ফয়জুল লতিফ চৌধুরী
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের হৃদশল্য চিকিৎসা বিভাগের এককালের প্রধান অধ্যাপক ড. বি.এন. গুহরায় ডাকসাইটে ডাক্তার ছিলেন। গম্ভীর ডাক্তারবাবুর ভারিক্কি নামটি সামনে-পেছনে কাটছাঁট করে ‘ভূমেন্দ্র গুহ’ করে নেওয়া হয়েছিল। পশ্চিম ও পূর্ব বাংলার 888sport live footballজগতে তিনি কবি ভূমেন্দ্র গুহ নামে পরিচিত হয়েছিলেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের 888sport free bet এগারো। কিন্তু কালক্রমে তাঁর কবি-পরিচয় ছাপিয়ে ‘জীবনানন্দ গবেষক’ – এই পরিচয়টিই ক্রমান্বয়ে বড় হয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে তাঁর অনুতাপ বিশেষ ছিল না। বস্ত্তত জাগতিক বিষয়াদি নিয়ে তাঁর মাথাব্যথা বড় একটা ছিল, এরকম কখনো মনে হয়নি পরিচিতদের। অপারেশন থিয়েটারে যতটাই নিরাপস দক্ষতা থাকুক না কেন, সারাটা জীবন ভোলাভালা সাদাসিধে ভালো মানুষ টাইপের একটা ইমেজ নিয়েই তিনি জীবন পার করে দিয়েছিলেন। নিজের সম্পর্কে কী ধারণা ছিল তাঁর সেটাও একহাত তৃতীয় পুরম্নষে বলে গেছেন এভাবে :
তাঁর নিজের অর্থে তিনি (অর্থাৎ কিনা ডাক্তার ভূমেন্দ্র গুহ) একজন নিরীহ-গোছের মানুষ ছিলেন, ভালো মানুষ ছিলেন, জীবন-ভর অনেক মানুষের প্রতি যথাযথভাবে অনুরাগী ছিলেন – আর, কখনও নিজেকে শুদ্ধ করে নেবার জন্য, নিজের অসিত্মত্বের অর্থবান সম্পূর্ণতার জন্য তাঁর কোনও বিশেষ দাওয়াই-এর দরকার ছিল না – যা আমাদের অনেকেরই দরকার হয়, আমরা বামুন-পুরম্নত খুঁজতে বেরোই। …তিনি সে-রকম নিচু এলাকায় সে-রকমভাবে বাস করে বেশ সুখে ছিলেন – যে-এলাকায় বাস করে আমাদের অনেকেই খুব অসুবিধেয় থাকি, আমাদের ভিতরে অনেকেই মোটামুটি সুখেও থাকি না; তাঁর নিচু অবস্থা নিয়ে ডাক্তারবাবুকে খোঁটা খেতেও শুনেছি।
তাঁর যে-কাব্যগ্রন্থের নাম এক-কালের বসতবাড়িটি – সেটির শেষ মলাটের ভাঁজ করে ভেতরে চেপে দেওয়া ঝুলে গ্রামের বুনো পথে হেঁটে যাচ্ছেন ভূমেন্দ্র গুহ – এরকম একটি পেছন-ফেরা ছবি দেখা যাবে : পায়ে চপ্পল, গায়ে ঢলঢলে পাজামা আর সাদা একটি টি-শার্ট; ডান হাতে আঙুলের ফাঁকে সিগারেট, ঘড়িপরা বাম হাত ঘাড় থেকে ঝোলানো চটের ব্যাগটা কিঞ্চিৎ ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় অপরিকল্পিতভাবে ধরে আছে; যেন দিনের কাজ শেষে ঘরে ফিরে যাচ্ছে আপিসে কাজ করা একজন প্রৌঢ় মানুষ; কিংবা কলকাতার মানুষটি ফিরে যাচ্ছে গ্রামে এক কালের বসতভিটেয়। বস্ত্তত সারাটি জীবন ওইরকম একটা ইশ্তিরিবিহীন ঢলঢলে শার্ট-পাজামার ভেতর নির্বিকারে জীবন কাটিয়ে গেলেন তিনি, ওই আলতো করে ধরা সিগারেটের মতোই – যেন হঠাৎ ফসকে পড়ে গেলেও যায়-আসে না খুব-একটা।
১৯৫৪-এ, অক্টোবরের এক শীতার্ত মধ্যরাত-উত্তীর্ণ সময়ে ট্রামের ধাক্কায় মারাত্মকভাবে আহত জীবনানন্দ দাশের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু কার্যত তো তিনি বেঁচেই ছিলেন; তবে – তাঁর স্ত্রী, পুত্র বা কন্যার মাধ্যমে নয়; বোন সুচরিতা, ভাই অশোকানন্দ বা ভ্রাতুষ্পুত্র অমিতানন্দের মধ্য দিয়ে নয় – তিনি এতকাল খানিকটা সশরীরেই বেঁচে ছিলেন যার মধ্য দিয়ে তিনি ভূমেন্দ্র গুহ। বেঁচে ছিলেন – তা না হলে কী করে আমরা বছর-বছর পেয়েছি নতুন-নতুন অমুদ্রিত অপ্রকাশিত 888sport app download apk? – শারদীয় 888sport free betয় জীবনানন্দের নতুন টাটকা 888sport alternative link, কিংবা ছোটগল্প? ১৯৫৪-এর ১৪ অক্টোবর বাড়ির একেবারে কাছেই ট্রামের দুর্ঘটনার পূর্ব পর্যমত্ম তাঁর গ্রন্থভুক্ত 888sport app download apkর 888sport free bet ১৬২ আর গ্রন্থবহির্ভূত মুদ্রিত-প্রকাশিত 888sport app download apkর 888sport free bet সাকল্যে শ’ দু-একের মতো। অসংখ্য 888sport app download apkর খাতায় হাজার 888sport app download apk রেখে গেছেন জীবনানন্দ দাশ – এরকম সন্দেহ করার কারণ তেমন ছিল না। তিনি যে 888sport alternative link বা ছোটগল্প লিখে যাচ্ছেন নিয়মিত, সে-হদিসটি পর্যমত্ম জানা ছিল না কারো। আর যে-মানুষটি শত-শত রম্নলটানা এক্সারসাইজ খাতা
খুঁজে-খুঁজে পড়ে-পড়ে, ভারী পাওয়ারের চশমায় না কুলোলে আতশ কাঁচের সাহায্য নিয়ে, জীবনানন্দের জড়ানো অনতিস্পষ্ট হসস্তাক্ষরের প্রতিরোধ উপেক্ষা করে অগণিত অপ্রকাশিত 888sport app download apk, গল্প, 888sport alternative linkের পাঠোদ্ধার করে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করে যাচ্ছিলেন তিনি ভূমেন্দ্র গুহ ছাড়া আর কে।
পঞ্চাশের দশকের শুরম্নতে নিজেদের 888sport live footballের ছোটকাগজ ময়ূখের জন্য 888sport app download apk সংগ্রহ করতে গিয়ে জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে যে পরিচয় হয়েছিল তারই সূত্র ধরে কবির মৃত্যুপরবর্তী সময়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে ধরতে গেলে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই গড়ে উঠেছিল তাঁর। কার্যত জীবনানন্দের প্রকাশিত-অপ্রকাশিত রচনাসংবলিত ট্রাঙ্কভর্তি অসংখ্য লেখার খাতা তাঁরই অধিকারে সংরক্ষিত ছিল দীর্ঘকাল। সুসংরক্ষিত ছিল। সেগুলোর অধিকাংশ পাঠোদ্ধার করে তিনি প্রকাশযোগ্য পা-ুলিপি প্রস্ত্তত করে দিয়েছিলেন। হয়তো অনেক জীবনানন্দ অনুরাগীরই অজানা যে, বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় কাব্য রূপসী বাংলা, জীবনানন্দের সপ্তম কাব্যসংকলন বেলা অবেলা কালবেলা, তাঁর প্রথম 888sport liveসংকলন 888sport app download apkর কথা এবং সর্বপ্রথম প্রকাশিত 888sport alternative link মাল্যবানের পা-ুলিপি সবই ভূমেন্দ্র গুহর হাতে তৈরি। দেবেশ রায়ের অবদান কোনো অংশে খাটো না করেই বলা যায়, প্রতিক্ষণ পাবলিকেশনস ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ১২ খ–র জীবনানন্দ সমগ্র প্রকাশ শুরম্ন করেছিল – ওটিরও ভিত্তি, বহুলাংশে, ১৯৬৮ তক ভূমেন্দ্র গুহেরই কপি করা বিবিধ পা-ুলিপি। অপ্রকাশিত 888sport app download apkর সংকলন হে প্রেম তোমাকে ভেবে ভেবে,
ছায়া-আবছায়া, 888sport alternative link সফলতা-নিষ্ফলতা এবং ২০১২ সালে প্রকাশিত অপ্রকাশিত শেষ ১৪টি গল্প ও ২টি 888sport alternative link ইত্যাদিরও পশ্চাৎ কারিগর তিনি। ভূমেন্দ্র গুহ কেবল লেখার খাতা থেকে মুদ্রণযোগ্য পা-ুলিপিই প্রস্ত্তত করেননি, তিনি জীবনানন্দের এত-এত লেখার খাতাকে চির অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন; ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যমত্ম লেখার খাতাগুলো সযত্নে আগলে রেখেছিলেন নিজের ঠানে যতদিন না চাকরিসূত্রে কলকাতার বাইরে চলে যাওয়ার ডাক এসেছিল।
বার্ধক্যে উপনীত ভূমেন্দ্র গুহ জ্বরা, ব্যাধি ও আর্থিক অসংগতি অগ্রাহ্য করে মৃত্যুর পূর্ব পর্যমত্ম জীবনানন্দের লেখালেখির খাতাগুলো পড়ে-পড়ে প্রকাশযোগ্য পা-ুলিপি তথা ‘প্রেসকপি’ প্রণয়নে ব্যসত্ম ছিলেন। কালি ও কলমের সম্পাদক আবুল হাসনাতের অধ্যবসায়ী প্ররোচনায় খুব খেটেখুটে জীবনানন্দের 888sport app download apkর মূলানুগ পাঠের একটা ঢাউস সংকলন করে দিতে পেরেছিলেন যদিও, ইতিমধ্যে সেটি প্রকাশিতও হয়ে গেছে 888sport app থেকে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে, কিন্তু দিনলিপির খাতাগুলো সম্পূর্ণাংশে পাঠোদ্ধারের আগেই তাঁকে চলে যেত হলো, ২০১৫-এর ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখ রোববার প্রত্যুষে, ঘুমের ভেতর, চিরকালের মতো – শরীরের যন্ত্রপাতিগুলো কোনো শর্তেই আর কাজ করতে চাইল না। ফোনটা বাজছিল অনেক দিন থেকেই, খুব দূরের কোনো ফোন, ক্রমাগত বেজে যাচ্ছিল। তিনি শুনতে পেয়েছিলেন ঠিকই। এখনই শ্মশানের নিকটের নদীর কাছে যেতে তাঁর আপত্তি ছিল বলে মনে হয় না; হাতের কাজটুকু আর শেষ করা হলো না, নিছক এই একটুখানি খেদ হয়তো ছিল।
