888sport free bet login

এক 888sport live chatবেত্তা ও একটি 888sport live chatকথা

আলম খোরশেদ

888sport live chatকথা ও 888sport live chatীকথা | আবুল মনসুর | 888sport live chatকলা একাডেমি | 888sport app, ২০১৬ | ৫০০ টাকা।

888sport appsের চিত্রকলাজগতে আবুল মনসুর একটি অত্যন্ত পরিচিত ও অপরিহার্য নাম। তবে সেটা ঠিক চিত্রকর্মের জন্য নয়, যদিও চিত্রকলাই তাঁর অধীত ও আরাধ্য বিষয় এবং চিত্রকর হিসেবেও তাঁর দক্ষতা ও নৈপুণ্য একেবারে উপেক্ষণীয় নয়। একাত্তরের অব্যবহিত পূর্বে তৎকালীন 888sport app আর্ট কলেজের পাঠ সম্পন্ন করে তিনি চাইলে একজন পেশাদার ও পূর্ণকালীন চিত্র888sport live chatীও হয়ে উঠতে পারতেন, কেননা ছাত্রাবস্থা থেকেই বিভিন্ন গ্রন্থের প্রচ্ছদ অঙ্কন করে ততদিনে তিনি আঁকিয়ে হিসেবে বেশ নামও করেছিলেন। তিনি সে-পথ না ধরে গেলেন উচ্চশিক্ষার পথে ভারতের খ্যাতনামা বরোদা বিশ্ববিদ্যালয়ে 888sport live chatকলার ইতিহাস, সমালোচনা, সমাজতত্ত্বেবর মতো গুরুগম্ভীর বিষয়ে উচ্চতর পাঠ নেওয়ার জন্য এবং কৃতিত্বের সঙ্গে সেখানকার পাট চুকিয়ে স্বাধীনতা-উত্তর 888sport appsে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে যোগ দেন একজন তরুণ শিক্ষক হিসেবে।

এবং সেই থেকে শিক্ষকতার পাশাপাশি দুহাতে লিখে গেছেন, চিত্রকলা তথা দৃশ্যকলা বিষয়ে জ্ঞানগর্ভ তাত্ত্বিক 888sport live,
চিত্র-সমালোচনা, 888sport live chatী-পরিচিতি, 888sport app download for android-নিবন্ধ, চিত্রপ্রদর্শনী ও 888sport live chatবিষয়ক গ্রন্থের আলোচনা, প্রদর্শনী-পুসিত্মকার ভূমিকা এবং বহুবিচিত্র উপলক্ষের লেখা। এ পর্যন্ত 888sport live chatকলা-বিষয়ে তাঁর আটটি গ্রন্থ প্রকাশিত হলেও 888sport appsের প্রকাশনাজগতের সত্যিকার পেশাদারিত্ব ও দূরদৃষ্টির অভাব এবং নানাবিধ সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর অসংখ্য মূল্যবান ও প্রয়োজনীয় লেখা অদ্যাবধি অগ্রন্থিত থেকে গিয়েছিল। অবশেষে সরকারি প্রতিষ্ঠান 888sport apps 888sport live chatকলা একাডেমির প্রকাশনা বিভাগকেই এগিয়ে আসতে হয়েছে তাঁর সেসব বি888sport sign up bonusর গর্ভে হারিয়ে যেতে বসা রচনাগুলোকে সংগ্রহ ও সংকলিত করে একত্রবদ্ধ করে রাখার কাজে। তারই ফসল এবারের বইমেলায় প্রকাশিত আবুল মনসুরের 888sport live chatকথা ও 888sport live chatীকথা নামের অত্যন্ত সুদৃশ্য ও সুমুদ্রিত নজরকাড়া অবয়বের পাঁচশো পৃষ্ঠার বিশালাকার গ্রন্থটি, যা ইতোমধ্যে এই বইমেলায় প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা হিসেবে বোদ্ধাজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে।

গ্রন্থটিতে লেখকের গত চলিস্নশ বছরের সৃজন ফসল থেকে প্রায় একশর কাছাকাছি লেখা স্থান পেয়েছে, যেগুলো রচনাকার গ্রন্থের শিরোনামের সঙ্গে মিল রেখে ‘888sport live chatকথা’ ও ‘888sport live chatীকথা’ নামে দুটি উপ-শিরোনামে বিন্যসত্ম করেছেন, যথাক্রমে – ‘দৃশ্যকলা’, ‘বাঙালি ও 888sport apps’, ‘বিশ্ব888sport live chat’, ‘বিবিধ’ এবং ‘পশ্চিমের অঙ্গন’, ‘উপমহাদেশ : ভারত’, ‘888sport apps : পূর্বসূরি’ ও ‘888sport apps : পরবর্তী প্রজন্মের ক’জনা’ নামের আটটি অধ্যায়ে। ভূমিকাতেই লেখক জানিয়েছেন রচনাবিন্যাসে কোনোরকম কালক্রম মানা হয়নি, সম্ভবত সঠিক তথ্যের অভাবেই; কেননা আমরা লক্ষ করেছি, হাতেগোনা কয়েকটি লেখার নিচে রচনাকাল নির্দেশ করা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার কোনো উলেস্নখ ছিল না। এটি নিঃসন্দেহে খুব শ্রমসাপেক্ষ কাজ, তবু তা করে ওঠা গেলে প্রতিটি লেখার কালিক পরিপ্রেক্ষেতটুকু বুঝতে এবং তার আলোকে রচনার রসাস্বাদন ও অনুধাবন করতে সুবিধা হতো পাঠকের। লেখক এই অপূর্ণতার কথা সম্যক বিবেচনা করেই সম্ভবত তাঁর ভূমিকায় উলেস্নখ করেন যে, ‘এ পুসত্মকে বিশেষ কোনো ধারাবাহিকতা প্রত্যাশা করলে হতাশ হতে হবে। তবে এ ঘাটতি মেটাবার জন্য বিষয়ভিত্তিক কয়েকটি বিভাজনরেখা প্রয়োগের  চেষ্টা করেছি’, যার কথা আগেই উলেস্নখ করা হয়েছে।

এহ বাহ্য, গৌরচন্দ্রিকা আর প্রলম্বিত না করে বরং মূল গ্রন্থে প্রবেশ করা যাক। গ্রন্থটির প্রথম পর্ব ‘888sport live chatকথা’য় স্থান পেয়েছে  বেশ কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও দরকারি 888sport live, যার মধ্যে অন্যতম, ‘বিশ শতকের 888sport live chatকলা : নান্দনিকতার বিশ্বায়ন’, ‘888sport live chatতত্ত্ব, 888sport live chat ইতিহাস ও 888sport live chatসমালোচনার ধারা’, ‘বাঙালির সংস্কৃতি-অভিযাত্রা : নন্দনভাবনার আলোকে একটি অবলোকন প্রয়াস’, ‘আমাদের সাম্প্রতিক 888sport live chatের সংকট : ঔপনিবেশিক  উত্তরাধিকার’, ‘জাতীয় চেতনা ও 888sport live chatকলা : 888sport appsের প্রেক্ষেত’, ‘ব্রিটিশ ভারতে বঙ্গের চারু888sport live chat জগৎ :  প্রাচ্যপন্থা বনাম পাশ্চাত্য পন্থা’। 888sport liveসমূহের শিরোনাম থেকেই প্রতীয়মান হয় যে, আবুল মনসুর 888sport appsের দৃশ্য888sport live chatের জগৎটাকে একটা বিসত্মৃত ঐতিহাসিক, স্থানিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে স্থাপন করেই কেবল তার চারিত্র্য, বৈশিষ্ট্য, ভাষা, ব্যাকরণ, স্বাতন্ত্র্য, স্বরূপ, সাফল্য ও ব্যর্থতার বিচার করতে বসেন। ফলে অবশ্যম্ভাবীভাবেই তাঁর এই বিচার-বিশেস্নষণে আমরা এক ধরনের প্রজ্ঞা, পরিমিতি, সামগ্রিকতার স্বাদ এবং বাসত্মববোধের পরিচয় পাই, যা আমাদের
সমালোচনা-888sport live footballে সচরাচর সুলভ নয়।

শুরুতেই দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক একটি প্রায় ভবিষ্যদ্বাণীতুল্য দীর্ঘ   উদ্ধৃতির যা ইতোমধ্যে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে – ‘গতায়মান শতকে 888sport live chatকলার বিশ্ববীক্ষা যে সম্পূর্ণ হয়েছে এমন কথা বলা যাবে না। এখনও পশ্চিমা মূল্যায়নে য়ুরো-মার্কিন-কেন্দ্রিকতা একটি বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে, প্রশিক্ষেত মূলধারার পাশাপাশি ব্রাত্যজনের 888sport live chat-সৃজন সমান মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়নি। তবে একটি কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনা হলো, শতাব্দীচক্রের আরেকটি পটপরিবর্তনের মুখে দাঁড়িয়ে আবারো শোনা যাচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গির একটি মৌলিক পরিবর্তনের ধ্বনি। পোস্ট-মডার্নিজম কিছু প্রচলিত ধারণা ও মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ঊনবিংশ শতকীয় আধুনিকতা যে একরৈখিক নৈতিকতা, সত্যবোধ, যুক্তিবাদ, আধ্যাত্মিকতা, ঐতিহাসিকতা, বিশেস্নষণবাদিতা, মানবসমাজের একত্ববোধ ও মহৎ কীর্তিগাথার ঐতিহ্যবোধ নির্মাণ করেছে এই মতাদর্শ তার যৌক্তিকতা নিয়ে সন্দিহান। এই সর্বজনীন মূল্যবোধের বিপরীতে পোস্ট-মডার্নিজম বিশ্বকে দেখতে চায় একটি অনিশ্চিত, ঘটনাচক্রজাত, অস্থিতিশীল, অনির্ধারণযোগ্য বিভিন্নমুখী ধারণার সমাহার হিসেবে। এখানে মানব-সংস্কৃতি একটি অসংঘবদ্ধ   বৈচিত্র্যময় কার্যকলাপ যা শুধুমাত্র কালিক ও স্থানিক পরিপ্রেক্ষেতে বিশেস্নষণযোগ্য, এর কোনো ঐতিহাসিক বিচার বা মহিমা নেই। কোনো 888sport live chatেরই চিরায়ত গরিমা বলে কিছু নেই, তা সব সময়েই আপেক্ষেক। এই বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে পোস্ট-মডার্নিজম ‘হাই’ ও ‘পপুলার’ সংস্কৃতির বিভাজনকে ভেঙে দিতে চায়, 888sport live chatের অভিজাত ও ব্রাত্যের মূল্যায়নকেও একই সমান্তরালে দাঁড় করাতে চায়। হয়তো আগামী শতাব্দী প্রত্যক্ষ করবে সেই সমীকরণের রূপায়ণ।’

