নাজিব ওয়াদুদ
অতীতে, সুদূর অতীতে, প্যালেস্টাইন গণ্য ছিল বৃহত্তর আরবভূমির অংশ হিসেবে। তার ভাষা বরাবরই আরবি। সুতরাং ‘প্যালেস্টাইনি 888sport live football’ বলে আলাদা কোনো 888sport live footballের অস্তিত্ব আগে, বিশেষত বিংশ শতাব্দীর চতুর্থ দশকের পূর্বে ছিল না। প্যালেস্টাইন অঞ্চলে বসবাসকারীরা যেমন আরব হিসেবে পরিচিত হতো, তেমনি তাঁদের রচিত 888sport live footballও আরবি 888sport live football হিসেবে পরিগণিত হতো। ১৯৪৮ সালে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের জন্ম এবং লাখ লাখ প্যালেস্টাইনিকে হত্যা ও ভিটেছাড়া করার মধ্য দিয়ে যে নতুন ইতিহাসের গতি লাভ ঘটে, তার ফল হিসেবেই ‘প্যালেস্টাইনি জাতি’র উদ্ভব হয় এবং এ-জাতির 888sport live football আরবি হওয়া সত্ত্বেও ‘প্যালেস্টাইনি 888sport live football’ নামে স্বতন্ত্র পরিচয় লাভ করে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে প্যালেস্টাইনি 888sport live footballের উদ্ভব ও বিকাশ প্যালেস্টাইনি জাতিগঠনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত।
প্রায় চারশো বছর ধরে প্যালেস্টাইন অঞ্চল ছিল বৃহত্তর সিরিয়ার অংশ হিসেবে তুর্কি ওসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীন। এখানকার অধিবাসীরা ছিল আরব। ওসমানীয় শাসকরা এখানে উপনিবেশ সৃষ্টি করেননি, বরং তাদের পক্ষে স্থানীয়রাই এখানকার প্রকৃত শাসক ছিলেন। এক পর্যায়ে, বিশেষত অর্থনৈতিক কারণে, খুবই সীমিত পরিসরে প্যালেস্টাইনে ইহুদি অভিবাসন অনুমোদন করা হয়। এভাবে ১৯০৮ সালে, ওসমানীয় সাম্রাজ্যের পতনের সময়, প্যালেস্টাইনে ইহুদিদের 888sport free bet মোট জন888sport free betর দশ শতাংশে উন্নীত হয়। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে প্যালেস্টাইনিরা অন্য আরবদের মতো ব্রিটিশ সহায়তায় তুর্কিদের বিতাড়িত করে; কিন্তু ১৯১৮ সালে ব্রিটিশরা পুরো প্যালেস্টাইন দখল করে নেয়। দখলদারিত্ব কায়েম রাখতে ব্রিটিশরা ইহুদিদের সঙ্গে সমঝোতা করে এবং ব্যাপক অভিবাসন ঘটাতে থাকে। ব্রিটিশরা প্যালেস্টাইনে ইহুদিদের জন্য একটা আবাসভূমি তৈরি করে দেওয়ার অঙ্গীকারও (বালফুর ঘোষণা) করে। ব্রিটিশ শাসকদের প্রশ্রয়ে একের পর এক ইহুদি বসতি গড়ে উঠতে থাকে। শুরু হয় বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে আদিবাসী প্যালেস্টাইনিদের সংঘাত। এই সময়ই সচেতন প্যালেস্টাইনিরা অনুধাবন করেন যে, বিপদ আসন্ন। শুরু হয় ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে প্যালেস্টাইনিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। একই সঙ্গে তাদের মোকাবিলা করতে হয় ইহুদি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোকেও। যদিও প্যালেস্টাইনিরা তখন পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ছিল, তবু মূলত তখন থেকেই প্যালেস্টাইনের অধিবাসীরা ‘প্যালেস্টাইনি’ হয়ে উঠতে শুরু করে, কারণ প্রতিবেশী অন্য আরবদের তুলনায় তাদের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায়। যে প্যালেস্টাইন ভূমিতে আরব-প্যালেস্টাইনিরা খুব কম করে হলেও সপ্তম শতাব্দী থেকে বসবাস করে আসছিল, ১৯৪৭ সালে ইউরোপ-আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত জাতিসংঘ সে-ভূমিকে ভাগ করে ইহুদিদের জন্য ইসরায়েল এবং আরবদের জন্য প্যালেস্টাইন নামে দুটো পৃথক রাষ্ট্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। তার সুস্পষ্ট অর্থ হলো নতুন-তৈরি ইসরায়েলের মধ্যে পড়ে-যাওয়া লাখ লাখ আদিবাসী প্যালেস্টাইনিকে বাস্তুচ্যুত হতে হবে এবং নতুন বসতস্থান খুঁজে নিতে হবে। ইসরায়েল ১৯৪৮ সালের মে মাসে স্বাধীনতা ঘোষণা করে, আরবরা তা যথারীতি প্রত্যাখ্যান করে, শুরু হয় যুদ্ধ। ইউরোপ-আমেরিকার মদদপুষ্ট ইসরায়েলিদের কাছে আরবরা পরাজিত হয়। ইসরায়েল জাতিসংঘ-নির্ধারিত নতুন ‘প্যালেস্টাইনি’র অনেক জায়গা দখল করে নেয়। জাতিসংঘ ১৯৪৭ সালের সীমান্তে ফেরত যেতে বললেও ইসরায়েল তাতে অস্বীকৃতি জানায়। অন্তত সাত লাখ প্যালেস্টাইনিকে ভিটেছাড়া হতে হয়। তারপর থেকে আরো অনেক যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৫৬ সালের সুয়েজ যুদ্ধ এবং ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। এসব যুদ্ধের ফল হয়েছে এই যে, ইসরায়েলিরা আরো প্যালেস্টাইনি ও আরবভূমি দখল করে নিয়েছে এবং আরো অনেক প্যালেস্টাইনিকে প্রতিবেশী আরব দেশগুলোয় পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে শরণার্থী শিবিরে, আর কখনো নিজ দেশে ফিরতে পারেনি তারা। ১৯৫৮ সালে ইয়াসির আরাফাত ‘ফাতাহ’ সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যালেস্টাইনি মুক্তিসংগ্রাম শুরু করেন। ছোট ছোট আরো কয়েকটি সংগঠন গড়ে ওঠে তখন। আরব লিগের উদ্যোগে বিভিন্ন প্যালেস্টাইনি সংগ্রামী সংগঠনের সমন্বয়ে ‘প্যালেস্টাইনি মুক্তি সংস্থা’ (প্যালেস্টিনিয়ান লিবারেশন অরগানাইজেশন, সংক্ষেপে পিএলও) গঠিত হয় ১৯৬৪ সালে। এতে প্যালেস্টাইনিদের ঐক্যবদ্ধ মুক্তিসংগ্রাম নতুন মাত্রা পায়। এভাবে প্যালেস্টাইনিরা ‘প্যালেস্টাইনি’ নামের একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র-জাতি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। প্যালেস্টাইনিদের শুধু যে ইসরায়েলিদের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তা-ই নয়, কখনো জর্দান, কখনো লেবাননের ফালাঞ্জিস্ট খ্রিষ্টানদের আক্রমণের শিকারও তাদের হতে হয়েছে। হাজার হাজার প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছেন, আর লাখ লাখ প্যালেস্টাইনি শরণার্থীকে এখান থেকে সেখানে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে, পোহাতে হয়েছে নিদারুণ দুর্ভোগ। অন্যদিকে অধিকৃত প্যালেস্টাইনি ইসরায়েলিরা একের পর এক ইহুদি বসতি স্থাপনের মাধ্যমে প্যালেস্টাইনিদের বাড়িঘর ও জমিজমা দখল করে নিতে থাকে। প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে প্যালেস্টাইনি শরণার্থীর 888sport free bet। ১৯৮৭ সালে অধিকৃত প্যালেস্টাইনে প্যালেস্টাইনিরা আন্দোলন (প্রথম ইন্তিফাদা) শুরু করে। ইসরায়েলি সেনাদের আগ্নেয়াস্ত্রের মোকাবিলায় প্যালেস্টাইনি তরুণ ও কিশোররা হাতে তুলে নেয় পাথর। