রবীন্দ্রনাথ গোরা ধারাবাহিক লেখা শুরু করেন ১৯০৭ সালে। ওই বছরেই নোবেল পান রাডিয়ার্ড কিপলিং। রবীন্দ্রনাথ কিপলিংয়ের চেয়ে চার বছরের বড়। নোবেল পান তাঁর ছয় বছর পর, ১৯১৩-তে। দুজনের মধ্যে কিন্তু বিস্তর ফারাক – কী দেশ ও কাল-চেতনায়, কী 888sport live footballিক দৃষ্টিভঙ্গিতে। তাঁদের হয়ে-ওঠাও বাস্তব পটভূমির বিপরীত দুই প্রান্ত থেকে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির জাঁদরেল প্রতিনিধি কিপলিং। এতে তাঁর অলজ্জ গৌরববোধ প্রকট। মানব-কল্যাণের সার্বিক চিন্তাকাঠামো তাঁর গড়ে-ওঠে ওই আধিপত্যের অস্তিত্বকে অভ্রান্ত, ন্যায্য ও অলঙ্ঘনীয় ধরে নিয়ে, যদিও ওই কল্যাণের আকাক্সক্ষা তাঁর অনান্তরিক, এমনটি নিশ্চিত বলা যায় না। রবীন্দ্রনাথ উপনিবেশের মানুষ। ক্রিয়ায়-প্রতিক্রিয়ায় এই অনিবার্য বাস্তবতাকে তিনি আত্মস্থ করেন। ভেতরের ও বাইরের সভ্যতা-সংস্কৃতির ঘাত-প্রতিঘাত-সংশ্লেষণ-মিশ্রণ সমস্ত আঁচ ও আকুতি নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতায় স্থিতি পায়। মানুষের মুক্তিকে তিনি তার ওপর দাঁড়িয়ে দেখার ও বোঝার চেষ্টা করেন। সংকীর্ণতার গণ্ডি সব ভেঙে যায়। কোনো হীনম্মন্যতা তাঁকে গ্রাস করে না। বরং প্রখর
আত্মসম্মান নিয়ে দেওয়া-নেওয়া-মেলা ও মেলানোয় তিনি আত্মস্বরূপের বহুবিচিত্র বিকাশের শ্রেয়তর পথ খোঁজেন। তাঁর 888sport live football-সাধনায় তারই নিরন্তর প্রকাশ চোখে পড়ে। কিপলিং সেখানে তাঁকে প্রেরণা যোগান না, বরং পরোক্ষভাবে উত্তেজিত করেন।
বহু উদ্ধৃতিতে জীর্ণ কিপলিংয়ের প্রবাদতুল্য 888sport app download for androidীয় উক্তি, পুব হচ্ছে পুব, আর পশ্চিম, পশ্চিম – দুইয়ের মিলন অসম্ভব। এই প্রত্যয় স্থির করে দেয় তাঁর 888sport live footballের নৈতিক ও নান্দনিক ভিত্তি। ঘৃণা বা বিদ্বেষ থেকে নয়, সমূহ সদিচ্ছা নিয়েই তিনি ওই বিভেদের পক্ষে সোচ্চার। তাঁর উল্লেখযোগ্য 888sport live footballের পটভূমি প্রাচ্য ভূখণ্ড। চেতনায় তিনি এর স্থির ও অবিকৃত রূপ লালন করেন। বহু বিচিত্র শব্দে-বর্ণে জীবনলীলায় তাকে অবিকল ধরে রাখা এক মহান দায়িত্ব। ইতিহাসের অমোঘ নির্দেশে সে-দায়িত্ব বর্তায় ইংরেজ প্রভুশক্তির ওপর – হোয়াইট ম্যান্স’ বার্ডেন। এবং সেই ‘বার্ডেন’ বহন করার সক্ষমতা ও অধিকার তখন কেবল ব্রিটিশ রাজপুরুষদেরই। তারা মুখ ফেরালেই নৈরাজ্য। বারো ভূতে লুটেপুটে খাওয়া। সেই সঙ্গে প্রাচ্যের শান্ত জীবনচিত্রের টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে-পড়া। মানুষ ও প্রকৃতির বর্ণময় এই সরল-সরব-সজীব বিন্যাসে কোনো পরিবর্তনের ছাপ পড়বে না, সময়ের দাগ এড়িয়ে চিরকাল একই রকম থাকবে, তেমন দেখতে পাওয়া এবং আগামীদিনের জন্যে তার সম্ভাবনার নিশ্চয়তায় নিশ্চিন্ত হওয়া তাঁর অন্যতম প্রধান ভাবনা। বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আজ কারো কারো যেমন উদ্বেগ, এ-ও প্রায় সেই রকম। সমস্ত রহস্য ও রোমাঞ্চ নিয়ে প্রাচ্যের ওই কল্পিত স্থিরচিত্রকে তিনি তাঁর 888sport live footballের এক প্রিয় বিষয় করে তোলেন। তাঁর কীর্তিখ্যাতি নির্ভর করে আছে অনেকখানি এর ওপরেই। তাঁর সততা ও শুভ কামনা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না।
রবীন্দ্রনাথ কিন্তু তাঁর ব্যক্তিত্বের ক্রমবিকাশের সমস্ত প্রক্রিয়া নিয়ে এই প্রত্যয়কে প্রত্যাখ্যান করেন। পারিবারিক ঐতিহ্যও তাঁকে প্রাচ্য-প্রতীচ্য মিলনের পথে টেনেছিল। পিতামহ দ্বারকানাথ তাঁর মেধায় ও কর্মসাধনায় ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠ প্রতিভাকে আকৃষ্ট করতে পেরেছিলেন। শরণাগত বা প্রসাদভিক্ষুর মতো নয়, সমকক্ষের মতো। যোগাযোগের ও পারস্পরিক সম্মানের আবহ রবীন্দ্রনাথের জন্যে আগে থেকেই তৈরি ছিল। তাঁকে অহেতুক খাটো হতে হয়নি। সহজ স্বতঃস্ফূর্ত জীবনের আবেগে বাইরের জগতে নিজেকে মেলে ধরেছেন। বাইরের প্রাণশক্তি আত্মস্থ করেছেন। তাই বলে আত্মবিস্মৃত হননি। আপন শক্তিতে ও আপন বৈশিষ্ট্যে আস্থা হারাননি। তিনি জানতেন, ইতিহাস তাঁর পক্ষে। ভারতমহিমা কূপমণ্ডুকতায় নয়; যুগে যুগে ভারতবর্ষ নিজেকে সঞ্জীবিত করেছে ‘বিশ্ব সাথে যোগে’। তাতে সে বারবার নতুন হয়েছে; কিন্তু তার নিজত্ব অটুটই থেকেছে। যদিও বৈচিত্র্য বেড়েছে এবং তা তাঁকে আরো প্রাণবান ও সমৃদ্ধই করেছে। ভূ ও মানব-মানচিত্রে এই বহুবর্ণিল উচ্ছলতা প্রাচীনতায় প্রতিষ্ঠিত কোনো স্থির বাস্তবতা নয়। হতে-থাকা হয়ে-ওঠার প্রক্রিয়ায় ‘শত মানুষের ধারায়’ একত্র ও একীভূত হতে হতে তা অবিরাম বিবর্তিত ও বিভাসিত হয়ে চলে। এই চলা অনিঃশেষ। ঘাত-প্রতিঘাত, প্রেম-বিদ্বেষ, আদান-প্রদান, গ্রহণ-বর্জন – এ-সবের ধারাবাহিক পরিণাম তাতে অন্তহীন মেশে। এক জায়গায় তাকে বেঁধে রাখলে, তা সে যত মনোহরই হোক, তার জীবনীশক্তি ফুরিয়ে যায়। বদ্ধজলা কোনো সাগরের আহ্বান শোনে না। জীবনের স্পন্দন তাতে জাগে না। হয়ত নিস্তরঙ্গ জলে নিশ্চিন্তে মুখ দেখা যায়।
সরাসরি কিপলিংকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ কোথাও কিছু লিখেছেন কি-না আমার জানা নেই। তবে পুব-পশ্চিমের সেতুবন্ধন অসম্ভব – এই কথা খারিজ করে তাঁর তির্যক মন্তব্য ইতস্তত চোখে পড়ে। বিপরীতে মিলনের কথা তিনি উচ্চারণ করেন নানা ছলে নানাভাবে বারবার যেমন, ‘ভারতবিধাতা’য় – ‘পূরব পশ্চিম আসে তব সিংহাসন পাশে, প্রেমহার হয় গাঁথা।’ অভিজ্ঞতা অবশ্যই সমতলীয় বা নির্দ্বান্দ্বিক নয়। ‘পতন অভ্যুদয় বন্ধুর পন্থা’, আর ‘যুগ যুগ ধাবিত যাত্রী’। তবু শেষ পর্যন্ত মিলনের ও মিশ্রণের রেশটাই বহমান হয়। তাতেই ঘটে সভ্যতায় ও সংস্কৃতিতে নতুন সংযোজন। ঘটে ‘জীর্ণতার আবর্জনা’ থেকে চিত্তের মুক্তি। তাই বলে আত্মবি888sport sign up bonus মুক্তি নয়। বাইরের ঢেউয়ে আবর্জনার সঙ্গে নিজেও ভেসে গেলে আত্মাবলুপ্তিই সার হয়, নতুন কিছু সৃষ্টি হয় না। সাহসের সঙ্গে এবং প্রখর আত্মসচেতনার ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বকে যখন আহ্বান করি তখন বিশ্বকে যেমন পাই, তেমনি নিজেকেও বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারি। বিচ্ছিন্নতার শুদ্ধতায় আত্মশক্তির উন্মেষ ঘটে না।
নিজেকে অবিকল টিকিয়ে রাখাও যায় না। একটু একটু করে শুকিয়ে মরা অনিবার্য নিয়তি হয়ে দাঁড়ায়।
আত্মপরিচয়ের ও আত্মবিকাশের এই ভাবনা রবীন্দ্রনাথ ফুটিয়ে তোলেন তাঁর নানা লেখায়। ফুটিয়ে তোলেন গোরা 888sport alternative linkেও। মনে হয়, কিপলিংয়ের মতো কাউকে সামনে রেখেই যেন তাঁর সওয়াল-জবাব। হয়ত শুধু কিপলিং নয়, বাইরে যেমন কিপলিং, ভেতরে তেমনি জাতপাতের ঘেরাটোপে বন্দি শুদ্ধতাবাদী আচারসর্বস্ব ভারতবাসী, তাদের সবাইকেই তিনি শোনান, তাঁর মতো করে, শাশ্বত ভারতবর্ষের উদারমুক্ত মর্মবাণী। তবে কিপলিংকে মনে করার কারণ, তাঁর কিম্ 888sport alternative link বেরোয় ১৯০১ সালে। তাঁর আদর্শ ভারতকল্পনার যে-ছবি তিনি সেখানে আঁকেন, এবং কিম্-এর আত্মপরিচয়ের সংকটের যেভাবে তিনি সমাধান করেন, গোরা 888sport alternative link তার সবটাই খণ্ডন করে; যদিও আপাতদৃষ্টে 888sport alternative link দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন জাতের এবং একটির প্রসঙ্গে অন্যটির উল্লেখ অনেকের কাছে অবান্তর মনে হলে তাতে বিস্মিত হবার কোনো কারণ নেই। এ সত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ কিছু ইঙ্গিত আমরা পাই, যা থেকে মনে হয় কিম্-এর প্রশ্নকে গোরায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে তুলে আনছেন ঔপন্যাসিক রবীন্দ্রনাথ।
অবশ্য এভাবে 888sport live footballপাঠ ও 888sport live footballবিচার সংগত কি-না, এ-কথা তুলতে পারেন অনেকেই। এমনকি তাঁরা সাক্ষী মানতে পারেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথকেই। অনেক সময় পাঠকের কষ্টকল্পনার বা বাস্তবানুগতার দাবির জুলুম এড়াতে তিনি বলতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁর 888sport alternative linkের কাহিনী শুধু ওই 888sport alternative linkেই। অন্য কোনো ঘটনার বা রচনার সঙ্গে তার সঙ্গতির বা অসঙ্গতির প্রশ্ন তোলা অযৌক্তিক, 888sport live footballপাঠে অবান্তর। মানবচরিত্রের যে-সম্ভাবনা 888sport alternative linkে মুক্তি পায়, তা বিশ্বাসযোগ্যভাবে ফুটে উঠেছে কি-না, এইটুকুই দেখবার। তবে ঘরে-বাইরে 888sport alternative link নিয়ে সমালোচনার মুখে তিনি এ-ও বলেন, ‘এ-কথা বলা চলে যে, লেখকের কাল লেখকের চিত্তের মধ্যে গোচরে ও অগোচরে কাজ করছে। ’… কাল আমাদের মনের মধ্যে তার নানা রঙের সুতোয় জাল বুনছে, সেই তার সৃষ্টি, আমি তার থেকে যদি কিছু আদায় করতে চাই তবে সে-উদ্দেশ্য আমারই। এই আদায় করাটা কিন্তু আর নৈর্ব্যক্তিক থাকে না। কাল যে ছবি আঁকে তা নানাদিক থেকে নানাজন নানাভাবে দেখে। দেখার পেছনে কাজ করে প্রত্যেকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি। দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে তার মানসপ্রবণতার সঙ্গে বাস্তব পরিবেশের সার্বক্ষণিক যোগাযোগে, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ভেতর দিয়ে। সবাই এক জিনিস একইভাবে দেখে না। সাড়া দেবার ধরনও আলাদা হয়ে যায়। যেমন- উপনিষদে মেঘের ডাকে দান কর, দয়া কর, দমন কর, এই রকম এক এক জন এক একটা শোনে। মেঘের মেলায় যে-ছবি ফোটে, তাকেও দেখে বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে। কালের আঁকা ছবিও সেই রকম। সেখান থেকে বলবার মতো তাৎপর্যপূর্ণ কিছু যদি লেখক দেখতে পান এবং তাঁর মতো করে দেখতে পান – তবে তাকেই তিনি তাঁর 888sport alternative linkে ফুটিয়ে তোলার কথা ভাবতে পারেন। অবশ্য যা বলবার মতো ও তাৎপর্যপূর্ণ তা শুধু তাঁর নিজের কাছে হলেই চলবে না, যাদের বলছেন, তাদের মনেও অনুরূপ সাড়া জাগাবে, এই প্রত্যাশাও তাঁর থাকে। এখানে অলিখিত একটা দায় ও একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তাঁকে হতে হয়। নিজের পছন্দসই কাহিনী মনের মতো করে বলা, এতেই লেখকের কাজ পুরো হয় না, আর সবার মনে তা কী আবেদন সৃষ্টি করছে, এটাও ভাবতে হয়। তার মানে অন্যের মন রেখে লেখা নয়, অন্যের মনে প্রত্যাশিত অভিঘাত সৃষ্টি করে কি-না, সেইটিই খেয়াল রাখা। রবীন্দ্রনাথ যে সেখানে বলেন, ‘- গল্পকে মত বলে দেখবার তো দরকার নেই, গল্প বলেই দেখতে হবে।’ এ-কথা তাই গ্রহণীয় হলেও তার দাবি সবটুকু মেটে না। গল্পের রস উপভোগের পরেও তার ব্যঞ্জনা গল্পের সীমা ছাড়িয়ে দেশ ও কালে প্রবহমান মানুষের জীবনলীলার অন্তর্গত সম্পর্ক-সম্বন্ধের প্রকাশমান বাস্তবতাকে স্পর্শ করতে চায় – কখনো তাকে মেনে নিয়ে, কখনো-বা তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে অথবা এমনকি তার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে। চলমান জীবনের মূল্যমানের ওপর গল্পের যে-মর্মকথা, তার সম্প্রসারণ অবাঞ্ছিত বলা যায় না। উপেক্ষণীয়ও নয়। রবীন্দ্রনাথ নিজেও গল্প বা 888sport alternative link রচনায় তাকে উপেক্ষা করেননি। তবু ব্যাখ্যা করার ঝামেলা এড়াতে সম্ভবত অমন একটা আড়াল খুঁজেছেন। হয়ত ভেবেছেন, এ-কাজ তাঁর নয়। দেশ ও কাল আপন আপন ভূমিকায় মানুষের চেতনায় যে-সব বীজ ছড়ায়, তারাই তার ভেতরে সক্রিয় হয়ে গল্প-888sport alternative linkের মূল্য-বিচারে তাকে কোনো এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেবে। তার মুখ চেয়ে থাকা ছাড়া লেখকের গত্যন্তর নেই। তাঁর পক্ষে সেখানে নাক গলানোও সাজে না। যুগে যুগে 888sport live footballপাঠের মূল্যায়নে যে-পালাবদল ঘটে সেটা তাই অনর্থক বা অনভিপ্রেত নয়। জীবনপ্রণালি এক জায়গায় যদি থেমে না-থাকে, তবে তা অনিবার্যই মনে হয়।
888sport alternative linkের কাহিনী লেখকের কল্পনাপ্রসূত অবশ্যই। তবে বহু বিকল্প
সম্ভাবনার ভেতর থেকে বিশেষ একটি কল্পনার বিস্তার তিনি বাছাই করে নেন। তা আকাশ থেকে পড়ে না। হাত-আন্দাজেও তাকে তিনি কুড়িয়ে নেন না। তার পেছনে কাজ করে তাঁর গভীর চিন্তা ও ঔচিত্যবোধ। তিনি যে-কাহিনী ও চরিত্রমালা নিয়ে অগ্রসর হন, তারা তাঁর ওই চিন্তা ও ঔচিত্যবোধ-সঞ্জাত অভিপ্রায়ের ফসল। কাজেই তাদের দৈবনির্দেশিত বা আকস্মিক মনে করার কোনো কারণ নেই। কেন তিনি তাদের বেছে নেন, কী তাঁর অভিপ্রায়, এসবের রহস্যভেদ 888sport live footballপাঠে অবান্তর নয়। বরং তার মর্মগ্রহণে অনেক সময়ে সহায়ক। অভাবিত নতুন মাত্রারও হদিস মিলতে পারে এভাবে।
আরো মনে রাখি, কোনো মহৎ 888sport live footballকর্মের সব আলো একসময়ে একসঙ্গে না-ও জ্বলতে পারে। কোনোটি অপেক্ষায় থাকে ভবিষ্যতের, কোনোটির জ্বলে-ওঠা নির্ভর করে অন্য কোনো 888sport live football-সৃষ্টি থেকে বিদ্যুৎ-সঞ্চালনের ওপর। এর সবটাই লেখকের নিয়ন্ত্রণে থাকে না, যদিও তাঁর অভিপ্রায়ের দূরাগত প্রভাব থাকে অবশ্যই। তিনি যদি তাকে ঠিক ঠিক শনাক্ত করতে না পারেন অথবা না চান তবুও।
গোরা-র আলোচনায় কিম্কে কেন টেনে-আনা, এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই এত কথা বলা। গোরা মহৎ 888sport alternative link হলেও আর সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এককভাবে দাঁড়িয়ে নেই। আশপাশ থেকে তার চিন্তার খোরাক জুটেছে। তার কালই তাকে জুটিয়ে দিয়েছে। সেই কালের ভাণ্ডারে কিম্ও ওখন জড়ো হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ সজ্ঞানে তাঁর বিষয় নিয়ে ভাবুন, আর না-ই ভাবুন, এর প্রশ্ন ঘুরপথে তাঁর সামনেও প্রবলভাবে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে সাড়া দিয়েছেন। নির্লিপ্ত থাকেননি। সরাসরি তাদের ভেতরে ঢুকে পড়েছেন; মেধা, সততা ও শ্রেয়বোধের সবটুকু নিয়ে তাদের মুখোমুখি হয়েছেন। এতটুকু ছাড়া দেননি। কোথাও আপোস করেননি। সমাজবৃত্তে নিজের অবস্থানের সঙ্গেও না। গোরা-য় যে-ইঙ্গিতগুলো কিম্কে মনে করিয়ে দেয় আমরা সেগুলো চিনে নেবার চেষ্টা করতে পারি। সেটা ভিন্নকালের দৃষ্টিকোণ থেকে নতুনভাবে দেখার সুযোগও বটে। পাঠক হিসেবে তা কাজে লাগাবার অধিকার আমাদের আছে। তবে তার আগে 888sport alternative linkদুটোয় যে যে কাহিনী বোনা হয়েছে, অতি দ্রুত তাদের সংক্ষিপ্ত সারের ওপর একবার চোখ বুলিয়ে নিই। গোরা ও কিম্ সম্পর্কে স্পষ্টতর কোনো ধারণা দেওয়া হয়ত তাহলে কিছুটা সহজ হবে।
দুই
আগেই বলেছি, কিম্ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০১ সালে। কিপলিং ভারত থেকে ইংল্যান্ডে ফিরে গেছেন তার অনেক আগেই, ১৮৮৯ সালে। জন্ম তাঁর ভারতে। শৈশবও কেটেছে সেখানে। বাবা ছিলেন সদাশয় মানবদরদি শিক্ষক। প্রতিবেশী ভারতীয় শিশুদের সঙ্গে ছেলেকে অবাধে মিশতে দিয়েছেন। উর্দু ও হিন্দুস্থানি আপনা থেকে সে রপ্ত করেছে। প্রধানত পাঞ্জাব অঞ্চলের জনগণের জীবনযাত্রার উপচেপড়া শব্দ-গন্ধ-রং তার মনের ওপর চিরস্থায়ী ছাপ রেখে গেছে। শৈশবের স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহে এই পরিবেশের বাস্তবতাকে সে আপন করে নিয়েছে, যদিও তা বাইরের একজন হয়ে। আপন করা, আর আপন হওয়া এক নয়। তার সঙ্গে একাত্মতা বা আপনত্ব ভেতরের একজন হবার যে-অভিজ্ঞতা দাবি করে এবং পরস্পরের জীবনযাপনে অনুভবের ঐক্যের যে-স্বাভাবিতার জন্ম দেয় তার কোনোটিই সার্বিকভাবে ওই বালক পায়নি। হয়ত চায়ওনি – তাকে পরিবেশ চাইতে দেয়নি। এর রেশ পরে কিম্্ 888sport alternative linkে শোকাবহভাবে ফুটে উঠেছে। কিপলিংকে, ছয় বছর বয়সে, তাঁর বাবা-মা পড়াশোনা করে ‘মানুষ’ হবার জন্যে বিলেত পাঠিয়ে দেন। স্কুলে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার কঠোর বিধিব্যবস্থা তাঁর ভালো লাগেনি, তাকে প্রত্যাখ্যানও করেননি। তার প্রভাবও তাঁর ব্যক্তিত্বে ও মনোগঠনে স্থায়ীভাবে পড়েছে। প্রত্যক্ষে অপছন্দের সুর গভীরের কর্তৃত্ব-পরায়ণতায় অকুণ্ঠ উৎসাহে গিয়ে মিশেছে। সতেরো বছর বয়সে কিপলিং আবার ভারতবর্ষে ফিরে আসেন। তাঁর বাবা-মা তখনো এখানে। পরের সাত বছর এদেশে তিনি সাংবাদিকতা করেন। 888sport live footballচর্চার শুরু তখনই। জন্মে ও প্রাথমিক অভিজ্ঞতায় ভারতবর্ষীয়, কিন্তু জাতে ও জাত্যাভিমানে প্রভুত্বকামী ইংরেজ – পরিচয়ের এই বৈচিত্র্য ও বৈষম্য তাঁর 888sport live footballকর্মেও হানা দেয়। অতি প্রবলভাবে তা কিম্-এ। কিম্-ই তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ রচনা।
কিম্ বারো-তেরো বছরের এক অনাথ বালক। পুরো নাম কিম্বল্ ও’হারা। বাবা আইরিশ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট। মা-ও শ্বেতাঙ্গ মহিলা। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত ভারতবর্ষে তার জন্ম। অতি শৈশবে পিতৃমাতৃহীন হয়ে লাহোর বাজারে রাস্তার ছেলের মতো তার বেড়ে-ওঠা। যদিও স্থানীয় এক মহিলা তাকে পালন করেন, তবু স্রোতের শ্যাওলার মতো সে ভাসমান; কোনো স্নেহের টান অনুভব করে বলে মনে হয় না। আর সব রাস্তার ছেলের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব। তাদের সঙ্গে খেলাধুলা-মারপিট করে তার সময় কাটে। পড়াশোনার বালাই নেই। সে-চিন্তাও তার মাথায় আসে না। তবে খুব চটপটে, আর বুদ্ধিমান। আর, সবার খুব প্রিয়। তাদের কাছে সে ‘লিট্ল্ ফ্রেন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। স্থানীয় যে-কোনো ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারে। ইংরেজিই বরং বাধোবাধো। হিন্দু-মুসলমান আচার-ব্যবহার সে রপ্ত করে সবই। ছোটলোক-বড়লোক সবার সঙ্গে অবলীলায় মেশে। কেউ তাকে পর ভাবে না। সে-ও নানা জনের নানা রকম চালচলন সহজভাবে নেয়। কোথাও বাধা পায় না। বাধা দেয়ও না। এমনটিই যেন স্বাভাবিক। এমনই চলে আসছে বরাবর। কাহিনীর শুরুতে দেখি লাহোর বাজারে ঐতিহাসিক নিদর্শণ পুরোণ কামান জমজমার ওপর বসা নিয়ে তার সমবয়সী আর দুটো ছেলের সঙ্গে কিমের ঠেলাঠেলি। ছেলে দুটোর একটি হিন্দু, অন্যটি মুসলমান। কিম্ তাদের ঠেলে-ফেলে নিজেই জাঁকিয়ে বসে। ছেলেখেলা বটে। তবে তার প্রতীকী তাৎপর্য উপেক্ষা করার নয়। তার বাবা মারা যাবার আগে কিম্-এর গলায় একটা রক্ষাকবচ ঝুলিয়ে দিয়ে যান। কবচের ভেতরে কাগজে লেখা থাকে তার জন্মবৃত্তান্ত ও আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় তথ্য। এ-নিয়ে কিমের কোনো মাথাব্যথা নেই।
এই সময়ে সেখানে আবির্ভাব ঘটে এক তিব্বতি লামার। লামা খুঁজতে বেরিয়েছেন কিংবদন্তির সেই নদী – রিভার অব দ্য অ্যারো – যেখানে অবগাহন করে তিনি মুক্ত হবেন, জন্মান্তরচক্র থেকে তাঁর নির্বাণ
