888sport alternative linkে সমুদ্রসংগ্রামী কৈবর্তজীবন

বাংলা 888sport live footballে প্রান্তজনের কথা খুব বেশি পুরনো নয়। উচ্চবর্ণের পাশাপাশি প্রামিত্মক জনগোষ্ঠীও এখন 888sport live footballে সমাদৃত। সমাজের নিম্নবর্গের মানুষের জীবন, চেতনাবোধ, সংস্কার, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, উৎসব-পার্বণ, সুখ-দুঃখের হালচাল – সবই এখন কথা888sport live footballে উঠে আসছে। বাংলা 888sport live footballে এর নিদর্শন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়। প্রান্তজনের কাহিনিও অনেকে শুনিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মানিক-বিভূতি-তারাশঙ্কর অন্যতম। এছাড়া রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র তাঁদের গল্পে অন্তজ্যশ্রেণির কাহিনি নির্মাণ করেছেন। পুরাণ, সংহিতা ও মহাকাব্যসমূহে প্রান্তজনেরা অবহেলিত হলেও আধুনিক
কথা888sport live footballে নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশ মর্যাদা পাচ্ছে। তাদের
সুখ-দুঃখ, বঞ্চনার ইতিহাস, শোষণ, ত্রাস, হিংসা-বিদ্বেষ,
খুন-জখমের কাহিনি এখন কথা888sport live footballে স্থান করে নিয়েছে। অনেকের 888sport live footballেই সমাজের এই প্রামিত্মক মানুষগুলো কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠেছে। যেখানে –
‘ক্ষুধাতৃষ্ণার দেবতা, হাসিকান্নার দেবতা, অন্ধকার আত্মার দেবতা, ইহাদের পূজা কোনদিন সাঙ্গ হয় না। এদিকে গ্রামের ব্রাহ্মণ ও ব্রাহ্মণেতর ভদ্রমানুষগুলি তাহাদের দূরে ঠেলিয়া রাখে, ওদিকে প্রকৃতির কালবৈশাখী তাহাদের ধ্বংস করিতে চায়, বর্ষার জল ঘরে ঢোকে, শীতের আঘাত হাড়ে গিয়া বাজে। আসে রোগ আসে শোক, টিকিয়া থাকার নির্মম অনমনীয় প্রয়োজন নিজেদের মধ্যে রেষারেষি করিয়া তাহারা হয়রান হয়। জন্মের অভ্যর্থনা এখানে গম্ভীর, নিরুৎসব, বিষণ্ণ। জীবনের সংকীর্ণতায়। ঈশ্বর থাকেন ওই গ্রামে, ভদ্রপলস্নীতে। এখানে তাঁহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।’১
বাংলা 888sport live footballে ১৯৩৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জেলেজীবননির্ভর 888sport alternative link রচিত হয়েছে এগারোটি। তার মধ্যে ছয়টি 888sport alternative linkের কোনো কোনোটিতে জেলেজীবন আছে, কিন্তু নদী নেই। আবার কোনোটিতে নদী আছে, জেলেজীবন নেই। পূর্ণাঙ্গ জেলেজীবননির্ভর কাহিনি তেমন করে 888sport alternative linkে উপস্থাপিত হয়নি। 888sport alternative linkগুলো হলো – অমরেন্দ্র ঘোষের (১৯০৭-৬২) চরকাশেম (১৯৪৯), সত্যেন সেনের (১৯০৭-৮১) বিদ্রোহী কৈবর্ত (১৯৬৯), শামসুদ্দীন আবুল কালামের (১৯২৬-৯৭) সমুদ্রবাসর (১৯৮৬), আবু ইসহাকের (১৯২৬-২০০৩) পদ্মার পলিদ্বীপ (১৯৮৬), মহাশ্বেতা দেবীর (১৯২৬-২০১৬) কৈবর্তখ- (১৯৯৪) ও শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের (১৯৩৩-২০০১) গঙ্গা একটি নদীর নাম (২০০১)। কিন্তু অন্য পাঁচটি 888sport alternative linkে কৈবর্তজীবন তথা জেলেজীবন পূর্ণাঙ্গভাবে উপস্থিত হয়েছে। এই 888sport alternative linkের মূল বিষয়বস্ত্ত ধীবরজীবন। প্রামিত্মক জনগোষ্ঠী ধীবর, এসব 888sport alternative linkে তাদের জীবনব্যবস্থা, হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, শোষণ-বঞ্চনা ও সংগ্রামের রূপচিত্র নিয়ে অঙ্কিত হয়েছে। 888sport alternative linkগুলো হলো – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৯০৮-৫৬) পদ্মানদীর মাঝি (১৯৩৬), অদ্বৈত মলস্নবর্মণের (১৯১৪-৫১) তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৫৬), সমরেশ বসুর (১৯২৪-৮৮) গঙ্গা (১৯৫৭), সাধন চট্টোপাধ্যায়ের (১৯৪৪-) গহিন গাঙ (১৯৮০) ও ঘনশ্যাম চৌধুরীর (১৯৫৭-) অবগাহন (২০০০)। উলিস্নখিত পাঁচটি 888sport alternative linkে সমুদ্র উঁকিঝুঁকি দিয়েছে মাত্র। নদীই এই 888sport alternative linkগুলোর প্রাণ। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জেলেপলিস্ন। আর নদীর জলশস্য মীনসন্তানদের ধরে এই জেলেপলিস্নর মানুষগুলো বেঁচে থাকে।২
জেলেপলিস্নর যে ঘিনঘিনে পরিবেশ, যে-পলিস্নর মানুষের যে অভাব-অনটন সেসব চিত্র প্রতিনিয়ত তাঁকে জীবন দেখতে সহায়তা করেছে। ভাগ্যবিড়ম্বিত সেইসব অসহায় মানুষের পরিবেশ হরিশংকরকে খাঁটি করেছে। নিজের শিকড়ের কথা কিংবা আকর্ষণ তিনি এখনো অনুভব করেন। তাই শত লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করেও তিনি অকপটে স্বীকার করেন, তিনি জলপুত্র। হরিশংকর জলদাস (১৯৫৩, ৩ মে) জন্মগ্রহণ করেছেন উত্তর পতেঙ্গা জেলেপলিস্নতে। তাঁর পিতার নাম যুধীষ্ঠির জলদাস। মাতার নাম শুকতারা জলদাস। ঠাকুরমা পরানেশ্বরী হরিশংকরকে নির্মাণ করেছেন। তাঁর লেখাপড়া, যত আবদার সবই রক্ষা করতেন ঠাকুরমা। জেলেপলিস্নর এক সাধারণ পরিবারে দুঃখ-কষ্টের সঙ্গে লড়াই করে হরিশংকর বড় হয়েছেন। পতেঙ্গা হাইস্কুল, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। শুধু তাই নয়, জাল নিয়ে
পিতৃপুরুষের সঙ্গে প্রমত্ত সাগরে গিয়েছেন। তুলে এনেছেন জলশস্য। তারপর সেই মীনসন্তানদের নিয়ে বিক্রি করেছেন বাজারে।