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী এই প্রথম ইন্তিফাদায় হাজার হাজার প্যালেস্টাইনি হতাহত হয়, গ্রেফতার হয় অন্তত দশ হাজার। এই আন্দোলনের ফলে বিশ্বে প্যালেস্টাইনিদের পক্ষে জনমত সৃষ্টি হয়। ১৯৮৮ সালে পিএলওর পক্ষে স্বাধীন প্যালেস্টাইনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন ইয়াসির আরাফাত। ১৯৯৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পিএলও এবং ইসরায়েলের মধ্যে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে পক্ষদুটি পরস্পরের অস্তিত্ব স্বীকার করে নেয় এবং শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করে। এর ফলে পশ্চিম তীরের অধিকাংশ এলাকা এবং গাজা উপত্যকায় ‘প্যালেস্টাইনি জাতীয় কর্তৃপক্ষে’র শাসন কায়েম হয়। কিন্তু ইসরায়েল বারবার চুক্তি ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করে প্যালেস্টাইনিদের ওপর আগ্রাসন এবং নতুন নতুন ইহুদি বসতি স্থাপন অব্যাহত রাখে। ২০০০ সালে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের উদ্যোগে পিএলওপ্রধান ইয়াসির আরাফাত এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাকের মধ্যে ক্যাম্পডেভিড সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ-সম্মেলন ব্যর্থ হয়। এরপর আরো অনেক সমঝোতার চেষ্টা চলেছে; কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি। ১৯৮৯ সাল থেকে গাজার ওপর নানা রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাখে ইসরায়েল। ২০০১ সাল থেকে অদ্যাবধি সম্পূর্ণরূপে গাজা অবরোধ করে রাখা হয়েছে। ২০০৮ সালে ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে প্যালেস্টাইনিদের ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি হয়। ২০১২ এবং ২০১৪ সালেও ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকার হয় গাজা। এতে শিশু, 888sport promo code, বৃদ্ধসহ শত শত নিরস্ত্র মানুষ নিহত হয়। ধ্বংস হয় ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাসপাতাল, সবকিছু।
২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর পিএলও কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং প্যালেস্টাইনিদের ঐক্য ভেঙে যায়। কর্তৃত্ব নিয়ে প্যালেস্টাইনিদের প্রধান দুটি সংগঠন ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বন্দ্ব মাঝেমধ্যেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে। ফলে এখন অবস্থা হয়েছে এরকম যে, প্যালেস্টাইনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের নামে পশ্চিম তীর শাসন করছে ফাতাহ, আর গাজা শাসিত হচ্ছে হামাস দ্বারা। অসলো চুক্তির পর অনেক প্যালেস্টাইনি নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে আসে; কিন্তু লাখ লাখ প্যালেস্টাইনি এখনো থেকে গেছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ-আমেরিকায়। এরা গড়ে তুলেছে প্যালেস্টাইনি প্রবাসী (ডায়াস্পোরা) প্রজন্ম। এভাবে প্যালেস্টাইন বিভক্ত হয়ে পড়েছে মোটা দাগের তিনটি দলে – ইসরায়েলি শাসনের অধীন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বসবাসকারী প্যালেস্টাইনি, পশ্চিম তীর ও গাজায় বসবাসরত ‘স্বাধীন’ প্যালেস্টাইনি এবং বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী প্যালেস্টাইনি। এই তিন শ্রেণির প্যালেস্টাইনির মধ্যে মাতৃভূমি ও স্বাধীনতা প্রশ্নে সমভাবাপন্ন আবেগ-অনুভূতি থাকলেও বাস্তব জীবনাভিজ্ঞতা ভিন্ন রকম। ফলে এদের আশা-আকাক্সক্ষাও ভিন্ন রকম হয়ে উঠেছে। এসব কারণে প্যালেস্টাইনি জাতি পৃথিবীর ইতিহাসে একটি উদাহরণহীন অনন্য সত্তা হিসেবে পরিগণিত।
বলা বাহুল্য, প্যালেস্টাইনিদের দীর্ঘ ভোগান্তি, বাস্তুচ্যুতি, বঞ্চনা, যুদ্ধের অভিজ্ঞতা, অন্তর্দ্বন্দ্ব, সংগ্রাম, মৃত্যু, এ সবকিছুই প্রতিফলিত হয়েছে তাদের 888sport live footballে।
দুই
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষে এবং বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বিশেষ করে শিক্ষাসুবিধার সম্প্রসারণ এবং প্রিন্টিং প্রেসের প্রবর্তন প্যালেস্টাইনি 888sport live footballের উত্থানকে উদ্দীপিত করে। গোটা আরব দুনিয়া জুড়ে এ-সময় যে আরবীয় জাতীয়তাবাদের স্ফুরণ ঘটে, জায়নবাদের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে প্যালেস্টাইনে তা একটা বিশেষ ধরনের স্থানীয় রূপ পরিগ্রহ করে। জায়নবাদীরা তখন পাশ্চাত্য শক্তির মদদে প্যালেস্টাইনে একটা ইহুদি রাষ্ট্র গড়ার জন্য সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন চালাচ্ছিল।
ওসমানীয় শাসনের শেষদিকে, উদারবাদী সংস্কারের পর, প্যালেস্টাইনে অনেক সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়, যেমন : ১৯০৮ সালে হাইফা থেকে বের হয় আল কারমেল, ১৯১১-তে জাভা থেকে প্যালেস্টাইন এবং তারপরের বছর জেরুজালেম থেকে
