নিউইয়র্ক থেকে রাজনীতির 888sport live chat, 888sport live chatের রাজনীতি

প্রিয় সম্পাদক, পই পই করে বারণ করেছেন, আর যা-ই হোক রাজনীতি নিয়ে যেন না লিখি। কারণটি আমার কাছে ঠিক স্পষ্ট নয়, এ-ব্যাপারে সম্ভবত আপনার পত্রিকার কোনো লিখিত-অলিখিত নিয়ম থেকে থাকবে। সমস্যা হলো, এদেশে এখন রাজনীতি ছাড়া অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক বিষয়ই নেই। কোনো আড্ডা নেই, তা লেখকদেরই হোক বা বেহেড মাতালদের, যেখানে রাজনীতি ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কথা হয়। ভালো কোনো বই নেই, যার বিষয় রাজনীতি নয়। live chat 888sport – সেখানে রাজনীতি তো আরো বেশি। নতুন যতগুলো নাটক মঞ্চে উঠছে, তার প্রায় প্রত্যেকটিই কোনো-না-কোনোভাবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। আরিস্তোফানেসের ফ্রগস এখন ব্রডওয়ের মঞ্চ কাঁপাচ্ছে। এর চেয়ে বড় রাজনৈতিক নাটক কবে কে লিখেছে? প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো হলে কী হবে, এ-নাটকের রাজনীতি এখনো আমাদের সময়ের জন্যে ভীষণ রকম প্রাসঙ্গিক।

এখন আপনিই বলুন, এই আমেরিকা থেকে চিঠি লিখব, আর তাতে রাজনীতি থাকবে না, সেটি বড় বাস্তববিবর্জিত হয়ে যাবে না?

ভাবছেন বাড়িয়ে বলছি? এ-সপ্তাহের নিউইয়র্ক টাইমসের ‘বুক রিভিউ’ 888sport free bet দেখুন। প্রচ্ছদে চারটি বইয়ের কথা বলা হয়েছে, তার তিনটি শুদ্ধ রাজনীতি নিয়ে, বিষয় – ঘুরে-ফিরে বুশ, আমেরিকা এবং ইরাক। চতুর্থটি রাজনৈতিক ইতিহাস নিয়ে। বেস্ট সেলারের যে-তালিকা পত্রিকা দিয়েছে, তার মধ্যে সাতটিই রাজনৈতিক। সে-তালিকায় গত তিন সপ্তাহ থেকে এক নম্বরে রয়েছে বিল ক্লিনটনের 888sport sign up bonusকথা মাই লাইফ (নফ পাবলিশার্স)। তালিকার একদম শেষে রয়েছে – এই সপ্তাহেই প্রথম – আমার প্রিয় রাজনৈতিক ভাষ্যকার মলি ইভিনসের হু লেট দি ডগস ইন (র‌্যান্ডম হাউজ)। আর মাঝামাঝি স্থানে রয়েছে হার্ডি ও জ্যাসন ক্লার্কের বই মাইকেল মুর ইজ এ বিগ ফ্যাট স্টুপিড লায়ার (রেগান বুকস/হার্পার কলিসন)। মজার ব্যাপার হলো, টাইমসেরই সেরা পেপারব্যাক তালিকায় এ-সপ্তাহে রয়েছে মুরের দুটি ফাটাফাটি বই : স্টুপিড হোয়াইট ম্যান (রেগান বুকস/হার্পার কলিন্স) ও ডুড, হোয়ার ইজ মাই কান্ট্রি (ওয়ার্নার)। হিলারি ক্লিনটনের আত্মজৈবনিক লিভিং হিস্ট্রিও সে-তালিকায় রয়েছে গত ১৩ সপ্তাহ ধরে। এখন দেখছেন তো, রাজনীতি ছাড়া আমেরিকার মানুষ এখন অন্য কোনো বিষয়ের বই-ই পড়ছে না।

live chat 888sportের কথা বলব? সেখানে এতদিন পর্যন্ত যত চিৎকার – পক্ষে ও বিপক্ষে – হচ্ছিল মাইকেল মুরের চারদিক কাঁপানো ডকুমেন্টারি ফারেনহাইট ৯/১১ নিয়ে। বুশ সাহেবের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে এই ছবি। কান উৎসবে সেরা ছবির পদক পেয়েছে। সেখানে শুনেছি দর্শকরা পাক্কা বিশ মিনিট উঠে দাঁড়িয়ে মুরকে সহর্ষ অভিবাদন জানায়। তো, এই ছবি নিয়ে আমেরিকার মানুষ যত না কাঁপছে, তার চেয়ে বেশি কাঁপছে হোয়াইট হাউজ। সৌদিদের সঙ্গে বুশ-পরিবারের দহরম-মহরমের যে-হিসাব এতে দেওয়া হয়েছে, ইরাক-যুদ্ধের পেছনে তেলের রাজনীতির কী প্রভাব এবং, কেউ বলে না দিলে নিজ-থেকে কুটোটি সরাতেও এই প্রেসিডেন্ট যে পারে না, তার যেসব মোক্ষম প্রমাণ এতে রয়েছে, তাতে দো-মনা মার্কিন ভোটারদের একাংশ বেঁকে বসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেকে অবশ্য বলেছেন, এই ছবিকে ডকুমেন্টারি বলা হলেও এটি রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা, কারণ এখানে মুর তথ্যের নির্বাচিত ব্যবহার করেছেন। কথাটি একদম মিথ্যে নয়, কিন্তু মুর তাঁর ছবি নির্মাণই করেছেন একটি রাজনৈতিক স্টেটমেন্ট হিসেবে, শুধু এন্টারটেইনমেন্ট হিসেবে নয়। তিনি নিজেও বলেছেন, আর কিছু না হোক, কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তিনি তুলেছেন এই ছবিতে। প্রশ্ন তোলা, প্রশ্ন করা, নাগরিক দায়িত্বেরই অন্তর্গত। 888sport live chatীর একটি প্রধান পরিচয় সে নাগরিক। ফলে চিত্র-পরিচালক মুর এই ছবিতে তাঁর সে-নাগরিক দায়িত্বই পালন করেছেন মাত্র। অন্ততপক্ষে আমি তো সেই চোখেই ছবিটি দেখেছি। এ-পর্যন্ত সোয়া কোটি লোক এই ছবিটি দেখেছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক হিসাবে দেখছি, সিনেমা হলে ও ঘরে ভিডিওতে যারা এই ছবি নভেম্বরের নির্বাচনের আগে দেখে নেবে তারা মোট ভোটদাতার কম করে হলেও ৩০ শতাংশ। এদের সবাই-ই যে বুশ অ্যান্ড কোং-এর বিরুদ্ধে ভোট দেবে তা নয়, কিন্তু বুশও নয়-কেরিও নয়, এমন যারা রয়েছে, তাদের অল্পস্বল্প লোকও যদি এই ছবি দেখে প্রভাবিত হয়ে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে রিপাবলিকানদের খবর আছে। সে-কথা বুঝতে পেরে ডেমোক্র্যাটরাও এই ছবি এখন বিনে পয়সায় দেখিয়ে বেড়াচ্ছে। হোয়াইট হাউজের কাঁপাকাঁপিটা সে-কারণেই।

