সাক্ষাৎকার গ্রহণ : দীপকরঞ্জন ভট্টাচার্য
‘এ যেন গুল্মের ডাল, আর আমি একটি বউল,/ তার বেশি নই’, যৌবনবাউল কাব্যগ্রন্থের এই শিশির-ভেজা উচ্চারণ পেরিয়ে তাঁর 888sport app download apkয় একদিন জায়গা করে নিল ‘পথে পড়ে থাকে শ্মশান, কুকুর, মানুষ ও বসুমতী/ ছুঁয়ে উড়ে যায় একফোঁটা প্রজাপতি’ তাঁর গিলোটিনে আলপনার ‘ভিয়েৎনাম্নী’ 888sport app download apkটিতে এবং পরে আরো-আরো পথ খরায়-বন্যায় হেঁটে শেষে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘সদ্যমৃত সমূহ সৈন্যের/ পা থেকে জুতো সরায় সারে-সারে/ অন্য যারা এখনও বেঁচে আছে/ প্রলয়শীতে, রাতের কান্দাহারে’ – একটি একান্ত উচ্চারণ ক্রমশ গোটা বিশ্বের ক্ষয় ক্লামিত্ম আর মাৎস্যন্যায়ের দিকে ঘুরে গেল। তবে কি রুক্ষ ক্রমশ আরো রুক্ষ বাস্তবপ্রতিম আর নিরুপায় দিগ্দর্শী হয়ে উঠবে তাঁর কণ্ঠস্বর? ওই ‘একফোঁটা প্রজাপতি’র ডানাতেও বিবর্ণ হয়ে নেমে আসবেন রুদ্র! আমাদের নিজের সঙ্গে নিচু স্বরে বলা কথাগুলোও কী করে পৌঁছে যায় তাঁর প্রাণে আর আমরা পেয়ে যাই ‘তোমার নামে নক্ষত্রের বৃক্ষ ভরে শুধু’ বা ‘ধীমান্ মুখের পাশে জড়ো করে আনি অভিমানও’ – তাঁর এই আর্দ্র রাগমালা। তিনি যখন বলে ওঠেন, ‘ক্ষুধিত মুখের সঙ্গে নগ্নতার তফাৎ কোথাও নেই’ – তখন আমাদের ঘুমন্ত সাজগোজ-পরা রূপবান নাগরিক অস্তিত্ব যেন আভূমি কেঁপে ওঠে। ‘গোপন কান্নার মতো ঘুণাক্ষরে আমার ভিতরে বুদ্ধ বাড়ে’, এমন সব গভীর, বিবেকমথিত উচ্চারণ উঠে আসে তাঁর লেখায়।
তিনি সমন্বয়ের কবি। দুটো আলাদা দেশ, মহাসময়ের দুটো প্রান্ত, ঈশ্বরচেতনা এবং মানবচেতনার দুই ভিন্ন অভিমুখ অন্য এক বোধের ধারকে মিশে যেতে পারে তাঁর মধ্যে – ব্রেশ্ট এবং সূরদাস একই সময় মাথা তোলেন তাঁর বিশ্বে, খ্রিস্টপূর্বাব্দের রচনার সঙ্গেই সহবাস করে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের ক্ষতবিক্ষত দিনগুলোর 888sport sign up bonusবিদ্ধ জার্মান কবি পাউল সেলানের রচনা, মেধার সঙ্গে মিশে যায় মায়া এবং আজকের দিনে বসেই অনায়াসে তিনি অপৌরুষেয় সৃষ্টির দায় বহন করার কথাও ভাবেন।
‘সমস্ত দিন প্রতিবাদ রেখে ফেরার প্রহরে/ এ-কী বিস্ময়, কার প্রশাসন তারায় তারায়!’ – এই দেখা তাঁর চেতনার দীপ্তি মেখে নেয়, যখন অথর্বসংহিতার পুরুষসুক্তের ‘ঈশ’ যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো প্রশাসক – খুব আলতোভাবে সেই ঐহিত্যের দিকে তুলে নিয়ে যান তিনি; তেমনই বলে উঠতে পারেন ‘গালফের পর/ 888sport app download apk আর আগের মতো নয় প্রগল্ভা/ তাকে এখন ভাবতে হবে ভ্রূকুঞ্চনে’। এমনকী ‘পাড়ার ছেলেমেয়েরা হ্যারি পটারের গল্পে মশগুল হতে হতে তরণী ছাড়াই নদী পার হয়ে গেল’ তা-ও তিনি দেখতে ভোলেন না।
যে-কোনো বিশিষ্ট এবং প্রধান কবির সাক্ষাৎকার পলস্নবগ্রাহী হতে বাধ্য এবং সেই কবির নাম যদি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত হয়, পাঁচ দশকেরও বেশি যিনি বাংলা 888sport app download apkর মেঠো-পথটিতে তাঁর ইথার-ম–ত জামা গায়ে নিয়ে ধুলো উড়িয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং স্বয়ং শক্তি চট্টোপাধ্যায় যাঁকে তাঁর ‘ছন্দ, বাক্চাতুর্য ও আপাত-সরল বাংলাভাষার’ শিক্ষক হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন, তখন তা আরো প্রশ্নাতীতভাবে সত্যি হয়ে দাঁড়ায়। ইতোমধ্যে ওঁর বিভিন্ন সময়ে দেওয়া তেরোটি সাক্ষাৎকারের একটি সংকলন প্রকাশিত হয়েছে – ‘নিজেকেই যেন দিয়েছি শ্রম্নতিলিখন’। এই সাক্ষাৎকারটিকে ধরলে ওঁর কথোপকথনের ভুবন নিয়ে একটি চতুর্দশপদী যেন সম্পূর্ণ হলো। একটু খেয়াল করলেই আগের কাজগুলোতে ছন্দ নিয়ে এবং ওঁর অসাধারণ 888sport app download apkগুলোর কবোষ্ণ মুহূর্তের নির্দিষ্ট দায় এবং দাবি বিষয়ে প্রশ্নের স্বল্পতা লক্ষ করা যাবে। সেই দিক থেকে এই কাজটিকে তাদের পরিপূরক স্বর হিসেবে ভাবা যেতে পারে।
তাঁর ‘বাক্রীতির নিসর্গের দিকে’ আমাদের তাকিয়ে থাকতে হয়, যে ছন্দ তাঁর ‘বাল্যবন্ধু’ আমাদেরও তা দু-হাত বাড়িয়ে আহবান করে, তবু নিশ্চিন্ত সেই বলয় ছেড়ে অ-সময়ের যে ছন্দ পারার মতো টলমল করছে তাঁর সাম্প্রতিক 888sport app download apkয়, যে স্পন্দ কথা-ভাষা আর পড়া-ভাষার মধ্যে দুলে-দুলে উঠছে, তাকে বুঝতে হবে পথে নেমে মিছিলে হেঁটে বিক্ষোভ সমাবেশের এক কোণে চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে কিংবা হয়তো শ্রী-বিস্মৃত পাগলের বুকে কান পেতেও।
কোনটি পরমার্থ তাঁর – দিন না রাত? পূর্ণতা না শূন্যতা? এককভাবে কোনোটাই নয় মনে হয়। তাঁর তো সমতলে পথ-চলা নয়, প্যারাবোলার মতো বাঁক নিতে-নিতে তা উঠে যায় এবং নেমেও আসে। অমস্নান মেধার হতাশ তীক্ষন অন্তর্দৃষ্টির সঙ্গে তিনি বোধহয় মিশিয়ে দিতে পারেন আশা আর বিরল-পলাশের লাল রং যখন তিনি বলেন, ‘রাত্রি আর দিন/ ওতপ্রোত হয়ে আজ 888sport app download apkর চলেছে প্রস্ত্ততি’। ক্ষর-অক্ষর দুদিকেই তাঁর নিমন্ত্রণ, তবু বিনীতভাবে তিনি যেন ‘দুঃখ তাপের উপত্যকায়’ নেমে এসেছেন অধিকতর আগ্রহে – ‘কতটা জগৎ বুকে নিতে পারে তার সেদিকেই মন’। তখন তাঁকে ক্ষরব্রহ্মের কবিয়াল বলে চিনতে কোথাও ভুল হয় না আমাদের।
দীপকরঞ্জন : আজ ২০১২-র প্রথম ভাগে এসে আপনার সুদীর্ঘ কবিজীবনের সার্থকতা সম্বন্ধে আপনার আত্মমূল্যায়ন কী? গতকালের শিশিরমঞ্চের বক্তব্য এবং 888sport app download apk-পাঠ থেকে (২১ ফেব্রম্নয়ারির অনুষ্ঠান) একটা বিষাদের সুর উঠে আসছিল আপনার বলায়।
অলোকরঞ্জন : সার্থকতা শব্দটা আমি ব্যবহার করব না, এমন-কি মহতী ব্যর্থতা, সেটাও বলব না। একটি 888sport app download apkর থেকে আর একটি 888sport app download apkয় যাওয়া, সেটা সবসময় কিন্তু একটা নিরন্ধ্র পরম্পরা নয়। একটি 888sport app download apkর যে-বৃত্ত সেটা সম্পূর্ণ করে আর একটি 888sport app download apkর বৃত্তে প্রবেশ করার মধ্যে একজন কবিরও একটা transmigration, একটা জন্মান্তর হয়ে যায় এবং আমি যদি এভাবে বলি, আমার সুন্দর ‘এই জীবনে ঘটাল মোর জন্ম-জন্মান্তর’, সেইটা যদি হয়, তাহলে আমার মনে হয় যে, প্রতিটি 888sport app download apkর যে স্বয়ম্পূর্ণ বিশ্ব, সেই বিশ্বকে নতুন করে স্পর্শ করার একটা কামনা আমার মধ্যে বোধহয় জন্মাবধি রয়ে গেছে। এইসঙ্গে এ-কথাটা আমি যোগ করব যে, সম্ভবত আমার যে প্রাক-জন্মের সংস্কার (সেটাকে যদি fixe ide©©e বলি, ইংরেজিতে যেটাকে fixed idea বলা হয়) যে আমার ভাষা যেটা, অর্থাৎ আমার মাতৃভাষা, সেই মাতৃভাষাকে তার সম্পূর্ণ বলয়ের মধ্য থেকে আমি ধরব, সেটা ‘যৌবনবাউলে’ও ছিল এবং আমার সদ্যতন বই, সে কি খুঁজে পেল ঈশ্বরকণা, তার মধ্যেও রয়েছে। এদিক থেকে বলতে পারো, আমি আত্মখ-ন করে বলছি, প্রথমে যেটা আমার ছিল ‘যা পেয়েছি প্রথম দিনে সেই যেন পাই শেষে,/ দু-হাত দিয়ে বিশ্বেরে ছুঁই শিশুর মতো হেসে’… এর মধ্যে আশাবাদের সঙ্গে একটা বিষাদও মিশে গেছে, যেটা নশ্বর মানুষের উত্তরাধিকার। একটা খুব সুন্দর কথা বলেছিলেন লেসলি স্টিফেন (Leslie Stephen), যিনি রবীন্দ্রনাথকেও আদি পর্বে বিভাবিত করেছিলেন – nothing is less poetical than optimism, অর্থাৎ আশাবাদের মতো অ-কাব্যিক আর কিছু হতে পারে না। সেই আত্মতৃপ্তির অভাব যখন একজন কবিয়ালের মধ্যে ফুরিয়ে যায়, তার আর কবি হিসেবে বেঁচে থাকার কোনো সার্থকতা নেই। এবং আমি এই সূত্রে আরো বলব, একদিক থেকে বললাম একটা 888sport app download apk থেকে আর একটা 888sport app download apkয় যাওয়া, এর মধ্যে যেরকম ভুবন-ভুবন বিসারিত হয়ে যায়, তেমনি আবার এটাও ঠিক যে, যদি কবিচারিত্র্য বলে কিছু থাকে তার কাজ হবে সমস্ত কিছুর মধ্য দিয়ে অন্তত একটা প্রাতিভাসিক সংগীত রচনা করা। অর্থাৎ কবির একটা লক্ষ্য থাকে, পাঠকের কাছে তার যে-অঙ্গীকার বা commitment, সেই দায়ভাগের কাছে সত্যকাম থাকা, যদিও তিনি সংস্কারক নন। সেদিক থেকে বলতে পারো, আমি আবারও ফিরে আসি, সার্থকতার আমি কিছুই দাবি করব না, সেই দাবির মূল্যায়ন নিশ্চয়ই মহাকাল করবে, তবে এইটুকু আমি বলব যে, আমি আমার আজন্ম-অর্জিত ভাষার পক্ষে লড়াই করে গেছি। এই কথাটুকু যদি আমার সমাধি-বেদিতে উৎকীর্ণ থাকে তাহলে আমি নিজেকে ধন্য বলে মানব।
দীপকরঞ্জন : ১৯৩৭-এ যখন রবীন্দ্রনাথ দুটো দিন সম্পূর্ণ চেতনাহীন অবস্থায় কাটালেন এবং প্রায় মৃত্যুকেই প্রত্যক্ষ করলেন, তার পরের লেখাগুলোতেও এমনকি অন্য পর্যায়ের আর এক আশাবাদের কথা আমরা পাই। প্রামিত্মকের লেখাগুলোতেও দেখতে পাচ্ছি…
অলোকরঞ্জন : এইখানে যেটা বলছ সেটা এক ধরনের রাবীন্দ্রিক নির্মিতি বা construct। একেবারে শেষ দিকের 888sport app download apkগুলো যদি দেখো, ‘মৃত্যুর নিপুণ 888sport live chat বিকীর্ণ আঁধারে’ অথবা রানী চন্দকে যখন তিনি শ্রম্নতিলিখন দিচ্ছেন তাঁর 888sport app download apk ‘কে তুমি?/ মেলেনি উত্তর’ যার শেষ কথা ‘কে তুমি?/ পেল না উত্তর’। আমি আজকে রবীন্দ্রনাথের সেই 888sport app download apkগুলোই আমার রক্তমণির হার করে রেখে দিয়েছি যেসব 888sport app download apkর মধ্যে কোনো আরোপিত আশাবাদ নেই এবং সেইসব 888sport app download apkই আমি বরণ করে নিয়েছি, বিশেষ করে তাঁর শেষ পর্বের 888sport app download apk – শেষ পর্বের 888sport app download apkর মধ্যে একটা অনির্ণেয়তার টঙ্কার… মনে আছে? দুই বন্ধু মিলিত হয়েছে। তারা যাচ্ছে। একজন সদ্য বিবাহিত। তার মিলনের সমাচার বন্ধুকে নিবেদন করছে। শেষ লাইন দুটো দেখো – ‘টেলিগ্রাম এল সেই ক্ষণে/ ফিনল্যান্ড্ চূর্ণ হল সোভিয়েট বোমার বর্ষণে’।
দীপকরঞ্জন : ‘অপঘাত’।
অলোকরঞ্জন : এই যে রবীন্দ্রনাথ যিনি তাঁর গীতাঞ্জলির মূর্তি-টাকে অনায়াসে দলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন, আত্মদেবায়নের যে গরিমা, তাকে ভেঙেচুরে দিয়ে মানুষের অবচেতন অস্তিত্বের ছবি আঁকছেন, সেসব ছবি এখনো বাঙালির অন্তর্জীবনে প্রবেশ করেনি। সেই রবীন্দ্রনাথকে আমার অত্যন্ত বড় বলে মনে হয়… ইন্দিরা গান্ধী প্রযোজিত emergency-র সময় আমাদের উনি নিমন্ত্রণ করেছিলেন রাজভবনে। তিনি বললেন ‘আপনি শামিত্মনিকেতনের ছেলে হয়ে
এসব বলছেন! রবীন্দ্রনাথের আশাবাদের উপর নির্ভর করেই তো আমরা এগিয়ে চলেছি, নতুন ভারতবর্ষ এগিয়ে চলেছে।’ আমি বলেছিলাম, ওই Leslie Stephen-এর কথা – আপনি হয়তো জানেন না কিন্তু আপনার পিতৃদেব জানতেন যে, nothing is less poetical than optimism.
