মহাজীবনের কারাভাষ্য
পিয়াস মজিদ
‘…আজ আমার ৪৭তম জন্মবার্ষিকী। এই দিনে ১৯২০ সালে পূর্ব বাংলার এক ছোট্ট পলস্নীতে জন্মগ্রহণ করি। আমার জন্মবার্ষিকী আমি কোনোদিন নিজে পালন করি নাই – বেশি হলে আমার স্ত্রী এই দিনটাতে আমাকে ছোট্ট একটি উপহার দিয়ে থাকত। এই দিনটিতে আমি চেষ্টা করতাম বাড়িতে থাকতে। খবরের কাগজে দেখলাম 888sport app সিটি আওয়ামী লীগ আমার জন্মবার্ষিকী পালন করছে। বোধ হয়, আমি জেলে বন্দি আছি বলেই। ‘আমি একজন মানুষ, আর আমার আবার জন্মদিবস!’
(পৃ ২০৯, কারাগারের রোজনামচা,
শেখ মুজিবুর রহমান)
১৭ মার্চ ১৯৬৭-তে 888sport app কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের দায়ের করা ১১ মামলার আসামি শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ৪৭তম জন্মবার্ষিকীতে লিখেছেন এই একান্ত অনুভবের কথা। ইতিহাসের আশ্চর্য কাকতাল – এর ঠিক ৫০ বছর পর ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বর্ণময় জীবনের কারাপঞ্জি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করল – বাংলা একাডেমি। ভূমিকা লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা, 888sport appsের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা জানাচ্ছেন, এই গ্রন্থের নামকরণ বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার। সদ্যপ্রকাশিত কারাগারের রোজনামচা শেখ মুজিবপত্নী বেগম ফজিলাতুন্নেছার সরবরাহকৃত চারটি খাতায় লেখা কারাভাষ্যের গ্রন্থরূপ। এই গ্রন্থটি ইতিপূর্বে প্রকাশিত অসমাপ্ত আত্মজীবনীর (২০১২) দ্বিতীয় খ- নয়, এটি বঙ্গবন্ধুর সম্পূর্ণ নতুন গ্রন্থ। শেখ হাসিনা তাঁর ভূমিকায় আরো জানাচ্ছেন, শিগগির আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা এবং ১৯৫৭ সালের চীন সফর নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি পৃথক বই প্রকাশিত হবে।
১৯৫৮-র ১২ অক্টোবর সামরিক আইন জারিপূর্বক শেখ মুজিবকে কারাবন্দি করা হয়। ’৫৮-৬০ কালপর্বের রোজনামচা থালা বাটি কম্বল/ জেলখানার সম্বল শিরোনামে গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রম্নয়ারি তিনি ঐতিহাসিক ছয় দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন এবং একই বছরের ৮ মে পুনরায় গ্রেফতার হন। ’৬৬-র ২ জুন থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর এবং ১৯৬৭-র ১ জানুয়ারি থেকে ২২ জুনের কারালিপি পরপর দুটো খাতায় লিপিবদ্ধ করেছিলেন তিনি। ১৯৬৮-র ১৮ জানুয়ারি কারামুক্তির অব্যবহিত পর তাঁকে গ্রেফতার করে সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগেই তাঁর বিরুদ্ধে ‘পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করা’র ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দায়ের করা হয় ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’। এই মামলায় বন্দি অবস্থার বিবরণ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে গ্রন্থের শেষাংশে।
888sport sign up bonusঘন ভূমিকায় শেখ হাসিনা ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকালে এবং ১৯৮১-তে নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে কীভাবে পিতার লেখার খাতা উদ্ধার করেছেন, সংরক্ষণ করেছেন, তার বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। কারাগারের রোজনামচায় যে স্নেহময় পিতা তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা ‘হাসিনা’র পরীক্ষা, বিয়ে ইত্যাদির কথা উলেস্নখ করেছেন, সেই কন্যা শেখ হাসিনাই যে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিয়োগান্ত মৃত্যুর পর তাঁর রাজনীতির হাল ধরবেন এবং এই গ্রন্থ প্রকাশে উদ্যোগী হবেন – এ-কথা হয়তো শেখ মুজিব সেদিন চিমত্মাও করেননি।
গ্রন্থের প্রারম্ভেই শেখ মুজিব দার্শনিক প্রাজ্ঞতায় বলেছেন –
জেলে যারা যায় নাই, জেল যারা খাটে নাই – তারা জানে না জেল কি জিনিস। বাইরে থেকে মানুষের যে ধারণা জেল সম্বন্ধে ভিতরে তার একদম উল্টা। জনসাধারণ মনে করে চারদিকে দেওয়াল দিয়ে ঘেরা, ভিতরে সমস্ত কয়েদি এক সাথে থাকে, তাহা নয়। জেলের ভিতর অনেক ছোট ছোট জেল আছে। (পৃ ২৭)
…সময়ও কাটে না, জেলে রাতটাই বেশি কষ্টের। আবার যারা আমার মতো একাকী নির্জন স্থানে থাকতে বাধ্য হয় – যাকে ইংরেজিতে বলে ‘Solitary Confinement’ তাদের অবস্থা কল্পনা করা যায় না। (পৃ ৮৩)
আবার বলছেন সেই চিরকালীন স্বাধীন সত্তার কথা –
সোনার খাঁচায়ও পাখি থাকতে চায় না। বন্দি জীবন পশুপাখিও মানতে চায় না। (পৃ ১৮৩)
এখানে তিনি শুধু তাঁর নিজের কারাজীবনের 888sport sign up bonusচারণ করেননি; একইসঙ্গে তখনকার কারাপ্রথা, সামগ্রিক কারাব্যবস্থা ও কারাবন্দিদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এমন প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন, যা সহজেই হতে পারে কারাবিষয়ক গভীর গবেষণার উৎস। তিনি জেলের কিছু শব্দকোষের সন্ধান দিয়েছেন আমাদের, যেমন – রাইটার দফা, চৌকি দফা, জলভরি দফা, ঝাড়ু দফা, বন্দুক দফা, পাগল দফা, শয়তানের কল, দরজি খাতা, মুচি খাতা, আইন দফা, ডালচাকি দফা, হাজতি দফা, ছোকরা দফা ইত্যাদি। জেলখানায় যারাই এসেছেন – সাংবাদিক মানিক মিয়া, রণেশ মৈত্র থেকে শুরু করে সাধারণ কয়েদি লুৎফর রহমান ওরফে লুদু – সকলের ব্যক্তিজীবন, পরিবার নিয়ে উৎকণ্ঠিত হয়েছেন এভাবে –
পাকিস্তানের ১৯ বৎসরে যা দেখলাম তা ভাবতেও শিহরিয়া উঠতে হয়। যেই ক্ষমতায় আসে সেই মনে করে সে একলাই দেশের কথা চিমত্মা করে, আর সকলেই রাষ্ট্রদ্রোহী, দেশদ্রোহী আরও কত কি! মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি রেখে অনেক দেশনেতাকে শেষ করে দিয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য নষ্ট করে দিয়েছে, সংসার ধ্বংস হয়ে গেছে। আর কতকাল এই অত্যাচার চলবে কেই বা জানে! এই তো স্বাধীনতা, এই তো মানবাধিকার! (পৃ ১৮৪)
জেলে বন্দি অপরাধীদের মনস্তত্ত্ব বিশেস্নষণ করে শেখ মুজিব বলছেন –
মনুষ্য চরিত্র সম্বন্ধে, যারা গভীরভাবে দেখতে চেষ্টা করবেন, তারা বুঝতে পারবেন আমাদের সমাজের দুরবস্থা এবং অব্যবস্থায় পড়েই মানুষ
চোর ডাকাত পকেটমার হয়। আলস্নাহ কোনো মানুষকে চোর ডাকাত করে সৃষ্টি করে না। (পৃ ৪৮)
তিনি যে আদ্যন্ত একজন পড়ুয়া মানুষ ছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যাবে ফরাসি ঔপন্যাসিক এমিল জোলা, মার্কিন রাষ্ট্র888sport apkী হেনরি ডেভিড থরো কিংবা দুই প্রজন্মের বাঙালি
কথা888sport live chatী শরৎচন্দ্র কিংবা শহীদুলস্না কায়সারের 888sport free bet login পাঠের প্রসঙ্গে –
বন্ধু শহীদুলস্না কায়সারের সংশপ্তক বইটি পড়তে শুরু করেছি। লাগছে ভালই… (পৃ ৬৩)
ভাবলাম রাতটা কাটাতেই কষ্ট হবে। কিন্তু কেটে গেল। জানালা দিয়ে অনেকক্ষণ বাইরে তাকাইয়া ছিলাম। দেখতে চেষ্টা করলাম ‘অন্ধকারের রূপ’, দেখতে পারলাম না। কারণ আমি শরৎচন্দ্র নই। আর তাঁর মতো দেখবার ক্ষমতা এবং চিমত্মাশক্তিও আমার নাই।
(পৃ ৮০)
ঘরে এসে বই পড়তে আরম্ভ করলাম। এমিল জোলা-র লেখা ‘তেরেসা রেকুইন’ পড়ছিলাম। সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনটা চরিত্র – জোলা তাঁর লেখার ভিতর দিয়া। এই বইয়ের ভিতর কাটাইয়া দিলাম দুই তিন ঘণ্টা সময়।
(পৃ ১০১)
হেনরি ডেভিড থরোর ‘Civil disobedience’ রচনা উদ্ধৃত করে বলেছেন –
মনে রেখো থরোর কথা – ‘Under a government which imprisons any unjustly, the true place for a just man is also a prison.’ (পৃ ২২৫-২৬)
পাশাপাশি রবীন্দ্রপ্রেমী এক রাজনীতিকের দেখা পাবেন পাঠক, যে-রাজনীতিক কারাবন্দি অবস্থায় কোনো হতাশ মুহূর্তে শরণ নেন ‘…বিপদে আমি না যেন করি ভয়’ এমন রবীন্দ্র-অভয়বাক্যের।
কারাগারে সীমিত সুযোগে গোগ্রাসে পত্রপত্রিকা পড়তেন তিনি। পত্রিকান্তরে ১৯৬৬-৬৭ সালের বাজেট বক্তৃতা পাঠ করে তখনকার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর নামোলেস্নখ করে মন্তব্য করেছেন – ‘শোয়েব সাহেব 888sport live chatপতিদের ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ট্যাক্স হলিডে ভোগের ব্যবস্থা রাখিয়াছেন। কিন্তু গরিব জনসাধারণ বোধহয় আর আলো জ্বালাইয়া রাতের খাবার খেতে পারবে না।’ কারণ শেখ মুজিব জেনেছিলেন সে-বাজেটে কেরোসিন তেলের ওপর বাড়তি কর ধার্য হয়েছিল। সংবাদপত্রের সূত্রে যেমন দেশের পরিস্থিতি জেনেছেন, তেমনি ভেবেছেন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়েও –