ঘটবে। লাহোর জাদুঘরের সহানুভূতিশীল ইংরেজ সংরক্ষকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। ইংরেজ ভদ্রলোক তাঁর সারল্যে ও সাধুতায় মুগ্ধ হন। লামাও জাদুঘরের সযত্নে রাখা ভগবান বুদ্ধের মূর্তি ও 888sport app বৌদ্ধ-ভাস্কর্য দেখে অভিভূত। 888sport apk download apk latest versionর অভিজ্ঞানস্বরূপ ইংরেজ কিউরেটর লামাকে তাঁর চশমা উপহার দেন। নতুন পাওয়া চশমায় লামা চারপাশের সবকিছু আরো উজ্জ্বল দেখেন। যে-নদী তিনি খুঁজছেন, তাকে পেতে প্রব্রজ্যায় ওই চশমা তাঁর কাজে লাগবে, এটা তিনি উপলব্ধি করেন। সদাশয় ইংরেজের সহায়তার ইঙ্গিতটুকুও আমরা তার তলে পড়ে নিই। লামাকে দেখে কিম্ দারুণভাবে আকৃষ্ট হয়। এমন মানুষ লাহোর বাজারে সে আগে দেখেনি। লুকিয়ে জাদুঘরের সাহেব ও লামার কথোপকথন শুনে তাৎক্ষণিকভাবে সে লামার অনুসন্ধানে সঙ্গী হবার সিদ্ধান্ত নেয়। লামাও তাকে তাঁর চেলা করে নেন। বুদ্ধদেবের যেমন আনন্দ, কিম্ও যেন তাঁর তেমনি সহচর এবং সহায়। তাঁর হয়ে কিম্ ভিক্ষান্ন জুটিয়ে আনে। তাঁর সেবা করে – যেমন আছে ভারতীয় সংস্কৃতির ধারায়, তেমন করে। কখনো কখনো সে চালাকির আশ্রয় নেয়। তবে নির্দোষ চালাকি। তার জন্মগত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় তাতে মেলে এবং তার ভিন্নতাও তাতে ফোটে। ভিক্ষার ঝুলি অবশ্য ভালোভাবেই ভরে।
লামাকে নিয়ে কিম্ গ্রান্ড ট্রাংক রোড ধরে অগ্রসর হয়। ট্রেনেও চাপে। কত বিচিত্র অভিজ্ঞতা। অসংখ্য মানুষের মিছিল। নানা বর্ণের, নানা ধর্মের, নানা জাতের। বেশভূষায়, আচার-আচরণেও চোখ ভরে দেখার মতো বিভিন্নতা। জীবনধারণের জীবনযাত্রার হরেকরকম পথ। কৃষক- সওদাগর-ভিখিরি-বেশ্যা-সাহেব-সাহেবা, সবাই জনারণ্যে শামিল। কিপলিং আন্তরিকতার সঙ্গে এবং সহানুভূতির সঙ্গেও, এদের ফুটিয়ে তোলেন। সবাইকেই স্পষ্ট ও জীবন্ত মনে হয়। গ্রান্ড ট্র্যাংক রোড ধরে বেনারসের পথেই অবশ্য যাত্রা সীমাবদ্ধ থাকে না। পবিত্র নদীর অন্বেষণ পরে অন্যত্রও ছড়ায় – হিমালয়ের পাদদেশে কুলু উপত্যকা সিমলা থেকে নিচে লক্ষ্মৌ পর্যন্ত, এছাড়া ফাঁকে ফাঁকে ভিন্ন কাজে কিম্ করাচি-বোম্বেও ঘুরে আসে। গ্রান্ড ট্রাংক রোডের দৃশ্যের এক বর্ণনায় পড়ি : Ô- all castes and kinds of men move … Brahmins and chamars, bankers and tinkers, barbers and bunnias, pilgrims and potters – all the world coming and going. It is to me as a river from which I am withdrawn like a log after a flood.’ কিপলিংয়ের উৎসুক চোখ চারপাশের মানব-মানচিত্র দেখে, আর আপন-চেতনায় শুষে নেয়। তাকেই আবার পরম যত্নে ফিরিয়ে এনে এভাবে ফুটিয়ে তোলে কিম্-এ। তাঁর দেখার ও আত্মস্থ করার এই ধরনটা আমরা মনে রাখি। এ-নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন হবে পরে। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কিপলিংয়ের মনোভঙ্গি। কিম্ যেভাবে কিম্ হয়ে উঠেছে, তা তারই পরিণাম।
এদিকে কিম্ অন্য এক বিষয়ের আবর্তে জড়িয়ে পড়ে। তার জীবনে এর ফল হয় সুদূরপ্রসারী। 888sport alternative linkও ভিন্নতর মাত্রা পায়। কিপলিংয়ের কাছে সম্ভবত এইটিই প্রধান হয়ে ওঠে। কারণ তাঁর বক্তব্য যদি কিছু থাকে তবে তা দানা বাঁধে এইখানেই। লাহোর বাজারে কিমের পূর্বপরিচিত এক আফগান ঘোড়ার কারবারি মাহবুব আলী। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় গোযেন্দা কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও তার যোগাযোগ। লামার সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ কিমের হাতে সে ওই গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, কর্নেল ক্রেইটনের জন্যে এক গোপনবার্তা পাঠায়। রুশরা যে-সীমান্তে আফগান ও দেশীয় রাজাদের সঙ্গে যোগসাজশে গোলমাল পাকাবার চেষ্টায় আছে, তার নির্ভুল তথ্য ছিল এই বার্তায়। ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী তা কাজে লাগিয়ে তখনকার মতো গোলমালের সম্ভাবনা নস্যাৎ করতে সফল হয়।
কিম্ সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে ক্রেইটন তার কবচ হাতড়ে জানতে পারেন এবং কিম্ও সচেতন হয়, সে শ্বেতাঙ্গ। তাকে রাস্তার ছেলের মতো গোল্লায় যেতে দেওয়া যায় না। ব্রিটিশরাজের একটা নৈতিক দায়িত্ব আছে। ক্রেইটন তাকে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পাঠান। লামা তাঁর সহায় হন। ধর্মশালায় থেকে অর্থসংগ্রহ করে তিনি কিমের পড়াশোনার ব্যয়ভার বহন করেন। স্কুলের ছুটিতে সে লামার সঙ্গে মিলিত হয়। দুজনের তখন পবিত্র নদীর খোঁজে ঘোরাঘুরির পর্ব চলে। এদিকে ক্রেইটনের দলের আরো কজনের সঙ্গে কিমের পরিচয় হয়। বাঙালি বাবু হরিচরণ মুখার্জি তাদের একজন। ক্রেইটনের যেমন নৃ888sport apkে আগ্রহ, হরিবাবুরও তেমনি।
এইভাবে তিন-চার বছর কেটে যায়। কিম্ স্কুলে সার্ভের পড়া শেষ করে। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তার যোগাযোগ আরো ঘনিষ্ঠ হয়। ওদিকে রুশ-ফরাসি চক্রান্তও জমে ওঠে। পথে বেরিয়ে এই সময় লামার সঙ্গে কিম্ তাদের পাল্লায় পড়ে। রুশ গুপ্তচরের হামলায় বৃদ্ধ লামা জখম হন। বহু যত্নে-রাখা তাঁর জীবন ও পথের নিশানাচিত্র তারা ছিঁড়ে ফেলে। কিম্ পাল্টা মার দিয়ে তাদের পরাভূত করে এবং গুরুত্বপূর্ণ গোপন কাগজ তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে হরিবাবুর মাধ্যমে ক্রেইটনের কাছে পৌঁছে দেবার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। রুশ-চক্রান্তের জাল থেকে এইভাবে ব্রিটিশ প্রশাসন দেশকে রক্ষা করে। তা সত্ত্বেও লামা মনমরা হয়ে থাকেন। কঠিন আত্মজিজ্ঞাসার মুখে তিনি সত্য-জবাব খোঁজেন। কিম্ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। লামা মনে মনে ভাবেন, ‘Had I been passionless, the evil blwo would have done only bodily evil-a scar, or a bruise – which is illusion. But my mind was not abstracted, for rushed in straightaway a lust to let the spite men kill. In fighting the lust, my soul was torn and wrenched beyond a thocsand blows.’ আর কিমের ভেতরেও আগে মাঝে মাঝে যে-প্রশ্ন হঠাৎ ঝিলিক দিয়ে উঠেছে, তা আবার নতুন করে জাগে, ‘- I am Kim. This is the great world, and I am only Kim. Who is Kim?Õ … He was one insignificant person in all this roaring India. – কোথাও চালচুলো নেই, অতীত নেই, বন্ধন নেই, কিছুর সঙ্গে যোগ নেই, শুধু অর্থহীন বেঁচে থাকা। ‘- All that while he felt, through he could not put it into words that his soul was out of gear with its soundings,- a cog-wheel unconnected with aû machinery. Just like the idle cog-wheel of a cheap Beheea sugar-crusher laid in a corner. The breeyes fanned over him, the parrots shricked at him, the noises of the populated house behind – squabbles, orders, and reproofs – hit on dead ears.’ উদ্ধার মেলে দুজনেরই। লামা অনুভব করেন, কিমের ভেতর দিয়েই যে-নদী তিনি খুঁজে বেড়াচ্ছেন, তা তাঁর কাছে ধরা দিয়েছে। এখন তিনি মুক্ত। কিমের নিঃস্বার্থ, নিরাসক্ত, নিঃশর্ত সেবা, এবং কিমের সাহচর্যে জীবনলীলার চলমান ছবি দেখা, তার ভেতরের বাস্তবতা সমস্তটা একসঙ্গে অন্তরে অনুভব করা, এইটিই তাঁর অদৃশ্য পুণ্যতোয়া লুপ্ত নদীর উপলব্ধি। সুখ-দুঃখ-হর্ষ-বিষাদ অতিক্রম করে আত্মমগ্ন হয়ে তিনি এখন একাই নিজের পথে চলতে পারেন। কিম্ও স্থিতি পেতে পারে আপন ভুবনে। সে ভুবন কী এবং কেমন? লামার সরল সবিস্ময় উক্তি, ‘And thou art a Sahib? … Nwo I look upon thee often, and everytime I remember that thou art a Sahib. It is strange.’ কিপলিং এইরকম সাহেবের এক ইতিহাস-নির্দিষ্ট ভূমিকা চিহ্নিত করেন। কাহিনীশেষে কিম্কে তিনি জায়গা করে দেন সেইখানে। লামার মতো ভারতবর্ষের প্রাচীন ও পরিবর্তনহীন সত্তা যাতে চিরকাল ওইরকম থাকতে পারে, তা দেখার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় বহিরাগত ব্রিটিশরাজ। তা নির্বিবাদ হলে ভারতীয়ত্বও নিশ্চিন্ত। তার সুরক্ষায় নিয়োজিত গোয়েন্দা-কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কিম্কে তাই স্থায়ীভাবে জুড়ে দেবার কথা হয়। কিম্ সহায় ছিল বলেই যে লামার সত্যোপলব্ধি ঘটেছে এ-কথাটাও বিশেষ প্রতীকী ব্যঞ্জনা পায়।
তবে তার আগে ‘ছিন্নবাধা বালকের মতো’ কিমের জগৎসংসার থেকে বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটানো অনিবার্য হয়ে পড়ে। অসুস্থ অবসন্ন কিমের মাথায়, I am Kim. And what is Kim? – এই প্রশ্নের উত্তর একটু একটু করে আকার পায়। কিপলিং জানাচ্ছেন, ‘He did not want to cry – had never felt less like crying in his life – but of a sudden easy stupid tears trickled down his nose, and with an almost audible click he felt the wheels of his being lock of anwe on the world without. Things that rode meaningless on the eyeball an instant before slid into prper pruportion. Roads were meant to be walked upon, horses to be lived in, cattle to be driven, fields to be tilled, and men and women to be talked to. They were all real and true – solidly planted upon the feet – purfectly comprehensible – clay of his clay, neither more nor less…’ এবং ধরিত্রী জননী তাকে সঞ্জীবনী সুধা পান করায়। তার দেহে শক্তি যোগায়, তার চারপাশ জীবন-কোলাহলে মুখরিত করে, জীবনে পার্থিব লক্ষ্যের দিকে তাকে ঠেলে দেয়। ওই লক্ষ্য সার্বিক দায়িত্ববোধের সঙ্গে মেলানো। দায়িত্ব মহান ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সেবা। কারণ তাতেই ভারতবর্ষের সামূহিক কল্যাণ।
