888sport free bet login

দ্বন্দ্বময় জীবনের

অসংকোচ প্রকাশ

মোরশেদ শফিউল হাসান

 

সহজ কঠিন দ্বন্দ্বে ছন্দে

সন্জীদা খাতুন

 

নবযুগ প্রকাশনী

888sport app, ২০১৩

 

৬২৫ টাকা

 

 

 

কোদালকে কোদাল বলার লোক সব সমাজেই খুব কম। যখন কোথাও তা একেবারেই দুর্লভ হয়ে আসে, বুঝতে হবে সেই সমাজ বা জাতি একটি সত্যিকার দুঃসময় অতিক্রম করছে। আমাদের সমাজে বিশেষ করে বিদ্বান ও পন্ডিত মহলে আপন লাভালাভ বুঝে ও আশপাশে তাকিয়ে কথা বলার প্রবণতা যেভাবে কায়েমি হয়ে উঠছে, তাতে মনে হয় আমাদের জন্য দুঃসময়টা দীর্ঘস্থায়ী হবে। এ-অবস্থায় অধ্যাপক সন্জীদা খাতুন তাঁর সম্প্রতি প্রকাশিত আত্মজীবনী বা 888sport sign up bonusকথায় সত্য উচ্চারণের সাহস মনে হয় একটু বেশি মাত্রায়ই দিয়ে ফেলেছেন। অনেকের কাছেই যা হয়তো বেশ অস্বস্তিকর এমনকি অপ্রয়োজনীয়ও ঠেকবে। বইয়ের সংক্ষিপ্ত ভূমিকায় লেখিকা নিজেই অবশ্য ‘লেখাটির কিছু অংশ পাঠককে ক্লিষ্ট করতে পারে’ বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। তাঁর দিক থেকে ‘হুল না-ফুটিয়ে লিখবার আপ্রাণ চেষ্টা’ ও কিছু ‘অপ্রিয় প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া’র কথাও বলেছেন।

সন্জীদা খাতুনের পরিচয় আমাদের একজন পুরোধা ও শীর্ষস্থানীয় রবীন্দ্রসংগীত888sport live chatী, রবীন্দ্রসংগীত-বিশেষজ্ঞ, গবেষক, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ হিসেবে। এদেশের সংগীতশিক্ষার একটি ঐতিহ্যবাহী ও বড় প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার। পাকিস্তানি শাসনামলে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এদেশে রবীন্দ্রসংগীত তথা সামগ্রিকভাবে বাংলা সংস্কৃতির চর্চা ও প্রসারে যাঁরা অগ্রসেনানীর ভূমিকা পালন করেছিলেন, তিনি তাঁদের একজন। একার্থে তাঁর জীবনকাহিনি আমাদের সাংস্কৃতিক স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিহাসেরই অংশ। তাঁদের সেদিনের সে লড়াই, তাঁর ব্যক্তিগত দুঃখভোগ, ঝুঁকি গ্রহণ, কর্মস্থলে ও অন্যত্র নানা নিগ্রহ ও বিপত্তির কথা, যা ইতিপূর্বেও তাঁর 888sport sign up bonusচারণমূলক ও 888sport app রচনায় কমবেশি এসেছে, এ-বইটিতে তিনি যেন একটু বিশদভাবেই তুলে ধরেছেন।

ছোটবেলায় তাঁর প্রবল নেশা ছিল খেলাধুলার। বন্ধুদের বলতেন, ‘আমি সারাজীবন খেলব।’ কলেজের ছাত্রাবস্থায় ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন খেলতেন। বিয়ের পরও প্রেসক্লাবে গিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলেছেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রসংগীতের চর্চা, প্রসার ও গবেষণা যাঁর জীবনের ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়, তারুণ্যের দিনগুলোতে হিন্দি সিনেমার গানেও তাঁর আগ্রহ ছিল, তালাত মাহমুদ ছিলেন প্রিয় 888sport live chatী, রেডিওতে তাঁর হিন্দি গীত ও গজল শুনে শুনে তা গাইতেন। উৎপলা সেনের একখানি হিন্দি গানও গাইতেন ‘বিভোর হয়ে’। গান শিখেছিলেন সোহরাব হোসেনের কাছে (পরবর্তীকালেও সব সময় তাঁকে গুরু বলে মেনেছেন), ইসলামি গান, আধুনিক, পল্লিগীতি। রেডিওতে তাঁর প্রথম অনুষ্ঠানও ছিল আধুনিক গানের। তার আগে রেডিওতে গানের অডিশন দিতে গিয়ে ‘এক একে সাতবার’ ফেল করেছিলেন। অডিশন দিয়েই সুযোগ করে নিয়েছিলেন নাটকে অভিনয় করার, তাতে ‘ভালোই সাফল্য’ এসেছিল। মাসে দুবার রেডিওতে অভিনয় করার আহবান পেতেন। তারপর গানের অডিশনে পাশ করার পরই তিনি অভিনয় থেকে সরে আসেন, কিংবা বলা যায় তাঁকে সরে আসতে হয়েছিল। কারণ রেডিওর তখনকার নিয়ম অনুযায়ী এক ব্যক্তি গান ও অভিনয় দুটোই করতে পারতেন না। বাড়িতে তাঁরা উর্দুতে কথা বলতেন, মাকে বলতেন ‘আম্মা’, সুগন্ধকে ‘খুশবু’। শান্তিনিকেতনে পড়তে গিয়ে দ্বিতীয় পর্ব এমএ ক্লাসে তিনি নজরুলকে নিয়েই থিসিস করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু প্রবোধচন্দ্র সেন তাঁকে বলেছিলেন সত্যেন দত্তকে নিয়ে কাজ করতে। এসব এবং এমনি আরো অনেক কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনা ও তথ্য হয়তো তাঁর ভক্ত-অনুরাগী ও ছাত্ররা জানতেই পারতেন না, যদি সন্জীদা খাতুন তাঁর 888sport sign up bonusকথনে যথেষ্ট অকপট না হতেন। ১৯৫৩ সালের 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারির বার্ষিকীতে আরমানিটোলা ময়দানের সভায় বক্তৃতা করার আগে শেখ মুজিবকে উবু হয়ে বসে ফেরিওয়ালার কাছ থেকে খিরা কিনে খেতে দেখার 888sport sign up bonusটিও তিনি গুরুত্ব দিয়েই উল্লেখ করেছেন। অনেকেই যা করতেন কি-না সন্দেহ। যদিও সত্যিটা হলো এই যে, পরবর্তীকালে যিনি বঙ্গবন্ধু বা জাতির পিতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন, তাঁর বয়সও একদিন তারুণ্যের কোঠায় ছিল এবং            সে-বয়সে কিংবা পরেও তিনি খিরা খেতে পছন্দ করতেই পারেন।

সেই পঞ্চাশের দশকে শান্তিনিকেতনে ছাত্রী হিসেবে গিয়ে যে ‘অদ্ভুত আর অকল্পনীয় ঘটনা’র মধ্যে তিনি পড়েছিলেন, কিছু শিক্ষকের মধ্যেও যে উন্নাসিকতা বা সংকীর্ণতা (‘সাম্প্রদায়িকতা’ শব্দটি আমি এখানে পরিহার করছি) তিনি দেখেছিলেন, ১৯৭১ বা তার পরবর্তীকালেও সেই একই রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তিনি। শরণার্থী ও শান্তিনিকেতনের রিসার্চ ফেলো হিসেবে জীবনের কঠিনতম ও কষ্টকর দিনগুলোতে অনেকের সহমর্মিতা ও উদারচিত্ত-সহযোগিতার পাশাপাশি কারো কারো অভাবিতপূর্ব দুর্ব্যবহার এমনকি অতি মান্যজনদেরও ‘আকস্মিক নিষ্ঠুরতা’র পরিচয় তিনি পেয়েছেন। অন্য অনেকের মতো 888sport sign up bonusর সে দগদগে ঘাগুলো তিনি 888sport appচাপা দিতে চাননি। কারণ এ-ব্যাপারে সত্য বা বাস্তবকে গোপন করায় আসলে কোনো মহত্ত্ব নেই, এমনকি সমাধানের পথও তা নয়, সন্জীদা খাতুন তা জানেন। তেজেশ সেনের মতো একজন অবশ্য পরে তাঁর আচরণের জন্য লজ্জিত হয়েছিলেন। এ-প্রসঙ্গে সন্জীদা খাতুনের মন্তব্য : ‘তেজেশদার মতন আর কাউকে অবশ্য এরকম আন্তরিকভাবে লজ্জিত হতে দেখা যায় না সচরাচর।’ সেই পঞ্চাশের দশকেই শান্তিনিকেতনের ছাত্রী হিসেবে উড়িষ্যায় শিক্ষাসফরে গিয়ে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর বাসার গানের আসরে সৈয়দ মুজতবা আলীর (তখন তিনি সেখানকার কটক রেডিওর কেন্দ্র অধিকর্তা) অনুরোধে একটি পল্লিগীতি গেয়ে লেখিকা দলের অন্যদের অসন্তোষের শিকার হয়েছিলেন। লিখেছেন তিনি, ‘শান্তিনিকেতনসম্মত কাজ নাকি নয় ওটা। এ-ব্যাপারে ওরা রীতিমতো পিউরিটান ছিলেন।’                  সে-মানসিকতার পরিবর্তন কি পরেও খুব একটা ঘটেছে? বিশ্বভারতীর রক্ষণশীলতার প্রসঙ্গে কানাই সামন্ত, পুলিনবিহারী সেনদের মতো শ্রুতকীর্তি পন্ডিতদের সমালোচনা করতেও লেখিকা দ্বিধা করেননি। যেমন লিখেছেন, (গীতবিতানের ভুল সংশোধনের ব্যাপারে) ‘কানাই সামন্ত মশাইয়ের গোঁয়ার্তুমিতে মনটা ক্লিষ্ট হলো। আর বিশ্বভারতীতে তো আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথাতে বদল হবে না কিছু। … এঁরা গুরুদেব-এর একান্ত ভক্ত। আর আমি কখনোই রবীন্দ্রনাথকে ‘গুরুদেব’ বলিনি, যেমন শান্তিনিকেতনের শিক্ষার্থীরা বলে থাকে।’ পুরনো প্রবাসী পত্রিকার অনুসরণে বিশ্বভারতীর প্রকাশনায়ও মুসলমান নামের বানান কীভাবে বছরের পর বছর ভুল ছাপা হয় তার উদাহরণ দিয়ে লিখেছেন, ‘নামের ভুল খুঁজে পেয়ে আমি এখনো উত্তেজনা বোধ করি। কিন্তু বিশ্বভারতীর সে নিয়ে কোনো চিন্তা-চেতনা নেই।’ শেষবার বিশ্বভারতীতে কাজ করতে গিয়ে সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যে চরম অসৌজন্যমূলক ব্যবহার লেখিকা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন           (এ-প্রসঙ্গে যাঁদের নাম তিনি উল্লেখ করেছেন, তাঁদের কেউ কেউ তাঁদের বিদ্যাবত্তা ও 888sport app যোগ্যতার কারণে 888sport appsেও যথেষ্ট সমাদৃত), বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও, কেবল সন্জীদা খাতুন বলছেন বলেই আমাদের তা বিশ্বাস না করে উপায় থাকে না। সন্জীদা খাতুন তাঁর এ-সম্পর্কিত বিবরণ শেষ করেছেন একটি মাত্র বাক্য দিয়ে : ‘ওই তিক্ত অভিজ্ঞতার পর শান্তিনিকেতনে যাওয়া একরকম বন্ধ হল আমার।’ এ-প্রসঙ্গে বইয়ের অন্যত্রও ‘কাজে বাধা পেয়ে ত্যক্ত হয়ে শান্তিনিকেতন ছেড়ে আসা’র কথা লিখেছেন তিনি। ওখানকার একটি অনুষ্ঠানে লেখিকার সঙ্গে তাঁর পুত্র পার্থ নভেদের গান গাওয়া প্রসঙ্গে অনুষ্ঠান ঘোষিকার ‘পার্থ খাতুন’ বলার ঘটনাটি তিনি কৌতুকের সঙ্গেই উল্লেখ করেছেন। যদিও অনেকের কাছেই তা হয়তো অস্বস্তিকর ঠেকবে। যেমন অস্বস্তিকর লাগবে বিপ্লবী 888sport live footballিক সত্যেন সেনের শান্তিনিকেতনে কষ্টকর নির্বাসিত জীবনের কিছু বর্ণনা, বিশেষ করে এদেশের পুরনো রাজনৈতিক সাথি ও পার্টির প্রতি তাঁর অভিমান বা বিরক্তির কথাও। লিখিত আকারে সন্জীদা খাতুনের কাছ থেকেই বোধহয় তা প্রথম জানা গেল। রবীন্দ্রজন্মের সার্ধশত বর্ষ উপলক্ষে দিল্লিতে এক সেমিনারে আমন্ত্রিত হয়ে গিয়ে সেখানে ‘অদ্ভুত হাস্যকর সব 888sport live’ শোনার যে-অভিজ্ঞতার কথা লেখিকা জানিয়েছেন, তা হয়তো আমাদের দেশে অনুরূপ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মনোবল বৃদ্ধির সহায়ক হবে।

গ্রন্থটি পাঠের অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা হয়, মোহমুগ্ধতা বা আচ্ছন্নতা বিষয়টি লেখিকার মধ্যে একেবারেই কাজ করে না। তরুণ বয়সে যে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চোখে ছিলেন কিংবদন্তি, একাত্তরে শান্তিনিকেতনে গিয়ে তাঁকে তিনি ‘সাদামাটা’ আবিষ্কার করেন। তাঁর স্নেহশীলতার পাশাপাশি বিরূপতার উল্লেখেও লেখিকা অকুণ্ঠ। নিজের পছন্দ বা মতামত প্রকাশেও তিনি নিঃসঙ্কোচ। যেমন, ৫৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘নাম-কীর্তন মার্কা গান আমি সহ্য করতে পারি না। এমনকি রবীন্দ্রনাথের ‘চিরবন্ধু চিরনির্ভর           চিরশান্তি/ তুমি হে প্রভু’ও আমার ভালো লাগে না।’

আপন দাম্পত্যজীবনের ট্র্যাজেডি উল্লেখ করতে গিয়েও তিনি যে সংযম বা পরিমিতিবোধের, প্রতিপক্ষের প্রতি ঔদার্য বা বিবেচনাশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, তা এক কথায় অতুলনীয়। কিছু উদ্ধৃতি দেওয়া যাক : ‘বিবাহোত্তর জীবনে আমার পুঁথিপড়া প্রেমের ধারণার জন্যে ওয়াহিদুলকে যে দুঃসহ কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল, বুঝতে পারিনি বহুদিন পর্যন্ত।… জানা ছিল – ‘রজকিনী প্রেম নিকষিত হেম/ কামগন্ধ নাহি তায়’। বাস্তব সত্য যে তার চেয়ে বহুদূরে, সে জানতে হয়েছিল অনেক দুঃখে। ওয়াহিদুলকে বুঝবার আন্তরিক চেষ্টা ছিল বলেই ক্রমে নিজেকে বদলে নিতে পেরেছিলাম।’ কিংবা, ‘ওয়াহিদুল এত বিষয় জানতেন আর এত বিষয়ে তাঁর কৌতূহল ছিল, যে তাঁর সাহচর্য দিনের পর দিন আমাকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। বিবাহবিচ্ছেদ ঘটলেও আমার সংস্কৃতির পাঠগ্রহণ ততদিনে সম্পূর্ণ হয়েছে। বিবাহ নিয়ে আমার মনে কোনো দুঃখ-আক্ষেপ নেই। ওয়াহিদুলের সূত্রে সংস্কৃতি আর জীবন – দুই বিষয়েই আমার স্পষ্ট ধারণা হয়েছে।’ দাম্পত্য দ্বন্দ্ব বা অশান্তির উল্লেখ করতে গিয়েও  অনেক অপ্রিয় সত্য বা ঘটনাকে তিনি ইঙ্গিতময় ভাষায় দু-একটি মাত্র বাক্যে বলে শেষ করেছেন।

এদেশের সংগীত-সংস্কৃতিজগতের জানা-অজানা অনেক ঘটনা বা বিষয়ের উল্লেখ আছে বইটিতে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে নানা বাধা-বিপত্তি উজিয়ে রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ উদযাপন, সরকারি চাকরি করার কারণে অশনাক্ত না হতে ড্রামা সার্কেলের ‘তাসের দেশ’ নৃত্যনাট্যে তাঁর উইংসের আড়ালে বসে মুখে রুমাল পুরে গান গাওয়া, ছায়ানট প্রতিষ্ঠা, শ্রোতার আসর অনুষ্ঠান, অবরুদ্ধ দেশে জিরাবোর একটি মাটির ঘরে আপন শিশুসন্তানদের নিয়ে গান গেয়ে নববর্ষ উদযাপন, প্রবাসে মুক্তিসংগ্রামী 888sport live chatী সংস্থা গঠন, স্বাধীন 888sport appsে প্রথমে ‘জাহিদুর রহিম 888sport sign up bonus পরিষদ’ গঠন ও পরে তাকে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদে রূপান্তর, ব্রতচারী আন্দোলন পুনর্গঠন ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ এসেছে বইটিতে। যার কিছু হয়তো আমাদের অনেকে ইতিপূর্বে তাঁরই কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যদের বিভিন্ন রচনা ও সাক্ষাৎকারের সূত্রে জানার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু এদেশের শুদ্ধসংগীতের ‘প্রখ্যাত অথচ নিভৃতচারী’ গায়ক ওস্তাদ মহম্মদ হোসেন খসরুর রবীন্দ্রসংগীতের বাণী ও সুরেও যে কতখানি দখল ছিল তার সামান্য হলেও ধারণা আমরা বোধহয় প্রথমবারের মতো সন্জীদা খাতুনের এই আত্মজীবনীটি পাঠেই পাব। যেমন চিনতে পারব এদেশের আরেকজন অসাধারণ গুণি888sport live chatী মতি মিয়াকেও। বেহালা, বাঁশি, সেতার, সরোদের মতো যন্ত্রের পাশাপাশি কণ্ঠসংগীতেও যাঁর ছিল অসামান্য জ্ঞান। শিশিরকণা ধর চৌধুরীর মতো 888sport live chatীর বেহালার হাতেখড়ি হয়েছিল যাঁর হাতে। অথচ তাঁকে আজ আমরা কজন মনে রেখেছি? 888sport app রেডিওর এককালীন স্টাফ আর্টিস্ট ও ছায়ানট সংগীত বিদ্যায়তনের প্রথম অধ্যক্ষ পরিচয়ের আড়ালে তাঁর সে-প্রতিভা ও গুণ হয়তো চিরকালের মতো 888sport app পড়ে গেছে।

পাকিস্তান আমলে তথ্য সচিব আলতাফ গওহরের সঙ্গে সংবাদপত্র-সম্পাদক বা সাংবাদিকদের বৈঠকে সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে অধ্যাপক রোকেয়া কবীরের যে-মন্তব্যটি সন্জীদা খাতুন উদ্ধৃত করেছেন, আজকের দিনেও তাকে খুব তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়। একইভাবে স্বাধীনতা-পূর্বকালে শিক্ষা বিভাগে দুর্নীতি, অনিয়ম, আমলা ও তাঁদের পরিজনদের দাপট বিষয়ে লেখিকা তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে টুকরো-টাকরা যে দু-একটা তথ্য বা বিবরণ দিয়েছেন, তা থেকে বোঝা যায়, স্বাধীনতা আমাদের কিছুই বদলায়নি। বরং সেই ট্রাডিশনই, বর্ধিত মাত্রায়, চালু রয়েছে।