(‘বিশ শতকের 888sport live chatকলা : নান্দনিকতার বিশ্বায়ন’, পৃ ১৩)

আরেকটি অত্যন্ত সৎ ও সাহসী বিশেস্নষণের উদাহরণ টানি। ‘অন্যদিকে ভারত 888sport live chatের আদর্শ ও অতীন্দ্রিয় বৈশিষ্ট্যের পুনর্জাগরণের জন্য হ্যাভেল ও অবনীন্দ্রনাথের আবেদন মূলত ছিল অজমত্মা, ইলোরা, মুঘল ও রাজপুত 888sport live chatের চরিত্র ও শৈলীর পুনর্চর্চার আহবান। ভারত-888sport live chatকে পাশ্চাত্যের কাছে গ্রহণযোগ্য করার ব্যাপারে তাঁর বিপুল অবদান সত্ত্বেও হ্যাভেলের মূল বিভ্রামিত্ম ছিল তিনি এই 888sport live chatকে মৌলিকভাবে আদর্শবাদী ও লোকোত্তর বলে প্রতিভাত করাতে চেয়েছিলেন, এবং সেটিকেই এর উৎকর্ষ হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন। এর নান্দনিক ও সাংগঠনিক সৌকর্যকে তিনি যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে উপলব্ধি করেননি। এই আচ্ছন্ন ধারণা হ্যাভেল সংক্রমিত করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ও তাঁর অনুসারীদের মধ্যে, যাঁরা পরবর্তীকালে ‘বেঙ্গল স্কুল’ বা বঙ্গীয় চিত্ররীতির 888sport live chatী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ওই বিভ্রান্ত ধারণার মধ্যেই নিহিত ছিল বেঙ্গল স্কুলের সীমাবদ্ধতা। এতে 888sport live chatের একটা ধরন দাঁড়াল যা অজমত্মা ও মুঘল ধারার অনুকরণে সৃষ্ট একটি রীতিসিদ্ধ ও প্রথাসর্বস্ব 888sport live chatধারা, কিন্তু অজমত্মা বা মুঘল 888sport live chatের অন্তর্নিহিত শক্তি ও যাথার্থ্য এখানে অনুপস্থিত। ফর্মের অস্পষ্টতা, দ্বিধাগ্রসত্ম রেখা, অতিকোমল ভঙ্গিমা আর সর্বোপরি উচ্চকিত ভাবপ্রবণতা এই 888sport live chatরীতির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়ায়। ইংরেজ-প্রবর্তিত তথাকথিত বাসত্মবতাবাদের কাছে আত্মসমর্পণের চেয়ে এটাও কম নৈরাশ্যজনক ছিল না।’

(‘জাতীয় চেতনা ও 888sport live chatকলা : 888sport apps প্রেক্ষেত’, পৃ ৭৮)

সবশেষে, আরেকটি দৃষ্টামেত্মর মাধ্যমে আমাদের সমকালীন 888sport live chatকলা বিষয়ে গ্রন্থকার আবুল মনসুরের মানসকাঠামোর বৌদ্ধিক অবস্থানটুকু তুলে ধরে আমরা গ্রন্থের অপরাপর বিষয়ের ওপর মনোনিবেশ করব – ‘আমাদের সমকালীন 888sport live chatকলার বর্তমান দোদুল্যমানতা ও অস্পষ্টতা এর ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার থেকেই সঞ্জাত। সৃষ্টি করবার ইচ্ছা ও কী সৃষ্টি করা হবে তার সুসংহত পরিকল্পনার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলেই হয়তো তারা শুধুমাত্র দৃষ্টিগ্রাহ্যই হচ্ছে, চিত্ত-আলোড়ক বা অন্তর্নিহিত অর্থবোধক হচ্ছে না। এ-888sport live chat একান্ত ব্যক্তিগত এবং গোষ্ঠীর আবেগ ও অনুভূতিকে ব্যক্ত করতে সমর্থ নয়। এরকম পরিস্থিতিতে জাগ্রত 888sport live chatসাধকের কর্তব্য হচ্ছে সম্পূর্ণ প্রেক্ষাপটের একটি পুনর্মূল্যায়ন করা, পাশ্চাত্য 888sport live chatের নান্দনিক মানদ- ও তথাকথিত ‘আন্তর্জাতিক’ 888sport live chatের যাথার্থ্যকে চ্যালেঞ্জ করা এবং 888sport live chat ও সংস্কৃতিকে নিজস্ব সমসাময়িক সমাজের পরিপ্রেক্ষেতে যাচাই করে নেওয়া। এর জন্য চাই প্রখর ঐতিহাসিক দৃষ্টি, সামাজিক সচেতনতাবোধ ও আধুনিকতার যথার্থ উপলব্ধি। এর মাধ্যমে 888sport live chatী অর্জন করবেন সঠিক ঐতিহ্যচেতনা এবং সমসাময়িক পরিপ্রেক্ষেতে তার উপযুক্ত প্রয়োগ। অভিজাত 888sport live chatের ঐতিহ্য সম্পর্কে নির্মোহ অনুসন্ধানের পাশাপাশি সুবিশাল লোকজ ও আদিম 888sport live chatের নান্দনিক ঐতিহ্যকে আত্মস্থ করতে হবে এবং এসবের যথার্থ সম্মিলনেই তাৎপর্যময় আধুনিক 888sport live chatের সৃজন সম্ভব হবে। আমাদের তরুণতম 888sport live chatীদের হাত দিয়েই সেই ইপ্সিত 888sport live chat সৃষ্ট হবে, এমন আশা করবার যথেষ্ট কারণ ইতোমধ্যেই পরিদৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

(‘আমাদের সাম্প্রতিক 888sport live chatের সংকট ও ঔপনিবেশিক

উত্তরাধিকার’, পৃ ১১৩)

উদ্ধৃতির অংশ বেশ একটু দীর্ঘই হয়ে গেল। কিন্তু বর্তমান আলোচকের ধারণা, এই উদ্ধৃতিসমূহ ও তাদের উৎস 888sport liveগুলোতেই 888sport live chat-সমালোচক আবুল মনসুরের 888sport live chat-ভাবনা ও নন্দনমানসের পরিচয়টুকু পরিপূর্ণভাবে বিধৃত হয়েছে, যা আমাদের বর্তমান 888sport live chatভুবনের স্বরূপ, সংকট ও সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলোকে চিহ্নিত করতে এবং বিভ্রামিত্ম থেকে উত্তরণের পথ অনুসন্ধানে সঠিক দিকনির্দেশনার কাজ করবে। তবে আবুল মনসুর যে কেবল ইতিহাস বর্ণনা এবং তাত্ত্বিকতার কাজটিই করেন তা কিন্তু নয়। বরং পাশাপাশি তিনি বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ 888sport live chat-আন্দোলন ও 888sport live chat-সংঘটনা বিষয়ে বিশেস্নষণাত্মক নিবন্ধ, চিত্রপ্রদর্শনীর আলোচনা, 888sport live chatকলাবিষয়ক গ্রন্থালোচনা, দেশি-বিদেশি 888sport live chatীদের 888sport sign up bonusচারণা ও মূল্যায়নধর্মী রচনার ক্ষেত্রেও কোনো প্রকার কার্পণ্য করেননি। তাঁর লেখা থেকে আমরা তাই একদিকে যেমন বাংলার প্রথম 888sport live chat-সমালোচক শ্যামাচরণ শ্রীমানী ও ১৮৭৪ সালে প্রকাশিত তাঁর পথিকৃৎগ্রন্থ সূক্ষ্ম 888sport live chatের উৎপত্তি ও আর্য্যজাতির 888sport live chatচাতুর্য্য সম্পর্কে জানতে পারি, তেমনি ব্রিটেনবাসী তরুণ 888sport appsি 888sport live chatী রুনা ইসলাম ও তাঁর টার্নার 888sport app download bdের জন্য মনোনয়নপ্রাপ্তির সূত্রে এই 888sport app download bdকে ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্ক সম্পর্কেও অবহিত হই। আবার
‘888sport live chatীকথা’ বিভাগে দেখা যায়, 888sport live chatীমহলে তাঁর জানাশোনা ও গতায়াতের পরিসীমাটুকুও যথেষ্ট দূর পর্যন্ত বিসত্মৃত; ওপারের বিনোদ বিহারী থেকে বিকাশ ভট্টাচার্য্য, কিংবা আমাদের রশিদ চৌধুরী থেকে রণজিৎ দাশ, আর বহির্বিশ্বের প্রচারবিমুখ ব্যালথাস থেকে হালের প্রচারপটু ব্রিটিশ গ্রাফিত্তি 888sport live chatী ট্যাংকসি, কেউই বাদ যান না তাঁর সর্বব্যাপী দৃষ্টির কম্পাস থেকে। তেমনি 888sport sign up bonusচারণ পর্বেও আমরা পেয়ে যাই অকালপ্রয়াত মেধাবী 888sport live chatী দীপা হককে নিয়ে লেখা, ‘দীপান্বিতা’ শিরোনামে ছোট্ট কিন্তু মর্মস্পর্শী একটি রচনা। একই কর্কট রোগে প্রয়াত আরেক প্রাণবান, প্রগতিশীল 888sport live chatী কাজী হাসান হাবীবের 888sport sign up bonusচিত্রের ভেতর দিয়ে যেমন উঠে আসে ঊনসত্তরের গণজাগরণের উত্তাল ও স্বপ্নমুখর দিনগুলোর কথা, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের সময় নিহত তাঁর হোস্টেলবাসী সহপাঠী শাহনেওয়াজকে 888sport app download for androidের মাধ্যমে তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বের প্রেক্ষাপটকেও ফুটিয়ে তোলেন নিপুণভাবে। 888sport live chat ও 888sport live chatীর প্রতি দায়বদ্ধ এবং সুতীব্র সংবেদনশীল আবুল মনসুর এমনকী মৌলবাদী, সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত তাঁর ছাত্র সঞ্জয়ের রক্তঋণ শোধ করতেও ভোলেন না লেখনীর মাধ্যমে।

