কোমল রোদ্দুরে দাঁড়ানো শেষ যুদ্ধে যাবার উদ্ভিদ

যেদিন থেকে সংবাদ সাময়িকী পড়া শুরু করেছি, একেবারে কৈশোরের শুরুতে, সেদিন থেকে 888sport live football সম্পাদক আবুল হাসনাতের নাম শুনেছি না কি তারও আগে থেকে, সে-কথা আজ আর মনে নেই। বড় ভাইবোনদের 888sport live footballচর্চা এবং আলোচনার সুবাদে 888sport live football সম্পাদনার সঙ্গে একাকার হয়ে যাওয়া তাঁর নাম জেনে বড় হয়েছি। সপ্তাহান্তের 888sport live footballপাঠের অপার আনন্দ স্তরে স্তরে সাজিয়ে রাখতেন যে-কবি, শুনতাম তিনি বেজায় রাশভারি এক মানুষ। আলোচনাটা অনেকটা এমন ছিল যে, 888sport live footballে যশোপ্রার্থী তরুণরা দুরুদুরু বুকে তাঁর টেবিলে লেখা দিয়ে আসতেন, কারো দিকে তিনি চোখ তুলে তাকাতেন, সবার তেমন সৌভাগ্য হতো না। কথা নাকি একেবারে হতোই না কারো সঙ্গে। এসব নিয়ে অনেকের অনুযোগ থাকলেও সেই নির্লিপ্তির ব্যূহ ভেদ করে যাদের লেখা ছাপা হতো তাঁরা বর্তে যেতেন। সংবাদ সাময়িকীতে ছাপা হওয়া ছিল একধরনের 888sport live footballস্বীকৃতি। সেই স্কুলজীবনে আমরা ভাইবোনেরা ওঁৎ পেতে থাকতাম বৃহস্পতিবারের সংবাদ সাময়িকী কে পাবে হাতে আগে সেই প্রতিযোগিতায়। হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে পা হড়কে দোতলার সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে চোট লাগার ইতিহাসও আছে। হৃৎকলমের টানে, বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ, জলেশ্বরীর গল্প, অথবা পুষ্পকথা, অলস দিনের হাওয়া, 888sport app download apk, ছোটগল্প গোগ্রাসে গেলার দিন তখন। বিশ্ব888sport live footballের 888sport app download apk latest version, স্থাপত্য, সংগীত, চিত্রকলা, বই আলোচনা। দেশের সব বড় কবি, 888sport live footballিক, 888sport app download apk latest versionক, বই ও চিত্র-সমালোচক, গানের সমঝদার সবার মিলনমেলা ছিল এই সাময়িকী। এক সপ্তাহের অপেক্ষা দীর্ঘ বিরহের মতো তখন। সেইসব যাঁর সম্পাদনায় বের হতো, তিনি একটু রাশভারি না হলে মানায়, ভাবতাম সেইসব দিনে। 

