888sport promo codeর চোখে 888sport promo codeর যুদ্ধ

তালাশ:

শাহীন আখতার

মাওলা ব্রাদার্স,

888sport app, ২০০৪

দাম ২০০ টাকা

শাহীন আখতারের প্রথম গল্পগ্রন্থ শ্রীমতীর জীবনদর্শন (১৯৯৭) পাঠ করে আবিষ্কার করেছিলাম এমন এক লেখককে, যিনি 888sport promo codeর জীবন জানেন, পুরুষ-নিয়ন্ত্রিত এই সমাজে 888sport promo codeর সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে যাঁর ধারণা স্বচ্ছ ও সংশয়মুক্ত এবং সর্বোপরি, যিনি গল্প লেখায় হাত দিয়েছেন এ-সব বিষয়ে নিজের উপলব্ধি ও অনুভব-ভাষার মাধ্যমে অন্যের মধ্যে সঞ্চারিত করার শৈল্পিক কলাকৌশল রপ্ত করার পরে, আগে নয়। অথবা এমনও নয় যে, তিনি গল্প লিখতে লিখতে সেসব কলাকৌশল শিখে নিচ্ছিলেন। শ্রীমতীর জীবনদর্শন তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ হলেও বইটিতে একটি গল্পও নেই যা পড়তে গিয়ে মনে হতে পারে এর লেখক নবীন, গল্প লেখা আরম্ভ করেছেন মাত্র, হাত মক্শো করছেন। না, সে-রকম কিছুর প্রয়োজন যদি তাঁর ক্ষেত্রে থেকে থাকে তবে তিনি সম্ভবত

সেই পর্ব সেরেছেন লোকচক্ষুর      অন্তরালে। যখন পাঠক-সমক্ষে হাজির হয়েছেন, তখন তিনি একদম প্রস্তুত একজন কথা888sport live chatী।

শ্রীমতীর জীবনদর্শন প্রকাশের তিন বছরের মাথায় ২০০০ সালে বেরোয় তাঁর দ্বিতীয় বই আর প্রথম 888sport alternative link পালাবার পথ নেই। ক্ষুরধারী এই ছোটগল্পকার যে দাও ধরতেও বিলক্ষণ পারেন, 888sport alternative link নামক বৃহৎ ব্যাপার যে তাঁর হাতেও নির্মিত হতে পারে তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল পালাবার পথ নেই থেকে। তারপর আরো কিছু গল্প লেখার পর (বোনের সঙ্গে অমরলোকে, ২০০১) শাহীন আখতার সত্যিই ক্ষুর রেখে খড়্গহস্ত হয়েছেন : 888sport appsের মাপে মোটাসোটা আর ভারি একটি 888sport alternative link তিনি প্রায় তিন বছর কঠোর পরিশ্রম করে লিখে শেষ করেছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ২৫৬ পৃষ্ঠার সেই 888sport alternative link তালাশ (মাওলা ব্রাদার্স, ফেব্রুয়ারি ২০০৪)।

আগের তিনটি বইয়ে শাহীন আখতারের মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল 888sport promo code; পুরুষশাসিত সমাজে 888sport promo codeর সংগ্রাম, বশ্যতা ও বিদ্রোহ, তার দুঃখ, তার অসহায়ত্ব, এক কথায় 888sport promo codeজীবনের সমস্ত ড্রামা। তাঁর প্রতিটি লেখায় 888sport promo codeর বিষয় এত গভীর ও ব্যাপক যে তিনি যখন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি বড়সড় 888sport alternative link নিয়ে হাজির হন তখন কৌতূহল জাগে, এবার তিনি কী বলেন।