… আজ ইত্তেফাক ও ইত্তেফাক সম্পাদকের বিরুদ্ধে হামলা, কাল আবার অন্য কাগজ ও তার মালিকের উপর সরকার হামলা করবে না কেন বলতে পারে! সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বলতে তো কিছুই নাই, এখন ব্যক্তিগত সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা শুরু করেছে। পাকিস্তানকে শোসকগোষ্ঠী কোন পথে নিয়ে চলেছে ভাবতেও ভয় হয়! আজ দলমত নির্বিশেষে সকলের এই জঘন্য অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান উচিত। (পৃ ১৩৭)
এই দিনলিপিতে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের অন্যতম অধ্যায় বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা আন্দোলন সম্পর্কে জানা যাবে অনেক অজানা কথা, ছয় দফাকে নস্যাৎ করতে ‘আট দফা’ নামে অন্য একটি আন্দোলন তৈরির অপচেষ্টার চাঞ্চল্যকর তথ্য বিধৃত করেছেন বঙ্গবন্ধু। ছয় দফা নিয়ে যে জনগণের মধ্যে জোয়ার তৈরি হয়েছিল সেটি কারান্তরীণ তার মাঝে সৃষ্টি করেছে নতুন আশার –
আন্দোলন যে দল করবে, ত্যাগ যে দল করবে, তারাই জনগণের সমর্থন পাবে এবং শামিত্মপূর্ণ গণআন্দোলনের মধ্য দিয়েই দাবি আদায় হবে। আওয়ামী লীগের যারা এখনও জেলের বাইরে আছে তারাই কাজ করে চলুক। দেখা যাক কি হয়। জনসমর্থন ছয় দফার আছে, শুধু নেতৃত্ব দিতে পারলেই হয়।
(পৃ ১৮৫)
কারাগারে মায়ের অসুস্থতার সংবাদ শুনেছেন, পিতা-বিচ্ছিন্ন সমত্মানদের হাহাকার প্রত্যক্ষ করেছেন। এমনও হয়েছে, ১৮ মাসের শিশুপুত্র রাসেল জন্মের পর থেকে পিতাকে কারাগারে থাকতে দেখে কারাগারকে বলত ‘আববার বাড়ি’। নিজের পরিবারের এমন পরিস্থিতিতেও কারাকুঠুরিতে রান্না করেছেন, সহ-কারাভোগীদের সুখ-দুঃখের জীবনকথা জেনেছেন আর সর্বক্ষণ ভেবেছেন গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার আর দেশের সার্বিক মঙ্গলের কথা।
একজন খাঁটি জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন বলেই কারাবন্দি মুজিবকে স্পর্শ করেছে প্রবল আন্তর্জাতিকতাবাদ। ভারতে কৃষ্ণ মেননের পদচ্যুতি, ভিয়েতনামের হ্যানয় ও হাই ফংয়ে সাম্রাজ্যবাদী বোমাবর্ষণ, সুপ্রিম সোভিয়েতে আলেক্সি কোসিগিনের বক্তব্য, চীনের বন্যা পরিস্থিতি, ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়া সম্পর্ক কিংবা কঙ্গোতে প্যাট্রিস লুমুম্বার হত্যাকা- সম্পর্কে বিভিন্ন দিনের ভুক্তিতে শেখ মুজিবের সুচিমিত্মত মতামত লক্ষণীয়। ১৯৬৬-এর ১৪ জুলাই 888sport app download for android করেছেন ১৭৭তম ফরাসি বিপস্নব দিবসকে। লিখছেন –
১৭৮৯ সালের ১২ই জুলাই ফরাসি দেশে শুরু হয় বিপস্নব। প্যারি নগরীর জনসাধারণ সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার পতাকা হাতে সামনে এগিয়ে যায় এবং গণতান্ত্রিক বিপস্নবের সূচনা করে। ১৪ই জুলাই বাসিত্মল কারাগার ভেঙ্গে রাজবন্দিদের মুক্ত করে এবং রাজতন্ত্র ধ্বংস করে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করে। ১৭৭ বৎসর পরেও এই দিনটি শুধু ফ্রান্সের জনসাধারণই 888sport apk download apk latest versionর সাথে উদ্যাপন করে না, দুনিয়ার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী জনসাধারণও 888sport apk download apk latest versionর সাথে 888sport app download for android করে। তাই কারাগারের এই নির্জন কুঠিতে বসে আমি সালাম জানাই সেই আত্মত্যাগী বিপস্নবীদের, যারা প্যারি শহরে গণতন্ত্রের পতাকা উড়িয়েছিলেন। ভবিষ্যৎ দুনিয়ার মুক্তিকামী জনসাধারণ এই দিনটার কথা কোনোদিনই ভুলতে পারে না। (পৃ ১৬১)
শেখ মুজিবুর রহমানের কারাগারের রোজনামচা সমাপ্ত হয়েছে কুর্মিটোলা সেনানিবাসে ‘একাকি বন্দি’ পরিস্থিতির বর্ণনায়; যেখানে তাঁর কর্ত্যবরত চিকিৎসক বাঙালি হয়েও প্রশ্নের উত্তর দিত ইংরেজি বা উর্দুতে –
একজন বাঙালি ডাক্তার দেখতে আসতেন। তাঁর বাড়ি কুমিলস্না। নাম মেজর সফিক (ডা.)। তিনি কখনও একাকী আমাদের কামরায় আসতেন না। সাথে ডিউটি অফিসারকে নিয়ে আসতেন। কখনও বাংলায় কথা বলতেন না। ইংরেজি বা উর্দু। আমি তার চেহারা দেখে বুঝতে পেরেছিলাম তিনি পূর্ব বাংলার লোক। বাংলায় আমি কথা বললে ইংরেজি বা উর্দুতে জবাব দিতেন। একদিন আর সহ্য করতে না পেরে বললাম, বোধহয় বাংলা ভুলে গেছেন তাই উর্দু বলেন। তিনি বেহায়ার মত হাসতে লাগলেন। মনে হতো ভীষণ ভয় পেয়ে গেছেন। পরে তার সম্বন্ধে জানলাম তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে বিবাহ করেছেন। বাড়ির সাথে কোনো সম্বন্ধ নাই। নিজকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে ভয় পান। যদি কেহ মনেপ্রাণে বাঙালি হয় তবে তার ভবিষ্যতের দরজা বন্ধ। এই ষড়যন্ত্র মামলা ইনকোয়ারী শুরু হওয়ার পরে যে কয়েকজন সামান্য বাঙালি কর্মচারী সামরিক বাহিনীতে আছেন তাদের অবস্থা বড় করুণ। কখন যে গ্রেপ্তার হবে কে বলতে পারে! তাই তারা ভয়ে ভয়ে দিন কাটায়।
(পৃ ২৬৭)
পাঠবুভুক্ষু শেখ মুজিব সেখানে কোনো বাংলা বই বা খবরের কাগজ খুঁজে পাননি। কিন্তু এভাবে বাংলা ও বাঙালিত্ব থেকে তাঁকে দূরে রাখার পাকিস্তানি প্রয়াস সফল হয়নি। তিনি নিজে কারামুক্ত হয়েছেন, নিজের প্রিয় দেশবাসীকে পরাধীনতার অন্ধকার কারা থেকে মুক্তি দিয়েছেন স্বাধীন 888sport appsের সোনার আলোয়।
নিপুণ ভবিষ্যৎদ্রষ্টার মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ২০ জুন ১৯৬৬-র দিনলিপি বাঙালি চরিত্রের এক অন্ধকার দিক ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা যে পরবর্তী দশ বছরের মধ্যে তাঁর সঙ্গেই সংঘটিত হবে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টে, তা হয়তো তিনি কল্পনাও করেননি –
888sport apps শুধু কিছু বেঈমান ও বিশ্বাসঘাতকদের জন্যই সারাজীবন দুঃখ ভোগ করল।… এই সুজলা-সুফলা 888sport apps এত উর্বর; এখানে যেমন সোনার ফসল হয়, আবার পরগাছা আর আগাছাও বেশি জন্মে। জানি না বিশ্বাসঘাতকদের হাত থেকে এই সোনার দেশকে বাঁচানো যাবে কিনা। (পৃ ১১২)
বাংলার লোকবয়ানে, সহজ-সরল উপস্থাপনায় আর গভীর অন্তর্দৃষ্টিতে শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর কারালিপির বিভিন্ন ভুক্তিতে নানা প্রসঙ্গে এমন অনেক মন্তব্য করেছেন যা সাময়িক পরিসর ছাপিয়ে হয়ে ওঠে 888sport app download for androidযোগ্য চিরায়ত বাক্যে। এমনই কিছু বক্তব্য :
রক্তের পরিবর্তে রক্তই দিতে হয়। একথা ভুললে ভুল হবে। মতের বা পথের মিল না হতে পারে, তার জন্য ষড়যন্ত্র করে বিরুদ্ধ দলের বা মতের লোককে হত্যা করতে হবে এ বড় ভয়াবহ রাস্তা। এ পাপের ফল অনেককেই ভোগ করতে হয়েছে। (পৃ ৫৯)
ডিকটেটররা যখন দরকার হয় খুব ব্যবহার করে, আর যখন দরকার ফুরিয়ে যায়, ছেঁড়া কাপড়ের মতো ফেলে দেয়। ছেঁড়া কাপড় তো অনেক সময় দরকারে লাগে, স্বৈরশাসকদের সে দরকারও হয় না। একদম বিদায়। টু শব্দ করার ক্ষমতা নাই। (পৃ ৬৩)
এই দেশের মানুষ তারা ন্যায্য অধিকার আদায় করবার জন্য যখন জীবন দিতে শিখেছে তখন জয় হবেই, কেবলমাত্র সময় সাপেক্ষ। (পৃ ৭৩)
জনগণ ত্যাগের দাম দেয়। ত্যাগের মাধ্যমেই জনগণের দাবি আদায় করতে হবে। (পৃ ৭৪)
পরাধীন জাতির কপালে লাঞ্ছনা ও বঞ্চনা হয়েই থাকে। এতে আর নতুনত্ব কি? (পৃ ৮৩)
আন্দোলন কখনও বাইরে থেকে আমদানি হয় না… পারমিটের টাকা দিয়া গণআন্দোলন হয় না। (পৃ ১০০)
গলা টিপে মারো, তাতেও আমাদের কোনো আপত্তি নাই। শুধু শোষণ বন্ধ কর। জনগণের অধিকার ফেরত দাও। (পৃ ১৩১)
গুটিকয়েক লোকের সম্পদ বাড়লেই জাতীয় সম্পদ বাড়া হয় বলে যারা গর্ব করে তাদের সম্বন্ধে কি-ইবা বলব! (পৃ ১৫৩)
জনসাধারণেরও আর ‘নেতাদের ঐক্যের’ ওপর বিশ্বাস নাই। জনগণের ঐক্যই প্রয়োজন। (পৃ ১৭২)
শোষকের কোনো জাত নাই, ধর্ম নাই। একই ধর্মের বিশ্বাসী লোকদেরও শোষণ করে চলেছে ছলে বলে কৌশলে। (পৃ ১৮৭)
কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থের পরিশিষ্টাংশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন পরিচয় (১৯৫৫-১৯৭৫)’, প্রয়াত রাষ্ট্র888sport apkী ড. এনায়েতুর রহিম ও ড. জয়েস রহিম-লিখিত ‘বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক পরিচিতিমূলক 888sport live, দিনলিপিতে উলেস্নখিত সূত্রের টীকা এবং ১৯৬৬-র ৫ ফেব্রম্নয়ারি প্রকাশিত ও প্রচারিত আমাদের বাঁচার দাবী ৬’দফা কর্মসূচী পুসিত্মকার অনুলিপি এবং বঙ্গবন্ধু জীবনের প্রাসঙ্গিক কিছু আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কারাগারের রোজনামচা গ্রন্থাকারে প্রকাশ-নেপথ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে আরো যাঁরা যুক্ত ছিলেন তাঁদের মধ্যে আছেন প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক অধ্যাপক সালাহ্উদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক শামসুল হুদা হারুন, যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক ড. এনায়েতুর রহিম, ড. জয়েস রহিম, প্রয়াত লেখক-সাংবাদিক বেবী মওদুদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান প্রমুখ। ভূমিকা থেকে জানা যাচ্ছে, ড. ফকরুল আলমের ভাষান্তরে এ-গ্রন্থের ইংরেজি সংস্করণও প্রকাশিত হবে।
কারাগারের রোজনামচা পাঠ-শেষে শেখ হাসিনার মতো আমাদেরও মনে হয়েছে, ‘এ ডায়েরি পড়ার মধ্য দিয়ে 888sport appsের মানুষ তাদের স্বাধীনতার উৎস খুঁজে পাবে।’ r
আত্মগত সুখের সন্ধান
সুব্রত বড়ুয়া
জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের চতুর্থ ‘ছোট 888sport alternative link’ সুখবাস। সুখবাস প্রকাশিত হওয়ার আগে তাঁর আরো তিনটি ছোট 888sport alternative link, যথাক্রমে শূন্য নভে ভ্রমি, অমল তরণী তার এবং স্বপ্নের সীমানায় পারাপার ইতিপূর্বে প্রকাশিত হয়েছে। সুখবাসের নিবেদন অংশে লেখক লিখেছেন, ‘ইংরেজিতে ‘নভেলা’ (Novella) কিংবা ‘নভেলেট’ বলা হয় এরকম রচনাকে – ‘888sport alternative linkিকা’ বলে বাংলায়। পরিপূর্ণ 888sport alternative link নয়, আকারে ছোট, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যেঅগ্রসরমান, যথেষ্ট বিসত্মৃত জীবনজমিনের ওপরে তাকে বসানো চলে। 888sport live chatের নানা প্রকরণ কি ভাষার ব্যবহারে নতুন চিমত্মা সেখানে যথেষ্ট প্রয়োজনীয় নয়।’
তাঁর মতে, ছোট 888sport alternative link ইংরেজি ‘নভেলা’ বা ‘নভেলেট’ কিংবা বাংলা ‘888sport alternative linkিকা’ থেকে আলাদা। আকারে ছোট হওয়া এবং বিসত্মৃত জীবনজমিনের খবর সেখানে থাকা সত্ত্বেও। ‘888sport live chatসৌকর্যের নানা ব্যবহার, ভাষার ভিন্নতা তাকে স্বাতন্ত্র্য দেয়। ইঙ্গিতপূর্ণ, ধ্বনিময় প্রতীকী ভাষার ব্যবহারে, অকস্মাৎ দৃশ্যপট উন্মোচনে বিসত্মৃত জীবনের চিহ্ন সর্বত্র ছড়ানো কিন্তু ছোটগল্পের ভুবনেই তার যাতায়াত বেশি। এজন্যই ‘ছোট 888sport alternative link’ – ছোটগল্প নয়।’
ছোট 888sport alternative link বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন, তার হদিস নির্ণয়ের জন্যই লেখকের এই বক্তব্যের সন্ধান নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া আমরা বুঝতে পারি যে, লেখক তাঁর রচনা এবং সে-রচনার 888sport live chatপ্রকরণ সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন।
আলোচ্য বইয়ে আটটি পরিচ্ছেদ আছে, কিন্তু প্রচলিত 888sport alternative linkকাঠামোর ধারাবাহিক কাহিনিবিন্যাস তাতে নেই। ভিন্ন ভিন্ন
নামে উপস্থাপিত এসব পরিচ্ছেদে লেখকের জীবনকালের ভিন্ন ভিন্ন সময়ের বাস্তব ও প্রতীকী বর্ণনার মধ্যে উপরিকাঠামোর পরম্পরা তেমন খুঁজে পাওয়া না গেলেও অন্তর্গত বোধের নিরবচ্ছিন্নতা অবশ্যই অনুভব করা যায়। শুধু নিরবচ্ছিন্নতা? হয়তো তা নয়। এক ধরনের বিপন্নতা ও বিস্ময়বোধও কি তাতে ক্রিয়াশীল থাকে না?
সুখবাস কেন? সুখবাস বলতে কি আমরা বুঝে নেব – সুখের মধ্যে বসবাস, যা কিনা কমবেশি সব মানুষেরই জীবনের আরাধ্য? প্রথম পরিচ্ছেদ ‘সব ভোরে পাখি ডাকে না’য় লেখক প্রথমেই বলেন এই বইয়ের যে মূল চরিত্র তার বিদেশ গমনের কথা। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশযাত্রা, সেখানে মূল ছিঁড়ে আসার কষ্ট যেমন ছিল, তেমনি ছিল কিছু উত্তেজনাও। মনের মধ্যে ছিল স্বপ্ন ও আদর্শ। ‘কৈশোর ও যৌবনের সমাজকল্যাণ চিমত্মা মনে প্রবল ছিল। আহরিত জ্ঞান স্বার্থসেবী হবে না এই বোধ তীব্র ছিল। তাই সে ভেবেছিল ফিরবে একদিন।’ তারপর কর্মস্থলে, টেলিপ্রিন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে সে পঁচিশে মার্চের সাক্ষী হয়েছিল। বহির্বিশ্বের প্রথম কয়েকজনের মধ্যে। প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকের বিচরণ বহু টুকরো হয়ে সামনে আসে।… খবরের টুকরো আসার সঙ্গে সঙ্গে স্বভূমির পরিচিত সব জনকে জানাতে থাকে। সান্ধ্য বৈঠকের পরে দূর শহরে, আরো দূর শহরে সমমনাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। মিছিল, প্রচার, অর্থ সংগ্রহ ইত্যাকার কর্মসূচিতে সাফল্যের আশায় সে যখন প্রিয়জন হারানোর দুঃখ মেনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তখনই দেখেছিল, সঙ্গে যাদের আসার কথা ছিল তাদের সবাই আসেনি। তারা দূর থেকে দেখেছে, সরে গেছে।
‘কিন্তু কী আশ্চর্য, নতুন দেশে পূর্বে অনুপস্থিত সবাই আড়াল থেকে বেরিয়ে ছুটে এসে কল্পিত কৃতিত্বের 888sport app download bd মাথায় তুলে নিয়েছিল। সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ মেলে না তার – চায়ওনি সে কিছু।’
উদ্ধৃতি একটু দীর্ঘ, কিন্তু এ-বইয়ের ‘সে’ নামক মানুষটির পরিচয় উদ্ঘাটনে এরও বোধহয় প্রয়োজন ছিল। কারণ আমরা এই মূল চরিত্রটির কাঠামোবদ্ধ পরিচয় কোথাও একসঙ্গে পাই না। সে-পরিচয় আমাদের কাছে পৌঁছায় পরিচ্ছেদগুলোর ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটের ভিন্ন ভিন্ন উপস্থাপনের মাধ্যমে। লেখক তো প্রথম পরিচ্ছেদেই আমাদের জানিয়ে দেন – ‘সে কখনো অন্যায়ী নয় অথচ অন্যায়ের প্রতিবাদে চিরকাল সোচ্চার, এমন কথা বলতে পারে না। সে মিথ্যাবাদী নয় কিন্তু সত্যের খাতিরে জীবন বিসর্জন দেওয়ার মতো প্রতিজ্ঞাও নেই।…’
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ‘ভিন্ন দৃশ্য, ভিন্ন দিন’-এ আমরা সেই মানুষটিকে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে দেখি, যদিও উৎসের সঙ্গে তাঁর অচ্ছেদ্য বন্ধনের কথাও শুনি। তনয়াকে তুষারশুভ্র কন্যা আর সাত বামনের গল্প শোনাতে গিয়ে তার মনে নীলকমল-লালকমল চলে আসে এবং ‘আববাসউদ্দিন ক্রমাগত উইলি নেলসনের কণ্ঠরোধ করে দেন’। তবু তো সেখানেই জীবন কেটে যায়। মানুষের চাওয়া না-চাওয়ার দূরত্ব ঠিক কোথায় গিয়ে একাকার হয়ে যায়, সে-কথা বুঝতে পারা যায় না।
‘আঁধার-আলোর মাঝখানে’, ‘ছায়া দাও’, ‘যদি কেউ ফেরে’, ‘দিকচিহ্নহীন’, ‘যেন এক বাগানবাড়ি’ এবং ‘ফেরবার শেষ বাড়ি’ – পরবর্তী এই ছয়টি পরিচ্ছেদেও আমরা সেই মানুষটিরই ভিন্ন ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত ও বাস্তব জীবনযাপনের বিভিন্ন প্রসঙ্গের খোঁজ পাই এবং এর মধ্য দিয়ে একজন আত্মগত মানুষের রেখাচিত্র আমাদের কাছে উপস্থিত হয়। আটশো টাকায় বড় ঘরের চালাটি বিক্রি হয়ে যাওয়ার পরেই সেই মানুষটি শূন্যে ভেসেছিল। তার দীর্ঘদিনের বাসনা ছিল, ‘শূন্যভিটের ওপরে বেশ কয়েক বান্ডিল ঝকঝকে টিন কিনে বড় ঘরটি তুলবে।’ কিন্তু সে-বাসনা পূরণ হয়নি, কারণ ‘ভূমিতে পা রাখবার অনেক আগেই সম্পূর্ণ ভিটেমাটি হোরাসাগরের গর্ভে চলে যায়’।
সুখবাসের মধ্যে অন্তর্গত এক কাহিনি আছে। তার চেয়েও বড় কথা – এটি সুখবাসের সন্ধানকামী এক মগ্নচিত্ত 888sport sign up bonusকাতর মানুষের আত্মকথা, যেটি রচিত নিরেট বুননে নয়, ভিন্ন ভিন্ন 888sport sign up bonusময় গল্পে। সে-গল্প উচকণ্ঠ নয়, কিন্তু আত্মগত উচ্চারণে হৃদয়স্পর্শী। বেশিরভাগই ইঙ্গিতধর্মী, যা জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের রচনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পড়া শেষ করে ভাবতে হয় – কী বলতে চেয়েছেন তিনি! শেষ পর্যন্ত – এটিও তো একজন মানুষেরই গল্প, যাকে অনুভব করা যায় তার স্বপ্ন ও জীবনযাপনের অনুচ্চকণ্ঠ কাহিনিতে। r