এই এক ছবি থেকে আমেরিকার চলতি সাংস্কৃতিক মানচিত্র যতটা না ধরা পড়ে এই সময়ের অন্য কিছুতে ততোটা নয়। গত সপ্তাহের কথাই ধরুন। লাস ভেগাসের এক পানশালায় গান গাইতে মঞ্চে উঠেছিলেন লিন্ডা রনস্টাড। কান্ট্রি-রক জাতীয় গানের জন্যে একসময়ে তিনি বেজায় নাম করেছিলেন। আমরা অবশ্য তাঁকে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাক্তন গভর্নর জেরি ব্রাউনের খণ্ডকালীন প্রেমিকা বলেই বেশি চিনি। সে যা হোক, মঞ্চে উঠে কোনো কারণ ছাড়াই লিন্ডা হঠাৎ বলে উঠলেন, মাইকেল মুর হচ্ছে একজন যথার্থ মার্কিন প্যাট্রিয়ট। সঙ্গে সঙ্গে হলের অর্ধেক দর্শকের বেজায় তালি। কিন্তু বাকি অর্ধেক ‘দুয়ো দুয়ো’ করে মহা হইচই বাধিয়ে বসল। অবস্থা শেষ পর্যন্ত এমন দাঁড়াল যে, পানশালা-কর্তৃপক্ষ লিন্ডাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দিতে বাধ্য হলো।

এ-ঘটনা থেকে আমার অস্কার ওয়াইল্ড (ঙংপধৎ ডরষফব) নিয়ে সেই পুরনো গল্পটি মনে পড়ল। আমেরিকায় এসে তাঁর প্রথম ভাষণেই তিনি এদেশের লোকজন ‘ফিফটি পার্সেন্ট’ আস্ত গবেট বলে ঘোষণা করে বসলেন। তাঁর সে-কথা শুনে হলভর্তি মানুষ ক্ষেপে আগুন। তখন ওয়াইল্ড বললেন, ‘তবে বাকি ফিফটি পার্সেন্ট খুবই বুদ্ধিমান’। ব্যস, হল কাঁপিয়ে হাততালি। আমেরিকার এই ফিফটি-ফিফটি বিভক্তি আজকের জন্যে একদম সত্যি। রাজনীতি ও রাজনীতির অর্থনীতিতে বিভক্ত এই দেশের সব মানুষকে এক বাক্সে ঢুকিয়ে তার মাঝ বরাবর একটি দেয়াল তুলে দেন। দেখবেন সব ঠান্ডা। ব্যাপারটি এতটাই বাস্তবসম্মত যে, স্টানলি গ্রিনবার্গ আমেরিকার মানুষকে সমান দুটিভাগে ভাগ করে দি টু আমেরিকাস – এই নামে একটি বই-ই লিখে ফেলেছেন (টমাস ডান বুকস, ২০০৪)। কিন্তু সে-কথা পরে আসছি, আগে live chat 888sportে ফিরে আসি।

মুরের ছবি এখনো হল থেকে নামেনি, তার আগেই আরেক ‘রাজনৈতিক ছবি’ এসে হাজির। নাম মানচুরিয়ান ক্যান্ডিডেট। শুক্রবার, অর্থাৎ ডেমোক্রাটদের নির্বাচনী কনভেনশন বস্টনে যেদিন শেষ হবে তার পরদিন থেকে প্রদর্শনীর শুরু এই ছবির। এর কাহিনী গড়ে উঠেছে মানচুরিয়ান গ্লোবাল নামের এক বিশাল মালটিন্যাশনাল কোম্পানির বশংবদ এক প্রেসিডেন্ট ও ভাইস-প্রেসিডেন্টকে নিয়ে। সে-কোম্পানিই পয়সা-কড়ি জুটিয়ে তাদের হোয়াইট হাউজে বসিয়েছে। এক প্রাইভেট কোম্পানির প্রাইভেট মালিকানাধীন প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার    সেনাবাহিনীকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে বিশ্বজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম তাদের আদত লক্ষ্য। সে-কোম্পানির পেছনে কলকাঠি নাড়ায় সৌদি তেলব্যবসায়ীরা। লক্ষ্য আরো মুনাফা। কোথাও বুশ-চেনির নাম এতে বলা হচ্ছে না, কিন্তু এই প্রেসিডেন্ট-ভাইস প্রেসিডেন্টের নামের জায়গায় তাদের নাম বসিয়ে দিলে খুব আপত্তির কিছু থাকবে না। ডিক চেনির পুরনো কোম্পানি হ্যালিবার্টনের নাম নেই, কিন্তু মানচুরিয়ান গ্লোবাল যে অন্য আর কিছু নয়, তা-ও বোঝা দুষ্কর নয়। ছবিটি মাত্র বাজারে এসেছে, কিন্তু এরই মধ্যে মহা তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। টাইমসের ভাষ্যকার ফ্রাঙ্ক রিচ লিখেছেন, ফারেনহাইট ৯/১১-এর চেয়েও ক্ষতিকর হতে পারে এই ছবি। মুরের ছবিকে বামপন্থিদের বাঁদরামো বলে কেউ কেউ নাকচ করে দিতে পারে, কিন্তু মানচুরিয়ান ক্যান্ডিডেট বানিয়েছে একদম মেইনস্ট্রিম হলিউড। তাকে বাঁদরামো বলে কার সাধ্যি! এর প্রধান দুই চরিত্রে রয়েছেন দুই অস্কার-বিজয়ী অভিনেতা মেরিল স্ট্রিপ এবং ডেনজেল ওয়াশিংটন। বুশ-চেনি ভীতিকে পুঁজি করে নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে চেয়েছিলেন, এখন সেই ভীতিকেই দেড়া ডোজে বাজারে ছাড়ছে প্যারামাউন্ট পিকচার্স। শুক্রবার একসঙ্গে ২,৮০০ সিনেমা হলে ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। এই ছবির রাজনৈতিক বক্তব্য মালটিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো চাইলে দেশের প্রেসিডেন্টকেও কিনে নিতে পারে। সে-কথা যদি মানুষের মাথায় খানিকটাও ঢোকে, তাহলে রিপাবলিকানদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা

