প্রজ্ঞার সাহস

কাজল রশীদ শাহীন

আবুল মনসুর আহমদ স্মারকগ্রন্থ

ইমরান মাহফুজ-সম্পাদিত

প্রথমা প্রকাশন

888sport app, ২০১৬

৫৫০ টাকা

 

 

স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের একটা রেওয়াজ বা সংস্কৃতি আমাদের বিদ্বতসমাজে হাজির আছে। তবে সেটা হাজির থাকা পর্যন্তই। স্মারকগ্রন্থের নামে যা পাওয়া যায়, তাতে দৃশ্যত যত্নের ছাপ থাকলেও প্রযত্নের অভাব দৃষ্ট হয় পলেপলে। ক্ষেত্রবিশেষে বিরক্তিও উদ্রেক করে। স্মারকগ্রন্থে সম্পাদক ও সম্পাদনা পর্ষদ থাকলেও তাদের ভূমিকা কখনো-কখনো প্রশ্নবিদ্ধ মনে হয়। খটকা লাগে এঁদের পৌরোহিত্যের ফসল দেখে। কারণ তাঁদের শ্রম-ঘামে এবং মেধা ও মননের সৌকর্যে যা উৎপাদন হওয়ার কথা, তার সাক্ষ্য স্মারকগ্রন্থে প্রায়শ অনুপস্থিত থাকে। তাহলে? হ্যাঁ, কিছু স্মারকগ্রন্থ ব্যতিক্রমও বটে। এ-ধারায় সম্প্রতি একটি স্মারকগ্রন্থ নাম লিখিয়েছে, যা উদাহরণ বইকি।

আমাদের জ্ঞানী-গুণীজন ও তাদের চৌহদ্দিতে একটা নাম এখন বিস্মৃতপ্রায়। তাঁকে নিয়ে এতদিন যখন কোনো স্মারকগ্রন্থ রচনা বা সম্পাদনা হয়নি, তখন এ-কথা প্রমাণ করতে কসরত করা লাগে না মোটেই। শ্রেণিকক্ষের কোনো-কোনো ক্লাসে তাঁর লেখা পড়ানো হয়, এই যা। আর বইয়ের কক্ষ কিংবা পাঠাগারে তাঁর আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছরের দেখা মেলে, এতটুকুই। আমাদের এই বিস্মৃতপ্রবণতায় সূক্ষ্ম আত্মশস্নাঘা আছে কী? যাকে নিয়ে এই ভূমিকা পাঠ, তিনি হলেন আবুল মনসুর আহমদ। আর স্মারকগ্রন্থটি তাঁরই নামাঙ্কিত। সম্পাদনা করেছেন আগন্তুক কিন্তু প্রতিশ্রম্নতিশীল লেখক-গবেষক ইমরান মাহফুজ। সম্পাদকম-লীতে রয়েছেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সৈয়দ শামসুল হক, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, শামসুজ্জামান খান, সৈয়দ আবুল মকসুদ। জ্যোতির্ময় এসব ব্যক্তিত্বের সহযোগে যে-সৃজন হয়েছে, তাকে ‘স্বর্ণখ-’ বলা যায়। স্বর্ণখ- কেন উদ্ধৃত কমার ভেতরে তার পেছনে একটা শানে-নযুল রয়েছে। স্বর্ণ বা সোনায় যেমন খাদ থাকে। এই বইয়েরও সেটা রয়েছে। এই খাদ বা খামতির পরও আবুল মনসুর আহমদ স্মারকগ্রন্থ উদাহরণযোগ্য একটি কাজ। খাদ ছাড়া যেমন গহনা হয় না, তেমনি খামতি ছাড়া একটা ভালো বই হয় কী করে?

লক্ষণীয়, এ-বইয়ের সুবাদে বা কল্যাণে আবুল মনসুর চর্চা ও পঠন-পাঠন একটা গতিপ্রাপ্ত হয়েছে। ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোও এ-ব্যাপারে নেক-নজর রাখার চেষ্টা করছে। মিডিয়াও তার জন্ম-মৃত্যুতে তাগিদবোধ করছে তাঁকে 888sport app download for android করার। উপলব্ধ করেছে, তাঁকে 888sport apk download apk latest versionর্ঘ্য জানানো প্রয়োজন, অপরিহার্যও বটে। আনিসুজ্জামান যথার্থই বলেছেন, ‘888sport live footballিক হিসেবে বাংলা 888sport live footballে আবুল মনসুর আহমদের আসন স্থায়ী। আমরা 888sport app download for android করতে ভুলে গেলেও তাঁর স্থান অবিচলিত থাকবে তবে তাঁকে 888sport app download for android করতে পারলে আমরা লাভবান হব এবং সামনে চলার পথে প্রেরণা লাভ করব।’ ‘আমরা 888sport app download for android করতে ভুলে গেলেও তাঁর স্থান অবিচলিত থাকবে।’ সত্যিই তাই, আমরা যখন ভুলে ছিলাম, তখনো তিনি ছিলেন। যার মহোত্তম উদাহরণ হলো, তাঁর এই প্রবলভাবে ফিরে আসা।

