পরবর্তী ছবিগুলোতে লেখকের এই সম্মানী দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। স্ক্রিপ্ট রাইটার ২০ হাজার টাকা পাবেন।
সামনের সারির একজন দর্শক উঠে তখনই প্রস্তাব করেন, এই পরিবর্তিত সম্মানীটুকু যেন হুমায়ূন আহমেদের ওপরও প্রযোজ্য হয়।
হুমায়ূন আহমেদ সেদিনের বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি নিয়ে নিজেই একটি ছবি বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চিত্রনাট্য তৈরি আছে, প্রযোজক পেলে নিজেই এ-ছবিটি বানাবেন।
এরপর পত্রিকায় খবর ছাপে – হুমায়ূন আহমেদ সরকারি অনুদান পেয়েছেন এবং তাঁর নিজের লেখা 888sport alternative link অবলম্বনে ছবি বানাবেন ‘আগুনের পরশমণি’।
১৯৯৪ সাল হুমায়ূন আহমেদের জন্য একটি বিশেষ বছরও। এ-বছর তিনি দেশের সর্বোচ্চ 888sport app download bd ‘888sport cricket BPL rateে পদকে’ ভূষিত হলেন। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছ থেকে এ-888sport app download bd তিনি গ্রহণ করেন। এবং জাতীয়তাবাদী দলের সরকারের তথ্যমন্ত্রী নাজমুল হুদা ছবি বানানোর জন্য ২৫ লাখ টাকা অনুদান মঞ্জুর করেন।
হুমায়ূন আহমেদ যেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেলেন, সেদিনই সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি তিনি আর করবেন না। তিনি ছবি বানাবেন। এ নিয়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেও খটমট শুরু হয়ে যায়। তাঁর লেখায় পড়েছি, স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদ কখনই চাননি তিনি ফিল্ম মেকার হোন, তিনি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে বিয়ে করেছেন, ফিল্ম ডিরেক্টরকে নয়… এসব।
গুলতেকিন বললো, তুমি যখন পিএইচ.ডি করেছিলে তখন আমি কী করেছি? নিজে পড়াশোনা বাদ দিয়ে তোমার পড়াশোনা যাতে ঠিকমতো হয় সেদিকে লক্ষ করেছি। তখন তুমি কথা দিয়েছিলে আমি যখন পড়াশোনা শুরু করব তখন তুমি আমার পড়াশোনায় সাহায্য করবে। আমি পড়াশোনা শুরু করেছি। আমার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা। বাচ্চাদের নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকি। এর মধ্যে বাজার করতে হয়, মেহমানদারি করতে হয়, পরীক্ষার পড়া করতে হয়। কোথায় গেল তোমার প্রতিজ্ঞা? তুমি শুরু করলে তোমার ছবি। এই ছবি বানানোর কাজটা কি আর কিছুদিন পরে করলে হতো না? অবশ্যই হতো। তুমি করবে না। কারণ, তোমার কাছে আমি বা আমার সংসার কিছু না। তোমার জগৎ – তোমার কাজকর্ম ঘিরে। এর বাইরে কোনোদিন কিছু ছিল না, হবেও না। আজ তোমার ছবির মহরত। খুব আনন্দের কথা। তুমি তোমার একজীবনে যা করতে চেয়েছ করতে পেরেছ। আমি জানি ছবিটাও তুমি ভালো বানাবে। সেই ছবি অনেকগুলি জাতীয় 888sport app download bd পাবে। তুমি জেনে রাখো সেই 888sport app download bdের সঙ্গে আমার কোনো যোগ নাই। আজ তোমার মহরত অনুষ্ঠানে আমি যাব না। দয়া করে আমাকে সেটে নেবার চেষ্টা করবে না। (ছবি বানানোর গল্প, হুমায়ূন আহমেদ)
