জ্বলে ওঠা বারুদ

স্বকৃত নোমান

জেলা শহর থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকে, যেটির নামের ওপর ‘জাতীয় দৈনিক’ এবং নিচে ‘সত্যের সঙ্গে প্রতিদিন’ লেখা এবং যেটির সার্কুলেশন সাকল্যে দুশো কপি, কিন্তু সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা সর্বত্র দুই হাজার কপি বলে প্রচার করে থাকেন, বিজ্ঞাপনটি প্রকাশের পর শহরের 888sport live footballবোদ্ধাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন তিনি। কবি খায়রুল বাশার প্রমুখ, ব্যতিক্রমী নামটাই তার সম্পর্কে অন্যদের কৌতূহলের কারণ।

এই শহরে যারা 888sport live football ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তারা জানেন, শহরের প্রধান সড়কে খায়রুল নামে দুজন ব্যবসায়ী আছেন, একজন পত্রিকার এজেন্ট অন্যজন মুদিখানার

মালিক। আর বাশার তো খুবই পরিচিত নাম। জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসের ভোটার তালিকায় কিংবা পৌরসভার জন্মনিবন্ধন বিভাগে খোঁজ নিলে অন্তত কয়েক ডজন বাশার, বশর, খায়রুল বাশার বা আবুল বাশার খুঁজে পাওয়া যাবে। এছাড়া খায়রুল বাশার চৌধুরী নামে রাজধানীর এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর নাম শোনা যায়, যিনি একাধারে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও দানবীর এবং যার পৈতৃক বাড়ি এ-শহরেই।

কিন্তু খায়রুল বাশার প্রমুখ একজনই। শুধু এ-শহরেই নয়, গোটা দেশে এমনকি সারা পৃথিবীতেও এই নামে দ্বিতীয় কেউ আছেন কিনা গবেষণার বিষয়। ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগলও এই নামের হদিস দিতে পারে না। নামের অধিকারী নিজেই একবার শহরের এক সাইবার ক্যাফের মালিককে দিয়ে সার্চ করিয়ে দেখেছেন। ভূরি ভূরি খায়রুল বাশারের নাম আসে, কিন্তু খায়রুল বাশার প্রমুখ একজনও নন। একটা অনলাইন নিউজপোর্টালের লিংকে ‘প্রমুখ’ যুক্ত একজন খায়রুল বাশারের নাম দেখা গিয়েছিল, কিন্তু তা নাম হিসেবে নয়, দিনাজপুরে ক্ষমতাসীন  দল-আয়োজিত এক জনসভায় উপস্থিত স্থানীয় আটজন নেতার নাম দিয়ে সর্বশেষ নেতা খায়রুল বাশারের নামের শেষে ‘প্রমুখ’ শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় বাকি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি বোঝাতে। অতএব বৈজ্ঞানিকভাবেই প্রমাণিত, খায়রুল বাশার প্রমুখ পৃথিবীতে একজনই এবং তার জন্মভূমি 888sport apps। সবচেয়ে বড় কথা, কেউ স্বীকার করুক বা না করুক তার দাবি অনুযায়ী, তিনি একজন বড়মাপের কবি, কালজয়ী ঔপন্যাসিক।

সেদিনই তিনি কবিবন্ধুদের কাছে সগৌরবে ঘোষণা করেন তার এই কৃতিত্বের কথা। কৃতিত্বই বটে! এই নামকরণের পেছনে আছে মোটামুটি দীর্ঘ এক ইতিহাস। নামটা তার মা-বাবার দেওয়া নয়, নিজের। পারিবারিক নাম সৈয়দ মো. আবুল খায়ের ভুঞা। বাশার মূলত তার ডাকনাম। তবে নিকটাত্মীয়রা ছাড়া কেউ তাকে ডাকনামে ডাকেন না, সবার কাছেই তিনি খায়ের বা আবুল খায়ের নামে পরিচিত।

ইন্টারমিডিয়েটে পড়ার সময় 888sport app থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার ফিচার, সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয় এবং প্রতি শুক্রবারের 888sport live football পাতার প্রতিটি লেখা খুঁটিয়ে পড়তে পড়তে একদিন খাতা-কলম নিয়ে নিজেই যখন একটা 888sport app download apk লিখে ফেললেন – সেদিনই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন অন্য কিছু নয়, তাকে লেখকই হতে হবে। সেক্ষেত্রে নাম একটা ফ্যাক্টর। যেমন শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, রফিক আজাদ, মহাদেব সাহা, হুমায়ূন আহমেদ প্রমুখ। মাত্র দুই শব্দের এসব লেখকের নামগুলো তাঁদের লেখার মতোই তার প্রিয়। কেউই নামের আগেপিছে কিছু লেখেন না। বংশগত উপাধিও না। সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল মান্নান সৈয়দ বা শামসুজ্জামান খানের মতো হাতেগোনা দু-একজন ছাড়া সবার নামই বংশ-উপাধিবর্জিত।