স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়ে সেখানে ক্ষমতাসীন দলের বশংবদ কতিপয় শিক্ষক ও ছাত্রের যে ঘৃণ্য দলবাজি ও পেশিশক্তির মহড়া তিনি দেখেছেন, তারও কিছু ইঙ্গিতধর্মী বিবরণ পাওয়া যাবে সন্জীদা খাতুনের 888sport sign up bonusকথনে। তা থেকে বোঝা যায়, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও শিক্ষকদের দলবাজি 888sport appsে একান্ত সাম্প্রতিককালের কোনো ব্যাপার নয়। আর অন্য অনেক কিছুর মতো একে ঠিক সামরিক শাসনের অবদান বলে চালানোও সত্যের অপলাপ হবে। এমন অনেক প্রসঙ্গ আছে বইটিতে যার উল্লেখে অনেকেই আজ হয়তো অস্বস্তি বোধ করবেন। জেনেশুনেও অনেকে এড়িয়ে যেতে চাইবেন। কিন্তু সন্জীদা খাতুন তা চাননি। এ-ব্যাপারে তিনি একটা দায়িত্ব অনুভব করেছেন, বলেছেন : ‘এসব লিখতে কষ্ট হয়, ঘৃণা বোধ হয়। তবু লিখছি এ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-পলিটিক্সের ছবি পাওয়া যায় বলে। এসব প্রসঙ্গ দেশের মানুষের জানা দরকার।’

বইয়ের একটি বড় অংশ জুড়ে আছে ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত, ভুটান এমনকি 888sport appsেরও বিভিন্ন স্থানে তাঁর 888sport slot game বৃত্তান্ত। নানা উপলক্ষে ও স্রেফ দেশ দেখার উদ্দেশ্য থেকে করা এসব 888sport slot gameের বর্ণনা তিনি বেশ বিশদভাবেই দিয়েছেন। পরিদর্শিত পার্ক, প্রাসাদ, চিত্রশালা, নানা ধরনের জাদুঘর, গির্জা এবং 888sport app স্থাপত্যের খুঁটিনাটি বর্ণনা আছে বইটিতে। কত অজস্র রকমের ফুলের নামই যে তিনি উল্লেখ করেছেন, তাদের রং, রূপ ও গন্ধের বৈশিষ্ট্যসহ (পিউনি ফুলে ‘সুজির হালুয়ার গন্ধ’টি পর্যন্ত বাদ যায়নি), সত্যি অবাক না হয়ে পারা যায় না। ফুলকে তিনি দেখেছেন ‘উন্নত সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি’ হিসেবে। একইভাবে দিয়েছেন খাবারের বর্ণনাও, তাদের স্বাদ ও প্রস্ত্তত প্রণালীসহ। যেখানেই গেছেন অপার কৌতূহল ও বিস্ময় নিয়ে সবকিছু দেখেছেন। এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে মিশেছে তাঁর রসবোধ, যা তাঁর বর্ণনাকে মনোগ্রাহী করে তুলেছে। সুইডেনের গোটেনবার্গে গরু দেখে তাঁর মনে হয়েছে, ‘আমাদের দেশের গোরুর মতোন নয়, কেমন বিদেশি-বিদেশ দেখতে!’ ওখানকার কাকদের সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য : ‘আমাদের কাকের মতো চকচকে পালক না। আর বেশ খাটো। কাকও কেমন অন্যরকম। এ কাকের পালক যেন কিছু কম কালো।’ গিরিডি, দেওঘর বা মধুপুরের কোথাও বালির ওপর অভ্রের বড় বড় পাত পড়ে থাকতে দেখার 888sport sign up bonusচারণ করে পরে তিনি লিখেছেন, ‘ধোপারা কাপড়ে যে আব দেয় সেই জিনিস পথের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখার অভিজ্ঞতাটা চমকপ্রদ হয়েছিল।’ বিদেশ 888sport slot gameে সেখানকার চমৎকার সব দৃশ্যের পাশাপাশি 888sport apps ও 888sport appsিদের প্রতি এক ধরনের অবজ্ঞার মনোভাবও তিনি লক্ষ্য করেছেন, যা তাঁকে আহত করেছে।                     এ-সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য : ‘আমাদের মতন মলিন-মলিন চেহারার লোক দেখে আর 888sport appsের নাম শুনে সকলেই তুচ্ছ জ্ঞান করে – দেখে আসছি সর্বত্র।’

লেখিকা মনে করেন জীবনে দ্বন্দ্ব ও ছন্দ দুটোই আছে, আর এ দুটো মিলিয়েই জীবন। কারো জীবনই আদ্যন্ত সুখের হয় না, সহজগতি পায় না। কঠিন বাধা পেরিয়েই মানুষকে সমুখে এগিয়ে যেতে হয়। তিনি নিজে যে জীবন যাপন করেছেন, তাতে হয়তো দুঃখ-দ্বন্দ্বের ভাগটাই ছিল বেশি। তারপরও বলেছেন, জীবন নিয়ে তাঁর কোনো আক্ষেপ নেই। ভালোমন্দ মেশানো যে-জীবন তাকে তিনি সেভাবেই গ্রহণ করেছেন। যেমন তিনি বিশ্বাস করেন ভালোমন্দ মিশিয়েই মানুষ, ‘ব্যক্তি মানুষের কত দোষই থাকে, তার ভিতরেই আবার মহৎ গুণও লুকিয়ে থাকে।’

খুব গুরুতর না হলেও, কয়েকটি ভুলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা প্রয়োজন মনে করছি। যেমন, রবীন্দ্র-জন্মশতবর্ষ উদযাপনের সময় সুফিয়া কামালকে ডেকে নিয়ে ‘চিফ সেক্রেটারি আজিজ আহমদের ধমকের সুরে’ কথা বলার বিবরণ দিয়েছেন সন্জীদা খাতুন (লেখিকা ইতিপূর্বে তাঁর স্বাধীনতার অভিযাত্রা বইটিতেও একই বিষয়ের উল্লেখ করেছেন)। ভাষা-আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে তদানীন্তন পূর্ব বাংলার চিফ সেক্রেটারি হিসেবে আজিজ আহমদের গণবিরোধী ভূমিকার কথা সুবিদিত। কিন্তু ১৯৬১ সাল পর্যন্ত কি তিনি ওই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন? (প্রকৃতপক্ষে তিনি তখন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত।) তখন পূর্ব পাকিস্তানের চিফ সেক্রেটারি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন সম্ভবত সৈয়দ হাশিম রেজা। লেখিকা তৎকালীন প্রাদেশিক তথ্য সচিব মুসা আহমদের (রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ উদযাপনের বিরোধিতায় যাঁর একটি উৎসাহী ভূমিকা ছিল) সঙ্গে আজিজ আহমদকে গুলিয়ে ফেলেননি তো? তথ্য বিভ্রান্তির আরেকটি নমুনা : সন্জীদা খাতুন লিখেছেন, (১৯৪৮ সালে) পাকিস্তান গণপরিষদে ধীরেন দত্তের বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাবের সবুর খান ‘তুমুল’ বিরোধিতা করেছিলেন। (পৃ ১১৪) সবুর খান কি তখন গণপরিষদের সদস্য ছিলেন? কিংবা থাকলেও, অত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগ কি তাঁর ছিল? এখানেও লেখিকা মনে হয় ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে রবীন্দ্রসংগীতের বিরোধিতা করে তৎকালীন কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী সবুর খানের বক্তৃতার কথাই বলতে চেয়েছিলেন।  ৮১ পৃষ্ঠায় ২৩ মার্চকে পাকিস্তানের ‘স্বাধীনতা দিবস’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে (১৯৪০) পাকিস্তান প্রস্তাব গ্রহণের 888sport app download for androidে দিনটি পাকিস্তানে বরাবর ‘পাকিস্তান দিবস’ বা জাতীয় দিবস হিসেবেই পালিত হয়। এটি হয়তো লেখিকার নিতান্ত অনবধানতাজনিত ভুল। ২৭০ পৃষ্ঠায় ‘ছোট ছোট মাছ’ নিশ্চয় ছাপার ভুলেই ‘ছোট ছোট গাছ’ হয়ে গেছে। আশা করি বইয়ের পরবর্তী সংস্করণে এই ভুলগুলো অন্তর্দীপ্ত অন্ধকারে গণেশ পাইনের পুরাণকল্প চিত্রকলা

সুব্রত রাহা

 

গণেশ পাইন :

সতত পুরাণকল্প

সম্পাদনা : সমীর ঘোষ ও মধুময় পাল

 

দীপ প্রকাশন

কলকাতা

 

৩০০ রুপিসংশোধিত হবে। r

 

 

 

এক সময় সুররিয়ালিজম নিয়ে হইচই ও ঘোর কাটতে বেশি সময় লাগেনি। ১৯৬৬ সালে হান্স আর্প ও অাঁদ্রে ব্রেতর মৃত্যু হয়। অনেকের মতে সুররিয়ালিজমের অবসান ঘটে। তবে 888sport live chat ইতিহাসে একটা অমোঘ সত্যালোক উদ্ভাসিত হয়েছে, অাঁদ্রে ব্রেতর কথায়, – ‘I say, we have attempted to present interior reality and exterior reality as two elements in process of unification is the supreme aim of Surrealism; interior reality and exterior reality being, in the present form of society. …’ ইতিহাসে কোনো হঠকারিতার চমক থাকে না। তাই আজ আমাদের দেশেও অন্তর্দীপ্ত এক বাস্তব অবলোকন অনুসন্ধান থেকে এ-কালের গণেশ পাইন প্রমুখের চিত্রকলার অন্তর্লোক নিদিধ্যাসন বলেই মনে হতে পারে। তাঁরা হয়তো অন্তর্দীপ্ত অন্ধকারে আবিষ্কার করেছেন মননের বাস্তবতাকে। চিরন্তন গুপ্ত নিহিত দৃশ্যপটকে।

আমাদের আলোচ্য বিষয় প্রবাদপ্রতিম 888sport live chatী গণেশ পাইন এবং তাঁর 888sport live chatচর্চা ও জীবন। এ-প্রসঙ্গে একটি মূল্যবান প্রকাশিত সংকলনগ্রন্থ গণেশ পাইন/ সতত পুরাণকল্প। এই সমৃদ্ধ রচনাভান্ডার সম্পাদনা করেছেন সমীর ঘোষ/ মধুময় পাল। আলোচনায় প্রবেশ করবার আগে দুই সম্পাদককে সাধুবাদ জানাতে চাই, তাঁদের সুসম্পাদনার জন্য। এ-ধরনের কাজ আমাদের দেশে সবসময় খুব একটা পাওয়া যায় না। সম্পাদক দুজনেই 888sport live chatী গণেশ পাইনের যথেষ্ট স্নেহভাজন ও কাছের মানুষ ছিলেন। দুজনের সঙ্গে চিঠিপত্রে 888sport live chatচিন্তার ভাববিনিময় হতো। গণেশ পাইন সান্নিধ্যে ঋদ্ধ। প্রথমেই এই সংকলন পরিকল্পপনায় যথেষ্ট নিষ্ঠা ও সততার পরিচয় পাওয়া যায়। 888sport live chatী গণেশ পাইনের সতীর্থ 888sport live chatীদের রচনা, 888sport live chatী গণেশ পাইনের অনুরাগী তরুণ 888sport live chatী ও শিক্ষানুরাগী, 888sport live footballিক-সাংবাদিক কবি যেমন আছেন, তেমন 888sport live chat ও 888sport live chatব্যক্তিত্ব নিয়ে গণেশ পাইনের স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত মনন ও চিন্তার আলোকিত নির্দেশ পাওয়া যায়।

এছাড়া বেশ কয়েকটি মূল্যবান সাক্ষাৎকার এবং গণেশ পাইনের রঙিন ছবি ও স্কেচ, গ্রন্থ-প্রচ্ছদ এবং গ্রন্থ-চিত্রণ, ডায়েরির খাতা প্রভৃতি এই সংকলনগ্রন্থের একটা বাড়তি পাওনা বলেই মনে হয়।

888sport live chatী গণেশ পাইনের সতীর্থ ও সমকালীন চিত্র888sport live chatী শ্যামল দত্তরায়, লালুপ্রসাদ সাউ, যোগেন চৌধুরী, সৌরেন মিত্র, 888sport live chatতাত্ত্বিক প্রণবরঞ্জন রায় প্রমুখের রচনাগুলি এই সংকলনের বিশেষ আকর্ষণ। কেননা, 888sport live chatী গণেশ পাইনের 888sport live chatের কৃৎকৌশল, মনন এবং সর্বোপরি 888sport live chatভাবনা ও দর্শন বুঝতে বিশেষ সহায়ক বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। এঁরা গণেশ পাইন ও তাঁর 888sport live chatকর্মকে যতটা কাছ থেকে দেখার ও বোঝার চেষ্টা করেছেন, অন্য কেউ সেভাবে সান্নিধ্য লাভ করলেও হয়তো বুঝে উঠতে পারেননি। তাঁদের 888sport sign up bonusকথায় আমরা অন্য এক গণেশ পাইনের দেখা পাই।

শ্যামল দত্তরায়ের লেখা ‘খুব বড় আড্ডাবাজ’ – থেকে আমরা জানতে পারি, গণেশ পাইনের ‘সোসাইটি অব কনটেম্পোরারি আর্টিস্টসে’র সদস্য হওয়ার কথা। শ্যামল দত্তরায় লিখেছেন, ‘…আমরা ক’জন তরুণ 888sport live chatী চূড়ান্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেদের ছবি অাঁকার চেষ্টাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জোট বেঁধেছি। তৈরি করেছি সোসাইটি অব কনটেম্পোরারি আর্টিস্টস। ১৯৬০ সালে। গণেশ আগ্রহ দেখান, নেবেন আমাকে? আমার কোনো বন্ধু নেই। সংগঠন নেই। আমি তাহলে বর্তে যাই। ছবি অাঁকাটা চালিয়ে যেতে পারব। গণেশ সোসাইটির সদস্য হলেন ১৯৬৩-তে।’… এছাড়া চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে শ্যামল ও গণেশের                    যে-অভিজ্ঞতা তারও বর্ণনা দিয়েছেন 888sport live chatী শ্যামল দত্তরায় এভাবে, – ‘আমাদের পকেটে তখন হাহাকারময় অসীম শূন্যতা। চাকরি হয়নি দুজনের। ইন্টারভিউয়ের লোক দেখানো ব্যবস্থা নিয়ে আমরা হাসাহাসি করতাম। একবার গণেশ, সনৎ, রবীন মন্ডল এবং আমি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অধ্যাপক পদের জন্য ইন্টারভিউ দিতে গেছি। ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন ধীরেন মিত্র, রমা চৌধুরী এবং বিশেষজ্ঞ হিসেবে পূর্ণ চক্রবর্তী। নিচে দেখি পোস্টার ‘ইন্টারভিউয়ের নামে প্রহসন কেন?’… আমাদের চাকরি হয়নি স্বাভাবিকভাবেই।’ এরপর শ্যামল দত্তরায় জানাচ্ছেন ওঁদের              সে-সময়ের মনোবল প্রসঙ্গে, ‘মনে আছে, একসঙ্গে ইন্টারভিউ দিতে আসার ব্যাপারটা উদযাপন করার জন্য আমরা চিৎপুরের রয়্যালে চাপ খেয়েছিলাম।’ দুই বন্ধু একসঙ্গে স্বীকারোক্তি করেছেন, ‘আমাদের তুলি কেউ বন্ধ করতে পারবে না।’ পরে অবশ্য 888sport live chatী গণেশ পাইন রবীন্দ্রভারতী কর্তৃপক্ষের দেওয়া লোভনীয় চাকরির প্রস্তাব হেলায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। ফিরিয়ে দিয়েছেন বিশ্বভারতীর আমন্ত্রণ বেশ কয়েকবার। শ্যামল দত্তরায়ের লেখাটির গুরুত্ব ছোট হলেও অপরিসীম।

আরেকটি লেখা সতীর্থ লালুপ্রসাদ সাউয়ের। আর্ট কলেজের অনেক অভিজ্ঞতা ও সহপাঠী গণেশের 888sport live chatকর্মে অনেক নিগূঢ় কথা জানতে পারা যায় লালুর ‘তাঁর ছবিতে লিটারারি কনটেন্ট থাকত’ লেখাতে। লালুপ্রসাদের এক উক্তি গণেশ পাইনের চিত্রকলার এক মহতী বিশ্লেষণ – লালুই বোধহয় প্রথম ধরতে পেরেছেন রহস্যটি, ‘গণেশ পাইন অ্যাবস্ট্রাক্ট-এর দিকে গেলেন না কেন, সে-প্রশ্ন উঠতে পারে। আমি বলব, তাঁর ছবির মধ্যে একটা লিটারারি কনটেন্ট থাকত। সেটা অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট-এর পক্ষে সম্ভব নয়। সেই লিটারির কনটেন্টটা অনেক সময় জীবনানন্দের মতো হতো।’ এছাড়া যোগেন চৌধুরীর ‘বেঙ্গল স্কুলের তিনি এক অপ্রতিম প্রতিশব্দ’ লেখাটিতে গণেশ পাইনের চিত্রকলার বিশ্লেষণ উৎসাহী পাঠকের কাছে নতুন অর্থ তুলে ধরে। যোগেন চৌধুরীর মতে, গণেশ পাইনের প্রথম দিকের ছবিতে স্পষ্টতই গুরু অবনীন্দ্রনাথ কিংবা বেঙ্গল স্কুলের ছাপ লক্ষ করা যায়। পরবর্তীকালে রেমব্রান্টের ছবির কাল্পনিক আলোছায়ায় যুক্ত ত্রিমাত্রিক প্রভাব লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে ‘ডেথ অব এ ড্রিম’ কিংবা ‘মেরি ঝাঁসি নেহি দুঙ্গি’ ছবি দুটিতে। এছাড়াও অবনীন্দ্রনাথ, রেমব্রান্ট, পল ক্লি প্রমুখ 888sport live chatীর প্রভাব গণেশ পাইনের ছবিতে থাকলেও রবীন্দ্রনাথের চিত্রকলা গণেশকে প্রভাবিত করতে পারেনি। এ-প্রসঙ্গটিও যোগেন চৌধুরী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।