দীপকরঞ্জন : আপনি বলতে চাইছেন বেদামেত্মর যে-কথা, অর্থাৎ আনন্দকে নির্মাণ করে নিতে হবে, সেই দিকে…
অলোকরঞ্জন : খুব সুন্দর বলেছ। এই যে কথাটা দেখো, এটা Eliot-ও বলেছেন, ‘… to construct something/ Upon which to rejoice’. … আজকের সকালটা দেখে কী যে ভালো লাগছে। এই যে তুমি আর আমি বসেছি, একটা অপূর্ব পরিম-ল তৈরি হয়েছে। একটু আগেই আমাদের এক বন্ধুর সঙ্গে দোতলায় দেখা করে এলাম। চারদিকে, ভেবে দেখো, আলোক-বসন্ত এল, এখানে নতুন সরকার বদল হলো। এইগুলোকে দেখেই যে আমরা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি তা তো নয়। আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি একটা অনপনেয় ভরসার ওপর ভিত্তি করে ‘নিশিদিন ভরসা রাখিস, ওরে মন, হবেই হবে’। স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার দেবার ব্যাপারটা থেকে যাচ্ছে। পদ্ম তুলতে গিয়ে কতবার শাপলা নিয়ে বেরিয়ে আসছি। একজন কবির দুর্ঘট হচ্ছে, যখন তিনি প্রকাশ করতে আরম্ভ করলেন তখন থেকে তিনি পাঠকের কাছে উন্মোচিত, বলা যেতে পারে, নগ্ন। তার জন্য একজন লিরিক কবি যখন 888sport app download apk লেখেন দেহলিতে দাঁড়িয়ে, তার অর্ধেক ঘর অর্ধেক বাহির। অর্ধেক তার সাজঘরের প্রস্ত্ততি আর অর্ধেক তার বাইরের দিক থেকে যে-জীবন এসে প্রবেশ করছে, পাঠকের প্রত্যাশা এসে প্রবেশ করছে, সেইটা। এর শামিল হতে হয়। পাঠক এবং কবি যখন মেলে কোনো এক লছমন ঝুলার সেতুর মাঝখানে (তুমি লক্ষ করবে, ওখানে যদি গিয়ে থাক) সাঁকোটা খুব নড়বড়ে হয়ে থাকে, দুলতে থাকে, মনে হয় এক্ষুণি পড়ে যাবে। তাহলে কি আত্মহত্যা করবে? নাকি পাঠককে নিয়ে বসে যাবে এক নৌকায়? অথবা কী করবে? এই যে অমীমাংসা, বিষ্ণু দে-র ভাষায় বলছি আততি (tension), সেটাই প্রায় 888sport app download apkর ব্যাপার। এবার এখানে আমি আসছি, তুমি খুব সুন্দরভাবে বেদামেত্মর কথাটা আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছ – বেদামেত্ম বলা হচ্ছে ‘আনন্দময়ো অভ্যাস্যাৎ’, আনন্দকে অভ্যাস করে নিতে হয়। ‘বিশ্ব যখন নিদ্রামগন গগন অন্ধকার’, সেই সময়ে একজন কবি যখন লিখতে বসেন, ‘যা নিশা সর্বভূতানি তস্যাং জাগর্তি সংযমী’… সারা রাত্রি সারা দুনিয়া ঘুমিয়ে পড়েছে, কবি লিখতে বসেছেন, তার করতলে তখন সারা বিশ্বের ভার এসে পড়েছে। তিনি কিন্তু সমস্ত জগতের অস্তিত্বের উত্তরণের জন্য একা দায়বিদ্ধ পুরুষ। আনন্দ সৃষ্টি করে মানুষকে এই গ্রহের উপযোগী করে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, সেই দায়বদ্ধতা থেকে যদি কোনো কবি না লেখেন, তিনি মেজর-মাইনর বা অনতিগৌণ কবি হয়েই রয়ে যাবেন। সেই জায়গাটা কবির পক্ষে মৃত্যুর সমান। এলিয়ট-ও এই মর্মে আভাস দিয়েছেন, যদিও তার অনেক আগেই বেদান্তও বলে দিয়েছে এই কথাটা।
দীপকরঞ্জন : আরোপিত আশাবাদ নয় আপনি বলছেন, দায়বদ্ধতার জায়গাতেও কবিকে আসতে হবে। দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গে মনে পড়ছে প্রামিত্মকের যে শেষ দুটো 888sport app download apk যিশুর জন্মদিনে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন…
অলোকরঞ্জন : শুধু অনাহত আশাবাদ নয়, শুধু ভাড়া-করা আশাবাদ নয়, কিংবা বইতে পড়া বা পূর্বসূরির কাছ থেকে অধীত আশাবাদ নয়, এমন একটা আশার কথা বলতে হবে, ‘আলোও নিজে কেমন যেন অন্ধকারের মতো’। সেই দ্ব্যর্থদ্যোতকতার মধ্যে থেকে যদি না হয় তবে সেই 888sport app download apkর কাছে আমরা ফিরবই না। জীবনানন্দের একটা 888sport app download apk যেটা প্রায় একটা epic-এর ভগ্নাংশ, সেখানে তিনি বলছেন ‘কোথায় সেদিন রয়েছিলাম আজকে মনে হয়/ সাগর থেকে আরো বৃহৎ আলো দেখেছিলাম। ঠিক তা সাগর নয়।/’ সেটা কী? ‘প্রশান্ত না কৃষ্ণ বেরিং ভূমধ্যলীন/ আরব মহাসাগর তাকে বলে/এখানেতে সাদা ঘোড়ার ভিড়ে/ একটি ঘোড়া সূর্য হয়ে জ্বলে/’ – এই যে ঘোড়াটা সূর্য হয়ে জ্বলছে তার দুচোখে অসীম বেদনা, অসংখ্য মৃত্যুর 888sport sign up bonus অথচ সে হচ্ছে সূর্যের ঘোড়া। সূর্যের সাতটা ঘোড়ার একটা ঘোড়াই মাত্র 888sport app download apk।
দীপকরঞ্জন : ‘কোটরে-রাখা মানব করোটি যে/ দেবদূতের টুকরোখানি। এসব জড়ো করতে নিয়ে জাগে/ ভুরুর কাছে শিশির, সম্ভ্রম/ এবং আমার নির্ধারণে বিচার করার সময় ভীষণ কম’ – (‘টুকরোগুলো জড়ে করতে গিয়ে’, গিলোটিনে আলপনা)
বা,
‘যার ভিতরে সব ঘটনা এবং চরিত্রের/ স্বতন্ত্র তাৎপর্য আছে, ভাবতে গিয়ে ঢের/ দেরি হয়েছে’ (‘ক্রমান্বয়’, গিলোটিনে আলপনা), বা ‘… কিংবা যদি আনাচে-কানাচে/ ভুলের নজির মেলে, তাহলে তো কথার প্রহারে তিন প্রহরে/ পূর্বে যতিচিহ্ন পরবে না রোদ্দুরে/ একঠায় দাঁড়িয়ে পায়ে ক্লামিত্ম নামে মনেও হবে না,’ (‘আমার ঠাকুমা’, যৌবনবাউল)
এই 888sport app download apkগুলোকে সামনে রেখে ভাবযতি এবং পর্বযতির বিচ্ছিন্নতা এবং ছন্দের বিবর্তন সম্বন্ধে কিছু বলুন।
অলোকরঞ্জন : একদিক থেকে দেখলে এখানে sprung rhythm আছে, বাক্ছন্দ আছে। তুমি দেখবে চারটে stress বা প্রস্বর থাকছে। কোটরে রাখা, এখানে যেমন চারের জায়গায় পাঁচ চলে এলো, যেমন ‘যমুনাবতী সরস্বতী’। এটা আদিম এবং আধুনিক।
দীপকরঞ্জন : প্রত্যেকটাই মুক্তদল, পাঁচই হওয়া উচিত।
অলোকরঞ্জন : এক হিসেবে পাঁচই হচ্ছে। দ্বিতীয়টিতে স্বরমাত্রিক ঝোঁক। এবার তোমার প্রিয় 888sport app download apkটিতে আসি – ‘যার ভিতরে – ৪, সব ঘটনা – ৪, এবং চরিত – ৪ রের-অপূর্ণপদী/ স্বতন্ত্র তাৎ – ৪, পর্য আছে – ৪ ভাবতে গিয়ে – ৪ ঢের – অপূর্ণপদী-পর্ব,/ দেরি হয়েছে’ – পাঁচ মাত্রায় বিতত।
দীপকরঞ্জন : ওই 888sport app download apkটিতে পর্যযতি আসছে ‘ঢের’ শব্দটিতে, অথচ ভাবযতি আসছে ‘দেরি হয়েছে’ বলার পর, এখানে আমি জানতে চাইছি ছন্দের এই প্রয়োগ-কৌশলের জটিলতা এবং একই সঙ্গে আধুনিকতার বিষয়ে।
অলোকরঞ্জন : এর মাঝখানে একটা অব্যক্ত বর্ণের কান্না রয়েছে। যেমন ধরো যেটাকে ত্রিতাল বলা হচ্ছে, সেটা কিন্তু আসলে চার পর্বের। চারের ওপর beat-টা হচ্ছে। তা ধিন ধিন ধা/ তা ধিন ধিন ধা/ তা ধিন ধিন না/ তেটে ধিন ধিন ধা। চতুর্থ যে পর্ব আসছে, ওটা দিয়ে সমাপ্ত করা হচ্ছে। এবং সেই জায়গাটায় দেখবে ভাবযতির একটা ব্যবহার। যতি-টা কী? ‘জিহেবষ্ট বিশ্রামস্থানং যতিঃ’, জিহবা যেখানে একটুখানি বিশ্রাম খোঁজে। মানুষ তো একটানা অনেকখানি শ্বাস ধরে রাখতে পারে না, এই যে শুচিশ্রী গান গায়, লক্ষ করবে মাঝখানে যে একেকটা লম্বা অংশ থাকে, তার মধ্যে ও কিন্তু গোপনে গোপনে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। একটা জায়গায় গিয়ে একটু থামল, সেই সময় যন্ত্রের একটা অবকাশ রইল। synthesizer এলো বা তানপুরা এলো বা এখন যেটাকে বলা হচ্ছে ই-সরোদ সেটা এলো (হাসছেন। সেদিন খবরের কাগজে ইলেকট্রনিক সরোদ হাতে একজন স্বনামধন্য 888sport live chatীর 888sport live chatী-পুত্রের ছবি বেরিয়েছিল)। এখন এই বিশ্রাম-টা না পেলে তিনি একেবারে পড়ে যাবেন। একজন 888sport live chatীর মধ্যে দেখো, তাকে ভাবযতি-টা প্রায়ই ঘন-ঘন নিতে হয়, যেমন দেবব্রত বিশ্বাস। কেন? তাঁর asthma ছিল বলে পাছে না কেশে ওঠেন, সেই জন্য।
888sport app download apkয় এই জায়গায় একটা চ্যালেঞ্জ আছে, যেটা আলোক সরকারের সাম্প্রতিক 888sport app download apkয় তুমি পাবে। এটা লক্ষ করবে একটা লাইন থেকে আর একটা লাইন যাবার মধ্যে অনেকক্ষণ পাঠককে ভাবতে দেয় আলোক। এই অবকাশটা যে দেওয়া হচ্ছে, এটা নিয়ে আমাদের এক বন্ধু কাজ করেছিলেন, যিনি আমাদের শতভিষার ছান্দসিক আচার্য দীপঙ্কর দাশগুপ্ত – rhythm of silence. এই silence-টা ছাড়া কোনো 888sport app download apkই 888sport app download apk হয় না, কোনো গানই গান হয় না। ইউরোপের composition-এ দেখবে o-ver-ture থেকে পরবর্তী জায়গায় আসবার জন্য একটা বিরতি দেয়, disc-এ তারপর নতুন করে যেন একটা অংশ শুরু হলো… এইবার তোমার প্রশ্নের দ্বিতীয় লেখাটা যদি আমি এভাবে পড়ি – ‘যার ভিতরে সব ঘটনা এবং চরিত্রের এক-দুই/ স্বতন্ত্র তাৎপর্য আছে ভাবতে গিয়ে ঢের এক-দুই (একটাকে ভেঙেই এক-দুই দ্রম্নত উচ্চারণ করা হচ্ছে)/ দেরি হয়েছে… এবার তৃতীয় 888sport app download apkটিকে এভাবে Scan করো ‘কিংবা যদি আনাচে-কানাচে এক/ ভুলের নজির মেলে, তাহলে তো কথার প্রহারে এক/ তিন প্রহরের পূর্বে যতিচিহ্ন পরবে না রোদ্দুরে’
দীপকরঞ্জন : যৌবনবাউলে…
অলোকরঞ্জন : যৌবনবাউল-এ ‘আমার ঠাকুমা’। ‘একঠায় দাঁড়িয়ে পায়ে ক্লামিত্ম নামে মনেও হবে না’ … 888sport app download apk যখন শেষ হয়, Shakespeare-এর ভাষায় বলব the rest is silence … গানের সঙ্গে-সঙ্গে অনেক সময় ভুল জায়গায় তালি দেওয়া হয়। শেষ হলে তালি দেওয়া নিয়ম – অনেকে জানে না শেষ হয়েছে কি? একজন যদি তালি দেওয়া শুরু করেন বাকিরা সবাই শুরু করে দেন। লক্ষ করেছ না (হাসছেন)? আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, লয়-টাকে যখন ওপরে তুলে দেওয়া হলো, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ারা সুযোগ নেন, শ্রোতারা তালি দেবে। ভিতরে যেখানে তান বিসত্মারের কাজ হচ্ছে সেই জায়গায় কিন্তু তারা তালি দেন না, চুপচাপ
তারিয়ে-তারিয়ে 888sport live chatীর সংগ্রামটাকে উপভোগ করতে থাকেন, তাঁর ভিতর যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, উপভোগ করেন। এর মধ্যে একটা sadism আছে, একটা পৈশাচিক তৃপ্তি আছে দেখবে তুমি, পাঠকের দিক থেকেও… ‘যার ভিতরে সব ঘটনা এবং চরিত্রের’… ঘটনা এবং চরিত্র কেন এক করা হলো? এখানে ভাববাচ্যতাকে দু-বর্ণ অবকাশ দেওয়া হলো।
এখানে একটা সংযোজনী রাখছি। 888sport app download apkর মধ্যে ভাবযতি এবং পর্বযতি কখনো-কখনো এক হয়ে যায়। বা পর্বাঙ্গ-যতি – ‘বুক ভরে শুতে যাই শ্রী রাগ ধ্রম্নপদগম্ভীর’ (অমিয় চক্রবর্তী), শ্রী রাগ, তারপর তুমি ধ্রম্নপদগম্ভীরকে বিশ্লিষ্ট করে দিচ্ছ – গম্-ভীর। কিন্তু আরেকরকম পড়া আছে – ‘বুক ভরে শুতে যাই শ্রী রাগ (শ্রী রাগ এখানে দ্রম্নত উচ্চারণ করা হলো) ধ্রম্নপদগম্ভীর’। ‘শ্রী রাগ’, শ্রী… ই…ই পড়লে দুটো মাত্রা হচ্ছে, সেটা না ‘শ্রী রাগ’ – এখন তুমি কোনটা পড়বে? অনেক সময় খুব বড় কবি দুটো সুযোগই একসঙ্গে নেন, দুদিকটা খোলা রাখেন।
দীপকরঞ্জন : ‘প্রথাগত ছন্দ নিয়ে আমার মনে হয় একটু স্বাধীনতা নেবার সময় হয়েছে’ – এ কথাও বলেছেন আপনি। আমি একদিন আপনার লেখার জায়গাটায় কাব্যগ্রন্থের ‘বিভাব’ 888sport app download apkটির ছন্দ সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম – আপনি মাত্রাবৃত্ত এবং স্বরবৃত্তের এক যুগলবন্দির সম্ভাবনার দিকে আলো ফেলেছিলেন মনে আছে…
অলোকরঞ্জন : আমি 888sport app download apkটি পড়ছি – ‘এখন তারার পিনকুশন হয়ে/ রাত আকাশ ঝলে/ পালিয়ে গেল অবক্ষয়গুলি/ শোভন কৌতূহলে’, ‘পালিয়ে গেল’র মধ্যে পাঁচ এসে গেছে।
দীপকরঞ্জন : সবকটাই তো মুক্তদল।
অলোকরঞ্জন : 888sport app download apkর শেষে, ‘মুশকিল ওই লেখার টেবিলটুকু/মস্ত বিশাল বড়’ – এখানেও কিন্তু দেখবে এক-আধটা জায়গায় পাঁচ মাত্রার সুযোগ নিয়েছি। আমার আদর্শ উদাহরণ রয়েছে, ‘গুণবতী ভাই আমার মন কেমন করে\’ চারের মধ্যে ধরতে একটু অসুবিধা হয়। তারপর ‘যমুনাবতী সরস্বতী’ – দেখো ‘কাজিফুল কুড়াতে গিয়ে (এই জায়গাটা দেখো, এখানে ছন্দের ভুল) পেয়ে গেলুম মালা/ হাত ঝুমঝুম পা ঝুমঝুম সীতারামের খেলা’। ‘কুড়োতে কুড়োতে’ – এভাবেই তো হুড়মুড়িয়ে ফুল কুড়িয়ে নেওয়া হয়। আলোকও এই স্বাধীনতাটা নিচ্ছেন। এটা প্রথম এনেছেন 888sport live footballের ইতিহাসে Gerard Manley Hopkins, তিনি এটা নাম দিয়েছেন sprung rhythm. এবং sprung rhythm-এর একটা ব্যাপার হচ্ছে, বাক্ছন্দটা ঢুকে যাচ্ছে 888sport app download apkর মধ্যে, যেমন আমার প্রেসিডেন্সি কলেজের মাস্টারমশাই ক্ষুদিরাম বাবুর উপহসিত ‘কাব্যকে খুঁজেছি প্রায় গরু-খোঁজা করে/ অনেকদিন খিদিরপুর ডকের অঞ্চলে/’ এখানে ‘অনেকদিন’টা কী বলবে? বা ‘ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত’? এখানে ভাবযতি বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে – ফুল ফুটুক না… আ ফুটুক (না-টাকে বিসত্মার করা হচ্ছে) আজ বসন্ত। অমিয় চক্রবর্তীর ভিতরেও এটা ছিল। এইমাত্র বলছিলাম, ‘বুক ভরে শুতে যাই শ্রী রাগ ধ্রম্নপদগম্ভীর’ … মাত্রার সংজ্ঞা হচ্ছে ‘মীয়তে ইতি মাত্রা’ – তুমি যেটাকে তোমার নিজের মতো পরিমাপ করে নিচ্ছ, যেভাবে তুমি মাত্রাটা ভাবছ… সাধারণ মানুষ যখন তোমার চারপাশ দিয়ে যাচ্ছে, তার বিপস্নবের ভাষা ধরো এরকম… ‘জ্যোতি বসুর হলে খুন/ 888sport appsে জ্বলবে আগুন’ – জ্যোতি বসুর – চার মাত্রা, হলে খুন – একটা স্বরমাত্রা কম নেওয়া হলো, 888sport appsে জ্বলবে আগুন – সেখানে পর্ব-টাকে উড়িয়ে দেওয়া হলো। বাক্ছন্দের দিক থেকে কিন্তু মাপটা ঠিকই হচ্ছে, এইভাবেই তো আমরা কথা বলি। তোমাকে আমি মজা দেখিয়ে দেব, এই যখন বলি, তোমাকে আমি মজা/ দেখিয়ে দেব, এইভাবে যদি স্ক্যান করি, তাহলে ছন্দেই কিন্তু কথা
বলছি। আমাদের চারপাশের লোকেরা ছন্দেই কথা বলে, সেটাকে স্টাইলাইজ করেই ছন্দ। ছন্দ কথাটার একটা মানে হচ্ছে ছাঁদ। সেটা অনেকটা মুদ্রার মতো, কিছুটা গোপন রাখে, কিছুটা প্রকাশ করে। নববধূর যে ছাঁদ, ছাদনা-তলার যে-ছাঁদ, তা-তো গোপন রহস্যের মতো। সে দাঁড়িয়ে রয়েছে, সে একটা বৈদিক মন্ত্র বলছে। সে বলছে, আমি যে পতিকুলে যাচ্ছি, সেখানে আমাকে গণ্য করে নেওয়া হোক। অরুন্ধতী তারার দিকে তাকিয়ে সে বলছে, রুদ্ধাহহস্মি, আমি মুক্ত ছিলাম এতদিন, কৌমার্যে ছিলাম, আমার স্বামীর কোলে আমাকে তুমি বন্দি করে নাও। ছন্দটা এই বন্ধন যেটা ছাড়া 888sport app download apkর মুক্তিও নেই। তারপর সে চাবিটা পেয়ে যাচ্ছে, সেই চাবিটা খুলে যে পরিসর ঘরের মধ্যে হচ্ছে তাতে তার অনন্ত মুক্তি। শাশুড়ি তার হাতে বাড়ির চাবিটা ধরিয়ে দিলেন।
দীপকরঞ্জন : ছন্দের অলিন্দ?
অলোকরঞ্জন : ছন্দের অলিন্দ। ছন্দের অলিন্দ থেকেই ছন্দের দিগমেত্মর দিকে ঝাঁপ দেওয়া যায়।
দীপকরঞ্জক : ‘এই মুহূর্তে যে-মানুষটি চলে যাচ্ছে আমি তাকে মন্ত্রের ভিতরে তুলে নিলাম।
তুমি এক থেকে দশ গোনো আমি তারই মধ্যে দেব তার মাথায় মুকুট,
সূর্যের সম্মান, লক্ষ-কাশফুল, আপন অস্তিত্ব থেকে প্রাত্যহিকতার অন্ন,
যে-জ্যোৎস্না কখনো পায়নি কারো থেকে, ছেয়ে দেব ম্রিয়মাণ শিরায় শিরায়,
ছন্নছাড়া – দেব ওর চলনবলনে ছন্দ যা থেকে কখনো কেউ ফিরতে পারে না মৃত্যুসমতলে’ (‘বিভাব 888sport app download apk’, নিষিদ্ধ কোজাগরী)
– কী ছন্দ দেবেন তাকে, জানতে ইচ্ছা করছে।
অলোকরঞ্জন : প্রথম যে-ছন্দটা আমাদের জীবনে এসেছে, সেটা স্বরবৃত্ত আর পয়ারের সমন্বয়।
দীপকরঞ্জন : স্বরাক্ষরিক?