শেষ করার আগে দুয়েকটি মৃদু অনুযোগ : বইটির প্রচ্ছদ, বাঁধাই, মুদ্র্রণ, বিন্যাস ইত্যাদি বেশ দৃষ্টিনন্দন ও রুচিকর হলেও মুদ্রণপ্রমাদের প্রকোপ রয়েছে যথেষ্ট, যা রচনার রসাস্বাদনে বিঘ্ন ঘটায়। পরিভাষার ক্ষেত্রে, ‘Simulation’-এর বাংলা হিসেবে ‘ছদ্মাবরণ’ কিংবা ‘Iconoclastic’-এর 888sport app download apk latest versionে ‘শুদ্ধাচারবিরোধী’ লেখা কতখানি শুদ্ধ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। বিদেশি নামের উচ্চারণের ক্ষেত্রেও দুয়েকটি সংশোধনী প্রয়োজন, যেমন জ্যোন> জোয়ান, রুশো> রুসো। গ্রন্থের পরিশিষ্ট পর্বে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিত্রকর্মের অনুলিপি প্রকাশের মাধ্যমে বিশ্ব888sport live chatের একটা ধারাবাহিক চিত্র-ইতিহাস তুলে ধরার উদ্যোগটুকু প্রশংসনীয়। তবে চিত্রসমূহের 888sport live chatীদের নামের পাশে যদি দেশ ও সময়কালের উলেস্নখ থাকত তাহলে এই আয়োজনটুকু আরো পূর্ণতা পেত নিঃসন্দেহে। যেমনটা সত্য গ্রন্থভুক্ত অধিকাংশ লেখার ক্ষেত্রেও; নিবন্ধসমূহের শেষে রচনাকালের উলেস্নখ থাকলে পাঠকের পক্ষে এর পেছনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক পটভূমির আলোকে লেখাগুলোর পরিপূর্ণ রসগ্রহণের কিংবা মূল্যায়নের সুবিধা হতো। তবে এসব নিতান্তই গৌণ। মোদ্দা কথা এটাই যে, এই গ্রন্থটির মাধ্যমে একটি দীর্ঘদিনের অভাব পূর্ণ হয়েছে। এদেশে, কিছু শ্রদ্ধেয় ব্যতিক্রম বাদে, সচরাচর 888sport live chat-সমালোচনার নামে যা লেখা হয়ে থাকে তা এতটাই অগভীর ও ওপরভাসা, এবং সেসবের ভাষাও এতটা আড়ষ্ট ও অর্থহীন যে, তা পাঠকের বোধে কোনো আবেদন সৃষ্টি করে না এবং শেষ বিচারে তার কোনো কাজেও লাগে না। তার বিপরীতে আবুল মনসুরের এই লেখাগুলো 888sport live chatবোধ ও বিষয়ভাবনার মাহাত্ম্য ছাড়াও, স্রেফ তাঁর স্বকীয়, 888sport live footballগুণসম্পন্ন ভাষার প্রসাদেই অত্যন্ত উপভোগ্য ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। 888sport live chatকলা-সম্পর্কিত এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় রচনার এরকম মূল্যবান একটি সংকলন যে আমাদের 888sport live chat-ইতিহাস ও সমালোচনা 888sport live footballের একটি আকর গ্রন্থ হয়ে থাকবে, সে-কথা বলা বাহুল্য। লেখককে এই অত্যন্ত আয়াসসাধ্য কাজটি করে ওঠার জন্য সকল 888sport live chatানুরাগীর পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। r

 

 

কালের কপোলতলে

সনৎকুমার সাহা

বিগতকালের অনুমান | প্রশান্ত মৃধা | কথা প্রকাশ | 888sport app,  ২০১৫ | ১৬০ টাকা।

প্রথমেই বলি, আজকালকার লেখা আমাকে টানে না। খুব কমই আমার পড়া। এমনটাই বোধহয় সাধারণত ঘটে। সমাজ-সংসারে নিজের অজামেত্মই অথবা নিজেকে পাশ কাটিয়েই পালাবদল ঘটে চলে। আপনাকে মেলাতে গিয়ে দেখি, মেলে না। তখন দূরত্ব বাড়ে। একসময় এ-নিয়ে কিছু আর মনেও হয় না। পছন্দ-অপছন্দের বৃত্ত যেন আগে থেকে তৈরি। তাতে তৃপ্তি-অতৃপ্তি সব। নতুন লেখা পড়তে গিয়ে হোঁচট খাই। অথবা বিস্বাদ ঠেকে। সরে আসি।

এরই মধ্যে কী করে যেন এই বইটি হাতে এল। এখন কিছু মনে থাকে না। চেষ্টা করে দেখেছি, বৃথা। একদিন অন্যমনস্কভাবে পাতা ওলটাই। 888sport alternative link। নাম, বিগত কালের অনুমান। লেখক, প্রশান্ত মৃধা। আগে যে তাঁর বিষয়ে কিছু শুনিনি, তা নয়। কিন্তু তাঁর কোনো লেখা পড়িনি। পড়ার আগ্রহও জাগেনি। এখন দেখি, তাঁর অনেক লেখা – গল্প, 888sport alternative link, 888sport live। প্রতিষ্ঠা নজরকাড়া। এবং এই বইটি তিনি নিজে স্বাক্ষর করে আমাকে পাঠিয়েছেন। সেটা চোখে পড়ল পরে। খুশিও হলাম খুব। কারণ, বইটি পড়ে খুশি হওয়ার মতোই। যে আমি ইদানীং নতুন সব লেখার সঙ্গে তাল মেলাতে পারি না, সে-ও আগ্রহ নিয়ে পড়েছে এবং এর অভিনবত্ব ও চমৎকারিত্ব তার কাছে ধরা পড়েছে ঠিকই।

সামনের মলাটের উলটো পিঠে 888sport alternative linkের বিষয় নিয়ে কিঞ্চিৎ ইঙ্গিত দেওয়া আছে; ‘বিগত কালের ভিতরে ঢুকে আছে বর্তমান, কিন্তু তাকে কোনোভাবেই অতীত ভাবা যায় না। কারণ, এই আখ্যানে এমনভাবে জনজীবন প্রবিষ্ট যে, সময় সেখানে কোনো বিষয়ই নয়। নদী জমিপত্তন আর 888sport promo code-পুরুষের চিরায়ত অন্তর্গত দাবি – সবকিছুই মিলেমিশে একাকার। জীবনের যে অনন্ত রহস্য, কাহিনির ভেতরেও আছে প্রায় তেমন রুদ্ধশ্বাস রহস্য আর নাটকীয়তা।…’ এখানে এলিয়টের ফোর কোয়ার্ট্রেটসের ‘বার্নট নর্টন’ 888sport app download apkর বিখ্যাত চরণগুলি মনে আসে : ‘Time present and time past/ Are both perhaps present in time future,/ And time future contained in time past./… what might have been and what has been/ point to one end, which is always present…’। এই 888sport app download apk ১৯৩৫-এর। প্রশান্ত মৃধার 888sport alternative linkের প্রথম প্রকাশকাল ২০১৫। মূল প্রশ্ন যেন এক জায়গায় এসে মেলে। তা বলে প্রশান্তর লেখা সেকেলে নয়। এমন অনেক কারিকুরি আছে যা কারিকুরি বলে মনে হয় না; আর তাতেই তাঁর মুন্সিয়ানা। গতি সহজ-সাবলীল। কিন্তু তলে-তলে চোরা স্রোত, এমনকি বহুমুখী টান। কালই যেন নিজের সঙ্গে নিজে রফা করতে চায়। এলিয়ট বলেছেন, ‘an abstraction remaining a perpetual possibility… .’ প্রশান্তর কাহিনিও, আমার মনে হয় সেদিকে ইঙ্গিত দেয়; যদিও ওপর-ওপর খুবই সাদামাটা, তেমন বুদ্ধির কসরত নিজেকে জাহির করে না, এবং সমস্যাও আমাদের দৈনন্দিন গ্রামীণ বাসত্মবতায় অলীক মনে হয় না। তাই বলে কোথাও স্থূল নয়, গ্রাম্য নয়। রাজহাঁস যেন। তবে শুরুর পরিচিতিতে শেষ কথাটি কেমন হেঁয়ালি। যেন বৌদ্ধ-বিরোধাভাস। পড়ি, ‘বাসত্মবকে তো অনুমানেই নির্মিতি দিতে হয়।’ এর অর্থ কি অনুমানের দ্বারা অর্থাৎ অনুমানের ওপর ভিত্তি করে বাসত্মবের নির্মাণ? না, বাসত্মব থেকে অনুমানের নির্মাণ? দুটোই কিন্তু পত্তন-সিদ্ধি দাবি করতে পারে। কাহিনি কোনোটিই নাকচ করে না। অবশ্য বেতাল-পঞ্চবিংশতি বা দ্বাত্রিংশৎপুত্তলিকার মতো প্রশ্ন কোনোখানেই সরাসরি অথবা জমকালো নয়। জীবনের মতোই তা বহমান। কাহিনির পরতে-পরতে মিশে থাকে। এমনকি এ-নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলে। গল্প বোনার ধরন অলক্ষে তার কাজ করে চলে। আবার এলিয়টের শরণাপন্ন হই। অবজেক্টিভ কো-রিলেটিভের মতো। এখানে 888sport alternative linkে।

কিন্তু নদী, জমি-পত্তন আর 888sport promo code-পুরুষের চিরায়ত অন্তর্গত দাবি, এরা কেউই, আমার মনে হয়েছে এখানে প্রবল আকার নেয় না। যদিও তারা থাকে। মধ্য-দক্ষেণ বঙ্গের প্রকৃতি ও জল-হাওয়া মিলে যে মানবজমিন রচনা করে তারই একখ- পাললিক উৎসার এই বিগতকালের অনুমান। কোনোটিই আলাদা নয়। জল-জঙ্গল প্রাণেরই আর এক সহজাত প্রকাশ যেন। আছে। মোটেই মানব-মানবীর জীবন-বিচ্ছিন্ন নয়। বরং জীবনই তাতে অঙ্গাঙ্গি জড়ানো। কোনো বিরোধ-মীমাংসার ব্যাপার এ হয়ে ওঠে না। নির্দ্বান্দ্বিক নিরন্তর তার প্রবাহ। একটু কান পেতে শুনলে মনে হয়, মুখের ভাষাতেও তার সুর। শুনতে পাই এ-বইতেই। কথা যারই হোক না কেন, লেখক এখানে অসাধারণ সফল। আমরা জীবনের প্রতিচ্ছবি ও প্রতিধ্বনি, দুইয়েরই সত্য-স্বরূপ ফুটে উঠতে দেখি। জমি-পত্তনের ঘটনা এখানে আছে ঠিকই। আসলে কাহিনির মূল-কা-তেও তারই প্রতিফলন। এবং তা অমীমাংসিতই থেকে যায়। কিন্তু আশ্চর্য, কোনো সময়েই তা প্রধান হয়ে ওঠে না। গোটা 888sport alternative linkে তার প্রকৃতি কখনোই সংঘাতময় নয়। মৃদুই বলা চলে। তা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সত্য। কিন্তু যেন আটপৌরে। তেমন কোনো উত্তেজনা ছড়ায় না। হয়তো সেখানে বিগতকালের অনুমানে এমনটিই স্বাভাবিক। তবে 888sport promo code-পুরুষের চিরায়ত অন্তর্গত দাবির স্বরূপটাই যেন সবচেয়ে দুর্বোধ্য ঠেকে। এ কি দাবি, না দাবির অতিরিক্ত? কামনা কি এখানে প্রাকৃত আকার পায়? জীবনকে কি তা গতি দেয়? অথবা কি তাকে বিধ্বসত্ম করে? যদি এমন না হয়, তবে তা আকুল প্রাণের আকিঞ্চন হতে পারে, প্রচলিত অর্থে, দাবি হয় কী করে? একথা বলার মানে এই নয়, এখানে 888sport promo code-পুরুষের প্রেম নেই, প্রাণের লীলা নেই, অন্তহীন মায়া অথবা মায়ার প্রতিমা নেই। 888sport alternative linkকে তা বর্ণময় করেছে, বর্ণকে কামিত্মময় করেছে, কামিত্মকে অক্ষয় করতে চেয়েছে। বইটি অবশ্যই সার্থকতর হয়েছে। লেখক যে-ক্ষুদ্র প্রলোভনে ধরা দেননি, এতে তাঁর নিরাসক্ত 888sport live footballিক দৃষ্টিই গভীর তন্ময়তায় ফুটে উঠেছে। কিন্তু চিরায়ত অন্তর্গত দাবির প্রশ্ন যদি ওঠে, তবে যথাযথ উত্তর মিলেছে, বলতে পারি না।