দিতে পারে।

আচ্ছা, ফিল্ম বাদ দিই, নাটকের কথা বলি।

আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে নিউইয়র্কে শুরু হচ্ছে এই শহরের সাংবাৎসরিক ফ্রিঞ্জ থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল। বছরের সবচেয়ে এক্সপেরিমেন্টাল নাটক দেখার এই হলো সেরা সুযোগ। এবারের তালিকায় যে-নাটকগুলো আছে, তার দু-চারটি বাদ দিলে বাকি সবগুলোই কঠিন রাজনৈতিক। জর্জ বুশের রাজনৈতিক ‘ভিশন’ নিয়ে আসছে ম্যুজিক্যাল কমেডি দি ভিশন থিং। আসছে ২০০০ সালে ফ্লোরিডায় কী কাণ্ড করে বুশ নির্বাচনে জিতলেন তাঁর ওয়ান-ম্যান শো হ্যাঙ্গিং চ্যাড। দক্ষিণ ভারতীয় লেখক সাম ইউনিসের ব্রাউনটাউনে দেখানো হবে মুসলমান হলে এদেশে এখন কী বিপদ হতে পারে তাঁর ট্র্যাজি-কমেডি। ওল্ড টেস্টামেন্টের গল্পের আধুনিক সংস্করণে বুশ ও বিন লাদেনকে প্রধান চরিত্র বানিয়ে ইহুদি পরিচালক ড্যানি আশকেনাজি-র দি বুক অব জব হলো আরেকটি ম্যুজিক্যাল কমেডি। তালিকা আরো বাড়ানো যায়, কিন্তু ব্যাপারটি বোঝার জন্যে এ-ই কাফি।

রাজনীতি ও 888sport live chat যে আসলে একে অপরের প্রতিবিম্ব, সে-কথার প্রমাণ অন্য যে-কোনো সময়ের চেয়ে আজকের আমেরিকায় বেশি মেলে। সত্য কথাটি হলো, আজ আমেরিকার মানুষ তাদের দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই উদ্বেগের মূলে রয়েছে রাজনীতি। কে রাজনীতির নৌকা নিয়ন্ত্রণ করবে তার ওপর নির্ভর করছে 888sport live chat, 888sport live football, শিক্ষার ভবিষ্যৎ। শুধু আমেরিকা কেন, প্রকৃতপক্ষে আগামী তিনমাসের মধ্যে সারা পৃথিবীর আসন্ন ভবিষ্যতেরই একটি মানচিত্র নির্মিত হবে এই আমেরিকায়। এই রকম একটি জটিল সংকটের মুহূর্তের ভেতর বাস করছে এদেশের মানুষ, আর তার প্রভাব দেশের 888sport live chat-সংগীত বা 888sport live footballের ওপর পড়বে না তা একদমই অসম্ভব। ভবিষ্যতের সেই মানচিত্রটি যাতে তাদের পছন্দসই হয়, সেই পৃথিবীটি যেন তাদের বিবেচনায় বসবাসযোগ্য হয়, সে-চেষ্টায় এখন বলতে গেলে সবাই হাত লাগিয়েছেন। বসে নেই কেউ। নিরাসক্ত নয় কেউ, এমনকি নামী-দামি লেখকরাও। ‘পেন’ – আমেরিকার লেখকদের প্রধান সংগঠন, ঠিক সে-কথাটি বুঝিয়ে বলতে আগামী মাসে (৪ আগস্ট) ‘দি স্টেট অব ইমারজেনসি’ – এই নাম দিয়ে একটি বিশেষ পাঠচক্রের আয়োজন করেছে। তাতে কে কে লেখা পড়তে আসবেন শুনবেন? রাসেল ব্যাঙ্কস, সালমান রুশদি, এরিয়েল ডরফম্যান, কুর্ট ভনেগুট, জোয়ান ডিডিওন, পল আস্টার ও আরো অনেকে। বিনে পয়সায় তাঁরা এই পাঠচক্রে অংশ নেবেন। পরিস্থিতি কতটা জটিল ও সংকটপূর্ণ বলে তাঁরা বিবেচনা করছেন, এ-থেকেই তা বোঝা যায়। মাইকেল মুরও সম্ভবত সে-অনুষ্ঠানে আসবেন। 888sport live chatকে রাজনৈতিক প্রয়োজনে তার চেয়ে সফলভাবে আর কে ব্যবহার করেছেন এই দেশে? 888sport live chatের – এবং রাজনীতির – যে-মাঙ্গলিক নৈকট্য রয়েছে, মুরের live chat 888sportে – এবং কথা888sport live footballে – আমি তার স্পষ্ট ছাপ দেখি। মানি, সীমার কোন ধারে তার অবস্থান, সে-কথা জানাতে কোনো রাখ-ঢাক তাঁর নেই। অশুভের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কোনো 888sport live chatের আড়ালেরও প্রয়োজন পড়ে না। হতে পারে তেমন কাজকে কেউ কেউ অ888sport live chat বলবে। কিন্তু সে-মূল্যায়নের সঙ্গে আমি একমত হবো না। 888sport live chat তো আয়না নয় যে তাতে কেবল বাস্তবের ছবি দেখব। 888sport live chat হচ্ছে একটি হাতুড়ি, বাস্তবকে যা ইচ্ছেমতো দুমড়ে-মুচড়ে নতুন করে সাজায়। কথাটি ব্রেখটের, তাঁর মৃত্যুর অর্ধ শতাব্দী পরেও যার অর্থ সম্পূর্ণ প্রাসঙ্গিক। মাইকেল মুরের রাজনৈতিক ডকুমেন্টারিটি – তা যদি রাজনীতি ও 888sport live chatের মধ্যে স্বীকৃত ভেদরেখা না মেনেও থাকে – ঠিক সে-কারণেই আমার চোখে একটি অসম্ভব শক্তিশালী 888sport live chatনির্মাণ বলে মনে হয়েছে।

ফলে, প্রিয় সম্পাদক, আপনি চান বা না চান, রাজনীতি নিয়ে আমাকে কথা বলতেই হবে। কারণ, এখন রাজনীতিই 888sport live chat, 888sport live chatই রাজনীতি।

গোড়াতেই বলেছি, এ-সময়ে আমেরিকায় এক নম্বর বই হলো বিল ক্লিনটনের আত্মজীবনী মাই লাইফ। সেটিও রাজনৈতিক বই। বিশ শতকে – এবং 888sport cricket BPL rate শতকের এই প্রথম পাদে – যে-কজন মানুষের জীবন, তাঁদের ভালো ও মন্দ, তাঁদের সাহস ও নষ্টামি, তাদের বাইরের দিক ও ভেতরের দিক, সবকিছু নিয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে, ক্লিনটন তাঁদের একজন। তাঁর পাবলিক পারসোনা বিবেচনা করলে ক্লিনটনের প্রতি এই অসম্ভব আকর্ষণ একমাত্র জন এফ কেনেডির সঙ্গেই তুলনা চলে। কিন্তু কেন? কুর্ট নিমো এক ব্যাখ্যায় বলেছেন, ক্রিমিনালদের প্রতি সাধারণ মানুষের আকর্ষণ চিরকালই প্রবল। যেমন, মাফিয়া বস আল-কাপোনকে নিয়ে আমাদের জল্পনা-কল্পনার এখনো শেষ নেই। ক্লিনটনও সে-রকম একজন ক্রিমিনাল ছাড়া আর কিছু নন। নিমোর এই ব্যাখ্যা কেবল যে অতি সরল শুধু