সন্ধানের-ইতিহাস শ্রমনিবিড় প্রয়াস
জুলফিকার মতিন
সন্দেহ নেই, 888sport live chat-888sport live footballই হলো একটি জাতির মানস সম্পদ। বস্ত্তগত সম্পদ, যেমন – বাড়িঘর, যানবাহন, পোশাক-পরিচ্ছদ, রেডিও-টেলিভিশন-টেলিফোন, গহনা-অলংকার – এরকম আরো অনেক কিছুই, এমনকি গরু-ছাগল-ভেড়া, এগুলো মানুষের জীবন যাপনকে করে তোলে সুগম। তবে, এর প্রয়োজন হলো ব্যবহারিক। দেহকে টিকিয়ে রাখার জন্য, তার আরাম-আয়েশের জন্য এসবকে বিকল্পহীন বলে ভাবাও অযৌক্তিক নয়। কেননা, দেহ ছাড়া আত্মার, অন্তত পৃথিবীতে, আর কী দাম আছে! জীবিত মানুষ তার শামিত্ম কামনা করে, তার মুক্তিও চেয়ে থাকে; কিন্তু ঘটনা ওই পর্যন্তই। আবার টাকা-পয়সা থাকলে বস্ত্তসম্পদের কোনো অভাব হয় না। ক্রয়ক্ষমতাই বস্ত্তসম্পদ ভোগের সীমানা নির্ধারণ করে দেয়। তাই সম্পদের মালিকানা ও বণ্টন কিংবা ভোগের ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া মানব সমাজে একটা বড় ব্যাপার। এভাবেই সমাজে শ্রেণিবিন্যাসই বলি, আর শ্রেণিবৈষম্যই বলি, সৃষ্টি হতে থাকে। এই সম্পদের মালিকানা ও তার বণ্টনের ভেতর দিয়েই প্রকাশ ঘটে ক্ষমতার। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও তার আইন-কানুন কিংবা সামাজিক কায়েমি স্বার্থবাদ সাহায্য করে এ-ক্ষমতাকেই অব্যাহত রাখার। এক সময় এই ক্ষমতার বিবরণকেই পরিগণনা করা হতো ইতিহাস বলে। রাজা-বাদশাহরাই ছিলেন এ-ক্ষমতার নায়ক। কায়েমি স্বার্থবাদী শ্রেণিই ছিল তার পরিপূরক শক্তি। ঢাল-তলোয়ার ঘোরানো কিংবা যুদ্ধবিগ্রহ করা – এক কথায়, ক্ষমতার সামরিকায়নই ছিল সেখানে মুখ্য। এটিই ছিল রাজার নীতি অর্থাৎ রাজনীতি। এ-কারণে রাজনৈতিক ইতিহাসকেই বিবেচনা করা হতো ইতিহাস বলে। কিন্তু কালে কালে, সংগত কারণেই, পরিবর্তিত হয়েছে সে-বোধ। কেননা, মানুষের জীবনপ্রবাহ তো শুধু রাজ-আনুগত্যের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে থাকে না। তার জীবনের বস্ত্তসম্পদ, সেখানে প্রাচুর্য থাকুক আর তা সীমিতই হোক, তাকে সে পলস্নবিত করে তুলতে চায় নিজেদের সৌন্দর্য চেতনার রং ও তুলিতে। রাজা-বাদশাহদের সময়েও তা হয়েছে। এখন হয়তো তারা নেই, কিন্তু অন্য ফর্মে হলেও ক্ষমতার প্রতিভূরা তো রয়েছে। তবে তাদের ইতিহাসটাও শুধু ইতিহাস হয়ে নেই, তা পরিণত হয়েছে ইতিহাসেরই একটি অংশে। তাছাড়া মানুষের জীবনপ্রবাহের 888sport app দিকের, বিশেষ করে ভাবজগতের বিষয়গুলো, যেমন – স্থাপত্য, ভাস্কর্য, চিত্রকলা, সংগীত ও 888sport live footballের ভেতর দিয়ে অবিরত সম্প্রসারণ ঘটছে তার মানব সম্পদের। আর কে না জানে, জৈবিকতা কিংবা বস্ত্তবাদিতা নয়, ভাবজগতের ওই বিষয়গুলোর ভেতর দিয়ে নান্দনিকতার যে-প্রকাশ, তা-ই তাকে রূপ দিয়েছে পরিপূর্ণ মানবের।
আবার এটাও মনে না করার কোনো কারণ নেই যে, একটি জাতির সামগ্রিক পরিচয় খুঁজে পাওয়ার জন্য রাজনৈতিক ইতিহাস যতটা প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ওই বিষয়গুলোর অনুসন্ধান করা। কীভাবে তা বিবর্তিত হয়েছে কিংবা তার রূপটাই বা কেমন, তা দেখতে গিয়ে যে-বৈশিষ্ট্যগুলো পাওয়া যায়, তা-ই হয়ে দাঁড়ায় জাতিত্ব নির্দেশক।
আমরাও তো একটি জাতি। কাজেই, আমাদের জীবনে ওই বিষয়গুলো কীভাবে এসেছে, তা জানার কোনো বিকল্প আছে কি? মোটামুটিভাবে ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে এ-কাজটি শুরু হয়েছে। তার একটি প্রধান স্থান দখল করে আছে 888sport live footballের ইতিহাস।
এ-প্রসঙ্গে যেটি বিশেষভাবে উলেস্নখ করার, তা হলো, আমরা একটি ভাষাভিত্তিক জাতি। ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতাও এটা বলে যে, ভাষাকে কেন্দ্র করেই আমাদের জাতিত্বের সূচনা ও বিকাশ। আমাদের রাজনৈতিক আকাঙক্ষা, যার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ঘটেছে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে একটি স্বাধীন দেশের প্রতিষ্ঠা, তারও ভিত্তি ছিল ওই ভাষা। আর এই ভাষাই হলো 888sport live footballের মাধ্যম। এভাবে দেখলেও, 888sport live footballের ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তা আমাদের কাছে কতটা বেশি, তা বোধহয় আলাদা করে বলার দরকার পড়ে না। সুতরাং শহীদ ইকবাল-রচিত 888sport appsের 888sport live footballের ইতিবৃত্ত গ্রন্থটি যে সে-প্রয়োজনীয়তারই ফসল, তা-ই বা অস্বীকার করা যায় কীভাবে?
তবে বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত বা ইতিহাস না হয়ে এটা 888sport appsের হয়েছে কেন, তার শানে নজুলও, বোধকরি, আমাদের সবারই জানা। ১৯৪৭ সালে বাংলাভাষাভাষী অঞ্চল সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতি ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের ডিভাইড অ্যান্ড রুল নীতি বাস্তবায়নের কারণে দুটো দেশের অংশ হয়ে গিয়েছিল। কেন হয়েছিল, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করার সুযোগ বা প্রয়োজন এখানে কোনোটাই নেই। তবে যেটা বলার, তা হলো, এক অংশের 888sport free betগরিষ্ঠ বাঙালিদের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন হলো 888sport appsের প্রতিষ্ঠা। আবার এটাও ঠিক যে, আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার কারণেই তার অধিবাসীদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ভিন্নরকম হয়ে তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক তথা জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে এনে দিয়েছে স্বাতন্ত্র্য। আকাঙক্ষার নতুনতর পরিপ্রেক্ষিত ও অহরহ বিরাজমান রাস্তবতার পরিবর্তিত রূপের মুখোমুখি হওয়াটা সৃষ্টিও করে চলেছে জাতিসত্তারও ভিন্নতা। এজন্য ভাষা এক হলেও 888sport app নানা বিষয়ের মতো 888sport live footballের ফরম্যাটের আলাদা হয়ে যাওয়াটাও অযৌক্তিক নয়। আবার এটাও সত্য যে, বর্ণমালা এক হলেও প্রকাশভঙ্গির ক্ষেত্রে ভাষারও নতুন রূপ ধারণ করাটাও বিচিত্র?
সেটা, হয়তো, ঠিকই আছে। তবে এ-প্রসঙ্গে আরো কিছু কথা সামনে নিয়ে আসা, বোধকরি, জরুরি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম যে-দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার সাংবিধানিক পরিচয় গণপ্রজাতন্ত্রী 888sport apps। প্রচলিত অর্থে তা-ই 888sport apps। তার একটি আয়তন আছে। তা ন্যূনধিক ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল। সীমানা দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। তাছাড়া উত্তরে ও পূর্বে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ও প্রদেশ। পশ্চিমেও তাই। তবে বিশেষভাবে যেটা বলার, তা হলো, পশ্চিমদিকের ভারতের এই প্রদেশের নাম পশ্চিমবঙ্গ। এই পশ্চিমবঙ্গ ও বর্তমানের 888sport apps মিলে যার সাধারণ পরিচয় আমাদের কাছে – অবিভক্ত বাংলা কিংবা বঙ্গদেশ। আপনাদের মূর্খ ভেবে স্কুলপাঠ্য এ-তথ্যগুলো দিচ্ছি বলে বিজ্ঞ পাঠক আহত বোধ করবেন না। তবে কি এটা ঠিক নয় যে, এমন একটি ধারণা আমাদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে, ওই অবিভক্ত বাংলা কিংবা বঙ্গদেশ ভেঙেই পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত পূর্ববঙ্গ, – পরে পূর্ব পাকিস্তান – যা এখনকার 888sport apps ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ গঠিত হয়েছিল? এমনটি আসলে হয়েছে ব্রিটিশ ভারতের প্রশাসনিক ইউনিটগুলো সম্পর্কে পরিজ্ঞাত না থাকার জন্যে। সেখানে দেখা যায়, যেটাকে বলা হয়েছে, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, যা বেঙ্গল নামে পরিচিত, তার ভেতরে 888sport apps ও পশ্চিমবঙ্গ তো ছিলই, অধিকন্তু বিহার ও উড়িষ্যারও অংশ ছিল যুক্ত। শচীন্দ্রনাথ সেন তাঁর সিরাজদ্দৌলা নাটকে, এরও আগের আলীবর্দী খাঁকে নবাবই বলেছেন ‘বঙ্গ-বিহার-উড়িষ্যার’। তার ধারাবাহিকতাই দেখা যায় ব্রিটিশ আমলে। এ থেকে বোঝা যায়, ১৯০৫ সালের যে বঙ্গভঙ্গের ঘোষণা, তা শুধু বঙ্গদেশের হিন্দু-মুসলমানের ভাগাভাগির ব্যাপার ছিল না, সেখানে পূর্ববঙ্গের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল আসামকেও।