একটি দৈনিকে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ধারাবাহিক কলাম পড়ে মুগ্ধ হয়ে একবার ভেবেছিলেন নিজের নামের শেষেও বংশগত উপাধিটা যুক্ত করে দেবেন। কী ভেবে পরে তা আর করলেন না। চৌধুরী হলে না হয় একটা কথা ছিল, ভুঞা কি কোনো লেখকের উপাধি হতে পারে? ভুঞা মানে ভূমির মালিক। কত ছলিমুদ্দি-কলিমুদ্দিই তো ভূমির মালিক। শুক্রবারের 888sport live footballপাতাগুলো তন্নতন্ন করে খুঁজে একজন লেখকও পেলেন না, যার বংশ-উপাধি ভুঞা।

অতএব নাম হবে শুধু আবুল খায়ের। কিন্তু বাংলা ভাষার এক বিখ্যাত লেখকের নাম, যার বাড়ি এই শহর থেকে মাত্র ত্রিশ কিলোমিটার দূরে, আবুল খায়ের মোসলেহ উদ্দিন। বিপত্তিটা এখানেই। তাছাড়া আবুল খায়ের নামটার মধ্যে কেমন একটা সেকেলে গন্ধ অথচ কবি হিসেবে তিনি আধুনিক। সেক্ষেত্রে নামটাও তো আধুনিক বা আধুনিকের কাছাকাছি হওয়া চাই।

সপ্তাহখানেক ভেবে অবশেষে নাম চূড়ান্ত করলেন খায়রুল বাশার। কিন্তু সেদিনই স্থানীয় এক দৈনিকে একটা সংবাদ পড়ে এই নামটাও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলেন। কারণ খায়রুল বাশার নামে শহরের এক দুর্ধর্ষ ডাকাত, যে-কিনা সতেরোটি হত্যা ও বত্রিশটি ডাকাতি মামলার আসামি এবং যার বিরুদ্ধে এগারোটা ধর্ষণের মামলা, গোল্ডলিফ সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে যে-কিনা ফাঁসির রায়কে নির্ভাবনায় ধোঁয়ার সঙ্গে ফুঁ মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল।

এমন দাগি আসামির নামে একজন কবির নাম হতেই পারে না – দারুণ দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন বেচারা। সৌভাগ্যই বলতে হবে, সে-রাতে তিনি স্বপ্নে দেখলেন সাবেক এক মন্ত্রীকে, যার নামের সঙ্গে একজন কুখ্যাত ডাকাতের নামের মিল আছে। পরদিন ঘুম থেকে জেগে আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখলেন, খায়রুল বাশারই হবে তার নাম।

ডাকযোগে 888sport appর বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় এ-নামেই তিনি 888sport app download apk পাঠাতে শুরু করলেন। বলা বাহুল্য, জেলা শহর থেকে প্রকাশিত কোনো পত্রিকাকেই তিনি পত্রিকা হিসেবে মানতে নারাজ ছিলেন। তার মতে, পত্রিকা হবে বিশাল সাইজের, অন্তত পনেরো-বিশ পৃষ্ঠার, প্রথম ও শেষ পৃষ্ঠা অবশ্যই রঙিন থাকতে হবে, পাঠক থাকবে হাজার হাজার, প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে পাওয়া যাবে, তবেই না পত্রিকা! 888sport appর সবকটি জাতীয় দৈনিকের বৈশিষ্ট্য এমনই। সুতরাং 888sport app download apk লিখলে তিনি সেগুলোতেই লিখবেন, সাদা-কালো চার পৃষ্ঠার স্থানীয় দৈনিকগুলোতে নয়। কারণ তিনি মনে করেন, রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা ভাষায় একজন মাত্র কবির আবির্ভাব হয়েছে, তাঁর নাম খায়রুল বাশার। তাঁর 888sport app download apk তো যত্রতত্র ছাপা হতে পারে না।

