একত্রিশ
১৯৯৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর মামাতো বোন হালিমার মৃত্যুকালে আনিসুজ্জামান ছিলেন কলকাতায়। অবশ্য তার আগেই হালিমাকে শেষ দেখা দেখে গিয়েছিলেন তিনি হাসপাতালে। সে-সময় ‘কী যেন সে বলতে চেয়েছিল আমাকে’ – সে-কথা আনিসুজ্জামান আর জানতে পারেননি। বিপুলা পৃথিবীতে তিনি লিখেছেন, ‘১৯৭৫ সালের পরে, বিশেষ করে জীবনের শেষ দিকে, দেশ সম্পর্কে তার উদ্বেগ অনেক বেড়ে যায়, 888sport app download apkয় তা সে প্রকাশ করার চেষ্টা করে। তার কয়েকটায় সুর দিয়ে গানের একটা সিডিও বেরিয়েছিল।’
কাল নিরবধিতে আনিসুজ্জামান লিখেছেন যে, দুই সন্তানকে (সৈয়দ কামরুজ্জামান ও সৈয়দা হালিমা খাতুন) নিয়ে অকালবিধবা মামি ১৯৩৮ সালের দিকে কলকাতায় চলে আসেন এবং ঘরে-পড়া সামান্য শিক্ষার পুঁজি নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করেন ও অক্লান্ত শ্রম ও সাহসিকতার ফলে তাতে সফল হন।
মামাতো বোন হালিমার মৃত্যুর মাত্র মাসাধিক কাল পরে আনিসুজ্জামান হারান তাঁর বড়োবু তৈয়বুন্নেসা আহসানকে। এক্ষেত্রেও আনিসুজ্জামান কলকাতায় ছিলেন। ফিরে এসে সোজা গেলেন হাসপাতালে – ১৯৯৯ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি। সেখান থেকে মরদেহের সঙ্গে বড়োবু’র বাড়িতে।
বড়োবু’র মৃত্যুর ঠিক তিন মাসের মাথায় আনিসুজ্জামান হারালেন তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু সৈয়দ আহমদ হোসেনকে। খুলনা থেকে 888sport appয় আসার পর প্রিয়নাথ হাই স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন আনিসুজ্জামান। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা একসঙ্গে স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম। তার পরবর্তী পঞ্চাশ বছর একটা অচ্ছেদ্যবন্ধনে আমরা জড়িত ছিলাম। তার মৃত্যু আমাদের বন্ধুমহলে সত্যি সত্যি শূন্যতার সৃষ্টি করেছিল।’ সৈয়দ আহমদ হোসেন মারা গিয়েছিলেন হাসপাতালে, ১৯৯৯ সালের ৬ই মে, দীর্ঘ রোগভোগের পর। সিদ্দিকা জামানের বাবা সাংবাদিক আবদুল ওয়াহাব ছিলেন আহমদ হোসেনের মামা – তাঁর মায়ের মামাতো ভাই। সেদিক থেকে সিদ্দিকা জামান হলেন আহমদ হোসেনের মামাতো বোন। আনিসুজ্জামানের সঙ্গে সিদ্দিকা ওয়াহাবের পূর্বরাগ সৃষ্টি ও পরিণতিতে পরিণয়ের পেছনে আহমদ হোসেনের যে বিশেষ অবদান ছিল সে-কথা আনিসুজ্জামান কাল নিরবধিতে উল্লেখ করেছেন। সিদ্দিকা জামান তাঁর বইতে (আমার বিপুলা পৃথিবী) লিখেছেন, ‘জন্ম-মৃত্যু যেন হাত ধরাধরি করে চলছিল সেই সময়। ৬ মে আহমদ হোসেন, যিনি আমার আর আনিসুজ্জামানের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, উনি মারা গেলেন। উনি একজন নিষ্ঠাবান সাংস্কৃতিক সংগঠক ছিলেন। আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক চেতনাবোধের প্রথম পাঠ পাই ওঁর কাছ থেকেই। প্রায়ই সমাজতন্ত্র, রাশিয়ার বিপ্লব, ইংরেজদের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের সংগ্রামের কথা আলোচনা করতেন। কিছু 888sport free bet loginও এনে দিতেন – যেমন দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের কিছু বই, ছোটদের রাজনীতি ও অর্থনীতি। বলতেন বিপ্লবী সূর্য সেন এবং ওঁর সহকর্মীদের কথা। তারপর প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, সাবিত্রী, নেলী সেনগুপ্তা, ইলা মিত্র – এঁদের সাহসিকতা ও ত্যাগের কথা শুনতে শুনতে ভক্তি-888sport apk download apk latest versionয় মাথা নত হয়ে যেত। পরবর্তী সময়ে সেই বই ও চরিত্রগুলো আমায় অনেক কিছু ভাবায় ও প্রভাবিত করে।’
১৯৯৯ সাল অবশ্য আনিসুজ্জামানদের পরিবারে কেবল প্রিয়জনবিয়োগের দুঃখানুভূতির বছরই ছিল না, কিছুু কিছু সুখানুভূতির বছরও ছিল। এ-বছরই ছেলে আনন্দ জামান সিমেন্স থেকে ইন্টার্নশিপ শেষ করে এমবিএ পাশ করার পর জুলাই মাসের ১ তারিখে গ্রামীণফোনে যোগ দেন। শুরু হয় তাঁর কর্মজীবন। ২১শে জুলাই চট্টগ্রামের ‘আবদুর রহমান 888sport sign up bonus মজলিশ’-আয়োজিত ‘আবদুর রহমান স্মারক বক্তৃতা ১৯৯৯’ পর্যায়ে ‘888sport appsের শিক্ষা বিষয়ে কিছু কথা’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করেন আনিসুজ্জামান। ১৯শে আগস্ট বাংলা একাডেমির সভাপতি নিয়োজিত হন তিনি। ডিসেম্বরে কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সমাবর্তন বক্তৃতা’ প্রদান করেন।
এদিকে ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আনন্দের বিয়ের কথা পাকাপাকি হয়ে যায়। পাত্রী শারমীন রশীদ, ডাকনাম ইলোরা, ডা. রশীদ আহমদের ছোট মেয়ে। ওঁদের আদি বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি গ্রামে, তবে এখন 888sport appর বাসিন্দা, থাকেন লালমাটিয়ায়। বিয়ের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব নিয়ে মেয়ের বাড়িতে যাওয়ার দিন ঠিক হয় আগস্টের একটি তারিখ। সে-সময় একটি অনাকাক্সিক্ষত বিপত্তি ঘটে, তবে শেষ পর্যন্ত প্রস্তাব ঠিকই নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাটি হলো, প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার আগের দিন, হুমায়ূন আহমেদের পীড়াপীড়িতে, আনিসুজ্জামানকে সস্ত্রীক হুমায়ূনের নুহাশ পল্লীতে যেতে হয়েছিল। হুমায়ূন কথা দিয়েছিলেন যে, পরদিন যথাসময়ে তাঁদের ফিরে আসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। তিনি কথা রেখেছিলেন, কিন্তু বিপত্তি ঘটল পথে। তার যৎসামান্য বর্ণনা দিয়েছেন সিদ্দিকা জামান তাঁর বইতে (আমার বিপুলা পৃথিবী) : ‘ফিরতি পথে শুধু যে গাড়ি খারাপ হলো তা না, আবহাওয়াও প্রতিকূল হলো। প্রচণ্ড যানজটেও পড়লাম। কোনো এক জায়গায় মনে হয় রিকশা ভ্যানেও উঠলাম, সময় বাঁচানোর জন্য। নানা ঝামেলা করে অবশেষে 888sport appয় পৌঁছালাম। আত্মীয়স্বজনের মধ্যে যাঁরা প্রস্তাব নিয়ে যাবেন বলে বাসায় এসেছিলেন, তাঁরা আমাদের কাণ্ডজ্ঞান দেখে খুব বিরক্ত হলেন।’ যা হোক, মাস তিনেক পর পাকা-কথার দিনে ঠিক হলো, ২০০১ সালের ১৭ই জানুয়ারি বিয়ে হবে।
আনিসুজ্জামান লিখেছেন (বিপুলা পৃথিবী), ২০০০ সালে তাঁর তিনটি বই প্রকাশিত হয়। সেগুলি হচ্ছে – অন্যপ্রকাশ থেকে নির্বাচিত 888sport live, শিখা প্রকাশনী থেকে পূর্বগামী এবং 888sport live football প্রকাশ থেকে বাঙালি 888sport promo code : 888sport live footballে ও সমাজে। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, ১৯৯৯ সালে অন্যপ্রকাশ থেকে বেরিয়েছিল তাঁর বই আমার চোখে এবং আগামী প্রকাশনী থেকে মুক্তিযুদ্ধ এবং তারপর। এছাড়া ১৯৯৭ সালে 888sport live football প্রকাশ থেকে বেরোয় আমার একাত্তর। তাঁর জীবনপঞ্জিতে (আনিসুজ্জামান 888sport app download for android, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, ২০২১) দেখা যাচ্ছে, ২০০০ সালে 888sport live football প্রকাশ থেকে তাঁর একটি শিশুতোষ গ্রন্থ কতকাল ধরেও প্রকাশিত হয়।