কিমের অগোচরেই অদূরে বসে লামা, মাহবুব আলী আর হরিবাবু মিলে তার ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের ছক তৈরি করে দেন। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার নিয়মিত কর্মকাণ্ড – ঃযব এৎবধঃ এধসব-এর সে হয়ে পড়বে অন্যতম খেলোয়াড়। আগে হয়ত হতো পিওন বা আর্দালি। কিন্তু যখন জানা গেছে, সে খাঁটি সাহেব এবং স্কুলেও পড়াশোনা করে সার্ভের কাজ কিছু শিখেছে, তখন তার অবস্থান সাহেব-সুবোর মতোই হবে। কিন্তু কাজটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সুরক্ষায় প্রশ্নহীন আত্মনিয়োগ। এইভাবেই এক অনাথ আইরিশ বালক, কিপলিংয়ের বিবেচনায়, জীবনের যথার্থ ঠিকানায় এসে পৌঁছায়।
এবার গোরা-কাহিনীর দিকে দৃষ্টি দিই। রবীন্দ্র-888sport live footballের অনুরাগী কোনো পাঠকের তা না-জানা থাকার কথা নয়। তবু আলোচনার সূত্র ধরায় সুবিধা হতে পারে মনে করে তার চুম্বকটুকু শুধু তুলে ধরা। গোরা জন্মসূত্রে আইরিশ। কিন্তু সে নিজে তা জানে না। সে ম্যুটিনির সন্তান। কৃষ্ণদয়াল তাঁর দ্বিতীয়পক্ষের স্ত্রী আনন্দময়ীকে নিয়ে যখন পশ্চিম ভারতের কোনো শহরে কর্মরত, তখন সিপাহি-বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। গোরার বাবা এতে মারা যান। আসন্নপ্রসবা তার মা কৃষ্ণদয়ালের বাসায় আশ্রয় নিয়ে সেখানে সন্তান জন্ম দিয়ে নিজেও প্রাণ হারান। আনন্দময়ী ছিলেন নিঃসন্তান। ছেলেটিকে নিজের বলে বুকে টেনে নেন। গোরা তাঁকেই মা বলে জানে এবং কৃষ্ণদয়ালকে বাবা। পাঁচ বছর পর ওই দম্পতি ছেলে গোরাকে নিয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন। কুড়িয়ে পাওয়া ছেলে, এ-নিয়ে কোনো প্রশ্ন কারো মনে জাগে না। বাবা-মাও ছেলের কাছে সত্য গোপন রাখেন। কৃষ্ণদয়ালের প্রথম স্ত্রীর ছেলে হবার সময় মৃত্যু হয়। ওই ছেলে শ্বশুরবাড়ি ফেলে রেখে তিনি ঘরছাড়া হয়েছিলেন। বিদেশেই কাশীবাসী সার্বভৌম মহাশয়ের পিতৃহীনা পৌত্রী আনন্দময়ীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে। কাজেই গোরার জন্মরহস্য পুরোটাই দূরদেশে চাপা থাকে। কলকাতায় এ-নিয়ে কোনো গুঞ্জন ওঠার সুযোগ থাকে না। কলকাতায় ফিরে কৃষ্ণদয়াল বড় ছেলে মহিমকেও তার মামাবাড়ি থেকে নিজের কাছে নিয়ে এসে মানুষ করেন।
কাহিনীর যেখানে শুরু সেখানে গোরার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাঠ শেষ। বিনয় তার অভিন্নহৃদয় বন্ধু। একই সঙ্গে তাদের পড়াশোনা, বেড়ে-ওঠা। বিনয় পিতৃমাতৃহীন। স্নেহের কাঙাল। আনন্দময়ীর মাতৃস্নেহ সে-ও সমানভাবে পায়। মায়ের অভাব সে বুঝতে পারে না।
গোরা ও বিনয় দুজনই অসাধারণ মেধাবী, সমাজ-সচেতন। উনিশ শতকের যে-প্রবল ধর্ম ও সমাজ-আন্দোলন, তাতে ভীষণভাবে জড়িত। তর্ক-বিতর্কে অংশ নেয় একেবারে সামনে থেকে। তাদের দলে গোরাই নেতা। বিনয় যেন তার ছায়া, যদিও নিজেও হৃদয়বান ও গভীরভাবে মানবিক। গোরা আদর্শনিষ্ঠায় আপসহীন। ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য সেখানে এতটুকু রেখাপাত করে না। অবশ্য আবেগ-অনুভূতি তার ভেতরেও সমান ক্রিয়াশীল। কিন্তু সে তাদের কাছে পরাজয় মানে না। নৈর্ব্যক্তিকভাবে দেশ ও সমাজের জন্যে যা তার কাছে কল্যাণকর বলে মনে হয়, তাকেই সে অনুসরণ করতে চায়। যদি তাতে প্রিয়জনের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে, তবুও।
পরেশবাবু – পরেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য – হিন্দুসমাজের অনুদারতায় এবং হৃদয়ে ও বুদ্ধিবৃত্তিতে তার বিশ্বাস ও বিধি-বিধান মেনে নিতে না-পারায় যৌবনে ব্রাহ্মমতে দীক্ষা নেন। তাঁর তিন মেয়ে – মেজটি ললিতা, বয়স বছর সতেরো। সুচরিতা তাঁর পালিতা কন্যা। বয়সে ললিতার একটু বড়। হিন্দু পরিবারে তার জন্ম। কিন্তু মার মৃত্যুর পর তার বাবাও ব্রাহ্ম হয়েছিলেন। তিনি পরেশবাবুর বন্ধু ছিলেন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর পর সুচরিতা ও তার ছোটভাই, ছোট্ট সতীশকে পরেশবাবু তাঁর নিজ পরিবারে আশ্রয় দেন এবং অনাবিল পিতৃস্নেহে তাদের পালন করতে থাকেন। এই পরিবারের সঙ্গে গোরা ও বিনয়ের যোগাযোগে যে-আলোড়নের সৃষ্টি হয়, তাতেই 888sport alternative linkের কাহিনী গতি পায়। আত্মচেতনা ও স্বদেশচেতনার গূঢ় প্রশ্নগুলো বাস্তবের সমস্ত অভিঘাত হয়ে তার পটভূমি রচনা করে।
গোরা মনেপ্রাণে ভারতীয়। পরাধীনতার অপমান তার মর্মমূলে বেধে। এই ভারতের উদারতা-সংকীর্ণতা, জ্ঞান-অশিক্ষা, ন্যায়-অন্যায়, ঐশ্বর্যহীনতা – সবকিছু সে আপন বলে মনের সমস্ত জোর দিয়ে আঁকড়ে ধরে। কিছুই বাদ দেয় না, বাদ দিতে চায় না। কোনো কিছু খারাপ বলে তা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া মানে তার ভারতকেই দুর্বল করা, পরিপূর্ণ আত্মস্বরূপকে খণ্ডন করা – যে ডালে বসে আছি, সেই ডাল কেটে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনা। শুরুতে ব্রাহ্ম-আন্দোলনে সে আকৃষ্ট হয়; কিন্তু এক ইংরেজ মিশনারি হিন্দুধর্ম ও সমাজে আক্রমণ করে উসকানিমূলক রচনা খবরের কাগজে ছাপালে তার দেশাত্মবোধ ও জাত্যাভিমান মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এ-নিয়ে তর্কযুদ্ধে নেমে সে তার বক্তব্যকে আরো বেশি করে আঁকড়ে ধরতে থাকে। সে বলে, ‘আমার আপন দেশকে বিদেশীর আদালতে আসামির মতো খাড়া করিয়া বিদেশীর আইনমতে তাহার বিচার করিতে আমরা দিবই না। বিলাতের আদর্শের সঙ্গে খুঁটিয়া খুঁটিয়া মিল করিয়া আমরা লজ্জাও পাইব না, গৌরবও বোধ করিব না। যে-দেশে জন্মিয়াছি সে-দেশের আচার বিশ্বাস শাস্ত্র ও সমাজের জন্য পরের ও নিজের কাছে কিছুমাত্র সংকুচিত হইয়া থাকিব না। দেশের যাহা কিছু আছে তাহার সমস্তই সবলে ও সগর্বে মাথায় করিয়া লইয়া দেশকে ও নিজেকে অপমান হইতে রক্ষা করিব।’ তার গোঁড়ামি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু এতে ভান এতটুকু ছিল না। সবটাই ছিল জ্বলন্ত স্বদেশপ্রেম ও স্বাজাত্যবোধের বহিঃপ্রকাশ। অন্তত দেশ-জাতি তখন তার কাছে যেভাবে ধরা দিয়েছিল, সেইভাবে অসংকোচে তুলে ধরা।
গোরা সূর্যগ্রহণে গঙ্গাস্নানে যায়। স্নানটা উপলক্ষ। তীর্থস্নানে সবরকম মানুষের সঙ্গে সমস্ত খোলস ফেলে মিলতে-পারাটাই আসল উদ্দেশ্য। পরে মানুষের সত্য পরিচয় পেতে – তাদের ঘরের খবর কাছে থেকে জানতে গ্রান্ড ট্রাংক রোড ধরে সে অগ্রসর হয়, আশপাশের গ্রামে যার-তার বাড়িতে আতিথ্য নেয়, তাদের জীবনযাপনের নিঃস্ব-নিরাবরণ চেহারা দেখে, অবিচার ও শোষণের নগ্ন ভয়ালরূপ চোখের ওপর আছড়ে পড়ে, মানুষে মানুষে বিচ্ছিন্নতা আর পারস্পরিক অসহযোগিতা মনকে পীড়া দেয়, বিদেশী মানুষের নির্বিবেক নিষ্ঠুরতা মাথায় প্রতিবাদের আগুন জ্বালায়। তার মনে যে চিরকালের ভারতবর্ষের নির্দ্বান্দ্বিক সর্বসমন্বিত কল্যাণময়ী রূপ আঁকা ছিল, তাতে ভেতর থেকে চির ধরে। বাইরে প্রাণপণে সে তা অস্বীকার করতে চায়। তাতে আরো বেশি জুলুম করে নিজের ওপরেই। ইংরেজ শাসক ও তার পেয়াদাদের অন্যায় বাড়াবাড়ির প্রতিবাদ করে সে। অন্যদেরও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাকে প্রতিহত করার আহ্বান জানায়। তাদের নেতৃত্ব দেয়। এতে তার সাজা হয়। বিচারের প্রহসনে তার হাজতবাস ঘটে।
এদিকে বিনয় পরেশবাবুর পরিবারে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। তার অমায়িক সুরুচিসম্পন্ন বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ সহজেই তাকে সবার প্রিয় করে তোলে। পরেশবাবুর পরিবারেও তার ব্যতিক্রম হয় না। পরেশবাবুর স্ত্রী বরদা সুন্দরী ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটের দাক্ষিণ্য পেতে আকুল। তখনকার নব্যশিক্ষিত ইঙ্গ-বঙ্গ সমাজে এটাও বহুবিধ লক্ষণের একটা। বিপরীত মানসিকতাও জন্মায়, যেমন গোরার ভেতরে। কিন্তু ওই লক্ষণও সমাজে দৃষ্টিকটুভাবে চোখে পড়ে। হয়ত তার শিকড় আরো গভীরে – ‘প্রভুর পদে সোহাগমদে দোদুল কলেবর’ হয়ে উচ্ছিষ্ট ভোগের লুব্ধতায়। যুগে যুগে প্রভুর পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু এই মনোভাব থেকে যায়। বরদা সুন্দরী ম্যাজিস্ট্রেটের বার্ষিক মেলায় কিছু ছেলেমেয়ে জুটিয়ে তাদের দিয়ে ইংরেজি কাব্য-নাটক অভিনয়ের ভার নেন। নিজের বাড়ির মেয়েদের সঙ্গে বিনয়কেও তিনি তাতে ভিড়িয়ে নেন। কিন্তু মেলায় অনুষ্ঠানের পূর্বমুহূর্তে নাটকীয়ভাবে গোরার হাজতবাসের খবর এসে পৌঁছায়। ওই ম্যাজিস্ট্রেটই গোরার সশ্রম কারাদণ্ডের হুকুম দেন। অভিনয়ের অপমান ও গ্লানি সহ্য করা বিনয়ের পক্ষে সম্ভব হয় না। তার আগেই সে মেলার আসর থেকে বেরিয়ে পড়ে কলকাতার স্টিমারে চেপে বসে। আরো একজন প্রতিবাদে অভিনয় বর্জন করে তার সঙ্গী হয়। সে ললিতা। সামাজিক দূরত্ব সত্ত্বেও ললিতা ও বিনয় একে অন্যের কাছে আসে। তাদের প্রেম বাইরের বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে পূর্ণতা পায়।