তাই নয়, যাঁরা এখনো তাঁর প্রতিটি কথা গিলে খান, এতে তাঁদের সবার বুদ্ধি, মেধা ও নৈতিক সংগতি নিয়েও সন্দেহ করা হয়। অন্যদিকে জেইন হাল লিখেছেন, ক্লিনটন আসলে মিডিয়ার বানানো একটি প্রোডাক্ট। তাঁর মতো এমন ‘এন্টারটেইনিং’ ব্যক্তিত্ব আর কটা আছে। তাঁকে নিয়ে আগ্রহ সে-কারণেই। এ-কথাও, আমার মনে হয়, বড়জোর সত্যের একাংশ, সম্পূর্ণ সত্য নয়। পুরো ব্যাপারটি বোধহয় আরেকটু জটিল এবং বহুরৈখিক।

আমার বিবেচনায়, ক্লিনটনের প্রতি আমাদের আগ্রহ বা অনুরাগের একটি প্রধান কারণ, তিনি আমাদের মতোই ভালো ও মন্দেভরা একজন মানুষ। আমি তাঁর রাজনীতি বা বিদেশনীতির কথা বলছি না, বলছি মানুষ হিসেবে তাঁর সীমাবদ্ধতার কথা। পৃথিবীর সব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মূল্যায়নেই নীতি-টিতি ছাপিয়ে আমাদের মনে আশ্রয় করে নেয় সে-মানুষটির ব্যক্তিত্ব, তার পারসোনা। ক্লিনটনের পারসোনা আমাদের আকৃষ্ট করে নানা কারণে। সাথে সাথে এ-ও তো ঠিক

যে, রাজনৈতিক অর্থেও ক্লিনটন সফল। দক্ষিণপন্থি রিপাবলিকানরা তাঁকে হাতের কাছে পেলে টুটি চেপে ধরে, কিন্তু বাকি সবাই তাঁকে বাহবা দেয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর সফলতা সে-বাহবার অন্যতম কারণ। আর্থিক প্রশ্নে রিপাবলিকানদের সঙ্গে তাঁর কোনো মৌল প্রভেদ না থাকলেও সামাজিক প্রশ্নে তাঁর উদারনৈতিক অবস্থান আমেরিকা ও এর বাইরে তাঁকে জনপ্রিয়তা দিয়েছে। তাঁর প্রখর বুদ্ধিমত্তা ও বাগ্মিতা তাঁর জনপ্রিয়তার আরেক কারণ।

মজার ব্যাপার হলো, শেষ পর্যন্ত আমরা ক্লিনটনের অভ্যন্তরীণ বা বিদেশনীতির কোনো কথাই মনে রাখিনি, মনে রাখিনি স্বাস্থ্যবিমা নিয়ে তাঁর ব্যর্থতার ইতিহাস। তাঁর সকল নীতিমালার সাফল্য-ব্যর্থতা ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত আমাদের মাথায় রয়ে গেছে ওই মনিকা, তার নীল জামা এবং টেলিভিশনের ক্যামেরার দিকে আঙুল তুলে ক্লিনটনের সেই মিথ্যাচার, ‘ও ফরফ হড়ঃ যধাব ংবীঁধষ ৎবষধঃরড়হংযরঢ় রিঃয ঃযধঃ ড়িসধহ, গরংং খবরিহংশু.’ অথচ এতবড় মিথ্যাচার ও লাম্পট্যের পরও ক্লিনটনের দিকে আমরা ঘৃণার চোখে তাকাই না। কেন? হতে পারে এই মিথ্যাচার ক্লিনটনকে আমাদের কাছে একজন ব্যর্থ, অসম্পূর্ণ মানুষ হিসেবে দাঁড় করায়, কিন্তু যেহেতু আমরা নিজেরা সবাই-ই কমবেশি ব্যর্থ ও অসম্পূর্ণ, ক্লিনটনকে বুঝতে তাই আমাদের বিলম্ব হয় না। তাঁর দিকে তাকিয়ে আমরা নিজেদের প্রতিবিম্বই দেখি। মানছি, মেয়েলোক দেখলে এই লোকের মাথা খারাপ হয়ে যায়, কিন্তু তা দেখে কার না মাথা খারাপ হয়? মনে পড়ছে, টাইমস ম্যাগাজিনের একটি কার্টুনের কথা। যৌন কেলেঙ্কারির জন্যে ক্লিনটনের ইম্পিচমেন্ট হবে শুনে এক বুড়ো তার স্ত্রীকে শুনিয়ে বলছে, ‘আহা, এই লোকটার মাথাটা বাদ দিয়ে কোমর থেকে তাঁকে যদি ইম্পিচ করা যেত, তাহলে কী ভালোই না হতো।’

এ-কথা এক সেই বুড়ো-বুড়ির নয়, আরো অনেকেরই।

মাই লাইফ গ্রন্থে দোষে-গুণে ভরা এই ক্লিনটন যতটা ধরা পড়েন, ‘পলিসি ওঙ্ক’ ক্লিনটন ততোটা নয়। এই বইয়ের সাফল্যের সেটি এক কারণ, আবার সেটি এই বইয়ের প্রধান সীমাবদ্ধতাও।

সাড়ে ন-শো পাতার ঢাউস বই। ওজনে সেরখানেক হবে। ক্লিনটন কথা বলতে ভালোবাসেন, এই বইয়েও এমনতর কথা বলেছেন, যার অধিকাংশই আমরা জানি। ভালো সম্পাদকের হাতে পড়লে এই বই আকারে অর্ধেক হয়ে যেত। বাড়িয়ে বলছি না, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রধান পুস্তক-সমালোচক কাকুতানি পত্রিকার প্রথম পাতায় কমবেশি সে-কথাই বলেছিলেন। আমার মনে পড়ে না এর আগে কখনো টাইমসের প্রথম পাতায় কোনো পুস্তক-সমালোচনা পড়েছি কিনা। এত শক্ত ভাষায় এ-বইকে আর কেউ আক্রমণ করেছে বলেও মনে হয় না। এ-থেকে বইটির রাজনৈতিক গুরুত্ব যেমন ধরা পড়ে, তেমনি তার ব্যর্থতাও। কাকুতানির কথায়, বইটি অগোছালো, আত্মপ্রসাদে ভরপুর, আশ্চর্যরকম ক্লান্তিকর। এক অর্থে বইটি ক্লিনটনের নিজের প্রেসিডেন্সিরই এক ধরনের প্রতিবিম্ব : ‘খধপশ ড়ভ ফরংপরঢ়ষরহব ষবধফরহম ঃড় ংয়ঁধহফবৎবফ ড়ঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃরবং; যরময বীঢ়বপঃধঃরড়হং, ঁহফবৎসরহবফ নু ংবষভ-রহফঁষমবহপব ধহফ ংপধঃঃবৎবফ পড়হপবহঃৎধঃরড়হ.’ পুরো বইটিকে একটি ‘হজপজ’ আখ্যা দিয়ে কাকুতানি লিখেছেন, “এখানে-সেখানে বেখাপ্পা মন্তব্য, তার নীতিমালার অসংলগ্ন বিবরণ, তাঁর ব্যক্তিগত অপচয়ের দীর্ঘ ‘কনফেশনাল’ এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর মোহাফেজখানার বিকল্প ভাণ্ডার হিসেবে ব্যবহারের ফলে বইটি তাঁর সম্ভাবনার অসদ্ব্যবহার ছাড়া আর কিছুই নয়।” বলা বাহুল্য, কাকুতানির এই বক্তব্যকেই অনেকে অসংলগ্ন বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা এতই জোরালো হয়ে ওঠে যে, টাইমসকে শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা এক সমালোচনা ছেপে মুখরক্ষা করতে হয়।