২০০১ সালে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। আনিসুজ্জামান ছিলেন এই ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ও সেটলার। এ-বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থ ত্রৈলোক্যনাথ রচনা-সংগ্রহ প্রকাশ করে 888sport live football প্রকাশ, 888sport app। এছাড়া তিন খণ্ডে আনিসুজ্জামান-সম্পাদিত মুনীর চৌধুরী রচনাসমগ্র প্রকাশ করে অন্যপ্রকাশ, 888sport app। আর বিশ্বজিৎ ঘোষ-সহযোগে তাঁর সম্পাদিত আবু হেনা মোস্তফা কামাল রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) প্রকাশিত হয় বাংলা একাডেমি, 888sport app থেকে।
২০০২ সালের শুরুতে (৩১শে জানুয়ারি) আনিসুজ্জামান বাংলা একাডেমির সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। এই দুঃখজনক ঘটনা সম্পর্কে আনিসুজ্জামান কোথাও তেমন কিছু উল্লেখ করেননি। তবে সিদ্দিকা জামানের বই আমার বিপুলা পৃথিবীতে এ-প্রসঙ্গের উল্লেখ রয়েছে। তিনি লিখেছেন : ‘২০০২ সালের ৩০ জানুয়ারি আনিসুজ্জামানের কাছে বাংলা একাডেমি থেকে বইমেলা উদ্বোধনের একটা আমন্ত্রণপত্র এল। খামে তাকে সভাপতি হিসাবে উল্লেখও করা নেই। কার্ডটা পড়ে দেখল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সভাপতির উদ্বোধন করার প্রচলন থাকলেও এবার করা হয়েছে ব্যতিক্রম – সভাপতির কোনো ভূমিকা নেই। স্পষ্ট বুঝল, নতুন সরকার তাকে সভাপতি হিসেবে আর দেখতে চায় না। আর এই ঘটনায় সভাপতির পদকেও অসম্মান করা হয়েছে। ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিল পদত্যাগের। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই পদত্যাগপত্র লিখতে বসল, আর আমায় কার্ডটা পড়তে দিল।’
৩১শে জানুয়ারি সকালে আনিসুজ্জামান তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। এতে তিনি লিখেছিলেন যে, তাঁর পক্ষে সম্মানজনকভাবে সভাপতির দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। পরদিন অবশ্য আনিসুজ্জামান বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেলেন, তবে সভাপতি হিসেবে নয়, বাংলা একাডেমির একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে। কেউ কেউ তাঁর এহেন আচরণে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হলেও আনিসুজ্জামান তাঁদের বুঝিয়েছিলেন – ‘888sport cricket BPL rateের বইমেলা জাতীয় অনুষ্ঠান আর ঘটনা ব্যক্তিগত; আর আমি উপস্থিত ছিলাম বাংলা একাডেমির একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে, সভাপতি আছি কি না তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ এই ঘটনা ব্যক্তি আনিসুজ্জামানের আত্মসম্মানবোধের পরিচয় যেমন তুলে ধরে, তেমনি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাঁর 888sport apk download apk latest version ও সম্মানের দিকটিও নির্দেশ করে।
২০০৩ সালের ৩১শে জানুয়ারি আনিসুজ্জামান চট্টগ্রামে অনোমা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী-আয়োজিত ‘বেণীসাধক ও ফণীভূষণ স্মারক বক্তৃতা ২০০৩’ পর্যায়ে ‘বাঙালি সংস্কৃতি : বৈশিষ্ট্য, বিকাশ, সমস্যা ও সম্ভাবনা’ বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন। এ-বছর ফেব্রুয়ারি মাসে 888sport live football প্রকাশ, 888sport app থেকে তাঁর দুটি বই প্রকাশিত হয় – একটি তাঁর 888sport sign up bonusকথা কাল নিরবধি, অন্যটি ফ্রাঁস ভট্টাচার্য-সহযোগে সম্পাদিত ওগুস্তেঁ ওস্যাঁর বাংলা-ফরাসি শব্দকোষ। এ-বছরই মার্চে তিনি কলকাতায় নীহাররঞ্জন রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এশিয়াটিক সোসাইটি-আয়োজিত সেমিনারে ‘Nihar Ranjan Ray on Culture’ বিষয়ে 888sport live উপস্থাপন করেন।
২০০৩ সালের ৩০শে জুন আনিসুজ্জামান 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসান ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সক্রিয় কর্মজীবনের। এরপর ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেশুরু হয় তাঁর নতুন এক কর্মজীবন। এ-মাস থেকেই তিনি 888sport live chatকলাবিষয়ক সাময়িকী Jamini এবং মাসিক 888sport live footballপত্র কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এ-দুটি পত্রিকাই প্রকাশিত হয় বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও অর্থানুকূল্যে। এদিকে এই ফেব্রুয়ারি মাসেই (১২ই ফেব্রুয়ারি) আনিসুজ্জামান কলকাতায় 888sport live football অকাদেমি-আয়োজিত ‘কবি জসীমউদ্দীন জন্মশতবার্ষিকী বক্তৃতা ২০০৪’ পর্যায়ে ‘Jasimuddin : The Man and the Poet’ বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন। এরপর ২২শে মার্চ 888sport appয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর-আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা ২০০৪’ পর্যায়ে ‘আমাদের মুক্তিসংগ্রাম এবং সংবিধানের মূলনীতি’ বিষয়ে বক্তৃতা করেন।
২০০৫ সালে আনিসুজ্জামান কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডি.লিট লাভ করেন। ২০শে এপ্রিল তিনি 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের 888sport free betতিরিক্ত অধ্যাপক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
ইতোমধ্যে ২০০৫ সালের ৩০শে জুন তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়িতে থাকার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি ধানমন্ডিতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকবেন। পরে দেখলেন, সপ্তাহে দুবার আনিসুজ্জামানকে যামিনী এবং কালি ও কলমের কাজে বিমানবন্দরের কাছে বেঙ্গল সেন্টারে যেতে হয়। আনন্দর গ্রামীণফোনের অফিসও গুলশানে। তাছাড়া আনিসুজ্জামানের অনেক বন্ধুবান্ধব এবং তাঁদের আত্মীয়স্বজনের অনেকেই গুলশানে থাকেন। অতএব গুলশানই গন্তব্য। ২০০৫ সালের ১লা জুলাই আনিসুজ্জামান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাস ছেড়ে গুলশানে চলে যান। অবশ্য গুলশানে ১৫ বছরে তাঁদের তিনবার বাড়ি বদল করতে হয়। বাড়ি বদলের পরপরই চিকিৎসার প্রয়োজনে আনিসুজ্জামান সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর যান। সিদ্দিকা জামান তাঁর বইয়ে লিখেছেন যে, তাঁদের সিঙ্গাপুর যাওয়া এবং সেখানে চিকিৎসা ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের। এ-বছর কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আলোচনায় আনিসুজ্জামান ‘Tagore in East Pakistan’ শিরোনামে একটি 888sport live উপস্থাপন করেন। পরের বছর (২০০৬) আনিসুজ্জামান ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে এক আলোচনা সভায় `Tagore in Bangladesh‘ শীর্ষক 888sport live পাঠ করেন।