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ, স্বরাক্ষরিক। কী-রকম জানো, ‘পয়ার’ কথাটা এসেছে ‘প্রকার’ থেকে। প্রকার সংস্কৃত, তার থেকে পয়ার হয়েছে। তুমি কথা বলছ, কথা বলতে-বলতে, তুমি তার মধ্যে অনেক কিছুই চাপিয়ে দিতে পারছ… যেমন আমাদের রাগ-সংগীতে এসেছে পতঙ্গ আর চারপাশের প্রাণীদের আওয়াজ – মতঙ্গের বৃহদ্দেশী বলে – একটা বই আছে লক্ষ করবে। মধ্যযুগের বই। বৃহদ্দেশীতে মতঙ্গ বলছেন, রাগসংগীতের জন্ম হয়েছে একেবারেই চারপাশের যে-স্তর, তার মধ্যে থেকে, ব্যাঙ ডাকছে, কোকিল ডাকছে ঝিঁঝি ডাকছে… বহুদ্দেশীর দেশী অর্থাৎ লোক-ছন্দ। সেই লোকছন্দ-টাই যখন বাঁধছ, মন্ত্র হয়ে উঠছে। এখানে তুমি দেখবে, ‘কা আ তরুবর পঞ্চ বি ডাল।/ চঞ্চল চিত্তে (বা, চী এ) পইঠো কাল\’
দীপকরঞ্জন : প্রথম চর্যাপদ।
অলোকরঞ্জন : চঞ্চল চিত্তে। এখানে কিন্তু স্বরবৃত্ত ঢুকে গেল। (যেমন – ঝর ঝর বরিষে বারি ধারা) তার মধ্যে চঞ্চল শব্দ-টাতে যখন এসেছে, দেখবে ছন্দের কারাগার ভেঙে সেটা বেরিয়ে যাচ্ছে, ছন্দের মধ্যে সবসময় কিন্তু কয়েকটা জানালা খোলা থাকবে, কবি সদ্য যেটা রচনা করেছেন এই জানলাগুলোর মধ্যে দিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে, কবি সঙ্গে-সঙ্গে কিন্তু চারপাশ থেকে লোকায়ত বাক্ছন্দ সংগ্রহ করছেন – একজন ধুনুরি টঙ্কার দিচ্ছে, একটি ফেরিওয়ালা চলে যাচ্ছে, একটি ভিখিরি খঞ্জনি বাজিয়ে চলে গেল – এই সমস্ত কিছুতে ঢুকে তাকে অন্তর্গত করে নিচ্ছেন। আমাদের সংগীত সম্পর্কে প্রথম যে শ্রেষ্ঠ বই বৃহদ্দেশী, সেখানে মতঙ্গ ইঙ্গিত রেখেছেন, ‘উচ্চাঙ্গ কথাটার মতো হাস্যকর কিছু নেই। লোকায়ত যে একেকটা সুর, আহির ভৈঁরো যেমন হয়েছে – ভোরবেলা রাখালরা গরুদের চালিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে, তা থেকে একটা সমাহিতির সুর তৈরি হলো। এই মাধ্যাকর্ষণ যদি না থাকে, এটাকে আমরা বলব ভূস্পর্শ-মুদ্রা, যেটা না থাকলে কোনো 888sport live chatী কখনোই সবার হয়ে উঠতে পারেন না। উসত্মাদ ফৈয়াজ খাঁ-র থেকে একটা গল্প শুনেছিলাম। আমরা সবাই জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি গান শুরু করলেন, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল কী করে? উনি বললেন, তোমরা বুঝতে পারলে না? তোমাদের কাছ থেকে আসতে গিয়ে দেখি কতগুলো পিঁপড়ে দেয়াল বেয়ে উঠে যাচ্ছে, আমি একটু calculate করলাম (calculate শব্দটাই উনি ব্যবহার করেছিলেন) যে, একটু পরে বৃষ্টি নামবে, ঠিক সময় বুঝে গেয়েছি। এর মধ্যে খুব একটা মজার ব্যাপার আছে, আমি বলছি না যে, ওঁর গানে এটা হতো না, আমার বিশ্বাস যে, বৈজু বাওরা বা তানসেন – এঁদের গানে বৃষ্টি হতো, সূরদাস যখন গাইতেন, কবীর যখন গাইতেন, আমি অনুমান করি বৃষ্টি হতো, পৃথিবীটা শুদ্ধ ছিল, ecologically পরিপার্শ্ব শুদ্ধ ছিল এবং মানুষ তাদের আবর্জনাগুলোকে সত্মূপ করে ফেলে দিত না – তপোবনে যে সমস্ত নিয়ম দেখা যায়, বাইবেলেও দেখা যায়, মোজেস (Moses) বলছেন, মানুষকে শুদ্ধ রাখার জন্য মলিনতাকে দূরে রাখতে হবে। যারা ধর্ম প্রবর্তন করছেন বা যারা গাইছেন, লিখছেন তাদের সঙ্গে লোকবৃত্তের সেই মুহূর্তের যোগ না থাকলে সেটা ধ্রম্নপদী হতে পারছে না। এটা ব্যাখ্যা করতে দাও। তুমি দেখবে একটা courtly audience ছাড়া সভা ছাড়া নির্জনতম গান কবি গাইতে পারেন না। দুটো গান তুমি পাশাপাশি রাখো, ‘আমার যেদিন ভেসে গেছে চোখের জলে’, রবীন্দ্রনাথ এই গানটা যখন লিখছেন, সঙ্গে-সঙ্গে স্বরলিপি করাচ্ছেন, শেষে তিনি গেয়ে শোনাচ্ছেন (পূর্ণকণ্ঠে অলোকরঞ্জন গানের মুখটি গাইতে শুরু করলেন)… গুলজারের কাছে দূরভাসে এই গান শোনাতে গিয়ে ভাবছিলাম রবীন্দ্রসংগীত কি বিশ্ব-সংগীত নয়? নিশ্চয় বিশ্ব-সংগীত – ইউরোপে কেউ-কেউ রবীন্দ্রনাথকে বড় সুরকার বলেও মনে করছেন, শুধু বাণী কেন? গজলকেও ধ্রম্নপদী মার্গসংগীতের মধ্যে ধরব, যদিও গজলের ভাষা উর্দু, শব্দটা আরব থেকে এসেছে (এবার উনি বিখ্যাত গজল গায়ক গুলাম আলির ‘চুপকে চুপকে রাত দিন আঁসু বাহানা ইয়াদ হ্যায়’ গাইতে শুরু করলেন) – দুটো গানের সাদৃশ্য দেখো – ‘চুপি চুপি আমি যে কেঁদেছিলাম, এখনো মনে পড়ে’, সঙ্গে-সঙ্গে লোকেরা হাততালি দিয়ে উঠল, হাততালিটা অশস্নীল নয়, কেননা উনি সবার অংশগ্রহণ চেয়েছিলেন, এমনকি মুশায়রাতেও নির্জনতম বিষাদ যতক্ষণ না ভাগ করে নিতে পারছেন গায়ক, ততক্ষণ তা হয়ে উঠছে না। বৈদিক যুগে ধ্রম্নপদীসংগীত ছিল না; আরোহ ছিল, অবরোহ ছিল না। বৈদিক যুগে ছিল তিনটি স্বর, উদাত্ত অনুদাত্ত স্বরিত। এটা এলো মুঘলরা যখন এলেন, পারস্য থেকেও অনেকগুলো সুরের ব্যাপার এলো – এস্রাজ ইত্যাদি কিন্তু পারসিক যন্ত্র। বৈদিক যুগের ঋষিরা একা-একা ঈশ্বরের সম্মুখীন হচ্ছেন, ঈশ্বরকে একা-একা আলিঙ্গন করছেন – স্বার্থপর ছিলেন বলতে হয়। মন্ত্রগুলোর মধ্যেও দেখো ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ – আর সবাইকে নিয়ে নয়… এদিকে আবার আকবরের সভার বাইরেও যখন বৈজু বাওরা গান করছেন, তাঁর অজস্র শ্রোতা দরকার হতো। শ্রোতা ছাড়া নিঃসঙ্গতা জমিয়ে উপভোগ করা যায় না। এটা আমাদের মার্গ-সংগীতের একটা নির্দেশ।
দীপকরঞ্জন : ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ বলা হচ্ছে। একই সঙ্গে উপনিষদের ‘অদঃ পূর্ণম্ ইদং পূর্ণাৎ’ (পূর্ণ ওই দূরে পূর্ণতা গভীরে শামিত্ম পাঠের এই সেত্মাত্রটাতে বাইরের সম্পূর্ণতাকে নেবার কথাও বলা হচ্ছে…
অলোকরঞ্জন : আমি তো শুধু ভিতর নই। বাহিরের সঙ্গে ভিতরের যে টানাপোড়েন তারই একটা পরম্পরা আমি।
দীপকরঞ্জন : অলোকদা, ছন্দ নিয়ে আমাদের কথা শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে আমরা চলে গেলাম গানে। সেটা বোধহয় এইজন্য যে কীভাবে লৌকিক ছন্দকে লৌকিক স্পন্দকে সমস্ত 888sport live chatের অনুকূল করে নিতে হয়, সেই অত্যন্ত দরকারি কথাটা গানকে সামনে রেখে হলে একটা সহজ বোঝাবুঝির জায়গা তৈরি হয়। আপনার নিষিদ্ধ কোজাগরী কাব্যগ্রন্থের ‘বিভাব’ 888sport app download apkটি সামনে রেখে আমার মূল প্রশ্নটা ছিল – কোন ছন্দ আপনি পাঠকের হাতে তুলে দিতে চান?
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ – এই মুহূর্তে যে-মানুষটি চলে যাচ্ছে আমি তাকে ছন্দের ভিতরে তুলে নিলাম। ছন্দের ভিতরে যদি তাকে তুলে নিই তাতে তার অসুবিধা হচ্ছে, সে যখন ছন্দ থেকে বেরোবে তখন তার stepping-গুলো তার চলাটা ছন্দোবদ্ধ হয়ে যাবে, সে আর কোনোদিন বেচাল চলতে পারবে না। আমার একটা 888sport app download apk আছে, ‘অধমর্ণ’। গড়িয়াহাটের বাজারের একটি লোকের কাছে আমি প্রত্যেক দিন স্থলপদ্ম কিনি। তিনি আমাকে সমস্ত ফুলের পাপড়িগুলো মেলে ধরেন। তিনি সম্প্রতি একটি ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যে, তাকে আমি যেন 888sport app download apkয় তুলে নিই। তুলে নিলে তার দুর্গতি হবে। অনায়াসে তার আর পদ্ম মেলে দেবার ক্ষমতা থাকবে না। কতগুলো বাঁধা নিয়মের মধ্যে তার যে স্বাভাবিকতা সেটা হারিয়ে যাবে। তিনি তখন শুধু 888sport live chatিত স্বভাব নিয়ে চলবেন। ছন্দের মধ্যে একবার যে দীক্ষেত হলো সে আর বেচাল চলতে পারবে না।
দীপকরঞ্জন : কী ছন্দ তুলে দেবেন তার হাতে, কিছু মীমাংসা হলো?
অলোকরঞ্জন : আমি তাকে নিশ্চয়ই বাক্ছন্দটাই দেব। বাক্ছন্দের মধ্যে যে classical ছন্দ রয়েছে, দুটো মিশিয়ে তাকে আমি একটা ছন্দ দেব। অথবা একটা ছন্দ আমি তৈরি করব। ধরো একটা ছন্দ ‘শীতের আকন্দ ফুটি-ফুটি/ ফুটে উঠল দুটি/ শীতের আকন্দ’। যে scan-টা এখানে আমি করছি, ‘শীতের আকন্দ ফুটি-ফুটি (এখানে দুটো বর্ণ আছে ধরে নাও)/ ফুটে উঠল দুটি (দুটো বর্ণ, দুবার নিঃশ্বাস নেবে)/ শীতের আকন্দ’ শীতের আ/কন্দ (‘কন্দ’টা অপূর্ণপদী)
দীপকরঞ্জন : মধ্যখ-ন হলো
অলোকরঞ্জন : এখানে পর্ব ভাগ হলো… মানুষের যে রকম বাঁচার নিয়ম আছে, তেমন নশ্বর বাঙালির তিনটিই ছন্দ আছে। আর একটা হচ্ছে গদ্যের ছন্দ। এখন ধরো, ‘সেখানে ডানা টিউব ট্রেন রাডার পেস্নন আর টেলিপ্যাথির গতি/ ছাড়িয়ে নীল আকাশে এসে নীল আকাশে নিজের পরিণতি’। এখন এই জায়গাটাতে জীবনানন্দ গদ্যে বলছেন না ছন্দে বলছেন বলা খুব মুশকিল। অবন ঠাকুরের লেখার মধ্যেও সেটা ছিল, বলছেন যেটা সেটা scan করা যেত, আমরা অবন ঠাকুরের কাছে গল্প শুনতাম।
দীপকরঞ্জন : আপনি বলেছেন তো, যাদের কথা শুনেছেন তাদের প্রত্যেকের কথা scan করতে পারতেন।
অলোকরঞ্জন : প্রত্যেকের। এমনকি যখন ওর কাজের লোককে শুচিশ্রী বকছে – (বকে না – হয়তো একটু-একটু বকেও, জানি না আমি) আমি স্ক্যান করে দিতে পারি।
দীপকরঞ্জন : আপনার 888sport app download apkয় তো বলেইছেন, সাইকেল গ্যারেজের ছেলেটার গাড়ি সারাইয়ের শব্দগুলোও আপনি স্ক্যান করে দিতে পারেন।
অলোকরঞ্জন : সেটা আমি পারি। যখন দেখি পারছি না, তখন মনে হয় আমার চারপাশের বলার মধ্যে কোনো গোলমাল হয়ে গেছে, যেমন… থাক এ কথা থাক… রাজনীতির কথায় আসছি না, কারণ তোমাদের যে সর্বদল-নিরপেক্ষ ইমেজ সেটা আহত হবে… এখন লক্ষ করছো, শপিংমল হবার পর তোমার তো ভাষার দরকার হয় না, তুমি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে সেই জিনিসটা কিনে নিচ্ছ। ভাষায় আর বাঙালি কথা বলছে না, যেটা নিয়ে আমি কাল বলছিলাম (888sport cricket BPL rateের সভায়, শিশির মঞ্চে)।
দীপকরঞ্জন : এটা নিয়ে আমার নির্দিষ্ট প্রশ্ন আছে। পরে বলছি।
দীপকরঞ্জন : অমাবস্যার বধ্যভূমিতে বিবিক্ত এই বিবাহ
মু-বিহীন তন্বী রাজকুমারী
তার পাশে এক দর্পনীল ভিখারী
প্রেমিকেরা আনে উপহার জ্বর, বারুদ এবং বিরহ
(‘টর্সো’, গিলোটিনে আলপনা)
‘মু-বিহীন তন্বী রাজকুমারী’ এখানে ‘রাজকু’ অংশটির পরে মধ্যখ-ন আসছে। অনেকে বলেন মধ্যখ-ন syllable যেভাবে ভাঙে সেইভাবে হওয়া উচিত। সেভাবে দেখতে গেলে ‘রাজ’ এরপর মধ্যখ-ন এলে স্বাভাবিক হতো। এভাবেও তাহলে করা যেতে পারে?
অলোকরঞ্জন : এটা হয়ে গেছে। ‘তার পাশে এক দর্প নীল ভি/ খারি’
দীপকরঞ্জন : এটাও
অলোকরঞ্জন : ‘প্রেমিকেরা নেয়’ এখানে ছয় হয়ে গেল কিন্তু
দীপকরঞ্জন : ‘প্রেমিকেরা নেয়’ হতে পারে, এখানে সবই মুক্তদল বা অর্ধস্বর।
অলোকরঞ্জন : এখানে আমি ‘রাজদুহিতাও’ করতাম যদি, ‘দু’-এর পরে কাটতে হতো।
দীপকরঞ্জন : ঠিক
অলোকরঞ্জন : তুমি এটা বুঝতে পারছ না কেন?… Hint তো আমি দিয়ে দিয়েছি। টর্সো তো?
দীপকরঞ্জন : হ্যাঁ, টর্সো, বিবিক্ত।
অলোকরঞ্জন : আমি কেটে দিচ্ছি এক-একটা জায়গায়। বোঝাই যাচ্ছে রাজকুমারীর গলাটা তার আগে কাটা হয়েছে। যখন গলা কাটা হয় তখন তো ছন্দ নিয়ে কাটা হয় না। এখানে ছন্দের বিরুদ্ধে ছন্দ, এরকম একটা ব্যাপার হচ্ছে। মালার্মে, কবিদের কবি, বলেছিলেন – সরকার আসে-যায়, ছন্দ থাকে। তিনি কিন্তু সবসময় ছন্দে লিখতেন না। বা বোদলেয়ার, অনেক সময় prose-poem অর্থাৎ গদ্য-888sport app download apk লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথের এই ভাঙাচোরা লাইনটা অনেকটাই গদ্য888sport app download apkর মতো : ‘দিনটা যেন খোঁড়া পায়ের মতো, ব্যান্ডেজেতে বাঁধা’। অথচ এর পাশাপাশি যদি তুমি কাব্যছন্দ রাখো, দেখবে কী অনায়াসে ‘মন্থর পায়ে চলেছে মহিষগুলি,/ রাঙা পথ হতে রহি রহি ওড়ে ধূলি,/ নানা পাখিদের মিশ্রিত কাকলিতে,/ আকাশ আবিল মস্নান সোনালির শীতে।/… শীতের বেলায় রৌদ্র তোমার/ জানালায় পড়ে বেঁকে /’ – এই ছন্দের মধ্যে কোনো সংঘাতের ব্যাপার নেই। কিংবা এখানেও : ‘তোমারে ডাকিনু যবে কুঞ্জবনে/ তখনো আমের বনে গন্ধ ছিল।/ জানি না কী লাগি ছিলে অন্যমনে,/ তোমার দুয়ার কেন বন্ধ ছিল।’… একটু তলিয়ে দেখলে আমরা ঠাহর করতে পারব, এত মসৃণ ছন্দের প্যাটার্নের মধ্যেও বাংলা ভাষার অন্তর্নিহিত প্রস্বরের ঘরানা একটু টাল খেয়ে গেছে। জানোই তো, বাংলা ভাষায় প্রথম স্বরের ওপর জোর পড়ে। এখানে কিন্তু সবসময় তা হচ্ছে না। স্বরাঘাতের চাহিদায় অবশ্য বাংলায়, কোনো-কোনো শব্দের আদিস্বর লোপাট হয়ে গেছে। বলতে-বলতে চলতে-চলতে প্রথম স্বরটা লুপ্ত হয়ে যায়। ফলে উদুম্বরটা ডুমুর হয়ে গেছে, অলাবুটা লাউ হয়ে গেছে – উধার, ধার হয়ে গেছে। লিরিকের ইতিহাসে আমরা দেখি ধ্রম্নবপদ বা refrain-এর দিকে ফিরে আসবার সময় প্রবল একটা স্বরাঘাত বা আঘাত তৈরি করা হতো, যার অপভ্রংশ নাম ঘত্তা, যে-শব্দটা ‘আঘাত’ থেকে এসেছে। আজ আমাদের মনে রাখতে হবে, ছন্দনির্ণয় করার সময় এমনকি গদ্যের মধ্যেও ছন্দ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এই স্বরক্ষেপের স্বাধীনতা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। রবীন্দ্রনাথ গদ্যছন্দে লিখছেন, ‘আমার ছুটি চার দিকে ধু ধু করছে ধান-কেটে-নেওয়া খেতের মতো’। আমি কিন্তু এভাবেও স্ক্যান করতে পারি, আমার ছুটি/ চারদিকে ধু ধু করছে/ ধান কেটে নেওয়া খেতের মতো। পত্রলেখা থেকে একটা বই বেরিয়েছে রবীন্দ্র-আলোকবর্ষে, একটু দেখে নিও। সেখানে গানের ওপর অনেকগুলো আলোচনা আছে। (বইটার কপি এখনো পাইনি, তাহলে তোমাদের জন্য নিয়ে আসতাম) সেখানে রক্তকরবী নাটকের গদ্যের একটি একা প্যাসেজ যেখানে নন্দিনী একা বলে চলেছে – পুরো passage throughout scannable (একটা জায়গায় শুধু আমি একটা ছোট্ট শব্দ যোগ করেছিলাম)। আমি স্ক্যান করে দিয়েছি। নন্দিনী বলছে বিশু পাগল কে, তুমি যে আমাকে ভালোবেসেছ, বলোনি তো তেমন করে! আজ রঞ্জন জুয়া খেলায় আমাকে নিয়ে চলে গেল। নন্দিনী যেন বলতে চায় you just missed your chance। থরথর করে কাঁপতে-কাঁপতে সে বলছে, দুই হাতে দুই দাঁড় ধরে সে আমাকে তুফানের নদী পার করে দেয়; বুনো ঘোড়ার কেশর ধরে আমাকে বনের ভিতর দিয়ে ছুটিয়ে নিয়ে যায়; লাফ-দেওয়া বাঘের দুই ভুরুর মাঝখানে তীর মেরে সে আমার ভয়কে উড়িয়ে দিয়ে হা-হা করে হাসে। আমাদের নাগাই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্রোতটাকে যেমন সে তোলপাড় করে, আমাকে নিয়ে তেমনি সে তোলপাড় করতে থাকে। প্রাণ নিয়ে সর্বস্ব পণ করে সে হারজিতের খেলা খেলে। সেই খেলাতেই সে আমাকে জিতে নিয়েছে। একদিন তুমিও তো তার মধ্যে ছিলে, কিন্তু কী করে বাজিখেলার ভিড় থেকে একলা বেরিয়ে গেলে। যাবার সময় কেমন করে আমার মুখের দিকে তাকালে বুঝতে পারলুম না – তার পরে কতকাল খোঁজ পাইনি। কোথায় তুমি গেলে বলো তো। রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে রক্তকরবীর কোনো-কোনো অংশ এভাবেই আবৃত্তি করতে শুনেছিলাম। রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে আমার সেই 888sport app download apkটা কি তোমার কাছে আছে এখানে? ওখানে মূল বয়ানকে আলঠে দিয়ে মিছিলে চলার একটা ব্যাপার আছে। এই অর্থেই রক্তকরবী পরিচালনা করেছেন শম্ভু মিত্র। প্রসঙ্গত বামনাচার্যের একটা লাইন মনে পড়ছে : ‘গদ্যং কবীনাং নিকষং বদমিত্ম’ গদ্যই কবিদের নিকষ পাথর। কীরকম গদ্য কবি লেখেন তা থেকেই বোঝা যাবে তিনি কেমন 888sport app download apk লেখেন। এখানেও গদ্য ও ছন্দের মধ্যে একটা সেতু তৈরি হচ্ছে, একটা লছমন-ঝুলা তৈরি হচ্ছে। হোমারের যে 888sport app download apk, তাতেও একেকটা জায়গায় আঁকাবাঁকা এলোমেলো নানান রকম ব্যাপার আছে। সফোক্লেসের কোরাসের মধ্যেও গদ্য ও মন্ত্রের মধ্যে অভিযোজনার একটা দুর্মর সন্ধান দেখা যায়।
দীপকরঞ্জন : ছন্দের ক্ষেত্রে এই liceneseটা তাহলে প্রয়োজনে নিতে পারি আমরা। ‘মধু মাঝির ওই যে নৌকো/ খানা’ এভাবে মধ্যখ-ন হতে পারে আবার ‘মু-বিহীন তন্বী রাজকু/ মারী’ এভাবেও হতে পারে।
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ, এখনো আমরা যদি একটু উদার না হই তাহলে অসুবিধা হবে। জগৎটাকে 888sport app download apkয় রূপান্তরিত করতে পারব না।
দীপকরঞ্জন : একটা 888sport app download apk প্রচলিত ছন্দে, মুক্ত ছন্দে না-কি গদ্যছন্দে – কীভাবে লেখা হবে, এই ভাবনা রচনার কোন পর্যায়ে স্থির করেন? অনুভূতির পরিবর্তনের সাপেক্ষে ছন্দকাঠামোর পরিবর্তনের কথা কীভাবে ভাবেন?
