১৯৯৭ সালে যখন প্রথম ইন্দোনেশিয়ায় যাই তখন প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের (Prameodya Annanta Toer) আমার নিকট একেবারে অপরিচিত নন। কিন্ত্ত তখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপরিচিত সংবাদ সাময়িকী ঝভলন-এ প্রকাশিত দু-একটি নিবন্ধ ছাড়া তাঁর আর কোনো লেখা পড়িনি, যদিও ঐ সাময়িকীরই পূর্ববর্তী দু-একটি 888sport free betর কল্যাণে তাঁর প্রধান লেখা ও বিশ্ব-888sport live footballে তাঁর গুরুত্ব সম্বন্ধে পূর্বেই অবহিত ছিলাম। আমি জানতাম সুহার্তোর তখনকার স্বৈরশাসনামলে তিনি জাকার্তায় গৃহবন্দি এবং তাঁর সমস্ত লেখা ইন্দোনেশিয়ায় নিষিদ্ধ। তবুও জাকার্তায় ও বালিতে যে সমস্ত উচ্চশিক্ষিত ইন্দোনেশীয়র সাথে কর্মসূত্রে যোগাযোগ হয়েছে তাঁদের কাউকে একান্তে পেলেই জানতে চেয়েছি প্রামিদ্যের কথা, এমনও জিজ্ঞেস করেছি যে-কোনো মতে তাঁর সাথে দেখা করা সম্ভব কী-না। আর জিজ্ঞেস করেছি, অন্তত কালোবাজারেও তাঁর কোনো বইয়ের ইংরেজি 888sport app download apk latest version পাওয়া সম্ভব কী-না। অত্যাচারী সামরিক শাসনের তীব্র ভীতি, না-কি তারই ফলে জন্ম নেওয়া অপরিচিতকে অবিশ্বাস – জানি না, তবে তাঁদের প্রত্যেকেই স্বভাবসুলভ ইন্দোনেশীয় সৌজন্যমূলক স্মিত হেসে সামান্য মাথা দুলিয়ে কোনো শব্দ উচ্চারণ না করে পাশ কাটিয়ে গেছেন আমার প্রশ্নের। ঐ বারের ইন্দোনেশিয়া 888sport slot game অন্য অনেকগুলো কারণে আনন্দদায়ক ও 888sport app download for androidীয় হলেও, এই একটি বিষয়ে হতাশা নিয়ে দেশে ফিরেছিলাম, মনে আছে। কিন্ত্ত প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের বই পাবার আশা ছাড়িনি। আমি এ-ও জেনেছিলাম যে তাঁর শ্রেষ্ঠতম রচনা বলে বিবেচিত 888sport alternative link চতুষ্টয় (Buru Quartet) সুলভ সংস্করণে পেঙ্গুইন প্রকাশনা সংস্থা নরম মলাটে প্রকাশ করেছে। তারপর প্রাপ্তির প্রচেষ্টা আরো জোরদার করি। অবশেষে, ২০০১ সালে সিঙ্গাপুর হয়ে যখন নিউজিল্যান্ড যাই তখন প্রথমোক্ত তাঁর শহরে দেখা দু-তিনটি এবং আরো বেশ কটি বই পেয়ে যাই ওয়েলিংটন, অকল্যান্ড ও হ্যামিল্টনে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরে পেয়ে যাই ১৯৯৯ সালে ইংরেজিতে প্রথম প্রকাশিত তাঁর 888sport sign up bonusকথা The Mute’s Soliloquy বা নির্বাকের স্বগতোক্তি। আর আশ্চর্যের বিষয়, সিঙ্গাপুর-অকল্যান্ডের সুদীর্ঘ দশ ঘণ্টাব্যাপী বিরতিহীন উড্ডয়নপথে তাঁর বিশ্ববিখ্যাত বুরু চতুষ্টয় পড়া শুরু না করে আমি ঐ 888sport sign up bonusকথাই পড়ি। কোনো 888sport live chatী যখন 888sport live chatের যে-কোনো মাধ্যমেই হোক খ্যাতিমান হয়ে যান তখন সাধারণ লোকদের আগ্রহ 888sport live chatকর্মের চেয়ে সেই 888sport live chatীর ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে কোনো অংশে কম তো নয়ই, কখনো কখনো বরং বেশি হয়ে দেখা দেয়। এ কথা অবশ্য সার্বিকভাবে যে-কোনো খ্যাতিমান লোক সম্পর্কে সমানভাবেই প্রযোজ্য মনে হয়। সেই কারণেই বোধ হয় এত বছর ধরে একটু একটু করে জমতে থাকা আগ্রহের বিষয় তাঁর 888sport alternative link চতুষ্টয়ের পূর্বে আমি তাঁর 888sport sign up bonusকথাই প্রথমে পড়া শুরু করলাম এবং স্বীকার করতেই হবে এই পূর্বপাঠ তাঁর লেখা হূদয়ঙ্গম করতে আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আর তাঁকে যে ঘনিষ্ঠভাবে জানতে সাহায্য করেছে সে-কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের লেখকজীবন, তাঁর ব্যক্তিজীবন এবং তাঁর প্রায় অনুল্লেখনীয় রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে ছিটেফোঁটা যে-ধারণা ইতোমধ্যে পাওয়া গিয়েছিল, এই 888sport sign up bonusকথা পাঠে সেসবে পরিপূর্ণতার মাংস লেগে এক সুডৌল অবয়ব দান করলো। আমরা প্রায় হতবাক হয়ে লক্ষ করলাম, যে-কোনো মাপকাঠিতে বর্তমান সময়ের বিশ্ব888sport live footballের শ্রেষ্ঠতম লেখকদের অন্যতম প্রধান এই ইন্দোনেশীয় ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে যে সুদীর্ঘ সময় ধরে অবিশ্বাস্য নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এবং এখনো হচ্ছেন তা-ই এক অমর মহাকাব্যের উপাদান হতে পারে। বস্তুতপক্ষে, লেখক হবার অপরাধে এবং রাজশক্তির অপছন্দনীয় লেখা প্রকাশের কারণে অনেক লেখক-কবিই যুগে যুগে অত্যাচার, বৈষম্য, নিপীড়ন কিংবা 888sport app বিভিন্ন ধরনের দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। পারস্যের বিখ্যাত কবি ফেরদৌসী থেকে শুরু করে বিশ শতকের গোর্কি, পাস্তারনাক, সলঝেনিৎসিন প্রমুখ অনেকেই রাষ্ট্রশক্তির বিরাগভাজন হওয়ার ফলে দেশত্যাগী হয়েছেন, অন্তরীণ থেকেছেন, কিংবা আমাদের নজরুল ইসলামের মতো জেলও খেটেছেন। স্পেনের ফ্যাসি-বিরোধী কবি-নাট্যকার ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা তো নিহতই হয়েছেন, অবশ্য সরাসরি রাষ্ট্রশক্তির হাতে নয়। আর চিলির কবি পাবলো নেরুদা সুদীর্ঘকাল নির্বাসনে কাটিয়েছেন। কিন্ত্ত প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের দুর্ভোগের কাহিনী একটু আলাদা ধরনের। পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ বা বর্তমানের ইন্দোনেশিয়া ঔপনিবেশিক শক্তি ওলন্দাজদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সুকার্নোর নেতৃত্বে যে সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালনা করে এবং শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হয় সেই সশস্ত্র-সংগ্রামে সত্র্কিয় অংশগ্রহণ করেন প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের। জাপানি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এই সংগ্রাম শুরু হলেও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সমাপ্তির শেষদিকে জাপানের পরাজয়ের পর হল্যান্ড পুনরায় ইন্দোনেশিয়ায় ঔপনিবেশিক শাসন কায়েম করে। কিন্ত্ত স্বাধীনতা-সংগ্রাম অব্যাহত থাকে এবং প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের চালিয়ে যেতে থাকেন তাঁর সশস্ত্র অংশগ্রহণ। এই অবস্থায় ওলন্দাজদের হাতে বন্দি হয়ে ১৯৪৯ পর্যন্ত প্রায় দুবছর তিনি জেল খাটেন। কিন্ত্ত দুর্ভাগ্য এই যে সুকার্নোর স্বাধীন ইন্দোনেশীয় সরকার এরপরও তাঁকে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে জেলে পুরে রাখে আরো অনেক দিন। ওলন্দাজদের হাতে জেলখাটা তাঁর এই অভিজ্ঞতাসিঞ্চিত রস নিয়ে তিনি জেলে বসে রচনা করেন তাঁর দ্বিতীয় 888sport alternative link Fugitive বা ফেরারী। ১৯৫০ সালে ইন্দোনেশিয়ায় প্রকাশিত এই 888sport alternative link বলতে গেলে একপ্রকার রাতারাতিই তাঁকে লেখক হিসেবে অত্যন্ত খ্যাতিমান করে তোলে। কিন্ত্ত এ বই ইংরেজিতে অনূদিত হয় অনেক দেরিতে, ১৯৯০ সালে, বুরু কোয়ার্টেট বা বুরু 888sport alternative link চতুষ্টয়ের অন্তত তিনখানা ইংরেজি 888sport app download apk latest versionে প্রকাশিত হয়ে পাশ্চাত্যে তথা সমগ্র বিশ্বের 888sport live footballমোদী মহলে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পরে।