গোড়াতে স্বীকার করে নিই, সাড়ে ন-শো পাতার এ-বই পুরোটা আমার পড়া হয়নি, হবে বলে মনেও হয় না। বই ছেপে বের হওয়ার সাত দিন আগে থেকে তা নিয়ে যেভাবে ব্যবচ্ছেদ শুরু হয়, পাতা ধরে ধরে বর্ণনা শোনানো হয় টিভির পর্দায়, খোদ ক্লিনটন আটলান্টিকের দু-পারে দিনরাত সাক্ষাৎকার দিয়ে সে-বইয়ের তাবৎ মুহূর্তের যে-পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেন, তারপর সে-বই তেমন মনোযোগ দিয়ে না পড়লে বোধহয় ক্ষতি নেই। তবে কাকুতানি ক্লিনটনের প্রতি যে মোটেই সুবিচার করেননি, ততটুকু বোঝার মতো পড়া আমার শেষ হয়েছে। বাহুল্য আছে তাতে সন্দেহ নেই। শৈশবে, স্কুলে কোথায় কবে কী পড়েছেন, তাঁর প্রতিটি স্কুল-শিক্ষকের নাম-ধাম, এমনকী হাইস্কুল গ্রাজুয়েশনে তাঁর দেওয়া প্রার্থনা-ভাষণে তিনি কী বলেছেন, তার হুবহু বর্ণনা, এসবের কোনোকিছুরই প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয় না। কিন্তু নিজেকে খোলা বইয়ের মতো মেলে ধরবার জন্যেই ক্লিনটন কলম ধরেছেন। ফলে একদম ব্যক্তিগত ইতিহাস, যা গর্বের নয়, আনন্দেরও নয়, সে-কথাও কোনো রাখঢাক ছাড়া লিখেছেন তিনি। নিজের শৈশব, আরকানসায় তাঁর বেহিসেবি মা ও মাতাল সৎবাবার বিবাদ-বিসংবাদের বিবরণ-সংবলিত অংশটুকু আমার তো খুবই ভালো লেগেছে। নিজের পিতার স্নেহস্পর্শ পাননি ক্লিনটন। শৈশবে যে-সৎপিতাকে পেলেন, তার কাছ থেকেও পিতৃস্নেহ তাঁর জোটেনি। উলটো সে-অত্যাচারী পিতার চড়চাপড় থেকে মাকে বাঁচাতে তাঁকে মাঝখানে এসে দাঁড়াতে হয়েছে, এমনকি পুলিশকে ডেকে হাঙ্গামা করতে হয়েছে। অথচ তারপরেও সে-পিতার প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্র বিরাগ নেই, বরং সর্বত্রই তাঁর প্রতি প্রচ্ছন্ন ভালোবাসা, এমনকি এক ধরনের কৃতজ্ঞতাও চোখে পড়ে। উদাহরণ হিসেবে নিচের এই অংশটুকু পড়া যাক :

‘বাবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ ছিলাম নানা কারণে। একবার পা ভাঙলে, তিনি আমাকে উদ্ধার করে আনেন। দুষ্টুমির জন্যে মা আমাকে পেটাচ্ছে এমন অবস্থায় কাজ থেকে ফিরে তিনি আমাকে বার দুয়েক রক্ষা করেছেন। মনে পড়ে তিনি আমাকে একবার বেসবল খেলা দেখাতে ট্রেনে করে সেইন্ট লুইস নিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা একসঙ্গে (হোটেলে) রাত কাটিয়ে পরদিন বাসায় ফিরে আসি। আমার খুবই ভালো লেগেছিল। পরিতাপের কথা হলো, মাত্র একবারই আমার সে-অভিজ্ঞতা হয়েছিল। মাত্র একবারই আমরা একসঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। একবারই আমরা জঙ্গলে গিয়ে ক্রিসমাস ট্রি কেটে এনেছিলাম। আরো কত ঘটনা রয়েছে। আমার কাছে সেসবের মূল্য অপরিসীম, কিন্তু দ্বিতীয়বার কখনোই সেসব ঘটনা ঘটেনি।’

প্রকৃতপক্ষে, জীবনে যখন যার সংস্পর্শে এসেছেন ক্লিনটন, তার প্রতিই যেন তাঁর অফুরন্ত ভালোবাসা। এক স্পেশাল প্রসিকিউটর কেনেথ স্টার ছাড়া অন্য কোনো মানুষের প্রতি নাম ধরে ক্লিনটনের এই একসেরি বইয়ের কোথাও মন্দ কথা বলেছেন বলে আমার নজরে আসেনি। ক্লিনটনকে নিয়ে যে আমরা এত উৎসাহী হই তাঁর আরেক কারণ বোধকরি তাঁর চরিত্রের এই আপাত নম্রতা। তাঁর এই মনোভাব কতটুকু সৎ, কতটুকু সাজানো, তাঁর হিসেব

মনস্তত্ত্ব-বিশারদরা দেবেন, পাঠক হিসেবে তা নিয়ে আমরা কেউ মোটেই উদ্বিগ্ন হই না।

এই গ্রন্থের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে হিলারির সঙ্গে তাঁর প্রেম, বিবাহ ও দাম্পত্য-বিবাদের বিস্তৃত বিবরণ। কেনেডি-জ্যাকুলিনের মতোঁ এই দুই রাজনীতিকের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে দাম্পত্য-প্রেমের ছলা-কলা সোপ-অপেরার মতোঁ ক্লিনটনের প্রেসিডেন্সির আট বছর আমরা গিলে খেয়েছি। তাঁর তাবৎ নষ্টামি সত্ত্বেও এই লোকটি যে তাঁর স্ত্রীকে ভালোবাসে – এবং তাঁর কন্যা চেলসির প্রতি তাঁর অপত্যস্নেহ নিরঙ্কুশ – এই বই পড়ার পর তাতে কোনো সন্দেহ থাকে না। পুরো বইতে, একদম স্কুলবয়স থেকে, গণ্ডায় গণ্ডায় যেসব মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়েছে, তাঁর প্রত্যেকটির সরস ও সহর্ষ বিবরণ ক্লিনটন দিয়েছেন। তাঁর নিজের কথাতেই তিনি নিষ্পাপ জীবনযাপন করেননি, বরং সমুদ্রগামী জাহাজে যত মালামাল থাকে তার চেয়ে বেশি মাল নিয়ে তাঁকে চলতে হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। সে-স্বীকারোক্তিতে কোনো পরিতাপের ছাপ নেই, বরং রয়েছে আত্মপ্রসাদ। কিন্তু তা সত্ত্বেও একথা ঠিক ধরা পড়ে যে, প্রকৃত প্রেম যদি তাঁর কারো সঙ্গে হয়ে থাকে সে হলো হিলারি, যাঁর ‘মাথা তাঁর শরীরের চেয়ে বড়, বেজায় বড়’। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে হিলারির সঙ্গে তাঁর পরিচয় ও প্রণয়ের বিবরণ এই গ্রন্থের সবচেয়ে মানবিক ও আস্থাসম্পন্ন অংশ। তাঁদের প্রণয়ের অনেক গল্পই এখন লোকগাথায় দাঁড়িয়ে গেছে, বিশেষ করে বিলের বিবাহ-প্রস্তাবে হিলারির প্রত্যাখ্যানের সেই নাটক। নতুন যে-গল্পটি এখানে পড়লাম তা হলো ইয়েলের আর্ট গ্যালারিতে হিলারির সঙ্গে প্রথম ডেটে গিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার বিবরণ। প্রথমবারের মতো হিলারি তাঁর সঙ্গে বেরুতে সম্মত হয়েছেন। এসে দেখেন গ্যালারি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কী করা? ছাড়বার পাত্র নন বিল ক্লিনটন। গ্যালারির পাহারাদারকে খুঁজে বের করলেন। তাকে এই বলে বোঝালেন, তাঁদের ঢুকতে দিলে বাইরে যে-একগাদা ময়লা জমা হয়েছে, তা পরিষ্কার করে দেবেন তিনি। চেলসির জন্মের সময় সিজারিয়ান অপারেশন-রুমে তাঁর উপস্থিতির গল্পটিও আগে পড়েছি বলে মনে পড়ে না। ডাক্তার তাঁকে ঢুকতে দেবেন না, কিন্তু ক্লিনটন শুধু কথা বলে তাঁকে বোঝালেন যে, হিলারি কখনো হাসপাতালে থাকেনি, কাজেই তাঁর পাশে থাকা খুবই জরুরি।