তালাশ মুক্তিযুদ্ধের 888sport alternative link, অথবা বলা যায়, এই উপাখ্যানের জন্ম মুক্তিযুদ্ধের গর্ভে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এ-যাবৎ রচিত কথা888sport live footballের ভাণ্ডারে এমন 888sport alternative link আর একটিও আছে কি-না সন্দেহ। এ-যাবৎ রচিত হয়েছে একাত্তরে বাঙালির বীরত্বগাথা। শাহীন আখতারের তালাশ কোনো বীরত্বের কাহিনী নয়। তাছাড়া, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা অধিকাংশ গল্প-888sport alternative linkের প্রধান কুশীলব পুরুষ, (সন্দেহ নেই, যুদ্ধ করেছিলেন প্রধানত তারাই)। শাহীন আখতারের তালাশ-এর কেন্দ্রীয় চরিত্রসুদ্ধ প্রধান কুশীলবের অধিকাংশই 888sport promo code। বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে দুই লক্ষ বাঙালি 888sport promo code সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীন 888sport apps তাঁদের সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানে না। তাঁদের খোঁজ রাখা হয়নি। তাঁরা যুদ্ধের হিসাবের খাতায় নেহাৎ একটা 888sport free bet। শাহীন আখতার এই 888sport alternative linkে তাঁদের তালাশ করেছেন। তালাশ 888sport alternative linkের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চলেছে অনুসন্ধান… অভিযাত্রা… গ্রন্থিত ও স্বীকৃত ইতিহাসের পৃষ্ঠার বাইরে, জনপদের প্রান্তসীমাগুলোতে, সম্ভাব্য মৃতদের তালিকায়, মুখ্যত 888sport sign up bonusতে, এমনকি বি888sport sign up bonusতেও।’ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের এ এক অজানা, অনাবিষ্কৃত অধ্যায়।

কিন্তু শাহীন আখতারের বিশেষত্ব বা কৃতিত্ব সেই আবিষ্কারে নয়। তিনি তো সমাজ-গবেষক বা পরি888sport free betনবিদ বা ইতিহাস-রচয়িতা নন। তিনি 888sport live chatী; আর তাঁর অন্বিষ্ট সাধারণ নয়, বিশেষ ব্যক্তির জীবন। মরিয়ম ওরফে মেরী নামের এক দুর্ভাগা 888sport promo code শাহীনের এ-কাহিনীর কেন্দ্রীয় চরিত্র, যে আর দশটা সাধারণ মেয়ের মতো প্রেমে পড়েছিল, ২৫ মার্চের আগ পর্যন্ত যার চাওয়া ছিল আর দশটা মেয়ের মতো নানান বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও তারও যেন একটা জীবন হয়, যাতে সময়মতো মা হয়ে স্বামীর সংসার করার নিশ্চয়তা থাকে। কিন্তু সেই জীবনের স্বপ্ন তার কাছে থেকে যায় অধরা, উলটো যুদ্ধ এসে তার জীবনটা এমন তছনছ করে দিয়ে যায় যে তা 888sport alternative linkের চেয়েও অবিশ্বাস্য আর রোমহর্ষক।