The Fugitive বা ফেরারী নামক তাঁর এই 888sport alternative link আকর্ষণীয়, গল্পের গাঁথুনি ঘন-সন্নিবদ্ধ; এবং কাহিনীর টান টান উত্তেজনা অনেকটাই পাঠককে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। জাপানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা-সংগ্রামে সহযোগীর বিশ্বাসঘাতকতায় ব্যর্থ এক প্লাটুন কমান্ডারের কাহিনী এই 888sport alternative linkের উপজীব্য। দুর্ভাগ্যক্রমে, আমিও বুরুর 888sport alternative link চতুষ্টয় পড়ার পরে পড়েছি এই বইখানি। সুতরাং সুলিখিত 888sport alternative link হলেও এটি আন্তর্জাতিক মাপে কোনো প্রথমশ্রেণির 888sport alternative link নয়, একথা বলবোই, বিশেষত তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ 888sport alternative linkের তুলনায় কিছুটা হালকা তো বটেই।
এর পূর্বে প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু লেখা পড়ে তাঁর ব্যক্তি ও লেখকজীবন সম্পর্কে যে খণ্ডিত একটি চিত্র পেয়েছিলাম, ১৯৯৯ সালে উইলেম স্যামুয়েলস-এর 888sport app download apk latest version ও সম্পাদনায় একখ-ে প্রকাশিত পূর্বোল্লিখিত তাঁর 888sport sign up bonusকথা পড়ে সেই চিত্রটি একটি পরিপূর্ণ অবয়ব লাভ করেছে বলা যায়। এই 888sport sign up bonusকথাও আরেক কাহিনীর জন্ম দেয়। বুরু দ্বীপে নির্বাসনে থাকার সময়ে প্রথম দিকের বছর চারেক পড়ার কোনো বই বা কাগজ এবং লেখার কাগজ-কলম তাঁকে দেওয়া হয়নি। তারপর ১৯৭৩ সালে তাঁর নির্বাসন-দ্বীপ বুরুতে পরিদর্শনে আসা জেনারেল সুমিত্র তাঁকে কাগজ-কলম দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং হঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন যে কর্তৃপক্ষের কাছে রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কোনো লেখা বিবেচিত হলে কেবল যে লেখা ও লেখার সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হবে তা-ই নয়, বরং পরবর্তীতে যে-কোনো সেনাদল কারণ ব্যতিরেকেই এগুলো তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে এবং সম্ভবত নেবেও।
যাহোক, লেখার সরঞ্জাম পাওয়ার পর তিনি ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, নিজের প্রথম সন্তান, মেয়ে পূজারশ্মি, শেষ সন্তান, ছেলে যুধিষ্ঠিরকে চিঠি লিখেছেন, আরো লিখেছেন বর্ণনা আকারে অনেকগুলো অধ্যায়। হারিয়ে যাবে কিংবা অন্য কোনো কারণে গন্তব্যে কখনো পৌঁছুবে না- এই সব বাস্তবভিত্তিক আশংকায় ঐ সকল চিঠি কখনো পাঠানো হয়নি। নির্বাসন-দ্বীপের খবরদারিত্বে নিয়োজিত পালাক্রমে বদলি হয়ে আসা বিভিন্ন সেনাদলের শ্যেনদৃষ্টি এড়িয়ে বিভিন্নভাবে লুকিয়ে যে-সমস্ত লেখা গোপনে বাইরে পাচারের মাধ্যমে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে তা দিয়ে দুখ-ে বাহাসা ইন্দোনেশিয়াতে (ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রভাষা) ১৯৯৫ ও ১৯৯৭ সালে তাঁর 888sport sign up bonusকথা প্রকাশিত হয়। ভাগ্যিস, ঐ লেখাগুলো বাইরে পাচার করা গিয়েছিল। কারণ ১৯৭৯ সালে নির্বাসনের দ্বীপ বুরু ছেড়ে যখন তিনি 888sport app কয়েদির সাথে জাকার্তা আসেন তখন তাঁর সমস্ত লেখাসহ অন্য সবকিছু বাজেয়াপ্ত করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে সুহার্তোর নিপীড়ক সামরিক শাসনের অবসান হয়ে বর্তমানে প্রেসিডেন্ট সুকার্নোর মেয়ে মেঘবতী সুকার্নোপুত্রী ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট। কিন্ত্ত প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের গৃহবন্দিত্ব ঘোচেনি এবং তাঁর সমস্ত লেখা এখনো ইন্দোনেশিয়ায় নিষিদ্ধ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, ধর্মযাজক ইত্যাদির মাধ্যমে বাইরে পাচার করা লেখা দিয়ে যে দুখ- 888sport sign up bonusকথা প্রকাশ করা হয় তারই অংশবিশেষ দিয়ে ইংরেজিতে এই এক খ- 888sport sign up bonusকথা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রামিদ্যর ছেলেমেয়েদের পূর্বোক্ত নাম নিয়ে সাধারণ পাঠকের মনে এক ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হতে পারে। ব্যক্তিনাম মূলত কোনো বিশেষ দেশের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত অবস্থানের এক ধরনের প্রতিফলনের ঐতিহ্য বহন করে। অন্যত্র আমি এ নিয়ে আলাপ করেছি। তবুও এখানে সংক্ষেপে একটু বলছি। ইতিহাসের অগ্রযাত্রার পথে পৃথিবীর অনেক স্থানে পুরানো সভ্যতা-সংস্কৃতি ছাপিয়ে স্থান করে নিয়েছে নতুন সভ্যতা, নতুন সংস্কৃতি। কিন্ত্ত নতুন ঐ সভ্যতা বিজয়ী হয়ে বিজিতও হয়েছে আবার পুরানো সভ্যতার কাছে, প্রধানত তার সংস্কৃতির হাতে। এর ভূরিভূরি উদাহরণ পৃথিবীর চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। খ্রিষ্টীয় অর্থে ভগবানবিহীন গ্রিক ও রোমান সভ্যতা হটিয়ে দিয়ে প্রায় সমস্ত ইউরোপে স্থান করে নিয়েছে খ্রিষ্টধর্ম তথা সভ্যতা। কিন্ত্ত পরবর্তীকালে গ্রিস ও রোমের দেব-দেবী, 888sport live chat-888sport live football-সংস্কৃতি ইউরোপীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তেমনিভাবে, আংশিক আরব বণিক, কিন্ত্ত মূলত পশ্চিম ভারতের গুজরাতি মুসলমান ব্যবসায়ীদের সংস্পর্শে এসে একাদশ-দ্বাদশ শতকে হিন্দু-বৌদ্ধ ইন্দোনেশিয়া প্রধানত ইসলামি দেশ হয়ে গিয়েছে, যদিও সাধারণভাবে সেখানে হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা আছেন এবং বালির মতো দ্বীপে এখনো হিন্দুরা 888sport free betগরিষ্ঠ হিসেবে আছেন। তবুও প্রধানত মুসলিম দেশ হয়ে যাওয়ায় সেখানে ধর্মীয় রেষারেষি আর নেই, যেমন নেই সার্বিকভাবে ইউরোপে। সে কারণে ইউরোপের ধাঁচে, ইন্দোনেশীয়রা অতি সহজেই মহাভারতের পৌরাণিক পাখি গরুড়ের নামানুকরণে তাদের জাতীয় বেসরকারি বিমান সংস্থার নাম রাখতে পেরেছেন Garuda (গরুড়)। প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের গর্বের সাথে তাঁর সন্তানকে জানাতে পারেন যে তিনি জগদীশ চন্দ্র বসু সম্পর্কে পড়েছেন এবং অনেক লেখা পড়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছেলের নাম কেন যুধিষ্ঠির রেখেছেন তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মহাভারতের পঞ্চপা-বের কথা বলেন তিনি। অথচ, ধর্মবিশ্বাসে প্রামিদ্য মুসলমান। আর এক্ষেত্রে তিনি একাই নন। ইন্দোনেশিয়ায় হরহামেশাই লক্ষ করা যায় নামকরণের এই অবস্থা।
আমাদের এই উপমহাদেশে অত্যন্ত ঋদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী হিন্দু ধর্ম-সভ্যতার সাথে যে সাংস্কৃতিক সংঘাত শুরু হয় আপোসহীন ও স্বকীয়তায় গভীর বিশ্বাসী ইসলামের তা এখনো একেবারেই জীবন্ত। এর যে কোনো একটি সভ্যতা অন্যটির কাছে পরাজয় স্বীকার করলে পরাজিতের সমৃদ্ধশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিজয়ীর ঐতিহ্যের অংশ হয়ে যেতে পারত ধীরে ধীরে। তা না হবার কারণে উভয়েই অতিমাত্রায় আত্মসচেতন ও স্পর্শকাতর; কিছুতেই হার মানবে না প্রতিপক্ষের কাছে। তাই উভয় সভ্যতার ধারকগণ নিজস্ব চালচলন, আচার-আচরণ, নামকরণ, এমনকি পোশাক-আশাকে স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার চেষ্টা করেন সযতœ প্রয়াসে। সে কারণে সাধারণভাবে এই উপমহাদেশে কোনো মুসলমান নাম যুধিষ্ঠির কিংবা হিন্দু মেয়ের নাম সাঈদা (প্রামিদ্যর মায়ের নাম) কল্পনা করা অসম্ভব। চলমান ইতিহাস উপমহাদেশের এই দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধর্মসম্প্রদায়কে নিয়ে শেষ পর্যন্ত কোথায় দাঁড় করাবে তা ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদ-সমাজতত্ত্ববিদই শুধু দেখবেন আর বিচার বিশ্লেষণ করবেন, আমাদের পক্ষে সে সম্পর্কে যুক্তিগ্রাহ্য ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব হবে না।
