ফারুক মঈনউদ্দীন
… মিশরীয়রা কি জার্মানদের মতো তাদের নিষ্ঠা এবং কর্মোদ্যোগের জন্য চিহ্নিত? অথবা জাপানিদের মতো? তারা কি আমেরিকানদের মতো ঝুঁকি নিতে এবং পরিবর্তন পছন্দ করে? তারা কি ফরাসি এবং ইতালীয়দের মতো ইতিহাস ও 888sport live chatকে সম্মান দেয়?… কাপুরুষতা আর ভণ্ডামি, প্রতারণা আর ধূর্ততা, শ্রমবিমুখতা আর বিদ্বেষ – এসবই আমাদের মিশরীয়দের বৈশিষ্ট্য। আর নিজেদের সম্পর্কে সত্যটা জানি বলে আমরা গলাবাজি আর মিথ্যা দিয়ে – দিনের পর দিন আমাদের ‘মহান’ মিশরীয়দের নিয়ে অসার স্লোগান আউড়ে সেসব ঢেকে রাখতে চাই। দুঃখের কথা এই যে, আমরা সেই সব মিথ্যা এতো বেশিবার আউড়েছি যে, আমরা সেসব বিশ্বাস করে ফেলেছি। বস্তুত – এটা সত্যিই আজব যে নিজেদের সম্পর্কে এইসব মিথ্যেকে আমরা বসিয়ে নিয়েছি আমাদের গান আর জাতীয় সংগীতে। পৃথিবীর অন্য কোনো মানুষকে এরকম করতে দেখেছেন? যেমন ইংরেজরা কি গায়, আহা ইংল্যান্ড, ও আমার দেশ! তোমার ভূমিতল যেন মর্মরে গাঁথা, তোমার ধূলিকণা যেন কস্তুরী আর অম্বর ঘ্রাণে মাখা? এরকম মামুলি আমাদের চরিত্র। ভেবে দেখুন, প্রাইমারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণীর বইতে পড়লাম, ‘বিধাতা মিশরকে খুব ভালোবাসেন এবং তাঁর মহান কিতাবে দেশটির কথা বলেছেন। সে জন্য তিনি দেশটিকে শীতে ও গ্রীষ্মে মনোরম মৃদু আবহাওয়া দান করেছেন, এবং তাই তাকে তার শত্র“দের কুটকৌশল থেকে রক্ষা করেন।’
তাহলে দেখুন তারা বাচ্চাদের মাথার ভেতর কীরকম মিথ্যের পরম্পরা ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আমাদের এই ‘মনোরম মৃদু আবহাওয়া’ বাস্তবিকই এক নরক। মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ঝলসানো গরম আমাদের চামড়ায় ছ্যাঁকা দিতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না সূর্যের উজ্জ্বল তাপে প্রাণিকুল মরতে শুরু করে, গলতে শুরু করে রাস্তার পিচ – তারপরও আমরা আমাদের চমৎকার আবহাওয়ার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই! আর তাদের দাবি অনুযায়ী, ঈশ্বর যদি মিশরকে তার শত্র“দের কুটকৌশল থেকে রক্ষাই করেন তাহলে কীভাবে পৃথিবীর সবাই আমাদেরকে দখল করতে পেরেছিল। বাস্তবে মিশরের ইতিহাস রোমানদের থেকে শুরু করে ইহুদিদের পর্যন্ত পৃথিবীর সব জাতির কাছে আমাদের পরাজয়ের ধারাবাহিকতা ছাড়া আর কিছু নয়। … কোনো মিশরীয় যত শিক্ষিত হোক কিংবা যত ওপরেই উঠুক না কেন, আপনি যদি তার চাইতেও শক্তিশালী হন সে আপনার সামনে নুয়ে পড়বে, আবার একই সঙ্গে আপনার সঙ্গে হাসবে, তেল মারবে আর ভেতরে ভেতরে আপনাকে ঘেন্না করবে আর এমনভাবে আপনাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করবে যাতে তাকে আপনার মুখোমুখি হতে বা বিপদে পড়তে না হয়। একটা ভৃত্যমাত্র – এই হচ্ছে আপনার মিশরীয়রা। আমি মিশরীয়দেরকে ঘেন্না করি, ঘেন্না করি মিশরকে।
এই দীর্ঘ উদ্ধৃতিটুকু মিশরীয় লেখক আলা আল আসওয়ানির ইসাম আবদ এল-আতির দলিলপত্র (আওরাক ইসাম আবদেল আতি) নামের 888sport alternative linkিকার প্রথম অধ্যায় থেকে নেওয়া। এটি প্রকারান্তরে দীর্ঘদিন মিশরে নিষিদ্ধ ছিল, কারণ সরকারি প্রকাশনা সংস্থা। বেসরকারি প্রকাশকরাও এটি প্রকাশ করার সাহস পাননি। অবশ্য এরকম বিস্ফোরক সব মন্তব্য নিয়ে মিশরের মতো দেশে কোনো বই প্রকাশ করাটা হতো দুঃসাহস। আমাদের দেশ হলে এটির জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়ে যেত লেখকের বিরুদ্ধে। এই 888sport alternative linkিকাটি লেখার পর সেটি প্রকাশ করার পথের বিঘœ বিষয়ে এক দীর্ঘ ভূমিকা লিখেছেন তিনি তাঁর বন্ধুসুলভ অনল (নিরানুস সাদিকা) গল্পগ্রন্থে, যেখানে 888sport alternative linkিকাটিও গ্রন্থিত। তিনি জানান, 888sport alternative linkিকাটি প্রকাশের জন্য তিনি মিশরের সরকারি প্রকাশনা সংস্থা জেনারেল ইজিপশিয়ান বুক অর্গানাইজেশনে যোগাযোগ করেছিলেন। সেখানে পাণ্ডুলিপি পড়ে যাঁরা নির্বাচন করেন তাঁরা সেখানকারই সাধারণ কর্মচারী, কোনো 888sport live footballের অধ্যাপক, লেখক বা পণ্ডিত নন। বইটির বিস্ফোরক বক্তব্যের কারণে তাঁরা বইটি ছাপতে রাজি না হলে আসওয়ানি তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে বলেন, এসব বক্তব্য তাঁর নয়, 888sport alternative linkিকাটির নায়কের। তখন তাঁদের একজন চরম অনিচ্ছাসত্ত্বেও প্রস্তাব দেন, মিশর সম্পর্কে বইটির নায়কের যে বিরূপ মনোভাব সেটির সঙ্গে যদি তিনি সহমত না হন তাহলে একটি অস্বীকারপত্র লিখে দিলে তাঁরা বইটি ছাপতে রাজি হতে পারেন। আসওয়ানি তাৎক্ষণিকভাবে একটা কাগজ নিয়ে লিখে দেন, ইসাম আবদ এল-আতির দলিলপত্র 888sport alternative linkিকাটিতে নায়ক মিশর এবং মিশরীয়দের সম্পর্কে যে মনোভাব দেখিয়েছেন তার সঙ্গে তিনি একমত নন। তার সঙ্গে তিনি একথাও যোগ করেন, অস্বীকারপত্রটি তিনি লিখেছেন জেনারেল ইজিপশিয়ান বুক অর্গানাইজেশনের নির্বাচকদের অনুরোধে।