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, মান-অপমানের বালাই মাথায় নিয়ে দিনাতিপাত করেছেন। নিরন্তর এক নিষ্ঠুর পরিবেশকে অতিক্রম করেছেন তিনি। চোখ মেলে দেখেছেন এ-সমাজের অন্ধকারের রূপ। মানুষের সুন্দর মুখের আড়ালে যে-রূপটি উদ্ঘাটিত হয় না, অগোচরে থাকে, সেটাও যেন তিনি আবিষ্কার করেছেন। নগরজীবনে ভদ্রসমাজে দিন কাটিয়ে ফিরে গেছেন আবার জেলেপলিস্নতে। সেই পলিস্নর সুখ-দুঃখ,
হাসি-কান্না, রক্তের ভেতর প্রবহমান স্রোতের ধারাকে ধরতে চেয়েছেন তিনি। শৈশব আর তরুণবেলা দুই-ই তিনি আত্মস্থ করেছেন। আর নমুনা মেলে তাঁর রচিত 888sport alternative linkদ্বয়ে। তাঁর 888sport alternative linkের পাত্রপাত্রীরা জলকাদায় নির্মিত। তারা মান-অপমানে গুমরে গুমরে কাঁদে। তাদের মধ্যে কেউ আত্মপরিচয় নিয়ে শস্নাঘায় ভোগে। প্রতিনিয়ত সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়ে নিজের রুটিরুজির ব্যবস্থা করতে হয় তাদের। সেসব মানুষের নোনাজীবনের স্বপ্ন লেখক যখন আঁকতে বসেন, তখন তাঁকে অন্য কোথাও কারো কাছে হাত পাততে হয় না। নিজের জীবনের দিকে অনিমিখ দৃষ্টি রেখে তিনি যে-জীবনছবি আঁকেন তা বাস্তব হয়ে ওঠে। জেলেপলিস্নর অগণিত মানুষের বাস্তবজীবন ও নোনাজীবনের চাওয়া-পাওয়ার, অপূর্ণতার কথা উঠে এসেছে তাঁর 888sport alternative linkে।

দুই
জলপুত্র 888sport alternative linkে একেকজন জেলে888sport promo codeর সংগ্রামশীল জীবনের ইতিহাস যেমন আছে, ঠিক তেমনি একজন জলপুত্রের অধিকারসচেতন হয়ে ওঠার কাহিনিও স্থান পেয়েছে। এ-888sport alternative linkে ধীবরসমাজ তার সকল সংগতি-অসংগতি নিয়ে উপস্থিত। এ-888sport alternative link বিষয়বৈচিত্র্য, প্রকরণকৌশল, চরিত্র নির্মাণ, ভাষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অভিনবত্বের দাবি রাখে। জলপুত্র 888sport alternative linkের বিশেষত্ব ধরা পড়ে ইবনে সাজ্জাদের কথায়। দৈনিক আজাদীর ‘বিরস রচনা’ কলামে ‘উপেক্ষিত বঙ্গোপসাগরের আহাজারি’ শীর্ষক রচনায় তিনি বলেন,
হরিশংকর জলদাসের 888sport alternative linkে বঙ্গোপসাগরের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। জলপুত্ররা জলশস্য আনিতে গিয়া কিভাবে বিপন্ন হয় ইহা তিনিই একমাত্র তুলিয়া ধরিয়াছেন। অধমের মনে হইতেছে সর্বহারা জলপুত্রদের হৃদয়ের গভীর ক্রন্দন ওই তীর ভাঙা ঢেউয়ের মধ্যে শ্রম্নত হয়। আর সমুদ্রের বালুকাবেলায় ছড়াইয়া রহিয়াছে। সেই ব্যথাতুর মানুষের চোখের লোনাজল।৩
জেলেদের জীবন নিয়ে বেশ কয়েকজন 888sport live footballিক সৃষ্টি করেছেন অমর কীর্তি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর বিখ্যাত কালজয়ী 888sport alternative link পদ্মানদীর মাঝি বাংলা 888sport live footballে আজো বুভুক্ষু পাঠকের ক্ষুৎপিপাসা মেটাচ্ছে। বাংলা 888sport live footballে জেলেজীবননির্ভর যে-কয়টি 888sport alternative link রচিত হয়েছে সেগুলোর সবকটি নদীভিত্তিক। নদীকে কেন্দ্র করে জেলেদের মৎস্য আহরণ চলে। নদীকে কেন্দ্র করে জেলেদের জীবন-জীবিকা চলে। নদীকে কেন্দ্র করে জেলেদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের চাষাবাদ চলে। তাই জেলেপলিস্নগুলো সাধারণত নদীতীরেই গড়ে উঠেছে। তবে আমাদের আলোচিত 888sport alternative linkটির জেলেপলিস্ন সমুদ্র উপকূলবর্তী। সমুদ্রের নোনাজলের ঝাপটায় এখানে জেলেরা সমুদ্রফসল মাছের আঁশটে গন্ধ পায়। সেই গন্ধ তাদের এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জোগায়। তারা প্রতিনিয়ত গায়ে মাখে নোনা জলের মিশ্রণ। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে উত্তর পতেঙ্গা একটি জেলেপলিস্ন। এ-গ্রামের ভৌগোলিক বিবরণ উঠে এসেছে আলোচ্য 888sport alternative linkে। এ যেন আরেক কেতুপুর। তবে সেটা মানিকের নয়, হরিশংকর জলদাসের।
হরিশংকর জলদাসের জলপুত্র (২০০৮) ও দহনকাল (২০১০ – দুটি 888sport alternative linkই সমুদ্রভিত্তিক জেলেজীবননির্ভর 888sport alternative link।
অদ্বৈত মলস্নবর্মণ (১৯১৪-৫১) ছিলেন একজন জেলে। তিনি লিখেছেন তিতাস একটি নদীর নাম, যা বাংলা 888sport live footballে অমর হয়ে আছে। ঠিক তাঁর ৫২ বছর পর হরিশংকর জলদাস দ্বিতীয় জেলে হিসেবে লিখলেন জলপুত্র ও দহনকাল। এতে জেলে সম্প্রদায়ের অপ্রাপ্তির বেদনা, হতাশা, বঞ্চনা, ক্ষুধা-শোষণের হাহাকার,
কাম-ক্রোধ ও অশিক্ষার অন্ধকার – সবই অসাধারণ বিশ্বস্ততার সঙ্গে অঙ্কিত হয়েছে। সর্বোপরি সমুদ্র-তীরবর্তী জেলেদের জীবনসংগ্রামের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। যাদের প্রতিনিয়ত সমুদ্রের সঙ্গেই
ভাব-ভালোবাসা করে থাকতে হয়। সমুদ্র এদের অন্নদাতা। সমুদ্র এদের ভাগ্যবিধাতা। আবার কখনো কখনো সমুদ্র এদের জীবনাবসানের মূল কারণও। সমুদ্রের প্রতি ঢেউয়ের সঙ্গেই যেন এদের জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাস।
সেস্না-মোশন পিকচারের মতো 888sport alternative linkের প্রথমেই আমরা সাক্ষাৎ পাই জলপুত্র গ্রন্থের প্রধান 888sport promo codeচরিত্রকে। যে কিনা জীবনের পরম সঙ্গীকে হারিয়ে সমুদ্রের দিকে ভীত-চোখে তাকিয়ে আছে। তার স্বামী চন্দ্রমণি সমুদ্রের ঝড়ে পড়ে আর ফিরে আসেনি।
