সৈয়দ আজিজুল হক
অড্রে হেপবার্ন 888sport app এসেছিলেন গত শতকের শেষ দশকে। শিশুদের একটি কর্মসূচিতে ইউনিসেফের দূত হিসেবে। চারুকলা ভবনে এসেছিলেন। তাঁর পাশে হেঁটেছেন কাইয়ুম চৌধুরী। যৌবনের স্বপ্নের রানীকে পাশে পেয়ে বার্ধক্যেও কেমন শিহরিত, অভিভূত। ওরই মধ্যে কি ছিল কোনোরূপ চিত্তচাঞ্চল্য? পাশে হাঁটছেন, কথা বলছেন, হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে; 888sport sign up bonusতে জ্বলজ্বল করছে রোমান হলিডে; গ্রেগরি পেকের সঙ্গে তিনিও যেন হাঁটছেন রোমের রাস্তায়।
অড্রে হেপবার্নের সঙ্গে কাইয়ুম চৌধুরীর প্রথম পরিচয় রোমান হলিডেতে। হেপবার্নেরও সেটি প্রথম ছবি। জীবনের 888sport app download for androidীয় সব মুহূর্ত। 888sport appর সিনেমাহলে রোমান হলিডে দেখে কাইয়ুম চৌধুরীর মনে সে কী গভীর রোমান্টিক আবহ। তাঁর সেই স্বপ্নের রাজকুমারীকে চাক্ষুষ দেখতে পেলেন আবার 888sport appতেই। হেপবার্ন এসেছিলেন ইউনিসেফের ভ্রাম্যমাণ দূত হিসেবে। চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিশু টিকার ওপর পোস্টার প্রদর্শনী উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। কাইয়ুম চৌধুরী তাঁকে সম্বোধন করেছিলেন ‘এক্সেলেন্সি ইওর হাইনেস’ বলে। অটোগ্রাফ নিয়েছিলেন তাঁরই ছবি ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফানির লং প্লে রেকর্ডের ওপর। যতক্ষণ হেপবার্নকে দেখছিলেন ততক্ষণ গ্রেগরি পেকও ছায়ার মতো তাঁর পাশে পাশেই ছিলেন বলে মনে হচ্ছিল কাইয়ুম চৌধুরীর।
মায়ের কোলে বসে কাইয়ুম চৌধুরীর সিনেমাহলে ছবি দেখা শুরু হয়েছিল সেই শিশু বয়সে। ত্রিশের দশকে। তারপর স্কুলজীবনে ঈদ-পার্বণে বাবাই সিনেমা দেখার পয়সা দিতেন। কোনো লুকোছাপার ব্যাপার ছিল না। কোন ধরনের ছবি দেখবেন সে-ব্যাপারেও বাবার ছিল সুন্দর ও দায়িত্বশীল পরামর্শ। তাছাড়া সেই কৈশোরকালে বড় ভাই-ই ছিল সেসব ছবি দেখার সঙ্গী। আর এভাবেই গড়ে উঠেছিল কাইয়ুম চৌধুরীর ছবি দেখার একটি রুচিশীল চোখ ও মন।
সেই দেখার মধ্যে ছিল রোমাঞ্চ। ছিল গতিশীল চিত্রের প্রতি আকর্ষণ। গতিশীল ট্রেনও আকর্ষণ করত প্রবলভাবে। আর ছিল নায়ক-নায়িকার গ্ল্যামারাস জীবন ও তাঁদের গাওয়া গানের প্রতি এক অসামান্য মোহ। ফলে আকর্ষণ সৃষ্টি হয় গীতিকার ও সংগীত888sport live chatীদের প্রতি, পরিচালকদের প্রতি। এসব তথ্য জানতে সিনেমা পত্রিকার প্রতি আগ্রহ জন্মে। live chat 888sportের পুরো জগৎটাকেই স্বপ্নের জগৎ বলে মনে হতো। এই জগতের প্রতি প্রবল আকর্ষণসূত্রেই নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ফেনীতে দেখা করেছিলেন এক live chat 888sport-পরিচালকের সঙ্গে। তিনি ওবায়দুল হক। ১৯৪৬-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি কলকাতায় live chat 888sport পরিচালনা করেন – দুঃখে যাদের জীবন গড়া। এর নায়ক ছিলেন জহর গাঙ্গুলি, নায়িকা রেনুকা রায়। পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন ফতেহ লোহানী। এর জন্য গান লিখেছিলেন মোহিনী চৌধুরী – ‘সে কি ভুল, তোমারই নয়নে লেগেছে আমার ছবি, সে কি ভুল’, যার সুর দিয়েছিলেন আবদুল আহাদ। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে কাজ করা কঠিন হয়ে ওঠায় এর মুসলিম কুশীলবদের নাম পরিবর্তন করতে হয়েছিল। ওবায়দুল হক হলেন হিমাদ্রি চৌধুরী, ফতেহ লোহানী হলেন কিরণ কুমার। ফেনী স্কুলে কাইয়ুম চৌধুরীর 888sport apkের শিক্ষক ছিলেন ওবায়দুল হকের ভাগ্নে। এই শিক্ষকের মাধ্যমেই কৌতূহল পূরণ হয়েছিল কাইয়ুম চৌধুরীর। ওবায়দুল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কৈশোরকালীন নানা প্রশ্নের উত্তর পেয়ে জানার তৃষ্ণা মিটেছিল তাঁর।
চল্লিশের দশকের কথা। ফেনীতে দুটো সিনেমাহল ছিল – ‘মায়া’ ও ‘সুরতমহল’। সিনেমা শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে মাইকে গান বাজানো হতো। পঙ্কজ মল্লিক, কেএল সায়গল, জগন্ময় মিত্র প্রমুখের গান শুনে শুনে মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ফেনীতে থাকতে দেখেছেন শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের লেখা 888sport alternative link অবলম্বনে তাঁরই পরিচালনায় শহর থেকে দূরে, মানে না মানা প্রভৃতি ছায়াছবি। দুটোতেই জহর গাঙ্গুলি ও রেনুকা রায় নায়ক-নায়িকা। ফেনীর আগে নোয়াখালীতে থাকতে সেখানকার ‘রৌশন বাণী টকিজ’ হলে দেখেছেন গরমিল সিনেমা। যার নায়ক রবিন মজুমদারের কণ্ঠে গীত হয়েছিল – ‘এই কি গো শেষ দান বিরহ দিয়ে গেলে’। ফেনী থেকে ফরিদপুর। ফরিদপুরে দেখেছেন বাংলা ছায়াছবি – অশোককুমার ও কানন দেবী-অভিনীত চন্দ্রশেখর।