অলোকরঞ্জন : অনেক সময় প্রথমে একটা ছন্দময় শুরু মনে এলো। এটা হয় যে, কলমটা যখন কাগজের মধ্যে এলো, তখন সেই ছন্দটা বদলে গেল। একটি রাজমিস্ত্রি শুনলাম আর একটি রাজমিস্ত্রিকে বলছে, ‘কাল যের’ম এসেছিলি তেমনি আসবি কাল’। আমার মধ্যে ওমনি একটা 888sport app download apk শুরু হয়ে গেল। আমি ওখানটায় বদলে নিলাম, ‘কাল যেমন-টা এসেছিলি তেমনি আসিস কাল’… সিন্জ নামের (Synge) একজন আইরিশ নাট্যকার ছিলেন, উনি যেন একটি গোপন মাইক্রোফোন নিয়ে চলতেন, লোকজনের কথাবার্তা dialogue-গুলোকে তুলে নিতেন। সমস্ত ছন্দময় সংলাপ। এখন, ‘কাল যেরকম এসেছিলি তেমনি আসবি কাল’ এই দুটো লাইন কারা যেন তোমায় উপহার দিয়ে চলে গেল, বাকিটা তো তোমাকে পূরণ করে নিতে হবে। ‘আর তখনি আমার হাতে যেন, জ্বলবে রংমশাল’, এইটা তুমি যোগ করলে। সবচেয়ে সুবিধা হয়, একজন সহ-নশ্বর যদি কথা বলতে-বলতে তোমার হাতে একটা ছন্দ জুগিয়ে দেয়। নাহলে স্টুডিওর মধ্যে তুমি যখন একটা ছন্দ তৈরি করছ সেটা করতে গিয়ে দ্বিগুণ একটা সৃষ্টির বেদনা অনুভব করো যে, কোন ছন্দটা তুমি তৈরি করবে যা মানুষের কাজে লাগবে। এইটা যখন আমি করি, আমার খুব সুবিধা হয় যে, একজন কেউ আমায় এটা ধরিয়ে দিল (‘কাল যেমন এসেছিলি তেমনি আসিস কাল’) অবশ্য তুমি কখনো-কখনো দেখবে যে আমার 888sport app download apkয় বলতে-বলতে একটা গদ্যের passage-ও এসে গেছে মাঝখানে, তারপর শেষ লাইনটা শুধু ছন্দে এলো আলাদা করে, তার কারণ ইপ্সিত অপচ্যুতি তো আছেই। আমরা যখন রেগে যাই, আমরা যখন ভালোবাসি, রাগের মধ্যে দু-একটা কথা অতিরিক্ত বলে ফেলি, তারপর শমিত করে আনি নিজেকে, ‘আ চ্ছা ঠিক আ ছে’।
দীপকরঞ্জন : রচনার প্রথম পর্যায়েই স্থির হয়ে যাবে?
অলোকরঞ্জন : লিখতে-লিখতে। বলা যেতে পারে দ্বিতীয় ঝোঁকে দ্বিতীয় স্তবকে দ্বিতীয় লাইনে কিংবা দ্বিতীয় অংশে মানে সঞ্চারীতে অন্তরাতে। অন্তরার মুখে ওটা ঠিক হয়ে যায় আবার কোনো-কোনো জায়গায় ওটা ঠিক হতেই চায় না। আলোকের [আলোক সরকার] ব্যাপারটা বুঝতে পারি। ওর একটা লাইন ছন্দে আসে, তারপর ও সেটাকে deconstruct করে বিনির্মাণ করে। ও যেরকমভাবে ভাঙে, মানে ছন্দটাকে ভেঙে দেয়, আমি ইচ্ছে করলে ও যে শব্দগুলো ফেলে দিল, ওর ওয়েস্ট-পেপার বাস্কেট থেকে সংগ্রহ করে কোনো 888sport app download apkকে পয়ার বা মাত্রাবৃত্তে ঢেলে সাজাতে পারি। ও রেগে যাবে, আমার সঙ্গে কথা বলবে না অনেকদিন, সেই সম্ভাবনা আছে কিন্তু।
দীপকরঞ্জন : আপনি বলেছেন ‘চারদিকে যে কা-কারখানা ঘটছে 888sport app download apk হবে তার ভূকম্পলেখ’ – সময়ের কাছে বাগদত্ত থাকতে চান আপনি। 888sport app download apkয় স্থান-কালের আভাস কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
অলোকরঞ্জন : 888sport app download apkর যদিও একটা সংজ্ঞা দেওয়া হয় ‘নিয়তি-কৃত নিয়ম-রহিত’ – নিয়তির নিয়ম সেখানে খাটে না। আলাদা একটা জগৎ তৈরি হয়। কিন্তু 888sport app download apkও একটা নিয়তির জগতে বাস করে তাকে গ্রহণ করে। এবং তার চারপাশে যা ঘটছে আমি দেখি চসারের মতো এরকম মহাকবি আছেন যিনি সমকালের যন্ত্রণাগুলোকে বাদ দিয়ে গেছেন। যে-আলোক রবীন্দ্র 888sport app download bd ফিরিয়ে দিয়ে তাঁর যুগচেতনা প্রমাণ করেন, সেই আলোক 888sport app download apkর মধ্যে সমকালের ঘটনা উল্লেখ করবেন না। এটাতে শুদ্ধতার ব্যাপার আছে। যে আর্চিবাল্ড ম্যাকলিশ (Archibald Mac Leish) ভিয়েতনামের যুদ্ধে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছেন, তিনি তাঁর কাব্যনাটক কিংবা 888sport app download apkয় একটাও সংগ্রামী অঙ্গীকার প্রকাশ করবেন না। 888sport app download apkকে শুদ্ধ রাখার একটা ব্যাপার কাজ করে। আমি একটু ধুলো-কাদা মাখতে চাই। আমার জামাটা ধুলো-মাখা ইথারের জামা। আমি এমন সময় জানি না যে, আমি সমকালকে নিয়ে লিখিনি। যৌবনবাউলেও একটা 888sport app download apk দেখবে, যখন চীনের অন্তর্গত হয়েছে তিববত। আমি লিখেছি, ‘পাঞ্চেন লামা যাই বলুন বাধা দিন কি না দিন’ – একটা 888sport app download apk আছে শেষের দিকে, দেখো। সেখানে কিন্তু আমি প্রতিবাদ করছি। তারপর থেকে ক্রমশ বিশেষ করে যখন গালফ যুদ্ধ হলো সম্ভবত আমিই একা নিধিরাম সর্দারের মতো প্রতিবাদ করেছিলাম। অনেক উদ্বাস্ত্ত আমার সঙ্গে থেকেছেন। তাদের সঙ্গে জীবনযাপন করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, যেমন আডর্নো (Adorno) বলেছিলেন আউসসুইৎশ-এর (Auschwitz) নাৎসি নির্যাতনের পর্বের পরও কি লিরিক 888sport app download apk লেখা সম্ভব? কখনোই না (‘To write poetry after Auschwitz is barbaric’) -। এই প্রশ্নটা আমার কাছে জ্বলন্ত হয়ে উঠল যখন আমেরিকা গালফ আক্রমণ করল। সেই সময় আমি কি চুপ করে বসে থাকব! আমি জানি, আমি যা লিখছি তাঁর অনেকখানি অংশই মহাকালের বুকে ঝরে যাবে কিন্তু ঝরে গেলেও আমি যদি সময়কে না ছুঁয়ে থাকি নিজেকে মার্জনা করতে পারব না। তুমি জানো যে, আমার মধ্যে একটা মার্কসবাদের ব্যাপার আছে। তা সত্ত্বেও আমার মনে হলো সরকার কিছু ভুল করছেন। যাদের অনেকের সম্বন্ধে আমার মনে একটা কোমল কোণ আছে, তারা ভুল করছেন। তখন আমি লিখলাম ‘গোলাপ এখন রাজনৈতিক’। এটা আমি জানি যে আমার 888sport app download apkপ্রেমী বন্ধুরা আমাকে ভালোবাসেন বলে হয়তো কিছু বলছেন না, কিন্তু তাঁদের মনে একটা অভিমান জমে উঠতে পারে। হয়তো মালার্মে আমার সঙ্গে দেখা হলে বকতেন ‘এগুলো তুমি কী করছ অলোকরঞ্জন?’ আমি যখন রবীন্দ্রনাথের আভায় লালিত হয়েছি, তখনো কি আমি সাম্যবাদের আন্দোলনে যোগ দিইনি?
দীপকরঞ্জন : আপনি তো ঘুরেও বেড়িয়েছেন গ্রামে-গ্রামে
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ, ঘুরে ঘুরে বেড়িয়েছি নানান গ্রামে। অক্ষরব্রহ্মের সঙ্গেও আমার খুব ভালো একটা জবরদোস্তি আছে।
দীপকরঞ্জন : আপনি তো উপনিষদের একটা তৃতীয় ভাষ্য এনে দিলেন!
অলোকরঞ্জন : তাই তো, দোস্তি (হাসছেন)। আচ্ছা, একটা কবির ক-টা 888sport app download apk থাকে বলো তো?
দীপকরঞ্জন : কে যেন বলেছিলেন, পাঁচটা 888sport app download apk থাকলেই যথেষ্ট। অনেকেরই মত অলোকদা এই 888sport free bet পেরিয়ে অনেক নিশ্চিন্ত দূরত্বে আছেন।
অলোকরঞ্জন : এটা গটফ্রিড বেন (Gottfried Been)-এর কথা।
দীপকরঞ্জন : দেবীকে স্নানের ঘরে নগ্ন দেখে কাব্যগ্রন্থের ‘বিভাব’ 888sport app download apkটি, ‘আজ দেখি… আমার পার্বণ\’ মনে পড়ে যাচ্ছে। মনে পড়ে যাচ্ছে ওই বইটার ‘মাধ্যাকর্ষ’ 888sport app download apkর ‘মানুষ কোথাকার!’ এই লাইনটাও। মনে হয় আপনার সমগ্র অস্তিত্ব মথিত করে রয়েছে মনুষ্যত্বের এই অমোঘ বোধ।
অলোকরঞ্জন : আমি তো মানুষ হয়েই জন্মেছি। কতখানি মানবজমিন আমি ব্যবহার করতে পারি, কতটা আবাদ করে সোনা ফলাতে পারি সেটা একটা লক্ষ্য থাকবে আমার। কিন্তু মানুষের সর্বস্বতা নিয়ে, একাধিপত্য নিয়ে আমার মনে সংশয় জেগেছে। মানুষ নিসর্গকে হত্যা করেছে, মানুষ নিউক্লিয়ার যুদ্ধ বাঁধিয়েছে, মানুষ ঈশ্বরের সরণিটাকে বারবার লুপ্ত করে দিয়েছে। তাই যদি হয় দীপকরঞ্জন তাহলে man is the measure of all things বলে এক গ্রিক দার্শনিকের যে কথা আছে, মানুষই সবকিছুর মাপকাঠি, সেটা মানতে আমার খুব অসুবিধা হচ্ছে। দলাইলামা একবার বলেছিলেন, মানুষ না থাকলে বিশ্বচরাচর আরো পবিত্র থাকত। এই কথাটা ভাববার মতো।
দীপকরঞ্জন : হ্যাঁ, বঙ্গীয় 888sport live football পরিষদে বলছিলেন সেদিন।
অলোকরঞ্জন : যার জন্য ecology ব্যাপারটা আসছে। এই শব্দটা আসছে oikos (Noyos) এবং logos থেকে। মানে বিশ্ব এবং মানুষ, প্রকৃতি এবং মানুষ, পশু আর মানুষ একই বাড়িতে থাকবে। আর logos – তার বাণীটা, তার তত্ত্বটা। মানুষ তো worst ecological animal। দোয়েল পাখিদের দেখে একটু আগেই আমাদের বন্ধু অলকবাবু বৈষম্যের বেদনায় দুঃখ করে বলছিলেন, সবাই নির্বিচারে নোংরা ফেলে যাচ্ছে তোমাদের সামনের ঝিলটাতে… আর একটা কথাও মনে হয়, মানুষের অসহায়তার কথা। ‘দেখেছি যা হ’লো হবে মানুষের যা হবার নয় – ‘জীবনানন্দ বলছেন, এখন আমার মনে হয় যে মানুষ একটু বেশি ধ্বংসাত্মক আবার অন্যদিকে আমার মনে হয় মানুষের মধ্যে একটা দিব্যতও আছে। সব মিলিয়েই মানুষ। আজকে যে দিন যাপন করবে, তুমি যখন পৌঁছোবে তোমার কাজের জায়গায়, তোমার চারপাশে অনেক অমীমাংসিত সমস্যাকে রেখে তুমি পৌঁছবে সেখানে। তুমি যখন দীপকের (কবি দীপক রায়) সঙ্গে বসবে, একটা সমাহিতি তৈরি হবে আজকে সন্ধেবেলা। তুমি দেখবে যেতে-যেতে তোমার পাশের কামরায় লুটতরাজ হচ্ছে, ধর্ষণ হচ্ছে, একজন শিক্ষককে ধরে মার দিচ্ছে। তুমি তো সবগুলো সমস্যার সমাধান করতে পার না, ঈশ্বর
পারেন কিনা সেটা দ্বিতীয় প্রশ্ন। আমি মানুষের এই সীমাবদ্ধতার কথাটা খুব বেশি ভাবছি। ঈশ্বরকে নিয়ে আমার অভিমান আছে। ঈশ্বর যদি নাও থাকতেন তাহলেও আমার ঈশ্বর দরকার ছিল। একজন বড় অস্ট্রেলীয় কবি লুই মারে, তাকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি বইটা ঈশ্বরকে উৎসর্গ করেছেন, তিনি কি আপনার construct? তিনি বলেছিলেন, আমি ঈশ্বরের construct। তিনি কিন্তু ভক্তির কবি নন। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমার এটাও মনে হচ্ছে, মানুষ হয়ে না জন্মালে আমি তো 888sport app download apk লিখতে পারতাম না। ঈশ্বর আমাকে দয়া করেছেন কিন্তু এটাও হতে পারে একদিন আমি আর পারব না। একটা উদাহরণ দিই। আমার এক মাস্টারমশাই ছিলেন শশীভূষণ বাবু, তাঁর তখন খুব অসুখ হয়েছে। তাঁকে বলেছিলাম, আপনি বলবেন dictation দেবেন, আমরা লিখে নেব। তিনি বললেন, অলোক নিজের হাতে যদি লিখতে না পারি খুব অসুবিধা হয়। আমি না লিখতে পারলেও আমি যদি Computer-এর আশ্রয় নিই, আমি হয়তো লিখতে পারি কিন্তু আমি সেটা চাইব না। এমন যদি কোনোদিন হয় দীপকরঞ্জন যে, আমি আর লিখতে পারছি না হাতের লেখায় হয়তো আমি লিখতে চাইব না। অমিয় চক্রবর্তীর হয়েছিল, তখন তিনি যেসব dictation দিয়েছিলেন তার মধ্যে তিনি নেই। কালি কলম মন লেখে তিনজন। মানুষকে ঈশ্বর দিয়েছেন সে-ই ক্ষমতাটা ‘পাখিরে দিয়েছ গান, গায় সেই গান,/ তার বেশি করে না সে দান।/ আমারে দিয়েছ স্বর, আমি তার বেশি করি দান,/ আমি গাই গান।/…’ আমাকে স্বরটা তিনি দিয়েছেন।
দীপকরঞ্জন : তারপর আমি সেটা বাড়িয়ে নিয়েছি।
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ, ‘আমি গাই গান’। আমি গান গাইতে পারছি। মোৎসার্টের ম্যাজিক ফ্লুটের মধ্যেও পাখিদের সুরের নানান ব্যাপার আছে, যেমন ধরো পাভারত্তি গান করেন কিন্তু তার মধ্যে পাখিদের গানে মিশে যায় পশু-পতঙ্গের ডাক, সমস্ত কিছু মিশে যায়। কিছুটা এখানে অনুকরণের ব্যাপার আছে। কিন্তু তার মধ্যেও একটা যোজনার জায়গা থাকে। এই যোজনাটুকুই 888sport live chat। রবীন্দ্রনাথের গানের মধ্যে তুমি লক্ষ করবে অনেক জায়গায় যেসব স্বর লাগে না যে রাগে, সেগুলো তিনি বসিয়ে দিয়েছেন। সেটা যদি রবীন্দ্রনাথ করতে পারেন, তবে আজকে যিনি classical গান করছেন তিনি আজকের অস্তিত্বের সমস্যার কথা বুঝে কেন একটু স্বাধীনতা নেবেন না? আমি আলি আকবরের সঙ্গেও জার্মানির ডার্মস্টাট শহরে এ-ব্যাপারে কথা বলেছি।
আমাদের মধ্যে খাদ থাকেই কিন্তু হাতটা বাড়িয়ে আছি আলোকলতা ফুলের মতো আকাশের দিকে, আমি মানুষকে কখনোই পাতালের দিকে নিয়ে যাব না। এমনও হতে পারে, আমি বিপাকে পড়েছি জানো, আমি সত্য থেকে সরে গেছি কিছুক্ষণের জন্য, সেটা চলতেই থাকবে কিন্তু 888sport app download apkয় আমাকে শুদ্ধ থাকতে হবে, 888sport app download apkয় আমাকে একটা জায়গায় পৌঁছাতে হবে, যে জায়গাটা মনুষ্যত্বের প্রতিফলন। তার সঙ্গে সুন্দরের সোনার কাঠিটাও থাকবে, নইলে তাকে 888sport app download apk বলে আমি স্বীকার করব না। এটা মধুসূদন দত্তের 888sport app download apkয় আছে অনেক সময়। চতুর্দশপদী 888sport app download apkগুলোতে দেখবে, তিনি তাঁর শৈশবের 888sport sign up bonusর জায়গাগুলোতে বলেছেন, নবমী এসে গেছে… বোঝা যায় যে, চারপাশ সম্পর্কে তাঁর চেতনাটা কাজ করছে। বড় মানুষদের নিয়ে যেমন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, এঁদের নিয়ে তিনি অনেকগুলো 888sport app download apk লিখেছেন। ওই 888sport app download apkগুলোই বেশি। তাঁরা যখন তাঁর পিছনে দাঁড়ান, অনেক নৈরাজ্যের দিকে গিয়ে অনেক মদ খেয়ে ফেললেও তাঁদের প্রশ্রয়টা যে থেকে যায় – ওই যে, ‘মানুষ কোথাকার!’
