আড় ভাবুকের কড়চা

অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত
কবির ঠিকানা
যাঁরা প্রজ্ঞান অর্জনের ভরসায় রোমে পাড়ি দিতে চান, এখন থেকে তাঁদের একটি নতুন লক্ষ্য নির্ণীত হলো : ‘কবির বাড়ি’ (Casa di Goethe)। বাইরে থেকে দেখলে তাকে এমনকিছু উল্লেখ্য বলে মনে হয় না। কিন্তু ১৮ নম্বর ভিয়া দেল কর্সোর এই বাড়িটা আচম্বিতে বিশ্বের সমস্ত তীর্থযাত্রীর ‘আদি পিতা’র (Urvater) আসল ঠিকানা হয়ে উঠেছে। 888sport sign up bonusফলকটা এখনো কিছু ম্লায়মান, কিন্তু ওই আপাতজীর্ণতার মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে শাশ্বতের দায়ভাগ।
‘যেদিন রোমে পা রাখলাম, সেই দিনটাকেই আমার দ্বিতীয় জন্ম অথবা পুনর্জন্মের নিরিখ হিসেবে ধরতে হবে,’ লিখেছেন গ্যোয়েটে। ১৭৮৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাঁইত্রিশ বছর বয়সে হঠাৎই এই শহরে চলে গিয়েছিলেন তিনি। হাইমারের সংকীর্ণ চৌহদ্দি তাঁর কাছে দুঃসহ ঠেকেছিল নিশ্চয়ই। তাছাড়া সৃষ্টির সংকটও ছিল অন্তর্লীন কারণ। নাট্যকার রোল্ফ হোখহুথ রঙ্গচ্ছলেই বলেছেন : ‘এই সংক্রান্তিটাকে সামলে নিতে পেরেছিলেন বলেই গ্যোয়েটে জার্মান সংস্কৃতি-ইতিহাসের সার্থকতম প্রযোজক।’ দু-দুটো বছর এখানে এবং এখান থেকেই তিনি ধ্রুপদী 888sport live chat888sport live footballের উৎসে হানা দেওয়ার প্রক্রিয়ায় নিজের রচনার নবায়ন ঘটাতে পেরেছিলেন। তাই তো তাঁর 888sport app download apkয় ইতালি ‘সে-দেশ, যেখানে নেবু ফোটে থরে থরে।’ প্রায় পনেরো মাস এখানে তিনি তাঁর বন্ধু888sport live chatী হিবলহেলম টিশবাইনের সঙ্গে কাটিয়েছেন।
‘না, এটা কোনো পিছুটানের সজল কোণ কিংবা ধূলিধূসর জাদুঘর হবে না।’ আশ্বাস দিলেন পুনর্ণব গ্যোয়েটে-ভবনের পরিচালিকা উরসুলো শোমার। ভিতরে ঢুকে দেখি, সত্যিই তাই। কবির ব্যবহৃত আসবাবপত্তর এখন লুপ্ত। সেই কারণেই তাদের বদলি নকলের প্রস্তাব নাকচ হয়েছে। দোতলার দ্বারদেশে টিশবাইনের অাঁকা সেই অয়েলচিত্রণের একটি চমৎকার কপি যাপিত একটি সময়ের সাক্ষ্য হয়ে আছে; ঝুঁকে পড়ে কবি অ্যান্টিকের সম্ভাবনাপূর্ণ ধ্বংসাবশেষ দেখছেন। তারই পাশাপাশি এই ছবিরই আধুনিক সম্পূরক, অ্যান্ডি হবারহোলসের অাঁকা, কবির প্রতিকৃতি আমাদের টেনে নিয়ে আসে অস্তগামী, অমীমাংসিত এই শতকের দিকে।
‘আমি টিশবাইনের এখানেই চলে এসেছি। কর্সোর জায়গাটা থেকে পোর্টা দেল পোপোলোর দূরত্ব মাত্র তিনশো পা।’ তখনই কর্সো ছিল রোমের পর্যটনবীথি। বাণিজ্যসরণিও বটে। কিন্তু গ্যোয়েটের বড় ভালো লেগেছিল ঈর্ষাহীন এক বন্ধুর বাড়ির ‘স্বচ্ছন্দ পরিমন্ডল’। তাই বুঝি অত্যল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর মনের তাবৎ আধিব্যাধি কেটে গিয়েছিল। ‘এগমন্টের পান্ডুলিপি শেষ… ফাউস্ট এখন পূর্ণাঙ্গ হলেই হয়,’ প্রকাশককে লিখছেন হ্লোল্ফগাং, যাঁকে ততদিনে ইতালির মানুষেরা ‘ভোলফাঙো’ বানিয়ে নিয়েছে।