ময়মনসিংহে ছিল দুটি সিনেমা হল – ‘অলকা’ ও ‘ছায়াবাণী’। ‘ছায়াবাণী’তে দেখেছেন আনমোল ঘড়ি। নায়িকা নূরজাহান, নায়ক সুরেন্দ্র, পার্শ্ব-অভিনেত্রী সুরাইয়া – তিনজনই গানের 888sport live chatী। সুতরাং অভিনয় ও গান দুদিক থেকেই live chat 888sportটি ছিল অসাধারণ। এর সংগীত-পরিচালক ছিলেন ভারতীয় ফিল্ম মিউজিকেরই এক অসাধারণ প্রতিভা – নওশাদ। ছবিতে কোকিলকণ্ঠী নূরজাহানের সঙ্গে সুরেন্দ্রের একটি ডুয়েট ছিল – ‘আওয়াজ দে কাঁহা হ্যায়, দুনিয়া মেরি জঁওয়া হ্যায়’।
এসব অভিজ্ঞতা নিয়ে ১৯৪৯ সালে ছবিপাগল কাইয়ুম চৌধুরীর 888sport app আগমন, আর্ট স্কুলে ভর্তি। 888sport appয় আসার মাধ্যমে ছবি দেখার ক্ষেত্রে একটি মৌলিক পার্থক্য ঘটেছিল। তা হলো : এতদিন দেখেছেন বাংলা ও হিন্দি ছায়াছবি। 888sport appয় আগমনের মধ্য দিয়ে পরিচয় ঘটল ইংরেজি সিনেমার সঙ্গে। তাতে তাঁর অভিজ্ঞতার বলয় প্রসারিত হলো বিপুলভাবে, live chat 888sportের শৈল্পিক ও নন্দনতাত্ত্বিক সূক্ষ্মতার সঙ্গে পরিচয় ঘটল আরো গভীরভাবে।
বর্তমানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান, আউটার স্টেডিয়াম এলাকায় ১৯৪৯ সালে শুধু ইংরেজি ছবি প্রদর্শনের একটি হল ছিল। ব্রিটানিয়া। আর্ট স্কুলে ভর্তির আগেই সেই হলের সামনে কাইয়ুম চৌধুরী দেখলেন দি বেদিং বিউটি live chat 888sportের পোস্টার – স্নানের পোশাক পরা 888sport promo codeর আকর্ষণীয় সুন্দর ছবি। পরে ছবিটিও দেখলেন। এসথার উইলিয়ামস-অভিনীত এই ছবিতে নায়িকা সাঁতার কাটছে; তার সঙ্গে সঙ্গে চলছে সমুদ্রঘোটক (সি হর্স)। সমুদ্রঘোটকের সাঁতারটি দেখানো হয়েছে অ্যানিমেশনের মাধ্যমে। অ্যানিমেশন নামক কারিগরি কৌশলটির সঙ্গে এই প্রথম পরিচয় তাঁর। এই হলেই দেখেছেন হ্যামলেট। কিন্তু প্রথমবারে কিছুই বুঝতে পারেননি।
এভাবে চারু888sport live chatের ছাত্র হয়ে যখন তিনি 888sport appয় এলেন তখন অনেকটা স্বাধীন জীবন, ছবি দেখা একটা গভীর নেশায় পরিণত হলো। কাইয়ুম চৌধুরীর ভাষায় :
একটা সময় এসেছিল আমাদের জীবনে, যখন 888sport appয় বসে আমরা ভালো সিনেমা দেখার সুযোগ পেয়েছি। পঞ্চাশের দশকে আমাদের যৌবনে – তখন হলিউডেরও যৌবন – বিখ্যাত তারকাদের ছবি, যাঁদের একজনকে সারা পৃথিবী চেনে, সেসব ছবি প্রাণভরে উপভোগ করেছি, আপ্লুত হয়েছি, স্বপ্ন দেখেছি, কল্পনা করেছি সেসবের পশ্চাৎপটে নিজেকে দেখার। হলিউডই শুধু নয়, নুভেল ভোগ আন্দোলন তখন ইতালিতে পূর্ণ বিকাশ নিয়ে আবির্ভূত। ভিত্তোরিও দি সিকা, আলবার্তো লাতুয়াদা, রবের্তো রসেলিনি তখন তাঁদের রচনা নিয়ে পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দিচ্ছেন। সেসব রচনার রসভোগের ছিটেফোঁটা আমাদেরও জুটছে। মনে আছে, মানসী (বর্তমানে নিশাত) সিনেমা হলে কোনো এক সন্ধ্যায় দেখেছি ডি সিকার বাইসাইকেল থিফ। একটা ঘোরের মধ্যে দিন কাটছে। ক্যাপিটাল রেস্তোরাঁয় জোর আলোচনা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে। হলিউডের জাঁকজমকপূর্ণ ছবির মধ্যে হঠাৎ একি! সাদাকালোতে নির্মিত একটা সাধারণ ছবি কী নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি করে দিল! এখনো চোখে ভাসে মই কাঁধে পোস্টার লাগিয়ে পিতাপুত্র হেঁটে যাচ্ছে, হঠাৎ রাস্তার পাশে ছোট ছেলেটির জলবিয়োগের দৃশ্য – কী সহজ-সরল অভিব্যক্তি।
প্রিয় নায়ক গ্রেগরি পেক
তখন বেশিরভাগ ইংরেজি ছবি দেখানো হতো গুলিস্তানে। নাজ তখনো তৈরি হয়নি। ভোরবেলাকার প্রদর্শনী, মর্নিং-শো। 888sport appর তাবৎ চিত্রামোদী ভিড় জমাতেন ওই শোতে। তখন 888sport appয় অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের বাস ছিল। তাদের একটি অংশ ছিল প্রদর্শনীর নিয়মিত দর্শক। মর্নিং শো ছাড়াও নামকরা ছবির নিয়মিত প্রদর্শনী সপ্তাহের পর সপ্তাহ চলত। ওই রকম একটি প্রদর্শনীতে গ্রেগরি পেককে প্রথম দেখেন কাইয়ুম চৌধুরী। কিন্তু গ্রেগরি পেকের কোন ছবিটি প্রথম দেখেন পরবর্তীকালে আর তা মনে করতে পারেননি। তবে সেই সময়কার অভিনেতাদের মধ্যে সুদর্শন গ্রেগরি পেক তাঁর ঋজু দেহ, অতুলনীয় বাচনভঙ্গি এবং রোমাঞ্চকর চাহনীর জন্য কাইয়ুম চৌধুরীর খুব প্রিয় ছিলেন। 888sport appয় মুক্তিপ্রাপ্ত গ্রেগরি পেকের ছবি তিনি দেখেননি এরকম ঘটনা কখনো ঘটেনি। পেকের ছবি হয়তো কোথাও দেখানো হচ্ছে কিন্তু তিনি তখনো জানেন না। প্রয়াত 888sport live chatী কাজী আবদুর রউফ জানতেন গ্রেগরি পেককে নিয়ে কাইয়ুম চৌধুরীর এই দুর্বলতার কথা। তিনি সহাস্যে খবর দিতেন, ‘কাইয়ুমভাই, অমুক হলে আপনার ঘোড়াগাড়ি পেকের ছবি এসেছে।’ গ্রেগরিকে রসিকতা করে তিনি বলতেন ঘোড়াগাড়ি। তখন 888sport appয় ঘোড়াগাড়ির চলন ছিল, বিশেষ করে কামরুন্নেসা স্কুলের ছাত্রীরা বদ্ধ শার্সিঘেরা গাড়িতে স্কুলে যেতেন। সেটা একটা আফসোসের বিষয় ছিল। কথাটা এভাবে তৈরি হয়েছিল। কাইয়ুম চৌধুরী অবশ্য শুধু তারকা দেখে ছবি দেখতেন না। পরিচালকের নামও তাঁকে দারুণভাবে আকর্ষণ করত। সংগীত-পরিচালকেরাও বাদ যেতেন না। যখন 888sport appয় হলিউডের ছবি আসা বন্ধ হয়ে গেল, বোধকরি ষাটের দশকের শেষ দিকে, তখন কাইয়ুম চৌধুরী খুব হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। 888sport appর বাঙালি জীবনে বিনোদন বলতে সে-সময়ে ছবি দেখাই ছিল মুখ্য। কাইয়ুম চৌধুরীর মনে ছিল কথাটা, ১১৯৫৮ সালে কলকাতায় সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাতে কথায় কথায় তিনি বলেছিলেন, ‘আপনারা খুব সৌভাগ্যবান, হলিউডের সাম্প্রতিক ছবিগুলো দেখতে পান।’ সে-সময় আলফ্রেড হিচ্ককের ডায়াল এম ফর মার্ডার 888sport appয় মুক্তি পেয়েছে, যেটা ভারতে প্রদর্শন নিষিদ্ধ ছিল। এটাই ছিল তাঁর আক্ষেপ। বলা বাহুল্য, হিচ্কক ছিলেন সত্যজিতের একজন প্রিয় পরিচালক।