২০০৮ সালের ২৩শে জুন আনিসুজ্জামান 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে এমেরিটাস অধ্যাপক পদে নিয়োগ লাভ করেন। এর পরপরই তিনি বিশ্বভারতীতে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে (২০০৮-০৯) যোগদানের আমন্ত্রণ পান। তাঁকে যেতে হবে ডিসেম্বরে, তিন মাসের জন্য। এ-বছর জুন মাসে বাংলা একাডেমি থেকে বাংলা 888sport live footballের ইতিহাস (দ্বিতীয় খণ্ড) প্রকাশিত হয়। আনিসুজ্জামান ছিলেন এর প্রধান সম্পাদক। সম্পাদনা পরিষদের সদস্য ছিলেন – অধ্যাপক আহমদ শরীফ, অধ্যাপক কাজী দীন মুহম্মদ, অধ্যাপক মমতাজুর রহমান তরফদার ও অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। বাংলা একাডেমি থেকে বইটির প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রায় বিশ বছর লেগে যায় দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশিত হতে। এই বিলম্বের কারণ আনিসুজ্জামান তাঁর লিখিত ভূমিকাস্বরূপ ‘নিবেদন’ শিরোনামে উপস্থাপন করেছেন। তবে এর আরো একটি কারণ ছিল। সে কারণটি হলো – বইটির মুদ্রণকাল বিলম্বিত হওয়ায় একাডেমির সংশ্লিষ্ট বিভাগ পাণ্ডুলিপির কোনো কোনো অংশের হদিস করতে ব্যর্থ হয়। এতে বইটির প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয় এবং তা সম্ভব না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। অবশেষে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এই সংকট সমাধানে এগিয়ে আসেন। তিনি পাণ্ডুলিপি পুনরুদ্ধার করেন এবং প্রায় এক বছর ধরে সপ্তাহের নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনে নিয়মিতভাবে একাডেমিতে গিয়ে সম্পাদনা ও প্রকাশনার কাজ চূড়ান্ত করেন। এই সময়ে দ্বিতীয় খণ্ডের কাজ শেষ হওয়ার পর তিনি প্রথম খণ্ডের পুনর্মুদ্রণ তথা পাঠ্যপুস্তক সংস্করণ প্রকাশের কাজেও নিজের শ্রম ও মেধা নিয়োজিত করেন। দুটি খণ্ডই প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালের জুন মাসে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে হয় যে, বাংলা 888sport live footballের ইতিহাস গ্রন্থটির 888sport app খণ্ডের প্রকাশ বিষয়ে এই রচনায় পূর্বে কিছু কথা বলা হয়েছে; তাই পুনরুক্তি নিষ্প্রয়োজন নিঃসন্দেহে।
শান্তিনিকেতনে তিন মাস থাকার প্রস্তুতি নিয়ে আনিসুজ্জামান সস্ত্রীক কলকাতা যান ২০০৮ সালের ৮ই নভেম্বর। তিন মাস শান্তিনিকেতনে থাকার সময়কার কিছু কিছু বিষয় ও ঘটনার উপভোগ্য বিবরণ মেলে সিদ্দিকা জামানের বইটিতে (আমার বিপুলা পৃথিবী)। তার কিছুটা এখানে উদ্ধৃত করা হলো আগ্রহী পাঠক-পাঠিকাদের আস্বাদনার্থে। সিদ্দিকা জামান লিখেছেন :
‘শান্তিনিকেতনে তিন মাস থাকার প্রস্তুতি নিয়ে আমরা ৮ নভেম্বর ২০০৮-এ কলকাতা যাই। ওখানে একদিন থেকে পরদিন সকালে শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেসে ১০টায় রওনা দিয়ে দুপুর ১টায় বোলপুর স্টেশনে পৌঁছাই। প্রথমে আমরা রতনকুঠিতে উঠি। কয়েকদিন পর ‘পূর্বপল্লী গেস্ট হাউজ’-এ। আমাদের জন্য ‘পঞ্চবটি’তে থাকার ব্যবস্থা হয় এবং বাকি সময়টা ওখানেই থাকি। ‘পঞ্চবটি’তে আমাদের জন্য এসি, টিভি, ফ্রিজ, চুলো এবং সংসারের যাবতীয় জিনিস – সব নতুন কেনা হয়েছিল।
‘আনিসুজ্জামান একদিন আমাকে বলল, সেখানকার কোনো-একটা পত্রিকা বা টিভি বিকেলে তার দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেবে, ফিরবে সন্ধ্যার দিকে। কে সাক্ষাৎকার নেবে তাও কিছু বলল না। ঘণ্টা দুয়েক পর দরজায় বেল, খুলে দেখি আনিসুজ্জামানের সঙ্গে একজন সুদর্শন মানুষ, স্মিত হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। ও জিজ্ঞেস করল, ‘চিনতে পারছো?’ আমি অবলীলায় বললাম, ‘খুব চেনা চেহারা, কিন্তু নাম মনে করতে পারছি না।’ ভদ্রলোক সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমার নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।’ দারুণ লজ্জা পেলাম আমি। এমনিতেই মানুষের নাম খুব ভুলে যাই। ঘটনাও বেশ ভুলি। …
‘আরেকবার এরকমই এক ঘটনা ঘটল কলকাতাতে। আনিসুজ্জামান কোনো এক 888sport app download bd নেওয়ার সময় আমি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলাম। আমার পাশে এসে বসলেন আরেক কিংবদন্তি অপর্ণা সেন। আমি উচ্ছ্বসিত হয়ে তাঁকে দেশ পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে পত্রিকাটির খুব প্রশংসা করলাম। পরে আনিসুজ্জামান বলল, ‘খুব ভালো হয়েছে। উনি বুঝলেন তুমি দেশ পত্রিকা, সানন্দা, সাগরময় ঘোষ বা অপর্ণা সেন – কোনো কিছুই খুব ভালো চেনো না।’…
‘পঞ্চবটিতে থাকতেই আর একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, তিনি একজন সোপরানো (উচ্চকণ্ঠের গায়িকা)। ইতালীয় নাগরিক, নিজেকে রোমান বলে পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন। ইতালির এক বিশ্ববিদ্যালয়ে মিউজিকের শিক্ষিকা ছিলেন। প্রশ্ন করায় জানতে পারলাম, গত দশ বছর ধরে নিয়মিত আসছেন রবীন্দ্রসংগীতের ওপর জ্ঞান ও দীক্ষা নিতে। একদিন এক অনুষ্ঠানে ওঁর কথা শুনতে পেলাম। বক্তৃতা দিলেন ইংরেজিতে, গান গাইলেন বাংলায়। …
‘অমর্ত্য সেনকেও কয়েকবার দেখেছি শান্তিনিকেতনে। এক সময় সেখানকার ছাত্র ছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের নিজ হাতে গড়া বিখ্যাত ‘পাঠভবন’-এর ইংরেজির যে শিক্ষক ছিলেন সেই ললিত কুমার মজুমদার ছিলেন উনার সরাসরি শিক্ষক। তাঁকে নাকি উনি প্রতিবার প্রণাম করতে যেতেন শান্তিনিকেতনে এলে। এত বয়স এবং প্রাপ্তির পরও নোবেল বিজয়ী এই মানুষটা কতটা বিনয়ী! …
‘পূর্বপল্লী গেস্ট হাউজে থাকতে একদিন রাতে আনিসুজ্জামানের চশমা ভেঙে গেল। একজনকে ফোন করে বলল সকালে এসে চশমার দোকান থেকে ওকে একটা চশমা কিনে দিতে। কারণ পরদিন কলকাতায় একটা সেমিনার আছে এবং সকাল ১০টায় ট্রেন ধরতে হবে। আর জগদীশকে ফোন করে বলল কলকাতায় ডাক্তারের ব্যবস্থা করতে। পরদিন ওখানে পৌঁছে বিকেলে কোনো মতে সেমিনার শেষ করল। পরদিন সকালে জগদীশের সঙ্গে গিয়ে চোখ দেখিয়ে এসে বলল, ‘বেশ আগেই বাঁ চোখে স্ট্রোক হয়ে রক্ত জমে গেছে এবং চোখটাতে খুব বেশি কিছু করার নেই।’