এইসব এনেকডোট থেকে আর কিছু না হোক বিল ক্লিনটনের নাছোড়বান্দা মনোভাবের একটি স্পষ্ট ভাব ধরা পড়ে। বোঝা যায়, রাস্তায় ব্যারিকেড দেখে হটে যাওয়ার লোক তিনি নন, বিশেষত তিনি যদি একথা জেনে থাকেন যে, ব্যারিকেড পেরুলেই শুঁড়িখানা। আগেই বলেছি, তাঁর কাজ ও কথার কোনটি আসল, কোনটি লোক দেখানো তা বলা কঠিন। কিন্তু একটি ব্যাপার স্পষ্ট যে, নিজের উদ্দেশ্য অর্জনই তার আসল লক্ষ্য। নীতি নয়, আদর্শ নয়, আবেগ নয় – সবই কঠিন হিসেব কষে এগোনো, সবই রাজনৈতিক ইচ্ছাপূরণ। মনিকা লিউইনস্কির সঙ্গে কেলেঙ্কারি নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ থেকেও সেটি স্পষ্ট হয়। মানছি, মনিকার ব্যাপারটি নিয়ে তিনি নানাভাবে ক্ষমাভিক্ষা করেছেন। বলেছেন, তাঁর ক্ষমতা ছিল বলেই এমন একটি গর্হিত করেছেন, কিন্তু তা অন্যায়। একটি পর্যায়ে মনে হয় মনিকা-সংক্রান্ত ঘটনার জন্যে তাঁর অনুশোচনাও আন্তরিক, কিন্তু যখন একথা বিবেচনায় আনি যে মনিকা-প্রসঙ্গ তিনি সে-ঘটনা ঘটার সময় উল্লেখ করেননি, করেছেন চুরি করে ধরা পড়ার পর, এমনকি 888sport sign up bonusচারণায় সে-ঘটনার পর্যায়ক্রম অনুসরণ না করে তা উলটো এড়িয়ে গেছেন – তখন স্পষ্ট হয় যে, লোকটি আসলে একজন মিথ্যাবাদী। তাঁর নৈতিক স্খলন ও ব্যর্থতার কথা স্বীকার করার পরেও তাঁর মুখ্য বিবেচনা রয়ে গেছে তথাকথিত ‘রাইটউইং কনস্পিরেসি’র জাল-উন্মোচনে। ব্যর্থতা তাঁর, কিন্তু অপরাধ রিপাবলিকানদের, সে-কথা নানাভাবে ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেছেন। কিন্তু ক্লিনটনের এই যুক্তি আমার কাছে বড়ই খোঁড়া মনে হয়েছে। যদি রিপাবলিকানরা তাঁর পেছনে জোঁকের মতো লেগে না থাকত, তাহলে তিনি হয়ত মনিকার ব্যাপারে মিথ্যাচারের প্রয়োজন দেখতেন না, তাঁর সে-কথাও একদম অর্থহীন। বরং হিলারির ক্রোধ থেকে আপাতত বাঁচা যাবে, তাঁর মিথ্যাচারের পেছনে এই যুক্তি অনেক গ্রহণযোগ্য। মনিকার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ক্লিনটন বিছানায় না শুয়ে সোফাতে ঘুমিয়েছেন, সে-গল্প রসিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে এই বইতে। তাঁকে যে হিলারি ঘরছাড়া করেনি, ক্লিনটন তাতেই কৃতজ্ঞ। অন্ততপক্ষে এই একটি এপিসোড থেকে আমার মনে হয়েছে, লোকটি লম্পট হলেও স্ত্রী-কন্যার জন্যে তাঁর বুকের মধ্যে যে-ভালোবাসা, তা শুদ্ধ। একজন লম্পটের পক্ষেও যে জীবনে একটি সত্যিকার প্রেমের সম্পর্ক-নির্মাণ সম্ভব, ক্লিনটন-সম্বন্ধে গ্যারি উইলসের এই মন্তব্যের সঙ্গে আমি একমত।

কিন্তু এইসব ব্যক্তিগত আলাপচারিতার বাইরে তাঁর নষ্টামি ও চারিত্রিক স্খলন-বিষয়ক বিবেচনা বাদ দিলে সত্যি এই বইটিতে মনে থাকে-এমন অংশ খুবই কম। তাঁর সময়ের রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কোনো আলোচনাই তিনি করেননি। তাঁর আট বছরের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা স্বাস্থ্যবিমা-কর্মসূচি। স্ত্রী হিলারিকে সে-কর্মসূচির নেতৃত্বে রেখেছিলেন তিনি। সে-ব্যর্থতার কোনো যুক্তিপূর্ণ আলোচনা নেই এই বইতে। মধ্যপ্রাচ্য-প্রসঙ্গে অনেক পাতা তিনি ব্যয় করেছেন, কিন্তু পলিসি-বিশ্লেষণের বদলে গাল-গপ্পই শুনিয়েছেন বেশি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সময়ে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় তার ফিরিস্তি তিনি আমাদের দিয়েছেন, কিন্তু তাঁর সময়ে নেওয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ফলে ইরাকে

