888sport free bet login

আত্মকথায় সমষ্টিকথন

পিয়াস মজিদ

বিপুলা পৃথিবী

আনিসুজ্জামান

 

প্রথমা

888sport app, ২০১৫

 

৮০০ টাকা

 

 

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের (জন্ম ১৯৩৭) আত্মকথার প্রথম পর্ব কাল নিরবধি পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয় ২০০৩-এ। তারও আগে ১৯৯৭ সালে তাঁর মুক্তিযুদ্ধ-888sport sign up bonusকথন আমার একাত্তর প্রকাশ পায়। বিচিত্র-বর্ণাঢ্য জীবনকথার দুটো পর্বই পাঠক চিত্তজয়ী। তাই কাল নিরবধি প্রকাশের এক দশকেরও বেশি সময় পরে সদ্যপ্রকাশিত বিপুলা পৃথিবীর গ্রন্থরূপ আমাদের 888sport live footballপরিসরে একটি আগ্রহোদ্দীপক বিষয় বইকি। শেষাংশ ছাড়া আলোচ্য গ্রন্থের সিংহাংশ ২৩ এপ্রিল ২০০৪ থেকে ৭ নভেম্বর ২০০৮ পর্যন্ত একটি দৈনিক পত্রিকার 888sport live football সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। ১৯৭২-২০০০; অনধিক ত্রিশ বছরের অনুপম আত্মলেখ বিপুলা পৃথিবী। গ্রন্থ-প্রারম্ভে লেখকের ‘নিবেদন’ অংশ থেকে এই রচনা ধারাবাহিকভাবে পত্রিকায় প্রকাশমুহূর্তের এমন ‘পূর্বাভাষ’ উদ্ধার করা যায় –

কেউ কেউ অবশ্য সাবধান করে দিয়েছেন এই বলে যে, যত কাছাকাছি সময়ের কথা বলতে যাবো, তা নিয়ে তর্ক তত প্রবল হবে। এই সাবধানবাণীর সত্যতা আমিও মানি। বিতর্ক এড়াবার একমাত্র উপায় কিছু না-লেখা। না-লিখতে মনটা সায় দিলো না। নিজের সম্পর্কে জানানোটা জরুরি নয়, কিন্তু যা দেখেছি যা শুনেছি, তার অনেকখানি গুরুত্বপূর্ণ।

পাঁচ শতাধিক পৃষ্ঠার অনন্য এই আত্মকথাটির পাঠ-পাঠান্তরে উপলব্ধি হয় আনিসুজ্জামানের ‘দেখা এবং শুনা’র 888sport sign up bonusভাষ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

 

দুই

‘নতুন যুগের ভোরে’, ‘অস্তাচলের পানে’, ‘হননের কাল’, ‘কাছে-দূরে’, ‘হালখাতা’ – এই পাঁচ শিরোনামে বিপুলা পৃথিবী সাবয়ব। ২৬ এপ্রিল ১৯৭১; মুক্তিযুদ্ধোজ্জ্বল জীবনপর্ব দিয়ে বইয়ের সূত্রপাত আর শেষ হয়েছে নতুন সহস্রাব্দে নোঙর করা এমন অশেষ-অফুরান জীবনাভিজ্ঞানে –

কথা ফুরোয় না, সময় ফুরিয়ে যায়। লেখায় ছেদ টানা যায়, জীবন কিন্তু প্রবহমান। জীবন ক্রমাগত সামনের দিকেই চলে। আমাদের পথচলা এক সময় থেমে যায়, জীবন থামে না। (পৃ ৫১৮)

যে-জীবন এই মহাকায় গ্রন্থ ধারণ করে আছে তা মোটেও ব্যক্তি এককের নয়, বহুর। ব্যক্তির জীবন-সমান্তরালে সময়-সমাজ-রাষ্ট্র ও বিশ্বপরিপার্শ্বের সমষ্টিগত জীবনকথনও বিপুলা পৃথিবী। আমরা দেখি আটাশ বছর ব্যাপ্তিবলয়ে এই গ্রন্থ এমনসব গুরুত্ববহ অধ্যায় ছুঁয়ে গেছে যা মোটা দাগে 888sport appsের জাতীয় জীবনে যেমন উল্লেখের দাবি রাখে, তেমনি কোনো না কোনোভাবে ব্যক্তি আনিসুজ্জামানও সেসব অধ্যায়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট। যেমন : স্বাধীন 888sport appsের সংবিধান প্রণয়ন, প্রথম শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ, ১৯৭৪-এ বাংলা একাডেমিতে প্রথম জাতীয় 888sport live football সম্মেলন, বঙ্গবন্ধু সরকার থেকে তাজউদ্দীন আহমদের দূরত্ব, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড, ৩ নভেম্বরে জেল হত্যাকান্ড, ৭ নভেম্বরের ঘটনাপ্রবাহ, জিয়া ও এরশাদের ক্ষমতাপর্ব এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন,           ১৯৮১-তে বাংলা একাডেমি কর্তৃক বাংলা 888sport live footballের ইতিহাস রচনার উদ্যোগ, 888sport appsের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র সংকলন ও সম্পাদনা, ১৯৮৭-র ৩১ মার্চ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়ে ৩১ নাগরিকের বিবৃতি, একাত্তরের                  ঘাতক-দালাল নির্মূল আন্দোলন ও গণআদালত গঠন এবং এই আদালত সংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজনদের বিরুদ্ধে সরকারের মামলা, পার্বত্য শান্তিচুক্তি, নজরুল জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন ও নজরুল রচনাবলি, বেতার-টেলিভিশনের স্বায়ত্তশাসন উদ্যোগ, ২০০০ সালে শাহজালাল 888sport apk ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাহানারা ইমামের নামে ছাত্রীহলের নামকরণ বিষয়ে হুমায়ূন আহমেদের অনশন আন্দোলন ইত্যাদি।

 

তিন

দেশের একজন বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে সদ্যস্বাধীন নবীন রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেমন ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন আনিসুজ্জামান, তেমনি ‘বিশিষ্টতা’ভেদী এক সচেতন নাগরিকের দৃষ্টি-আভায় নতুন তাৎপর্যে উন্মোচিত হয়েছে উপর্যুক্ত ঘটনাপরম্পরা। এভাবে নিজেকে গৌণে রেখে আত্মযুক্ত সামাজিক-রাজনৈতিক পর্বের অন্তরঙ্গ ব্যাখ্যানের একটি উদাহরণ হয়ে রইল আনিসুজ্জামানের বিপুলা পৃথিবী। সেইসঙ্গে ব্যক্তি লেখকের গবেষণাকর্ম-888sport live footballচর্চার বিবরণ এখানে শুধু ব্যক্তিগত কৃতির পরিধিভুক্ত থাকেনি, বরং যথাযথ ব্যাখ্যায় বাংলা 888sport live footballের বৃহৎ পরিপ্রেক্ষিতও এর সঙ্গে আলোচিত হয়েছে। লেখকের পুরোনো বাংলা গদ্য, আঠারো শতকের বাংলা চিঠি, স্বরূপের সন্ধানে, মুনীর চৌধুরী, Factory Correspondence and the Bengal Documents in the India office Library and Records ইত্যাদি বই প্রকাশ প্রসঙ্গে বাংলা ভাষা ও 888sport live footballের যে উদ্ভাবনমূলক তথ্য ও বিশ্লেষণ আমরা পাই তা ব্যক্তিক সৃজনকর্মকে সামষ্টিক তাৎপর্যে করে তোলে সুভাস্বর। বাংলা গদ্য-সম্পর্কিত স্বীয় গবেষণাকর্মে ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে কাজ করার চিত্রটি এমনই রোমাঞ্চকর যে, এখান থেকেই বাংলা গদ্যের উৎপত্তি সম্পর্কে নতুন ধারণা তৈরি হয় –

