এ জেড এম আবদুল আলী
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সম্পর্কে কোনো কিছু লেখা একজনের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি এত বিষয় নিয়ে এত লিখেছেন যে, তাঁকে নিয়ে কিছু লেখা শুধুমাত্র তাঁর মতো অন্য আর একজনের পক্ষেই সম্ভব। আমার জানামতে সেরকম আর কেউ এখন 888sport appsে নেই। থাকলেও তিনি বা তাঁরা কলম ধরেন নি। তাঁর অনেক বিষয়ে লেখাগুলির মধ্যে মাত্র দুটির কথাই ধরা যাক। কোরআনসূত্র এবং যথাশব্দ এই দুটি বই একই ব্যক্তির লেখা সেটি যেমন বিশ্বাস করা কঠিন তেমনি একই ব্যক্তির পক্ষে ওই দুটি বইয়ের উপর আলোচনা, যাকে পুস্তক-সমালোচনা বলে, তাও করা অসম্ভব বলে মনে হয়। কোরআনসূত্র সম্পর্কে যিনি আলোচনা করবেন তাঁকে প্রথমেই পবিত্র গ্রন্থ কোরআন তন্নতন্ন করে পড়তে হবে। তাঁকে আরবি ভাষা জানতে হবে, সেই ভাষার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়গুলি, যাকে ইংরেজিতে nuances and insinuations বলা হয়, সেগুলি ভালো করে জানতে এবং বুঝতে হবে। এবং সেই আরবিও আজকের আরবি ভাষা নয়, সেই সপ্তম শতাব্দীর আরবি ভাষা, যখন কোরআন সংকলিত হয়েছিল, তখনকার। কী করে যে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এই দুরূহ কাজটি করেছেন তা ভাবতে আশ্চর্য লাগে। যথাশব্দ বইটি প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। তখন পর্যন্ত বাংলাভাষাতে ইংরেজি রোজে’স থিসরাস গোছের বই খুব সম্ভবত এটিই প্রকাশিত হয়েছিল। যথাশব্দ বইটি সম্পর্কে অধ্যাপক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘এই বইখানি বাঙ্গলা ভাষার একটি বড় অভাব বহুলভাবে পূরণ করিল। বাঙ্গলা ভাষা, শব্দকোষ, 888sport live football সবদিকেই বহু অনুসন্ধান ও গবেষণা হইয়াছে, ভালো অভিধানও বাহির হইয়াছে এবং আরো হইতেছে। কিন্তু ইংরেজি Roget’s Thesaurus-এর মতো বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক বিচারশৈলী অনুসারে, বিভিন্ন প্রকারের দ্যোতনার শব্দের বিশেষ কার্যকর অভিধান ছিল না। বাঙ্গালী 888sport live footballিক ও 888sport live footballরসিকের পক্ষে যথাশব্দ অভিধানখানি এইরূপ একখানি অপরিহার্য পুস্তক-রূপে এখন দেখা দিল।’ বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের এই বইটির প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রকাশনার (১৯৯৩, ইউপিএল) মধ্যবর্তী সময়ে ১৯৮৭ সালের জানুয়ারি মাসে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় অশোক মুখোপাধ্যায়-সংকলিত সংসদ সমার্থশব্দকোষ। একথা আজ নিঃসন্দেহে বলা চলে যে, এই দুইখানি বই মিলে ভাষা-সচেতন শিক্ষিত জনসাধারণ এবং বাংলাভাষায় 888sport live footballিক ও 888sport live footballরসিকদের পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখেছে। যাঁরা বাংলাভাষায় কিছু লিখতে শুরু করে উপযুক্ত শব্দটি, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় mot juste হাতড়ে বেড়ান তাঁরা হাতের কাছে যথাশব্দ গ্রন্থটি না রেখে কোনোমতেই পারবেন না।
