সাত্যকি হালদার
ছিটমহল। 888sport apps আর ভারতের সীমান্তে কিছুকাল আগেও রয়ে যাওয়া এক বাস্তব-পরাবাস্তব ভূখ-। কাঁটাতার যেখানে দুদেশের সীমা নির্দেশক, সেই তারের বেড়ার দুপাশে ভারতের ভেতর ছড়িয়ে থাকা 888sport appsের গ্রাম, আবার 888sport appsের ভেতর ছড়িয়ে থাকা ভারত। দেশভাগ এবং তারও আগের ইতিহাস ও জমিভাগের অদ্ভুত বিন্যাসে এক দেশের ভেতর জমিঘেরা এক একটি ভিনদেশি দ্বীপ, ছড়িয়ে থাকা দ্বীপপুঞ্জ। সেই ভূ-দ্বীপপুঞ্জের মানুষের জীবনযাপন ও দীর্ঘকাল নিরালম্বভাবে বেঁচে থাকার আখ্যান রচনা করেছেন অমর মিত্র। তাঁর 888sport alternative link কুমারী মেঘের দেশ চাইয়ে।
পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমা ও 888sport appsের কুড়িগ্রাম জেলা, সীমান্তঘেঁষা এখানের কয়েকটি ছিটমহল যদিও আখ্যানের বিষয়, তবু ভারত-888sport apps সীমান্তে 888sport appsের ভেতর ঢুকে থাকা মহলের 888sport free bet ১০২ এবং ভারতের ভেতর রয়ে যাওয়া 888sport appsের ছিটের 888sport free bet ৭১। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয় সীমান্তে একইভাবে ছড়িয়ে রয়েছে ছিটমহল এবং ২০১০ সালের আদমশুমারি অনুসারে ৩৭ হাজার ৩৩৪ জন ভারতীয় 888sport appsের ভেতর এবং ১৪ হাজার ২১৫ জন 888sport appsি ভারতীয় ভূভাগঘেরা এলাকায় বাস করত বা বাস করতে বাধ্য হতো। ভারত-888sport apps সীমান্ত ছাড়াও পৃথিবীতে আরো সাতচল্লিশটি আন্তর্জাতিক সীমান্তে রয়ে গেছে এক দেশের ভেতর আরেক দেশের দ্বীপের
মতো রয়ে যাওয়ার জটিলতা। আর্জেন্টিনা-প্যারাগুয়ে, জার্মান-অস্ট্রিয়া, কলম্বিয়া-নিকারাগুয়া, জার্মান-বেলজিয়াম এই সীমান্তগুলোর ছিটমহলও মাঝেমধ্যে আন্তর্জাতিক খবরে উঠে আসে।
নিজ দেশে থেকেও ভিনদেশি মানুষ, তার সামাজিক অস্তিত্বের সংকট অবশ্যই আন্তর্জাতিক বিষয়। লেখক অমর মিত্র এই বৈশ্বিক সংকটকেই প্রায় ঘরের কোলে প্রত্যক্ষ করে তাকে নিয়ে এসেছেন বাংলাভাষায়, দু-মলাটে শতিনেক পাতার 888sport alternative linkে।
ভূমিকায় লেখক যে-কথাটি জানিয়েছেন তা যে-কোনো তথ্যনিষ্ঠ কথাকারেরই জবানবন্দি। কথাকার, যিনি তথ্য নির্ভুল রাখেন, আবার যিনি লেখক-সত্তার আবেগ ও নিজস্ব অনুভবে তথ্যকে ছাড়িয়ে চলে যান। পাঠককে বিষয়ের খুঁটিনাটি প্রায় হাত ধরে চিনিয়ে দেন, আবার তাকে চরিত্রদের পাশে নিয়ে বসান, কখনো যেন পাঠকের সঙ্গে চরিত্রদের সংলাপও শুরু করিয়ে দেন। অমর মিত্র লিখছেন, ‘কিন্তু একটি কথা সত্য, আমি নিজে যদি অনুভব না করি ভেতর থেকে, 888sport alternative link লেখা হয় না। 