যাহোক, স্বাধীনতার পর প্রেসিডেন্ট সুকার্নোর সময় ১৯৬০ থেকে ১৯৬১ পর্যন্ত বছর খানেকের মতো জেলে অন্তরীণ থাকলেও সুকার্নোর সাথে প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের সম্পর্ক বেশ মধুরই ছিল বলতে হবে। ঐ সময় ইন্দোনেশীয় লেখক সংঘের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন প্রামিদ্য, মিশর ও জাপানসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে 888sport live football সম্মেলনে যোগ দিতে বহুবার বিদেশে গিয়েছেন। সে সময়ে তিনি সমগ্র ইন্দোনেশিয়ার কেবল প্রধানতম লেখকই নন, তখন পর্যন্ত প্রকাশিত তাঁর নানা গল্প-888sport alternative link, 888sport live ইত্যাদি পৃথিবীর বহু ভাষায় অনূদিত হয়ে তাঁর আন্তর্জাতিক খ্যাতিও পৌঁছেছিল প্রায় ঈর্ষণীয় পর্যায়ে। তারপর ইন্দোনেশিয়ার ভাগ্যে যে কালো যবনিকা নেমে আসে তা প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের সমস্ত জীবনকেও আবৃত করে ফেলে।
১৯৬৫ সালের শেষদিকে আমরা সবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। তখনকার 888sport appয় খুব সীমিত আকারে টেলিভিশনও কেবল চালু হয়েছিল কিছুকাল পূর্বে। বহির্বিশ্বের খবরাখবর জানার জন্য সংবাদপত্রই তখন আমাদের একমাত্র ভরসা। সংক্ষিপ্ত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ফলে আমাদের তরুণমনে উথলে ওঠা আবেগময় দেশপ্রেম অল্পকালের মধ্যেই হতাশার রূপ নেয়। কারণ ঐ যুদ্ধের পরপরই তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানের 888sport appsের) অসহায়ত্ব ও বর্তমানের পাকিস্তানের সাথে তার অর্থনৈতিক অসাম্য সম্পর্কেও আমরা সচেতন হয়ে উঠি। এই সময় তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রবক্তা হিসেবে সুকার্নো ঘন ঘন আসতে থাকেন সংবাদে। ইন্দোনেশিয়া সম্পর্কে আমাদের আগ্রহও অনেক বেড়ে যায়। তারপর হঠাৎই একদিন সকালে খবর-কাগজের এমাথা-ওমাথা জোড়া শিরোনামে অত্যন্ত ব্যথিতচিত্তে দেখলাম ইন্দোনেশিয়া সংক্রান্ত দুঃসংবাদ। অচিরেই আমাদের পরিচিত ইন্দোনেশিয়া, ভালোবাসার ইন্দোনেশিয়া, হারিয়ে গেল এক প্রচ- রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের আবর্তে। তখনো পর্যন্ত নামমাত্র ক্ষমতায় অবশ্য সুকার্নো টিকে ছিলেন।
ঐ ১৯৬৫ সালের ১৩ অক্টোবর। ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে খ্যাতনামা লেখক প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের নিজ বাড়ির পাঠাগারে বসে সন্ধ্যার পর একটি গল্প সংকলন সম্পাদনার কাজে ব্যস্ত। না, এ সংকলনটি তাঁর নিজের নয়। অশান্ত ইন্দোনেশিয়ার তখনো পর্যন্ত টিকে থাকা রাষ্ট্রপতি সুকার্নোর ছদ্মনামে লেখা ঐ সংকলনটি। বাড়িঘর নিস্তব্ধ। তাঁর ওপরও আক্রমণ হতে পারে- জনৈক বন্ধুর নিকট থেকে এমন সতর্কবাণী পাবার পর অপ্রয়োজনীয় কোনো প্রকার ঝুঁকি না নিয়ে প্রামিদ্য তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার ছেলেমেয়েদের বেলাবেলি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দিয়েছেন। চার মেয়ের কেউই তখন কোনো বায়না নিয়ে আসবে না তাঁর কাছে, কিংবা তিন মাস বয়সী তাঁর কনিষ্ঠ ছেলে যুধিষ্ঠিরের কান্নাকাটিরও কোনো আওয়াজ নেই বাড়িতে। বাড়ির বাইরের দরজা, প্রবেশের প্রধান ফটক ভালো করে তালাবদ্ধ। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাইরে লোকের হইচই শুনে জানালা খুলে প্রামিদ্য দেখলেন যে মুখোশপরা একদল লোক তাঁকে গালাগালি করতে করতে বাড়ি লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়ছে এবং ইতোমধ্যে জানালার বেশ কটি কাচ ভেঙেছে তারা। দুর্দান্ত সাহসী প্রামিদ্য তাঁরই মালিকানার লম্বা একখানি জাপানি তলোয়ার নিয়ে দরজা খুলে উচ্ছৃঙ্খল হামলাকারীদের মধ্যে এসে তাদের চ্যালেঞ্জ করলেন। বললেন, সাহস থাকে তো মুখোশ খুলে ফেলে সামনে এসে দাঁড়াও। বিস্ময়ের সাথে তিনি লক্ষ করেন যে ঐ দলটির প্রত্যেকের হাতেই চাকু, ছোরা, তলোয়ার ইত্যাদি ধারালো অস্ত্র রয়েছে। কিন্ত্ত তা সত্ত্বেও সামনে এগিয়ে এসে তাঁর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে কেউ মুখোশও খুলল না, কিংবা দৈহিকভাবে তাঁকে আক্রমণও করল না। কিন্ত্ত তাঁকে গালাগালি দেওয়া এবং বাড়ির ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ অব্যাহত রাখল তারা। এরই মধ্যে জনাকয়েক পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য এসে তাঁকে জানাল যে তাঁর নিজের নিরাপত্তার জন্য তারা তাঁকে নিয়ে যেতে এসেছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তিনি সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। বিদেশ থেকে লেখাপড়াশেষে সদ্য ফিরে আসা তাঁর ছোট ভাই ছিলেন পাশের ঘরে। গন্ডগোল টের পেয়ে পাশের বাড়ির দরজা পথে পালাবার চেষ্টা করলে সেই বাড়ির মালিক তাকে নিরস্ত্র করায় তিনি ফিরে এসে ওখানেই অবস্থান করছিলেন। তাকেও তাঁর সাথে নিয়ে রওনা হলো পুলিশ-সামরিক বাহিনীর সম্মিলিত এই দলটি। বিদায় নেবার সময় তাঁর হাজার হাজার বই, পা-ুলিপি ও মূল্যবান কাগজপত্র দেখে রাখার জন্য দারোয়ানদের বললেন তিনি। আরো বললেন যে পুরো পাঠাগারটি যেন রাষ্ট্রের নিকট হস্তান্তর করা হয়। অপেক্ষমাণ মিলিটারি ট্রাকের নিকট পৌঁছার পর তাঁকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে সেই দড়ির ফাঁস গলায় লাগিয়ে দেওয়া হয়। তিনি প্রতিবাদ করলে এক সেনাসদস্য বন্দুক দিয়ে প্রচ- জোরে তাঁর মুখের ওপর আঘাত করতে উদ্যত হলে তিনি মুখ ঘুরিয়ে নেন। ফলে বাঁ কানের ওপর আঘাত লাগে এবং এখনো পর্যন্ত ঐ কানে প্রায় কিছুই শুনতে পান না তিনি। পরবর্তী সময়ে জেলে এবং বুরু দ্বীপে আরো অকথ্য নির্যাতন ও দৈহিক নিপীড়নের ফলে অন্য কানের শ্রবণশক্তিও হারিয়েছেন তিনি। এখন তিনি তাই প্রায় সম্পূর্ণই বধির বলা চলে। যাহোক, তাঁর ভাই ও তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে ট্রাক চলতে শুরু করলে তিনি দেখতে পেলেন যে তাঁর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে মুখোশধারীদের সেই দলটি তার 888sport free bet login সব বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে তাঁর অপ্রকাশিত বইয়ের পা-ুলিপি ও আরো অনেক মূল্যবান কাগজপত্র ছিল।
বলা চলে, ১৯৬৫ সালের ১৩ অক্টোবর যে বন্দিত্ব তাঁর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে আজো পর্যন্ত তা অব্যাহত আছে, যদিও এর মধ্যে, আগেই যেমন বলেছি, সুহার্তোর তিরিশ বছরের চেয়েও দীর্ঘতর সামরিক একনায়কত্বের অবসানশেষে সুকার্নোর মেয়ে মেঘবতী এখন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি। ঐ আটকের পর তিন মাস পর্যন্ত তাঁর পরিবার জানতেই পারেনি কোথায় ছিলেন তিনি এবং ছয় মাসের পূর্বে তাদের সাথে তাঁর দেখার কোনো সুযোগ ঘটেনি। এরপর ১৯৬৯ পর্যন্ত জাভা ও 888sport app দ্বীপের জেলে থাকার পর আক্ষরিক অর্থে দ্বীপান্তরে পাঠানো হয় প্রামিদ্যকে। জাকার্তা থেকে দুহাজার মাইল দূরবর্তী মালাক্কা প্রণালিতে অবস্থিত মোটামুটি বালি দ্বীপের সমান আয়তন বিশিষ্ট বুরু দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয় তাঁকে। জনবসতিহীন, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক অবস্থানের এই দ্বীপে শেষ পর্যন্ত বারো হাজার বন্দিকে নির্বাসন দেওয়া হলেও জাহাজে প্রথম চালানে যে আটশ বন্দিকে এখানে পাঠানো হয় তাদের অন্যতম ছিলেন প্রামিদ্য। 888sport app বন্দির সাথে প্রামিদ্যকে নিয়ে যখন সেখানে নামানো হয় তখন বুরু দ্বীপের এক কোণে সামরিক ছাউনি ছাড়া সমগ্র দ্বীপে জনাকয়েক আদিবাসীর আদিম বাসস্থান ছাড়া সর্বত্রই খা-খা মাঠ, ঘন জঙ্গল কিংবা বিরানভূমি। এক ইঞ্চি চাষের চিহ্ক, এক মিটার রাস্তা বা মানুষের বসবাসের জন্য কোথাও কোনো আশ্রয় সেখানে ছিল না। খুব সামান্য খাবার সামরিক কর্তৃপক্ষ প্রথমদিকে সরবরাহ করে পরে তা-ও বন্ধ করে দেয়। না খেয়ে মারা যায় অনেক লোক আর অনেকে মারা যায় অখাদ্য, কুখাদ্য খেয়ে অসুস্থ হয়ে। স্রেফ বেঁচে থাকার জন্য অবিশ্বাস্য এক সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হয় তাঁকে।