কথাগুলো বলা এজন্যই যে, আজকের দিনে যে ভূখ- 888sport apps, তার 888sport live footballের ইতিহাসই হোক আর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক যে-কোনো বিষয়েই হোক, তা কি শুধু ১৯৭১ সাল থেকে হিসাবের মধ্যে আনতে হবে? না কি ঐতিহাসিক কাল থেকে তার যে ভৌগোলিক অবস্থান, সেখানে সংঘটিত বিষয়াবলিকে আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে? সেক্ষেত্রে ভূখ-গত ধারাবাহিকতার পরম্পরাকেই আমরা গ্রহণ করেছি। এটা যে শুধু 888sport appsের জন্য আলাদা কিছু, তা নয়। পৃথিবীর সর্বত্রই এটা মেনে নেওয়া হয়েছে। সে হিসাবে প্রাচীন যুগ (দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত) ও মধ্যযুগের (ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত) 888sport live football শুধু নয়, সামগ্রিকভাবে সবকিছুই ইতিহাসের উপাদান হয়ে রয়েছে। এমনকি আধুনিক যুগ – যার শুরু ধরা হয় ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে, তখন থেকে ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগ পর্যন্ত সময়ও এই ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতেও এ-কথার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যাবে।
পাশাপাশি ১৯৪৭ সালের পরের বিষয়াবলিকে 888sport appsের বলে গণ্য করা হয়ে থাকে। এটা, বোধকরি, করা হয় এজন্যই যে, ওই সময় থেকেই বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে জাতিত্বের ধারণা ভিত্তি পায়। হিন্দু ও মুসলিম – এই দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়েরই মাতৃভাষা বাংলা। ব্রিটিশ ভারতে পরাধীনতার বোধ থেকে যে দেশপ্রেমের প্রত্যয় বিকশিত হয়, সেখানে ঔপনিবেশিক শাসন-মুক্তির আন্দোলনই হয়ে ওঠে প্রখর। রাজনৈতিক আকাঙক্ষারই প্রতিফলন ঘটে তার ভেতর। কংগ্রেস সর্বভারতীয় মানুষের প্রতিনিধিত্ব দাবি করে ভৌগোলিক স্বাধীনতা লাভকে মুখ্য করে তোলে। অন্যদিকে মুসলিম লীগ সর্বভারতীয় মুসলিমদের সংগঠন রূপে আত্মপ্রকাশ করে, শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করতে সমর্থ হয়। এ সময় বাঙালি হিন্দুরা সাধারণভাবে ছিল কংগ্রেসের অনুবর্তী। আর বাঙালি মুসলমানরা ভোট দিয়েছিল মুসলিম লীগের পক্ষে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির পর পশ্চিম বঙ্গের অধিবাসী ভারতীয় হিন্দু বাঙালি নাগরিকদের, বোধহয়, আত্মসন্তুষ্টি লাভের পরিপ্রেক্ষিত সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু পূর্ববঙ্গের বাঙালি মুসলিম নাগরিকদের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি। একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের ভেতর দিয়েও পুঁজির বিকাশ থেকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ 888sport app ক্ষেত্রে নিজেদের সম্প্রসারিত ও প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ সৃষ্টির যে-সম্ভাবনার কথা তারা ভেবেছিল, সেখানে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা অতিদ্রম্নতই নেমে আসে। তখন নিজেদের বাংলাভাষী হিসেবে শনাক্ত করার তাগিদ অনুভব করতে থাকে। এই ভাষিক পরিচয়ই অন্য ধর্মাবলম্বী বাঙালিদেরকেও একই পস্ন্যাটফরমে সংগঠিত করতে অনুপ্রাণিত করে। বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ও এক সময় ‘মুসলিম’ পরিচয় ঝেড়ে ফেলে। তারপর তো রাজনৈতিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতার ভেতর দিয়ে ঘটে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা, যা পূর্ববঙ্গকে পরিণত করে স্বাধীন ও সার্বভৌম 888sport appsে এবং যার শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ সাল থেকে। সুতরাং তখন থেকে 888sport appsের কর্মপরিধির সূচনা গণনাকে যৌক্তিক বলেই বিবেচনা করা যেতে পারে। এ কারণে, শহীদ ইকবালও, বোধকরি তাঁর গ্রন্থের ভূমিকার প্রথম লাইনেই বলেছেন, ‘১৯৪৭ সালে বিভাগোত্তর পূর্ববাংলায় 888sport appsের 888sport live footballের বীজ রোপিত হয়’।
তবে ১৯৪৭-পরবর্তী 888sport appsের ভৌগোলিক সীমানায় সৃষ্ট 888sport live footballের ক্ষেত্রে, বোধ করি, আরো একটি বিষয় বিবেচনায় আসতে পারে। 888sport app, যা ১৯৪৭-এর পরের পূর্ববাংলা ও বর্তমান 888sport appsের রাজধানী, সেখানে বিভাগোত্তর কালের আগ থেকেই বাংলা 888sport live footballচর্চার একটি আঞ্চলিক কেন্দ্রভূমি ছিল। কিন্তু সে-সময় প্রাদেশিক রাজধানী ছিল কলিকাতা। অনেক কবি-লেখকই, – যারা বিভাগোত্তরকালে 888sport appয় চলে আসেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠাও ঘটে সেখানে। এরকম যারা, তাঁদের অনেকের নামই উলেস্নখ করা যেতে পারে, যেমন, – সুফিয়া কামাল, ফররুখ আহমদ, জসীমউদ্দীন, আবদুল কাদির, আহসান হাবীব, বেনজির আহমেদ, গোলাম মোস্তফা, শাহাদৎ হোসেন, বন্দে আলী মিয়া, শওকত ওসমান, আবু রুশ্দ, মতিন উদ্দিন, কাজী আফসার উদ্দিন, সরদার জয়েন উদ্দিন, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, আবুল ফজল, আবু জাফর শামসুদ্দিন, আবুল মনসুর আহমদ, মোহাম্মদ বরকতুলস্নাহ, আজিজুল হাকিম, শামসুদ্দিন আবুল কালাম প্রমুখ। এ ছাড়া অধিকতর তরুণ আশরাফ সিদ্দিকী, চৌধুরী ওসমান, মযহারুল ইসলাম প্রমুখও কলকাতাকেন্দ্রিক পত্রপত্রিকায় লেখক হিসেবে আবির্ভূত হন। কাজেই শুধু সময় হিসাব করে তাঁদের কলকাতাকেন্দ্রিক লেখাকে 888sport appsের 888sport live footballের অন্তর্ভুক্ত না করারও কোনো কারণ নেই। শহীদ ইকবাল এরকম অনেক কবি-লেখককেই তাঁর আলোচনায় জায়গা দিয়েছেন। তবে আমার, মনে হয়, বিষয়টা আরো নির্দিষ্ট করা যেত। কেননা, ১৯৪৭ সাল শুধু তো সময়ের হিসাব নয়, তার আগে-পরের ব্যাপারগুলোর সঙ্গে সংশিস্নষ্ট হয়ে আছে জাতীয় মানসপ্রবণতারও বিষয়।
ইতিহাস রচনা, তা যে-বিষয়েরই হোক, কাজটি যে শ্রমসাধ্য ও সময়-সাপেক্ষ, সে নিয়ে কারো দ্বিমত না থাকারই কথা। শহীদ ইকবাল একরকম ব্রত নিয়েই এটা করেছেন। শ্রমসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ কাজ তাঁর আরো আছে। এর আগে তিনি 888sport appsের 888sport alternative link : রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধ ও 888sport app, 888sport appsের 888sport app download apkর ইতিহাস, 888sport appsের 888sport app download apkর সংকেত ও ধারাসহ আরো অনেক ইতিহাসমূলক ও 888sport app 888sport liveগ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর 888sport appsের 888sport live footballের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত গ্রন্থটিও এরকম শ্রম ও সময় প্রদানের জ্বলন্ত উদাহরণ।
এক সময় বঙ্কিমচন্দ্র আক্ষেপ করেছিলেন, বাঙালির ইতিহাস নেই। সে-অভাব পূরণ করার জন্য নিজেও ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে লেখাও শুরু করেছিলেন। আসলে ঊনবিংশ শতাব্দীতে অতীত আবিষ্কারের যে-অনুপ্রেরণা এসেছিল, তা ছিল এরই ফলাফল। 888sport live footballের ইতিহাসও এভাবেই লেখা শুরু হয়। আমাদের সামনে তার যে-উদাহরণগুলো রয়েছে, তার কিছু কিছু উলেস্নখ করাটা, বোধকরি, অপ্রয়োজনীয় নয়। এতে, আশা করি, এ-উদাহরণগুলো সামনে রেখে শহীদ ইকবালের কাজের ক্যানভাসকে মূর্ত করা যেতে পারে। দীনেশচন্দ্র সেন, মুহম্মদ শহীদুলস্নাহ্, সুকুমার সেন, অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, গোপাল হালদার, – এঁদের লেখা 888sport live footballের ইতিহাসগ্রন্থগুলো আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর মুহম্মদ আবদুল হাই ও সৈয়দ আলী আহসান-লিখিত একটি গ্রন্থ রয়েছে। তাতে অবশ্য সৈয়দ আলী আহসান-লিখিত অংশ নিয়ে তখন তখনই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়া আবু সুফিয়ান নাজিরুল ইসলাম কিংবা দীন