গোরার বিরল ব্যক্তিত্ব, দেশপ্রেম ও আদর্শবাদিতা সুচরিতাকে মুগ্ধ করে। গোরাও তার শান্ত মাধুর্যে ও অব্যক্ত সহমর্মিতায় আকৃষ্ট হতে থাকে। দেশোদ্ধারের ব্রতে তার 888sport promo codeবর্জিত সংকল্প-সাধনায় একটু একটু ফাটল দেখা দেয়। তাকে মনের তলায় পিষে মারতে গোরা আরো বেশি বেশি আচার-বিচারের দিকে ঝোঁকে। কারাবাস থেকে মুক্ত হয়ে সে ঘোষণা করে প্রাচীন হিন্দু বিধিমতো সে প্রায়শ্চিত্ত-যজ্ঞ করবে। সেটা যে শুধু ম্লেচ্ছ কারাগারের অশুচিতা থেকে মুক্তির জন্যে তাই নয়, আত্মশুদ্ধির জন্যেও। এবং তা জাতীয় চেতনার উদ্বোধনে আর সবাইকে প্রেরণাও যোগাবে। ভক্ত ও অনুরাগীবৃন্দ দারুণ উৎসাহে এই উদ্যোগ লুফে নেয়, কিন্তু গোরা স্বয়ং ভেতরে ভেতরে হাঁপিয়ে উঠতে থাকে। তার চিত্তের সততা ও সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে কোথায় যেন সুর কেটে যায়, অথচ তার কারণ সে ঠিক ঠিক চিহ্নিত করতে পারে না। বিনয়-ললিতার বিয়ের অনুষ্ঠানে সে যোগ দেয়নি, কারণ তা তার ধর্মীয় অনুশাসনের বিরোধী। মা আনন্দময়ী কিন্তু কোনো সংস্কারই মানেন না – বিয়েও হয় তাঁরই তত্ত্বাবধানে। গোরাকে যে তিনি পেয়েছেন, তাই তাঁর সংস্কারের সব গিঁট আলগা করে দেয়। প্রায়শ্চিত্তের আয়োজন যখন সম্পূর্ণ, তখনই ঘটে বিপত্তি। কৃষ্ণদয়াল অকস্মাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর মুখ দিয়ে রক্ত ওঠে। আয়ু ফুরিয়ে আসছে মনে করে তিনি তড়িঘড়ি গোরাকে ডেকে এনে এই প্রথম তাকে তার জন্মবৃত্তান্ত শোনান। তাঁর শ্রাদ্ধের অধিকার গোরার নেই, পাছে তা করতে গিয়ে সে মহাপাতকের কারণ হয়, এতেই তাঁর আতঙ্ক। গোরার চোখের সামনে থেকে একটা পর্দা সরে যায়। মনের ওপর থেকেও। সে জানে, সে ব্রাত্য, সে মন্ত্রহীন। সংস্কারের যে-কাঠামোকে সে তার প্রবলভাবে ঘোষিত ভারতীয়ত্বে স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে নিয়ে তাকেই পরম নিষ্ঠায় লালন করতে চেয়েছে, তা বাস্তবত এক অলীক মায়া। ভারতীয়ত্ব তাকে ছাপিয়ে এই মাতৃভূমি আপনচিত্তের অকুণ্ঠ ঔদার্যে যাকে যেমন কোল দেয়, তেমন। সম্পূর্ণ অধিকারহীন হবার ফলে সবকিছুতেই তার অধিকার। আত্মপর ভেদাভেদের ছুঁতমার্গতা থেকে সে মুক্ত। অসংকোচে সে এখন সবার কাছে যেতে পারে, সবাইকে আপন করে নিতে পারে। সংস্কারকে বয়ে বেড়ানোয় এবং তার হয়ে ওকালতি করতে নিজের সঙ্গে যে-লড়াই, তা নিতান্তই নি®প্রয়োজন, প্রকৃতপক্ষে সবটাই বিপুল এক ভ্রান্তি। সে বলে, ‘- আজ খবর পেয়েছি আমি মিউটিনির সময়কার কুড়োনো ছেলে, আমার বাপ আইরিশম্যান। ভারতবর্ষের উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত সমস্ত দেবমন্দিরের দ্বার আজ আমার কাছে রুদ্ধ হয়ে গেছে, আজ সমস্ত দেশের মধ্যে কোনো পঙ্ক্তিতে কোনো জায়গায় আমার আহারের আসন নেই।’ আরো বলে, ‘- এতদিন আমি ভারতবর্ষকে পাবার জন্যে সমস্ত প্রাণ দিয়ে সাধনা করেছি – একটা-না-একটা জায়গায় বেধেছে – সেইসব বাধার সঙ্গে আমার 888sport apk download apk latest versionর মিল করবার জন্যে আমি সমস্ত জীবন দিন-রাত কেবলই চেষ্টা করে এসেছি – এই 888sport apk download apk latest versionর ভিত্তিকেই খুব পাকা করে তোলবার চেষ্টায় আমি আর কোনো কাজই করতে পারিনি – সেই আমার একমাত্র সাধনা ছিল। সেই জন্যেই বাস্তব ভারতবর্ষের প্রতি সত্যদৃষ্টি মেলে তার সেবা করতে গিয়ে আমি বারবার ভয়ে ফিরে এসেছি – আমি একটা নিষ্কণ্টক নির্বিকার ভাবের ভারতবর্ষ গড়ে তুলে সেই অভেদ্য দুর্গের মধ্যে আমার ভক্তিকে সম্পূর্ণ নিরাপদে রক্ষা করবার জন্যে এতদিন আমার চারিদিকের সঙ্গে কী লড়াই না করেছি। আজ এই মুহূর্তেই আমার সেই ভাবের-দুর্গ স্বপ্নের মতো উড়ে গেছে। আমি একেবারে ছাড়া পেয়ে হঠাৎ একটা বৃহৎ সত্যের মধ্যে এসে পড়েছি। সমস্ত ভারতবর্ষের ভালোমন্দ-সুখদুঃখ-জ্ঞান-অজ্ঞান একেবারেই আমার বুকের কাছে এসে পৌঁছেছে – আজ আমি সত্যিকার সেবার অধিকারী হয়েছি – সত্যিকার কর্মক্ষেত্র আমার সামনে এসে পড়েছে – সে আমার মনের ভেতরকার ক্ষেত্র নয় – সে এই বাইরের পঞ্চবিংশতি কোটি লোকের যথার্থ কল্যাণক্ষেত্র।’
হৃদয়ানুভূতিকে অস্বীকার করে জাতধর্ম ও আদর্শের যৌক্তিকতায় যে সুচরিতাকে সে তার জীবনপথ থেকে দূরে ঠেলতে চেয়েছিল, তার কাছেই সে তার প্রার্থনার হাত বাড়ায়। সুচরিতা তা গ্রহণ করে। কোনো সমাজেই যাঁর স্থান হয় না, সেই মুক্ত মানুষ পরেশবাবুকে তারা প্রণাম করে। গোরা বলে, ‘আপনি আমাকে আজ সেই দেবতার মন্ত্র দিন, যিনি হিন্দু-মুসলমান-খ্রিষ্টান-ব্রাহ্ম সকলেরই – যাঁর মন্দিরের দ্বার কোনো জাতির কাছে, কোনো ব্যক্তির কাছে কোনোদিন অবরুদ্ধ হয় না – যিনি কেবলই হিন্দুর দেবতা নন, যিনি ভারতবর্ষের দেবতা।’
এই ভারতবর্ষের জীবন্ত প্রতিমাই এতদিন গোরাকে আগলে রেখেছে মাতৃস্নেহে লালন করেছে। তাঁরই পদতলে এসে গোরার আত্মপরিচয় পূর্ণতা পায়, তার আত্মজ্ঞান ও বাহ্যজ্ঞান একবিন্দুতে এক হয়ে মিলে যায়। আমরা পড়ি, ‘গোরা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরিয়া আসিয়া দেখিল – আনন্দময়ী তাঁহার ঘরের সম্মুখে বারান্দায় নীরবে বসিয়া আছেন। গোরা আসিয়াই তাঁহার দুই পা টানিয়া লইয়া পায়ের উপরে মাথা রাখিল। আনন্দময়ী দুই হাত দিয়া তাহার মাথা তুলিয়া লইয়া চুম্বন করিলেন। গোরা কহিল, মা, তুমিই আমার মা। যে মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলুম তিনিই আমার ঘরের মধ্যে এসে বসে ছিলেন। তোমার জাত নেই, বিচার নেই, ঘৃণা নেই – শুধু তুমি কল্যাণের প্রতিমা। তুমিই আমার ভারতবর্ষ – ’
গোরা-কাহিনী সমে এসে থামে। তার তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের রুদ্ধ দুয়ার সে সপাটে খুলে দেয়। খ্রিষ্টান বলে শৈশবের পরিচর্যাকারিণী যে লছমিয়াকে সে এতদিন আচার-নিষ্ঠার দোহাই দিয়ে দূরে ঠেলে রেখেছিল, তারই হাতের জল আবার মুখে তুলে সে তার চিত্তের অচরিতার্থ পিপাসা মিটাতে চায়। আনন্দময়ী বিচ্ছেদপীড়িত বিনয়কে ডেকে পাঠাবার কথা বলেন। আসলে বিনয়-ললিতা দুজনকেই।
গোরা ও কিম্ দুটো 888sport alternative linkই প্রায় একই রকম প্রারম্ভিক বিন্দু থেকে শুরু। কিন্তু দুই বিপরীত বিন্দুতে গিয়ে তাদের সমাপ্তি। বাধাবন্ধনহীন রাস্তার ছেলে কিম্ তার জীবনের স্থিতি পায় ব্রিটিশরাজের কর্মশালায়। মাদার আর্থ-জননী ধরিত্রী – তার ভেতরে প্রাণের ও কর্মপ্রেরণার সঞ্চার ঘটায়। ওই কর্মের সর্বোত্তম ক্ষেত্র, কিপলিং মনে করেন, রাজশক্তির সুরক্ষায় ও বিস্তারে নিয়োজিত সংস্থা। কারণ ব্রিটিশসাম্রাজ্য ঈশ্বরের মঙ্গলময় বিধান। তার সুশাসনে জনগণের কল্যাণ, তাদের অস্তিত্বের ও বৈশিষ্ট্যের নিরাপত্তায় যথার্থ নিরাপত্তার আশ্বাস। কিম্ মুক্তবিশ্বের অঙ্গন থেকে নিজেকে গুটিয়ে আনে। প্রভুশক্তির সেবার উপযোগী হয়ে উঠে সেই কাজে সে নিযুক্তি পাবে, এই প্রতিশ্রুতির কথা আমরা শুনি। তাতেই তার সার্থকতা। আকাশের পাখির কাক্সিক্ষত ঠিকানা বুঝি খাঁচাতেই। শান্তি, নিয়ম, শৃঙ্খলা ও নির্বিকার নিশ্চলতা, এগুলোতেই জীবনের পরমার্থ। তাদের জন্যে তৈরি থাকে কিমের কর্মনিযুক্তির ব্যবস্থা। বৌদ্ধ লামার মতো মানুষের নির্বিবাদে টিকে-থাকার জন্যে পুরোপুরি নির্ভর করা চলে ওই ব্যবস্থার ব্যাপক বিস্তারের ওপরেই।
অন্যদিকে গোরার জন্মবৃত্তান্ত যা-ই হোক, নিজে শুরু করে সে এক অনড় অসংশোধনীয় বিশ্বাসের ভূমি থেকে। ওই ভূমির ওপর নানাদিক থেকে আঘাত এসেছে, ফাটলও ধরা পড়েছে; কিন্তু গোরা অবিচল নিষ্ঠায় তাতে স্থির থাকতে চেষ্টা করেছে। ভেতরে ভেতরে ধস নামতে শুরু করেছে ঠিকই। সে তা নিজের কাছে স্বীকার করতে চায়নি। তবু চারপাশের বাস্তবতায় অসংখ্য কাটাকুটি আর সম্পর্কে জটিল বৈচিত্র্যও সংশয়ের বীজ তার নিজের অজান্তেই তার মনের ভেতর বুনে চলেছে। ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের বৈষম্য ও ভয়াবহতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রতিকারের পথ খুঁজতে সে তাদের আমল না দিয়ে নিজের বিশ্বাসের খুঁটিকেই আঁকড়ে থাকতে চেয়েছে। কিন্তু তার সত্য পরিচয়ের সামনে সবকিছু ভেসে গেছে। সে একদিকে যেমন নিঃস্ব ও একা হয়েছে, তেমনি তার স্বপ্নের ভারতবর্ষের সব মানুষকে, সবকিছুকে নিঃশর্ত আঁকড়ে ধরার পরিপূর্ণ অধিকার পেয়েছে। কিমের মতো সে ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার একটা খোপে গিয়ে সেঁটে বসার আয়োজন সম্পূর্ণ করেনি, বরং তার বাইরে ‘মুক্তদ্বারে’ অসংশয়ে এসে দাঁড়িয়েছে। তাতে রক্তের পার্থক্যে সে দূরে সরে যায়নি, কর্তৃত্বের অধিকারে বিশিষ্ট হতে চায়নি, বরং সবার সঙ্গে এক হয়ে প্রকৃত ভারতীয়ত্বের দাবি নিয়ে বহু বিচিত্র ধারায় অসংখ্য মানুষের মিছিলে অকুণ্ঠে গিয়ে মিশেছে। পুব-পশ্চিম ভেদাভেদের দেয়াল কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। নিজের হয়ে-ওঠার অপরিমেয় ঐশ্বর্যে সে তাকে পেরিয়ে এসেছে।
এটা অবশ্য আমাদের নজরে পড়ে, কিম্ ও গোরা, দুজনেরই জন্মগত যোগসূত্র আইরিশ। এবং ঘটনার বিবরণে মনে হয়, দুটো কাহিনীর ঘটনাকালও খুব কাছাকাছি। এটা কি শুধুই আকস্মিক? না-কি এর পেছনে দুই লেখকের অনুচ্চারিত, কিন্তু বিপরীতমুখী সুনির্দিষ্ট অভিপ্রায় ক্রিয়াশীল? আগেই বলেছি, গোরা রচনা শুরুর ছয় বছর আগে কিম্ ছেপে বেরোয়। কিপলিং যে নোবেল 888sport app download bd পান, তা-ও মূলত এই কিম্ 888sport alternative linkের জন্যেই। রবীন্দ্রনাথ যে গোরা-য় হাত দেবার আগে 888sport alternative linkটি পড়ে থাকবেন, এই অনুমান তাই খুবই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে কিম্ ও গোরার জন্মপরিচয় আমাদের ভাবনার আর একটা মুখ খুলে দেয়। এবং এ-প্রশ্নও আমাদের মনে ক্ষীণভাবে জাগে, গোরা কি কিম্-এর 888sport live footballিক প্রতিবাদ? 888sport alternative linkদুটোর আঙ্গিক ও প্রেক্ষাপট এতই আলাদা যে এ-প্রশ্ন অনেকের কাছে মনে হতে পারে অলস চিন্তাবিলাস, এমন কী অর্থহীন ও বিরক্তিকর। কিন্তু প্রশ্ন তবু থেকে যায়!