কিন্তু এই স্বেচ্ছাচারী মানুষটিকে কে আটকাতে পারে! নিজে শুধু ছবি বানানোতেই গেলেন না, তার কিশোরীকন্যা শীলা আহমেদও যোগ দিল তাঁর দলে। রাত্রির (বিপাশা) ছোট বোন অপলার চরিত্রে অভিনয়ও করল। ছবি বানানো শেষ, এবার মুক্তির পালা।
১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর মাসের কোনো একদিন। সময়টা মনে আছে এ জন্যে যে, আমার প্রথম সন্তান ইশমামের জন্ম হয়েছিল ১৭ ডিসেম্বর। আমার স্ত্রী-পুত্রকে ইবনে সিনা হাসপাতালে রেখে এসেছি ৩ ঘণ্টার জন্য। পত্রিকায় দেখেছি – ধানমণ্ডির সাতমসজিদ রোডের গণগ্রন্থাগার লাইব্রেরিতে এ-ছবিটির প্রেস শো হবে। আমি যদিও এখন আর সাংবাদিক নই, কিন্তু একটা প্রেস শোতে উপস্থিত হয়ে গেলে আমাকে কেউ ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবে – এটা মনে করি না। আমি গিয়ে হাজির।
ছবিটি দেখলাম।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সাদাকালো যুগের কিছু ছবি দেখেছিলাম। এ-ছবিটা অনেক ভিন্ন। এখানে আবেগের বিষয়টি অনেক বেশি। মুক্তিযুদ্ধ তো আছেই, আছে জ্যোৎস্না আর বৃষ্টির গল্পও। ভালোবাসার গল্প।
আগুনের পরশমণির বীজ প্রোথিত হয়েছিল তাঁর কিছুদিন আগের লেখা বহুব্রীহি নাটকটিতে। নাটকটির শেষ দুই পর্বের পুরো অংশই জুড়ে থাকে মুক্তিযুদ্ধের কথা। সোবহান সাহেবের (আবুল হায়াত) বাসায় গ্রাম থেকে আসা আশ্রিত বদলোক ইমদাদ খন্দকার মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটূক্তি করার পর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে পুরো পরিবার। মামা বুদ্ধি বের করেন। টেপরেকর্ডারে ‘তুই রাজাকার’ রেকর্ড করে শোনানো হবে তিনটি টিয়া পাখিকে এবং সাতদিনের মধ্যে তারা শিখেও ফেলবে। দুটো পাখি মারা যায়, তৃতীয় টিয়া একসময় বলে ওঠে ‘তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’।
১৯৮৮-৮৯ সালের এ-সময়টাতে এরশাদ ক্ষমতায়। টেলিভিশনে ‘পাকিস্তানি হানাদার’ বলা নিষিদ্ধ, শুধু হানাদার বলতে হয়। বেশ কয়েকজন কথিত রাজাকার এরশাদের মন্ত্রিসভার সদস্য। ১৯৭৫-এর পর 888sport apps টেলিভিশন বা রেডিওতে রাজাকার শব্দ ব্যবহার হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধের এ-বিষয়টা নিয়ে হুমায়ূন আহমেদকে অনেক জটিল পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছে। তাঁর বাবাকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিল, আবার তাঁর নানাকে যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হতে হয়েছিল। এ দুপক্ষকেই তিনি দেখেছেন।
বহুব্রীহির শেষ পর্বে মামাকে দেখা যায় ভিন্ন চরিত্রে। বেশ কিছু টাকা তার হাতে আসার ফলে তার চরিত্র থেকে পাগলামি সরে যায়। তিনি সিরিয়াস ফিল্ম মেকার হয়ে যান। ‘ও আমার রসিয়া বন্ধুরে’ ছবি বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি বানাতে চান, ছবির নাম দেন ‘তুই রাজাকার’। এই ‘তুই রাজাকার’ ছবির কয়েকটি দৃশ্যও চলে আসে নাটকের মধ্যে। একটা দৃশ্যে দেখা যায়, হাত-পা বাঁধা কাদের বসে আছে, পাকিস্তানি মিলিটারি তাকে প্রশ্ন করছে।
– তোর নাম কি?
– সৈয়দ আবদুল কাদের।
– হুম, তুই মুক্তিবাহিনীর লোক?