গণেশ পাইনের ছবির জগৎ প্রসঙ্গে মিথের প্রভাবকে পাশ কাটিয়ে কোনো আলোচনায় যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ মিথের               যে-ভূমিকা গণেশ পাইনের ছবিতে, তাতে নিয়ন্ত্রক শক্তিতাও অপরিহার্য। মিথ ও মিথকথার 888sport apkনির্ভর অনুশীলন শুরু উনিশ শতকে। এই নতুন চিন্তাধারার পথিকৃৎ কার্ল অটফ্রায়েড মুলার। তিনি প্রখ্যাত জার্মান গবেষক। পরে ম্যাক্সমুলার, স্কটিশ পন্ডিত অ্যান্ড্রু ল্যাং, ই বি টাইলার, ফ্রেজার, গিলবার্ট মারে, এস এইচ হুক প্রমুখ সংস্কারমুক্ত সমাজ888sport apkনির্ভর গবেষণায় মিথ ও মিথকথার অন্য মাত্রা পায়। ১৯৫৫ সালে ফরাসি নৃ888sport apkী ক্লদ নেভি-স্ট্রাউস লিখলেন – ‘স্ট্রাকচারাল স্টাডি অব মিথ’। তিনি লিখলেন, আগে বেশিরভাগ গবেষক মিথ প্রসঙ্গে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করতেন, তাঁদের মতে সাধারণ নিরক্ষর প্রাচীন মানুষের সৃষ্টি হলো মিথ। কিন্তু যেসব মানুষ এমন অপরূপ মিথকথা সৃষ্টি করতে পারেন, তারা কোনোভাবে নির্বুদ্ধিতায় আচ্ছন্ন ছিলেন না। প্রাচীন মানুষের সচেতন মনের সৃষ্টি এই মিথকথা।

গিলগামেশ, রামায়ণ, মহাভারত, ইলিয়াড, ওডিসি প্রভৃতি অসংখ্য পুরাণ গড়ে উঠেছে লৌকিক মিথকে কেন্দ্র করে। গণেশ পাইনের 888sport live chatজগতে মিথের প্রভাব নিয়ে তাই অনেক আলোচনা ও আলোকপাত করার চেষ্টাও হয়েছে। এছাড়া গণেশ পাইন নিজেও তাঁর ছবিতে বেশকিছু সাক্ষাৎকারে পুরাণ ও মিথের প্রভাব সম্পর্কে বক্তব্য রেখেছেন। তবে 888sport live chatতাত্ত্বিক প্রণবরঞ্জন রায় তাঁর লেখা ‘গণেশ পাইনের ছবি : একটি গঠনতান্ত্রিক ব্যাখ্যা’য় মূলত 888sport live chatের উচ্চতর বৈয়াকরণিক আলোচনা করেছেন। উচ্চাঙ্গসংগীতের সঙ্গে চিত্র888sport live chatের গঠনগত সাদৃশ্য খুঁজেছেন। তবে লেখার শেষাংশে উল্লেখ করেছেন পুরাণ ও মিথ প্রসঙ্গে গণেশ পাইনের ছবি। প্রণবরঞ্জন রায়ের মতে ‘গণেশের শিবচর্চা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরাণ রচনাপ্রয়াস।

মিথ জগৎবিবিক্ত বা জগৎ নিরাসক্ত নয়, মিথ একান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ব্যক্তিক প্রকাশ নয়। মিথ জগৎময় জীবন সম্পর্কে লোক অভিজ্ঞতাভিত্তিক ব্যাখ্যা’ – তাই গণেশ পাইনের ছবির প্রসঙ্গে প্রণবরঞ্জন রায়ের অভিমত, – ‘গণেশের ছবির একান্ত রহিরঙ্গ আখ্যানভাগ পরিচিত পুরাণ কথার একটা ভঙ্গি স্বতঃই দৃশ্যমান। যশোদাদুলাল কৃষ্ণ, চাঁদবেনের সুমদ্রযাত্রা, কমলে কামিনী দর্শন – কত উদাহরণ দেব। সবই ছবিতে রূপান্তরিত বাংলার পুতুলের, বাংলার পটের ভঙ্গিমায়। মিথের যে লোক-ঐতিহ্য আশ্রয় দরকার, প্রথমেই ভঙ্গি দিয়ে গণেশ সে-আশ্রয় সংগ্রহ করে নেন। কিন্তু এ শুধু অনুষঙ্গ জাগরূক করার কৌশল, শুধু ভঙ্গিমা। গণেশ যদি এখানে ক্ষান্ত হতেন তবে তাঁকে আমরা ঐতিহ্যানুসারী ম্যানারিস্ট ছাড়া আর কোনো সম্মান দিতে কার্পণ্যবোধ করতাম। আধা গ্রামীণ সমাজের পুরাণকথা নিশ্চিত বিশ্বাস গণেশের ব্যাখ্যায় অনুপস্থিত। গণেশের ছবিতে অতিপ্রাকৃত সত্তায় বিশ্বাস দুর্লক্ষ্য। যা আছে তা আধিভৌতিক-এর ক্ষমতায় বিশ্বাস।’ – এ-প্রসঙ্গে প্রায় অনেকের রচনা উঠে এসেছে গণেশ পাইনের পৈতৃক বাসভিটা কবিরাজ রো-র বাড়ির পরিবেশ ও প্রাকৃতিক অবস্থানের কথায়। মধ্য কলকাতার সাবেকি পাড়া কবিরাজ রো। পুরনো কলকাতার পরিকল্পনাহীন ঘরবাড়ির জটিল সমাবেশ। আলো-বাতাস নেই বললেই চলে। গণেশ পাইন এই বাড়িতে আশৈশব লালিত হয়েছেন প্রাচীন একান্নবর্তী পরিবারের আবহাওয়াতে। বৃদ্ধ ঠাকুরমা ছিল 888sport live chatী গণেশ পাইনের 888sport live chatলোকে পথের দিশারি। তথাকথিত আধুনিক শিক্ষাহীন এক প্রাচীন মূল্যবোধের বৃদ্ধ ঠাকুরমার ছিল পুরাণকথা ও লোকগল্পের ঠাকুরমার ঝুলি। তরুণ 888sport live chat-উন্মেষী গণেশের চোখের মায়াঞ্জন ছিল ঠাকুমার পুরাণের গল্প, লৌকিক গল্প এবং হয়তো জীবনের গল্প। গণেশ পাইনের জীবনে বড় চিত্র888sport live chatী হয়ে ওঠোর পেছনে কবিরাজ রো-র বাড়ি ও ঠাকুমার গল্পের একটা বড় ভূমিকা আছে। যদি দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাট বাড়িতে গণেশের শৈশব শুরু হতো তাহলে ছবিও অন্যরকম হতো।

কবিরাজ রো-র পাইনদের বাড়ির আনাচ-কানাচ, ঘুলঘুলি, ঘুপচি অন্ধকার গণেশ পাইনের ছবিতে অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবিম্ব ফেলেছে। এছাড়া কবিরাজ রো-র গলির গৌর-নিতাই মন্দির বা 888sport app মন্দির শৈশব থেকে প্রভাবিত করেছে। গণেশের স্বীকারোক্তি, গৌরাঙ্গের গাত্রবর্ণ হলুদ রঙ এবং আকর্ণ বিস্তৃত চোখ তাঁকে এক অন্য পৃথিবীর ইশারা দিত। বেশ কিছু সাক্ষাৎকারে কবিরাজ রো-বাড়ির কথা আছে, অশিক্ষিত ঠাকুমার গল্প বলার কথক নৈপুণ্য গণেশ পাইনের মনোলোকে যে-বীজ বপন করেছে অকপটে তার কথাও বলেছেন। তাই পুরাণ ও মিথের মিশেলে গণেশ পাইনের 888sport live chat-বাস্তবতা উদ্ভাসিত হয়েছে। অন্তর্দীপ্ত অন্ধকারে গণেশের পুরাণকল্প চিত্রকলা উদ্দীপনা।

আলোচ্য সংকলনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ রচনা সৌরেন মিত্রের ‘নীল কস্ত্তরী আভার বর্ণমালা’। সৌরেন মিত্র শুধু একজন চিত্র888sport live chatী নন, – তিনি সুলেখক ও সফল সাংবাদিক। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ও সহকর্মী সৌরেন যে কত গভীর বন্ধনে পাইনের সৃষ্টিকর্ম ও সখ্যে আবদ্ধ ছিল তা আমি জানি। 888sport live chatতত্ত্ব ও চিত্রাঙ্কনের গভীর কৃৎকৌশল নিয়ে গণেশ ও সৌরেন যে ভাবিত ছিল এবং এসব প্রসঙ্গে দুই বন্ধুর আলোচনা ও চিঠিপত্রের কিছু অংশ এই সংকলনে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া চিত্রকলা ছাড়াও জীবনদর্শন নিয়েও আলোচনা ও চিঠিপত্র লেখালেখি হতো, – এমন এক চিঠি গণেশ পাইন লিখছেন, – ‘আজ, এখন জনারণ্যে লোপাট হয়ে যেতে যেতে বুঝতে পারছি নির্জনতা এক নীলবর্ণ পতঙ্গ। সোনালি পাখনা তার। সে সুনয়ন কিন্তু দৃষ্টিহীন। চিত্রকরের আগুনে তার পাখা পোড়ে। যত পোড়ে ততই সে দেখতে পায়, চক্ষুষ্মান হয় আর নিরীক্ষণের যন্ত্রণা ভোগ করে আমৃত্যু।’… সৌরেন জানাচ্ছে, গণেশ পাইন বিশেষভাবে মহাপ্রভু চৈতন্যদেব সম্পর্কে আগ্রহী ছিলেন। তাঁর জীবন ও সাধনা গণেশ পাইনকে সৃষ্টিকর্মে প্রভাবিত করেছিল। চৈতন্যদেব বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা শুরু করেছিলেন গণেশ পাইন। সৌরেনের জিজ্ঞাসার উত্তরে গণেশ বলতেন রসিকতা করে, – ‘আরে ভেতরটা মাজাঘষা না করলে কাজকম্ম চকচকে হবে কী করে?’ সৌরেনকে একবার শান্তিনিকেতনে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের চিত্রকলা প্রসঙ্গে গণেশ বলেছিলেন – ‘দ্যাখো, একজন জন্মান্ধ যদি হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়, চারদিক তাকিয়ে তার যেমন বিস্ময়ের সীমা থাকবে না, আমার ক্ষেত্রেও তাই। একটা বিস্ময়কর ব্যাখ্যাহীন ব্যাপার।’

গণেশ পাইনের চিত্রাঙ্কনের অনেক নিগূঢ় রহস্য সৌরেন মিত্রের লেখায় পাওয়া যায়। যেমন সৌরেন জানাচ্ছে,  – ‘তবে গণেশ পাইন ছবিতে সঘন ছায়া ফেলার ব্যাপারে ছিল খুব সাবধানী। আর আমার মনে হয় এই ব্যাপারে ও একেবারেই রেমব্রান্টপন্থী। কিন্তু ওর ছবি ছিল খাঁটি ভারতীয় আর মিডিয়াম টেম্পারা, তাই ক্রিয়াপদ্ধতি প্রকরণ কৌশল ছিল একেবারে নিজস্ব ঘরানার।’

‘আর্থ কালার বাজার থেকে কিনে এনে জলে ভিজিয়ে, ছেঁকে তারপর তার সঙ্গে মেশাত ভেষজ আঠা। এই আঠা তৈরির ব্যাপারটা ছিল ওর একেবারে নিজস্ব।’

এই সংকলনে আরও দুটি লেখা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য               বলে আমার মনে হয়েছে। 888sport live chatী গণেশ পাইনকে তাঁর সৃষ্টিকর্ম চিত্রকলা মাধ্যমে বুঝতে সাহায্য করবে। এই দুজনই পরিচিত             888sport live chat-সমালোচক।

মৃণাল ঘোষ ও সমীর ঘোষ দুজনে ছবির ভাষা বোঝেন, তাই তাঁদের লেখা সাধারণ পাঠককে এই মহান 888sport live chatীর চিত্রকলা সম্পর্কে শিক্ষিত করবে বলে মনে হয়। মৃণাল ঘোষ গণেশ পাইনের কয়েকটি ছবি সম্পর্কে যে-মন্তব্য করেছেন, উদ্ধৃতি করছি মাত্র। কারণ ছবি দৃশ্যকাব্য, যতক্ষণ অবলোকন না করা যাবে ততক্ষণ উপলব্ধির আনন্দ বর্জিত থাকতে হবে।

মৃণাল ঘোষ চিত্র পরিচিতিতে বলেছেন, – ‘বেহুলা’ পুরাণকল্প ব্যবহার হয়েছে। স্বামীর মৃতদেহ নিয়ে তাঁর জলযাত্রা। মাথার ওপর মঙ্গলঘট। তাতে একটি পল্লব, যা প্রকৃতির স্মারক-স্বরূপ। আর প্রেক্ষাপটে পরিব্যাপ্ত অন্ধকারের ভেতর রয়েছে এক আলোকস্তম্ভ।

এছাড়া মৃণালবাবু মন্তব্য করেছেন, ‘১৯৯০-এর দশকের গোড়ায় কবিরাজ-রো থেকে দক্ষিণ কলকাতার যতীন বাগচি রোডে আসার পর তাঁর ছবিতে কিছু পরিবর্তন এসেছে।’ ২০০৫-এর ‘বিফোর দ্য ল্যাম্প’ ও ‘দ্য ক্লাইট’ দুটি টেম্পারায়। ২০০৪-এর ‘দ্য প্ল্যান্ট, দ্য চেয়ার অ্যান্ড দ্য ওয়াল’ একটি অসামান্য স্টিল লাইফ।

সারা জীবনের সাধনার অন্তিম পর্বে গণেশ পাইন এসে পেঁŠছেছেন তাঁর ‘মহাভারত চিত্রমালা’য়। তাঁর পাঁচ দশকব্যাপী 888sport live chatীজীবনে এটি তাঁর সপ্তম ও শেষ একক চিত্রপ্রদর্শনী। মৃণালবাবুর মতে মোট ৪৪টি ছবি নিয়ে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে 888sport live chatীর একান্ত নিজস্ব রীতির টেম্পারা ও মিশ্রমাধ্যম ছাড়াও ছিল বেশকিছু জটিংস বা রেখা ও ছায়াতপভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ছবির প্রাথমিক খসড়া। এই খসড়াপাতায় দেখতে পাই কুরুক্ষেত্রের শ্মশানে নৃত্যপরা শনির আলেখ্য। মশাল হাতে মৃত্যুদূতের উপস্থাপনা। এজরা পাউন্ডের একটি উদ্ধৃতি, – ‘Man is an over-complicated organism. If he is doomed to extinction, he will die out of want of simplicity’, জটিলতাই মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। মনুষ্য সৃষ্টি ধ্বংসকে কুরুক্ষেত্র-যুদ্ধে গণেশ পাইন ‘মহাভারত চিত্রমালা’য় ফুটিয়ে তুলেছেন।

গণেশ পাইনের ‘দ্য চ্যারিয়টিয়ার’ ছবিতে অর্জুনের বিষাদযোগ। সামনের ঘোড়ার লাগাম ধরে সারথি শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণ এখানে ছায়াচ্ছন্ন। ঈশ্বরের সব প্রজ্ঞাও সর্বনাশের হাত থেকে বাঁচাতে পারে না মানুষকে বা মানবজাতিকে। ঈশ্বরকেও শেষ পর্যন্ত ব্যাধের শরে প্রাণ দিতে হয় – ‘ডেথ অব কৃষ্ণ’। এই সর্বব্যাপী মৃত্যুর সংহত প্রতীক ‘দ্য ডেমন অব ওয়ার’ ছবিটি। মৃণালবাবুর লেখায় আমরা গণেশ পাইনের ছবির অন্তর্সত্য উপলব্ধি করতে পারি। মৃণালবাবুর শেষ মন্তব্য গণেশ পাইনের চিত্রকলার এক অভ্রান্ত সত্যকথন, – ‘আজকের পৃথিবী যেদিকে যাচ্ছে, মহাভারতের রূপকে তিনি সেই সর্বনাশকে উন্মীলিত করতে চেয়েছেন। এই কালচেতনা তাঁর ছবির অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য। তাঁকে কেউ বলেন বেঙ্গল স্কুল বা নব্যভারতীয় ঘরানার প্রতিনিধি। তা বোধহয় সর্বাংশে সত্য নয়।’

888sport live chat-সমালোচক সমীর ঘোষ লিখেছেন, ‘888sport live chatী গণেশ পাইন – অলংকরণ 888sport live chatের অন্য ধারা’। এই লেখায় আমরা পাই তরুণ           কবি-গল্পলেখক, পত্রিকা-সম্পাদক প্রমুখের অনুরোধে গণেশ পাইনের প্রচ্ছদচিত্রণ কি গ্রন্থ অলংকরণের বিবরণ। এ ছাড়া বই ব্যবসায়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য কিছু গ্রন্থের অলংকরণ-কথা। শ্রীপান্থের মেটিয়াবুরুজের নবাব। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত এ-গ্রন্থে গণেশ পাইনের অলংকরণ 888sport app download for androidীয় কাজ। এই অলংকরণের কাজ যখন গণেশ পাইন করেছেন, তখন তিনি প্রতিষ্ঠিত ও মর্যাদাধীন 888sport live chatী, কিন্তু এই গণেশ পাইন ১৩৯৯ সালে ‘দেখা’ 888sport live football 888sport free betয় লিখেছেন, – ‘আর্ট কলেজ থেকে পাশ করার পর অপরিসীম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছিলাম। বহুদিন, বহু বছর কোথাও কিছু না হওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে আমায়। চাকরি খুঁজে হয়রান হয়েছি। জোটেনি একটিও। উপার্জনের চেষ্টায় কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়ায় ঘুরে ইলাস্ট্রেশনের কাজ জোগাড় করতাম। চিৎপুরের বিচিত্রসব সম্ভারের বিজ্ঞাপন অাঁকার কাজও করেছি সযত্নে। সে-সময় নিজের ওপরেই আক্রোশ হতো বেশি।’ আধুনিক কবি-888sport live footballিকদের বই ও পত্রিকার প্রচ্ছদ ও অলংকরণ সূত্রে গণেশ পাইনের সঙ্গে সখ্য সৃষ্টি হয়। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় গণেশ পাইনের ছবিতে মুগ্ধ হয়ে লেখেন, – ‘এই এক নিরন্তর  অন্তর্লোকবাণীর নিরবচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতার কাব্যকুট।’ সত্যজিৎ রায়েরও যথেষ্ট 888sport apk download apk latest version ও কৌতূহল ছিল গণেশের কাজ সম্পর্কে।

এই সংকলনে একটি মাত্র ভাষান্তর লেখা, তা হলো ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় প্রকাশিত অনিল গ্রোভারের ‘অন্ধকারের উৎস হতে’। এই লেখাতেই উল্লেখ করেছেন লেখক হুসেনের প্রসঙ্গ। ১৯৭৪-এ দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অফ ইন্ডিয়া এম এফ হুসেনকে সেরা দশ চিত্র888sport live chatীর তালিকা করতে বলে। হুসেন সে-তালিকার শীর্ষে নাম রাখেন গণেশ পাইনের। হুসেন মন্তব্য করেন, – ‘গণেশ পাইন সম্পর্কে চিরকালই আমি খুব উঁচু ধারণা পোষণ করি। ও আমাদের সময়ের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ 888sport live chatী … নিঃসন্দেহে।’ এছাড়া ‘সেক্রেড কাট’ বারোজন 888sport live chatীর কাজের মধ্যে থেকে বেছে নিয়ে ইহুদি মেনুহিন গণেশ পাইন সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত হন। প্রসঙ্গত জানা যায়, ভারতীয় উচ্চাঙ্গসংগীত, বিদেশি live chat 888sport এবং নাটকে ছিল গণেশ পাইনের ব্যক্তিগত আগ্রহ।