দুই
‘তুমি আমাকে প্রেমের কথা বলবে, আমি কামনা করতে থাকি, এবং গোপন অপরাধে নিঃশেষিত হয়ে যাই। পরিবর্তে তোমার দেবীর মতো দু’টি হাত আমার উদ্বুদ্ধ শরীরটিকে খুঁজে নেয়, আমি দেখি। তুমি তোমার অনাগত একমাত্র সমত্মানটির কথা গভীর উদ্বেগের ভিতর উচ্চারণ করো। তার জন্য পূজাবেদীটির সর্বাঙ্গে ধান রাখো, ফুল রাখো, বিল্বপত্র রাখো, কদলীখ- রাখো, ততোধিক রাখো প্রচুর নবীন দূর্বাঘাসের আচ্ছাদন, যাতে আমি তোমার তৃণাসত্মীর্ণ মৌল বেদীটিকে পদ্মপাতার ভঙ্গিমায় ঠিক চিনে নিতে পারি। তুমি আমার জন্য সমুদ্রমন্থনের আনুষঙ্গিক বিষপানের 888sport sign up bonus পুনর্জীবিত ক’রে তোলো।’
ওপরের অনুচ্ছেদটি কোনো চিঠির অংশবিশেষ নয়, কোনো গল্প বা 888sport alternative linkের সংলাপও নয়, এটি ভূমেন্দ্র গুহের কাব্যের একটি অংশ, শ্রেষ্ঠ 888sport app download apkর ৩৫ নম্বর 888sport app download apk। এভাবেই পরিণত বয়সে টানা গদ্যের কাঠামো বেছে নিয়েছিলেন ভূমেন্দ্র গুহ 888sport app download apk রচনার জন্য। ভূমেন্দ্র গুহ তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলোর নাম এরকম রেখেছিলেন : যম, ঋতুচক্র, পিতামহ, উত্তরপুরম্নষ, এই সব দিনাতিপাত, এই মাত্র, ভালো থাকুন, ঢের দিন বেঁচে থাকা হল, এককালের বসতবাড়িটি, বেলা-শেষের
অতি-কথন ও অমত্ম-888sport app download apk। এছাড়া তিনি ২০০৫-এ প্রকাশ করে গেছেন শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk। ২০১৫-এ তাঁর প্রয়াণের কিছু আগে রাহুল পুরকায়স্থের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে 888sport app download apkসমগ্র – দুখ– – প্রচ্ছদনাম ভূমেন্দ্র গুহ’র 888sport app download apk। শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk তাঁকে এনে দিয়েছিল রবীন্দ্র 888sport app download bd, ২০০৫ সালে ।
তাঁর পদ্য লেখার শুরম্ন উত্তর-কৈশোরে, যদিওবা সঞ্জয় ভট্টাচার্যের পূর্বাশা পত্রিকায় ১৯৫২ সালের মাঝামাঝি একটি 888sport app download apk মুদ্রণের মধ্য দিয়ে তাঁর কবিজীবনের অভিষেক হয়েছিল মনে করতেন কবি ভূমেন্দ্র গুহ। পঞ্চাশ দশকের শুরম্নতে তাঁর 888sport app download apk লেখার গোড়াপত্তন হলেও প্রথম 888sport app download apk সংকলন যম প্রকাশিত হয়েছিল অনেক পরে, ১৯৯৪-এ। এবম্বিধ দীর্ঘ ব্যবধান যে-কারো পক্ষে কৌতূহলোদ্দীপক। শ্রেষ্ঠ 888sport app download apkর 888sport app download apkগুলোর রচনাকাল উলেস্নখ করা হয়েছে এভাবে : ১৯৫৫-৫৮ খ্রিষ্টাব্দ এবং ১৯৯০-২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ। ২০০৫ পর্যমত্ম এই কালপরিধিতেই তিনি 888sport app download apk লেখায় সক্রিয় থেকেছেন এমতরূপ অনুমান করা চলে। অর্থাৎ ১৯৫৯ থেকে ১৯৮৯ – এই টানা তিরিশ বছর – হয়তো ব্যতিক্রম কিছু ছিল, কেননা দেখা যাচ্ছে শ্রেষ্ঠ 888sport app download apkয় ষাট দশকের 888sport app download apkও এক-আধটি আছে – ভূমেন্দ্র গুহ 888sport app download apkর টেবিল থেকে নিজেকে দূরস্থ রেখেছিলেন। তাঁর জীবিকাজীবনের সঙ্গে এ-সময়টি মিলিয়ে নেওয়া যায়। এই দীর্ঘ বিরতি তাঁর আদি কবিসত্তাকে অক্ষুণ্ণ রেখেছিল কতটুকু সে-প্রশ্ন অসংগত হবে না। তবে ইত্যবসরে তিনি একটি কাব্যভাষা খুঁজে পেয়েছিলেন যাকে উত্তর-জীবনানন্দীয় কাব্যভাষা বলে চিহ্নিত করা যায়। অন্যদিকে বিষয়বস্ত্তর নির্বাচনে তিনি উত্তর-জীবনানন্দীয় কবিদের মতোই নিবিড় আত্মজৈবনিকতার মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন স্বসিত্মময় আরাধনা :
ভেবে দেখেছি কী হতে চেয়েছিলুম, কী হতে পারতুম, কী হতে পারতুম না,
অর্থাৎ আকাঙক্ষা, আকাঙক্ষাতেই বানিয়ে নিচ্ছিলুম নিজেকে, নৌকার দাঁড়ে
অভিভাবিকা ছিল… তার শীতল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নামে-নামে
যে-সব ডাকনাম…
পুড়ে-যাওয়া মরম্নভূমিটি বুদ্বুদে-বুদ্বুদে ষোলো-আনা গর্ভবতী হবে;
তখনও সে থাকবে সেখানে সেই জলের মতন যে অপরাধী পাপী কিন্তু অচ্ছোদ।
যাঁরা জীবনানন্দের খোঁজখবর রাখেন তাঁরা জানেন, নববইয়ের দশক থেকে শুরম্ন করে জীবনানন্দ আর ভূমেন্দ্র গুহ নাম দুটি অবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অনতিতরম্নণ ভূমেন্দ্র গুহ সেই পঞ্চাশের শুরম্নতেই জীবনানন্দকে খুব বড় কবি বলে মান্য করেছিলেন। হয়তো জীবনানন্দের কাব্যভাষা তাঁকে কিছুটা আকর্ষণও করে থাকবে। তাঁর নিজের কোনো-কোনো 888sport app download apkয় সে প্রমাণ তো আছে; কোনোটির কাঠামোতে প্রত্যক্ষ ছিল জীবনানন্দের প্রগাঢ় ছায়াপাত :
চোখে যে গড়াবে জল, সে-রকম সাহসিক নই,
সেই চোখ যা এখন বিসত্মীর্ণ আকাশ খুঁজে দেখে :
নক্ষত্রেরা আছে কি না মৃতপ্রায় দিকের সন্ধানে;
আরেকটু হেঁটে গেলে ভোর হবে, প্রথম প্রত্যুষা;
জনৈক মৃতের ছবি দেয়ালে আয়নায় রাখা হবে।
মধ্য রাত পার হলে দুইটি বছর, মানে কাল
দুই দিকে চ’লে যাচ্ছে, যাচ্ছে আমাদের প্রেম যেন;
পিঁপড়ের মতন পায়ে দুঃখ বাসা বাঁধছে হৃদয়ে।
হেঁটে যাচ্ছি – অন্ধকার, অন্ধকার পথের দু’পাশে
যে সব শ্মশান আছে শুভ্রতায় ভুলে যাচ্ছি তা-ও;
এখন বিকেল, আর সামান্য প্রভেদ মেনে নিলে
অন্ধকার মাঝামাঝি দীর্ঘশ্বাসটুকু :
যা গিয়েছে তার থেকে রাত্রিটিকে খুলে নিয়ে এসে
দেখেছি যে, এই মাত্র কব্জির নিকটে রক্ত নাচে; –
অবশেষে এইটুকু বিশ্বাস জমাই ইহকালে; –
সে-সময় জানো তুমি যদি না অসত্য ব’লে থাকো।
পরিণত বয়সে যখন পুনর্বার 888sport app download apkর কলম তুলে নিয়েছিলেন তখন চেনাপরিচিত সকল কাঠামোর চেয়ে টানা গদ্যই তাকে বেশি স্বসিত্ম দিয়েছিল। ততদিনে তাঁর চিমত্মাচেতনার জগতেও অনেক পরিবর্তন এসে গিয়েছিল। নিজের দিকে নিজের গভীরে নিজের জীবনের খানাখন্দে বারবার দৃষ্টিপাত করে জীবনের হিসাবটি দেখে নেওয়ার একটা প্রেষণা তাঁকে ধাওয়া করে ফিরছিল। তাঁর কাছে প্রত্যক্ষ হয়েছিল : ‘আলো এসে পড়েছে কাগজে। কাচ গেঁথে গেছে নখে-নখে। অক্ষরেও রক্তপাত হয়। কেননা প্রগাঢ় রাত্রি সেই কবে নম্র হয়ে পৃথিবী হয়েছে। মাঠে-মাঠে রমণীরা আহত যোনীর রক্তে গোধূম ধুয়েছে।’ তাঁর মনে হয়েছিল : ‘আমি সেই অনূঢ়া মায়ের চরণতলে এখন বসে আছি। তার অপ্রার্থনার প্রথম সমত্মানটি সে আমাকে দেবে।’ তিনি দেখতে পেয়েছিলেন : ‘আমাদের এই অমিত্মম কলকাতা থেকে কয়েক ঘণ্টা অদূরে গেলেই/ সে-রকম দু’একটি অকৃত্রিম চাল-বেচালের জনসঙ্ঘ রয়ে গেছে এখনও/ যারা তাদের প্রয়াত প্রপিতামহর সিঁদুরসাজানো অমলিন শব/ খুঁজে বেড়াচ্ছে।’ তাঁর মনে হয়েছিল, ‘নিরাময়ের একটা ছক স্বাভাবিক ভাবেই প্রকৃতির আছে,/ তাকে খোঁড়া ক’রে রাখা হয়েছে মাঠে-ময়দানে-জঙ্গলে,/ কয়লাখনির খাদানে, সমুদ্রের চরে – অসম্ভব সব প্রামেত্ম -’।
২০০৫-এ প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk আটটি গ্রন্থ থেকে নির্বাচিত ১৩৫টি 888sport app download apkর সংকলন, কোনোটিরই শিরোনাম নেই যেন সবগুলো মিলেই একটিমাত্র 888sport app download apkর একাত্মা শরীর। স্বজীবনের অভিজ্ঞতায় বহুলাংশে জারিত হয়েছে তাঁর 888sport app download apkভাবনা :
অভিশপ্ত হয়ে আছি সারাটা শরীরে।
এ-শরীর অভিশপ্ত, রন্ধ্রে-রন্ধ্রে বুঝে নিতে থাকি।
রমণীর শরীরের সুকৃপণ রন্ধ্র থেকে ঊর্ধ্বপাদ-অধোমু- হয়ে
এক বার বেরোতে গিয়ে ঢের পাপ করা গেছে, যেহেতু সম্যক কষ্ট, যেহেতু সমূহ
রক্তপাত ফলিয়ে তুলেছি, রমণীটি ছোট হোক, বড় হোক, যে-রকমই হোক;
ছিলুম যথেষ্ট নোংরা, ঝিল বিল ম’রে যাওয়া নদীর বিশাল মোহনা থেকে উঠে।