ইংরেজির Polymath শব্দটি অনেক অভিধানে দেখা যায় না। অন্তত, যে-সকল ইংরেজি-বাংলা অভিধান আজ এদেশে চালু আছে সেগুলির কোনোটিতেই এই শব্দটি আমার চোখে পড়েনি। বাংলাভাষায় ‘বহুপ্রজ’ একটি শব্দ চালু আছে। সেটির অর্থ যিনি অনেক রচনা করেছেন। কিন্তু যিনি ‘বহু বিষয়’ নিয়ে ‘বহু পুস্তক’ রচনা করেছেন, তাঁকে বোঝাবার মতো কোনো শব্দ সম্ভবত ইংরেজির ওই ‘পলিম্যাথ’ শব্দটি ছাড়া আর নেই। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রকৃত অর্থে একজন ‘পলিম্যাথ’। তাঁর বিচিত্র জ্ঞানভান্ডার তিনি নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখেননি। বিভিন্ন পুস্তক রচনা করে তা প্রকাশ করেছেন এবং সমগ্র বাংলাভাষা ও 888sport live footballকে সমৃদ্ধ করেছেন।
ইংরেজিতে বলা হয়, ‘কোনো ইংরেজের বাড়িতে দুটি পুস্তক না থাকলে, সেই বাড়িটিকে সম্পূর্ণ একটি বাড়ি বলা চলে না।’ গ্রন্থ দুটির মধ্যে একটি হচ্ছে বাইবেল ও দ্বিতীয়টি হচ্ছে কৃষিবিষয়কসহ বিভিন্ন দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ অ্যালমানাক। আমাদের মতে, একইভাবে বলা চলে যে, 888sport appsের শিক্ষিত সমাজের যে-কোনো লোকের বাড়িতে যদি একখানি ধর্মগ্রন্থ এবং 888sport appsের তারিখ বইখানি না থাকে তবে সেই বাড়িটিও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যাঁরা কোনোদিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের 888sport appsের তারিখ বইটির কোনো একটি সংস্করণ দেখেননি তাঁরা জানেন না যে তাঁরা কী হারাচ্ছেন। 888sport appsে প্রত্যহ ঘটে যাওয়া অজস্র ঘটনাসহ এই পুস্তকে কোন নেতা কবে কী বলেছিলেন, কোন দল কবে কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল তার সবই পাওয়া যায়। অধুনা এই বইটির দ্বিতীয় খন্ড বার হয়েছে। এতে রয়েছে ২০০১ সন থেকে ২০০৭ সন পর্যন্ত কালানুক্রিক ঘটনাপঞ্জি। বাঙালি 888sport sign up bonusভ্রংশ জাতি। গতকাল কী ঘটেছে তা-ই আমরা ভুলে যাই। কখনো ইচ্ছা করে অপ্রিয় 888sport sign up bonus থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রয়াসে, কখনো বা 888sport sign up bonusশক্তির বিভ্রান্তির কারণে। ধরা যাক, গতবারের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথাই। প্রথম সে-সরকারটি গঠন করেছিলেন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন, সেখানে তিনিই ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা, সেখানে যে দশজন উপদেষ্টা নিয়োজিত হয়েছিলেন ২০০৬ সনের ৩১ অক্টোবর তারিখে তাদের মধ্যে জনাচারেক পদত্যাগ করেছিলেন। সকল উপদেষ্টাকেই বিদায় নিতে হয়েছিল এগারোই জানুয়ারি ২০০৭ সনের পটপরিবর্তনের পর। ওইসব উপদেষ্টা সম্পর্কে কে কী বলেছিল, কোন কাগজে কী লিখেছিল তা আমাদের আজ খুব কম মানুষেরই মনে আছে। যাই হোক, ১১ জানুয়ারির পর যখন নতুন প্রধান উপদেষ্টা আবার এক নতুন উপদেষ্টামন্ডলী গঠন করেন তখন দেশের একটি সর্ববৃহৎ দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান কী লিখেছিলেন তা কারোই মনে নেই আজ। দেখা যাক 888sport appsের তারিখ গ্রন্থে ওইদিন বা তার পরদিনের ভুক্তিতে কী আছে? ‘‘১৪ জানু : নতুন উপদেষ্টা পরিষদের পাঁচজন উপদেষ্টা গতকাল শপথ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিনকে কোনো বিচারে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ বলা যায় না।