…888sport app কুঠির বেশির ভাগ কাগজপত্র ছিল সেখানকার কমার্শিয়াল রেসিডেন্ট জজ টেলরের আমলের।              যে-কোনো কারণেই হোক, তিনি এসব নিয়ে দেশে ফিরে আসছিলেন। পথে জাহাজে তাঁর মৃত্যু হলে এসব কাগজ ইন্ডিয়া অফিসে চলে আসে। ২৪ পরগনার রাজস্বসংক্রান্ত কাগজপত্র কলকাতার বোর্ড অফ রেভিনিউ থেকে হেইলিবারি কলেজে পাঠানো হয়েছিল – সম্ভবত সেখানকার ছাত্রদের ব্যবহারের জন্য। জঙ্গীপুর কুঠির কাগজও বোধহয় কোনো বিশেষ কারণে লন্ডনে পাঠানো হয়েছিল। বোগল ও হজসন নিজেদের সংগ্রহ দিয়ে গিয়েছিলেন ইন্ডিয়া অফিসে – এগুলো ইউরোপীয় পান্ডুলিপির অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইউরোপীয় পান্ডুলিপির সহকারী কিপার আর জে বিঙ্গল এগুলোর প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এবারে দেখতে পেলাম কিছু কাগজপত্রের সঙ্গে ইংরেজিভাষায় পেনসিলে লেখা কিছু টোকা রয়েছে। খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল যে, বেঙ্গলি লিটারেচর (অক্সফোর্ড, ১৯৪৮) গ্রন্থের লেখক এবং টমাস অটওয়ের ওয়র্কসের (অক্সফোর্ড, ১৯৩২) সম্পাদক ড. জে সি [জ্যোতিষচন্দ্র] ঘোষকে কোনো এক সময়ে এইসব কাগজ তালিকাভুক্ত করতে দেওয়া হয়েছিল। ড. ঘোষ অত্যন্ত পন্ডিত ব্যক্তি – তবে পুরোনো বাংলা লেখা বোধহয় খুব ভালো পড়তে পারতেন না। কিছুদিন কাজ করে তিনি আর অগ্রসর হননি। (পৃ ২৩১)

 

চার

উপরিতল থেকে অবলোকন নয়, পরিস্থিতির ভেতরে থেকে নিরাসক্ত নৈর্ব্যক্তিকতায় পরিস্থিতির বর্ণনা প্রদান এই আত্মকথার এক অনন্য বিশিষ্টতা। জাতীয় সংবিধানের বাংলা ভাষ্য প্রণয়নে উদ্ভূত বিতর্ক বা শিক্ষানীতির ক্ষেত্রে মতবহুত্বের কথা এক্ষেত্রে উল্লেখ্য। সংবিধান প্রণয়নের কথা বলতে গিয়ে এর মর্মগত বিষয়ে যেমন লেখক আলো ফেলেন, তেমনি তাঁর দৃষ্টি প্রাসঙ্গিক অন্য অনেক দিকেও প্রসারিত। ফলে সংবিধানের কপি যে            প্রান্তিক চর্ম888sport live chatী চামড়ার বাঁধাইয়ে আচ্ছাদিত করেছিলেন সেই শাহ্ সৈয়দ আবু শফির কথাও বলতে ভোলেননি তিনি। স্বাধীন স্বদেশে একটি প্রগতিশীল শিক্ষানীতি চালু করার ক্ষেত্রে কোনো কোনো ‘প্রগতিশীল’ ব্যক্তিত্বের প্রতিক্রিয়াপন্থী ভূমিকার উল্লেখের মধ্য দিয়ে আনিসুজ্জামান প্রমাণ করেছেন তাঁর দায় সত্যের প্রতি।

আশা ও ভগ্ন আশার যুগল সম্মিলনে নিজের সঙ্গে সঙ্গে নবীন 888sport apps রাষ্ট্রের সম্মুখযাত্রার ইতিহাসের কোনো অধ্যায়ই অপ্রীতিপ্রদ বলে বাদ দিয়ে যাননি লেখক। ফলে সংবিধানের নানান প্রত্যয়ের কথা বলতে গিয়ে পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে অনুধাবনের ব্যর্থতার কথাও বলেছেন খোলামেলা –

পাহাড়িদের নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য যে সেদিন আমরা উপলব্ধি করতে সমর্থ হইনি, এ ছিল নিজেদের বড়োরকম এক ব্যর্থতা। 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ থেকে প্রেরণা পেয়েও যে পাহাড়ি জাতীয়তাবোধের বা চাকমা জাতীয়তাবোধের সূচনা হতে পারে, এ-কথা একবারও আমাদের মনে হয়নি। (পৃ ৫৯)

পরবর্তী এক অধ্যায়ে কবি নজরুলের মৃত্যু ও 888sport appয় সমাধি সংক্রান্ত বিষয়েও আমরা লেখকের সপ্রশ্ন আত্মবিচারের উদাহরণ লক্ষ করি।

এই আত্মকথার আরেক বিশেষত্ব গুরুভার বিষয়ের পরিবেশনায় বুদ্ধিদীপ্ত রসের ভিয়েন। জীবনপথের অবসন্নতাকেও যেন তিনি উপভোগ্য করে তোলেন অনায়াস প্রসন্নতায়। ১৯৭৪-এ জাতীয় 888sport live football সম্মেলনের অনুষঙ্গে তিনি বলেন –

888sport apps স্বাধীন হওয়ার অব্যবহিত পরে আমাদের এক সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি বিদেশে গিয়ে সবাইকে বোঝাবার চেষ্টা করছিলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীরা কীভাবে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। তখন শ্রোতাদের একজন উঠে বললেন, আপনাদের দেশ যে একেবারে বুদ্ধিজীবীশূন্য হয়ে গেছে, আপনার কথা শুনে সে-সম্পর্কে আমাদের সম্পূর্ণ প্রত্যয় জন্মেছে। আমি বলেছিলাম, সেই শূন্যতার সুযোগে সভাপতির আসনটি আমার দখলে এসেছে। মনোজ বসু আমার কথা খুব উপভোগ করেছিলেন।  (পৃ ৯৬)