এরকম একটা অস্বীকারপত্র লিখতে রাজি হওয়ার কারণ হিসেবে আসওয়ানি তাঁর ভূমিকায় লিখেছেন, তিনি তাঁর প্রথম বইটি প্রকাশ করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন। প্রথম গ্রন্থ প্রকাশের ব্যাপারে সকলেরই এরকম উৎসাহ থাকে। তবে মূল কারণটা আরও গভীর। তাঁর ভাষায়
… আমি হিসাব করে দেখলাম যে এতে একটা কেলেঙ্কারি হবে, যা জেনারেল ইজিপশিয়ান বুক অর্গানাইজেশনের দুর্নীতি এবং অজ্ঞতাই উদ্ঘাটিত করবে।
অবশ্য অনেক ধানাই-পানাই করে শেষ পর্যন্ত তাঁকে জানানো হয়, বইটি তাঁরা প্রকাশ করতে পারেন যদি তিনি ওটার প্রথম অধ্যায়টা ছেঁটে ফেলেন, যা তিনি কোনোভাবেই করতে রাজি ছিলেন না।
প্রথম বইটি প্রকাশের প্রয়াস এভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর আসওয়ানি সিদ্ধান্ত নেন, নিজ খরচেই বইটি তিনি প্রকাশ করবেন। ততদিনে আরো কিছু গল্প লেখা হয়েছে তাঁর। সেগুলোর সঙ্গে 888sport alternative linkিকাটিসহ নিয়ে প্রথম গল্পগ্রন্থ বন্ধুসুলভ অনল প্রকাশ করেন তিনি মাত্র তিনশ কপি ছেপে। এগুলো সমালোচক এবং বন্ধুদের মাঝে বিতরণ করার পর বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যায়, পত্রিকায় সপ্রশংস আলোচনা বের হয়, অথচ বাজারে পাওয়া যেত না বইটি, যাওয়ার কথাও নয়, কারণ এটির কোনো বিপণন হয়নি। এরপর (২০০২) প্রকাশিত হয় তাঁর সাড়া-জাগানো বিতর্কিত 888sport alternative link ইমারাৎ ইয়াকুবিয়ান বা ইয়াকুবিয়ান বিল্ডিং। এটার প্রথম সংস্করণ শেষ হয়ে যায় এক মাসের মধ্যে এবং পরবর্তী পাঁচ বছর ধরে এটি আরববিশ্বে বেস্টসেলার হিসেবে বিকোতে থকে। এযাবৎ ২৭টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে বইটি। মূল আরবি থেকে হামফ্রে ডেভিসের ইংরেজি 888sport app download apk latest versionগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। এটির live chat 888sportরূপ মিশরের বড় বাজেটের সিনেমার একটি হিসেবে বক্স অফিস মাতিয়ে রেখেছিল দীর্ঘদিন ধরে। তবে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার আগে মিশরীয় সংসদের কিছু সদস্য চেয়েছিলেন এটির কিছু অংশ সেন্সর করার জন্য। বইটির প্রাথমিক সাফল্য দেখে প্রকাশকরা তাঁর যে কোনো রচনা প্রকাশে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি তাঁদের একজনকে ইসাম আবদ এল-আতির দলিলপত্র 888sport alternative linkিকাটি ছাপতে দেন। সেই প্রকাশক বইটি পড়ার পর জানান, ওটার যা বক্তব্য তাতে এটি ছাপলে তাঁকে জেলে যেতে হবে। আসওয়ানি তাঁর ভূমিকায় লেখেন যে, ব্যক্তিগত কারণে তাঁর প্রতি বিরূপ একজন সমালোচক এক দীর্ঘ আলোচনায় নির্দ্বিধায় তাঁকে বইটির নায়কের সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে এক করে ফেলেন এবং পাশ্চাত্যপ্রভাবে নিজ দেশকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার জন্য দায়ী করেন।
এখানে একটা বিষয় উল্লেখ করা দরকার, 888sport alternative linkিকাটির কথক কেবল মিশর এবং মিশরীয়দের বিরুদ্ধেই বিষোদ্গার করেননি। মার্কসবাদ চর্চা করা সত্ত্বেও মার্কসবাদের মূল দর্শন এবং টার্গেট গ্রুপ দরিদ্র মানুষের বিরুদ্ধেও কথা বলতে ছাড়েনি সে।
আমি দুবছর ধরে একজন নিবেদিতপ্রাণ মার্কসবাদী ছিলাম, কিন্তু সবসময়ই ভেবেছি যে, আমি বদলে যাবো। আমি বুঝতে পারতাম না কেন আমি শ্রমিক আর কৃষকদের মতো বিশ্রী প্রাণীগুলোর জন্য ত্যাগ করবো। আমি লক্ষ করতাম সাধারণ মানুষগুলো কীভাবে খুব সস্তা কৌতুক বলাবলি করে। কোনো ভোজের সময় অতি-উৎসাহী পশুর মতো সুন্দর সবকিছুকে তাদের ভারি অন্ধ পা দিয়ে মাড়িয়ে রাস্তা দিয়ে ধেয়ে যেতে দেখলে তাদের সম্পর্কে মার্কসের মহান কথাগুলো আমার অবজ্ঞা আর ঘৃণার সামনে কুঁচকে যেত।
