রবিজীবনের সায়াহ্নে একদল উদ্দাম রচনাকারের মাতনে বাংলা 888sport live footballে এলো কল্লোল। ‘উদ্ধত যৌবনের ফেনিল উচ্ছলতা, সমস্ত বাধা-বন্ধনের বিরুদ্ধে নির্ধারিত বিদ্রোহ’- এই ছিল আশ্বাস। অনেকের সঙ্গে সেখানে কলম মেলালেন এক তরুণ। প্রেমেন্দ্র মিত্র।
পরবর্তীকালে 888sport live footballের বহুধারায় যশ পেলেও তখন তিনি উজ্জ্বল ছোটগল্প আর 888sport app download apkয়। 888sport live football-বন্ধু অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের 888sport sign up bonusতে ‘একমাথা ঘন কোঁকড়ানো চুল, সামনের দিকটা একটু আঁচড়ে বাকিটা এককথায় অগ্রাহ্য করে দেওয়া- সুগঠিত দাঁতে সুসম্পর্ক হাসি, আর চোখের দৃষ্টিতে দূরভেদী বুদ্ধির প্রখরতা।… চোখে পড়ার মত। চোখের বাইরে একলা ঘরে হয়তো বা কোনো কোনো দিন মনে পড়ার মত।’ সদ্য আঠারোয় প্রেমেন্দ্র চিঠিতে লেখেন অচিন্ত্যকে : ‘থামব না আমরা, কিছুতেই না। ভয় মানে থামা, অবিশ্বাস মানে থামা, ক্ষুদ্র বিশ্বাস মানেও থামা।’ থামেননি তিনি। গদ্যজীবন রূপ নিলো পদ্য-লিখনের। প্রথমজীবনের কবিকথা প্রকাশ পেল প্রথমা-য় (১৯৩২)।
আমি কবি ভাই কর্মের আর ঘর্মের;
বিলাস-বিবশ মর্মের যত স্বপ্নের তরে ভাই,
সময় যে হায় নাই!
মাটি মাগে ভাই হলের আঘাত,
সাগর মাগিছে হাল,
পাতালপুরীর বন্দিনী ধাতু
মানুষের লাগি কাঁদিয়া কাটায় কাল,
দুরন্ত নদী সেতুবন্ধনে বাঁধা যে পড়িতে চায়,
নেহারি আলসে নিখিল মাধুরী
সময় নাহি যে হায়!
মাটির বাসনা পুরাতে খুরাই
কুম্ভকারের চাকা,
আকাশের ডাকে গড়ি আর মেলি
দুঃসাহসের পাখা,
অভ্রংলিহ মিনার-দম্ভ তুলি,
ধরণীর গূঢ় আশার দেখাই উদ্ধত অঙ্গুলি।
এই দুঃসাহসের পাখায় ভর করেই জীবনে কখনো থামেননি তিনি। বিচিত্র কর্মে মেলে ধরেছেন নিজেকে। কখনো চরকডাঙা স্কুলের শিক্ষক তো কখনো বা রাজগঞ্জে টালিখোলার ব্যবসাদার। হঠাৎ ‘নির্জন বাসে’ চলে যান ঝাঁঝাঁ – ট্রাংকভর্তি বই নিয়ে। আবার ফিরে আসেন দীনেশচন্দ্র সেনের ডাকে- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-সহযোগী হিসেবে (১৯২৫-২৬)। কাজ করেন সুভাষচন্দ্র বসুর বাংলার কথা কাগজে (১৯২৮)।
চাকরিতে অনাগ্রহী শিবরাম চক্রবর্তীর অনুরোধে প্রচার-প্রধান হিসেবে যোগ দেন ‘বেঙ্গল ইমিউনিটি’তে (১৯৩১)। প্রেমেন্দ্রের বিজ্ঞাপনি ভাষায় অনেকের মতোই মুগ্ধ হন অগ্রজ 888sport live footballিক হেমেন্দ্রকুমার রায়। এক ভোজবাসরে চুম্বনের আতিশয্যে লজ্জায় ফেলে দেন অনুজকে। উপস্থিত শিবরাম টিপ্পনি কাটেন- ‘গল্প না বৎস, না কল্পনাচিত্র। হেমেন্দ্র-চুম্বিত প্রেমেন্দ্র মিত্র’। বছর ঘুরলো, চাকরিও ছাড়লেন। শুরু হলো নানান পত্রিকা-সম্পাদনার কাজ। বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে 888sport app download apk (১৯৩৫-৩৭), অদ্বৈত মল্লবর্মণের সহযোগে নবশক্তি, সঞ্জয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে নিরুক্ত (১৯৪০-৪২), আর ছোটদের টানে রঙমশাল (১৯৩৬-৩৮)। এর মাঝেই সন্ধান মিলল রুপোলি জগতের।