এবং দ্বিতীয় বার সেই গর্ভপ্রদেশের অন্ধকার বিছানায় রক্তের লোমে-অনুলোমে
নিজেকে নির্দিষ্ট দেখে : অসম সংগ্রাম ফের পৃথিবীতে পা রাখতে, হেরে যেতে থাকা
সইতে ফের পায়ে-পায়ে হেঁটে যেতে পৃথিবীর রাসত্মার উপরে – নিঃস্ব রক্তপাতে –
যদিও এ-বার তা অন্য চেহারায়। তিন-বারের-বার ঠিক শ্মশানের নিকটের নদীর
জল, তিল, ভাঙা কুঁজো, ধোঁয়ানো চিতার কাঠ, শ্মশানবন্ধুরা, দিশি মদ,
অবিকল জলের মতোন জেগে ওঠা – রক্ত নয় – সাদা জল আনকোরা বাঁশের ডগায়
অবিরল – সাদায়-কালোয় 888sport app মাথা ফেটে গেলে।
অতএব কালাকেষ্ট যে-পালা গাইছে, তা মাথুর, ঠিক চ’লে যাওয়া নয়,
স্বর জলের উপরে
ভেসে যাচ্ছে মৃদুমন্দ সেই মোহনার জলে, যা এখন জ্যামত্ম হয়ে উঠেছে সহসা
অভিশপ্ত শরীরের অভিশাপ শোক হচ্ছে আগুনের পবিত্র নির্মোকে।
দীর্ঘ উদ্ধৃতি দেওয়ার যুক্তি এই যে, ভূমেন্দ্র গুহর 888sport app download apkর সঙ্গে সম্যক পরিচয় নেই অনেকের। একজন কবির মনোজগৎটার সুলুক-সন্ধান পেতে হলে তাঁর 888sport app download apkর অন্ধিসন্ধিতে চোখ ফেলার বিকল্প তো নেই।
888sport app download apkর জগৎ থেকে দীর্ঘকাল নিজেকে সরিয়ে রাখলেও তাঁর 888sport app download apkর 888sport free bet নেহায়েত কম নয় – যদিও একই সময়ের প্রশসত্ম মার্জিনে অনেক গবেষণা, দীর্ঘ ভূমিকা, 888sport app download apk latest version, পা-ুলিপি কপি করা আর সম্পাদনার কাজও চলছিল নিবিড় মগ্নতায়। রাহুল পুরকায়স্থের সম্পাদনায় প্রকাশিত দুই খ- 888sport app download apk সমগ্রে ৫৩৩টি 888sport app download apk অমত্মর্ভুক্ত হয়েছে; সেই সঙ্গে কবি গৌতম বসুর সঙ্গে ভূমেন্দ্র গুহের দীর্ঘ সাক্ষাৎকার এবং কবি বীতশোক ভট্টাচার্যের একটি সমালোচনা 888sport live, ২০১২তে নন্দন পত্রিকায় প্রকাশিত ভূমেন্দ্র গুহের আত্মজৈবনিক নিবন্ধ ‘জীবনের সঙ্গে, মৃত্যুর সঙ্গে’ এবং কৃত্তিবাস পত্রিকায় প্রকাশিত রণজিৎ দাশ গৃহীত আরো একটি সাক্ষাৎকার। কালে এ-গ্রন্থটি বাংলা 888sport app download apkর ইতিহাসে একটি উলেস্নখযোগ্য কীর্তি পরিগণিত হবে অনুমান হয়। এখানে বলে রাখা যেতে পারে, ভূমেন্দ্র গুহ স্যাফো, আর্তুর র্যাঁবো এবং মার্কিন কবি অ্যাড্রিয়েনে রিচের 888sport app download apkও বেশ কিছু 888sport app download apk latest version করে গেছেন; সেগুলোও অমত্মর্ভুক্ত হয়েছে রাহুল পুরকায়স্থ-সম্পাদিত সংকলন গ্রন্থে। আর্তুর র্যাঁবোর ‘প্রেম মরম্নভূমি’ 888sport app download apkর গদ্যকাঠামো ভূমেন্দ্র গুহর 888sport app download apkর গদ্যকাঠামোরই পূর্বসূরি সন্দেহ নেই :
এই সব লেখার জনক এক জন অল্প বয়েসি, খুবই অল্প বয়েসি পুরম্নষ-মানুষ। সে এলোমেলোভাবে যেখানে-সেখানে বেড়ে উঠেছে; তার মা ছিল না; স্বদেশ ছিল না; যে-সব জিনিস সাধারণভাবে সকলেই জানে, তাদের প্রতি তার ছিল প্রবল অনীহা; সমসত্ম রকম আত্মিক সাহসিকতা থেকে সে ভয়ে-ভয়ে দূরে থেকেছে; তার চার-পাশের অনেক অনেক হতভাগ্য তরম্নণের মতনই। কিন্তু, তাকে এতই আকণ্ঠ দুশ্চিমত্মায় ও অস্থিরতায় ভুগতে হয়েছে যে, সে তার নিজের নিয়তিকে এক ভয়াবহ ও অমিত্মম সৌন্দর্যের দিকে নিয়ে যাওয়ার মতো ক’রে ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে ঠেলে নিয়ে গেছে; তা ছাড়া, তার আর-কিছুই করার ছিল না। – আর্তুর র্যাঁবো (‘প্রেম মরম্নভূমি’)
ভূমেন্দ্র গুহ মনে করতেন, একজন কবি বা লেখক সারাজীবন একটি বিষয় নিয়েই লেখেন, নানান দিক থেকে তাকে দেখতে চান, খুঁজতে চান। তাঁর লেখালিখিও মূলত একটি বিষয়কে ঘিরেই, একটি চক্রকে ঘিরেই – জন্ম, যৌনতা, মৃত্যুর একটি চক্র। 888sport app download apkয় যৌনতার এই প্রাধান্য সমকালীন খুব কম কবিকেই স্বীকার করে নিতে দেখা যায়। পাঠক পড়বেন, ‘এক জন বুড়ো মানুষের দারম্নণ একটা ভয় ছিল : ভয়টার দু’রকম মুখ : তিনি কি আর যথেষ্ট পুরম্নষ নন এখন? তিনি কি বাঁজা হয়ে পড়েছেন?’ ফ্রয়েড কথিত কাস্ট্রেশন সিন্ড্রোমের মতোই – সক্ষমতা হারানো – এক বাসত্মব ও পরিব্যাপ্ত ভীতি যা নিঃসংকোচে 888sport app download apkর মুখ্য বিবেচনা হিসেবে ধারণ করেছেন ভূমেন্দ্র গুহ। ভূমেন্দ্র গুহ লক্ষ করেন, পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সেও প্রাক্তন যুবক বারবার আয়নায় সামনে দাঁড়ায়, তাঁর –
দু জানুর ফাঁকে গলে যাচ্ছে শীত সারাৎসার
অনুর্বর গোল আলো, ত্রি-কোণ আশ্রিত মাটি অনুর্বর নাকি।
সেই শত্রম্নতায় নষ্ট একামত্ম সিদ্ধ শিশ্নটিও তার।
শ্রেষ্ঠ 888sport app download apkর 888sport app download apkকারে লিখিত ভূমিকাতে পাঠক যে-রকম পড়বেন ‘লিঙ্গত্বক সরে গেলে যে রকম ভয় এসে আহ্লাদে বিস্ময়ে সব সম্ভাবনা উপ্ত করেছিল’-এর মতো অভূতপূর্ব পঙ্ক্তি, সে-রকম সূক্ষ্ম অভিজ্ঞতার বয়ান, অনেক অশ্রম্নতপূর্ব উক্তি রয়েছে তাঁর 888sport app download apkর অবয়বে :
বাইরে এতো বড় সমুদ্র রয়েছে যা এর আগে আমরা দেখিনি
সেই সমুদ্রের ভয়ংকর ফেনা
গর্ভবতী মেয়েমানুষের সমত্মান বিচ্ছুরিত হবার সময়ের
মুখের অচৈতন্য মরণোন্মুখ গাঁজলার চেয়েও ভয়ংকর…
অন্যত্র পাঠক পড়বেন :
তরম্নণীটি ফিরে আসছে নুয়ে
…ঘুমের ভিতরে যাচ্ছে, চলে যাচ্ছে অন্ধকারে সিক্ত মাতৃগুহার সন্ধানে।
নিজের শরীর সব আমিষে জারিত হচ্ছে, শিশুকে ভূমিষ্ঠ করবে পর্যায়ক্রমে।
যে-যৌনতার কথা ভূমেন্দ্র গুহ জন্ম-যৌনতা-মৃত্যুর সমবায়ে গঠিত জীবনের কেন্দ্র হিসেবে উলেস্নখ করেন, সেটি যাচ্ছে – আশ্চর্যজনক হলেও – অনেকাংশে নিছকই প্রাজননিক যৌনতা। পাঠক লক্ষ্য করবেন, 888sport promo codeর সমত্মান ধারণ ও প্রসবের কথা তাঁর 888sport app download apkয় বারবার উত্থাপিত হয়েছে বিবিধ অনুষঙ্গে।
তিন
তাঁর লেখা জীবনানন্দ ও সঞ্জয় ভট্টাচার্য এবং দূর সমুদ্রের বেলা ভূমিগুলি নামীয় দুটি বইয়ের উপরিঢাকনার ভাষ্য এবং 888sport app সূত্র থেকে পাঠক জানবেন যে, তাঁর পোশাকি প্রচলিত নাম ছিল ড. বি.এন. গুহরায়, আরো একটু খুলে বললে ভূমেন্দ্রনাথ গুহরায়। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে আগস্ট মাসের ২ তারিখ ভারতের মধ্য প্রদেশে বিলাসপুরে তাঁর জন্ম হয়েছিল। মজার তথ্য হলো, জীবনানন্দেরই মতো পৈতৃক সূত্রে তিনি বরিশালেরই মানুষ। পিতামহ সতীশচন্দ্র গুহরায়ের আদি নিবাস ছিল অবিভক্ত ভারতে বরিশাল জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার মৈষাণী গ্রামে। তিনি ছিলেন মুনিনাগ গ্রামের জমিদারপুত্র, কিন্তু ভাগ্যের ফেরে সপরিবারচ্যুত হয়ে জেলেসমাজের একজন হয়ে গিয়েছিলেন। ভূমেন্দ্র গুহর বাবা নগেন্দ্রনাথ গুহরায় রেল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বদলির চাকরি, ফলে নানা স্কুলে পড়তে হয়েছে ভূমেন্দ্র গুহকে, তবে ম্যাট্রিক পাশ করেছেন কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে। বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইএসসি করার পর ডাক্তারি পড়েছিলেন ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে। ১৯৫৭ সালে ডাক্তারি পাশের পর তিনি শল্যচিকিৎসায় মাস্টার্স করেছেন; পরে বিশেষভাবে বক্ষদেশের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, হৃৎপি- ও ভাসকুলার সার্জারিতে এমসি-এইচ। ষাটের দশকে ভারতের প্রথম ওপেনহার্ট সার্জারি হয়েছিল ১৯৬২তে; সেদিন অপারেশন থিয়েটারে শিক্ষক প্রফেসর ডা. অজিত কুমার বসুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তরম্নণ শল্যবিদ বি.এন. গুহরায়। এরপর এ-বিষয়ে তিনি অনেক গবেষণা করেছেন; তাঁর দেড়শোরও বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে আমত্মর্জাতিক জার্নালে। যুক্তভাবে একটি ডাক্তারি বইও প্রকাশ করেছিলেন, বেশ কিছু বহুলেখক গ্রন্থের জন্য লিখেছেন। শেষ জীবনে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের থোরাসিক সার্জারি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন চোদ্দো বছর। লিভার সিরোসিস রোগটি অপারেশন করে সারানোর পদ্ধতিটিও তাঁরই আবিষ্কার : এটি বিশ্বব্যাপী চিকিৎসাশাস্ত্রে ‘গুহরায়-বাসু শান্ট অপারেশন’ নামে খ্যাত। চাকরিজীবনে যথেষ্টই ব্যসত্ম ছিলেন ড. বি.এন. গুহরায়।