অষ্টম কিংবা নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে আমার ঠিক আগের দাদা তুষার গায়েনের এক 888sport app download apk ছাপা হলো গণ888sport live football পত্রিকায়। সবে তিনি তখন বরিশাল ব্রজমোহন কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। সেই পত্রিকার সম্পাদকও আবুল হাসনাত। মনের মধ্যে তাই গেঁথে গেল সম্পাদক হাসনাতভাইয়ের নাম। তখন ছাত্র ইউনিয়ন করি। হাতে এলো এক 888sport app download apkর বই হৃদয়ে আমার প্যালেস্টাইন। সম্পাদনায় ফের হাসনাতভাই। ১৯৮৪ সালে সম্পাদনা করেছেন মুক্তিযুদ্ধের 888sport app download apk। সময় গড়িয়েছে। একসময় দেখলাম আমার ছোটবোন অদিতি ফাল্গুনীর গল্প বের হচ্ছে ক্রমাগত সংবাদ সাময়িকীতে। ওর বয়স তখন উনিশ-কুড়ি বড়জোর। বুঝলাম, চল্লিশের আগে কারো লেখা ছাপা হয় না তাঁর পত্রিকায় কথাটা একেবারেই সত্য নয়। অদিতির সঙ্গেই একদিন গেলাম সংবাদ অফিসে। লেখক অদিতির আচরণে জড়তা রয়েছে ঠিকই সম্পাদক আবুল হাসনাতের সঙ্গে, কিন্তু আমি যেহেতু কবি-888sport live footballিক নই, অতএব আমার কোনো ভয়ও নেই। দিব্যি অনেক সময় ধরে কথা হলো, চা খাওয়ালেন। ছাত্র ইউনিয়ন করার পরিচয়টা কাজে লেগে থাকতে পারে। এছাড়াও মিনু আপা মহিলা পরিষদের নেতা। আমার বড়বোন কৃষ্ণা গায়েনের মহিলা পরিষদ করার সূত্রেও যোগাযোগ মিনু আপার সঙ্গে। সেই যোগাযোগেই গেছি তাঁর  ধানমণ্ডির বাসায়। বাড়িভর্তি পেইন্টিং দেখে হাঁ হয়ে গেছি। এই হাঁ হয়ে যাওয়া মুগ্ধতাতেই থমকে থাকতে পারত তাঁর সঙ্গে আমার অল্প পরিচয়ের সূত্রে; যদি না তিনি ২০০০ সালে একদিন বাসায় ফোন করে চাইতেন আমাকে। 

ফোনে হাসনাতভাই জানালেন, সংবাদের 888sport live football সাময়িকীতে তখন মেয়েদের অভিজ্ঞতা নিয়ে সিরিজ লেখা ছাপা হচ্ছে, এবং দেশের প্রথিতযশা সব 888sport promo code লিখে ফেলেছেন। আমি একটা লেখা দেব কি না। আমি এতই আপ্লুত হয়ে গেলাম যে তক্ষুনি লিখতে বসে গেলাম। তবে সেই লেখা আমার 888sport promo codeজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে নয়, বরং যুগ যুগ ধরে যত্নে লালন করা বাংলার ভাবসম্পদ রূপকথায় খল888sport promo codeর উপস্থাপন নিয়ে ‘ঠাকুরমা’র ঝুলির সেইসব বুড়ি, সুয়োরানী ও রাক্ষসীরা’। যদিও একটানেই লেখা, অনেক বড় হয়ে গেল। খুব যত্ন করে হাসনাতভাই তিন 888sport free betয় ছাপলেন সেই লেখা। দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের ঠাকুরমার ঝুলির এক সমালোচনাত্মক পাঠ। এই লেখাটি পরে সেলিনা হোসেন-সম্পাদিত এক বইয়ে পুনর্মুদ্রিত হয় এবং ঠাকুরমার ঝুলি প্রকাশের একশ বছর উপলক্ষে বিশ্বজিৎ ঘোষ-সম্পাদিত বইয়েও আরেকটি মুদ্রণ হয়। হাসনাতভাইয়ের অনন্যতা এখানেই যে তিনি লেগে রইলেন লেখাটিকে বই হিসেবে বের করার তাগিদ নিয়ে। গত কুড়িটি বছর ধরে যখনই কথা হয়েছে, তিনি বইটি শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন এবং বলেছেন, যেন অন্তত এক বছর সময় হাতে নিয়ে বইটি তাঁকে দিই প্রকাশনার জন্য। তিনি মনের মতো করে অলংকরণ করাবেন। শেষ যেদিন কথা হয়েছে এ-বছর, সেদিনও তিনি বইটির কথা জানতে চেয়েছেন। তাগাদা দিয়েছেন শেষ করার। আমার প্রথম গল্প ‘ডাকিন’ ছেপেছেন তিনি সংবাদ সাময়িকীতে। এরপর আমি পিএইচ.ডি করতে চলে যাই এডিনবরায়। তার আগেই তিনি চলে এসেছেন কালি ও কলমে। এডিনবরা থেকেই পাঠাই তাঁকে ‘হীরাবেগম’। কালি ও কলমে ছাপানো সেই গল্পের যে-অলংকরণ তিনি করিয়েছিলেন, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ থাকব আজীবন। দ্বিখণ্ডিত হীরাবেগমকে অস্থিমজ্জায় অনুভব করতে পারলেই কেবল এমন ছবি করিয়ে নেওয়া সম্ভব কোনো সম্পাদকের পক্ষে। 