কিংবা ভারতীয় অতিথি বাণী রায় খাবার টেবিলে লেখকের স্ত্রীকে খাবারের ‘ডালে’র কথা জিজ্ঞেস করলে জানালা দিয়ে টেবিলে ঝুঁকে পড়া মাধবীলতা গাছের ‘ডালে’র কথা চলে এলেযে-পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তার অসাধারণ সরস বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে –

খেতে খেতে বাণী রায় জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এটা কিসের ডাল?’ বেবী চটপট উত্তর দিলো, ‘মাধবীলতার ডাল।’ আমাদের খাবারের টেবিলের পাশে জানলা, সে-জানলার ওপারে মাধবীলতার গাছ। তার একটা ডাল বেঁকে ওই জানলা ঘেঁষে আছে। বাণী রায় জানতে চেয়েছিলেন,  যে-ডাল তাঁকে খেতে দেওয়া হয়েছে, সেটা কী। আর বেবী ধরে নিয়েছিল, জানালার ধারে উঁকি দিচ্ছে যে-ডাল, তিনি তার পরিচয় জানতে চাইছেন। বেবীর জবাব শুনে বাণী রায় অস্ফুটস্বরে বলতে লাগলেন, ‘জীবনে কত ডাল খেলুম, কখনো মাধবীলতার ডাল তো শুনিনি।’ (পৃ ৯৮-৯৯)

এছাড়া বহু পরের এক অধ্যায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের ক্ষেত্রে ১৯ ও ২০ আগস্ট সংক্রান্ত দুর্ঘটের বিশদ বয়ান শেষে লেখক যখন বলেন, ‘ব্যাপারটা আগে জানলে উনিশের বদলে বিশে যোগ দিতাম। উনিশ-বিশে পার্থক্য যে সামান্য নয়, সে জ্ঞান হলো’, তখন তা কৌতুকের পর্যায় ছাপিয়ে আরো সূক্ষ্ম সংকেত রেখে যায়।

ইতিহাসের অনেক নায়কই কখনো লেখকের ব্যক্তিগত সম্পর্কসূত্রে আবার কখনোবা ঐতিহাসিক প্রেক্ষিতের প্রসঙ্গে সমুপস্থিত এ-বইয়ে। ব্যক্তিত্বের বিভায় একসঙ্গে বহু বিরোধী মত ও পথের মানুষকে চরিত্র হিসেবে পাওয়া যায় এ-বইয়ের ভেতরমহলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কোনো আলঙ্কারিক বিশেষণে নয়; দেশ ও মানবব্রতী ব্যক্তি হিসেবে আবিষ্কার করি লেখকের সঙ্গে এক সাক্ষাতের বিবরণে, যেখানে বিশ্রামের জন্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা না করার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু বলছেন, ‘লোককে খেতে দিতে পারি না, পরতে দিতে পারি না, দেখাও যদি না দিতে পারি, তাহলে আমার আর থাকলো কী?’ (পৃ ১১৪) জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক তাঁর সারল্য ও পান্ডিত্য উভয় নিয়ে জীবন্ত বিপুলা পৃথিবীর কেন্দ্রে-প্রান্তে। তিনি এমনই এক বিদ্যাগ্রহী যে তৎকালীন তরুণ গবেষক আনিসুজ্জামানকে দেশ-বিদেশের সেমিনারে 888sport live পাঠ প্রসঙ্গে যেমন তাঁর স্বভাবসিদ্ধ লোকবয়ানে বলেন, ‘…হেইখানে 888sport live পড়ার কী দরকার আপনার! অন্যের কাজে সময় নষ্ট না কইরা নিজের কাজ করেন না কেন?’ তেমনি সেই তরুণেরই গবেষণাগ্রন্থ মুসলিম মানস ও বাংলা 888sport live footballের গুরুত্ব উপলব্ধি করে তার ইংরেজি 888sport app download apk latest versionেও আব্দুর রাজ্জাক প্রবৃত্ত হয়েছিলেন বলে জানতে পারি। এমনিভাবে তাজউদ্দীন আহমদের সততা, শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের নাগরিক বাউলিয়ানা, রাজেশ্বরী দত্তের  চারু-অভিমান, ফ্রাঁস ভট্টাচার্যের গবেষক-নিষ্ঠা, আনোয়ার আবদেল-মালেকের জ্ঞানদীপ্ত সৌজন্যের কথামালা বিপুলা পৃথিবীর গঠনকে হৃৎ-কাঠামো দান করেছে।

১৯৯২ সালে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল আন্দোলনের আনুপূর্ব বিবরণ এ-গ্রন্থের বিশেষ গুরুত্বের দিক। একজন সংবেদী লেখক যে, শুধু ঘটনাকে প্রত্যক্ষণেই দায়মুক্ত নন বরং পরোক্ষে গিয়ে ঘটনার মাত্রা ও প্রতিমাত্রাও দেখতে পান তার উদাহরণ –

একটি কাকতালীয় ঘটনা এই যে, গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার অব্যবহিত পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাহানারা ইমামের মৃত্যু হয়।  (পৃ ৪৪০)

এই বক্তব্যের কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে না; লেখক শুধু তাঁর লেখার নিরুপম রেখায় দক্ষ চিত্রীর মতো এঁকে গেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধ্বস্ত 888sport appsে শহিদজননীর মৃত্যুদশার ছবি।

 

পাঁচ

প্রসঙ্গের ধারাক্রম মেনে বিপুলা পৃথিবীর প্রতিটি অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে জাগে কিন্তু এ পরিসরে তার সুযোগ নেই। এক সাধারণ পাঠকের অধিকারে শুধু বলতে পারি, আনিসুজ্জামানের বিপুলা পৃথিবী এই দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করল যে, আত্মকথা ব্যক্তিক সুকৃতির স্বর্ণালি বিবরণগাথামাত্র নয়; ব্যক্তিক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে সময়ের অতীতবিন্দুর সঙ্গে বহমান তরঙ্গের মেলবন্ধনপূর্বক সমষ্টিজীবনের সারাৎসারও বটে। স্বাধীন 888sport appsের অভ্যুদয় পর্ব থেকে সহস্রাব্দ প্রবেশপর্বের  যে-সময়খন্ড এ-গ্রন্থ ধারণ করে আছে, লেখক তাঁর প্রায় প্রতিটি অভিযাত্রার অংশী। কিন্তু ইতিহাসের শুষ্ক সারণি প্রদানের বিপরীতে তিনি সময়সত্যে বসবাসের যুগপৎ তাপ ও হিমকে আত্মকথনের অধ্যায়ে অধ্যায়ে লিপিকৃত করেছেন। পাঠক তার আস্বাদ নেবেন, নিজের নিকষে যাচাই করে গ্রহণ কিংবা বর্জন করবেন। যে-মুক্তদৃষ্টি, উদার-আন্তর্জাতিক মনোভঙ্গি, হৃদয়ী উষ্ণতায় ইতিহাসের ঘটনাধারা ও ব্যক্তির ভূমিকাকে অক্ষরবদ্ধ করেছেন তার উদাহরণ সমকালীন বাংলা আত্মকথায় খুব বেশি নেই।

