তাঁর মৃত্যুর খবরটা দিয়েছিলেন শর্টফিল্ম আন্দোলন ও শুদ্ধ live chat 888sportের অন্যতম পথিকৃৎ 888sport appর সমত্মান হাশেম সুফীভাই। মৃত্যুর পরপর সুফীভাই তাঁর ফেসবুকে স্ট্যাটাস না দিলে আমরা অনেকেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোগ্রাফার আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুসংবাদ জানতে পারতাম না। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শরীয়তপুর এবং 888sport appয় অবস্থান করছিলেন। মাঝখানে কিছুদিন ফ্রান্সে তাঁর ফরাসি স্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন। কিছুদিন পর এক সমত্মানকে নিয়ে এসেছিলেন শরীয়তপুরে।
হাশেম সুফীভাই ষাটের দশকে শর্টফিল্ম আন্দোলনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন 888sport app সিনে সার্কেল। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি থাকেন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমাকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। আমার কাজ ছিল বিভিন্ন দূতাবাস থেকে তাদের দেশের ভালো আর্ট ফিল্মগুলো সংগ্রহ করে আমাদের দেশের বিদগ্ধ নিরীক্ষামূলক live chat 888sport ও শর্টফিল্মে আগ্রহী দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করা, সেমিনার ওয়ার্কশপ আয়োজন করা। এরকম একটি সেমিনারে সম্মানিত বক্তা হয়ে আনোয়ার হোসেন ভাই এসে চমৎকার জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য রেখেছিলেন। সুফীভাই তখন তাঁর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন আমাকে। প্রায় চলিস্নশ-পঁয়তালিস্নশ বছর আগের কথা। তখন ১৯৬৯ সাল। যতদূর 888sport app download for android করতে পারি, তিনি সত্যজিৎ রায়ের এবং ইংমার বার্গম্যানের live chat 888sportের ফটোগ্রাফির ওপর মনোমুগ্ধকর এবং বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করেছিলেন। এরপর ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা সৃজনশীল দর্শকের অনেকেই বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নে প্রশ্নে তাঁকে জর্জরিত করেছিলেন। তখন আজকের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘live chat 888sport এবং মিডিয়া’ বিষয়ে কোনো কোর্স কিংবা বিভাগ ছিল না। সেলফোনও তখন দেশে আসেনি। চমৎকার এই প্রশ্নোত্তর পর্বটি রেকর্ড করে রাখলে আজকের দিনে ফিল্মের ওপর পড়াতে গিয়ে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যেত। ফটোগ্রাফির ওপর যে-গভীর বিশ্লেষণ আনোয়ারভাই দিয়েছিলেন সেসব বিষয় নিয়ে বই লেখা যেতে পারে। হায়! তখন তো এসব কথা ভাবিনি। আরেক live chat 888sport তাত্ত্বিক মুহম্মদ খসরুও ছিলেন সেদিনের সেই সেমিনারে। তিনি তখন তরুণ, প্রাণবন্ত এবং মোটামুটি সুস্থ ছিলেন। তিনিও বেশ কিছু ফটোগ্রাফি-সংক্রান্ত ভালো প্রশ্ন করেছিলেন। আজ তিনি কোথায় আছেন, কীরকম বেঁচে আছেন, জানি না। শুনেছি তিনি মানসিক অসুস্থতা নিয়ে অবস্থান করছিলেন নিজ গ্রাম কেরানীগঞ্জে। সেদিন আনোয়ার হোসেন তাঁর বক্তব্যের পরিপূরক হিসেবে কিছু ‘সস্নাইড’ দেখিয়েছিলেন তরুণ দর্শকদের।
দীর্ঘ এই সেমিনারে এতসব প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল, বক্তব্যের এত শাখা-প্রশাখা বিসত্মৃত হয়েছিল, এত প্রাণবন্ত তর্কবিতর্ক জমে উঠেছিল যে, আমরা পরবর্তী কোনো আলোচনা অনুষ্ঠানে এ-বিষয়টি নিয়ে আরেকটি সেমিনার আয়োজন করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে বিলম্বিত সন্ধ্যায় সত্যজিৎ রায়ের মহানগর ছবিটি প্রদর্শন করেছিলাম।
