আনিসদা আমাদের বিপুল শূন্যতার মধ্যে রেখে দিয়ে চলে গেলেন। আমার সঙ্গে আনিসদার প্রথম পরিচয় ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে স্বর্গত অধ্যাপক অনিল সরকারের মাধ্যমে। তিনি প্রায়শই ভারতবর্ষে এবং বিশেষ করে কলকাতায় আসতেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং 888sport app শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান-আয়োজিত আলোচনাসভায় যোগ দিতে। তারই ফাঁকে আমাদের কয়েকজনের সঙ্গে নিয়মিত গল্পগুজব হতো। তাঁর মতো বিশাল মহীরুহের সঙ্গে আমার মতো সামান্য মানুষের কী করে নিবিড় পারিবারিক যোগ গড়ে উঠতে পারে সে-কথা ভাবলে আমার বিস্ময় কখনোই কাটে না।
আমাকে মাঝেমধ্যেই প্রাতিষ্ঠানিক কাজে 888sport appsে যাতায়াত করতে হতো। কখনো কখনো স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহও যেতাম। সেই সময় তাঁর পরিবারের সঙ্গে আমার পরিবারের নিবিড় যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল তাঁর কোমলতা ও সরলতার গুণে।
888sport appsে আমাদের সকলকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াবার সময় দেখেছি আপামর জনসাধারণের মধ্যে তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তা। সাধারণ লোক, ছাত্র, শিক্ষক, সরকারি আমলা বা বড়ো ব্যবসায়ী সকলের কাছেই তিনি অত্যন্ত 888sport apk download apk latest versionর মানুষ।
আমার আনিসদা 888sport appsে আনিসচাচা, শিক্ষার্থীদের কাছে আনিস স্যার। কোনো একটা নির্দিষ্ট পরিসরে রেখে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে বুঝতে গেলে ‘অন্ধের হস্তী দর্শন’ হয়ে যাবে। তাঁকে বুঝতে হবে তাঁর জীবনচর্যার সমগ্রতায়। পঁচিশ বছর বয়সেই তাঁর অমূল্য গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ পেয়েছিল। তারপর আরো একাধিক গবেষণাকর্মের মধ্য দিয়ে তিনি 888sport appsের ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদকে পরিপুষ্ট করেছেন।
মূলত শিক্ষাজগতের মানুষ হলেও তাঁর পা বরাবর মাটিতেই ছিল। সে-কারণে একদিকে তিনি কখনো ভাষা-আন্দোলনের শরিক, কখনো মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী সেনা, অন্যদিকে পরবর্তীকালে স্বাধীন 888sport apps গঠনে তাঁর সক্রিয় ইতিবাচক ভূমিকা – এসবের সমগ্রতাই অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে বোঝার ক্ষেত্রে একটা আবশ্যিক শর্ত।
মুসলমান বাঙালি নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে কীভাবে স্বকীয়তা বজায় রেখে অসাম্প্রদায়িক সত্তা অর্জন করেছে, তা তাঁর গবেষণায় উন্মোচিত হয়েছে। যা 888sport appsের জাতীয়তাবোধ গড়ে উঠতে সহায়ক হয়েছিল। একইসঙ্গে রবীন্দ্র-অনুসারী আনিসুজ্জামান বাঙালিকে স্বকীয়তা বজায় রেখে আন্তর্জাতিক স্তরে বিশ্ব-নাগরিক রূপে গড়ে ওঠার দিকনির্দেশ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেড়শো বছর পূর্তি উৎসব পালনে ভারত-888sport apps যৌথ প্রচেষ্টায় আনিসদা ছিলেন একজন প্রধান রূপকার।
তাঁর অমূল্য গবেষণা পুরোনো বাংলা গদ্য। এখানে অষ্টাদশ শতকের নথিপত্র ঘেঁটে তিনি দেখিয়েছেন – আমাদের যেমনটি ধারণা, ইংরেজ আসার পর মিশনারিরাই বাংলা গদ্যের প্রচলন করেছিল – সে-ধারণা ভ্রান্ত। অষ্টাদশ শতকে মুসলমানদের শাসনকালেই বাংলা গদ্যের রূপ গড়ে উঠেছিল। পশ্চিমবঙ্গে তাঁর এই মূল্যবান গবেষণাকে কতটা স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে জানি না কিন্তু 888sport appsে তো বটেই বিশ্বের অন্যত্রও তাঁর এই গবেষণাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থী-প্রিয় অধ্যাপক মুক্তিযুদ্ধের সময়ে শিক্ষালয়ের নিরাপদ কোণে বসে থাকেননি। মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শদাতা রূপেও কাজ করেছেন। পরবর্তীকালে স্বাধীন 888sport appsের সংবিধান রচনার ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকার অপরিসীম গুরুত্ব ছিল। কোনো 888sport app download apk latest version নয়, সরাসরি সকলের জন্য বোধগম্য বাংলা ভাষায় তিনি সংবিধান রচনার অন্যতম কলাকার।
ঋজু মানুষ আনিসদা কখনো অন্যায় মেনে নেননি। ‘জাতীয় অধ্যাপক’ আনিসুজ্জামান প্রায় একা হাতে জাতির সাংস্কৃতিক জীবনের তত্ত্বাবধান করেছেন। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ধারণা এবং তাকে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ। তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য, সহজ-সরল ব্যবহার ও সকল মানুষের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল বিশ্বের কাছে 888sport appsের ও বাঙালির সাংস্কৃতিক দূত হিসেবে। তিনি ছিলেন মানবতাবাদী রাজনীতিবিদ এবং হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, আবদুল করিম 888sport live football বিশারদ, দীনেশ চন্দ্র সেন, জসীমউদ্দীন, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রমুখের মতো বর্তমানকে বোঝার জন্য তিনিও অতীত খনন করেছেন। তাঁর আত্মজীবনীমূলক রচনা কাল নিরবধি ও বিপুলা পৃথিবী রবীন্দ্রনাথের কথা মনে করিয়ে দেয় : আত্মস্বার্থ নয়, নামযশ নয়, 888sport live footballের প্রকৃত পরিণতি নিরবধি কাল ও বিপুলা পৃথিবীতে।
চলে গেলেও আনিসদা আমাদের সকলের মধ্যে থেকে যাবেন তাঁর কাজের বিপুল ব্যাপ্তি ও গভীরতার জন্য। কিন্তু আর কোনোদিনও 888sport app থেকে আনিসদার স্বর ভেসে আসবে না, ‘অমুক দিনটা ফাঁকা রেখো, আমি আসছি।’ এই নির্মম সত্যিটাই বাকি জীবন জুড়ে মাঝে মাঝেই গভীর হয়ে বুকে বাজবে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.