বিপুলা পৃথিবীর এক অংশে লেখক বলেছেন, ‘এসব লেখার এই এক দায়। সামনের কথা লিখতে শুরু করলে পেছনের কথা আবার ভিড় করে আসে। তখন ফিরে তাকাতে হয়’, আর আমরা বলি, লেখককে যেমন রচনার ধারাবাহিকতা রক্ষায় পেছনে ফিরে তাকানোর বিড়ম্বনা সইতে হয় উলটো আজকের পাঠক, অনাগত পাঠককে সামনে পথচলার জন্য সানন্দে ফিরে তাকাতে হবে আনিসুজ্জামানের বিপুলা পৃথিবীর পানে। r

 

বন্ধুত্বের অমলিন নিদর্শন

নওশাদ জামিল

শামসুর রাহমান ও বন্ধুত্ব

জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী

 

বেঙ্গল পাবলিকেশন্স লিমিটেড

888sport app, ২০১৪

 

২৭৫ টাকা

 

আধুনিক লেখকদের অভিন্নহৃদয়ের ‘লেখকবন্ধু’ পাওয়া যতটা কঠিন, বলা যায়, বন্ধুত্ব রক্ষা করা তার চেয়েও বেশি কঠিন। হয়তো এজন্যই সৃজনশীল অনেক লেখকেরই প্রকৃত লেখকবন্ধু নেই। তারপরও 888sport live chat-888sport live football, live chat 888sport-চারুকলাসহ সৃজনশীল নানা মাধ্যমে পাওয়া যায় বন্ধুত্বের গভীর ও অমলিন নিদর্শন। বিশ্ব888sport live footballের কথা থাক, বাংলা 888sport live footballেও বন্ধুত্বের নিদর্শন প্রচুর। শামসুর রাহমান ও জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর বন্ধুত্ব এমন এক রূপকথা যে, তাঁদের 888sport live chatযাত্রায় ওই বন্ধুত্ব যেমন একে অপরকে প্রাণিত করেছিল, তেমনই নির্মাণ করেছিল গভীর সংবেদী এবং শক্তিশালী চিন্তা ও মননের জগৎ। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর সর্বশেষ গ্রন্থ শামসুর রাহমান ও বন্ধুত্ব পড়তে-পড়তে মনে হয়, দুজনের এই বন্ধুত্ব শুধু তাঁদের 888sport live footballজীবনেরই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নয়, বাংলা 888sport live footballের জন্যও বিরল ঘটনা।

বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক, প্রাবন্ধিক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর শামসুর রাহমান ও বন্ধুত্ব বইটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স লিমিটেড। জীবদ্দশায় বইটির পান্ডুলিপি ও প্রচ্ছদ তিনি দেখেছেন, নিষ্ঠার সঙ্গে বইটির জন্য সময়ও দিয়েছেন, কিন্তু বইটির ভূমিকা লিখে যেতে পারেননি। দুই মলাটে প্রকাশের আগেই আকস্মিক মৃত্যু তাঁকে নিয়ে গেছে না-ফেরার দেশে। তাঁর প্রয়াণের কিছুদিন পরই প্রকাশিত হয় এই বই, যার ক্ষুদ্রপরিসরে হৃদয়স্পর্শী একটি ভূমিকা লিখেছেন কালি ও কলম সম্পাদক এবং বেঙ্গল পাবলিকেশন্সের নির্বাহী পরিচালক আবুল হাসনাত। ‘ভূমিকার বদলে’ শিরোনামে বইটির শুরুতেই জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীকে 888sport apk download apk latest versionভরে 888sport app download for android করে আবুল হাসনাত লিখেছেন, ‘কবি ও 888sport live footballিক এ-মানুষটি ছিলেন সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে। তিনি ছিলেন প্রগতিশীল সমাজনির্মাণে অগ্রদূত, মনে ও প্রাণে অসাম্প্রদায়িক, হৃদয়ের ঔদার্যে ও মননধর্মে অসামান্য এক ব্যক্তি। স্বভাবধর্মে সজ্জন, নিম্নকণ্ঠ, কিন্তু নীতির প্রশ্নে আপসহীন।’ জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর রচনায়, বিশেষ করে, তাঁর বিশ্লেষণাত্মক গদ্যে উঠে এসেছে এই আদর্শবোধ। এ-সম্পর্কে আবুল হাসনাত আরো বলেছেন, ‘তাঁর 888sport live footballবোধ ও রুচিতেও এই আদর্শের প্রতিফলন হতো। তাঁর মেধার আকর্ষণশক্তি যেমন ছিল, 888sport live football ও সমাজ-বিশ্লেষণে তেমনই ছিল আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি।’ তাঁর এই গ্রন্থেও মেলে এমন আদর্শবাদী দৃষ্টির পরিচয়।

888sport live chat-888sport live football অঙ্গনের অনেকেই জানেন, বরেণ্য কবি শামসুর রাহমান ও সদ্যপ্রয়াত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং প্রাবন্ধিক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ছিলেন হরিহর আত্মা। আমৃত্যু তাঁদের মধ্যে অটুট ছিল গভীর বন্ধুত্ব, শৈল্পিক হৃদ্যতা। বিশ্ববিদ্যালয়-জীবন থেকেই তাঁরা দুজন হয়ে উঠেছিলেন অভিন্নহৃদয় বন্ধু, 888sport live chatসহযাত্রী। দুজনের সৃষ্টিশীলতায়, সৃজনশীল কর্মকান্ডে তাঁদের এই বন্ধুত্বের কথা উঠে এসেছে নানা ভঙ্গিমায়। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী তাঁর বিভিন্ন রচনায়, 888sport sign up bonusকথায়, কাব্যালোচনায়, 888sport live football-সমালোচনায় তুলে ধরেছেন বন্ধু শামসুর রাহমানের সৃজনকর্ম এবং বন্ধুত্বের অপার মহিমা। কবি শামসুর রাহমানও লিখেছেন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীকে নিয়ে নানা রচনা। তাঁদের বন্ধুত্বের ওই মহিমা প্রতিফলিত হয়েছে শামসুর রাহমান ও বন্ধুত্ব শিরোনামের বইটিতে।

