গেলাপাগোস        

তেজি কোনো রকম ভনিতা ছাড়া বলে বসে, প্রেমারিন মানে কি তুমি জানো তনু! তনু ক্যামেরার লেন্স ঠিক করতে করতে জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়, বলে, সকাল থেকে আমাদের কোনো কথা হয়নি, তাই না!

– হুম, তাতে কী! কত সকালই তো আমরা কথা বলি না!

– প্রেমারিন, কী সেটা! কোনো আগ্নেয়গিরি, এই কোটোপাস্কিতে, জীবন্ত কিংবা মৃত! কিংবা কোনো গিরি, দুর্গম কি সুগম! নাকি ইগুয়ানার অন্য কোনো প্রজাতি!

 তেজি প্রশ্ন করেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়, তনুকে কেন এই প্রশ্ন করেছে! ভাবল, ঠিক আছি তো! কপাল ভালো যে তনু ওর কোনো কিছু খেয়াল করে না, কোনো কিছু না। এমনকি অনভ্যস্ত তেজি যখন ঘোড়ায় চেপে ওর আগে আগে বরফ 888sport app আগ্নেয়গিরি দেখতে গেছে গিরিখাদ বেয়ে বেয়ে, তখনো ঠিক আছো কি না জিজ্ঞাসা করে তেজির ব্যক্তিত্বকে দুর্বল করে না। যদি করত, তাহলেই বরং অবাক হতো। ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টেই তাদের একরকম বোঝাপড়া হয়ে গেছে, প্রথম দেখাতেই। তেজি ভুল করে অন্য এয়ারপোর্টে ওকে আনতে গিয়ে তনুর ঘণ্টা দুই নষ্ট করেছে, তখনই বুঝেছি সে যে-কোনো ব্যাপারে খাতির করবে না। সিদ্ধান্তমতো দুজন দু-জায়গা থেকে ইস্তাম্বুল এসে মিলবে, তেজি আগের দিন, তনু পরদিন নেপাল থেকে। প্রথমে তো তনু জানিয়েছিল, আপাতত তার
টাকা-পয়সা নাই, 888sport slot game এক বছর পিছিয়ে দিলে বরং সে রাজি কিন্তু তেজির অনুরোধে সে রাজি হয় এই শর্তে যে, এখন তেজি তার সব খরচ দেবে, পরে ও শোধ করবে। তেজি বোঝায়, 888sport slot gameে অভিজ্ঞ তনু 888sport slot gameসঙ্গী হলে তেজির ভালো লাগবে খুব। আর 888sport slot game পেছানো যাবে না, বেরোতে হবে যত দ্রুত সম্ভব, তার তিন মাসের ছুটি শুরু হয়ে গেছে।

ওদের 888sport slot game যখন প্রায় শেষ, ইকুয়েডরের কোটোপাক্সিতে, ভয়াবহ কষ্টসাধ্য এবং অবিশ্বাস্য সুন্দর সক্রিয় আগ্নেয়গিরি দেখা হয়ে গেছে, তখন একটা অফার দেখে গেলাপাগোস যাওয়ার বায়না ধরে তেজি, তনু যাবে না, খরচ আকাশচুম্বী হয়ে যাচ্ছে। তেজি বলে, তোমার চিন্তা কি, খরচ তো আমি দেব। সে বলে, আমাকে তো শোধ করতে হবে!