কাইয়ুম চৌধুরী এবং 888sport live chatী মোহাম্মদ কিবরিয়া বহু ছবি একসঙ্গে দেখেছেন। মর্নিং-শো ছাড়াও দৈনিক বদল ছবির পাক্ষিক প্রদর্শনীর সিজন টিকিট তাঁরা কাটতেন। প্রতিদিন একটি করে নতুন ছবি এভাবে দেখেছেন। সেই ছবি আসা যখন বন্ধ হয়ে গেল তখন ছবি দেখার জন্য ফিল্ম সোসাইটিনির্ভর হয়েছেন। অবশেষে হয়েছেন ভিডিও ক্যাসেটনির্ভর। গ্রেগরি পেকের অদেখা ছবি পরে ক্যাসেটে দেখেছেন। তবে হলে গিয়ে দেখার সে-মজা আর পাননি।
সত্যি কথা বলতে কী, গ্রেগরি পেককে তিনি ভালোবেসে ফেলেছিলেন রোমান হলিডে দেখার পর। প্রথম গুলিস্তানে ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। সাদাকালো ছবি। কী নিটোল পরিচ্ছন্ন প্রেমের গল্প। জনশ্রুতি ছিল, ইংল্যান্ডের রাজকুমারী মার্গারেটের জীবনের একটি বাস্তব ঘটনার ছায়া অবলম্বনে গল্পটি রচিত। ইতালির রাজধানী রোমে রাজকুমারী সরকারি সফরে হাঁফিয়ে উঠে চুপিসারে হারিয়ে গেলেন অচেনা হিসেবে। দেখা হলো একজন আমেরিকান সাংবাদিকের সঙ্গে। গাইড হিসেবে সারা রোম চষে বেড়াতে বেড়াতে প্রেমে পড়লেন দুজনেই। ফটোগ্রাফার বন্ধুর সঙ্গে আঁতাত করে ছবি তোলালেন অনেক। উদ্দেশ্য, বিশেষ 888sport world cup rate তৈরি করা। কিন্তু ভালোবাসা সাংবাদিককে এ-কাজ থেকে নিবৃত্ত করল। সংবাদ সম্মেলন শেষে চার চক্ষুর ব্যথিত মিলন এবং নিশ্চুপ বিদায়। অনেকের কাছে এটি সেকেলে রোমান্টিক ছবি। কিন্তু পরিচালনার গুণ এবং নিপুণভাবে রোম শহরকে ব্যবহার প্রভৃতি ছবির দৃশ্যগত মানকে অনেক উঁচুতে বেঁধে দিয়েছিল। তার ওপর অভিনয় ছিল অসাধারণ। রাজকুমারীর ভূমিকায় অড্রে হেপবার্ন, সাংবাদিকের ভূমিকায় গ্রেগরি পেক এবং আলোকচিত্রীর ভূমিকায় এডি অ্যালবার্টের অভিনয় এককথায় অনবদ্য। অড্রে হেপবার্ন অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন শ্রেষ্ঠ নায়িকার জন্য। কাইয়ুম চৌধুরীর দুঃখ হয়েছিল, গ্রেগরি পেক কেন পেলেন না। তিনিও তো খুব দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। শেষ দৃশ্যে সংবাদ সম্মেলন শেষে গ্রেগরি পেক ব্যথিত নয়নে রাজকুমারীকে দেখলেন, তারপর পেছন ফিরে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে ধীরে ধীরে কক্ষ থেকে নিষ্ক্রান্ত হলেন। ক্যামেরা তাঁর পেছন ফেরা ট্র্যাকিং করল, গ্রেগরি পেক মিলিয়ে গেলেন। অপূর্ব সেই দৃশ্য! কাইয়ুম চৌধুরীকে স্পর্শ করেছিল।
এসব ছাড়াও পরিচালক উইলিয়াম ওয়াইলার, যাঁর পরিচালিত বেস্ট ইয়ারস অব আওয়ার লাইভস দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী। তাঁর প্রিয় পরিচালকদের একজন ছিলেন তিনি। আর সবচেয়ে বড় কারণ রোম শহর। 888sport live chatীদের স্বপ্নের শহর। ছবি আঁকেন, কখনো বিদেশে যাননি, তার ওপর রেনেসাঁসের 888sport live chatীদের শহর। মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর ভাস্কর্য দিয়ে সাজানো শহর, এ-রকমের একটি ভাস্কর্যের সঙ্গে ফোন্তানা দ্য ত্রেভি, ত্রেভি ফোয়ারা যেখানে ছলছল শব্দে দিনরাত অনবরত পানি পড়ছে – জনশ্রুতি আছে, পেছন ফিরে ফোয়ারার পানিতে ধাতুমুদ্রা ছুড়ে ফেললে আবার রোমে ফিরে যাওয়া যায় – সেই ত্রেভি ফোয়ারায় কাইয়ুম চৌধুরী বহু বছর প্রৌঢ় বয়সে ধাতুমুদ্রা নিক্ষেপ করেছেন আবার ফিরে যাওয়ার মানসে। একবারের 888sport slot gameে তো 888sport live chatসমৃদ্ধ ইতালি দেখা কষ্টকর। যদিও ওই ছবিতে নেই কিন্তু ফ্রাঙ্ক সিনাত্রার গাওয়া ‘থ্রি কয়েনস ইন দ্য ফাউন্টেন’ ছিল কাইয়ুম চৌধুরীর প্রিয় গানের একটি।