তালাশ যুদ্ধের পটভূমিতে রচিত এক অবিশ্বাস্য করুণ কাহিনী। তখন ‘প্রত্যেকের মুখে একটাই স্লোগান। প্রত্যাশাও সবার এক। অভুক্ত মানুষ, ভরপেট বা ভুঁড়িঅলা মানুষ, নাঙ্গা মানুষ, সুটবুট পরা মানুষ – একযোগে তারা চায় স্বাধীনতা। এমন একাট্টা, জটিলতাহীন, প্রাণবন্ত শহরে জানান না দিয়ে একদিন সৈন্য নামে। গুলির শব্দে, বারুদের গন্ধে আর বুটের আওয়াজে পাখির মতো ঝাঁক বেঁধে স্বপ্নরা পালিয়ে যায়। বাদামের ঠোঙা ফেলে প্রেমিকরা চলে যায় যুদ্ধ করতে। প্রেমিকারা অরক্ষিত, ভাসমান। শত্রু-সৈন্য তাদের পেছন পেছন তাড়া করে ঝোপঝাড়, পুকুরপাড়, গাছতলা থেকে ক্যাম্পে ধরে আনে। তখন মৃত্যু কী গর্ভধারণ তাদের অনিবার্য নিয়তি। যুদ্ধশেষে জীবিত প্রেমিক-প্রেমিকারা শহরে আবার ফেরত আসে। তবে তাদের আর মিলন হয় না। শিরীষ অরণ্যে পুরনো স্বপ্নের খোঁজে প্রেমিকার দুপুর-বিকেল কচুপাতা থেকে জলের ফোঁটার মতো গড়িয়ে পড়ে যায়’ (পৃষ্ঠা ১৯৪-১৯৫)। এই প্রেমিকাদের একজন মরিয়ম ওরফে মেরী যুদ্ধের প্রাক্কালে আবেদ নামের এক ছাত্রনেতার প্রেমে পড়ে, কিন্তু যুদ্ধ এসে আবেদকে বদলে দেয়, সে মেরীকে ভর্ৎসনার সুরে বলে, ‘তোমার মতো মেয়েরা ডামি রাইফেল দিয়ে ট্রেনিং নিচ্ছে, রোদে দাঁড়িয়ে লেফট-রাইট করছে, গলা ফাটিয়ে স্লোগান দিচ্ছে, আর এদিকে তোমার মুখে বিয়ে ছাড়া কোনো কথা নাই’ (পৃষ্ঠা ১২)। বেচারি মেরীর জন্য সেই প্রথম থেকেই বড্ড মায়া জাগে, করুণা হয়। আবেদের সঙ্গে লতার মতো জড়িয়ে থাকার শেষ চেষ্টাস্বরূপ সে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়ও কাঠের রাইফেল দিয়ে ট্রেনিং নেওয়ার

প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তাতেও তার শেষরক্ষা হয় না। আবেদ তাকে ফেলে যুদ্ধে চলে যায়, কলেজপড়ুয়া ছোটভাই মন্টুকে দেশের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে       মেরী তাকেও শেষ পর্যন্ত     হারায়।

তালাশ-এর কাহিনী বেশ দীর্ঘ। এতে মুক্তিযুদ্ধকে প্রায় একটা পূর্ণ অবয়বেই পাওয়া যায়। অসহযোগ আন্দোলন থেকে শুরু করে ২৫ মার্চের অপারেশন সার্চলাইটের অনুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে। জায়গায় জায়গায় আছে রাজনীতির কথাও, যেমন: ‘পতাকা তো একখণ্ড কাপড়, ত্যানা। ওড়ানো-নামানো দুমিনিটের ব্যাপার। এদিকে ভুট্টো-ইয়াহিয়ার সাথে যে সেনাপতি আর সামন্তদের বিরাট লটবহর নিয়ে এখন 888sport appয়! আর জলপথেও ভারি ভারি অস্ত্রশস্ত্র পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসছে। এসবের ভিতর শুধু শুধু কতগুলো দিন আলোচনার নামে সাবাড় হচ্ছে। মূল্যবান একেকটা দিন। এর দাম কে দিবে? রুমের মধ্যখানে স্তূপ করা মশারির স্ট্যান্ড, লাঠি, রড, সুরকি, হাতবোমা বানানোর প্যাকেটভর্তি মালমশলা সব ধরে ধরে ছুড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে বাইরে। এসব দিয়ে হবে যুদ্ধ! ৩২ নম্বর বাড়িতে গিয়ে শেখকে জিগ্যেস করা দরকার, তিনি এভাবে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে কতোদিনে দেশটা স্বাধীন করবেন। নাকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খোয়াব ত্যাগ করতে পারছেন না এখনো, এতো কিছুর পরও? তিনি জনগণকে বলছেন, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো, আন্দোলন অব্যাহত রাখো। আর নিজে প্রেসিডেন্ট ভবনে বসে ইয়াহিয়া-ভুট্টোর সাথে মাছ-কেনার মতো দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন!’ যুদ্ধের বর্ণনা, পাক-বাহিনীর ক্যাম্পে বাঙালি 888sport promo codeদের অমানুষিক নির্যাতন ও অপমানের করুণ বিবরণ, বীরাঙ্গনাদের টিকে থাকার মরিয়া চেষ্টার বিবরণও রয়েছে ঢের। সেখানেই থেমে থাকেনি, যুদ্ধের পরের বছরগুলো, বঙ্গবন্ধুর পুত্রের বিয়ে, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেলহত্যা, ৭ নভেম্বরের ক্যু-পালটা ক্যু, বিরানব্বইয়ের গণআদালত, এমনকী টানবাজার পতিতাপল্লী উচ্ছেদ, মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবির সম্মাননা ইত্যাদি নানা ঘটনার বিবরণও রয়েছে এ-888sport alternative linkে। 888sport alternative linkের কাহিনীকাল মোটামুটি ২৮ বছর। ঘটনা আগুপিছু করে কাহিনীর সরলরেখাকে ভেঙেচুরে এমন এক আখ্যান নতুন করে গড়ে তোলা হয়েছে, যা পাঠকের   মনকে আলোড়িত করে,     ভাবায়, অনেক জিজ্ঞাসার জন্ম দেয়।

