চলে গেলেন 888sport live chatীদের হিতৈষী হকভাই

রফিকুন নবী
দেশের আধুনিক লেখালেখি জগতের অভূতপূর্ব শক্তিধর এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক চলে গেলেন চিরতরে। জীবনে বহুবিধ দুরারোগ্য ব্যাধির কবলে পড়েও বারবার মৃত্যুঞ্জয়ী হতে পেরেছিলেন। কিন্তু আশি-উত্তর বয়সে এসে হার মানলেন মারণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে।
তবে প্রত্যক্ষ করেছি, মৃত্যু-ভাবনাকে প্রশ্রয় দেওয়া শুরু করেছিলেন কয়েক বছর আগে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরীর অকস্মাৎ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। মনে আছে, দেখা হলেই তিনি 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরীর চলে যাওয়াকে 888sport app download for android করতেন, বেদনায় আচ্ছন্ন হতে হতে বলতেন – ‘বুঝলে নবী। একা হয়ে গেলাম। বান্ধববিহীন দ্বীপবাসী যেন। এখন কাইয়ুমও চলে গেল। সময় ফুরিয়ে আসছে। কাজে কাজে বেলা শেষ হয়ে এসেছে, – বুঝিনি। কিন্তু ভেবে দেখলাম বড় কাজটি বোধহয় করাই হবে না।’
কোন বড় কাজটি করতে চেয়েছিলেন তা জানা হয়নি। 888sport live football-কাব্য-নাটক থেকে শুরু করে সৃজনশীল জগতের সর্বত্র তাঁর সফল পদচারণা ছিল বিস্ময়কর। এমনকি চিত্রকলাচর্চাও তা থেকে বাদ ছিল না। অত্যন্ত আধুনিক প্রজ্ঞাবান স্মার্ট মানুষ। সেসব তাঁর লেখনীর ভাষাতেও প্রভাবিত ছিল। সভা-সমিতিতে বলতেনও ভালো। চমৎকার আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গি দিয়ে দর্শক-শ্রোতাকে বেঁধে রাখার অপূর্ব ক্ষমতা ছিল। সবকিছু মিলিয়ে তিনি ছিলেন বিশাল মহীরুহ। ভক্তরা তাঁকে সেই কারণে ‘সব্যসাচী’ আখ্যা দিয়ে 888sport apk download apk latest version জানাতে ভোলেননি। নিজের চিত্রকলা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেন। বলতেন, ‘বাসায় এসো। ছবি দেখাবো। কেমন হচ্ছে – বলবে। ইচ্ছে আছে প্রদর্শনী করার।’
এসব খুব বেশিদিনের কথা নয়। গত বছরদুয়েক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে ছোটদের জন্য লেখা একটি বইয়ের সুবাদে। শিশু একাডেমিকে কড়ার করে দিয়েছিলেন, যেন আমাকে দিয়েই পুরো বইটির ছবিগুলো আঁকানো হয়। তার সঙ্গে কিছুদিন পরপর মনে করিয়ে দেওয়ার ঘটনা তো ছিলই।
বেশ কিছুকাল 888sport free bet loginের ছবি আঁকি না চিত্রকলায় বেশি মনোযোগী হয়ে পড়ায়। ব্যাপারটি তিনি জানতেন। তবু তাঁর লেখা বলে কথা। খুব কম সময়ের মধ্যে তা করে দেওয়ায় খুশি হয়েছিলেন খুব। টেলিফোনে তো বটেই, সঙ্গে এসএমএসও করতে ভোলেননি ধন্যবাদ এবং প্রশংসা জানাতে। এই চমৎকার অভ্যাসটি ছিল তাঁর স্বভাবের দারুণ একটি দিক।
