চট্টগ্রামের অমূল্য ইতিহাস

মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়
প্রাচীন চট্টগ্রাম ও সেকালের হিন্দু সমাজ  কমলেশ দাশগুপ্ত  চট্টগ্রাম, ২০১৮  ১০০০ টাকা

বর্তমান 888sport appsের পূর্বাংশ চট্টগ্রাম ও আরাকান অঞ্চল প্রাগৈতিহাসিককাল থেকেই ইতিহাসের উজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ড. আহমদ শরীফ চট্টগ্রামের ইতিহাস নামক তাঁর স্বল্পায়তন গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, প্রাচীন তিববতি সূত্র থেকে প্রাপ্ত অঞ্চলটির নাম ছিল ‘জ্বালনধারা’, অর্থাৎ তপ্তজল-সমন্বিত অঞ্চল। সীতাকু– এখনো পবর্তের গা বেয়ে তপ্তপানি বেরোয়। অন্যদিকে সিন্ধু থেকে আগত সিন্ধ বৌদ্ধযোগী বালপাদের অন্য নাম ছিল জ্বালন্ধরী। অর্থাৎ জ্বালন্ধরানবাসী।
চট্টগ্রামের রয়েছে বহু প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য, কিংবদন্তি এবং উত্তরাধিকার। কমলেশ দাশগুপ্ত তাঁর সুবৃহৎ গ্রন্থ প্রাচীন চট্টগ্রাম ও সেকালের হিন্দুসমাজ গ্রন্থে চট্টগ্রামের যে-আলেখ্য তুলে ধরেছেন, তা একদিকে যেমন নতুন নতুন তথ্যের আলোয় উদ্ভাসিত, তেমনি বহির্বঙ্গের সঙ্গে এ-জনপদটির সম্পর্ক ও ভাববিনিময়ের পরিচয়বাহী। এ বিপুল গ্রন্থ রচনায় তাঁর যে বিপুল শ্রম ও মেধা ব্যয় করতে হয়েছে, তা ভেবে বিস্ময় জাগে।
মোট ছয়টি পর্বে বিন্যসত্ম তাঁর বইটি, এবং প্রতিটি পর্বেরই রয়েছে একাধিক উপপর্ব। পর্ব ধরে ধরে তিনি আলোচনা করেন প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে বৈদিক কাল, আর্যীকৃত চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামে চন্দ্রবংশের রাজত্ব, দেবশাসন (১২৩০-১৩৪০) ইত্যাদি ঐতিহাসিক পর্যায়। গ্রন্থটি যেহেতু ‘সেকালের’ চট্টগ্রাম নিয়েই তাই লেখক ১৯০০ শতাব্দীকেই প্রান্তসীমা হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
এরপর লেখক আলোচনা করেছেন বৃহত্তম চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক দিক নিয়ে। সেখানকার মন্দির ও বিগ্রহ যেমন, তেমনি শিক্ষা ও 888sport live football প্রসঙ্গে বিস্ত‍ৃত আলোচনা করেছেন লেখক। এই পর্যায়ে গ্রন্থটি কিন্তু আর ‘সেকালের’ থাকেনি, চলে এসেছে ‘একালে’ও, যা স্পর্শ করেছে 888sport cricket BPL rate শতককেও। সেদিক থেকে গ্রন্থনামটি খানিক বিভ্রান্তিকর।
আবহমানের বাংলা ভূতাত্ত্বিক, ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক বিচারে প্রাচীনত্বের নিঃসন্দিগ্ধ পরিচয়বাহী। চট্টগ্রামের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সমতল ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মিলিয়ে যে-ভূখ-, তার প্রাচীনত্ব সুবিদিত। ভূতাত্ত্বিক গঠনের দিক থেকে এ-অঞ্চল গঠিত হয়েছিল প্যালিওসিন যুগে। ব্রহ্মদেশীয় উপপেস্নট ও আরাকান উপপেস্নটের মধ্যে সংঘাতের ফলে তৈরি হয়েছে চট্টগ্রাম-আরাকানের পাহাড়শ্রেণি। মানুষের বসবাস যে এখানে সুপ্রাচীন, তা Periplus of the Erythrean Sea-র বর্ণনা থেকে জানা যায়। এখানে মঙ্গোলয়েড ও অস্ট্রিক মানুষের নিদর্শন মিলেছে, মিলেছে ভোট-চীনীয় মানুষের অস্তিত্বেরও প্রমাণ। স্ট্র্যাবো থেকে হিউএন সাং হয়ে ইবনে বতুতার লেখনীতে চট্টগ্রামের উল্লেখ মেলে। তিববতি ও আরাকানি উপাখ্যানেও নিহিত রয়েছে এ-অঞ্চলের মানুষের ইতিবৃত্তান্ত। তবে গৌড় বা পু-্র অঞ্চলের মতো বিস্ত‍ৃত ইতিহাস চট্টগ্রামের নেই, অন্তত প্রাচীন সময়ের।