888sport alternative linkের কাহিনি মোটেই জটিল নয়। পটভূমিতে বিস্তার আছে, কিন্তু পরিবর্তনের তেমন কোনো তাগাদা নেই। একটু-আধটু থেকে থাকলে তা কেবল সংবাদ, অথবা গোপন তৎপরতায় অদৃশ্য। ইঙ্গিতটুকু কৌতূহল জাগাতে পারে। আর কোনো ছায়া ফেলে না।

খুলনা-বাগেরহাট অঞ্চলে এক নমঃশূদ্র পলিস্নর ছেলে অবিনাশ শিয়ারিং। তিনবার ম্যাট্রিক ফেল। বাপ অখিল শিয়ারিং যাত্রাদলের নট। যাত্রার নেশায় বউ-ছেলের খোঁজ রাখে না। কিন্তু ছেলে তিনবার ম্যাট্রিক ফেল করার পর তাকে তার কাছে নিয়ে যায়। ছেলে পারে শুধু ঢোল বাজাতে। ওতেই তারও যাত্রাদলে জায়গা জোটে। নীলরতন অপেরায় প্রায় তারই সমবয়সী বাবরি দোলানো সুদর্শন আর একটা ছেলে এসে জুটেছিল। নাম, আকুববর। অনেক গুণ তার। বাউল গায়, ঢোল-খঞ্জনি, দোতারা, একতারা বাজায়। ফাই-ফরমাসও খাটে। কিন্তু ঘরের টান একেবারে নেই। পুরো বাউন্ডুলে। অবিনাশের ভালো লাগে। জমাট বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে দুজনের।

এদিকে অবিনাশের অন্য এক সংকট। বলা যায়, শিরে সংক্রামিত্ম। ম্যাট্রিক পরীক্ষার কোচিং করতে গিয়ে নদীর ওপারের শ্রীরামকাঠি গ্রামের বিখ্যাত দর্জি মহানন্দ ঘরামির মেয়ে ছবির সঙ্গে তার পরিচয়, ভাব-ভালোবাসা। ছবি পাশ করে আইএ পড়ে, কিন্তু চিঠিতে দুজনের যোগাযোগ। ছবি জানায়, তার বিয়ে ঠিক। তাকে পেতে হলে অবিনাশকে শ্রীরামকাঠি আসতে হবে। আকুববরের পরামর্শে ও আর্থিক সহযোগিতায় অবিনাশ তা-ই করে। সরাসরি মহানন্দ ঘরামির কাছে গিয়ে দর্জিগিরি শিখতে চায়। পায়ও। শিখতে থাকে চটপট। কিন্তু ছবির বিয়ে আটকাতে পারে না। স্কুলে যে বিএসসি শিক্ষকের কাছে ওরা কোচিং করত, তার সঙ্গে বিয়ে। ছবির ইচ্ছেতেই। মাঝখানে ওই শিক্ষক বি.এড করতে যাওয়ায় বিয়েতে দেরি। বিফল মনোরথ অবিনাশ আবার বাবার কাছে ফিরে যায়। কিন্তু আকুববরকে পায় না। মন খারাপ করে মার কাছে ফিরে এসে কিছু টাকা নিয়ে সেলাইকল, ছুরি, কাঁচি ইত্যাদি কিনে ঘরের পাশে দোকান দেবে বলে খুলনা থেকে বাড়ি ফেরে। কিন্তু সেদিনই অখিল যাত্রা করা অবস্থাতেই মারা যায়। অবিনাশের আবার যাত্রাদলে ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। নানা জায়গায় আকুববরের খোঁজ করে। কোথাও পায় না। এদিকে একটু-একটু করে ছবিকে ভুলে যায়। এভাবে দুবছর পার হয়। সে মার কাছে ফিরে এসে তাঁর পছন্দ করা মেয়ে শিখাকে বিয়ে করে। সংসারী হয়ে বাড়ির গ্রামেই দর্জির দোকান দেয়। হাতের কাজ ভালো। নাম হয়। তবে মা সুলেখাও একদিন হঠাৎ করে বাবার মতো মারা যায়। তখন তার মায়ের ভাগের আধা বিঘা জমির জন্যে আবার তার মামাদের কাছে দেন-দরবার শুরু করে। মামারা ঘোরেল। দেয় না। কারো কথায় কাজও হয় না।

এই সময়ে আবার তার আকস্মিক আকুববরের সঙ্গে দেখা। শিখার জামাইবাবুর ছেলেমেয়েদের ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান আলীর দরগা আর বিখ্যাত দিঘি দেখাতে তাদের নিয়ে সে বাগেরহাটে যায়। সেখানে দরগায় দেখে আকুববরকে। জানতে পারে, সে কুষ্টিয়ায় লালন শাহর আখড়ায় কিছুদিন কাটায়, তারপর যায় সাধন-ভজনের টানে নদীয়ায়, আবার ফিরে এসে আগের নিউ নীলরতন অপেরায় নয়, কোহিনূর যাত্রা পার্টিতে যোগ দেয়। কিন্তু ভালো লাগে না। ভাসতে-ভাসতে দরগায় এসে জুটেছে। যে-কোনো দিন এখান থেকেও হাওয়া হয়ে যাবে। সে শোনে, অবিনাশের জমি নিয়ে তার মামাদের ফন্দি-ফিকিরের কথা। বাড়ি তার অবিনাশের শেখমাটিয়া থেকে নদী পেরিয়ে উলটোপিঠে দুই গ্রাম দক্ষেণে জুটখোলায়। কাউকে বলে না। কিন্তু এবার বন্ধুর বিপদে কা-ারি হতে তার সঙ্গে এসেছে। তারপর চরসোনাকুরে অবিনাশের মামাদের ঘাঁটি-লাগোয়া তার ভাগের জমি কেনার ব্যবস্থা করে সেখানে চালা তুলে বসবাস শুরু করে। শুধু মামারা নয়, গ্রামবাসীও এবার ফাটকা-ফাঁপরে পড়ে। পুরো নমঃশূদ্র গ্রামে এক মুসলমান ঘর তুলেছে, এ তারা কোনোদিন শোনেনি। চিমত্মাও করেনি। কার জন্যে এমন হলো, তা তারা নিশ্চিত হতে পারে না। তবে অবিনাশের মামাদের ফিচলেমি যে এর পেছনে প্রবলভাবে আছে, এটা কেউ অস্বীকার করে না।

আকুববর কিন্তু এক অপার রহস্যের নাম। ম্যাট্রিক পাশ করেছিল চারটে লেটার নিয়ে দুর্দান্ত ভালো ফল করে। তারপর কলেজের পড়াশোনায় মন বসেনি। শুরু তার বাউন্ডুলেপনা। বাউল-ফকির-বোষ্টমদের দলে গিয়ে ভেড়ে। ছন্নছাড়া জীবন। গাঁজা খায়। তারই ভেতরে এক সাধন-সঙ্গিনী জোটে। সুরুতুন্নেছা। আবার তার কাছ থেকেই পালিয়ে বেড়ায়। জানতে পারে, সে তার খোঁজ পেয়েছে। আসছে শেখমাটিয়ায় তার নতুন চালাঘরে। আসেও একজন। সে পিয়ারুন্নেছা, সুরতুন্নেছার ছোট বোন। কিন্তু সুরুতুন্নেছার আসা আর ঠেকানো যাবে না। আকুববর আবার নিরুদ্দেশে পালায়। অবিনাশকে বলে যায়, জমিতে মেয়েমানুষ থাকতে শুরু করলে এবার তার মামারা তাকে জমির ভাগ না দিয়ে কূল পাবে না। অবিনাশ এর আগে আরো জেনেছে, আকুববর কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য।

এই হলো 888sport alternative linkের কাহিনি-সার। আহামরি কিছু নয়। কিন্তু তাকে ধরে লেখক স্থান ও কালে অগুনতি সম্ভবপরতার ভেতর দিয়ে তার হয়ে ওঠা চিনিয়ে দেন। সৃষ্টিশীলতাতেও নতুন সম্ভাবনা জাগান। এবং আমার মনে হয়, তিনি অসাধারণ সফল। বাসত্মবের প্রত্যক্ষ রূপ এক, কিন্তু বিকল্প অনেক; এবং তা পরম্পরার প্রতিটি বিন্দুতে। কথা888sport live footballে অবিরাম চেতনাপ্রবাহের প্রকাশ আমরা আগে দেখেছি। পাশ্চাত্যে প্রম্নসত্ম, স্টাইনবেক, ভার্জিনিয়া উল্ফ, ফক্নার, এঁদের কীর্তিকথা এই ধারায় বারবার ওঠে। বাংলাতেও ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও গোপাল হালদার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কিন্তু সমসত্ম আন্তরিকতা সত্ত্বেও তারা মননের জগতেই আটকে থেকেছে। রক্ত-মাংসে জীবন্ত হয়নি। অনুভবে গভীর কোনো রেখাপাত করেনি। এদিক থেকে জাহানরা নওশিনের পিতামহীর পাখি বরং আমার কাছে অনেক বেশি আন্তরিক, অনেক বেশি সত্যার্থী ও সার্থক মনে হয়েছে, যদিও আয়তনের দিক থেকে এ তেমন চোখে পড়ার মতো নয়।