২০১৩ সালে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স বই প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিলে সে-বছরই সেখান থেকে বের করলেন তিনি আমার মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo codeনির্মাণ বইটি। বইটি তিনি যে কত যত্ন নিয়ে প্রকাশ করেছেন তার একটা উদাহরণ দিই। বইটিতে যে-কাগজ এবং সাইজ ব্যবহার করেছেন সেটা তো বিশেষ বটেই, প্রচ্ছদ করার জন্য তিনি গেলেন কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে। কাইয়ুম চৌধুরী তখন খুব অসুস্থ। তিনি এক সকালে গিয়ে ওনার মাথার কাছে রেখে এলেন পাণ্ডুলিপি। আমাকে শুধু জানালেন, সিনেমা কাইয়ুম চৌধুরীর প্রথম প্রেম। কী হবে বলা যায় না, তবে দেখা যাক। এর কদিন বাদে তিনি বেশ চাপা অথচ খুশি গলায় ফোনে একবাক্যে জানালেন, কাইয়ুম চৌধুরী প্রচ্ছদের কাজটা ধরেছেন। তবে উনি এত অসুস্থ যে অলংকরণ কিন্তু করতে পারবেন না, শুধু প্রচ্ছদ। হাসনাতভাইয়ের ওপরে কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না, তার ওপরে প্রচ্ছদ করছেন কাইয়ুম চৌধুরী এই সৌভাগ্যেই নত হয়ে আছি। এর কিছুদিন পরে ফের জানালেন, কাবেরী, আপনার বই আমার আকাঙ্ক্ষার চেয়েও বেশি সুন্দর হয়েছে। কাইয়ুমভাই আপনার বইয়ের অলংকরণও করে দিয়েছেন। বলিহারি এইসব মানুষের মন-মনন-উদারতা। বইটি প্রকাশিত হবার অনেকদিন পরে ধানমণ্ডির বেঙ্গল গ্যালারিতে প্রথম এবং শেষবারের মতো দেখা হয়েছিল কাইয়ুম চৌধুরীর সঙ্গে। সেখানে হাসনাতভাইকে দেখে সাহস করে এগিয়ে যাই কাইয়ুম চৌধুরীকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য। হাসনাতভাই পরিচয় করিয়ে দিলে কাইয়ুম চৌধুরী বললেন, তুমি এত ছোট একটা মেয়ে? বলে আমার মাথায় হাত রেখেই আশপাশের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন উজ্জ্বল চোখে স্নিগ্ধ হাসিতে। আমি খুবই কুণ্ঠিত বোধ করে কাইয়ুমভাইকে ধন্যবাদ জানাতেই উনি বললেন, কাজ তো তুমি করেছ, আমি তো খালি মুড়িয়ে দিয়েছি। উনি নিজেই বললেন, আমার প্রথম প্রেম কিন্তু সিনেমা। আমি তো আসলে সিনেমাই করতে চেয়েছি কিন্তু টিকতে পারিনি। আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে বোর হচ্ছিলাম, তো একদিন তোমার পাণ্ডুলিপি যেটা হাসনাত রেখে এসেছিল আমার মাথার কাছে সেটা নাড়াচাড়া করে তুমি বিশ্বাস করবে না, আমি বিছানায় উঠে বসলাম। এবং কখন যে আঁকতে শুরু করলাম খেয়ালও করিনি। আমি লজ্জায়, কৃতজ্ঞতায় নুয়ে বেরিয়ে এলাম। এর কিছুদিন পরেই কাইয়ুম চৌধুরীর প্রয়াণসংবাদ পাই। এই বাংলায় এমন বিনয়ী আরেকজন কাইয়ুম চৌধুরীও আসবেন না। 