এ-কথা সত্য, এই আইরিশ-প্রশ্ন না তুলেও 888sport alternative link দুটো পড়া যায়, উপভোগও করা যায়। হয়ত 888sport live footballপাঠের সেইটিই দস্তুর, এবং তাতে আপত্তি তোলার কারণও কিছু নেই। তবে শুধুই রসবিচার গোরা ও কিম্-এর জন্যে যথেষ্ট মনে হয় না। তাদের স্থান ও কালনির্ভর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গুরুত্বহীন নয়। লেখক দুজনের কাছেও নিশ্চয় নয়। ওই প্রেক্ষাপট, দুই কাহিনী ভিন্ন হলেও, তাদের চরিত্রসমূহে বাড়তি মূল্য আরোপ করে। তাকে উপেক্ষা করা যায় না। উপেক্ষা করলে 888sport alternative linkপাঠে অর্থের যে-বিস্তার, এবং তার নিত্যনতুন ব্যঞ্জনা, তার কিছু কিছু আমাদের আড়ালে থেকে যায়।
গোরা ও কিম্ শ্বেতাঙ্গ এবং জন্মসূত্রে বিদেশী প্রভুর সমগোত্রীয়, এইটুকু জেনেই যদি আমরা সন্তুষ্ট থাকি, তবে আইরিশত্ব তাদের বিষয়ে নতুন কোনো মাত্রা যোগ করে না। আমরা তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অপরত্বের পটভূমিটুকু শুধু মনে রাখি। কিন্তু তাদের আইরিশ হওয়া আরো কিছু নির্দেশ করে। সেটা বিবেচনায় আনলে গোরা ও কিম্ দুজনের উত্তরা-ধিকারেই বাড়তি উপাদান সংযোজিত হয়। তাতে 888sport alternative linkদুটোয় অর্থেরও সম্প্রসারণ ঘটে। সঠিক-ভাবে তাকে ধরতে হলে সমসাময়িক আইরিশ ইতিহাসের দিকে আমাদের তাকাতে হয়। সেদিকেই এবার আমরা দৃষ্টি দিই।
তিন
অনেকে আমরা মনে করি, সাদা চামড়ার মানুষ মাত্রেই রাজার জাত। তার চাল-চলন ভিন্ন। ভালো খায়, ভালো পরে, শক্ত-সমর্থ-স্বাস্থ্যবান, সুখী-সচ্ছল-স্বাধীন। সে যদি আমাদের কাছে নাকউঁচু ভাব দেখায় তবে তা সবসময়ে সংগত না-হলেও প্রত্যাশিত বলে মেনে নিই। কিন্তু এই ধারণা ভ্রান্ত। সব শ্বেতাঙ্গেরই সাম্রাজ্যের গৌরব নেই, সবাই তারা ধনী নয়। জাতি হিসেবেও উনিশ শতকের পটভূমিতে মুষ্টিমেয় কটি ছাড়া বাকিরা ছিল গরিব। জীবন ছিল তাদের অনিশ্চয়তায় ভরা। আইরিশরা ছিল এই দুর্ভাগাদের দলে।
সবাই জানেন আয়ারল্যান্ড ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে ইংল্যান্ড-স্কটল্যান্ড থেকে আলাদা একটি দ্বীপ। অনেক আগে থেকে তা ছিল ইংল্যান্ডের ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের অধীন। ঔপনিবেশিক শাসনে শোষণের মাত্রা সেখানে কম ছিল না। সম্ভবত ভারতবর্ষে ঔপনিবেশিক শোষণের চেয়ে বেশিই ছিল। ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক নৈকট্য ও দ্বন্দ্ব তাকে আরো তীব্র করেছিল, যেমন করেছিল সাম্প্রতিককালে 888sport appsের ওপর পাকিস্তানি শোষণ। ধর্মাচরণে বিভিন্নতাও এখানে একটা ভূমিকা রাখে। আয়ারল্যান্ডের অধিবাসীরা অধিকাংশ ক্যাথলিক। ইংরেজরা প্রোটেস্টান্ট। আয়ারল্যান্ডে জমি-জমা, বিষয়-সম্পত্তির সিংহভাগ ছিল প্রোটেস্টান্ট ভূস্বামীদের দখলে। সাধারণ আইরিশদের দারিদ্র্য ও অসহায়তা গরিব ভারতবাসীর চেয়ে কম ছিল না। প্রকৃতির বিরূপতা তাকে তীব্রতরই করেছিল। ইংরেজির আধিপত্যে আইরিশদের নিজস্ব সেলটিক ভাষা হারিয়ে যেতে বসে। পারিপার্শ্বিক বাস্তবতায় তা উদ্ধারের কোনো উপায় তেমন ছিল না। মারি ও মন্বন্তর হয়ে উঠেছিল দুঃখী আইরিশবাসীর নিত্যসঙ্গী। আয়ারল্যান্ডের জন888sport free bet ১৮৪৫-এ ছিল প্রায় ৮.৫ মিলিয়ন, ১৮৪৬-এর মহামন্বন্তরে মারা যায় এক মিলিয়নেরও বেশি। শুরু হয় আত্মরক্ষার জন্যে দলে দলে বাইরে পাড়ি জমানো। প্রধানত আমেরিকায়। সেখানে যে আইরিশ কলোনি গড়ে উঠতে থাকে, তা একভাবে আইরিশ জনগণের টিকে থাকতেও সহায় হয়। আমেরিকায় থিতু হয়ে তারা আত্মীয়-স্বজন ও আরো 888sport app আইরিশকে টেনে নেবার ব্যবস্থা করে, পাশাপাশি ঘরে টাকা পাঠিয়ে নিরন্ন বুভুক্ষু আপনজনদের কোনো রকমে বেঁচে থাকার রসদ যোগায়। আইরিশ বহির্গমন গোটা উনিশ শতক ধরেই চলে। সঙ্গে থাকে দুর্ভিক্ষের আশংকা। কখনো কখনো তার প্রকৃত প্রাদুর্ভাব, যেমন ১৮৭৯ সালে। তাতেও ঘটে অনেক লোকক্ষয়। আমরা দেখি, ১৮৫১-তে আয়ারল্যান্ডের জন888sport free bet নেমে যায় ৬.৫ মিলিয়নে, ১৮৬১-তে ৫.৮ মিলিয়ন, ১৮৬৬-তে আরো কমে ৫.৫ মিলিয়ন। জন888sport free betর অধোগতি তারপরেও অব্যাহত থাকে। আজকের আইরিশ রিপাবলিকে তা প্রায় স্থিতিশীল ৪ মিলিয়নে। অবশ্য অখণ্ড আয়ারল্যান্ডের এক-পঞ্চমাংশ তার বাইরে। তা এখনো ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের অংশ।
আয়ারল্যান্ডে স্বাধীনতার দাবি প্রথম উচ্চারিত হয় ১৮৩০ সালে। শোষিত জনগণের অধিকাংশ যেখানে ক্যাথলিক, আর আর্থ-সামাজিক কর্তৃত্ব যাদের হাতে, তারা প্রোটেস্টান্ট, সেখানে এই বিভাজন কাজে লাগিয়ে ব্রিটিশ সরকার ওই স্বাধীনতার ও অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দিয়েছে বার বার। তাকে বিপথে পরিচালিত করাতেও ইন্ধন যুগিয়েছে। প্রতিকারহীন নির্যাতনের কোনো ইয়ত্তা ছিল না। সব সরকারি কাজের দরজা ক্যাথলিকদের জন্যে প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। দারিদ্র্যবিমোচনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কৃষকদের জমি থেকে উচ্ছেদ ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। তাদের ঘরবাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হতো, যাতে আর কেউ এসে দখল না নেয়। এই পরিস্থিতিতেই পঞ্চাশের দশকে সীন-ফেন সংগঠন তাদের আন্দোলন গড়ে তুলতে শুরু করে। ব্রিটিশ-শাসন থেকে মুক্ত হয়ে আয়ারল্যান্ডকে স্বাধীন প্রজাতন্ত্ররূপে প্রতিষ্ঠা করা ছিল তাদের লক্ষ্য। ১৮৬৭ সালে ফেনীয় বিপ্লবীরা এক বিদ্রোহ ঘটায়। ব্রিটিশ সরকার সামরিক বাহিনী দিয়ে নির্মমভাবে তা দমন করে। আন্দোলনের নেতাদের বন্দি করা হয়। এঁদের সম্পর্কে ইংরেজদের কাগজ থেকেই তথ্য সংগ্রহ করে মার্কস জানান :
দি আইরিশ পিপল্ কাগজের সহসম্পাদক মেলকেহি ফেনীয় ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণের জন্যে দণ্ডিত হন, ডার্টমুরে তাঁর গলায় লাগানো হয় একটা লোহার হাঁসুলি এবং পাথরভর্তি একটা গাড়ির সঙ্গে তাঁকে জুড়ে দেওয়া হয়। দি আইরিশ পিপল্-এর স্বত্বাধিকারী ও’ ডোনোভান রোসাকে দিনরাত পিছমোড়া করে শৃঙ্খলিত অবস্থায় পঁয়ত্রিশ দিনের জন্যে রাখা হয় একটি অন্ধ-কুঠুরিতে। খাবার অর্থাৎ জেলের মেঝের ওপর তাঁর জন্যে যে-গাঁজলা তোলা বস্তুটি রাখা হতো তা খাবার জন্যেও শেকল খোলা হতো না। দি আইরিশ পিপল্-এর একজন সম্পাদক কিক্হ্যাম, ফোড়ার জন্য তিনি ডান হাতটি ব্যবহার করতে না-পারলেও নভেম্বরের কুয়াশায় ও শীতে সঙ্গীদের সঙ্গে পাটকেল ¯তূপের ওপর বসে বাঁ হাত দিয়েই ইটপাথর ভাঙতে হয় তাঁকে। রাতের জন্যে তাঁকে সেলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রাণধারণের জন্যে তিনি ছয় আউন্স রুটি আর এক পাইট গরম জল ছাড়া কিছুই পান না।… মার্টিন এইচ কেরি আটক আছেন মিলর্যাঙ্কের উন্মাদাগারে; জোর করে কথাবন্ধ ও 888sport app নির্যাতনে তাঁর মস্তিষ্ক-বিকৃতি ঘটে।… কারা থেকে কারান্তরে রাজনৈতিক বন্দিদের এমনভাবে বদলি করা হচ্ছে যেন তাঁরা বুনো জন্তু। তাঁদের ওপর চাপানো হচ্ছে পাষণ্ডতম বদমায়েশদের সাহচর্য ও এইসব শয়তানদের বাসনপত্র মাজতে হচ্ছে তাঁদের, পরতে হচ্ছে এইসব অপরাধীদের কাপড়-চোপড়, যাদের অনেকেই কুৎসিত রোগে আক্রান্ত এবং স্নান করতে হচ্ছে এদেরই ব্যবহার করা জলে।-’ (খ’ ওহঃবৎহধঃরড়হধষব, ১৮৭০)। এমনই হলো সদাশয় ব্রিটিশ সরকারের হাতে স্বাধীনতাকামী আইরিশ জনগণের অভিজ্ঞতা। কিম্ এবং গোরার পটভূমি যে-কালখণ্ড নির্দেশ করে আয়ারল্যান্ডের এই ঘটনারাশি তার পেছনে বয়ে চলে। ভেতরের সাক্ষ্য-প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় গোরা-কাহিনীর সময় ১৮৮৪ সাল; কিম্-এর বিস্তার তখন থেকে আরো প্রায় তিন-চার বছর। আফগান সীমান্তের কাণ্ডকারখানা ঐতিহাসিক। তা থেকে কাহিনীদুটোর ঘটনাকাল নিশ্চিত করা যায়। আয়ারল্যান্ডের ইতিহাস অবশ্য সেইখানেই থেমে থাকে না। বিপ্লবের পথে সীন-ফেন-এর স্বাধীনতা-সংগ্রাম প্রথম সাফল্যের মুখ দেখে ১৯২০ সালে, যদিও তা আংশিক। ব্রিটিশ সরকার তাদের চিরাচরিত কৌশলে ক্যাথলিক-প্রোটেস্টান্ট ঝগড়া বাধিয়ে রাখে, যেমন তারা রেখেছিল ভারতবর্ষে হিন্দু-মুসলমানের ভেতরে। পরিণামে তখন আইরিশ ফ্রি-স্টেট প্রতিষ্ঠিত হলে আয়ারল্যান্ডের উত্তরাংশ তাতে যোগ দেয় না। তা প্রধানত প্রোটেস্টান্ট অধ্যুষিত এবং আগে যেমন বলেছি, এখনো ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের অন্তর্গত। আইরিশ ফ্রি-স্টেট প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় ১৯৪৯ সালে। তবে প্রোটেস্টান্ট-ক্যাথলিক বিভেদে রক্তক্ষরণের অবসান ঘটেনি।
গোরা ও কিম্-এর আলোচনায় এই ইতিহাস ঘাঁটা অনেকের কাছে ধান ভানতে শিবের গীত মনে হতে পারে। ভাবতে পারেন তাঁরা, 888sport live footballের খাস তালুকে এ-অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ। কিন্তু এ-কথাও মনে রাখা দরকার, বাস্তবে প্রকাশমান ঘাত-প্রতিঘাতে তাড়িত প্রত্যক্ষ জীবনের অন্তর্নিহিত তাগিদের সত্য স্বরূপকেই 888sport live football ফুটিয়ে তুলতে চায়। তার প্রবাহ মিশে থাকে আরো অনেক কিছুর সঙ্গে মানব-ইতিহাসের live chat 888sportে। 888sport live football তাকে প্রত্যাখ্যান করলে, অথবা খণ্ডন করলে বিরোধ ঘটে তার নিজের সঙ্গে। এতে 888sport live football চরিত্রভ্রষ্ট হয়। শুধুই ইচ্ছাপূরণের খেলায় তার মূল্যহানি ঘটে।