‘পৃথিবীর 888sport live chatীদের একমাত্র উপযুক্ত জায়গা রোম, আর আমিও তো, সত্যি বলতে আসলে শুধু-888sport live chatীই।’ এখানে তাঁর তারুণ্যের সবগুলি স্বপ্ন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। এরকমই উদ্দীপনা হয়তো এখনকার সফর888sport live chatীদেরও সহজাত। কিন্তু তাঁদের লক্ষ্যমাত্রায় স্পেনীয় সোপান কিংবা পিয়াৎসা নাভোনা যতটা ঝলক দেয়, দুশো বছর আগেকার ওই পর্যটকের কাছে তখন কিন্তু মূল আকর্ষণ ছিল অতীতের পরিত্যক্ত যত বিয়োগফল। আজ, তাঁর উদ্যাপিত সেই বাড়িটা সতেজ 888sport sign up bonusসদনে পরিণত হয়েছে। এখানেই গড়ে উঠছে একটি গ্যালারি, যেখানে চিত্র-চিঠি প্রথম সংস্করণের অনুপুঙ্খ তথ্যায়নের ফলে অদীক্ষিত এবং বিশেষজ্ঞজন পথে চলে যেতে যেতে গ্যোয়েটের চিত্তে নিত্য নতুনের অভিঘাত এবং সাম্প্রতিকে তাঁর উত্তরসূরির কাছে তার সংবেদনের একটি ধারাবাহিক 888sport world cup rate পেয়ে যাবেন।
বলা বাহুল্য, পুরো ব্যাপারটাকে আদল দিতে গিয়ে জার্মান সরকারের প্রচুর খরচ লেগেছে। জার্মানির অবস্থা এখন পান্তা আনতে লবণ ফুরোনোর মতো। পোট্স্ডাম-ব্রান্ডেনবুর্গ-কেমনিৎস-মেকলেনবুর্গ-ফোরপমার্ন – সর্বত্রই অপেরা-থিয়েটারের অস্তিত্ব বিপন্ন, 888sport live chatীরা বেকার। এমনকি চতুর্দেশে গ্যোয়েটে ইনস্টিট্যুটগুলিরও দেউলে দশা, কোনো কোনোটি তো বন্ধই করে যাওয়া হচ্ছে। এখুনি কি রোমে ঘটা করে কবির ঠিকানা প্রতিষ্ঠিত না করলেই চলত না?
এখনো ঘরে ফেরেনি
‘মাদল বাজাও, হৃদয়ে রেখো না ভয়’ মন্ত্রটিকে সম্বল করে ড্যুসেলডর্ফের নাট্যভবনে হাইনরিশ হাইনের জয়ন্তীর বোধন হলো। উদ্বোধন বললেই হয়তো সঠিক হতো। কেননা, হাইনের দ্বিশতবার্ষিক জন্মদিনের বিভাবে সারা বছরজুড়ে সমারোহময় যত অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে, তাদের আড়ালে অনন্যোপায় আনুষ্ঠানিকতার বালাই অনায়াসেই ঠাহর করা যায়, বোঝা যায় ক্লিষ্ট বিবেকের গরজেই এত ঘনঘটা হতে চলেছে।
ড্যুসেলডর্ফে এই হঠাৎ উদ্যাপিত কবির জন্ম ১৭৯৭-এর ১৩ ডিসেম্বরে। জীবদ্দশায় ইহুদি হিসেবে জার্মানিতে লাঞ্ছিত ও তাড়া-খাওয়া হাইনরিশ তাঁর মৃত্যুর ১০ বছর পরও জন্মশহরে ‘স্বদেশের কলঙ্ক’ বলে অভিহিত হয়েছেন। নাৎসিরা ড্যুসেলডর্ফের যশস্বী সন্তানের অস্তিত্ব বিষয়ে রা তো কাড়েইনি, উপরন্তু কেউ টুঁ শব্দ করলেও তাকে নাজেহাল করেছে। পরিকল্পিত বি888sport app download for androidের পালা দীর্ঘদিন ধরে চললে যা হয়, সময়টা স্বাভাবিক হলেও বিস্মৃত মানুষটিকে আয়ত্তে আনা যায় না আর। ঠিক এই কারণেই দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরেও বেশ কয়েক বছর হাইনের নাম ঘিরে জার্মানিতে একরকম ছমছমে নৈঃশব্দ্যের পরিচর্যা চলেছিল। তারই প্রতিবাদে ১৯৮১-তে ভাস্কর বের্ড গেরেশহাইম কবির একটি প্রতিমূর্তি গড়লেন। একরাশ অভিমান আর বিদ্রূপের ব্যঞ্জনায় 888sport live chatিত ওই মুখমন্ডল অনবদ্য, পৃথিবীর সমস্ত নির্বাসিত 888sport live chatীর প্রতিনিধি হয়ে তাকিয়ে আছে। গেরেশহাইম শহরের মাঝখানের পার্কে ওই প্রতিমূর্তি এমনভাবেই স্থাপন করে দিয়েছিলেন, যেন শিশুরা তাকে খেলবার সঙ্গী ঠাউরে নিয়ে তার কোলেপিঠে উঠে গিয়ে তাকে আদর করতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে, তরুণ প্রেমিকযুগল তার কাছে-পিঠে দুদন্ড বসে থেকে অনর্পিত সেই সত্তার প্রাসঙ্গিকতা অনুভব করতে পারে। পরবর্তী প্রজন্মের মূল্যবোধ জাগিয়ে রাখার এই প্রবর্তনা থেকেই বছর সাতেক পর নর্ডরাইন ভেস্টফালেনের রাজধানীতে হাইনরিশ হাইনের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