দীপকরঞ্জন : আপনি লিখেছেন, ‘গোপন কান্নার মতো ঘুণাক্ষরে আমার ভিতরে বুদ্ধ বাড়ে’ (‘প্রাণী’, গিলোটিনে আলপনা) – বুদ্ধ সম্বন্ধে আপনার অন্তরঙ্গ ভাবনার কথা জানতে চাইছি।
অলোকরঞ্জন : বুদ্ধকে জাতক-বৃত্তের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল, কখনো শয়তান কখনো শ্রমণ, লক্ষ-লক্ষ জন্মচক্রের মধ্য দিয়ে। BESHAM বলে একজন ঐতিহাসিক বলেন, কোনো কিছু অতীন্দ্রিয় কাজ বুদ্ধ করেননি।
দীপকরঞ্জন : ওঁকে যাজ্ঞবল্ক্যের উত্তরসূরি বলেছেন অনেকে, উনিও মেধাকে এবং বোধিকে মেলাতে চেয়েছিলেন।
অলোকরঞ্জন : আমি অতদূর যাব না। বুদ্ধর কাছে যখন একজন মা এসে বলল, আমার ছেলে মারা গেছে তুমি আমাকে সান্তবনা দাও, উনি বললেন প্রতিবেশীদের বাড়ি যেতে। বললেন, যে-বাড়িতে শোক নেই একমুঠো তিল নিয়ে এসো সেখান থেকে। সন্ধেবেলা যখন সেই মহিলা এলেন, বুদ্ধ বললেন, শোনো মা… মহিলা বললেন, আমি সান্তবনা পেয়ে গেছি। শোক সব জায়গায় আছে। বুদ্ধের এই যে সৌজন্য, অধ্যাপক বেশাম বলছেন এটাই তাঁর miracle। যিশু কিন্তু অনেক miracle ঘটিয়েছেন; কিন্তু ঐতিহাসিকেরা তাদের বড়-একটা গণ্যই করেননি। বুদ্ধের সমস্ত কিছুর মধ্যে একটা ভূস্পর্শ-মুদ্রা আছে, মাটি ছুঁয়ে আছেন। বুদ্ধ এমন একটা জায়গা থেকে জীবনকে দেখেছেন, এমন involved হয়ে দেখেছেন ভাবতে হয়। এখন কেন সারা জগতে সবাই বৌদ্ধধর্ম নিচ্ছে (ভারতবর্ষে নয়, ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত)? তার কারণ মানুষের যন্ত্রণাকে এইভাবে আর কেউ সম্বোধন করেনি। এই ধর্মের একটা থেরাপিগত দিক আছে, আর কোনো ধর্মে এটা নেই, হিন্দুধর্মে তো নেই-ই। বুদ্ধের যে প্রাণীসত্তা এটা আমার দারুণ ভালো লাগে। জাতকের একটা ফ্রেসকোতে আছে বুদ্ধ একটা হাতি হয়ে মৃত্যুকে পদ্ম ভেবে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই 888sport app download apkটিতে ওই ফ্রেসকোটার একটা প্রভাব আছে। তুমি কি জানো, হাতিরা প্রত্যেকে একা একা মৃত্যুর দিকে যায়?
দীপকরঞ্জন : আমি জানতাম না।
অলোকরঞ্জন : সারাদিনের শেষে তোমার কি মনে হয় না, কত চারদিকে সমস্যা, তুমি কিছুই সমাধান করতে পারোনি? সেজন্য বুদ্ধ বা বিবেকানন্দ বারবার জন্ম নিতে চেয়েছেন, যেন একটি প্রাণীরও যন্ত্রণা অশমিত না থাকে, সেই জায়গা থেকে তাঁকে আমার অদ্ভুত ভালো লাগে। দুরকম বুদ্ধ, এক বুদ্ধ ভালোবেসেই ভিক্ষাপাত্র নিয়ে গোপীর কাছে দাঁড়িয়েছেন। খুব বিশাল হয়ে গেছেন। এটা ঠিকই, তার ওপর অভিমান হয় তিনি গোপাকে রেখে চলে গিয়েছিলেন। রাগ হয় মারধর করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু ওই যে ফিরে এলেন, তাঁকে খুব প্রেমিক বলেও আমার মনে হয়। সে আমার পুত্র হতে পারত সে আমার পিতা হতে পারত। একজন মানুষের সমস্ত প্রাণী হয়ে জন্মানোর যে-অধিকার, এই ব্যাপারটা কোনো যাজ্ঞবল্ক্য বা কোনো বিশ্বামিত্র বা কোনো বশিষ্ঠের নেই, তাঁরা এক একটা সত্তার মধ্যে থেকে গেছেন। অনেক সন্ন্যাসীর জীবনে অনেক ঋত্বিকের জীবনে দেখা যায় যে, আগের জন্মে কোনো একটা ভুল ছিল, অনেক saint তাঁরা sinner আসলে, অনেক সন্ন্যাসী ছিলেন কখনো-বা পাপী, যেমন Saint Augustine। সমস্ত পাপী-তাপীর দায়িত্ব নেবার ব্যাপার ছিল ওঁর (বুদ্ধ) মধ্যে। বুদ্ধকে masculine বা feminine না ভেবে আমি প্রেমিকা হিসেবেও তো ভালোবাসতে পারি। আমি একটি মেয়েকে দেখেছি, যে আমার ক্লাসে পড়ত। সে-মেয়েটিকে আমি দেখতাম চোখদুটো ‘বুদ্ধের করুণ আঁখি দুটি’। আমার এত ভালো লাগতো! সে-কথা একদিন তাকে বলেছিলাম। বুদ্ধ 888sport promo code না পুরুষ তা ভাবছি না, সেই মেয়েটিকেও 888sport promo code না পুরুষ ভাবিনি। তাকে বুদ্ধের মতো দেখতে, এর থেকে বিরোধাভাস আর কী হতে পারে? আমি বুদ্ধকে নিয়ে ঘরসংসার করব, এ তো হতে পারে না। আবার আমার এটাও পছন্দ হয় না, আনন্দকে যখন বলছেন কোনো 888sport promo codeকে যেন কাছে ঘেঁষতে না দেওয়া হয়। আমি যখন তাঁকে দেখি, তার বদগুণগুলো ঝরিয়ে দিয়ে তাঁকে দেখি আমার চরিত্র হিসেবে। আমার মনে হয়েছিল সমস্ত মানুষের সমস্ত জীবের প্রতিনিধি তিনি। আমি যদি 888sport promo code হই সে আমার জঠরে জন্ম নিয়েছে।
দীপকরঞ্জন : ‘সদয় ভদ্রমহোদয়, দেখুন এখানে একটা কমা ব্যবহার করেছি’। জার্মান কবি হ্যোল্ডারলিনের ভাষ্যে আপনি যখন এই সংলাপ রচনা করেন নিয়তি ও দেবযান নাট্য-কোলাজটিতে তখনি একটা নির্মাণ-সচেতন কবিচেতনার ওপর আলো এসে পড়ে।
অলোকরঞ্জন : এখানে আলোকের একটা বড় থিয়োরি আছে, প্রকৃত যা প্রাকৃত তা সৃষ্টি নয়। প্রকৃতি অগোছালো হয়ে আছে। সেখান থেকে যতটা তুমি সরে আসতে পারবে ততটাই তুমি 888sport live chatী। এবং 888sport live chatটা আলোক বলেন বানিয়ে-তোলা একটা ব্যাপার – নির্মিতি। আমি ততটা যাব না, আমি 888sport live chatকে নিয়েই স্টুডিয়োতে আনতে গিয়ে কিছু-কিছু অংশ তার ঝরিয়ে দেব। ঝরিয়ে দিয়ে স্টুডিয়োতে আনব। তার চেহারার ওপর খোদাই করে আমি এদিক-ওদিক করে দেব। কোনো কিছু 888sport live chat হয়ে উঠছে যখন চারদিকের জীবনকে তা syntax দিচ্ছে। চারদিকের জীবনের কোনো syntax নেই – কোনো কমা নেই, সেমিকোলন নেই, কোলন নেই। (হ্যোল্ডারলিনের মতো) একজন বোহেমীয় যুবকও ভাবছে, আচ্ছা এ-জায়গায় কমাটা কি ঠিক বসালাম? একজন তরুণ কবি আমাকে জিজ্ঞেস করল, অলোকদা, শেষ লাইনটা কি এখানে থাকবে? তার কিন্তু সবসময় সমস্যা, তার সংস্কার, আমি যেভাবে কমাটা বসাচ্ছি, আমি যেভাবে punctuation করছি, চিহ্নায়ন করছি তার ওপর বিশ্বের শামিত্ম নির্ভর করছে, এটা না হলে হবে না! – কী এসে যাচ্ছে বিশ্বের। ইরাকে এসে সাদ্দামকে খুন করে দেওয়া হচ্ছে, পিশাচের মতো বোমা ফেলে চলে যাচ্ছে ড্রোন। লাদেনকে পাকিসত্মানে যেভাবে হত্যা করা হলো, কল্পনা করতে পারো? স্বৈরাচারী ও স্বৈরাচারীর এই দুনিয়ায় এইখানেই 888sport live chatীর মহত্ত্ব। তিনি ভঙ্গুর, তিনি মারা যাবেন। তিনি তবু খুব seriously ভাবছেন। তার ওপর বিশ্বশামিত্ম একটু-একটু নির্ভর করছে। তিনি কিন্তু মানুষটা খুব গোলমেলে, হয়তো হঠাৎ তাঁর স্ত্রীকে খুব বকাবকি করে এসেছেন। এইরকম যে লোক তিনি, দেখবে 888sport live chatের কাছে কিন্তু জুতোজোড়া মন্দিরের বাইরে খুলে এসে ঢুকেছেন। আমাদের চেনা চারপাশে বেশ এরকম কয়েকটি সংবেদী চরিত্র আছে।
দীপকরঞ্জন : ‘আমাকে অপৌরুষেয় সৃষ্টির দায়িত্ব নিতে হবে। –
(‘আমি তার হব না জনক’, গিলোটিনে আলপনা)
আমরা জানি বেদকে অপৌরুষেয় রচনা বলা হয়। এই লাইনটি নিয়ে কিছু বলুন।
অলোকরঞ্জন : আমার কিট্সের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। 888sport live chatীই একা 888sport live chat রচনা করেন না, 888sport live chatও কিন্তু কবিকে রচনা করেন। তুমি যেভাবে 888sport app download apkটা লিখতে বসলে, 888sport app download apkটা অন্যদিকে চলে গেল। একটি চিঠিতে Thomas Hardy-র স্ত্রী তার বান্ধবীকে লিখছেন, আজকে আমার স্বামীর মনটা ভীষণ ভালো, হয়তো আজকে সবচেয়ে দুঃখের 888sport app download apkটা লিখবেন অর্থাৎ মহৎ সৃষ্টির ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না 888sport live chatীর। তখন তিনি কিছুই নন, তিনি non-entity almost. সুনীলের একটা লাইন আছে, ‘সে কি লেখে 888sport app download apk? না 888sport app download apk রচনা করে তাকে?’ negative capability বা নঞর্থক সামর্থ্যের ব্যাপারটা হচ্ছে, তুমি লিখতে শুরু করলে একটা জায়গায় কিন্তু কলমটা তোমাকে নিয়ে যাচ্ছে আর একটা জায়গায়। তুমি কলমটা অনুসরণ করে চলেছ অনেকটা পস্ন্যানচেটের মতো। কলমটা লিখছে। সেই সৃষ্টিই বড়, যেখানে কর্তৃত্বের কোনো সিলমোহর থাকে না, যেমন অজমত্মায় তুমি দেখবে। অপৌরুষেয় শব্দটা আমি সেই অর্থে ব্যবহার করেছি।
দীপকরঞ্জন : আপনি বলেওছেন ‘বক্তব্যের 888sport app download apkয় নয়, 888sport app download apkর বক্তব্যে আপনার বিশ্বাস।’
অলোকরঞ্জন : আর্চিবাল্ড ম্যাকলিশ বলছেন, ‘A poem shall not mean but be। একটা 888sport app download apkর কোনো মানে হবে না, সে হয়ে উঠতে থাকবে। একটা 888sport app download apk লিখতে গিয়ে আমি শুরুতে একটা কথা বলতে চেয়েছি কিন্তু লিখতে-লিখতে তার একটা নিজস্ব বিবর্তন হয়েছে। সেই বিবর্তনটা কিন্তু আমার অভিপ্রেত হচ্ছে না সবসময়। এই জায়গা থেকে আমি বলছি যে 888sport app download apkর মধ্য থেকে যে-বক্তব্যটা আমরা পাচ্ছি তখন কিন্তু একটা কোনো নির্দিষ্ট message আমি পাচ্ছি না – ‘জয় অস্তসূর্য জয় অলখ অরুণোদয় জয়’। কোনটা বড় হলো? এমপেডোক্লেস (Empedocles) বলেছিলেন প্রেম আর অপ্রেম মিলিয়ে একটা বিশ্ব আছে। তেমন যদি একটা বিশ্ব থাকে যে-কোনো একটা message-এর ওপর সেটা দাঁড়িয়ে থাকছে না। সেই message-টার ভিতরে মিশে যাচ্ছে ambivalence। 888sport app download apkর মধ্যে একটা ambivalence থাকে একটা প্রতীপ-সম্মিতি থাকে – সদা সত্য কথা বলিবেক, এটা সে বলে না।
দীপকরঞ্জন : পূর্বনির্ধারিত কোনো বক্তব্য নিয়ে 888sport app download apk লেখার ভাবনা আপনার সমর্থন পাচ্ছে না।
অলোকরঞ্জন : Felini-র ছবিতে কোনো গল্প বা কোনো বক্তব্য ছাড়াই উনি শুরু করে দিলেন। সুন্দর জীবন। এই প্রথম তিনি করলেন একটা বক্তব্য ছাড়া ছবি। যখন তুমি মোনালিসার কাছে দাঁড়াও, বক্তব্যটা কী বোঝার কোনো উপায় নেই – মোনালিসাতে কী আঁকতে চেয়েছেন। এমনকি পিকাসোরই পায়রার ছবি দেখো। পায়রা তো কতই আছে কিন্তু পিকাসোর যে পায়রা সে শুধু শামিত্মর কথাই বলছে না, তার মধ্যে এক অনির্ণেয় শীতের সরঞ্জামও আছে। একজন 888sport live chatী যদি শুধু বক্তব্যই পেশ করেন, তার কাছে ফিরে আসব না আমি। বারবার ফিরে আসব তখনি, যখন আমার মনের মধ্যে সেটা memorable speech হয়ে উঠছে, 888sport sign up bonusধার্য শেস্নাক হয়ে উঠছে।
দীপকরঞ্জন : বলার কথা এবং কীভাবে বলতে হবে – এই দুটো বিষয় যদি পূর্বনির্দিষ্ট হতো, তবে এদের কোনটা আগে আর কোনটা পরে ভাবতেন?
অলোকরঞ্জন : এই প্রশ্নটা আমি এখনো জানি না, উত্তর নেই। সেই জন্যই তো আমার সাধনা, কীভাবে বলব? পূরবী-তে গাইব না রামকেলি-তে? আমি গড়িয়ার কাছে একটা মন্দিরে গিয়েছিলাম, মা কালীর মন্দিরে। সেখানে সবসময় দিন-রাত বাগেশ্রী, সকাল থেকে চলবে রাত পর্যন্ত। আমরা এখন সিডির যুগে আছি। বেশিরভাগ recording হচ্ছে কিন্তু দুপুরে। ভোরের রাগ হোক সন্ধেবেলার হোক কিংবা মালকোষ, সবই দুপুরবেলা হচ্ছে। তখন তোমাকে রাত্রির মেজাজটা বুকের মধ্যে ধারণ করে গাইতে হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ যেমন করছেন ‘আনন্দধারা বহিছে ভুবনে’, এই গানটার রিমেক হয়েছে সম্প্রতি ইউরোপে। এই যে ‘আ আ আ ন অ ন্দ’ (গেয়ে দেখাচ্ছেন) মালকোষে এলো, হয়তো উনি সুর দিয়েছেন সকালবেলা। বলার স্টাইলও মিশে আছে, বক্তব্য কটাই-বা আছে। বলার কথা থেকে যেটা বেরিয়ে আসছে সেটা একটা বিরাট ব্যাপার। বলতে-বলতে একটা কথা বেরিয়ে এলো। দেখবে যারা বাজনা বাজান, বাজাতে-বাজাতে কখন একটা জায়গা চলে এলো, সেই জায়গাটা তারা ধ্রম্নব করে ধরে রাখতে চেষ্টা করেন।
দীপকরঞ্জন : কীভাবে বলতে হবে সেটাই তাহলে মূল?
অলোকরঞ্জন : তার মধ্যে থেকে বলার কথাটা বেরিয়ে আসবে। দার্শনিক-888sport app download apk বলেও কিছু নেই, দার্শনিক বক্তব্যটা 888sport app download apkর মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসবে – দামেত্ম যখন বললেন ‘যে প্রেমের হাটে চলে অনন্ত সূর্য চন্দ্র তারা’ – কীভাবে বললেন! ঘুরছে-ঘুরছে অনন্ত চক্র তার মধ্যে দিয়ে সূর্য চন্দ্র তারা। ডিভাইন কমেডির শেষ লাইনে এসে দামেত্ম যখন এভাবে বললেন, বলাটার জন্যই ওটা গেঁথে গেল আমাদের মনে। সে-কথা কিন্তু আগেও অনেকে বলেছেন, তিনি যার প্রশিষ্য Thomas Aquinas, তিনিও এটা বলেছেন। আমরা তো তাঁর কাছে যাই না, আমরা দামেত্মর কাছে যাচ্ছি। বলার বিশেষত্বের জন্য এটা আমাদের মনে থাকে।
দীপকরঞ্জন : কবি হিসেবে একটা ‘জানা’ থেকে একটা লেখায় কীভাবে পৌঁছোন?
ধরুন, আমি প্রণীত অগ্নি কাকে বলে তুমি জানো? কাব্যগ্রন্থের ‘লাস্ট সাপার’ 888sport app download apkটিকে সামনে রেখে জানতে চাইছি।
অলোকরঞ্জন : অস্বাভাবিক একটা ছবি চমস্কির রয়েছে, যেখানে যিশু এবং পার্ষদরা বসে আছেন সমুদ্রের মধ্যে। ফিলিপাইন্স দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে দেখতে পারছি যে, কলাপাতা দিয়ে মৃতদেহ ঢেকে দেওয়া হয়। এটা হলো Information। মৃন্ময় থালি থেকেই তো আমি খেতে বসেছি। আমি জানি এই খাবারটা আমি যদি খাই, যেমন যিশু ওই খাবারটা খাচ্ছেন, শেষ খাবার, ওই খাবারটা খেলে মৃত্যুর শামিল হব। আমি ভোগ করলাম। যে-কোনো মুহূর্তে সেটা লাস্ট সাপার হতে পারে। আমি যরা, ক্ষোভ, ক্ষুধা অতিক্রম করতে পারতাম, যদি আমি একেবারে অগ্রাহক হতে পারতাম। কিন্তু আমি খেতে বসেছি। এটাও আমার মনে ছিল; আমাদের যত প্রতিমা সমস্ত কিন্তু মাটির, মৃৎ এবং এর মধ্যে মৃত্যুর ব্যাপারটাও কাজ করছে। কাজেই এই কলাপাতা দিয়ে মৃতদেহ ঢেকে দেবার এই তথ্যটাকে আমি রূপান্তরিত করছি। একজন ভারতীয় হিসেবে একটা ছবির উত্তরাধিকার নিলাম, নিয়ে প্রাচী, প্রাচী থেকে ফিলিপাইন্সের মধ্য দিয়ে দেশে ফেরার মুখে স্বরান্তরিত করতে-করতে এলাম। ততক্ষণে আমার সব সঙ্গী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমি একা হয়ে গেলাম। এখানে একটা message আছে, একক সম্ভোগ মৃত্যুর প্রতিশব্দ হতে পারে।
দীপকরঞ্জন : হঠাৎ কোনো ছবি বা রং আপনাকে দিয়ে পরের লাইনটা লিখিয়ে নেয়?
অলোকরঞ্জন : এডগার দেগা (Edgar Degas) বলেছিলেন মালার্মেকে, আমার মধ্যে কত idea আসে কিন্তু 888sport app download apk লিখতে পারি না কেন? মালার্মে বলেছিলেন 888sport app download apk idea নয়, 888sport app download apk শব্দ। এই শব্দই আমাকে নিয়ে যায় শব্দব্রহ্মে – আমার পরা-স্বদেশে, সেখানে কোনো রং তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে না। এক-একটা idea-কে ছুড়ে দলা পাকিয়ে রেখে দিই, সেটা 888sport app download apkর কাজে লাগে না। সেটা দিয়ে হয়তো মানব সভ্যতাকে বদলে দিতে পারতাম কিন্তু 888sport app download apkর কাজে সে লাগছে না। আমাকে যখন সে নিয়ে যায় মালার্মে-কল্পিত শব্দব্রহ্মে, idea নয় বা association-ও নয় সবসময়। আমি তখন শব্দের ক্রীতদাস।
দীপকরঞ্জন : আপনি দিয়নুসীয় শক্তি এবং অ্যাপোলোধর্মীয় সচেতন সন্ধিৎসা, এই দুভাবে 888sport app download apk লেখার কথা লিখেছেন। শক্তি চট্টোপাধ্যায় যেভাবে ‘অনন্ত নক্ষত্রবীথি তুমি অন্ধকারে’ যেন একটা ঘোরের মধ্যে লিখে ফেলেন বা ফার্নান্দো পেসোয়া একটি টেবিলের কোণায় দাঁড়িয়ে একসঙ্গে একত্রিশটি 888sport app download apk লিখে ফেলেন সেই বিষয়ে আপনার অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইছি।
অলোকরঞ্জন : দিয়নোসাস জীবনের দেবতা, সুরার দেবতা, মাদকতার দেবতা। তিনি কোনো সীমানা মানেন না। একটু যেন আমাদের শক্তির মতো। পক্ষান্তরে আলোক হচ্ছেন অ্যাপোলোর মতো। অ্যাপোলোর কপাল থেকে দেবী মিনার্ভা বেরিয়ে এসেছিলেন, 888sport live chat-সরস্বতী। একটা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপার চলে আসে। এমনকি যদি মধুসূদন দত্তকে বলি দিয়নুসীয় শক্তি, কথাটা খুব ঠিক। কিন্তু ছন্দের যে বৈপস্নবিক যুগান্তর তিনি ঘটালেন সেখানে ছন্দ ভুল একটা জায়গাতেও কেউ পায়নি এ পর্যন্ত অথচ উনি তো অমিত্রাক্ষর তৈরি করলেন, একটা লাইন অন্য লাইনে ডিঙিয়ে গেল। সেটা দিয়নুসীয় শক্তি, আর তাকে যে তিনি ছন্দের বাঁধনে ধরে রাখলেন সেটা অ্যাপোলোর শক্তি। দুয়ের দুয়ের একটা যুগ্মতা না এলে 888sport app download apk হবে না। সেজন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রেমিক কোনো প্রেমের 888sport app download apk লিখতে পারে না, বুঝতে পারছ?