বিরান বুরু দ্বীপে প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের তখন যেন এক রবিনসন ক্রুসো। পার্থক্য এই যে তাঁর সঙ্গে সেখানে ছিল না কোনো ফ্রাইডের মতো হুকুমদাস। 888sport app সহবন্দিসহ তিনিই বরং সামরিক রবিনসন ক্রুসোদের ফ্রাইডে ছিলেন। তবে গল্পের ক্রুসো তার সাহায্যকারী ফ্রাইডের ওপর দৈহিক বা মানসিক নির্যাতন করেনি কখনো, অথচ বুরু দ্বীপের পালাক্রমে বদলি হওয়া সামরিক ক্রুসোগণ প্রামিদ্য ও তাঁর সহবন্দিদের ওপর অবিশ্বাস্য মানসিক নির্যাতনই কেবল করেনি, অধিকন্ত্ত তাদের ওপর রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে বেধড়ক পিটিয়ে বেঁহুশ করে ফেলে রেখে গিয়েছে। কেউ কেউ ঐ নির্যাতনে মারাও গিয়েছে। তার জন্য কোনো জবাবদিহিতা ছিল না কারো কোনোখানে। অবিশ্বাস্য, কিন্ত্ত সত্য। আর এই চৌদ্দ বছর প্রামিদ্য কিংবা তাঁর সহবন্দিদের কখনো বলা হয়নি, কি তাদের অপরাধ; কোনো বিচার হয়নি তাদের, কিংবা আনুষ্ঠানিক জেল বা নির্বাসনও দেওয়া হয়নি। তবুও একটানা চৌদ্দ বছরের প্রথম চার বছর জাভার বিভিন্ন জেলে এবং পরের প্রায় এগারো বছর নির্বাসনের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে থেকেছেন প্রামিদ্য। তিনি এবং সহবন্দিরা মিলে দ্বীপের গাছ কেটে, ভোঁতা সব যন্ত্রপাতি দিয়ে গুঁড়ি বানিয়ে কোনো রকম মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছিলেন তাঁরা। প্রচ- ক্ষুধায় জঙ্গলের সাপ-ব্যাঙ-সজারু-পাখি যা-ই ধরতে পেরেছেন তা-ই খেয়েছেন। নদীর পারে পারে খাবারের আশায় বসে থেকে কিছু একটা ভেসে যেতে দেখে সাঁতরে তা ধরে এনে খেয়েছেন, কখনো কখনো রান্না করে। একদিন নদী থেকে এমনি ধরে আনা একটি জিনিস রান্না করে খেতে গিয়ে আবিষ্কার করেন যে ওটি রবারের মতো, কিছুতেই খাওয়া যায় না। যখন বুঝেন যে ওটা মহিলাদের প্রসবের পরে ফেলে দেওয়া নাড় (Placenta), তখন খাবারের আশা পরিত্যাগ করতে হয়। চাষের জন্য প্রায় খালি হাতে সহবন্দিদের সাথে মিলে তিনি খাল কাটেন, বাঁধ দেন, গাছের ডাল দিয়ে জমি খুঁচিয়ে বীজ বপন করে শস্য ফলান। আর সে বীজ আসে বিদেশী মানবাধিকার কর্মীদের মাধ্যমে চোরাচালানে। বিশ শতকের শেষার্ধে এমন ঘটনা ঘটেছে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখকের ভাগ্যে আমাদেরই নিকটবর্তী ইন্দোনেশিয়ায়। একি ভাবা যায়? সামরিক একনায়কত্বে বোধ হয় সবকিছুই সম্ভব।
প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকার অবিশ্বাস্য সংগ্রাম, খাদ্য যোগাড়ে প্রাণান্তকর পরিশ্রম ও হরহামেশা সেনাসদস্যদের দৈহিক প্রহার সত্ত্বেও প্রামিদ্য কখনো তাঁর অদম্য মনোবল হারাননি। বন্দিত্বের প্রথম আট বছর ও দ্বীপান্তরের প্রথম চার বছর লেখাপড়ার কোনো সুযোগ ছিল না। দ্বীপে না ছিল পানীয় জল না ছিল বিদ্যুৎ। কিন্ত্ত স্রেফ বেঁচে থাকার জন্য অমানবিক পরিশ্রমের পর দিনশেষে সহবন্দিদের নিয়ে বসে অন্ধকারে গল্প শোনাতেন তিনি। ইন্দোনেশিয়ার পুনর্জাগরণের গল্প, জাতি হিসেবে সংগঠিত হওয়ার গল্প। কাহিনী আকারে। অবশ্যই পরিবর্তিত রূপে এই কাহিনী পরে লিখে যে বই দাঁড়ায় তা-ই তাঁর বিশ্ববিখ্যাত বুরু 888sport alternative link চতুষ্টয়। ১৯৭৩ সালে জেনারেল সুমিত্র প্রামিদ্যকে লেখার কাগজ দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও যে-সমস্ত লেখা বিভিন্ন লোকের সহায়তায় চোরাচালানের মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা গেছে সেগুলোই কেবল বেঁচে আছে। আর সব লেখা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে সে কথা আগেই বলেছি। এই 888sport alternative link চতুষ্টয় ভাগ্যিস নির্বাসনোত্তর কালে লিখেছিলেন তিনি। আমি বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করেছি, এই চার-চারটি 888sport alternative linkের কোথাও তাঁর ওপর এই দৃষ্টান্তহীন নির্যাতনের ফলে সৃষ্ট কোনো তিক্ততার ছায়া পড়েনি। এজন্যই 888sport live chatী হিসেবে প্রামিদ্য অসাধারণ। বন্দি হিসেবেও তিনি নিঃসন্দেহে ছিলেন অসাধারণ। সমস্ত ইন্দোনেশিয়ায় তিনি সুপরিচিত, বহির্বিশ্বে খ্যাতিমান। সামরিক একনায়ক সুহার্তো নির্বাচনে তাঁর কাছে চিঠিও লিখেছেন! কিন্ত্ত তবুও অবর্ণনীয় দৈহিক ও মানসিক অত্যাচার! সামরিক শাসন এক কথায় সভ্যতাবিধ্বংসী।
চার খণ্ডে বিভক্ত প্রায় দেড় হাজার পৃষ্ঠার এই সুদীর্ঘ 888sport alternative link খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। ১৯৭৯ সালে বুরু দ্বীপে প্রামিদ্যর নির্বাসন শেষ হবার পর তিনি জাকার্তায় ফিরে এলে প্রথম খণ্ডের পাণ্ডুলিপি বই আকারে প্রকাশিত হয় ১৯৮০ সালে। প্রকাশ করেন লেখকের বন্ধু হালিম রহমান ও ইউসুফ ইসাক। যা হোক, প্রথম এই খণ্ডের নাম Bumi Marussia বা This Earth of Mankind। ইংরেজিতে এই খণ্ড প্রকাশের একটু ইতিহাস আছে। জাকার্তায় তখন অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব Max Lane প্রকাশকদের কাছ থেকে বইটি সম্পর্কে জানতে পেরে ইংরেজিতে 888sport app download apk latest version করে তা অস্ট্রেলিয়ায় প্রকাশ করেন। এ কারণে জাকার্তার সামরিক কর্তৃপক্ষের রোষানলের মুখে অস্ট্রেলীয় সরকার তাঁকে প্রত্যাহার করে নেন। এর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই, ঐ ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় খ- প্রকাশিত হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ইন্দোনেশিয়ায় সর্বোচ্চ বিত্র্কিত বইয়ের তালিকায় উঠে যায়। দ্বিতীয় এই খণ্ডের নাম ইংরেজিতে Child of All Nations । এতে দিশেহারা হয়ে গিয়ে সুহার্তো সরকার ‘মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদশ্ প্রচারক আখ্যা দিয়ে বই দু-খানা বাজেয়াপ্ত করে নেয়, প্রকাশকদের পাঠায় জেলে এবং প্রামিদ্যকে আবার নিজ বাড়িতে অন্তরীণ করে। বইয়ের কোথায় মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ আছে এই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে সামরিকতন্ত্র ঘোষণা দেয় যে প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের এতই দক্ষ ও সুচতুর লেখক যে কোথাও সুস্পষ্টভাবে সাম্যবাদের কথা না বলে এই বইয়ের মাধ্যমে গোপনে সাম্যবাদ ছড়াচ্ছেন! হাস্যকর কিন্ত্ত নিষ্ঠুর এই সামরিক বাস্তবতা! তারপর তৃতীয় ও চতুর্থ তথা সর্বশেষ খণ্ড, Footsteps I House of Glass প্রকাশিত হয় যথাক্রমে ১৯৮৫ ও ১৯৮৮ সালে। এ বই দু-খানা যথাক্রমে ১৯৯০ ও ১৯৯২ সালে ইংরেজি 888sport app download apk latest versionে প্রকাশ করেন খতঃ কতশন-ই। এরপর পৃথিবীর প্রায় তিন ডজনেরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়ে প্রামিদ্য এক ব্যাপক পরিচিতি পান ও 888sport apk download apk latest versionর আসন দখল করেন সমস্ত পৃথিবীর 888sport live footballমোদী মহলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের কেন তাঁর নিজ দেশে নিষিদ্ধ এবং ব্যক্তিগতভাবে কেন তিনি নিজে এখনো গৃহবন্দি?