– হ, আমি মুক্তিযোদ্ধা।
– তুই দেশের দুশমন।
– হারামজাদায় কয় কী? হালা, তোর মুখে আমি ছেপ দেই। থু…থু।
এই বলে হাত বাঁধা কাদের থুথু ছিটাতে থাকে মিলিটারির মুখের দিকে।
এরপরই হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন সিনেমার চিত্রনাট্য, আগুনের পরশমণি। সেটা ছিল হুমায়ূন আহমেদের বানানো প্রথম live chat 888sport। সে-ছবিতেও বদিউল আলমের এক সহযোদ্ধাকে ঠিক এরকম একটা দৃশ্যে দেখা গিয়েছিল।
এ-ছবিতে তাঁর আবেগ বহুব্রীহি নাটক দলের আবুল হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর ছাড়া বাদবাকি 888sport live chatীরা নতুন। উল্লেখযোগ্য সংযোজন হোসনে আরা পুতুল। দুর্দান্ত অভিনয় করলেন বিপাশা হায়াত।
ছবির পর লেখক কথা বলতে মাইক্রোফোন হাতে নিলেন। আমার সামনে এই প্রথম উপস্থিত হলেন একজন live chat 888sportকার হুমায়ূন আহমেদ। 888sport alternative link পড়েছি, নাটক দেখেছি, এবার তাঁর বানানো সিনেমাটি দেখলাম। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে প্রথমেই তিনি তাঁর স্ক্রিপ্ট নিয়ে ইতোপূর্বে বানানো শঙ্খনীল কারাগার নির্মাণের বদনাম করলেন। বললেন অন্যভাবে যে, ‘লোকে বলে বড় পর্দায় নাটক দেখলাম, সিনেমা কোথায়?’ এজন্যে তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিলেন, এবার সিনেমা বানাবেন। এ-সিনেমার শেষ দৃশ্যে কতগুলো পাখি উড়ে যাওয়ার একটা দৃশ্য আছে। এটাই ছিল তার প্রথম নেওয়া শট। ছবির ফান্ড জোগাড় হওয়ার আগেই এফডিসি থেকে ক্যামেরা, ফিল্ম ও একজন ক্যামেরাম্যান নিয়ে 888sport app চিড়িয়াখানার পাশের একটা জায়গায় এ-দৃশ্যের শুটিং করেন এক ভোরে।
হুমায়ূন আহমেদের কথা বলার ভঙ্গিটা দারুণ। গলার স্বর মোটেও ভালো নয়, কথার মধ্যে ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষার টান আছে। কিন্তু তারপরও কেমন যেন একধরনের মাদকতা মাখানো তাঁর শব্দচয়ন। মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না।
এ-ছবিটির কোনো এক জায়গায় কয়েক সেকেন্ড ধরে একটা শট কাঁপছে। এ কাঁপাকাঁপি নিয়ে তাঁর অনেক দুঃখবোধ, খেদ। ইচ্ছা ছিল পুরো দৃশ্যটি রিশুট করার, অর্থাভাবে করতে পারেননি। এমন কথা বললেন।
এ-ছবির নাম এসেছে রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে। গানও এসেছে রবীন্দ্রনাথের। তার মাঝে হুমায়ূন আহমেদ নিলেন আমাদের সিলেটি সাধক হাছন রাজার গান। আমার খুবই ভালো লাগল।
এক পর্যায়ে প্রশ্নোত্তরের পালা এলো। নানা সাংবাদিক নানা প্রশ্ন করেন। আমার ইচ্ছা ছিল একটা প্রশ্ন করার। এ-প্রশ্নটা করলেই তিনি আটকে যেতেন। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে আক্ষরিক অর্থেই কাকভেজা হয়ে বদিউল আলম (আসাদুজ্জামান নূর) রাত্রিদের (বিপাশা) বাড়িতে এসে ওঠে। তার সমস্ত জামাকাপড়, শরীর ভিজে জবুথবু। এর মধ্যেই পকেট থেকে আস্ত একটা সিগারেটের শুকনো প্যাকেট কী করে বেরোয়? এতো ভেজাভেজির মধ্যে এগুলো কোনোভাবেই শুকনো থাকার কথা নয়।
ছবির শেষ দৃশ্যটি বড় করুণ। দেশ প্রায় স্বাধীন হয়ে যাচ্ছে। অথচ বদি গুলি খেয়ে মারাত্মক আহত। সে যে কোনো সময় মারা যেতে পারে। খুব ভোরবেলা তার ঘরে এসে ঢোকে রাত্রি। বদিকে ঘিরে রেখেছে তার পরিবারের লোকজন। বদির কাছে এসে বলে, ‘আপনাকে চোখ বন্ধ করতে হবে না, আপনাকে ভোর দেখতে হবে।’ রাত্রি বলে, ‘এমন সুন্দর সকাল আপনি দেখবেন না? একদিন দেশ স্বাধীন হবে, আমি হারমোনিয়াম বাজাতে বাজাতে রাস্তায় নাচব। আপনি আমার সাথে থাকবেন না? এতো সুন্দর আলো, আপনি ছুঁয়ে দেখবেন না?’
বদির নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। বদি ভোর দেখতে পারে না। পুবের জানালা দিয়ে স্বাধীন দেশের সূর্যের পরশমণি এসে লাগে বদির কপালে। রাত্রি মৃত বদির হাত বাড়িয়ে দেয় দিনের নরোম আলোর দিকে। গান বেজে ওঠে ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’।
এ-দৃশ্য দেখার পর এ-ছবির আর কোনো খুঁত নিয়ে আলাপ করতে ইচ্ছা করে না।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.