সারা জীবন সত্যের পক্ষে যিনি সংগ্রাম করেছিলেন, সেই কবি যখন ১৭৯৯-কেই তাঁর জন্মবর্ষ বলে নির্ণয় করেন, তার পেছনে নিশ্চয়ই নিজেকে তারুণ্যের কাছাকাছি রাখবার এষণা কাজ করে থাকবে। উত্তর আমেরিকার হাইনে সমিতির সদস্য লেখিকা শ্রীমতী রুথ ক্ল্যুগার প্রসঙ্গত রঙ্গচ্ছলে, নাট্যভবনের প্রথম অনুষ্ঠানে তাঁর কথিকায় আমাদের জানিয়েছেন, ‘হাইনের কাছে মিথ্যে আর কল্পক্রীড়ার তফাৎটা তেমন স্পষ্ট ছিল না। তাঁর ওই জন্মদিনের তারিখ থেকে শুরু করে আজীবন তিনি সবকিছু নিয়েই একটানা অনৃতকথন চালিয়ে গিয়েছেন।’ আসল কথা কি এটাই নয় যে, পরিপার্শ্বের নানারকম দাপট থেকে বাঁচবার জন্যেই তাঁকে কখনো-সখনো মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়েছিল?
রুথ ক্ল্যুগারকে (জ. ১৯৩১) এবারকার হাইনে-888sport app download bd দেওয়া হলে তিনি অবশ্যই তাঁর কৃতজ্ঞ ভাষণের বৃহদংশ ছেয়ে আমাদের কবির সাহসিক সত্যপ্রিয়তার কথা বলেছেন। ইহুদি এই মহিলাকেও টেরেসিয়েনস্টাট-আউশ্সুইৎস ক্রিস্টিয়ানস্টাটের বন্দিশিবিরে দিনের পর দিন কাটাতে হয়েছে। ওত পেতে থাকা মৃত্যুর শিকার হয়ে থাকার সময়, হাইনের কাব্যাদর্শ কবুল করে নিয়েই, অসত্যের সঙ্গে – তা সে যত বর্বরই হোক – রফা করেননি তিনি। কারাযাপনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় তিনি 888sport app download apkয় আক্রান্ত ‘আরো বেঁচে থাকা – একটি যৌবন’ (Weiter Leben – Eine Jugend) শীর্ষক যে-গদ্যগ্রন্থ লিখেছেন, তারই ভিত্তিতে তাঁর এই 888sport app download bd। প্রাপ্তির আনন্দে কাঁপা গলায় রুথ বললেন : ‘হাইনের 888sport app download apk বিস্ময়করভাবেই আধুনিক। অথবা বলা যায়, আমাদের এই কালপর্বে, যখন চতুর্দিকে পণ্যবাদের চক্রান্তে মানুষ বস্ত্ততে পর্যুষিত হতে চলেছে, তাঁর 888sport app download apk মানুষের কাছে নতুন অঙ্গীকার আর দায়ভাগের সংক্রামে অপরিহার্য।’
নিজস্ব পরবাসীকে নিয়ে মাতামাতি না-করলে ভালো দেখায় না, এটা বুঝতে কারোরই কোনো অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। যুক্তি-বক্রোক্তি-সৌন্দর্য-ঋজুতা-রোমান্টিক অন্তমুর্খিতা – হাইনরিশের সৃষ্টির অন্তর্গত এসব ধ্যানধারণার চূড়ান্ত বর্গীকরণ কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে উদ্যোক্তারা যথেষ্টই মাথা ঘামাচ্ছেন। নির্বাসিত কবির দ্বিতীয় মাতৃভূমি প্যারিসেও জার্মানি থেকে ‘আমি ভাগ্যের সং’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনী পাঠানো হচ্ছে। তাঁর নামে জামার বোতাম থেকে আরম্ভ করে ডাকটিকিট কি দশ মার্ক 888sport sign up bonusমুদ্রার বাহার দেখে অনেকেরই সংগত সংশয়, অচিরেই বিয়ার বোতলের ঢাকনা, টি-শার্ট, এমনকি মোজার গায়েও তাঁর প্রতিকৃতি পাওয়া যাবে। ভবঘুরে বিশ্বনাগরিকের তবু, মৃত্যুর পরেও, ঘরে ফেরার কোনো লোভলক্ষণ নেই। অথচ ঘরেই কি সে থাকতে চায়নি?