আবুল মনসুর আহমদ স্মারকগ্রন্থের বীজ রোপিত হয়েছিল কালের ধ্বনির ‘দুর্লভ কথক আবুল মনসুর আহমদ’ 888sport free betয়। ইমরান মাহফুজের শ্রমে-প্রেমে-মেধা ত্যাগে 888sport free betটি আলোচ্য লেখককে পুনর্জন্ম দিয়েছে। বিপুল ঐশ্বর্যে ফিরে আসার উপাদান জুগিয়েছে। পরবর্তীকালে কালের ধ্বনির 888sport login bangladesh linkগুলো নিয়ে বই আকারে প্রকাশ তাতে বাজিয়েছে অমোঘ এক ঘণ্টাধ্বনি, যা ঘুম ভাঙিয়েছে আমাদের, প্রতিষ্ঠানের, মিডিয়ার এবং ওপরতলার বুদ্ধিজীবীদেরও বইকি।

ভূমিকা, সাংবাদিকতা, রাজনীতি, বুদ্ধিবৃত্তিচর্চা, জীবনদর্শন, 888sport sign up bonus, পরিশিষ্ট ১, পরিশিষ্ট ২, পরিশিষ্ট ৩ এবং আলোকচিত্র – এসব শিরোনামে সজ্জিত হয়েছে বইটির সূচি। নন-অ্যাকাডেমিশিয়ান-অ্যাকাডেমিশিয়ান, প্রবীণ-নবীন লেখক-সাংবাদিক ও স্বজন-শুভানুধ্যায়ীদের লেখা হাজির করা হয়েছে। পরিশিষ্টগুলো সংকলিত, লেখককে নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টার্জ ও লেখক-সম্পর্কিত তথ্যাবলি, লেখকের ভাষণ ও উৎসর্গপত্রে হয়েছে সমৃদ্ধ। আলোকচিত্রে রয়েছে আবুল মনুসরের বিভিন্ন বয়সের ও বর্ণাঢ্য জীবনের উলেস্নখযোগ্য কর্মমুহূর্তের স্মারক।

সম্পাদক কৈফিয়ত দিয়েছেন, ‘তাঁর (আবুল মনসুর আহমদ) মৃত্যুর কয়েক দশক অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু সমাজ, রাষ্ট্র ও সংস্কৃতি-সম্পর্কে তাঁর অনেক পর্যবেক্ষণ ও বক্তব্য আজো প্রাসঙ্গিক বলেই মনে হয়। তাঁর সব চিন্তা বা মতামতের সঙ্গে আমরা সবাই হয়তো একমত হব না। আর সেটা জরুরিও নয়। তবে তাঁর ও তাঁর মতো অন্য পূর্বসূরি মনীষীজনের চিন্তা ও কর্মের সঙ্গে পরিচয়ের মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ পথের দিশা খুঁজে পাব। আবুল মনসুর আহমদ রচনার ব্যাপক পঠন-পাঠন এবং তাঁকে নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা আমাদের সামনে এগিয়ে চলার স্বার্থেই আজো প্রয়োজন।’

সম্পাদকের নিবেদনে প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত কৈফিয়তের বয়ান থাকলেও কিছু-কিছু কৈফিয়ত শূন্যতা মনে হয়েছে খটকাবিদ্ধ ও অস্বস্তিযুক্ত। প্রশ্নাতীত যে, এখানকার সব লেখা নতুন, কিংবা পুরনো। উভয় প্রকারই জায়গা করে নিয়েছে নিজ স্বাদুতায়, যা সাধু বলে অভিনন্দনযোগ্যও বটে। কিন্তু কোনটি নতুন আর কোনটি পুরনো তা কোথাও পরিষ্কার করা হয়নি। কিছু লেখা সম্ভবত বই কিংবা সাময়িকপত্র থেকেও নেওয়া হয়েছে, সেখানেও সূত্র নেই। সম্পাদকম-লীর দুজন সদস্যের লেখাও নেই। তাঁদের লেখা অপরিহার্য না হলেও প্রত্যাশিত, কাঙিক্ষতও বটে।