তিরিশটিরও বেশি 888sport alternative link, গল্প-সংগ্রহ, 888sport live, নাটক ইত্যাদি বই প্রকাশিত হয়েছে প্রামিদ্যর। আমি তার মধ্যে বুরু 888sport alternative link চতুষ্টয়, The Fuglitive, The Girl From the Coast 888sport alternative link ছয়টি ও তাঁর 888sport sign up bonusকথা The Mute’s Soliloh়yus মাত্র পড়েছি। তবে শেষোক্ত বইখানি পড়ার কারণে তাঁর ব্যক্তি, সামাজিক, রাজনৈতিক ও লেখকজীবন সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছি। খানিক পূর্বেই যেমন আলোচনা করা হয়েছে, নিজদেশ ইন্দোনেশিয়ায় প্রামিদ্যর বই নিষিদ্ধ এই কারণে যে সামরিক জান্তা এবং তার উত্তরসূরি সরকারও তাঁর লেখা সাম্যবাদ প্রচার করে বলে অভিযোগ করে, যদিও তারা তা প্রমাণ করতে পারছে না। তাঁর লেখার কোনো বিষয় বা ধরন সামরিক জান্তা ও উত্তরসূরি সরকারের নিকট আপত্তিজনক মনে হতে পারে তা নিজেও আমি আমার সীমিত পাঠের মধ্যে খুঁজেছি। এ খোঁজায় তাঁর 888sport alternative linkের চেয়ে আত্ম888sport sign up bonusই বেশি সহায়ক বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।
১৯৬৫ সালে ইন্দোনেশিয়ায় যে সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়ে জেনারেল সুহার্তো ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন, সেই অভ্যুত্থানের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা গণ্য করেছে ইন্দোনেশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি বা চকও-কে, যদিও জাতীয়তাবাদী দল ও শক্তিও সামরিক শক্তির ক্রোধ থেকে তেমন একটা রেহাই পায়নি। কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যাদের কোনো রকম সংস্রব পাওয়া গেছে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে তাদের, কখনো কখনো গোটা পরিবার। মাসের পর মাস হাজার হাজার দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এই দেশটির এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে, এক শহর থেকে আরেক শহরে, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে হত্যাকারীদের উন্মাদপ্রায় দল সব রকমের অস্ত্র ব্যবহার করে যুবা-বৃদ্ধা-কিশোর-বালক-বালিকা নির্বিশেষে বিপক্ষের লোককে হত্যা করেছে। খাল-বিল-মাঠ প্রান্তর মানুষের স্তূপীকৃত মৃতদেহে অগম্য হয়েছে, অসহ্য দুর্গন্ধে জীবিতদের জীবনও হয়েছে অত্যন্ত দুঃসহ। পনেরো লাখের চেয়ে বেশি লোক এমন নির্বিচার গণহত্যার শিকার হয়েছে বলে হিসাব করা হয়েছে। কারাগার ও নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল আরো প্রায় দশ-পনেরো লাখের মতো লোক। সেখানে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে খাবার সরবরাহ করা হতো না। সুতরাং যে বন্দির পরিবার জানত না তাদের নিরুদ্দেশ সদস্য বন্দি কোথায় এবং অসংখ্য ক্ষেত্রেই এমন হয়েছে, সেই বন্দি অনেক সময়ই স্রেফ খাবারের অভাবে জেলে বা নির্বাসনে মারা গিয়েছে। এমনি যে কত লোক নিশ্চিহ্ক হয়েছে তার হিসাব কোনোদিনই জানা যাবে না। ইন্দোনেশিয়ায় এই অশুভ জাতীয় উন্মাদনা শুরু হয় ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫ রাতে আটজন জেনারেলের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। এর একেবারে প্রথম দিকে, ১৩ অক্টোবর রাতে, আগেই যেমন বলা হয়েছে, পুলিশ ও সৈন্যদের একটি সম্মিলিত দল উঠিয়ে নিয়ে যায় প্রামিদ্যকে। সেই থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই সুদীর্ঘকাল ধরে কমিউনিস্ট পার্টির সাথে তাঁর কোনো সংগ্রহ তারা খুঁজে বের করতে পারেনি। তাঁর 888sport sign up bonusকথা থেকেও আমরা জানতে পারি যে তিনি কখনো কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হননি, যদিও লেখক হিসেবে তাঁর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অবস্থান বিদ্বৎ-সমাজে তাঁকে নিঃসন্দেহে প্রথম সারির একটি স্থান করে দিয়েছিল সামরিক অভ্যুত্থানের অনেক পূর্বেই। সে কারণেই আমরা দেখি যে তিনি 888sport live football সম্মেলনে বহু দেশে গিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট সুকার্নো তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তাঁকে প্রাম (ঙক্ষতল)-এই সংক্ষিপ্ত নামে ডাকতেন তিনি। আমরা এ-ও দেখি যে মরণদ্বীপ বুরুতে নির্বাসিত থাকা অবস্থায় সামরিক জান্তা প্রধান সুহার্তোও তাঁকে চিঠি লেখেন। আমরা অবশ্য জানতে পারি যে প্রামিদ্য উদার মানবতাবাদী এবং কমিউনিস্ট না হলেও, 888sport live chatীর সহজাত গুণে সমাজের নিপীড়িত, দুস্থজনের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাঁর 888sport alternative linkে, গল্পে, সম্ভবত নাটকে, 888sport liveেও এই সহানুভূতির প্রকাশ পেয়ে থাকবে। কিন্ত্ত একমাত্র চরম বর্বর শাসনামল ছাড়া এমন লেখা নিষিদ্ধ হবার কোনো কারণ থাকতে পারে না। ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন স্তর ও শ্রেণির যে সমস্ত লোকের সাথে আমার মেলামেশা করার সুযোগ হয়েছে তাতে সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছি যে তাঁরাও উদার গণতন্ত্রকামী, ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ। সুতরাং অগণতান্ত্রিক শাসক-শক্তি অন্যায়ভাবেই প্রামিদ্য ও তাঁর লেখার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে।
প্রামিদ্যর বাল্য ও পারিবারিক জীবনেও অস্বাভাবিক কিছু পাইনি আমরা। গত শতাব্দীর বিশের দশকের উপনিবেশপূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের জাভা দ্বীপের পূর্বদিকের ছোট্ট শহর ব্লোরায় নিম্ন মধ্যবিত্ত স্কুল-শিক্ষক বাবার প্রথম সন্তান প্রামিদ্য। সেখানের স্কুল-ফাইনাল পাশ করে সুরাবায়া শহরে গিয়ে রেডিও মেকানিকের কাজ শেখেন তিনি। এদিকে স্কুল-শিক্ষক বাবা এক ধরনের রাজনীতিবিদ ও সমাজ সংগঠকও ছিলেন। তিনি তাঁর অঞ্চলের লোকজন সংগঠিত করে তাদেরকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্দীপিত করার চেষ্টা করেছেন এবং তাতে সফলকামও হয়েছেন আংশিকভাবে। তাঁর বাবা গানও লিখেছেন এবং তাঁর সে-সব গানের কিছু কিছু এখনও যথেষ্ট জনপ্রিয়। বাবার চেয়ে অবশ্য মায়ের সাথে ঘনিষ্ঠতা প্রামিদ্যর বেশি ছিল। সত্য বলতে কি, নিকটে অথবা দূরে যেখানেই থাকেন না কেন, মা সাঈদা প্রামিদ্যকে সব সময়ই প্রভাবিত করেছেন, একথা বলেছেন প্রামিদ্য নিজে।