আইরিশ বংশোদ্ভূত কিম্কে যেভাবে কিপলিং প্রবল প্রতাপান্বিত ব্রিটিশরাজের অনুগত ভৃত্যে পরিণত করেছেন এবং তাতেই দেখেছেন বিধাতার কল্যাণময় নির্দেশ, তাতে তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দের, হয়ত সদিচ্ছারও, একটা নির্দ্বান্দ্বিক ছক আমরা খুব স্পষ্ট করেই পাই, কিন্তু সত্য মূল্যে তা দীন হয়ে পড়ে। রাংতার চাকচিক্য নিয়ে তা প্রাণবস্তু হারায়। কিম্ রাজ888sport live footballের এক চমকপ্রদ নিদর্শন হয়ে থাকে ঠিকই, ব্রিটিশ রাজশক্তির রমরমা অবস্থায় তার পাঠকপ্রিয়তাও ছিল যথেষ্ট, কিন্তু কালের গতিপথের কোনো হদিস তা দেয়নি। আইরিশ মুক্তিচেতনার বিপরীত মেরুতে তাকে প্রতিষ্ঠিত করে কিপলিং আত্মসুখের বিলাসে পরিতৃপ্তির পথ খুঁজেছেন। তাঁর 888sport live football তাই ওই জায়গাতেই আটকে থেকেছে। কোথাও এগোয়নি। কোনো পথও দেখায়নি। তাঁর সমসাময়িক প্রধান লেখকেরা যখন মোহভঙ্গের তিক্তস্বাদ মুখে নিয়ে ভাঙনের পথে এগোতে এগোতে নতুন নির্মাণের রূপকাঠামো তৈরি করে তাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন, তিনি তখন সাম্রাজ্যবাদের গৌরবে ডুবে-থেকে মহাসুখে তার জাবর কেটে চলেছেন। নিজেকে ভোলানো গেলেও ইতিহাস তাতে ভোলেনি।
কিমের মতো আফগান মাহবুব আলী, আর বাঙালি হরিবাবুও কিপলিংয়ের অপরূপ সৃষ্টি। কিন্তু দুজনের মুখই ইতিহাসের গতিপথের উলটো দিকে ঘোরানো। স্বাধীনচেতা আফগানরা ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের মাথাব্যথার কারণ। তাদের পোষ মানানোর চেষ্টা সফল হয়নি কখনোই। অথচ মাহবুব আলী অতি অনুগত ইনফর্মার – টিকটিকি-চক্রে সে-ও একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, গ্রেট গেম-এ বিশ্বস্ত পার্শ্বচর, উপযোগী সহায়ক। ক্যানিয়ুটের সমুদ্র-শাসনের ভঙ্গিতে কিপলিং তাকে এক মজাদার আফগানে পরিণত করেন, যে-আফগান ব্রিটিশ বদান্যতায় তুষ্ট। কিন্তু বাস্তবতার তোয়াক্কা করে না। পরম অবজ্ঞায় তা ছুড়ে ফেলে। কিপলিংয়ের আত্মসন্তুষ্টির অভিমান অবশ্য তাতে ভাঙে না। একই কাণ্ড ঘটে হরিবাবুর বেলাতেও। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালির স্বাধীনতাস্পৃহা তখন স্ফুটনোম্মুখ। এরা তাঁর ভীষণ অপছন্দের। তিনি চান বৌদ্ধ লামার মতো প্রাচীনতার দুর্গে বন্দি ইহজাগতিকতায় নিস্পৃহ ভালোমানুষ ভারতীয়, – সবাই বাবুরাম সাপুরের সাপ। ঝাঁকায় পুরে তাদের যত্ন-আত্তি করার মহান কাজে আত্মনিয়োগের দায় শুধু ইংরেজেরই। হরিবাবুকে তিনি তাই তৈরি করেন নব্যশিক্ষিত বাঙালির এক ক্যারিকেচারে। একই সঙ্গে সে-ও গ্রেট গেম-এর ঘুঁটি, যাকে পরিচালনা করেন ভদ্র শিক্ষিত মহানুভব ইংরেজ কর্নেল ক্রেইটন, যিনি ওই ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান। এখানেও ঘটে ইতিহাসের অপমান। সেদিনের বাঙালির স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাই ভবিষ্যৎ-ভারতবর্ষের প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়ায়। কিপলিং উটপাখির মতো ঊষর নান্দনিকতায় মুখ গুঁজে তার ঝাপটাকে তাড়াতে পেরেছেন, এই ভ্রান্তবিশ্বাসে ডুবে থাকেন।
এতেও সন্তুষ্ট নন কিপলিং। মনের কথা সরাসরি অন্যের মুখেও বসিয়ে দেন। যথার্থ না-হলেও পাঠকের মনে তার একটা প্রভাব পড়ে অবশ্যই। যেমন, সিপাহি-বিদ্রোহের 888sport sign up bonusচারণে এক পুরনো ভারতীয় সিপাই বলে, ‘A madness ate into all the Army, and they turned against their officers. That was the first evil, but not past remedy if they had then held hands. But they chose to kill the Sahibs wives and children. Then came the Sahibs from over the sea and called them to most strict account.’
এটা এদেশের জনগণের প্রকৃত অভিমতের সঠিক প্রতিফলন বলে মেনে নেওয়া শক্ত। কেউ কেউ তো তেমন থাকতেই পারে। এ-দেশের মাটিতে মীরজাফররাও ছিল। এখনো আছে। নইলে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন কেমন করে? কিন্তু ইতিহাসের ইতিময়তার প্রকাশ তাতে ঘটে না। তার প্রতিবন্ধকতাকেই তা চিনিয়ে দেয়। 888sport alternative linkে যদি সেইটিই বাহবা পায়, তবে বুঝতে হয়, ওই মন্তব্য সামনের দিকে তাকিয়ে করা নয়, চোখ ফেরানো থাকে পেছন দিকেই। সিপাহি-বিদ্রোহের রক্তক্ষরণ মাটিতে যে-বীজ বুনে দেয়, তা ব্রিটিশবিরোধী চেতনার শুধু জন্মই দেয় না, কিম্ রচনার পর পাঁচ দশক না পেরুতেই ব্রিটিশ-বিতাড়ন সম্ভব করার প্রক্রিয়াও তা থেকে সৃষ্টি হয়। কিপলিং তার সম্ভাবনাকে স্বীকার করতে চান না। মিথ্যা বিশ্বাসের জাল মনের সুখে বুনে চলেন। তা-ই দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেন কিম্-এর ভাগ্যকেও। ব্রিটিশরাজ্যের সেবক করে পরিচয়হীন আইরিশটির পরিচয় তিনি সম্পূর্ণ করেন। ‘লিটল্ ফ্রেন্ড অব দি ওয়ার্ল্ড, মুক্তবিশ্বের ঠিকানা আর ধরে রাখতে পারে না। সাম্রাজ্যরক্ষায় ‘গ্রেট গেম’-এ গোপন কর্মকাণ্ডের জালে সে বাঁধা পড়ে।
আর এক আইরিশ, গোরাকে নিয়ে ভিন্নতর পরীক্ষায় মাতেন রবীন্দ্রনাথ। ভারতবর্ষের মুক্তির ও কল্যাণের সাধনায় শুরুতে না-জেনে গোরা নিজেই নিজের ওপর কট্টর হিন্দুত্ব আরোপ করেছিল। একে সে মনে করেছিল ঔপনিবেশিক ব্রিটিশশাসন থেকে উদ্ধারের উপায়। আত্মসচেতনতারও অবলম্বন। পরিশেষে হিন্দুত্বের খোলস তার খসে পড়েছে। একটা স্থির বিন্দু থেকে ভারতবর্ষের সমগ্র মানব- অস্তিত্বের বৃত্তে তার ব্যাপ্তি ঘটেছে। হিন্দুত্ব তাতে খারিজ হয়নি। আইরিশত্বও বাদ যায়নি। গোরার ব্যক্তিসত্তার মুক্তি তার ভারতবর্ষের মুক্তির সমার্থক হয়ে উঠেছে। কিম্কে যেখানে কিপলিং গুটিয়ে এনেছেন, গোরাকে সেখানে রবীন্দ্রনাথ ছড়িয়ে দিয়েছেন। অবশ্য 888sport alternative linkদুটোর লক্ষ্যও ছিল ভিন্ন। একটি যেখানে খুঁজেছে ভারতবর্ষের মুক্তি, অন্যটি সেখানে চেয়েছে ওই ভূখণ্ডে জনগণের ওপর নির্বিবাদ কর্তৃত্ব। আপন আপন লক্ষ্য দুজনের সদিচ্ছাকে দুদিকে ঠেলেছে।
কিম্কে মনে রেখে গোরার সৃষ্টি, এমন ইঙ্গিত যে ওই 888sport alternative linkে কিছু কিছু পাই, তা আমরা আগেই বলেছি। উভয়েই আইরিশ। তবে আইরিশ যোগসূত্রে প্রতিক্রিয়া কিম্-এ যেমন, গোরায় ঠিক তার বিপরীত। কিপলিং যেন আয়ারল্যান্ডের ওপর ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রভুত্ব বাসনাকে কিম্-কাহিনীর পেছনে ধরে রেখেছেন। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথ ব্রিটিশশাসনের বিরুদ্ধেই গোরাকে দাঁড় করিয়েছেন। যদিও এই শাসন ভারতবর্ষে তবু সংবেদনার বিস্তার আয়ারল্যান্ডকেও স্পর্শ করে। আইরিশকন্যা ভগিনী নিবেদিতাকে রবীন্দ্রনাথ কাছে থেকে দেখেছেন। কাজেই এ-অনুমান অমূলক মনে হয় না। গোরাও শুধু ভাবের ফানুসমাত্র থাকে না। বাস্তবের শক্ত মাটিতে তাকে আমরা চিনে নিতে পারি। বাংলার স্বদেশী আন্দোলনের সঙ্গে নিবেদিতার গোপন যোগ ছিল। মূর্খ-দরিদ্র-আর্ত ভারতবাসীর সেবায় তাঁর আত্মনিয়োগের কাহিনী এখনো আমাদের শুভচেতনায় প্রেরণা যোগায়। তিনি, স্বামী বিবেকানন্দ, এবং স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ, কেউই অবাস্তব কল্পনামাত্র ছিলেন না। গোরাকেও তাই আমরা বাস্তবের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পারি। সে-বাস্তবের গতি-প্রকৃতি কিম্-এর প্রত্যয়রাশিকে খণ্ডন করে।
আমরা দেখেছি, শুরুতেই পুণ্য নদীর সন্ধানে বৌদ্ধ লামাকে নিয়ে কিমের গ্রান্ড ট্রাংক রোড ধরে পথ পরিক্রমা। পথে কত বিচিত্র মানুষ, কত রঙ-বাহার। কিন্তু এ-ও লক্ষ করি, সবটাই পথের ছবি, ঘরের নয়। কিপলিং বাইরের ছবিটাই দেখেছেন, তাঁর ভারতবর্ষের ধারণাও তা থেকেই ংঁঢ়বৎভরপরধষ, একই সঙ্গে supercilious। জীবনবোধ কোনো গভীরতায় পৌঁছায় না। কিমের ‘ও ধস করস, অহফ যিধঃ রং করস?’ এই আর্ত প্রশ্ন কোনো উদার মানবিক মুক্তি খুঁজে পায় না, যদিও জননী ধরিত্রীর শুশ্রƒষায় সুস্থ হয়ে সে-কর্মের পথে অগ্রসর হবে বলে আমাদের জানানো হয়।
গোরাও ভারতদর্শনে বের হয় গ্রান্ড ট্রাংক রোড ধরে। তবে পাঞ্জাব থেকে নয়, বিপরীত প্রান্ত কলকাতা থেকে। এ-ও কি কিম্ পড়ে, এবং তা মনে রেখে? জানি না। তবে গোরার দেখা বাইরে থেকে নয়, ভেতর থেকে। অন্যত্র পরেশবাবুর একটা মন্তব্য পড়ি, ‘- নিন্দা করতে গেলে বাইরে থেকে করা যায়, কিন্তু বিচার করতে গেলে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়।’ যদিও ভিন্ন প্রসঙ্গে, তবু গোরার মানুষের কাছাকাছি আসার এই চেষ্টার সঙ্গে তাকে মিলিয়ে নেওয়া যায়। আর ওই ভেতরে প্রবেশ করতে না-পারাটাই চোখে পড়ে কিম্-এ।