এটাও খেয়াল করবার, অবিরাম চেতনাপ্রবাহে কর্তা আবশ্যিকভাবে ব্যক্তি। বাসত্মবের রূপ-রস আপন চৈতন্যে সে শুষে নেয়। আর্তি এবং ব্যাপ্তিও। কিন্তু কাল স্বয়ং হাল ধরে না, অথবা নিজের অন্তর্জগৎ ফুটিয়ে তোলে না। আমরা জানি, কাল নিরবয়ব ও নির্বাক। বাসত্মবই তার অবলম্বন। অসংখ্য সম্ভাবনা মাথা তোলে সেখানে। তাদের মাড়িয়ে তার যাওয়া। যেভাবে যায়, সেটাই সর্বোত্তম, এমন বলা যায় না। সে নিজে কিছু করে না। করে আপন-আপন জায়গায় পাত্র-পাত্রী যারা, তারা। শুধু করা নয়, করতে চাওয়াও। এইসব মিলিয়ে আমাদের মাটির বাসত্মবে কাল সচল। আমরা নিজের-নিজের প্রেক্ষাপটে আর সবাইকে নিয়ে প্রত্যাশার ও সম্ভাবনার শতরঞ্চ বিছিয়ে তার চলার পথ – যা প্রত্যক্ষে একসঙ্গে একাধিক নয়, – অনুসরণ করি।

প্রশান্ত মৃধা এ-888sport alternative linkে, আমার মনে হয়, সে-কাজটিই করতে চেয়েছেন। স্থান ও কালস্রোতের একটা খ– তিনি চোখ রেখেছেন। ব্যক্তি-চেতনা যদি এসে থাকে, তবে তা পরোক্ষে এবং কালপ্রবাহের শর্তাধীনে। ফলে কাহিনি হৃদয়গ্রাহী হলো কি হলো না, অথবা ব্যক্তির ভাবনাজগৎ দৃশ্যমান হলো কি হলো না, এটা এখানে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। কালের চিহ্নিত বিন্দুতে নিজের নির্ধারিত জায়গায় বিকল্প সম্ভাবনাগুলোকে চিনিয়ে দিতে-দিতে কাহিনির নির্ধারণী পথ তিনি খুঁজে নেন। 888sport alternative linkের চাবিকাঠি লুকোনো থাকে সেইখানে। কাহিনি-মায়া পাঠকের মনোভূমির ওপরতলায় প্রলেপ দিয়ে যায়। কিন্তু তলদেশে সম্ভাবনারাশি প্রতিটি মুহূর্তের অনিশ্চয়তার ক্ষেত্রটিকেও চিনিয়ে দেয়। যা ঘটে, তা-ই সত্য, এই বোধে ফাটল ধরে। লেখক কিন্তু কোনো তত্ত্ব আওড়ান না। প্রত্যক্ষ বাসত্মবে জীবনযাপনের সত্মর থেকে এতটুকু সরে আসেন না। নমঃশূদ্র পাড়া, অপেরা পার্টি, বাউল-বোষ্টম-ফকিরের হালচাল, এসব যেমন চোখে পড়ে, ঠিক তেমনই। এখনো। তাতে অতিরঞ্জন নেই। দিকনির্দেশও না। একেবারে তদাত্মিক। কিন্তু তাতেই মিশে থাকে হওয়া-না-হওয়ার নানা পথ। এবং সবই ওই পর্যায়ে। গুরুগম্ভীর মোটেই নয়। মজার কথা যে আগ বাড়িয়ে বলেন, তাও নয়। কিন্তু পরিবেশে মজার উপাদান থাকলে ভাষায় ঠিকই ফোটে। এবং তা ওই পরিবেশের বস্ত্তনিষ্ঠা অক্ষুণ্ণ রেখেই। তাঁর ভাষার নির্মাণ আমাদের চুম্বকের মতো ধরে রাখে। আমরা তার ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য টের পাই। অনাবিল সরলতা নির্বিকার থাকে। কোনো তেতো স্বাদ মেজাজে মেশে না। যদিও নষ্টামি-বা-মুশকিল আসান হয় না। কালের গহবরে তার সম্ভাবনা কিছু না কিছু থেকে যায়। অতীতে, বর্তমানে, ভবিষ্যতেও। ধ্যান-ধারণা যেমনই হোক। হইচই-কান্নাকাটিতে তাঁর প্রশ্রয় নেই। মানবিকতা কিন্তু বরাবর অমত্মঃসলিলা। অবশ্য অনুমান সবই পরিস্থিতির ভেতর থেকে গজায়। লেখক সেখানে নিরপেক্ষ।

তাঁর লেখা থেকে নমুনা দিই। বোঝার সুবিধা হবে। –

১. – অখিল কোনো দিনও নিজের শরীরের দিকে খেয়াল দেয়নি।… সে শরীরের দিকে যত্ন নিয়েছে কি নেয়নি, তা তার গ্রামের মানুষজন কবে দেখতে গেছে? যায়নি। কেউ তা জানতও না। শুধু  যেবার অবিনাশ তিনবারের পর মেট্রিক পরীক্ষা দিয়ে ফেল করল সেবার অখিল প্রায় জোর করেই অবিনাশকে তার সঙ্গে খুলনা নিয়ে গিয়েছিল। অবিনাশ গিয়েও ছিল। সে পারত ঢোল বাজাতে। যাত্রায় তখন একটা ছোটোখাটো ব্যান্ডপার্টি থাকে। সেখানে ঢোল বাজানো লাগে। (পৃ ১৪)

২. – সুলেখা জানত না, ভিতরের ঘটনা একেবারেই ভিন্ন। শ্রীরামকাঠির মহানন্দ ঘরামির কাছে হঠাৎ টেইলারিং শিখতে যাওয়ার অন্য কারণ আছে। শেখমাটিয়া স্কুলে গতবার মেট্রিক পরীক্ষা দেয়ার সময় ফরম ফিলাপের পর মামাবাড়িতে এসেছিল মহানন্দ ঘরামির মেয়ে ছবি। সে-ও তখন কিছুদিন তাদের সঙ্গে কোচিং ক্লাস করে। তারপর নিজের বাড়ি শ্রীরামকাঠিতে চলে যায়। কিন্তু অবিনাশের সঙ্গে তার পত্র যোগাযোগ ঠিকই থাকে। এই গ্রামের ভাষায় একে বলে লাইন। লাইন আসলে প্রেম বা ভাব ভালোবাসা।… (পৃ ১৫)

৩. – ছেলেটি বাউল গান গায় জববর! কোথায় কোন কুষ্টিয়া না যশোর কোথায় কোথায় বহুদিন ধরে বাউল গান গেয়ে ফেরে। এমন মানুষ, এই বয়সে কত বিচিত্র তার অভিজ্ঞতা। লোকটাকে ছেলেই বলা ভালো, বড়ো ভালো লেগেছিল দলের সবারই। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিল অবিনাশের। একতারা বাজাতে পারে, দোতারা বাজাতে পারে, খঞ্জনি বাজায় চমৎকার – একেবারে বোল তুলে ফেলে। বাউলাঙ্গের গানে গলাও ভালো।… এই যুবকের নাম আকুববর! (পৃ ১৫-১৬)

888sport alternative linkের প্রথম দুই অধ্যায়ে প্রায় প্রতিটি প্রসঙ্গে – অতীতে ও বর্তমানে – আমরা বিকল্প সম্ভাবনার মুখোমুখি হই। ঘটনা ঘটে প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি করে। তার অনুসরণে আবার নতুন পরিস্থিতি। লেখক তাকে ফুটিয়ে তোলেন। কিন্তু যা ঘটেনি, কিন্তু ঘটতে পারত, কাল তাকে উড়িয়ে দেয় না। ভবিষ্যৎ তাকেও বিবেচনায় রাখে। সেই কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যেই বোধহয় এই 888sport alternative linkের আয়োজন। তবে তৃতীয় অধ্যায় থেকে দেখি, যা ঘটেছে তাকেই বাসত্মবতার ঘটমানতায় সজীব করে তোলা হচ্ছে। টান-টান উত্তেজনা বর্ণনায় বজায় থাকে অবশ্যই। কিন্তু বিষয়ের উচ্চাভিলাষ দ্বিতীয় অধ্যায়েই আটকে যায়। গতানুগতিকতার দিকেই বরং আমরা ঝুঁকি। আরো বড় কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু ছিল। 888sport alternative link শেষ হয় ঐতিহ্যের আশ্রয়ে। তা অনুমান নয়। এতে তাৎক্ষণিক সায় মিলতে পারে অনেক বেশি পাঠকের। কারণ এতেই তারা অভ্যসত্ম। কিন্তু আরো বড় চ্যালেঞ্জ লেখক নিলেন না, এতে আমার আফসোস হয়। লৌকিক আধ্যাত্মিক ধ্যান-ধারণা পরোক্ষভাবের সমর্থন পায়। আরো একটা কথা। ব্যক্তির ব্যতিক্রমধর্মিতা ও রহস্যময়তা বোঝাতে সাম্প্রতিক সময়ে তাকে কমিউনিস্ট পরিচয় দিলে তাতে কিন্তু কালাসংগতি ঘটে। কাহিনির মূল অংশ স্বাধীনতার বেশ পরেরই। যদিও উলেস্নখ আছে ম্যাট্রিক পরীক্ষার। আমরা দেখি, এরশাদের জামানাও তখন অতীত। এতে কিন্তু 888sport alternative link পুরোপুরি বিকশিত হয় না। বিচিত্র সম্ভাবনার জগৎ বিগতকালের অনুমানেও আরো বহুমাত্রিক হয় না।

তারপরেও একে আমি অকুণ্ঠে স্বাগত জানাই। বাংলা কথা888sport live footballের ধারায় নিঃসন্দেহে এ এক তাৎপর্যপূর্ণ-উলেস্নখযোগ্য সংযোজন। r

 

 

 

বিচ্ছিন্নতার ছিন্ন পাতাগুলি

হামীম কামরুল হক

নিজের সঙ্গে একা | মাসউদ আহমাদ | সময় প্রকাশন | 888sport app, ২০১৬ | ১৭৫ টাকা।

আলবেয়ার কাম্যুর দ্য আউটসাইডারের শুরুটা একটা বৃদ্ধাশ্রমের কথা দিয়ে হলেও সেখানে বৃদ্ধাশ্রম কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল না। কিন্তু শুরুতে এ-আশ্রমের কিছু কথাবার্তা যে-আভাস রেখে যায়, তা খেয়াল করার মতো। এ-888sport alternative linkের নায়ক মারসো এমন এক ব্যক্তি যে সমাজের সঙ্গে বেখাপ্পা এবং তার নানান অসংগতির জন্যই সে আসলে একজন আউটসাইডার বা আগন্তুক। কিন্তু আমাদের এও লক্ষ করা দরকার যে, পুঁজিবাদী সমাজে যারা শ্রমের অনুপযুক্ত হয়ে ওঠে, তাদেরও সমাজ থেকে একরকম বের করে দেওয়া হয়। সেদিক থেকে বৃদ্ধাশ্রম যাদের গন্তব্য হয়ে ওঠে, তারাও এক-একজন আউটসাইডার।