বেঙ্গল থেকেই হাসনাতভাই সম্পাদনা করেছেন 888sport live chat ও 888sport live chatী। গুণে-মানে-ছবিতে-লেখায়-কল্পনায় বাংলাভাষায় এর সমকক্ষ অন্য কোনো 888sport live chatপত্রিকার কথা আমার জানা নেই। এ-কথা হাসনাতভাইয়ের মতো বিনয়ী মিতবাক মানুষও বলেছেন মাছরাঙা টেলিভিশনের রাঙা সকাল অনুষ্ঠানের বিশেষ সাক্ষাৎকারে। এখানে live chat 888sport বিষয়ে বেশ কয়েকটি লেখা আমার ছাপা হয়েছে।  লেখায় আমার অলসতা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। বন্ধু ফৌজিয়া খান প্রায়ই তাগাদা দিয়ে দিয়ে শেষে মোক্ষম কথাটা জানাতেন যে, হাসনাতভাই জানতে চেয়েছেন লেখাটা কি আমি দেব আদৌ। এই তাগাদা কোনো সম্পাদক দেন বাণিজ্যসফল লেখকদের ছাড়া? সবশেষে মৃণাল সেন 888sport free betয় লেখার জন্য বলেছেন ফৌজিয়া। অনেক তাগাদা দিয়েছেন ফৌজিয়া এবং শেষে সেই অমোঘ বাক্য। আমি দেরি করলেও বেশ বড় একটা লেখা দিয়েছি, কিন্তু এই 888sport free betটি আর বের হয়নি। লেখাটির কথা জেনে এবং ছাপা হচ্ছে না দেখে দু-একটা জায়গা থেকে অনুরোধ এসেছে যদি লেখাটা আমি তাদের দিই। ফৌজিয়াও এ-বিষয়ে সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতেই পরামর্শ দিলেন। ভয়ে ভয়ে একদিন ফোন দিলাম বটে হাসনাতভাইকে কিন্তু এ-কথা বলার সাহস হলো না। আসলে যে-লেখা হাসনাতভাইয়ের 888sport live chat ও 888sport live chatীর জন্য দিয়েছি, সেই লেখা অন্য কাউকে দেবার কথা বলা যায়? এই কথাগুলো এত বিস্তারিত বলার একটাই কারণ, আমার নিরেট অ্যাকাডেমিক গবেষণার পাশাপাশি যা একটু 888sport live chat888sport live football জগতে লেখালেখি তার সবটাই হাসনাতভাইয়ের তাগিদে। তাঁর প্রশ্রয়ে। জীবনে কথা হয়েছে হাতে গুনে মাত্র কয়েকটিবার, দেখা হয়েছে আরো কম। কিন্তু যতবার দেখা হয়েছে, বলেছেন, শুধু 888sport liveে আটকে রাখবেন না আপনার কলম, মৌলিক লেখায় সময় দিন। সময় না পেলে সময় করবেন। খুব আন্তরিকতা নিয়ে বলেছেন প্রতিবার। অকাজে এত সময় দিতে হয় যে সেই সময় দেওয়া হয়নি। ভেবেছিলাম জুন মাসের পরে বিভাগপ্রধানের দায়িত্ব শেষ হলে প্রথম কাজ হবে ঠাকুরমার ঝুলি নিয়ে করা কাজের ওপর বইটা শেষ করে হাসনাতভাইকে দেওয়া। এই বই এখন কোন সম্পাদককে দেব? কে বলবেন, এক বছর সময় হাতে নিয়ে দেবেন, আমি সেইভাবে অলংকরণ করাব! আমার তো অন্য কোনো 888sport live football সম্পাদকের সঙ্গে পরিচয় নেই। 888sport live football সম্পাদক হিসেবে আমি তো কেবল হাসনাতভাইকেই জেনে এসেছি এতকাল! এবং এই সম্পাদক আমার কোনো পাণ্ডুলিপির একটি শব্দেও হাত দেননি কোনোদিন। 