ঝঞ্ঝা বাজায় নৃত্যরঙ্গগীত,
শিস্ দেয়, শনশনায়, গর্জরত;
কী কান্ড! দোলে কেমন নৌকোখানা!
রাত্রিটা বড় মজার, অসংযত।

জীয়ন্ত এক জলস্তম্ভশিলা
ক্ষুব্ধ সাগর গড়ে;
এইখানে কালো অতলের জৃম্ভন,
ওইখানে জাগে শুভ্রতার শিখরে।

শাপশাপান্ত, বমি ও প্রার্থনার
স্বর ঠিকরিয়ে পড়ছে কেবিন ঠেলে;
মাস্ত্তলটাকে অাঁকড়িয়ে সাধ জাগে;
রইতাম যদি ঘরেই ঘরের ছেলে।
একশ পঁচিশ নম্বরের বাড়িটা
শোসেস্ট্রাসে ১২৫। ফরাসি ও জার্মান দুটি শব্দের মানেই ‘পথ’। তবু যে সমার্থসূচক দুটো শব্দই সচেতন পথিকেরা দিনের মধ্যে অসংখ্যবার বিড়বিড় করে আওড়ায়, তার কারণটা হচ্ছে এই যে ওরা বলতে চায়, এইটেই হলো রাস্তার রাস্তা। এখানেই জীবনের শেষ দিনটে বছর কাটিয়েছিলেন ব্রেশ্ট। জার্মানি অবিভাজ্য হওয়ার পর এই বাড়িটা সারা জগতের মানুষজনের তীর্থ হয়ে উঠেছে।
পনেরো বছর নির্বাসনের পর স্বদেশের একরাশ ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ফিরে এসে প্রথমেই ব্রেশ্টের কাছে মাথা গুঁজবার মতো এতটুকু বাসা পাওয়াটাই প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জার্নালধর্মী একটি 888sport app download apkয় তার অব্যর্থ সংকেত আছে :

যখন ফিরে এলাম
চুলে আমার পাক ধরেনি বলে বেশ ভালোই লাগছিল আমার
পর্বতরাজির টানাপড়েন পড়ে রইল আমাদের পেছনে
সামনের দিকে বিস্তারিত আমাদের টানাপড়েন সমতলের।

তিনি তখন রাজার রাজা। তরুণ কবিরা একবার তাঁর দর্শন পাবেন বলে উদ্গ্রীব হয়ে থাকেন। কোথায় তাঁদের তিনি বসতে দেবেন, কোথায়ই বা বসে লিখবেন, সেই ছিল তাঁর অস্তিত্বের অস্বস্তি। জীবনব্যাপী যুঝে-চলার পর একটুখানি স্বাচ্ছন্দ্যও কি তাঁর অভিপ্রেত অথবা প্রাপণীয় ছিল না? ছেলেবেলার কিছু আসবাবপত্তর, পথে-প্রবাসে সংগৃহীত নো-নাটকের কয়েকটা মুখোশ, অন্তত সাড়ে তিন হাজার বই – এসব তো দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য রুচি-রুটির মতোই ছিল অত্যাবশ্যক সামগ্রী। আর তাছাড়া? রুথ ব্যার্লাউ, তাঁর ঘরানার উজ্জ্বল অভিনেত্রীও প্রেম, অতিরিক্ত অথচ জরুরি তালিকায় সেই মর্মে লিখেছেন :

টেবিল, অনেক টেবিল
টাইপরাইটার
টেব্ল ল্যাম্প
অঢেল আলো
সুন্দর টাইপ করার কাগজ
ছবি কেটে সাজিয়ে রাখবার জন্য প্রথমতম উপকরণ কাঁচি
এবং আঠা।

এই পর্যন্ত লিখেই রুথের মনে হয়েছিল, পরা-প্রয়োজনীয় আরো কিছু শর্তের কথা :

ছাত্র, অনেক ছাত্র
দক্ষ অভিনেতৃবর্গ
সুরকার
সংলাপ
জ্ঞানী 888sport apkী
ডিটেকটিভ 888sport alternative link
আর তাঁর বিশ্রাম।

সৃজনী অবসরের এই চাহিদা মিটিয়ে দিয়েছিল Chausseestrasse-এর ওই বাড়িটা। ‘যাঁরা এখানে আসবেন, জাদুঘরের প্রত্যাশা নিয়ে এলে ভুল করবেন। অনৃত ভক্তির বদলে প্রসন্ন 888sport apk download apk latest version নিয়ে এলেই তাঁরা বুঝতে পারবেন, এখানে সমাধিসদনের মতো নিছক 888sport sign up bonusসামগ্রী সংকলন করে রাখা হয়নি। একজন প্রাসঙ্গিক মানুষের যাপিত জীবনটা উপলব্ধি করে ঋদ্ধ হয়ে ওঠাই তাঁদের কাছে আমাদের কাম্য’, ব্রেশট ভবনের সংবিধানপ্রতিম মুখপত্রে কথাগুলো জোর দিয়েই বলা হয়েছে।
ওই প্রস্বর যে স্বাভাবিক, বার্লিনে এবার নতুন করে বুঝলাম। বিশ্বসংস্কৃতি-ভবনের (Haus der Kulturen der Welt) উদ্যোগে স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পঞ্চাশ বছর পূর্তি-উপলক্ষে সেখানে যে ভারত ও পাকিস্তানের লেখকদের মেলামেশা আর সম্মেলনের আয়োজন হয়েছিল, তার চেয়ে সময়োচিত আর কিছুই হতে পারে না। প্রথমদিকে যেন মনে হচ্ছিল, দুই দেশের দ্বিধান্বিত শিবির ছেয়ে ঠান্ডা যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ নিথর শান্তির তুষারপাত চলছে। একদিন দুর্জয় কথা888sport live chatী ইন্তিজার হুসেইন with love for my friend from the land of Tagore লিখে তাঁর গল্পগুচ্ছটি আমার হাতে তুলে দিয়ে স্মিত হাসলেন। রবীন্দ্রনাথের মতোই, হয়তো তাঁর চেয়ে আরো অমোঘ অভিঘাতে, সেতু ছুড়ে দিয়েছিলেন ব্রেশ্ট।
প্রায় প্রতিদিনের পাঠে, পর্যালোচনায় এই কবিনাট্যকারের নাম ধ্রুবপদের মতো উঠে এসেছিল। শুধু তা-ই নয়, একটু সময় পেলেই দলবেঁধে সবাই শোসেস্ট্রাসের এই বাড়িটার কাছে ঘুরঘুর করতেন। দেখে মনে হবে যেন বৌদ্ধ শ্রমণেরা প্রদক্ষিণরত। তীর্থপরিক্রমার সর্বশেষ দেবায়তন ছিল অবশ্যই ব্রেশ্ট ও হেলেনে হবাইগেলের সমাধিবেদি। খুব কাছেই রুথ ব্যার্লাউয়ের স্মারকপ্রস্তর। ব্রেশ্টের প্রিয় এবং সংশয়ভাজন দুই দার্শনিক, হেগেল ও ফিশ্টেও অদূরশায়ী। এরকম একটা জায়গায় এসে ঘোর নাস্তিকেরও হৃদয়-মন আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হিন্দি ভাষার অগ্রণী কবি কৈলাস বাজপেয়িরও কী রকম যেন ভাবসমাধির অবস্থা হয়েছিল। অথচ একটু পরেই আমাদের সমীক্ষণ আর সেমিনারের পালা। আমি তাঁর বিবশ দশা ঘুচিয়ে দেওয়ার জন্য নির্মম একটি সত্য উদ্ঘাটন করলাম : ‘জানো তো, প্রাচীরপতনের পরমুহূর্তেই এখানে নয়া নাৎসিরা এসে ব্রেশ্টের বেদিটায় কালিঝুলি লেপে চলে যায়। ওরা ভেবেছিল, দুনিয়ার নির্জিত মানুষদের ওই প্রতিনিধির দুর্নাম রটিয়ে দিয়ে বুঝি তাঁর শুভময় ও সক্রিয় প্রভাব চিরতরে রদ করে দেওয়া যাবে!’

