গণমানুষের 888sport live chatকলা

মোবাশ্বির আলম মজুমদার

টলস্টয়ের মতে, সৎ-অনুভূতি অনুপ্রাণিত 888sport live chatসৃষ্টিই সৎ-888sport live chat বলে বিবেচিত হয়। 888sport live chatী রফিকুন নবীর গত পাঁচ দশকের 888sport live chatভান্ডার থেকে প্রদর্শিত 888sport live chatকর্মকে আমরা সৎ-888sport live chat বলে মেনে নিতে পারি। এ-প্রদর্শনীতে রফিকুন নবীর 888sport live chatীজীবনের শুরু থেকে এ-বছর পর্যন্ত আঁকা বিভিন্ন মাধ্যমের 888sport live chatকর্মের দেখা মিলবে। একজন 888sport live chatীর নিরলস 888sport live chat-সৃষ্টির মাধ্যমে সময়কে ধারণ করার প্রবণতা 888sport live chatকলার অঙ্গনকে আলোকিত করে। বৈরী সময়ের বিপরীতে রফিকুন নবী দাঁড়িয়েছেন সৃষ্টিসম্ভার নিয়ে। মানুষ, প্রকৃতি, নদী, নৌকা, জোয়ার-ভাটা, পাহাড়, সমতল, আনন্দ আর বেদনার গল্প এঁকে দর্শকদের মাঝে 888sport live chatের রসবোধ ছড়িয়েছেন। বহুমাত্রিক এ-888sport live chatীর দীর্ঘ পথ পরিক্রমার ফল দেখতে পাই এ-প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘কোয়েস্ট অব রিয়েলিটি’। ১২০টি বিভিন্ন মাধ্যম – জলরং, তেলরং, প্যাস্টেল, চারকোল, কাঠখোদাই, এচিং, পোস্টার ও অ্যাক্রিলিকের কাজ নিয়ে প্রদর্শনী সাজানো হয়েছে। কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রাখতেই 888sport live chatী নানা সংগ্রাম আর আন্দোলনের মুখোমুখি হয়েছেন। সে বৈরী স্রোতের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিলেন রফিকুন নবী। চারুকলা বিষয়ে পাঠ নিতে এসে উত্তাল সময় অতিক্রম করেন – রাজনীতি, সমাজ পরিবর্তনের ভাবনাকে সঙ্গী করে নিজের সৃজনকর্ম দিয়ে সেসব সংগ্রামে যুক্ত হয়েছেন।

সত্তরের মাঝামাঝি সময়ে ছাপচিত্র বিষয়ে উচ্চতর অধ্যয়নের জন্যে গ্রিসে যান। ছাত্রজীবনের বাস্তবধর্মী চিত্রচর্চার ধরনে পরিবর্তন দেখা যায় উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ পরবর্তীকালে। ১৯৭৬ সালে গ্রিসের এথেন্সে তাঁর প্রথম একক চিত্র-প্রদর্শনীর কাজ থেকে দর্শক আধা বিমূর্ত সৃষ্টির বার্তা পেয়ে যান। 888sport live chatাচার্য জয়নুলের জলরং চিত্রের মতো রফিকুন নবীও জাপানি জলরঙের কৌশল প্রয়োগ করেন। 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ কিবরিয়া, আনোয়ারুল হক, আমিনুল ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, কাইয়ুম চৌধুরী প্রমুখ 888sport live chatীর কাজের শক্তি তাঁর মধ্যে প্রভাবিত হতে থাকে। বাস্তবধর্মী নির্মাণরীতি থেকে বিষয়কে আধা বিমূর্ত রীতিতে প্রকাশ করেন। ১৯৮১ সালে 888sport appয় অনুষ্ঠিত একক প্রদর্শনী থেকে দর্শক রফিকুন নবীর কাজকে ভিন্নমাত্রায় গ্রহণ করেন। বেঙ্গল গ্যালারি অব্ ফাইন আর্টসের এবারের আয়োজন নিয়ে 888sport live chatী মত প্রকাশ করেন এভাবে, ‘এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনীর জন্যে কোনোকালে ডাক পড়বে বা প্রস্তাব আসতে পারে তা কখনো ভাবা হয়নি হেতু ছবি জমিয়ে রাখিনি। নিজের কাজের ব্যাপারে আস্থাহীনতাই হয়তো প্রচ্ছন্নভাবে এর জন্যে দায়ী। এখন এসব ভাবতে গিয়ে মন খারাপ হচ্ছে। নিজেকে অপরিণামদর্শী 888sport live chatী ভাবতে ইচ্ছে হচ্ছে। সেই সঙ্গে অনুতাপও হচ্ছে অদূরদর্শিতার জন্যে। তবে কিছু ছবি আমার সহধর্মিণী গচ্ছিত রেখেছেন বলে খানিকটা স্বস্তি। সেসব ছবি যেমনই হোক, পুরনো তো বটেই।’ রফিকুন নবী ১৯৫৯ সালে তৎকালীন 888sport app আর্ট কলেজে (বর্তমানে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ) ভর্তির পর ছবি অাঁকার নানা মাধ্যম ও কৌশলের সঙ্গে পরিচিত হতে থাকেন। এর আগে তিনি ছবি অাঁকার সরঞ্জাম, উপকরণের কথা জানতেন না। ছাত্রজীবনেই ছবি অাঁকার একাগ্রতার সঙ্গে ভবিষ্যৎ 888sport live chatীজীবনের অনিশ্চয়তা তাঁকে ভাবিয়ে তোলে। এ-সময় জীবনের সঙ্গে 888sport live chatচর্চাকে জড়িয়ে নিয়ে বাজারমুখী তথা বাণিজ্যিক 888sport live chatনির্মাণ তাঁর আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের আন্দোলন এগিয়ে নেওয়ার জন্য হাতে অাঁকা পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনের কদর ছিল। রফিকুন নবী ছাত্রাবস্থায় সেসব কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। সে-সময় থেকেই কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র অাঁকার সূচনা হয়। রনবী নামে পরবর্তীকালে তিনি কার্টুন এঁকে জনপ্রিয়তা পান। এরপর তিনি বইয়ের প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণের কাজে মনোযোগ দেন। ফলে সৃষ্টির আনন্দের পাশাপাশি অর্থ সংস্থানের পথ তৈরি হয়। এভাবে জীবনযাপনের সঙ্গে 888sport live chatকে যুক্ত করে এগিয়ে যান 888sport live chatী। এবারের প্রদর্শনীতে ১৮ জন 888sport live chat-সংগ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া 888sport live chatকর্মের বাইরে কিছু কাজ রয়েছে, যেগুলো 888sport live chatীর ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছিল। দর্শক হয়তো কিছু অপ্রদর্শিত কাজ দেখতে পেয়েছেন। 888sport live chatকর্মের একটি ধারাবাহিক বিবর্তন প্রদর্শনীতে সাজানো হয়েছে। ছবির আলোচনার শুরুতে প্রথমেই আসে ১৯৬২ সালে অাঁকা জলরং ছবি ‘নিসর্গ’। এতে বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন মাঠ ও একদল গরু। বাস্তবধর্মী অঙ্কনরীতির চূড়ান্ত রূপ তিনি সেসময়ই দেখিয়েছেন। ১৯৬৪ সালে অাঁকা তাঁর জড়জীবন চিত্রকর্মের মাঝে আলো ও ছায়ার বিপরীত অবস্থান ছবিকে স্পষ্ট করে তোলে। কাপড়ের ভাঁজ, ফুলদানি, ফুল সবকিছুই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে রঙের প্রলেপে। ‘সদরঘাট’ ছবিটি ১৯৬৭ সালে জলরঙে অাঁকা। সে-সময়ের সদরঘাটের একটি বিশদ বর্ণনা এ-ছবিতে পাওয়া যায়। ঘাটের নৌকা ও আধাপাকা বাড়িঘরের আদল এ-ছবিতে খুঁজে পাওয়া যায়। 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিন সাঁওতাল পরিবার, পাহাড়ি জনপদের পরিবেশ ও মানুষ ছবিতে তুলে আনতেন। একইভাবে রফিকুন নবী তাঁর 888sport live chatকর্মে সাঁওতাল পরিবারের সদস্যদের বেশভুষা, পরিবেশ এঁকেছেন। এ-ছবি দুটি ১৯৬৭ সালে অাঁকা। রফিকুন নবীর কাজে এ-সময়ে খানিকটা পরিবর্তন আসে। জলরঙে অাঁকা ছবির সঙ্গে কালি-কলমের রেখা প্রয়োগ করে বিষয়বস্ত্তকে আরো বাস্তবরূপ দেন। গ্রিসে থাকা অবস্থায় ছাপচিত্রের বিষয়ে পরিবর্তন আনেন ও বাস্তবধর্মী নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেন জ্যামিতিক আকৃতি। রঙের ব্যবহারেও সীমিত চিন্তা প্রয়োগ করেন। এ-প্রদর্শনীর আরেকটি দিক হলো, 888sport live chatীজীবনের একটি সময়ে করা মানুষের দেহের বিভিন্ন ভঙ্গির রেখাচিত্র প্রদর্শন। ১৯৭৪ সালে অাঁকা মানব-মানবীর ন্যুড ড্রইংগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে যেমন – চারকোল, প্যাস্টেল, তেলরং, পেনসিলে করা। একই সময়ে করা কাঠখোদাই চিত্রে জ্যামিতি নির্ভরতা বেশ দেখা যায়। রফিকুন নবী যে-মাধ্যম বা যে-রীতিতে 888sport live chatকর্ম নির্মাণ করেন না কেন তাঁর ছবির বড় শক্তি রেখার গতি ও দৃঢ়তা। দৃঢ় ও গতিশীল রেখা তাঁর ছবিতে শক্তি তৈরি করে। ১৯৭৫-পরবর্তী সময়ের কাজে রেখার প্রয়োগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১৯৭৫ সালে আঁকা আরেকটি ছবি হলো ‘অ্যান ওল্ড হাউস ইন এথেন্স’। এথেন্সের প্রকৃতি, পরিবেশ ও ছিমছাম গোছানো অবস্থাকে এ-ছবিতে দেখিয়েছেন তিনি। এ-888sport live chatকর্মে রঙের ব্যবহার সম্পর্কে 888sport live chatীর দক্ষতা প্রকাশ পায়। ১৯৭৮ সালের কাজে ছাপচিত্রে রঙের ব্যবহার ও গতির প্রয়োগ দেখা যায়। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত আঁকা ছবির বিষয়ে স্থূল রেখা আর রং বাছাইয়ে মনোযোগ দেন। কোমল বা শীতল রঙের প্রতি আগ্রহ তাঁর কাজে দেখা যায়। ২০০১ সালে আমরা জলরং, চারকোল, অ্যাক্রিলিক মাধ্যমে আঁকা ছবিতে জ্যামিতি আর বিমূর্ত ভাষার ব্যবহার দেখি। এ-সময় মিশ্র মাধ্যমে আঁকা মানুষ-পরিবেশের বর্ণনায় আলোছায়া আর রেখার শক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ-প্রদর্শনীতে 888sport live chatীর আঁকা কিছু পোস্টার, বইয়ের নকশা, কার্টুন রাখা হয়েছে। ১৯৯৮ সালে অাঁকা সারাবিশ্বের ছয়টি আলোচিত চরিত্রের কার্টুন রেখেছেন। ২০০৬ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত আঁকা ছবিতে প্রকৃতির ছবির সঙ্গে সিরিজধর্মী ছবি যেমন – পরিবার, শ্রমজীবী মানুষের কোলাহলকে ছবির বিষয় করে নেন। মানুষের মিছিল আর নিসর্গের সঙ্গে গণমানুষের সম্পর্ক এসব ছবিতে দেখা যায়। এ-সময় বড় আকৃতির ক্যানভাসে ছবি অাঁকার ঝোঁক দেখা যায়। স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রী, কিংবা নদী পারাপার করা নৌকার ওপর বিশ্রাম নেওয়া ঘাটের মাঝি তাঁর ছবির বিষয় হয়ে ওঠে। মানুষের গায়ে নীল রং প্রয়োগ, শরীরে দেখা পাওয়া মাংসপেশি কোনো কোনো ছবিতে স্পষ্ট করে দেন, আঁচড় কেটে। মানুষের সমাবেশ গত দশকের আঁকা ছবিতে তিনি দর্শকদের দেখাননি। মানুষের দেহে লুকিয়ে থাকা শক্তি রফিকুন নবীর এই দশকের ছবিতে দেখা যায়। 888sport live chatীর পাঁচ দশকের কাজকে আমরা তিনটি স্তরে ভাগ করে নিতে পারি। ১৯৬৪-৭৫ সময়কালে আঁকা ছবি বাস্তবধর্মী, ১৯৭৬-২০০৫ পর্যন্ত জ্যামিতি আর সরলরেখার প্রয়োগে ছবিতে গতিময় আবহ তৈরি। ২০০৬-২০১৩ পর্যন্ত বড় ক্যানভাসে গণমানুষের দিনযাপন আর আধাবাস্তব ও বিশুদ্ধ বিমূর্ত রীতির সৃষ্টি। নিরলস 888sport live chatচর্চার পাঁচ দশকে 888sport live chatী তুমুল জনপ্রিয়তা পান আর দর্শক নন্দিত 888sport live chatকর্মের জনক সবসময় ঋণ স্বীকার করেন গুরু 888sport live chatীদের কাছে। এ-প্রসঙ্গে তাঁর মত, ‘চিত্রবিদ্যা চর্চাকালে যে-শিক্ষকদের সান্নিধ্য পেয়েছিলাম জয়নুল আবেদিন থেকে শুরু করে সর্বকনিষ্ঠ 888sport live chatী কাজী আবদুল বাসেত, তাঁরা সবাই 888sport appsের শ্রেষ্ঠ 888sport live chatী। এজন্যে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। আবেদিন স্যার, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন আহমেদ, আনোয়ারুল হক, আমিনুল ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ কিবরিয়া, এঁদের সবার কাছেই আমি ঋণী।’ পাঁচ দশকের 888sport live chatসম্ভার থেকে দর্শক অর্জন করেছেন 888sport live chatী রফিকুন নবীর সৃষ্টির ধারাবাহিক পরিক্রমা। দ্রোহে, সংগ্রামে, 888sport sign up bonus, নিসর্গ আর গণমানুষের নিত্য লড়াইকে বারবার মনে করিয়ে দেন 888sport live chatকর্মের মাধ্যমে। এভাবেই রফিকুন নবী 888sport live chatাঙ্গনে হয়ে ওঠেন বিশিষ্টজন। ৭ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এ-প্রদর্শনী শেষ হয় ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩-তে।