মুক্তিসংগ্রামের সময় ব্লোরা শহরের জেলে থাকার সময় স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে এক যুবতী তাঁর সাথে দেখা করতে আসতেন। জেল থেকে ছাড়া পাবার তাঁকেই বিয়ে করেন তিনি। কিন্ত্ত তিনটি সন্তান ও বেশ কশ্বছরের সহাবস্থানের পর ভেঙে যায় সে বিয়ে। পরে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তিনি। এখানেও চার মেয়ে ও এক ছেলে আছে। বর্তমানে এই দ্বিতীয় স্ত্রী-ই তাঁর সঙ্গে আছেন। প্রামিদ্যর এই প্রায় গৎবাঁধা জীবনে অস্বাভাবিকতা কোথাও দেখা যায়নি।
তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত 888sport live footballকর্ম বুরু 888sport alternative link চতুষ্টয়ের প্রথম দু-খানা জাকার্তায় প্রকাশের পর তাঁর সমস্ত লেখা ইন্দোনেশিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়, তাঁকে অন্তরীণ করা হয় এবং তাঁর প্রকাশক-বন্ধুদেরও বিনাবিচারে জেলে পুরে রাখা হয়েছে, একথা আগেই বলেছি। কিন্ত্ত আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে 888sport live chatীর সহজাত প্রবৃত্তিবশে নির্যাতিতের প্রতি যে সহানুভূতির কথা পূর্বে বলেছি ঐ বই চারখানিতে তার ছিটেফোঁটাও আমি খুঁজে পাইনি। আর কমিউনিজম তো এত বছর ধরে তন্ন তন্ন করে খুঁজে সামরিক জান্তাও পায়নি। তাহলে? কিন্ত্ত নির্যাতিতের প্রতি 888sport live chatীসুলভ স্বাভাবিক সহানুভূতি নেই সে কেমন 888sport live chatকর্ম? আমার মতে এই না থাকা, এই সস্তা আবেগ-প্রবণতার অনুপস্থিতিই, প্রামিদ্যর এই 888sport alternative link-চতুষ্টয়কে বিশ্ব888sport live footballের যে কোনো 888sport alternative linkের উপরে না হলেও, অন্ততপক্ষে সমান স্তরে উঠিয়ে দিয়েছে। লেখক হিসেবে প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের এখানেই শ্রেষ্ঠত্ব, হ্যাঁ, অমরত্বও, অবশ্য অমরত্ব বলতে এই নশ্বর পৃথিবীতে যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে।
বহু নরগোষ্ঠী, স্থানীয় বুলি ও আদিম ধর্মবিশ্বাসী লোকসংবলিত হাজার হাজার দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এই ভৌগোলিক ভুল নামে পরিচিত পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের ওলন্দাজদের ঔপনিবেশিক শোষণ ও শাসনের চাপে ধীরে ধীরে ইন্দোনেশিয়া নামে একটি দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করা এবং বিশ শতকের একেবারে গোড়ার দিক থেকে ধীরে ধীরে সেখানে ওলন্দাজদের চিনিকল স্থাপনের মধ্য দিয়ে আখচাষের প্রবর্তন ও সামন্তবাদী নিষ্পেষণের কারণে ইন্দোনেশীয় জাতীয়তাবাদের উন্মেষ- 888sport alternative link চতুষ্টয়ের এই হচ্ছে প্রধান উপজীব্য। 888sport app প্রধান কয়েকটি দ্বীপের ঘটনার বর্ণনা এবং অভিঘাত কাহিনীতে থাকলেও মূলত জাভা দ্বীপকেন্দ্রিকই 888sport alternative linkের মূল কাহিনী আবর্তিত। 888sport live chatী সহানুভূতিশীল হতে পারেন, কিন্ত্ত ইতিহাস নৈর্ব্যক্তিক, নির্মম ও নির্মোহ। আর এক অবিশ্বাস্য এবং প্রায় মানব-অসাধ্য নৈর্ব্যক্তিক নির্মোহে ইতিহাসের এই ধারা প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর আয়ক্ষয় চয়তক্ষঢ়নঢ়-এর চারখানা 888sport alternative link মিলিয়ে একটি ঘন-সন্নিবদ্ধ কাহিনীতে। এই 888sport alternative link চতুষ্টয় রচনার জন্য ১৯৬০ থেকে ১৯৬৫ সালের ১৩ অক্টোবর সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হবার পূর্ব পর্যন্ত গবেষণা চালিয়ে অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছিলেন তিনি, তৈরি করেছিলেন অনেক নোট, টিকা ইত্যাদি। কিন্ত্ত ১৩ অক্টোবর রাতে তা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। মিলিটারির ট্রাকে বন্দি অবস্থায় যেতে যেতে তা তিনি নিজ চোখে দেখেছেন। তারপর জন্মভূমি জাভা দ্বীপ থেকে দুহাজার মাইল দূরের সম্পূর্ণ বিরান বুরু দ্বীপে স্রেফ বেঁচে থাকার জন্য অমানুষিক শারীরিক পরিশ্রমশেষে আলোহীন রাতের মশা ভনভনানো অন্ধকারে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর সহবন্দিদেরকে তাৎক্ষণিক গল্পের আকারে মৌখিকভাবে তিনি শুনিয়েছেন এই কাহিনী তাঁর সংগৃহীত ঐতিহাসিক উপাদানের ভিত্তিতে। চৌদ্দ বছর পরে জাভায় ফিরে এসে স্রেফ 888sport app download for androidশক্তির উপর নির্ভর করে তারপর রচনা করেছেন প্রায় দেড় হাজার পৃষ্ঠার এই সুদীর্ঘ চারখ-ব্যাপী 888sport alternative link। বিশ্ব888sport live footballের ইতিহাসে এ সম্ভবত এক অনন্য ঘটনা। কোনো দেশে, কোনো 888sport live footballে, কোনোকালে এমনটি হয়েছে বলে আমার অন্তত জানা নেই।
কোনো 888sport alternative linkের আলোচনা কিংবা মূল্যায়ন করতে বসলে তার কাহিনী-সংক্ষেপের বর্ণনা দেয়া প্রায় একটা রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রীতি হিসেবে এটা যে খুব অপছন্দনীয় তা বলছি না। উপস্থাপিত মূল্যায়ন অনুধাবনে এ ব্যবস্থা বরং সহায়ক হয় বলে আমার ধারণা। প্রামিদ্যর বুরু 888sport alternative link চতুষ্টয়ের কাহিনী-সংক্ষেপও, আমার আশঙ্কা, এত সুদীর্ঘ হবে যে তার উপস্থাপন সমীচীন হবে বলে মনে হয় না। তবুও কাহিনী-সংক্ষেপের ইঙ্গিতময় উপস্থাপনা হলেও কিছুটা বলা প্রয়োজন মনে করি।