গণেশ পাইনের জীবনে মন্দার মল্লিকের স্টুডিওর animation-এর কাজের এক দীর্ঘ পর্ব। মন্দার মল্লিকের মৃত্যুর পর গণেশ পাইন শুধু এক সহায়হীন বৃদ্ধ, যিনি মন্দারের আত্মীয়া তাঁকে সাহায্যের জন্যে স্টুডিও চালিয়েছিলেন। অবশ্য animation কাজ করতে গিয়ে গণেশ তাঁর ড্রয়িংকে সমৃদ্ধ করেছেন এ-কথা বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন।

সংকলনের সম্পাদক মধুময় পালের লেখাটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য এই কারণে যে, গণেশ পাইনের জীবনযাত্রার একটি পারিপার্শ্বিক বিবরণ, দৈনন্দিন যাপন মানচিত্র বলা যেতে পারে। লেখাটির নাম ‘পারিপার্শ্বের পুরাণ’। মধ্য কলকাতার সামাজিক, মানসিক সংস্কৃতির মধ্যে 888sport live chatী গণেশ পাইনের বিবরণ রূপরেখা ফুটে উঠেছে। এক অভিনব পরিকল্পনা। ব্যক্তির চারিত্র্যলক্ষণ ফুটিয়ে তুলতে এক ভিন্নধারার গবেষণা। মানসিক বিবর্তনের স্বাতন্ত্র্য এই পরিপার্শ্বের দ্বারা প্রভাবিত তা বুঝতে সাহায্য করে।

গণেশ পাইনের ওপর বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকার এ-সংকলনে স্থান পেয়েছে। এসব সাক্ষাৎকারের মধ্যে অহিভূষণ মালিকের ‘গণেশ পাইন’ লেখাটিতে বিস্তারিতভাবে ফুটে উঠেছে গণেশ  পাইন-আলেখ্য। খুবই ঘরোয়া আলাপচারিতায় এ-সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন অহিভূষণ মালিক। ব্যক্তি গণেশ, 888sport live chatী গণেশ, 888sport live chatীচিন্তার গণেশ সমগ্র প্রেক্ষাপটে গণেশ পাইনকে উজ্জ্বলভাবে উপস্থাপিত করেছে সাক্ষাৎকারটি। এছাড়া আছে আরো কয়েকটি সাক্ষাৎকার। বিভিন্ন সময় ও বিভিন্ন পত্রিকায় সাক্ষাৎকারগুলি নিয়েছেন – অজয় নাগ, লিপিকা গুপ্ত, প্রণবকুমার চক্রবর্তী, কণাদ গঙ্গোপাধ্যায়, গৌতম চৌধুরী, মহুয়া সাঁতরা প্রমুখ।

এছাড়া সংকলনে গণেশ অনুরাগী ও গুণমুগ্ধ বন্ধুজনের 888sport sign up bonusচারণমূলক লেখা। এসব 888sport sign up bonusচারণমূলক লেখায় ব্যক্তি গণেশ পাইন ও 888sport live chatী গণেশ পাইনের অনেক অজানা দিকের কথা পাঠক জানতে পারবেন। একটা সময় কলেজ স্ট্রিট মার্কেটের (পুরানো) ‘বসন্ত কেবিন’-এর আড্ডা, যার মধ্যমণি ছিলেন 888sport live chatী গণেশ পাইন, তা নিয়েও একটা স্বতন্ত্র বই হতে পারে। সেই আড্ডায় প্রথম যাঁদের নাম মনে পড়ে তাঁরা হলেন ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়, দেবীপদ সাহা, মানস বর্মণ, অঞ্জন সেন, যীশু চৌধুরী, অজয় গুপ্ত, শুভেন রায় প্রমুখ। এঁদের মধ্যে যাঁরা 888sport sign up bonusকথা লিখেছেন, – দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিতা রায় চৌধুরী, অজয় গুপ্ত, সিদ্ধার্থ দাশগুপ্ত, রতন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। প্রত্যেকটি লেখাই স্বতন্ত্র গণেশ পাইনের সান্নিধ্যগুণে। তবে প্রদোষ পালের, ‘গণেশ পাইন : উত্তর থেকে দক্ষিণ’, এক অন্য গণেশ পাইনের সন্ধান দিয়ে যায় পাঠককে। কয়েকটি প্রশ্নের মুখে নিয়ে এসে দাঁড় করিয়ে দেয় গণেশ অনুরাগীদের।

পরিশেষে গঙ্গাজলেই গঙ্গা পুজোর পদ্ধতি মেনেই বলি, গণেশ পাইনের নিজের লেখাগুলি এই সংকলনের স্বর্ণপুট। 888sport live chatীর বোধকরোজ্জ্বল অনুভূতিতে 888sport live chat ও 888sport live chatী প্রসঙ্গে লেখা আমরা খুব একটা পাই না। তত্ত্বকথা নিয়ে কুটকাচালিতে অধিকাংশ 888sport live chatতত্ত্ব কাঁটাবনে আচ্ছাদিত হয়ে যায়। কিন্তু গণেশের নিজের লেখা, – চিত্রকলায় আধুনিকতার মাত্রা, অভিনব রূপের সন্ধানে, রামকিংকরের ছবি, একচালা দুর্গা প্রতিমার নব রূপায়ণ প্রতিক্রিয়া এবং 888sport live chatীর দৃষ্টিতে রবীন্দ্র-চিত্রকলা। প্রতিটি লেখাই দুর্লভ রত্নখন্ড। শুধু উপলব্ধির আলোকে 888sport live chat ও 888sport live chatীর যোগ দর্শন।

এই সংকলনের উপরি পাওনা গণেশ পাইনের বেশকিছু ছবির পুনর্মুদ্রণ। প্রচ্ছদচিত্র, ইলাস্ট্রেশন, লুপ্তপ্রায় পত্রিকার প্রচ্ছদ মুদ্রিত হওয়ায় হারিয়ে যাওয়া, নষ্ট হওয়ার হাত থেকে 888sport sign up bonusরক্ষা পেল। বড়, দামি, প্রতিষ্ঠিত সংগঠনে রক্ষিত ছবি হয়তো নষ্ট হবে না, হারিয়ে যাবে না। এই সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ে, অকালমৃত্যুর দেশে ছোট পত্রপত্রিকার খোঁজ বা কথা কজন মনে করে রাখে। এমন একটি সংকলন ভবিষ্যতে 888sport live chatী গণেশ পাইন গবেষণার আকরগ্রন্থের মর্যাদা পাবে বলে বিশ্বাস করি।

 

* সমীর ঘোষ ও মধুময় পাল সম্পাদিত * r

নজরুল-নার্গিস সম্পর্কের বেদনাময় কাহিনিভাষ্য

আহমেদ মাওলা

 

নার্গিস

বিশ্বজিৎ চৌধুরী

 

প্রথমা

888sport app, ২০১৪

 

২০০ টাকা

 

 

 

‘বিদ্রোহী কবি’র বিরাট ভাবমূর্তির বাইরে ‘ব্যক্তি-নজরুল’ হিসেবে কাজী নজরুল ইসলামকে ভাবতে সাধারণ পাঠক অভ্যস্ত নন। প্রতিষ্ঠিত ধারণার বাইরে কবিরও যে থাকতে পারে একান্ত ব্যক্তিগত জীবন, প্রেম, প্রণয়, উষ্ণ-হৃদয়ের অনেক অকথিত কথা, এটা অনেকেই মানতে চান না। নজরুল-নার্গিস সম্পর্ক, ইতিহাসের রহস্যময় অথচ কৌতূহলোদ্দীপক এক অধ্যায়। রহস্য আরো ঘোলাটে হয়েছে নজরুলের বন্ধুদের লেখা নানা 888sport sign up bonusকথা থেকে। ইতিহাসের সেই ঘুমন্ত, নীরব অধ্যায়কে সম্প্রতি কাহিনিভাষ্য দিয়ে বিশ্বজিৎ চৌধুরী লিখেছেন হৃদয়-স্পন্দিত 888sport alternative link নার্গিস। নিষ্ঠাবান গবেষক এবং ঐতিহাসিকের সততা দিয়ে লেখক কাহিনির চিত্রময় রূপ দিয়েছেন। এভাবে সন-তারিখ মিলিয়ে, তথ্যকে অবিকৃত রেখে ঘটনা বিন্যাস ও বিশ্বাসযোগ্য বাস্তবতা তৈরি করা সত্যি দুরূহ কাজ। আশার কথা, বিশ্বজিৎ চৌধুরী, তা চমৎকারভাবে করতে পেরেছেন। তথ্য যেখানে শেষ, সেখানেই লেখক কল্পনার বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন। লেখক শুধু ইতিহাসের পথ ধরে হাঁটেননি, নজরুল-নার্গিসের মানস-সঙ্গীও হয়েছেন। চরিত্র-সৃজনে তাঁর দক্ষতা দেখে যে-কোনো পাঠকই তা উপলব্ধি করতে পারবেন। বিশেষজ্ঞ, চরিত্রের অভিব্যক্তি, প্রতিক্রিয়া, লিখিত চিঠি, 888sport app download apk, গান এমনভাবে সংস্থাপিত হয়েছে যে, কাহিনির বাস্তবতা থেকে তা কিছুতেই আলাদা মনে হয়নি। ‘তোমরা একসঙ্গে রাত কাটিয়েছিলে?’ বান্ধবী ইন্দুর এই অমোঘ জিজ্ঞাসা দিয়ে 888sport alternative linkের কাহিনি শুরু হয়েছে। প্রশ্নবাণে নার্গিস কুণ্ঠিত, ইন্দুও বিব্রত। শুরুটা বেশ চমকপ্রদ। কলকাতা থেকে কুমিল্লার দৌলতপুর গ্রামে বেড়াতে এসেছেন অতিথি নজরুল। গানে, 888sport app download apkয়, বাঁশির সুরে তোলপাড় করেছেন নিস্তরঙ্গ গ্রাম। বড় ভাইয়ের সঙ্গে মামাতো বোনের বিয়ে। উৎসব-আয়োজনের মধ্যে মুন্সীবাড়ির মেয়ে সৈয়দা খাতুনকে দেখে নজরুলের দৃষ্টি আটকে যায়। মামা আলী আকবর খানকে নজরুল বললেন – ‘এত সুন্দর মেয়েটার কী নাম রেখেছেন আপনারা? আমি ওর নাম দিলাম নার্গিস, সুন্দর না?’ এভাবে সৈয়দা খাতুন হয়ে ওঠেন ‘নার্গিস’। একমাথা ঝাঁকড়া চুল, গভীর দুটি চোখ, ফর্সা, সুঠামদেহী যুবক যেন নিমিষে বালিকা নার্গিসের হৃদয়ে ঝড় তোলে। নির্জন পুকুরঘাটে দেখা হয়, কথা হয়, হাসি-কৌতুক, প্রণয়ের রং গাঢ় হয়ে লাগে দুজনের মনে। তারপর বিয়ের প্রস্তাব, বিয়ে উপলক্ষে খান সাহেবের লেখা বিখ্যাত দাওয়াতপত্র, মুজাফ্ফর আহমদ, পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলীর পত্র। বিয়ের বিরোধিতা করে মুজাফ্ফর আহমদের চিঠি, খান সাহেব কর্তৃক লুকিয়ে ফেলা, বিয়ের আমন্ত্রণে ধীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্ত পরিবারের আগমন ইত্যাদি কাহিনিকে গতিদান করেছে। কাবিনে পঁচিশ হাজার টাকা দেনমোহর এবং বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে নজরুলকে দৌলতপুর থাকার শর্ত নজরুলকে প্রচন্ডভাবে আঘাত করে। আক্দের সময় নজরুল চরমভাবে রেগে যান এবং তর্কবিতর্ক হয়। ফলে বিয়েটা যতটুকু আনন্দময় হওয়ার কথা, তারচেয়ে বেশি উদ্বেগে ভরে যায়। তারপর ঘনিয়ে আসে ১৯২১ সালের ১৭ জুন শুক্রবারের মোহময়, রহস্যময় সেই রাত্রি। বছর ঘুরে প্রবেশ করলেন নজরুল। ‘উদ্ভ্রান্ত চেহারা। ধপ করে বসল ঘাটের ওপর। একবারও তাকাল না তার দিকে। ঝড়ের পূর্বাভাস টের পেল নার্গিস। কয়েকটা মুহূর্ত অপেক্ষা করে উঠে গিয়ে দাঁড়াল প্রায় গা ঘেঁষে। হাতটা ধরল গভীর মমতায়। ‘সব ঠিক হয়ে যাবে, দেখো।’

কী ঠিক হয়ে যাবে? আমি সারা জীবন তোমাদের বাড়িতে পড়ে থাকবো?’ ‘… কেন পড়ে থাকতে হবে এ বাড়িতে, আমি তোমার বিয়ে করা স্ত্রী, তুমি যেখানে নিয়ে যেতে চাও সেখানেই যাব আমি।’… ‘পারবে? সত্যি পারবে আমার সঙ্গে চলে যেতে? তাহলে চলো, আজ রাত ফুরাবার আগেই এ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চাই আমি।’ ছুটে বেরিয়ে গেলেন বাসরঘর থেকে নজরুল। সেনগুপ্ত পরিবারের সঙ্গে যেন কথা বললেন। আবার ফিরে এলেন বাসরঘরে। বললেন – ‘আমি ভোরে বীরেনদার সঙ্গে রওনা দেব। শ্রাবণ মাসে পরিবারের লোকজন এলে তুলে নিয়ে যাব তোমাকে।’ ‘বাসররাত ফুরাবার আগেই ফেলে যাবে আমাকে?’ হাহাকারের মতো শোনালো নার্গিসের গলা।’ অভিমান করে চলে গেলেন নজরুল। নার্গিসের বুকের ভেতরেও অভিমান টনটন করে ওঠে। দ্রুত ঘটনা ঘটতে থাকে। কাহিনি এগিয়ে যায়। সাত-আটদিন পর নজরুল চিঠি লিখলেন ‘বাবা শ্বশুরে’র কাছে। কেঁপে ওঠে নার্গিসের হৃদয়। কয়েকদিন থেকে মুজাফ্ফর আহমদ নজরুলকে নিয়ে কলকাতায় ফিরে গেলেন। দিন চলে যায় নার্গিসের অপেক্ষা আর ফুরায় না। খান সাহেব কলকাতা গিয়ে নজরুলকে বলেন – ‘সবকিছু ভুলে আবার কি শুরু করা যায় না, নুরু?’ উত্তরে নজরুল বলেছেন – ‘কী ভুলে যেতে বলছেন খান সাহেব? বাড়ির পোষা কুকুরটিও অবজ্ঞা-অবহেলার ব্যাপারটা বুঝতে পারে। আর আমি তো মানুষ।’ ২১ নভেম্বর প্রিন্স ওয়েলসের ভারত আগমন উপলক্ষে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও ধর্মঘট শুরু হয়। নজরুল তখন কুমিললায়। গলায় গামছা দিয়ে হারমোনিয়াম বেঁধে ‘ভিক্ষা দাও ভিক্ষা দাও’ গান গেয়ে নজরুল মিছিলের অগ্রভাগে হাঁটছেন। রাজগঞ্জবাজার যাওয়ার পর পুলিশ গ্রেপ্তার করে নজরুলকে। ছাড়া পেয়ে আবার কলকাতায়, ‘বিদ্রোহী’ 888sport app download apk প্রকাশিত হলো বিজলী পত্রিকায়। ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ লেখার অপরাধে জেল। অনশনে ঊনচল্লিশ দিন নজরুল। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে উদ্দেশ করে লিখলেন 888sport app download apk। ধূমকেতু প্রকাশিত হলো ১৯২২ সালে নজরুলের সম্পাদনায়। ১৯২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ফিরে এলেন কুমিল্লায় তাঁর দোলনচাঁপার কাছে। শুনে নার্গিসের বুকটা ফেটে যায়। হাশেম মাস্টারের হাতে পাঠানো চিঠিতে নজরুল লিখলেন – ‘যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাই/ কেন মনে রাখ তারে’। ১৯২৪ সালের ২৫ এপ্রিল নজরুল-প্রমিলার বিয়ে হয়। তাঁদের প্রথম সন্তান হয় আগস্ট মাসে। তবু নার্গিসের প্রতীক্ষা। ইতোমধ্যে নার্গিস ম্যাট্রিক দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছেন। লিখছেন তাহমিনা, ধূমকেতু 888sport alternative link যেন অন্য কোনো বেদনার ভাষা। 888sport alternative linkের পরিণতিতে আমরা দেখতে পাই, দীর্ঘ সতেরো বছর পরে খান সাহেবের মাধ্যমে নজরুল কর্তৃক তালাকানামায় স্বাক্ষর করার পর নার্গিসের সঙ্গে কবি আজিজুল হাকিমের বিয়ে হয়। নার্গিস ছিলেন নজরুলের প্রথম প্রেম। মিলনের পূর্ণতা পায়নি সেই প্রেম। কিন্তু নজরুলের 888sport app download apk ও গানে এক 888sport live chatপ্রতিমা হয়ে আছে নার্গিস। 888sport alternative linkের পরতে পরতে আছে নার্গিসের বেদনার্ত হৃদয়ের অনেক অশ্রুসজল নীরবতার ভাষ্য। দীর্ঘ সতেরো বছর অপেক্ষা করেছিলেন যে 888sport promo code তাঁর প্রিয়তমের জন্য, ভালোবাসার আগুনে পোড়া খাঁটি সোনার মেয়ে নার্গিস। r

ঔপনিবেশিক ইতিহাসের বিপক্ষে

বাঙালি বীরের ইতিহাস

ফেরদৌস মাহমুদ

 

হীরকডানা

স্বকৃত নোমান

 

বিদ্যাপ্রকাশ

888sport app, ২০১৩

 

৩৫০ টাকা

 

 

সামন্তযুগের সঙ্গে সঙ্গে বীরত্বগাথা বা মহাকাব্যের যুগের অবসান ঘটলে পুঁজিবাদী সমাজে সে-জায়গা দখল করে নেয় 888sport alternative link। শুরুতে 888sport alternative link বুর্জোয়া সমাজের বিনোদনের জন্য 888sport live chat-888sport live footballের একটি বৃহৎ শাখা হিসেবে চর্চিত হতে থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর অবস্থার পরিবর্তন হয়। 888sport alternative link হয়ে ওঠে 888sport live footballের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা। আধুনিক যুগে 888sport alternative link, বলা যায়, সংশয় কিংবা দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে বসবাসকারী নির্দিষ্ট সময়ের ব্যক্তিমানুষের সূক্ষ্ম আচরণ, অনুভূতি, অন্তর্জগৎ বা বহির্জগতের চালচিত্র, যার মধ্য দিয়েই ফুটে ওঠে বৃহৎ সময়ের জনপদ বা জাতির জীবনের নৈতিক ও অনৈতিক অবকাঠামোর চলমান ইতিহাস; যার মধ্য দিয়ে অনায়াসেই প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে প্রথাগত ধর্ম, রাজনীতি বা সামাজিক অপধ্যান-ধারণা। কিন্তু এসবের পরও বলতে হয়, একজন সফল ঔপন্যাসিক হওয়ার প্রাথমিক শর্ত ভাষা ব্যবহারের কুশলতা, ভাষার গতিশীলতা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা, পরিবেশ ও সময়কে তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সময়োপযোগী ভাষার যথাযথ শক্তিকে কাজে লাগানোর ক্ষমতা। এক্ষেত্রে স্বকৃত নোমানের 888sport alternative link রচনায় দক্ষতার ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই।

স্বকৃত নোমানের হীরকডানা 888sport alternative linkটির পেক্ষাপট বাংলা, বিহার, ওড়িষ্যার নবাব আলীবর্দী খাঁর শাসনামল থেকে শুরু করে ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে ব্রিটিশদের হাতে সিরাজউদ্দৌলার পতন-পরবর্তী মীর জাফর ও তার জামাতা মীর কাসিমের শাসনামলের সময়কাল পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে এক বাঙালি বীরের আবির্ভাব ঘটে, যিনি হয়ে উঠেছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা ও ত্রিপুরার রাজা; যিনি ইংরেজ ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর নাম শমসের গাজী। 888sport appsের ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও আজকের ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রচলিত বহু কেচ্ছা-কাহিনি, গ্রামগঞ্জ, মসজিদ-মন্দির, দীঘিনালার নামকরণের সঙ্গে শমসের গাজী ও তাঁর সমকালীন ইতিহাসের বহু তথ্য ছড়িয়ে রয়েছে। আর এসব কেচ্ছা-কাহিনি ও তথ্যকেই উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে স্বকৃত নোমান তাঁর হীরকডানা 888sport alternative linkটি লেখেন। হীরকডানা 888sport alternative linkটিকে বলা যায় শমসের গাজীর ধারাবাহিক উত্থান, বীরত্বগাথা, ট্র্যাজিক পরিণতি ও লোকমুখে তার মিথ            হয়ে-ওঠার গল্প। কিন্তু স্বকৃত নোমান 888sport alternative linkের বিষয় হিসেবে ইতিহাসকে বেছে নিলেন কেন?