‘উথালপাথাল বঙ্গোপসাগরের দিকে তাকিয়ে আছে উনিশ বছরের ভুবনেশ্বরী’৪ – সমুদ্রে এই তাকানোর মধ্যে দিয়েই ভুবনেশ্বরী যেন তার জীবনের সকল ছবি দেখতে পায়। তার চোখ সুদূর সমুদ্রে নিবদ্ধ। আর সেই চোখের সামনেই যেন 888sport alternative linkের সব ঘটনা সাজনো। তারপরের কাহিনি গ্রন্থিত হয়েছে লেখকের পরম মুনশিয়ানায়। সেলুলয়েডের ফিতা যেন ক্রমশ টেনে গিয়েছেন তিনি আর পাঠক তৃষিত চোখে সেসব দৃশ্য অবলোকন করেছেন। ভুবনেশ্বরীর জীবনের সংগ্রামশীল ইতিহাস যেমন এখানে আছে, তেমনি জলপুত্র গঙ্গার অধিকারসচেতন হওয়ার কাহিনিও এখানে স্থান পেয়েছে।
বাংলা 888sport live footballের জেলেজীবননির্ভর যেসব 888sport alternative link আছে সেসব 888sport alternative linkে নদী-জেলেদের জীবিকা নির্বাহের উৎস। জেলেদের সুখ-দুঃখের ভাগীদার এখানে নদী। আর হরিশংকর জলদাসের জলপুত্র 888sport alternative linkে জেলেরা যায় সমুদ্রে। এখানে সমুদ্র বিশেষ একটি ভূমিকা পালন করেছে। সমুদ্রই ওদের জীবন নিয়ন্ত্রণকর্তা। সমুদ্রকে ঘিরেই জেলেদের উলস্নাস, একে ঘিরেই তাদের নাভিশ্বাস। সমুদ্র তাদের আয়ের উৎস, আবার সমুদ্র কখনো কখনো তাদের প্রাণ হরণকারী।
এ-888sport alternative linkে জেলেদের বারো মাসের বর্ণনা আছে। আছে দুঃখ ও সুখের কথা। জেলেদের পূজা-পার্বণ উঠে এসেছে। এখানে ডোম বলে একে অপরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের ঘটনা আছে।
ক. চৈত্রসংক্রামিত্ম ও পহেলা বৈশাখ পাশাপাশি। জেলেরা
এ দুটো দিনকে তাদের মতো করে বিশেষভাবে উদ্যাপন করে। মুসলমানদের ঈদ ও বর্ণহিন্দুদের দুর্গাপূজার মতো
জলপুত্রদের কাছে গঙ্গাপূজা, মনসাপূজা ও চৈত্রসংক্রামিত্ম সমান গুরুত্ব পেয়ে থাকে। ফাগুন-চৈত্র-বৈশাখ – এই তিন মাসে খাল-বিল-নদী-সমুদ্র জলশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে জেলেজীবনে নেমে আসে খাদ্যাভাব। এই অভাব চৈত্রের শেষে এমন রূপ নেয় যে, একে দুর্ভিক্ষ বললেও ভুল হবে না।৫
খ. মনসা তাদের অন্যতম প্রধান দেবী। সর্পের দেবী মনসাকে তাদের বড় ভয়। তাঁর জন্যে তাদের বড় সম্ভ্রম। সর্প জলজ হিংস্র প্রাণী। জেলেরা জলচর। সর্পের দংশনে অনেক জেলের মৃত্যু ঘটে। তারা বিশ্বাস করে – মনসাকে সন্তুষ্ট রাখতে পারলে সর্পের কোপানল থেকে তারা রেহাই পাবে। তাই, গোটা শ্রাবণমাস জেলেদের ঘরে ঘরে সর্পদেবী মনসার পূজা হয় সাড়ম্বরে।৬
গ. আঁর ইচ্ছা আঁই ইয়ানদি জাল বোয়াইয়্যম। যিয়ান গরিত পারচ গঅর গই। আর হুন, লাআনির পোয়া ডোম অল, হুদা তোরার নো, বিয়াগ ডোমর ভাতঘর বন্ধ গরি দিয়্যম আঁরা। খেয়াল রাইস।৭
দীনদয়ালের পাঠশালায় জেলেসন্তানরা স্বপ্ন দেখে। সে-স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। শরীরের চাহিদার কাছে দীনদয়ালের উদ্দেশ্য পরাজিত হয়। মঙ্গলীর সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক জেলেদের হতাশ করে। সভা করে তারা দীনদয়ালের বিচার করে। ক্ষোভ আর দুঃখের রেশ ফুটে ওঠে তাদের কণ্ঠে – ‘আঁরা শেষ। আঁরার আশা শেষ। বিদ্বান! জাইল্যার পোয়াঅল আবার বিদ্বান হইবো? শেষ, বিয়াগ্গিন শেষ।’৮
গবেষক, প্রাবন্ধিক আজাদ বুলবুল ‘জলপুত্র : জেলে সমাজের ভিন্নচিত্র’ রচনায় মন্তব্য করেন, ‘জলপুত্র 888sport alternative linkটিতে ব্রাত্যজীবন বিষয়ে গভীর অভিনিবেশকারী হরিশংকর জলদাস আমাদেরকে চেনা জগতের অজানা কাহিনি শুনিয়েছেন। ঘটনার চমৎকারিত্বে, বর্ণনার মুন্সিয়ানায় ভাষা ব্যবহারের স্বাতন্ত্র্যতায় এক অনবদ্য 888sport live football জলপুত্র। হরিশংকর জলদাস চট্টগ্রামের সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলে গোষ্ঠীর জীবনরূপ চিত্রায়ণের এক দক্ষ 888sport live chatী। তিনি আমাদের কালের মানিক – একালের অদ্বৈত।’৯
এ-888sport alternative linkের আলোচিত চরিত্র ভুবন। এই চরিত্রের
উত্থান-পতন খুব চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে। চন্দ্রমণি মারা যাওয়ার পর সে সংসারের হাল শক্ত করে ধরে। শুধু তাই নয়, ছেলে গঙ্গাকে সে মানুষের মতো মানুষ করতে চেয়েছে। জেলেসমাজের ঘিঞ্জি এলাকা মানুষের সংকীর্ণ মনের গ– থেকে বের করে আনার সুদূরপ্রসারী চিন্তা তার ভেতর আমরা লক্ষ করি। এই সমাজ বদলে দেওয়ার বিষয়টি আর কারো মাথায় খেলেনি।
পাড়ায় পাড়ায় মাছ বিক্রি করতে গিয়ে সে অনেক পরিবারকে চিনেছে, তাদের আর্থিক দুরবস্থা সম্পর্কে জেনেছে। আর্থিকভাবে দুর্দশাগ্রস্ত অনেক পরিবারের ছেলেসন্তানরা বই হাতে স্কুলে যায়, পড়াশোনাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। অসচ্ছলতা সেসব পরিবারের সন্তানদের বিদ্যার্জনে প্রতিবন্ধক হচ্ছে না। তারা যদি পারে, তাহলে গঙ্গা পারল না কেন? ভুবনরা দিন এনে দিন খায়। কিন্তু আর্থিক অস্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপারটি ভুবন ঘুণাক্ষরেও কোনোদিন গঙ্গাকে বুঝতে দেয়নি। তাহলে কেন গঙ্গা পড়া ছাড়ল? এটাকেই কি কপালের লিখন বলে? এই সমাজটা কি অশিক্ষার অন্ধকার থেকে মুক্তি পাবে না? গঙ্গাকে দিয়ে সে এই পাড়ায় সেই মুক্তির চেষ্টা চালিয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই প্রচলিত নিয়মই জয়ী হলো। জেলেরা শুধু মাছ ধরবে? বিদ্যার্জন তাদের জন্য নয়?১০
