পুরানো সেই দিনের কথা

অনেকদিন পরে আবার রবিঠাকুরের সঙ্গে বৈকালিক 888sport slot gameে বেরিয়েছেন – ক্ষিতিমোহন সেন, জগদীশ বোস আর অমিয় চক্রবর্তী। হ্যারিসন রোড ধরে চার জনে চলেছেন শ্যাল্দা-মুখো বাদলবাবুর আপিসে। সেখানে আমতলার মুড়ি- বাগবাজারের ফুলুরি আলুচ্চপ আর চা আসবে। রবিঠাকুরের নতুন বই সম্পর্কে হবে সাতকাহন। বকফুলরঙা ধুতি-পাঞ্জাবি পরা বাদলবাবুর সঙ্গে মিছিল-পুস্তানি-জেল-ফর্মা নিয়ে চলবে পাণ্ডিত্যপূর্ণ জ্ঞানগর্ভ সব আলোচনা।

রবিবাবুকে মাঝেমাঝেই বাদলবাবু বলবেন, ‘অন্তত জয়হিন্দ্ মার্কা সন্দেশটা খেতেই হবে।’ অনেকদিন পরে ওকাম্পো নেই, লেডিরাণু নেই, মৃণালিনীদেবী তো বহু ঊর্ধ্বে উঠে যাওয়া ব্যাপার। অনেকদিন পরে রবিবাবু মেখেছেন মাইসোরের চন্দনসাবান। কী মিঠেকড়া গন্ধ বেরিয়েছে কলেজ স্ট্রিটের রাস্তায়! ট্রাম অব্দি যেতে যেতে দাঁড়িয়ে পড়েছে। ঝুঁকে পড়ে এই বিরল দৃশ্য দেখছে পাউরুটিরঙের বাড়িঘরদোর। এরই মধ্যে জগদীশ বোস বললেন, ‘ডি এল রায় বোধহয় আপনাকে একটু টাইট দেওয়ার চেষ্টা করছিল।’ কিন্তু হেসে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আঘাত না করার শক্তিকে ও টের পাচ্ছে না।’ এরই মধ্যে এই দুটো কলেজের মেয়ে প্রণাম করে সই নিল তো ওই দুটো কবিযশোপ্রার্থী ছোক্রা পায়ে হাত দিয়ে চাইল ছন্দজ্ঞান, কেউ এসে হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় খুলে বলল, ‘আজ্ঞে এখানেই একটা অটোগ্রাফ….।’ এত সবের মধ্যেও রবিবাবু নিচু গলায় সঙ্গীদের বলছেন, ‘ভাবছি এবার ফিল্মে নামব, 888sport live chatের কোনও শাখাই তো বাদ রাখিনি।’ অনেকদিন পরে তিন সঙ্গী মোহিত হয়ে নিরীক্ষণ করছে তাঁকে। ভাবছেন এক পা এক পা করে তাঁরাও ঢুকে পড়ছেন আধুনিক ভারতের ইতিহাসের পাতায়। ভাবছেন এ বছর বইমেলায় গুরুদেবের সঙ্গে তাঁরাও চক্কর মেরে বেড়াবেন গিল্ড থেকে লিট্ল ম্যাগাজিনের টেবিল। শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেসে যেতে যেতে বর্ধমান ছাড়াতেই খাওয়া হবে ডিম সিদ্ধ। আগামী ইলেকশনে বামফ্রন্টের হয়ে বিশ্বকবির সঙ্গে তাঁরাও দিয়ে বেড়াবেন প্রচুর বক্তৃতা। এ-ও ভাবছেন – তাঁরা তিনজনেই চারুশশী আর গুরুদেব একান্ত রূপে তাঁহাদেরই তারাপদ। ঠিক তখনই দু’হাত দূরে কফি হৌসে হসন্ত-কে একমাত্রা ধরা হবে কি না – এ নিয়ে কৃত্তিবাস ফাটাচ্ছে চায়ের টেবিল। আজ তিন সঙ্গীই ভাবছেন: বহুদিন বাদে তাঁদের আড্ডায় কোনও ললনার ললিতলবঙ্গ উপস্থিতি নেই, এ ভারি আশ্চর্যের!

ঠিক তখনই কবি বললেন, ‘শুনছি বিনয় অসুস্থ, তবে তো গায়ত্রীর সঙ্গে এবার আলাপ করা যেতেই পারে।’