এর উত্তর তিনি হীরকডানা 888sport alternative linkের শুরুতেই পাঠকদের জানিয়ে দেন – ‘বর্তমান যখন নিরাশ করে, নিদারুণ বিপণ্ণতার দিকে ঠেলে দেয়, তখন অতীতের আশ্রয় নিই। ইতিহাস হয়ে ওঠে আমার নিরাপদ দুর্গ।’ তিনি আরো জানিয়ে দেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ববাংলায় একদা অভ্যুদয় ঘটেছিল বীর শমসের গাজীর। ঔপনিবেশিক ইতিহাস তাঁকে দস্যু-তস্কর হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আমার পূর্বপুরুষের গৌরবকে কলঙ্কিত করার কী জঘন্য অপপ্রয়াস! এই বেদনাবোধ আমাকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে বহুদিন। ইতিহাসের যে ভার আমি বহন করেছি বছরের পর বছর, এই 888sport alternative linkের মাধ্যমে তা খানিকটা হালকা করার চেষ্টা করেছি।’

ঔপনিবেশিক বিকৃতি থেকে পূর্বপুরুষের ইতিহাস পুনরুদ্ধারে স্বকৃত নোমানের হীরকডানা 888sport alternative link হিসেবে কতটা সফলতা অর্জন করেছে তা-ই এখন দেখার বিষয়। বাংলা888sport live footballে প্রথম উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক 888sport alternative link বলা যায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠকে। 888sport alternative linkটি বাংলার রাজনৈতিক-সামাজিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। এ-888sport alternative linkে বঙ্কিম ‘সুজলং-সুফলং-মলয়জঃ শীতলং-বন্দেমাতরম’ যে-গানটি সংযোজন করেছিলেন, তা তাঁর মৃত্যুর সত্তর বছর পরে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের দলীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতিলাভ করে। বাংলার সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীরা বঙ্কিমের আনন্দমঠকে তাঁদের প্রেরণাপুস্তক বলে মেনে নিয়েছিলেন। এর পরও বলতে হয় 888sport alternative linkটির ব্যর্থতা এখানেই, এটা ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সত্যকে জোরপূর্বক এড়িয়ে হিন্দু জাতীয়তাবাদেরই একচোখা প্রকাশ ঘটিয়েছিল।

আনন্দমঠ 888sport alternative linkটির প্রেক্ষাপট ১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধে বিজয় অর্জন করার পর ইংরেজরা যখন তৎকালীন সুবে বাংলার দন্ডমুন্ডের কর্তা হয়ে বসে, তার অব্যবহিত পরবর্তীকালে, ওই সময়ে মুসলিম ফকির মজনু শাহ এবং হিন্দু সন্ন্যাসী ভবানী পাঠক দুজনে মিলেমিশে তাঁদের দলবল নিয়ে ব্রিটিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। ব্রিটিশ সৈন্যের বিরুদ্ধে সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হন। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর 888sport alternative linkে হিন্দু-মুসলমানের যৌথ সংগ্রাম থেকে মুসলমানদের বাদ দিয়ে হিন্দু সন্ন্যাসীদের বিদ্রোহের একমাত্র নায়ক হিসেবে চিহ্নিত করলেন। আহমদ ছফার ভাষায় – ‘এটা ছিল বঙ্কিমের সজ্ঞানকৃত একটি অপরাধ।’

এই একই সময়কে নিয়ে পরবর্তীকালে আখতারুজ্জামন ইলিয়াস লিখেছেন খোয়াবনামা 888sport alternative link। ফকির মজনু শাহ এবং সন্ন্যাসী ভবানী পাঠকের সম্মিলিত সংগ্রামের কাহিনি বয়ানের মাধ্যমে ইলিয়াস তাঁর 888sport alternative linkের উন্মোচন প্রক্রিয়াটি সূচনা করেছিলেন। আধুনিক বিশ্লেষণে 888sport alternative link একটি সোশ্যাল ডিসকোর্স। যে-সমাজে মানুষ বাস করে, সে-সমাজে মানুষ যে পরস্পরের সঙ্গে চিকন-মোটা নানারকম সম্পর্কসূত্রে আবদ্ধ, সেই সম্পর্কগুলোর যথার্থ স্বরূপ নিরূপণ করাই হলো 888sport alternative link-লেখকের আসল কাজ।

এক্ষেত্রে কেউ সোশ্যাল ডিসকোর্সটিকে খুন করে 888sport alternative link লেখেন, কেউ সোশ্যাল ডিসকোর্সটিকে প্রাণবান ও গতিশীল করে তোলার জন্য 888sport alternative link রচনা করেন। বঙ্কিমচন্দ্র আনন্দমঠ 888sport alternative linkে মনগড়া মিথ্যা ডিসকোর্সের ওপর দাঁড়িয়ে তার বয়ান এবং বিশ্লেষণ করেছেন। অপরদিকে ইলিয়াস বঙ্কিমের ডিসকোর্সটি ভেঙে চুরমার করে নির্মাণ করেন সম্পূর্ণ নতুন একটি ডিসকোর্স, যেখানে বাংলার হিন্দু-মুসলমান যৌথভাবে ইতিহাসের অংশ দাবি করে এবং ইতিহাসের অগ্রযাত্রায় একে অন্যের শরিক হয়ে ওঠে।

ফকির ও সন্ন্যাসী বিদ্রোহের মাত্র কয়েক বছর আগেই ত্রিপুরায় শমসের গাজীর সঙ্গে তৎকালীন নবাব মীর কাসিম, বিতাড়িত ত্রিপুরার মহারাজ ও ইংরেজ সৈন্যদের যুদ্ধ হয়। হীরকডানা 888sport alternative linkের শেষের দিকে সে-যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ স্বকৃত নোমানের 888sport alternative linkের টাইম স্পেস বঙ্কিমচন্দ্র এবং আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামার বিষয়গত সময়ের কাছাকাছি।

 

দুই

হীরকডানা 888sport alternative linkে শুরুতেই দেখা যায় বর্গী-তান্ডবে অতিষ্ঠ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বর্গী প্রতিহত করে মানুষের আস্থার স্থানে অধিষ্ঠিত হন শমসের গাজী। আর এই আশ্রয় স্থানলাভের ক্ষেত্রে শমসের গাজী ও তাঁর বন্ধু সাদুল্লাহ মিলে বর্গীদের বিরুদ্ধে যে বীরত্ব প্রদর্শন করেন, তাতে লোকমুখে প্রচারিত হয় শমসের গাজীর পক্ষে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিল একদল জিন, যারা শমসের গাজীর অনুগত। এই লোকপ্রচারের ফলে তাঁর ওপর সাধারণ গ্রামবাসীর ভরসা বেড়ে যায় আরো বহুগুণ। জনপ্রিয়তায় নিয়োগ পান পানুয়া গড়ের অধ্যক্ষ পদে। পরে এই অধ্যক্ষ থেকে কঙ্গুরার তালুকদার, দক্ষিণশিকের জমিদার, তারপর ত্রিপুরা রাজ্যের রাজাধিরাজ পদে অভিষিক্ত হন শমসের গাজী। এছাড়া একসময় নবাব আলীবর্দী খাঁর কাছ থেকে নায়েবে নওয়াব খেতাবেও ভূষিত হন।

888sport alternative linkে স্বকৃত নোমানের কাহিনি বয়ানের ভঙ্গি ও 888sport alternative linkের বর্ণিত সময়ানুযায়ী যথাযথ পরিবেশ বর্ণনা, ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা আর ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোর নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য প্রতিষ্ঠা করতে যথাযথ কল্পনাশক্তির ব্যবহার সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। খুবই সাবলীলভাবে এক অধ্যায় থেকে আরেক অধ্যায়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়, live chat 888sport দেখার মতো আমোদ আর উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শমসের গাজীর প্রেম, বিরহ, যুদ্ধ আর রাজ্য শাসনের বিচিত্র কর্মকান্ডের পাশাপাশি স্বাধীনতা বিসর্জন ও রাজ্যহারা হওয়ার ট্র্যাজিক পরিণতি মনশ্চক্ষে দেখতে পাওয়া সম্ভব হয়। স্বকৃত নোমানের যুদ্ধ বর্ণনার দক্ষতা তুমুলভাবে রণপরিবেশের মধ্যে নিয়ে যায়। যেমন যুদ্ধ-বিবরণের একটি লাইন হচ্ছে এরকমম ­- ‘ডানে বাঁয়ে শত্রু হনন করতে করতে বীরদর্পে সামনে এগিয়ে চলে শমসের। কখনো বুকে, কখনো পিঠে, কখনো শত্রুর পেটে তীব্রবেগে ঢুকিয়ে দেয় তরবারি।’

সারা 888sport alternative linkজুড়েই মুগ্ধ হয়ে লক্ষ করতে হয় বাঁশি বাজানোতে দক্ষ, অস্ত্রচালনা ও কুস্তিতে পারদর্শী, 888sport live chat-888sport live football, রাজনীতি ও জ্ঞান888sport apk সচেতন, সর্বগুণে গুণান্বিত, আদর্শবাদী এক  নায়কোচিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী শমসের গাজীর উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে কীভাবে মনের মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবোধকে নাড়া দেয়।

888sport alternative linkের প্রধান চরিত্র শমসের গাজী ছাড়াও জগন্নাথ সেন, দক্ষিণশিকের জমিদার নসিরমন চৌধুরী, তাঁর কন্যা দরিয়া বিবি, শমসেরের বাল্যবন্ধু সাদুল্লাহ (সাদু), পুঁথি লেখক শেখ মনোহর, সৈয়দ গদাপীর, ত্রিপুরার উজির জয়দেব ইত্যাদি ঐতিহাসিক চরিত্রগুলো প্রাণ পায় স্বকৃত নোমানের চরিত্র-নির্মাণ দক্ষতায়।

কিন্তু সমস্ত চরিত্র ছাপিয়ে শমসের গাজী এতটা নায়কোচিত কেন বা কেন অতিমানবীয়? 888sport alternative link থেকে নায়ক বা সর্বগুণে গুণান্বিত নায়কোচিত ব্যাপার বিতাড়িত করা হয়েছে অনেক আগেই। বলা যায়, কাহিনি বর্ণনায় এর বিলুপ্তি ঘটেছে সেই সামন্তযুগীয় মহাকাব্যিক চিন্তাধারার অবসানের সঙ্গে সঙ্গেই। আজকের দিনে এসে তবে এ-বীরত্বগাথা ফাঁদা কেন? শমসের গাজী কি কোনো অলীক মানুষ ছিলেন? ঐতিহাসিক চরিত্র বলেই কি শমসের গাজীকে এভাবে উপস্থাপন? আধুনিক 888sport alternative link তো দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরিপূর্ণ রক্ত-মাংসের সাধারণ মানুষকে দেখাতে চায়। আসলে           এ-888sport alternative linkে খুব সাধারণ অবস্থা থেকে রাজপুরুষে পরিণত হওয়া যে শমসের গাজীর কথা বলা হয়েছে, তা সবই ইতিহাস, পুঁথি888sport live football ও লোকমুখে প্রচলিত কেচ্ছা-কাহিনি থেকে উপকরণ নিয়ে লেখা। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, লোকমুখে যে শমসের গাজীর পরিচয় ‘বাংলার বাঘ’ বা ভাটির বাঘ হিসেবে, প্রজাদরদি শাসক হিসেবে, ইংরেজদের কাছে তিনশো বছর আগে সেই শমসের গাজীই পরিচিত ছিলেন ডাকাত সর্দার হিসেবে। কিন্তু এক দশকের বেশি সময় দক্ষিণ বাংলা ও  ত্রিপুরার রাজা হিসেবে সফলভাবে রাজ্য শাসনের পরও শমসের গাজী কেন এমন এক নেতিবাচক পরিচয়ে পরিচিতি পেলেন, তা 888sport alternative linkটিতে উঠে এসেছে স্পষ্টভাবেই। ইংরেজদের কাছে শমসের গাজী ডাকাত হিসেবে শুরুতে পরিচিত ছিলেন না, রাজা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। এমনকি শমসের গাজীকে ইংরেজরা নিয়মিত করও প্রদান করত। কিন্তু যখন পলাশীর প্রান্তরে সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটল, তখনই ইংরেজরা তাদের ঔপনিবেশিক কূটকচালের নিয়মে শমসের গাজীকে ইচ্ছাকৃতভাবেই ডাকাত হিসেবে পরিচিত করাতে শুরু করে। কেননা, শমসের গাজীর বীরত্ব আর জনপ্রিয়তা ঔপনিবেশক শাসক ইংরেজদের কাছে ছিল বিষফোঁড়ার মতো।

ইতিহাসে এমন অসংখ্য নজির রয়েছে, শোষিত বা নিপীড়িত মানুষের কাছে যাকে বিপ্লবী মনে হতো, জনপ্রিয় মনে হতো – ঔপনিবেশিক শাসকসমাজ তাকে সন্ত্রাসী, ডাকাত বা লুটেরা হিসেবে আখ্যা দিত। আজকের বিশ্বেও এমন উদাহরণ বিরল নয়। যে চে গুয়েভারা আমাদের কাছে বিপ্লবী, সেই চে গুয়েভারা আমেরিকানদের কাছে আজো সন্ত্রাসী হিসেবেই পরিচিত। আবার ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন বা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার আমাদের কাছে ব্রিটিশবিরোধী স্বদেশি শহিদের মর্যাদালাভ করলেও ব্রিটিশদের কাছে আজো তাঁরা নৈরাজ্যবাদী পরিচয়েই পরিচিত। আসলে ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার একটি প্রক্রিয়া, যখন কেউ ঔপনিবেশিকতার বিরোধিতা করে জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে, তখন ঔপনিবেশিকদের প্রাথমিক কর্ম থাকে ওই বিরোধী ব্যক্তিটির বা সম্প্রদায়ের চরিত্র হনন, এর বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচার। আর এই অপপ্রচারের মাধ্যমে জনমনে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করে তারা আক্রমণ পরিচালনা করে। এ-প্রবণতারই পরিবর্তিত রূপ আজকের বিশ্বের তথ্য সন্ত্রাস বা মিডিয়া সন্ত্রাস। সে হিসেবে বলা যায়, শমসের গাজীর মতো একজন ঐতিহাসিক রাজ-চরিত্রকে তিনশো বছর পর নতুনভাবে 888sport alternative linkের ভেতর দিয়ে জনসমক্ষে উপস্থাপন বীরত্বব্যঞ্জক বা নায়কোচিত হবে এটাই স্বাভাবিক। আর এজন্য বড় ধরনের ধন্যবাদ প্রাপ্য স্বকৃত নোমান।

এরপরও খটকার সৃষ্টি হয়, যখন বিশেষ কোনো ঐতিহাসিক চরিত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নানা আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতার লেবেল চরিত্রটির মধ্যে আরোপ করা হয়। 888sport alternative linkটিকে তখন খুব সরলরৈখিক আর আদর্শবাদী মনে হয়। এখানেই ব্যক্তিবন্দনাহীন আধুনিক ঐতিহাসিক 888sport alternative linkের সঙ্গে প্রচলিত বীরত্বগাথার পার্থক্য। স্বকৃত নোমানের হীরকডানার শমসের গাজীকেও এই সরলরৈখিক প্রবণতাজনিত ত্রুটি থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয় না। ফলে শমসের গাজীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে বীরত্ব, সাহসিকতা, 888sport live chatমানস, আধুনিকমনা, জ্ঞানপিপাসু, ধর্মভিরুতা, সৎ চরিত্র, মাতৃভক্তি, মানবিক, দক্ষ রাজনীতিবিদ, দেশপ্রেমিক,  প্রজাবৎসল ইত্যাদি সমস্ত মহৎ দিক একাডেমিক ও প্রথাগত ভঙ্গিতে বীর বন্দনার মতো দ্বিধাহীনভাবে বর্ণনা করতে দেখা যায়।

এছাড়া 888sport alternative linkের অনেক জায়গায়ই শমসের গাজীর উত্থান প্রক্রিয়াকে মনে হয় তিনি যতটা না রজনৈতিক, তার চেয়েও অনেক বেশি নিয়তিতাড়িত। এমনকি তিনি যখন জমিদার নসিরমন চৌধুরীর কন্যা দরিয়াবিবির সঙ্গে প্রেমের কারণে জমিদারের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে বাধ্য হন, তখন শমসের গাজীর সঙ্গে সৈয়দ গদাপীরের বিভিন্ন মুহূর্তকে মনে হয় অনেক বেশি স্বাপ্নিক, সিনেম্যাটিক আর নিয়তি-নির্ধারিত ঘটনার মতো। মনে হয় ক্ষমতার প্রতি কোনো মোহ ছিল না শমসের গাজীর। কিন্তু তাঁর ভাগ্যই তাঁকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে আর তিনি হয়ে উঠেছেন অপ্রত্যাশিত বিজয়ী। এক্ষেত্রে শুরুতে বিভিন্ন সংকট মোকাবেলায় ও যুদ্ধজয়ে বড় ধরনের অনুপ্রেরণাদাতার ভূমিকা নিতেই যেন গদাপীর মুখোমুখি হন শমসের গাজীর। শমসের গাজীর চরিত্র নির্মাণে স্বকৃত নোমানের এই সরলরৈখিক প্রবণতা ও প্রথমদিকে চরিত্রটিকে কখনো কখনো  নিয়তি-নির্ভর বা সৌভাগ্যের বরপুত্র করে ফেলাকে বলা যায় আধুনিক মননের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