‘শান্তিনিকেতনে ফিরে আসার পর হঠাৎ করেই হায়দারাবাদের এক চোখের ডাক্তারের সঙ্গে পরিচয় হলো। উনি বললেন ওখানে গেলে যেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে আনিসুজ্জামান। তখন ও বলল, ডিসেম্বরেই ওর একটা সেমিনারে যাওয়ার কথা। অতএব সেই মতো সব ব্যবস্থা হলো। আমাকে কলকাতায় রেখে ও হায়দারাবাদ। ওখানে ডাক্তাররা ওর চোখ দেখে একই কথা বললেন। জীবনের শেষ দশ বছর এক চোখে প্রায় দৃষ্টিহীন অবস্থায় কাটাল। নিজের শরীরের ব্যাপারে ও কখনোই যত্নশীল ছিল না।
‘আমরা বেশ মন খারাপ করেই আবার শান্তিনিকেতনে ফিরে গেলাম। কিছুদিন পর আমার দুই বোন ও এক ভাই আমাদের ওখানে বেড়াতে গেল। পরে এক ভাগ্নে ও ভাগ্নে-বউও গেছিল। মাজহার-কমলসহ আমাদের বন্ধুদের মধ্যেও কেউ কেউ গেল। শান্তিনিকেতনের বিখ্যাত নন্দন মেলা ও পৌষ মেলা দেখারও সুযোগ হলো সেই সময়। শান্তিনিকেতন সম্পর্কে সবাইকে একটা কথাই বলেছি যে, প্রকৃতির সৌন্দর্য আর প্রাণের প্রাচুর্য নিয়েই তৈরি শান্তিনিকেতন।’
বত্রিশ
২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ – পরপর তিন বছর আনিসুজ্জামান অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন আমন্ত্রিত হয়ে। প্রথমবার গিয়েছিলেন সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বাংলা একাডেমি-আয়োজিত বাংলা বইমেলার প্রধান অতিথি হিসেবে। দ্বিতীয়বার গিয়েছিলেন সিডনির ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন সিডনিতে ‘The Bengali Identity’ শীর্ষক 888sport live উপস্থাপন করার জন্য। আর তৃতীয়বার যান জুন মাসে মেলবোর্নে মোনাশ ইউনিভার্সিটিতে রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতজন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে যোগ দিতে। এ-সেমিনারে তিনি `Tagore’s World-view‘ বিষয়ে ভাষণ প্রদান করেন।
এ-বছর অক্টোবর মাসে আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং একই মাসে বার্লিনে রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতজন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন আনিসুজ্জামান। তাঁর বক্তৃতার বিষয় ছিল `Tagore and the Bengali Muslims’। এরপর ২৯শে নভেম্বর 888sport apps এশিয়াটিক সোসাইটিতে অনুষ্ঠিত রবীন্দ্রনাথ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনারে মূল ভাষণ দেন তিনি। তাঁর বক্তৃতার বিষয় ছিল `The Worldview of Rabindranath Tagore : An outline’। ২০১১-তেই তিনি কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মারক স্বর্ণপদক লাভ করেন।
২০১২ সালের শুরুতেই দ্বিতীয়বারের জন্য বাংলা একাডেমির সভাপতি পদে নিযুক্ত হন আনিসুজ্জামান। ফেব্রুয়ারি মাসে 888sport appর জাগৃতি প্রকাশনী প্রকাশ করে তাঁর 888sport liveগ্রন্থ বাঙালি সংস্কৃতি ও 888sport app। এ-মাসেই 888sport appর প্রথমা প্রকাশন প্রকাশ করে তাঁর সম্পাদিত রবীন্দ্রনাথ : এই সময়ে। মে মাসে কলকাতার বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর সম্পাদনায় 888sport appsের লেখকদের রচনার সংকলনগ্রন্থ সার্ধশতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ : 888sport appsের 888sport apk download apk latest versionঞ্জলি। আগস্ট মাসে কলকাতার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রকাশ করে তাঁর 888sport liveগ্রন্থ ইহজাগতিকতা ও 888sport app। অক্টোবরে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স 888sport app থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থ জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক স্মারকগ্রন্থ।
২০১২ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি আনিসুজ্জামানের ৭৫ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে 888sport appয় তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এছাড়া সেলিনা হোসেনের প্রধান সম্পাদকত্বে আলোকচিত্র-সংগ্রহ প্রকাশ করে চন্দ্রাবতী একাডেমী, 888sport app। এদিকে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদান করেন তিনি। একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি তাঁকে জাহানারা ইমাম স্মারক সম্মাননা প্রদান করে।
২০১১ সাল ছিল আনিসুজ্জামানের জীবনে নানা ঘটনা ও কর্মতৎপরতার বছর। কিন্তু এর সমাপ্তি ঘটে তাঁর পারিবারিক জীবনে একটি চরম দুঃখজনক বিয়োগান্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে। ২৭শে ডিসেম্বর রাতে তাঁদের ছোট মেয়ে শুচি তাঁর স্বামী সুমন (মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর জ্যেষ্ঠপুত্র) ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সিঙ্গাপুর বেড়াতে যান। আনিসুজ্জামানদের বাড়িতে ভোরে খবর এলো – প্লেনের মধ্যেই ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক করে সুমন চিরবিদায় নিয়েছেন।
এই সময়ে একটি ঘটনা ঘটে যার উল্লেখ আনিসুজ্জামানের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য বোঝার জন্য প্রয়োজন বলে মনে হয়। চন্দ্রাবতী একাডেমি-প্রকাশিত আনিসুজ্জামান সম্মাননা গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত রচনায় শফি আহমেদ লিখেছেন (‘সবিনয় নিবেদন’) : ‘রবীন্দ্রনাথের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে 888sport appয় সবচেয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সংগীতশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সুরের ধারা। এই আয়োজনের কার্যকরী কমিটির অন্যতম প্রধান ব্যক্তি ছিলেন আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাজারো কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনায় ওই অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। উদ্বোধনের ঠিক আগের রাতে সিঙ্গাপুরগামী একটি উড়ন্ত বিমানে আকস্মিকভাবে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন আনিসুজ্জামানের জামাতা। মাঝরাতেই সে সংবাদ পেলাম আমরা। মর্মাহত বোধ করলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি আনিসুজ্জামান। আমরা এখন কী করব, কীভাবেই-বা আনিস স্যারকে সান্ত্বনার কথা জানাব ভেবে পাচ্ছি না। কিন্তু কথা তো বলতেই হবে তাঁর সঙ্গে। এখন কীভাবে অনুষ্ঠান চালাব, সেই পরামর্শও তো পাওয়া দরকার। আনিস স্যার বললেন, তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসবেন, কিন্তু অনুমেয় কারণেই সবটা সময় থাকবেন না। সেদিন পরম বিস্ময়ে সারাটা সময় তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকেছি। পড়েছিলাম, রবীন্দ্রনাথ একদিন একটি অনুষ্ঠানে বিলম্বে হাজির হয়েছিলেন। সংগঠকদের তিনি বলেছিলেন, আজ তো শমী চলে গেল, তাই আসতে দেরি হলো। রবীন্দ্রনাথ নিমতলা শ্মশানঘাট থেকে সরাসরি ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন।’