মাঝে মাঝে ভাবার চেষ্টা করেছি, হাসনাতভাইয়ের 888sport appsের 888sport live football সম্পাদনার কাল্ট ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠার মূলটা কোথায়? কেন তিনি পারলেন, যা আর কারো মধ্যে পাওয়া গেল না? আমার সীমিত বুদ্ধিতে যা বুঝি তা হলো, 888sport live football সম্পাদনা কেবল প্রতিষ্ঠিত লেখক বা নিজের পরিচিত বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে গল্প, 888sport app download apk, 888sport alternative link চেয়ে এনে পৃষ্ঠা ভরানো নয়, সিন্ডিকেটবাজি নয়। 888sport live football সম্পাদনা নিজেই একটি 888sport live chat, live chat 888sport পরিচালনার মতো। এখানে পড়াশোনা দরকার হয়, 888sport live chat888sport live football বিষয়ে গভীর অনুধ্যান দরকার হয়, দেশ আর তার মানুষের জীবনপ্রবাহ এবং প্রাণরসায়নটি বুঝতে হয়, নির্মোহ হতে হয়, সম্পাদনার বিভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে নিজস্ব জ্ঞান থাকতে হয়, সম্পাদনার বিভিন্ন পর্যায়ে যাঁরা কাজগুলো করেন সেই মানুষদের সম্পর্কে সম্যক ধারণা যেমন জরুরি, তেমনি তাদের সঙ্গে সম্পর্কও থাকা চাই কাজগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী এবং সময়সীমার মধ্যে করিয়ে নেবার জন্য, এবং এই সবকিছু থাকলেও একজন আবুল হাসনাত হয়ে ওঠা সম্ভব নাও হতে পারে, যদি না একজন কবি মাহমুদ আল জামান এই শুদ্ধ সম্পাদনার সাথে থাকেন।

শৈশবে, স্কুলজীবনে তাঁর 888sport live chatের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে 888sport appsের বরেণ্য তিনজন 888sport live chatীর কাছে ছবি আঁকার ক্লাস করে। যুক্ত হয়েছেন পরে দেশ-বিদেশের 888sport live chatীদের সঙ্গে। গ্যালারিসম তাঁর বাড়ির দেয়াল ভরপুর যেসব বিখ্যাত চিত্রকর্মে, তার বেশিরভাগই 888sport live chatী-বন্ধুদের দেওয়া উপহার। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে করেছেন প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতি ছাত্র ইউনিয়ন এবং সংস্কৃতি সংসদ যেখানে তাঁর বন্ধুরা সকলেই গুণী, সমাজ প্রগতির লড়াইয়ে যাঁদের দৃপ্ত শপথ, তাঁরা পড়েছেন 888sport live football-সংস্কৃতি-দর্শন-রাজনীতি-গণমানুষ ও জীবনের পাঠ। 888sport appsের কমিউনিস্ট পার্টি করেছেন, যার গভীর প্রভাব আজীবন ছিল তাঁর ওপর। তিনি লিখেছেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টির ছায়ায় বহু সংগ্রামী মেহনতি মানুষকে দেখেছি। … সকলেই কোনো না কোনোভাবে ছাপ রেখে গেছেন আমার হৃদয় ও মনে।’ (হারানো সিঁড়ির চাবির খোঁজে, ২০২০)

কর্মজীবন শুরুই করেছিলেন প্রগতিশীল সংবাদপত্র সংবাদে, যেখানে কাজ করেছেন সাংবাদিক-888sport live footballিক-রাজনীতিক রণেশ দাশগুপ্ত, সাংবাদিক-888sport live footballিক শহীদুল্লা কায়সার, সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্ত, সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর মতো মানুষদের সঙ্গে। সংবাদ তখন 888sport apps নামের যে স্বাধীন একটি দেশ তৈরি হবে বলে সবার মনের মধ্যে ইচ্ছে হয়ে আছে, সেই সামষ্টিক মননের আড্ডাখানা, আর দেশ স্বাধীন হবার পরে দেশটা কেমন হতে হবে সেই নিয়ে কথা বলা এবং কাজ করা মানুষদের বিচরণভূমি। ছিলেন যুক্ত ছায়ানটের সঙ্গে শেষদিন পর্যন্ত। সংবাদ ছেড়ে দিতে হয়েছে একসময় জীবনের প্রয়োজনে, কিন্তু সংবাদে থাকার সময়ে যে প্রতিজ্ঞা এবং কাজ, তার সচ্ছল এবং নিবিড়তর অভিনিবেশ আমরা দেখি কালি ও কলম এবং 888sport live chat ও 888sport live chatীর ভেতর, বেঙ্গল পাবলিকেশন্সের প্রকাশনায়। হয়ে উঠেছেন এদেশের শুদ্ধতম 888sport live football সম্পাদক।