একটা মজার সময়ে তিনি দেখেছেন গানস অব নাভারন ছবিটি। সদ্য বিয়ে করেছেন। শ্যালিকাদের নিয়ে সমৃদ্ধশালী হয়ে গুলিস্তান হলে এই অনন্যসাধারণ রোমাঞ্চকর ছবিটি দেখেন। লি জে টম্পসনের পরিচালনায় ছবিটি যুদ্ধের পটভূমিকায় তৈরি। তুরস্কের একটি দ্বীপে দুটো বড় কামান ধ্বংস করার জন্য একটি দলের অকুতোভয় কার্যকলাপ, দারুণ উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মুখোমুখি। গ্রেগরি পেক ছিলেন সেই টিমের অন্যতম ক্যাপ্টেন কিথ মেলোরির ভূমিকায়। তাঁর অনুসন্ধিৎসু চাহনী, সতর্ক পদক্ষেপ তাঁর সহঅভিনেতাদের মধ্যেও অনন্য করে তুলেছিল। সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন বাঘা বাঘা সব অভিনেতা-অভিনেত্রী : ডেভিড নিভেন, অ্যান্থনি কুইন, স্ট্যানলি বেকার, অ্যান্থনি কোয়েলে, জেমস রবার্টসন জাস্টিস, আইরিন পাপাস, গিয়াস্কালা প্রমুখ। সাদাকালো আরেকটি অসাধারণ ছবি হিচ্ককের স্পেল বাউন্ডে গ্রেগরি পেকের অভিনয় কাইয়ুম চৌধুরীকে মুগ্ধ করেছিল। একটি মানসিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান একজন ক্ষমাপ্রাপ্ত প্রতারক। সহযোগীর ভালোবাসা তাঁকে সাহায্য করেছিল রহস্য উদ্ঘাটনে। ইনগ্রিড বার্গম্যান ছিলেন সেই সহযোগীর ভূমিকায়। হিচ্ককের মুনশিয়ানায় এই মনস্তাত্ত্বিক রহস্যপূর্ণ ছবিটি গ্রেগরি পেক ও বার্গম্যানের অসাধারণ অভিনয়ে উজ্জ্বল। পেকের স্বপ্নদৃশ্যটি পরিকল্পনা করেছিলেন স্পেনের খ্যাতিমান 888sport live chatী সালভাদর দালি। পরিচালনার জন্য ছবিটি অস্কার নমিনেশন পেয়েছিল। আরেকটি ছবির কথা কেউ উল্লেখ করেন না, কিন্তু কাইয়ুম চৌধুরীর খুব ভালো লেগেছিল। ছবিটির নাম বির্হোল্ড এ পেল হর্স। গ্রেগরি পেক শুধু নন, পরিচালক ফ্রেড জিনেম্যান ছিলেন তাঁর অন্যতম আকর্ষণ। সাদাকালোয় তাঁর পরিচালিত এরিখ মারিয়া রেমার্কের অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট দেখেও মুগ্ধ হয়েছিলেন। এ-ছবিটিও ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। স্পেনের গৃহযুদ্ধের ওপর নির্মিত এ-ছবিতে যুদ্ধশেষে একজন গেরিলাযোদ্ধা নির্বাসনে চলে যান, এ-রকম কিছু একটা ছিল। গ্রেগরি পেকের সঙ্গে ছিলেন অ্যান্থনি কুইন, ওমর শরিফ প্রমুখ। ডিজাইনিং উম্যান নামে পেক-অভিনীত আরেকটি ছবি দেখেছিলেন তিনি। ছবিতে পেক ছিলেন ক্রীড়া সাংবাদিকের ভূমিকায়, বিয়ে করেন একজন ফ্যাশন ডিজাইনারকে। ভিনসেন্ট মিনেলি ছিলেন পরিচালক, যাঁর কাছ থেকে পরবর্তী সময়ে আমরা পেয়েছি আর্ভিং স্টোনের লেখা ভ্যানগঘের জীবনী অবলম্বনে লাস্ট ফর লাইফ ছবিটি।
হেরমান মেলভিলের বিখ্যাত 888sport alternative link মবিডিকের চিত্রায়ণ কাইয়ুম চৌধুরীকে খুবই আলোড়িত করেছিল। এ-ছবিতে গ্রেগরি পেক ক্যাপ্টেন আহাবের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। একটি সাদা তিমিকে মারার জন্য ক্যাপ্টেন আহাব একটি পা হারিয়েছেন, কিন্তু তিমিটিকে ঘায়েল করতে পারেননি। সেই তিমি তাঁকে তাড়া করে ফিরছে। তিনি ঘায়েল করলেন তিমিটিকে কিন্তু নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে। গ্রেগরি পেকের অনবদ্য অভিনয়ে ক্যাপ্টেন আহাবের দৃঢ়চিত্ততা, জাহাজের ডেকে একাকী অন্ধকার নিস্তব্ধ রাত্রিতে কাঠের পায়ের ঠক্ঠক্ আওয়াজ, দৃঢ়বদ্ধ চোয়াল, অস্ফুট কণ্ঠে সংলাপ মিলিয়ে ক্যাপ্টেন আহাব যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। ছবির পরিচালক জন হাস্টন। তিনিই ফরাসি চিত্রকর তুলো লুত্রেককে নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন মুল্যাঁ রুজ।
অবশেষে চারবার অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড নমিনেশন পাওয়ার পর গ্রেগরি পেকের শিকে ছিঁড়েছিল হারপার লি-রচিত রবার্ট মুলিগানের টু কিল এ মকিংবার্ড ছবিতে। আমেরিকার দক্ষিণের একটি ছোট্ট শহরে একজন আইনজীবী এটিকাস ফিঞ্চের ভূমিকায় গ্রেগরি পেকের অভিনয় ছিল অনবদ্য। একজন কালো আমেরিকানের পক্ষে আইনি লড়াই চালিয়েছিলেন পেক। অভিযোগ ছিল সাদা রমণী ধর্ষণের। সে-সময়টা প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি চেষ্টা করছেন বর্ণবৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে কালোদের অধিকার প্রতিষ্ঠার। একজন সচেতন 888sport live chatী হিসেবে গ্রেগরি পেক একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন তাঁর অভিনীত চরিত্রের সঙ্গে। সামাজিক চেতনাবোধের সঙ্গে একটি নির্মল পরিবেশ ছবিটিকে বিশিষ্টতা দান করেছিল। ছবিটির উল্লেখযোগ্য আরেকটি দিক হচ্ছে – এর চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন গ্রেগরি পেক স্বয়ং এবং চিত্রনাট্যের জন্যও ছবিটি অস্কার পেয়েছিল। কাইয়ুম চৌধুরী এরপর ভিডিও ক্যাসেটে ইয়ার্লিং নামে একটি ছবি দেখেছিলেন পেকের। পারিবারিক ছবি। কজন কৃষিজীবীর ছেলের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া হরিণশিশুর সম্পর্ক নিয়ে নির্মিত হয়েছিল ছবিটি। মারজোরি কিনান রলিংসের গল্প, ক্ল্যারেন্স ব্রাউনের পরিচালনায় নির্মিত এ-ছবিতে পেক অস্কার নমিনেশন পেয়েছিলেন। আর্নেস্ট হেমিংওয়ের 888sport alternative link স্নোজ অব কিলিমানজারো ছবিতে পেক একজন আহত শিকারির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। উদ্ধারের অপেক্ষায় প্রহর গোনার ফাঁকে ফাঁকে ভালোবাসার 888sport sign up bonusতে অতীত জীবনে ফিরে যাচ্ছেন বারবার। সুজান হেওয়ার্ড ছিলেন তাঁর বিপরীতে, সঙ্গে আবা গার্ডনার। পেকের উপস্থিতিই ছিল উজ্জ্বল, বিশেষ করে প্রেমের দৃশ্যাবলিতে। ম্যাককেনাস গোল্ড ছবিতে পেকের সঙ্গে ছিলেন ওমর শরিফ, টেলি সাভালাস প্রমুখ। মৃত্যুপথযাত্রী কজন রেড ইন্ডিয়ানের কিংবদন্তির স্বর্ণ উপত্যকার মানচিত্র হস্তান্তর নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটেছিল। বেশ শ্বাসরুদ্ধকর সব ঘটনা ছিল ছবিটিতে।