অন্ততপক্ষে এক মিলিয়ন শিশুর মৃত্যু হয়, তা ঘুণাক্ষরেও উল্লেখ করেননি। যুগোস্লাভিয়ায় মিলোসভিচ সরকারের উৎখাতে নিজের ভূমিকায় নিজের পিঠ নিজেই চুলকিয়েছেন, কিন্তু রোয়ান্ডায় আট লাখ মানুষের মৃত্যুতে তাঁর ব্যক্তিগত ব্যর্থতার কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। বোঝা যায়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের লিগেসি-নির্মাণেই ক্লিনটন তাঁর বইয়ের সাড়ে ন-শো পাতার অধিকাংশ পাতা ব্যয় করেছেন। কিন্তু সে-সবের অধিকাংশই, হ্যামলেটের সংলাপ ধার করে বলা যায়, ‘ড়িৎফং, ড়িৎফং, ড়িৎফং’।

ক্লিনটন লেখক নন, রাজনীতিক। কিন্তু যে-লেখক থেকে রাজনীতি একদমই অবিভাজ্য, সেই পাবলো নেরুদার শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হলো এ-মাসেই। মার্কেস একসময় নেরুদাকে বিশ শতকের শ্রেষ্ঠ কবি বলে চিহ্নিত করেছিলেন। সবাই তাঁর সে-কথায় একমত না-ও হতে পারেন, কিন্তু তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে সাগ্রহে অংশ নিয়েছেন সবাই-ই। দক্ষিণ আমেরিকায় এবং ইউরোপে এ-নিয়ে বিস্তর হইচই হচ্ছে, আমেরিকাতেও অল্প-বিস্তর। তাঁর জন্মভূমি চিলিতে সরকারি উদ্যোগে গত দুবছর ধরে এই উদযাপনের প্রস্তুতি চলেছে। রাষ্ট্রপ্রধান থেকে স্কুল-শিক্ষক, সবাই সে-প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িত। (শুনেছি যে-বাড়িতে নেরুদা জন্মেছিলেন, টাকার অভাবে তাকে ধরে রাখা যায়নি। সে-বাড়ি ভেঙে ফেলে সেখানে নাকি

নতুন বাড়ি তৈরি শুরু হয়েছে। এ-নিয়ে চাপের মুখে আছে চিলির সরকার)। নেরুদার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমেরিকায় গোটা কয় বই বেরিয়েছে, তার মধ্যে নেরুদার 888sport app download apkর নতুন সংস্করণ রয়েছে গোটা ছয়েক। কিন্তু একদম বিতর্ক ছাড়া তাঁর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপিত হয়নি এ-দেশে। বিতর্ক, যা এখনো চলছে, তার মূলে রয়েছে নেরুদার স্তালিনপ্রীতি। সোভিয়েত সরকারের সঙ্গে নেরুদার নৈকট্য অজ্ঞাত কোনো ব্যাপার নয়। স্তালিনের হাতে সোভিয়েত রাজনৈতিক কর্মীদের নিগ্রহের কথা তাঁর জানার কথা, তা সত্ত্বেও নেরুদা কখনো তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। বরং উলটো স্তালিনকে নিয়ে প্রশস্তিসূচক 888sport app download apk লিখেছেন। এ-কথাও বলা হয় যে, লিওন ট্রটস্কির ওপর ১৯৪০ সালে মেক্সিকোতে প্রথম যে-হামলা হয়, নেরুদা তাঁর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি নিজে সে-হামলায় অংশ নেননি, কিন্তু ডেভিড আলফার সিকিইরস নামে যে-মেক্সিকান ভাস্কর তাতে অংশ নেন, নেরুদা তাঁকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন এরকম একটি ধারণা প্রচলিত আছে।

কবি হিসেবে নেরুদার অর্জনের সঙ্গে তাঁর রাজনীতি নিয়ে এই বিতর্ক অর্থহীন মনে হতে পারে, কিন্তু তাঁর 888sport app download apkকে রাজনীতি থেকে বাদ দেবো কী করে? দক্ষিণ আমেরিকায় নেরুদাকে পড়া হয় প্রধানত তাঁর প্রেমের 888sport app download apkর জন্যে। শুনেছি তাঁর সেসব 888sport app download apk রঙিন কাগজে লিখে এখনো চালাচালি করে ছেলেমেয়েরা। কিন্তু আমরা, তৃতীয় বিশ্বের তাঁর সকল গুণমুগ্ধ পাঠক, নেরুদার প্রতি আকৃষ্ট হই তাঁর ন্যায়বোধ, সমাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রতি তাঁর আনুগত্য, তাঁর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বক্তব্যের কারণে। স্তালিন যদি এইসকল নীতি ও আদর্শের বিপরীত একটি প্রতীক হন, তাহলে স্তালিনের প্রতি নেরুদার আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা মোটেই অবান্তর নয়। দিন যতই যাচ্ছে ততই জানা যাচ্ছে কী ভয়াবহ রক্তাক্ত সময় ছিল স্তালিনের সোভিয়েত রাশিয়া। সিমন সেবাগ মনতিফিওরের নতুন বই স্তালিন : দি কোর্ট অব দি রেড জার (নফ, নিউইয়র্ক, ২০০৪)-এ নতুন যেসব তথ্য মিলেছে তাতে রক্ত হিম হয়ে আসে।  স্তালিনের নিজের কথা, ‘একজন মানুষের মৃত্যু, তা বেদনাদায়ক একটি ঘটনা, একটি ট্র্যাজেডি। কিন্তু এক মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু, তা একটি পরি888sport free betন ছাড়া আর কিছু নয়।’ শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে, ভিন্নমতের জন্যে, অথবা কোনো কারণে নয় – শুধু স্তালিন নির্দেশ দিয়েছেন বলে, সোভিয়েত ইউনিয়নে ২-কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। অথচ সেই স্তালিনের মৃত্যু হলে, ১৯৫৩ সালে নেরুদা লিখেছিলেন :

We must learn from Stalin

his sincere intensity

his concrete clarity

… Stalin is the moon,

the maturity of man and the peoples.

Stalinists, Let us bear this title with pride.

ভাবুন তো, হিটলারকে নিয়ে প্রশস্তি করেছেন, এমন কোনো কবি-লেখক – তা যত প্রতিভাধরই তিনি হোন না কেন – আমাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন? খুনি হিসেবে হিটলার ও স্তালিনের মধ্যে তফাৎ কোথায়? সোৎসাহে নিজেকে স্তালিনিস্ট বলেছিলেন নেরুদা। ১৯৭১ সালে তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কখনো তাঁর সে-কথার জন্যে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেননি, বলেননি তিনি ভুল করেছেন।

অক্টাভিও পাজ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ অন পোয়েটস অ্যান্ড আদার্স-এ এ-নিয়ে একটি প্রাসঙ্গিক বিবেচনা আমাদের গোচরে এনেছেন (লিটল ব্রাউন অ্যান্ড কোং, ১৯৯১)। ১৯৫০ সালে, স্তালিনের নির্মমতার বিবরণ যখন প্রথম প্রকাশিত হতে শুরু করেছে, সে-সময় তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে রাজনৈতিক অত্যাচারের একটি প্রামাণিক দলিল সংকলন করেন। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর 888sport live footballপত্রিকা সুরে তা যথাসময়ে প্রকাশিতও হয়। পাজ আশা করেছিলেন, তাঁর সে-লেখার সূত্র ধরে সে-সময়ের প্রথম সারির লেখক-বুদ্ধিজীবীরা সোভিয়েত-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে না হোক, সেখানে যে-রাজনৈতিক নিষ্পেষণ চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। কিন্তু কেউ টুঁ শব্দটি করলেন না। উলটো তাঁকে বুর্জোয়া বুদ্ধিজীবী ও সি আই এ-র দালাল বলে কানাঘুষা শুরু করলেন। কয়েকমাস আগে একই ধরনের কানাঘুষায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নেরুদা।