একই ঘটনা সম্পর্কে রবীন্দ্রসংগীত888sport live chatী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা লিখেছেন (আনিসুজ্জামান 888sport app download for android, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, 888sport app, ‘আনিস মামার 888sport sign up bonus’) : ‘যেদিন আমাদের মূল অনুষ্ঠান তার দুদিন আগে বিদেশ যাবার পথে প্লেনের মধ্যেই ওঁর জামাই শুচির স্বামী মৃত্যুবরণ করলেন। আমাদের অনুষ্ঠানের দিন বিকেলে তাঁর মৃতদেহ দেশে আসবে, অনুষ্ঠানে উনি সভাপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি, আর অমর্ত্য সেন উদ্বোধক। আমি যখন ভাবছি কী হবে! তীরে এসে বুঝি তরী ডুবল! তখন সকালবেলা উনিই ফোন করে জানালেন যে উনি একটু সময়ের জন্য হলেও আসবেন। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের সময় উপস্থিত থাকবেন।
‘সেদিন মামাকে আমি নতুন করে মূল্যায়ন করেছি। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের যে পরিচয় তার আড়ালে লুকিয়ে আছে রবীন্দ্র আদর্শে উজ্জীবিত, তাঁর দীক্ষায় দীক্ষিত আরেক আনিসুজ্জামান। যিনি তাঁর জীবনে মননে চলনে ধারণ করেছেন রবীন্দ্রনাথকে। নিজের জীবনের সব দুঃখকষ্ট-শোক আড়াল করে পালন করেছেন দায়িত্ব-কর্তব্য। মিটিয়েছেন মুখের বচনের দায়। অনুসরণ করেছেন রবীন্দ্রনাথের চলার পথ।’
আনিসুজ্জামান-পত্নী সিদ্দিকা জামান আমাদের জানিয়েছেন (আমার বিপুলা পৃথিবী) : ‘পরিবারের এই কঠিন সময়ে আমাদের পাশে না থেকে অনুষ্ঠানে সময় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করলেন। সেইসঙ্গে পরদিন বাংলা একাডেমিতে, প্রধানমন্ত্রীর আরেক অনুষ্ঠানে, না-যাবার ব্যাপারেও তাকে পরামর্শ দিলেন।’
পূর্বোক্ত রচনায় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা আরো একটি প্রসঙ্গ বা বিষয় উপস্থিত করেছেন, যেটি হয়তো আমাদের অনেকেরই জানা নেই, অন্তত এই লেখকের তো বটেই।
তিনি আমাদের জানাচ্ছেন : ‘২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের ডারটিংটন হল থেকে সুরের ধারাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় দুদিন অনুষ্ঠান করার জন্য। ১০-১৫ জনের একটি ছোট দল, যার নেতৃত্বে থাকবেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। শুরুতে মামা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে বলবেন, পরে সুরের ধারা অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। দলের ছেলেমেয়েদের এবং মামার ভিসা করতে হবে। আমার আগে থেকেই ভিসা ছিল। সবাই মহা উৎসাহে ভিসার আবেদন করার পরে হাইকমিশন থেকে ইন্টারভিউয়ের জন্য সকলকে আলাদা করে ডাকা হলো। মামাকেও এই দলের নেতা হিসেবে ইন্টারভিউয়ের জন্য দাঁড়াতে হয়েছিল। তখন নিয়ম ছিল দিল্লি থেকে ব্রিটিশ ভিসা ইস্যু করার। যে কারণেই হোক সুরের ধারার ভিসা প্রত্যাখ্যাত হলো। সেই সঙ্গে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আনিস মামারও। আমি সে সময় কলকাতায় ছিলাম। ফিরে সংবাদ শুনে মামাকে ফোন করলাম। কী অজুহাত দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি তাঁর চিরাচরিত রসিকতার ভঙ্গিতে বললেন, ‘ওরা বলছে, আমি গেলে নাকি আর ফিরব না।’
‘আমি শুনে রাগে-দুঃখে বাক্যরহিত। আমাদের সর্বজনশ্রদ্ধেয় বয়স্ক জ্ঞানী অধ্যাপক বিলেতে গেলে আর ফিরবেন না! এর চেয়ে হাস্যকর অজুহাত কী আর হতে পারে! পরদিন আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করলাম। বললাম, ‘এটা আমাদের রাষ্ট্রের অসম্মান, আপনাদের এর প্রতিবাদ করা উচিত।’ ওরাও শুনে একটু অবাক। বলল, ‘আমরা দেখছি।’ বাড়ি ফিরে মামাকে ফোন করে জানালাম, আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি, ওরা ব্যবস্থা করছে। মামা খুব শান্ত ধীর সুরে বললেন, ‘ওদের না করে দে। আমি আর বিলেতে যাব না। ওরা যদি মনে করে আমি বিলেত থেকে ফিরতে চাই না তাহলে বিলেতে যাবার দরকার নেই।’ কী সহজ শান্ত ভঙ্গিতে ওঁর সিদ্ধান্ত জানালেন। না কোনো রাগ, না বিরক্তি। এ যেন রবীন্দ্রনাথের উক্তির পুনঃপ্রকাশ, ‘ভালমন্দ যাহাই আসুক/ সত্যেরে লও সহজে।’
‘তারপর মামা আর একবারও বিলেতে যাননি। আমি আর সুরের ধারা এজন্য সারাজীবন মামার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী আর ঋণী থাকলাম।’
২০১৪ সালের ২৫শে জানুয়ারি ভারত সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘পদ্মভূষণ’ প্রদানের ঘোষণা প্রচারিত হয়। ৩১শে মার্চ নয়াদিল্লিস্থ রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির হাত থেকে এ সম্মাননা গ্রহণ করেন আনিসুজ্জামান। ২০১৫ সালের ২৫শে মার্চ আনিসুজ্জামান গণপ্রজাতন্ত্রী 888sport apps সরকারের স্বাধীনতা পদক লাভ করেন। তবে নিশ্চিন্ত মনে বছরটি শেষ করতে পারেননি আনিসুজ্জামান ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। নভেম্বর মাসে প্রাণনাশের হুমকি পেলেন আনিসুজ্জামান। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো থানায় ডায়েরি করার। জাতীয় গণমাধ্যমসমূহে খবরটি প্রকাশিত হয়। গুলশান থানা থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাসায় আসেন এবং বাসার নিরাপত্তা, যাতায়াতের ব্যবস্থা ইত্যাদি সবকিছু বিবেচনা করে তাঁরা বিভিন্ন পরামর্শ দেন। আনিসুজ্জামানের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সরকার থেকে একজন গানম্যানকে নির্দিষ্ট করা হয়। বাসাতেও ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলো। সিদ্দিকা জামান লিখেছেন, ‘আনিসুজ্জামান প্রথমে তাতে আপত্তি জানায়। ও বলল, আমাকে কেউ মারতে চাইলে তো খুব বেশি অসুবিধা হবার কথা না। কিন্তু তাঁরা গানম্যান নিয়ে চলতে অনেকটা বাধ্যই করলেন। দিন কয়েক পরে আবুল হোসেন নামের একজন কনস্টেবলকে এই দায়িত্বে নিয়োগ করা হলো। আনিসুজ্জামানের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সে শুধু দায়িত্ব পালনই করল না, বরং আমাদের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে উঠল। এই ঘটনায় এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল।’