আদ্-দস্তুর। জায়নবাদের বিপদ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য নিয়মিত 888sport live-নিবন্ধ ছাপা হতো এসব দৈনিকে। ১৯১৭ সালে ব্রিটিশদের আগমনের পর ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি তাদের সমর্থনজ্ঞাপক নীতি ও পদক্ষেপের প্রতিবাদ করত এ-পত্রিকাগুলো। প্যালেস্টাইনি লেখকরা 888sport app আরব দেশের সাময়িকীগুলোতেও নিয়মিত লিখতেন এবং সে-সময় আরবজুড়ে সাধারণভাবে আরবি ভাষা এবং 888sport live footballের যে-পুনর্জাগরণ চলছিল তাতে তাঁরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছিলেন। রওভি ইয়াসিন আল-খালিদী (১৮৬৪-১৯১৩), নাজিব নাসার (১৮৬৫-১৯৪৮), মুহাম্মদ ইস’আফ আন্-নাশ্শাশিবি (১৮৮২-১৯৪৮) এবং খলিল আস্-সাকাকিনী (১৮৭৮-১৯৫৩) হচ্ছেন এ-সময়কার সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সৃজনশীল গদ্যকার। তাঁরা পাঠককে উপহার দেন আধুনিকমনস্ক স্টাইল ও আইডিয়া। এভাবে এদের হাতেই প্যালেস্টাইনিদের নিজস্ব 888sport live footballের অভিযাত্রা শুরু হয়।
তারপর প্যালেস্টাইনি 888sport live football একটি স্পষ্ট বাঁক নেয় ১৯৪৮ সালের নাকবার পরে। নাকবা বলতে প্যালেস্টাইনিরা ইসরায়েল রাষ্ট্রের উত্থান এবং তার ফল হিসেবে প্যালেস্টাইনি সমাজের ধ্বংস ও ছিন্নভিন্ন হওয়াকে বোঝায়। গদ্য এবং পদ্য উভয় প্রকরণেই নির্বাসনের নিদারুণ মনস্তাপ প্রতিফলিত হতে থাকে। ১৯৪৮ সালের এই বিপর্যয় সাত লক্ষাধিক প্যালেস্টাইনিকে ভিটেছাড়া করে। অন্যদিকে ইসরায়েলের দখলদারিত্বে বসবাস করতে থাকে অনেক প্যালেস্টাইনি, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, ইসরায়েলি অস্তিত্বের প্রথম আঠারো বছর তাদের বাস করতে হয় সামরিক শাসনের অধীনে। তাদের এই বন্দিত্ব ও পরাধীনতার বোধের কথাও উঠে আসে বিকাশমান 888sport live footballের বিভিন্ন প্রকরণের মধ্য দিয়ে।
১৯৬৭ সালে ইসরায়েল নতুন করে প্যালেস্টাইনের পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকা, মিসরের সিনাই উপদ্বীপ এবং সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। এই নিষ্ঠুর সামরিক দখলদারিত্বের অভিজ্ঞতা প্যালেস্টাইনি লেখকদের অধিকতর বক্তব্যধর্মী 888sport live footballের দিকে ঠেলে দেয়। ‘প্রতিরোধ 888sport live football’ নামে নতুন একটি 888sport live footballিক ধারাও গতিমান হয়। এর মূল সুর ছিল একদিকে প্যালেস্টাইনি প্রতিরোধ সংগ্রামের যাথার্থ্য এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ও গৌরবগাথা, অন্যদিকে ইসরায়েল রাষ্ট্রকে প্রত্যাখ্যান ও তার বিরোধিতাকে উচ্চকিত করা। তবে প্রতিরোধ 888sport live footballের মূল মাধ্যম ছিল 888sport app download apk।
নাকবা-পরবর্তী লেখায় ইসরায়েল রাষ্ট্র ও তার সামরিক দখলদারিত্বের মধ্যে বসবাসরত এবং অন্যত্র নির্বাসিত ও শরণার্থী জীবনযাপনকারীসহ সকল শ্রেণির প্যালেস্টাইনির অভিজ্ঞতা উঠে এসেছে। এ-সময় আরেকটি বৈশিষ্ট্য স্পষ্টতর হচ্ছিল। সেটা হলো 888sport promo code লেখকদের উত্থান। 888sport promo code লেখকরা জাতীয় স্বাধীনতার সঙ্গে 888sport promo code-স্বাধীনতাকেও সম্পৃক্ত করেন। তাঁরা মূলত ছোটগল্প ও 888sport alternative linkের মাধ্যমেই সক্রিয় হন।
১৯৪৮ সালের নাকবা বা মহাবিপর্যয়ের বেশ আগে থেকেই প্যালেস্টাইনি 888sport live football প্যালেস্টাইনি সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। আরবি 888sport live footballের ধারাবাহিকতায় প্যালেস্টাইনি 888sport live footballেও 888sport app download apk মানোত্তীর্ণ প্রকরণ হিসেবে প্রাধান্য বিস্তার করে থাকে বহুকাল। সে-তুলনায় ছোটগল্প ও 888sport alternative linkের উদ্ভব ঘটেছে অনেক দেরিতে। তবে মহাবিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্যালেস্টাইনিরা যে মহাদুর্ভোগ ও ক্ষতির জগতে পতিত হয়, তার ফলে ছোটগল্প ও 888sport alternative linkের জন্য প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন জীবনের বাস্তবতা আগের চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় সুলভ ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে ছোটগল্প ও 888sport alternative link প্যালেস্টাইনিদের 888sport sign up bonus এবং আত্মপরিচয়কে তুলে ধরার জন্য দ্রুত সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যমে পরিণত হয়। প্রকৃতপক্ষেই প্যালেস্টাইনি ইতিহাসের ধারাবাহিকতার বিচ্ছিন্নতা এবং পরিণতিস্বরূপ জাতীয় উত্তরাধিকার হারানোর কারণে প্যালেস্টাইনি ছোটগল্প ও 888sport alternative link আধুনিক সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নতার গভীর বোধকে ধারণ করেছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে প্যালেস্টাইনি 888sport alternative link এবং গল্প888sport live footballের মূল লক্ষ্য ছিল ‘নিপীড়িতদের 888sport live football’কে উপস্থাপন করার মাধ্যমে হতাশদের মনে আশার সঞ্চার করা। এই বৈশিষ্ট্য তিনটি ধারায় প্রবহমান হয়। প্রথমত, এতে হৃত বাসভূমির অতি-সৌন্দর্যায়ন এবং ‘পুরনো প্যালেস্টাইন’কে পৃথিবীর অবিকল্প স্বর্গ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, আর পবিত্র মাতৃভূমির ভাবমর্যাদা উদ্ধার করার মাধ্যমে প্যালেস্টাইনিদের মুক্তিসংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা দেখা যায়। যেমন, কথা888sport live chatী জাবরা খ্রিষ্ট এবং মুসাকে প্যালেস্টাইনি মানুষ হিসেবে চিত্রিত করেছেন, যা তিনি নিজেও। কানাফানি ‘মানবীয় ইচ্ছার সৌন্দর্য’ এবং ‘সুপারম্যানের মিথ’ থেকে সেঁচে বের করেছেন খাঁটি প্যালেস্টাইনকে। দ্বিতীয় মাত্রাটি উদ্ভূত হয় প্রথমটি থেকে, সেটা হলো – আসল আশীর্বাদপুষ্ট ‘পুরনো প্যালেস্টাইন’ তার পবিত্রতাসমেত ফিরে আসবে ভবিষ্যতে এবং অতীতের মতোই সুখী ও সমৃদ্ধ হবে, এই স্বপ্নের ব্যাপ্তি প্রসারিত হয় অনাগত ভবিষ্যতের মধ্যে। তৃতীয় মাত্রাটি ওপরের দুটি বিষয়ের যোগফল। এর প্রকাশ দেশত্যাগ এবং আশ্রয়সন্ধানের গুরুত্বের প্রেক্ষাপটে – এটা দারুণ ক্লেশের একটা অসুস্থ সময় যা প্যালেস্টাইনিদের তেজস্বিতার পরীক্ষা নেয় এবং তারপর ঘোষণা করে তার আসন্ন বিজয়। এই পুরো ধারণাটি, যে কেউ বুঝতে পারবেন, সুস্পষ্টরূপে শুরু হয় পতনের সময়। তারপর সময় আসে ক্ষতি এবং ভোগান্তির, যা শেষ পর্যন্ত পরিণতি পায় নিষ্কৃতি এবং নির্বাসন ও বিচ্ছিন্নতার মোকাবিলার কালে। নির্বাসিত লেখকদের যখন অতিরিক্ত ‘ধর্মীয় আশাবাদে’ আস্থাশীল হতে দেখা যায়, যা তাদের অতীত এবং বর্তমানকে একসূত্রে গাঁথতে সাহায্য করে, তখন ইসরায়েলি দখলদারিত্বের মধ্যে বসবাসকারীরা, যেমন এমিলি হাবিবি, পছন্দ করেন রূঢ় ও কুৎসিত ব্যঙ্গ, যা অতীতের জন্য কাতর কিন্তু একইসঙ্গে ফিসফিস করে বলে – অতীত আর ফিরছে না।