তালাশ-এর আখ্যানশৈলী আধুনিক, নিরীক্ষাপ্রবণ। কাহিনী-বর্ণনার প্রচলিত সরলরৈখিক ঢঙ যে শাহীন আখতারের স্বভাবে নেই তার স্বাক্ষর আগেই তাঁর গল্পগুলোতে পাওয়া গেছে। এই 888sport alternative linkে তিনি তাঁর নিজস্ব ভাঙচুরের টেকনিক আরো দক্ষভাবে ব্যবহার করেছেন এবং স্থান-কালের নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে রেখে কাহিনীকে এলোমেলো করে দিয়েও পরিশেষে একটা পূর্ণাঙ্গতা সৃষ্টি করতে পেরেছেন। 888sport alternative linkটি শেষ পর্যন্ত পড়ার পর একটা পরিপূর্ণ ছবি পাওয়া যায়, তার আগে পর্যন্ত খাপছাড়া লাগে। আবার তার ফলে কৌতূহলও বেড়ে যায়, ওই খাপছাড়ার একটা পরিণতির প্রত্যাশায় পাতার পর পাতা পড়ে যেতে হয়। কাহিনীর কথক একজন ঈশ্বরতুল্য বর্ণনাকারী নয়, বরং অনেকগুলো কণ্ঠে খণ্ডখণ্ডভাবে বিভিন্ন আখ্যানভাগ বর্ণিত হয়েছে। সূক্ষ¥ ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ-শ্লেষ লেখকের শক্তিশালী অস্ত্র। কৌশলের একটা বিশেষ অভিনবত্ব মুক্তি নামে এক ২৮ বছর বয়েসী তরুণী সমাজকর্মীর চরিত্র, যে স্বাধীনতার ২৮ বছর পরে পঞ্চাশোর্ধ্ব বীরাঙ্গনা মরিয়ম ওরফে মেরীকে আবিষ্কার করে, মূলত তারই বরাতে কাহিনীটি জানা যায়।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এমন নিরাবেগ, এতটা নির্মোহ 888sport alternative link বুঝি আর একটিও লেখা হয়নি। বাঙালির মহত্তম অর্জন যে স্বাধীনতা, তার জন্য প্রাণপণ লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে মানুষগুলো পরস্পরের সঙ্গে কেমন আচরণ করে সেটাই গভীর মনোযোগে লক্ষ করেছেন লেখক। মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কে সাধারণভাবে যে-আবেগ কাজ করে, যে, এ এক মহান ঘটনা, যখন বিশ্বাসঘাতক ছাড়া প্রতিটি বাঙালি মহৎ সংগ্রামী হয়ে উঠেছিল, ত্যাগী হয়েছিল, স্বাধীনতার জন্য প্রাণবাজি রেখে যারা যুদ্ধ করতে গেছে, তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের সমাদর-সমর্থনের সীমা ছিল না, এই 888sport alternative link এই সাধারণ-ধারণা সম্পর্কে সন্দেহ জাগায়। এখানে গৃহস্থের দ্বার গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অবারিত নয়, আর পরিস্থিতির বিচারে, বর্ণনার সততায় যুদ্ধকবলিত সাধারণ মানুষের শঙ্কা, উদ্বেগ, ভীরুতাসহ যাবতীয় হীনতাকে অনভিপ্রেত মনে হলেও অবিশ্বাসযোগ্য ঠেকে না। এই 888sport alternative linkে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে, কিন্তু একজন বীরেরও দেখা মেলে না। বরং লেখক এমন ঘটনাও বাছাই করেন যা পড়ে হতাশ লাগে: ‘সেই রাতে বর্ডার পেরিয়ে মন্টুদের দল রাজাকার ধরার অভিযান চালায়। রাজাকারকে বাড়ি না-পেয়ে তারা তার টাট্টু ঘোড়াটা ধরে নিয়ে আসে ক্যাম্পে। এর পিঠে চড়ে লোকটা ধানের মৌসুমে ভিক্ষা করতে বেরুত। ফেরার সময় তারা পাঁচটা গ্রেনেডের চারটাই ভিক্ষুকের খালি উঠোনে দমাদ্দম ছুড়ে দৌড়াতে শুরু করে, যার ভেতর একটাই শুধু বিকট শব্দে ফেটেছিল। তারা ছুটছে, সঙ্গে ঘোড়াটাও। দেশের মাটিতে ক্ষণকাল তিষ্টানোর সাহসও তাদের নেই। তাড়াহুড়োয় গ্রেনেডের  পিন খুলতেও ভুলে গিয়েছিল।