আজকাল পত্রিকায় বাহারউদ্দীন লিখেছেন : ‘১৯৫৯ থেকে ১৯৯৪ কেবল ডাক্তারি করে গেছেন ভূমেন্দ্র গুহ, দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে রেহাই দিয়েছেন অসংখ্য রোগীকে, প্রয়োজনে নিজের টাকায় ওষুধ কিনে দিয়েছেন, কিন্তু নিকটতম বন্ধুদেরও জানার সুযোগ দেননি। চিকিৎসা আর উপার্জনকে কখনো একই দৃষ্টিতে দেখেননি। রোগ নিরাময় ছিল তাঁর পেশা আর নেশা, আর এ-ব্যাপারে এতটাই নির্মোহ থাকতে পারতেন যে, যতদিন মেডিক্যালে অধ্যাপনা আর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চাকরি করতে হয়েছে, ততদিন প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেননি। অবসরগ্রহণের পরও বাড়তি আয়ের মোহ থেকে দূরে, অনেক দূরে সরিয়ে রেখেছেন নিজেকে। সল্টলেকের করম্নণাময়ীতে ছোট্ট ফ্ল্যাট, 888sport free bet login আর চলাফেরার জন্য দুটি পা তাঁর অবলম্বন।’
কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘উদাসীন এক ডাক্তার’ লেখাটিতে এক দীন-হীন অসহায় রোগিণীর অভিজ্ঞতা তুলে এনেছেন এই ভাবে : ‘জটিল একটা ব্যথা হয়েছিল পেটে, যন্ত্রণায় অস্থির, কাছাকাছি কোনো ডাক্তারের চিকিৎসায় কাজ হচ্ছে না কিছু, শেষ পর্যমত্ম তাঁকে নিয়ে ভর্তি করে দেওয়া হলো মেডিক্যাল কলেজে। একজন ডাক্তার সেখানে দেখে বললেন তখনই অপারেশন করতে হবে। ভয় হলো খুব, কিন্তু কী আর করা, করতে তো হবেই। হলোও সেটা। ভালোও কিন্তু হয়ে গেলাম। কী ভালো যে সেই ডাক্তারবাবু। অপারেশনের পর তিন দিন তিন রাত্রি ঠায় বসে রইলেন পাশে। যখন আর ভয় কিছু রইল না, তখন গেলেন বাড়ি। শুধু কি তাই? চলে আসব যখন, বললেন, এখনই হবে না যাওয়া। বাড়ি গিয়ে খাবেন কী? টাকা-পয়সার অবস্থা তো বুঝতেই পারছি। থাকুন এখানে কিছুদিন। অমত্মত একমাস। থেকে গেলাম সেই একমাস। রোজ এসে দেখে যেতেন আর সেইসঙ্গে নিয়ে আসতেন কিছু ফলমূল। তার পরে যেদিন ছুটি দিতে এলেন, হাতে দেখি বড়ো বড়ো দুটো ঠোঙা। কী আছে ওতে? বললেন : নিয়ে যান সঙ্গে, বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত খাবেন। ঠিকমতো না খেলে কিন্তু আবার অপারেশন করতে হবে, তখন কিন্তু আর বাঁচানো যাবে না। চলে এলাম সেসব সঙ্গে নিয়ে। একটা ঠোঙায় অনেক ফল, অন্যটায় কয়েকটা হরলিক্সের শিশি। দেবতুল্য মানুষ না? সেই ডাক্তারবাবুর দয়াতেই তো বেঁচেবর্তে আছি এতদিন। এখন আমি রোগা কিন্তু অসুখ করেনি আর।’
এরকম কঠিন চিকিৎসক ভূমেন্দ্র গুহের প্রতীতি এই যে,
জীবনানন্দের মধ্যে ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডারে’র সমস্যা ছিল। ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’ এক ধরনের মানসিক সমস্যা, যা একজন মানুষকে একবার আনন্দস্ফূর্তির শীর্ষে পৌঁছে দেয়, পরের বারে ঠেলে দেয় চরম হতাশার পরিত্রাণহীন গভীরে। জীবনানন্দ হয়তো উভয় ক্ষেত্রেই চূড়ামত্ম জায়গাটাতেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। ১৯৪৮ অবধি প্রচুর লিখেছেন তিনি, প্রকাশ করেছেন সামান্য যদিও-বা। অন্যদিকে ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৪ পর্যমত্ম তিনি ধরতে গেলে কিছুই লিখতে পারেননি। জীবনানন্দকে তাঁর মতো নিবিড়ভাবে কে আর জানতো! জীবনানন্দের অমত্মস্থ মনসত্মত্ত্ব অনুধাবনে সাহায্য করেছে তাঁর ডাক্তারি জ্ঞান। জীবনানন্দের ‘ক্যাম্পে’ 888sport app download apkকে তিনি বিচার করেছেন অভাবনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে :
তার পর বন্দুকের শব্দ শুনি
চাঁদের আলোয় ঘাইহরিণী আবার ডাকে
এইখানে প’ড়ে থেকে একা-একা
আমার হৃদয়ে এক অবসাদ জ’মে ওঠে
বন্দুকের শব্দ শুনে-শুনে
হরিণীর ডাক শুনে-শুনে।
ভূমেন্দ্র গুহর মতে, এ পঙ্ক্তি কয়টিতে, আরো আরো 888sport app download apkতে, শক-অভিজ্ঞতার (ংযড়পশ বীঢ়বৎরবহপব) অভিজ্ঞান আছে; উদাহরণ দিয়েছেন তিনি জীবনানন্দের জীবন থেকে। দিলিস্নর রামযশ কলেজে অধ্যাপনা করার সময় জীবনানন্দ রীতিমতো ভয়ে-ভয়ে থাকতেন
‘সি-পি ব্রিগেডে’র ছাত্রদের নিয়ে। এই ছাত্ররা তাঁর ক্লাসে কাড়া-নাকাড়া নিয়ে এসে বাজাত; তিনি বসতে যাচ্ছেন, পেছন থেকে চেয়ার টেনে নিত। এমনকি তিনি কোনো-কোনো সহকর্মীকে ভয় পেতেন। তাঁদের কেউ-কেউ তাঁকে তাঁর কলকাতা থেকে আমদানি-করা স্টেটসম্যান পত্রিকার বোঝা ও তাঁর বদলেয়ারের ফ্লর দু মাল বইটা-সমেত কলেজের মালিক-প্রিন্সিপাল রায়বাহাদুর কেদারনাথের কাছে নিয়ে গিয়ে হাজির করিয়ে দিয়েছেন : দেশদ্রোহিতার ও অশস্নীল 888sport live football পড়ার অপরাধে তাঁর চাকরিটা গিয়েছে, বাকি মাইনেটা না দিয়েই তাঁকে বিদেয় করা হয়েছে, সেটি দাবি করার শক্তি হয়নি জীবনানন্দের। আর বরিশালে ব্রজমোহন কলেজে তাঁর সহকর্মী হেরম্ব চক্রবর্তী ও তাঁর সঙ্গীরা নৌ888sport slot gameের অছিলায় নৌকায় তুলে নিয়ে গিয়ে মাঝ-নদীতে এমন উত্ত্যক্ত করেছেন যে, তাঁকে জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে বাড়ি ফিরতে হয়েছে মাঝরাতে : কলেজের চৌহদ্দিতে সর্বদা তিনি ভয়ে কাঁটা হয়ে থেকেছেন। সাইকিয়াট্রি অনভিপ্রেত আঘাত-ভীতু মানুষদের একটা শ্রেণিকে চেনে : জীবনানন্দও বদলেয়ারের মতো সম্ভাব্য শকগুলিকে পাশ কাটিয়ে যেতে আপ্রাণ চেষ্টা করতেন, তা তাঁর আত্মিক সত্তা অথবা শারীরিক সত্তা যার সাহায্যেই হোক না – ভূমেন্দ্র গুহর সিদ্ধামত্ম।
লাজুক ছিলেন জীবনানন্দ – এই সাধারণ বিশ্বাসটি বাতিল করে দিয়ে ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন, জীবনানন্দ মানুষজন এড়িয়ে চলতেন ঠিকই কিন্তু লাজুক ছিলেন না আদৌ। তিনি উপেক্ষা করতেন মানুষজনের অনাবশ্যক ভিড়। তর্ক করতেন না, বলা যায় তর্ক করে সময় নষ্ট হতে দিতেন না। জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুটা আত্মহত্যা ছিল কি? সে সময় অমত্মত তিনি বেকার ছিলেন না। আর দুহাতে কচি ডাবের বোঝা নিয়ে কেউ আত্মহত্যা করতে যায়? ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন : ‘কলকাতার একশ বছরের ইতিহাসে জীবনানন্দই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ট্রাম দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন। তাঁর ডায়েরির লেখাগুলো পড়লেই বোঝা যায়, তিনি মৃত্যুচিমত্মায় বিপর্যসত্ম ছিলেন খুব; আত্মহত্যার কথা, আত্মহত্যার পদ্ধতি কী হতে পারে এসব ভেবেছিলেন। ট্রাম দুর্ঘটনাটা আত্মহত্যা হলেও হতে পারে। আত্মহত্যাই সে-কথা আমি বলছি না।’