… অন্যদিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনও দৃশ্যত একটি দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ।… আমরা কিছুতেই ভুলতে পারি না সদ্যপদত্যাগী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমদের নির্লজ্জ স্বৈরাচারী ভূমিকার কথা।… তিনি সব কিছু করছিলেন তাঁর ‘ম্যাডাম’-এর নির্দেশমতো। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক যে, তিনি উপদেষ্টাদের কোনো কোনো প্রস্তাবে এমন কথাও বলেছেন, ‘এটা করলে ম্যাডাম রাগ করবেন।’’ আমাদের মহাভাগ্য, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের 888sport appsের তারিখ বইটি আমাদের কাছে আছে। তা নইলে 888sport appsের ইতিহাসের এই চমকপ্রদ এবং কলঙ্কময় দিনগুলির কথা আমাদের কোনোমতেই মনে থাকতো না।
আমাদের দেশের মানুষের জীবনে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতির ব্যাপ্তি ও গভীরতা কতখানি তাও আছে ওঁর রচিত কয়েকটি বই এবং প্রচুর রবীন্দ্রবিষয়ক 888sport liveে। এ-বিষয়ে ওঁর গুণগ্রাহী আর এক ব্যক্তিই ওঁর সমকক্ষ। তিনি হচ্ছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এঁরা দুজনে মিলে 888sport appsে রবীন্দ্রচর্চার ধারাটিকে যেভাবে দিনের পর দিন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করে চলেছেন তা উল্লেখযোগ্য। রবীন্দ্রনাথ আমাদের জীবনে অপরিহার্য, 888sport appsের প্রতিটি প্রকৃত শিক্ষিত মানুষের একজন করে ‘আপন রবীন্দ্রনাথ’ রয়েছে। আর সেই রবীন্দ্রনাথ মূর্তিটি তিলে তিলে গড়ে তোলাতে সাহায্য করেছেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং আনিসুজ্জামান।
নিরবচ্ছিন্নভাবে লিখেছেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। নিত্যনতুন বিষয় নিয়ে, নতুন আঙ্গিকে লেখার চেষ্টা করেছেন। গল্প ও 888sport app download apkর দিকেও হাত বাড়িয়েছিলেন তিনি। আনিসুজ্জামানকে নিয়ে সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন বিশাল আইন-শব্দকোষ। এটিও একটি অসামান্য কাজ। আইনের বিভিন্ন শব্দগুচ্ছকে বাংলায় বোঝানোর জন্য এরকম কাজ বাংলাতে এখন পর্যন্ত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ১৩১০ পৃষ্ঠার এই শব্দকোষে ছয় হাজার ভুক্তি রয়েছে। প্রতিটি ভুক্তিতে যতখানি সম্ভব শুদ্ধ বাংলা ভাষায় আইনের কঠিন ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলি সাধারণের বোধগম্য করে তোলার চেষ্টা করেছেন। কানাডীয় অর্থানুকূল্যে সংকলিত এই গ্রন্থটি সম্পাদনায় লেগে গিয়েছিল চার থেকে পাঁচ বৎসর। বিলাতে একটি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এক অপরাধীকে নতুন তথ্যের ভিত্তিতে পুনরায় বিচার করার সিদ্ধান্তে এক হাজার বছরের একটি আইনকে পরিবর্তন করা হয়েছে কিছুদিন আগে। এই আইনটি যেটিকে ‘দোবারা সাজা’ বা ‘ডাবল জেপার্ডি’ (double jeopardy) বলা হয় সেটি সম্পর্কে জানবার জন্য আমি নিজেও আইন-শব্দকোষটির শরণাপন্ন হই। অন্য কোথাও এ সম্পর্কে কিছুই পাইনি।