888sport live footballে কোনো কল্পিত চরিত্রের সঙ্গে পাঠকের একাত্ম হয়ে পড়ার যে বিভ্রান্তি সে সম্পর্কে আসওয়ানি মনে করেন, এটির দায় পাঠকের একার ঘাড়ে চাপানো উচিত নয়। তাঁর মতে, দুটি কারণে সূক্ষ্ম সুতো দিয়ে এটি 888sport live footballের প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রথমত পাঠের মূল সাফল্য নিহিত পাঠকের বর্ধিত কল্পনাশক্তির মধ্যে। ফলে তাঁরা গল্প বা 888sport alternative linkের কাহিনি বা চরিত্রকে নিজেদের সঙ্গে এক করে দেখতে পারেন। দ্বিতীয়ত, 888sport live football হচ্ছে জীবনযাপনের 888sport live chatিত বয়ান, আর 888sport alternative link হচ্ছে কাগজের বুকে (আঁকা) আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিচ্ছবি, তবে আরও গভীর, অর্থপূর্ণ এবং সুন্দর। তার অর্থ এই যে, 888sport live football কোনো বিচ্ছিন্ন 888sport live chat নয়। পক্ষান্তরে তার বিষয়বস্তু হচ্ছে জীবন – যা ইতিহাস, সমাজতত্ত্ব এবং নৃতত্ত্বকে ছেদ করে যায়। আসওয়ানি মনে করেন, একজন গল্পকার কোনো পণ্ডিত নন, তিনি একজন 888sport live chatী, যিনি তাঁর দেখা চরিত্রদের দ্বারা মানসিকভাবে প্রভাবিত হন এবং তাদের তাঁর সৃষ্টিকর্মে উপস্থাপন করেন। আসওয়ানি তাঁর ভূমিকায় আক্ষেপ করে বলেছেন,
আমি কেন এসব লিখছি? কারণ কল্পনা এবং বাস্তব, 888sport alternative link রচনা এবং সমাজতাত্ত্বিক গবেষণার মধ্যে যে বিভ্রান্তি – তা অনেকটা শাস্তিস্বরূপ প্রয়োগ করা হয়েছিল আমার 888sport alternative linkিকাটির প্রতি, ফলে এটি বহু বছরের জন্য নিষিদ্ধ থাকে।
আলা আল আসওয়ানি মূলত ছিলেন একজন দন্ত চিকিৎসক। ১৯৮০ সালে আমেরিকা থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফেরার পর তিনি লেখালেখিতে পুরোপুরি নিয়োজিত হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য তাঁকে ডাক্তারি পেশাটাও চালিয়ে যেতে হয়। কিন্তু 888sport live footballসৃষ্টির অভিপ্রায়ে বাকি সময়টা তিনি সম্ভব-অসম্ভব সব ধরনের জায়গায়, বিখ্যাত-কুখ্যাত বহু ঠেকে বিচরণ করতে থাকেন ব্যতিক্রমী কোনো চরিত্রের খোঁজে। যেসব চরিত্র তাঁকে আকর্ষণ করত তাদের সঙ্গে বহু নিশিথ অভিযানে তিনি হয়তো সারারাত কাবার করে দিয়েছেন। তার পরদিন আবার চাকরিতে গিয়েছেন। এভাবে তিনি ধনী-গরিব, অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ, দেউলিয়া রাজপুত্র, মদ্যপ, দাগি আসামি, স্খলিত মেয়েমানুষ, ধর্মান্ধ জঙ্গি, ঠগ, অপরাধী – বিভিন্ন ধরনের বিচিত্র মানুষের সঙ্গে মিশেছেন। এরকম একটা চরিত্র তাঁর মনে খুব দাগ কাটে, ত্রিগুণ মাহমুদ (ট্রিপল মাহমুদ)। তার বাবা এবং দাদা উভয়ই মাহমুদ ছিলেন বলে তৃতীয় প্রজন্মের এই মাহমুদকে সবাই ট্রিপল মাহমুদ নামেই ডাকত। এই চরিত্রটিকে দেখেই তিনি লেখেন ইসাম আবদ এল-আতির দলিলপত্র। মিশরীয় সমাজের দুর্নীতি, ভণ্ডামি আর স্বেচ্ছাচারে হতাশ এক উচ্চশিক্ষিত যুবক ইসাম এটির মূল চরিত্র। একটা কাগজের রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট এক ব্যর্থ পেইন্টার ছিল তার বাবা। তাদের জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত আর ব্যর্থতার দলিল এই 888sport alternative linkিকা।
দুই
ইয়াকুবিয়ান বিল্ডিং 888sport alternative linkটির মূল রঙ্গমঞ্চ কায়রোর কেন্দ্রে। এই নামের দশতলা অভিজাত ভবনটি তৈরি করেছিলেন হাগব ইয়াকুবিয়ান নামে এক আর্মেনীয় কোটিপতি ১৯৩৪ সালে। এটি 888sport alternative linkের কোনো কল্পিত ভবন নয়, এখানে আলা আসওয়ানির বাবা আব্বাস আসওয়ানির একটা অফিসও ছিল। আব্বাস আসওয়ানি নিজেও ছিলেন স্বনামখ্যাত লেখক। তিনি ১৯৭৪ সালে 888sport live footballে রাষ্ট্রীয় 888sport app download bd লাভ করেছিলেন। ইতালীয় স্থাপত্য সৌকর্যে তৈরি এই ভবনে থাকতেন মন্ত্রী, 888sport live chatপতি, বিদেশি নাগরিক এবং কায়রোর অভিজাত মানুষেরা। এটির নিচতলায় ছিল এখানকার বাসিন্দাদের দামি গাড়ি রাখার গ্যারেজ আর ছাদে ছিল তাদের মালপত্র কিংবা পোষা কুকুর-বেড়াল রাখার জন্য ছোট-ছোট কুঠুরি। ১৯৫২ সালে জামাল আবদুন নাসের এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করার পর এই ভবনের বাসিন্দাদের হটিয়ে দিয়ে এখানে থাকতে দেওয়া হয় সামরিক অফিসার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারকে। কিছু অ্যাপার্টমেন্ট আবার ভাড়া দেওয়া হয় বিভিন্ন অফিস হিসেবে। দন্ত চিকিৎসক হিসেবে আলা আল আসওয়ানির চেম্বারটিও ছিল এই ভবনে। এই ভবনের ছাদে আগে যে ঘরগুলো ভাঁড়ার কিংবা পোষা প্রাণী রাখার কাজে ব্যবহৃত হতো সেগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয় বিভিন্ন দরিদ্র পরিবারকে, যাদের অনেকেই এই ভবনের বাসিন্দাদের কর্মচারী ছিল। 888sport alternative linkটি যেভাবে মিশরীয় সমাজ এবং রাষ্ট্রকে দুর্নীতিপরায়ণ এবং সুশাসনরহিত হিসেবে চিহ্নিত করেছে, একসময়কার অভিজাত এবং উচ্ছল কর্মব্যস্ত ভবনটির পরবর্তী দশা যেন কায়রো তথা মিশরের পচনশীলতারই প্রতীক।