প্যালেস্টাইনি 888sport live footballে ইতিহাস, রাজনীতি এবং 888sport live football এমনভাবে পরস্পর জড়াজড়ি করে থাকে যে, তাদের আলাদা করা যায় না। এমনিতে, সাধারণভাবে আরবি ছোটগল্প ও 888sport alternative link-নিপীড়ক শাসকদের আইন ভাঙার ইতিহাস বহন করে, যাদের পতন সম্প্রতি বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে। সেন্সরশিপ এড়াতে লেখকরা প্রায়শই রূপক এবং বাস্তবতা ও কল্পনার মিশেলের আশ্রয় নিয়েছেন, যেমন, উদাহরণস্বরূপ নাগিব মাহফুজের কয়েকটি 888sport alternative link। মানুষের জীবনের ওপর সরকারের প্রবল প্রভাবকে শনাক্ত করার এই প্রবণতাকে কখনো কখনো একটা বাধা হিসেবে গণ্য করা হয়, যা আরব লেখকদের অধিকতর কল্পনা এবং 888sport live footballিক ধরনের লেখার মধ্যে আটকে রাখে। কিন্তু প্যালেস্টাইনি লেখকরা মনে করেন, তাঁদের সামনে কোনো বিকল্প নেই, এবং তাঁরা এই সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে সমর্থ হয়েছেন, বাস্তবতাকে তাঁরা সকল রূঢ়তাসমেতই উপস্থাপন করেন।
বাস্তুচ্যুতি, নির্বাসন এবং পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্নতা, তবে টিকে থাকাও, শেষ পর্যন্ত, প্যালেস্টাইনি গল্পের কেন্দ্রীয় বিষয়। ১৯৪৮ সালে নবপ্রতিষ্ঠিত ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল সাত লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি শরণার্থীকে তাদের স্বদেশভূমিতে প্রত্যাবর্তনের অধিকার দিতে অস্বীকার করেছে। বর্তমানে প্যালেস্টাইনি শরণার্থীর 888sport free bet আনুমানিক ষাট লাখ, এর মধ্যে চোদ্দো লাখের বাস আটান্নটি স্বীকৃত শরণার্থী শিবিরে, এগুলো অবস্থিত জর্দান, লেবানন, সিরিয়া, গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে। অর্ধসহস্রাধিক প্যালেস্টাইনি গ্রামকে শারীরিকভাবেই নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়েছে এবং আর যেসব প্যালেস্টাইনি কোনোরকমে থেকে যেতে পেরেছে এখন যাকে বলা হচ্ছে ইসরায়েল, সেখানে তারা (বর্তমানে প্রায় পনেরো লাখ) টিকে আছে বৈষম্য এবং মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে। প্যালেস্টাইনি কথা888sport live chatীরা তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অবিচারের সাক্ষ্য সাফল্যের সঙ্গে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন তাঁদের গল্প ও 888sport alternative linkে – তাঁরা এটা করে চলেছেন বিতর্ক, বিমূর্তন এবং আদর্শবাদের মধ্যে নিমজ্জিত না হয়ে।
প্যালেস্টাইনি 888sport live footballে মুখে মুখে গল্প বলার প্রথা দীর্ঘ অতীত থেকে প্রচলিত। কিন্তু আধুনিক কথা888sport live football অর্থাৎ ছোটগল্প ও 888sport alternative linkের চর্চা মূলত ১৯৪৮ সালের নাকবা-পরবর্তী অর্থাৎ বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক ও তার পরের ঘটনা। তবে খুব দ্রুত, পরবর্তী শতক (একবিংশ শতাব্দী) শুরুর আগেই, প্যালেস্টাইনি কথা888sport live football 888sport live chatমানে উত্তীর্ণ হয়। গত ষাট-সত্তর বছরে বহু
ছোটগল্প-লেখক ও ঔপন্যাসিকের উত্থান ঘটেছে, তাঁদের বিশ্বমানসম্পন্ন রচনার 888sport free betও অনেক। এঁদের রচনায় সংগত কারণেই বাস্তববাদী ধারার প্রাধান্য থাকলেও 888sport live footballের আঙ্গিক ও বিষয়চেতনার বিচিত্রমাত্রিক ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
কোনো প্যালেস্টাইনি নিজেকে ‘একা’ ভাবে না। তাদের মধ্যে ‘আমি’ নেই, ‘আমরা’ই তাদের অস্তিত্বের প্রধান স্মারক। প্যালেস্টাইনি লেখকরাও এর ব্যতিক্রম নন। তাঁরা আজ পর্যন্ত, তাঁদের দুঃখকে বহুবাচনিক উত্তমপুরুষে গঠন করেন। কারণ, প্যালেস্টাইনি জনগণের একটা সমষ্টিগত আখ্যান রয়েছে – সেটা এমন একটা গল্প যার শেকড় বিস্তৃত ইতিহাসের মধ্যে এবং সাধারণত তার শুরু ১৯১৭ সালের বালফুর ঘোষণা অর্থাৎ ঐতিহাসিক প্যালেস্টাইনি ইহুদিদের জন্য বাসভূমি প্রতিষ্ঠার ইয়োরোপীয় অঙ্গীকার থেকে। এই জাতির মানবিক অর্থে রয়েছে গল্পের ভা-ার – নির্বাসন, প্রতিরোধ এবং বাসভূমির থিমের মধ্য দিয়ে এগোনো বিচিত্র অভিযান ও গন্তব্যের গল্পের সম্ভার। এসব গল্প, যা অনবরত পুনরাবিষ্কৃত হয়ে চলেছে এবং যা এখনো ঘটমান, তার অবস্থান ‘সাধারণ মানবাধিকারে’র একেবারে কেন্দ্রস্থলে, যা থেকে বঞ্চিত প্যালেস্টাইনি লেখকরা। এভাবে তাঁরা রূপান্তরিত হন ধ্বস্ত মানব অস্তিত্বে। প্যালেস্টাইনি লেখকরা তাই কেবলই বর্ণনা করে চলেন নিজেদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সেই সূত্রে জাতিগত ধ্বংসের গল্প।
আধুনিক প্যালেস্টাইনি ছোটগল্প ও 888sport alternative link রচনায় জাবরা, ইবরাহিম জাবরা (১৯১৯-৯৪), এমিলি হাবিবি (১৯২২-৯৬) এবং গাসান কানাফানির (১৯৩৬-৭২) ভূমিকা অবি888sport app download for androidীয়। সন্দেহ নেই, কানাফানি বিংশ শতাব্দীর আরবি ছোটগল্পের প্রধান পুরুষদের অন্যতম। তাঁর সঙ্গে তুলনীয় প্যালেস্টাইনি ছোটগল্প লেখিকা সামিরা আজম (১৯২৭-৬৭)। তাঁর ছোটগল্প চর্চার শুরু প্যালেস্টাইনে এবং অপ্রত্যাশিত সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। তৃতীয় প্রধান ব্যক্তিত্ব, এমিলি হাবিবি, প্যালেস্টাইনি-আরব কথা888sport live footballের অগ্রনায়কদের শেষ পুরুষ। তাঁর রচনায় ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে আরবদের পরাজয়ের সময়, নিজভূমে ‘শরণার্থী’ হওয়া প্যালেস্টাইনিদের অভিজ্ঞতা বিশেষ প্রাধান্য পেয়েছে।
বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে ১৯৮২-তে পিএলওর বৈরুত ছাড়ার পূর্ব পর্যন্ত কালপর্যায়ে প্যালেস্টাইনি লেখালেখি যেসব রূপান্তরের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে তাকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা চলে। প্রথম পর্যায়ে, ১৯৪৮-এর নাকবা বা মহাবিপর্যয় ও গণদেশান্তর পর্যন্ত কাল পরিসরে, প্যালেস্টাইনি লেখক ও বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় তাঁদের আলোকিত চেতনার দ্বারা সমাজকে মুক্ত করতে চেয়েছেন অজ্ঞতা, নিয়তিবাদিতা এবং বিচ্ছিন্নতা থেকে, উৎসাহিত করেছেন আধুনিকায়নকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, দেশত্যাগের বছর থেকে পিএলওর জন্ম পর্যন্ত কালে, জাবরা, কানাফানি, সামিরা আজমের মতো লেখকরা প্যালেস্টাইনি জনগণকে শিক্ষার কথা বলেছেন এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের সঙ্গে প্যালেস্টাইনিদের সাংস্কৃতিক সংঘর্ষের তাৎপর্যকে গভীরভাবে অধ্যয়ন ও তার সম্পর্কে তাদের সচেতন করে তুলতে চেয়েছেন। আর তৃতীয় পর্যায়ে, সশস্ত্র সংঘর্ষের সময়, এটা সম্পূর্ণরূপে জড়িয়ে পড়ে মুক্তিতন্ত্র, খাঁটি আদর্শবাদী এবং বিমূর্ত মূল্যবোধের সঙ্গে : সে হলো ‘ফিদাই’ বা মুক্তিযোদ্ধা; রাইফেল; বিজয়। প্যালেস্টাইনি 888sport live football, সশস্ত্র সংগ্রামের আগে, প্যালেস্টাইনি প্রত্যাবর্তনকে একটা রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করত। এর বিপরীতে, সশস্ত্র সংগ্রাম-পরবর্তী 888sport live football, সংস্কৃতিকে মৌলিকভাবেই পাশে ঠেলে দিয়েছে এবং আবেগপ্রবণ আশাবাদী স্নোগানকে আলিঙ্গন করেছে।
১৯৮৯ এবং ২০০২-এর প্রথম ও দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পরে, প্যালেস্টাইনিরা ভিন্ন রকম 888sport live football রচনা শুরু করেন – জীবন্ত বাস্তবতাকে প্রস্থানবিন্দু হিসেবে গ্রহণ এবং ‘স্বপ্ন’ ও ‘বাস্তবতা’কে পৃথকভাবে শনাক্ত করার মধ্য দিয়ে। এই 888sport live football গড়ে ওঠে ভিন্ন ভিন্ন প্রজন্মের হাতে, আর এর বৈশিষ্ট্যসমূহ অধিকতর সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে তথাকথিত ‘শান্তি প্রক্রিয়া’র করুণ ব্যর্থতার পর। এই নতুন পরিস্থিতিকে ভাষা দান করেন মাহমুদ দারবিশ তাঁর 888sport app download apk (দিওয়ান) ‘স্টেট অব সিজ ২০০২’-এ। এতে কবি অবরোধ এবং সংকীর্ণ বন্দিশালায় যাপিত জীবনের একটি দিনের বর্ণনা দিয়েছেন। মেধাবী গল্পকার মাহমুদ শুক্কাইরও একই কাজ করেছেন। তিনি আধুনিক প্যালেস্টাইনি গল্প888sport live footballের অন্যতম প্রধান পুরুষ। তিনি প্রতিদিনকার স্বজনবিচ্ছেদের যন্ত্রণাকে ভাষাতাত্ত্বিক অভিজ্ঞতায় পরিণত করেন, যা 888sport app download apk এবং গদ্য উভয়কেই স্বীকার এবং সূত্রবদ্ধ করে। জেরুজালেমের পরিচয়পত্রধারী প্যালেস্টাইনি হিসেবে শুক্কাইরকে অবশ্য প্রতিদিনই ইসরায়েলি দেয়ালের মোকাবিলা করতে হয়, যেটা তার সমাজকে সোজা দুভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে। এই যে অসঙ্গতি এবং অযৌক্তিতার সম্মুখীন তাকে প্রতিদিন হতে হয়, তা-ই সম্ভবত তাঁকে তাঁর প্রথম দিককার রচনায় প্রতিফলিত মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তাঁর সাম্প্রতিক লেখালেখির বিপরীতার্থকতা, ঠাট্টা-বিদ্রƒপ এবং অবাস্তবতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। একই ধারার দুজন তরুণ গল্পকার ও ঔপন্যাসিক আদানিয়া শিবলি, এবং ইসরায়েলি নেসেটের সদস্য আজমি বিশারা, যার বিখ্যাত দুটি 888sport alternative link দ্য চেকপয়েন্ট এবং লাভ ইন দ্য রিজিয়ন অব শ্যাডোজ। সম্ভবত দ্য চেকপয়েন্ট একটা প্রতিনিধিস্থানীয় রচনা, যেখানে প্যালেস্টাইনিদের দৈনন্দিন জীবন সবচেয়ে বোধগম্য প্রয়াসে চিত্রিত হয়েছে, যে-জীবনের অর্থ হলো অনিঃশেষ, আঁকাবাঁকা, একের পর এক চেকপয়েন্টের মধ্য দিয়ে পথ বের করার চিরকালীন সংগ্রাম।
এসব প্যালেস্টাইনি গল্প এবং 888sport alternative linkকে তিনটি বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত করা যায় : এক, প্রতিনিধি পর্যায়ের জীবনকে, তা যেরকম যাপিত, অনাবৃত এবং নিরলংকার, ঠিক সেভাবে, তার পূর্ণ অনুপুঙ্খসহ বর্ণনা করার কাজে সকল প্রয়াস সীমাবদ্ধ রাখা, যা কোনো আশাবাদী বা নৈরাশ্যবাদী আদর্শ এবং ইচ্ছা-তাড়িত চিন্তা দ্বারা প্রাণিত নয়; দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হলো, বিবর্ণ দৈনন্দিনতার মধ্যে শেকড়বদ্ধ হয়ে থাকা, এ-দৈনন্দিনতা তাদের চরিত্রসমূহের জীবনের ভেতর ও বাইরের, যা প্রায় দুঃস্বপ্নের মতো, যার সঙ্গে কোনো
সংযোগ-সূত্র নেই কোনো নিকট অথবা দূর-ভবিষ্যতের; এবং তৃতীয়ত, যে কোনো নিশ্চয়তার বিলোপ ঘটিয়ে তার জায়গায় প্রতিস্থাপন করা সন্দেহ এবং সম্ভাবনা ও আকাক্সক্ষাহীন প্রতীক্ষাকে। আর একেবারে সাম্প্রতিক লেখকদের লেখায় ‘প্যালেস্টাইনি জাতীয় কর্তৃপক্ষে’র অধীনস্থ পশ্চিম তীর ও গাজা এলাকায় বসবাসরত প্যালেস্টাইনিদের পরিস্থিতি উঠে আসছে যা ‘প্রতিবিম্বিত করে অবরুদ্ধ প্যালেস্টাইনি অস্তিত্বের বহুমুখী করুণ দিগ¦লয়কে : বঞ্চনা, অভিভাবকহীনতার অনুভূতি, ন্যায়বিচারের অনুপস্থিতি, ন্যূনতম, ছোট ছোট আকাক্সক্ষা থেকেও বঞ্চনা, সূক্ষ্ম দৈনন্দিন বিষয়গুলোকেও বড় বড় স্বপ্নে পরিণত করা…।’ এসব লেখার সবগুলোতেই ‘খোলা মাঠে দরিদ্র শিশু’র কথা আছে, কখনো কখনো প্রবোধ খোঁজার আশায়। এ যেন এমন একটা অসুস্থ শিশু, যে তার জীবনের ঝুঁকিকে লুকিয়ে রেখেছে অভিজ্ঞ দিগি¦জয়ী বীরের দৃঢ়সংকল্প নিয়ে, কালব্যাপী – ১৯৪৮-এর ট্র্যাজেডি থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত।