অথচ ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, দিনের পর দিন পাঠানোর পরও তার একটা 888sport app download apk 888sport appর কোনো পত্রিকায় ছাপা হলো না। এর পেছনে তিনি যোগাযোগ ও সম্পর্ককে দায়ী করলেন। 888sport live football সম্পাদকদের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক নেই বলে এত বড় মাপের কবি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর 888sport app download apk তারা ছাপে না। পুরো ব্যাপারটাকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চরম স্খলন এবং দেশে প্রকৃত 888sport app download apkর অবমূল্যায়ন বিবেচনা করে অগত্যা জেলাশহর থেকে প্রকাশিত পত্রিকা অফিসগুলোতে ঢুঁ মারতে লাগলেন। তার ধারণা ছিল, স্থানীয় পত্রিকাওয়ালারাও বুঝি তার 888sport app download apkর অবমূল্যায়ন করবে অথচ যে-পত্রিকাতেই 888sport app download apk দেন, পরম সৌভাগ্য তার, ছাপা হয়ে যায়।

জেলা শহর থেকে প্রকাশিত নিয়মিত-অনিয়মিত মোট এগারোটি দৈনিকের কোনো-না-কোনোটিতে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই তার 888sport app download apk ছাপা হতে থাকে, তবু তিনি শহরের 888sport live footballবোদ্ধাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হলেন না। নামটা হয়তো তাদের চেনা, কিন্তু নামের মানুষটি এ-শহরেরই অধিবাসী, এটা প্রায় সবারই অজানা।

একদিন এক তরুণ কবি স্থানীয় 888sport live chatকলা একাডেমি আয়োজিত এক 888sport app download apkর আসরে তাকে 888sport app download apk পাঠের আমন্ত্রণ জানালে আনন্দে প্রায় আত্মহারা হয়ে এ-যাবৎ লেখা তার সবকটি 888sport app download apk নিয়ে আসর শুরুর দেড় ঘণ্টা আগে তিনি একাডেমিতে গিয়ে হাজির হলেন। বলা হয়েছিল, একটি 888sport app download apk পড়ার জন্য, কিন্তু মোটেই তিনি জীবনে প্রথম পাওয়া সুযোগটার সদ্ব্যবহার করতে ছাড়লেন না, পরপর পাঁচটি দীর্ঘ 888sport app download apk পড়ে তারপর থামলেন। হেলে-দুলে, হাত ছুড়ে, তর্জনী উঁচিয়ে, ঘাড়ের রগ ফুলিয়ে এবং মুখ থেকে ঘন-ঘন থুতুর ছিটা বের করে যখন 888sport app download apk পড়ছিলেন উপস্থিত অন্যরা মুখ চেপে হাসছিলেন। তাদের হাসি দেখে তার কাব্যোত্তেজনা আরো তুঙ্গে চড়ল। কেননা তার ধারণা, তিনি যেসব 888sport app download apk লিখেছেন পৃথিবীতে আগে কখনো এই মাপের 888sport app download apk লেখা হয়নি। সর্বশেষ 888sport app download apkটি পাঠ করে তিনি শ্রোতাদের উদ্দেশে তাকালে সবাই করতালির মাধ্যমে তাকে অভিনন্দিত করলেন। তাতে তার ধারণাটি আরো পোক্ত হলো যে, সত্যিকার অর্থেই তিনি রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা ভাষার একমাত্র কবি।

পরদিন 888sport live football আসরের সংবাদটি স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত হলো এবং আসরে যেসব কবি 888sport app download apk পড়েছিলেন তাদের অনেকের নামের সঙ্গে ছাপা হলো তার নামটিও। এ তার জীবনের অন্যতম 888sport app download for androidীয় একটি ঘটনা।

সবকটি পত্রিকা সংগ্রহ করে বাড়িতে গিয়ে পাড়ার বন্ধুদের ডেকে তিনি খবরটি পড়ে শোনালেন। তবে এত আনন্দের মধ্যেও কোথায় যেন একটা বেদনার সুঁচ তাকে খোঁচা দিতে লাগল। তার চেয়ে বয়সে কম কবিটির নাম ছাপা হয়েছে কিনা তার নামের আগে! তার নামটি সবার শেষে ছেপে নামের শেষে ‘প্রমুখ’ শব্দটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা বাহুল্য, এর মধ্যেও তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন নৈতিকতা ও মূল্যবোধের স্খলন।

এ-ঘটনার পর থেকেই তার নামের শেষে ‘প্রমুখ’ শব্দটি জুড়ে গেল। শহরের কৌতূহলী তরুণ কবিরা এই নতুন নাম সংযোজনের ব্যাপারে জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বললেন, মূর্খদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য। এখন থেকে চাইলেও কোনো সাংবাদিক আমার নামটি সবার শেষে দিতে পারবে না, কারণ প্রমুখ শব্দটি তো দুবার লেখা যাবে না!