কাইয়ুম চৌধুরীর ভাষায় : ‘আমাদের সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা সুদর্শন গ্রেগরি পেক তাঁর অভিনয়মাধুর্যে সবার চিত্ত জয় করেছিলেন। তাঁর স্মিত হাসি, বাচনভঙ্গি, স্বরক্ষেপণ তাঁকে বিশিষ্টতা দান করেছিল। জন এফ কেনেডির মৃত্যুর পর তোলা ইউএসআইএস প্রযোজিত ডকুমেন্টারি ইয়ার্স অব লাইটনিং ডেজ অব ড্রামসের ধারাভাষ্য ছবিটিকে বিশিষ্টতা দান করেছিল শুধু পেকের স্বরমাধুর্যের জন্য।
বেশ কিছু 888sport app download apk লিখেছেন পেক। ছবিও এঁকেছেন। তবে অভিনয়কলাতেই তাঁর সিদ্ধি। ছিমছাম জীবনের অধিকারী পেক কখনো গুজবের শিকার হননি রুপালি পর্দায় বিচরণ করেও। তাঁর অভিনয়888sport live chat তাঁকে সারা বিশ্বে অবি888sport app download for androidীয় আসনে স্থান করে দিয়েছে। সারা পৃথিবীর প্রিয় অভিনেতা পেক আমাদের হৃদয়ে চির অম্লান, চির অমর।’
এই ফাঁকে একটা কথা উল্লেখ করা যায়। ষাটের দশকেই ছবির নেশায় কাইয়ুম চৌধুরী একটি ছবির কাগজও বার করেছিলেন বন্ধুবান্ধব মিলে। নাম ছিল ছায়াছবি। কাগজটি ছিল স্বল্পায়ু। কাইয়ুম চৌধুরীর এই ছবি দেখার নেশায় অনেকেই ছিলেন তাঁর সঙ্গী। একসময় ছিলেন বড় ভাই, তারপর সতীর্থরা ছিলেন। অতঃপর সহকর্মী 888sport live chatীরা তাঁর সিনেমা হলের সঙ্গী হলেন। এর মধ্যে প্রধানভাবে উল্লেখ করা যায় খ্যাতিমান 888sport live chatী মোহাম্মদ কিবরিয়ার কথা। ইতিমধ্যে সে-কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সিনেমা দেখতে ভালোবাসতেন 888sport live chatী মোহাম্মদ কিবরিয়া। ষাটের দশকে গুলিস্তান-নাজে হলিউডের যেসব ছবি আসত কাইয়ুম চৌধুরী ও মোহাম্মদ কিবরিয়া ছিলেন তার নিয়মিত দর্শক। বছর শেষে ছবি দেখানো শেষ করার মানসে গুলিস্তানে দৈনিক ছবি-বদল হতো তিনটা শো দিয়ে। ১৫ দিনে ১৫টি ছবি। তাঁরা দুজন সিজন টিকিট কাটতেন। কী সুন্দর সুন্দর ছবি দেখেছেন তখন! গ্যারি কুপার ও অড্রে হেপবার্নের লাভ ইন দি আফটারনুন ও ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফানি। অ্যালেক গিনেসের দ্য ম্যান উইথ দ্য গ্রে ফ্লানেল স্যুট, ব্রিজ অন দ্য রিভার কাওয়াই। মর্নিং-শো দেখতেন গুলিস্তানে, রোববার। সারা বছর। এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছিল তখন একদম শেষ সময়ে গেলেও তাঁদের জন্য টিকিট থাকত। বুকিং অফিসের আসলাম আর আকরাম বলে দুজন মামা-ভাগ্নে বসতেন। গেলেই হাসিমুখে টিকিট বাড়িয়ে দিতেন। ছিলেন ছবির পোকা। তাই তাঁরা যে যাবেন সে-ব্যাপারে ওঁরা নিশ্চিত থাকতেন। যদিও অনেক আগে থেকেই হলের বাইরে নোটিশ ঝোলানো থাকত ‘হাউসফুল’। তখন হাফটাইমের পরে আসল ছবি শুরু হতো। নাজে অবশ্য ছবি দেখতেন রাতের বেলায়। অ্যালেক গিনেসের দ্য হর্সেস মাউথ নামে একটি ছবি দেখেছিলেন। একজন 888sport live chatীর কাহিনি। ফাঁকা স্পেস পেলেই ছবি আঁকার পরিকল্পনা। দুই তালু একত্র করে কম্পোজিশনে লেগে যেতেন। ছবিতে ব্রিটিশ 888sport live chatী জন ব্রাটবির কাজ ব্যবহার করা হয়েছিল। নাজে ছবি দেখার আগে খেয়ে নিতেন চৌ চিন চুতে। ঠান্ডা মারি বিয়ার আর চিকেন কর্ন স্যুপ, খুব গরম।
১৫-১৬ বার দেখেছেন পথের পাঁচালী : ‘নিজেকে মনে হয়েছে নিশ্চিন্দিপুরের সেই অপু’
পথের পাঁচালী live chat 888sportটির কথা স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন। এই ছবিটি কাইয়ুম চৌধুরী দেখেছেন ১৫-১৬ বার। প্রতিবার তাঁর কাছে উন্মোচিত হয়েছে এর নতুন নতুন দিক। প্রথমবারে তিনি তো ছবিটির কিছুই দেখতে পারেননি। কেননা, চোখের জলে বারবার দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গেছে। শুধু পথের পাঁচালী live chat 888sport নয়, 888sport alternative linkটিও ছিল তাঁর প্রিয় এবং আরো প্রিয় ছিল live chat 888sportকার সত্যজিৎ রায়। যাঁকে তিনি প্রথমে প্রচ্ছদ888sport live chatী হিসেবেই আবিষ্কার করেন সিগনেট প্রেসের বইয়ের সূত্রে এবং বিমুগ্ধ চিত্তে তাঁর ভক্ত হয়ে যান। তারপর দেখেন তাঁর অমর কীর্তি পথের পাঁচালী। এরপর ১৯৫৮ সালে যখন কলকাতা যান তখন তাঁকে চাক্ষুষ দেখার সুযোগ লাভ করেন। সেই সব 888sport sign up bonus অক্ষয় হয়ে আছে তাঁর মনের গভীরে।