অভ্যন্তরীণ প্যালেস্টাইনিদের 888sport live football বর্তমানে একটা সন্ধিক্ষণের মধ্য দিয়ে চলেছে এবং এর বৈশিষ্ট্য পুরোপুরি পরিস্ফুট হয়নি। কিন্তু দুটো বিষয় – কাল এবং স্থান – এর প্রাণকেন্দ্রে জায়গা করে নিয়েছে এবং চূড়ান্ত ফলোৎপাদনে এ দুটি বিষয় দ্ব্যর্থহীন ভূমিকা পালন করবে। ইসরায়েলি অধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ এলাকা, যা ১৯৪৮-অঞ্চল হিসেবেও পরিচিত, হচ্ছে সেই স্থান যেখানে প্যালেস্টাইনিরা প্রথম থেকে এবং সবসময় বসবাস করে এসেছে, স্পর্শনীয় ও দর্শনযোগ্যভাবে, এই সন্ধিক্ষণের বৈশিষ্ট্যগুলো আবশ্যিকভাবে প্রকাশিত হয় নতুন 888sport live footballে বা তরুণ লেখকদের লেখায়, যেমন কথা888sport live chatী আদানিয়া শিবলি, আজমি বিশারা,
আলা হেলিহেল রাশাদ, হিশাম নাফ্ফা এবং রাজা বাকরিয়্যা। এসব লেখকের লেখায় কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় : সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির ওপর বিশেষ মনোযোগ প্রদান; লেখাকে সাক্ষ্য করে তোলা; যন্ত্রণা এবং ফাঁদে আটকা পড়ার অনুভূতির তীব্রতা হ্রাস করা; পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নবায়নের জন্যে নতুন ও রীতিবহির্ভূত পরিসরে প্রবেশ করা; সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রথাকে চ্যালেঞ্জ করা, যার উদাহরণ পাওয়া যাবে এ-প্রজন্মের যৌনতাগন্ধী লেখাগুলোয়; এবং প্রকৃত অবস্থা, অর্থাৎ আসল বাস্তবতা উপস্থাপনায় সত্যপরায়ণতা।
সম্ভবত এসব উপাদান এই বাস্তবতার লক্ষণ যে, সমাজের সঙ্গে এই নতুন 888sport live footballের সম্পর্ক বিহ্বলতা ও ভানমুক্ত, কিন্তু দ্বৈধতা ও আত্মবিরোধপূর্ণ। একদিকে রয়েছে সমাজের সঙ্গে আপসরফা, অন্যদিকে তাকে সমালোচনা করার অসাধারণ সামর্থ্যও বিদ্যমান।
এই নতুন 888sport live footballের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এতে প্রকৃত অবস্থার উপস্থাপনে সত্যনিষ্ঠার ক্ষেত্রে নতুন 888sport live footballের ভাষায় পরোক্ষ-উল্লেখের প্রাচুর্য লক্ষণীয়, কিন্তু ভাষা অবশ্যই অলংকারহীন ও সোজাসাপ্টা, কারণ তাকে একাই সামর্থ্যরে সঙ্গে প্রকাশ করতে হয় সেই পৃথিবীকে যা হিংস্র, উৎপীড়ক, প্রাণবন্ত। অন্য যে-কোনো প্রকাশভঙ্গি বাস্তবতাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করবে। নতুন 888sport live footballের ভাষা আরবীয় ভাষাবিদ্যাগত অলংকারশাস্ত্রশাসিত বিশুদ্ধবাদী ভাষার থেকে দূরত্ব বজায় রাখে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছোটগল্প লিখছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে স্বীকৃতি অর্জন করেছেন জিয়াদ কাদাশ, সালেহ মাশারক্কাহ, জামাল ক্কাসমি এবং ইমান আল-বাসির। জিয়াদ কাদাশ তাঁর গল্পসংকলন অ্যা ফাউল অ্যাপয়েন্টমেন্ট উইথ দ্য স্টর্মে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের আলোকে প্যালেস্টাইনি ব্যক্তি, বিশেষত তরুণদের বিচ্ছিন্নতাবোধের সমস্যাকে তুলে ধরেছেন। এভাবে তিনি তাঁর চারপাশের সমাজের ওইসব লোক, যারা প্রান্তিকায়িত এবং সংঘটমান পরিবর্তনকে হজম করতে অপারগ তাদের সম্পর্কে যথেষ্ট বিদ্রƒপাত্মক ভঙ্গিতে লেখেন। তার ফল হিসেবে তাঁর চরিত্ররা দারিদ্র্য ও কর্মসংস্থানহীনতার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগাকুল, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে পলায়নপর, তারা ক্ষুব্ধ বিশেষ করে প্যালেস্টাইনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ (পিএনএ) এবং তার লোকজনদের আচরণে। তাঁর চরিত্ররা সমান ক্ষুব্ধ ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিভিন্ন বিষয়ে, যার জন্য, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, শান্তিপ্রক্রিয়া পরিণতি লাভে ব্যর্থ হচ্ছে।
কাদাশ সমালোচনার দৃষ্টিতে প্রেম ও যৌন আচরণগত বিষয়ের ওপরেও আলোকপাত করেছেন। এটা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় যখন তিনি রামাল্লা শহরকে প্রেক্ষাপট করে গল্প লেখেন। মনে হবে এসব প্রেম ও যৌন সংসর্গের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক নিপীড়ন সামাজিক ও মনোবৈজ্ঞানিক নির্গমন-পথ খুঁজে পায়। নিজ সত্তা সম্পর্কে তন্ময়তাবোধ তাঁর লেখায় অধিকতর সততার সঙ্গে প্রকাশ পায় তাঁর বিশেষ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পাঠককে প্ররোচিত করার চেষ্টার চেয়ে – তাঁর অবস্থান ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিরুদ্ধে – কিন্তু কাদাশ তাঁর লেখায় একজন তরুণ প্যালেস্টাইনি লেখক হিসেবে কোনো নতুন উপায় বাতলে দিতেও ব্যর্থ হয়েছেন।
সালেহ মাশারক্কাহ যে-কোনো বিশেষ ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে তার বাস্তবতাকে বিবেচনা করেন। তিনি রাখালিয়া কাব্য থেকে চরিত্র তুলে আনেন এবং অতীতের মূকনাট্যকে বি888sport app download for android থেকে উদ্ধার করে এনে তার বর্ণনা দেন, এই অতীত সেই অতীত যা তার বর্তমানকে যাচাই করার কাজে ভূমিকা রাখে। এ-ধরনের অতীতচারিতা একধরনের পলায়নপরতা, বিশেষভাবে লেখক যখন তাঁর বিষয়ের সম্মুখীন হন বস্তুগত প্রেক্ষাপট থেকে, জিয়াদ কাদাশের কাজের মধ্যে যে-অন্তর্মুখী বৈশিষ্ট্য রয়েছে তার অভাব এখানে পরিলক্ষিত হয়।
জামাল ক্কাসমির গল্পগুলোতে, ইন্তিফাদা নিয়ে ‘অ্যাশজান’ গল্প লিখেছেন তিনি, অন্যসব তরুণ লেখকের চেয়ে অন্তর্মুখীনতার প্রতি অধিকতর ঝোঁক দেখা যায়, সেটা বিদ্রƒপ, অলীক এবং পুরাণের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। তাঁর রচনায় 888sport promo code উপস্থিত সবসময়, কিন্তু তাঁর ভাষাগত ঔদ্ধত্য এবং প্রথা ভাঙার প্রবণতা এতটাই উগ্রতা অর্জন করে যে, তাঁর কিছু কিছু রচনা প্রকাশ করাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। একইসঙ্গে তাঁর লেখায় ‘অন্য’ অর্থাৎ ইসরায়েলিদের সম্পর্কে একটা মানবীয় প্রবণতা লক্ষ করা যায়, যাকে ক্কাসমি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে অংকন করেন। ক্কাসমি ছোটগল্পে একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরীক্ষা করার চেষ্টাও করেছেন – তিনি সাধারণ প্যালেস্টাইনি ব্যক্তিমানুষকে চিত্রিত করেন তার সব ত্রুটি-বিচ্যুতি, হতাশা ও আকাক্সক্ষা সমেত, এভাবে প্যালেস্টাইনিদের যোদ্ধা ও বিদ্রোহী হিসেবে চিত্রিত করার ঐতিহ্যবাহী রীতি থেকে সরে আসেন তিনি। অন্য কথায়, তাঁর রচনায়, ক্কাসমি প্যালেস্টাইনি এবং ইসরায়েলিকে একইভাবে মানবতার দৃষ্টিতে অবলোকন করেন।