একজন জেলে888sport promo codeর এ-ভাবনা পুরো 888sport alternative linkে বহাল ছিল। ভুবন তার কাজকর্মে, চিন্তাচেতনায় এই সাফল্য ধরে রেখেছে। তার সৎ থাকার বিষয়টি প্রামিত্মক সমাজের 888sport promo codeদের প্রতিনিধিত্ব করে। এই 888sport alternative linkে 888sport app কুশীলব যারা, তারা হলো – গঙ্গাপদ, চন্দ্রমণি, হরিবন্ধু, জগদীশ, গোরাঙ্গসাধু, জগৎহরি, রসমোহন ডাক্তার, জয়ন্ত, রামনারায়ণ, শশীভূষণ, উপেন্দ্র, সুবল, গোপাল, মাগইন্যা, ধীরেন্দ্র, বিজনবিহারী, পূর্ণচন্দ্র, ধনবাঁশি, বজেন্দ্র, কালাবাঁশি, ধর্মচরণ, কামিনী, দীনদয়াল, পূর্ণ বহদ্দার, হরগোবিন্দ, মধুরাম, গোলকাবহারী, রামপদ ও অনিল। অপরদিকে স্ত্রী চরিত্রসমূহের মধ্যে রয়েছে – ভুবনেশ্বরী, গুরাবি, বকুল, ক্ষীরবালা, সুরভিবালা, বংশীর মা, কুসুমি, চরণদাসী, মঙ্গলী, টুনিবউ।
জেলেজীবননির্ভর 888sport alternative linkগুলোয় আমরা জেলেদের নদীতে মাছ ধরার দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। এ-888sport alternative linkে লেখক আমাদের কাছে সমুদ্রে মাছ ধরার দৃশ্য তুলে ধরেন –
এখন সমুদ্র উত্তাল। আষাঢ়-শ্রাবণের সমুদ্র ঝড়ো-হাওয়ায় আর বৃষ্টির দাপাদাপিতে মারমুখী হয়ে উঠেছে। এই
ঝড়- ঝঞ্ঝাকে উপেক্ষা করে মাছ ধরতে যাচ্ছে জেলেরা। জলের উদ্দেশে কূল থেকে সোজাসুজি পাড়ি দেওয়া যায় না। দাঁড়ের নৌকা; বাতাস অনুকূলে থাকলে পালের টানে নৌকার গতি বাড়ে। তার পরও কিনারা ঘেঁষে মাইলখানেক উত্তর
অথবা দক্ষিণে নৌকা ঠেলে নিয়ে যেতে হয়। তারপর
দাঁড়ে-পালে পাড়ি দিতে হয়। পাতায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে স্রোতের টান কমে আসে। জাল ভেসে ওঠে। …
সমুদ্রে আজ আঁধার করে বৃষ্টি নেমেছে। দমকা দমকা বাতাস বইছে। আগোছালো ঢেউ এধার ওধার ভেঙে পড়ছে। ঢেউয়ে ঢেউয়ে সংঘর্ষ গোটা সমুদ্র ফেনাময় হয়ে উঠেছে। কখনো কখনো এলোমেলো ঢেউকে থামিয়ে দিয়ে পাহাড়-সমান ঢেউ হা-হা করে ছুটে আসছে। এ সবকিছুকে উপেক্ষা করে উত্তর পতেঙ্গার জলপুত্ররা পাড়ি দিয়েছে পাতার উদ্দেশে।’১১
শ্রাবণ মাস জেলেদের সুখের মাস। এই মাসে গঙ্গা যেন জেলেদের উজাড় করে জলশস্য দেয়। তাই ওদের দেহ-মনে নেমে আসে হুলেস্নাড়। ক্ষুধা আর তৃষ্ণার দেবতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে তারা যেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে। নিরাশার দিনে কল্পনার ফানুস উড়িয়ে আসে বর্ষা। ধরা পড়ে জালে রুপালি ইলিশ। ধরা পড়ে চিক্কা ইচা, লইট্যা, ফাঁইস্যা, ঘোঁওড়া, তপসে, লাক্ষ্যা, ভোলপোপা আরো নানা রকম জাত-বেজাতের মাছ। এই সময় পাড়ায় পুঁথিপাঠের আসর বসে। জেলে নর888sport promo codeরা এসে পুঁথিপাঠের স্বাদ গ্রহণ করে। তবে অনেকের ঝোঁক থাকে এই আসরের নাউট্যাপোয়ার দিকে। নাউট্যাপোয়ারা এই সময় ভাড়ায় আসে। এদের ভাড়া মাসে দেড়শো থেকে দুশো টাকা। শরীর খারাপ না করলে প্রতিরাতে পুঁথিপাঠের আসরে তাদের নাচতে হয়। তাদের বয়স চোদ্দো থেকে ষোলো।
লেখকের বর্ণনায় নাউট্যাপোয়ার যে-চিত্র পাওয়া যায় –
মেয়েদের পোশাক পরে মুখে কড়া পাউডার মেখে বুকে মেকি স্তন লাগিয়ে তারা আসরে ঘুরে ঘুরে নাচে। গ্রামে কিছু ছা-াপোয়া থাকে, এরা নাউট্যাপোয়া আনায় ও তার রক্ষণাবেক্ষণ করার ব্যাপারে তদারক করে। নাউট্যাপোয়া এই ছা-াদের দখলে থাকে বারোমাস। এই বছর উত্তর পতেঙ্গার জেলেপাড়ায় যে নাউট্যাপোয়াটি আনা হয়েছে, তার নাম প্রেমদাশ। বড় মিষ্টি চেহারা তার। এখনো মুখে দাড়ি-গোঁফ গজায়নি। রঙ ফর্সা। কাঁধ পর্যন্ত বাবরিচুল। চোখের দৃষ্টিতে এক ধরনের মাদকতা আছে।১২
জেলেরা প্রতিনিয়ত প্রকৃতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে। ঝড়-জলে ভিজে সমুদ্র থেকে মৎস্য তুলে আনে। সেই মৎস্যে সবার উদরপূর্তি হয় ঠিকই; কিন্তু তাদের কাটে অনাহারে-তৃষ্ণায়। তারা স্বপ্ন দেখে দুবেলা দুমুঠো খাবারের; কিন্তু অনেক সময় তা জোটে না। আবার কেউ কেউ তাদের মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়। যেন এটাই প্রথা – ওদেরকে ঠকিয়ে ওদেরকে উচ্ছেদ করলেই ল্যাঠা চুকে যাবে। দুঃখ-কষ্টের তীব্র কশাঘাতে দানা বাঁধে ক্ষোভ। সেই ক্ষোভ আসেত্ম আসেত্ম সংগ্রামে পরিণত হয়। আর সেই সংগ্রামে দু-একজন নিহত হবার মধ্যে দিয়েই ঝিমিয়ে পড়ে জেলেসমাজ। প্রতীক্ষায় প্রহর গোনে আবার কখন কে আসবে তাদের মধ্যে যে শক্ত করে নিজের কথা, দাবি-দাওয়ার কথা মুখের ওপর বলতে পারবে।
শুক্কুরের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জেলেদের সংগঠিত করে গঙ্গা। তার চিত্র 888sport alternative linkে আমরা দেখতে পাই –
গঙ্গা সবাইকে উদ্দেশ্য করে উত্তেজিত কণ্ঠে বলল, ‘যার কাছত্তোন সাহায্য পাওনর কথা, হেই চেয়ারম্যান যখন সাহায্য নো গইল্যো, তখন আঁরার অধিকার আঁরাত্তোন আদায় গরি লওন পড়িবো। অন্যায়ের মূলরে হাঁড়ি দেওন পড়িবো। এই জাইল্যা পাড়াত যত নৌকা আছে, কালিয়া বিয়াগ্গিন পাতাত্ যাইবো। কোনোভাবেই শুক্কুইজ্যা শইশ্যারে আঁরার সামনে জাল বোয়াইতো দিতাম নো। আঁরা পতিরোধ গইজ্যম। তোঁয়ারা কি কও?’১৩
সমবেত জনতা গর্জন করে উঠল, ‘পতিরোধ গইজ্যম। জান দি পতিরোধ গইজ্যম। আঁরা কালিয়া বিয়ানল্যাই অপেক্ষা গরির।’ প্রচ- ক্ষোভ আর উত্তেজনা নিয়ে জলপুত্ররা যার যার ঘরে ফিরে গেল।
ফলশ্রম্নতিতে দেখা গেল গঙ্গা নিহত হলো। যে-তরুণটি এ-অন্ধকার সমাজটিকে আলোর দিকে অধিকার আদায়ের কথা বলতে শেখাত সে চলে গেল। জেলেসমাজ স্তিমিত হয়ে পড়ল। তারা আবার আরেকজন গঙ্গার জন্য অপেক্ষা করবে আর ততদিন পর্যন্ত শোষিত হতে থাকবে। আর গঙ্গার অনাগত সন্তান হয়তো এসে এই অন্ধকার সমাজটাকে টেনে তোলার প্রয়াস পাবে।