আমাদের সমাজে পুঁজির দাপট ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সেইসঙ্গে এর প্রতিক্রিয়াও দেখা দিচ্ছে। মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে মানুষের কাছ থেকে। একই ছাদের নিচে থেকে, একই বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে থাকা মানুষ একে অপরের সঙ্গে সংযোগহীন। তাদের সংযোগ দূরের কারও সঙ্গে। তাতে টাকা খরচ হচ্ছে, মোবাইল কোম্পানিগুলির পকেট ভারী হচ্ছে। আগে একান্নবর্তী পরিবারের জন্য যে কয় ডিববা দুধের প্রয়োজন হতো, এখন এক-একটি পরিবার-বিচ্ছিন্ন পরিবারের জন্য লাগছে এক-একটি আলাদা-আলাদা ডিববা। লাভ ব্যবসায়ী ও পুঁজিপতিদের। মানুষ কিছু হলেই তাদের মনমেজাজ শান্ত করতে ছুটে যায় বাজারে। কেনাকাটা তাদের মনে এক ধরনের স্বসিত্ম ফিরিয়ে আনে, বিরক্ত মন তৃপ্ত হয়ে ওঠে। এভাবে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা যা কিছু মানুষকে স্থির ও বিপুলভাবে সংহতি দিতে পারে, তার বদলে তাকে অস্থির ও অসংহত করে তুলেছে। এই অসংগতি থেকেই তৈরি হচ্ছে অ্যাবসার্ডিটি। ফলে এটি হয়ে উঠছে সময়ের আধুনিকতম প্রবণতা। সমকালীন সমাজ ও সময়কে যিনি পাঠ করতে চান তাকে এই সময়ের বিচ্ছিন্নতার পাঠটা সেরে নিতে হবে।

আমাদের সমাজে ক্রমে তীব্র হয়ে-ওঠা এই অসংগতির নানা লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। আর সেসব কম-বেশি হাজির হচ্ছে 888sport live footballে। একদিকে প্রবল বিচ্ছিন্নতা, অন্যদিকে যৌনতার মতো প্রবল সংযোগমুখী তাড়না, কিন্তু যা একান্তই বাহ্যিক – এটাই আমাদের অ্যাবসার্ডিটির উপাদান হয়ে দেখা দিচ্ছে। তরুণ লেখকদের এই সমাজকে চিনতে ও চেনাতে বর্তমানের এদিকটাতে যে নজর চলেই যায়, সেরকমেরই একটি দৃষ্টান্ত মাসউদ আহমাদের নিজের সঙ্গে একা 888sport alternative link। তিনি কেবল শুরুর ধাপে পা দিয়েছেন, কিন্তু তাকে আমাদের নানান কারণে তারিফ করতে হয়। এই সমাজ ও সময়ের একটি বিশেষ প্রবণতা নিয়ে তাঁর এ-888sport alternative link আমাদের অনেককে সচকিত করেছে। এমনিতে তিনি অনেকদিন ধরেই ছোটগল্প লিখে আসছিলেন, করছিলেন ছোটকাগজ গল্পপত্রের সম্পাদনা। স্বাভাবিকভাবে তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ হওয়ার কথা ছিল কোনো গল্পের বই, বা হতে পারত কোনো লেখককে নিয়ে বা কোনো বিষয়, যেমন ছোটগল্পবিষয়ক 888sport liveগ্রন্থের সম্পাদনা, পরিবর্তে তাঁর প্রথম গ্রন্থটি হলো একটি 888sport alternative link, যা সম্প্রতি প্রকাশিত হলো সময় প্রকাশন থেকে।

প্রসঙ্গত বিখ্যাত লেখক জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর একটা কথা মনে পড়ছে যে, অনেকেই প্রথমে ছোটগল্পচর্চা করেন 888sport alternative link লেখার সামর্থ্য অর্জন করার জন্য। কিন্তু যিনি 888sport alternative link লিখতে চান তার সরাসরি 888sport alternative linkই লেখা উচিত। এর জন্য ছোটগল্প লিখে-লিখে 888sport alternative link লেখার প্রস্ত্ততি নেওয়ার দরকার নেই। মাসউদ আহমাদ বেশকিছু ছোটগল্প লিখেছেন, কিন্তু প্রথমে বই হিসেবে প্রকাশ করলেন যেটি সেটি 888sport alternative link। তাঁর কারণ ব্যক্ত হয়েছে 888sport alternative linkের শুরুতেই। সাধারণ কোনো 888sport alternative linkের ভূমিকা থাকে না, কিন্তু এই বইয়ে একটি ‘ভূমিকা’ আছে; তাতে জানা গেল বেশ ছকটক কেটে আর পরিকল্পনা করে তিনি এটি লিখেছেন। 888sport alternative linkের বিষয় ঠিক করেছিলেন ‘বৃদ্ধাশ্রম’। এর জন্য তাঁকে মাঠ-গবেষণা, ক্ষেত্র পাঠ করতে হয়েছে। নানা কিছু ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয়েছে। এতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, একজন তরুণ হয়ে শুরুতেই ‘লোকে খুব খাবে/ নিবে’ জাতীয় বাজার মাত করার উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। এজন্য তিনি বেশ সিরিয়াস বিষয়কে বেছে নিয়েছেন। ফলে এ-888sport alternative link আলাদা মনোযোগ দাবি করে। সবচেয়ে বড় কথা, এই 888sport alternative linkের প্রধান চরিত্র কুসুম বেওয়াকে তিনি বেশ যত্ন করে গড়েছেন। তাঁর উপস্থাপনায় অবিরাম তৈরি হয়েছে এমন সব মানবিক ও স্পর্শকাতর পরিস্থিতি, যা পাঠককে স্পর্শ না করে পারে না।

888sport alternative linkটি চিঠির আঙ্গিকে ২৪টি পরিচ্ছেদে লেখা হয়েছে। কুসুম বেওয়া তাঁর সমত্মান রাতুলকে লম্বা-লম্বা চিঠি লিখছেন। পাঠক পড়তে-পড়তে বুঝতে পারবেন যে, হয়তো এই চিঠিগুলি কুসুম বেওয়া কখনো ডাকে পাঠাবেন না। ফলে মনে হতে পারে, চিঠিগুলি তার নিজেকেই লেখা। এ যেন এক ধরনের দিনপঞ্জি বা ডায়েরির মতো আবহ তৈরি করেছে। গদ্যের স্রোত একের পর এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে যা বেশ শৈল্পিক : ‘যখন একা থাকি, জানালার  কাছে গিয়ে দাঁড়াই, বাইরে তাকাই – অবারিত খোলা আকাশ আর প্রকৃতি দেখি। বয়সের ভারে ন্যূব্জ আমাদের নানানরকম দুঃখী ও বিপন্ন সহযাত্রীকে দেখি। ভাবি, অচেনা অজানা এই আশ্রমে এসেছি এতকাল হয়ে গেল; তবু মনে হয়, এইতো সেদিন – বিকেলের আলো ফুরিয়ে আসা এক হেমমেত্ম এখানে এলাম। এর মাঝে এতগুলি দিন বয়ে গেছে, বুঝতেই পারিনি। তখন আমার নিজের ছোটবেলাটা যেন পায়ে পায়ে হেঁটে এসে সামনে দাঁড়ায়।’ এই অনুচ্ছেদের শেষ বাক্যটা যেন আগের বাক্যগুলোকে একটা উচ্চতায় নিয়ে যায়। কিন্তু সেটি কতটা উচ্চতায় নিয়ে যায়, তা বুঝতে এই 888sport alternative linkের শুরু থেকে পড়া দরকার। বোধকরি লেখক তাঁর ভাষাপ্রবাহ থেকে কোনোভাবেই একটি পরিস্থিতিকে বিচ্ছিন্ন করতে চাননি। ফলে এই 888sport alternative linkের যে-জায়গাগুলো দারুণ এক একটা মাত্রা তৈরি করে, সেটি বিচ্ছিন্নভাবে উলেস্নখ করলে এগুলির দ্যোতনাটি হাজির করা যাবে না। পাঠক জানেন, গল্প-888sport alternative linkের কোনো একটি শব্দ বা একটি বাক্য একেবারে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’র মতো শব্দ কতটা অমোঘ হয়ে ওঠে; সেটি যে-পরিস্থিতিতে অমোঘ হয়ে ওঠে, তা বোঝার জন্য বিচ্ছিন্ন করে উলেস্নখ করলে ধরা পড়ে না। রবীন্দ্রনাথের ‘শাসিত্ম’ গল্পের ‘মরণ’ শব্দটি নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে, সেটি কতটা অমোঘ হয়েছে, বোঝার জন্য পুরো গল্পটা পড়া দরকার। লেখক এই 888sport alternative linkে এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, যেখানে একটি সংলাপ, একটি বাক্য এতটাই সাধারণ, কিন্তু তার ব্যঞ্জনা অমোঘ হয়ে দেখা দিয়েছে।

একাকিত্ব, অপেক্ষা আর অবিরাম 888sport sign up bonusর ধারা বইতে থাকে সমত্মানকে ঘিরে, বৃদ্ধাশ্রমের বিচিত্র লোকজন সম্পর্কে থমকে দেওয়া সব বর্ণনা 888sport alternative linkটিতে এমন একধরনের পলিফনি তৈরি করেছে যাতে বিচ্ছিন্নতার ছিন্নপত্রগুলি জীবনের ঝড়ে উড়ে যাওয়ার বদলে যেন এক জায়গায় জড়ো হয়েছে।

এক ধরনের সরলতা এই 888sport alternative linkের শক্তি, কিন্তু এটাই এর প্রধানতম দুর্বলতাও। কারণ একজন বৃদ্ধা, যিনি নিজের বর্তমান অবস্থানে সুখী নন, এবং বাধ্য হয়েই বৃদ্ধাশ্রমে থাকছেন, তার মনের জটিলতাগুলির দিকে লেখকের নজর তেমন একটা যায়নি। কুসুম বেওয়া তার সমত্মানকে চিঠি লিখছেন, সেই চিঠির ভাষ্যতে তৈরি হচ্ছে 888sport alternative link, সেখানে বৃদ্ধার নিজের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব, গোপনীয়তার এবং কী বলতে চেয়েও বলতে পারলেন না বা পারছেন না, সে-দিকগুলি আসতে পারত। মোদ্দা কথা, চরিত্রটিকে লেখক এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেখে নিতে পারতেন, সেইসঙ্গে রাতুলের দিকটিও আসতে পারত, সে তার কোন পরিস্থিতিতে মাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে এবং তার ভেতরকার কোন সংকটগুলি তার মাকে এই পরিস্থিতিতে ফেলেছে, সেসব আসতেই পারত। যদিও সাধারণ পাঠে এই দিকগুলি ততটা ধরা পড়তে নাও পারে পাঠকের, তারচেয়ে একটা বেদনা-বিষণ্ণ 888sport alternative link পড়ে উঠতে পারবেন, সেটাই হয়তো প্রধান। এ ছাড়া সমকালীন বিষয়গুলো যেমন ‘বাবা দিবস’, ‘মা দিবস’ পালন থেকে শুরু করে এই সময়ের পত্রপত্রিকার কিছু মাতামাতির কথাও এতে সূক্ষ্মভাবে এসেছে। সবচেয়ে বড় কথা, মানুষ কতটা নাজুক এবং অসহায়বোধ করে, কত রকমের গল্পগাছা, জীবনের বিচিত্র সংরাগ তাকে স্পর্শ করে, সেসব ও বহুদিক এ-888sport alternative linkে এসেছে। যদিও লেখক চরিত্রদের মন ততটা পাঠ করতে চাননি, তাদের বাহ্যিক জটিল পরিস্থিতি গল্পগুলি তিনি জোড়া দিয়ে-দিয়ে এ-888sport alternative link নির্মাণ করেছেন।