পড়াশোনা-খেলাধুলা-দেশবেড়ানোর পাশাপাশি মাতামহের সঙ্গে সুযোগ জুটত ‘ম্যাজিক লণ্ঠন’ দেখার। ‘ম্যাডাম কোম্পানির বায়োস্কোপ’ আর সমবয়সীদের সঙ্গে যাত্রা দেখা প্রায়শই উসকানি দিতো বেড়ে-ওঠা মনকে। 888sport cricket BPL rate পেরোতেই বন্ধুবান্ধব-সংসর্গে শুরু হলো নিয়মিত সিনেমা-থিয়েটার দেখা। বান্ধবদের মধ্যে সে-জগতের সঙ্গে পাকাপাকি সম্পর্ক ছিল গোকুল নাগ, নজরুল ইসলাম আর শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের। প্রেমেন্দ্রের মনে জাগলো তাই নতুন আগ্রহ। হেমেন্দ্রকুমারের বন্ধু চারু রায় তখন একাধারে চিত্রকর ও চিত্রপরিচালক। প্রেমেন্দ্রের সহায়তা চাইলেন live chat 888sportের প্রচারকার্যে। আপাত বোহেমিয়ান প্রেমেন্দ্র মেতে উঠলেন ছবির নেশায়।
১৯৩৭-এ শুরু হলো ডা. নরেশচন্দ্র সেনগুপ্তের ‘খুনের জের’ কাহিনী ঘিরে ছবির কাজ। দেবদত্ত ফিল্মসের উদ্যোগে নাম নিল গ্রহের ফের। পরিচালক চারু রায়। প্রচারের পাশাপাশি চিত্রনাট্যের দায়িত্ব পেলেন প্রেমেন্দ্র। নরেশ-কাহিনীর চরিত্ররা মূর্ত হয়ে উঠল প্রেমেন-সংলাপে। ছবি মুক্তি পেল, সঙ্গে বাণিজ্যিক সাফল্য। এবার চিত্রনাট্য-রচনাকেই বেছে নিলেন পেশা হিসেবে। পরের ছবি তুলসী লাহিড়ীর কাহিনী ঘিরে রিক্তা। পরিচালক সুশীল মজুমদার। একদিন চিত্রনাট্যের কাজ চলছে, পরিচালকের সঙ্গে হঠাৎ হাজির সংগীত-পরিচালক ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়। প্রেমেন্দ্রের কবিসত্তা সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত রেকর্ডিংয়ের জন্য গান লিখে দেবার অনুরোধ জানালেন। তখনো পর্যন্ত 888sport app download apk লিখলেও কোনো গান লেখেননি প্রেমেন্দ্র। তাই নিমরাজি তিনি। অথচ ভীষ্মদেবের তখন সংগীতখ্যাতি তুঙ্গে। তাঁকে এড়ানো শক্ত। অনুরোধ রক্ষা করতেই প্রেমেন্দ্র ধরলেন 888sport football World Cup 2026 odds। কবিসত্তার ভিন্ন জন্ম গীতিকারে :
আকাশরূপী হে মহাকাল নমো নম।
তুমিই আলো তুমিই আধাঁর নিবিড়তম।
অসীম তব বক্ষ ’পরে
আদিম নিশা লীলাভরে
নৃত্য করে শ্যামারূপে
কি মহিমা অনুপম।…
এ গান যেন তাঁর পূর্ব রচনা ‘নমো নমো’রই খ রূপ
… নমো নমো নমো!
প্রণামের বিরাট আকাশে
সব গান ডুবে আছে, মিলে আছে সব পূজা…
কোটি কোটি তারকার মতো।
মহা নীলাকাশসম
মূর্তিমান সীমাহীন
নমো নমো নমো।
ভীষ্মদেব ব্যক্তিগত রেকর্ডিং করেননি এ গান। তবে ‘সন্ন্যাসী’ চরিত্র গাইল প্রেমেন্দ্র-গীতি ভীষ্মদেবেরই সুরে- রিক্তা ছবিতে। শুধু তাই নয়, এই সুবাদে চিত্রনাট্যের পাশাপাশি এ-ছবিতে স্বতন্ত্র গীতিকার তিনি। লিখতে হলো আরো আটখানা বৈচিত্র্যভরা গান।
নায়িকা করুণার কণ্ঠেই চারটি গান-
১. থামো বন্ধু, দাঁড়াও ক্ষণেক থামি
দিগি¦জয়ের সওয়ার হ’তে বারেক এস নামি।…
২. ভাবনা কিরে, শেষ হ’ল তোর সাধন!
ভেসে যাবার জোয়ার আসে যাক না ছিঁড়ে বাধন।….
৩. নয়ন মুদিতে মানি ভয়
যে কথা ভুলিতে চাই
আধাঁর ভরিয়া রয়….