দীপকরঞ্জন : অক্টাভিও পাজ এক জায়গায় বলছেন তাঁর Sun Stone 888sport app download apkয় প্রথম তিরিশ লাইন নাকি ওঁর লেখাই নয়। উনি বলেছেন পরে আমি যখন ভাবি, ওই এগারো মাত্রার জটিল ছন্দ কীভাবে লিখলাম, আমি অবাক হই। একত্রিশতম লাইন থেকে আমার রচনা।
অলোকরঞ্জন : ভেবে দেখো, একথা সেই পাজ্ বলছেন যিনি তাঁর স্বরচিত নির্মিতি বিষয়ে নখাগ্র অবধি সচেতন ছিলেন। অনেকসময় মনেই হতে পারে এটা কি লিখেছিলাম আমি, না মা-সরস্বতী তাঁর খাগের কলম দিয়ে আমাকে লিখিয়ে নিয়েছিলেন? আমি তো জানিই না আমি কে। তবুও আমার একটা ধারণা হয় আমি লোকটা মোটামুটি এইরকম। সেই সংস্কারটা ভাল, সেটা হলো একটা মননের জায়গা। ‘মননাৎ ত্রায়তে’ মানে মনন থেকে পরিত্রাণ করে যা, তাই মন্ত্র – গায়ত্রী ছন্দের মধ্যে দিয়ে গানের মধ্যে দিয়ে ত্রাণ করে। মনন ছাড়া ত্রাণটা হচ্ছে না কিন্তু। মননের মধ্যে দিয়ে মন্ত্রটা তৈরি হচ্ছে। তার মধ্যে একটা আবেগ কাজ করছে ঠিকই কিন্তু মননের অ্যাপোলো সত্তাও কাজ করছে। দুটোই থাক। হয়তো সমান-সমান।
পুরো স্বয়ংক্রিয় 888sport app download apkকে আমি সমর্থন করি না, একটা নিয়ন্ত্রণ থাকবেই। স্বয়ংক্রিয় 888sport app download apk বা non-poetry – সব 888sport app download apkরই জায়গা আছে। আমার শরীরটাই আধার তখন, আমার আধারেই তখন সেই 888sport app download apkটা রচিত হচ্ছে, আমি কিন্তু তার জন্য দায়ী। আমি যদি তাকে নৌকো বলি, 888sport app download apkটা আমার মধ্যে দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে অন্য ঘাটে। আমাকে দেখতে হবে অদরকারি উপকরণ যেন তার মধ্যে না থাকে, তাহলেই ভরাডুবি ঘটবে। আমি কিন্তু সম্পূর্ণ তার ধারক। আমি তাকে পৌঁছে দিচ্ছি। অনেক সময় হয় না, পাঁচটা গাঁয়ের একটা খেয়া, পাঁচ গ্রামের যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে? – এটা তেমনই।
দীপকরঞ্জন : 888sport app download apkয় প্রতিদিনের ব্যবহৃত শব্দের ভবিষ্যৎ কী? গতকাল বলেছিলেন কথা-ভাষা এবং পরা-ভাষার মধ্যে একটা ইথারের সেতু থাকা প্রয়োজন।
অলোকরঞ্জন : কোনো কথা ঠিকভাবে যদি না বলা হয় বা কথার মধ্যে যদি কোনো ছন্দ না থাকে, 888sport app download apk লিখতে অসুবিধা হয়। কেউ কথা বলছে, কথার মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে এবং অদরকারি মৌন কতকগুলো অবকাশ থাকছে যেখান থেকে ভাষার স্পন্দের ব্যাপারটা বোঝা যাচ্ছে না, তখন কিন্তু 888sport app download apk লেখার একটা অসুবিধা তৈরি হয়। লোকভাষার সঙ্গে কাব্যভাষার একটা যোগাযোগ আছে। প্রত্যহে ব্যবহৃত শব্দগুলো, মাঝি-মাল্লার জেলের শব্দ 888sport app download apkর মধ্যে ঢুকে পড়ছে, 888sport app download apk একটা জায়গায় উন্নীত হচ্ছে। যেমন ‘সূর্য, নাকি সূর্যের চপ্পলে/ পা গলিয়ে পৃথিবীতে এসে’ – এই যে ‘চপ্পল’টা এলো, এই ‘চপ্পল’টা একটা অলৌকিক ব্যাপার। ওই জায়গায় যদি আরো ভালো একটা অন্যরকম শব্দ দিতে – ‘খাদিমের জুতো’ বসিয়ে দিতে, তাহলে আর হতো না। সেই জায়গায় যত সংস্কৃত শব্দ বসাও না কেন, 888sport app download apkটা মাঠে মারা যাবে। লৌকিক শব্দ তো হাজারবার আনতে হয়।
দীপকরঞ্জন : কিন্তু আপনি তাকে একটা দ্বিতীয় তল দিচ্ছেন
অলোকরঞ্জন : দ্বিতীয় তল দিতে হবে। তাকে বসিয়ে আমি…
দীপকরঞ্জন : ইথারাইজ করে দিলেন।
অলোকরঞ্জন : ইথারিত করে দিলাম এবং একটা অসামান্য কা- ঘটে গেল। আমি লৌকিক মেজাজে লিখছি – ধরো এক জায়গায় লিখলাম ‘কথাটা ঈরিত হলো না ভালো করে’। অনেকে বলবেন, এই তো, অলোকদার দুর্বোধ্যতা। প্রচলিত শব্দ হলো ‘উচ্চারিত হওয়া’। কিন্তু আমার মনে হলো চ-ীর ভাষায় ‘ঈরিত’ হলে ওখানে খুব সুন্দর হবে। অর্থাৎ শুধু তৎসম শব্দ নয়, যেসব শব্দ হারিয়ে গেছে তাকে ফিরিয়ে এনে সচল কালস্রোতে প্রতিষ্ঠিত করার একটা দায় বহন করা। অনেক সময় ধরতেই পারবে না কেউ।
দীপকরঞ্জন : ‘ত্রসরেণু’ শব্দটাও এনেছেন আপনি।
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ, ত্রসরেণু। জানালা দিয়ে যে সূর্যাসেত্মর আলো ঢুকে ঝিকমিক করছে, তেমনি রাসত্মার ধুলোও তো ঢুকছে তার মধ্যে, সেটা একটা অসামান্য কা- হচ্ছে। অর্থাৎ 888sport app download apkর দিব্যসংঘটন কিন্তু পঞ্চভূতকে নিয়েই।
দীপকরঞ্জন : সাধারণভাবে 888sport app download apkয় পরিমার্জনা এবং নিজের 888sport app download apkয় সম্পাদনার বিষয়ে আপনার ভাবনা কী?
অলোকরঞ্জন : আমার 888sport app download apk আর কেউ পরিমার্জনা করছে, এটা ভাবতে আমার অসুবিধা হয়। যদি তিনি বিরাট কবিও হন, আমার কাছে না জেনে একটা শব্দও পরিবর্তন করলে আমি খুব দুঃখ পাব। আমার শ্রেষ্ঠ বন্ধুও যদি করেন, আমি খুব দুঃখ পাব।
দীপকরঞ্জন : আপনার 888sport app download apkয় পরিমার্জনা করবেন কে, অলোকদা?
অলোকরঞ্জন : এমন হতে পারে, আমার কোনো শুভার্থী সেটা নিয়ে আমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করলেন। ‘একটি কথার মৃত্যুবার্ষিকী’র একটা ইতিহাস আছে। বুদ্ধদেব বসু ছাপিয়েছিলেন। প্রথম ভাষ্যের এক-জায়গায় কী ছিল জানো? ‘অতৃতীয়তায় অরুন্ধতী’। উনি বললেন যে অলোক, অতৃতীয়তা শব্দটা অত্যন্ত বেশি ভালো, বড় বেশি ভালো – আরেকটু অন্য কিছু করতে পারো কি? নাহলে আমি ছেপে দিচ্ছি, এটা তো আমি ছাপাবই – আমি ‘অহংকার ভুলে’ লিখলাম। তবে এই তথ্যটা কোনোদিন কাউকে দিইনি। আজ তোমায় দিলাম।
দীপকরঞ্জন : নিজের 888sport app download apk নিজে পরিমার্জনা করার ব্যাপারে?
অলোকরঞ্জন : আমি যখন তোমার জন্য 888sport app download apkটা কপি করছি, তখন তো একটা-দুটো শব্দ বদলেই যেতে পারে। মনে হলো আগের শব্দটা ভয়ংকর বিশদ হয়ে গিয়েছে আর একটু সংবৃত করে দিই অথবা খুবই সংবৃত হয়ে গেছে একটুখানি পাপড়িটা খুলে দিই।
দীপকরঞ্জন : জীবনানন্দের যে-পা-ুলিপি আমরা দেখেছি সেইরকম হবে কি?
অলোকরঞ্জন : সেটা হতেই পারে। যেমন রবীন্দ্রনাথের সমস্ত 888sport app download apkকে বলা হয় একটাই 888sport app download apk, তিনি সারাজীবন সংশোধন করতে-করতে গেছেন। এটা একটা মেজাজ। জীবনানন্দেরও আছে। ‘স্বাতী তারা কবে তোমায় দেখেছিলাম কলকাতাতে আমি’ – এটা জাহানারা ছিল আগে, অনেক ভাবতে-ভাবতে সেটা ‘স্বাতী তারা’ হয়েছে। ‘জাহানারা’ থেকে ‘স্বাতী তারা’ অনেক ভালো হয়েছে। জীবনানন্দ হয়তো ঘুমোননি সেদিন। আমার মনে হয় একটা 888sport app download apk লিখেই সঙ্গে-সঙ্গে ছাপতে না দেওয়া ভালো, একটু রেখে দিলেই বোধহয় ভালো হয়। এটা আমার বিশেষ করে মনে হয়। যেমন একটা পটকে এঁকে রাতের শিশিরে শুকোতে দেওয়া হয়। আবার আগের লেখাটা পুরো পরিমার্জনা করে যেমন সুধীন্দ্রনাথ দেখছেন, সেখানে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবটা একটু যেন আহত হয়। উনি খুব বড় কবি তবু সেটা মাঝে-মাঝে আমার মনে হয়েছে। আমি পরম ভক্তি নিয়েই বলছি কিন্তু এ-কথাটা।
দীপকরঞ্জন : রমেন্দ্রকুমার আচার্যচৌধুরীও বলতেন, যে-সমত্মান সবে জন্ম নিল তার গায়ে নোংরা লেগে থাকে, তাকে পরিষ্কার করতে হয়।
অলোকরঞ্জন : রমেন্দ্রবাবু আবার অনেক সময় তান্ত্রিক গহনতার দিকে চলে যেতেন। একটা ‘হ্ণীং’কার হয়তো তিনি দিয়ে দিলেন একটা জায়গায়। পাঠকের সঙ্গে তিনি একটু মজা করতেন – তোরা জানিস না, জানতে গেলে আমার কাছে আসতে হবে।
দীপকরঞ্জন : ‘মেয়েটি অন্যদিকে বেঞ্চিতে তার প্রেমিককে সমগ্র অস্তিত্ব দিয়ে চুম্বন করছিল, আর তখনি আমি ধরতে পেরেছিলাম, বিশ শতক ফুরিয়ে আসার আগেই, তাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে আসবে। এ-কথাটা ওদের জানিয়ে দিলেই কি ভালো করতাম?
(‘জেনে নেওয়া মানেই মৃত্যু’, গিলোটিনে আলপনা)
অলোকরঞ্জন : আমি তোমাকে একটি কবির কথা বলেছি যে আঠারো বছর বয়সে আত্মপ্রয়াত হয়েছে, সুগত ভট্টাচার্য। আমরা তাঁর মৃত্যুর আগের 888sport app download apkর একটা সংকলন করেছি, অসামান্য 888sport app download apk। ইংরাজিতে লেখে সে। আজকে যদি আলোক সরকার বা অলোকরঞ্জন ইংরেজিতে লিখতে আরম্ভ করেন, একটু অদ্ভুত ঠেকবে। লিখবেন হয়তো ভালোই কিন্তু এঁরা যেভাবে এখনো লেখালেখি করেন সেটা সম্ভবত ঠিকই আছে। সুগত আঠারো বছর বয়সে যখন নিজের মৃত্যু ঘটাল, তখন ও সব জেনে গিয়েছিল। প্রজ্ঞা যখন মানুষের পুরোপুরি এসে যায় সে মৃত্যুর উপযোগী হয়ে ওঠে। মানুষ যখন জগৎটাকে জেনে যায়, মনে হয় এখানে বেঁচে কী হবে। একটা ইচ্ছা-মৃত্যুর ব্যাপার থাকে। Francis Bacon বা অন্য কোনো-কোনো ঔপনিবেশিক দার্শনিকের কাছ থেকে এইরকম একটা মতামত এসেছিল যে ‘knowledge is power’ – কিন্তু একবার জানা হয়ে গেলে আমি বলবো ‘knowledge is absence of power’ অথবা আমি বলব যে, ‘knowledge is the end of power’ – উদাহরণত তোমাকে জানাই, আমার একজন পরম 888sport apk download apk latest versionস্পদ মাস্টারমশায়ের ক্যান্সার হয়েছিল। ভোরের দিকে লেকে বেড়াতে গিয়ে এক সহকর্মীর সঙ্গে দেখা – তিনি বলে উঠলেন : সে-কী, আপনার তো ক্যান্সার হয়েছে, আপনি অকাতরে এরকম ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেন! সেদিন থেকেই আমার অধ্যাপক ভাবতে আরম্ভ করলেন যে, উনি মরে যাবেন। এই জানাটা তাঁকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। আমি একটি 888sport app download apkয় লিখেছিলাম, মুমূর্ষুকে যে বলে অপ্রিয় সত্য, সে অতি নচ্ছার। সেই সত্য কথাটা গায়ে-প’ড়ে না বললেই ভালো হয়। তোমার প্রশ্নে বলা 888sport app download apkয় আমি দেখতে পাচ্ছি ওরা চুম্বন করছে – ওরা ঘর বাঁধবে কিংবা শেষ মুহূর্তে পরস্পরকে পুরোপুরি পেয়ে যাওয়ার পর হয়তো ওদের প্রেমের শেষ হয়ে গেল সেখানেই। এটা কি আমার বলা উচিত হবে? মনে হয় উচিত হবে না।
দীপকরঞ্জন : দুরূহ 888sport app download apk থেকে সহজ লেখায় এসে দাঁড়ানোর বাধ্যবাধকতা এসে গিয়েছে?
অলোকরঞ্জন : এই যে দুরূহ থেকে আমি সহজে এলাম, সেটা হয়তো এই কারণে যে, আমি পাঠকদের কাছে পৌঁছোতে চাইছি আরো বেশি। আবার আমার লেখা যখন সহজেই কারো-কারো কাছে পৌঁছোয় আমার ছাত্ররা মাঝে-মাঝে দুঃখ করে বলে, ‘ইস্, আপনি আগে কী-সুন্দর দুরূহ করে কথা বলতেন। আপনি আগের মতো বলুন।’ ভাবি, কিছুতেই তো খুশি করতে পারি না দেখি!
দীপকরঞ্জন : তারা আপনার কাছ থেকে ‘কীর্তির কিঞ্জল’-এর সমতুল্য শব্দগুচ্ছের দুরূহতা চান সম্ভবত।
অলোকরঞ্জন : একটা জায়গায় আমি দেখলাম, ‘নিমণগপ্রপাত’টা ‘নিমগ্ন-প্রপাত’ ছাপা হয়েছে… ভাষা নিয়ে পরীক্ষার ব্যাপারটা
থাকবেই। আমি যখন বাংলাতে কথা বলছি, আমি তো শিক্ষকও, চেষ্টা করছি একটা কথাকে বুঝিয়ে বলতে – সেটা যে অবোধ্য থেকে যাবে তা হয়তো নয়। অন্তত একটা-দুটো রণন লোকের কাছে পৌঁছে যাবে।
দীপকরঞ্জন : আমি আশ্চর্য হই, চর্যাপদ হাজার বছর ধরে বেঁচে আছে অত দুরূহতা নিয়ে।
অলোকরঞ্জন : ওটা ছিল একটা গোষ্ঠীর জন্য লেখা। কতগুলো ব্যাপার অদ্ভুতভাবে আমাদের কাছে পৌঁছে যায় – একজন ডোম্বীকে নিয়ে পালাচ্ছে একজন শবর। মাঝরাত্রে একটা পদ্ম অর্ধেকটা ফুটে উঠল! এই সমস্ত সাংঘাতিক উন্মোচন!
দীপকরঞ্জন : সহজতার দিকে আসার ব্যাপারটা কি একটা compulsion?
অলোকরঞ্জন : ভিতরের একটা বাধ্যবাধকতা বা Inner compulsion থাকতে পারে। খুব বড় 888sport live chatীরাও শেষে হালকা আদলের একটা ঠুমরি গেয়ে দেন, একটু ভাওয়াইয়া-ছোঁয়ানো ভৈরবী গেয়ে দেন – মানুষ তো, মানুষের কাছে পৌঁছোনোর একটা সাধ থেকেই যায়। শেষদিকে সুধীন্দ্রনাথ দত্ত চাইতেন ওঁকে পাড়ার কোনো প্রতিযোগিতার বিচারক করা হোক। এটাই স্বাভাবিক।
দীপকরঞ্জন : আপনি যখন বলেন, ‘কাতারে-কাতারে নর888sport promo code তাদের মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাওয়ার পথটাই আজ আমার নিসর্গ’
(‘বিভাব 888sport app download apk’, জবাবদিহির টিলা) বা, ‘ক্ষুধিত মুখের সঙ্গে নগ্নতার তফাৎ কোথাও নেই’ – তখন মানবতন্ত্রী হিসেবে আপনার অবস্থান চিনে নিতে পারি আমরা। এতে কবি হিসেবে আপনার সমগ্র সৃষ্টি পরিসরের সঙ্গে কোনো রকম compromise করা হলো কি?