পঞ্চম শতকের মধ্যেই সমগ্র বঙ্গের মতো চট্টগ্রামেও আর্যীকরণ ঘটে যায়। তার আগে অঞ্চলটি ছিল বৌদ্ধপ্রভাবিত। অতীশ দীপঙ্করের বহু আগে চট্টগ্রামের বৌদ্ধ শ্রমণ বণরত্ন সশিয্য তিববত যান।
লেখক কখনো ইতিহাস, কখনো পুরাণ, আবার কখনো বা কিংবদন্তির আশ্রয় নিয়েছেন চট্টগ্রামের কাহিনি বর্ণনায়। রামায়ণে বর্ণিত রামচন্দ্র নাকি চট্টগ্রামে এসেছিলেন, এরকম একটি আভাস তিনি দেন। আসলে মহাকাব্যের চরিত্রসমূহের প্রতি সম্পৃক্ততা জনমানসের চিরায়ত এক কাঙিক্ষত স্বপ্ন। এই থেকেই এসব জনশ্রম্নতির জন্ম।
ঐতিহ্যিক স্থান হিসেবে লেখক বর্ধমানপুর (স্থানটির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কোনো যোগ নেই), চন্দ্রনাথ, আদিনাথ, রামকোট ইত্যাদি স্থান নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা করেছেন। আরাকান রাজ্যশাসিত রামু অঞ্চলে যে বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ সংঘ, তার বিবরণও সংক্ষেপে দিয়েছেন লেখক।
লেখকের আলোচনায় বিশদ স্থান পেয়েছে চট্টগ্রামে চন্দ্রবংশীয় শাসনের কথা। ‘সমন্বয়ের অমত্মঃপর্ব : দেবশাসন (১২৩০-১৩৪০)’ অধ্যায়ে লেখক তাঁর আলোচনায় ‘চট্টগ্রামে বসবাসরত আদি জনগোষ্ঠীর ধর্মাচার ও সংস্কৃতির সঙ্গে আর্য প্রভাবিত ধর্মাচার ও
সংস্কৃতির গ্রহণযোগ্যতা’ নিয়ে বিশদ আলোকপাত করেন। এক্ষেত্রে তাঁর বিশেস্নষণ, মাতৃশক্তিই গোড়ায় চট্টগ্রামে পূজিত হতো। পরবর্তীকালে সেখানে শিব, বিষ্ণুপূজা প্রচলিত হয়। এখানে পূজার্চনার ক্ষেত্রে আর্য-অনার্যের সমন্বয়ধর্মিতা লক্ষ করা যায়। একদিকে মন্ত্রপাঠ, যাগযজ্ঞ, বলিদান, অন্যদিকে পূজার উপচার হিসেবে সিঁদুর, ডিম, চাল, কলাপাতা ইত্যাদি অনুষঙ্গ এই সমন্বয়ধর্মিতারই লক্ষণ। লেখক দেখিয়েছেন, চট্টগ্রামে আর্যীকরণের প্রভাব লক্ষ করা যায় এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানের নামগুলো পর্যালোচনা করলে। যেমন সুচক্রচ-ী, বাগদ-ী, গোমদ-ী, হসত্মীগ্রাম, ধর্মপুর, গোবিন্দারখীল ইত্যাদি।
বইয়ের তৃতীয় পর্বে লেখক আলোচনা করেছেন প্রাক্-মোগল আমল, মোগল আমল এবং ইংরেজ আমল নিয়ে। বহু তথ্য তিনি সংগ্রহ করেছেন আকরগ্রন্থ থেকে। নিরলস পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে পুরো গ্রন্থটি। সম্ভাব্য কোনো উৎসকেই তিনি বাদ রাখেননি নেড়েচেড়ে দেখতে। রেনেলের মানচিত্র থেকে শুরু করে রিজাল, শরৎচন্দ্র দাশ, আহমদ শরীফ, রমেশ চন্দ্র মজুমদার, নীহাররঞ্জন রায়, আহমদ শরীফ, এমন অসংখ্য লেখকের মতামত আলোচিত-পর্যালোচিত তাঁর গ্রন্থে। যে ঐকান্তিক নিষ্ঠা আর গভীর অনুসন্ধানী মানসতা সক্রিয় ছিল গ্রন্থ রচনার পেছনে, তাতে লেখককে অসংখ্য সাধুবাদ জানাতে হয়। আঞ্চলিক ইতিহাস নিয়ে এমন ঋদ্ধ, বিধিবদ্ধ, তথ্যনির্ভর, বিস্ত‍ৃত আর বিদগ্ধ আলোকপাত তুলনারহিত। জেলার প্রায় প্রতিটি থানা ধরে ধরে (থানার নাম চিত্রসহ) সেইসব থানার অন্তর্গত জনমানসের যে ব্যাপক ইতিহাস রচনার তিনি প্রয়াস নিয়েছেন, তাতে এটি মহাগ্রন্থ হয়ে উঠেছে।