সমালোচক অধ্যাপক শুভেন্দু দাশগুপ্ত আনন্দবাজার পত্রিকায় এ-888sport alternative link সম্পর্কে লেখেন –
জেলেদের নিয়ে 888sport alternative link বাংলায় লেখা হয়েছে, কম হলেও। নদী জেলেদের নিয়ে। সমুদ্র জেলেদের নিয়ে দেখিনি। জলপুত্র সমুদ্র জেলেদের 888sport alternative link। নদী জেলেদের 888sport alternative link তিতাস একটি নদীর নাম – এর লেখক অদ্বৈত মলস্নবর্মণ জেলে। জলপুত্রের লেখকও জেলে। হরিশংকর জলদাস। … এই 888sport alternative link ভূগোল নিয়ে। 888sport appsের ভূগোল ঋতু নিয়ে বলে এবং দাগ দিয়ে না লিখে মাস এসেছে। ভূগোলের পরিবর্তন, অর্থনীতির বদল জীবনযাপনের পাল্টানো। না জানিয়ে জলপুত্র এক বারমাস্যা, জাইল্যাদের বারমাস্যা। এই বারমাস্যায় গদ্য আছে এবং পদ্যও।’১৪
জলপুত্র 888sport alternative linkের চরিত্রসমূহের মুখের ভাষা আঞ্চলিক। কথিত আছে, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা কঠিন, বোধগম্য নয়। কিন্তু হরিশংকর জলদাসের 888sport alternative linkের সংলাপ রচিত হয়েছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায়। চট্টগ্রামের জেলেদের মুখের ভাষা এই 888sport alternative linkে 888sport live chatসার্থকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এবং এই ভাষা 888sport alternative linkের পাত্রপাত্রীদের মুখে মানিয়ে গেছে। কোথাও দুর্বোধ্য বলে মনে হয়নি। লেখকের মুনশিয়ানায় সংলাপগুলো চরিত্রসমূহকে আরো উজ্জ্বল ও সার্থকম–ত করেছে। 888sport alternative linkের কাহিনিবুননে লেখক সামঞ্জস্য রেখে গেছেন, চরিত্রগুলোও বিশেষ নজরের দাবিদার। ভুবন, মাগইন্যা, গোরাঙ্গসাধু ও গঙ্গাপদ পাঠকের হৃদয়কে ছুঁতে পেরেছে, আর জলপুত্র 888sport alternative linkের 888sport live chatগুণ এতেই সার্থকম–ত হয়েছে। এই পাড়ার মানুষের জীবনের ক্লেদের ছবি আঁকতে গিয়ে হরিশংকর চরিত্রদের মুখের সস্ন্যাং শব্দগুলোও অকপটে তুলে এনেছেন। আলোচ্য 888sport alternative linkে সুরভিবালা ও ক্ষীরবালার ঝগড়ার যে-চিত্র এখানে উপস্থাপিত হয়েছে, সেখানে নিম্নবৃত্ত মানুষের মুখের প্রাত্যহিক সস্ন্যাং গালাগাল লেখক যেন একটা ক্ষোর সঙ্গেই তুলে আনেন। সমুদ্রগামী জেলেদের সংগ্রাম যেমন সমুদ্রে, তেমনি তাদের 888sport promo codeদের ঘর-সংসারের সংগ্রাম যেন খুঁজে পাই আমরা।
ক্ষীরবালা নিজের রাগকে আর দমন করতে পারল না। তার স্বভাবসুলভ খ্যানখ্যান গলায় বলে উঠল, ‘অ ভাইশ্যালাই, হতিনর ঝিঅর কথাগিন কি রইম্যা হুইনতা লাইগ্য না? আঁইঅ কি কার লাঙঅর ভাত খাইর না? আঁর নেগে হাত-দইজ্যা হেঁচি কামাই আনের দেই খাইদ্যে।’
‘তোর বাপে তোরে চুইদ্যো। তুই কারে হতিন ডাকর দে। আইউক আজিয়া তোর লাঙ কালাবাঁইশ্যা। একজনর চনুদি তোর বিষ নো মরের। আঁর জামাইর চনুঅ তোর হেঁডাত ঘলস্নাই ঘলস্নাই দিতাম কইয়ম।’ কথাগুলো ধীরে ধীরে টেনে টেনে বলল সুরভিবালা।১৫
এ-888sport alternative linkে ধীবরসমাজ তার সকল সংগতি-অসংগতি নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। 888sport alternative linkটি বিষয়বৈচিত্র্যে, প্রকরণকৌশল,
চরিত্র-নির্মাণ, ভাষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অভিনবত্বের দাবি রাখে।
কুমিলস্না থেকে প্রকাশিত অরণি পত্রিকায় সমালোচক অনন্য ইসলাম লেখেন –
এ 888sport alternative linkে জেলেপলিস্নর নানা দিক চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন চরিত্রে মধ্যে জেলেপলিস্নর আঞ্চলিক ভাষার এমন সফল প্রয়োগ ইতিপূর্বে 888sport live footballে আর দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে 888sport app download for androidে আনতে পারি হাসান আজিজুল হকের আগুনপাখির কথা, যা সম্পূর্ণ বর্ধমানের আঞ্চলিক ভাষায় লেখা। আবার প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ ও জনপ্রিয় লেখক ইমদাদুল হক মিলনও বিক্রমপুরের আঞ্চলিক ভাষার চমৎকার ব্যবহার করেছেন তাঁদের 888sport alternative linkে। তবুও আমাদের মনে রাখতে হবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা অন্য যে কোন আঞ্চলিক ভাষা হতে বেশ জটিল ও কষ্টসাধ্য। সবকিছু মিলে জলপুত্র বাংলা 888sport live footballে একটি অনন্য সংযোজন। এ 888sport alternative linkের কারণেই লেখক হরিশংকর জলদাস 888sport live footballে একটি স্থায়ী আসন পাবেন। হরিশংকর জলদাস মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা অদ্বৈত মলস্নবর্মণের সার্থক উত্তর প্রতিনিধি।’১৬
জেলেসমাজ শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। যে-শিক্ষা মানুষকে পরিশীলিত করে তা থেকে বহু প্রাচীনকাল হতে তারা বঞ্চিত। তাই তাদের সংলাপে দীনতা লক্ষ করা যায়। সেই দীনতার ছবি ফুটে উঠেছে জলপুত্র 888sport alternative linkে। সমুদ্র, সমুদ্রগামী মানুষ, তাদের সমাজ, সে-সমাজের বঞ্চনার ইতিহাস তিনি তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন।

তিন