888sport alternative link শুধুই বাস্তবতার চর্চা নয়। অন্তর্নিহিত বাস্তবতাকে খুঁজতে বারবার গিয়ে মনের ওপর চাপ বাড়াতে হয়েছে। আমি একটি দেশের সুবিধাভোগী নাগরিক, আর এপারের ৫১টি গ্রামের মানুষের কোনো দেশ নেই। দেশ নেই! হতে পারে? এই 888sport alternative link যতটা তথ্য, ততটাই অনুভব। যতই এর বাস্তবতা ততই এর নিহিত কল্পনা। অলীকতা।
এদেশ-ওদেশ, সীমান্ত, কাঁটাতার, তিস্তা, ধরলা, ডাহুক … কত নদী আর নদীর জল চোখের জল দেখেছি ছিটমহল পরিক্রমায়।’
লেখকের এই ‘দেশ নেই’ দেখার অনুভব নিশ্চয়ই এই লেখার তাগিদ। ছিটমহলের মানুষের মূল সমস্যা এই ‘দেশ নেই’। ফলে ছিটমহল আন্দোলন যখন গড়ে ওঠে, প্রায় দেড় দশক আগে, সেই সময়-কালটি মূলত এসেছে এ-লেখায়। ছিটমহল আন্দোলনের মূল দাবিটিই ছিল ছিটমহলের বিনিময়। নেহরু ও তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ শাহ নুনের চুক্তি, 888sport apps জন্মের পর ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি, দুইয়েতেই প্রস্তাবিত ছিল ছিট-বিনিময়ের অঙ্গীকার। ছিট-বিনিময় হলে ভারতের ভেতর একান্নটি 888sport appsি ছিট ভারতের হবে, অন্যদিকে 888sport appsের ভেতর ১১১টি ভারতীয় ছিট 888sport appsের হবে। আর এই ছিট-বিনিময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসে যায় নাগরিকত্বের বিষয়টি। ছিটে বাস করা মানুষের নাগরিকত্ব আসলে ভার্চুয়াল নাগরিকত্বের অনুরূপ। কেউ ভার্চুয়ালি ভারতীয়, কেউ সেভাবেই 888sport appsি। ছিট-বিনিময় হওয়া মানে নাগরিকত্বের বদল, অদৃশ্য নাগরিকত্ব থেকে প্রত্যক্ষ নাগরিকত্বে চলে আসা। ছিটের বাসিন্দাদের ভারতীয় থেকে 888sport appsি বা 888sport appsি থেকে ভারতীয়ত্বে রূপান্তর ঘটে ঠিকই, তবু ছিট-বিনিময় মানে দেশহীন মানুষের দেশ পাওয়া, আইনহীনতা থেকে যেন সিভিল সোসাইটিতে প্রবেশের অধিকার। এই অধিকার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দিনহাটার ভুবন সেন বাইক চালিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে গিয়ে মিটিং করে বেড়ায়। মানুষকে বোঝায়। তার বাইকের পেছনে বসে ভুবনকে অনুসরণ করে যায় নঈম শেখ নামের যুবক। 888sport appsি ছিটের কিশোরী জিন্নত স্বপ্ন দেখতে থাকে বিনিময় সম্পূর্ণ হলে সে পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে। বুড়ো সাগির আলি আর আজগার আলি ভারতীয় ভোটাধিকার পাওয়ার জন্য আরো একশ বছর বেঁচে থাকতে চায়।