মোহাম্মদ-রচিত ইতিহাসগ্রন্থও কমবেশি পরিচিতি পেয়েছিল। মুহম্মদ এনামুল হকের বইটিতে মধ্যযুগের মুসলিম-রচিত 888sport live football নিয়ে যে-পর্যালোচনা রয়েছে, তা খুবই মূল্যবান। তার পরও, বোধকরি, আমরা অস্বীকার করতে পারি না যে, বাংলা 888sport live footballের ইতিহাসগ্রন্থ যথেষ্ট নয়। এ কারণে, এরকম একটি দুরূহ কাজ করতে শহীদ ইকবাল যে অনুপ্রাণিত হয়েছেন এবং পর্যাপ্ত শ্রম ও সময় দিয়েছেন, তা অবশ্যই উলেস্নখ করার মতো।
গ্রন্থ-পরিকল্পনায় দেখা যায়, 888sport live footballের বিভিন্ন আঙ্গিক – 888sport app download apk, 888sport alternative link, ছোটগল্প, নাটক, 888sport live, 888sport app download apk latest version, শিশু888sport live football, 888sport sign up bonusকথা, আত্মজীবনী ও 888sport slot game888sport live football নিয়ে যৌক্তিক কারণেই আলাদা আলাদা অধ্যায় সাজিয়েছেন এবং তা খুব বিসত্মৃতভাবেই। তথ্যের সন্নিবেশও বেশ সমৃদ্ধ। তবে ছড়াকাররা এতে অভিমানাহত হতে পারেন। শিশু888sport live footballের আলাদা অধ্যায় থাকলেও ছড়া তো শুধু শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা হয় না, বড়দের বিষয়ও তাতে উপস্থাপন করা যায়। বুড়োখোকারাই তো ভারত ভেঙে ভাগ করেছে, আর ছড়াতে তা এসেছেও। টেলিফোন-মোবাইল-নেটের সুবিধা আজকাল আর চিঠিপত্র লিখতে উৎসাহ জোগায় না, তাই বলে পত্র888sport live footballও তো 888sport live football হতে পারে। কিংবা ভূতের গল্প বা গোয়েন্দা কাহিনি বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি যাঁরা লেখেন, ঈর্ষণীয় পাঠকপ্রিয়তা নিয়ে তাঁরা অনুলিস্নখিত থেকে যাবেন, সেটাও একটা আক্ষেপের কারণ বইকি! 888sport live footballের ইতিহাসের মূল জিনিসগুলো এসেই গেছে। এটা করলে কলেবরও বৃদ্ধি পাবে সামান্যই। আর একটি বিষয় হলো, কবি-লেখকদের ক্রম, দু-চারটে জায়গায় কালানুক্রমিক হয়নি। সেগুলোও সহজেই সংশোধনযোগ্য। তবে এগুলো যে ইচ্ছাকৃতভাবে হয়েছে আমি তা মনে করি না। একটা বড় কাজ করতে গেলে সবদিকে মনোযোগ দেওয়াটা হয়ে ওঠে না। শহীদ ইকবালের বয়স কম, আবার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে 888sport live footballের বিস্তার থেমে নেই, সেজন্য মাঝেমধ্যেই পরিবর্ধিত সংস্করণের অনিবার্যতা দেখা দেবেই। তখন এ-অপূর্ণতাটুকু আর থাকবে না আশা করি।
ভূমিকায় শহীদ ইকবাল একটা কথা বলেছেন, তা হলো, ‘পঞ্চাশের দশকের বাসি, পচা, কর্কশশূন্যতার মরুভূমিতে ষাটের দশক প্রাচুর্যময়তা পায়।’ কোন বিবেচনা থেকে তিনি কথাগুলো বলেছেন, ঠিক বুঝতে পারলাম না। আমি কিন্তু পঞ্চাশের দশকের ব্যাপারটা অর্থাৎ 888sport appsের 888sport live footballের সময় গণনার শুরু যেখান থেকে, তার পজিটিভ দিকটাই তুলে ধরতে চাই। ‘নতুন 888sport app download apk’ – কাব্যসংকলনের কথা তিনি নিজেই বলেছেন. যেটা পঞ্চাশের দশক শুরুর বছরখানেক আগে প্রকাশিত হয়েছে। আবার পঞ্চাশের দশকেই হাসান হাফিজুর রহমান-সম্পাদিত 888sport cricket BPL rateে ফেব্রম্নয়ারী সংকলনের গুরুত্বই বা অস্বীকার করা যাবে কী করে? এ ছাড়া, ওই দশকের ভেতরেই 888sport appsের কবিদের প্রতিনিধিত্বশীল অন্তত দুটো কাব্যসংকলন প্রকাশিত হয়েছিল। একটি মোহাম্মদ মাহফুজুলস্নাহ ও আবু হেনা মোস্তফা কামাল-সম্পাদিত পূর্ববাংলার 888sport app download apk এবং আবদুর রশীদ খান ও মোহাম্মদ মামুন-সম্পাদিত প্রেমের 888sport app download apk। আবদুল কাদির-সম্পাদিত, মনে হয়, একটি কাব্যসংকলনও ছিল, – কাব্যবীথি। 888sport app download apkর বই কিংবা কাব্যসংকলন প্রকাশিত হলেই 888sport app download apk আহামরি হয়ে যায়, তা আমি বলছি না। এগুলোর উলেস্নখ শুধু এ-কারণেই করছি যে, ওইসব কাব্যসংকলনে যেসব লেখা লিপিবদ্ধ হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই 888sport appsের কাব্যজগৎকে করেছে সমৃদ্ধ। শুধু কি 888sport app download apkর ব্যাপার? পঞ্চাশের দশকের গোড়াতেই এসেছে আলাউদ্দিন আল আজাদের জেগে আছির মতো গল্পগ্রন্থ কিংবা শাহেদ আলীর জিবরাইলের ডানা। আবু ইসহাকের সূর্য দীঘল বাড়ীর ঠিকানাও ওই পঞ্চাশের দশকে। এ ছাড়া, যারা ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, শওকত ওসমানসহ, তাঁদের অনেকেরই উলেস্নখযোগ্য গ্রন্থ বেরিয়েছে এ-সময়। পঞ্চাশের দশক সম্পর্কে কথা বলতে গেলে, একটি বিষয় বোধহয় মাথায় রাখা প্রয়োজন, তা হলো, যে-জাতির সাংস্কৃতিক চেতনা আমাদের রাজনৈতিক আকাঙক্ষাকে প্রজ্জ্বলিত করে 888sport appsের প্রতিষ্ঠা ঘটিয়েছে, তার সূতিকাগারই ছিল সে-সময়। জাতির সেই আত্যমিত্মক চাহিদার প্রতিফলন ঘটেছে 888sport live chat-888sport live footballেরও পরিশীলনে। বরং ষাটের দশক, যে-দশক সম্পর্কে শহীদ ইকবাল উচ্ছ্বসিত হয়েছেন, সেখানে কিন্তু আমার বক্তব্য একটু ভিন্ন। এটা ঠিক যে, সেটা ছিল রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হওয়ার দশক, – যার পরিণতি মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু এ-সময়ে 888sport live chat-888sport live footballে যে একটি ঢংয়ের ব্যাপার এসেছিল, তা কি অসত্য? তিরিশের অনেক কবিই যেমন আন্তর্জাতিকতাবাদের নামে সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে নানা রকম তাত্ত্বিক আগ্রাসনের শিকার হয়েছিলেন, সে-ধরনের একটি ব্যাপার 888sport appতেও ঘটতে যাচ্ছিল। স্যাড জেনারেশন না গোষ্ঠী হাংরি জেনারেশন – এরা কি করেছিল? যে-দেশে 888sport live chat-বিপস্নবই হয়নি, সে-দেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সোসাইটির ভাইসেসগুলোকে অঙ্গভূষণ করে শুরু হয়ে গিয়েছিল নাচানাচি। যে-দেশের মানুষ ডিক্লাসড হওয়া শেখেনি, সেখানে মার্কসীয় বদহজম হওয়া ছাড়া আর কী হবে? তাও অনেক কবি-লেখকের সমাজ বিপস্নবের বাহন হয়েছিল। এ-ধরনেরই একটি ব্যাপার এখন আবার বিশ্বপুঁজির মালিকরা তত্ত্ব আকারে নিয়েও আসছে। সমাজের সদর্থকতার সঙ্গে এর কোনো যোগ নেই, কিন্তু ধমক তো খেতে হচ্ছে উত্তরাধুনিকতার!
যা হোক, এগুলো তো মতামতের ব্যাপার। শহীদ ইকবালের সব কথা যে আমাকে মানতে হবে কিংবা আমার কথা তাঁকে, তাও তো নয়। কিন্তু 888sport live footballের ইতিহাসের যেসব তথ্য মৌমাছির মতো তিনি সঞ্চয় করেছেন, তার কৃতিত্ব তো তাঁর অবশ্যই প্রাপ্য।
শহীদ ইকবাল, তাঁর এ-গ্রন্থটি উৎসর্গ করেছেন আহমদ শরীফ, আহমদ ছফা ও হুমায়ুন আজাদকে। কাদেরকে একজন পছন্দ করেন, তার ভেতর দিয়ে তাঁর মানসবৈশিষ্ট্যেরও পরিচয় ফুটে ওঠে। কাজেই একজনকে বোঝার জন্য এটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই এই উৎসর্গ করার ভেতর দিয়ে শহীদ ইকবালকেও আমরা অনেকটাই চিনে নিতে পারি। তবে কথা কিন্তু আমার শুধু এটুকুই নয়। এঁদের তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সময়ের সক্রেটিস’। এই গ্রিক দার্শনিকের নাম আমরা সবাই জানি। নাম তো জানি, কিন্তু আর কতটুক জানি? নিজেকে জানার নিরন্তর একাগ্রতা চিমত্মায় ও অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে আসার এক সিমবলিক উপস্থাপনা রূপে তাঁকে, বোধকরি, শোকেসে সাজিয়ে রাখাটাই আমাদের আনন্দের কারণ হয়ে থাকে। তাই নিজেকেও জানা হয় না, তাঁকেও না। একইভাবে আহমদ শরীফ কিংবা আহমদ ছফা কিংবা হুমায়ুন আজাদও তাই। তাঁদের তিনজনের অবস্থান হয়তো একরকম নয়; কিন্তু যেটুকু তাঁদের কাছ থেকে আমাদের নেওয়ার, তা তো নিতেই পারি।
888sport appsের 888sport live footballের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত গ্রন্থের পরিশিষ্ট অংশের কথাটা আমি একটু বিশেষভাবে বলতে চাই। সন-তারিখসহ কবি-লেখকদের ধরে ধরে তাদের প্রকাশিত গ্রন্থের একটি দীর্ঘ তালিকা এখানে সংযোজিত হয়েছে। তাই, শুধু ইতিহাসের নয়, এটি একটি আকর গ্রন্থের মর্যাদা লাভ করেছে বলে মনে করি।
আর কী বলব? মুদ্রণ 888sport live chatের মনোহারিত্ব বইটিকে করেছে দৃষ্টিনন্দন। বইয়ের স্থায়িত্ব নিয়ে অতিউৎসাহী কিংবা ভাবভঙ্গিতে বিপস্নবী হয়ে অনেকেই এখন প্রশ্ন উত্থাপন করে থাকেন। কিন্তু, আমার মনে হয়, বিষয়টি পাত্রের নয়, পাত্রে রাখা জ্ঞানপ্রবাহের। মানবসমাজ তা নিজের প্রয়োজনেই, প্রযুক্তিগত ধারাবাহিকতায়, ফর্ম যাই হোক, সংরক্ষণ করবে। গ্রন্থের স্থান যদি আর্কাইভেও হয়, তা কি বাধাগ্রস্ত করতে পারবে জ্ঞানপিপাসুদের?