888sport alternative linkটির বহুমুখী চরিত্রবিন্যাসে যে ব্যতিক্রমী মানুষগুলোকে আমরা দেখতে পাই, তাদের তৎকালীন কায়রোর প্রকাশ্য ও গোপন জীবনযাত্রার প্রতিনিধি হিসেবে দক্ষভাবে উপস্থাপন করে আসওয়ানি তুলে ধরেছেন সেই সমাজের দুরাচার এবং অন্যায়ের নগ্নরূপ। আসওয়ানির এই 888sport alternative linkটিতে ধনী এবং নির্ধন বিভিন্ন চরিত্রের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণে আধুনিক কায়রোর এক মর্মভেদী চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। 888sport alternative linkটির শুরুতে নাট্যগ্রন্থের মতো প্রধান চরিত্রগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া আছে। সেই পরিচিতিপত্রের সাহায্য না নিয়েও প্রধান যে চরিত্রগুলো 888sport alternative linkটিকে টেনে নিয়ে যায় তাদের আলাদাভাবে পরিচিত করিয়ে দেওয়া উচিত। এদের প্রায় প্রত্যেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইয়াকুবিয়ান ভবনের সঙ্গে সম্পর্কিত, কারো আবাস, কারো অফিস এই ভবনে, বাকিরা তাদের কারো সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রে উপস্থিত হয়েছে 888sport alternative linkের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে।
888sport alternative linkের শুরুতেই আছে প্রধান এক চরিত্রের কথা, জাকি বে এল দেসুকি, যার বাবা একাধিকবার মিশরের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এবং ছিলেন মিশরের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের একজন। উদ্দাম 888sport promo codeসঙ্গলিপ্সু ফরাসি শিক্ষায় শিক্ষিত এই প্রকৌশলীর অফিস ছিল ইয়াকুবিয়ান ভবনেই। তার ভৃত্য এবং সহকারী ছিল একপাওয়ালা আবাসখারন। আর এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র ফরাসি সংবাদপত্রের সম্পাদক, অভিজাত বুদ্ধিজীবী সমকামী হাতিম রশিদ এবং তার প্রেমিক বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত দরিদ্র আবদু। রহস্যময় অতীত নিয়ে কোটিপতি ব্যবসায়ী হাগ মুহাম্মদ আজ্জাম যখন ভাগ্যান্বেষণে কায়রো আসে। তখন তার পেশা ছিল জুতা পোলিশ। এখন তিনি মোটর গাড়ি, রিয়েল এস্টেটসহ বিভিন্ন ব্যবসার মালিক। শোনা যায়, একসময় মাদক ব্যবসা করে তিনি এতদূর উঠে এসেছেন। ইয়াকুবিয়ান ভবনের এক দারোয়ানের পরহেজগার এবং মেধাবী ছেলে তাহা এল শাজলির আশৈশব স্বপ্ন ছিল পুলিশ অফিসার হওয়ার, কিন্তু চাকরির সব পরীক্ষায় উৎরে গেলেও কেবল তার বাবার সামাজিক অবস্থানের কারণে তাকে পুলিশে নেওয়া হয় না। প্রায় একই সময় তার বাগদত্তা প্রেমিকা বুসায়নার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এই সব মূল চরিত্রের সঙ্গে বিভিন্নভাবে সম্পর্কের সূত্রে উপস্থাপিত হয়েছে আরও কয়েকটা চরিত্র। যেমন : মিশরীয় দূষিত রাজনীতির নীতিহীন রাজনীতিবিদদের একজন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা কামাল এল ফৌলি, আবাসখারনের ভাই দর্জি মালেক, জাকি এল দেসুকির বয়োজ্যেষ্ঠা তিনবার বিয়ের পিঁড়িতে বসা বোন দৌলত এল দেসুকি এবং কামাল এল ফৌলির সঙ্গে গোপনে বিবাহিত, প্রকারান্তরে রক্ষিতা সউদ গাবের।
জাকি এল দেসুকি তার ৬৫ বছরের জীবনে রাজপরিবারের আত্মীয়া থেকে শুরু করে, এমনকি রাস্তা থেকে তুলে আনা ভিখারিনীকে পর্যন্ত সফল সম্ভোগে সক্ষম হলেও শেষ পর্যন্ত কায়রো বার নামে কুখ্যাত এক বারে কর্মরত রাবাব নামের এক বারবনিতা তারই আমন্ত্রণে অভিসারে এসে তাকে মাদক প্রয়োগ করে তার টাকাকড়ি, সোনার ঘড়ি, কলম ইত্যাদি নিয়ে সটকে পড়ে। খোয়া যাওয়া জিনিসের মধ্যে ছিল তার বোন দৌলতের হীরের আংটি, যেটি মেরামত করিয়ে এনেছিল জাকি। এই অপূরণীয় লোকসানের অজুহাতে জাকিকে তাদের যৌথ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেয় দৌলত। এমনকি একপর্যায়ে তার বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেয় সে।
