জয়নুল আবেদিন তাঁর কাজকে মেজর আর্টে উন্নীত করেছেন। মেজর আর্ট অসম্ভব, যদি না পূর্ববর্তী সময়ের মেজর আর্ট থেকে শেখা যায়। জয়নুল বাঙালি ও ইউরোপিয়ান ঐতিহ্য আত্মস্থ করে তার শিখরে পৌঁছেছেন। আর্টিস্টিক সংস্কৃতি তিনি অর্জন করেছেন, বিশেষ করে ইউরোপিয়ান মেজর আর্ট। তিনি বাঙালি সংস্কৃতি থেকে অর্জন করেছেন আবহমানের বোধ আর ইউরোপিয়ান সংস্কৃতি থেকে অর্জন করেছেন পরিবর্তনের বোধ। এই দুই বোধ থেকে তিনি তাকিয়েছেন অবনীন্দ্রনাথ, নন্দলাল ও যামিনী রায়ের কাজের দিকে, এসব দেখা তাঁকে অস্থির ও চঞ্চল করেছে, সর্বোপরি বাঙালিয়ানা। এভাবে তাঁর মধ্যে তৈরি হয়েছে নিজের স্টাইল। বাঙালিয়ানা তিনি শুদ্ধ করেছেন রিয়ালিজম দিয়ে, আবার ইউরোপিয়ান বোধকে তিনি পরিশীলিত করেছেন তাঁর নিজস্ব রিয়ালিস্টিক ধরন দিয়ে। এভাবে তিনি পৌঁছেছেন মেজর, উচ্চাভিলাষী 888sport live chatের কাছে। যেন যাত্রা শুরু করার আগের অবস্থান। ঘটেছে তাঁর মধ্যে বিপ্লব, তিনি একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন, চ্যালেঞ্জগুলি হচ্ছে – রিয়ালিস্টিক এবং প্রায়-রিয়ালিস্টিক আর্টের প্রকাশভঙ্গিমতার সম্ভাবনা পরীক্ষা করা। এই পরীক্ষা তাঁকে বিশালভাবে উদ্ভাবনশীল করেছে, তাঁর একটা সূত্র হচ্ছে ল্যান্ডস্কেপকে তিনি প্রায়শই ব্যবহার করেছেন স্টিললাইফ ও ফিগরের বদলে।
জয়নুল এভাবে 888sport live chatের বুর্জোয়া কনসেপ্ট থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন এবং অন্যদিকে বৈপ্লবিক রাজনৈতিক মনোভঙ্গির নৈতিকতা নিজের মধ্যে তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন। এর জন্য সাহস দরকার এবং সেই সাহস থেকে তিনি জোরালোভাবে সমাজের প্রচলিত 888sport live chatবোধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। সাহসের অবশ্য দরকার ছিল, এ কারণে তিনি এমিগ্রেট করেছেন বুর্জোয়া সমাজ থেকে সাধারণ মানুষের কাছে। তার অন্য অর্থ হচ্ছে, একই সঙ্গে তিনি ধনতন্ত্রের বাজার থেকে এমিগ্রেট করেছেন। তার দরকার নেই এরিসটোক্রেটিক প্যাট্রনেজের। দুর্ভিক্ষের ছবিগুলি এই বোধ থেকে এই সাহস থেকে তৈরি হয়েছে।
জয়নুল নিজেকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ছন্নছাড়া 888sport live chatী হিসেবে মনে করেননি। তিনি সবসময় নিজেকে ভেবেছেন বুর্জোয়া রাজনীতির মধ্যে বিপ্লবী 888sport live chatী হিসেবে। এই বোধ থেকে তিনি ব্রিটিশ-বাঙালি সমাজ আক্রমণ করেছেন এবং পরবর্তীকালে তিনি পাকিস্তানি-বাঙালি সমাজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পতাকা তুলে ধরেছেন এবং পরবর্তীকালে তিনি স্বাধীন বাঙালি সমাজকে নচ্ছার বলে ভেবেছেন। সেজন্যে তাঁর কাছে 888sport live chat পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় নয়, 888sport live chat হচ্ছে রাস্তা-খোঁজা মতাদর্শিক বিভ্রান্তি এবং ভায়োলেন্সের মধ্যে, সংস্কৃতিকে অগ্রসর হতে দেওয়া সামনের দিকে। বাঙালি সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ ওখানে।