বই ব্যাপারেই যে তিনি শুধু আমাকে দিয়ে আঁকানোর কথা ভাবতেন, তা নয়। চিত্রালীতে থাকার সময় থেকে তাঁর গল্পের ইলাস্ট্রেশন আঁকা শুরু হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে বিভিন্ন পত্রিকায় বিশেষ করে সাপ্তাহিক বিচিত্রার ঈদ888sport free betগুলোতে তাঁর 888sport alternative link বা গল্পের জন্য আঁকা অবধারিত ছিল। তিনি বলেই দিতেন আমাকে দিয়ে আঁকানোর জন্যে। বলতেন, ‘নবী পা-ুলিপির পুরোটা পড়ে আঁকে। অতএব তাকে দাও। চরিত্রগুলি ও বুঝে আঁকে।’
কথা ঠিকই বটে। তাঁর বহু গল্প-888sport alternative linkের আমিই প্রথম পাঠক বলে সব সময় দাবি করে থাকি। তিনি জিজ্ঞেস করতেন – পড়েছি কিনা এবং কেমন হয়েছে। আমি অত বোদ্ধা নই, কিন্তু যা উপলব্ধি করতাম, বলে ফেলতাম। তবে আনন্দ হতো যখন ইলাস্ট্রেশনের প্রশংসা করতেন। আসলে তাঁর প্রশংসা করার অভ্যাসটি চিরকালই ধারণ করতেন।
চিত্রকলার ক্ষেত্রে চারজন 888sport live chatীর বড় ভক্ত ছিলেন। 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন আহমেদ এবং কাইয়ুম চৌধুরীকে পছন্দের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করে মূল্যায়ন করতেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বিশ্বের সেরা 888sport live chatীদের কাতারেই 888sport live chatী হিসেবে আখ্যায়িত করতেন। তবে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে 888sport live chatী আমিনুল ইসলাম এবং মুর্তজা বশীরও ছিলেন তাঁর অতিপ্রিয়। অতএব 888sport live chatীদের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত কাছের মানুষ। সেই দিকটি আরো সুদৃঢ় হতে পেরেছিল তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা রাইসুল হককে এবং আরো পরে শ্যালিকাকে আর্ট কলেজে ভর্তির পর।
চিত্রকলা নিয়ে আলোচনায় বসলে প্রায়শই বলতেন, ‘ছবি যে যেমনই আঁকুক দেশের ব্যাপারটি থাকলে ভালো হয়।’ বুঝতাম যাঁদের ছবি তাঁকে আপ্লুত করত অর্থাৎ জয়নুল, কামরুল, সফিউদ্দীন এবং কাইয়ুম চৌধুরী, এই কজনের প্রতি কেন বিশেষ পক্ষপাতিত্ব ছিল।
তো, নিজের লেখাজোখার পাশাপাশি অন্যদের লেখা পড়তেন, বিশ্ব888sport live footballের খবরাখবর রাখতেন। দেশের লেখকদের কোনো লেখা ভালো লাগলে অকপটে প্রশংসা করতেন। সেই তালিকায় তাঁর সহধর্মিণী আনোয়ারা সৈয়দ হকও বাদ ছিলেন না। কিছুদিন আগে বেঙ্গল পাবলিকেশন্সের একটি পা-ুলিপি তিনি আঁকার জন্যে পাঠিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘ছবিগুলি এঁকে দিও ভাই নবী। তোমার ওপর আমার দাবি থেকে অনুরোধটি করছি। সেই যে, মনে আছে নিশ্চয়ই, – ১৯৬৩-তে তুমি আমার সহকর্মী হয়েছিলে চিত্রালী-পূর্বদেশ-পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায়। কী দারুণ সময় ছিল সেই দিনগুলি। মনে আছে?’