যে-পত্রিকাটিতে প্রথমবারের মতো তার 888sport app download apk ছাপা হয়েছিল সেটিতেই তিনি বিজ্ঞাপনটি ছাপতে দিয়েছিলেন। চার পৃষ্ঠার দৈনিকটির দ্বিতীয় পৃষ্ঠার চতুর্থ কলামে প্রকাশিত বক্স-বিজ্ঞাপনটির লেখাগুলো 888sport live footballবোদ্ধা ও সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে : ‘স্বপ্নপূরণ করতে চান? কবি, লেখক, 888sport live footballিক, সাংবাদিক, আবৃত্তিকার, কণ্ঠ888sport live chatী, চিত্রকর বা টিভি-উপস্থাপক হতে চান? তাহলে চলে আসুন নিম্ন ঠিকানায়।’ ঠিকানা হিসেবে প্রথমে বিজ্ঞাপনদাতার নাম, নামের আগে ‘কবি’ বিশেষণটি দেওয়া, তার নিচে পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর। বি. দ্র. হিসেবে সবশেষে লেখা : ‘পরামর্শ ফি মাত্র পঞ্চাশ টাকা, সঙ্গে একটি 888sport app download apk ফ্রি।’

ডিসি অফিস থেকে একশ গজ পশ্চিমে গেলে হাতের বাঁয়ে যে-রাস্তাটি সোজা দক্ষিণে চলে গেছে সেটি ধরে আরো দুশো গজ হাঁটলে হাতের ডানে যে-গলিটি নদীর পারের দিকে গেছে তার মাথায় কবি খায়রুল বাশার প্রমুখের ‘ভ্যারাইটি অ্যাডভারটাইজিং সেন্টারে’র অফিস। গলিটিতে যাদের ফার্মেসি, স্টেশনারি, সেলুন, মুদিখানা বা চায়ের দোকান তাদের অনেকেই জানে না অফিসটিতে আসলে কিসের কারবার হয়। সপ্তাহের চারদিন বিকেলবেলা অফিসটি খোলা থাকে, বাকি দিনগুলোতে দরজায় চাইনিজ তালা ঝোলে। পুরো কামরায় একটি কাঠের টেবিল আর তিনটি চেয়ার। হাতলওয়ালা যে-চেয়ারটিতে কবি বসেন, সেটির পেছনে কেরোসিন কাঠের চার তাকের আলমারিটির দুই তাকজুড়ে ‘শেষ রজনীর তারা’ নামে একটি 888sport alternative linkের শখানেক কপি সাজানো। ফলে অনেকের ধারণা, এটি আসলে একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অথবা লাইব্রেরি অথবা কোর্টের কোনো উকিলের  চেম্বার। পড়তে-লিখতে না-জানা দোকানিদের কেউ জানার চেষ্টা করেনি আলমারিতে সাজানো বইটির লেখক কে বা বইটি কিসের। তারা কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি তাদের দোকানের পাশে একজন লেখকের অফিস, যার বই কিনা 888sport app থেকে প্রকাশিত!

গলির অন্য দোকানগুলোতে লোকজনের কমবেশি ভিড় থাকে অথচ ভ্যারাইটি অ্যাডভারটাইজিং সেন্টার অধিকাংশ সময়ই নীরব। বিকেলের সূর্যের তাপ যাতে ভেতরে ঢুকতে না পারে মোটা নীল কাপড়ের একটা পর্দা দরজায় টাঙানো থাকে সবসময়। ফলে ভেতরের কিছুই টের পেত না বাইরের কেউ। কবি তখন নির্জনে বসে মূলত 888sport app download apk লিখতেন অথবা রাফ খাতা থেকে আগে লেখা 888sport app download apkগুলো লাল কাপড়ে বাঁধাই মোটা খাতাটায় অথবা ধবধবে সাদা অফসেট কাগজে পুনর্লিখন করতেন। কখনো একটি করে 888sport app download apk খামে ভরে আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিজের এবং পত্রিকার 888sport live football সম্পাদকদের ঠিকানাগুলো লিখতেন। যেসব 888sport app download apk 888sport appর বিভিন্ন দৈনিকের 888sport live football-সম্পাদকদের পাঠাতেন, সঙ্গে আলাদা কাগজে ছোট্ট একটা চিঠি লিখে দিতেন, ‘শুভেচ্ছা জানবেন। 888sport app download apk পাঠালাম। ছাপলে খুশি হবো। না ছাপলে কেন ছাপবেন না তার কারণ জানাতে নিচের মোবাইল নম্বরে একটা মিসকল দেবেন। ইতি।’