খুব সম্ভব ১৯৫৫ সালে পথের পাঁচালী প্রথম দেখেন গুলিস্তান সিনেমা হলে। সেটা বাণিজ্যিক মুক্তি ছিল না ছবিটির। ভারতীয় হাইকমিশনের সৌজন্যে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। অনেক গুণিজন-সমভিব্যহারে ছবিটি দেখেছিলেন। কিন্তু দেখেছিলেন বললে বলাটা বোধহয় ভুল হবে। কিছুই দেখেননি। পুরো ছবিটি প্রদর্শনকালে চোখ দুটি অশ্রুভারাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছিল বারবার। চোখ মুছছিলেন আর ঝাপসা চোখে পর্দার দিকে তাকাচ্ছিলেন। একটা তীব্র যন্ত্রণা, হাহাকার যেন তাঁকে দুমড়ে-মুচড়ে দিচ্ছিল। বারবার তাঁর মনে হচ্ছিল, তিনি যেন নিজের জীবনকে দেখছেন, নিজেকে দেখছেন। তিনিই যেন নিশ্চিন্দিপুরের সেই অপু। বাংলা live chat 888sportকে জীবনের অংশ বলেই সেই প্রথম তাঁর মনে হয়েছিল। এরপর ছবিটি ১৫-১৬ বার দেখেছেন। যতবার দেখেছেন, ততবারই ছবির নতুন নতুন দিক তাঁর কাছে উন্মোচিত হয়েছে। live chat 888sportের বিভিন্ন আঙ্গিক তাঁর বোধকে শাণিত করেছে। live chat 888sportের ভাষাকে হৃদয়ঙ্গম করেছেন, বুঝতে শিখেছেন। যখনই সুযোগ পেয়েছেন পথের পাঁচালী দেখেছেন – হঠাৎ নতুন অর্থ আবিষ্কৃত হতো – চোখে থাকত মুগ্ধ বিস্ময়। যদিও জানতেন, সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি পথের পাঁচালী।
কৈশোরে আম আঁটির ভেঁপু পড়েছিলেন গোগ্রাসে। পথের পাঁচালীর কিশোর সংস্করণ। বইয়ের রঙিন প্রচ্ছদ, ভেতরের সাদাকালো ছবি টেনেছিল মূল বইটি পড়তে। তখনো পড়তে পড়তে চোখ ঝাপসা হতো। ছবির মতো একটানা নয় যদিও। ছবি দেখার পর তাঁর মনে হলো, আম আঁটির ভেঁপুই হলো পথের পাঁচালীর সত্যজিতের করা চিত্রনাট্য, যা বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় লিখে গেছেন। সবচেয়ে বিস্ময়ের, আম আঁটির ভেঁপুর ইলাস্ট্রেশন পথের পাঁচালী ছবির একেকটি ফ্রেম। আম আঁটির ভেঁপুতে ছুটে চলা অপু-দুর্গার ছবি পথের পাঁচালী ছবির লোগো হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। যখন সত্যজিৎ রায় ছবি তৈরি করার কথা ভাবেননি, লন্ডনে যাচ্ছেন ডি জে কিমারের হেড অফিসে, গ্রাফিক ডিজাইনে উন্নততর প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য; জাহাজে বসে সিগনেট প্রেসের দিলীপ কুমার গুপ্তের নির্দেশে আম আঁটির ভেঁপুর প্রচ্ছদ ও ইলাস্ট্রেশনের জন্য পড়ছেন পান্ডুলিপি। মুগ্ধ বিস্ময়ে ছবি তৈরির চিন্তা তখন তাঁর মাথায়। সত্যজিৎ রায় ছবি দেখতেন প্রচুর। ছিলেন হলিউডি ছবির একনিষ্ঠ ভক্ত – চিত্রনাট্যের খসড়াও ইলাস্ট্রেশনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মাথায় তৈরি হয়েছিল।
পরতে পরতে এ-ছবির মুগ্ধ বিস্ময়ের দিকগুলো কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে উন্মোচিত হয়েছে প্রতি দর্শনে। পুঁথির হরফে লেখা ছবির টাইটেল মনে করিয়ে দিত, ছবির নায়ক হরিহর পুঁথি লেখেন। কথকতা তাঁর পেশা। ছবির আবহ তখনই তৈরি হয়ে যায়, যখন পশ্চাৎপটে রবিশঙ্করের অসাধারণ সংগীত সেতারে করুণ আবহ তৈরি করে। সত্যজিৎ কখনো গ্রাম দেখেননি। শান্তিনিকেতনই তাঁর দেখা প্রথম গ্রাম। অথচ সত্যজিতের চোখে সুব্রত মিত্রের ক্যামেরায় বাংলা কী প্রাণবন্ত, সজীব! একটি দৃশ্য সবসময় কাইয়ুম চৌধুরীর চোখে জীবন্ত ভাসত, চাদর মুড়ি দিয়ে অপুর তেলের বোতল হাতে, ছাতা বগলে মেঘমেদুর আকাশের গুড়গুড় শব্দে গ্রামের পথে ঈষৎ হাওয়ায় হেঁটে যাওয়া – বর্ষার আগমনের কী সুন্দর চিত্রায়ণ! বর্ষা নেমেছে, অপু-দুর্গার বৃষ্টিতে ভিজে আম কুড়ানো কাইয়ুম চৌধুরীকে শুধু শৈশবের কথাই মনে করিয়ে দিত। দিগন্তবিস্তৃত মাঠে কাশবনে অপু-দুর্গার ছোটাছুটি – টেলিগ্রাফের খুঁটিতে শব্দ শোনা, দূরে ঝিকঝিক আওয়াজ – সাদা কাশবনের পশ্চাৎপটে কালো ধোঁয়া ছেড়ে ট্রেনের আগমন – গ্রামীণ জীবনের মাঝে আধুনিকতার আভাস – ট্রেনের এ-পাশ থেকে ও-পাশে অপুর বিস্ময়ভরা চোখ – এরকম অজস্র চিত্রকল্প ছবিতে ছড়িয়ে আছে। সাদাকালোর সুষম ব্যবহারও এ-ছবির একটি অবাক বিস্ময়কর দিক। এরকম অজস্র দৃশ্যের মধ্যে বর্ষার আগমনের চিত্র – মাছ ধরারত টেকোর মাথায় বৃষ্টির ফোঁটা, পদ্মপাতায় জলফড়িংয়ের নাচ, বাতাসে পদ্মপাতার কম্পন অভাবনীয় দ্যোতনার জন্ম দিত। সবচেয়ে হৃদয়-নিংড়ানো যে-দৃশ্যটি সত্যজিৎ উপস্থাপন করেছেন, সেটি কাশী যাওয়ার আগে গোছগাছ করার মুহূর্তে অপুর তত্ত্ব-তল্লাশিতে তাকের ওপর দুর্গার একান্ত সংগ্রহের ঝাঁপিতে চুরি করা পুঁতির মালা আবিষ্কার, যেটাতে দুর্গার অস্বীকৃতি মূঢ় করে দেয় অপুকে – ছুড়ে ফেলে পুকুরের পানায়, গলার মালার আঘাতে পানা সরে যায় বৃত্তাকারে, আবার বুজে যায় – বিস্তৃতির অতলে ডুবে যায় দুর্গা। একটি অবি888sport app download for androidীয় চিত্রকল্প, যা সবসময় কাইয়ুম চৌধুরীর হৃদয়তন্ত্রীতে আঘাত হেনেছে। এরকম অজস্র চিত্রকল্প ছড়িয়ে আছে পথের পাঁচালীর প্রতিটি ফ্রেমে।