ভারতের সীমানায় ঢুকে তবে তারা দৌড়ানো থামায় এবং ভাবে, তারা চোর, ঘোড়া চোর। আর চোরের মতোই হলো তাদের জীবনের প্রথম অপারেশন’ (পৃষ্ঠা ৭০)। বীরের সন্ধান করেননি লেখক, হয়ত-বা এ-কারণে যে মুক্তিযুদ্ধাশ্রিত গল্প-888sport alternative linkে ইতোমধ্যে তাদের দেখা মিলেছে প্রচুর 888sport free betয়। শাহীন আখতার বরং মুক্তিযোদ্ধাদের সাধারণ মানুষ বলেই মনে করেন, যাদের মধ্যেও মানবিক দুর্বলতাগুলো ছিল। ‘সমস্যা হলো, অপারেশনের রাতে বেশির ভাগ সময় টার্গেট বাড়ি থাকে না। কী করে যেন আগেভাগে খবর পেয়ে পালিয়ে যায়। তবে মন্টুরা সেসব বাড়ি থেকে খালি হাতে কদাচ ফেরে না। গরুটা, ছাগলটা – যা তাদের ক্যাম্পের একঘেঁয়ে খাবার খেতে খেতে পচে-যাওয়া মুখের রুচি ফেরাবে, সেসব গোয়াল থেকে বের করে আনে। সেই সাথে সংসারের টুকিটাকি জিনিস দিয়ে উঠোনে বসে বোঁচকা বানায়। যুদ্ধের ময়দানে এসব জিনিস কী কাজে দেবে জানে না, তবে লোভে পড়ে অথবা দালালদের শায়েস্তা করার জন্যই হয়ত মালসামান তারা লুট      করে। কিংবা একেবারে খালি হাতে ফেরার মধ্যে পরাজয়ে যে-গ্লানি থাকে, লুটপাটের ভেতর     তা ধামাচাপা পড়ে যায়’       (পৃষ্ঠা ৭২)।