বিভিন্ন স্থান থেকে এসে চট্টগ্রামে বসতি স্থাপন করেছেন, এরকম বেশ কিছু বিখ্যাত পরিবারের কাহিনি রয়েছে এখানে। আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। রাঢ়বঙ্গ থেকে আগত রাউজানের শ্রীযুক্ত পরিবার, পড়ৈ কোড়ার কানুনগো পরিবার, বরমা গ্রামের মজুমদার পরিবার, দক্ষিণ রাঢ়দেশ থেকে আগত দেব বংশের আদি পুরুষ বাণীনাথ রায়, ১৭৪১ সালে রাঢ়বঙ্গ থেকে আগত দুর্গাপ্রসাদ রায় (তিনি সাতকানিয়া থানার দক্ষিণ কাঞ্চনা গ্রামে বসতি স্থাপন করেছিলেন), ষোলোশো শতাব্দীতে দক্ষিণ রাঢ় থেকে আগত ছনহরা দত্ত পরিবারের আদি পুরুষ সীতারাম দত্তের কথা চমৎকারভাবে বিবৃত করেছেন লেখক। এই অভিবাসনক্রিয়া প্রমাণ করে চট্টগ্রামের সমৃদ্ধি ও ঐতিহ্য, সেখানে অভিবাসী হয়ে জীবনযাপনের উচ্চ লক্ষ্য, উচ্চ সংকল্প, এককথায় উচ্চাকাঙ্ক্ষা। এক স্থান ছেড়ে মানুষ স্বেচ্ছায় যখন অন্য দেশে বসতির জন্য যায়, সেই অন্বিষ্ট দেশটি নিশ্চয়ই তার স্বদেশ থেকে অধিকতর সমৃদ্ধ ও আস্থার বাসভূমি।
চট্টগ্রামের সামাজিক ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক দেখিয়েছেন, সপ্তদশ শতাব্দীতে ‘সাত পয়সার রাট’ নামে এক দুর্ভিক্ষ হয়। অর্থাৎ চালের দাম বৃদ্ধি পেয়ে এক সের চালের দাম সাত পয়সা হয়ে গিয়েছিল সেবার। সাত পয়সায় এক সের যে কী ভীষণ চড়া দাম, তা একটি প্রতিতুলনা দিলেই সহজে বোঝা যাবে। এ ঘটনার পঞ্চাশ-ষাট বছর পরে শায়েস্তা খাঁ যখন বাংলার সুবাদার, তখন এক টাকায় পাওয়া যেত সাত মণ চাল, অর্থাৎ এক সের চালের দাম পড়ত চার পয়সার কাছাকাছি।
যাই হোক, সেই দুর্ভিক্ষক্ষর সময় নিম্নবর্গের বহু মানুষ চট্টগ্রামে চলে আসে। ‘চট্টগ্রামের বেশির ভাগ ভূম্যধিকারীর বাড়িতে তাদের নানকার হিসেবে নিযুক্তি হয়।’
দত্ত বংশের বহু শাখা চট্টগ্রামে অভিবাসিত হয়েছেন দেখা যায়। দত্তদের এই অভিবাসন বিশেষ কৌতূহলী করে তোলে আমাদের। 888sport apps এবং পশ্চিমবঙ্গে দত্তদের ব্যাপক অভিবাসন নিয়ে গবেষণা করেছেন সজলকান্তি দত্ত রায়। কমলেশ দাশগুপ্তের তথ্যগুলোর সঙ্গে যদি সজলকান্তির তথ্যগুলো মেলানো যায়, তাহলে দত্তকুলের অভিবাসন প্রক্রিয়ার সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যেতে পারে।
ঔপনিবেশিক আমলের কাহিনি বর্ণনা করতে গিয়ে লেখকের মন্তব্য, ‘বাংলার নবজাগরণে যেমন রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন প্রমুখ মনীষীদের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের প্রান্তিক চট্টগ্রামের সামাজিক,
সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অধ্যায়ে নব উন্মেষ পর্বের অগ্রপথিক ছিলেন ড. অন্নদাচরণ খাসত্মগীর, কবি নবীন সেন, যাত্রামোহন সেন, কমলাকান্ত সেন, দুর্গাদাস দস্তিদার, ডা. রামকিনু দত্ত, বেণীমাধব দাশ (বেণী ব্রাহ্ম), শরচ্চন্দ্র দাশ, নলিনীকান্ত সেন, প্যারীমোহন চৌধুরী, কবিগুণাকর নবীনচন্দ্র দাশ [সেন], শশাঙ্কমোহন সেন, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, কে. কে. সেন, পি. কে. সেন, চন্দ্রকুমার চক্রবর্তী (পূর্ব প্রতিধ্বনি), প্রসন্নকুমার রায়, কালীশঙ্কর চক্রবর্তী, কবি বিপিন নন্দী প্রমুখ।’ লেখক এঁদের অনেকেরই জীবনী এবং