অলোকরঞ্জন : একদিক থেকে আমি সৃষ্টির একটা মাধ্যম এবং অন্যদিকে আমি সৃষ্টির প্রণেতা। এই দুটোর মাঝখান দিয়ে যেতে-যেতে সমস্ত 888sport live chatীকেই মানবজীবনের সঙ্গে একটা compromise বা সামঞ্জস্যে আসতে হয়। আমি এঁকেছি একটা নির্বস্ত্তক ছবি কিন্তু রাসত্মার ভিখিরিকে ডেকে বলছি ‘দেখো-তো কেমন হয়েছে’ – এখানে একটা সামঞ্জস্যের প্রশ্ন রয়েছে। সেই অর্থে আমি প্রকৃতির দুলাল নই। যদি তুমি আমাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নিসর্গের মধ্যে ছেড়ে দাও, আমি পাগলের মতো অপেক্ষা করব চৌরঙ্গির ভিড়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে। আবার আমি হাহাকার করব কেন ভালো ভালো গাছগুলোকে কেটে নেওয়া হচ্ছে এখান থেকে – শহরের মধ্যে থেকেই আমি অরণ্যের আবেদন তুলব। আমি যাই-ই করি, সেই সুরটাকে মানবতন্ত্রে বাজিয়ে নেব।
দীপকরঞ্জন : আপনি বলছেন, ‘নির্বাণ ভালোবাসি না…’ অর্থাৎ আপনাকে যেখানেই নিয়ে যাওয়া হোক, শেষমেশ আপনি মানুষের পৃথিবীতে…
অলোকরঞ্জন : যদি দেবতাও একটা অনুশাসন করেন কিংবা emergency জারি করেন, আমি ঠিক অন্য দিকটাতে চলে যাব। যদিও আমি ঈশ্বরকে চাই তবুও বলছি, 888sport app download apk লেখার ক্ষেত্রে ঈশ্বরেরও কোনো অনুশাসন আমি মেনে নেব না, সেটা আমার একান্ত নিজের এলাকা। ‘888sport app download apkর কথা’র শুরুতেই লক্ষ করবে জীবনানন্দ দাশ বলেছেন ঈশ্বরের কথা এলে মনে হয় ছুরি দিয়ে যেন কেটে দেওয়া হলো। আমার একটা স্বভাব আছে। যে মুহূর্তে ভাবলে অলোকদার এটাই ‘stand’, তখনই তোমার প্রত্যাশাটাকে একটু বিস্রস্ত করে দিয়ে আমি কিন্তু আরেকটা ‘stance’ নেব, আরেকটা মুদ্রা নেব। এইখানে আমি ‘stand’ আর ‘stance’-এর তফাৎ করছি। 888sport app download apkর মধ্যে ‘stand’ এবং ‘stance’ অথবা মূল অবস্থান এবং প্রতিসরণের একটা দোলাচল কিন্তু চলতেই থাকবে।
দীপকরঞ্জন : হ্যাঁ, তার পরেও আপনি বলে উঠবেন ‘নির্বাণ ভালোবাসি না…’
অলোকরঞ্জন : এটা ঠিকই, যদি ঈশ্বরের একটা দল আর মানুষের একটা দলের মধ্যে খেলা হয়, আমি মানুষের দলে উইকেটকিপিং করব।
দীপকরঞ্জন : ‘গাছটার গায়ে একটি ডাল/ হুবহু হাতল যেন’
(‘বৃক্ষ এক উপলক্ষ’, গিলোটিনে আলপনা)
একদিকে রাখা যাক আপনার এই কল্পছবি। পাশাপাশি কবি জয় গোস্বামীর ‘দু-দ- ফোয়ারা মাত্র’ থেকে ‘দু-পৃষ্ঠা’ 888sport app download apkটি রাখলাম : ‘আকাশ দু-ভাঁজ করে রাখা ছিল। ভাঁজ খোলা মাত্রই/ ভোরের দু-চোখ থেকে রশ্মি এসে বিঁধে গেল সায়াহ্ন-ললাটে।’ এই দুটি 888sport app download apkকে সামনে রেখে ইমেজের বিষয় কিছু বলুন।
অলোকরঞ্জন : ইমেজ প্রকৃতির অনুকরণ আদৌ নয়, প্রকৃতির একটা সম্প্রসারণ বা কখনো-কখনো সংকোচনও। চেরিফুলে উপত্যকা একেবারে ছেয়ে গেছে, সেই জায়গাটা তো খুব সুন্দর। তাকে আমি আনলাম না। আমি রাখলাম হয়তো রডোডেন্ড্রনের একটা অংশ। রাঙা-রং দিয়ে একটা অন্ধকার তৈরি হয়েছে সেটা রাখলাম। ইমেজের মধ্যে কবির জটিল অভিজ্ঞতার অংশবিশেষ মিশে যায়। যেটার জন্য ‘Ezra Pound’ বলছেন ‘an intellectual emotional complex’। তোমার অভিজ্ঞতা আবেগের সঙ্গে মিশে একটা গূঢ়ৈষা তৈরি করছে তাই তোমার image তৈরি হচ্ছে। সেটা কিন্তু photography নয়, তার মধ্যে আলোকচিত্রের বিশ্বস্ততা থাকবে না।
দীপকরঞ্জন : একটা ভাবচ্ছবি?
অলোকরঞ্জন : একটা কল্পছবি। ওই যে, ‘গাছটার গায়ে একটি ডাল/ হুবহু হাতল যেন’ – আমার তখন খুব তেষ্টা পেয়েছে, গাছের ওই ‘হাতল’টা তুলে নিয়ে আমি যেন পান করছি। এবার জয়ের ‘দু-পৃষ্ঠা’ 888sport app download apkটা। ‘আকাশ দুভাঁজ করে রাখা ছিল… অদ্ভুত এই 888sport app download apkটা আসবার আগে জয়ের মনটা একটা 888sport app download apk লেখার জন্য তৃষিত ছিল। আমি কল্পনা করতে পারি, বন্ধ ছিল 888sport free bet login। ও খুলে ধরল, তখনি আলোটা ওর কপালে এসে পড়ল। 888sport app download apk লেখা শুরু হয়ে গেল। আমার মনে হয় এই ‘দু-ভাঁজ’টা ভুরুর ভাঁজ আসলে।
দীপকরঞ্জন : কখনো কি ইমেজের মধ্যে প্রতীকও আসবে?
অলোকরঞ্জন : এ তো হতেই পারে। ‘উটের গ্রীবার মতো’ – ইমেজের সঙ্গে প্রতীক তো আসতেই পারে। একটা সুর তুমি সরোদে বাজাচ্ছ, আর সেটা বেহাগ রাগে বাজছে – এখানে কোনো বিরোধ নেই। এ তো আসতেই পারে। প্রতীক কী? – যেখানে তুমি জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাগুলোকে একজায়গায় জড়ো করছ, জড়ো করে সেটাকে মেলে ধরছ। চিত্রকল্পেও একটা মেলে ধরার ব্যাপার আছে। কিন্তু সেই মেলে ধরার মধ্যে তোমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কিছু অভিক্ষেপ বা projection থেকে যাচ্ছে।
দীপকরঞ্জন : সেটা চিত্রকল্পের মধ্যে?
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ।
দীপকরঞ্জন : সেটা কখনো আবার প্রতীকও হতে পারে?
অলোকরঞ্জন : অনায়াসেই হতে পারে। উপমাও হতে পারে।
দীপকরঞ্জন : আপনার ব্যক্তিগত শামিত্ম, এই রাজ্যের শামিত্ম আর বিশ্বশামিত্ম নিয়ে আপনার ভাবনা জানতে চাইব। অডেনের মতো আপনিও কি কোনো শামিত্মর গান লিখতে চান?
অলোকরঞ্জন : আমার ব্যক্তিগত শামিত্ম বলে কিছু নেই। আমি যখন এই গ্রহের সবচেয়ে সুখী মানুষ, তখনো আমি সবচেয়ে দুঃখী মানুষ হতে পারি। কারণ আমার চারপাশের যারা তারা কেউ ভালো নেই। আমার সবচেয়ে বড় বন্ধুটি অসুস্থ। সে মুমূর্ষু। আমি যখন দেখি বন্ধু বন্ধুর পিঠে ছোরা মারছে, যখন দেখি আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ক্ষমতার লোভে সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তখন আমি ভেঙে পড়ি। এতই ভেঙে পড়ি যে আমার মধ্যে তখন কোনোরকম কা-জ্ঞান থাকে না। আমি হয়তো আত্মহত্যা করতে চেষ্টা করি। শামিত্মর গান লিখতে তো চাই-ই – যদি আমাকে সেরকম অনুমতি দেওয়া হতো। তবে সেই গান খুব জটিল হবে। অডেনের মতো আমি নিশ্চয় চেষ্টা করব শামিত্মর গান লিখতে যেটা প্রথমে পড়ে মনে হতে পারে যে, আমার মন খুব অশান্ত হয়ে রয়েছে – দ্বিতীয় পাঠে আমার অভিভাবনাটা ফুটে উঠবে – বুদ্ধের সেই অবস্থা, যখন একজন মানুষও অশান্ত থাকবে ততক্ষণ শামিত্ম নেই – ‘অশামিত্ম যে আঘাত করে তাই তো বীণা বাজে’।
দীপকরঞ্জন : 888sport live chatের অন্য ধারাগুলির অভিঘাত এবং আশ্রয় আপনার লেখালেখি জুড়ে, বিশেষত সংগীত এবং চিত্রকলা এমনকি নাটক। – অন্য ধারাগুলোর প্রেরণা আপনাকে লিখতে সাহায্য করে?
অলোকরঞ্জন : 888sport app download apk হচ্ছে সমস্ত muse অর্থাৎ 888sport live chat-সরস্বতীদের একজন। [ন’জন muse হলেন Clio, Thalia, Erato, Euterpe, Polyhymnia, Colliope, Terpsichore, Urania, Melpomene.]। চিত্রকল্প ছাড়া, ভাস্কর্য ছাড়া, সংগীত ছাড়া, নাটক ছাড়া তার কোনো অস্তিত্বই নেই – 888sport app download apk একটা মিশ্র888sport live chat। যে-888sport app download apkয় সংগীত নেই সে-888sport app download apk কিছু নয়। যে- 888sport app download apkয় ছবি নেই সে-888sport app download apk কিছু নয়। আমি যখন তাইরেসিয়াসের কথা বলছি, আমি তখন ‘আমিত্মগোনে’ সোফোক্লেসের খ্রিস্টপূর্বাব্দের নাটক 888sport app download apk latest version করছি। ক্রেয়ন যখন ক্ষমতান্ধ হয়ে গেছিলেন, তখন উনি তাইরেসিয়াসকে দেখছেন এক বালককে যষ্টি করে দাঁড়িয়ে আছেন। তাইরেসিয়াস বলছেন – ‘ক্রেয়ন তুমি ফিরে এসো, শক্তি কামনাকে তুমি নির্বাপিত করো। তাইরেসিয়াস তখন prophet ভাবি-কথাকার। তখন আমি 888sport app download apk latest version করতে-করতে ভাবছি এ-কী অদ্ভুত ক্ষমতা। তারপর দেখলাম যে, তিনি একই জন্মে আগে 888sport promo code ছিলেন, তারপর সাপ ছিলেন, তারপরে পুরুষ – এইভাবে অভিশপ্ত হয়ে অনেকগুলি জন্মান্তরের মধ্যে দিয়ে গেছেন। তখন আমি তাইরেসিয়াসকে নিয়ে লিখলাম [তাইরেসিয়াস/ দেবীকে স্নানের ঘরে নগ্ন দেখে]। এমন হতে পারে যে, যে তাইরেসিয়াস কে সেটা জানে না হয়তো বলবে, এ অলোকদা কী বলছেন? আমি একটা 888sport app download apk লিখেছিলাম, নীহাররঞ্জন রায়ের কথা। একজন বড় সমালোচিকা বললেন, এঁরা কারা? মান্দাসের ভেলা আবার কী! এইসব লিখে তো বাঙালি পাঠকের থেকে তিনি দূরে সরে যাবেন! হয়তো জুবিন মেহতার কথা বলেছি। জুবিন মেহতা ছিলেন একজন বড় conductor – ওমনি কেউ-কেউ বলবেন, বলেওছেন, এটা কেন অলোকদা লিখতে গেলেন, ওঁকে তো কেউ চেনে না। অথচ তিনি কিন্তু ভারতীয়। কিন্তু এগুলো ছাড়া আমি তো বাঁচব না, 888sport app download apkয় দরকারমতো জুবিন মেহতার নাম না করলে আমি তো বাঁচতেই পারব না। একদিন তাঁকে ভিয়েনায় দেখেছিলাম স্ট্রাউসের (Richard Georg Strauss) একটা Waltz নাচের composition পরিচালনা করছেন – আমার বুক গর্বে ভরে গেল। তারপরে তাকে আবার দেখলাম দিলিস্ন এয়ারপোর্টে। কাস্টমসের কেউ ওঁকে চেনে না আমি লক্ষ করছি। ভাবছি গিয়ে কথা বলব, বললাম না… 888sport live chatের মধ্যে ব্যবহৃত এরকম একেকটি দিগ্বলয় বা দিকস্তম্ভ, তাদেরও কিন্তু একটা অনামিক হওয়ার অধিকার আছে, anonymous হওয়ার – আচ্ছা, অন্তরঙ্গ 888sport live chatসন্ধানীরা খুঁজেই নিক না তাইরেসিয়াসকে। এগুলোকে বলে পূর্বোল্লেখ – allusion। সমস্তটাই তো পূর্বোল্লেখ। ধরো আমি যদি ‘বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান’ – এ-কথা লিখি আরেকটা 888sport app download apkয়, আমি যদি আমার প্রেমিকাকে সে-কথা বলি, তার জানতেই হবে কিন্তু এই গানটা রবীন্দ্রনাথের, তারপরে আসবে আমি তার মধ্যে কী সুরসংযোজনা করেছি improvise করেছি। প্রত্যেক 888sport app download apkই কিন্তু একটা পূর্বোল্লেখের সম্প্রসারণ।
দীপকরঞ্জন : ‘তাইরেসিয়াসের কান জিভ দিয়ে চেটে দে, তাহলে
বুঝতে পারবে যত ভবিষ্যকথক দৈবাণীরত
পাখির সংলাপ!’
ফলত যেমন অন্ধ তেমনি অন্ধ রইল, সন্ন্যাস
চায়নি, সন্ন্যাসী তবু রয়ে গেল তাইরেসিয়াস।
(‘তাইরেসিয়াস’, দেবীকে সণানের ঘরে নগ্ন দেখে)
– এই 888sport app download apkটির জন্মবৃত্তান্ত জানতে চাইব আপনার কাছে।
অলোকরঞ্জন : UNESCO-র অনুরোধে 888sport live football অ্যাকাডেমির জন্য যখন গ্রিক থেকে আমিত্মগোনে 888sport app download apk latest version করছি, তখন এই 888sport app download apkটা রচিত হয়েছে। আমিত্মগোনে যখন 888sport app download apk latest version করেছি, এক একটা 888sport app download apk বেরিয়ে এসেছে। তাইরেসিয়াস চরিত্রটা আমাকে খুব স্পর্শ করেছে বা ক্রেয়নের চরিত্রটা। আমিত্মগোনের চরিত্র, যে সমস্ত কিছুর মধ্যে দিয়ে বিপস্নব করছে। সেন্ট পল্স্ ক্যাথিড্রাল প্রাঙ্গণে দেড়মাস ধরে একজন বিরাট জার্মান পরিচালক হান্স গুন্টার হাইমের পরিচালনায় আমিত্মগোনে নাটকটা অভিনীত হয়েছিল। 888sport app download apk latest version যখন করি, তখন আমি চাই আমার যে অনুভূত অভিজ্ঞতার এলাকা তার একটা বিসত্মার। আমি যখন ব্রেশ্টের 888sport app download apk latest version করছি, তখনই সূরদাসেরও 888sport app download apk latest version করতে গিয়ে একই জিনিস দেখছি। আমি কে অলোকরঞ্জন আমি তো সঠিক জানি না। আমি ব্রেশটের 888sport app download apk latest version হাতে নিয়েছিলাম প্রগতিবাদের গরজে, এবং আমি সেই পর্বেই সূরদাসের 888sport app download apk latest version করতে গিয়েও একই প্রবণতা অনুভব করেছি যখন দেখি একজন গরিব তার যে ছাতা দুলিয়ে যাচ্ছে, সেটা আসলে রাজচ্ছত্র। এখানে আমার সত্তার একটা বিসত্মার হলো। এইভাবে নিজেকে বাড়িয়ে নেওয়াও 888sport app download apk latest versionের লক্ষ্য হতে পারে। তাছাড়া আরো একটা কথা – একজন কবি যদি তাঁর রচনা শুরুর প্রথম জায়গায় চিরদিন থেকে যান, তাঁর 888sport app download apk আমি নিজে পড়তে যাব না।
দীপকরঞ্জন – কাব্যগ্রন্থের নামটাতেই, ‘তাইরেসিয়াস’ 888sport app download apkর সঙ্গে বা হয়তো আপনার অন্য লেখালেখির সঙ্গেও অনেকের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে
অলোকরঞ্জন : হ্যাঁ, জানি আমি। অনেকেই আমাকে খুব ধিক্কার দিয়েছে…
দীপকরঞ্জন : ‘নগদবিদায়’ এবং ‘রাত্রি’ 888sport app download apk দুটি যেন মৃত্যুবোধের আরোহ-অবরোহ (‘নগদবিদায়’, এবার চলো বিপ্রতীপে)
অলোকরঞ্জন : ফরাসি ভাষায় ‘প্রত্যেকটি বিদায় অর্ধমৃত্যু’ বলে একটা কথা আছে। এ বিষয়ে আমার একটা অভিজ্ঞতা বলি। আমার একটা স্ট্রোকের মতো হয়েছিল বছর তিনেক আগে। হাসপাতালে কিছুদিন ছিলাম। সেখানে যাদের অ্যাফাসিয়া (Aphasia) হয়েছিল, তারা কথা বলতে পারত না, তাদের আমি একটু খবরের কাগজ পড়ে-পড়ে কথা বলতে শেখাতাম। তার মধ্যে একজন ঠিকমতো কথা বলতে পারতই না, তার ভাবভঙ্গি দিয়ে সবাইকে বিরক্তই করত। তারপর যখন সে চলে যাচ্ছে হাসপাতাল ছেড়ে, সবার কাছে করুণভাবে বিদায় নিয়ে যাচ্ছে। অন্যেরা ভাবছে যায় তো যাক না বাবা, এসব কী করছে – এইরকম হয় না? এখানে প্রথম 888sport app download apkটিতে একজন অতিথি বিদায় নিচ্ছেন। তিনি অনেক দিন এই গ্রহে ছিলেন। তিনি চলে যাচ্ছেন বলে একটা বিদায় উৎসব হচ্ছে। যখন তার খুব মন ধরে গেল, ভাবলেন একটু থাকব, তখন কিন্তু সেই বিদায় অভ্যর্থনা স্তিমিত হয়ে আসছে। আমাদের যে-উৎসবগুলো হয় – ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ/ঠাকুর যাবে বিসর্জন’ – প্রথমদিন থেকেই তিন-দিনের বেশি পুজো যেন না হয় তেমন একটা বাজনা বাজতে থাকে। আমাদের সমস্ত উৎসবের লগ্ন একেবারে সীমাবদ্ধ, এইটা মানুষের জীবনে একটা অদ্ভুত নিয়তি। পরের 888sport app download apkটা এইটার যুগ্মক 888sport app download apk। গৃহকর্তার কাছে অতিথি এসেছেন। একটা সন্ধ্যায় খুব সুন্দর আসর জমেছে 888sport app download apkপাঠ হয়েছে। 888sport app download apkপাঠেরও একটা মেধা থাকে – একসময় তা শেষ হয়ে যায়। এরপর খুব পরিচ্ছন্নভাবে বিদায় নিয়েছেন তিনি। তারপর আবার তার মনে হচ্ছে আচ্ছা, ওই 888sport app download apkটা আর একবার শুনি। তখন গৃহকর্তা পাগলের মতো খুঁজছেন, লণ্ঠনের কাচ পরিষ্কার করে দেখছেন, কোনখানে ওই বইটা আছে কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছেন না। তার মনে হচ্ছে, কীভাবে তাকে আমি সম্মোহন করব – কোন 888sport app download apkয় ভোলাব এখন তাকে? সংবেদী অতিথি তার এই দশা দেখে নিজেই অদৃশ্য হয়ে গেছেন।
দীপকরঞ্জন : ‘চূর্ণ 888sport app download apkর সময় এসে গেছে’, বলেছেন আপনি। বড় 888sport app download apk লেখা হবে না আর?
অলোকরঞ্জন : এখন মহা888sport app download apk বা মহাকাব্যের সময় নেই। বড় 888sport app download apk যেগুলো লেখা হচ্ছে, সেগুলো ছোট 888sport app download apkর ব্রেক-জার্নি। এখান থেকে তুমি বখতিয়ারপুর গেলে, নেমে আবার একটা জায়গায় উঠলে, রাজগির পৌঁছোলে, রাজগির থেকে তুমি বাসে করে ব্রেক-জার্নি করে নালন্দায় যাচ্ছ। কিন্তু Canterbury Cathedral-এর দিকে যেমন Canterbury tale-এ যাত্রা সমানে এগিয়ে চলেছিল, সেই যাত্রাতীর্থ আজ আর ফিরে আসবে না, যদিও সেখানেও কিন্তু রাত্রিবাসের বিরতি ছিল, সারারাত ধরে কেউ চলে না। বিবেকানন্দ যখন ভারতাত্মা আবিষ্কার করেন, একরাতে তো হয়নি, সেই দুঃসাহসিক যাত্রিকতার মাঝেমধ্যে এক-একবার বিরতিও আছে।
দীপকরঞ্জন : চূর্ণ888sport app download apk এবং তার মধ্যে একটা সমগ্রতা – আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এটাই কি আমাদের লক্ষ্য হবে?