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বাবার সামাজিক অবস্থানের কারণে এবং বেশ মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়ার অপারগতায় তাহা এল শাজলি পুলিশ অফিসারের চাকরিটা থেকে যখন বঞ্চিত হয় তার আগে থেকেই তার বাগদত্তা বুসায়নার সঙ্গে তার সম্পর্কের কোথাও একটা সূক্ষ্ম চিড় ধরেছিল। বুসায়না তার যৌননিপীড়নকারী বস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাকরি ছেড়ে আরো অনেক বেশি বেতনে যখন জাকি এল দেসুকির প্রাইভেট সেক্রেটারি হিসেবে যোগ দেয়, ততদিনে তাহার সঙ্গে তার মত ও পথ অপ্রত্যাবর্তনযোগ্য দূরত্বে পৌঁছে গেছে। এমন সামাজিক অন্যায়ে গভীর হতাশায় নিমজ্জিত তাহাকে ওর মা সান্ত্বনা দিয়ে বলে, ‘দেশটা আমাদের নয় বাবা, এটা পয়সাওয়ালা মানুষের।’ এই হতাশার কারণে ধীরে-ধীরে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তাহা এবং অনিবার্যভাবে গ্রেফতার হয়। সেখানে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মুচলেকা দিয়ে যখন বের হয়ে আসে, তার ভেতর জ্বলছিল প্রতিশোধের আগুন। একসময় সে জঙ্গি গোষ্ঠীর গোপন প্রশিক্ষণ শিবিরে চলে যায়, সেখানে আরেক ‘শহিদ’ জঙ্গির বিধবার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। প্রতিশোধ নেওয়ার দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এক সামরিক অফিসারকে খুন করার অভিযানে গিয়ে তার অতিউৎসাহের কারণে নিহত হয় তাহা।
জাকি এল দেসুকির ভৃত্য আবাসখারনের ভাই দর্জি মালেক অতি ধূর্ত এবং লোভী প্রকৃতির মানুষ। ইয়াকুবিয়ান ভবনের ছাদে ঘাঁটি গেড়ে বসার পর বিভিন্ন কৌশলে আরও কিছু জায়গা দখল করার পর ওয়ারিশবিহীন কোনো বৃদ্ধ বাসিন্দার অ্যাপার্টমেন্ট দখলের পাঁয়তারা কষে সে। জাকি এল দেসুকি তেমনই একজন নিঃসঙ্গ মানুষ। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মালেক তাহার প্রাক্তন প্রেমিকা বুসায়নাকে জাকির সেক্রেটারি হিসেবে ভালো বেতনে চাকরি পাইয়ে দেয়। বিনিময়ে সে বুসায়নাকে শর্ত দেয় যে, জাকির কোনো এক মাতাল অবস্থায় মালেকের সঙ্গে একটা ভাড়াটে চুক্তির দলিলে সই আদায় করে দিতে হবে তাকে, যাতে জাকির মৃত্যুর পর মালেক তার ভাই আবাসখারনের মাধ্যমে সেই অ্যাপার্টমেন্টের দখল নিতে পারে। বিনিময়ে বুসায়নাকে পাঁচ হাজার পাউন্ড ঘুষ কবুল করে মালেক। বুসায়না প্রথম দিকে রাজি থাকলেও শেষ পর্যন্ত মালেকের কঠোর হুমকি সত্ত্বেও জাকির প্রতি তার ক্রমশ গড়ে ওঠা মমত্ববোধের কারণে কাজটা করে না।
এদিকে হাগ মুহাম্মদ আজ্জাম তার শারীরিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম স্ত্রীর অগোচরে কিন্তু তিন প্রাপ্তবয়স্ক পুত্রের সম্মতি এবং ধর্মীয় নেতার পরামর্শক্রমে সউদ গাবের নামে এক বিধবাকে গোপনে বিয়ে করে। ১০ হাজার পাউন্ডের স্বর্ণালঙ্কার এবং ২০ হাজার পাউন্ডের কাবিন ছাড়াও বিয়ের শর্ত ছিল সউদের ছেলেটি থাকবে তার নানির কাছে, তবে সউদ তার ‘সুযোগমতো’ ছেলেকে দেখতে যেতে পারবে। হাগ আজ্জামের স্ত্রী যদি এই বিয়ে সম্পর্কে জেনে যায় তাহলে সে সউদকে তালাক দিয়ে দেবে এবং তারা কোনো সন্তান গ্রহণ করবে না, এবং সউদ যদি কোনোক্রমে গর্ভধারণ করে ফেলে তাহলে তাদের বিয়ের এই শর্ত সঙ্গে সঙ্গে বাতিল বলে গণ্য হবে।
এই হাগ মুহাম্মদ আজ্জাম মিশরীয় সমাজ ও রাজনীতির প্রেক্ষাপটে 888sport alternative linkটির সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। একটা ধূসর রহস্যময় এবং দরিদ্র পটভূমি থেকে উঠে আসা হাগ আজ্জাম তার ব্যবসায়িক অবস্থান সুদৃঢ় করার পর রাজনীতিতে নেমে নির্বাচনে সরকারি দলের মনোনয়ন-প্রত্যাশী হয়। এই কাজের জন্য সে কামাল এল ফৌলির শরণাপন্ন হয়েছিল। একের পর এক দলবদল করে সবসময় সরকারি দলে থাকা চরম ক্ষমতাধর এই নেতা হাগ আজ্জামকে এক লাখ পাউন্ডের বিনিময়ে সরকারি দলের মনোনয়ন এবং ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করে। কারণ লেখক সরাসরি লেখেন, ‘… একথা ঠিক যে মিশরীয় নির্বাচনগুলো সবসময়ই ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে যায়…।’