ভিতরবাসী বিশ্ববাসী : অক্টাভিও পাজ
মুম্বাই শহরে অক্টাভিও পাজ প্রথম যেদিন পা রাখেন, তাঁর পায়ের তলা থেকে মাটি যেন সরে গিয়েছিল। এত ছন্নছাড়া জনতা কোনোদিনই তো কোথাও তিনি দ্যাখেননি। ভিড় থেকে পালিয়ে এক রোববার দ্বৈপ অবকাশযাপনের পরিকল্পনায় এলিফ্যান্টাতে গিয়েও এতটুকু শান্তি পাননি। রাজ্যের লোকজন সেখানে পিকনিকের প্রমোদ প্রহর কাটিয়ে রাশিকৃত আবর্জনা ফেলে গিয়েছে। যদি পাওলো পাসোলিনি বা গুন্টার গ্রাস হতেন, তাহলে তাঁর ভারতবীক্ষা প্রথম অভিজ্ঞতার সেই বিতৃষ্ণাতেই আবদ্ধ হয়ে থাকত। কিন্তু পাজ যে নাছোড় বিশ্বনাগরিক, ভারতবর্ষের কাছে তাই মাটি অাঁকড়ে দীক্ষিত হওয়ার জন্যই উন্মুখ হয়ে রইলেন। এবং আশ্চর্য, অত্যল্প সময়ের মধ্যেই প্রাথমিক অস্বস্তি রূপান্তরিত হয়ে যায় প্রগাঢ় মুগ্ধবোধে। তাঁকে তখন দেখা যায় দিল্লিতে শ্রাবণের মধ্যরাত্রে একটা শাদা কাগজের ওপর ঝুঁকে আছেন। পাশের ঘরে তাঁর স্ত্রীর পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে : বাগানের মহানিমগাছটা কবির কাছে নতুন কথা শুনবার অপেক্ষায় কান পেতে আছে। এরকম বোধিকল্পময় আবহমন্ডল শুধু বাইরের দিক থেকেই নয়, কবিস্বভাবের মধ্য থেকেই উদ্ভূত হয়ে উঠছে।
ভারতবর্ষের কথা উঠলেই পাজ তাই কেমন যেন সময়হীন হয়ে পড়েন। এই দিব্যদশার অভিঘাত এতই প্রবল যে তাঁর আত্মজৈবনিক লেখায় তিনি তাঁর প্রথম সফরের (১৯৫২) বছরটা অন্তত বছরখানেক পিছিয়ে দেন। এর ১০ বছর পর ভারতে এসে তিনি ছয় বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। ১৯৮৪-৮৫ নাগাদ আরো দুবার তিনি মেক্সিকোর পরেই তাঁর এই প্রিয় মৃত্তিকাকে ছুঁয়ে যান। ভিতরবাসী এই মানুষটির 888sport app download apkয় 888sport app download apkয় তাই যে ভারতীয়তা-মথিত হয়ে থাকবে, এতে অবাক হওয়ার কী আছে?
তাঁর প্রিয় কবি পাবলো নেরুদার মতো কূটনৈতিক বৃত্তিকেই তিনি বেছে নিয়েছিলেন। কেননা, তার আড়ালে সৃষ্টির মন্ত্রণাকে লুকিয়ে রাখা যায়। একবার স্পেনীয় গৃহযুদ্ধের স্মারক অনুষ্ঠানে, আলব্যের কামু এবং আরো কয়েকজন সতীর্থের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ‘অপরাধে’ মেক্সিকো সরকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবেই তাঁকে রাজদূত করে পাঠিয়ে দেয় ভারতবর্ষে। নির্বাসনের বিভাব থেকে তীব্র ভালোবাসা জন্ম নিয়েছে, এমন একসময় তাঁর স্বদেশে বিদ্রোহী ছাত্রদের ওপর সরকারি দমননীতির প্রতিবাদে তিনি তাঁর ডিপ্লোম্যাটিক পদমর্যাদা একমুহূর্তে বিসর্জন দিতে দ্বিধাবোধ করেন না।