১৯৪৭ সালে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অনার্সের প্রথম বর্ষে ভর্তি হন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। তখন ইংরেজি বিভাগে ওই ব্যাচে শিক্ষার্থী ছিলেন মাত্র বারোজন। তাঁদেরই একজন ছিলেন শামসুর রাহমান। তাঁদের মধ্যে আরো ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ আলী, সাবের রেজা করীম। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একমাত্র শামসুর রাহমান ছাড়া বাকি সবাই ছিলেন 888sport appর বাইরের, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ও সৈয়দ মোহাম্মদ আলী তো এসেছিলেন কলকাতা থেকে। ফলে শামসুর রাহমান ছাড়া বাকি সবাই হলে থেকেই পড়াশোনা করতেন। বইটির ‘পরিচয়ের পঞ্চাশ বছর’ শীর্ষক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, হলে নয়, পুরান 888sport appর নিজেদের বাড়িতেই থাকতেন শামসুর রাহমান। ফলে ক্লাসমেট অন্যদের সঙ্গে, বিশেষ করে যাঁরা হলে থাকতেন, তাঁদের সঙ্গে খানিক দূরত্বও ছিল শামসুর রাহমানের। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ক্লাসে, পরীক্ষায় যতটা নিয়মিত ছিলেন, লাজুক প্রকৃতির শামসুর রাহমান ঠিক ততটা নন। এ-কারণে একটু সময় লেগেছিল তাঁদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে। আর যখন গড়ে উঠল, তখন তা সহপাঠিত্বের কারণে ততটা নয়, যতটা লেখালেখির সূত্রে। দুজনই লেখালেখি করতেন, যখন এই তথ্য জানলেন তাঁরা, তখন থেকেই জোড়া লেগে গেল তাঁদের বন্ধুত্বের বন্ধন। পড়াশোনা শেষে, চাকরি-জীবনে প্রবেশ করে তাঁরা ভিন্ন-ভিন্ন জায়গায় চলে যান, তাতে অবস্থানগত অসুবিধার জন্য তাঁদের কম দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে বটে, কিন্তু হৃদয়ের টানে চিড় ধরেনি। উচ্চশিক্ষার জন্য জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী যখন বিদেশে পাড়ি জমান, কিংবা চাকরিসূত্রে যখন চলে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, তখনো তাঁরা নিয়মিত একে অপরের খোঁজ রাখতেন। প্রায়শই তাঁরা চিঠি চালাচালি করতেন। লেখালেখির বিষয়ে শলাপরামর্শ করতেন। সত্তরের দশকের প্রথম পর্যায়ে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী রাজশাহী থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন চলে আসেন। তাতে করে তাঁদের বন্ধুত্বে যোগ হয় নতুন মাত্রা।

জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ছিলেন শামসুর রাহমানের 888sport app download apkর মুগ্ধ পাঠক ও বিশ্লেষক। পারস্পরিক 888sport apk download apk latest version ও 888sport live footballবোধ এবং রুচি তাঁদের সখ্যকে আরো দৃঢ়, আনন্দময় করে তুলেছিল। শামসুর রাহমান আজীবন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর 888sport app download apk-ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়েছেন, তেমনই জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীও বন্ধুর অভিমতকে গ্রহণ করেছেন হৃদয় থেকেই। বইটিতে শামসুর রাহমানকে নিয়ে আছে ভিন্ন স্বাদের পাঁচটি 888sport live। আছে 888sport sign up bonusচারণামূলক রচনাও। তাতে ব্যক্তি শামসুর রাহমান ও তাঁর 888sport app download apk-888sport alternative linkসহ নানাধর্মী লেখালেখি নিয়ে আলোকপাত করেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। রচনাগুলোয় 888sport live footballের নানা দিক নিয়ে যেমন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর অতলস্পর্শী-দৃষ্টি প্রতিভাত হয়েছে, তেমনি উঠে এসেছে  পঞ্চাশের দশকের 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ণালি দিনের কথা, এসেছে মুক্তিযুদ্ধসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক কালপর্ব। এছাড়া আছে শামসুর রাহমানের প্রয়াণে বন্ধু-888sport app download for androidে লেখকের শোকাঞ্জলি।

দেশবরেণ্য কবি শামসুর রাহমানকে নিয়েই শুধু নয়, অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী তাঁর আরেক বন্ধু বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে নিয়েও লিখেছেন মর্মস্পর্শী আলেখ্য। জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ও মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল কলকাতার দিনগুলোতেই। তাঁরা দুজনই ছিলেন আর্টসের ছাত্র। ফলে তাঁদের অ্যাকাডেমিক আদান-প্রদানও ছিল চমৎকার। দুজনই পড়তেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। দেশভাগের পর দুজনই চলে আসেন পূর্ব পাকিস্তানে। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান – যাঁর ডাকনাম ছিল শেলী, তিনি ভর্তি হন রাজশাহী কলেজে। তখন রাজশাহী কলেজে দুই বছরের অনার্স কোর্স চালু ছিল। অন্যদিকে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখক অত্যন্ত রসিকতা ও মজাদার বর্ণনায় লিখেছেন, ‘আমরা যখন 888sport appয় অনার্সের তৃতীয় বছরে, শেলী রাজশাহী থেকে অনার্স গ্র্যাজুয়েট হয়ে একদিন তার ছয় ফুট দীর্ঘ হালকা-পাতলা শরীরটাকে দুলিয়ে সলিমুল্লাহ হলের এক কোণের সরু প্রবেশপথ দিয়ে এগিয়ে আসছে, দেখলাম। তার পরনে রীতিমতো সুট। বলল, কলকাতা থেকে বানানো। আগেভাগে গ্র্যাজুয়েট হয়ে সুট পরিহিত হয়ে শেলী সেই যে আমাদের টপকে গেল, তার সেই টপকে যাওয়া অব্যাহত আছে আজ পর্যন্ত।’

বইটিতে বন্ধুত্বের 888sport sign up bonusচারণ বেশি থাকলেও 888sport live chat888sport live football-সমাজ-শিক্ষাসহ নানা বিষয়ে আছে 888sport app রচনাও। কবি কাজী নজরুল ইসলাম, আবুল ফজলসহ কয়েকজন খ্যাতনামা 888sport live footballিক ও বন্ধুকে নিয়েও আছে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর বিশ্লেষণাত্মক 888sport live। এসব রচনা যেমন সুখপাঠ্য, তেমনই আকর্ষণীয়।

বইটির কিছু কিছু 888sport live 888sport sign up bonusকথা ধাঁচের, তাতে যেমন ব্যক্তিক ভালোলাগা, মুগ্ধতা ফুটে উঠেছে, তেমনই লেখকের মুন্শিয়ানায় উঠে এসেছে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর গভীর প্রাজ্ঞতা, অভিজ্ঞতার নির্যাস। কয়েকটি রচনায় উঠে এসেছে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবনের কথকতা। উঠে এসেছে কলকাতার 888sport sign up bonus, এসেছে দেশভাগ, ছাত্ররাজনীতি, ভাষা-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ নানা আন্দোলন-সংগ্রামের 888sport sign up bonusকথা। একবার হল-ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ভোটে জেতেন জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। তাঁর সঙ্গী ছিলেন পরবর্তীকালে প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ফজলুল হালিম চৌধুরী। তাঁরা প্রত্যেকেই আজ প্রয়াত। কিন্তু পাঠক পড়তে পড়তে বুঝতে পারবেন, ঐতিহাসিক ওই নায়কেরা সদাজাগ্রত, সজীব।

জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী তাঁর রচনায় গভীর 888sport apk download apk latest versionর সঙ্গে            888sport app download for android করেছেন তাঁদের নানা রঙের দিনগুলির কথা, বন্ধুত্বের কথা, 888sport live chat-888sport live football নিয়ে উন্মাদনার কথা। লেখকের ব্যক্তিক এসব 888sport sign up bonusচারণ যেমন বন্ধুত্বের গভীর নিদর্শন, তেমনই তা বাংলা 888sport live football ইতিহাসেরও অমূল্য স্মারক। r

 

রবীন্দ্রজীবনে বিহার

সৈয়দা আইরিন জামান

আনিয়াছি প্রবাসের সুখ

মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়

 

লালমাটি প্রকাশনা সংস্থা

কলকাতা, ২০১৪

 

২৫০ টাকা

 

 

আনিয়াছি প্রবাসের সুখ মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা রবীন্দ্রনাথের অখন্ড বিহারে 888sport slot gameবিষয়ক একটি গবেষণাগ্রন্থ। গ্রন্থটি ২০১৪ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা থেকে।  গ্রন্থটি দুটি পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে বিহার এবং দ্বিতীয় পর্বে ঝাড়খন্ডে রবীন্দ্রনাথের প্রবাসজীবনের চিত্র উৎকীর্ণ হয়েছে।

অখন্ড বিহারে রবীন্দ্রনাথ প্রথম আগমন করেছিলেন ১৮৮৫ সালে হাজারিবাগে, তবে গ্রন্থের লেখক গ্রন্থটি আরম্ভ করেছেন একটি পত্রালাপের ঐশ্বর্যে। পত্রটি রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন মজফ্ফরপুর থেকে তাঁর স্ত্রী মৃণালিনী দেবীকে – সম্বোধন করেছেন ‘ভাই ছুটি’ বলে। চিঠিটির বিষয় এবং ভাষা উভয়ই সরস এবং ঋদ্ধ। এই চিঠিতে তিনি নিজেই আত্মপরিচয় বিশ্লেষণ করেছেন : ‘888sport appই ধুতি চাদর ছাড়া আর কথা নেই। এখানকার লোকেরা জানে আমি শরতের শ্বশুর, বঙ্গদর্শনের সম্পাদক, ব্রাহ্মসমাজের কর্তৃপক্ষ, জগদ্বিখ্যাত মাননীয় 888sport apk download apk latest versionস্পদ রবিঠাকুর, আমার বেশভূষা দেখে তাদের চক্ষু স্থির হয়ে গেছে।’

১৯০১ সালের ১৫ জুলাই রবীন্দ্রনাথ উত্তর বিহারের মজফ্ফরপুরের সরাইয়াগঞ্জ এলাকায় এসেছিলেন তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্যা মাধুরীলতাকে পতিগৃহে পৌঁছে দিতে। মাধুরীলতার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল কবি বিহারীলাল চক্রবর্তীর দ্বিতীয় পুত্র শরৎকুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে। রথীন্দ্রনাথ কন্যাকে যৌতুক হিসেবে দিয়েছিলেন একটি লাইব্রেরি, যেখানে ইংরেজি, বাংলা ও সংস্কৃত গ্রন্থের একটি সুনির্বাচিত সংগ্রহ ছিল। রবীন্দ্রনাথ দিদির কথায় লিখেছেন : ‘…‘বাবা দিদিকে বেশি ভালোবাসতেন।… দিদির বুদ্ধি যে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি তা মানতে আমাদের লজ্জাবোধ হতো না। তিনি অপরূপ সুন্দরী ছিলেন,… সকলের প্রিয় ছিলেন।’ সে-সময়ে মজফ্ফরপুরের বাঙালি সমাজ ১৭ জুলাই মুখার্জী সেমিনারি স্কুল প্রাঙ্গণে রবীন্দ্রনাথকে তাঁর জীবনের প্রথম মানপত্রসহ জনসংবর্ধনা দিয়েছিলেন।

কবি দ্বিতীয়বার মজফ্ফরপুরে গিয়েছিলেন ১৯০৪ সালের ২৩ এপ্রিল ডাক্তার হ্যারিসের পরামর্শ-অনুযায়ী বায়ুপরিবর্তনের প্রত্যাশায়, পাশাপাশি বেলার সুনিপুণ-সুখী গৃহিণীপনা দেখে আসার ইচ্ছা দুর্মর হয়ে উঠেছিল। তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন রথীন্দ্রনাথ, শমীন্দ্রনাথ এবং মীরা। এখানে কবির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এবং কাব্যচর্চাও চলে মন্থর গতিতে। এ প্রসঙ্গে কবির লেখা পত্রসমূহের উল্লেখ করেছেন লেখিকা মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা ভাগ করার সব রকম পরিকল্পনার বিরুদ্ধেও রবীন্দ্রনাথ এখান থেকেই সোচ্চার হন। বঙ্গবিভাগ এবং য়ুনিভার্সিটি বিল – দুটি বিষয়ে তিনি ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করেছিলেন সাময়িকপত্রে প্রকাশিত 888sport liveে।

মজফ্ফরপুর থেকে কবি কলকাতায় ফেরেন ১৩ মে এবং ২০ জুন কবি পুনরায় কন্যাগৃহে গমন করেন। ১৯০৪-এ পরপর তিনবার রবীন্দ্রনাথ মজফ্ফরপুরে এসেছেন কন্যাগৃহে।

মাধুরীলতা পরে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তাঁর গলার ক্ষত যক্ষ্মায় রূপ নিল। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁকে কবি বাঁচাতে পারেননি। একসময়ে শরৎ ছিলেন কবির মনের মতো জামাতা। পরবর্তীকালে তাঁর কাছ থেকে ‘কবি পেয়েছেন তিক্ততা, অসম্মান এবং প্রাণাধিকা বেলার বিবর্ণ জীবনের অবসান। সে সানুপুঙ্খ বয়ান আমাদের কাছে চূড়ান্ত আশাভঙ্গ ও পারিবারিক পরিবেশের কুশ্রীতার বড়ো অন্ধকার বিস্তার।’

রবীন্দ্রনাথ এবং দিনেন্দ্রনাথ হিমালয়ের একটি দুর্গমতম তীর্থস্থান কেদারবদ্রীতে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর রথী অসুস্থ হয়ে পড়ায় বায়ুপরিবর্তন এবং বিশ্রামের জন্য তাঁকে গিরিডি পাঠানো হয়। এর কিছুদিনের মধ্যে রবীন্দ্রনাথও গিরিডি গমন করেন স্বাস্থ্যোদ্ধারের জন্য। সেখানে অবস্থানকালে তিনি জানতে পারেন, সস্ত্রীক জগদীশচন্দ্র বসু, সিস্টার নিবেদিতা, সিস্টার ক্রিস্টিনা এবং আরো কয়েকজন বুদ্ধগয়া যাচ্ছেন। এঁদের সকলের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথও বুদ্ধগয়া যাওয়ার জন্য উৎসাহী হয়ে উঠলেন এবং ১৯০৪ সালের ৮ অক্টোবর বুদ্ধগয়া গমন করেন।