সন্ধ্যার দিকে যেসব তরুণ কবি নদীর তীরে উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি করতে আসেন তাদের কেউ কেউ ভ্যারাইটি অ্যাডভারটাইজিং সেন্টারে ঢুঁ মারেন। ধীরে ধীরে আড্ডা জমে ওঠে। একবার জমলে রাত ৯টা-১০টার আগে ভাঙে না। আড্ডার বেশিরভাগ সময়জুড়ে থাকে তাদের লেখালেখি, কোন পত্রিকার কোন পাতায় তাদের কী লেখা ছাপা হলো, 888sport appর কোন কবির স্বভাব কেমন এবং বর্তমানে তাদের কে কী করছেন – এসব বিষয়। প্রতিদিনের আড্ডায় অনিবার্যভাবেই ‘শেষ রজনীর তারা’র প্রসঙ্গে বিতর্ক থাকবেই।

888sport cricket BPL rateে বইমেলায় 888sport appর বাংলাবাজারের মধ্যমানের এক প্রকাশনী থেকে 888sport alternative linkটি ছাপা হয়েছিল। মুদ্রণ-খরচ বাবদ প্রকাশককে দিতে হয়েছিল পঁচিশ হাজার টাকা। দুশো কপি বই দেওয়া হয় তাকে। কিছু বই তিনি 888sport appর খ্যাতনামা                কবি-888sport live footballিক এবং 888sport live football সম্পাদকদের ঠিকানায় কুরিয়ার করে দিলেন, কিছু বই বাড়ির আলমারিতে সংরক্ষণ করলেন, বাকিগুলো রাখলেন অফিসের আলমারিতে। এটিই তার প্রকাশিত একমাত্র বই। একটি 888sport app download apkর বই প্রকাশের খুব ইচ্ছে, কিন্তু প্রকাশকরা যে অঙ্কের টাকা দাবি করেন, তা দেওয়ার মতো তার সাধ্য নেই। চেষ্টা করলে হয়তো টাকা জোগাড় হয়ে যাবে, কিন্তু তার স্কুলমাস্টার বউ যদি শোনে গাঁটের পয়সা খরচ করে আবারো তিনি বই ছাপানোর মতো অকাজটি করেছেন, সংসারে তবে আবার একটা গোলযোগ আরম্ভ হবে। বউ এমনিতেই তার ওপর বিরক্ত। কাজকর্ম নেই, প্রতিদিন বেলা ১০টায় ঘুম থেকে ওঠা, গোসল করে দুপুরে খেয়ে-দেয়ে প্যান্ট-শার্ট পরে বাবু সেজে অফিসের উদ্দেশে বেরিয়ে যাওয়া – এই তাঁর দৈনন্দিন রুটিন। আয়-রোজগারের চিন্তা নেই। শহরে নিজেদের বাড়ি, বউ সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক, রিটায়ার্ডের পর বাবা এককালীন যা পেয়েছিলেন পোস্ট অফিস থেকে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন। সব মিলিয়ে সংসার মোটামুটি চলে যায়।

তবু পুরুষ মানুষ এভাবে বেকার ঘুরে বেড়াবে কোনো               বাবা-মা বা স্ত্রী কি মানতে পারে! বিএ পাশ করার পর চাকরি একটা জুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা অবশ্য তিনি কম করেননি। সরকারি চাকরিতে ব্যর্থ হয়ে 888sport appয় বেসরকারি এক কোম্পানিতে চাকরি একটা পেয়েছিলেন। আড়াই মাস পর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে ঘরের ছেলে আবার ঘরে ফিরলেন। চাকরি ছাড়ার কারণ একটাই, 888sport appর পরিবেশ। এমন পূতিগন্ধময় পরিবেশে কোনো মানুষ বসবাস করতে পারে! ঠিকমতো গ্যাস থাকে না, পানি থাকে না, দফায় দফায় লোডশেডিং, রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যাম, মাত্র সাত হাজার টাকার জন্য এত কষ্টের চেয়ে শান্ত-নিরিবিলি এই জেলা শহরে না খেয়ে থাকাটাও অনেক ভালো।

বছরখানেক বাড়িতে বসে কাব্যচর্চা করে তারপর তো ‘ভ্যারাইটি অ্যাডভারটাইজিং সেন্টার’ খুলে বসলেন। মাসে এক হাজার টাকা অফিসভাড়া। টাকাটা কোত্থেকে জোগাড় করেন তা বউও জানে না। কাছের বন্ধুদের ধারণা, 888sport appর বড় কোনো ব্যবসায়ীর সঙ্গে যার বাড়ি এ-শহরেই, ভালো খাতির আছে তাঁর। না হলে দু-তিন মাস পরপর 888sport appয় তাঁর কী কাজ?