ভালোবাসা ও অনর্পিত প্রগতিবিবেক, এ দুয়ের মায়াবী মিশ্রণে বলয়িত হয়ে ওঠে পাজের ব্যক্তিত্ব। ভারত-স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে জার্মান ভাষায় তাঁর অনবদ্য ‘ভারতের আলোয়’ বইটির পরিবর্ধিত জার্মান সংস্করণটি প্রকাশিত হলে পাজের ভক্ত-পাঠকদের কাছে তাঁর ভারতপ্রেমের দুটি দিক আপাতচোখে পরস্পরবিরোধী ঠেকেছিল। একদিকে তিনি দাবি করছেন, এই গ্রন্থ ‘জ্ঞানের নয়, সংরাগের ফল’, আবার অন্যদিকে বলছেন, ভারতাত্মা নিয়ে Ladera Este (১৯৬৯) শীর্ষক যে-কাব্যগ্রন্থ লিখেছিলেন, ও-বই তাঁরই ‘বিদগ্ধ ও বিস্তারিত বিন্যাস’। প্রকৃত প্রস্তাবে এই দুই বক্তব্যের মধ্যে কোনো মেরুবিভাজন নেই। যে-অক্টাভিও হিন্দি কবি অজ্ঞেয় এবং শ্রীকান্ত বার্মার সঙ্গে তিন হাতে ‘বন্ধুত্বের 888sport app download apk’ লেখেন, তিনিই ঐতিহাসিক দেম-ভিনসেন্ট স্মিথ-রাঘবনের আকর গ্রন্থাবলি থেকে তথ্যযুক্তি আহরণ করে ভারতবর্ষীয় স্থাপত্য-ভাস্কর্য, 888sport live football-সংগীত-888sport live chatকলার অনন্যতা প্রতিপন্ন করেন, আর সেটা এমন শিক্ষার্থীসুলভ তন্নিষ্ঠা নিয়েই করেন, যেন ভারতবিরোধী শিবিরগুলির থোঁতামুখ চিরতরে ভোঁতা হয়ে যায়। এভাবে, দস্ত্তরমতো যুক্তিসুসজ্জিত হয়ে তিনি যখন ভারতসভ্যতা-বিষয়ক একটি থিসিস খাড়া করে তুলেছেন, আচমকা নিজেই অনুভব করেন, ভারতবর্ষ হৃদয়ের যৌক্তিকতায় তাঁর আপন সাধন ধন হয়ে উঠেছে। কবুল করেন, সেখানেই তিনি অর্জন করেছেন একটি মন্ত্র : ‘মানুষ বলতে মানবতা বোঝায়’। তাঁকে ব্রাসেলস-এর গ্রাঁ প্রি আন্তর্জাতিক 888sport app download bdের জন্য মনোনীত করা হলে কাঙ্ক্ষণীয় প্রাইজ নেবেন কি-না, সেই মর্মে চূড়ান্ত বিধান নেওয়ার জন্য আনন্দময়ী মায়ের সঙ্গে গেলে সেই প্রজ্ঞাপারমিতা তাঁর দিকে কমলালেবু ছুড়ে দিয়ে গ্রহণ ও অপরিগ্রহের সমার্থদ্যোতনা আভাসিত করেন। আর তখনই পাজের কাছে প্রতিভাত হয়ে ওঠে ভগবদ্গীতার নিহিতার্থ : ‘দেওয়া আর নেওয়া আসলে সমার্থক ক্রিয়াকলাপ।’
কেউই তখন একবিন্দু বুঝতে পারে না।
কয়েক লহমা যখন পাজের সাক্ষাৎ হয়েছিল, তিনি এই মর্মে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন, দ্বিভাষিক (বাংলা-স্পেনীয়) 888sport app download apk পাঠের মাধ্যমে আরেকবার তিনি ভারতপথিক হবেন, শ্রোতাদের কাছে তাঁর প্রতিমা স্পষ্ট করে তুলবেন আরো। মৃত্যু এসে বাদ সাধলেও বুঝে নিতে পারি, মানুষের কোনো-কোনো ইচ্ছা চরিতার্থ না হয়েও মূল্যবোধের মতো দীর্ঘ দীর্ঘ কাল জেগে থাকে।