এরপরও বলতে হয়, বাঙালির ইতিহাস সাক্ষী শমসের গাজীর বীরত্ব ও দূরদর্শিতা ছিল সংশয়হীন। প্রয়োজনে শমসের গাজীও তাঁর হাতকে রক্তে রঞ্জিত করতে দ্বিধা করেননি, তা 888sport alternative linkে স্বকৃত নোমান কিছু সংলাপের ভেতর দিয়ে জানিয়ে দেন এবং সংলাপের মধ্য দিয়েই তিনি আধুনিক মননের সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিণতিকে অনেকখানিই প্রতিহত করেন। এক্ষেত্রে সংলাপ নির্মাণ ও সংলাপ প্রদানের জন্য উপযুক্ত সময়, পরিবেশ ও পাত্র-পাত্রী নির্ধারণে মুন্শিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন স্বকৃত নোমান। সংলাপের ভেতর দিয়ে চিরায়ত কিছু রাজনৈতিক সত্যকে 888sport live footballিকভাবে তুলে ধরেন তিনি। যেমন – জমিদার শমসের উজির জয়দেবকে উদ্দেশ করে বলছেন,

কে খুনি নয়? বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আপনি খুনি নন? যুগে যুগে ত্রিপুরার রাজারা কি মানুষের রক্তে হাত রাঙাননি? সিংহাসন অধিকার করতে ত্রিপুরেশ্বর বিজয় মাণিক্য কি কম খুন করেছেন? গিলিয়ার প্রান্তরে মানুষের খুনে কি রঞ্জিত হয়নি নবাব আলীবর্দী খাঁর খঞ্জর? কুরুক্ষেত্রে অর্জুন কি হাজার হাজার মানুষ খুন করেননি? রাবণকে কি খুন করেননি রাম? (পৃ ১২৯)।

 

কিংবা,

খুনে খুনে ফরাক আছে মশাই। হার্মাদদের খুন আর মহামতি অর্জুুনের খুনের মধ্যে বিস্তর ফারাক। চৌধুরিকে আমার লোকেরা খুন না করলেও আগে-পরে তিনি কোনো না কোনোভাবে খুন হতেন। কারণ খুনির স্বাভাবিক মৃত্যু খুব কমই হয়। রাজা যখন প্রজাবান্ধব না হয়ে প্রজার সঙ্গে দুশমনি শুরু করে, রাজ্যে যখন অন্যায় অবিচার শুরু হয়, তখন খুন হওয়া তার অনিবার্য হয়ে ওঠে। আমার চুরি-ডাকাতি সম্পর্কে আপনি বিস্তর খোঁজ খবর নিয়েছেন, কিন্তু চৌধুরীর জোরজুলুম সম্পর্কে তিল পরিমাণ খোঁজ নেননি। নেয়ার দরকার মনে করেননি। কারণ তিনি ছিলেন মহারাজের সনদপ্রাপ্ত খুনি।                  (পৃ ১২৯-৩০)।

এই সংলাপগুলোই শমসের গাজীর ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আর রাজনৈতিক দূরদর্শিতাকে স্বচ্ছ করে তোলে। তবে 888sport alternative linkে সংলাপ নির্মাণে স্বকৃত নোমান দক্ষতার পরিচয় দিলেও  দু-এক জায়গায় সংলাপ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়নি। যেমন – ত্রিপুরার রাজত্ব দখলের পর বনমালীর ঠাকুরের উদ্দেশে বলা শমসের গাজীর সংলাপ –

: মহারাজ, জাতিগতভাবে আপনি মুসলমান। আজ হোক কাল হোক, আপনার রাজ্যে তো মুসলমানি রেওয়াজই চালু হবে।

: আপনি ভুল করছেন মশাই, জাতিগতভাবে আমি মুসলমান নই।

: কী বলছেন মহারাজ! আপনাকে তো আমি একজন মুসলমান হিসেবে দেখছি।

: ভুল দেখছেন মশাই। আমার চৌদ্দ পুরুষ বাঙালি, বাঙালির ঔরসে আমার জন্ম, আমার শরীরে বাঙালির রক্ত বইছে। হ্যাঁ, সম্প্রদায়গতভাবে আপনি আমাকে মুসলমান বলতে পারেন। (পৃ ১৭৩)

 

এখানে 888sport alternative linkে নির্বাচিত ঐতিহাসিক সময়কে এড়িয়ে আজকের বাঙালি জাতীয়তাবাদের উপলব্ধির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংলাপ বিনিময় করা হয়েছে। ওই সময়ে ধর্মকে অতিক্রম করে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার অনুভূতিটা আদৌ জাগ্রত ছিল কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই যখন সংলাপে শমসের গাজীকে বাঙালি হিসেবে গর্ব করতে দেখা যায়, তখন বিষয়টাকে স্বাভাবিক মনে হয় না, আরোপিত মনে হয়। তবে এরকম কদাচিৎ ত্রুটিকে বাদ দিলে দরিয়াগাথা, বিজয়গাথা ও বিষাদগাথা শিরোনামে তিনটি পর্বে বিভক্ত হীরকডানা 888sport alternative linkে মুগ্ধ হওয়ার মতো, পুলকিত হওয়ার মতো অসংখ্য জায়গা রয়েছে যা পাঠককে কিছু সময়ের জন্য হলেও ঘোরগ্রস্ত করার ক্ষমতা রাখে।

 

তিন

ঔপনিবেশিক ইতিহাসের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে একজন বাঙালি বীরকে যথাযথ মর্যাদাদানে স্বকৃত নোমানের হীরকডানা 888sport alternative link তিনশো বছর আগের ইতিহাসকে ধারণ করতে সমর্থ হয়েছে বলা যায়।          এ-888sport alternative linkের ভেতর দিয়ে যে শমসের গাজীর দেখা পাওয়া যায় তিনি আসলে আজকের ইতিহাস-সচেতন বাঙালির জীবনেও প্রাসঙ্গিক। তাই একজন বাঙালি হিসেবে হীরকডানা 888sport alternative linkে শমসের গাজীর মতো প্রজাদরদি বাঙালি বীরের স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ের বর্ণনায় আবেগাপ্লুত না হয়ে উপায় থাকে না। মনের অজান্তে বলতে ইচ্ছা হয়, 888sport alternative linkে বর্ণিত শেখ মনোহরের পুঁথির লাইন –

এখানে আসিয়া কবি শেখ মনোহর ভনে

শমসের গাজী ভাটির বাঘ জানুক জনে। r

 

মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo code : নির্মাণ ও অভিজ্ঞানে

 

দীপংকর গৌতম

 

মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে

888sport promo code-নির্মাণ

কাবেরী গায়েন

 

বেঙ্গল পাবলিকেশন্স

888sport app, ২০১৩

 

৩৭৫ টাকা

 

 

মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির অহংকার। একদিনে এই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়নি। বহু কালে, বহু যুগের আন্দোলন-সংগ্রামের সোনালি ফল আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। সার্বিকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে ’৭১ সালে সংগঠিত একটি সংগ্রামকে দেখানো হলেও মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল বহু আগে থেকেই। বাঙালির মুক্তির স্বাদ অনেক পুরনো। তেভাগা, টংক, নানকার, ভাওয়াল বিদ্রোহ থেকে অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের সংগ্রাম পর্যন্ত কোনোটাই স্বাধীনতাবিচ্ছিন্ন সংগ্রাম নয়। এসব সংগ্রামের বহমান ধারা ’৫২-র 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি হয়ে ’৬২-র        শিক্ষা-আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান হয়ে ’৭১-এ এসে মিশেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল নয় মাস হলেও এর মধ্য দিয়ে অজস্র ঘটনা জন্ম নিয়েছে, যা আজ অবধি ইতিহাসহীনতার খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের পর কয়েক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করার বহু বিষয় রয়ে গেছে, যেগুলো নিয়ে কোনো কাজ হয়নি। সম্প্রতি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কাবেরী গায়েনের লেখা গবেষণাগ্রন্থ মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo code-নির্মাণ শীর্ষক বইটি বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধে 888sport promo codeর অবদান এবং আমাদের মূলধারার ইতিহাসে 888sport promo codeর অংশগ্রহণের বিষয়টি তিনি তাঁর গ্রন্থে এনেছেন। 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধে 888sport promo codeর অবদান বহুমাত্রিক। 888sport promo code সরাসরি রাইফেল হাতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, মেডিক্যাল কোরে কাজ করেছেন, নিজের স্বামী-সন্তানকে যুদ্ধে পাঠিয়েছেন, আহার জুগিয়েছেন, তথ্য দিয়েছেন, শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন; কিন্তু 888sport promo codeর স্বীকৃতি যেভাবে আসার কথা ছিল, সেভাবে আসেনি। বিশেষ করে, 888sport promo code-মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের পরিবর্তে তার ধর্ষিত ইমেজকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে মূলধারার ইতিহাস, এবং সেই ধর্ষণকে যুক্ত করেছে তাঁর ‘সম্ভ্রমহানিত্বের সঙ্গে’। প্রশ্ন হচ্ছে, 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে কি শুধু সেই ধর্ষিত নিষ্ক্রিয় সম্ভ্রমকেই তুলে ধরা হয়েছে, নাকি 888sport promo codeর সর্বমাত্রিক অংশগ্রহণকে বিশ্বস্ততার সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে? এই দুই সম্পূরক প্রশ্নকে ভিত্তি করে 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক live chat 888sportগুলোর মধ্য থেকে ২৬টি পূর্ণদৈর্ঘ্য এবং সাতটি স্বল্পদৈর্ঘ্য live chat 888sport বিশ্লেষণ করে 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo code-নির্মাণের স্বরূপটি খুঁজেছেন গবেষক কাবেরী গায়েন। প্রাক্-মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং মুক্তিযুদ্ধ- পরবর্তী – এই তিন পর্বে বিন্যস্ত live chat 888sportগুলো বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় লক্ষ রাখা হয়েছে। প্রথমত, 888sport promo code চরিত্রগুলোর সামাজিক পরিচিতি কী? অর্থাৎ কোন পরিচয়ে এ-live chat 888sportগুলো 888sport promo codeকে উপস্থাপন করেছে; দ্বিতীয়ত, মুক্তিযুদ্ধে তাদের অংশগ্রহণের স্বরূপটি কী? ধ্রুপদী যুদ্ধ-live chat 888sportের তাত্ত্বিক কাঠামোতে দাঁড় করানো হয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক live chat 888sportগুলো কি           যুদ্ধ-live chat 888sportের বৈশ্বিক জেন্ডার রাজনীতির উপস্থাপনরীতিকে অনুসরণ করেছে, নাকি 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধে 888sport promo codeর অংশগ্রহণের প্রকৃত ইতিহাসের প্রতি বিশ্বস্ত থেকেছে? বইটি সাজানো হয়েছে তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক দিক মাথায় রেখে। এর সর্বপ্রথম আলোচনা করা হয়েছে – এক, ‘সত্য’ নির্মাণ করে কে?/ আসে যায় নামকরণের রাজনীতিতে; দুই, যুদ্ধ-live chat 888sportে 888sport promo code/ বিশ্ব ফ্রেম/ যুদ্ধের ডিসকোর্সটিই কি 888sport promo code-অবমাননাকারী?; তিন, যে-live chat 888sport পাঠ করা হয়েছে, যেভাবে পাঠ করা হয়েছে; চার, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ত্ততি-পর্ব : জীবন থেকে নেয়া; পাঁচ, উত্তর-পর্ব : মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo code; ছয়, দৃশ্যের সেমিওটিক্স, দৃশ্যের ডিসকোর্স; সাত, যে-যুদ্ধে 888sport promo code বীর হয়নি; আট, ভবিষ্যৎ গবেষকদের জন্য এবং নয়, তথ্যনির্দেশ।

এই বইয়ের মধ্য দিয়ে পাঠক নতুন এক বাস্তবতার সঙ্গে পরিচিত হবেন। সেই বাস্তবতার শুরুটা হবে ভাষার ওপর নিয়ন্ত্রণ বা দখল দারিত্বের সঙ্গে ‘সত্য’ নির্মাণের বা নিয়ন্ত্রণের দখলদারির ফুকো (মিশেল ফুকো)-কথিত মিথোজীবিতামূলক সম্পর্কটি         (‘ভাষা যার দখলে, সত্য তার দখলে’)। আমাদের ক্ষেত্রে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন দেখা যায় যে, 888sport promo code-পুরুষের যৌথ সংগ্রাম এবং মিলিত রক্তস্রোতে এদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হলেও মুক্তিযুদ্ধের মূলধারার ইতিহাস রচিত হয়েছে – 888sport promo code-মুক্তিযোদ্ধা ও 888sport promo code সমাজের অবদানকে যথাযথভাবে উল্লেখ না করেই। এমনকি সরকারে উদ্যোগে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধের ষোলো খন্ডের দলিলপত্রেও          888sport promo code-মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো তথ্য নেই। 888sport promo codeর ভূমিকা দলিলবদ্ধ হয়েছে শুধুই নির্যাতিত হিসেবে, যে-যুদ্ধে সর্বস্ব বাজি রেখে বা মৃত্যুবরণ করে পুরুষ আখ্যা পেয়েছে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বা ‘শহিদ’ হিসেবে, সেই একই যুদ্ধে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ বা মৃত্যুবরণ করে 888sport promo codeর আখ্যা জুটেছে ‘বীরাঙ্গনা’ বা ‘নির্যাতিত 888sport promo code’ হিসেবে। সাংবাদিক সেলিনা পারভীনকে বাদ দিলে কোনো শহিদ 888sport promo codeর তথ্য আমাদের মূলধারার লিখিত ইতিহাসে নেই। সাম্প্রতিককালে অবশ্য কবি মেহেরুননিসার নামে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়েছে। ইতিহাস বলে, শুধু আমাদের দেশেই নয়, যুদ্ধের ফলে সারাবিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় 888sport promo code ও শিশু। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে এদেশের কতজন 888sport promo code নির্যাতিত হয়েছেন তার সঠিক তথ্যও নেই দেশের কোথাও। যুদ্ধের মধ্যে যুদ্ধের কারণে ধর্ষিত 888sport promo code মৃত্যুবরণ করলেও তিনি শহিদ আখ্যা পাননি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলে, ‘ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ 888sport promo codeর সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি।’ (রহমান, ১৯৮২; সরকার, ১৯৯৮)। যুদ্ধকালীন নির্যাতনের দৈহিক স্বাক্ষর পুরুকে বীর যোদ্ধার মর্যাদা দিয়েছে, লিখিত ইতিহাসে সেই যুদ্ধকালীন নির্যাতনের দৈহিক স্বাক্ষরকে 888sport promo codeর ‘সম্ভ্রমহানি’ হিসেবে দেখা হয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত 888sport promo codeদের সরকারি ঘোষণার মাধ্যমে বীরাঙ্গনা খেতাব দেওয়ার পর থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত দৈনিক বাংলা এবং দ্য 888sport apps অবজারভার পত্রিকায় প্রকাশিত ৫০টির বেশি সংবাদ ও ফিচার 888sport world cup rateের ডিসকোর্স বিশ্লেষণ করে ইসলাম (Islam, 2012) দেখান যে, এসব 888sport promo codeর নামের আগে সবচেয়ে বেশি যে-শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা হলো – লাঞ্ছিতা; এছাড়া ব্যবহার করা হয়েছে ‘বিধ্বস্ত’ ও ‘সর্বস্ব হারানো’ শব্দগুলো। এসব শব্দের ব্যবহারের সঙ্গে বীরত্বের সম্পর্ক সামান্যই। ভাষার ব্যবহারে তাই আসে-যায়। আসে-যায় নামকরণের রাজনীতিতে। (আসে যায় নামকরণের রাজনীতিতে, পৃ ২০)

এই লেখার মধ্য দিয়ে গবেষক কাবেরী গায়েন যে-সত্য আবিষ্কার করেছেন এবং সত্যবদ্ধ উচ্চারণের মাধ্যমে তা প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo code-নির্মাণ গবেষণাগ্রন্থে,           যে-কারণে আমরা একটু পেছনে ফিরলে দেখতে পাই, 888sport promo codeর স্বীকৃতির সংকট নতুন নয়। মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রথম রুখে দাঁড়ায় সাঁওতাল শ্রেণি ও নিম্নবর্গের মানুষরা আজো যা ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’ নামে সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। তখনকার গণসংগ্রামে নেতৃত্বের জায়গায় কানু-সিঁধু-চাঁদ-ভৈরবের নাম শোনা গেলেও এই সংগ্রামে অজস্র 888sport promo code তীর-ধনুকসহ অংশগ্রহণ করেছিল। ইংরেজ সেনাবাহিনীর গুলিতে পুরুষদের সঙ্গে অজস্র 888sport promo codeও সেদিন শহিদ হয়েছিলেন। কিন্তু আজ অবধি সে-তালিকা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। তেভাগা গণসংগ্রামে নাচোলের সংগ্রামী নেত্রী প্রয়াত ইলা মিত্রের নাম শোনা গেলেও তেভাগায় 888sport promo code ব্রিগেডই ছিল আলাদা। তাদের পূর্ণ তালিকা আমাদের কাছে নেই। অনেক বইয়ে বিচ্ছিন্নভাবে অনেক নাম এলেও সেগুলো পূর্ণাঙ্গ কোনো ঘটনা নয়। টংক বিদ্রোহেও গারো-হাজং সম্প্রদায়ের 888sport promo code-পুরুষ নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করলেও বিশেষ ঘটনা ঘটানোর জন্য রাশি মণি ছাড়া তেমন কারো নাম শোনা যায়নি। যদিও পরবর্তীকালে কুমুদিনী হাজং এবং রণীলা বেনয়াড়ীর নাম পাওয়া গেছে, তাও বিচ্ছিন্নভাবে। ’৭১-এর গণসংগ্রামও তার বিচিত্র কিছু নয়। 888sport promo codeর কৃতিত্ব কখনোই কেউ দিতে নারাজ। মোট কথা, 888sport promo code ঘরের বাইরে যাক, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ত্ততিতে যদি এ-কথা ভাবা হতো, তাহলে শুধু বীরপ্রতীক ক্যাপ্টেন ড. সীতারা বেগম ও তারামন বিবি ছাড়া আর খেতাবপ্রাপ্ত কোনো 888sport promo code-মুক্তিযোদ্ধার নাম আজ অবধি প্রকাশ হয়নি। যদিও বেশ কয়েকটি চিত্রে 888sport promo code মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণের দলিল রয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের প্রচারিত পোস্টারে অস্ত্র হাতে 888sport promo code-মুক্তিযোদ্ধার ছবি এবং ‘বাংলার মায়েরা মেয়েরা সকলেই মুক্তিযোদ্ধা’ সংবলিত বক্তব্য দেখি, যুদ্ধের অব্যবহিত পরে মুক্তিযোদ্ধার অবয়ব থেকে 888sport promo codeকে উৎখাত করে ‘ধর্ষিত’ বা ‘বীরাঙ্গনা’ অবয়বেই প্রতিষ্ঠিত হতে দেখি। এছাড়া আরেকটি ছবি দেখা যায়, প্ল্যাকার্ড হাতে 888sport promo codeদের একটি জমায়েতের। ওই প্ল্যাকার্ডের একটিতে লেখা – ‘মা-বোনেরা অস্ত্র ধরে/ 888sport apps মুক্ত কর’। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে 888sport appর রাস্তায় 888sport apps ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে ডামি রাইফেল হাতে 888sport promo codeকর্মীদের মহড়া ছবিটি ব্যাপকভাবে প্রচার পেয়েছিল।