তাঁর বিশ্বাস, ভ্যারাইটি অ্যাডভারটাইজিং সেন্টার একদিন আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। সে-কারণেই বাংলা ভাষার একজন কবি হয়ে, প্রতি ফেব্রুয়ারি মাস এলে যিনি সর্বত্র বাংলা ভাষা চালুর জন্য স্থানীয় পত্রপত্রিকায় কলাম লেখেন, প্রতিষ্ঠানের নাম রাখলেন ইংরেজিতে।

যা-হোক, 888sport app download apkর বই প্রকাশ না করার পেছনে অবশ্য একধরনের হতাশাও আছে। ‘শেষ রজনীর তারা’ প্রকাশের কয়েক মাস পর কত কপি বিক্রি হলো জানতে চেয়ে প্রকাশককে ফোন দিয়েছিলেন। মাত্র তিন কপি, বিরক্ত প্রকাশক উপহাসের হাসি হাসতে হাসতে জানালেন। ভীষণ মন খারাপ হলো তাঁর। পাঠকদের প্রতি অসন্তোষের সীমা থাকল না। তাঁর ধারণা, সাড়ে তিনশো বছর পর বাংলা 888sport live footballে মাত্র দুটি বই টিকে থাকবে, একটি রবীন্দ্রনাথের ‘শেষের 888sport app download apk’, অন্যটি ‘শেষ রজনীর তারা’। এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ 888sport alternative link কিনা পাঠক উপেক্ষা করল!

হতাশার সঙ্গে একটা স্বপ্নও অবশ্য তাঁর ভেতরে কাজ করে, একদিন নিশ্চয়ই তিনি নোবেল বা ম্যানবুকার 888sport app download bdে ভূষিত হবেন। 888sport alternative link তিনি আরো দুটি লিখেছেন, 888sport app download apkর পান্ডুলিপিও প্রস্ত্তত আছে ডজনখানেক। বাড়ির আলমারিতে ন্যাপথলিন দিয়ে যত্ন করে রেখেছেন। 888sport app download bd পাওয়ার পর তো প্রকাশকরা তার পান্ডুলিপির জন্য লাইন ধরবেন, তখন চড়া দামে সেগুলো বিক্রি করা যাবে।

একদিন আড্ডায় এক কবি বললেন, 888sport appর এত বড় বড় কবি-888sport live footballিক থাকতে আপনাকে নোবেল বা ম্যানবুকার প্রাইজ দেবে বলে মনে হয় না।

খেপে উঠলেন তিনি, 888sport appয় বড় কবি-888sport live footballিক বলতে কাদের বোঝাচ্ছ? আচ্ছা ধরে নিলাম তাঁরা আমার চেয়ে বড় লেখক, কিন্তু তাঁদের 888sport free bet কত? বড়জোর চার-পাঁচজন। আগামী ত্রিশ বছরের মধ্যে তাঁরা নোবেল বা ম্যানবুকার পেয়ে যাবেন। তারপর তো মাঠ খালি? তখন আমি ছাড়া মাঠে আর কে? ‘শেষের 888sport app download apkর’ পর ‘শেষ রজনীর তারা’ তো দ্বিতীয়টি নেই, নাকি? তোমরা তো আমাকে পাত্তাটাত্তা দাও না। তখন দেখো।

প্রতিদিনের মতো লাল কাপড়ে বাঁধাই 888sport app download apkর খাতাটা খুললেন তিনি। আড্ডার অন্যরা শুনতে চাক বা না চাক, স্বরচিত 888sport app download apk একটা তিনি শোনাবেনই। পরপর তিনটি 888sport app download apk পাঠ শেষে আড্ডার এক তরুণ কবির কাছে, যার গল্প-888sport app download apk 888sport appর পত্রপত্রিকায় ছাপা হয় জানতে চাইলেন, বলো তো তিনটি 888sport app download apkর মধ্যে কোন 888sport app download apkটি তোমার ভালো লেগেছে?

তিনি যখন 888sport app download apk পড়ছিলেন, তরুণ কবিটি তখন আসলে অন্যমনস্ক ছিলেন, দূরের কাউকে পাঠানোর জন্য মোবাইলে একটা এসএমএস লিখছিলেন। তবু মন রক্ষার জন্য বললেন, দ্বিতীয় 888sport app download apkটা আমার ভালো লেগেছে ভাই।

: তারপর কোনটা ভালো লাগল?

: তৃতীয়টা, মানে শেষেরটা।

: তারপর?

: এ-দুটিই।

: কেন, প্রথমটি?

: নাহ্, ওটা ভালো হয়নি।

: সত্যি বলছ?