তেত্রিশ
২০১৬ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি আনিসুজ্জামান ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা 888sport live football সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মূল বক্তৃতা প্রদান করেন। এ-বছর জুলাই মাসে তাঁর কথার কথা বইটি প্রকাশিত হয়। ২৬-২৭ আগস্ট তিনি বিশ্বভারতী-আয়োজিত সম্মেলনে বক্তৃতা প্রদান ও একটি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ১লা সেপ্টেম্বর কলকাতায় 888sport apps বইমেলা উদ্বোধন করেন। ৪ঠা নভেম্বর উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামে আয়োজিত 888sport apps শিশু888sport live football সম্মেলন। বছরটি ভালোয় ভালোয় কাটলেও পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের শুরুতেই দীর্ঘ অসুস্থতার পর্ব শুরু হলো তাঁর জীবনে। ৯ই জানুয়ারি উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তৃতা দিলেন তিনি। পরদিন অর্থাৎ ১০ তারিখেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন। সে-বছর পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করে। ১৫ই জানুয়ারির সে-অনুষ্ঠানেও যেতে পারলেন না তিনি। ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে নিয়ে পার্থসারথী রায়ের লেখা বই ঠিকানা/আনিসুজ্জামান জীবন ও 888sport live football প্রকাশিত হয় কলকাতা থেকে।
জানুয়ারির ১১ তারিখে পিঠে ব্যথা নিয়ে 888sport appর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন আনিসুজ্জামান। এরপর ফেব্রুয়ারির ২ তারিখে তাঁকে চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক পাঠান বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু। ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে 888sport cricket BPL rateের বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকতে পারলেন না তিনি। দিন দশেক ব্যাংককে থেকে 888sport appয় ফিরে এলেন আনিসুজ্জামান। তবে ব্যাংককের চিকিৎসায়ও তাঁর পিঠের ব্যথার উপশম ঘটল না। 888sport appর হাসপাতালের মতো হার্টের চিকিৎসাই করলেন তাঁরা, মেরুদণ্ডের সমস্যার বিষয়টি বিবেচনায় না এনে। এবারের ১৮ই ফেব্রুয়ারি আনিসুজ্জামানের ৮০তম জন্মদিন ঘটা করে পালনের কথা ছিল। আর সেদিনই সকালে তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। হাসপাতালে এসেই অনেকে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে যান। নানা পরীক্ষাশেষে পরদিন জানা গেল, তাঁর মেরুদণ্ডের একটা ডিস্ক সম্পূর্ণ ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় নেই। মাসখানেক পিজি হসপিটালে থাকলেন, নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলো। সেখানকার চিকিৎসকরা এবং আনিসুজ্জামান নিজে দেশেই মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার করতে ও করাতে চাইলেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আবুল খায়ের লিটুর ব্যবস্থাপনায় সিঙ্গাপুরেই নেওয়া হলো তাঁকে ৪ঠা এপ্রিল। ৮ই এপ্রিল মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে অপারেশন হলো। ২১শে এপ্রিল 888sport appয় ফিরলেন। সেখানকার ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন – রোগীর সবকিছু ভালো আছে, কেবল হার্ট দুর্বল।
এদিকে 888sport appয় ফেরার কয়েকদিন পর খবর এলো, আনিসুজ্জামানের আত্মজীবনী বিপুলা পৃথিবী সে-বছরের আনন্দ 888sport app download bdের জন্য মনোনীত হয়েছে। বিপুলা পৃথিবী আনিসুজ্জামানের ত্রয়ী আত্মজীবনীর তৃতীয় গ্রন্থ। আগের দুটি হলো কাল নিরবধি (ফেব্রুয়ারি ২০০৩, 888sport live football প্রকাশ, 888sport app) ও আমার একাত্তর (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭, 888sport live football প্রকাশ, 888sport app)। বিপুলা পৃথিবী প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, প্রথমা প্রকাশন, 888sport app থেকে। পুস্তকাকারে প্রকাশের পূর্বে বইটির প্রায় পুরোটাই ২৩শে এপ্রিল ২০০৪ থেকে ৭ই নভেম্বর ২০০৮ পর্যন্ত প্রথম আলোর ‘888sport live football সাময়িকী’তে প্রতি পক্ষে প্রায় নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়। ধারাবাহিকলেখাটি প্রথম প্রকাশের দিনে ভূমিকাস্বরূপ ‘পূর্বভাষ’ নামে যা লেখা হয়েছিল তাতে আনিসুজ্জামান লিখেছিলেন : ‘প্রথমে ভোরের কাগজে কয়েক মাস, তারপর প্রথম আলোয় কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে 888sport sign up bonusকথা লিখেছিলাম কাল নিরবধি নামে। সংশোধিত হয়ে তা গ্রন্থাকারে বেরিয়ে গেছে গত বছর (২০০৩) বইমেলায়। ওটার শুরু হয়েছিল আমার পূর্বপুরুষের কথা দিয়ে, শেষ হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের ঘটনায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার 888sport sign up bonusকথা লিখেছিলাম ভোরের কাগজে, ধারাবাহিকভাবে, ১৯৯৬ সালে। পরের বছর আমার একাত্তর বই হয়ে বেরিয়ে যায়। এখন প্রবৃত্ত হয়েছি ১৯৭২ থেকে পরবর্তী সময়ের যে-888sport sign up bonus আমার আছে, তার আলেখ্য রচনা করতে। বন্ধুবান্ধবেরা আমার কাছে দাবি করেছেন, নিজের ইচ্ছাও কিছু কম নয়। কেউ কেউ অবশ্য সাবধান করে দিয়েছেন এই বলে যে, যত কাছাকাছি সময়ের কথা বলতে যাবো, তা নিয়ে তর্ক তত প্রবল হবে। এই সাবধান-বাণীর সত্যতা আমিও মানি। বিতর্ক এড়াবার একমাত্র উপায় কিছু না-লেখা। না-লিখতে মনটা সায় দিলো না। নিজের সম্পর্কে জানানোটা জরুরি নয়, কিন্তু যা দেখেছি, যা শুনেছি, তার অনেকখানি গুরুত্বপূর্ণ।’ …
বিপুলা পৃথিবীর ভূমিকায় আনিসুজ্জামান লিখেছেন, ‘আমার ইচ্ছে ছিল, বিপুলা পৃথিবী শেষ করি ২০০৭-এ এসে। বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করেও যখন দেখা গেল, পরিত্যক্ত সূত্র আর কুড়িয়ে নেওয়া যাচ্ছে না, তখন ঘটনাকালের সমাপ্তি ২০০০-এই টানলাম। তার জন্যে যোগ করতে হলো কয়েকটি পৃষ্ঠামাত্র।’