আমরা পূর্বেই বলেছি, জাতি হিসেবে আধুনিক ইন্দোনেশিয়ার আত্মপ্রকাশ এবং তারই সাথে সাথে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ও বিকাশ এই 888sport alternative link চতুষ্টয়ের প্রধান বিষয়বস্তু। ১৮৯৮ সানে মিনকে (খভশযন) নামক এক জাভা অধিবাসী কিশোরের ওলন্দাজ স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে এই কাহিনীর শুরু এবং অনেকটা যেন তার জীবনের সাথে সাথেই কাহিনীও বেড়ে চলে। মিনকে নামটিও আসল নয়। মূলত ওলন্দাজ, জাভার সামন্ত পরিবার এবং শঙ্কর বর্ণের দু-চারজন ছাত্র সমন্বয়ে যে ওলন্দাজ স্কুল চলছিল জাভায় সেখানে মিনকে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল অত্যন্ত ভালো ছাত্র এবং মূলত সামন্ত পরিবারের সন্তান হবার কারণে। কিন্ত্ত উন্নাসিক সহপাঠীদের মুখে মিনকে বলে সেই যে তার নামের বিকৃতি ঘটল প্রথম দিনেই, 888sport alternative linkের শেষ পর্যন্ত তা-ই থেকে গেল। সেখানে মেধার স্বীকৃতি পেলেও শেষ পর্যন্ত বহিষ্কৃত হতে হয় তাকে ঐ স্কুল থেকে। এবার নিজ গ্রামে ফিরে না গিয়ে অন্য শহরে চলে যায় মিনকে, মেসের মতো একটা জায়গায় থেকে পড়াশোনা শুরু করে অন্য আরেক স্কুলে। যোগাযোগ ঘটে জাভা-বংশোদ্ভূত নিয়াই অন্তোসরোহ নামে এক প্রাক্তন ওলন্দাজ নাবিকের উপপত্নীর সাথে। অদ্ভুত ব্যক্তিত্ব, অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণ ও অবিশ্বাস্য দক্ষতাসম্পন্ন এই মহিলার আকর্ষণে শেষ পর্যন্ত নিজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সেখানে বসবাস করা শুরু করে মিনকে এবং অবশেষে এই ওলন্দাজ-উপপতœীর মেয়ে অ্যানেলিসকে বিয়ে করে। অত্যন্ত সুখের হলেও খুবই সংক্ষিপ্ত হয় এই বিয়ের আয়ুষ্কাল। উদ্ভট ঔপনিবেশিক আইনের জোরে জাভা-বংশোদ্ভূত উপপতœীর শঙ্কর কন্যা অ্যানেলিস তার স্বামী মিনকে, মা নিয়াই অন্তোসরোহ, আলোকপ্রাপ্ত সমস্ত জাভাবাসী ও সর্বোপরি, তার নিজের সম্পূর্ণ অনিচ্ছায় মারাত্মক শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক হয়ে যেতে বাধ্য হয় হল্যান্ডে। ঔপনিবেশিক আইন মিনকের সাথে তার বিয়েরও স্বীকৃতি দেয়নি। জাভার সর্বোচ্চ আদালতেরই এই সিদ্ধান্ত। প্রায় বেহুঁশ অ্যানেলিসকে যখন আমস্টার্ডামগামী জাহাজে তোলা হয় জড়ো হওয়া প্রতিবাদী জনতার মধ্য দিয়ে সামরিক প্রহরায়, মিনকেও তখন সেই জাহাজে ওঠে। হল্যান্ডে গিয়ে আত্মীয়-পরিজনহীন সহজবোধ্য দুরবস্থায় অল্পদিনের মধ্যেই মারা যায় অ্যানেলিস। তারপর অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হূদয়ে আবার জাভায় ফিরে আসে মিনকে। এবার শুরু হয় তার তথা নবজাগ্রত ইন্দোনেশিয়ার জীবনের আরেক নতুন অধ্যায়।
তার পূর্বে অবশ্য বর্তমানে অতিমাত্রায় মদাসক্ত ও প্রাক্তন ওলন্দাজ নাবিকের উপপতœী নিয়াই অন্তোসরোহর জীবনকাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে লেখক ঔপনিবেশিক বর্বরতার এমন এক নগ্নচিত্র তুলে ধরেছেন যে তা পাঠ করলে যে কোনো লোকেরই রাগে গা জ্বলে উঠবে। জাভায় তখন ব্যাপক আখচাষ ও শতকরা একশ ভাগ ওলন্দাজ মালিকানার চিনিকল তা থেকে চিনি উৎপাদিত হয়ে হল্যান্ডসহ সমস্ত বিশ্বে তা রপ্তানি হয়ে মশলা দ্বীপের পাশাপাশি চিনির দ্বীপ হিসেবেও জাভাকে সব দিকে পরিচিত করে তুলেছে। আমাদের দেশে ব্রিটিশ উপনিবেশের এক পর্যায়ে নীলচাষের মতো আখচাষের ক্ষেত্রেও চাষিকে দাদন দেওয়া, প্রত্যেকটি চিনিকলের পশ্চাদ্ভূমি হিসেবে বিবেচিত বিস্তীর্ণ এলাকায় বাধ্যতামূলক আখচাষের প্রবর্তন ইত্যাদি খুব ইশারায় ফুটিয়ে তুলে তারও চেয়ে বর্বরতর অধ্যায় একটু পরিষ্কার করে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রামিদ্য। সুন্দরী কিশোরী অন্তোসরোহর বাবা চিনিকলে ক্যাশিয়ারের চাকরি করত। তার মেয়েকে চিনিকলের ওলন্দাজ ম্যানেজার দেখে পছন্দ করে নিয়ে যেতে চায়। বিয়ে-টিয়ে কোনো কিছুর ভান-ভনিতা ছাড়াই। আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে ঔপনিবেশিক শাসনের অনিবার্য ফলশ্রুতিতে তৈরি সম্পূর্ণ আত্মসম্মান ও মূল্যবোধহীন অন্তোসরোহর বাবার এতে কিন্ত্ত কোনো আপত্তিই ছিল না। বরং এজন্য বেশকিছু নগদ টাকা পাওয়া যাবে ভেবে সে বেশ আনন্দিতই বোধ করলো মনে হয়। কিন্ত্ত বাধ সাধলো কিশোরী অন্তোসরোহর অত্যুচ্চ আত্মসম্মানবোধ ও ইস্পাতদৃঢ় জিদ। এর সামনে তার বাবা হার মানল, আর চিনিকল ম্যানেজার সাময়িক পিছু হটলো। তারপর এক ফাঁদ পেতে, অন্তোসরোহর বাবাকে মিথ্যা আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে শেষ পর্যন্ত অন্তোসরোহকে নিয়ে ম্যানেজারের বাংলোতে তুললো চিনিকল ব্যবস্থাপক। এখানে প্রসঙ্গক্রমে বলা বোধ হয় প্রয়োজন যে জাভায় এসে চিনিকলের ব্যবস্থাপক হবার পূর্বে এই লোক নাবিক ছিল। তারপর অন্তোসরোহ নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠতে উঠতে এক যশস্বী কিন্ত্ত সমাজচ্যুত মহিলায় রূপান্তরিত করে নিজেকে।
এর উল্টোদিকে, এই উপপতিœত্বকে প্রতিরোধের কাহিনীও আছে 888sport alternative linkের এই খ-ে। প্রায় অনুরূপ এক ঘটনায় আরেক কিশোরীকে যখন তার পরিবার অন্য আরেক চিনিকল মালিকের হাতে জোর করে তুলে দিতে উদ্যত হয়, সেই মেয়ে, অন্তোসরোহর এক আত্মীয়া সে, রাতের অন্ধকারে পালিয়ে আদিগন্ত প্রসারিত আখের ক্ষেতের মধ্য দিয়ে দূরের এক অপরিচিত গ্রামে ঢুকে পড়ে। তখনকার অনিয়ন্ত্রণযোগ্য গুটিবসন্তে গ্রামকে গ্রাম সেখানে উজাড় হয়ে যাওয়ার কারণে দূর থেকে ওলন্দাজ সেনাবাহিনীর পাহারায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল সেই অঞ্চল। ওখানে সেনাবাহিনীর চোখ এড়িয়ে ঢুকে শেষ পর্যন্ত নিজে গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়ে গোপনে কোনো রকমে বেরিয়ে এসে পায়ে হেঁটে রাতে এসে পৌঁছায় চিনিকলের সেই ম্যানেজারের বাংলোয়। ম্যানেজার তো তাকে পেয়ে মহাখুশি। তাকে বাংলোতে নিয়ে নেয় এবং রাত কাটায় তার সাথে। ঐ মেয়ে গুটিবসন্তে অল্পদিনের মধ্যে মারা যায় ঠিকই, কিন্ত্ত তার থেকে আক্রান্ত হয়ে সেই ম্যানেজার এবং গোটা এলাকা বিরান হয়ে যায়।
অদ্ভুত প্রতিরোধ!