হ্যারি পটার
শ্রীমতী সারা কির্শ, জার্মানির অন্যতম কবি, মগ্ন মন্ত্রোচ্চারে তাঁর বিখ্যাত ‘চৈতী বাংলো’ 888sport app download apkটি পড়ছিলেন :

হাঁস উড়ে গেল বাড়িয়ে লম্বা গলা
আকাশের দিকে লাল ওয়াইনের বোতল
উত্থিত যেই সূর্য বিদায় নিল
পড়ন্ত দিন দীঘল তাতিয়ে-ওঠা
পান করি আর কাটি গোলাপের ডাঁটা।

ঘোর কেটে যাওয়ার পর লক্ষ করলাম, বহুবিজ্ঞাপিত অনুষ্ঠানে মাত্র এগারোজন শ্রোতা উপস্থিত। সভা শেষ হলে উদ্যোক্তাকে প্রশ্ন করলাম, ‘এরকম দশা কী করে হলো?’ তিনি বললেন, ‘মুষড়ে পড়লে তো চলবে না। কবিকে বলতে হবে, তাঁর ইংরেজ সতীর্থা জোয়ান রোলিংয়ের মতো হ্যারি পটারের ধরনের 888sport alternative link লিখুন।’
কে এই হ্যারি পটার? জনপ্রিয়তম কিশোর-সিরিজের এই নায়ক দিগ্বিদিকে তুমুল অভিঘাত রচনা করেছে। প্রথম তিনটি বইয়ের পঁয়ত্রিশ মিলিয়ন কপি বিকিয়ে গেছে, পঁয়ত্রিশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই ‘হ্যারি পটার এবং প্রজ্ঞাপাথর’, ‘হ্যারি পটার আর সর্বনাশের ঘর’ আর ‘হ্যারি পটার আর আস্কাবনের কয়েদিরা’ বেস্ট সেলার তালিকার তুঙ্গে। চতুর্থ খন্ড ‘হ্যারি পটার আর অগ্নিপাত্র’ বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই পাঁচ মিলিয়ন কপি বাজার থেকে উবে গেছে। জার্মান তর্জমায় বইটি এখনো বেরোয়নি, কিন্তু এরই মধ্যে ইন্টারনেটে এক লক্ষ কপির বায়না পড়ে গেছে।
হ্যারি দুবলা-পাতলা ছোট্ট ছেলে, পাগলা দাশুর মতোই উসকোখুসকো চুল। ভাঙা চশমাটা তার আঠা দিয়ে জোড়াতালি লাগানো। কপালে বিদ্যুতের মতন ক্ষতচিহ্ন। অনাথ বালক, শয়তান এক বাজিকর তার মা-বাবাকে হত্যা করেছে। এগারো বছরের জন্মদিনে হ্যারি দৈবক্রমে জানতে পারে, তা মা-বাবাও নামকরা জাদুকর ছিলেন। জানতে পারামাত্রই পেঁচা এসে তাকে ডাক-চিঠি দিয়ে যায় : তুকতাক যন্তরমন্তরের ইশ্কুল হগওয়ার্টস থেকে তার নেমন্তন্ন এসেছে। সঙ্গে সঙ্গেই স্বাভাবিক লোকজন বা মাগলসদের (Muggels) চেনাজানা জগৎ থেকে তার স্বনির্বাসন শুরু হয়ে যায়। মাগলসরা ইন্দ্রজালের দুনিয়াকে দুর্বলতার প্রতীক বলে জানে, আর তাকে ডরায়ও খুব। কী করে এসব মধ্যচিত্তদের মধ্যে অকারণ কালাতিপাত করবে সে! স্কটল্যান্ডের হাইল্যান্ডসে ইন্টারনেট যে তার জন্য অপেক্ষা করে আছে। সেখানে গিয়ে হ্যারি মন্ত্রপাণীয় বানাতে শেখে। তখন থেকে তার বন্ধু কিডিচ, আকাশে তিন-তিনটে বল নিয়ে যে অতীন্দ্রিয় উপায়ে ফুটবল খেলতে পারে। হগওয়ার্টসে তার যেসব অভিজ্ঞতা ঘটে, তার অনেকগুলিই বিপজ্জনক। আবার ভূত-দৈত্য-দানো বা খাপছাড়া মাস্টারমশাইদের সঙ্গে অনেক রকম কৌতুকী ব্যাপারস্যাপারেও জড়িয়ে পড়তে থাকে। জাদুবিদ্যার ইশ্কুলে অনভিজ্ঞ-অনাথ ছেলেটি খেলাধুলোয় সবাইকে চমকে দেয়। তার শুভার্থী বন্ধু আর অনিষ্টকর শত্তুরদের 888sport free bet যখন সমান সমান হয়ে ওঠে, তাকে মনে হতে থাকে জগদ্ব্যাপারে মাঝখানটায় দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি খন্ডেই দেখা যায়, ভালো বন্ধুদের সঙ্গে সে রহস্যময় ইন্দ্রজালকে কালো ম্যাজিকের অপশক্তি থেকে বাঁচিয়ে রাখতে তৎপর। তার মানে এই নয় যে, তার ধরন-ধারণে অতিমানবের লক্ষণ মূর্ত হয়ে উঠেছে। বস্ত্তত প্রায়ই ভয় পায় তার। সাতশো বছর ধরে হলওটার্টসে তিন স্কুলের টুর্নামেন্টের যে-প্রথা আছে, তার শামিল হতে গিয়ে প্রতিটি পর্যায়েই সে ভয় পেয়েছে। সারা বছর ধরেই পড়ুয়াদের মধ্যে সেই প্রতিযোগিতার লড়াইমূলক মহড়ার সদস্য তাকে থাকতেই হয়। এই মহড়ায় সাংঘাতিক কত যে দুর্ঘটনার সাক্ষী সে হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। তবু সবগুলি সংগ্রামের শেষে তার আরেক ক্লাসবন্ধু সেডরিক ডিগরির সঙ্গে সে যখন উদ্বৃত্ত-উত্তীর্ণ থাকে, তাদের আনন্দ দেখবে কে? ওরা তখন দুজন আগুনের আধার ছুঁয়ে দেয়।
হ্যারির রচয়িত্রী যোয়ান কে রোলিংয়ের সৃষ্টির পথ এখন অপ্রতিরোধ্য। অথচ আবালবৃদ্ধবনিতার ফ্যান ক্লাবের এই আরাধ্য মহিলা নিজেও ভাবেননি, পার্থিব এই সার্থকতা তাঁকে স্পর্শ করবে। একলা বেকার জননী, কোলের শিশুকে নিয়ে স্কটল্যান্ডে যখন পালিয়ে বেড়িয়েছেন, কফিহাউসের স্যাঁতসেঁতে ঘরে দিনের পর দিন কাটিয়েছেন। লেখার কাগজ কেনার সামর্থ্য ছিল না বলে সাতশস্তা ন্যাপকিন পেপারে লিখতে শুরু করে দেন। প্রথম খন্ড এইভাবে সম্পন্ন হলে একজন প্রকাশককে দেখাতেই তিনি সেটি ছাপানোর সঙ্গে সঙ্গেই এঁরা উভয়েই প্রভূত প্রতিপত্তি অর্জন করেন।
হ্যারির জয়যাত্রার মর্মে শুভাকাঙ্ক্ষা জানিয়ে বাড়ি ফিরে হাতে তুলে নিই সারা কির্শের নতুন 888sport app download apkপুঁথি। 888sport app download apk latest version করতে করতে মনে হয়, আমি অন্তত তাঁর এক হাজার পাঠকের একজন তো!