হরিশংকর জলদাসের সবচেয়ে আলোচিত 888sport alternative link হলো দহনকাল। জলপুত্র যদি জলের কাব্য হয় তবে দহনকাল হলো জল ও ডাঙার কাব্য। এতে জেলেদের জীবনের সংগ্রাম ও মুক্তির পথ নির্দেশিত হয়েছে। যে-লোকগুলো জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে শুধু জাল ও জলের কাব্য রচনা করে আর পেটের খোরাক জোগায়, তারাই এই 888sport alternative linkে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এটি লেখকের কাল্পনিক কোনো বিষয় নয়। এক জায়গায় লেখক স্বীকার করেছেন, যখন মুক্তিযুদ্ধ চলছিল তখন তাঁর বয়স আঠারো বছর। তিনি সম্মুখ থেকে যুদ্ধ দেখেছেন। সেই সম্মুখযুদ্ধ দেখার 888sport sign up bonus তিনি দহনকালে তুলে এনেছেন। ’৭১-এর ভয়াবহ অত্যাচারের নিপুণ চিত্র উঠে এসেছে দহনকাল 888sport alternative linkে। বাংলা 888sport live footballে নদীগামী জেলেদের জীবনালেখ্য খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু সমুদ্রগামী জেলেদের বুঝি আমরা এই প্রথম হরিশংকর জলদাসের হাত থেকে পেলাম।
দহনকালের পটভূমি রচিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষা পতেঙ্গা জেলেপলিস্নকে ঘিরে। জলপুত্র ও দহনকাল মূলত জেলে সম্প্রদায়ের দিবারাত্রির কাব্য। দহনকাল 888sport alternative linkের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে আছে শোষিত-বঞ্চিত জেলে সম্প্রদায়। এখানে তাদের প্রতিবাদ আছে, আছে জাত-বেজাতের মিথ্যা বড়াই, আর তার দংশনের জ্বালা। নিম্নবিত্তেও জাত্যভিমান আছে।
888sport alternative linkের শুরুতেই আমরা অশিক্ষিত রাধানাথকে দেখি তার সাত বছরের ছেলে হরিদাসকে টানতে টানতে আদাব স্যারের বাড়ির দিকে যাচ্ছে। একজন বাবা তার ছেলেকে নিয়ে আলোর দিকে চলতে শুরু করেছেন। সে-চলা হরিদাসের থেমে থাকে না। 888sport alternative link জুড়ে চলতে থাকে। 888sport alternative linkের শেষের দিকেও আমরা হরিদাসের দৃঢ় এই অভিব্যক্তির পরিচয় পাই। যখন পাকিস্তানি সেনাদের দ্বারা রাধানাথ নিহত হলো। বসুমতী রাধানাথকে দেখে ভেঙেচুরে পড়ে গেল। শুধু হরিদাস মাথা উঁচু করে বাপের দিকে এগিয়ে গেল। বাপের চোখে চোখ রেখে সে পেছনজীবনের কাছে ফিরে গেল। যখন সে বাপের হাত ধরে পাঠশালায় গিয়েছিল। আর তার বাবা তাকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল। সেই কথাই যেন সে 888sport app download for android করছে – ‘বাবারে, তোঁয়ার কথা রাইখ্যম আঁই। আঁই হাঁইট্যম, আরো আরো জোরে সামনের মিক্কে হাঁডি যাইয়ম আঁই।’
প্রাবন্ধিক ড. আহমেদ মাওলা 888sport alternative linkটি সম্পর্কে বলেন,
বিষয় হিসেবে জেলেজীবনকে বেছে নিলেও হরিশংকরের দহনকাল 888sport alternative linkে অনেক অভিনবত্ব আছে। তিনি প্রথম সমুদ্রগামী জেলেদের জীবনকাহিনি তুলে এনেছেন। মুক্তিযুদ্ধে জেলেদের অংশগ্রহণ নিয়ে ইতিপূর্বে আর কোনো 888sport alternative link লেখা হয়নি। হরিশংকর দহনকালে জেলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের কাহিনি রূপায়িত করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাঁর কৃতিত্ব ও স্বাতন্ত্র্য রয়েছে। কাহিনি বর্ণনায় তিনি চলিত ভাষা ব্যবহার করলেও চরিত্রের মুখে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংলাপ প্রয়োগ করার ফলে 888sport alternative linkের কাহিনি বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে। দহনকাল সাম্প্রতিক সময়ে রচিত একটি উত্তীর্ণ-উত্তম 888sport alternative link।’১৭
এ-888sport alternative linkে দ্বাদশ অধ্যায়ের পর নতুন মোড় শুরু হয়। তার আগ পর্যন্ত আমরা দেখি হরিদাস আদাব স্যারের পাঠশালায় যাচ্ছে। বাবা রাধানাথ ও মা বসুমতীর একান্ত ইচ্ছা হরিদাস লেখাপড়া করবে, সঙ্গে ঠাকুমা চন্দ্রকলাও চান নাতি হরিদাস লেখাপড়া করবে। তাই চন্দ্রকলা ছেলে রাধানাথের পাশাপাশি নিজেও উদয়াস্ত পরিশ্রম করেন। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মাছ বিক্রি করেন। সে-পয়সায় সংসারের খুঁটিনাটি প্রয়োজন যেমন মেটে, তেমনি হরিদাসের পড়ার খরচও চলে। রাধানাথের সংসারের পাশাপাশি এখানে আদাব স্যারের সংসারের চিত্র উঠে এসেছে। উঠে এসেছে খু-উ বুইজ্যা নামে একটা দুর্দান্ত চরিত্র। 888sport alternative linkের শেষে গিয়ে এই চরিত্রটিকে আমরা আরো বেশি সাহসী হয়ে উঠতে দেখব। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তার ঘৃণা উগরে দিতে গিয়ে এই চরিত্রটি নিজের জীবন দিতেও কার্পণ্য করে না।
এই পর্বে আমরা ইচাখালির হরবাঁশিকে পেয়েছি। হরবাঁশির মধ্যে একটা দুঃখবোধ আছে। এমনিতেও সে গানপাগল মানুষ। ঢোল নিয়ে প্রায়ই সে গানে ডুব দিতে চায়। তার গানের শ্রোতা পাড়ার সকল মানুষ। ইচাখালির পাশেই আছে কাঁঠালিয়া গ্রাম, এই গ্রামে যে-জেলেপাড়াটি রয়েছে তাকে কৈবর্তপাড়া বলা হয়। ইচাখালির জেলেপাড়ার মতো এ-জেলেপাড়ায় অত দুঃখ-কষ্ট নেই। এখানে সচ্ছলতা আছে। এই গ্রামের অনেকেই শিক্ষিত। আর এরা হালিক জেলেও বটে। মাছ ধরার পাশাপাশি এরা হালচাষ করে। তাই এদের একটু জাত্যভিমানও আছে। 888sport alternative linkের বর্ণনা অনুসারে, হালিকরা জালিকদের ছোটজাত ভাবে। বলে, ‘হিতারা তো ছোড জাত, মাউছ্যা। মাছ মারণ ছাড়া গতি নাই। আঁরার জীবন আছে। আঁরা শিক্ষিত, চাউরি গরি। আঁরা হিতারাত্তোনও বড়। আঁরা উচ্চ বংশের কৈত্তর।’১৮