আশা করি, শহীদ ইকবাল-রচিত 888sport appsের 888sport live footballের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত গ্রন্থটি পাঠক সমাজে সমাদর লাভ করবে। r
কীর্তিনাশার না-শেষ হওয়া কথা
অমর মিত্র
তানভীর মোকাম্মেল তাঁর ছবিতে দেশভাগের 888sport sign up bonus আর বেদনার কথা বারবার বলেন। মুক্তিযুদ্ধ আর 888sport appsের জন্ম তাঁর ছবির বিষয় হয়। চিত্রা নদীর পারে ছবিতে এক হিন্দু পরিবারের পড়ে থাকা কন্যা মিনু আর তার পিসিমার দেশত্যাগের এক বেদনাদায়ক অংশ আছে। তানভীর মোকাম্মেল এই কথা নিয়ে, দেশভাগের বেদনা নিয়ে তাঁর জীবনযাপন করেন। তাঁর সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে দেশভাগের কথা উঠে আসে বারবার। তানভীর কিন্তু হাসান আজিজুল হক বা মাহমুদুল হকের মতো এপার থেকে ওপারে যাননি। আমাদের অনেকের মতো নিজ ভিটে, নিজ গ্রাম, নিজ নদী, রাস্তা, বটতলা, হাট, এজার সানা, মোজার সানাদের ছেড়ে আসেননি। তাঁর ক্ষেত্রে বিপরীতটাই ঘটেছে। তাঁকে ছেড়ে চলে গেছে বন্ধুরা। স্বজনের মতো প্রতিবেশীরা। একটা দেশ ছেড়ে এসেছে হাজার হাজার মানুষ, এপার ভর্তি হয়ে গেছে উদ্বাস্ত্তজনে, ভিটেহারা হয়ে এসে ভিটে খুঁজে বেড়াচ্ছে তারা। জনস্রোত এপারে। ওপারে তত মানুষ যাননি; কিন্তু ওপার কি সুখে ছিল? কী হয়েছিল বিপরীতে? গ্রাম খালি হয়ে গেছে। শূন্য ভিটে পড়ে আছে। কীর্তিনাশা পদ্মা খেয়ে নিতে আসছে গ্রাম। তানভীর মোকাম্মেলের এই দেখা সম্পূর্ণ নতুন। এভাবে পার্টিশনকে দেখা হয়নি। এই বিপরীতে। আসলে আমাদের একটা ধারণা ছিল, গ্রাম থেকে বিধর্মীদের তাড়িয়ে, তাদের জমিজমা-সম্পত্তি দখল করে বোধহয় সুখে ছিলেন তারা সবাই। কিছু মানুষ দাঙ্গা করেছে, জমি-ভিটে দখল করেছে, আর সিংহভাগ মানুষ সে-কারণে দুঃখ পেয়েছে। বেদনার্ত হয়েছে। নিঃসঙ্গ হয়েছে। শূন্য ভিটের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছে। চিত্রপরিচালক তানভীর মোকাম্মেল একটি 888sport alternative link লিখেছেন। কীর্তিনাশা। এই 888sport alternative linkে বিক্রমপুর জেলার কথা বলা হয়েছে। বিক্রমপুর ছিল সেরা বাঙালিদের জন্মভিটে। বিক্রমপুর শিক্ষাদীক্ষায় ছিল শীর্ষে। তানভীর তাঁর কৃশকায় এই নভেলে বালক সোহরাব ও সুহাসের বন্ধুত্বের কথা লিখেছেন টুকরো টুকরো। জুড়েছেন তাদের বাল্যজীবনের মুহূর্তগুলো। একজন চাষিবাড়ির ছেলে, অন্যজন শিক্ষকের। তখনো দেশ ভেঙে যায়নি। এক ঝড়বৃষ্টির সন্ধ্যায় কৃষক শামসু মিঞা এবং শিক্ষক কালিকাপ্রসাদ দত্ত ঠিক করেছিলেন, তাঁদের দুই সমত্মানের ভেতরে বন্ধু পাতিয়ে দেবেন। তা হয়েছিল অনুষ্ঠান করে। এই রীতির কথা আমার জানা ছিল না। বালিকাদের ভেতর সই পাতানোর কথা শুনেছি; কিন্তু বালকদের ভেতর বন্ধুত্ব! সেকালে পূর্ববঙ্গে এই রীতি ছিল। সেই বন্ধুত্বে চিড় ধরেনি। বালকদের বেড়ে ওঠার ভেতর দিয়ে বিক্রমপুর খালি হয়ে যেতে থাকে পার্টিশন হয়ে যাওয়ায় আর পাকিস্তানের জন্ম হওয়ায়। এই 888sport alternative link কখনো 888sport sign up bonusকথা, কখনো তা 888sport alternative linkের চলনে এগিয়েছে। এত খুঁটিনাটি জানেন তানভীর, তা লিখেছেন প্রাণের স্পর্শ দিয়ে। সিনেমার মানুষ বলে, কখনো মনে হয়েছে দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে চলেছেন তিনি। কত অসামান্য মুহূর্ত রচনা করেছেন তিনি। একটা জাতি দ্বিখ–ত হয়ে গেল, তা নিয়ে লেখা কি শেষ হয়? শিকড়ের টান যে কত তীব্র তা তানভীরের লেখা পড়তে পড়তে আমি টের পাই। বিক্রমপুরের কথা পড়তে পড়তে আমার কেন সাতক্ষীরার কথা মনে পড়বে? আবার আমি তো সেভাবে চিনিই না। মায়ের 888sport sign up bonusই আমার 888sport sign up bonus; বাবা, কাকা ও ঠাকুরদার বেদনায় আমার উত্তরাধিকার। ভাগ্যকুলের বাবুরা চলে যাচ্ছেন। পদ্মা চিড় ধরিয়েছে মাটিতে। দূরে স্টিমারের ধোঁয়া মিলিয়ে গেল। কী স্তব্ধতা! তানভীর স্তব্ধতা নির্মাণ করেছেন 888sport alternative linkজুড়ে। এক এক পরিবার ছেড়ে যায়, খালি হয়ে যায় চারদিক। ডাহুক ডাকে নিস্তব্ধ দুপুরে। আসলে এই 888sport alternative link বিক্রমপুরের ইতিহাসও। প্রাচীন ঐতিহ্য, বিক্রমপুরের গৌরব। আবার ধীরে ধীরে তা মুছে যাওয়া, পদ্মার এগিয়ে আসা। কোনো কোনো লেখা এমনিই লেখা হয়, উদ্দেশ্য বিশেষ থাকে না, তানভীরের এই 888sport alternative linkে তিনি পার্টিশনের বিপক্ষে বলতে চেয়েছেন। উদ্দেশ্য আছে। আমরা তাঁর সঙ্গে গলা মেলাতে চাই। তাঁর বলার কথা অনেক আছে। তিনি বলতে চেয়েছেন। পেরেছেনও। পাশাপাশি বাস করা দুই সম্প্রদায়ের ভেতর আদান-প্রদান ছিল না যে তা নয়। কিন্তু তা কেমন ছিল, স্বাধীনতার পরে জন্মে এবং এপারে আলাদা হয়ে বড় হয়ে বুঝিনি সেভাবে। আমাদের বসিরহাটের অদূরে দ-ীরহাট ইশ্কুলে হিন্দু-মুসলমানকে একসঙ্গে এক ইশ্কুলে পড়ানো হতো। আমি ফার্স্ট, মতিয়ার সেকেন্ড। কিংবা মতিয়ার ফার্স্ট, আমি থার্ড। দুবছর মাত্র। কলকাতার ইশ্কুলে কিন্তু কোনো মুসলমান সহপাঠী পাইনি। পাইনি কেন, না বাঙালি মুসলমান থাকে গ্রামে। গ্রামে মেলামেশা হয়। শহরে হয় না বাল্যকালে ইশ্কুলে। তবে খেলার মাঠে হতো। তাঁরা উর্দুভাষী। তানভীরের লেখা সুহাস ও সোহরাবের কাহিনি তাই আত্মস্থ হয়েছে। মনে হয়েছে, আমার বাল্যকাল একরঙা গেছে। অমন বহুবর্ণ হয়ে ওঠেনি। আমি পড়তে পড়তে তাই থেমে গিয়ে তাকিয়ে থেকেছি বাইরের মেঘাচ্ছন্ন বিকেলের দিকে। পার্টিশনের আগে কেমন ছিল পূর্ববঙ্গ তা কীর্তিনাশা পড়লে ধরা যায়। ধরা যায় কেমনভাবে বদলে যেতে লাগল ওপারের ওই দেশ। আনন্দবাজার আর যুগান্তর আসা বন্ধ হয়ে গেল, 888sport appর আজাদ এবং সংবাদ আসতে লাগল। পাকিস্তানের দাবির সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু-মুসলমানের আমরা ওরা, হিন্দুদের কী কী দোষ, মুসলমানের কী কী দোষ তা বেরোতে লাগল আড্ডায়-আলাপে। হিন্দুরা বাবু, মুসলমান চাষা। জল অচল সম্পর্ক। সম্পর্ক তেমন না হলে দেশটাই ভাগ হতো না। একটা কথা অনুচ্চারিত ভূমিবণ্টন,
১৭৯৩-এর চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত যে বড় একটা কারণ তা এখানে একবার ছায়ার মতো এসেছে। খাজনা অনাদায়ে ভাগ্যকুলের জমিদারবাড়ির নায়েব অক্রূর কাছে সোহরাবের বাবা শামসু মিঞার অপমানিত হওয়া, সোহরাব ছিল সেখানে। অক্রূর ছিল আবার সুহাসের মেসো। মেসো যে খারাপ মানুষ তা জানত সুহাস। শামসু মিঞা এবং কালিকাপ্রসাদ ছিলেন সৎ-পরিশ্রমী মানুষ। কালিকা দেশত্যাগ করবেন না স্থির করেও ১৯৬৪-র দাঙ্গার পর চলে আসেন এদেশে। সুহাস আর সোহরাবে বিচ্ছেদ হলো। হ্যাঁ, তানভীর, আমার কাকাও ওই দেশে থেকে যাবেন ঠিকই করেছিলেন, ১৯৬২-র পর আইয়ুবি শাসনের সময় চলে আসেন সাতক্ষীরা ছেড়ে। তিনি এলএমএফ ডাক্তার ছিলেন। এপারে এসে তেমন আর পসার জমাতে পারেননি। ইতিহাস সব এক। আমার মেজমেসোরও একই ইতিহাস। তবে জেনে আরো কষ্ট হচ্ছে, ওপারটা কেমন শূন্য হয়ে গিয়েছিল। সেই শূন্যতার ইতিহাস লিখেছেন তানভীর। আমাদের কপোতাক্ষ শান্ত। পদ্মা প্রমত্ত। পদ্মা তাই আক্রোশে ভেঙেছে শূন্য ভিটে, শূন্য গ্রাম। কপোতাক্ষ শুকিয়েছে, শুধু শুকিয়েছে। মাহমুদুল হকের কালো বরফের ভাগ্যকুল, তারপাশা, লৌহজং… তোরে মারব। সেই অনন্য উক্তি ভুলে আমার মনে হয়েছে, না আমি কাঁদব ভাগ্যকুল, তারপাশা, লৌহজং, সাতক্ষীরে, ধুলিহর তোদের জন্য। কীর্তিনাশা পড়লে তেমন মনে হয়। এই লেখা প্রচলিত চলনে লেখা হয়নি বটে; কিন্তু হৃদয় বিদ্ধ করেছে। আসলে দেশভাগ আর দেশত্যাগ নিয়ে কতভাবেই না বলা যায়। কত কোণ থেকে তা দেখা যায়। তানভীরের এই দেশত্যাগ ছিল চিত্রা নদীর পারে ছবিতে। বাস চলেছে বেনাপোল সীমামেত্মর দিকে। সেই মস্নান মুখ। তানভীরের এই 888sport alternative link মস্নান মুখের। বেদনার। তিনি দেশভাগের ইতিহাসকে লিখে রেখে যাচ্ছেন সিনেমায় এবং অক্ষরে। r
গহনতম বেদনার খোঁজে
হামীম কামরুল হক
মাসউদ আহমাদের দ্বিতীয় 888sport alternative link রূপচানের আশ্চর্য কান্না। আগের 888sport alternative link নিজের সঙ্গে একা-তে তিনি তাঁর জাত চিনিয়েছিলেন। তিনি তাঁর লেখাকে উপভোগ্য করে পাঠকের কাছে পরিবেশন করতে আগ্রহী, কিন্তু সেদিক থেকে তিনি আবার 888sport alternative linkের বিষয় হিসেবে হালকা কিছু বেছে নেওয়ার পক্ষপাতী নন। রূপচানের আশ্চর্য কান্না 888sport alternative linkেও তিনি তাঁর সে-মেজাজটি ধরে রাখতে চেয়েছেন। বইটি এ-বছর প্রকাশ করেছে সময় প্রকাশন।