মুক্তিযুদ্ধের পুরো ব্যাপারটি সম্পর্কে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি তীক্ষ্মভাবে বিচারী। মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতি এখনো জ্যান্ত, এখন তালাশ পড়তে পড়তে সাধারণ পাঠক ধন্দে পড়ে ভাবতে পারেন: এটা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের বই না-তো? কারণ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাঠকেরা যেসব গল্প-888sport alternative link পড়ে অভ্যস্ত, সেগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য উদ্বুদ্ধকারী 888sport live footballের। বিচারী-বাস্তববাদের দৃষ্টিকোণ থেকে মুক্তিযুদ্ধকে দেখা হয়নি। শাহীন আখতার তাই করেছেন। তাঁর দৃষ্টি খুব বিচারী। যেমন রাজনৈতিক দিকে, তেমনি মানুষে মানুষে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও। আবেগের জায়গা নেই বললেই চলে।

তবে এই সমস্ত কিছুই আনুষঙ্গিক। তালাশ-এ মুক্তিযুদ্ধ শাহীন আখতারের লক্ষ্য নয়, উপলক্ষ বিশেষ। যুদ্ধ ছাড়াও মরিয়মের জীবন এমন হতে পারত। ‘শুধু যুদ্ধ বলে নয়, যুদ্ধহীন শান্তির সময়েও 888sport promo codeর জীবনকে যদি ভাবা হয় চার চাকার গাড়ি, তবে দেহ তার সারথি। নিয়মের বাঁধানো সড়ক থেকে দেহ একচুল সরে গেলে আস্ত দেহটাই গর্তে, আবর্জনায় মুখ থুবড়ে পড়ে। জীবনের পতন ঘটে। 888sport promo code পতিত হয়’ (পৃষ্ঠা ৭)। মরিয়ম ও অন্য বীরাঙ্গনারা পতিত হয়েছে। তাদের তুলবার কোনো চেষ্টা করেনি কেউ – না রাষ্ট্র, না সমাজ। 888sport alternative linkের  বিস্তৃত কাহিনীজুড়ে দেখা যাবে, মরিয়ম ও 888sport app বীরাঙ্গনার দুঃখ আর অপমান-মোচনের কোনো রাস্তাই যেন আর খোলা নেই। তারা বীরাঙ্গনা, পাকিস্তানি মিলিটারি তাদের ইজ্জত লুটেছে। যুদ্ধের পরে স্বাধীন 888sport appsে স্বজাতির পুরুষের কাছে তারা যে-অমানুষিক আচরণের শিকার হয়েছে তা পাকিস্তানি সৈন্যদের নিষ্ঠুরতার চেয়ে কম কিছু নয়। ‘রমিজ শেখের মৃত্যুতে মরিয়ম শোকগ্রস্ত হয়েছিল যুদ্ধের বহু বছর পর, যখন সে বুঝতে পারে, তার শত্রু-লাঞ্ছিত দেহটা

স্বাধীন 888sport appsের পুরুষেরাও একইভাবে ব্যবহার করবে, কোনোদিন তাকে আপন করে ভাববে না’ (পৃষ্ঠা ৬৩)। যুদ্ধের পরে পাকিস্তানিরা চলে যায়, কিন্তু এই 888sport promo codeরা আর হারানো মান-মর্যাদা ফিরে পায় না। বঙ্গবন্ধু বীরাঙ্গনা-অফিসে গিয়ে বলেন, ‘তোরা আমার মা। তোরা বীরাঙ্গনা।’ কিন্তু বীরাঙ্গনাদের আপন বাপ-মা, স্বজনদের কাছে তারা লজ্জাজনক বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। বীরাঙ্গনা-অফিসে বাবা এসে বলে যায়, ‘মা, পরে এসে নিয়ে যাব। আর দুইডা দিন অপেক্ষা কর।’ কিন্তু এ-কথা বলে সেই যে চলে যায় বাবা, আর নিতে আসে না।