দাবি জানাতে এসব বলার প্রয়োজন হয়তো ছিল না। কিন্তু তিনি যে সেই সময়টিকে 888sport app download for android করছেন ইদানীং তা বুঝতে পেরেছিলাম এবং নিজেও বেশ নস্টালজিয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম। মনে পড়ে গিয়েছিল মহাগুলজার করা দফতরটির কথা। ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে অবস্থিত অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের বৃহৎ দালানে ছিল দফতরটি। 888sport live chatী হিসেবে নতুন চাকরি আমার। দফতরের সবাই জ্যেষ্ঠ। সর্বকনিষ্ঠতার কারণে কুণ্ঠা এবং ভয়ে আড়ষ্ট আমি বসে থাকতাম নির্ধারিত স্থানে। কক্ষটিতে বসতেন চিত্রালী-সম্পাদক এসএম পারভেজ, কবি ফজল শাহাবুদ্দিন, এটিএম আবদুল হাই, লায়লা সামাদ এবং হকভাই। পূর্বদেশের দিকটায় বসতেন বর্ষীয়ান সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস, মাওলা ভাই এবং ফয়েজ আহমদ।
হকভাইয়ের টেবিলটি থাকত প্রতিদিনই অতিথি-পরিবেষ্টিত। প্রায়শই আসতেন কবি শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজুর রহমান, জহির রায়হান, শহীদ কাদরী, খান আতাউর রহমান, অভিনেতা গোলাম মুস্তাফা, কাজী খালেক, নারায়ণ চক্রবর্তীসহ 888sport live chat-888sport live football-live chat 888sport অঙ্গনের বহু মানুষ। জোর আড্ডা হতো তাঁদের। কাপের পর কাপ চা চলত। কথা হতো দিনকাল নিয়ে, live chat 888sport,
888sport live chat-888sport live football নিয়ে। কাঁচুমাচু বসে থাকা আমি অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতাম, তাঁদের ‘লেখালেখি-live chat 888sport’ ইত্যাদি নিয়ে যে-কথা হতো তা শুনতাম। যাঁরাই যেদিন আসতেন, হকভাই পরিচয় করিয়ে দিতেন প্রশংসাসহ। সেই থেকে 888sport live chat-888sport live footballের মানুষের সঙ্গে আমার পরিচিতি ঘটে; এবং পরবর্তীকালে প্রায় সবার ঘনিষ্ঠতা প্রাপ্তি ঘটেছিল, যা আমার নিজেকে তৈরি করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হয়েছিল। আমি তাই আজো গর্ব করে বলি, হকভাই-ই আমার সেই উপকারটির প্রধান ব্যক্তিত্ব। ওই দফতরটিতে তাঁকে প্রথম দেখলেও নামটি জেনেছিলাম স্কুলের শেষ ধাপে পড়ার সময়। লক্ষ্মীবাজারের পথ দিয়ে স্কুলে যেতাম বন্ধু-বান্ধবসহ। এক বন্ধু একদিন কায়দে আজম কলেজে যাওয়ার মুখে অবস্থিত একটি একতলা বাড়ি দেখিয়ে বলেছিল ‘এই বাড়িটিতে একজন লেখক থাকেন। তাঁর নাম সৈয়দ শামসুল হক।’ বাবা হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। আমার সেই বন্ধু তার বাবার সুবাদে ওই বাড়িতে ডাক্তারের চেম্বারে কয়েকবার গিয়েছিল। সেই থেকে তার ওই জানাজানি। তো কয়েক বছর পর কলেজের ওপর ক্লাসের ছাত্র যখন, তখন খ-কালীন ওই চাকরি করতে গিয়ে তাঁর প্রথম দেখা পাই এবং জানতে পারি, লক্ষ্মীবাজারের সেই বাড়িটিই তাঁদের।