একই রকম ভাবে 888sport appsের ভেতর ঢুকে থাকা ১১১টি ভারতীয় ছিটের বাসিন্দাদের 888sport appsি নাগরিক হতে পারার স্বপ্নের কথাও বলেন লেখক। সেখানেও একইভাবে প্রকৃত নাগরিকত্ব অর্জনের আকাক্সক্ষা। 888sport appsের নাগরিক হয়ে গিয়ে ক্রমশ সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে মিলে যাওয়ার বাসনা।
তবে ছিটমহল বিনিময় হওয়ার বিরুদ্ধপক্ষও রয়েছে। সেখানে রয়েছে সিরাজুল আর বংশীরা। ভারতের ভেতর 888sport appsের ছিট। সেখানে সেই অর্থে কোনো দেশেরই আইনের শাসন সতর্ক নয়। তার সুযোগ নেয় বংশী আর সিরাজুল। তারা গরু আর ফেনসিডিলের অবাধ কারবার চালায়। তারা লাইসেন্সবিহীন দেশি পিস্তল নিয়ে ঘোরে, কিশোরী জিন্নতকে উত্ত্যক্ত করে, জবাকে মাঝরাতে তুলে নিয়ে যেতে চায়। বংশী সিরাজুলরা চায় ছিটমহল যেমন আছে তেমনি রয়ে যাক।
যদিও ছিটমহল হস্তান্তরের বিরোধীপক্ষের চরিত্র হিসেবে লেখকের অনন্য নির্মাণ হাফিজুর রহমান। এত গভীরতায় লেখক এই শীতল ভিলেন চরিত্রটি তুলে এনেছেন, যা নিবিড় পর্যবেক্ষণেরই পরিচায়ক। বৃদ্ধ হাফিজুর 888sport appsের সমাজে জড়িয়ে থাকা কিংবা অনেকের মনের ভেতরে থাকা এক চোরাস্রোত। হাফিজুর রহমান পাকিস্তান ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকা একজন মানুষ, একটি ক্ষয়িষ্ণু ভাবনাবৃত্তের প্রতিনিধি।
বহুকাল আগের কোনো পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা বা তাদের কোনো মোসাহেবের সই করা সার্টিফিকেট ভাঁজ করে লুঙ্গির কোঁচরে বয়ে বেড়ায় বুড়ো হাফিজুর, যেখানে ইংরেজিতে লেখা থাকে – ‘হি ইজ ট্রু পাকিস্তানি অ্যান্ড ডিপেনডেবল। হি ইজ আ ট্রেইন্ড রাজাকার।’ এবং সেখানে বলা থাকে, যুদ্ধশেষে ওই সার্টিফিকেটের জোরে করাচি গিয়ে সে কোনো একদিন সরকারি চাকরি পাবে। হাফিজুর রহমান তাই ছিটমহল 888sport appsের থাক বা ইন্ডিয়ার হয়ে যাক – এর কোনোটাতেই বিশ্বাস রাখতে চায় না। বরং তার বিশ্বাসে ছিটমহলের ওপাশে ‘একটা লুকোনো পাকিস্তান রইসে’। তার খোয়াবে সেই পাকিস্তান একদিন ফেরত আসবে ঠিকই।
লেখক হয়তো অজ্ঞাতসারেই হাফিজুর রহমান চরিত্রটির সঙ্গে কোথাও মায়া মিশিয়ে দেন। একটা স্বপ্ন দেখা মানুষের জন্য মায়া। যদিও তা ভুল ও ভুয়া স্বপ্ন। অজস্র হত্যা, ধর্ষণ ও অসংগতির 888sport sign up bonus নিয়ে একদা যে পাকিস্তান আমল, তা-ই হাফিজুরের কাছে আল্লাহর দেশ। সে সেই দেশকে ফেরত দেখতে চায়। উদ্ভট মোগল সেনার গল্প আর ফৌজদার সৌলর জংয়ের জন্য সে সারাজীবন অপেক্ষা করে বসে থাকে।
একটি এলিয়েপড়া ভিলেন চরিত্রের দিকেও পাঠককে নিবিষ্ট করে রাখেন অমর মিত্র।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.