অবনীন্দ্রনাথরা কিংবা নন্দনলালরা কিংবা যামিনী রায়রা ঈশ্বরের অনুসরণে 888sport live chatের দিকে অগ্রসর হয়েছেন, কিন্তু প্রশ্ন তোলেননি 888sport live chat নান্দনিকভাবে বৈধ কিনা। প্রশ্ন না তোলার দরুন 888sport live chat তাঁদের কাছে অ্যাবস্যুলুট। জয়নুল ভিন্ন সমাজ থেকে উদিত হয়েছেন বলে ঈশ্বরের মতো অ্যাবস্যুলুট 888sport live chatকে ভাবেননি। 888sport live chatের কেন্দ্র ভিত্তিমূল আপেক্ষিক মূল্যবোধ, নান্দনিক মূল্যবোধ। তিনি ঈশ্বরের অনুসরণ করেননি, তিনি অনুসরণ করেছেন সাধারণ মানুষকে এবং সাধারণ মানুষের জীবনবোধ থেকে তৈরি হয় 888sport live chatের বোধ, এই বোধই 888sport live chatের প্রক্রিয়া ও ডিসিপ্লিন গড়ে তোলে। তিনি কখনো অভিজ্ঞতার বিষয় থেকে সরে যাননি। তিনি ফিরে ফিরে তাকিয়েছেন তাঁর ক্রাফটের বৈধতার ওপর। এখানেই আছে নান্দনিক বৈধতা এবং এই বৈধতা জবরদস্তি নয়, কিংবা নয় অ্যাক্সিডেন্টাল। তাঁর কাজ এভাবে বৈধতা পেয়েছে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের অভিজ্ঞতা থেকে।
সাধারণ মানুষের যে-অংশ কৃষক, শহরের বাসিন্দা এবং পেটিবুর্জোয়া, তারা শহরের বনেদি সংস্কৃতি আস্বাদ করে থাকে। তারা লোকজ সংস্কৃতির স্বাদ নেয়, এই লোকজ সংস্কৃতির পশ্চাৎপট গ্রামাঞ্চল। এই সংস্কৃতির ভিত্তি শহরের জনসাধারণ, তাদের কথা জয়নুল ভোলেননি। আবার গ্রামীণ সংস্কৃতি-উত্থিত লোকজ সংস্কৃতি তাঁর মননে মজ্জায় কব্জিতে ভরপুর। এক্ষেত্রে তিনি গ্রাম ও শহরের চাহিদা ব্যবহার করেছেন, তৈরি করেছেন গ্রাম্য সংস্কৃতির বিপরীতে লোকজ সংস্কৃতি। লোকজ সংস্কৃতির কথা তিনি বলেছেন ও ভেবেছেন।
আবেদিন জীবনযাপনের বিষয় আঁকড়ে ধরেছেন, এসব বিষয় থেকে তিনি তৈরি করেছেন তাঁর স্টাইল, তাঁর প্লাস্টিক ধারণা, তাঁর নান্দনিক ডিসিপ্লিন। তিনি বিষয়ের মধ্য থেকে রং ঐক্যবদ্ধ করেছেন, যদিও তাঁর রং পিওর ও ফ্ল্যাট। তিনি পলিশ করেছেন, নমনীয় করেছেন এবং পরিশীলিত করেছেন তাঁর 888sport live chat এবং এর সঙ্গে তাঁর কাজকে কিছুটা সেন্টিমেন্টাল করেছেন। তিনি 888sport appsের আধুনিক আর্টের সাহসী অধ্যায়ের সূত্রপাত করেছেন। এই 888sport live chatের যাঁরা বীর, জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন এবং সুলতান, সুররিয়ালিজম এবং নিউ-রোমান্টিসিজমের দিকে ফিরে ফিরে তাকিয়েছেন। তাঁর ব্যক্তিত্বের জোর অসম্ভব, সেই জোর থেকে তিনি কাজ করেছেন, কিন্তু আপস করেননি।
আবেদিনের কাজ রিপ্রেজেন্টেশনাল, ফিগারেটিভ এবং ডেসক্রিপটিভ। অভিজ্ঞতা, অভিজ্ঞতা কেবল আমাদের শেখায় রিপ্রেজেন্টেশনাল পেইন্টিং কোয়ালিটির দিক থেকে উঁচুমাপের। আবেদিন সেদিকেই অগ্রসর হয়েছেন। অগ্রসর হতে গিয়ে নিজের কাছে স্পষ্ট হয়েছে : ধার-করা স্টাইলে বড়মাপের কাজ করা যায় না। এই বোধ থেকে তিনি তাঁর অনন্য-সত্তা আবিষ্কারে তাঁর নিজের রাস্তা খুঁজতে শুরু করেন। এই খোঁজা থেকে তিনি তাঁর স্বতন্ত্র ও স্বাধীন, নিজস্ব রাস্তা খুঁজে বের করেন। তিনি হয়ে ওঠেন মহান ও স্বাধীন।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.