জর্জ অরওয়েল
২৫ জুন জর্জ অরওয়েল (আর্থার ব্লেয়ার, ১৯০৩-৫০)-এর জন্মশতবার্ষিকী এদেশে অনুদ্যাপিত থেকে গেল। অথচ ইয়োরোপ ও মার্কিন দেশে ভাবুকমহলে তাঁকে নিয়ে পার্বণের ঘনঘটা যে মাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছিল, তার একটি অব্যবহিত কারণ : ১১ সেপ্টেম্বর। যে-সমাজ সাহসিক ব্যক্তিত্বকে নির্জিত করে তার সম্পর্কে অরওয়েলের অস্বস্তির শেষ ছিল না। সেই আতঙ্কের ইউটোপিয়া তাঁর ক্রান্তিসঞ্চারী 888sport alternative link ‘উনিশশো চুরাশি’ (রচনাকাল ১৯৪৮)। এই ভবিষ্যভারাতুর আখ্যানে তিনি আমাদের সেই রাষ্ট্রের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন, যা গোয়েন্দার ধাঁচধরনে ব্যক্তিনাগরিকের নাড়িনক্ষত্র নিয়ন্ত্রণ করে, মতামত প্রকাশ করবার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এই রাষ্ট্রেরই নাম রেখেছেন তিনি Big Brother। তাবৎ তরল সোপ অপেরায় এই সংজ্ঞায়ন অকাতরে প্রযুক্ত হয়ে চলেছিল, কিন্তু ১১ সেপ্টেম্বর অভিঘাতে হঠাৎই বিধুর হয়ে টঙ্কার দিলো দূরদর্শীর সাবধানবাণী : Big Brother is watching you, একটি রাষ্ট্র তার সীমা ছাড়ানো ক্ষমতা চরিতার্থ করে নেওয়ার আস্পর্ধা কদ্দুর যেতে পারে, সম্প্রতি ইরাকবিধ্বংসী আয়োজনের নজিরে সেই মর্মে আজ যে তুমুল প্রতর্ক বেধেছে, সে জন্য অরওয়েলের কাছে সারাবিশ্বের মানুষজন আ-ঋণী এখন। ঔপনিবেশ ইংরেজ মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান ইটন স্কুলে দ্রুত পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ইন্ডিয়ান ইমপিরিয়্যাল পুলিশ দপ্তরে (১৯২২-২৭) অন্যমনস্ক চাকরির পর শুরু হয়ে যায় তাঁর ভবঘুরের দশা (১৯২৮-৩৬)। দক্ষিণ ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সে নিঃশর্ত পরিব্রজনের প্রক্রিয়ায়, কখনো রেস্তোরাঁয় প্লেট ধুয়ে, কখনো-বা এলোমেলো শিক্ষকতা কিংবা বইয়ের দোকানে অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে, আচমকা খুলে গেল লেখালেখির নির্ঝর। রেডিওর জন্য কাজ করতে এসে 888sport live footballে অদীক্ষিত ‘সাধারণ’ মানুষের স্বরায়তন স্পর্শ করলেন, আর সেইটেই হয়ে উঠল তাঁর রচনার প্রাণস্পন্দ। অরওয়েলের জন্ম এপার-বাংলারই অদূরবর্তী মতিহারিতে, যা অনেকেরই অজানা।