– অফার আছে বেশি খরচ হবে না, এতো কাছে এসে এই অফারটা মিস করা বোকামি হবে। তনুর চোখে-মুখে গেলাপাগোস যাওয়ার আলো, কিন্তু টাকার চিন্তায় দোদুল্যমান। ছয় হাজার ডলারের বদলে তিন হাজারে পাঁচদিন গেলাপাগোসের পাঁচটা আইল্যান্ড ঘুরিয়ে দেখানো সঙ্গে স্নরকেলিং! সত্যি মিস করা ভুল হবে! সামান্য সময়ের মধ্যে তনু রাজি হয়ে যায়, ডারউইনের গেলাপাগোস! ডারউইনের দ্বীপবাস নিয়ে কিছু কথা কয়েকটা বাক্যে বলেই বেরিয়ে পড়ে তনু। কথা বলে সময় নষ্ট করার মানুষ নয় সে। আর গল্প করতে তো আসেনি এখানে, তবে খুব কিছু দেখছে তেজি, এ-কথাও বলা যাবে না, কিন্তু দেখছে তো বটেই। আঠারো-উনিশটা দেশ দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়নি যদিও, ক্লান্ত হয়েছে গোপন ইচ্ছা কীভাবে চরিতার্থ করা যায় তার পথ মনে মনে বাতলাতে বাতলাতে। মাঝখানে কয়েকটা দিন তনুর ভাই ঝুনু এলো, সে তনুর মতো না, একেবারেই আলাদা, প্রকৃতির চেয়ে মানুষ দেখে বেশি, মেয়েমানুষ আরো বেশি! তখন তাদের আলাদা রুম, তিনজনেরই। এমনকি ঝুনু ভাইয়ের সঙ্গে রুম ভাগ করে না। 888sport slot gameের প্রথম দিকে কয়েকবার হোটেলে একটা রুম শেয়ার করেছে বাড়তি খরচ বাঁচাতে, তনুরই পীড়াপীড়িতে। তনু শোয়া মাত্র নাক ডাকত, চেয়ে চেয়ে আধো আলোয় ওর ঘুম শুনত, কয়েক হাত দূরে ওর বিছানা। প্রকৃতিমগ্ন 888sport slot gameধ্যানী একজন সুখী মানুষ। তেজি অনেক ভেবে দেখেছে মানুষ আসলে কী পেলে খুশি হয় কিংবা বেঁচে যায়। তালিকা তার হয় না, কেননা প্রত্যেকটা মানুষের সুখী হওয়ার ধরন আলাদা, যেমন আলাদা দুঃখের ধরন। বেঁচে থাকাই জীবন, ন্যূনতম সুখানুভূতি যদি থাকে সেথায়। তনুর বেঁচে থাকার অনেক রসদ, অনেক এবং সেগুলো খুবই জোরালো এবং উপভোগ্য। ল্যাটিন আমেরিকার 888sport live football ভালোবাসে, রবার্ট ফ্রস্ট তার প্রিয় কবি, জীবনানন্দও। আরো আরো কবি, একদিন দু-লাইন বলেই থেমে গেছে, ভেবেছে একজন ফার্মাসিস্টকে এসব শুনিয়ে লাভ কী, ও হয়তো বিরক্ত হচ্ছে, ও তো ওষুধের কম্পোন্যান্ট আর ডোজ ছাড়া কিছু বোঝে না! হায়, যদি জানত তেজি 888sport app download apk ভালোবাসত, কত কত দীর্ঘ 888sport app download apk তেজির পেটে মুখস্থ ছিল, হয়তো কিছুটা অবশিষ্ট আছে এখনো! চট্টগ্রামের কত কত পাহাড় আর 888sport app download apk তার স্নায়ুর ওপর ছড়িয়ে ছিল সমুদ্রের জলরাশির মতো, বাবা একটা লাইন বলে থেমে যেতেন তারপরের লাইনটা তেজির, মা হাসতেন, অংশ নিতেন না। তেজির বাবা কবি ছিলেন, কিংবা এখনো আছেন, তেজি সেটা মনে রাখলেও বলতে চায় না, ‘কঙ্কনের হেঁয়ালি কীর্তন’, দুই ফর্মার চটি বই দিয়ে বাবার শুরু, ১৯৮৪, মূল্য ১৪ টাকা, পাঁচলাইশের মর্নিং স্টার কিন্ডারগার্টেন, মায়ের আঙুলে আমার কচি হাত, নার্সারিতে পড়তে! মিষ্টি চেহারার দারিদ্র্যকবলিত মিস পড়াতেন! শুনেছি বেতন সাড়ে তিনশো। মাও পড়াতেন মর্নিংস্টারে, এক শিফট, বেতন সাড়ে চারশো, কিন্তু মায়ের চেহারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডিধারী প্রফেসরের স্ত্রীর আভিজাত্য ঝলমল করত, ছোট ভাইটার পৃথিবীতে আসতে তখনো তিন বছর বাকি! ‘কঙ্কনের হেঁয়ালি কীর্তন’ 888sport