ছবি শুরু হওয়ার আগে খুব সংক্ষিপ্ত স্বাগত ভাষণ দিতে হলো। সেই অনুষ্ঠানে, মনে পড়ে আনোয়ারভাইকে আমরা ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা দেখিয়েছিলাম। তারপরেও অনেকবার দেখা হয়েছে। তিনি পরবর্তী পর্যায়ে 888sport appর live chat 888sportের ফটোগ্রাফি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। প্রথমে ছিলেন স্টিল ফটোগ্রাফার, পরে রূপান্তরিত হলেন চিত্রগ্রাহকে। সূর্য দীঘল বাড়ী, লালসালু, এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী এবং অন্য জীবন live chat 888sportগুলোর চিত্রগ্রাহক ছিলেন তিনি। পাশাপাশি ডকুমেন্টারি ছবিও তৈরি করেছেন। সেসব জীবনের শুরুর কাহিনি। শর্টফিল্মেও তাঁর অপার আগ্রহ ছিল। জীবন ও ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল আঁকাআঁকি দিয়ে, কিন্তু তিনি চিত্র888sport live chatী হননি। তাঁর ক্যারিয়ারে অনেকগুলো বাঁক বদল লক্ষ করা যায়। ভর্তি হয়েছিলেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগে, কিন্তু মন টেকেনি। এই বিভাগ ছেড়ে তিনি ফটোগ্রাফি পড়তে চলে যান ভারতের পুনেতে। খুব সফলতার সঙ্গে এই কোর্স সমাপ্ত করে চলে আসেন দেশে। দীর্ঘদিন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। তখন তিনি ফ্রান্সে। ২০১৬ সালে তাঁর সঙ্গে আমার আবার দেখা হয় কার্তিকপুর, শরীয়তপুরে জেডএইচ শিকদার ইউনিভার্সিটিতে। হাশেম সুফীভাই একদিন টেলিফোন করে শরীয়তপুরে তাঁর আগমনের কথা বলেন। তাঁর স্থানীয় টেলিফোন নম্বর মেসেজ করে পাঠিয়ে দেন। আমি তো অবাক। এতদিন পর, অনেকগুলো বছর পর, তিনি হঠাৎ কোত্থেকে উদয় হলেন?
হাশেম সুফীভাই দেখা হলেই, live chat 888sportের কথা উঠলেই, অবধারিতভাবে আনোয়ার হোসেন ভাইয়ের কথা বলতেন। live chat 888sportের ফটোগ্রাফিতে তাঁর ব্যতিক্রমী অবদান ও সৃজনশীলতার কথা 888sport app download for android করতেন।
আবু ইসহাকের সূর্য দীঘল বাড়ীর ফটোগ্রাফির সময়ে তিনি অভিনয়-ব্যক্তিত্ব ডলি ইব্রাহীমকে (পরে ডলি আনোয়ার) বিয়ে করেন। যে-কারণেই হোক সে-বিয়ে বেশিদিন টেকেনি।
সুফীভাইয়ের কাছে শুনেছি, তিনি ফ্রান্সে বেশকিছু সময় অতিবাহিত করেন। দেশেও মাঝে মাঝে আসতেন। দেশ তাঁকে ভীষণভাবে টানত। তিনি ফরাসি একজন মহিলাকে বিয়ে করেন এবং তাঁর স্ত্রী-সমত্মানরা ফ্রান্সে বসবাস করেন। দীর্ঘ বিশ বছর আলোকচিত্রের মাধ্যমে তিনি 888sport appsকে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছিলেন।
১৯৬৭ সালে মাত্র দুই ডলার দিয়ে কেনা প্রথম ক্যামেরা দিয়ে তাঁর আলোকচিত্রী জীবনের শুরু। চিত্রগ্রাহক হিসেবে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি পাঁচবার জাতীয় live chat 888sport 888sport app download bd লাভ করেন।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে কার্তিকপুর জেডএইচ শিকদার বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তিনি এখানকার নয়নাভিরাম পারিপার্শ্বিক দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। তাঁর ক্যামেরা মুখর ও বাঙ্ময় হয়ে ওঠে। তিনি পাগলের মতো একটার পর একটা ছবি তুলতে থাকেন। ছবি তোলার মোহ তাঁকে পেয়ে বসে।
ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আমরা একটা ঘরোয়া সেমিনারের আয়োজন করি। তিনি ছাত্রছাত্রীদের তাদের সেলফোন অথবা ক্যামেরায় ছবি তুলতে বলেন। সেই ছবিগুলো ওয়াশ করে আমাদের কাছে তিনি জমা দিতে বলেন। তিনি চলে যান জেলা শহর শরীয়তপুরে। কার্তিকপুর একটি গাছপালাময় গ্রাম। প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থাপত্য দেখে তিনি মুগ্ধ হন। কার্তিকপুরে আমার ডরমিটরিতে দুদিন অবস্থানকালে তাঁর সঙ্গে তুমুল আড্ডা হয়। আমার পাশের কক্ষ তাঁর জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে 888sport app থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা পথ পাড়ি দিয়ে হাশেম সুফীভাই এসেছিলেন শুনে তিনি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। সেলফোনে তাঁকে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা করি, কিন্তু তাঁর রহস্যময় ফোনে পৌঁছাতে পারি না। মেসেজ টেক্সট করে পাঠাই। নো রেসপন্স। কোনো সাড়াশব্দ নেই। পরে লোকমারফত জানতে পারি, তিনি অসুস্থ। তিনি ন্যাশনাল হাসপাতালে আছেন।