যাই হোক, মিনকের কাহিনী-সংক্ষেপে আবার ফিরে আসি আমরা। সংবাদপত্রের প্রকাশ ও সম্পাদনা শুরু করে মিনকে। অভাবনীয় সাফল্য আসে তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ে। ব্যবসায়ও নাক গলায় কিছু সময়ের জন্য; কিন্ত্ত খুব একটা সুবিধা করতে পারে না। এর পূর্বে নিয়াই অন্তোসরোহর কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে প্রামিদ্য কিভাবে ধীরে ধীরে জাভার স্থানীয় সামন্তবাদ সরিয়ে দিয়ে সমগ্র দ্বীপব্যাপী উপনিবেশবাদীদের আখ চাষ শুরু হয়, স্থাপিত হয় চিনির কল এবং ঐ চিনির কল ম্যানেজারদের অবর্ণনীয় স্বেচ্ছাচারিতায় নিয়াই অন্তোসরোহর মতো মেধাবী মেয়েরা নিরুপায় উপপতিœত্ব বরণ করে নিজ সমাজে প্রান্তবাসী হয়ে জীবনযাপনে বাধ্য হয় – তার এক নিখুঁত ছবি এঁকেছেন প্রামিদ্য সে কাহিনী একটু পূর্বেই বর্ণনা করলাম আমরা। এরই পাশাপাশি কৃষক-বিদ্রোহ, ক্রমবিকাশমান জাতীয়তাবাদের চিত্রও স্থাপন করেন তিনি অপূর্ব নৈপুণ্যে। এদিকে মূলত সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপকেন্দ্রিক ঔপনিবেশিক শক্তি ক্রমাগত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে একে একে জিতে নেয় বালি, আচেহ ইত্যাদি দ্বীপ। বিজিত এই দ্বীপগুলোর, বিশেষত বালি এবং আচেহ দ্বীপের বীর জনতার প্রতিরোধের যে গৌরবময় ভূমিকার অনবদ্য চিত্র এঁকেছেন তিনি অত্যন্ত কুশলী পরোক্ষ বর্ণ888sport promo codeতির মাধ্যমে তা 888sport live chatী হিসেবে প্রামিদ্যর অনন্যতারই স্বাক্ষর বহন করে।
ইতোমধ্যে ওলন্দাজ পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ নামক উপনিবেশে যে সমস্ত গভর্নর জেনারেল ও সেনাপতি এসেছেন তাদের মধ্যে কেউ ছিলেন তুলনামূলকভাবে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন, আবার কেউ কেউ ছিলেন নিষ্ঠুর, অত্যাচারী। মিনকের সাথে তাদের সম্পর্কও তেমনি কখনো হূদ্যতাপূর্ণ আবার কখনো তিক্ত হয়েছে। কিন্ত্ত ঔপনিবেশিক প্রশাসন মিনকের ওপর কড়া নজর রেখেছে সব সময়। ইতোমধ্যে মলাক্কা প্রণালি থেকে দ্বীপান্তরে জাভায় আসা প্রায় কপর্দকহীন ভাগ্যবিড়ম্বিত এক সুলতানের কন্যা কাসিরুতার সাথে বিয়ে হয় মিনকের। কাসিরুতা বাপের বাড়ি গেলে, মিনকের সাময়িক অনুপস্থিতিতে তার দুই তরুণ সহকর্মী তার বিশাল প্রচার888sport free betবিশিষ্ট অতি জনপ্রিয় সংবাদপত্রে গভর্নর জেনারেলের সমালোচনা করে সম্পাদকীয় লিখে বসে। আর যায় কোথায়! মিনকের কাগজের ব্যাপক প্রচার, অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তা এবং ব্যক্তি হিসেবে দেশব্যাপী সম্পাদক মিনকের গ্রহণযোগ্যতা বহু পূর্ব থেকেই মারাত্মক স্নায়ুর চাপে রেখেছিল ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষকে। কিন্ত্ত মিনককে প্রতিরোধ কিংবা প্রতিহত করার মতো কোনো সুযোগ সে দিচ্ছিল না তাদেরকে। এবারের সম্পাদকীয় সেই সুযোগ তাদের হাতে তুলে দিল। দ্রুত লুফে নিল তারা এই সুযোগ। মিনকের অফিস তথা বাড়ি দখল করে নিল সরকার, বন্ধ করে দিল তার সংবাদপত্র এবং তাকে বন্দি করে নিয়ে গেল আপাত-অজানা গন্তব্যে।
হ্যাঁ, এখানেই ঘটতে পারত 888sport alternative linkের পরিসমাপ্তি। জাতীয় উত্থানের এক ট্র্যাজিক কাহিনী হিসেবে 888sport alternative linkও তাতে নিঃসন্দেহে রসোত্তীর্ণ হতো, এমনকি আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জনও অসম্ভব হতো না 888sport alternative linkের কিংবা ঔপন্যাসিক প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের। কিন্ত্ত তাতে 888sport alternative linkের অনন্যতা আসত বলে মনে হয় না। অনন্যতায় উত্তীর্ণ হয়ে 888sport alternative link তাই এগিয়ে চললো, কারণ এই 888sport alternative link চতুষ্টয়ের এক বিশাল স্থান দখল করে থাকলেও এবং প্রায় তিনটি খণ্ডেই তার জীবনকে ঘিরে 888sport alternative linkের কাহিনী আবর্তিত হলেও 888sport alternative linkের প্রধান পুরুষ কিন্ত্ত মিনকে নয়। তাহলে কে এর প্রধান চরিত্র? 888sport alternative linkের চতুর্থ ও শেষ খ- এষয়ড়ন ষপ ঋরতড়ড় পড়লে সেই ব্যাপারটি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। অত্যন্ত সুচতুর ছদ্মবেশী পুলিশ কর্মকর্তা পাঞ্জেমানান এই চতুর্থ খণ্ডের কাহিনীকার। পূর্ববর্তী তিনটি খ- যেন মিনকের রচনা এবং সেগুলো বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছে সে। তারপর ঐ বইগুলোর মূল্যায়ন, মিনকের জীবন, ইন্দোনেশিয়ার অবস্থা, সব নিয়ে স্বগতোক্তির মতো যে কথাগুলো বলে যায় ঐ পুলিশ কর্মকর্তা তা-ই হচ্ছে চতুর্থ খ-ের উপজীব্য। সুতরাং তাকে কিংবা ঔপনিবেশিক শক্তিকেও এই কাহিনীর প্রধান রূপকার বা চরিত্র ভাবা যেতে পারে, কিন্ত এর কোনোটাই ঠিক নয়। এই কাহিনীর প্রধান পুরুষ হচ্ছে ইতিহাস-নিরন্তর সামনে এগিয়ে চলা, সম্পূর্ণ আবেগবর্জিত অন্ধ শক্তি। মিনকে কিংবা 888sport app চরিত্ররা সেই চলার পথে কম-বেশি জায়গা দখল করেছে মাত্র, তার বেশি কিছু নয়। কাহিনীর মোড় না ঘুরিয়ে গতানুগতিক চলমানতার মধ্যে এই এক ধরনের অমোঘতা দান ঔপন্যাসিক হিসেবে প্রামিদ্যকে নিঃসন্দেহে অনন্য করে তুলেছে।
এবং ইতিহাসের যাত্রাপথের অবশ্যম্ভাবী ঘটনাপুঞ্জকে নৈর্ব্যক্তিক আর নির্মোহ দৃষ্টিতে দেখার যে ক্ষমতা তা ঐতিহাসিকের জন্য অপরিহার্য, ঔপন্যাসিকের জন্য নয়। কিন্ত্ত 888sport alternative linkের 888sport live chatরসকে সামান্যতম কোথাও ক্ষুণ্ন না করে সেই নৈর্ব্যক্তিক নির্মোহতা নিয়ে যে কাহিনী ইন্দোনেশীয় তথা বিশ্ব888sport live footballকে উপহার দিয়েছেন প্রামিদ্য অনন্ত তোয়ের তার জন্য তিনি চির888sport app download for androidীয় হয়ে থাকবেন। আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতনামা বহু সংবাদপত্র ও সাময়িকীর পাতায় এই 888sport alternative link চতুষ্টয়ের যে অসংখ্য সমালোচনা বেরিয়েছে, তার বহু নিবন্ধেই একে মহাকাব্যিক 888sport alternative link বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কিন্ত্ত আমাদের ধারণা স্রেফ মহাকাব্যিক বলে ছেড়ে দিলে এই 888sport alternative linkের প্রতি সম্ভবত পুরোপুরি সুবিচার করা হবে না। অসংখ্য কাহিনী-উপকাহিনী-শাখা কাহিনীতে ভরপুর যে কোনো সার্থক মহাকাব্যের প্রায় ক্ষেত্রেই এক মারাত্মক সীমাবদ্ধতা এই যে স্বর্গ-মর্ত্য-পাতালের দেব-দেবী-মানব-মানবী ও দানব-দানবী পর্যন্ত মহাকাব্যে স্থান পেলেও, সমাজের সাধারণ মানুষ, তাদের আশা-আকাংক্ষা, ব্যথা-বেদনার কোনো স্থান মহাকাব্যে নেই। অথচ এই 888sport alternative linkে তা আছে। আধুনিক ইতিহাসপাঠের যে ব্যাপকতা তাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে অসাধারণ শৈল্পিক নৈপুণ্যে এই 888sport alternative link চতুষ্টয়ের কাহিনীর মালা গেঁথেছেন প্রামিদ্য, নির্মোহ কিন্ত্ত সত্যের প্রতি অবিচল থেকে। এই 888sport alternative linkের ব্যাপ্তি তাই মহাকাব্যের চেয়ে বেশি। ভাবতে দুঃখ হয়, সারা পৃথিবীতে এত পরিচিত, প্রশংসিত প্রামিদ্য নিজদেশে অপাঠ্য, কারণ নিষিদ্ধ। কোনো রকম কারণ দেখাতে অসমর্থ হলেও, রাষ্ট্রশক্তি নির্লজ্জভাবে অন্তরীণ করে রেখেছে তাঁকে। ১৯২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ব জাভার ব্লোরা নামক ছোট্ট শহরে জন্মগ্রহণকারী প্রামিদ্য অনন্ত তোয়েরের বয়স এখন প্রায় আটাত্তর বছর। সামরিক শক্তির হাতে বন্দিত্বের সময় বন্দুকের আঘাত ও পরে আরো অনেক নির্মম প্রহারে তিনি প্রায় পুরোপুরি বধির। এখন লেখালেখিও প্রায় করেন না। বলেন, কে পড়বে আমার লেখা? প্রকাশই বা করবে কে? এই বুড়ো বয়সে সর্বব্যাপী এক হতাশা নিয়ে নিজ ঘরে গৃহবন্দি হয়ে যন্ত্রণাময় সময় কাটাচ্ছেন তিনি। মানুষের সভ্যতা কি এখনো এ পর্যায়ে পৌঁছেনি যে এই অসাধারণ মানব সন্তানকে নিরর্থক, নিষ্ঠুর বন্দিত্ব থেকে মুক্তি দিতে পারে?


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.