তরুণ 888sport promo code-লেখকদের মধ্যে নিজ যোগ্যতায় নাম কুড়িয়েছেন যিনি, তিনি হলেন ইমান আল-বাসির। অসলো চুক্তির আগে তিনি জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গল্প লিখেছেন, তা সত্ত্বেও তাতে মানবিক উপাদান উপস্থিত থেকেছে সবসময়। তিনি আবর্তন করেছেন রোমান্টিক, সামাজিক সমালোচনা এবং মনোবিশ্লেষণের মধ্যে – এ সবকিছুই উপস্থাপিত হয়েছে দখলদারিত্বের অধীনে ভোগান্তির প্রেক্ষাপটে। অসলোর পরে আল-বাসির জাসাদ মিন বাখুর (বডি অব ইনসেন্স) নামে একটা গল্পগ্রন্থ প্রকাশ করেন, এতে তিনি অধিকতর মানবিক পথ অনুসরণ করেন সামাজিক অধিক্ষেত্রের ওপর গুরুত্ব দিয়ে, আধুনিকতাবাদী ধারণার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, বিশেষ করে 888sport promo code এবং লিঙ্গ-সংশ্লিষ্ট সমস্যার ক্ষেত্রে।
প্যালেস্টাইনি সমাজের ওপর শান্তি প্রক্রিয়ার সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কার্যকর প্রভাব রয়েছে। রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পিএনএর অব্যবস্থাপনার সমস্যা এবং সম্পদ ও দারিদ্র্য, 888sport promo codeস্বাধীনতা, কর্মসংস্থান, ভোগ্যপণ্য ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক ও আদর্শিক দ্বন্দ্বের মতো বিষয় – এ সবকিছুই তরুণ লেখকদের ওপর চিহ্ন এঁকে যায়। সে-কারণে ‘প্রতিরোধ’ নিয়ে লেখালেখি কমে যাচ্ছে এবং ‘অন্য’র ধারণা অধিকতর বস্তুগত হয়ে উঠছে, এভাবে দখলদার এবং শান্তি ও সহাবস্থানে বিশ্বাসী সাধারণ ইসরায়েলির মধ্যে পার্থক্য নির্মাণ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, এই তরুণ লেখকরা সামাজিক ও 888sport live footballিক প্রান্তিকায়ন-উদ্ভূত নতুন বাস্তবতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রতি প্রসন্ন মুহূর্ত খুঁজে পাচ্ছেন, এটা সৃষ্টি হচ্ছে সরকারি নীতির কারণে।
তিন
এতক্ষণ যে-আলোচনা করা হলো, তা সহজবোধ্য করতে কয়েকটি বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ছোটগল্পের আশ্রয় নেওয়া যায়। এসব গল্পকারের মধ্যে ইসরায়েল, পশ্চিম তীর ও গাজা এবং বিদেশে অবস্থানরতরা যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন প্রবীণ এবং নবীন লেখকরাও।
‘নীল কবচ এবং জুবাইনার প্রত্যাবর্তন’ গল্পে এমিলি হাবিবি একজন নির্বাসিত প্যালেস্টাইনি 888sport promo codeর নিজ গ্রামে বেড়াতে আসার ছবি এঁকেছেন। কৈশোরে সে হারিয়ে গিয়েছিল। তার মায়ের মতো গোটা গ্রাম তার জন্যে শোকাভিভূত। গ্রামের কুয়াটাও তার শোকে শুকিয়ে গিয়েছিল। সে পরিণত হয়েছিল রূপকথার নায়িকায়। বাস্তবেও রূপকথার নায়িকার মতো তাকে খুঁজে পায় এক ধনাঢ্য তরুণ। তারা সুখে জীবনযাপন করতে থাকে; কিন্তু বিধবা মা ও গ্রামের কথা ভুলতে পারে না সে। প্রৌঢ়া বয়সে সুযোগ পায় গ্রামে বেড়াতে আসার। তার আগমনে আবার গ্রামের কুয়ায় পানি আসে। গ্রামবাসী বুঝতে পারে ফিরে আসছে তাদের মেয়ে। মেয়েকে ফিরে পেয়ে প্রায়ান্ধ মা তার চোখের দৃষ্টি ও শরীরের শক্তি ফিরে পায়। রূপক, প্রতীক, উপকথা ও বাস্তবতার অন্তর্বয়নে প্যালেস্টাইনির অতীত ও বর্তমানের মধ্যকার সম্পর্ক এবং পার্থক্যকে তুলে ধরেছেন লেখক অত্যন্ত আন্তরিকতা দিয়ে। অত্যন্ত সংবদ্ধ ও পরিকল্পিতভাবে লেখা এই গল্প।
‘মরদেছাইয়ের গোঁফ ও তার স্ত্রীর বিড়াল’ এবং ‘শাকিরার ছবি’ গল্পদুটিতে ব্যঙ্গ-রসাত্মক ভঙ্গিতে পশ্চিম তীর ও গাজা এবং অধিকৃত এলাকায় বসবাসরত সাধারণ প্যালেস্টাইনিদের দৈনন্দিন জীবনাভিজ্ঞতাকে রূপ দান করেছেন মাহমুদ শুক্কাইর। যদিও শুক্কাইর তাঁর প্যালেস্টাইনি ও ইসরায়েলি চরিত্রদের সম্বন্ধে বিস্তৃত মানবিক বর্ণনা দেন, তবু গল্পগুলো মূলত বিদ্রƒপাত্মক। আরব এবং ইসরায়েলিদের মধ্যকার লেনদেনের মধ্য দিয়ে এই গল্পদুটিতে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে যে, তাদের মধ্যকার সম্পর্ক হচ্ছে বিজেতা ও বিজিতের। দখলদারিত্বের অধীনে বাস করার যে-দৈনন্দিন কষ্ট এবং অপমান তা ছাড়াও শুক্কাইর আলোকপাত করেন সেসব সমস্যার ওপর যা তাঁর চরিত্রদের মোকাবিলা করতে হয় প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত, সেগুলো ব্যক্তিগত এবং সামাজিক দুর্বলতা ও ত্রুটির ফল, এগুলোকে মূর্ত করতে গিয়ে তিনি অতিরঞ্জন এবং প্রহসনের আশ্রয় নেন কৌতুক ও বিদ্রƒপ করার জন্য, এমনকি সন্ত্রাসের ক্ষেত্রেও। ‘মরদেছাইয়ের গোঁফ ও তার স্ত্রীর বিড়াল’ গল্পে সাবেক ইসরায়েলি সেনা মরদেছাই তার বিশাল গোঁফ নিয়ে বিপাকে পড়ে। কারণ সেটা তার স্ত্রীর বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে তার স্ত্রীর প্রিয় বিড়ালগুলো তাকে যন্ত্রণা দেয়। স্ত্রীর দাবি মরদেছাই তার গোঁফ কামিয়ে ফেলুক, আর মরদেছাই চায় তার স্ত্রী বিড়ালগুলোকে তাড়িয়ে দিক; কিন্তু উভয় পক্ষই অনড়। এ-অবস্থা থেকে রেহাই পেতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ নেয় মরদেছাই। সেখানে গিয়েও বিপত্তি। চেকপয়েন্টে অপেক্ষমাণ প্যালেস্টাইনিদের ওপর সে কঠোর আচরণ করতে থাকে। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে তার গোঁফ নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতে থাকে প্যালেস্টাইনিরা। ক্রমে সে নরম হয়। প্যালেস্টাইনিদের সহজে চেকপয়েন্ট পার হতে দেয়। তখন প্যালেস্টাইনিরা তাকে নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি কমিয়ে দেয়। এরপর মরদেছাই যখন ছুটিতে বাড়ি ফেরে, তখন তার স্ত্রী খুশি হয়ে তার বিড়ালগুলোকে বিদায় করে দেয়। এভাবে তাদের দাম্পত্য জীবনে শান্তি ফিরে আসে। এই গল্পের মাধ্যমে ইসরায়েল ও প্যালেস্টাইনিদের দীর্ঘ দ্বন্দ্বের