লেখাগুলো পড়ে শুধু পুলকিত ও সমৃদ্ধ হওয়ার বাতাবরণই মেলেনি, বিস্মিত, আলোড়িত ও আলোকিত হওয়ার মত্যে শস্যপ্রাপ্তিও ঘটেছে। তবে একটি লেখায় মুগ্ধতা মিললেও বিস্ফারিত হওয়ার মতো তথ্যও পাওয়া গেছে। আশিক রেজা লিখেছেন, ‘তাঁর (আবুল মনসুর আহমদ) বিদ্রোহ ছিল ভ-ামি, ধর্মান্ধতা ও সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে।… ঐতিহাসিক 888sport cricket BPL rate দফার প্রণেতা, যুক্তফ্রন্টের রূপকারকে সালাম। মারি চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী, ছয় দফার আবুল মনসুর চিরজীবী হোক।’ (সময়, অসময় ও দুঃসময়ের অশ্বারোহী, আশিক রেজা)।

‘ছয় দফার আবুল মনসুর চিরজীবী হোক’। ছয় দফার সঙ্গে তো আবুল মনসুরের কোনোরূপ সম্পৃক্ততা ছিল না। তিনি ১৯৬২ সালেই রাজনীতি থেকে অবসর নেন। এক্ষেত্রে আরো বেশি সতর্ক ও সাবধানতা অবলম্বন করা হলে এসব ভ্রান্তি ও প্রমাদ এড়ানো যেত অতিসহজেই।

আশিক রেজার লেখার স্টাইল ও লেখা-সংক্রান্ত বিবেচনাবোধ প্রশংসাযোগ্য। তিনি অনেক কিছুই তলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন, নানা বাঁক-অবাঁকের মধ্য দিয়ে একটা সিদ্ধান্তে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। অবশ্য, পরিমিতি-মেদমিতি আশিক রেজার লেখায় ছিল নিমহাজির। যা বিবেচিত হলে তার তালাশ-প্রক্রিয়া আরো বেশি নন্দিত হতো। তিনি লিখেছেন, ‘ঐতিহাসিক কোনো ঘটনার ইন্টারপ্রিটেশন হাজির করার সময় কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা জরুরি, ঘটনার প্রেক্ষাপট ও ঐতিহাসিক প্রস্ত্ততি, বিদ্যমান ডেমোগ্রাফি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক অ্যাক্টরদের শক্তি, দৃষ্টিভঙ্গি ও আন্দোলনের অভিমুখ। এর কোনো একটা বাদ দিলেই মিস ইন্টারপ্রিটেশনের সম্ভাবনা। সে যেমন ঘটনার ইন্টারপ্রিটেশনের ক্ষেত্রে তেমনি এর যে কোনোটির বিবেচনার ক্ষেত্রে সত্যি।’ (‘সময়, অসময় ও দুঃসময়ের অশ্বারোহী’, আশিক রেজা)

সম্পাদকের কৈফিয়ত খামতির আরো একটা দিক দাবি রাখে উল্লিখিত হওয়ার। সাড়ে তিনশো পৃষ্ঠার বইয়ের কোথাও নেই লেখক পরিচিতি। সংক্ষেপে সেটা উল্লিখিত হলে মন্দ হতো না নিশ্চয়। লেখা নির্বাচন ও সংকলন-সম্পর্কিত ব্যাখ্যাও গরহাজির।

সম্পাদক লিখেছেন, ‘কেউ বলতে পারেন, একাধিক ক্ষেত্রে বিচরণ করতে গিয়ে তাঁর শক্তি ও সামর্থ্য খ–ত হয়েছে। কিন্তু আরেকভাবে দেখতে গেলে তাঁর এই বিচরণ ক্ষেত্রগুলো ছিল পরস্পর সম্পূরক। এসব ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা নিয়েই গড়ে উঠেছে তাঁর 888sport live footballিক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক সত্তাটি। যদিও তাঁর অন্যসব কৃতিত্বকে ছাড়িয়ে 888sport live footballিক পরিচয়টিই সম্ভবত ভবিষ্যৎকালের মানুষের কাছে আবুল মনসুর আহমদকে 888sport app download for androidীয় করে রাখবে।’ (সম্পাদকের নিবেদন)