ময়ূখ করতে গিয়েই জীবনানন্দের সঙ্গে পরিচয়। ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন : ‘মোটে একটা 888sport app download apk পেয়েছিলুম। বারবার 888sport app download apk চাইবার সাহস ছিল না। কিন্তু ওর পিছনে পিছনে ঘুরতুম। অনেক সিনেমা-থিয়েটার দেখতেন। সেখানেও হাজির হয়ে যেতুম।’ জীবনানন্দের বিরম্নদ্ধে পস্ন্যাজিয়ারিজমের একটা অভিযোগ দানা বাঁধছিল সে-সময়। অ্যাডগার অ্যালান পোর ‘টু হেলেন’ 888sport app download apkটির সঙ্গে ‘বনলতা সেনে’র বেশ সাযুজ্য আবিষ্কৃত হয়েছিল। ‘হায় চিলে’র সাযুজ্য পাওয়া গিয়েছিল ইয়েটসের ‘ও কারলিউ’র সঙ্গে। আড়ালে-আবডালে কানাঘুষা চলছিল বেশ। সঞ্জয় ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে একসঙ্গে ফেরার পথে একদিন লাজলজ্জার মাথা খেয়ে ঢোক গিলতে-গিলতে জীবনানন্দের কাছে কথাটা পেড়েছিলেন ভূমেন্দ্র গুহ। জীবনানন্দ বলেছিলেন : ‘পস্ন্যাজিয়ারিজমের কথা বলছো?’ খুবই কুণ্ঠার সঙ্গে মাথা নেড়ে হেঁটমু- ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন, ‘আমি না, লোকে বলে।’ কিছুক্ষণ চুপ থেকে জীবনানন্দ বলেছিলেন : ‘তুমি বাংলায় কেন কথা বলো? ছেলেবেলায় তুমি বাঙালি সমাজে বড় হয়ে উঠেছ; অতএব বাংলা ভাষা তোমার জিভে আছে। তুমি যে-সমাজে বাস করো, সে-সমাজের ভাষাও তোমার জিভে চলে আসে। তুমি যদি অ্যাডগার অ্যালান পোর, ইয়েটসের, কিটসের বা এলিয়টের সমাজে বাস করো, তোমার জিভে কী ভাষা আসবে? তাদের ভাষাই চলে আসে জিভে। তাকে পস্ন্যাজিয়ারিজম বলে না।’ জীবনানন্দের এহেন জবাবে সেদিন খুবই স্বসিত্মবোধ করেছিলেন ভূমেন্দ্র গুহ, বড় একটা বোঝা নেমে গিয়েছিল মাথা থেকে।
জীবনানন্দের 888sport app download apkর দুর্বোধ্যতা নিয়ে একটা অভিযোগ চলিস্নশের দশক থেকেই উত্থাপিত হয়ে আসছিল। সবাই যেন ঠেকে গিয়েছিল বিশেষ করে ‘গোধূলি সন্ধির নৃত্য’ 888sport app download apkটির কাছে। নানা কোণে বিচার-বিশেস্নষণ করেও কেউ আর খুব নিশ্চিতভাবে 888sport app download apkটির অর্থ করে উঠতে পারছিল না। এ প্রসঙ্গে ভূমেন্দ্র গুহ আক্ষেপের সুরে বলেছিলেন : ১৯৩৭ সালে বরিশালে বসে জীবনানন্দ দাশ ‘গোধূলি সন্ধির নৃত্য’ লিখেছিলেন, ১৯৩৭-এ জাপান চীন আক্রমণ করেছিল – এ-কথাটা কারম্নর মনে পড়লো না!… চিনের শহরে শহরে ম্যাসাকার চালিয়েছিল জাপান; যেমন ম্যাসাকার ১৯৭১-এ 888sport appsের স্বাধীনতা যুদ্ধে হয়েছিল। নানকিং শহরে কোনো জ্যামত্ম মানুষ ছিল না।… গোধূলি সন্ধি – দিন যাচ্ছে, রাত আসছে। তখনই প্রশ্ন জেগেছিল : সন্ধি কেন? দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে, রাত আসছে। দু পক্ষ আছে। দুপক্ষ যখন নাচে তখন নাচ তো আর নাচ থাকে না, সে হয় যুদ্ধ। তারপর আছে ‘বিনষ্ট হতেছে সাংহাই’ : এ গোধূলি বরিশালের গোধূলি নয়, কলকাতার গোধূলি নয় – হলে সাংহাইয়ের উলেস্নখ হতো না। জীবনানন্দ বুঝে গিয়েছিলেন চীন-জাপান যুদ্ধ মানেই সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারের নান্দীরোল, সামনে সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার আসছে। ১৯৩৯-এ শুরম্ন হয়ে গেল সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার, চললো ’৪৫ পর্যমত্ম। … ‘গোধূলি সন্ধির নৃত্য’ রাজনীতির 888sport app download apk। 888sport promo code অনুষঙ্গ আছে বটে কিন্তু যে কোনো চালাক কবি জানেন, 888sport promo code অনুষঙ্গ না থাকলে 888sport app download apkটা জমবে না। কিন্তু সে-888sport promo codeর মাথায় ‘নরকের মেঘ’, মনে রাখতে হবে চুলের ভেতর তাদের ‘নরকের মেঘ’। … ‘গোধূলি সন্ধির নৃত্য’ 888sport app download apkয় মহাসমরের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে : – এইখানে জীবনানন্দ দাশ; সময় নিয়ে তিনি এতটাই সচেতন, স্থান নিয়েও। সেই অজগাঁয়ে বরিশালে থেকেও কিন্তু বিশ্বজোড়া সময়ের অশুভ স্পন্দন ঠিকই অাঁচ করতে পেরেছিলেন। আর কলকাতার বাবুরা তখন ইলিশ মাছ ভাজা খাচ্ছেন।
জীবনানন্দের কোন্ 888sport app download apkটি তাঁর বিশেষভাবে প্রিয় – এ-প্রশ্ন প্রসঙ্গে ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন : একজন কবির সারাজীবনের জন্য একটি ‘বোধ’ই যথেষ্ট। ওই ‘বোধ’ লেখার পর 888sport appsের 888sport app download apkর সংজ্ঞাটাই পালটে গেল : ‘আলো-অন্ধকার যাই – মাথার ভিতরে/ স্বপ্ন নয়, – কোন্ এক বোধ কাজ করে!’’ – ‘স্বপ্ন নয়, – শামিত্ম নয়, – কোন্ এক বোধ কাজ করে/ মাথার ভিতরে!’ – ওই বোধ উপেক্ষা করা সম্ভব হয় না – ‘মড়ার খুলির মতো ধ’রে/ আছাড় মারিতে চাই।’ – পারি না। ওই বোধ জীবমত্ম মাথার মতো ঘোরে, মাথার চারপাশে, চোখের চারপাশে, বুকের চারপাশে। – ‘আমি চলি, সাথে-সাথে সেও চলে আসে।’
চার
এক নিবন্ধে ভূমেন্দ্র গুহ লিখেছিলেন, নিজে খুব উদ্যোগী হয়ে জীবনানন্দের পা-ুলিপির পাঠোদ্ধারে প্রবৃত্ত হননি। তাহলে কীভাবে দায়িত্বটা আপনার কাঁধে চেপে গিয়েছিল? এ-প্রশ্নের উত্তরে ভূমেন্দ্র গুহ জানিয়েছিলেন : ‘২২ অক্টোবর রাতে জীবনানন্দ মারা গেলেন শম্ভুনাথ প–ত হাসপাতালে, শেষকৃত্য হয়ে গেল পরদিন, পুরো পরিবার চলে গেল মেজদা অশোকানন্দের শ্বশুরবাড়িতে – ত্রিকোণ পার্কের কাছে; জীবনানন্দের সবকিছু পড়ে থাকলো ল্যান্সডাউন রোডের বাড়িতে। আমার ওপরই দায়িত্বটা পড়লো জীবনানন্দের জিনিসপত্তরগুলো নিয়ে আসবার। পাঁচ-ছয়টা ট্রাঙ্ক, দু-তিনটি বইতে ঠাসা। তিনটিতে লেখার খাতা বেশ সাজিয়ে রাখা। পত্রিকার সম্পাদকদের কাছ থেকে মেজদা অশোকানন্দের কাছে অপ্রকাশিত লেখার তাগাদা আসে, তিনি আমাকে ডেকে পাঠান; ত্রিকোণ পার্কের বাসায় গিয়ে আমি ট্রাঙ্ক খুলে মেঝেতে উবু হয়ে বসে কপি করি। বেশ উত্তেজনা নিয়ে কাজটা করি। জীবনানন্দের লেখার ধাঁচটা চিনে ফেলার পর কাজটা আমার জন্য খুব কঠিন আর ছিল না। … মেজদা, রিতাদি (জীবনানন্দের ছোট বোন) এঁরা খুব সেণহ করতেন। এভাবে চললো কয়েক বছর। ১৯৫৭-এ ডাক্তারি পাশ করে হাসপাতালের কাজে ভারী জড়িয়ে পড়লুম। মেজদার বাসা গিয়ে কাজ করা ভারী মুশকিল। অথচ লেখার খাতা ঘেঁটে কপি তো করতে হবে, সম্পাদক-প্রকাশক মশাইদের আগ্রহ বাড়ছিল, ট্রাঙ্কগুলো আমার বাসায় নিয়ে আসতে হলো। সেটা ১৯৫৮। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ পর্যমত্ম আমার কাছেই ছিল। বের হলো ধূসর পা-লিপির বর্ধিত সংস্করণ, বেলা অবেলা কালবেলা, গদ্যের সংকলন 888sport app download apkর কথা, রূপসী বাংলা। দুবার কপি করতে হয়েছিল মাল্যবান 888sport alternative linkটি। কেন দুবার কপি করতে হলো
সে এক মজার গল্প। অনেকগুলো গল্প, 888sport alternative link কপি করা হলো। ১৯৬৮-এর পর কলকাতার বাইরে যেতে হলো। ট্রাঙ্কগুলো মেজদার বাড়িতে ফিরিয়ে দিলাম। আর যোগাযোগ থাকলো না। ১৯৯৪-এ ডাক্তারির চাকরি থেকে অবসর পেলাম। তিন-চার বছর পর জীবনানন্দের ভ্রাতুষ্পুত্র অমিতানন্দ আমাকে খুঁজে বার করলো। আবার জীবনানন্দের পা-ুলিপি কপি করার কাজে জড়িয়ে পড়লাম। সেটা চলছে এখনো। এই আর কি।’
প্রকাশিত-অপ্রকাশিত সব 888sport app download apk জীবনানন্দ ছোট-ছোট এক্সারসাইজ খাতায় কপি করে রেখেছিলেন; তার কিছু চিরতরে হারিয়ে গেছে। কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে ‘রেয়ার বুকস কালেকশনে’ রাখা আছে যে জীবনানন্দ দাশের ৪৮টি 888sport app download apkর খাতা, ভূমেন্দ্র গুহ সেগুলোর পাঠোদ্ধার করে প্রকাশের ব্যবস্থা করেছেন। প্রতিক্ষণ প্রকাশনী ১৪টি খ– পা-ুলিপির 888sport app download apkগুলো প্রকাশ করেছে। পা-ুলিপির 888sport app download apk প্রকাশের কাজ কি শেষ? ভূমেন্দ্র গুহ হতাশ কণ্ঠে সঙ্গে জানিয়েছিলেন, না শেষ হয়নি। কিন্তু প্রতিক্ষণের আগ্রহ আর অবশিষ্ট নেই।
তাহলে সব মিলিয়ে জীবনানন্দের 888sport app download apkর 888sport free bet কত দাঁড়ালো – ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন : ‘যখন প্রিয়ব্রতদেব মশাইয়ের কথায় ‘ছায়া-আবছায়া’ বইটার প্রেসকপি তৈরী করছিলাম তখন মনে হয়েছিল ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে রাখা ৪৮টি খাতায় দুই আড়াই হাজার 888sport app download apkর পা-ুলিপি থাকতেই পারে, গুনে দেখিনি, কোনো খাতায় ৪০টি, কোনো খাতায় ৭০টি। গড়ে ৫০ ক’রে ২৪০০টি হয়েও যেতে পারে। ১৯৩০ আর ’৩৩-এর কোনো খাতা পাওয়া যায়নি; হারিয়ে গেছে। মঞ্জুশ্রী অমত্মতঃ দু’দুবার লেখার খাতা চিরতরে হারিয়ে ফেলেছে, তমলুক যাবার পথে একবার। বেশ কিছু খাতা। ওর নিজেরই থাকবার সুব্যবস্থা ছিল না; কোথায় রাখবে ও বাবার পা-ুলিপির খাতা?’ (টীকা : সম্প্রতি প্রকাশিত নির্বাচিত জীবনানন্দ দাশ মূলানুগ পাঠ গ্রন্থে ভূমেন্দ্র গুহ এক জায়গায় উলেস্নখ করেছেন সর্বসাকল্যে ২ হাজার ৮৮০টি 888sport app download apkর কথা)।