কৃতিত্বের বিবরণী প্রদান করেছেন, যার ফলে এঁদের অবদান সম্পর্কে আমরা সম্যক অবহিত হই। তাঁদের প্রতি 888sport apk download apk latest versionন্বিত হই।
আর এখানে এসে বইটির সীমাবদ্ধতার কথাও না বলে পারি না। সেকালের হিন্দু সমাজ নিয়ে লিখতে বসেছেন তিনি। তাই স্বনামধন্যের তালিকা থেকে অন্য সম্প্রদায়ের নাম একেবারেই উহ্য রেখেছেন। চট্টগ্রামের নব উন্মেষপর্বের ভগীরথ কি কেবল হিন্দুরাই? এ-তালিকা থেকে নবীন সেনের পাশে কি হামিদ আলী স্থান পাবেন না, বা ডা. রামকিনু দত্তের ঢের ঢের আগে আবদুল করিম 888sport live footballবিশারদ, মুহম্মদ এনামুল হক, আবুল ফজল, বুলবুল চৌধুরী, মুহম্মদ ইউনুস একদম বাদ। এবং বৌদ্ধ বিধায় বেণীমাধব বড়ুয়া, জ্যোতিপাল মহাথের ব্রাত্য? তাছাড়া সুচরিত চৌধুরী, সংগীত888sport live chatী সৌরীন্দ্রলাল দাশগুপ্ত, রমেশ শীলকেও তালিকার বাইরে রেখে উপেক্ষা করা হয়েছে।
সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তবু এ-বইয়ের গুরুত্ব অস্বীকার করা যাবে না। এক দশকেরও অধিক সময় ব্যয় করে লেখক ইতিহাসের যে-পিলার নির্মাণ করেছেন, এই একটিমাত্র বইয়ের মধ্য দিয়েই তিনি চির888sport app download for androidীয় হয়ে থাকবেন।
কেবল বাংলার বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বার্মা (অধুনা মিয়ানমার) থেকে আগত মানুষের সালতামামিও দিয়েছেন লেখক। ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশ সরকার ভারতের পার্শ্ববর্তী একাধিক দেশ নিজ উপনিবেশে যুক্ত করার প্রয়াস নেয়। আফগানিস্তান, তিববত, নেপালের সঙ্গে এজন্য সংঘর্ষে যেতে হয়েছিল তাদের। বার্মা জয়ের জন্য তিন পর্যায়ে যুদ্ধ হয়েছিল। বর্মাদেশ আসাম জয় করে কাছাড় আক্রমণ করলে ব্রিটিশ শক্তি তাদের বাধা দেয়, এবং প্রথম ইঙ্গ-বর্মী যুদ্ধ ঘটে। সেটা ১৮২৪। ১৮২৬-এ ইয়ান্দামুর সন্ধিতে সে-যুদ্ধের অবসান হলেও ১৮৫২-তে দ্বিতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ বাধে এবং পেগু ইংরেজের অধিকারে আসে। ১৮৮৫ সালে তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে সমগ্র বার্মা ইংরেজ-অধিকারে চলে আসে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের দখলে আসে বার্মা। ১৯৪৮-এ স্বাধীন হয়।
১৮৮৫ থেকে চট্টগ্রামের বেশকিছু মানুষ ব্রহ্মদেশে অভিবাসিত হন। তাঁদের নিয়ে বিস্ত‍ৃত গবেষণার অবকাশ রয়েছে। কমলেশ দাশগুপ্ত তার সূচনাটি করে রাখলেন এ-গ্রন্থে।
সেকালের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে লিখতে গিয়ে গ্রন্থকার জানাচ্ছেন, ‘চট্টগ্রামের বর্ণে বিভাজিত হিন্দুসমাজে বৃত্তি অনুযায়ী বিদ্যাচর্চার প্রয়োজন ছিল।’ ব্রাহ্মণরা সংস্কৃত শিখতেন পূজা ও যাজনিক কাজকর্মের জন্য আর বৈদ্যকুল কাছারিতে নিযুক্ত হওয়ার আশায় সুদ মনকষা, পনকিয়া ইত্যাদির পাঠ নিতেন। প–ত জগৎচন্দ্র বিদ্যাবিনোদ, উমাচরণ তর্করত্ন, রামহরি বিদ্যাবাগীশ, রাসমান ন্যায়বাগীশ প্রমুখ ছিলেন বিবুধ ব্যক্তি যাঁরা চতুষ্পঠী স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষাদান করতেন। এখানকার শিক্ষা সমাপনামেত্ম অনেকে নবদ্বীপে যেতেন উচ্চতর জ্ঞানলাভের প্রত্যাশায়। নবদ্বীপ ছিল তখন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড।