‘যদিও তাঁর অন্যসব কৃতিত্বকে ছাড়িয়ে 888sport live footballিক পরিচয়টিই সম্ভবত ভবিষ্যৎকালের মানুষের কাছে আবুল মনসুর আহমদকে 888sport app download for androidীয় করে রাখবে।’ সম্পাদকের এই সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ নয় কি? সম্পাদক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে কিংবা মুক্ত করে তার সত্তাটিকে প্রভাবক সত্তায় কেন পরিগণিত করলেন? সম্পাদকের কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা উন্মোচিত হলে পালটা সিদ্ধান্ত, যুক্তি, ব্যাখ্যা-বিশেস্নষণ ও পর্যবেক্ষণ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়, নাকি?

আবুল মনসুর আহমদ স্মারকগ্রন্থ কিন্তু সাক্ষ্য দেয় আবুল মনসুর আহমদকে একটা বৃত্তে বন্দি করা সমীচীন তো নই-ই, যুক্তিযুক্তও নয়। যদিও সম্পাদকসহ একাধিক লেখক তাঁকে বৃত্তবন্দির চর্চা করেছেন। এবং পরিষ্কার ভাষায় সিদ্ধান্ত টেনে দিয়েছেন, যার কারণ অজ্ঞাত এবং মাজেজাও অস্পষ্ট ও অধরা। আবুল মনসুর আহমদের জীবন ও কর্মকে যদি আমরা বিশেস্নষণ করি, তাঁর সময়ের আলোকে, তাঁর দূরদর্শিতা ও ধী-শক্তিকে বিবেচনায় নিয়ে তাহলে তাঁর তিনটি সত্তাকে স্বতন্ত্রভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। ইঁদুর-বেড়ালের দৌড়ের নিরিখে সেই মূল্যায়ন যেন না হয়, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। এমনটি করা হলে আবুল মনসুর আহমদের একটা সত্তাকে উষ্ণীষ দেওয়া আদৌ সম্ভব কি? একটাকেই যদি বেছে নিতে হয়, তাহলে সেটা ভিন্ন, গবেষণাপ্রসূতও নয়।

888sport live footballিক মনসুরকে তো আমরা কালের আখরে জয়তু বলে শিরোপা দিচ্ছি। কিন্তু এই শিরোপা দিতে গিয়ে তাঁর অন্য সত্তাকে খর্ব করে দেখছি না তো? সাংবাদিক মনসুর কি শিরোপা পাওয়ার দাবি রাখেন না? আমাদের সংবাদপত্রের ইতিহাস যেমন যথার্থভাবে রচিত হয়নি, তেমনি এদেশের সংবাদপত্রের বিবর্তন ও বিকাশে কারা প্রণম্য, কাদের ত্যাগে-শ্রমে-লড়াইয়ে আর মেধা ও মননে সংবাদপত্র আজ শক্ত ভিত্তির ওপর এসে দাঁড়িয়েছে তাও ফিরে দেখতে কোনো প্রকার তাগিদবোধ করিনি। কাঁদের আগুনের পরশমণিতে সংবাদপত্রে আজ সোনা ফলছে তাও হদিস করি না আমরা। দেশভাগ-পরবর্তীকালে যাঁরা সংবাদপত্রের গতিমুখে আলো ফেলে সম্ভাবনার বিস্তার ঘটিয়েছেন আবুল মনসুর নিশ্চিতভাবেই তাঁদের অন্যতম। সাংবাদিক-সম্পাদক মনসুরকে যদি আমরা প্রকৃতার্থে 888sport app download for android ও বরণ করতাম তাহলে আমাদের সংবাদপত্র আরো বেশি শক্তি-সাহস-সামর্থ্য অর্জনের প্রাণবায়ু খুঁজে পেত।