নিরসনের একটা প্রকল্পনা উপস্থিত করা হয়। ‘শাকিরার ছবি’তে ইসরায়েল অধিকৃত এলাকার প্যালেস্টাইনিদের দুর্দশার ছবি অঙ্কিত হয়েছে।
পশ্চিম তীর ও গাজায় প্যালেস্টাইনিদের জীবন যে কতটা অনিশ্চিত তার করুণ ছবি ফুটে উঠেছে নাজমা খলিল-হাবিবের ‘নিহালের সোনালি কেশ ও বন্য ফুল’ গল্পে। স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীরা তাদের খোশগল্পের মাঝখানে ইসরায়েলি বিমান হামলার শিকার হয়। তাদের কৈশোরসুলভ আলাপ-আলোচনার মধ্যে পরিস্ফুট ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কে তাদের যতসব আশা-আকাক্সক্ষা তা মুহূর্তেই হারিয়ে যায় বোমাবর্ষণে অপ্রত্যাশিত করুণ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।
‘সাফুরিয়্যাহ’ গল্পে আলি আল-আজহারি আত্মকথনের ভঙ্গিতে কতগুলো নির্বাসিত পরিবারের ইসরায়েলিদের দ্বারা নিশ্চিহ্ন করে ফেলা নিজেদের ভিটেতে ফেরার অদম্য চেষ্টার কাহিনি বিবৃত হয়েছে। অন্যদিকে মাহমুদ আল-রিমাভি তাঁর ‘ট্রেন’ গল্পে একটি অনির্দেশ্য, নিয়ন্ত্রণহীন ট্রেনযাত্রার রূপকে দেশহীন, ভিটেহীন, গন্তব্যহীন প্যালেস্টাইনি জাতির জীবনযাত্রার ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার অবলম্বনহীন সাধারণ প্যালেস্টাইনিদের কী করুণ জীবনযাপন করতে হয় তার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে মজিদ আবু শারারের ‘তেতো রুটি’ গল্পে। শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত প্যালেস্টাইনিদের আরেক দুর্দশার গল্প বলেছেন লিয়ানা বদর তাঁর ‘আল-জা’আতারের মাঝখানে’ গল্পে। লেবাননের আল-জা’আতার শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েল-সমর্থিত ফালাঞ্জিস্ট খ্রিষ্টানদের গোলাবর্ষণের শিকার এক বালিকার জীবনোপলব্ধির গল্প এটি। এতে লেখক একদিকে শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী প্যালেস্টাইনিদের মানবেতর জীবনের চিত্র এঁকেছেন, অন্যদিকে দেখিয়েছেন 888sport promo code-পুরুষের বৈষম্য। আরোপিত যুদ্ধের শিকার প্যালেস্টাইনি শিশুদের করুণ পরিস্থিতির গল্প গাসান কানাফানির ‘ছুটির উপহার’ গল্প।
‘জুতা’ গল্পে নাসার ইবরাহিম চেকপয়েন্টের মাধ্যমে প্যালেস্টাইনিদের চলাচলের ওপর আরোপিত ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণের চিত্র এঁকে দেখিয়েছেন পরস্পরের প্রতি ঘৃণা ও অবিশ্বাস কীভাবে উভয়কেই ভোগাচ্ছে। প্যালেস্টাইনি তরুণ নিজার রামাল্লায় যাবে। কিন্তু ইসরায়েল-আরোপিত নানান বাধাবিপত্তি পেরিয়ে সে যখন চেকপয়েন্টে পৌঁছল, তখন ইসরায়েলি সেনারা 888sport app শত শত প্যালেস্টাইনির সঙ্গে তাকেও আটকাল। সেনারা শেষ পর্যন্ত জুতা খুলে রেখে যাওয়ার শর্তে তাকে যেতে অনুমতি দিলো। মরুভূমির বুকে খালি পায়ে পরি888sport slot gameে অপরিসীম কষ্ট হবে জেনেও রাজি হলো নিজার। তারপর যখন ফিরল, তখন সেনারা তাঁকে নিয়ে মজা করতে লাগল। অবশেষে এক মগ চা এনে দেওয়ার শর্তে তাঁর জুতা ফেরত দিতে চাইল তারা। চা এনে দিলে তারা তাঁকে তাঁর জুতা দেখিয়ে দিলো। জুতা নিয়ে দেখল ইসরায়েলি সেনারা তাঁর মধ্যে প্রস্রাব করে রেখেছে। চেকপয়েন্ট পার হয়ে এসে নিজার সেনাদের উদ্দেশে বলল, ‘যতদিন তোমরা আমাদের জুতার মধ্যে আর আমরা তোমাদের চায়ের মধ্যে প্রস্রাব করতে থাকব, ততদিন আমাদের মধ্যে শান্তি আসবে না। বুঝলে?’
ব্যাপারটা শুধু এমন নয় যে, প্যালেস্টাইনি গল্পকাররা শুধু ইসরায়েল-প্যালেস্টাইনি দ্বন্দ্ব নিয়েই গল্প লিখেছেন। ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, প্রেম, দ্বন্দ্ব, শোষণ-বৈষম্য নিয়েও তাঁরা লিখেছেন। আদানিয়া শিবলির ‘নৈঃশব্দ্য’ একটি মনস্তাত্ত্বিক গল্প, বাল্যপ্রেমের ব্যর্থতাজনিত আত্মক-ূয়ন এবং পারিবারিক নিপীড়নজনিত অসুস্থতার শিকার একজন বালিকার দুরবস্থার কাহিনি এতে বিবৃত হয়েছে। চমৎকার হাস্যরস ও কৌতুকের মধ্য দিয়ে শৈশবের সরলতা এবং তারুণ্যের যৌবনসুলভ বোকামির সম্পর্ক যাচাই করে দেখেছেন আলা হেলিহেল তাঁর ‘গাধা’ গল্পে। ‘পাপ’ গল্পে ইমান বাসির লিখেছেন গির্জায় পাদ্রিদের নির্যাতনের শিকার এক কিশোরীকন্যার মর্মন্তুদ কাহিনি। কিশোরীটি শেষ পর্যন্ত মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। প্রবাসে এক ভিনদেশি পাগলাটে 888sport promo codeর সঙ্গে একজন প্যালেস্টাইনির প্রেমের গল্প লিখেছেন রছমি আবু আলি ‘গোঁফ-ছাঁটা বিড়াল’ গল্পে।
এসব গল্পের একেকটির বিষয় একেক রকম, কিন্তু সামগ্রিকভাবে প্যালেস্টাইনিদের জাতীয়, সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনের বিচিত্র দ্বন্দ্ব ও সমস্যার সার্বিক চিত্র এই রচনাগুলোয় প্রতিভাসিত হয়েছে। গল্পগুলো আঙ্গিক বিবেচনায়ও বিচিত্র। তবে প্যালেস্টাইনি 888sport app download apkর বিপরীতে, গল্প888sport live footballে, দ্বন্দ্ব, সমস্যা ও হতাশার চিত্রই মূলত জায়গা করে নিয়েছে। এসব গল্পে ইউটোপীয় বিপ্লবী ধ্যান-ধারণা-চেতনা তেমন একটা প্রশ্রয় পায়নি।
তথ্যসূত্র
এলিজাবেথ ব্রুকস প্রেস্টউড, প্যারাডাইস লস্ট, অ্যান্ড লস্ট অ্যাগেইন : লিমিটেশন্স অ্যান্ড রিয়েলিটিজ অব প্যালেস্টিনিয়ান আইডেন্টিটি ইন এক্সাইল, অক্যুপায়েড প্যালেস্টাইন অ্যান্ড ইসরায়েল, নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ২০০৩।
আধুনিক ফিলিস্তিনি গল্প, 888sport app download apk latest version ও সম্পাদনা নাজিব ওয়াদুদ, মহাকাল প্রকাশনী, ফেব্রুয়ারি, ২০১৩।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.