গোরার এই পল্লীদর্শন 888sport alternative linkটির মহৎ ও 888sport app download for androidীয় অংশগুলোর একটি। কৃত্রিমতা নেই, অহংকার নেই, লোক-দেখানো চটকদারি নেই, আছে শোষণ ও নির্যাতনের নিরাবেগ উপস্থাপন, দুঃখ-দারিদ্র্যের ভেতরেও সহজ মানবিকবোধের নীরব করুণ জেগে-থাকা, আছে প্রতিকারহীন অবিচারের বিরুদ্ধে নামহীন সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের মহিমা, আছে আকুল প্রাণের আবেদন। গোরার চরঘোষপুরের অভিজ্ঞতার বিবরণ আমাদের ন্যায়-অন্যায় বোধকে সঠিক জায়গায় দাঁড় করায়; তাকে আরো শানিত করে। আমরা পড়ি, ‘ক্ষুধায় তৃষ্ণায় গোরাকে অভিভূত করিয়াছিল, কিন্তু দুর্বৃত্ত অন্যায়কারী মাধব চাটুজ্জের অন্ন খাইয়া তবে জাত বাঁচাইতে হইবে, একথা যতই চিন্তা করিতে লাগিল ততই তাহার অসহ্য বোধ হইল। তাহার মুখ-চোখ লাল ও মাথা গরম হইয়া মনের মধ্যে বিষম একটা বিদ্রোহ উপস্থিত হইল। সে ভাবিল, পবিত্রতাকে বাহিরের জিনিস করিয়া তুলিয়া ভারতবর্ষে আমরা এ কী ভয়ংকর অধর্ম করিতেছি! উৎপাত ডাকিয়া আনিয়া মুসলমানকে যে লোক পীড়ন করিতেছে তাহারই ঘরে আমার জাত থাকিবে আর উৎপাত স্বীকার করিয়া মুসলমানের ছেলেকে যে রক্ষা করিতেছে তাহারই ঘরে আমার জাত নষ্ট হইবে! – ’ অসহায় মুসলমান ছেলেকে দরিদ্র নাপিত-দম্পতির নিজেদের ঘরে অপত্য স্নেহে আগলে রাখার কাহিনী 888sport alternative linkে এ-অংশের এক অমূল্য সম্পদ। কিপলিংয়ের লেখায় ভারতবর্ষের চমৎকার যে ভিউ কার্ড তৈরি হয়, তেমন কিছুর সম্ভাবনা অবশ্য এখানে নেই। তবে এই রকম অভিজ্ঞতা পেরিয়েই গোরার আত্মিক মুক্তি সম্পন্ন হয়। তার জন্মরহস্যের উদ্ঘাটন বাইরে থেকে তাকে সংহত করে মাত্র।
আরো একটা কথা এইখানে বলবার। এডওয়ার্ড সাঈদও এটা লক্ষ করেছেন (culture and Imperialism), কিমের বেড়ে-ওঠায় 888sport promo code-প্রভাব প্রায় কিছুই পড়েনি। 888sport alternative linkে কিছু 888sport promo codeচরিত্র আছে। আশপাশে তারা ঘুরঘুর করে।কাহিনী-নির্মাণে এখানে-ওখানে সহায়ক ভূমিকা তাদের। কিন্তু কিম্, বা বৌদ্ধ লামার মনো-ভূমিতে কোনো ছাপই তারা ফেলে না। সব মিলিয়ে যে-জগতের খবর আমরা পাই, তা পুরুষের তৈরি এবং পুরুষেরই জন্যে। সক্রিয়বাদী পুরুষ-মানসিকতার ফল এটা। পুরুষ-প্রাধান্যকে তা একরকম স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে নেয়। একটু চিন্তা করলেই সাম্রাজ্য-বাদী উৎসাহের সঙ্গে এই মানসিকতাকে একই সূত্রে এনে মিলিয়ে নেওয়া যায়। সেনা-অভিযান, রাজ্যজয়, অন্যের ওপর প্রভুত্ব স্থাপন এ-সবেই ফুটে ওঠে পুরুষের দাপট। মেয়েরা তাতে মুগ্ধ হতে পারে, তাদের সঙ্গ ও সেবা দিতে পারে, তাদের জয়ের স্পৃহা বাড়িয়ে দিতে পারে, কিন্তু ওই পর্যন্তই। তারা কর্তা হয় না, সকর্মক হয় না, স্বয়ং কর্ম থেকে যায়। কিম্ 888sport alternative link এই পুরুষ-প্রাধান্যের বার্তাই আমাদের শোনায়।
[এখানে অপ্রাসঙ্গিক হলেও জনান্তিকে আর একজনের 888sport live footballকর্মের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করি। তিনি সত্যজিৎ রায়। সবাই জানি, তাঁর ছবিতে 888sport promo code-প্রশ্নের সূক্ষ্ম দিকগুলো গভীর সহানুভূতি ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে অপূর্ব 888sport live chatসুষমায় আঁকা; কিন্তু তাঁর কিশোর-888sport live football প্রায় সম্পূর্ণত 888sport promo code-বর্জিত। এটা আমাদের মনে ধাক্কা দেয় বৈ কি! অনুমান করি ঔপনিবেশিক কিশোর-888sport live footballে পুরুষ-প্রাধান্যের ধারা গতানুগতিকভাবে তিনি রপ্ত করেন এবং ঔপনিবেশিক শক্তিপ্রতিভার তুলনায় যে-কোনো অংশে কম নন, এইটিই প্রমাণ করায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ব্যক্তির ও জাতির অহংকার ঔপনিবেশিক মূল্যমানকে ব্যবহার করে ঔপনিবেশিকতার প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে। তাতে যে-স্বাভাবিক ভারসাম্য ক্ষুণ্ন হয়, এটা বোধহয় কেউ খেয়াল করেন না। আমাদের দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ঠাকুরমার ঝুলি, বা উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর টুনটুনির বই-এর সঙ্গে তুলনা করলেই তফাতটা ধরা পড়ে।]
গোরায় পুরুষের আত্মোপলব্ধি কিন্তু পূর্ণতা প্রায় 888sport promo codeকে অবলম্বন করে এবং 888sport promo code সেখানে পার্শ্বচরিত্রমাত্র নয়, তারও আপনসত্তা বিকশিত হয়, ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাত তাকেও পূর্ণতার দিকে টেনে নিয়ে যায় – বিচ্ছিন্নভাবে নয়, পুরুষের আত্মবিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। কোথাও সে-ই পথ দেখায় – যেমন – বিনয়কে ললিতা, কোথাও-বা সে প্রেরণা হয়ে পুরুষের উপলব্ধির জগতে বিস্তার ঘটায়, কর্মযজ্ঞে তার সঙ্গী হয় – যেমন – গোরার কাছে সুচরিতা। বিনয় ও ললিতার প্রেম যে-চরিতার্থতায় পৌঁছায়, তাতে প্রধান ভূমিকা ললিতারই। আপাতদৃষ্টে অশেষ মমতায় ও মাধুর্যে আঁকা এই পর্ব গোরা কাহিনীর মূলস্রোতের গভীর গম্ভীর ব্যঞ্জনার পাশে কিঞ্চিৎ হালকা। কিন্তু তা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এবং অবশ্যই তেমন হইচই না-তুলেও দারুণভাবে সাহসী ও বৈপ্লবিক। ললিতা ও বিনয়ের প্রেমের উন্মেষ ও বিকাশের যে-ছবি রবীন্দ্রনাথ এঁকেছেন, যেভাবে তার পাপড়ি-মেলা দেখিয়েছেন, তা যে-কোনো 888sport live footballেই দুর্লভ। তাঁর প্রতিভা এখানে অসামান্যের স্পর্শে আশ্চর্য সুন্দর মানবিক হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে তা বিনয় ও ললিতাকে চেতনার পরতে পরতে নিজেদের জানতে শিখিয়েছে। তার আলো গোটা 888sport alternative linkেই ছড়িয়েছে। সুচরিতাও গোরাকে বদলে দেয়। রবীন্দ্রনাথ জানান, ‘গোরা নিজের মনে নিজে আশ্চর্য হইয়া গেছে। যতদিন ভারতবর্ষের 888sport promo code তাহার অনুভবগোচর ছিল না ততদিন ভারতবর্ষকে সে যে কীরূপ অসম্পূর্ণ করিয়া উপলব্ধি করিতেছিল ইতিপূর্বে তাহা সে জানিতই না। গোরার কাছে 888sport promo code যখন অত্যন্ত ছায়াময় ছিল তখন দেশ সম্বন্ধে তাহার যে কর্তব্য ছিল তাহাতে কী একটা অভাব ছিল। যেন শক্তি ছিল, কিন্তু তাহাতে প্রাণ ছিল না। যেন পেশি ছিল, কিন্তু স্নায়ু ছিল না। গোরা এক মুহূর্তেই বুঝিতে পারিল যে, 888sport promo codeকে যতই আমরা দূর করিয়া ক্ষুদ্র করিয়া জানিয়াছি আমাদের পৌরুষও ততই শীর্ণ হইয়া মরিয়াছে। তাই গোরা যখন সুচরিতাকে কহিল ‘আপনি এসেছেন’, তখন সেটা কেবল একটা প্রচলিত শিষ্টাসম্ভাষণরূপে তাহার মুখ হইতে বাহির হয় নাই- তাহার জীবনে একটি নূতন লব্ধ আনন্দ ও বিস্ময় এই অভিবাদনের মধ্যে পূর্ণ হইয়া ছিল। -’
কিম্-888sport alternative linkে এমন অনুভূতির কোনো জায়গা নেই।
তবে সুচরিতা বা ললিতা নয়, গোরা-কাহিনীর প্রাণকেন্দ্রে আছেন আর কেউ নন, আনন্দময়ী। মনুষ্যত্বের পূর্ণতা এবং ভারতবর্ষের ঐতিহ্যের সত্যতা, দুটোকেই তিনি ধারণ করেন তাঁর প্রাকৃতিক সহজতায়। তাঁর আপন সত্তার অন্তর্জাত রসায়নই তাঁকে অমন করে তোলে। এজন্যে তাঁকে আলাদা করে চেষ্টা করতে হয় না, অন্য কারো অনুসরণ করতে হয় না, নিজিকে জাহির করায় ঢাক পেটাতেও হয় না। তিনি আছেন, তা-ই যথেষ্ট। তাই তিনি অমন। গোটা 888sport alternative linkে অনেক তর্ক-বিতর্ক, অনেক উত্তেজনা। পাঠকের আগ্রহ দানা বাঁধে তাদের ঘিরেই। আনন্দময়ী অনেকটা যেন ছায়াবৃতা। কিন্তু কাহিনীশেষে আমরা বুঝি, এই 888sport alternative linkের মূল প্রতিমা তিনিই। তাঁরই আলোকে আলোকিত অন্য সবাই। তিনি আইডিয়ামাত্র নন। আসলে সবচেয়ে জীবন্ত তিনি, এবং সবচেয়ে স্বাভাবিক। যেমন – আমাদের বাস্তবজীবনে দেখা বেগম সুফিয়া কামাল। কিম্-888sport alternative linkের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে হঠাৎ করেই ছোট্ট এক উড়ন্ত পরিস্থিতির দেখা পাই গোরায়। 888sport alternative linkের কাহিনী-প্রবাহে তার কোনো প্রভাব নেই। কিন্তু পরিস্থিতিটি বিদ্যুৎচমকের মতো কিম্কে মনে করিয়ে দেয়, আর বুঝিয়ে দেয়, কিপলিংয়ের যেখানে সমর্থন ও আনুগত্য রবীন্দ্রনাথের সেখানে বিরোধিতা। তিনি বরং জয় চান তার বিপরীতেরই।
সুচরিতা ও সতীশের মাসি হরমোহিনীকে নিয়ে এক গুরুতর সমস্যার মাঝখানে বালক সতীশ ঢুকে পড়ে। সে ‘আসিয়াই কহিল, “মাসিমা, জান, রাশিয়ানরা ভারতবর্ষ আক্রমণ করতে আসছে। ভারি মজা হবে।”
বিনয় জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কার দলে?”
সতীশ কহিল, “আমি রাশিয়ানের দলে।”
রবীন্দ্রনাথের প্রচ্ছন্ন পক্ষপাতিত্ব এখানে ধরা পড়ে। অথচ আমরা জানি, ১৮৮৪ সালের ওই সংঘাতের সময়েই কিমের সঙ্গে মাহবুব আলী ও কর্নেল ক্রেইটনের গোয়েন্দাকাণ্ডে প্রথম সম্পর্কের সূচনা। রাশিয়ানদের তাড়াতে ক্ষুদে গুপ্তচরের কাজে কিম্ তখনই প্রথম নিয়োজিত হয়। তার জীবনের মোড়ও ঘুরিয়ে দেয় ওই ঘটনা।
কিপলিংয়ের কাছে রাশিয়ানরা খলচরিত্রের। কারণ তারা ঈশ্বরের বিধান ব্রিটিশরাজত্বে শান্তি নষ্ট করে। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথের সরব প্রশ্রয় কিন্তু তাদের দিকেই। ঔপনিবেশিক বাস্তবতায় মহাপ্রতাপশালী ইংরেজ 888sport live footballিক ও অসাধারণ প্রতিভাবান ভারতবর্ষীয় 888sport live footballিকের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য ধরা পড়ে এইভাবেই। তাঁদের সৃষ্ট চরিত্রদের আত্মপরিচয়ের অন্বেষণও তাই দুই দিকে দুই পথে বেঁকে যায়, যদিও শুরুটা ছিল দুজনের প্রায় একই রকম।
[এডওয়ার্ড সাঈদ 888sport app download for androidে এই লেখা নিবেদিত।]


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.