‘আনন্দ 888sport app download bd’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাপকের হাতে তুলে দেওয়ার তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল ২৯শে এপ্রিল। 888sport app download bdের খবর পাওয়ার পর আনিসুজ্জামান গৃহকর্ত্রী সিদ্দিকা জামানকে বললেন, ‘২৮শে এপ্রিল আমাকে কলকাতায় যেতে হবে। আনন্দ 888sport app download bdের জন্য।’ তাঁর কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন সিদ্দিকা জামান। আনিসুজ্জামান তাঁকে বোঝালেন, ‘আমি মরি-বাঁচি আমার যেতেই হবে, কারণ এবার এই 888sport app download bdের রজতজয়ন্তী হচ্ছে এবং আমি একজন সম্ভাব্য প্রাপক।’
সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসান্তে ফেরার ঠিক সাতদিন পর স্ত্রী ও পুত্র আনন্দকে নিয়ে ২৮শে এপ্রিল কলকাতায় গেলেন আনিসুজ্জামান। ২৯ তারিখের অনুষ্ঠানশেষে ৩০শে এপ্রিল ফিরে এলেন দেশে। মনে হয়, একমাত্র আনিসুজ্জামানদের মতো মানুষদের পক্ষেই এমনটা করা সম্ভব। কেবল তাই নয়, ৩রা জুন দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত 888sport appsে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার মুচকুন্দ দুবে-সম্পাদিত ও অনূদিত লালন শাহ ফকিরকে গীত (লালন শাহের গান – হিন্দি 888sport app download apk latest version) গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে বক্তৃতাও দিলেন আনিসুজ্জামান। ১৭ই আগস্ট 888sport appয় এশিয়াটিক সোসাইটিতে ‘মুর্তজা বশীর : মানুষ ও 888sport live chatী’ শীর্ষক আমিনা বশীর 888sport sign up bonus বক্তৃতাও প্রদান করলেন। আর ২৯শে অক্টোবর জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনে ‘বাংলার মুসলমানের পরিচয়-বৈচিত্র্য : অষ্টাদশ শতক অবধি’ শীর্ষক জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক গুণীজন বক্তৃতাও প্রদান করলেন তিনি। ৬ই নভেম্বর 888sport apps এশিয়াটিক সোসাইটিতে মিসেস নূরজাহান মুরশিদ ও অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ স্মারক বক্তৃতা প্রদান করে সে-বছর বক্তৃতা প্রদানের ইতি টানলেন। তবে কাজ কিন্তু শেষ হলো না। ১৮ই নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ ঘোষণার পর নাগরিক কমিটি আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে সভাপতির দায়িত্বও পালন করলেন তিনি। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয় তাঁর ইংরেজিতে রচিত 888sport liveগ্রন্থ ’ Cultural Pluralism and Other Essays, 888sport appর Journeyman প্রকাশনা সংস্থা থেকে।
২০১৭ সালের ১৭ই এপ্রিল আনিসুজ্জামানের বয়স আশি বছর পূর্ণ হয়। চন্দ্রাবতী একাডেমি, 888sport app এ-উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নেয়; কিন্তু তাঁর অসুস্থতার কারণে সে-উদ্যোগ স্থগিত হয়ে যায়। পরে তাঁর শরীর কিছুটা সুস্থ হলে সে-অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ২৭শে অক্টোবর তারিখে। চন্দ্রাবতী একাডেমি এ-উপলক্ষে আনিসুজ্জামান সম্মাননা গ্রন্থ নামে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করে। সম্মাননা গ্রন্থটির সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সম্পাদনা পরিষদের সদস্য ছিলেন শামসুজ্জামান খান, আবুল হাসনাত, সেলিনা হোসেন, সুবল কুমার বণিক ও মারুফুল ইসলাম। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম তাঁর ‘সম্পাদকের কথা’য় লেখেন, ‘আমরা তাঁর আশি বছর পূর্তি বা একাশি বছরে পদার্পণকেই শুধু উদযাপন করছি না, করছি তাঁর সারাজীবনের অর্জনকে, তাঁর আনিসুজ্জামান হয়ে ওঠাকে এবং আমাদের 888sport live football-সংস্কৃতিতে তাঁর অনিবার্য উপস্থিতিকে।’
আনিসুজ্জামানদের পরিবারে ২০১৮-এর শুরুটা ছিল একটি আনন্দের সংবাদ দিয়ে। সেটি ছিল – কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আনিসুজ্জামানকে ‘জগত্তারিণী পদক’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্দিকা জামানের লেখা থেকে আমরা জানতে পাচ্ছি, আনিসুজ্জামান এই প্রাপ্তিতে অসম্ভব আনন্দিত হয়েছিলেন। ‘পদ্মভূষণ অনেক বড় 888sport app download bd হলেও 888sport live football জগতে জগত্তারিণী পদকের মূল্য অপরিসীম। এই পদক প্রতি দুই বছরে একজনকে দেওয়া হয়। ১৯২১ সালে প্রবর্তিত এই 888sport app download bdের প্রথম প্রাপক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পরবর্তী সময়ে শরৎচন্দ্র, নজরুল এঁরাও সম্মানিত হয়েছিলেন এই পদকে।’ তবে শারীরিক অসামর্থ্যরে কারণে আনিসুজ্জামান এবার নিজে উপস্থিত থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-প্রদত্ত এই পদক গ্রহণ করতে পারেননি।
অবশ্য অচিরেই পশ্চিমবঙ্গে যেতে হলো তাঁকে শান্তিনিকেতনে 888sport apps ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য। ২০১৮ সালের ২৫শে মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিনিকেতনে যান 888sport apps ভবন উদ্বোধন করতে। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন, আনিসুজ্জামানসহ। সেখান থেকে ২৬শে মে আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান আনিসুজ্জামান, সাম্মানিক ডি.লিট উপাধি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণের জন্য। 888sport appয় ফেরেন ২৮শে মে। ১৯শে জুন 888sport apps সরকার আনিসুজ্জামানকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেন। আনিসুজ্জামান এই নিয়োগের পর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হব সেই চিন্তাই খুব কম হতো, কারণ আমাদের সময় অধ্যাপক হতেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র মতো বিদ্বান মানুষ। আর এখন ন্যাশনাল প্রফেসর হয়ে গেলাম। আমি দেশকে যা দিয়েছি, তার অনেক বেশি দেশ আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।’
বছরের একেবারে শেষের দিকে কোনো একটি কাজে সস্ত্রীক কলকাতা গিয়েছিলেন আনিসুজ্জামান। সেখানকার কাজ সেরে জনপ্রিয় কথা888sport live footballিক সমরেশ মজুমদারের আমন্ত্রণে ডুয়ার্সের চা-বাগানে বেড়াতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সে-888sport slot gameের কথা সংক্ষিপ্ত কিন্তু মনোজ্ঞভাবে লিখেছেন সিদ্দিকা জামান। সেটুকু উদ্ধৃত করা হলো এখানে : ‘২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আমরা দুজন কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিই। ওখানের কাজ সেরে সমরেশ মজুমদারের অনুরোধে উত্তর দিনাজপুরে ওর বাড়ির কাছে ডুয়ার্সের চা-বাগানে বেড়াতে যাই। চা-বাগানের নাম ছিল ‘সুহাসিনী গার্ডেন’। ওখানে চা-বাগানের ম্যানেজার অন্বিন্দু রায় ও রাখী এসে আমাদের তিনজনকে নিয়ে যায়। প্রথমে ভেবেছিলাম আমরা গেস্ট হাউজে উঠব, পরে দেখলাম অন্বিন্দু আর রাখীর বাসায় উঠেছি। বিশাল বাড়ি, সাজানো গোছানো এবং তার চেয়ে সুন্দর ওদের বাড়ির চারপাশ ঘিরে আছে মসলাপাতি, ফল, ফুল ও ঔষধিসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ। এবং আমরা যখন গেছি এখন অনেক ফল পেকে গাছে ধরে আছে, আবার মাটিতেও পড়ে আছে। ওঁরা সব সময় আমার খোঁজখবর নেন আর আমাদের পরিবারের সবাইকে নিয়ে যেতে অনুরোধ করেছেন। কখনো যাবার সুযোগ হয়তো হবে কিন্তু আনিসুজ্জামান ছাড়া ওই আনন্দ তো আর পাব না।’