app download apkগুলো সবই সনেট, নিরীক্ষাধর্মী, উপমার অপূর্ব ব্যবহার, শুনেছি কারো মুখে, মিসদের মুখে হতে পারে, তাঁরা বই কিনেছিলেন চোদ্দ টাকায়, পড়েও ছিলেন। উপহার পেলে কেউ পড়ে না, কিনলে পড়ে, একথা মা বলেননি। খাতা দেখা রুমে তাঁরা বোধহয় আলোচনা করতেন বইটা নিয়ে, আমার ঔৎসুক্য ছিল, আমার বয়স তখন পাঁচ। মা 888sport app download apk নিয়ে কিছু বলেননি, মা 888sport app download apkর ধার ধারতেন না। জানালার শিক ধরে সূর্য নিয়ে, পাখিদের ডানা নিয়ে, বাতাসে ভাসতে থাকা পালক নিয়ে ছড়ার ছন্দ মেলাতে বেগ পেলে বাবা এগিয়ে আসতেন, মা দুই কবিকে উপভোগ করতেন। কখনো এসে বাবার কিংবা আমার চুলে হাত দিয়ে নাড়িয়ে দিয়ে যেতেন, যেন আঙুল আর চুলের সম্মিলনে জীবন্ত 888sport app download apk রচনায় তার আগ্রহ বেশি। তিনি হলি ক্রস কলেজের ভালো ছাত্রী ছিলেন, ইকোনমিক্সে এমএ, বাবার সহপাঠী 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে, ঠিক, প্রেমের বিয়ে। বাবার পেছন পেছন ইউরোপ ঘুরেছেন। বাবার হয়েছে পিএইচডি আর মায়ের হয়েছি আমি, আমি ব্রিটিশ নাগরিক। এই একটা কাজ ভালো হয়েছে আমার জীবনে। তাই বলে সব ভালোর সঙ্গে কিন্তু একটু মন্দও ঘুরঘুর করে ঘাড়ে এসে পড়ে। আমার পনেরো বছর লন্ডনবাস একনাগাড়ে। একবার দেশে গেছি, গত বছর বাবাকে দেখতে, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, মর্মান্তিক দৃশ্য! তো গত বছর যা হলো লন্ডনে! বুড়োটার বয়স ছেষট্টি, কথায় কথায় বলে তার অনেক অভিজ্ঞতা, আমি নাকি দেখতে ভালো, ভারতীয় লাগে না, আমি বলি 888sport apps, সে বলে, ওই হলো! আমি বলি, না, হয়নি। তার বাসায় আমি সাবলেট থাকি, থাকি মানে এই কিছুদিন আগে থাকতাম। বুড়োটার বাসায় উঠে প্রথমেই বলেছি, আমার বয়স্ক মানুষ পছন্দ না, তো তুমি বেশি ভাব করতে এসো না। সত্যি সে আসে না, তবে সে আমার ওপর বিরক্ত, অ্যাগ্রিমেন্টের কারণেই হোক আর অন্য কারণেই হোক সে আমাকে সহ্য করে প্রভূত বিরক্ত নিয়ে। দেখি রাতে প্রায়ই এক থাই মেয়ে আসে, বুড়ো হলেও সে তো খাঁটি ইংলিশ, নায়কোচিত চেহারা, তার এই রুচি! ডাইনিংয়ে দেখা হয়, কিচেনে দেখা হয়, হাসে, হ্যালো করে; কিন্তু কথা এগোতে দিই না আমি। আমার ব্যূহ-বর্ম ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ অসহজ কাজ। সেদিন কী হলো, খুব মাথাব্যথা, সঙ্গে গা কাঁপিয়ে বমি। ছুটে এসে মেয়েটা বলে, কোনো ভয় নেই, চলো তোমায় মাথা টিপে ঘুম পাড়িয়ে দিই। আমি কিছু বলার আগেই সে নিপুণ হাতে মাথা টিপে দিলো, পিঠ মাসাজ করে দিলে ঘুমে জড়িয়ে এলো চোখ তারপর ব্রায় হাত …। আমি চমকে উঠে বলি, হেই, তুমি কী করো! সে বলে, জানো না ডিয়ার, আজকে থাকব তোমার সঙ্গে! সব বোঝ, আর এটা বোঝ না! মার্ক তো বলেছে তুমি তার সঙ্গে থাকো না, মানে …। আমার মাথায় খুন চেপে যায়, কিছু না পেয়ে একটা বিয়ারের বোতল তুলি নিই, ও ভয় পেয়ে ছুটে যায় মার্কের ঘরে। ফলাফল মার্কের মামলা করার হুমকি, তার মেহমানকে আমি খুন করতে চেয়েছি, আমি একটা ফকিরনি, আমার উচিত মামলা থেকে বাঁচতে বাসা ছেড়ে যাওয়া। কী করা, অ্যাডভান্সের মায়া ত্যাগ করতে হলো সহসাই।