: অবশ্যই।

কবি খায়রুল বাশার প্রমুখ অট্টহাসি দিলেন, দেখলে এবার? তোমরা তো আমাকে দামই দাও না। প্রতিষ্ঠিত কবিরা ছন্দ-তাল ঠিক না রেখে যাচ্ছেতাই কিছু একটা লিখলেও সেটা তোমাদের আদর্শ 888sport app download apk।

হাঁ করে তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন তরুণ কবিটি। খায়রুল বাশারের কথার মাথামুন্ডু কিছুই তাঁর মাথায় ঢুকছে না। বললেন, মানে?

: মানে প্রথম 888sport app download apkটা শামসুর রাহমানের, দ্বিতীয়টা আমার এবং তৃতীয়টা আল মাহমুদের। তুমি আমাকে আল মাহমুদের ওপরে স্থান দিয়েছ। বোঝ এবার!

: ধুর ভাই, আল মাহমুদের চেয়ে আপনার 888sport app download apk ভালো হয় কী করে! প্রশ্নই আসে না।

: ভালো আমি তো বলিনি ভাই, তুমি বলেছ। এখন তুমিই আবার অস্বীকার করছ। তার মানে তোমাদের কাছে ভালো 888sport app download apkর কোনো গুরুত্ব নেই, কবির নামই তোমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। একেই বলে মূল্যবোধ ও নৈতিকতার চরম স্খলন, বুঝেছ?

নিজের ফাঁদেই আটকা পড়ে গেলেন তরুণ কবি। খায়রুল বাশারের এমন অকাট্য যুক্তির পাল্টা যুক্তি তিনি খুঁজে পান না। ফলে আত্মরক্ষার্থে অনিবার্যভাবেই তাঁকে শুরু করতে হয় সেই পুরনো প্যাঁচাল, অর্থাৎ খায়রুল বাশারের অদ্ভুত বানানরীতি।

তাঁর একটা নিজস্ব বানানরীতি আছে। ‘আলো’ লিখতে তিনি সবসময় চন্দ্রবিন্দু ব্যবহার করেন। যুক্তি, ‘অাঁধারে’ যদি চন্দ্রবিন্দু থাকে ‘আলো’য় থাকবে না কেন? ‘চাদর’ লিখতেও তিনি চ-এর ওপর চন্দ্রবিন্দুটা বসিয়ে দেন। কেননা তার মতে, চাঁদ থেকে চাঁদর এসেছে। একইভাবে ভুলেও তিনি কখনো ‘888sport promo code’ লিখবেন না, লিখবেন রমণী। কেননা যার সঙ্গে রমণ করা হয় সেই হয় রমণী। দুষ্টু টাইপের তরুণ কবিরা মাঝেমধ্যে ইয়ার্কি করেন, রমণীর বিপরীত লিঙ্গ তো তাহলে রমণা হওয়া উচিত!

খায়রুল বাশার তখন চেহারায় সবজান্তা একটা ভাব ফুটিয়ে বলেন, সব শব্দের বিপরীত শব্দ হয় না। যেমন গাছ। মানুষের মতো গাছেরও প্রাণ আছে, গাছের মধ্যেও পুরুষ-রমণী আছে। তাই বলে আমরা গাছের স্ত্রীলিঙ্গকে গাছিনী বলি?

সরকার পতনের টানা অবরোধের মধ্যে শহরের পুরান বাজার চৌরাস্তার মোড়ে যেদিন সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় পেট্রলবোমা হামলা করল দুর্বৃত্তরা, কবি খায়রুল বাশার প্রমুখ অল্পের জন্য মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেলেন। তিনি ছিলেন অদূরের ন্যাড়া কড়ই গাছটির নিচে, তাঁর চোখের সামনে তিনজন জীবন্ত মানুষ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেল। দ্রুত দৌড় না দিলে আগুন তাঁকেও গ্রাস করত।

সেদিন সকালে তার বেকারত্ব নিয়ে বউয়ের সঙ্গে ভীষণ ঝগড়াও হয়েছিল, খুব মন খারাপ ছিল সারাদিন, দুপুরের এই অমানবিক হামলার ঘটনা তাকে আরো বেশি মুষড়ে দিলো। নৃশংসতায় পরিপূর্ণ এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটা অনাবশ্যক মনে হচ্ছিল তার কাছে। সন্ধ্যায় কবিবন্ধুদের সঙ্গে তিনি শহরের অদূরে ত্রিনদীর মোহনায় গিয়ে বসলেন। বহুদিন পর কৃষ্ণপক্ষের রাতে উচ্ছল তরঙ্গের মুখোমুখি বসা। আকাশে ফুটে আছে অসংখ্য নক্ষত্র। জলধোয়া দমকা বাতাস দেহমনের সমস্ত অবসাদ ধুয়ে দিচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে খসে পড়ছে উল্কারা। রাতের অন্ধকারে বিপুল জলরাশির দিকে তাকিয়ে তার মনে হচ্ছিল, এখানেই যেন পৃথিবীর শেষ! এখান থেকে যেন একটা ঐন্দ্রজালিক ভেলা নিয়ে ঘুরে আসা যায় পৃথিবীর সমস্ত বন্দর। তিনি নিশ্চুপ বসে রইলেন বিপুল জলরাশির উচ্ছ্বাস-কথনের মুখোমুখি।