কিন্তু 888sport live football সম্পাদনার যে স্পর্শাতীত চূড়ায় ধ্যানমগ্ন ঋষির অবস্থান তাঁর, সেই খ্যাতির নিচে চাপা পড়ে গেছে তাঁর 888sport app download apk; অথচ তাঁর কবিসত্তাও তিনি নিয়োজিত করেছিলেন 888sport live football সম্পাদনায়। আর এইসব উজাড় করে দেবার মর্মমূলে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন 888sport appsের প্রতি যে ভালোবাসা, প্রতিজ্ঞা সেই প্রতিজ্ঞায় অবিচল থাকা। ষাটের দশকের প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মীরা, যাঁরা দেশটির স্বপ্ন দেখেছেন, দেশটি হয়েছে, স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে; কিন্তু লড়াইয়ের মাঠ ছাড়েননি অনেকেই। হাসনাতভাইয়ের ক্ষেত্রে বন্ধুরা ভিন্ন পথে চলে গেছেন হয়তো, জীবন সবসময় তাঁর প্রতি সুবিচার করেনি কিন্তু তিনি পথচ্যুত হননি। হারানো সিঁড়ির চাবির খোঁজে (২০২০) বইটিতে তাই অকপটে লিখেছেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন যে মহান পথ সৃষ্টি করেছিল মুক্তিযুদ্ধের, তা প্রত্যক্ষণ ও অংশগ্রহণ জীবনের এক উজ্জ্বল সম্পদ হয়ে আছে। এই মহান সংগ্রামের আমি যে এক অংশী ছিলাম তা আমার কাছে পরম গৌরবের বিষয়।’ তিনি লিখেছেন, ‘ন্যায় ও নীতিবোধ আদর্শিক চেতনায় ছাপ ফেলেছে, সেজন্য মূল্যও দিতে হয়েছে পারিবারিক ও সমাজ জীবনে। এই ন্যায় ও নীতিবোধের কোন অর্থ পাইনি অনেক সময়। তবুও যে আদর্শিক চেতনা সঞ্চারিত হয়েছিল ধমনিতে, তা থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করিনি। সর্বদা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার যে শিক্ষা পেয়েছিলাম ছাত্রজীবনে, তা থেকে সরে আসিনি কখনও।’ 