৪. গহন বনের হরিণ আমার
উতলা হয় থাকি থাকি
বাতাস তারে ব্যাকুল করে
গন্ধমদির সুবাস মাখি।…
চারটি গানই গেয়েছিলেন করুণার চরিত্রাভিনেত্রী ছায়া দেবী। অন্য চরিত্র রমলার গাওয়া গানদুটি গেয়েছিলন রমলা দেবীই, অভিনেত্রীজগতে যাঁর খ্যাতি ছিল ‘র্যাচেল’ নামে। তাঁর গাওয়া প্রেমেন্দ্র-গীতি :
আরও একটু সরে বসতে পারো
আরও একটু কাছে,
দূর থাকার ছলনা হায় বৃথা,
ছলছল নয়ন যবে যাচে।…
আর অন্যটি-
চাঁদ যদি নাহি উঠে, না উঠুক
ক্ষতি নেই এই বেশ ভালো।
আহত নগর দূরে গরজায়
আধাঁর ঘিরেছে জমকালো।…
এছাড়াও ছিল একটি ভিখারির গান :
এ কী নিলাজ হাওয়া এল’ বন দুলিয়ে
যত ফুলের কলির গালে শ্বাস বুলিয়ে…
এবং অন্যটি পথিকের-
নাইরে আশা নাই
প্রভাতে ছিল যে মেঘ, এখন তাহার কোথা দেখা পাই!
গানগুলি যেন তাঁর 888sport app download apkরই বিস্তার। ছন্দে-ভাষায় বারবার মনে পড়িয়ে দেয় প্রথমাকে।
live chat 888sportে গান-রচনার পাশাপাশি সংলাপ-রচয়িতা ও চিত্রনাট্যকার প্রেমেন্দ্র মিত্র পরবর্তীকালে খ্যাতি পেয়েছেন পরিচালনার কাজেও। দীর্ঘ সতেরো বছরের স্থায়িত্বে live chat 888sportে বহুবিচিত্র কাজ করেছেন। কিন্তু কখনোই গান-হারা ছিল না সে-ধারাবাহিকতা। বহু গান লিখেছেন। বহু সাফল্যও পেয়েছেন। তটিনীর বিচার (১৯৪০) ছবির ‘কে জানে জাল পেতে কে রাখল কবে’ এবং ‘কাঞ্চি কোশল কোথায় গেছে কোথায় তপোবন’, যোগাযোগ (১৯৪৩) ছবির ‘যদি ভালো না লাগে তো দিও না মন’ এবং ‘নাবিক আমার নোঙর ফেলো ওই তো তোমার তীর’, আপন পরিচালনার প্রথম ছবি সমাধানের (১৯৪৩) ‘মনের কথা সে তো মনেই ছিল’ এবং ‘হাতেতে হাত মেলাও মেলাও ভাই ভাই’, প্রতিকার (১৯৪৪) ছবির ‘অচেনা কি চেনা কিবা জানে’ এবং ‘যদিও পরীরা ভুলে কখনো রাতে আসে না সেখানে নামি’, বিদেশিনী (১৯৪৪) ছবির ‘থেকে থেকে কার যেন ছায়া পড়ে’ এবং ‘চেয়ে রই শুধু দূর গগনপানে’, সেতু (১৯৫১) ছবির ‘কালো দীঘিজল ভারি সুশীতল মায়া তব দুটি চোখে’ আর হানাবাড়ি (১৯৫২) ছবির ‘হাওয়া নয় ওতো হাওয়া নয়’- এমন বহু 888sport app download for androidীয় প্রেমেন্দ্র-গীতি হারিয়ে গেছে বি888sport app download for androidের ভেলায়। একত্রে তো নয়ই এমন-কী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে কোনো ছিন্ন অধ্যায়েরও এ যাবৎ সংকলন হয়নি প্রেমেন্দ্র মিত্রের গানের।
তাঁর কথাতেই ইতি টানা যাক নিবন্ধের : ‘কোনো এক বিদেশী লেখকই যেন আমাদের আধুনিক সভ্যতাকে এই বলে গাল দিয়েছেন যে, এ সভ্যতা ছন্দহারা বলেই ছন্নছাড়া। সুস্থ সভ্যতা তাঁর মতে গানের ছন্দে দোলানো। উৎসব ও আনন্দ তাতে কাজের অঙ্গ। সুস্থ সুখী চাষী ধান বুনতে গান করে,- গান গায় ধান কাটতে।… কলের গাড়ির সঙ্গে যন্ত্রযুগের চাকা সবেগে ঘুরতে শুরু করার আগে পর্যন্ত মানুষের যা কিছু কাজ যা কিছু দায় সবই আনন্দ-উৎসবের সুরে বাঁধা ছিল।… সে আনন্দের সুর কলের চাকাতেই কি গেল কেটে? দোষটা সত্যি কলের নয়, কালেরও না। কলই আমাদের কাল নয়, আমরাও কিছু কলের চাপেই বিকল হয়ে পড়িনি। আমাদের প্রাণে সুর এখনো আছে, আনন্দের উৎস এখনো যায়নি শুকিয়ে, শুধু নতুন কালের সঙ্গে তালটা এখনো আমরা মেলাতে পারছি না।… আসল কথা যন্ত্র দিয়ে যে যুগে আমরা পৌঁছে গেছি তারও উৎসব আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, প্রাণের ছন্দে তাকে মিলিয়ে নতুন করে সুর দিতে হবে তার পালায়।’


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.