আমেরিকার বিখ্যাত লেখক জন আপডাইক (১৯৩২-২০০৯) তাঁর প্রথম 888sport alternative link দ্য পুয়োরহাউস ফেয়ার (১৯৫৯) লিখেছিলেন একটি বৃদ্ধাশ্রমকে ঘিরে, মাসউদ আহমাদেরও প্রথম 888sport alternative link গড়ে উঠেছে বৃদ্ধাশ্রমকে ঘিরে। জন আপডাইক ক্রমে হয়ে উঠেছিলেন আমেরিকার 888sport live footballজগতের এক প্রধান কণ্ঠস্বর। 888sport appsের 888sport live footballে মাসউদ আহমাদেরও সম্ভাবনা যে বিপুল, সেটি নিজের সঙ্গে একা 888sport alternative linkটি বোধ করি প্রকট করে তুলেছে। লেখককে অভিনন্দন। 888sport alternative linkটির বহুল প্রচার প্রত্যাশা করি। r

 

 

পূর্ণতার সন্ধানে 888sport live chatী

সমীর ঘোষ

রামকিঙ্কর : অন্তরে বাহিরে | সম্পাদনা : প্রকাশ দাস | দীপ প্রকাশন | কলকাতা, ২০১৫ | ৪৫০ টাকা।

একবার এক সাক্ষাৎকারে 888sport live chatী-ভাস্কর রামকিঙ্কর বেইজকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, – ‘আপনার জন্মতারিখ কত সনে, মানে জন্মদিনটি কবে? জন্মস্থান কোথায়?’

উত্তরে জানিয়েছিলেন, – ‘ভূতের আবার জন্মদিন? তবে কুষ্ঠিতে লেখা আছে ১৯১০ সনে বাঁকুড়ার কোনও এক গাঁয়ে।’

নিজের বিষয়ে এমন মন্তব্যের মধ্যে প্রচ্ছন্ন রয়েছে জমাটবাঁধা অভিমান। এই অভিমান আমৃত্যু তাঁকে বহন করতে হয়েছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন অচিমত্ম্য সেন। ১৯৬৮ সালে, চিত্রপ্রসঙ্গ পত্রিকায়।

এমন আরো একটা লেখার কথা মনে পড়ছে। সুজন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আশিসকুমার স্যানাল-সম্পাদিত ১৩৭৯ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত অন্যমনে 888sport live chatী রামকিঙ্কর বিশেষ 888sport free betয় ভাস্কর শর্বরী রায়চৌধুরী লিখেছিলেন – ‘আমার মনে হয় রামকিঙ্করের কাছে যতখানি আশা করা যেত, ততখানি পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত আমার মনে পড়ছে, উনি কিছুদিন আগে আমাকে বলেছিলেন, – ‘বিয়ে না করে খুব ভুল করেছি হে, বিয়ে করাটা উচিত ছিল।’ আমার মনে হয়, কথাটা খুব সত্যি। তাতে ওঁর জীবনটা যেমন গোছানো হতে পারতো, তেমনি উৎসাহ ও সক্রিয়তাও আরো বেড়ে যেত। আরো মনে হয়, রামকিঙ্কর যদি কলকাতাতে বা শামিত্মনিকেতনের বাইরে কোথাও থাকতেন, তাহলে হয়তো এতো সহজে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেন না। রবীন্দ্রনাথ যাঁকে উৎসাহ দিয়েছেন, রামানন্দ বাবু যাঁকে ইনট্রোডিউস করেছেন, তাঁকে শামিত্মনিকেতন-নির্ধারিত নির্দিষ্ট দক্ষিণা দিয়েই গেছে, যেটা হয়তো তাঁর প্রতিভাতে কিছু মরচে ধরিয়ে দিয়েছে। অন্ততঃ প্রতিনিয়ত সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে উদ্ভাবনশীল মনকে ও হাতকে সক্রিয় রাখতে হতো যদি উনি শামিত্মনিকেতনের বাইরে থাকতেন। এটা আমার মনে হয়েছে কারণ, ওঁর সবচেয়ে ভালো কাজগুলো কত আগে হয়ে গিয়েছে। তারপরেও উনি ভালো কাজ করেছেন, কিন্তু ঐ পর্যায়ের কী? অবশ্য এগুলো সবই আমার মনে হয়েছে মাত্র, সত্যি-মিথ্যা বা হোত কিনা জানি না।’

১৯৮০, আগস্ট ২, শনিবার মধ্যরাতে, সাড়ে বারোটায় চুয়াত্তর বছর বয়সে মারা যান চিত্রী-ভাস্কর রামকিঙ্কর বেইজ। তাঁকে দাহ করা হয় শামিত্মনিকেতনে। মুখাগ্নি করেন একমাত্র ভাইপো দিবাকর বেইজ।

অযৌক্তিক উচ্ছ্বাসের পরিবর্তে, নির্মোহ মূল্যায়ন, প্রায় তেতালিস্নশ-চুয়ালিস্নশ বছর আগেই করেছিলেন শর্বরী রায়চৌধুরী। রামকিঙ্কর বেইজের জীবদ্দশায় তাঁর মূল্যায়নের আর একটা অংশও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

‘আমার খুব মনে হয়, রামকিঙ্করকে নিয়ে খুব ভালো সিনেমা হতে পারে। অমন জীবন্ত চরিত্র, খড়ের চালের ঐ বাড়ি,
কিচ্ছু-না-থাকার মধ্যে বসে থাকা অমন এক 888sport live chatী – দারুণ সাবজেক্ট। আমার তো মুভি ক্যামেরা থাকলে ঠিক তুলে ফেলতাম।’

‘লাস্ট ফর লাইফ’ – আখ্যানে যেমন ভ্যান গঘ, নাটকীয় চরিত্রে বিশিষ্ট। ভারতবর্ষের আধুনিক 888sport live chatীদের মধ্যে রামকিঙ্কর বেইজ তেমনি নাটকীয়তায় বিশিষ্ট। আকর্ষণীয় চরিত্র।

রামকিঙ্করের জীবনচর্যা, আকস্মিক আবির্ভাব, সংঘাতময় পথ পরিক্রমা – সেসব নিয়েই সমরেশ বসু লিখেছিলেন 888sport alternative link, দেখি নাই ফিরে। লেখকের আকস্মিক মৃত্যুতে 888sport alternative link অসমাপ্তই থেকে যায়। রামকিঙ্করের ছবি বা ভাস্কর্যের খোঁজ যাঁরা রাখেন না, এমন অনেকেই 888sport alternative linkের রামকিঙ্করের প্রতি আকর্ষণবোধ করেন। সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে মিথ কথায় পলস্নবিত হয়ে ওঠে রামকিঙ্কর-জীবন। আর ক্রমেই 888sport app পড়তে থাকে শিলা-ভাস্কর্যের রামকিঙ্কর-অন্বেষা। সার্বিক নির্মোহ মূল্যায়ন।

অন্তরে-বাহিরে, সমগ্রতায় 888sport live chatী-ভাস্কর এবং রক্তমাংসের মানুষ রামকিঙ্কর বেইজকে পাঠকের কাছে তুলে ধরার আন্তরিক তাগিদে কবি-888sport live chatী প্রকাশ দাস সম্পাদনা করেছেন, – রামকিঙ্কর অন্তরে-বাহিরে। দীর্ঘ শ্রম এবং নিষ্ঠায় সংকলন করেছেন নানা লেখা। 888sport live chat ও ভাস্কর্য, তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা, মূল্যায়নসহ আরো বিচিত্র বিষয়-অনুষঙ্গ নিয়ে এমন বিস্তারী প্রামাণ্যগ্রন্থ বাংলায় সম্ভবত প্রথম।

সংকলক প্রকাশ দাস বিষয়কে নানা পর্যায়ে বিন্যসত্ম করেছেন। বইটির ভূমিকা লিখেছেন শামিত্মনিকেতনে 888sport live chatী নন্দলাল বসুর ছাত্র রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভূমিকায় কিছু-কিছু মন্তব্য যথেষ্টই প্রাসঙ্গিক। যেমন, ‘কিছু-কিছু গ্রন্থ থাকে যার ভূমিকা চলে না। সমগ্রটাই পরিপূর্ণ। যার আরম্ভ আর যার ইতি হয়ই না। আমাদের সৌভাগ্য তাঁর কাছে শিক্ষাপাঠ গ্রহণ। তাই এ-গ্রন্থের পা-ুলিপি পড়তে-পড়তে সেই ষাট-পঁয়ষট্টি বছরের পটগুলি সামনে এসে দাঁড়ায়। কিঙ্করদা একদিন বললেন, ‘তোমরা ছবি আঁকা ছেড়ে দাও, দুই বুড়ো মিলে সব শেষ করে দিয়েছে, মূর্তি গড়, মূর্তি কর।’ এমনই টুকরো-টুকরো ঘটনারা রাতের আকাশে তারার মতো জ্বলজ্বল করে।’

‘এই গ্রন্থটির মধ্য দিয়ে তাঁর সম্পর্কে জানার একটি বড় ভূমি গড়ে উঠল নিঃসন্দেহে।’ ভূমিকার এই মন্তব্য সংকলনের যথার্থ প্রাপ্তি।

রামকিঙ্করচর্চা আর সম্পাদনা-সংকলন প্রকাশনার কথা বিস্তারিত শুনিয়েছেন স্বয়ং সংকলক প্রকাশ দাস।

আমার কথা’ – রামকিঙ্কর বেইজের আত্মজৈবনিক রচনা দিয়ে শুরু। এরপর নানা সময়ে রামকিঙ্কর, 888sport live chat ও 888sport live chatী বিষয়ে লিখেছেন এমনসব টুকরো লেখা নিয়ে একটি পর্ব। এর মধ্যে আছে বিচিত্র বিষয় প্রসঙ্গ। কবি, অবনীন্দ্রনাথ, মহাত্মা গান্ধী, গণতন্ত্র, রাজনীতি যেমন আছে, একই সঙ্গে মিশে আছে 888sport live chat-প্রসঙ্গ – অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট, ছন্দ, ভাস্কর্য, মাস্টার মশাই, আরো নানা বিষয়-ভাবনা।