এই জাত ভেদাভেদের বিষয়টি আরো প্রকট হয়ে ওঠে দয়ালহরির বিশেষ নৌকা ভাসানোর উপলক্ষ্যে যে ছোটখাটো নেমন্তন্নের অনুষ্ঠানে। সবাই খেতে বসেছে, তখন হরবাঁশিও এসে সামনের সারিতে বসে। তার পাশে কৈবর্তপাড়ার শশধর বসতে গিয়ে গোলযোগ বাধিয়ে দিলো। শশধর হরবাঁশিকে সেখান থেকে উঠে যেতে বলল। এটা বলার পেছনে বর্ণবাদী মনোভাব স্পষ্ট। কষ্ট পায় হরবাঁশি। প্রতিবাদ করে। শুধু শশধর নয়, শিক্ষিত প্রদীপের চোখেও হরবাঁশি ঘৃণার ছাপ দেখেছে। হরবাঁশির বুকে জাতপাতের বিষয়টা খুব খোঁচা দেয়। দয়ালহরি আর রামহরির বিষয়টিও এখানে চমৎকার ফুটে উঠেছে। দয়ালহরি আর রামহরি দুই ভাই। দয়ালহরি দয়াবান আর রামহরি তার উলটো। সেই রামহরি জালাল মেম্বারের সঙ্গে মিশে তাদের ব্যবসা কী করে ধ্বংস করল তার করুণচিত্র বেশ ভালোভাবে উঠে এসেছে এ-888sport alternative linkে। দাদার সঙ্গে বেইমানি করে রামহরি ভালো নেই। সে বুঝতে পেরেছে, সে ভুল করেছে। যখন জালাল মেম্বার তার নিষ্পেষণের ষোলোকলা পূর্ণ করে তখন রামহরি সংগ্রামী হয়ে ওঠে। তারপর সে নিজের জীবন দিয়ে তার ঋণ শোধ করে যায়। দয়ালহরির মতো ভাইয়ের মনে কষ্ট দিয়ে সে নিজে সুখ পায়নি। কূটকচালের নায়ক জালালের ক্ষতি করে সে প্রতিশোধ নিয়েছে।
সবাই ঘুমিয়ে পড়লে একটা হাতুড়ি ও একটা বড় পেরেক নিয়ে নৌকার খোলে নামে রামহরি। একটা একটা করে পে-না হাতুড়ি ঠুকে ঠুকে বের করে দেয় সে। গলগল করে সমুদ্রজল ঢুকতে থাকে সেই ছিদ্র দিয়ে।
বাইরে তখন বাতাসের হু হু আওয়াজ, সমুদ্র মাতাল।
অতি ধীর পায়ে পাছায় ফিরে আসে রামহরি। পানিতে হালটা নামিয়ে দেয়। সেই হাল শক্ত মুঠিতে চেপে ধরে চিৎকার করে ওঠে রামহরি, ‘জালাইল্যারে আঁই তোর বাপর নাম ভুলাই দি।’
সকালে সমুদ্র অনেকটা শান্ত। কাছে দূরে অনেক নৌকার পাল দেখা যাচ্ছে। কিন্তু জালালের ছোট নৌকাটিতে পাল উঠল না। রাতের জোয়ারে নৌকার তলা দিয়ে বিপুল বেগে পানি ঢুকেছে। গাউররা যখন টের পেয়েছে, তখন পানি নৌকার কলবাঁশ পর্যন্ত উঠে এসেছে। গর্জনশীল সমুদ্র থেকে এক একটা দানব ঢেউ নৌকার মাথায়-গায়ে আছড়ে পড়েছে। গাউররা হাউমাউ করে কেঁদেছে। রামহরি পাছায় নির্বিকার বসে থেকেছে। বড় নোঙরে বাঁধা বলে নৌকাটি ভেসে গেল না। কিন্তু জোর বাতাস ও পরাক্রান্ত ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে গেল। রামহরির চোখের সামনে কম-মজুরির গাউররা ভেসে যেতে লাগল। চন্দনকে একটা বাঁশ নিয়ে অকূল সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে দেখল রামহরি। জোয়ারের চাপে নৌকাটি হঠাৎ করে পানির নিচে চলে গেল। নৌকার সঙ্গে সঙ্গে রামহরিও ঢেউয়ে ঢেকে গেল। শুধু একটা আওয়াজ বাতাসে এসে মিশে গেল, ‘জালাইল্যারে আঁই তোর বাপর নাম …’১৯
এই 888sport alternative linkে আদাব স্যারের উঠানস্কুলের চিত্র আছে। আছে তার একজন ভালো শিক্ষক হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি। এ-888sport alternative linkে সবচেয়ে আলোচিত দিক হলো মুক্তিযুদ্ধের সময়টুকু। সেই সময়ের জেলেপাড়ার এক অসাধারণ চিত্র লেখক তুলে এনেছেন 888sport alternative linkে। জেলেদের ওপর রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা কী জুলুম-অত্যাচার করেছে তার বাস্তব বর্ণনা আছে দহনকালে। এই বর্ণনা ’৭১ পেরিয়ে বর্তমানের পাঠককে আলোড়িত করবে।
লেখক দহনকাল সম্পর্কে তাঁর আত্মজীবনী নোনাজলে ডুবসাঁতারে লেখেন –
দহনকালে আছে ‘জলমুক্তি’র বিবরণ। জেলেদের জীবন জলবন্দী। সে বন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে চাইছে হরিদাস। সে অশিক্ষার আঁধার থেকে শিক্ষার আলোকমালার দিকে হাঁটতে চাইছে। পিতা রাধানাথ শিক্ষিত হিসেবে গড়ে উঠবার জন্য পুত্র হরিদাসকে প্রণোদনা জোগাচ্ছে। এ যেন এক যুদ্ধকাহিনি। মুক্তির যুদ্ধ। অশিক্ষা, ক্ষুধা, দারিদ্র্য থেকে মুক্তির যুদ্ধ। হরিদাস আর কেউ নয়, হরিশংকর জলদাসই। এই নামটির মধ্যে এক ধরনের ইংগিত আছে। হরিশংকরের ‘হরি’ আর জলদাসের ‘দাস’ দুটো মিলে হরিদাস। দহনকালের কাল হলো ১৯৫৩ থেকে ১৯৭১। আবার ১৯৭১ আমার নিজের চোখে দেখা ১৮ বছরের তরুণ তখন আমি। স্বাভাবিকভাবে ’৭১-এর যুদ্ধকাল এই 888sport alternative linkে বর্ণিত হয়েছে। উত্তর পতেংগার জেলেপাড়ার মানুষও একাত্তরের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। তারাও ঠেকিয়েছিল পাঞ্জাবি সেনা আর রাজাকার-আল শামসদের। ওই ঘটনা আমি তুলে ধরেছি দহনকালে। দেখাতে চেয়েছি, জেলেদের মতো প্রান্তজনরা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। লাল সূর্যটা অধিকারে আনার ক্ষেত্রে, সামান্য হলেও অদ্বৈত মলস্নবর্মণের উত্তরাধিকারীদের অবদান আছে।’২০
এ-888sport alternative linkে হরিশংকর জলদাসের চরিত্রচিত্রণ দক্ষতা নিখুঁত। দহনকাল 888sport alternative linkে চরিত্ররা হাসে-কাঁদে, প্রেম-ভালোবাসায় আর সংগ্রামে উচ্চকণ্ঠ হয়ে ওঠে। হরিদাস, খু-উ বুইজ্যা, রাধেশ্যাম, চন্দ্রকলা, পরিমল, রসমোহন, শিবশরণ, জালাল মেম্বার, আবদুল খালেক মেম্বার, মৌলবী আবদুস ছোবাহান – এদের নিয়েই ঔপন্যাসিক গড়ে তুলেছেন দহনকাল 888sport alternative linkের বয়ান। এই 888sport alternative linkটি ‘প্রথম আলো বর্ষ সেরা বই 888sport app download bd’ পেয়েছে। দহনকাল সম্পর্কে কলকাতার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বরুণকুমার চক্রবর্তী বলেন,