এই বিশাল গ্রন্থটির ভূমিকায় লেখা হয়েছে, ‘888sport appsের সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদে বলা হইয়াছে যে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাংলাভাষা প্রয়োগের বিষয়ে এই অনুচ্ছেদ আমাদের প্রতি অনপনেয় দায়িত্ব অর্পণ করিয়াছে। বাংলাভাষার ব্যবহার সম্পর্কে 888sport appsের অভ্যুদয়ের পর যে-উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা দিয়াছিল, দুর্ভাগ্যের বিষয়, পরবর্তীকালে তাহা বহুল পরিমাণে হ্রাস পাইয়াছে।’ কিন্তু এই হ্রাসপ্রাপ্ত উৎসাহ-উদ্দীপনা সত্ত্বেও বেশ কিছু ভালো কাজ হয়েছে। বাংলা একাডেমি এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে আইনের পরিভাষা সংকলিত হয়েছে এবং অন্ততপক্ষে একটি আইন-অভিধান প্রণীত হয়েছে। নিম্ন আদালতে বেশ খানিকটা বাংলাচর্চা হলেও উচ্চ আদালতে বাংলাভাষায় লেখা প্রায় হয় নাই বললেই চলে। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক দু-একটি রায় বাংলায় লিখলেও বিষয়টি তেমন গতিবেগ পায় নি। অনেক বিচারপতিই মনে করেছেন যে, আইনের জটিল শব্দগুলি এখানে বাংলায় সহজবোধ্য করা সম্ভব হয় না। অনেকটা সেদিকে খেয়াল রেখেই বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান অবসরগ্রহণের পর এই শব্দকোষটি সংকলন এবং সম্পাদনা করতে অগ্রসর হয়েছিলেন। বেশ কষ্টকর এবং ক্লান্তিকর এই কাজটি মূল্যবান একটি আকর গ্রন্থ হয়েছে। কেন তাঁরা এই কাজটি হাতে নিলেন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তাঁরা লিখেছেন, ‘দেশের আইন ও সংবিধান সম্পর্কে সম্যক পরিচয় ও উপলব্ধি মাতৃভাষার মাধ্যমে অর্জিত না হইলে দেশের প্রশাসনে নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে না এবং আইনের শাসনের আলোকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হইবে না। এই বিশ্বাস ও উপলব্ধি আমাদেরকে এই শব্দকোষের কাজে উৎসাহিত করিয়াছে।’ উপরের এই ‘বিশ্বাস ও উপলব্ধি’ এ দেশের অনেক শিক্ষিত ও জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিরই আছে। কিন্তু সেই বিশ্বাসের জন্য এভাবে বিভিন্ন কর্মে লিপ্ত হতে পারেননি খুব বেশি মানুষ। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান একমাত্র মানুষ যিনি ওই একই বিশ্বাস থেকে অনেক কাজ করেছেন। এবং তা করে সফলতা অর্জন করেছেন।
বাংলাভাষার প্রতি ওঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার উদাহরণ আরো কয়েকটি বইতে আছে। ওঁর একটি বই বিষণ্ণ বিষয় ও 888sport apps সম্পর্কে লিখতে গিয়ে একটি বাক্য আমার মনে প্রচন্ড দাগ কেটেছে। ওই বইয়ের একটি 888sport liveে উনি লিখেছেন, ‘আপনার কথা ঠিক করুন।… আমাদের দেশে ভাষায় যে নৈরাজ্য আছে তা দূর করতে সচেষ্ট হতে হবে।… বচনে বিশৃঙ্খলা থাকলে, সমাজে শৃঙ্খলা আসবে না।’ সম্ভবত এই কারণেই আমাদের সমাজে আজো শৃঙ্খলা আসে নি। আমরা যখন যেভাবে খুশি বাংলা বলে থাকি এবং লিখে থাকি। মাতৃভাষাকে হেলাফেলা করাটি আমাদের একটি অভ্যাস। এই অভ্যাসটি যে কত মারাত্মক একটি অভ্যাস তা আমাদের আজো বোধগম্য হয় নি বলেই আমাদের অগ্রগতি এতো ধীর।
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের কাছে আমাদের ঋণের শেষ নেই। অলডাস হাক্সলের ‘ব্রেভ নিউ ওয়র্ল্ড’য়ের মতো তিনিও আমাদের এক সাহসী নতুন 888sport appsের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তাঁর প্রতিটি লেখার মাধ্যমে।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.