888sport promo codeজীবনের ব্যাপারে শাহীন আখতারের ভাবনা প্রায় একটা দর্শনের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। তালাশ-এর কাহিনীতে মুক্তি নামে যে-সমাজকর্মীর চরিত্র আছে, তার মারফতে লেখকের অনেক ভাবনাচিন্তা পরিষ্কারভাবে ধরা যায় । যেমন, ‘মুক্তির মনে হয়, এক্ষেত্রে মরিয়ম প্রকারান্তরে মেরীর একটি উদাহরণ মাত্র। তার দুর্ভাগ্যের কারণ হয়ত 888sport promo codeর প্রজনন অঙ্গটি, যা বংশরক্ষার সূচিমুখ – তার পবিত্রতা। যা শুধু একজন পুরুষের ব্যবহারের জন্য এবং বৈধভাবে। সেটি অরক্ষণীয় হয় যুদ্ধের বছর। শত্রুর পুরুষাঙ্গ তাতে ঢুকে পড়ে। বীর্য ডিম্বাশয়ে চলে যায়। ভ্রƒণগুলো দ্রুত বাড়তে শুরু করে। বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করেও 888sport promo codeদেহের পবিত্রতা পুনরুদ্ধার হয়নি’ (পৃষ্টা ৪৭)। এটাই আসলে 888sport promo codeজীবন সম্পর্কে শাহীন আখতারের মোদ্দাকথা বা দর্শন।

বলা কঠিন, এই দর্শন মনের মধ্যে নিয়ে, তাকে সত্য প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যেই শাহীন আখতার তালাশ-এর আখ্যান সাজিয়েছেন কি-না! তবে এই জিজ্ঞাসা মনে জাগে। সত্যিই কি জীবন এত নির্মম? এমন নিষ্করুণ? মরিয়ম বা অন্য কোনো চরিত্রের জীবনে এমন কোনো ঘটনার কথা তালাশ-এ নেই, যা থেকে মানুষের মানবিক গুণের পরিচয় পাওয়া যায়। মানুষের সদগুণের ব্যাপারে বড্ড সংশয় রয়েছে শাহীন আখতারের। লেখক তো ঘটনা বাছাই করেন, তার মধ্যে বাস করেন একজন সম্পাদক, যাঁর হাতে সম্পাদিত জীবনের রূপটিই লেখক হাজির করেন। শাহীন আখতারের ভেতরের সেই সম্পাদকের কাজ হয়ত একটা দর্শনের প্রভাবে এমন হয়েছে। জীবনের নির্মম দিকটাই হয়ে উঠেছে বড়। তালাশ একটা ট্র্যাজেডি, এমন বিষাদময়,  নিষ্করুণ 888sport alternative link পড়ার অভিজ্ঞতা আমার ক্ষেত্রে বিরল। মরিয়ম ও অন্য বীরাঙ্গনাদের এ-কাহিনী চূড়ান্ত এক অসহায়বোধের       জন্ম দেয়, এক ক্ষমাহীন অপ্রতিকার্য পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে নির্বাক করে দেয়। কথা888sport live chatী হিসেবে শাহীন আখতারের সার্থকতা বোধ করি এখানেই। তালাশ-এর নিষ্ঠুর, নিষ্করুণ জীবন-বাস্তবে সম্ভবপর বলে মনে হয়। বইটির ফ্ল্যাপে লেখা হয়েছে ‘888sport alternative linkকে সত্যকথনের দায় থেকে মুক্তি দেওয়া আশু জরুরি’। এ-কথার মানে হয়ত এই যে, 888sport alternative linkের লক্ষ্য ইতিহাসের বাস্তব নয়, 888sport live footballের বাস্তব। কিন্তু তালাশ আগাগোড়াই সত্যকথন করে গেছে।