২০১৯ সালে ‘সার্ক 888sport live football 888sport app download bd’ পান আনিসুজ্জামান। ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এ-888sport app download bd প্রদানের যে-তারিখটি প্রথমে নির্ধারিত হয় সে-তারিখে ভুটান যাওয়ার সব প্রস্তুতি নেন আনিসুজ্জামান। কিন্তু শেষ মুহূর্তে খবর এলো, ভুটানের রাজার কোনো এক আত্মীয়ের মৃত্যুর কারণে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে, তাই অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয় ২৯শে জুন। এই সময়ে আনিসুজ্জামানের মেজ বোন তৈয়মুন্নেসা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৭ই জুন তাঁর জীবনাবসান ঘটে। এর মাত্র ছয়দিন পর আনিসুজ্জামান সস্ত্রীক থিম্পু যান, পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান বিঘ্নিত হতে না দিয়ে। এদিকে তৈয়মুন্নেসার মৃত্যুকালে তাঁর বড় মেয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে ছিলেন। ৩০শে জুন তিনিও মারা যান।
জুন মাসে (২০১৯) ভুটান যাওয়াই ছিল আনিসুজ্জামানের শেষ বিদেশযাত্রা। সিদ্দিকা জামান লিখেছেন, ‘কী মনে করে আনিসুজ্জামান আমাকে বলল, ‘এই আমার শেষ বিদেশ যাত্রা।’ হলোও তাই। এবং বিদেশে পাওয়া শেষ 888sport app download bdও ছিল এটি।’
আনিসুজ্জামানের শরীরও এসময় খারাপ হয়ে আসছিল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অনুরোধ বা আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে তাঁর শরীর ও মনের ওপর খুব বেশি চাপ পড়ে যাচ্ছিল। সিদ্দিকা জামান লিখেছেন, ‘এই বয়সেও প্রতিদিন ওর দুই-তিনটা অনুষ্ঠান লেখেই থাকত। সেই সঙ্গে দাওয়াত তো থাকতই। দিন শেষে যখন ঘরে ফিরত, এক একদিন ওর ক্লান্ত চেহারার দিকে তাকানো যেত না। ঘরে ঢুকে পা টেনে টেনে হাঁটত।
‘মনে পড়ে ২৯ জানুয়ারি সকাল ৯.৩০টায় বের হয়ে, ১১টায় একটা মিটিং সেরে, দুপুরে বাইরে খেয়ে আবার ৪টায় মিটিং করে, ৭টা থেকে দাওয়াত খেয়ে রাত ১১.১৫তে বাসায় ফিরেছে। আমি শুচির বাসায় ছিলাম। কথা ছিল ফেরার সময় আমাকে ও নিয়ে আসবে। কিন্তু সে ভুলেই গেছে যে আমাকে নিয়ে যাবে। কোনোদিন এরকম ভুল হয় না। পরে বুঝলাম শরীর এতই খারাপ ছিল যে আমায় নিয়ে যাবার কথা বলতে পারেনি। রাত বেশি দেখে আবুল হোসেনকে যখন ফোন করলাম তখন ও বলল, খালাম্মা স্যারকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে গাড়িতে থাকা অন্যদের পৌঁছাতে যাচ্ছি। ওঁদের নামিয়ে দিয়ে আপনাকে নিয়ে আসব।’ রাত ১১.৪৫-এ বাসায় এসে দেখি, আনিসুজ্জামান আধা অচেতন হয়ে শুয়ে আছে।’
ফেব্রুয়ারি মাসে (২০২০) বাংলা একাডেমিতে বইমেলা উদ্বোধনশেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে কাহিল হয়ে পড়েছিলেন আনিসুজ্জামান। হাঁপাচ্ছিলেন খুব। শরীরের দুর্বলতা আর ঠেকানো যাচ্ছিল না কিছুতেই।
ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখে ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের 888sport app download for androidসভায় গিয়ে অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন আনিসুজ্জামান। তাঁকে তাড়াতাড়ি বাসায় নিয়ে আসা হয়। এই রকম নাজুক শারীরিক অবস্থায়ও ৭ তারিখে বুয়েট অ্যালামনাই অনুষ্ঠানে গেলেন। বিকেলে ভর্তি হলেন ল্যাবএইড হাসপাতালে। ৮ তারিখে দিল্লির একজন ডাক্তারকে নিয়ে ডা. সোহরাবুজ্জামান আনিসুজ্জানের হার্টের অবস্থা দেখে বললেন যে, দিল্লির সেই চিকিৎসক এপ্রিলে আবার 888sport appয় আসবেন। তখন তাঁর হার্টের অপারেশন করা হবে। কিন্তু করোনার আগ্রাসন তখন বাড়ছিল। করোনা আর লকডাউনের কারণে সে-সুযোগ আর মিলল না। ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে বাসায় ফিরে এলেন আনিসুজ্জামান।
১৮ই ফেব্রুয়ারি জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর অনুরাগী ও নিকটজনদের কেউ কেউ বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেন। আনিসুজ্জামান নিজেও আবার নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুরু করলেন। এপ্রিলের ৫ তারিখে আবার ল্যাবএইডে ভর্তি হলেন দু-তিনটি পরীক্ষার জন্য। ছয়দিন পর বাসায় ফিরে এলেন। এদিকে করোনাজনিত বিধিনিষেধ ও লকডাউনের কারণে অনুষ্ঠানাদিতে যোগ দেওয়াও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২৫শে এপ্রিল আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন আনিসুজ্জামান। ২৭শে এপ্রিল ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স আনিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো সেখানে। সিসিইউতে রাখা হলো। কিন্তু অবস্থার তেমন উন্নতি ঘটল না। ৯ই মে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলো 888sport appর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। পাঁচদিন পর ১৪ই মে সেখানেই জীবনাবসান ঘটে আনিসুজ্জামানের। ৮৩ বছর বয়সে পার্থিব জীবন ছেড়ে চলে গেলেন তিনি। অন্তিম শয়ানে শায়িত হলেন আজিমপুর কবরস্থানে পিতার কবরে। কল্পনায় দেখতে পাই – শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে মরদেহ, হাজারো বন্ধু, ভক্ত ও চেনা-অচেনা মানুষের 888sport apk download apk latest versionপ্লুত ভালোবাসায় সিক্ত পুষ্পস্তবক আর ফুলের সমারোহে 888sport app পড়েছে মরদেহ, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজায় লোকারণ্য। না, তেমন কিছু ঘটেনি। করোনালাঞ্ছিত বিপন্ন সময়ে মাত্র কয়েকজন কাছের মানুষ সঙ্গী হয়েছিলেন তাঁর অন্তিমযাত্রায়, তবুও দেশে-বিদেশে বহু মানুষের 888sport apk download apk latest version, ভক্তি ও ভালোবাসার অদৃশ্য আলোড়নে সিক্ত হয়ে চলে গেলেন ব্যক্তি আনিসুজ্জামান। কিন্তু স্ব-কাল, স্ব-দেশ ও স্ব-সমাজের স্বরূপসন্ধানী আনিসুজ্জামান, ঋদ্ধ মানবিক চেতনায় সম্পন্ন মানুষ আনিসুজ্জামান চির অমøান ও উষ্ণ থাকবেন আমাদের সবার হৃদয়ে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.