এলো প্রখর ইংরেজের কাল। ইংরেজি শিক্ষার প্রভাতলগ্নে চট্টগ্রামও পিছিয়ে ছিল না। 888sport promo codeশিক্ষাও পিছিয়ে ছিল না। ১৮২৮ সালে শ্রীরামপুর মিশন বাংলার বিভিন্ন জেলায় যে ১২টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে তার তিনটিই ছিল চট্টগ্রামে। তাছাড়া 888sport promo codeশিক্ষা প্রসারে ব্রাহ্মদেরও যথেষ্ট অবদান ছিল। উনিশ শতকে আচার্য হরিশ্চন্দ্র দত্ত, কাশীচন্দ্র গুপ্ত, রাজ্যেশ্বর গুপ্ত প্রমুখ ব্রাহ্ম নেতা বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা নেন। চট্টগ্রামের অন্যতম স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব ডা. অন্নদাচরণ খাসত্মগীর ছিলেন বিদ্যাসাগরের বন্ধুম-লীর অন্তর্গত। তাঁরই চতুর্থ কন্যা চট্টগ্রামের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট (বেথুন কলেজ থেকে), এবং পরে সেখানকার অধ্যক্ষ হন।
শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব চট্টগ্রামবাসী বিখ্যাত বুধজন অবদান রেখেছেন, তাঁদের সম্পর্কে যথোচিত তথ্যগুলো পড়তে পড়তে আমাদের প্রতি মুহূর্তেই মনে পড়ে যাচ্ছিল শিবনাথ শাস্ত্রী-রচিত সুবিখ্যাত গ্রন্থ রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজের কথা। আমাদের আলোচ্য বইটিতে লেখক আচার্য শাস্ত্রীর বইটিকে আদর্শ হিসেবে সামনে রেখেছেন, এবং তা যথার্থ হয়েছে বলেই মনে করি। শিবনাথ যেমন তাই বইটিতে উনিশ শতকের নবজাগরণের অগ্রদূতদের প্রায় সবাইকে তাঁর জাদুকরী ভাষায় বিবৃত করেছেন, কমলেশ দাশগুপ্তও একই অভিনিবেশ ও অনুসন্ধিৎসায় তাড়িত হয়ে চট্টগ্রামের মনীষীদের কৃতি নিয়ে আলোকপাত করেছেন। তবে পার্থক্য এই, মান্যবর দাশগুপ্তের আলোচনার পরিধি কেবল একটি জেলা ও একটি সম্প্রদায় নিয়ে।
বহু গুণীজন জন্মেছেন চট্টগ্রামে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত রসায়নবিদ প্রিয়দারঞ্জন দত্ত। আচার্য প্রফুলস্ন চন্দ্র রায়ের ছাত্র প্রিয়দারঞ্জন সম্পর্কে গুরু তাঁর আত্মজীবনীতে লিখছেন, ‘রসায়ন 888sport sign up bonusগুলিতে আমার কোনো মৌলিক 888sport live দাখিল করার আগে আমি প্রিয়দারঞ্জনকে তা দেখতে দিই এবং তাঁর অভিমত নিই।’ আছেন কালিকারঞ্জন কানুনগোর মতো প্রখ্যাত ঐতিহাসিক, বিভূতিভূষণ দত্তের মতো গণিতবিদ ও দার্শনিক, আইনবিদ হীরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, পদার্থবিদ সতীশরঞ্জন খাসত্মগীর, শিক্ষাবিদ নৃপেন্দ্রনাথ সেন, চট্টগ্রামের প্রথম আইসিএস সুবিমল দত্ত, বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনের
অন্যতম নেতা নগেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, বিপস্নবী গিরিজাশঙ্কর চৌধুরী, স্বদেশি আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব চারুবিকাশ দত্ত, নির্মল সেন, অনন্ত সিংহ, শহিদ প্রমোদরঞ্জন চৌধুরী, রামকৃষ্ণ বিশ্বাস (তিনিও ফাঁসিকাষ্ঠে মৃত্যুবরণ করে শহিদ হন), অমরেন্দ্র নন্দী, অর্ধেন্দু দস্তিদার প্রমুখ। আছে লালমোহন সেনের কথাও, যিনি সন্দ্বীপে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা থামাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন। আছে কুমুদিনী দাস (খাসত্মগীর), সাবিত্রী দেবী, ইন্দুমতী সিংহ, কল্পনা দত্ত (যোশী), নেলী সেনগুপ্তা, বীণা দাস, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, মোহিনী দেবী (ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র সেনের জ্যেষ্ঠ সন্তানের স্ত্রী)। চট্টগ্রামের ভূমিকন্যা মোহিনী দেবী কেশবচন্দ্র সেন-প্রতিষ্ঠিত আর্য 888sport promo codeসমাজের পরিচারিকা পত্রিকাটি সম্পাদনা করতেন ১৮৮৭ থেকে ১৮৯৪ পর্যন্ত, আমৃত্যু।
চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল কেবল চট্টগ্রাম বা বাংলা নয়, ভারত ইতিহাসেরই এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ১৯৩০-এর এই বীরত্বপূর্ণ ঘটনায় সত্মম্ভিত হয়েছিল ঔপনিবেশিক ভারত, যেমন হয়েছিল ১৯৪২-এ মেদিনীপুরে স্বাধীন তাম্রলিপ্ত সরকার গঠনের দুঃসাহসিকতায়। কমলেশ দাশগুপ্ত এই ঘটনাকে বিস্ত‍ৃত আকারে লিখেছেন, প্রত্যেক বিপস্নবীর জীবনী আলোচনাসমেত। আন্দোলনের প্রাণপুরুষ মাস্টারদা সূর্য সেনকে নিয়ে আর একটু বিশদ আলোচনার অবকাশ ছিল। বিশেষ করে ১৯৩৪-এর ১২ জানুয়ারি তাঁকে ফাঁসি দেওয়ার আগের রাতেই তাঁর মৃত্যু হয় বন্দি অবস্থায় নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে জেলে প্রহৃত হওয়ার ফলে এবং তাঁর মৃতদেহ বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়, এসব তথ্য জানার অবকাশ ছিল বর্তমান গ্রন্থটির পাঠকের। চট্টগ্রামে যে তিনি ‘সত্যাশ্রম’ নামে গুপ্ত সমিতি গঠন করেছিলেন, বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিপস্নবী কর্মকা- চালান, ১৯২৩ সালে রেল কোম্পানিতে ডাকাতি করে ২৩ হাজার টাকা লুট করেন স্বদেশের কাজে ব্যয় করার জন্য, ১৯২৪-এ কলকাতার পুলিশ কমিশনার টেগার্টকে হত্যার ব্যর্থ প্রয়াস নেন, এসব তথ্য বইটিতে নেই। তাঁর অসাম্প্রদায়িক চেতনার দরুন চট্টগ্রামের বহু মুসলমান যুবক তাঁর অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষেত হয়েছিলেন। তাঁদের কারো কারো নাম অবিশ্য কমলেশ দাশগুপ্ত তাঁর বইয়ে দিয়েছেন, যেমন আবদুল কুদ্দুস, আফসারউদ্দীন, দলিলুর রহমান, আবদুস সাত্তার, মৌলভি মীর আহমদ প্রমুখ। উল্লেখ্য, তামিল বংশোদ্ভূত দীনবন্ধু পারিয়ালও যোগ দিয়েছিলেন সূর্য সেনের বিপস্নবী দলে। মাস্টারদার জোরালো অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারণেই ব্রিটিশের ডিভাইড অ্যান্ড রুল কার্যকর হয়নি চট্টগ্রামে। অন্যদিকে বিশ্বাসঘাতকতা করে মাস্টারদাকে যে টাকার লোভে ধরিয়ে দিয়েছিলেন, সেই নেত্র সেনের নাম উল্লেখ করলেও নেত্র যে মাস্টারদার জ্ঞাতিভাই, সে-কথা উল্লেখ করার দরকার ছিল। এ-কথাও বইয়ে লিখিত হয়নি যে, বিশ্বাসঘাতক নেত্র সেনকে মাস্টারদার অনুগামী দুই বিপস্নবী কিরণ সেন এবং রবীন্দ্র নন্দী ১৯৩৪-এর ৯ জানুয়ারি মাস্টারদার শহিদ হওয়ার তিনদিন আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। স্বাধীন 888sport appsে তাঁর মূর্তি স্থাপিত হয়েছে, তাঁর নামে প্রকাশিত হয়েছে ডাকটিকিট, তাঁর বীরত্ব চট্টগ্রামকে আখ্যায়িত করেছে ‘বিপস্নবতীর্থ’ বলে, এসবের উল্লেখ নেই কেন বইয়ে?