888sport live football সম্পাদক আবুল হাসনাতই কবি মাহমুদ আল জামান। 888sport app download apk লিখেছেন ষাটের দশক থেকে। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘কখনও অঙ্গীকারের তাগিদে, কখনও ভাবাবেগে তাড়িত হয়ে। কখনও সুদূর অতীতে দেখা কোনো এক হেমন্ত শীত সকালের কথা ভেবে। … আর ঘুরেফিরে মনে পড়ে ভুবনডাঙ্গার মেঘ, নৃত্যরত সাঁওতাল মেয়ের সহাস্য মুখ, প্রান্তিকের উদার প্রান্তর, শাল বীথি, মহুয়া বৃক্ষ আর প্রান্তরে জ্যোৎস্নার প্লাবন।’ তাঁর মন জাগতিক কোলাহল ছাড়িয়ে দূরে কোথায় দূরের কোন অচিনপুরে ঘুরে যে বেড়িয়েছে সব সময়, সেও তাঁর কর্মমুখর চশমার আড়ালে বুদ্ধিদীপ্ত চোখের গভীরে লুকানো অনুপস্থিতিতে দেখা যেত। তিনি নিশ্চিত ছিলেন না তাঁর 888sport app download apk কতটা হয়ে উঠছে। ২০১৭ সালে মাহমুদ আল জামান তাঁর নির্বাচিত 888sport app download apkর মুখবন্ধে তাই লিখলেন, ‘এতদিন ধরে 888sport app download apk লিখছি। কিছু হচ্ছে কি না কিছুই জানি না। 888sport app download apk অধরা, সূক্ষ্ম, বহুমাত্রিক। একই 888sport app download apk কতভাবে তো ব্যাখ্যা করা যায়। সেজন্য খুবই দ্বিধা নিয়ে এ বই বেরুল।’ আহা, দ্বিধা! 888sport live chat-888sport live footballের চর্চায় এই দ্বিধার অনুপস্থিতি প্রতিবছর বইমেলায় নির্লজ্জ টনকে টন কাগজ-কালির শ্রাদ্ধ ঘটায়। তবে মাহমুদ আল জামানের ক্ষেত্রে এই দ্বিধার জায়গাটি হয়তো এই কারণেও যে অন্য কেউ তাঁর 888sport app download apkর আলোচনা করেননি। এদেশে 888sport app download apk লিখে নিজেই জনে জনে ফেরি করে না বেরোলে, বলয় তৈরি করে পরস্পরের পিঠ চুলকে না দিলে কবি, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-ব্যাংকের এমডি ধরে ফিতা না কাটালে স্বীকৃতি জোটানো মুশকিল। তাঁর 888sport app download apkর বইগুলোর নামই বা কতজন জানে? জ্যোৎস্না ও দুর্বিপাক, কোনো একদিন ভুবনডাঙায়, ভুবনডাঙার মেঘ ও নধর কালো বেড়াল, নির্বাচিত 888sport app download apk। কেবল শিশু888sport live footballিক হিসেবেও তো তাঁর অবস্থান অনন্য টুকু সমুদ্রের গল্প কিংবা ইস্টিমার সিটি দিয়ে যায় অসাধারণ কিশোর-888sport alternative link। তাঁর সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের 888sport app download apk এবং মুক্তিযুদ্ধের গল্প সংকলন ঐতিহাসিক দলিল। কিন্তু এসব বিষয়ে আলোচনা নেই বললেই চলে।

888sport app download apkয় তিনি মৃদুকণ্ঠ, অথচ কী প্রত্যয়ী! কবি মাহমুদ আল জামান যখন লেখেন, 

কোমল রোদ্দুরে দাঁড়াবে শেষ যুদ্ধে যাবার উদ্ভিদ

দুঃসময়ের ছবিগুলি

আস্তে আস্তে সরে যাবে; উন্মুখ অক্ষর

এক বীজ জন্ম দেবে

ভাঙবে যখন খোলস যৌবন

বিষণ্ন ও দুঃখী মানুষের জন্য নিভৃতে

সড়কে দাঁড়াবে।

(‘জোৎস্না ও দুর্বিপাক’, ১৯৮৭) 

আমি এই পঙক্তিতে হাসনাতভাইকেই দেখি। সময়টাকে ধরি যদি, তখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলছে। দেশ স্বাধীন হবার সাড়ে তিন বছর পর থেকে দেশটি মূলত চলেছে পাকিস্তানদর্শনের সমর্থনকারীদের হাতে, সামরিক স্বৈরশাসকের হাতে। গণতন্ত্রের জন্য, সামরিক শাসনবিরোধী তরুণদের আন্দোলনও চলছে দেশজুড়ে। একটি ফুলকে বাঁচানোর যে-যুদ্ধ একাত্তরে, সেই একই লড়াই চলছে তখন কোমল রোদ্দুরে দাঁড়ানো শেষ যুদ্ধে যাবার সমূহ উদ্ভিদদের। তিনি তাঁদের একজন। তিনি উচ্চকণ্ঠ স্লোগানধারী কবি নন, তাঁর শেকড় এই মাটির মর্মমূলে, তিনি জানেন শেষ যুদ্ধে যাবার জন্য মাটিতে শিকড় ছড়িয়েছে যে- উদ্ভিদ, কোমল রৌদ্রে দাঁড়িয়েই যুদ্ধে যাবে সে। যেমন তিনি লড়াইটা জারি রেখেছেন আজীবন কোমল রৌদ্রের বরাতে। কারণ, তিনি দেখেছেন