অলোকরঞ্জন : চূর্ণ888sport app download apkর মধ্যে সমগ্রতা আমি কল্পনাই করতে পারি। সংগীতের নির্মিতির মধ্যে এটা হয় যে, অনেকগুলো চূর্ণ-রাগ নিয়ে একটা রাগমালা তৈরি হলো। ভীমসেন যোশি, ভোজপুরি, লোকগীতির কিছু-কিছু অংশ নিয়ে একটা কোলাজের মতো তৈরি করেছিলেন। আমাদের সময়টা হচ্ছে কোলাজের সময়, জোড়াতালির সময়। Tasso যেমন মহাকাব্য লিখেছিলেন ওভাবে হয়তো আজ আর ভাবা যাবে না। একত্রিশ বছরে তাঁর লেখার
ক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তিনি পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। খ-কাব্যের সময় এসে গেছে, আমি বিশ্বাস করি। এর বেশি আমি তো জানি না। এখান থেকে বিরাট মহাকবি হয়তো জন্ম নেবেন, সেটা একদিন সম্ভব হতে পারে। আমাদের মধ্যে কেউ-কেউ – আনন্দ বাগচি যেমন উচ্চাশী একটি কাব্যোপন্যাস লিখেছেন।
দীপকরঞ্জন : পবিত্রবাবু?
অলোকরঞ্জন : পবিত্র লিখেছেন। এটা খুব ভালো উদাহরণ, পবিত্র সবসময় মহা888sport app download apk নিয়ে চলার কথা ভাবেন। পবিত্র এখানে খুব বিশিষ্ট উদাহরণ, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেখানেও আবার যেসব লাইন আমাদের বিশেষভাবে মনে থাকে সেগুলো lyric-এর অভিব্যক্তি।
দীপকরঞ্জন : আপনি ‘না-ভাষা’য় কথা বলার বিপদের কথা বলেছেন।
অলোকরঞ্জন : কালকে বলছিলাম, ভাষার মধ্যেও একটা নীরবতার জায়গা থাকে।
দীপকরঞ্জন : হ্যাঁ, 888sport cricket BPL rateের মঞ্চে। এখনি শপিংমল নিয়েও বলছিলেন।
অলোকরঞ্জন : আমি যদি সঠিক ভাষা না পাই, এমনকি বিকিকিনির মধ্যেও যে-জিনিসটা চাইছি সেটা হয়তো বোঝাতে পারব না। না-ভাষার বিপদ হচ্ছে আমি আমার অভিপ্রায়টা বোঝাতে পারছি না। এমনকি পণ্যের ক্ষেত্রেও হয়তো আমি ভুল পণ্য নিয়ে এলাম, যেটা আমাকে আবার বদলাতে যেতে হতে পারে। মেয়েরা যখন কেনাকাটা করে, তখন হাজার-হাজার কথা বলে, সেটাও কিন্তু সমান বিপজ্জনক।
দীপকরঞ্জন : সেটাও কি না-ভাষা?
অলোকরঞ্জন : সেটাও এক ধরনের না-ভাষা।
দীপকরঞ্জন : এই বিপদটা কি আমাদের কাব্যেও ঢুকে গেছে?
অলোকরঞ্জন : একেবারে তাই। ঠিক জায়গায় silence – তার মতো সৌন্দর্য আর কিছু হতে পারে না। নৈঃশব্দ এবং গ্যোয়েটের 888sport app download apkয় যেমন আছে – প্রতিটি গিরিচূড়ায় শামিত্ম। অর্থাৎ বুদ্ধ বসে আছেন পাহাড়ের উপর। এটাই 888sport app download apkর লক্ষ্য।
দীপকরঞ্জন : তার আগে নির্মাণ করতে হবে।
অলোকরঞ্জন : পাহাড়টাকে শব্দ দিয়েই গড়ে তুলতে হবে এবং গলার থেকে রক্ত বেরোতে থাকবে, ফেনা উঠতে থাকবে।
দীপকরঞ্জন : 888sport app download apkয় স্বচ্ছতা থাকা জরুরি কী? আপনি কী মনে করেন?
অলোকরঞ্জন : অনেকে অমূর্ত কবিত্ব করে, সেটা বড় বিচ্ছিরি ব্যাপার। 888sport app download apkয় স্বচ্ছতা এই অর্থে থাকা দরকার যে কোনোরকম অস্পষ্ট আবেগ বা vague emotion চলবে না। বেশিরভাগ পত্র-পত্রিকায় আজকাল যেসব 888sport app download apk বেরোয়, কী-যে বলতে চায় একেবারে বোঝাই যায় না। একটা স্পষ্ট আবেগ, Eliot যাকে precise emotion বলেছেন সেটা দরকার এবং স্বচ্ছতা দিয়েও একটা রহস্য যদি তৈরি করা যায়, সেটা খুব দুরবগাহ হতে পারে। যেমন ওই যে, সূর্যের চপ্পলে পা গলিয়ে…
দীপকরঞ্জন : 888sport app download apk নামহীন হওয়া উচিত?
অলোকরঞ্জন : রবীন্দ্রনাথ শেষের দিকে অনেক 888sport app download apk নামহীন রেখেছিলেন। বেশিরভাগ ছবিরও কোনো নাম দেননি। নামহীন 888sport app download apk যদি একটা cycle-এর মধ্যে, একটা series-এর মধ্যে আসে, আমি নামহীনতার পক্ষপাতী। কারণ একটা নাম দিলে অনেকটা বলে দেওয়া হয়। তাহলে পাঠকের প্রত্যাশাটা সেই নামটিকে অবলম্বন করেই এগোবে। তবে নামটাকে একটা আভাসসূত্র হিসাবে দিলে কোনো ক্ষতি হয় না। নাম রাখাটা কিন্তু খুব কঠিন কাজ। গতকাল একটি মেয়ে আমার কাছে 888sport app download apkর বইয়ের নাম চেয়েছিল। বারবার নাকি তার প্রাক্তন প্রেমিকের কথা মনে পড়ে। তাই নিয়ে কতরকম লিখেছে সে। আমি বললাম, লিখে দাও 888sport sign up bonusধার্য। সে পরম আনন্দে যেন ব্রহ্মকে পেয়েছে এভাবে ছুটতে থাকল। কিন্তু আমার ভালো লাগল না। নাম না রাখলে ক্ষতিটা কী? আগে 888sport app download apkর কোনো নাম থাকত না, চর্যাপদে রাগ-রাগিণীর নাম থাকত। যেমন পাহাড়ি রাগে লেখা, আর কবিদের নাম থাকত। এমনকি আমি এটাও বিশ্বাস করি, একদিন 888sport app download apkয় কবিদের নাম থাকবে না, পাঠককে চিনে নিতে হবে – এই চ্যালেঞ্জটা।
দীপকরঞ্জন : কাব্যগ্রন্থের নামকরণের ব্যাপারে একটা অসাধারণ কথা বলেছেন আপনি – ‘কিছু 888sport app download apk থাকবে, তিন-চারটে 888sport app download apk – গোপন প্রেমিকার মতো যেগুলো কাব্যগ্রন্থের নামকরণটাকে ধারণ করবে।’
অলোকরঞ্জন : কাব্যগ্রন্থের নামকরণের মধ্যে এমন অনেক 888sport app download apk থাকতে পারে যে-888sport app download apkগুলো ওই বইয়ের উদ্দেশ্যটাকে বহন করে না, অথচ তার মধ্যে রয়েছে। রবীন্দ্রনাথের মানসী কাব্যগ্রন্থের মধ্যেও ‘বঙ্গবীর’ জাতীয় কিছু স্যাটায়ার-ধর্মী 888sport app download apk আছে, কোনো 888sport app download apkয় আবার অযথা ঈশ্বর সম্পর্কে কথা বলে দিলেন। কেউ শুনতে চায়নি তখন ঈশ্বরের নাম। ‘মানসী’ নামটা কেন-যে রেখেছেন, অনেক জায়গায় বার করা খুব মুশকিল। তার মধ্যে একটা জায়গা ধরে তিনি নামটা দিয়েছিলেন, যেখানে তেমন দু-তিনটে 888sport app download apk থাকবে। পাঠককে খুঁজে বার করে নিতে হবে কেন তিনি ‘মানসী’ নামটা দিয়েছেন। এটা কবির একটা প্রক্রিয়া, এই নামের ব্যাপারটার মধ্যে পাঠকের সঙ্গে ধান-খেতে একটা লুকোচুরি খেলা থাকে।
দীপকরঞ্জন : দর্শন ও 888sport app download apk একই গোত্রের এবং উভয়েই আমাদের ভাষায় যাকে বলে সভ্যতা – সেই চূড়ান্ত মঙ্গলকেই চায় – এই উচ্চারণের সঙ্গে আপনি কি একমত হবেন?
(সূত্র : দার্শনিক এ.এন. হোয়াইটহেড)
অলোকরঞ্জন : জীবনানন্দ হোয়াইটহেডের একজন সমঝদার ছিলেন। সভ্যতার পতনের মুখেও শ্রেষ্ঠ কাব্য রচিত হতে পারে যেটা অবনীন্দ্রনাথ তাঁর বাগেশ্বরী 888sport live chat ভাষণমালায় দেখিয়েছেন। যে- সময়টায় দামেত্ম ডিভাইন কমেডি লিখেছেন সেটা বলতে পারা যায় খুব দুরারোগ্যের সময় – তখন পোপের ক্ষমতা খুব বেড়ে গেছে এবং দামেত্মকে ভেনিস শহর থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে। হোয়াইটহেড যেটা বলেছেন, সভ্যতা 888sport app download apkর লক্ষ্য তো হওয়া উচিতই। সভ্যতা 888sport app download apkরই হয়তো লক্ষ্য – পরম মূল্যবোধ, যেটা দামেত্মর মধ্যে আছে বা গ্যোয়েটের ফাউস্টের মধ্যে আছে, জীবনানন্দের বেলা অবেলা কালবেলার মধ্যে আছে, সভ্যতার সংকটের মতো গদ্য-ভাষণে আছে – কবিরাই হয়তো সভ্যতার ধারক।
দীপকরঞ্জন : দর্শন ততটা নয়?
অলোকরঞ্জন : দর্শনের ব্যাপারটা যে মঙ্গলের দিকেই যাচ্ছে তাও নয় – অনেক দর্শনই আছে যেটা খুব গোলমেলে দর্শন। দর্শনের কাজ কিন্তু বাঁকিয়ে-চুরিয়ে না বলে যা সত্য তাকে প্রকাশ করা। আর 888sport app download apkর কাজ যা সত্য হওয়া উচিত তাকে প্রকাশ করা।
দীপকরঞ্জন : 888sport app download apk কি তবে দার্শনিকতার জায়গাই নয়?
অলোকরঞ্জন : 888sport app download apkয় দার্শনিকতার জায়গা আছে। প্রত্যেক 888sport app download apkতেই কবির দর্শন প্রকাশ পায় কিন্তু সেটা 888sport app download apkর বিয়োগফল হিসাবে উঠে আসে। যেমন ‘লোকেন বোসের জার্নাল’ (জীবনানন্দ) 888sport app download apkটা খুব হালকাভাবে শুরু হচ্ছে – ‘সুজাতাকে ভালোবাসতাম আমি -/ এখনো কি ভালোবাসি?’ – এখন আর সুজাতাকে আমি ভালোবাসি না তখন ভালোবাসতাম, এইসব বলতে-বলতে সেই জায়গা থেকে আলগোছে বেরিয়ে এসেছে ‘প্রতিটি দিনের নতুন জীবাণু আবার স্থাপিত হয়’ – এই হলো দার্শনিক 888sport app download apk। কিন্তু দার্শনিক 888sport app download apk বলে প্রথমেই কোনো সিলমোহর ছিল না, হঠাৎই বেরিয়ে এলো। এর দর্শনের নাম ক্ষণসাম্প্রতবাদ (empiricism)। অথবা ধরো, ‘এসো জাগো হৃদয় তুমি বিষয় জেনেছিলে/ গিয়েছিলে অনেক দূরে স্থির বিষয়ের দিকে/ এবার তুমি গ্রহণ করো আরেকরকম ব্যবহারের মানব পৃথিবীকে’ বা, ‘একটি ঘোড়া সূর্য হয়ে জ্বলে’ – কী অপূর্ব ছবি – মরুভূমির পাশে সমুদ্র, সমুদ্রের পাশে ঘোড়াদের বিক্রি করা হচ্ছে, সেইসব ঘোড়া কোথায়-কোথায় চলে যাচ্ছে। তারপাশেই একটি প্রেমিক-প্রেমিকা পরস্পরের অপেক্ষা করছে, সেখান থেকে ভেঙে এক সময় পরস্পর থেকে দূরেও সরে যাচ্ছে এবং কবি যেন বলছেন ‘তুমি যেভাবে আবেগ দিয়ে চেয়ে-চেয়ে দেখছ সেখানে একটা ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। তর্জনী দিয়ে কিন্তু বললেন না, বললেন অনামিকা দিয়ে। এখানেই তিনি আমার প্রিয় দার্শনিক কবি।
দীপকরঞ্জন : আপনার বিচারে আপনার কোন কাব্যগ্রন্থটি শ্রেষ্ঠতম?
অলোকরঞ্জন : কোনোটাই নয়। আমার কাছে শ্রেষ্ঠ-অশ্রেষ্ঠ বলে কিছু নেই। Pablo Picasso-র কথা হচ্ছে পাঁচটা আঙুলের মধ্যে কোনটাকে ভালো বলব? সেটা মহাকাল বিচার করবে। তবে এটা বলতে পারি যে, যৌবনবাউল নয়। তার কারণ হচ্ছে – যৌবনবাউল একটা বই নয়, অনেকগুলো পর্যায়ের সংকলন। একটি ছেলে একটি মেয়ে এসেছিল, মনে হয় ১২টা চ্যানেল আছে তার মধ্যে কোনো একটার। মেয়েটি বলল, ‘একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করব?’ আমি বললাম ‘করো’। সে বলল, ‘আপনার প্রথম কাব্যগ্রন্থ কোনটি?’ আমি বললাম এইটা কিন্তু সবাই জানে।
দীপকরঞ্জন : আধ্যাত্মিকতার বোধ মহৎ 888sport app download apkর কোনো প্রাক্শর্ত হিসেবে কাজ করে?
অলোকরঞ্জন : একেবারেই না। আত্মিকবোধ। কবিরা-তো আধ্যাত্মিকই, তাছাড়া আবার কী? বিদ্যাপতিতে এতো অসাধারণ সব ঐহিক কামনার কথা আছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর যে-888sport app download apkগুলো থেকে গেল সেগুলো আধ্যাত্মিক – প্রচলিত অর্থে যদিও আধ্যাত্মিক নয়, পৃথিবীকে অনাসক্ত অথচ সুন্দর চোখে দেখার আধ্যাত্মিকতা। তিনি একটি মেয়েকে দেখছেন মন্দির থেকে বেরোচ্ছে, নতুন বিদ্যুতের মতো যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে চলে গেল – এই দেখাটাও আধ্যাত্মিক। কিন্তু এটা শুক্রাচার্যের সবজামত্মা আধ্যাত্মিকতা নয়। এটা অস্তিত্বের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসা আধ্যাত্মিকতা। বিদ্যাপতি একদিন 888sport app download apk লিখে বেরোচ্ছেন, সন্ধে হয়ে আসছে – ‘যব গোধূলি সময় বেলি/ ধনি মন্দির বাহির হেলি/ নব জলধর বিজলি রেহা/ দ্বন্দ্ব পসারি গেলি’। যখন গোধূলি হলো, মেয়েটি মন্দির থেকে বেরিয়ে এলো। মনে হলো নতুন বিদ্যুৎ আমার মধ্যে ধাঁধা আর দ্বন্দ্ব তৈরি করে কোথায় মিলিয়ে গেল। এ 888sport app download apkকে আধ্যাত্মিক বলব না তো কী বলব? আর ওই চিত্রকল্প নিয়ে আঁকা রবীন্দ্রনাথের সেই ছবিটি – তার মতো অপরূপ ইন্দ্রিয়-সংসক্ত 888sport live chatকাজ আর একটাও কি তোমার চোখে পড়েছে?
দীপকরঞ্জন : আপনার কি মনে হয় উৎকৃষ্ট 888sport app download apkকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে সরকারের কোনো ভূমিকা থাকা উচিত? ধরুন কয়েকজন বিশিষ্ট কবি-লেখক-888sport live chatীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলো?
অলোকরঞ্জন : একেবারেই না। 888sport app download apk স্বল্পসংখ্যক মানুষের একটা পারমিতা। এজন্য কেউ যদি চেষ্টা করেন, তাহলে কয়েকজনের নাম এখানে আসতে পারে। সরকার যদি ঠিক করে দেন তার আগে আমার যেন মৃত্যু হয়। আমি এর মধ্যে নেই। আমাকে যদি এই কাজের ভার দেওয়া হয়, আমি তো নেবই না, আরবে কিংবা মেসোপটেমিয়ার কোনো জায়গায় পালিয়ে যাব। এর চেয়ে মারাত্মক কমিশন আর কিছু হতেই পারে না।
দীপকরঞ্জন : কোনো নির্দিষ্ট সময়, নির্দিষ্ট টেবিল, সংগীত ইত্যাদি 888sport app download apk লেখার জন্য আবশ্যিক পূর্বশর্ত বলে মনে করেন?
অলোকরঞ্জন : আদৌ নয়। আমি অনেক সময় রাসত্মায় যেতে-যেতে ট্রামের টিকিটের পিছনে 888sport app download apk লিখে রেখেছি। তবে টেবিলের ব্যাপারটা…
দীপকরঞ্জন : আপনি লিখেছিলেন, ‘মুশকিল, ওই লেখার টেবিলটুকু/ মস্ত বিশাল বড়ো’ – ওই টেবিলটা ছাড়া আপনি লেখার কথা ভাবতে পারেন?
অলোকরঞ্জন : হলে ভালো হয়। ভোল্ফ বিয়ারমান (Wolf Biermann)-কে যখন নির্বাসন দেওয়া হলো পূর্ব থেকে পশ্চিম জার্মানিতে, তখন তিনি টেবিলটাকে অর্ধেক করে আধখানা টেবিল নিয়ে এসেছিলেন।
দীপকরঞ্জন : মদ্যপান বা অন্য কোনো অনুষঙ্গ কি লেখার পক্ষে সহায়ক হতে পারে?
অলোকরঞ্জন : একটা অনুষঙ্গ খুব দরকার হয় – পাশের বাড়িতে ঝগড়া হলে আমার খুব কান্না পায়। আমার মরে যেতে ইচ্ছে করে, যেটা এখানে প্রায় হয়। কত জায়গায় আমি প্রতিবাদ করব? খুব অসুবিধা হয় আমার। মদ্যপান একেবারেই না, মদ্যপানের সঙ্গে 888sport app download apk লেখার কোনো যোগ নেই। আমি বলছি না যে, বন্ধুজন মিলিত হয়ে কখনো পান করবেন না। বার্ট্রান্ড রাসেল প্রত্যেকদিন একটু করে শেরি খেতেন, সেজন্য তাঁকে অপদস্থ করলে গর্হিত অন্যায় হবে কিন্তু।
দীপকরঞ্জন : যদি দু-একটি কথায় যাঁরা 888sport app download apk লিখতে চান তাঁদের কিছু বলতে হয় – কী বলবেন?
অলোকরঞ্জন : অদেখা পাঠকের দিকে একটা চিঠি লিখে জলে ভাসিয়ে দাও। সম্প্রতি কে কী 888sport app download apk পড়ছে, কোনো সম্মেলনে তোমায় ডাকা হচ্ছে বা হচ্ছে না, কী 888sport app download bd পাওয়া যাচ্ছে বা যাচ্ছে না, এগুলো থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হলে তুমি সন্ন্যাসী হবে। একজন কবি আসলে তো সন্ন্যাসী।
দীপকরঞ্জন : প্রণীত অগ্নি তাকে বলে তুমি জানো? – এই কাব্যগ্রন্থের ‘পুরস্কৃত’ 888sport app download apkটির প্রায় প্রতিধ্বনি বলা যেতে পারে আপনার এই উত্তর।
অলোকরঞ্জন : আমি মনে করি এই যে, এখন এত 888sport app download bdের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে, এটা খুবই ক্ষতিকর।
দীপকরঞ্জন : আপনাকে আর কষ্ট দেব না অলোকদা। এত দীর্ঘক্ষণ উপস্থিত থেকে এই সাক্ষাৎকার সম্ভব করে তোলার জন্য অনেক-অনেক ধন্যবাদ। আমার প্রশ্নপত্রের দীর্ঘতা ও নিরুপায় নিষ্ঠুরতাকে আপনি সস্নেহ ভৎর্সনায় ভরিয়ে দিন, এটুকুই শেষ আবেদন রাখছি।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.