হাগ আজ্জামের সঙ্গে সউদের বিয়ের শর্ত ছিল, যে সউদ কোনো সন্তান ধারণ করতে পারবে না, কিন্তু তবুও সউদ গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং হাগ আজ্জামের অনুরোধ এবং আদেশে সে গর্ভপাত করাতে রাজি হয় না। এমনকি দুই মাসের কম গর্ভাবস্থায় গর্ভপাত যে নরহত্যার পর্যায়ে পড়ে না Ñ বুদ্ধিজীবী ও ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞ শেখ সাম্মানের এমন ফতোয়াতেও সউদ টলে না। বরং সে চায় গর্ভাবস্থায় হাগ আজ্জাম তাকে তালাক দিক, কিন্তু তাতে সেই সন্তানকে ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতার ওপর বর্তাবে বলে সেই বিকল্প মানা হয় না। সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হবে বলে হাগ আজ্জামের ছেলেরাও সেটা মেনে নিত না। তাই এক রাতে হাগ আজ্জামের নিয়োজিত লোকজন এসে সউদকে অচেতন করে ক্লিনিকে নিয়ে যায় এবং তার অগোচরে গর্ভপাত ঘটায়। তারপর অনিবার্যভাবে সউদকে তালাক দেয় হাগ আজ্জাম। এখানে উল্লেখ্য, সউদকে হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করানোর বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে তদারকি করে হাগ আজ্জামের ছেলে ফাওজি। অবশ্য তালাক-পরবর্তী ক্ষতিপূরণ থেকে সউদকে বঞ্চিত করা হয়নি।
উচ্চশিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত বুদ্ধিজীবী হাতিম রশিদ নিজের প্রভাব খাটিয়ে তার সমকামী প্রেমিক আবদুর অনিচ্ছাসত্ত্বেও সম্পর্ক রক্ষার অভিপ্রায়ে তাকে একটা খবরের কাগজ বিক্রির ছোট দোকান করে দেয়। আবদু এই ঈশ্বরনিষিদ্ধ সম্পর্ক থেকে সরে আসার জন্য বহুবার চেষ্টা করেছে, হাতিম রশিদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করেছে, কিন্তু নিশি পাওয়া লোকের মতো হাতিম তাকে ঠিকই ধরে এনেছে তার ইয়াকুবিয়ান ভবনের বাসায়। এমনই এক ভোরে আবদু যখন হাতিম রশিদের ঘরে রাত কাটিয়ে জেগে ওঠে তখন আবদুর ছেলেটির মারাত্মক অসুস্থতা নিয়ে ওর স্ত্রী নিরুপায় হয়ে হাতিম রশিদের ঘর থেকে স্বামীকে ডেকে বের করে। হাতিম রশিদ তার প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতালের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করেও ছেলেটিকে বাঁচাতে পারে না। ছেলেটিকে কবরস্থ করে এসে ভোরবেলায় আবদু মালপত্র নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে সস্ত্রীক ইয়াকুবিয়ান ভবন ছেড়ে চলে যায়। হাতিম রশিদ এই খবর জানার পর তাকে খুঁজতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আবদুর জাতভাইদের এক রেস্তোরাঁয় তার সন্ধান মেলে। আবদু তাকে খুব শীতলভাবে গ্রহণ করে, কারণ তার এবং তার স্ত্রীর ধারণা, আবদুর পাপের জন্য ওর ছেলেটিকে আল্লাহ উঠিয়ে নিয়ে গেছে। হাতিম রশিদ তার ভুল ধারণা ভাঙানোর চেষ্টা করে, তারপর এক হাজার পাউন্ডের একটা চেক লিখে দেয় এবং অনুনয় করে যাতে শেষ একটা রাতের জন্য আবদু তার সঙ্গে কাটায়। আবদু শেষবারের মতো রাজি হয়। কিন্তু তাদের নৈশমিলন শেষ হওয়ার পর আবদু যখন চলে যেতে উদ্যত হয়, হাতিম তাকে বাধা দেয়। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে আবদু মদমত্ত অবস্থায় হাতিমকে খুন করে।
এদিকে হাগ আজ্জাম তার নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার পর লাভ করে জাপানি গাড়ির এজেন্সি। এজেন্সি পাওয়ার পর কামাল এল ফৌলি বছরে ৩০ কোটি মিশরীয় টাকার এক-চতুর্থাংশ দাবি করে ‘বড় ভাই’র পক্ষ হয়ে। এই নেপথ্য চরিত্রটি যে আসলে কে সেটি 888sport alternative linkের কোথাও খোলাসা করা হয়নি, তবে ধারণা করা যায়, দেশের সরকারপ্রধানই হচ্ছে ‘বড় ভাই’। আজ্জাম এমন দাবিতে বিচলিত হয়ে ‘বড় ভাই’র সঙ্গে দেখা করতে চায়। বহু প্রতীক্ষিত সেই সাক্ষাতে ‘বড় ভাই’ কিন্তু সামনে আসেনি, নেপথ্য থেকে হাগ আজ্জামের সঙ্গে কথা বলে এবং ২৫ শতাংশ থেকে কমিশন কমাতে রাজি হয় না। কারণ হিসেবে বলা হয়, হাজ্জামকে আয়কর বিভাগ, ইন্স্যুরেন্স, নিরাপত্তা বিভাগ, অডিট বিভাগ থেকে রক্ষা করার দায়িত্বও নেবে ‘বড় ভাই’। এমনকি হাজ্জাম যে গোপনে ড্রাগের ব্যবসা করে সে সম্পর্কিত একটা ফাইল দেখিয়ে তাকে ২৫ শতাংশ শেয়ারের চুক্তিপত্রে সই করতে প্রায় বাধ্য করা হয়।
888sport alternative linkের শেষে খুব গতানুগতিকভাবে জাকি এল দেসুকির সঙ্গে মহা ধুমধামে বিয়ে হয় বুসায়নার।
তিন