তেজির মানসিক অবস্থান তনুর চেয়ে হাজার মাইল দূরত্বে, এই 888sport slot gameে। ঠিক যে 888sport slot gameের ইস্যু দুজনের আলাদা একই জিনিস দেখা সত্ত্বেও। তনু সারাক্ষণ ছবি তোলে, ভিডিও করে, নোট নেয়, শিশুর মতো ঔৎসুক্য নিয়ে সব কিছু দেখে, পাখি দেখলে বিহ্বল হয়ে কখনো তেজিকে ডাকে, খুব কম যদিও। মানে খুবই বিরল কিছু হলে একা তার সৌন্দর্য হজম করতে না পারলে ডেকে নেয় ইঙ্গিতে। প্রতিটি জায়গায় যাওয়ার আগে পড়াশোনা করে প্রচুর, কিছুতেই যেন কিছু দৃষ্টির অগম থেকে না যায়। উদ্ভিদ কি জীববৈচিত্র্য নিয়ে সীমাহীন আগ্রহ আর তুলনারহিত বিস্ময়বোধ। কিছু একটা দেখলেই ফিরে এসে ল্যাপটপে বসে, ফেসবুকে আপলোড দেয় কিংবা পড়তে থাকে। প্রকৃতিকে তেজিও দেখে, দেখে খুশি হয় তাৎক্ষণিক, তা নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস কি পরিকল্পনা নেই। সব মিলিয়ে দুজনের দেখার ধরন একেবারেই আলাদা। উনিশতম দেশ ইকুয়েডরে এসে ধন্দে পড়ে যায় তেজি, তার উদ্দেশ্য নিয়ে। ঠিক করে, এখানে নয়, ফিরে গিয়েই করবে যা করার, তনুকে বিপদে ফেলবে না। যা করবে তা নিয়ে ভাবিত ছিল গতকাল পর্যন্ত, কীভাবে করবে সেটা নিয়ে একেবারেই নিশ্চিত ছিল না, এই 888sport slot gameের উদ্দেশ্য ছিল মূলত টাকাগুলো খরচ করে ফেলা, এত কষ্টের টাকা ব্যাংকে ফেলে রাখা কোনো কাজের কথা নয়। কিন্তু এই মুহূর্তে ভাবছে পরিকল্পনা নাকি ভাগ্য! কার ওপর ছাড়বে নিজেকে!