জীবনানন্দ বেঁচে থাকতে প্রকাশিত পাঁচটি বইয়ে যে ১৬২টি মাত্র 888sport app download apk গ্রন্থিত হয়েছিল তার বাইরেও নানা পত্র-পত্রিকায় তিনি কম-বেশি ২২১টি 888sport app download apk প্রকাশ করেছিলেন যেগুলো অগ্রন্থিত থেকে গিয়েছিল। দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকাশিত-অপ্রকাশিত 888sport app download apkর সংগ্রহে 888sport app download apkর 888sport free bet ৬৫৮টি। প্রতিক্ষণের বার করা ১৪ খ– জীবনানন্দের পা-ুলিপির ১ থেকে ৩৪ নম্বর চিহ্নিত খাতা থেকে ১ হাজার ৫৭০টি 888sport app download apk ধারাবাহিকভাবে মুদ্রিত হয়েছে। আরো ১৬টি খাতা রয়ে গেছে যাতে কমবেশি যে ৫০০-৭০০ 888sport app download apk আছে সেগুলোসহ পা-ুলিপির সব 888sport app download apkর একত্র সংকলন বের করা যেতে পারে। সব মিলিয়ে ২২শ-২৪শ যা-ই হোক – প্রকাশক পেলে পা-ুলিপির সব 888sport app download apk অনেকগুলো খ– নয়, মাত্র দুটি বড়-বড় খ– বের করা যেত – প্রতিক্ষণ তো আর করবে না, 888sport appsের কোনো প্রকাশক কাজটি হয়তো করতে পারেন – এ রকম একটা মৃদু ইচ্ছে ব্যক্ত করেছিলেন ভূমেন্দ্র গুহ।
পাঁচ
888sport live footballে তাঁর ঝোঁক কৈশোরকালে। কলকাতায় পঞ্চাশ দশকের বিখ্যাত 888sport live footballপত্র ময়ূখের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ময়ূখের ‘জীবনানন্দ 888sport app download for android 888sport free bet’ বের করার জন্য কী কষ্ট করেছিলেন ভূমেনদা ও সঙ্গীরা সে এক অবিশ্বাস্য গল্প; কেবল শরীরের রক্ত বেচার কাজটিই বাকি ছিল। অনুক্ত পত্রিকার প্রকাশনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। এ-পত্রিকাতেই প্রথম জীবনানন্দের তিনটি ছোটগল্প একযোগে প্রকাশ করা হয়েছিল। বানপ্রস্থের প্রায় পুরো সময়টাই জীবনানন্দের ছেঁড়াখোঁড়া বাতিল কাগজপত্রের ডাঁই ঘাঁটাঘাঁটি করে কাটিয়ে দিয়ে গেছেন ভূমেন্দ্র গুহ। গৌতম বসু বলেছেন, জীবনানন্দের ক্রমমুক্তি ঘটেছে তাঁর হাতে। হাজার-হাজার পাতার লেখার পাঠোদ্ধারের কাজটি কী রকম দুর্বিষহ ও একঘেয়ে হতে পারে, তা ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। ভূমেন্দ্র গুহর অসাধ্যসাধন দেখে মনে হয়, মৃত্যুর পর জীবনানন্দকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই যেন তাঁর জন্ম হয়েছিল; – যেন জীবনানন্দের লেখার পাঠোদ্ধার ব্যতিরেকে তাঁর আর কোনো উপাসনা ছিল না। এই পরিচয়ের গভীর আড়ালে তিনি যে কবি, প্রধানত একজন কবি, এই সত্যটি যেন হারিয়েই গিয়েছিল।
কিন্তু জীবনানন্দ-উদ্ধারের পাশাপাশি 888sport app download apk লেখা চলছিল, চলছিল আরো অনেক কাজ যা-যা তাঁর ভালো লেগেছিল। সেই যৌবনে, ১৯৫৮-এ, তিনি স্যাফোর কাব্য 888sport app download apk latest version করেছিলেন। বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথম স্যাফোর 888sport app download apk 888sport app download apk latest version করেছেন। হেনরি মিলারের ‘ঘাতকদের সময়’ 888sport app download apk latest version করেছেন, তবে বলে রাখা দরকার, 888sport app download apk latest versionের জন্য লেগেছে ১৩৮ পাতা, আর ভূমিকা-টীকার জন্য বাকি ২৭৪ পৃষ্ঠা। ২০০৮-এ প্রকাশ করেছেন জীবনানন্দের অপ্রকাশিত 888sport alternative link সফলতা-নিষ্ফলতা। এখানেও বলে রাখা দরকার যে, ১১৭ পাতার এ-888sport alternative linkের শুরম্নতে আছে ১৬ পৃষ্ঠার একটি ভূমিকা আর শেষে আছে ১২৫ পৃষ্ঠাব্যাপী টীকা-টিপ্পনীর বিশাল বহর। মুচকি হেসে কেউ-কেউ মমত্মব্য করেছিলেন, জীবনানন্দ দাশ এতদিন ছিলেন বাক্সবন্দি এবার হলেন টীকাবন্দি। ২০১২তে প্রকাশিত হয় জীবনানন্দের সমরেশ ও 888sport app গল্প এবং অপ্রকাশিত শেষ ১৮টি গল্প ও ২টি 888sport alternative link। কেবল জীবনানন্দ নিয়ে তাঁর বই একটিই; আর সেটি হলো আলেখ্য : জীবনানন্দ দাশ। তাঁর জীবনানন্দ চর্চার অনুপুঙ্খ দলিল ২০০৮-এ প্রকাশিত জীবনানন্দ ও সঞ্চয় ভট্টাচার্য। উপরন্তু জীবনানন্দের লিটেরারি নোটস দিনলিপি শিরোনামে প্রকাশ করেছিলেন চারটি প্রশসত্ম খ–। দিনলিপি লেখার খাতার ফ্যাকসিমিলি প্রকাশ করেছেন ‘শেষ ছ’বছর’ শিরোনোমে।
কালি ও কলমের সম্পাদক আবুল হাসনাতের উদ্যোগে ভূমেন্দ্র গুহ জীবনানন্দ দাশের 888sport app download apkর মূলানুগ পাঠের একটি সংকলনগ্রন্থের পা-ুলিপি করতে সম্মত হয়েছিলেন ২০০৯-এ। কাজ চলছিল সেই ২০১১ থেকে। তাতে শ্রেষ্ঠ 888sport app download apkসহ জীবনানন্দের সাতটি কাব্যগ্রন্থ থেকে বাছাই করা 888sport app download apk, জীবনানন্দের মৃত্যুকালে অপ্রকাশিত ৭৯টি 888sport app download apk এবং সরাসরি ৩২টি লেখার খাতা থেকে ১ হাজার ৪৩২টি 888sport app download apk (পূর্বোলিস্নখিতগুলো বাদ দিয়ে) পত্রস্থ করার আয়োজন ছিল। 888sport app download apk-সংবলিত ৬৮৭ পৃষ্ঠার প্রথম খ–র পর ৪৯৬ পৃষ্ঠার দ্বিতীয় খ– ভূমেন্দ্র গুহের লেখা পেলস্নাই ভূমিকা ও টীকা-টিপ্পনীর বিশাল বহর। এ-প্রসঙ্গে একটু সলজ্জ হেসে ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন, ‘এ যেন বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বিচি’।
সমসাময়িক কালে যে মুষ্টিমেয় কজন জীবনানন্দকে সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছিলেন কবি সঞ্জয় ভট্টাচার্য তাঁদের অন্যতম। সঞ্জয় ভট্টাচার্যও জীবনানন্দের 888sport apk download apk latest version অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিলেন। ভূমেন্দ্র গুহ প্রথম থেকেই সঞ্জয় ভট্টাচার্যের প্রতি বিশেষ অনুরক্ত ছিলেন। গৌতম বসুর সঙ্গে যৌথভাবে ২০১৩তে প্রকাশ করেছেন সঞ্জয় ভট্টাচার্যের 888sport app download apk। পরের বছর ২০১৪তে সুকল্প চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথভাবে প্রকাশ করেছেন সঞ্জয় ভট্টাচার্য কথাসমগ্র।
ভূমেন্দ্র গুহ কবি হলেও তাঁর গদ্য ছিল অসাধারণ। ২০১৪তে প্রকাশিত তাঁর দূর সমুদ্রের বেলাভূমি আধুনিক বাংলা 888sport live football সমালোচনায় এক অসামান্য অবদান। তাঁর গদ্যরীতি বিশেষ প্রণিধানযোগ্য; তাঁর পঠন-পাঠনও ছিল বিসত্মৃত; তাঁর চিমত্মা ছিল মৌলিক। যে-কোনো বিষয় নিয়ে লিখতে বসে তিনি তুলোধোনা গবেষণা করেছেন, পরিপূর্ণ তথ্য ও বিশেস্নষণ সন্নিবেশ করেছেন, সংযোজন করেছেন সুচিমিত্মত মত। কেমন ছিল তাঁর গদ্য? তিনি 888sport alternative link লিখেছিলেন দুটো, সেসব হাতের কাছে নেই বলে কেবল 888sport live-নিবন্ধ থেকে উদ্ধৃতি দেওয়ার সুযোগ আছে আপাতত। জীবনানন্দের সঙ্গে-সঙ্গে তিনি পূর্বাশা পত্রিকার কবি সঞ্জয় ভট্টাচার্যের খুব ভক্ত ছিলেন। বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে সঞ্জয়বাবুকে সংবাদটা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আপনাদের নেমতন্ন করছি না, আপনার শরীরের যা হাল, তাতে আপনার গিয়ে কাজ নেই, নেমতন্নটা আপনার বাড়িতে এসে আমি খাইয়ে যাবো।’ অতঃপর বিয়ের পরপরই
গোছা-গোছা উপহার আর খাবারদাবার কিনে নতুন বউকে নিয়ে হাজির হলেন সঞ্জয় ভট্টাচার্যের ডেরায়। জীবনানন্দ ও সঞ্জয় ভট্টাচার্য বইটিতে সে-ঘটনার বর্ণনা এরকম :