ওপরের বর্ণনা থেকে 888sport alternative linkটিকে কিছুমাত্রায় মেলোড্রামাটিক বলে মনে হতে পারে, শুধু মনে হওয়া নয়, বাস্তবিক পক্ষেই তাÑই। অতিযৌনতা এমনকি সমকামিতার বিস্তৃত বর্ণনা সহযোগে 888sport alternative linkটি বহু বিতর্কিত এবং কিছুমাত্রায় সমালোচিতও বটে। বুসায়নার সঙ্গে তার নিয়োগকর্তা দোকান মালিকের, হাগ আজ্জামের সঙ্গে তার গোপনে বিবাহিত স্ত্রী বা রক্ষিতা সউদের, জাকি এল দেসুকির সঙ্গে বহু শ্রেণী-পেশার 888sport promo codeর, ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়া তাহার সঙ্গে আরেক শহিদ জঙ্গির বিধবা পতœীর, এমনকি ছাদের ঘরগুলোতে বসবাসকারী মহিলাদের যৌন-সম্পর্কের বিষয়গুলো খুব ঘনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করেছেন আসওয়ানি। তার ওপর রয়েছে অভিজাত ঘরের উচ্চশিক্ষিত সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী হাতিম রশিদের সমকামিতার বিস্তৃত বিবরণ। একই সঙ্গে লেখক উন্মোচন করেছেন রাজনৈতিক দুরাচার, ধর্মীয় ভণ্ডামি, জঙ্গিবাদ এবং অর্থনৈতিক দুর্নীতির মতো আধুনিক মিশরের অন্তর্নিহিত ব্যাধিগুলো। আর এসবের চিত্রায়ন করা হয়েছে বিচিত্র সব চরিত্রের মাধ্যমে, এদের মধ্যে আছে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দেওয়া ইয়াকুবিয়ান বিল্ডিংয়ের দারোয়ানের ধার্মিক পুত্র, ভবনের ছাদের নিুবর্গের বাসিন্দারা, ভণ্ড ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা, সমাজের অভিজাত মানুষেরা এবং অসাধু ব্যবসায়ীরা। সমাজের দরিদ্র মানুষের অধিকারহীন অসহায়ত্ব বোঝাতে আসওয়ানি দেখিয়েছেন পুলিশ বিভাগের চাকরিতে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও দরিদ্র পিতার সন্তান তাহার চাকরি হয় না, কারণ উৎকোচ দেওয়ার মতো যথেষ্ট টাকা তার বাবার নেই, বুসায়না তার মায়ের আর্তিতে চাকরি বজায় রাখার জন্য নিজের সম্ভ্রমহানি হতে দেয় তার মালিকের হাতে, কিংবা নিজের এবং তার শিশুসন্তানের জীবনধারণের জন্য সেই সন্তানকেই একা ফেলে রেখে সউদকে হতে হয় হাগ আজ্জামের গোপন রক্ষিতা।
এখানে মিশরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটা আমাদের 888sport app download for androidে রাখতে হবে যে, হোসনি মোবারকের শাসনকাল ছিল অর্থনৈতিক অবক্ষয়দুষ্ট এবং দুর্নীতিপীড়িত। সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ইসলামি জঙ্গিবাদও সে সময় শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আরব বসন্তের সময় মিশরের সাধারণ মানুষের যে অভ্যুত্থান, সেটাও হোসনি মোবারকের দুঃশাসনের অবশ্যম্ভাবী বিস্ফোরণ এবং প্রত্যক্ষভাবে সেই গণজাগরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন আসওয়ানি। নেতৃত্বহীন সেই গণঅভ্যুত্থানের সময় উত্তাল ১৮ দিনের প্রতিদিনই তাহরির স্কয়ারে উপস্থিত ছিলেন তিনি। এমনকি মোবারকের পতনের পর বিক্ষোভরত জনতার সামনে তিনি সামরিক বাহিনীকে হোসনি মোবারক এবং তাঁর পরিবারের দুর্নীতির তদন্ত করতে আহ্বান জানান। পরে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
তাহরির স্কয়ারের সমাবেশ ছিল মনস্তাত্ত্বিক বিপ্লবের প্রতিফলন। বিপ্লব অর্থ হচ্ছে সরাসরি রাস্তায় নেমে পড়া এবং স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুর প্রস্তুতি রাখা, এটা কাউকে একজন উৎকৃষ্ট মানুষে পরিণত করে। আমি লিখেছি যে, বিপ্লব হচ্ছে প্রেমকাহিনির মতো। একজন যখন প্রেম করে সে ভালো মানুষ হয়ে যায়। প্রেমকাহিনিতে মানুষের সব সদগুণ বড় হয়ে ওঠে।
রাজনীতিসম্পৃক্ত 888sport alternative linkটিতে সাধারণ মানুষের প্রতি ক্ষমতাবান মানুষের তাচ্ছিল্যের মধ্য দিয়ে মিশরের অবক্ষয়িত রাজনৈতিক মূল্যবোধের একটা চিত্র পাওয়া যায়। আসওয়ানির রাজনৈতিক বক্তব্যের সমর্থনে ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারক এবং নির্বাচনী প্রার্থী নির্বাচনে প্রভাবশালী ব্যক্তি কামাল এল ফৌলির একটা মন্তব্য এখানে উদ্ধৃত করা যায়,
সাধারণ মানুষ যে কত সরল সেটা বোঝা যায় যখন ওরা ধারণা করে যে আমরা নির্বাচনে কারচুপি করি। আসলে সেরকম কিছুই নয়। আসল ঘটনা হচ্ছে যে, আমরা মিশরীয় জনগণকে ভালোভাবেই চিনি। আল্লাহ মিশরীয়দেরকে সৃষ্টিই করেছেন সরকারি কর্তৃত্ব মেনে নেওয়ার জন্য। কোনো মিশরীয় সরকারের বিরুদ্ধে যায় না। কিছু লোক চরিত্রগতভাবে বিদ্রোহী এবং উত্তেজনাপ্রবণ, কিন্তু একজন মিশরীয় যতক্ষণ পর্যন্ত খেতে পায় ততক্ষণ তার মাথা নিচু করে রাখে। এসব লেখা আছে আমাদের ইতিহাস বইতে। শাসিত হওয়ার জন্য মিশরীয়রা পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে সহজ জাতি। যখনই যার হাতে ক্ষমতা, তার কাছে সমর্পিত হয়ে দয়া ভিক্ষা করে তারা, তখন যা ইচ্ছে তা করা যায় তাদেরকে নিয়ে।