পথের পাঁচালীর ইউনিটে বংশী চন্দ্রগুপ্ত ছাড়া আর কারো live chat 888sportে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। কাইয়ুম চৌধুরী অত্যন্ত বিস্ময়াভিভূত হন পথের পাঁচালীর প্রত্যেক 888sport live chatীর অভিনয় প্রতিভার উৎকর্ষ দেখে – এক কথায় যা অনবদ্য। এটা সত্যজিতের পক্ষেই বোধহয় সম্ভব ছিল তাঁর পারিবারিক শিক্ষা ও ঐতিহ্যের কারণে। ইন্দির ঠাকরুনের চরিত্রে চুনীবালা দেবীর পুনরাবির্ভাব বোধহয় সত্যজিতের কারণেই সম্ভব হয়েছে। সর্বজয়ার চরিত্রে করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় অনন্য। কাইয়ুম চৌধুরী কল্পনাই করতে পারেন না অন্য কাউকে এই নন্দিত চরিত্রে। নাটকে অভিনয় ছাড়া করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের live chat 888sportে অভিনয়ের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি পরবর্তীকালে দেখেছেন 888sport appয়, যখন তাঁর স্বামী সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় হাইকমিশনে প্রথম সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন 888sport appয় চারুকলা ইনস্টিটিউটে মৃৎ888sport live chat বিভাগে খন্ডকালীন ছাত্রী ছিলেন। মৃদুভাষী, সংস্কৃতিমনা করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তখন তিনি দেখেছেন। তাঁর সঙ্গে কাইয়ুম চৌধুরীর আলাপও হয়েছে অভিনয় সম্পর্কে, বিশেষ করে, পথের পাঁচালী নিয়ে।
অর্ধশত বছরেরও বেশি আগে নির্মিত সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী কাইয়ুম চৌধুরীর অন্যতম প্রিয় ছবি এবং যখনই সুযোগ পেয়েছেন ছবিটি তিনি উপভোগ করেছেন; সেইসঙ্গে পরবর্তী দুটি – অপরাজিত ও অপুর সংসারসহ। অপুত্রয়ী কাইয়ুম চৌধুরীর প্রিয় ছবির তালিকায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
‘আমার পুরো শৈশবটাই কেটেছে সিনেমাহলে’
পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে কাইয়ুম চৌধুরী ছবি দেখার নেশায় চষে বেড়িয়েছেন 888sport appর সিনেমাহলগুলো। ‘ব্রিটানিয়া’ থেকে গেছেন ‘মানসী’তে; সেখান থেকে জনসন রোডের ‘মুকুল’ সিনেমা হল (বর্তমানের ‘আজাদ’); তারপর সদরঘাটের ‘রূপমহল’, যেটি ছিল ভালো বাংলা ছবি প্রদর্শনের জন্য বিখ্যাত, ওয়াইজঘাটে ছিল ‘মায়া’; সাতরওজার কাছে ‘প্যারাডাইস’; আরমানিটোলার ‘নিউ পিকচার হাউস’, ছিল ‘লায়ন’ সিনেমা হল – এর কোনোটিই বাদ যায়নি তাঁর এই চষে বেড়ানোর ক্ষেত্র থেকে। ‘প্যারাডাইস’ সিনেমাহলে দেখেছেন দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ ছবি, ‘মানসী’তে দেখেছেন মেহবুব প্রোডাকশনের আন ছবি। ভারতের প্রথম রঙিন এই ছবিতে অভিনয় করেছেন দিলীপ কুমার, নিম্মি, নাদিরা প্রমুখ। দিলীপ কুমার-অভিনীত আরেক ছবি আজাদ দেখেছেন লায়ন সিনেমা হলে। সেই ছবিতে দুই নৃত্য888sport live chatীর নাচ দেখে সামনের সারির অভিভূত দর্শকেরা পয়সা ছুড়ে মেরেছে, পয়সা কে নেবে তার ঠিক নেই জেনেও।
আর্ট কলেজের ছাত্র থাকাবস্থায়ই কাইয়ুম চৌধুরী দেখেছেন অ্যাডভেঞ্চারস অব রবিনহুড। নায়ক এরল ফ্লিন। গরিবের জন্য তিনি ডাকাতি করতেন। বইটি আগেই তাঁর পড়া ছিল। এসব কারণে তাঁর ভক্ত হয়ে গেলেন কাইয়ুম চৌধুরী। রাজা জন যখন তীর্থ করতে গেলেন, তখন রাজ্যের দায়িত্বে নিয়োজিত তাঁর ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন রবিনহুড। তারপর রাজা যখন ফিরে এলেন তাঁর পায়ের কাছে তরবারি নামিয়ে রেখে প্রণত হলেন। অসাধারণ সে-দৃশ্য অভিভূত করেছিল কাইয়ুম চৌধুরীকে। এরল ফ্লিন-অভিনীত আরেকটি ছবি দেখেছেন কাইয়ুম চৌধুরী – ব্ল্যাক সোয়ান। জলদস্যুতার কাহিনি। জলদস্যুর চরিত্রে ফ্লিনের অভিনয় ছিল মনোমুগ্ধকর। হেমিংওয়ের 888sport alternative link দ্য সান অলসো রাইজেস অবলম্বনে নির্মিত live chat 888sportেও অভিনয় করেছেন এরল ফ্লিন। সেই ছবিসহ হেমিংওয়ের 888sport alternative link অবলম্বনে নির্মিত সব ছবিই দেখেছেন কাইয়ুম চৌধুরী। দি ওল্ডম্যান অ্যান্ড দ্য সি, দ্য ফেয়ারওয়েল টু আর্মস। এসব ছবি দেখে তাঁর মূল্যায়ন, ‘888sport live footballনির্ভর live chat 888sport ভালো হয় না বলে যে-কথা প্রচলিত আছে, তা ঠিক নয়।’ বিখ্যাত ব্রিটিশ live chat 888sport-পরিচালক ডেভিড লিন নির্মিত চার্লস ডিকেন্সের 888sport alternative link অবলম্বনে অলিভার টুইস্ট বা গ্রেট এক্সপেকটেশনস দেখেও তাঁর একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। ডেভিড লিনের পরবর্তীকালের ছবি লরেন্স অব অ্যারাবিয়া কিংবা ডক্টর জিভাগো দেখেও বিমোহিত হয়েছেন কাইয়ুম চৌধুরী। তাঁকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে ডেভিড লিনের অটোবায়োগ্রাফি, যার প্রথম লাইনটিই হলো – I spent my childhood in a movie house. কাইয়ুম চৌধুরী এই বাক্যটির প্রতি একান্তভাবে একাত্মতা বোধ করে নিজের অবস্থাও অনুরূপ বলে বিবেচনা করতেন। পার্থক্য শুধু এই, লিন চিত্রপরিচালক হতে পেরেছিলেন, কিন্তু তিনি হতে পারেননি।
live chat 888sportের সহকারী পরিচালক