যুদ্ধের চিরায়ত জেন্ডার কাভারেজে 888sport promo codeর ভূমিকা, তাঁর অসহায় আক্রান্ত অস্তিত্বের প্রতি সহানুভূতি তৈরিতেই সীমাবদ্ধ রাখে প্রচলিত গণমাধ্যম। live chat 888sport এদিক থেকে ব্যতিক্রম নয়। গণমাধ্যমের 888sport app শাখার মতো live chat 888sportও অনেক ক্ষেত্রেই জনগণের সম্মতি উৎপাদনের জন্য আলথুসার (Althusser, 1970)-কথিত রাষ্ট্রের মতাদর্শিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। যুদ্ধ-live chat 888sport এমন একটি জঁরার প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানে 888sport promo code খুব কমই প্রধান ভূমিকায় থাকে। পাশ্চাত্যের যুদ্ধের live chat 888sportে মূলত যেসব চরিত্রে তাদের দেখা যায় সেসব হয় – নার্স, মা, স্ত্রী, প্রেমিকা/ বান্ধবী, প্রতিরোধ যোদ্ধা, সৈনিক, কদাচিৎ অফিসার এবং অবশ্যই অসহায় শিকার। সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, নার্সের ভূমিকায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ওপর নির্মিত অনেক live chat 888sportেই সৈনিকরা যেসব দেশে যুদ্ধে যান, সেসব দেশের মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। The Pacific (2010)-এ আমেরিকান সৈন্যদের দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ান বান্ধবী জুটিয়ে নিতে কিংবা Captain Correli’s Mandoline (Madden, 2001)-এ ইতালিয়ান সৈন্যরা এসে প্রেম করেন স্পেনের মেয়েদের সঙ্গে। চিরায়ত জেন্ডার-ভূমিকার অনুকরণে 888sport promo codeর জন্য যুদ্ধ খুবই অনুপযোগী একটি বিষয়। তাই তাদের জায়গা যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, বরং বাড়িতে, শিশুদের দেখাশোনা করার জন্য। যুদ্ধের অসহায় শিকার, অথবা যোদ্ধার মা, স্ত্রী, প্রেমিকা/বাগদত্তাদের দেখা যায়। রাশিয়ার live chat 888sportেও The Ballad of a Soldier (Chukhary, 1959)-এ আমরা দেখতে পাই, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আসা চিঠি পড়তে। 888sport appsের live chat 888sport-নির্মাণের কথা বলতে গেলে আরেক বাস্তবতার ওপর দাঁড়াতে হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর প্রায় চার যুগ কেটে যাচ্ছে, এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে live chat 888sport নির্মিত হয়েছে, কিন্তু কোনো ছবিতেই 888sport promo codeকে বীর হিসেবে দেখা যায়নি। 888sport promo codeরা হলো অবলা এবং ঘরকন্যা ও বছর বছর বাচ্চা প্রদানের জন্য নির্ধারিত। মুক্তিযুদ্ধের ছবি ওরা এগারজন ও সংগ্রাম (১৯৭৪); সুভাষ দত্তের অরুণোদয়ের অগ্নি সাক্ষী; আনন্দ (১৯৭২)-পরিচালিত বাঘা বাঙালি এবং মুমতাজ আলীর (১৯৭২) রক্তাক্ত বাংলা এই পাঁচটি ছবির মধ্যে একমাত্র ওরা এগারজনকে বাদ দিলে বাকি চারটি live chat 888sportেই যুদ্ধকালীন ধর্ষণকে, 888sport app সময় নির্মিত live chat 888sportে ধর্ষণকে যে-কারণে ব্যবহার করা হয়, সেই একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে।

888sport promo code চরিত্রায়নের ব্যাপারে প্রাক-মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo codeর যে কল্যাণময়ী রূপটি প্রধান ছিল, মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই নির্মিত live chat 888sportগুলোতে 888sport promo codeর অবস্থানটি নির্মিত হয় যুদ্ধকালীন ধর্ষণ-বাস্তবতার সাপেক্ষে। একদল নবীন-প্রবীণ প্রযোজক ও পরিচালক সদ্যসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবসায়িক উন্নতির ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন। স্বাধীনতাযুদ্ধের পরপরই নির্মিত live chat 888sportে ধর্ষিত 888sport promo codeকে বাণিজ্যিক প্রয়োজনে উপস্থাপন করা হয়। এই প্রবণতা আজ অবধি রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীন 888sport apps সরকারের পক্ষে Liberation Fighters নির্মাণ থেকে শুরু করে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে            888sport promo code-নির্মাণের বিষয়ে কাবেরী গায়েনের ব্যাপক অনুসন্ধানী ও দার্শনিক মাত্রায় ঋদ্ধ এই গবেষণালব্ধ বইখানি ছাড়া এতকালে আর কোনো বই রচিত হয়নি। এ-বইটি নিয়ে আলোচনা করলে আরেকটি অভিসন্দর্ভ রচনা করা যাবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে 888sport promo codeকে এই দৃষ্টিতে দেখা অন্য কারো দ্বারা সম্ভব কিনা আমার জানা নেই। বইটির প্রতিটি পর্বে তত্ত্ব এবং তথ্যের যে-যূথবদ্ধতা  লক্ষ করা যায় তাতে মুক্তিযুদ্ধের live chat 888sportে 888sport promo code-নির্মাণ বইটি একটি সুখপাঠ্য মাইল ফলকগ্রন্থ। বইটির সফল প্রচার কামনা করি। r

স্বপ্নরঙিন সাধের ঠাসবুনোট

অর্ণব রায়

নেচে ওঠে আদমের সাপ

নাসরীন জাহান

 

বেঙ্গল পাবলিকেশন্স

জানুয়ারি ২০১৩

 

১৫০ টাকা

 

 

ঔপন্যাসিক, কথা888sport live footballিক নাসরীন জাহান ছোটগল্পকার হিসেবে পাঠকসমাজে অধিক পরিচিত। 888sport alternative link লেখার আগেই তাঁর পাঁচটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ছোট     আখ্যান-বর্ণনায় জীবনের ছবি অাঁকতে পারঙ্গম নাসরীন জাহানের গল্পের সঙ্গে চিরন্তন চলাটা তাঁকে ভিন্ন এক অনুভূতিতে আচ্ছন্ন করে রাখে। নেচে ওঠে আদমের সাপ নাসরীন জাহানের তেমনি একটি ছোট আখ্যানপঞ্জি। দশটি গল্প নিয়ে সাজানো এ-গ্রন্থ। জাদুবাস্তবতার মোড়কে দেহ-মনঃপীড়নের দহন অত্যাশ্চর্য ভাষার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত করতে সিদ্ধহস্ত নাসরীন জাহান।

গ্রন্থের প্রথম গল্প ‘গুম’ আত্মস্বার্থ চরিতার্থের ছবি। এ-গল্পের নায়ক ইব্রাহীম। গ্রামের এক দীর্ঘদেহী, সুঠাম, উজ্জ্বল, সুন্দর মুখের যুবক ইব্রাহীম – কুস্তিগির হিসেবেই যার পরিচয় গ্রামজুড়ে। কুস্তি তার রক্তে মিশে আছে। দশ গ্রামের কেউ তার সঙ্গে কুস্তিতে কুলিয়ে উঠতে পারে না। কোনো বাহ্যিক শক্তি তার কাছে তুচ্ছ। এভাবেই চলে যাচ্ছিল ইব্রাহীমের। সোনাদিয়া গ্রামে হাজার মানুষের হুজ্জতের মধ্যে জয়ী হতে লড়তে গিয়ে হঠাৎ করে একজোড়া চোখের ওপর ইব্রাহীমের চোখ আটকে যায়, অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে সে। ইব্রাহীমের সুঠাম দেহে দৌর্বল্য ভর করলে তার সুযোগ নেয় প্রতিপক্ষ।        সে-লড়াইয়ে যে পরাজিত হয়ে ফেরে ইব্রাহীম, তারপর থেকে কুস্তি তো বটে, কোনো কাজেই আর তার মন নিবিষ্ট করতে পারে না। ওই সুন্দরের সম্মোহনী জালে যেন নিজেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে  ফেলে। সেই রূপে আগে থেকেই যে সে-গ্রামের মোড়লের লোলুপদৃষ্টি ছিল, তা ইব্রাহীমের জানা ছিল না। শেষাবধি সে সুন্দরেই বলি হয় গ্রাম্য মোড়লের রীরংসার শিকার হয়ে। এ-গল্পে নাসরীন জাহান দুটি দিকের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। একটি – পুরুষের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা হচ্ছে 888sport promo code, অন্যটি – আর্থিক শক্তির কাছে দৈহিক শক্তি অত্যন্ত গৌণ। এ দুটিই সমাজে প্রভাব বিস্তার করে আছে।

গ্রন্থের দ্বিতীয় গল্প ‘একটি মৃত্যু – তার পরের অথবা আগের কথন’ একটি বিবাহ-উত্তর প্রেমের যোগ-বিয়োগের চমৎকার অথচ মর্মান্তিক কাহিনি। মূল চরিত্রের বিয়োগান্ত পরিসমাপ্তির মধ্য দিয়ে গল্পটি শেষ হয়। এ-গল্পে আগের কথনে দেখা যায়, একজন 888sport promo code, যে সন্তানের মা-ও, জানতে পারে তার স্বামী অন্য 888sport promo codeর প্রতি আসক্ত। এমনকি তার স্বামী আগের স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই মেয়ের বয়সী একটি মেয়েকে বিয়ে করে। গল্পের প্রধান চরিত্র সুরাইয়া অর্থাৎ ওই ব্যক্তির স্ত্রী সন্তানের ভবিষ্যৎ ভেবে মায়ের অনুরোধে পূর্বপরিচিত খালাতো ভাইয়ের পীড়াপীড়িতে তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু সুরাইয়ার মেয়ে জেসমিন এটা সহজে মেনে নিতে পারে না। কিশোরী জেসমিন বাবার উপস্থিতিতে আরেকজন পুরুষের সঙ্গে তার মায়ের মেলামেশা মেনে না নিতে পেরে ক্রমেই হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হতে থাকে। সুরাইয়া মেয়েকে বাবার চারিত্রিক স্খলনের বিষয়টি বারবার বোঝাতে গিয়েও ব্যর্থ হয়ে নিজেকে নিঃশেষ করে দেওয়ার পথ বেছে নেয়। গল্পের শেষটা ট্র্যাজেডিপূর্ণ। একদিন স্কুল থেকে বাবার সব কুকীর্তি জেনে নিজের মা ও তার সৎ পিতা আবদুল্লাহ সম্বন্ধে জেসমিনের ভুল ভাঙে। সে ছুটে আসে মায়ের কাছে; কিন্তু ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে যায়, বদ্ধঘরে  মাকে মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করে সে। সন্তানের ভালোর জন্য আত্মাহুতি দেয় সুরাইয়া। মা-সন্তানের সম্পর্ক আত্মার। সন্তানের ভালোর জন্য প্রত্যেক মা-ই তার সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে কখনো পিছপা হয় না। মাঝখানে যেটা থাকে, তা ক্ষণিকের।  ট্র্যাজিকধর্মী এ-লেখাটি পাঠকদের নিয়ে যাবে অন্য ভুবনে।

‘অরণ্যপ্রেমিকা যুগল’ একটি ভিন্নধর্মী গল্প। বর্তমান সমাজ ও বিভিন্ন দেশের সরকার এখন হোমো সেক্সকে স্বীকৃতি দিয়ে চলেছে। নাসরীন জাহানের ‘অরণ্যপ্রেমিকা যুগলে’ এর বর্ণনা আছে। গল্পটা শুরু হয়ে এভাবে –  জয়তী ও শারমিন – বিশ্ববিদ্যালয়েরর হোস্টেলে অধ্যয়নরত এ দুই 888sport promo code-চরিত্রের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। তারা একে-অন্যের সুখ-দুঃখ, কামনা-বাসনা সবকিছু ভাগাভাগি করে। একদিন হোস্টেলে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনার শারমিন মারা গেলে দুটো বছর আধপাগলের মধ্যে কাটে জয়তীর। এরপর আবির নামে বিদেশ-ফেরত এক ছেলের সঙ্গে সে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পরও শারমিনকে সে পুরোপুরি মন থেকে মুছে ফেলতে পারে না। বিয়ের পর আবিরের সঙ্গে ভিডিও দেখতে বসেও মনে পড়ে শারমিনের কথা। এমনকি আবিরের সঙ্গে হানিমুনে গিয়েও সে শারমিন888sport sign up bonusতে বুঁদ হয়ে পড়ে। ‘লেসবিয়ানদের কেন যে এত মজা পাও’ (পৃ ২৫) – আবিরের এ-কথার মধ্যেই শারমিনের প্রতি জয়তীর কামুক প্রবৃত্তির সন্ধান পাওয়া যায়। হানিমুনে একসময়  আবির জয়তীকে ঘাসের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত অবস্থায় আবিষ্কার করে। মানবমনের এক আশ্চর্য খেয়াল আর ভালোবাসার গল্পই ‘অরণ্যপ্রেমিকা যুগলে’ প্রস্ফুটিত করেছেন নাসরীন জাহান।

‘রক্ত খোয়ারের চক্করে’ গল্পে লেখিকা ধর্মকে ঊর্ধ্বে রেখে প্রেমের যুগল মিলনকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রয়াস পেয়েছেন। গল্পটি একটু ভিন্নধর্মী। আজকাল নাম দিয়ে জাতপাত চেনা দায়। দুটি মন যখন পরস্পর পরস্পরকে বোঝে। এ বোঝাপড়ার তখন জাতপাত মুখ্য হয়ে ওঠে না, বিশ্বাসই তখন দুটো মনকে প্রবোধ দেয়। মোহ ভাঙলে যখন দেখে তারা জাতিতে ভিন্ন, তখনই গল্পের নায়িকার ভুল ভাঙে। তার প্রেমিক সুদীপ সে ভিন্নধর্মী জেনেও তাকে বলেছিল – তুমি চলো আমার সঙ্গে। ধর্ম তখন বাধা ছিল নওরীনের কাছে। শক্তি ছিল না, ভিত ছিল না।

সুদীপ অন্য ধর্মের এটা জানতে পেরে ধর্মভীরু, সমাজভীরু নওরীন জীবনসঙ্গী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি সুদীপকে। অন্যদিকে বাস্তবতাকে সে উপেক্ষা করতে পারেনি। এক দুর্মর আকুলতায়, এক অপার্থিব রোমাঞ্চে সুদীপের প্রতি প্রেম সমর্পণের পরই মোহ ভঙঙ্গে তার। বিদেশে বসবাসরত স্বামী, সংসার, সামাজিকতার কথা নওরীন তাই সুদীপের প্রস্তাবের প্রত্যুত্তরে বলে, ‘যাও সুদীপ, যাও, তোমার এমন আকুল প্রেমমোহে আমাকে টেনো না।’ (পৃ ৩২)। এক রাতে সুদীপের ফোন আসে – পাসপোর্ট-ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় এদ্দিন হিমশিম খাচ্ছিল সে। তখন থেকেই সুদীপের প্রতি অভক্তি থেকে তার দিক থেকে চিরতরে ছিটকে যায় নওরীনের মন। প্রত্যাখ্যানে বিক্ষিপ্ত সুদীপ চিরতরে উড়াল দেয়। ততদিনে নওরীনের গর্ভে সুদীপের সন্তান। ভাগ্যিস, এর বিশ দিনের মাথায় স্বদেশে ফেরে তার স্বামী। চলে ধামাচাপা চিকিৎসক থেকে শুরু করে সবকিছুতে – শেষে নওরীন জন্ম দেয় জারজ সন্তান। সে-সন্তান যত বড় হতে থাকে, মায়ের কুদৃষ্টি আর অবজ্ঞা আস্তে আস্তে তার ওপর বাড়তে থাকে। এ-যন্ত্রণায় নওরীন আস্তে আস্তে নিজের জীবনটাকে অন্যদিকে ধাবিত করতে উদ্যত হয়। একসময় সন্তান যখন তার পাগলপ্রায়, তখন হুঁশ হয় তার। নিজেকে আর সন্তানকে সামলাতে সে তখন শুধুই তাকিয়ে থাকে তার স্বামীর প্রতীক্ষায়।

একজন মার সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে বড় পরিচয় সে তার           সন্তানের মা। এরপর সে একজন সন্তানের অভিভাবক, শিক্ষক, গাইড, বন্ধু, এমকি একজন পরামর্শকও। সন্তানের ভালো-মন্দ কোনো কিছু থেকেই যে-মা নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে না, সে-ই প্রকৃত মা। ‘প্রচ্ছন্ন প্রভাবের তোড়ে’তে একজন মা কীভাবে তার আবেগী ছেলেকে সবকিছুতে জাগিয়ে তোলে, তা-ই এর বিষয়বস্ত্ত। একাগ্র সাধনা আর প্রচ্ছন্ন প্রভাব একজনকে তার কল্পনাকে হার মানিয়ে অভাবিত চাওয়াকে কীভাবে পাওয়ায় পরিণত করা যায় নাসরীন জাহান তা-ই এ-গল্পে তুলে এনেছেন। একজন প্রকৃত মা যে কখনো অন্যের কাছ থেকে তার সন্তানের অবজ্ঞা সইতে পারে না, এবং ও সর্বস্ব ত্যাগে যে সন্তানের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারে, এ-গল্প তারই প্রতিচ্ছবি।