আঞ্চলিক 888sport alternative link হিসেবেও দহনকালের যোগ্যতা ও রসোত্তীর্ণতা প্রশ্নাতীত। চট্টগ্রামের উত্তর পতেংগার সমুদ্রগামী মৎস্যজীবীদের যে জীবনালেখ্য রচনা করেছেন লেখক তাতে এদের সামগ্রিক জীবনকথা রূপায়িত হয়েছে বিশ্বস্তভাবে। কঠিন জীবনসংগ্রামে যুক্ত থেকেও হতভাগ্য মৎস্যজীবীদের বহুলাংশ যে দারিদ্র্য মুক্ত হতে পারে না সে জন্য দায়ী অন্য কেউ নয় মুষ্টিমেয় লোভী স্বার্থপর জলদাসই। এদের শোষণ চিত্রই বিশ্বস্তভাবে চিত্রিত হয়েছে এবং এক ধরনের প্রতিবাদও সোচ্চারিত হয়েছে প্রকারান্তরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসবকে অতিক্রম করে গেছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের জ্বলন্ত বিভীষিকাময় বিবরণ। ঐতিহাসিক দলিলের মর্যাদায় উত্তীর্ণ হয়েছে ‘দহনকাল’।২১
সর্বোপরি দহনকালের ভাষাতেও লেখক চমক সৃষ্টি করেছেন। আঞ্চলিক 888sport alternative link হিসেবে লেখক উত্তর পতেঙ্গাবাসীর আঞ্চলিক সংলাপ এতে ধারণ করেছেন। শুধু তাই নয়, গুটিকয়েক মানুষের মুখের ভাষা ব্যতিক্রম, তাও তিনি ছুঁয়ে গেছেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহারের কষ্টসাধ্য বিষয়টি তিনি এ-888sport alternative linkেও সফলতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পেরেছেন। জলপুত্র ও দহনকাল সম্পর্কে লেখক হরিশংকর জলদাসের অন্তরঙ্গকথা গ্রন্থে বলেন,
জলপুত্র আর দহনকালের কাহিনি সমান্তরাল নয়, জলপুত্রের পরবর্তী কাহিনি হল দহনকালের কাহিনি। আসলে একটা ট্রিলজি লেখবার পরিকল্পনা আছে আমার। জলপুত্র আর দহনকাল নামের দুটো অংশ লেখা হল। শেষটার প্রস্ত্ততি নিচ্ছি আমি। জলপুত্রে জেলেদের স্বপ্নবিভোরতার কথা আছে। গঙ্গাপদের মাধ্যমে সে-স্বপ্ন অবয়ব পেতে যাচ্ছিল। সে অবয়বকে ভেঙেচুরে একাকার করে দিয়েছে। হত্যা করা হয়েছে গঙ্গাপদকে। কিন্তু 888sport alternative linkের স্বপ্ন সেখানে থেমে যায় নি। বনমালীকে দিয়ে অধিকার পূরণের আর আত্মবিস্তারের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে জেলেরা। সেই স্বপ্নেরই বিস্তার লক্ষ্য করা যায় দহনকালে। বনমালীই যেন হরিদাস হয়ে উত্তর পতেংগার জেলেসমাজে ফিরে এসেছে। গঙ্গাপদরা উঠে এসেছে জলভাগ থেকে স্থলভাগে। স্থলভাগে জেলেদের অন্যরকম সংগ্রাম। জলের সংগ্রামের চেয়ে স্থলের সংগ্রাম আরো কঠিন, আরো রূঢ়। হরিদাস এবং তার সমাজের মধ্যে সংগ্রামময় রূঢ়তাকে অতিক্রমের প্রবল ইচ্ছাকে স্পষ্ট করা হয়েছে দহনকালে। তাই বলছিলাম জলপুত্র ও দহনকালের কাহিনির সমান্তরাল নয়, বরং বলা যায় – দহনকাল, জলপুত্রের পরবর্তী কাহিনি।’২২
দহনকালের সমাজচিত্র আঁকতে গিয়ে লেখক নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তুলে এনেছেন সেসব ভাগ্যাহত মানুষের দিনলিপি, যার প্রতিচিত্র অঙ্কিত হয়েছে আলোচ্য 888sport alternative linkে। সমুদ্রসংগ্রামী ও নদীসংলগ্ন জেলেদের সঙ্গ-নৈঃসঙ্গ্য, মৃত্যু-জীবন একাকার হয়ে আছে এই 888sport alternative linkদুটিতে। একটি তথ্য না জানালেই নয়, জলপুত্র, দহনকাল ও প্রস্থানের আগে – এই ট্রিলজি ব্যক্তি হরিশংকরের তিন পুরুষের বয়ান। জলপুত্রে আছে দাদার কথা, দহনকালে বাবার আর প্রস্থানের আগে 888sport alternative linkে নিজের কথা বলেছেন। এই ত্রয়ী 888sport alternative linkে হরিশংকরের জীবনভাবনা, চেনা মানুষ, ভৌগোলিক বিবরণ ও ভাষার উত্তরণ আমাদের চমৎকৃত করে। এই তিনটি 888sport alternative link বাংলা 888sport live footballের এক অনন্য সংযোজন।
হরিশংকর জলদাস অনেকটা একক-নির্জন পথেই হাঁটা শুরু করেছেন। এই পথে তাঁর কোনো পুরোধা নেই, কোনো সঙ্গী নেই। চারপাশের ব্রাত্য-প্রামিত্মক মানুষদের নিয়েই তাঁর 888sport live footballজীবনের পথচলা। এ-পথে তিনি যে সার্থক একজন কথা888sport live chatী তাঁর রামগোলাম, মোহনা, রঙ্গশালা, সেই আমি নই আমি, আমি মৃণালিনী নই, একলব্য, সুখলতার ঘর নেই প্রভৃতি 888sport alternative link তার প্রমাণ।

তথ্যনির্দেশ
১. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, পদ্মানদীর মাঝি, অবসর, 888sport app, পুনর্মুদ্রণ, এপ্রিল ২০১১।
২. হরিশংকর জলদাস, নদীভিত্তিক বাংলা 888sport alternative link ও কৈবর্ত জনজীবন, বাংলা একাডেমি, 888sport app, ২০১২।
৩. ইবনে সাজ্জাদ, দৈনিক আজাদী, চট্টগ্রাম, ২০১২।
৪. হরিশংকর জলদাস, জলপুত্র, মাওলা ব্রাদার্স, 888sport app, তৃতীয় মুদ্রণ, মে ২০১৭, পৃ ৭।
৫. ওই, পৃ ৪০।
৬. ওই, পৃ ৯।
৭. ওই, পৃ ১২২।
৮. ওই, পৃ ১২১।
৯. দৈনিক আজাদী, চট্টগ্রাম, ৭ মার্চ, ২০০৮।
১০. হরিশংকর জলদাস, জলপুত্র, মাওলা ব্রাদার্স, 888sport app, তৃতীয় মুদ্রণ, মে ২০১৭, পৃ ৭৮।
১১. ওই, পৃ ৫০।
১২. ওই, পৃ ৯-১০।
১৩. ওই, পৃ ১২৪।
১৪. শুভেন্দু মজুমদার, আনন্দবাজার পত্রিকা, কলকাতা, ১৪ জুন, ২০০৮।
১৫. হরিশংকর জলদাস, জলপুত্র, মাওলা ব্রাদার্স, 888sport app, তৃতীয় মুদ্রণ, মে ২০১৭, পৃ ৮৬।
১৬. শামিত্মরঞ্জন ভৌমিক (সম্পাদক), অরণিকা, দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম 888sport free bet, গ্রীষ্ম-বর্ষা ১৪১৫, কুমিলস্না, জুলাই ২০০৮।
১৭. আবুল হাসনাত (সম্পাদক), কালি ও কলম, অষ্টম বর্ষ দ্বিতীয় 888sport free bet, 888sport app, পৃ ১২১।
১৮. হরিশংকর জলদাস, দহনকাল, মাওলা ব্রাদার্স, 888sport app, প্রথম মুদ্রণ, মে ২০১০, পৃ ২৫।
১৯. ওই, পৃ ১১৭-১১৮।
২০. হরিশংকর জলদাস, নোনাজলে ডুবসাঁতার, প্রথমা, 888sport app, ২০১৮, পৃ ১৬০।
২১. বরুণকুমার চক্রবর্তী (সম্পাদক নারায়ণ হালদার), পৌনঃপুনিক, প্রথম 888sport free bet, কলকাতা, ১৮১৮।
২২. মহি মুহাম্মদ, হরিশংকর জলদাসের অন্তরঙ্গকথা, অবসর, 888sport app, ২০১৭, পৃ ৪৫-৪৬।