তখন শহরের তরুণ কবিটি, সেদিন যে নিজের ফাঁদে আটকে গিয়েছিলেন, দরদমাখা কণ্ঠে আবৃত্তি শুরু করলেন জীবনানন্দের পঙ্ক্তিগুলো :

…প্রকৃতির পাহাড়ে পাথরে সমুচ্ছল

ঝরনার জল দেখে তারপর হৃদয়ে তাকিয়ে

দেখেছি প্রথম জল নিহত প্রাণীর রক্তে লাল

হয়ে আছে বলে বাঘ-হরিণের পিছু আজো ধায়;

মানুষ মেরেছি আমি – তার রক্তে আমার শরীর

ভরে গেছে; পৃথিবীর পথে এই নিহত ভ্রাতার

ভাই আমি; আমাকে সে কনিষ্ঠের মতো জেনে তবু

হৃদয়ে কঠিন হয়ে বধ করে গেল, আমি রক্তাক্ত নদীর

কল্লোলের কাছে শুয়ে অগ্রজপ্রতিম বিমূঢ়কে

বধ করে ঘুমাতেছি – তাহার অপরিসর বুকের ভেতরে

মুখ রেখে মনে হয় জীবনের স্নেহশীল ব্রতী

সকলকে আলো দেবে মনে করে অগ্রসর হয়ে

তবু কোথাও কোনো আলো নেই বলে ঘুমাতেছে।

কবি খায়রুল বাশারের মনে হলো, যেন 888sport app download apk নয়, দিগন্ত বিস্তৃত নদীর গভীর তলদেশ থেকে জলদগম্ভীর কণ্ঠে পবিত্র স্তোত্র উঠে আসছে। চমকিত হরিণের মতো তিনি বিস্মিত চোখে অন্ধকারে তরুণ কবিটির মুখের দিকে তাকালেন, 888sport app download apkটি কার?

তরুণ কবি নিরুত্তর। পশ্চিম আকাশে যে-উল্কাটি খসে পড়ে আরো দূর আকাশে মিলিয়ে গেল, তার দৃষ্টি সেদিকে। বাশারের বুকের ভেতর অবর্ণনীয় এক বেদনা গুমরে গুমরে ওঠে। পঙ্ক্তিগুলো তার ভেতরে এতটাই নাড়া দিয়ে গেল, তরঙ্গসংকুল এই জলরাশির সামনে, তারায় তারায় সজ্জিত এই অনন্ত আকাশের নিচে নিজেকে এক অবোধ বালক বলে মনে হতে লাগল, যার নাকে এখনো সিকনি ঝরছে, যে এখনো আদিম মানুষের মতো ন্যাংটা। দৃষ্টিকে তিনি আরো প্রসারিত করলেন। দেখলেন অযুত-নিযুত তারার আলোয় উজ্জ্বল আকাশ। চোখ ফিরিয়ে পেছনে তাকালেন তিনি। দেখলেন গভীর অন্ধকার।

ত্রিমোহনার তীরে কতক্ষণ তিনি নিশ্চুপ বসেছিলেন এবং কাউকে কিছু না বলে কখন উঠে চলে গেলেন কেউ খেয়াল করতে পারল না।

রাত তখন প্রায় সাড়ে দশটা। অফিসে গিয়ে কেরোসিন কাঠের আলমারি থেকে ‘শেষ রজনীর তারা’র সবকটি কপি বের করে একটা রিকশায় তুলে বাড়ির উঠোনে এনে ফেললেন। তারপর ঘরের আলমারিতে ন্যাপথলিন দিয়ে সংরক্ষিত সবকটি পান্ডুলিপি বের করে উঠোনে জড়ো করলেন। হঠাৎ অন্ধকারে তার হাতে দিয়াশলাইয়ের একটা কাঠি জ্বলে উঠল। বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাঁর বউ প্রায় চিৎকার করে ওঠে, কী করছ তুমি? জবাবের আগেই দিয়াশলাইয়ের জ্বলন্ত বারুদ স্তূপকৃত কাগজগুলোকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে। r