ঠিক সাত-আটদিন পর আনোয়ারভাই আবার ফিরে আসেন কার্তিকপুরে। ইতোমধ্যে তুমুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ভেতর। ক্যামেরা নিয়ে বনে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আনোয়ারভাই, হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো, তাঁকে অনুসরণ করছে একদল সাহসী ছাত্রছাত্রী। গ্রামবাংলায় এরকম এর আগে কখনো দেখা যায়নি। কার্তিকপুর মূলত অজপাড়াগাঁ। তেমন কোনো ভবন চোখে পড়ে না। বিশ্ববিদ্যালয় এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের দুটো শাখা ছাড়া আর কিছু নেই। সপ্তাহে দুদিন হাট বসে, তখন দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসে কেনাকাটা করতে। আনোয়ারভাই জনপদের এসব ছবি তুললেন অপার আগ্রহ ও ভালোবাসা নিয়ে।
পালপাড়া, ঠাকুরবাড়ি, ফকিরবাড়ি, চিশতিনগর এবং অসংখ্য মাজারের ছবি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ ও প্রেক্ষাপট বা perspective থেকে তুললেন এবং ছাত্রছাত্রীদের হাতেকলমে শেখাতে লাগলেন। প্রকৃতি এবং বনভূমি যেন তাঁর ক্লাসরুম। পালপাড়ায় কুটির888sport live chat কীভাবে গড়ে উঠেছে, মাটির পুতুল ও তৈজসপত্রের ছবি তুললেন অনেক সময় নিয়ে। সেখানেও আমাদের ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে সঙ্গ দিলো। কী এক নেশায় মেতে উঠেছে ছাত্রছাত্রীরা যেন। ওদের নিয়ে একটি ফটোগ্রাফিক সংগঠন গড়ে দিলেন। ফটোগ্রাফির প্রতি এরকম ভালোবাসা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। দুপুরে লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হলো, কিন্তু তিনি তেমন একটা কিছু খেলেন না। তিনি বললেন, তাঁর হৃদরোগ আছে। তাঁকে হিসাব করে চলতে হয়। ছবি তোলার সময় এমন নিমগ্নতা তাঁকে পেয়ে বসত; তিনি খাওয়া-দাওয়া সবকিছু ভুলে যেতেন।
আনোয়ারভাই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন, সেসব ছবিও তিনি দেখালেন। ১৯৪৮ সালে পুরান 888sport appর আগা নওয়াব দেউড়িতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাই ও চার বোনের মাঝে তিনি ছিলেন সবার বড়। বাবা সিনেমাহলে চাকরি করতেন। বাবা মোহাম্মদ হোসেনের কল্যাণে তিনি ছেলেবেলা থেকে প্রচুর live chat 888sport দেখার সুযোগ পান। এভাবে live chat 888sportের প্রতি তাঁর আগ্রহ তৈরি হয়। কিন্তু তাঁর আসল জায়গা ছিল স্টিল ফটোগ্রাফি – স্থিরচিত্র। জীবনের শেষদিনগুলোতে তিনি সেখানেই ফিরে এসেছিলেন। live chat 888sport-ফটোগ্রাফির দীর্ঘ ধকল তাঁর সইত না। তিনি সময় নিয়ে, নিজের মতো করে ছবি তুলতে ভালোবাসতেন।
ফিনিক্স ফটোগ্রাফিক সোসাইটির একটি আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করতে তিনি ২৩ নভেম্বর 888sport appয় আসেন। পান্থপথের একটি হোটেলে আয়োজকরা আটতলার একটি কক্ষে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করেন।
টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হলে তিনি কার্তিকপুর আসার জন্য আগ্রহ দেখান। কিন্তু সে-সময় আর পাওয়া গেল না। হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে তিনি মারা যান বলে খবর প্রকাশিত হয়। তাঁর দুই ছেলে আকাশ আর মেঘদূত এবং স্ত্রী মারিয়ান হোসাইন 888sport appয় আসার পর তাঁকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই ক্যামেরার কবিকে দেশবাসী এবং এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা গভীর 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে 888sport app download for android করছে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.