কিন্তু কাইয়ুম চৌধুরীও চেষ্টা করেছিলেন। সে-ইতিহাসটিও বলা প্রয়োজন। live chat 888sport দেখতে দেখতে live chat 888sportবিষয়ক সবকিছুর ব্যাপারে আগ্রহ ও কৌতূহল জন্মেছিল সেই কৈশোর থেকেই। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ছবি, তাঁদের নেপথ্য জীবনকাহিনি – এসবই ছিল আকর্ষণের বিষয়। ফলে এ-বিষয়ে তিনি পড়াশোনাও করতে থাকেন। ঝোঁক সৃষ্টি হয় সিনেমা পত্রিকার প্রতি। রেলওয়ে জংশন স্টেশনগুলোতে এ জে হুইলার অ্যান্ড কোম্পানির যে বুকশপগুলো ছিল, তাতে পাওয়া যেত সারা ভারত থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকা। আর্টপেপারে দিল্লি থেকে বের হতো বাবুরাও প্যাটেল-সম্পাদিত ফিল্ম ইন্ডিয়া, মুম্বাই থেকে বের হতো কমর সালেহ-সম্পাদিত মোশন পিকচার ম্যাগাজিন, মাদ্রাজ থেকে দ্য সাউন্ড, কলকাতা থেকে কালিশ মুখোপাধ্যায়-সম্পাদিত রূপমঞ্চ, বি কে ঝা-সম্পাদিত শট, সুধাংশু বকশি-সম্পাদিত রূপাঞ্জলি, নিকুঞ্জ পাত্রী (পূর্ণেন্দুপত্রীর কাকা)-সম্পাদিত চিত্রালী প্রভৃতি। এর মধ্যে তিনি নিয়মিত কিনতেন রূপমঞ্চ। বাকিগুলো স্টলে দাঁড়িয়ে দেখতেন, আকর্ষণীয় কাহিনিগুলো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই পড়ে নিতেন। live chat 888sportজগতের প্রতি আকর্ষণটা কত তীব্র ছিল তা একটি ঘটনা থেকে বোঝা যাবে। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান 888sport live chat মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে 888sport appয় প্রথম 888sport live chat-প্রদর্শনী হয়। তাতে চিত্রালী পত্রিকার (888sport app থেকে প্রকাশিত) একটি স্টল ছিল। চিত্রালী সম্পাদক এসএম পারভেজকে দেখার জন্য কাইয়ুম চৌধুরী ওই স্টলে গিয়েছিলেন। এসএম পারভেজের সঙ্গে তিনি কথাও বলেছিলেন, জানিয়েছিলেন এই জগতের প্রতি তাঁর আকর্ষণের কথা। এই আকর্ষণ থেকেই তিনি চিত্রালী পত্রিকা অফিসে আড্ডা দিতে যেতেন। এই আড্ডাসূত্রে অবজারভার-চিত্রালী হাউসে তাঁর চাকরি হয়ে যায় ১৯৬১ সালের দিকে। সুতরাং নিয়মিতভাবে সিনেমার লোকজনের সাহচর্য লাভের সুযোগ এসে যায়। এই অফিসেই একদিন রেডিওর মহিউদ্দিন সাহেব একটি live chat 888sport নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এসএম পারভেজকে তাঁর সঙ্গে থাকার অনুরোধ জানান। সৈয়দ শামসুল হক তাঁর অনুরোধে সাড়া দিয়ে মাটির পাহাড় নামক গল্প নিয়ে এর কাহিনি রচনা করেন। কাইয়ুম চৌধুরীকে তিনি সহকারী হিসেবে মনোনীত করেন। এই live chat 888sportের নায়ক নির্বাচিত হন কাফি খান। তিনি ছিলেন নাট্যাভিনেতা। মূল অভিনেত্রী হিসেবে আমন্ত্রিত হন সুলতানা জামান। তাঁর স্বামী কিউএম জামান এই live chat 888sportে ক্যামেরাম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সহ-অভিনেত্রীর ভূমিকায় ছিলেন (চিকিৎসক) রওশন আরা। এই live chat 888sportের শুটিং উপলক্ষে কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম এফডিসিতে যান। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাইয়ুম চৌধুরী প্রতিটি দৃশ্যের কাহিনি, অভিনেতা-অভিনেত্রীর পোশাকসহ তাঁদের সার্বিক অবস্থান, দৃশ্যের রূপ, প্রতিটির কন্টিনিউটি লিখে রাখতেন পরবর্তী দৃশ্যের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রয়োজনে। এছাড়া পরিচালকের অভিপ্রায় অনুযায়ী দৃশ্য-পরিকল্পনায় জ্বলজ্বলে রূপ আনার জন্য সেটের রূপ চকচকে করতে হয়েছে।
এমনকি সব লজ্জা ভেঙে পরিচালকের নির্দেশে নায়িকার গালের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর জন্য সেখানেও হাত দিয়ে গ্লিসারিন মাখিয়ে দিতে হয়েছে। এ-ব্যাপারে দ্বিধান্বিত হওয়ার জন্য পরিচালকের ধমক খেতে হয়েছে যে, এমন লজ্জা করলে তো এ লাইনে থাকতে পারবেন না। মহিউদ্দিন আহমদের দ্বিতীয় ছবি শীত বিকেলেরও কাহিনি রচনা করেন সৈয়দ শামসুল হক। কাইয়ুম চৌধুরী এর পোস্টার করে দেন। এছাড়া ১৯৬৩-৬৪ সালের দিকে সৈয়দ শামসুল হক ও কাইয়ুম চৌধুরী দুজনে মিলে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর কেরায়া গল্প অবলম্বনে চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন। যদিও ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারেনি।
তবে ১৯৬৫ সালে শেক্সপিয়রের কমেডি অব এররস অবলম্বনে সৈয়দ শামসুল হক নির্মাণ করেন ফির মিলেঙ্গে হাম দোনো শীর্ষক এক উর্দু ছবি। বৃহত্তর পাকিস্তানি বাজারের কথা চিন্তা করে উর্দু ছবি নির্মাণের এই পরিকল্পনা। আর এই চিত্রনির্মাণের সঙ্গেও কাইয়ুম চৌধুরী যুক্ত ছিলেন সহকারী পরিচালক হিসেবে।
কিন্তু এসব ব্যর্থতাকে ছাপিয়ে সিনেমা দেখার নেশা, পুরনো সিনেমার সিডি, ডিভিডি সংগ্রহ, live chat 888sportের অসাধারণ সব চিত্রকল্প থেকে নিজ চিত্র-পরিকল্পনাকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস প্রভৃতি থেকে তিনি এতটুকু নিবৃত্ত হননি। এক্ষেত্রে আমরা তাঁর মধ্যে শেষ জীবন পর্যন্ত লক্ষ করেছি যৌবনকালের উদ্যম ও আবেগ।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.