বিভিন্ন সময়ে নানাজনের কৌতূহল ও জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে হয়েছিল 888sport live chatীকে। রামকিঙ্করের সঙ্গে কথোপকথনের নির্বাচিত বারোটি সাক্ষাৎকার সংকলনে মুদ্রিত। সময় থেকে সময়ান্তরে, নানাজনের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে রামকিঙ্করের 888sport live chat-ভাবনা ও জীবনদর্শন। জিজ্ঞাসার উত্তরে 888sport live chatীর তাৎক্ষণিক মত-মন্তব্যে মিলে আছে 888sport live chat এবং জীবনচর্যার গভীর উপলব্ধি এবং একই সঙ্গে অভিজ্ঞতার নির্যাস।

‘সঙ্গ-অনুষঙ্গ : বাঁকুড়া থেকে শামিত্মনিকেতন’ পর্বে পনেরোটি লেখার বিষয় প্রসঙ্গ মূলত রামকিঙ্করের সান্নিধ্যে যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের অভিজ্ঞতার বিবরণ। আত্মীয়স্বজন, বাল্যবন্ধু, সহপাঠী, – সুহৃদজন, প্রতিবেশী যেমন আছেন, সেইসঙ্গে রয়েছেন শামিত্মনিকেতনের 888sport live chatীবান্ধব প্রভাবমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, ধীরেনকৃষ্ণ দেববর্মন, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়, প্রভাস সেন ও দিনকর কৌশিক। একই সঙ্গে আছেন অশোক মিত্র, সমরেশ বসু ও বিশ্বজিৎ রায়। দিবাকর বেইজ শুনিয়েছেন পারিবারিক সম্পর্কের কথা। 888sport live chatকর্মের সহযোগী বাগাল রায় শুনিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। আর 888sport live chatীর জীবনসঙ্গী রাধারানীর অন্তরঙ্গ 888sport sign up bonusকথন। সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রকাশ দাস সংগ্রহ করেছেন রামকিঙ্কর বিষয়ে রাধারানীর অকপট ভাষ্য, মূল্যবান সংযোজন।

‘রামকিঙ্কর ও তাঁর 888sport live chatকাজ : নির্বাচিত 888sport live’ পর্যায়ে উনিশটি বিচিত্র সৃজন-প্রসঙ্গ। ছবি-ভাস্কর্য ছাড়াও আছে রামকিঙ্করের অভিনয়, গান, মঞ্চসজ্জার বিচিত্র কর্মকা–র অভিজ্ঞতার বর্ণনা। 888sport live chatী বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়, ভাস্কর শঙ্খ চৌধুরী, জয়া আপ্পাস্বামী, কেজি সুব্রহ্মণ্যন, শুভময় ঘোষ, পূর্ণেন্দু পত্রী, রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি পাল, মৃণাল ঘোষ, অমিত মুখোপাধ্যায়, আর শিবকুমার, অরুণ পাল প্রমুখ ব্যক্তিজনের 888sport live chat-মূল্যায়ন। রামকিঙ্করের অভিনয়-প্রসঙ্গ এসেছে অমিতাভ চৌধুরীর লেখায়। শুচিব্রত দেব একই বিষয় প্রকাশ করেছেন তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে।

মঞ্চসজ্জার কথা জানিয়েছেন শামিত্মনিকেতনের প্রাক্তন ছাত্র ও অধ্যাপক সুখেন গঙ্গোপাধ্যায়।

‘ছবি আর মূর্তি বাদ দিলে কিঙ্করদার বড় বাতিক ছিল নাটক। শুধু 888sport live chat-নির্দেশনাই নয়, পরিচালনার ভারও নিতেন তিনি। শামিত্মনিকেতনে রবীন্দ্র অ-রবীন্দ্র কোনো নাটক হলে নিজেই এগিয়ে যেতেন এবং কোন অংশ কীভাবে হবে, কীভাবে চলতে হবে, রিহার্সালে রোজ উপস্থিত থেকে তা বলে দিতেন। মনে আছে ১৯৪৬ সালে শামিত্মনিকেতনের সিংহসদনে সেই প্রথম হল বাঁশরি নাটক। শুধু স্টেজই নয়, পাত্রপাত্রীদের মেকআপও করে দিলেন নিজে।’

কলাভবনের ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে সুকুমার রায়ের ‘হ-য-ব-র-ল’ অভিনয় করালেন সেবারই। মুখোশ বানানো থেকে সংগীত পরিচালনা – সবই ছিল তাঁর। দুর্দান্ত হয়েছিল নাটক। নাটকের শুরুতে একটা গানও জুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। আবোল-তাবোল বইয়ের প্রারম্ভিক 888sport app download apkটিতে সুর দিয়েছিলেন নিজেই। সেটা গাওয়া হতো ড্রপসিন ওঠার আগে। ‘আমরা লক্ষ্মীছাড়ার দল’ গানটির আদলে, ‘আয়রে-ভোলা খেয়াল খোলা স্বপন দোলা নাচিয়ে আয়’ যখন গাওয়া হতো কিঙ্করদাও গলা মেলাতেন।’

অমিতাভ চৌধুরীর 888sport sign up bonusচারণে যেমন নাটকপ্রেমী রামকিঙ্করকে পাই, তেমনভাবেই অনেকের 888sport sign up bonusপটে ধরা আছে রামকিঙ্করের গান। নাটকের গান ছাড়াও সময়ে-সময়ে আবেগমথিত রামকিঙ্কর গেয়ে উঠতেন রবীন্দ্রনাথের গান। ভরাট গলায় উদাত্ত স্বরে ও সুরে সেই গান শামিত্মনিকেতনের প্রকৃতি-পরিবেশে ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছে দিত শ্রোতাকে।

‘রামকিঙ্কর : সমকালীন 888sport live chatীদের চোখে’ শীর্ষক পর্যায়ে যাঁরা রামকিঙ্কর বেইজের 888sport live chatকৃতির আলোচনা করেছেন তাঁদের মধ্যে সত্যজিৎ রায়, চিমত্মামণি কর, পরিতোষ সেন, মকবুল ফিদা হুসেন, রথীন মৈত্র, প্রদোষ দাশগুপ্ত, সোমনাথ হোর, শর্বরী রায়চৌধুরী, গণেশ পাইন, সনৎ কর, যোগেন চৌধুরী বিশেষ উলেস্নখ্য। স্বকীয়বোধ, অভিজ্ঞতা, অনুভব আর বিশেস্নষণে রামকিঙ্করের 888sport live chat এবং 888sport live chatী-মাহাত্ম্য প্রকাশ করতে সবাই সচেষ্ট। তবে
কোনো-কোনো মূল্যায়নে আছে দায়সারা ভাব। মগ্নতার অভাবও স্পষ্ট। তবে এর মধ্যে 888sport live chatী গণেশ হালুই এক ভিন্নমাত্রিক অনুভব প্রকাশ করেছেন, যা এই পর্বের সম্পদ।

‘যেন শায়িত অনড়, মাতাল ভাস্কর্য। আমার প্রথম ও শেষ দেখা পিজি হাসপাতালের হিমঘরে।’

‘গ্রন্থিতেই শক্তি। তেমনি বেদনাসিক্ত অভিব্যক্তিতেই অনুভূতির জোর। লোকটা মারা গেল। ভরা হাঁড়িটা কাত হয়ে গেছে। ভেজামাটির রং আরো গাঢ় হয়েছে। উইঢিপির মতো ভুঁইফোঁড় মাটির গন্ধ। মানুষজন গাছ-গাছালিদের মাতাল করেছে। একদিন সে ছিল দাঁড়িয়ে। নড়ি না। তবু মার কেন? উপর-নীচ। আমার চতুর্দিক দিয়েছি তোমাদের। আমি নিঃস্ব এখন। মার কোপ। লাগে না। ভরা হাঁড়িটা কাত হয়ে গেছে। ভেজামাটির রং আরো গাঢ় হয়েছে।’…

সংকলনের গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ‘চিঠিপত্র’ অংশ। দিবাকর বেইজকে লেখা রামকিঙ্করের বৈষয়িক চিঠিপত্র। এর সঙ্গে আছে রাজেন্দ্রনাথ দত্ত এবং সমর ভৌমিককে লেখা চিঠি। ব্যক্তিগত, সাংসারিক বিষয়-ভাবনায় জড়িয়ে থাকা অন্য এক রামকিঙ্করকে আবিষ্কার করা যায় দিবাকর বেইজকে লেখা চিঠিতে। আর 888sport live chat-বিষয়ের প্রসঙ্গ কথার সূত্র মেলে 888sport app চিঠিতে।

একদিকে সংসার বন্ধনমুক্ত নিরাসক্ত, উদ্দাম জীবনচর্যা; অন্যদিকে পারিবারিক সম্পর্কের সংবেদনায় সতত সক্রিয় – এমন দ্বৈত সত্তার বিরল অভিজ্ঞতার স্বাদ পাওয়া যায় এই চিঠির ঝাঁপিতে।

সংকলনগ্রন্থের ‘888sport app রচনা’ অংশে আছে পাঁচটি বিষয়-তথ্য। ‘বিদেশযাত্রা ও বুদাপেস্টে রবীন্দ্র-আবক্ষ প্রতিকৃতি ভাস্কর্য
উপহার বিষয়ে’। এ ছাড়া রামকিঙ্করের লেখা দুটি আবেদনপত্র, রামকিঙ্কর কৃত ভাস্কর্য ও চিত্রপঞ্জি, রামকিঙ্করবিষয়ক রচনাপঞ্জি এবং রামকিঙ্কর : জীবন ও জীবনপঞ্জি।

সংকলনকে পূর্ণাঙ্গ করে তোলার জন্য সম্পাদক স্থানবিশেষে টীকা সংযোজন করেছেন। রঙিন ছবি, সাদা-কালো রেখাঙ্কন
আর নানা প্রাসঙ্গিক ফটোগ্রাফ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে অন্তরে-বাহিরের রামকিঙ্করকে। জীবন ও জীবনপঞ্জিতে জন্ম থেকে মৃত্যু – পর্যায়ক্রমিক তথ্য সঞ্চয়ন অকৃত্রিম নিষ্ঠার নিদর্শন।

নিরলস শ্রম এবং মগ্নতার সঙ্গে আছে প্রগাঢ় ভালোবাসা, যার ছোঁয়া পাই সমগ্র সংকলনের বিন্যাসে। 888sport live chatী-ভাস্কর রামকিঙ্কর বেইজ-সম্পর্কিত এমন পূর্ণাঙ্গ সংকলনগ্রন্থ বাংলাভাষায় এই প্রথম। সম্পাদক-সংকলক প্রকাশ দাস এবং একই সঙ্গে গ্রন্থটির প্রকাশককেও অভিনন্দন।