তবে কামাল এল ফৌলির এই মন্তব্য পরবর্তীকালে মিথ্যে প্রমাণিত হয় যখন তাহরির স্কয়ারে মিশরীয়রা স্বৈরাচারী হোসনি মোবারকের শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে।
মোবারকবিরোধী তথা স্বৈরাচারবিরোধী এই গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে আসওয়ানি আসওয়ান প্রদেশের মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রমাণ রেখেছেন। নামেই প্রমাণ করে তিনি এবং তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন আসওয়ানের আধিবাসী। বলা হয়, আসওয়ান প্রদেশের মানুষ সাধারণত হয় আপসহীন এবং সাহসী। এই সফল গণঅভ্যুত্থানের পর তাঁর নিজের সৃষ্ট চরিত্র কামাল এল ফৌলির বক্তব্যের বিপরীত মন্তব্য করে আসওয়ানি এক লেখায় লিখেছেন,
মিশরীয়রা বিদ্রোহ করেনি কেন? এরা হচ্ছে উটের মতো, এরা বেত্রাঘাত, অপমান এবং অনাহার সইতে পারে দীর্ঘদিন, কিন্তু যখন বিদ্রোহ করে সেটা এতো দ্রুত এবং জোরালো হয় যে তা দমন করা হয়ে পড়ে অসম্ভব।
ধর্ম, রাজনীতি, প্রেম, যৌনতা, দুর্নীতি সবকিছুর মিশ্রণে 888sport alternative linkটি আধুনিক পাঠকদের কাছে গতানুগতিক মনে হবে, কারণ এটিতে সাম্প্রতিক পাশ্চাত্য 888sport live footballের মতো নিরীক্ষাধর্মী কিছু নেই। এমনকি এটির সমাপ্তিও অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো মিলনাত্মক। তবে বইটির একটি জায়গায় মাত্র আসওয়ানি একটা কাঠামোগত ব্যতিক্রম সৃষ্টি করার প্রয়াস পেয়েছেন। কায়রো বারের কর্মী রাবাব বহু সাধ্য-সাধনার পর জাকি এল দেসুকির সঙ্গে প্রথমবারের মতো তার অফিসে দেখা করতে রাজি হয়। এটি ছিল দেসুকির অফিস এবং আনন্দফুর্তির জায়গা। রাবাবকে উপভোগ করার পর দেসুকির বর্ণনাতীত অনুভূতির কথা প্রকাশ করার জন্য আসওয়ানি একটা পরিচ্ছদ শুরুর আগে কিছুদূর জায়গা খালি রেখে দিয়েছেন, তারপর অধ্যায়টা শুরু করেছেন এভাবে,
আমি এ জায়গাটা খালি রেখে দিয়েছি কারণ আমি এখানে কি লিখব বুঝে উঠতে পারিনি।
সাধারণ আনন্দ-বেদনার কথা বোঝাবার জন্য ভাষার ব্যবহার যথেষ্ট, কিন্তু কিছু সুখের মাহেন্দ্রক্ষণ থাকে যার বর্ণনা দিতে কলম অপারগ, যেমন জাকি এল দেসুকির সঙ্গে তার প্রিয়তমা রাবাবের সান্নিধ্যের সময়টুকু, এবং দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটা সত্ত্বেও জাকি বে কখনোই ভুলবে না তার চমৎকার রাবাবের কথা, …।
আসওয়ানি তাঁর লেখায় গতানুগতিকতার সমালোচনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, এ-প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য,
কিন্তু কেউ বোঝে না এমন কিছু লেখা খুব সহজ। আমি লিখি মানুষের জন্য, আর আমি বিশ্বাস করি তাঁরা 888sport live football বোঝেন এবং স্বাদ আস্বাদন করেন। কথা888sport live footballে মূল্যায়ন করার কিছু নেই, 888sport live football বিচার করার চাইতে উপলব্ধি করাটাই প্রধান। গত দুই দশক ধরে আরবি 888sport live footballে অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। … আরব লেখকরা ইউরোপ দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত। এরকম গল্পও পাওয়া যায় Ñ ‘আমি মাত্র ঘরে ফিরে দেখলাম আমার স্ত্রী একটা তেলাপোকার সাথে সঙ্গমে রত’ – অথবা এ জাতীয় কিছু।
888sport live footballে পাশ্চাত্য প্রভাব, আধুনিকতা কিংবা তার তাৎপর্য সম্পর্কে বিতর্ক সর্বদা সচল থাকবে অনুন্নত আর্থসামাজিক কাঠামো সংবলিত দেশগুলোতে। কিন্তু পশ্চিমের মুখাপেক্ষী একটি দেশে এই বিতর্ক কেবলই তাত্ত্বিক ধারণা নয়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন এবং তাদের মূল্যবোধ, বেদনাবোধ ও জীবনযন্ত্রণার কথা যখন 888sport live footballে লিপিবদ্ধ হয়, তার সরলতা কিংবা গতানুগতিকতা তখন আর বিশ্লেষণের বিষয় থাকে না, হয়ে ওঠে মানবিক রিপোর্ট। আসওয়ানির এই 888sport alternative linkটি তার কোনো ব্যতিক্রম নয়, সে কারণে পাশ্চাত্য নিরীক্ষা নয়, এটির মধ্যে বরং আমরা খুঁজে পাই আধুনিক মিশরের সমাজ, অর্থনীতি এবং রাজনীতির প্রকৃত রূপ এবং তার প্রাচ্য রীতির সরল চিত্রণ।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.