ট্যাক্সিতে চেপে খুব একটা ফুর্তির মেজাজে আমরা গেলুম সেলিমপুর’এ সঞ্জয়বাবুর বাড়িতে সন্ধের মুখোমুখি। এখন নিশ্চয়ই সঞ্জয়বাবু তাঁর দ্বিপ্রাহরিক নিদ্রা থেকে উঠে পড়েছেন; এখন তাঁর বাসায় আড্ডা জমারও কথা নয়; সত্যবাবুও নিশ্চয় সারা-দিনের কাজ-কর্মের পরে এখন বাড়ি ফিরেছেন, তাঁরও তো বয়েস কম হল না। এই সময় তাঁদের নিরিবিলি পাওয়া যাবে, কপাল যদি খুব চাপা না হয়। ভাগ্য ভালো যে, আমাদের সাজানো অঙ্কটা মিলে গেল; অমত্মত সঞ্জয়বাবু যে তাঁর ঘরের ষাট পাওয়ারের ম্যাড়ম্যাড়ে আলোয় একা ছিলেন, তা তো ঘরে ঢুকেই বোঝা গেল। তিনি তাঁর নড়বড়ে কাঠের-টেবিলে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে কী সব খুঁজছিলেন: হয়তো তাঁর বিকেলবেলার ওষুধ। নিশ্চয়ই রাতের বেলা লেখাপড়া করেন না।…
মনে হচ্ছে উদ্ধৃতিটি খুব একটা প্রতিনিধিস্থানীয় হলো না। ভূমেন্দ্র গুহের গদ্য লেখার একটা আলাদা ধরন আছে, কমা সেমিকোলন ড্যাশ মিলিয়ে দীর্ঘ বাক্য কেবল নয়, তাঁর বাক্যে পদ সংস্থাপনার ক্রমও প্রায়শ অভিনব। একটু প্রচ্ছন্ন কৌতুকবোধ তাঁর শব্দচয়ন ও বাক্যগঠন রীতির ফাঁকফোকর দিয়ে নিশ্চিত গলে পড়ে। তাঁর অভাব-অভিযোগগুলোও, যদি কিছু থাকে, সেই ভূমেন্দ্রীয় প্রকরণে বেশ খানিকটা দ্রবীভূত হয়ে যায়। তাঁর 888sport liveের ভাষা অনেক ক্ষেত্রে বেশ জটিল যার উদহারণ দূর সমুদ্রের বেলাভূমিগুলি বইটি, যাতে তাঁর আলোচনার উদ্দীষ্ট ফ্রিডরিশ নিৎশে, কোয়েটজি, টলস্টয়-ডস্টয়েভস্কি এবং বাখতিন, কাফকা, সাদাত হাসান মান্টো, আলবেয়ার কামু, শেক্সপিয়র প্রমুখের জীবন ও লেখালিখি। কিন্তু শেষ পর্যমত্ম স্বীকার না-করে পারা যায় না ভূমেন্দ্র গুহ ছিলেন শক্তিশালী এক গদ্যকার, আর এ-কারণেই তাঁর পক্ষে নিৎশের মতো কঠিন জটিল গদ্যের 888sport app download apk latest version সম্ভব হয়েছিল। ভূমেন্দ্র গুহের 888sport app download apk latest versionে নিৎশেকে যেভাবে পাওয়া যায় তা এ রকম :
পুনরম্নক্তি ক’রে আবার বলতে হয় দ্য বার্থ অফ ট্রাজেডি [নিৎশের প্রথম বই] আজ আমার কাছে এটি একটি ‘অসম্ভব’ বই; বলতে হয় : খারাপ ভাবে লেখা, সামলানো যায় নি – এমন এক ভারিক্কি চাল তার সর্বত্র, হতবুদ্ধিকর, কী-রকম ভাব-মূর্তি-যে নিজের জন্য অভিপ্রেত তা বুঝেই ভাব-মূর্তি গ’ড়ে তোলার চেষ্টায় মাত্রা-চাড়া ভাবে ভাবপ্রবণ, কোথাও-কোথাও এতটাই সুখপাঠ্য যে, মেয়েলিপনার ধার ঘেঁষে যেতে হয়েছে প্রায়,
ছন্দে-লয়ে-তালে অসমঞ্জস, যুক্তি-তর্কের সুসমতার দিকে কোনও নজর নেই যেন, বক্তব্য বিষয়ে আগে থেকেই যেহেতু স্থিরনিশ্চয়, সাক্ষীসাবুদ হাজির করারও কোনও দায় নেই, তথ্য-গত সাক্ষীর ‘সত্য’ সম্বন্ধেও অমনোযোগী, যেন লেখাটি তৈরি হয়েছে নব্য-সাক্ষরদের জন্য, যাঁরা সংগীতে নিবেদিতপ্রাণ অভিজ্ঞ – যাঁরা সেই সব সাধারণ অসাধারণ ও দুর্লভ নান্দনিক অভিজ্ঞতার উপরে নির্ভর ক’রে ছাড়া কোনও বড়ো কাজ শুরম্নই করতে পারেন না, সংগীত যাঁদের কাছে ‘আর্টের বলয়ে’র আত্মীয়-পরিজনকে চিনে নেওয়ার স্মারকের মতো – এই বইটির ‘সংগীত’ তাঁদের কাছে দুর্বিনীত ও আবেগবিহবল মনে হওয়ার কথা, বইটি একেবারে শুরম্ন থেকেই শিক্ষিত ব্যক্তিদের অদীক্ষিত জনতার তুল্য বিবেচনা ক’রে অবজ্ঞার চোখে দেখেছে, যতটা দেখে নি যাঁরা সত্যিই আসল ‘জনগণ’ বা ‘কৌম জনতা’ – তাঁদের।
বাক্য গঠনরীতির হিসাবে উপর্যুক্ত অনুচ্ছেদটি জীবনানন্দের ‘888sport app download apkর কথা’ 888sport liveটির প্রথম অনুচ্ছেদের কথা নির্ঘাৎ 888sport app download for android করিয়ে দিতে পারে।
ছয়
তাঁর সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎকার ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের ২৩ তারিখে, তাঁর কলকাতার বাসায়। তখন ভগ্নস্বাস্থ্য ভূমেনদাকে আর দেয়াল ধরে ধরে হাঁটতে হয় না, বাসার গ–র ভেতর বেশ হাঁটতে-চলতে পারেন, বসতে পারেন লেখার টেবিলে। বউদি জ্যোৎস্না গুহরায় এবং কন্যা ইন্দ্রাণী বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি গায়ের স্যান্ডো গেঞ্জিটা খুলে শার্ট চড়াতে রাজি হলেন না। জীবনানন্দের লিটেরারি নোটসের খাতাগুলো দেখালেন। বাড়িজুড়ে বই, তাঁর ভাষায় ‘বইয়ের গুদাম’। জীবনানন্দ দাশ, সঞ্জয় ভট্টাচার্য প্রমুখের মতোই পড়ুয়া মানুষ ছিলেন – নানা বিষয়ে আগ্রহ ছিল, গভীর উৎসাহে পাঠ করেছেন ধর্ম-888sport live football-দর্শন-ইতিহাসের গ্রন্থমালা। বইয়ের তাকে রাখা আমার করা কয়েকটি বই দেখিয়ে বললেন, কিনে সংগ্রহ করেছেন। মান্নান সৈয়দের কাজের খুব প্রশংসা করলেন, হুমায়ূন আহমেদের পাঠকপ্রিয়তার কথা উলেস্নখ করলেন। কালি ও কলমের আবুল হাসনাত ভাইয়ের কথা, অবসরের আলমগীর রহমানের কথা বারবার বলছিলেন। অনেক প্রশ্নের উত্তরে নিস্পৃহ কণ্ঠে বলছিলেন, ‘এসব নিয়ে এখন কথা বলার মানে হয় না। এখন তো এই আছি এই নেই।’ কথা বলছিলেন খুব ধীর লয়ে, মৃদু কণ্ঠস্বরে। বারবার ডুকরে উঠছিলেন। বারবার, একটু পরপর। টেবিলে এক গোছা বিড়ি। একটি ধরিয়ে বললেন, ‘সিগ্রেট খাওয়ার পয়সা আর নেই, এখন বিড়ি টানি।’ ওই রকম ভগ্নদশাতেই জীবনানন্দের লিটেরারি নোটস ‘কপি’ করছিলেন, প্রকাশ করবেন বলে।
লেখাপড়া আর চাকরির সূত্রে ভারতের নানা স্থানে থেকেছেন ভূমেন্দ্র গুহ। কিন্তু ডাক্তারের সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর কলকাতাতেই স্থায়ী হয়েছিলেন। কলকাতায় থাকা প্রসঙ্গে একটি 888sport app download apkয় তিনি লিখেছিলেন :
কলকাতা ছাড়া আর কোনও অন্য-প্রকৃতিতে আমি যেতে পারি না। অযোধ্যা পাহাড়ের সানুদেশের আশ্রমের কথা নিয়ে আমি ভেবেছি, শামিত্মনিকেতনের নিকষ শামিত্মর কথা নিয়ে, এমন-কী বহরমপুরের কোল ঘেঁষে যে বৃহৎ জল আছে, রাতের অন্ধকারের রম্নপোলি অাঁশ যার গায়ে চকচক করে বলা হয়েছে, তার কথা নিয়েও ভাবা হয়েছে। তবু, বাবুঘাটের জলের উপরে সন্ধে থেকে রাত গড়িয়ে বেআইনি ব’সে থেকে আমি দেখেছি যে, রাত সাড়ে-দশটায় যে আমার বাড়ি ফেরার শেষ বাস, জলের বিস্ফোরিত জোয়ারের সংবাদের সঙ্গে সেই খবরটুকু আমার সবিশেষ প্রয়োজনীয়।
সল্টলেকে করম্নণাময়ীর যে-ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকতেন ভূমেন্দ্র গুহ, সেটির থাকবার ঘরের দেয়ালে বাবা-মা, পিতামহ-পিতামহীর ফ্রেমবাঁধানো ফটো, মা-বাবার পায়ের প্রচ্ছাপ। বসার ঘরে জীবনানন্দের একটি বাঁধানো ফটো ঝুলছে। ফ্রেমের কোনায় জীবনানন্দকে নিয়ে প্রকাশিত একটি ডাকটিকেট। এটা কি জীবনানন্দের স্টুডিওতে তোলা কোনো ফটো? ধীরে-ধীরে ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন, ‘ফটোটার একটা ইতিহাস আছে। ২২ অক্টোবর জীবনানন্দ মারা গেলেন, মধ্যরাতের কাছাকাছি, ২৩ তারিখ দুপুরে শ্মশানে দাহ হলো। তারপর শ্রাদ্ধ। শ্রাদ্ধের জন্য ফটো লাগবে। তাঁর ভাই অশোকানন্দ – মেজদা – বললেন, ‘দেখো তো ভূমেন দাদার ট্রাঙ্ক খুলে কোনো ছবি-টবি বের করতে পারো কিনা, ছবি তো লাগবে।’ ট্রাঙ্ক খুলে একটা ছবি পাওয়া গেল – গ্রম্নপ ছবি, দিলিস্নতে তোলা। সে ছবিটা নিয়ে আমি গেলাম কর্ণওয়ালিশ স্ট্রিটে – ‘রিপ্রোডাকশন সিন্ডিকেট’ নামের দোকানে। সে দোকানটা এখনো আছে। তারাই গ্রম্নপ ছবি থেকে গোল ক’রে কেটে জীবনানন্দের
এই ফটো আলাদা ক’রে বানিয়ে দিলো; বড় ক’রে; দুই কপি।
একটা আমার কাছে ছিল, থেকে গিয়েছে।… আর ঐ ডাকটিকেট ১৯৯৯-এ জীবনানন্দের জন্মশতবার্ষিকীতে 888sport appsের ডাক বিভাগ বের করেছিল। পাছে হারিয়ে যায়, তাই ওই ফটোর ফ্রেমের ভেতর ঢুকিয়ে রেখেছি। – ভারত তো কিছু করলো না, 888sport apps করলো।’