888sport alternative linkের প্রধান চরিত্র রূপচান ম-ল বা রূপু। তাঁর সংকটই এর উপজীব্য। সেই সংকটের মূলে আছে দাম্পত্য সংকট এবং নিজের যৌনসক্ষমতা নিয়ে তৈরি হওয়া দ্বিধা। জীবন-জীবিকার দিক থেকেও সে খুব একটা কাজের যোগ্য মানুষ নয়। সে খেটে-খাওয়া মানুষ, আবার সে নির্দিষ্ট কোনো দক্ষতারও অধিকারী নয়। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে সে আরেকটি বিয়ে করে। এই দ্বিতীয় স্ত্রীর নিত্য গঞ্জনায় ক্রমে গুটিয়ে যেতে থাকে সে। যেন উবে যেতে থাকে তার অসিত্মত্ব। একটু একটু করে হারিয়ে যেতে থাকে তার বেঁচে থাকার ইচ্ছা। ফলে আর থাকতে না পেরে সে আত্মরক্ষার একটা উপায় খোঁজে। সে এই স্ত্রীর সঙ্গে থাকবে কি থাকবে না, এ নিয়ে সালিশ বসে গ্রামে। সালিশের সিদ্ধান্ত মিটমাটের দিকে গড়ায়। এ-সালিশে হানিফ মাস্টার বলেন, ‘দেখো রূপু, মানুষের জীবনে এমন হয়। ‘মানুষ’ শব্দের অর্থই ভুল। তুমি কম পড়াশোনা জানা মানুষ, তোমার এসব জেনে কাজ নাই। সংসার করতে গেলে নানারকম ঝগড়া কাজিয়্যা লাগে। এসব মাথায় রাখলে কি চলে? আমি বলি কি – যা হওয়ার হয়্যাছে। তুমি বউকে লিয়্যা বাড়ি যাও।’ – মূলত এই সিদ্ধামেত্ম 888sport alternative link শেষ হয়।
এ-888sport alternative linkে রাজশাহীর আঞ্চলিক ভাষাকে তিনি অনেকটাই কোমল করে ব্যবহার করেছেন, সেটা না করলেও পারতেন।
888sport alternative linkের জমিন হলো রাজশাহীর পুঠিয়া অঞ্চল। মাসউদ আহমাদ সাধ্যমতো সচেষ্ট থেকেছেন ওই এলাকার মাঠঘাট, ডোবা ও পুকুরগুলোর বর্ণনা করতে। যেমন তেলির পুকুরের বর্ণনা, যে বিশাল পুকুরে লোকজন কেবল স্নান করতেই আসে না, সেখানে কথায় কথায় সমাজের বহু কিছুর ঘূর্ণিপাকের কথা জানা হয় আমাদের। সেখানে আসা মানুষের নানা আলাপ-আড্ডা থেকে সমাজের কথা, সমকালীন জীবন ও জীবনের জটের কথাও আমরা জানতে পারি। কুসুম যে রূপুকে ছেড়ে যেতে চাইছে সেটাও এখানের আলাপে উঠে আসে।
‘গ্রামের মাঝখানে যে বিশালায়তনের প্রাচীন শানবাঁধানো পুকুর, অনেকে সেটাকে তেলির পুকুর বলে, দুপুরে বা দুপুর গড়িয়ে বিকালের মুখে স্নান করতে এসে
ছেলে-যুবক-বয়স্কলোক কিংবা তরুণী ও মহিলা – সবার কথার ফুল ঝরতে থাকে, পুকুরের হাঁটুপানিতে নেমে, সিঁড়িতে বসে, বা গলা ডুবিয়ে পানিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।’ – এই যে চিত্র, এটি ইউরোপে পাওয়া যাবে না, পাশ্চাত্যের সংস্কৃতিতে এটি নেই। এই যে নিজের দেশের বিশেষ রূপ এবং এই বিশেষ রূপের ভেতরে বিশেষ বিশেষ ঘটনা, সেগুলোই মাসউদ আহমাদ হাজির করেছেন এই 888sport alternative linkে। তবে রূপুর দুর্ভাগ্যটি একটি বিশেষ রহস্যের ভেতরে তিনি আঁটাতে চেয়েছেন। তাঁর আশ্চর্য কান্নার পেছনে বিনাদোষে দ–ত মানুষের সেই প্রাচীন নিয়তিরই দেখা মেলে।
মাসউদ সেই সঙ্গে বেছে নিয়েছেন বাংলা 888sport alternative linkের সবচেয়ে প্রচলিত ঢং। এটাকে প্রথাগতই বলতে হয়। আর তিনি যে-বিষয় বেছে নিয়েছেন, তাতে সরল ও প্রথাগত বর্ণনাই দাবি করে। আমরা গ্রামীণ জীবন নিয়ে স্পেনীয় বিখ্যাত লেখক ক্যামিলো হেসে সেলার পাস্কুয়েল দুয়ার্তের পরিবার 888sport alternative linkের কথা জানি। সেখানে সেই জীবনের জটিলতার সঙ্গে বর্তমানের গ্রামবাংলার পার্থক্য তো যথেষ্টই। পাস্কুয়েল দুয়ার্তের জীবনও ছিল নিত্য দুর্ভাগ্যের কঠিন কষাঘাতে তৈরি। পাস্কুসেলের কন্যা রোজারিও সবদিক থেকে পিতাকে চরমভাবে নিয়ন্ত্রণ করত। রূপচানের আশ্চর্য কান্নায় তেমনটাই নিয়ন্ত্রণ থাকে রূপুর দ্বিতীয় স্ত্রীর কুসুমের। রূপুর বয়স পঞ্চাশ পার হয়ে গেছে। কুসুম সেখানে তিরিশের কোঠায় থাকা 888sport promo code, তাকে তরুণীই বলা যায়। লেখকের কথায়, ‘দূরের গ্রামে রূপু লাড্ডু বিক্রি করতে গিয়ে কুসুমের দেখা পায়। বলা যায়, কুসুমকে আবিষ্কার করে।’ সেই আবিষ্কারের মূল্য তাকে দিতে হয়েছে পরে। সেই লাড্ডু বেচতে গিয়ে কুসুমের দেখা পাওয়া ও তাকে পরে ঘরে নিয়ে আসার মধ্যে লাড্ডুর ব্যাপারটি অদ্ভুত ঠাট্টার মতো বেজে ওঠে। রূপুর জীবনটাকে অতিষ্ঠ করে তোলে তার এই সাধের আবিষ্কার করা 888sport promo code।
মাসউদের আরেকটি দিক হলো নিপাট বাস্তববাদ বা রিয়্যালিজমের হাতে তিনি কাহিনিটাকে ছেড়ে দিয়েছেন। বর্ণনা তিনি যে প্রথাগত, তা তো আগেই বলা হয়েছে। তাঁর আগের 888sport alternative link নিজের সঙ্গে একাতে একটি গাঢ়-মন্দ বেদনার প্রকাশ ছিল, তা এক্ষেত্রে ততটা নেই বলা যায়। গ্রামের জীবনের একটি জটিলতার জটকে কেবল হাজির করতেই তিনি রচনা করে গেছেন দৃশ্যের পর দৃশ্য। কোথাও কোথাও দায়সারাও মনে হয়। যেমন জয়া ও ফজার ব্যাপারটা, অবৈধ সম্পর্কের জের হিসেবে পরে তাদের দুজনের বিয়ে হয় – সেটি শুধু আভাস রেখে যায় মাত্র। আর দেখি এ নিয়ে রূপুর দীর্ঘশ্বাস গাঢ় হয়ে উঠতে। কিন্তু চরিত্রগুলোর ভেতরের ব্যাপারগুলো বাইরে যেভাবে প্রকাশ পেয়েছে, তা দিয়ে ভেতরের ব্যাপারগুলো বোঝার জন্য আরো বেশি করে অন্তর্গত বিষয়গুলো তিনি নিয়ে আসতেও পারতেন এবং সেটি তাঁকে করতে হতো মনোবিশেস্নষণের মাধ্যমে।
তবে গ্রামের জীবন, মানুষের আচরণ একালের কোন মাত্রায় এসে দাঁড়িয়েছে, সেসবের চমকপ্রদ বর্ণনা আছে 888sport alternative linkের নানা জায়গায়। আর সেই বর্ণনা যথেষ্ট মমত্ব-মাখানোও। তিনি সেটি নির্মমভাবে দেখাতে চাননি। গ্রামের জীবনের আরো কুটিলতা, বিচিত্র বাধাবিপত্তির খোঁজ তিনি যে রাখেন না, তা তো নয়, কিন্তু তারাশঙ্কর (দৃষ্টান্ত : গণদেবতা) থেকে ভগীরথ মিশ্র (দৃষ্টান্ত : শিকলনামা) তাঁদের 888sport alternative linkগুলোতে যেভাবে বিপুলভাবে ও 888sport live chatিত করে হাজির করেছেন মাসউদ আহমাদ সেই দৃষ্টান্তগুলোর কথা খেয়াল রাখলে এতটা সরল তিনি হয়তো হতেন না। কেননা, 888sport alternative link তো কেবল কিছু কাহিনি ও পাতার পর পাতায় দৃশ্যের বর্ণনার নাম নয়। 888sport alternative link সিনেমা নয়। 888sport alternative linkের আয়না মানুষের অন্তর্গত ক্ষরণে জারিত হয়, সেখানে মানুষ তার সমগ্র অসিত্মত্বের সারবত্তা-সারসত্তা নিয়ে ধরা পড়ে যায়। শেক্সপিয়র নাটকের নাটকত্ব সম্পর্কে হ্যামলেটে বলেছিলেন, ‘নাটক হলো সেই ফাঁদ/ যেখানে ধরাবো আমি রাজার অপরাধ।’ ‘রাজা’ মানে এখানে বড় ব্যাপারগুলো। 888sport alternative linkও সেই ফাঁদ পাতা হয় এবং নাটকের চেয়েও বিসত্মৃত এবং বিশাল ফাঁদ। ফলে কেবল কাহিনি ফেঁদে 888sport alternative linkে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা শুরুতে আয়নার যে উপমা দিয়ে কথাটি বলেছি 888sport alternative linkে এই লক্ষণটি না থাকলে 888sport alternative link 888sport alternative link হয়ে ওঠে না। ফলে মাসউদ আহমাদ 888sport alternative linkের যে সিরিয়াস ধারাটি বেছে নিয়েছেন বিষয়গত দিক থেকে বিচার করলে, সেটিকে আরো প্রখর করতে 888sport alternative linkের সর্বাধুনিক রূপটাও তাঁকে পার হয়ে যেতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমেরিকার যুগন্ধর লেখক কার্ট ভনেগাটের সেই কথাটি, ‘I think it can be tremendously refreshing if a creator of literature has something on his mind other than the history of literature so far. Literature should not disappear up its own asshole, so to speak.’ সুতরাং তরতাজা কিছু করতে হলে সেইমতো এগোনোটাও লেখকের কাজ। আমরা মনে রাখতে পারি সুজান সানটগের কথাও। তিনি বলেছিলেন, তিনি কোনো পাঠকের জন্য লেখেন না। তিনি লেখেন – কারণ ‘888sport live football’ বলে একটি বিষয় আছে।
মাসউদ আহমাদ তাঁর রচনায় 888sport live footballসৃষ্টির জায়গাটি বড় করে দেখার চেষ্টা করছেন বলেই ‘বয় মিটস গার্ল’ জাতীয় কোনো প্রেমকাহিনি রচনায় এখন অবধি আগ্রহ দেখাননি। বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে তাঁর লেখা প্রথম 888sport alternative link ও গ্রামের জীবন নিয়ে সেখানকার মানুষের অন্তর্গত রূপ ধরার জন্য তাঁর এই দ্বিতীয় 888sport alternative link তাঁর রচনাপথে অগ্রযাত্রার স্মারক হয়ে রইবে।
রূপচানের আশ্চর্য কান্না সম্পর্কে পরিশেষে বলা যায়, অপূর্ব ইঙ্গিতময়ে এর সমাপ্তি। সেটি হলো : ‘আকাশের সিঁড়ি বেয়ে গাঢ় ভঙ্গিতে রাত নামতে থাকে।’ এভাবে একটি অন্তর্গত বেদনাকে লিরিক্যাল বাস্তবতা দেন মাসউদ আহমাদ, এবং এই সমাপ্তির ভেতর দিয়ে তিনি আমাদের নতুন এক শুরুর দিকে তাঁর নিজের যাত্রাপথটিকে মেলে দিয়েছেন যেন। তাই পাঠকদের পাশাপাশি আমরাও চাই রূপচানের আশ্চর্য কান্না পাঠকের নিবিড় সমাদর পাক। r

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.