আবুল মনসুরকে নিয়ে সংশয়িত হওয়ার মতো তর্ক আমাদের এখানে হাজির রয়েছে। সেই তর্কের জায়গায় এ-গ্রন্থ কোনো ভূমিকা নেয়নি। এটি হয়তো মন্দ নয়, কিন্তু প্রশ্নহীনও নয়। এই বইয়ের কোনো-কোনো লেখায় সেসব বিষয় আসতে পারত কি? আবুল আহসান চৌধুরী অবশ্য সাহসের সঙ্গেই বিষয়টাকে টেনেছেন, যদিও তা অতিসংক্ষেপে। তিনি লিখেছেন, ‘ষাটের দশকে তিনি পাকিস্তানপন্থী লেখক-বুদ্ধিজীবীদের কাতারে শামিল হয়ে সরকারের নীতি ও সিদ্ধান্তের সপক্ষে রবীন্দ্র888sport live football বর্জনে সমর্থন জানান। অন্য অনেকের মতো তাঁর তখন সরকারি আনুকূল্য কিংবা তোষণের কোনো প্রয়োজন ছিল না। তবু তিনি কোনো প্রেরণা বা প্ররোচনা বা উপলব্ধিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। তাঁর জীবনের এই ঘটনাটি ‘চাঁদের কলঙ্ক’ হয়ে তাঁর গুণগ্রাহীদের নিয়ত আহত করে।’

সত্যকে স্বীকার করে নেওয়ার মধ্যেই লুক্কায়িত থাকে প্রজ্ঞার সাহস ও সৌন্দর্য। আবুল মনসুর আহমদের সেটা ছিল। সুতরাং তাঁকে নিয়ে রচনা-সম্পাদিত কিংবা গবেষণালব্ধ কর্মে কেন সেই চারিত্র্য রক্ষিত হবে না? কোনো বিষয় নিয়ে ঢাক ঢাক গুড় গুড় করলে তো তাতে মিথ্যেকেই প্রশ্রয় বা উসকে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

স্মারকগ্রন্থটির বিশেষগুণ হলো, এখানে প্রত্যেকটি লেখা যেমন স্বতন্ত্র ও স্বচারিত্রিক, তেমনি বিষয়ও ভিন্ন। বিষয়ের কোনোরূপ পুনরাবৃত্তি নেই। ফলে, যাঁকে নিয়ে এ-প্রয়াস তাঁর সামগ্রিক দিকটিই উদ্ভাসিত-উন্মোচিত হয়েছে। তাঁকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কাজের অবশ্যম্ভাবী এক সুলুকসন্ধান হিসেবে এটি তুলনারহিত।

আবুল মনসুর আহমদের 888sport live footballিক সত্তা সর্বজননন্দিত। এমনকি কাজী নজরুল ইসলাম পর্যন্ত তাঁর লেখার তারিফ করেছেন। যেজন্য তাঁর এত তারিফ সেই ধারা বাংলা 888sport live footballে এখন প্রত্ন-ফসিলে পরিগণিত হয়েছে। তাঁর সময়ের চেয়ে ব্যক্তি ও সমাজের ভ-ামি ও মুখোশধর্মিতা বেড়ে গেলেও তাকে স্যাটায়ার করার মতো একজন মনসুরের দেখা মেলে না আর। এটা কি উত্তরপ্রজন্মের লেখকের সাহসের অভাব নাকি, প্রজ্ঞার বনসাইত্ব। আবুল মনসুর আহমদ ব্যঙ্গগল্পে সমাজ-রাষ্ট্রের অচেনা-অনামি মানুষেরাই শুধু আক্রান্ত হননি, শেরেবাংলা এ. কে. ফজলুল হক, মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন। এখানেই তিনি যেমন ব্যতিক্রম, তেমনি যে-কোনো মূল্যে উচ্চকিত তার ব্যতিক্রম সত্তা।

আবুল মনসুর রাজনীতিবিদ হিসেবে ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন। এই বইয়ের বদৌলতে আমাদের সে-সম্পর্কে জানারও সুযোগ ঘটেছে। ওই সময় এবং সময়ের মানুষদের পাটাতনে রেখে আমরা রাজনীতিক আবুল মনসুরকে খুঁজে পেয়েছি। তাঁর দুখানি 888sport sign up bonusকথাতেও আমরা জেনেছি তাঁকে ও তাঁর রাজনীতির দিনগুলোকে, আর উপলব্ধি করেছি পার্শ্বচরিত্রের অভিমুখ।

আবুল মনসুর আহমদ স্মারকগ্রন্থ বহুরৈখিক পঠন-পাঠনের বিস্তার ঘটিয়েছেন আমাদের কাছে। ব্যক্তি ও তাঁর সময় এবং কর্মের আলোকিত-অনালোকিত-তর্কিত বিষয়গুলোকে দিয়েছে নতুন করে চেনা-জানা ও ভাবনার রসদ।

এ-কারণে খামতি বা খাদ, প্রত্যাশা বা আকাঙক্ষার অপূর্ণতা সত্ত্বেও গ্রন্থটি অবশ্যপাঠ্য-সংগ্রহযোগ্য একটি কাজ।  r