আমরা কোনো অন্যায় করে দীর্ঘদিনের জন্য পার পেয়ে যাই। কিন্তু সন্ধ্যায় অর্থাৎ জীবনের সন্ধিক্ষণেও যে এর মুখোশ উন্মোচিত হতে পারে তা মনে রাখা উচিত। কথায় আছে ‘পাপ বাপকেও ছাড়ে না’। ‘সান্ধ্যমুখোশ’ গল্পে সে-ছবিই এঁকেছেন নাসরীন জাহান। চাকরির সুবাদে এক বয়স্ক লোক মফস্বলের নির্জন এক কোয়ার্টারে ওঠে। দিন ভালোই কাটছিল তার। হঠাৎ নষ্টামির থাবায় ক্ষতবিক্ষত হয় সংসার থেকে দূরে থাকা মানুষটি। করে বসে ভুল। মেয়ের বয়সী এক অসহায় কিশোরীকে পাশবিক নির্যাতন শেষে নিজ ঘরের পেছনে পুঁতে রাখে তাকে। অথচ সহজ-সরল মেয়েটি ডাস্টবিন থেকে কুড়োনো একটা মুখোশ নিয়ে কী সরল বিশ্বাসেই না মায়ের কথায় এক সন্ধ্যায় কাজের উদ্দেশ্য তার ঘরে উপস্থিত হয়েছিল। সময়ের খাতায় চাপা পড়ে যায় ঘটনাটি। নিয়তি বড় নিষ্ঠুর। ঠিকই পাপের ফল হাতে হাতে ধরিয়ে দেয় সে। একসময় ওই ব্যক্তির মেয়ে কঠিন অসুখে আক্রান্ত হয়। কোনো কিছুতেই যখন তার সুস্থতার কোনো লক্ষণ নেই, তখন ওই ব্যক্তির মনে পড়ে যায় তার কৃতকর্ম। অনুশোচনায় দ্বগ্ধ হতে থাকে সে। একদিন হঠাৎ বৃষ্টিতে অসুস্থ মেয়েটি গোলাপ গাছের নিচে মুখোশটি দেখতে পেয়ে সেটি কুড়িয়ে এনে পরে বাবার সামনে এসে দাঁড়ায়, যেমনভাবে সেটি পরেছিল মৃত মেয়েটি। তখন সে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। মনঃপীড়নের জ্বালায় একসময় সে তার বন্ধু পুলিশ ইনস্পেক্টরকে সব বলে দেয়। জাদুবাস্তবতার নিয়মে অতীতকে ফিরিয়ে আনার এক অতুলনীয় দক্ষতা এখানে পরিলক্ষিত হয়।

এ-গ্রন্থের আরো কয়েকটি গল্প হলো – ‘নিমতলী থেকে চিঠির উড়াল’, সোনা মিয়া’, ‘কী ভেবেছিলো? না ভেবেছিলো…’। গ্রন্থের বেশিরভাগ গল্পই আবর্তিত হয়েছে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে, যা স্বাভাবিক নয়, অস্বাভাবিক নিকৃষ্ট অপমৃত্যু হিংস্র সাপের মতো নেচে ওঠে গল্পগুলোর একেকটি চরিত্রকে দংশন করে অাঁধারে ঠেলে দেয়। লেখিকা গল্পগুলোর পরিণতি এভাবে টানলেও হতাশ হননি কোথাও, বরং এভাবেই যেন এ-গ্রন্থের গল্পগুলো সার্থক পরিণতি পেয়েছে।  r

বিশ্ব888sport live footballের বিশ্লেষণ

তুষার তালুকদার

অলস দিনের হাওয়া

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

 

শুদ্ধস্বর

888sport app, ২০১৩

 

৪৭৫ টাকা

 

 

 

এ-বছরের গোড়ার দিকের কথা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছিন্নপত্র পড়ছিলাম। মূলত রবীন্দ্রনাথ তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবীর কাছে ছিন্নপত্রের চিঠিগুলো লিখেছিলেন। কিন্তু খটকা লাগল এই ভেবে, জীবনবোধের যে-বর্ণনা আমরা এসব চিঠিতে পাই তা কি তিনি নিছক ইন্দিরা দেবীর সঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলেন, নাকি এটি জীবনের ভেতর দিয়ে মহাজীবনকে অনুভব করার একটি প্রক্রিয়া! আর এসব চিন্তারই সদুত্তর মিলল যখন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম-রচিত অলস দিনের হাওয়া 888sport live সংকলনের ‘অন্তরের সঙ্গে বাহিরের কথাবার্তা’ নিবন্ধটি পড়লাম। প্রাবন্ধিক ছিন্নপত্রের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন            এ-রচনায়। ছিন্নপত্রে আধ্যাত্মিকতা, বিশ্বচিন্তা, প্রকৃতি, সসীমের মাঝে অসীমের সন্ধান, বিশ্বচরাচরের বিশালতার সঙ্গে পদ্মাপাড়ের মানুষের যোগাযোগ প্রভৃতি নানা বিষয়ের এক হৃদয়গ্রাহী বর্ণনা দিয়েছেন সৈয়দ মনজুরম্নল ইসলাম তাঁর 888sport liveে। তিনি আমাদের আরো জানিয়েছেন, ছিন্নপত্রজুড়ে রবীন্দ্রনাথের macro-vision-এর কথা। তবে         যে-কথাটি লেখক নিবন্ধের একেবারে শেষে ব্যক্ত করেছেন তা-ই আসল : ‘এ চিঠিগুলো রবীন্দ্রনাথের ‘নিজের সঙ্গে নিজের কথোপকথন’।’

একটু ভিন্নভাবে আলোচনার সূত্রপাত হলেও বলে রাখা ভালো, অলস দিনের হাওয়া 888sport liveসমগ্রটি আমাদের জানান দেয় বিশ্ব888sport live footballের একজন উঁচুমাপের পাঠক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। আর তাবৎ দুনিয়ার নানা 888sport live footballিককে নিয়ে তাঁর স্বীয় চিন্তার প্রতিফলন পাঠকদের বলে দেয়, তিনি বোদ্ধা বিশ্লেষক। গ্রন্থটি শুরু ‘জন্মদিনের পত্রাবলি’ নিবন্ধ দিয়ে। কবি সিলভিয়া প্লাথ ও টেড হিউজের জীবনের নানা দ্বান্দ্বিকতা রচনাটির পটভূমি। টেড হিউজ এ-কাব্যগ্রন্থে প্লাথকে নিয়ে তাঁর দাম্পত্য জীবনের বেদনাবিধুর 888sport sign up bonusচারণা করেছেন। স্ত্রীর প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু সৈয়দ ইসলাম বিশ্লেষণের এক পর্যায়ে বলেছেন, হিউজের 888sport app download apkগুলো পাঠকদের সবসময় একটি দোলাচালের মধ্যে রাখে এবং কখনোই এগুলো উত্তর দিতে চায় না কেন প্লাথ-হিউজ দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়েছিল কিংবা কী রহস্য লুকায়িত প্লাথের আত্মহত্যার আড়ালে! অন্ধকারে যে-সত্য নিমজ্জিত তা কি কখনোই উন্মোচিত হবে না – এমন একটি দীর্ঘশ্বাস 888sport live শেষে প্রাবন্ধিকের মধ্যেও সুস্পষ্ট। সত্যি বলতে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, একজন লেখক বা তাঁর 888sport live footballকর্মের মৌলিক দিকটি আবিষ্কার করতে চেয়েছেন। করেছেনও নিষ্ঠার সঙ্গে। এ-সংকলনের প্রায় প্রতিটি 888sport liveে তার ছাপ মূর্ত। যেমন – ‘বার্গাস ইয়োসার নায়কেরা’ নামক নিবন্ধে আমরা দেখি যে, ইয়োসার লেখাতেও গার্সিয়া মার্কেজের মতো জাদুবাস্তবতা আছে – এমন একটি ঢালাও মন্তব্যকে অনেকটা মানতে নারাজ প্রাবন্ধিক। অথচ আমিও জানতাম তেমনটি। কিন্তু সৈয়দ ইসলাম জানান, মার্কেজ যেমন অনেকক্ষেত্রে আপাদমস্তক জাদুবাস্তবতার খেলা খেলেছেন, ইয়োসা তেমনটি নন। তিনি বরং তাঁর সময়ের একজন কথক যাঁর অন্যতম পুঁজি ইতিহাস ও পরিবেশ-প্রকৃতি। বার্গাস সর্বদা তাঁর সৃষ্ট নায়কদের মাঝে প্রাণ-প্রাচুর্য খুঁজেছেন। ‘বার্গাস ইয়োসার নায়কেরা’ পড়তে গিয়ে পাঠক এও জানতে পারবেন, ব্যক্তি ইয়োসাকে মনজুরুল ইসলাম পছন্দ না করলেও ইয়োসার লেখা প্রথম 888sport alternative link দ্য টাইম অফ দ্য হিরো তাঁর খুব প্রিয়। কারণ এতে একটি বিদ্রোহ আছে, আর এই বিদ্রোহের নায়ক বার্গাস নিজেও। তবে এক পর্যায়ে তিনি পেরুর স্বৈরশাসক বেলাউন্দ তেরিকে সমর্থনপূর্বক গণমানুষের বিপক্ষে অবস্থান নেন। 888sport alternative linkটিতে লিমা শহরের এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন বার্গাস। ইন্টেরিয়র মনোলগের মাধ্যমে চরিত্রদের করেছেন ইতিহাস-আশ্রিত। তাছাড়া প্রাবন্ধিক আমাদের মধ্যে চিন্তার খোরাক জন্মান এই বলে, এই গল্প-বর্ণনা অনেকটা দান্তের ইনফার্নোর সেই শ্বাসরুদ্ধকর বর্ণনারই পুনরাবৃত্তি। 888sport liveটি আমাদের আরো বলে, সব চরিত্রের একটি অভিন্ন অতীত তৈরির চেষ্টা করেন ইয়োসা। সমাজের গহিনে যে পচন ধরেছে তা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন তিনি। আবার শেষতক এই পচন রোধ-উত্তর একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের ইঙ্গিতও দেন।

আলোচনার এ-পর্বে আমরা দেখব কীভাবে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম উত্তরাধুনিক 888sport alternative linkে বর্ণনাকারীর ঐতিহ্য নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সে-বিষয়টি। এ-ব্যাখ্যা প্রদান তাঁর পক্ষে সমকালীন 888sport appsের অপরাপর 888sport live footballিকদের তুলনায় সফলভাবে করা সম্ভব বলে আমার ধারণা, কারণ তিনি নিজে একজন উত্তরাধুনিক গল্পকথক। নিবন্ধটির নাম ‘উত্তর আধুনিক 888sport alternative link ও বর্ণনাকারীর ঐতিহ্য’।             এ-লেখায় আমরা প্রচলিত 888sport alternative link বা বাস্তববাদী চেতন-প্রবাহ ও উত্তরাধুনিক 888sport alternative linkে বর্ণনাকারীর ভূমিকা নিয়ে একটি মৌলিক তফাৎ জানতে পারি। বাস্তববাদী 888sport alternative linkে সর্বজ্ঞ বর্ণনাকারী মানবমনের নানা গোপন রহস্যও আবিষ্কার করেন বটে; কিন্তু চেপে যান চরিত্রের ভেতরে খেলা করতে থাকা সময়ের বহুবিধ মাত্রা। অর্থাৎ মনের কেবল চেতন অবস্থাটি বর্ণনা করেন, অবচেতনকে পাশ কাটিয়ে। অথচ লাকা ও ফ্রয়েড বলেছেন, মানবমনের একটি বৃহৎ অংশ জুড়ে রয়েছে অবচেতন পর্যায়টি। আর এ-বিরোধ থেকে 888sport alternative linkকে মুক্তি দেন জেমস জয়েস, ভার্জিনিয়া উলফ এবং ডরোথি রিকার্ডসন। তাঁরা দেখিয়েছেন, মন চলমান নদীর মতো। মনস্তাত্ত্বিক সময় মনের নিয়ন্ত্রক, ঘড়ির সময় নয়। সময়কে এই স্বাধীনতা প্রদানের মধ্য দিয়ে তাঁরা সর্বজ্ঞ বর্ণনাকারীর শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি দিলেন চরিত্রকে। তাঁরা আরো যোগ করলেন, মনস্তাত্ত্বিক সময় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মন নিজেই জানে না তার ভেতর পরমুহূর্তে কি অনুভূতি জন্ম নেবে। এ-ধরনের চরিত্র যেসব 888sport alternative linkে থাকে, সেসব চেতনাপ্রবাহ 888sport alternative link। 888sport appsে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ও রশীদ করিম এ-ধরনের আখ্যান নির্মাণের অগ্রপথিক। যেখানে চেতন-প্রবাহ 888sport alternative linkে মূল আখ্যানের একটি অংশ বা বিকল্প আখ্যান হচ্ছে প্রতি-আখ্যান, সেখানে উত্তর-উপনিবেশী 888sport alternative linkে প্রতি আখ্যানকে বলা যেতে পারে কেন্দ্রীয় আখ্যানের পরিপূরক। প্রাবন্ধিক এক্ষেত্রে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লেখা সুলতানার স্বপ্ন 888sport alternative linkটিকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তবে বর্ণনাকারীর বৈপ্লবিক রূপান্তর প্রতীয়মান উত্তরাধুনিক 888sport alternative linkে, মেটাফিকশনে। উত্তরাধুনিক 888sport alternative link নিয়ে মনজুরুল ইসলামের ব্যাখ্যেয় অংশটুকু সংক্ষেপে বলতে গেলে দাঁড়ায়, যে-কোনো ভঙ্গি বা pose গ্রহণকেই এ-ধরনের 888sport alternative link সন্দেহ করে, seriousness-কে বিদ্রূপ করে playfulness-কে প্রাধান্য দেয়। যে-কোনো গৃহীত ভঙ্গিকেই অস্বীকার করে এ-জাতীয় আখ্যান। উত্তরাধুনিক 888sport alternative link বর্ণনাকারীকে গ্রহণ করলেও তার একটি প্রিয় পদ্ধতিকে এর সঙ্গে জুড়ে দেয়, যা অন্তর্ঘাত বা subversion নামে পরিচিত। তাছাড়া এ-ধরনের 888sport alternative link এমন একটি ধারণার জন্ম দেয় যে, সবকিছুই আপেক্ষিক, কোনো কিছুই সূত্রবদ্ধ নয়। এসব 888sport alternative linkে সর্বজ্ঞ বর্ণনাকারী থাকলেও তা নানা চরিত্রে ব্যাপ্ত থাকে। অর্থাৎ কেন্দ্রিকতাকে কোনোভাবেই মূল্য দেয় না উত্তরাধুনিক 888sport alternative link, বরং কৌতুকবোধকে জরুরি মনে করে। আবারো পুনরাবৃত্তি করছি, উত্তরাধুনিকতার এ-বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনায় সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের এই পারদর্শিতার একটা অন্যতম কারণ তিনি নিজেও একজন উত্তরাধুনিক 888sport alternative link নির্মাতা। তাই তাঁর উপলব্ধির জায়গাটাও অন্যদের চেয়ে ভিন্ন। পাঠক, ভাবছেন বাড়িয়ে বলছি। মোটেই না। নিবন্ধটি আগাগোড়া পড়লেই বুঝতে পারবেন।

এবার আসুন পড়ি, মিলান কুন্ডেরাকে নিয়ে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের কথা। কুন্ডেরার ওপর দুটো 888sport live লিখেছেন তিনি। উল্লেখ করতে চাই ‘মিলান কুন্ডেরার স্লোনেস’ নিবন্ধটির কথা। স্লোনেস 888sport alternative link লিখতে গিয়ে অতি পরিমাণে দর্শনচিন্তায় মগ্ন হয়ে পড়েন কুন্ডেরা। প্রাবন্ধিকের মন্তব্য, এ-888sport alternative linkে কুন্ডেরা দার্শনিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। এবং তিনি কি 888sport alternative linkই লিখবেন, নাকি ধীরতা নিয়ে কোনো অভিসন্দর্ভ লিখবেন – এ-ব্যাপারটি হয়তো গুলিয়ে ফেলেছেন। এককথায় এ-888sport alternative linkটি সৈয়দ ইসলামের কাছে খুবই নিষ্প্রাণ মনে হয়েছে। বইটি পড়ে তাঁর আরো মনে হয়েছে, একজন লেখক চরিত্র ও ঘটনার সন্ধানে নেমেছেন। হয়তো খুঁজে পাননি, তাই 888sport alternative linkটি প্রাণহীন। এতকিছুর পর তিনি এও বলেছেন, কুন্ডেরা তো কুন্ডেরাই। তাছাড়া নোবেলের একটা ভূগোল বিবেচনা আছে বলে মনে করেন তিনি, তা না হলে কি আর কুন্ডেরার মতো লেখককে তারা এড়িয়ে যান। বইটি অতিশয় দর্শননির্ভর হলেও এর ভাষা মেদহীন, ঝকঝকে। তবে কোনো কোনো বোধ বা অনুভূতি ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ভাষার গভীরতা সাধারণ পাঠককে বিপাকে ফেলে। 888sport liveটি শেষ হয়েছে কুন্ডেরার উত্তরাধুনিক দিকটির একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যার মাধ্যমে। কুন্ডেরা কেন্দ্রবিমুখতাকে তাঁর 888sport alternative linkে প্রাধান্য দিয়েছেন। লেখকের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে নিজেই নিজেকে ঠাট্টা করেছেন। অর্থাৎ উত্তরাধুনিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন। আবার বোর্হেসের লেখা নিয়ে তৈরি নানা অস্পষ্টতার জট খুলতে চেষ্টা করেছেন প্রাবন্ধিক তাঁর ‘বোর্হেসের আধুনিকতা’ 888sport liveে। বোর্হেস সাধারণ অর্থে অনাধুনিক হলেও তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্ভাবন ক্ষমতা ছিল আধুনিক। তাঁর লেখায় বিভিন উপাদান কখনো একসঙ্গে মিশে যেত না। কল্পনাকে কখনো সত্য বলে মনে হতো না; আবার ইতিহাস ইতিহাস হয়েই থাকতো, তা কখনো ফিকশনে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করতো না। আবার তাঁর উত্তরাধুনিক দিকটা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন দি আলেফ গ্রন্থে বাস্তব-অবাস্তব কিংবা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। বোর্হেসের ভাষা নির্মাণে একটা নিজস্বতা আছে, যা অপরাপর উত্তরাধুনিকতাবাদীদের চেয়ে আলাদা। যদিও এমন বলা হয়েছে, মৃত্যুর দশ বছর পর বোর্হেসকে সবাই ভুলে যাবে কিন্তু সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ভাষ্য – ‘তা বোধ হয় সম্ভব না।’

অলস দিনের হাওয়ার সব 888sport liveই প্রাণপ্রাচুর্যপূর্ণ। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম অত্যন্ত অন্তরঙ্গ ভঙ্গিতে, গল্পচ্ছলে জানিয়ে গেছেন একের পর এক তথ্য। শুধু তাই নয়, তাঁর লেখা প্রায় প্রতিটি 888sport liveই পাঠকমনে চিন্তার খোরাক দেবে। আর 888sport live football বা 888sport live footballিককে ঘিরে তাঁর স্বীয় ভাবনা একেবারেই মৌলিক, আলাদা। যেমন – ‘অবাক তীর্থযাত্রীরা’ 888sport liveের শুরুর অংশটিতে কি অসাধারণভাবে গার্সিয়া মার্কেজ ও আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে নিয়ে একটি গল্প আবহ তৈরি করেছেন, যা পাঠকে কখনো একঘেয়ে করে তোলে না।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখায় wit বা বাংলায় যাকে আমরা বলি মাথা দিয়ে হাসা – এ-ব্যাপারটি সবসময় থাকে। সমকালে আমরা ধার করা ভাষা পড়ে খুব বেশি অভ্যস্ত। এদিক বিবেচনায় তিনি একান্তই তাঁর নিজের একটি ভাষাশৈলী নির্মাণ করেছেন, যেমনটি করেছিলেন অম্লান দত্ত। মেদহীন, ঝকঝকে। সর্বোপরি তিনি তাঁর  চিন্তার ভিন্নতা ও ভাষা-স্বকীয়তার জন্য বহুকাল পরেও জরুরি হয়ে থাকবেন।