এই ঘটনাটি উল্লেখ করে পাজ লেখকের নৈতিক দায়িত্ব-প্রসঙ্গে যে-প্রশ্ন তোলেন, তা এখনো প্রাসঙ্গিক। লেখকের প্রধান আনুগত্য প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতির কাছে নয়, মানুষের কল্যাণের কাছে। কিন্তু নেরুদা এবং তাঁর মতো আরো অনেকে মানুষের কল্যাণের নামে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিই আনুগত্য দেখিয়েছেন। অরাগঁ, এলুয়ার ও নেরুদার মতো স্তালিনবাদী লেখকরা তাঁদের রাজনৈতিক মতবাদের জন্যে সুপরিচিত। সাম্রাজ্যবাদের তাঁরা কঠোর সমালোচক। কিন্তু স্তালিনের নির্মমতার প্রতিবাদ তাঁরা কী করে এড়িয়ে গেলেন? এটি অজ্ঞতাপ্রসূত না ইচ্ছাকৃত? তাঁদের নীরবতার ভেতর দিয়ে একটি স্পষ্ট অপরাধের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করে তাঁরা নিজেরাও কি অপরাধী হয়ে গেলেন না? নেরুদা ও তাঁর মতো অন্য সকল স্তালিনবাদী লেখকের ব্যর্থতাকে পাজ সেজন্যে ‘পাপ’ বলে বর্ণনা করেছেন। প্রায় একই কথা বলেছেন মিলান কুন্ডেরা পল এলুয়ার-প্রসঙ্গে। ১৯৫০ সালে তরুণ চেক লেখক জাভিজ কালান্দেরাকে রাজনৈতিক ভিন্নমতের জন্যে ফাঁসি দেওয়া হলে এলুয়ার বিবৃতি দিয়ে তাঁর পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন। ‘যখন কোনো মহান কবি ফাঁসির পক্ষে কথা বলেন, তখন পৃথিবীকে নিয়ে আমাদের আশা, আমাদের শুভ ধারণা তা-ই ভেঙে পড়ে’, লিখেছেন কুন্ডেরা।

লেখকের – এবং সকল 888sport live chatীর – একটি প্রধান কাজ যাদের কণ্ঠস্বর শোনা যায় না, তাদের কণ্ঠকে উচ্চকিত করা। যারা ক্ষমতাহীন তাদের ক্ষমতা দেওয়া। 888sport live chatীর সে-ক্ষমতা আছে বলেই না আমরা বন্দুকের বদলে কলমের ও তুলির কাছে পুষ্পাঞ্জলি দিই। কিন্তু কখনো কখনো 888sport live chat ও 888sport live footballকে মানুষের কল্যাণের বদলে তার নিগ্রহের সমর্থনেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সবসময়ে যে লেখক-888sport live chatী অস্ত্রের ভয়ে সে-নিগ্রহে সমর্থন দেন তা নয়, তাঁদের আদর্শিক নৈকট্যের কারণেও স্বৈরাচারকে তাঁরা বান্ধব আশ্রয় দেন। ইতালিয় লেখক ইতালো কালভিনো তাঁর দি ইউজেস অব লিটারেচার গ্রন্থে (হার্ডকোর্ট, ব্রেইস অ্যান্ড কোং, নিউইয়র্ক, ১৯৮৬) সে-কথা উল্লেখ করে 888sport live footballের দুটি সম্ভাব্য অপব্যবহারের সম্ভাবনার দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। প্রথমত, 888sport live football যেন প্রচলিত কোনো রাজনীতি বা আদর্শের পক্ষাবলম্বনের কাজে ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে সচেতন থাকা। দ্বিতীয়ত, সর্বজনগ্রাহ্য বা ঐতিহ্যিক আদর্শ বলে স্বীকৃত মূল্যবোধের লালনের কাজে 888sport live football যেন ব্যবহৃত না হয়, সে-ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া। এই দুটো বা তার যে-কোনো একটি কাজেও যদি 888sport live football বা 888sport live chat ব্যবহৃত হয় তাহলে সে-888sport live football বা 888sport live chatের মোদ্দা কাজ বা ফাংশান দাঁড়ায় – কালভিনোর কথায় – তিনটি : পড়হংড়ষধঃরড়হ, ঢ়ৎবংবৎাধঃরড়হ ধহফ ৎবমৎবংংরড়হ. আমরা বলি না যে নেরুদা শর্তহীনভাবে তাঁর 888sport live footballকে এই সান্ত্বনা, সংরক্ষণ ও পতনের কাজে ব্যবহৃত হতে দিয়েছেন, কিন্তু স্খলন তাঁর যে হয়নি, তা-ই বা বলি কী করে? আমার মনে হয়, এ-প্রশ্ন আরো খোলা চোখে বিচার করে দেখা উচিত। যেমন, খোলা চোখে বিচার করা হয়েছে ফ্যাসিবাদের প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নে মার্টিন হাইডেগারকে নিয়ে। সোভিয়েত কম্যুনিজম ও তার নিরন্তর নিষ্পেষণ নিয়ে যে-লুকোচুরি করেছেন গোর্কি, ইলিয়া এরনবুর্গ, ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ বা নাজিম হিকমত, তাঁদের কাজ ও কর্ম তেমন খোলা চোখে দেখা হয়নি, কিন্তু দেখা উচিত।

888sport live football বা সামগ্রিকভাবে 888sport live chatের ক্ষমতা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু এই 888sport live football বা 888sport live chat মানুষের কল্যাণে তখনই আসে যখন চলতি ক্ষমতার সঙ্গে

সংযুক্ত কোনো মতবাদের পক্ষে তার কোনো সন্ধি না

থাকে। ক্ষমতার কেন্দ্রে অন্তর্ভুক্ত হয়ে নয়, সে-কেন্দ্রকে আক্রমণ করেই লেখক বা 888sport live chatী মানুষের প্রতি

দায়িত্বপালনে সম্ভব। জানি, সে-কাজও কেউ কেউ রাজনৈতিক বলে আপত্তি করবেন, কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে মানবিক, সবচেয়ে বিবেকবান লেখকরা আজন্ম সে-কাজই করেছেন। তার প্রমাণ টলস্তয়, রবীন্দ্রনাথ ও আলবেয়ার কামু। তাঁদের 888sport live chatকর্মকে কেউ যদি রাজনৈতিক বলে অবজ্ঞা করেন, তাঁদের সে-মূঢ়তায় আমরা কেবল হাসতেই পারি।

Published :


Comments

Leave a Reply