জীবনানন্দের আরো কোনো অপ্রকাশিত 888sport app download apk কি আছে? ভূমেন্দ্র গুহ বলেছিলেন, ‘অপ্রকাশিত কোনো 888sport app download apk আদৌ নেই তা বলা যাবে না। আছে – অনেক 888sport app download apk রয়েছে যা কোথাও-ই ছাপা হয়নি এখনো। এখন কাজ করছি লিটেরারি নোটস নিয়ে। এই যে লিটেরারি নোটসের খাতা, এগুলো ধরতে গেলে হারিয়েই গিয়েছিল। জীবনানন্দের ভাইপো অমিতানন্দ তাঁর বাড়িতে ডেকে নিয়ে গেল, সেটা ১৯৯৭ কি ’৯৮ হবে, ঠিক মনে নেই। একটা বিছানার চাদর দিয়ে একগাদা লেখার খাতা মুড়ে রাখা। এগুলোও ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে দেওয়া হয়েছিল – তারা রাখেনি। তারপর থেকে অনেককাল মঞ্জুশ্রীর কাছে ছিল – জীবনানন্দের মেয়ে। এগুলো লিটেরারি নোটস অর্থাৎ কিনা জীবনানন্দের ডায়েরির খাতা। খাতার ওপর ১ থেকে ৫৭ পর্যমত্ম নম্বর দেওয়া। মাঝ থেকে কয়েকটি হারিয়েও গেছে। আর গল্প-888sport alternative linkের খাতা, নানা কাগজপত্র, চিঠি, এক্সারসাইজ খাতায় বাজারের দিনকার হিসাবের পাশেই কখনো এক-দুটো 888sport app download apkর খসড়া। আর ‘স্টোরি থিমস’ নামের মোটাসোটা একটা খাতায় ভেবে রাখা অনেক গল্পের পস্নট। এখন বিশেষ ক’রে লিটেরারি নোটস উদ্ধারের কাজটা চলছে; ঢিমে তালে। অসুস্থ, অশক্ত, চোখ আর সাহায্য করে না; তবু ক’রে যাচ্ছি। আর কোনো কাজ তো আমার নেই, বাতিও নিবু-নিবু। হাতের লেখা তো পরিচিত হয়ে গেছে। ইংরেজিতে অনেক কিছু লিখেছিলেন ইয়োরোপ-আমেরিকার কবি-888sport live footballিকদের নিয়ে। জন কিটস, টমাস হার্ডি, ম্যাথু আর্নল্ড, নানা পেলস্নাই সব কবি-888sport live footballিক; – তাঁদের নিয়ে। যখন যা মনে এসেছে, ভেবেছেন – লিখে ফেলেছেন। সে সব কপি করছি।’
নিজেকে প্রায়শ ‘কপিকার’ বলে পরিচয় দিতেন ভূমেন্দ্র গুহ। বলেছিলেন : ‘ময়ুখের জীবনানন্দ 888sport free bet করতে গিয়ে পত্রিকাটার আয়ুই ফুরিয়ে গেল। দাশ পরিবরের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠতা ছিল। জীবনের একটা বড় অংশ তাঁর লেখার সঙ্গে কাটিয়ে দিলুম। বেশি কাজ এক সঙ্গে করার ধাত নেই। ডাক্তারি যখন করেছি সব ছেড়ে কেবলই ডাক্তারিই করেছি। তারপর কুড়ি বছর লেখার খাতা কপি করা। এখন এই তো ঘণ্টা বেজে গেল। যখন-তখন চলে যাবো।’ বারবার মৃত্যুর কথা তুলছিলেন ভূমেন্দ্র গুহ কথা বলতে-বলতে নানা অনুষঙ্গে; মুখম-লে অনপনেয় বিষণ্ণতা, কখনো এক চিলতে হাসি ঠোঁটের কোণে ঝলকে উঠেই মিইয়ে যাচ্ছিল। আমি তাঁর হাতে ‘অন্যপ্রকাশ’ প্রকাশিত জীবনানন্দ দাশের চিঠিপত্র বইটি তুলে দিলাম; আমারই সম্পাদনা। এ-বইয়ের উৎসর্গেপত্রের লেখাটি এরকম : ‘গভীর জীবনানন্দ অনুরাগী/ পরিশ্রমী ও একনিষ্ঠ জীবনানন্দ-গবেষক/ কবি ও অনবদ্য গদ্য লেখক/ পরম শ্রদ্ধেয় ডা. ভূমেন্দ্র গুহ-কে/ পরম মমতায় জীবনানন্দ দাশকে ভালোবেসে/ তাঁর অকাল তিরোধানের পর লেখার খাতা পাঠ ক’রে/ হাজার 888sport app download apkর পাঠোদ্ধার করে/ ‘রূপসী বাংলা’ বইটির পা-ুলিপিও তৈরী করে/ তাঁর দুষ্পাঠ্য দিনলিপি পাঠোদ্ধার করে/ যিনি সমগ্র বাঙালি জাতির
কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছেন।’ – আমার হাত তুলে নিয়ে কপালে ছোঁয়ালেন ভূমেন্দ্রদা। অনেকক্ষণ ধরে থাকলেন।
নিজ মৃত্যু-পরবর্তী অবস্থা নিয়ে অনবদ্য একটি লেখা আছে ভূমেন্দ্রদার। তার একটি অংশ এরকম :
(…একজন) সরল-সহজ ভাবে ভালো-মানুষের মতো নিজেকে মরে যেতে দিলেন ডা. বি.এন. গুহরায়। এই বাড়ির কর্তা ছিলেন তিনি, এক জন মহিলার স্বামী, এক জন মেয়ের বাবা; কিন্তু কর্তা-স্বামী-বাবা – এ-সব স্ব-প্রণীত ভূমিকা তাঁর নিজেরই তৈরি যদিও, তিনি তাঁর এই সব ভূমিকা নিয়ে কখনওই সৎ ছিলেন না। তিনি স্বার্থপর ছিলেন, অতি-মাত্রায় স্বার্থপর। কথাটা ঠিক যে, অত্যমত্মই গরিব পরিবার থেকে তিনি এসেছিলেন, গরিব হয়ে থাকাটা তাঁর বরং পছন্দেরই ছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত তাৎক্ষণিক নাম-খ্যাতি-ক্ষমতা-যশের লোভটা তাঁর এতটাই বেশি ছিল যে, তিনি কখনও পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখেন নি তাঁর সংসারটা কী ভাবে চলছে, তাঁর মেয়ে কী ভাবে বড়ো হয়ে উঠছে, সে তার বাবাকে কতটুকু সময় কাছে পাচ্ছে। তাঁর স্ত্রী একটা মাস্টারির চাকরি করতেন বলে সংসার চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়টা যেন তাঁরই। ডাক্তার গুহরায়-এর নিজের পড়াশোনা ছিল, লেখালেখি ছিল, সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন হাসপাতালে পড়ে থাকা ছিল, নতুন ডিপার্টমেন্ট গড়ে তোলার ব্যাপারে দৌড়োদৌড়ি করা ছিল – শুধু রাইটার্স নয়, সেই দিলিস্ন – বোম্বাই অব্দি, সারাটা ভারতবর্ষে সার্জারি-শিক্ষার বিষয়ে সর্দারি করে বেড়ানো ছিল। শেষ-বয়েসে, যে-কটা টাকা মাইনে পেতেন হাসপাতালের নানান উপরি-কাজে খরচ ক’রে ফেলতেন, সংসারে একটা পয়সা ছোঁয়ানো ছিল না।
ভূমেন্দ্র দা’র মৃত্যুর পর কলকাতার সাংবাদিক বাহারউদ্দিন লিখেছেন : ‘মনে হয়, কোথাও যেন একটা অভিমান ছিল। হৃদরোগ হয়েছে, তোয়াক্কা করেননি। প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রামত্ম অথচ চিকিৎসা করাননি, বিশেষ কাউকে জানতেও দেননি, অসুখটির অত্যাচার সহ্য করেছেন নীরবে। তার মানে স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিতে হল ভারতের অন্যতম কৃতী চিকিৎসা888sport apkী আর ‘মোহহীন’ কবিকে।’
বহু আগেই কবি সম্মেলন পত্রিকায় কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, ‘ডাক্তার আর রোগীদের কাছে ইনি (ভূমেন্দ্র গুহ) ধন্বমত্মরী এক ডাক্তার, কবি আর পাঠকদের কাছে ইনি প্রগাঢ় এক কবি, গবেষক আর ভাবুকদের কাছে বিস্ময়কর এক গবেষক। পরম-লিপ্ত কিন্তু পরম-উদাসীন বিচিত্রমুখী এই মানুষটির স্বতঃপ্রণোদিত উপচিকীর্ষার কথা ভাবতে আমার ভালো লাগে সবসময়েই। সেই সঙ্গে এও ভাবি, রক্তে যাঁর এত চিকিৎসাবোধ, এই প্রায় কুড়ি বছর ধ’রে নিজেকে তিনি নিয়মিত চিকিৎসা কাজের বাইরে রাখতে পারেন কোন্ মন্ত্রবলে, কোন্ উদাসীনতায়। উদ্দীপ্ত উদাসীন সেই মানুষটিকে আজ আমার ভালোবাসা জানাই।’
নির্বাচিত জীবনানন্দ দাশ : মূলানুগ পাঠ বইটির দুখ–র
ছাপা-বাঁধাইয়ের কাজ হয়ে শেষ হওয়ার পর প্রকাশের আয়োজন। কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাতের পরিকল্পনা ছিল, প্রথম সেট ভূমেন্দ্রদার হাতে তুলে দিয়ে তবেই বাজারে দেবেন বইটি; আর ফেব্রম্নয়ারিতে (২০১৬) 888sport appয় বইমেলা সামনে রেখে একটা প্রকাশনা অনুষ্ঠান করবেন, সেখানে উপস্থিত করবেন ভূমেন্দ্রদাকে। আবুল হাসনাত যখন কলকাতায় পৌঁছলেন কে-২/৬ করম্নণাময়ীর দোতলার ফ্ল্যাটবাড়িতে, তখন ভূমেন্দ্রদা সেখানে নেই; ১৪ ডিসেম্বর কলকাতা মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে, গুরম্নতর অসুস্থ। ডিসেম্বরের ১৮ তারিখে সর্বাংশে অচেতন হয়ে পড়লে লাইফ সাপোর্ট সংযোজন করা হলো। ২০ ডিসেম্বর প্রত্যুষে গভীর নিদ্রার আবরণে তিনি চলে গেলেন চিরতরে। একটি লেখায় ভূমেন্দ্রদা লিখেছিলেন : ঘুমের ভিতরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে; সকালে সবাই দেখছে তিনি আর চোখ খুলছেন না। তাঁর নিজেরই ভাষায় : ‘ডাক্তার গুহরায় তাঁর বিছানার ফ্রেমে-অাঁটা একটা মূর্তি হয়ে গিয়েছেন।’ পাশে পুরনো লেফাফার ওপর লেখা 888sport app download apkর চার লাইন : ‘কী কারণে-যে ঘুম আসতে চায় না, তা বুঝতে পারি না/ রাসত্মার কুকুরগুলি ডাকতে থাকে সারা রাত ধরে
একা-একা/ কেন ডাকে? এক জন কাঁদলে পরে অন্য জন কাঁদে হয়তো/ আয়নায় নিজের মুখ দেখেছি অনেক বার চুপি-চুপি : রাসত্মার কুকুর।’ – কেবল এখানেই হয়তো ব্যতিক্রম হলো; হাসপাতালের বেডের পাশে ওরকম 888sport app download apkর কোনো চিরকুট পাওয়া গেল না : শেষ 888sport app download apkটি মুসাবিদার আগেই পৌঁছে গেলেন শ্মশানের নিকটের নদীটির কাছে। (শাহবাগ, ২০১৬)

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.