তনু প্রথমে দুই মাসের 888sport slot game পরিকল্পনা করেছিল, যেটা তেজির অনুরোধে হয়েছে একশ দশ দিনের, পরে আরো দশ দিন টিকেট পাল্টাতে পাল্টাতে। এত কিছুর পরও টাকাগুলো যদিও শেষ হবে না, দুজনের খরচ দেওয়ার পরও আরো কিছু পাউন্ড ব্যাংকে পড়ে থাকবে, ব্যাংক লাভবান হবে, হোক!

তনুর কাজ ছিল দেশে, সে সেটা সংক্ষিপ্ত করেছিল তেজির অনুরোধে, এবার পুরো বাতিল। খরচের কথা ভেবে প্রথমে একটু গজগজ করলেও গেলাপাগোসে এসে সব জল হয়ে গেল! ঘন ঘন ওর বিখ্যাত গিম্বল ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, বিরল শিল, ইগুয়ানা আর পাখি, বিচিত্র সব পাখি। পর্যটকদের আনাগোনা সত্ত্বেও প্রকৃতি এখানে এত নিষ্কলুষ, আদি আর নিখাদ! গেলাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের কচ্ছপ নিয়ে ওর দারুণ উত্তেজনা। সান ক্রিস্তফারে বিশাল বিশাল কচ্ছপ নিয়ে ও অনেক ভিডিও করে। নানা দ্বীপে নানা প্রজাতির কচ্ছপ, বস্তুত গেলাপাগোস মানেই হলো বিশালাকৃতির কচ্ছপ। গেলাপাগোসে ব্যাপারটা এই পর্যন্ত থাকলেও চলত, কিছুই হয়তো পাল্টাতো না তেজির পরিকল্পনার, কিংবা কি জানি পাল্টানো হয়তো শুরু হয়েছিল আগেই, বুঝতে পারেনি, স্নরকেলিং হলো উপলক্ষ! স্নরকেলিংয়ের পর ওর সবকিছু হুড়মুড়িয়ে পড়ল যেন, একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে! তিন মাসে এই রাতেই সে তনুকে লুকিয়ে ওয়াশরুমে বসে কাঁদল বুক হালকা করে।

সমুদ্রের গভীরে নীল পানির সেই জগৎ, বিস্ময়কর এক জলজ জগৎ থেকে উঠে এসে মনে হলো, আবার আসতে হবে, আবার দেখতে হবে! এমন অপরূপকে বারবার দেখতে হবে! দেখতে হলে তো বাঁচতে হবে!

 শেষ দ্বীপটার শেষ রাত্রি, খাওয়া-দাওয়া শেষে একই রুমে আলাদা বিছানা। ঘুমাতে যাওয়ার আগে তনুকে একটু বিষণ্ন দেখাচ্ছিল, কিংবা দেখাচ্ছিল না, তেজির মনের ভুল। কিন্তু তার তো খুবই আনন্দ, আনন্দ দেখে তনু বলেই ফেলল, ফিরছ বলে আনন্দ হচ্ছে তো! এ সব মিস করবে না!

– করব, উজবেকিস্তানের ঘোড়ার চর্বির পিলাফ রাইস, এখনো মুখে লেগে আছে!

 অবাক বটে, স্নরকেলিং নিয়ে একটি কথাও বলল না!

– মাই গড, আর কিছু না! এই! আর কিছু দেখলে না!

– কী জানি, তবে আবার আসতে হবে বলে বেঁচে রইলাম। বাঁচতে চাইলাম, মানে বাঁচতে চাই।

 – মানে কী?

 – মানে আমার ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না, না ফেরার পরিকল্পনা নিয়েই বেরিয়েছিলাম তনু!

খুব মনোযোগ দিয়ে কচ্ছপের ভিডিও দেখছিল তনু, চোখ ল্যাপটপের মনিটরে রেখেই কথা বলছিল। এবার মনিটরের ডালা নামালো, ঘুরে বসে ভ্রু কুঁচকে তাকালো, চোখেমুখে রাজ্যের বিরক্ত, কী বলছ তুমি টি, … তেজি! তেজি কথাটা লুকাতে চাইল কিন্তু পারল না। বলল, আমি সুইসাইডের পরিকল্পনা নিয়ে বেরিয়েছিলাম তনু, আমার কোনো স্বপ্ন ছিল না। সরি তনু, এ-কথা তোমাকে বললে তো তুমি আমার সঙ্গে বেরুতে না!