জানি, কোনো একক ব্যক্তির পক্ষে এমন মহাকাব্যোপম দায়িত্ব নেওয়া দুঃসাহসিকতারই নামান্তর। এ-ও জানি, যা নেই এ-গ্রন্থে তার চেয়ে যা রয়েছে, তার পরিমাণ কেবল শতগুণে নয়, সহস্রগুণে ভারি। রয়াল অক্টেভো আকারের সাড়ে পাঁচশো পৃষ্ঠার বই, প্রায় অনন্ত প্রসঙ্গ এসেছে চট্টগ্রামের। আর এ-বইয়ের সম্পদ এর পূর্ণপৃষ্ঠা রঙিন ও সাদাকালো ছবি। রঙিন ছবিগুলো মূলত সে-জেলার দর্শনীয় স্থানের ছবি, 888sport free betয় প্রায় পঞ্চাশ। এগুলোর মধ্যে যেমন রয়েছে পাঁচশো বছরের পুরনো বাঁশখালীর দশভুজা বিগ্রহ, আছে চট্টেশ্বরীর মন্দির, বঙ্গীয় শৈলীর জগৎপুর আশ্রম, তেমনি আছে চট্টগ্রাম কলেজ, কলেজিয়েট স্কুল, প্রবর্তক সংঘ, ডা. খাসত্মগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, স্যার আশুতোষ কলেজ, আনোয়ারা মিডল ইংলিশ স্কুল ইত্যাদি বিখ্যাত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছবি। লেখার সঙ্গে ছবি মিলিয়ে এ এক অপরূপ পরিবেশনা।
সাদাকালো ছবিও রয়েছে অগুনতি। বিখ্যাত মানুষদের ছবিগুলো এ-বইয়ের ক্রেতা-পাঠকের কাছে বাড়তি পাওনা হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশেষ করে বহু ছবিই যেখানে সুদুর্লভ এখন। লেখককে বহু পরিশ্রম করতে হয়েছে কুমুদিনী দাস কিংবা প্রবর্তক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্কিমচন্দ্র সেনের ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে।
এছাড়াও রয়েছে জেলার বিভিন্ন থানার মানচিত্র, যার কথা আগেই উল্লেখ করেছি। এছাড়া যে তিনটি মানচিত্র লেখক তাঁর বইতে যুক্ত করেছেন, সেজন্য তাঁকে অতি অবশ্যই আলাদাভাবে কুর্নিশ জানাতে হয়। মানচিত্রগুলোর একটি হলো রামায়ণের সমসাময়িক অখ- ভারতের, মহাভারতের সময়কার একটি এবং তৃতীয়টি পুরাণের সমসাময়িক ষোড়শ মহাজনপদ-সমৃদ্ধ ভারত। মানচিত্র তিনটি এ-বইয়ের নিঃসন্দিগ্ধ অলংকার। মানচিত্রগুলো নেওয়া হয়েছে জোসেফ ই-শোয়ার্জবাগ-সম্পাদিত A Historical Atlas of South Asia থেকে। তিনটি মানচিত্রেরই প্রণেতা ‘The American Geographical Society of New York’-এর প্রধান মানচিত্রকর মিকলস পিন্থার। তুলনারহিত সংযোজন নিঃসন্দেহে।
বাংলার জেলাভিত্তিক ইতিহাস উনিশ ও বিশ শতকে খুব কম লেখা হয়নি। এ-প্রসঙ্গে প্রথমেই মনে পড়বে সতীশচন্দ্র মিত্রের
যশোর-খুলনার ইতিহাস। আছেন কেদারনাথ মজুমদার, যাঁর দু-খ– রচিত 888sport appর ইতিহাস একসময় আকরগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হতো। বর্তমানে 888sport app নিয়ে বিশদ গবেষণাধর্মী লেখা লিখে চলেছেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। এ-পর্যায়ে আরেকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ প্রমথনাথ মলিস্নকের কলিকাতার কথা। সিরাজ উদদীন আহমেদ লিখেছেন বরিশালের ইতিহাস। বর্তমান গ্রন্থটি এই পর্যায়ে নবতর সংযোজন। লেখকের মেধা ও পরিশ্রমের চূড়ান্ত ফসল আলোচ্য গ্রন্থটি। সম্ভাব্য সমসত্ম উৎস থেকেই তিনি তথ্য সংগ্রহ করেছেন। মুখের কথার ইতিহাসকেও তিনি কোথাও কোথাও কাজে লাগিয়েছেন। Oral History আজকের ইতিহাসচর্চা ও গবেষণায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