দীর্ঘ প্রতীক্ষায়

উল্টো দিকে ছুটে যাচ্ছে স্বপ্নের হাঁস।

বলে যাচ্ছে কোলাহলে।

নদ ডাকে, নদী ডাকে

সহসা চোখের সামনেই ঝরে পড়ে, ঝরে পড়ে

ব্যাকুল নদীর আশ্চর্য মমতা।

(‘কখনো নয়’, জ্যোৎস্না ও দুর্বিপাক, ১৯৮৭)

তাঁর প্রতিজ্ঞা, প্রেম এবং যুদ্ধে দেখি ব্যাকুল নদীর আশ্চর্য মমতা। তাঁর লড়াইটা কেবল রাজনৈতিক নয়, 888sport live chatের, রুচির, নির্মোহ পাঠ এবং প্রয়োজনে একাকী চলার মন্ত্রে নিজেকে সইয়ে নেবার। মুক্তিযুদ্ধ তাঁর আজীবন গর্বের জায়গা, ‘তবে এ গর্বও ম্লান হয়ে যায়, আজ যখন দেখি মুক্তিযুদ্ধ সমাজে সিঁড়ি ভাঙার সোপান হয়ে ওঠে। বড় কষ্ট পাই তখন, বেদনায় হৃদয় চূর্ণ হয়।’

এভাবে একজন আমূল কবি বেদনায় চূর্ণ হয়ে দাঁড়ান ‘সর্বশূন্যতার রাস্তায়’, হারিয়ে যাওয়া চাবির খোঁজে। তখন পৃথিবীর বুকে বাজছে অন্ধকারের কালো দামামা। মুখোশে মুখ ঢেকে ভাঙা ও গড়ার কৌতুক বুকে নিয়ে অনুভবে আর অনুভূতিতে দেখলেন অন্তর্জীবন আর বহির্জীবনের বিশ্বাস-সংঘাতের মুহ্যমান ছায়া। তাতে ভেঙে পড়ল সবকিছু। তখন,

সর্বশূন্যতা খেলা করলো সংসারে

প্রেয়সীর চুলে ও মুখমণ্ডলে

কেউ গেলো ভাস্কর্যে

কেউ সমাপতনে

কেউ আততায়ীর সান্নিধ্যে ছুরিকাঘাতে বিপর্যস্ত করলো জীবন

দুঃখের ভিতর দিয়ে আমার তপস্যায় এখন ঘুণ ধরেছে

ভ্রাতৃঘাতী হলাহলে কে দেবে শেকড়ে জল?

(‘সর্বশূন্যতায়’, অপ্রকাশিত 888sport app download apk, সংবাদ, ৫ই নভেম্বর ২০২০)

আশ্চর্য! এই কবির 888sport app download apkর প্রচার এত কম!  নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়।  আমাদের শুদ্ধতম 888sport live football সম্পাদক ইস্টিমারে সিটি বাজিয়ে চলে গেলেন। ভুবনডাঙার দিকে বুঝি? সেখানে প্রান্তরে জ্যোৎস্নার প্লাবনে তাঁর 888sport app download apkর আসর বসুক। আর আমি অনুভব করার চেষ্টা করছি কোমল রোদ্দুরে দাঁড়াবে শেষ যুদ্ধে যাবার যে-উদ্ভিদ, তার প্রয়াণে আসলে আমরা কতদিকে নিঃস্ব হলাম। একবারে দুই বাক্যের বেশি কথা যে হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে কখনো হয়নি, সেই হাসনাতভাইয়ের জন্য আক্ষরিকভাবে হাহাকার বোধ করছি। 888sport appsের 888sport live chat888sport live football করতলে ফেলে দিনমান সম্পাদনা করে যিনি 888sport live footballরুচি গড়ে দেবার নিরলস সাধনা করে গেছেন, তাঁর প্রয়াণে এদেশের ধ্রুপদী ধারার 888sport live football সম্পাদনার ইতি ঘটল। অথচ কেউ তাঁর কাছে শিখে তৈরি হলো না। এ-শূন্যতা ঘুচবে কীভাবে? কে দেবে শেকড়ে জল?