– আলবাৎ বেরুতাম না, তোমার মুখদর্শনই করতাম না, কক্ষনো না! ছিঃ, তুমি জানো 888sport slot game আমার কাছে কী! 888sport slot game আমার সব, ধ্যানজ্ঞান, বলতে পার ইবাদতের মতো। ছিঃ! তুমি এই সব মাথায় নিয়ে আমার সঙ্গে 888sport slot gameে বেরিয়েছ!

– শোনো, একটা কথা শোন!

– তোমার সঙ্গে কোনো কথা নেই, এখনো তোমার সঙ্গে বিশ-বাইশ ঘণ্টা একসঙ্গে থাকতে হবে, সেটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে!

তেজি থেমে যায়, বলা হয় না প্রেমিক স্বামীর প্রতারণার কথা, বলা হয় না মায়ের দুর্বিষহ জীবনের কথা, বলা হয় না বাবা-মায়ের ডিভোর্সের কারণে ভাইটার মস্তিষ্ক বিগড়ানোর কথা।

এত কিছুর কিছুই হতো না যদি মাকে কিছু হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দিত, সত্যি দিলেই জীবন ঠিকঠাক চলত, সত্যি চলত। মায়ের পঁয়ত্রিশে হিস্টেকটমি, টেনেটুনে চল্লিশেই হয়তো যৌনজীবনের যবনিকা টানলে বাবা বাধ্য হয়ে ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়, শেষ পর্যন্ত গৃহকর্মীকে বিবাহ ও সংসার। আর এখন আমি রাতদিন পড়ছি মেনোপোজ, অকাল মেনোপোজ 888sport promo codeদের জন্য অ্যাস্ট্রোজেন, হরমোন থেরাপি নিয়ে! প্রেমারিন তৈরি হয় গর্ভবতী ঘোড়ার প্রস্রাব থেকে, যার কোনো কিছু আমার মা, আমার উচ্চশিক্ষিত অভিজাত মা নিজের জীবনে বিন্দুমাত্র কাজে লাগাতে পারলেন না। কি দুঃখজনক! কি হতাশাজনক! কী কারণে এসব নিয়ে তিনি ডাক্তারের কাছে গেলেন না, তিনি তো নির্বোধ নন! এতগুলো জীবন নষ্ট হলো! বাবার আর একটাও 888sport app download apkর বই হলো না!

কিছুই বলা হয় না তনুকে, সে জানে বাকি সময়টা সে বাঁচতে চাইবে ফের এই পৃথিবীর আদিজগৎকে দেখবে বলে। আর যে চল্লিশটা বই আর দুশো আর্টিক্যাল সে জোগাড় করে অর্ধেকেরও বেশি পড়ে ফেলেছে, পড়তে পড়তে মায়ায় কী ক্ষোভে মায়ের জন্য প্রাণপাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে, তা বৃথা যেতে দেবে না। অসময়ে নানা কারণে মেনোপোজ হওয়া 888sport promo codeদের কাজে নিজেকে লাগানো যায় কি না নিজের দেশে, সেটা নিয়ে ভাববে। সে অবলা কি সবলা, শিক্ষিত কি নয়, পুরুষ কি 888sport promo code নির্বিশেষে সকলের জানা দরকার। জানা দরকার একটা জীবন কত সুন্দর হতে পারে শুধু বিষয়টা জানা থাকলে, যৌথজীবনে যৌনতাকে উপেক্ষা করা তো মহাশাস্তি আর এসব অজ্ঞান মানুষ তো অবোধ জানোয়ারের সমান!

লাগেজ গোছাতে গিয়ে তেজি ভাবে, তনুকে আন্তরিক ধন্যবাদ দিতে হবে, কেননা সে-ই তার নতুন জীবনের বার্তাবাহক।