বইটির শেষ পর্বে রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত পত্রপত্রিকার কথা, গ্রন্থকারদের কথা। বহু পত্রপত্রিকা, গ্রন্থ এবং রচনার ফ্যাকসিমিলি প্রদান করে এ-অংশটিকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। কবি শশাঙ্ক মোহন সেন (১৯২৮-এ উন্মাদ ভাই মনীন্দ্র সেনের ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর) ছিলেন তুলনামূলক 888sport live football-সমালোচনার অন্যতম পুরোধা। নবীনচন্দ্র সেন খ্যাত ছিলেন 888sport app download apk latest versionক হিসেবে, যাঁর রঘুবংশমে্র 888sport app download apk latest version পড়ে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মন্তব্য, ‘The translation is excellent, the verses are sweet and easy and the sense and beauty of the original is well preserved’। এই 888sport app download apk latest versionটি ছিল সম্পূর্ণ পদ্যে। আছে কেদারনাথ দাশগুপ্তের কথা, স্বদেশি করতেন বলে ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে যিনি ১৯০৮-এ লন্ডন চলে যান। ১৯১২-২৩ রবীন্দ্রনাথের লন্ডন বাসপর্বে তিনি রবীন্দ্রনাথের ‘দালিয়া’ গল্প অবলম্বনে ইংরেজি নাটকের উদ্যোগ নেন। নাটকের জন্য রবীন্দ্রনাথ তাঁর দুটি গান ইংরেজিতে 888sport app download apk latest version করে দেন (কমলেশ লিখেছেন একটি। গানের কথাও তিনি উল্লেখ করেননি। একটি হলো ‘অলি বারবার ফিরে যায়’-এর ইংরেজি, ‘The bee is to come and the bee is to hum’। আর ‘মম যৌবননিকুঞ্জে গাহে পাখি’ অবলম্বনে ‘In the bower of my youth a bird sings,’। কমলেশ দাশগুপ্ত এটাও উল্লেখ করেননি যে, সে-সময় কেদারবাবু রবীন্দ্রনাথের বাসাতেই থাকতেন। কেদারনাথের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এতেই প্রমাণিত হয়। রবীন্দ্রনাথের বন্ধুপুত্র সুকুমার রায়ও তখন লন্ডনে, তবে তিনি পিতৃবন্ধুর গৃহে থাকতেন না, দেখা করতে আসতেন।
চট্টগ্রামের সাময়িক পত্রিকাও ঈর্ষণীয়। ১৮৭৬ সালে এখান থেকে প্রথম সংবাদপত্র বেরোয়, নাম সংশোধনী। তাছাড়া পরিচারিকা, চট্টল গেজেট, মাসিক বিভাকর, অঞ্জলি, প্রভাত, সীমান্ত থেকে শুরু করে কত পত্রপত্রিকাই না বেরোত, বেরোয় এখান থেকে। রয়েছে ‘চট্টগ্রাম 888sport live football পরিষদে’র কথা, সেখানকার প্রথম যুগের সদস্যদের নামের তালিকাসমেত।
পর্তুগিজ নাবিকদের কাছে Porto Grando বা বৃহৎ বন্দর হিসেবে কথিত চট্টগ্রাম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান মুসলিম জনতা নিয়ে গঠিত এক প্রাচীন ভূভাগ, যে-অঞ্চলের বিস্ত‍ৃত ইতিহাস রচনা করে লেখক ইতিহাস ও সংস্কৃতিপ্রেমিক মাত্রের কাছেই 888sport app download for androidীয় হয়ে থাকবেন। নির্ভুল ছাপা বইটিতে নির্ঘণ্ট না থাকাটা অস্বস্তির কারণ হয়ে রইল। পরবর্তী সংস্করণে আশা করি বইটি এই ত্রম্নটি থেকে মুক্ত হবে।