পরবর্তীকালে আর্ট কলেজের শিক্ষক বনে গেলে পত্রিকার চাকরি ছাড়তে হয়। কিন্তু যোগাযোগ আরো বেড়ে যায় 888sport app কারণে। আবিষ্কার করি, আর্ট কলেজের শিক্ষক প্রায় সবাই তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। জ্যেষ্ঠ 888sport live chatীরা অর্থাৎ অধ্যক্ষ 888sport live chatী জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, আনোয়ারুল হক, সফিউদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ কিবরিয়া প্রমুখ তাঁর পরিচিত এবং তিনি তাঁদের স্নেহভাজন। আর্ট কলেজে প্রায়শই আসেন তাঁদের কাছে। বিশেষ করে 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে। মধ্য ষাটের দশকেই তিনি প্রচ- খ্যাতিমান। বই-পুস্তক আর পত্র-পত্রিকার অঙ্গনে অত্যন্ত জনপ্রিয়। পাঠকদের কাছেও তাই। একই সঙ্গে সিনেমাজগতের মানুষদেরও কাছের মানুষ তিনি। পরবর্তীকালে সিনেমার পরিচালকও হয়েছিলেন। দেখতাম রমনা পার্কের রাস্তায় ঘর্মাক্ত হয়ে শুটিং করছেন। ছবিটি ছিল শেক্সপিয়রের কমেডি অব এররস অবলম্বনে উর্দুতে। এছাড়া বহু ছবির স্ক্রিপ্ট, গান ইত্যাদিও লিখতেন। বিস্মিত হতাম দেখে যে, শুধু লেখালেখির জন্যে পাঠকদের কাছে জনপ্রিয় যেমন, তেমনি সিনেমার জগতেও। ষাটের দশকেই ক্ষয়রোগের শিকার হলেন। সবার অনুমেয় ছিল তখন যে, অতিকাজের চাপেই সেই রোগের কবলে পড়েছিলেন। তবে আনন্দের বিষয় যে, একসময় সুস্থ হলেন। রোগমুক্তির পর বিয়ে করলেন। কিছুকাল পর বিলেতে গেলেন। বিবিসিতে কর্মরত হলেন। সেখানে খবর-পাঠক, ভাষ্যকার, প্রতিবেদক, নাটকের 888sport app download apk latest versionক এবং পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১-এ বাঙালি জাতির ঐতিহাসিক দিন ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়কে স্বাগত জানিয়ে তিনি গুরুত্ববাহী সংবাদটি পাঠ করেছিলেন। 888sport apps স্বাধীন হওয়ার পর একসময় দেশে ফিরলেন। টেলিভিশনে প্রথমে সংবাদ পাঠ এবং পরে সঞ্চালক হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেন। আবার লেখালেখিতে উদ্যমী হলেন। যুক্ত হলেন নাটক লেখায়ও। ইতোমধ্যে 888sport app download apk এবং গল্প-888sport alternative link নিয়মিত প্রকাশিত হওয়ায় জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে।
এতশত দিকের সফলতার কারণে সাংস্কৃতিক জগতের মানুষরা তাঁকে পরম 888sport apk download apk latest versionয় ‘সব্যসাচী’ আখ্যা যেমন দিলেন, তেমনি সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় পদকেও ভূষিত হয়েছেন।
সবকিছু মিলিয়ে তিনি জীবদ্দশাতেই ‘কিংবদন্তি’। কিন্তু এ নিয়ে কখনো গর্ব করতে দেখিনি। সভা-সমিতিতে ডাকলেই তিনি উপস্থিত হতেন। চমৎকার বক্তব্য দিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করতেন। মনে আছে, এই তো গত বছর তাঁর আশি বছর উদ্যাপিত হলো। এ-উপলক্ষে ভাবি খ্যাতিমান লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক স্মারকগ্রন্থের জন্যে প্রচ্ছদ আঁকিয়ে নিলেন হকভাইয়ের পরামর্শে। একটা 888sport sign up bonusচারণমূলক লেখাও লিখতে হয়েছিল গ্রন্থটির জন্যে। আনন্দিত অনুষ্ঠানাদিতে এই কিংবদন্তিতুল্য নন্দিত সব্যসাচী লেখককে অভিনন্দন জানিয়েছেন তাঁর ভক্তরা। কিন্তু কে জানত যে, কঠিন প্রাণঘাতী এক রোগ তাঁকে চিরতরে সবার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবে। তিনি দেশের সৃজনশীল জগতে তাঁর আসনটি শূন্য করে চলে গেলেন অন্যলোকে – সবাইকে মর্মাহত করে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি। 