বুদ্ধগয়া কবির মনকে প্রশান্ত করেছিল, বিশেষ করে সেখানকার মন্দিরে জাপানের এক ধীবরের আড়ম্বরহীন পূজা ও বোধিসত্ত্বের নিচে এসে তাঁর মন্ত্রোচ্চারণ ও তপোমূর্তি সকলকেই আন্দোলিত করেছিল। রথীন্দ্রনাথ লিখেছেন : ‘অনেক রাত পর্যন্ত জগদীশচন্দ্র, ভগিনী নিবেদিতা ও পিতৃদেব বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধ ইতিহাস নিয়ে নিবিষ্ট মনে আলোচনা করতেন। নিবেদিতা এক-একটি তর্ক তোলেন আর রবীন্দ্রনাথ চেষ্টা করেন তার যথাযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে। আমরা অন্যেরা তাঁদের প্রশ্নোত্তর তর্ক-বিতর্ক মুগ্ধ হয়ে শুনে যাই।’ ১৩ অক্টোবর কবি গয়া থেকে গিরিডি  পৌঁছানো। গিরিডি থেকে মোহিতচন্দ্রকে লেখা চিঠিতে জানা যায় বুদ্ধগয়া সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের আন্তরিক অভিব্যক্তি : ‘বুদ্ধগয়াতে থাকবার সময় যদিও অনেক অনিয়ম সহ্য করতে হয়েছিল তবু সেখানকার বৌদ্ধমন্দির দেখে একথা মনে হয়েছে যে না দেখলে জীবন অসম্পূর্ণ থাকত।’

১৯০৭-য় রবীন্দ্রনাথ গিয়েছিলেন মুঙ্গেরে প্রাণাধিক শমীর অসুস্থতার বার্তা পেয়ে। মাতৃহারা ১১ বছরের শিশুটিকে শ্রীশচন্দ্রের দ্বিতীয় পুত্র ভোলার মামার বাড়ি মুঙ্গেরে বেড়াতে পাঠিয়েছিলেন। আর্ত-উদ্বিগ্ন পিতৃহৃদয়ের কাছে সংবাদ এসেছিল শমী কলেরায় আক্রান্ত। কষ্ট-ভারাক্রান্ত রবীন্দ্রনাথ একজন ডাক্তারকে সঙ্গে নিয়ে ১৭ নভেম্বর মুঙ্গেরে পৌঁছেছিলেন। হোমিওপ্যাথি-অ্যালোপ্যাথি ডাক্তার-বৈদ্য, কোনো ওষুধ-কোনো প্রার্থনাই শমীকে তার জীবন ফিরিয়ে দেয়নি।

১৯৩২ সালে দৌহিত্র নীতীন্দ্রনাথের অকালমৃত্যুতে কনিষ্ঠ কন্যা মীরাকে লেখা চিঠিতে ওই সময়কার কথা 888sport app download for android করেন কবি। ‘শমী যে রাত্রে গেল তার পরের রাত্রে রেলে আসতে আসতে দেখলুম জ্যোৎস্নায় আকাশ ভেসে যাচ্চে, কোথাও কিছু কম পড়েচে তার লক্ষণ নেই। মন বল্লে কম পড়েনি – সমস্তর মধ্যে সবই রয়ে গেছে, আমিও তারি মধ্যে। সমস্তর জন্যে আমার কাজেও বাকি রইল।’

বিহারের অন্যতম বড় শহর এবং ভারতবর্ষের অন্যতম 888sport live footballঋদ্ধ শহর ভাগলপুরে কবি আগমন করেন ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯১০ সালে বঙ্গীয় 888sport live football সম্মিলনের তৃতীয় বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে। সভাটি উদ্বোধন করেছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। উপস্থিত ছিলেন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, সুরেশ সমাজপতি, ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদসহ মোট দেড়শো জন প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় সুগায়ক হিসেবে খ্যাত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুরেন্দ্রনাথ মজুমদারের বাড়িতে এক জলসার আয়োজন হয়েছিল। সেখানে সুরেন্দ্রনাথ অপূর্ব সুরবিন্যাসে দুটি রবীন্দ্রসংগীত গেয়েছিলেন। বোলপুর ফিরে যাবার আগের দিন রাত্রিবেলা রবীন্দ্রনাথ তাঁর পাঁচ ভক্তকে দুটি গান শুনিয়েছিলেন : ‘ ‘কান ভরে প্রাণ ভরে’ আমরা যাবার বেলার শেষ 888sport app download bd পেলাম।’…

বিহারের ১৯৩৪ সালের সর্বগ্রাসী ভূমিকম্প তাঁকে আলোড়িত এবং ভীষণ মর্মাহত করেছিল। সে-সময়ে বিচলিত এবং উদ্বিগ্ন রবীন্দ্রনাথ ২৩ জানুয়ারি ইউনাইটেড প্রেসের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বে সাহায্যের জন্য আবেদন পাঠান। আবার একই দিনে শান্তিনিকেতন থেকে যথাসাধ্য অর্থ, বস্ত্র ইত্যাদি বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। বিহারের এই ভূমিকম্পকে গান্ধিজি উল্লেখ করেছিলেন পাপের ফল হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ 888sport apk download apk latest versionভরে গান্ধিজির এই বিবৃতির প্রতিবাদ করেন এবং এর বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন।

শেষবার কবি বিহারযাত্রা করেন বিহারের রাজধানী পাটনায়। ‘জ্যোতির্ময় সেই কবিকে পাটনার মানুষ ইতিপূর্বে কখনো দেখেননি। তাই যে মুহূর্তে এ বার্তা ছড়িয়ে পড়ল পাটনা শহরে, কবি আসছেন পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী ও বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে, পাটনা উত্তাল হয়ে উঠল।’

১৯৩৬ সালের ১৬ মার্চ পাটনায় পৌঁছলেন কবি ট্রেনে করে। বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কবিকে বিপুলভাবে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। ১৬ ও ১৭ মার্চ এলফিনস্টোন সিনেমা হলে চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্য পরিবেশনকালে সেখানে তিল ধারণের স্থান ছিল না। ১৭ মার্চ সিনেট হলে জনসাধারণের পক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথকে একটি মানপত্রসহ প্রায় পনেরোশো টাকার একটি তোড়া প্রদান করা হয়। সিনেট হল এতটাই জনারণ্যে পরিবেষ্টিত ছিল যে, কবিকে অতি কষ্টে তাঁর নির্দিষ্ট আসনে নিয়ে যাওয়া হয়। সংবর্ধনা সভায় শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন, যেন তাঁরা কবিকে সম্মান জানিয়ে ধন্য হয়েছিলেন। পাটনার খুদাবক্স লাইব্রেরিতে রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরসহ একটি 888sport app download apk পাওয়া গেছে, তবে 888sport app download apkটি কীভাবে এই লাইব্রেরিতে স্থান পেয়েছে তার ইতিহাস পাওয়া যায় না।

আগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রবীন্দ্রনাথ অখন্ড বিহারের হাজারিবাগে পদার্পণ করেছিলেন ১৮৮৫-তে ইন্দিরা-সুরেন্দ্র-অক্ষয় চৌধুরীকে নিয়ে দশ দিনের ছুটি কাটাতে। শুধুমাত্র 888sport slot gameস্পৃহা পূর্ণ করবার জন্য কবি হাজারিবাগ যাননি। ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবীর বিশেষ আকর্ষণ ছিল সিস্টার অ্যালয়সিয়ার প্রতি।  সেই সময়ে সিস্টার হাজারিবাগের কনভেন্টে বদলি হয়েছিলেন। আর তাঁর কারণেই ইন্দিরার সেখানে আগমন। ছুতো যাই হোক কবিচিত্ত ছুটি যাপন করতে বিহারের পাহাড় অরণ্য প্রকৃতির মাঝে সমর্পিত হয়েছিলেন।

মধুপুর গিরিডি হয়ে কবিরা হাজারিবাগ পৌঁছলেন। মাঝখানে দীর্ঘ বাহাত্তর মাইল রাস্তা তাঁরা অতিক্রম করেছেন পুশপুশ গাড়িতে। পুশপুশ গাড়িকে মানুষে ঠেলা পালকি গাড়ি বলা যেতে পারে। তাতে শোওয়াও চলে।

শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে রক্ষিত কবির একটি ছোট্ট নোটবুকে পেনসিল দিয়ে লেখা রয়েছে হাজারিবাগ 888sport slot gameের খসড়া। দশ দিন ছুটির দুদিন রবীন্দ্রনাথ ট্রেনে প্রত্যক্ষ করেছেন প্রকৃতির রং, রূপ-রেখার লাবণ্য। হাজারিবাগের উন্মুক্ত দ্বার বেয়ে উঁকি দিয়ে ভালোবেসেছেন ছোটনাগপুরকে।

ছোটনাগপুরের পরিশুদ্ধ হাওয়া ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে রবীন্দ্রনাথ দ্বিতীয়বার সেখানে আগমন করেন ১৯০৩-এর মার্চ মাসে।

হাজারিবাগ 888sport slot gameের সময়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন রেণুকা, মীরা, শমী এবং 888sport app আত্মীয়-পরিজন। কবির মনে পড়েছে আঠারো বছর পূর্বেও এমনি করেই দুই বালক-বালিকাকে নিয়ে আনন্দে বাঁধহারা হয়ে এই পথে এসেছিলেন। এবার এসেছেন ক্লান্ত, শ্রান্ত পিতৃহৃদয়ে মাতৃহীন মৃত্যুপথযাত্রী বালিকা কন্যার নিস্তেজ অস্তিত্ব সঙ্গে নিয়ে। এসে উঠলেন কালীকৃষ্ণ ঠাকুরের বাগানবাড়িতে – যার বিস্তৃতি ২৯ বিঘা। হাজারিবাগে পৌঁছেই কবি জ্বরে শয্যাগত হলেন। আট-নয় দিন পর সুস্থ হলেও কাশি দুর্বলতা রয়েই গেল। এরপর জ্বরে পড়লেন কবির কনিষ্ঠপুত্র শমী এবং কনিষ্ঠ কন্যা মীরা। ইতোমধ্যে কবি কালীকৃষ্ণ ঠাকুরের বাগানবাড়ি থেকে উঠেছেন রায়বাহাদুর গিরিন্দ্রকুমার গুপ্ত এবং অক্ষয়কুমার গুপ্তের যৌথ বাড়িতে। ‘…হাজারিবাগে অবস্থানকালে যথারীতি 888sport live footballচর্চা, ‘বঙ্গদর্শন’-এর সম্পাদনা এবং মোহিতচন্দ্র সেনের সঙ্গে কাব্যগ্রন্থ প্রকাশনা ও সংকলনে সর্বত্রগামী ভাবনা অব্যাহত রয়েছে।’

১১ চৈত্রে রচিত দুটি 888sport app download apkর মধ্যে একটি ‘ভোরের পাখি’ :

ভোরের পাখি ডাকে কোথায়

ভোরের পাখি ডাকে

ভোর না হতে ভোরের খবর

কেমন করে রাখে।

হাজারিবাগের গিরীন্দ্রনাথের বাড়িতেই নৌকাডুবি 888sport alternative link রচিত হয়। এই 888sport alternative linkের ক্যানভাসে তিনি হাজারিবাগকে স্থান দিয়েছেন।

হাজারিবাগে আসবার পূর্বে কবি তাঁর মধ্যম জামাতা রেণুকার স্বামী সত্যেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ওপর ব্রহ্মাচর্যাশ্রমের অধ্যক্ষের দায়িত্ব অর্পণ করে এসেছিলেন। উল্লেখ্য যে, হঠাৎ করেই একজন ডাক্তারের সঙ্গে রেণুকার বিয়ে হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জামাতার মাঝে কোনো দায়িত্বজ্ঞানের সন্ধান না পেয়ে হতাশ হন। সত্যেন্দ্রকে তিনি যশস্বী হোমিওপ্যাথ হয়ে আসার জন্য ইংল্যান্ড পাঠিয়েছিলেন, অথচ তিনি অকৃতকার্য হয়ে ফিরে এসেছেন। রেণুকা দেবীর মন ভেঙে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে রথীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্রনাথের কনিষ্ঠ জামাতা সন্তোষচন্দ্র আমেরিকা থেকে কৃষি ও পশুপালন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে ফিরে আসেন। রবীন্দ্রনাথ হাজারিবাগ অঞ্চলে জমি সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত শান্তিনিকেতনই রথী এবং সন্তোষের কর্মক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ভুবনডাঙার একটি জমি রবীন্দ্রনাথকে প্রদান করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন স্থাপনের পাশাপাশি একটি গোশালাও নির্মাণ করেন। শ্রীনিকেতন গড়ে ওঠার পর সেখানে দুগ্ধ সমবায়ের কাজ চলতে থাকে। হতে পারে, এটিই ভারতের প্রথম বেসরকারি ডেয়ারি প্রতিষ্ঠানের  দৃষ্টান্ত। ‘রবীন্দ্রনাথ হাজারিবাগ গেলেন দু’বার কিন্তু রাঁচি গেলেন না কখনো। অথচ তাঁর দুই অগ্রজ সত্যেন্দ্রনাথ ‘সত্যধাম’ ও জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ‘শান্তিধাম’ নির্মাণ করে আজীবন বাস করলেন।’ ইন্দিরাও রাঁচিতে বসবাস করতেন, ছিল তাঁর আন্তরিক আমন্ত্রণ। তবু যাওয়া হয়নি রাঁচিতে রবীন্দ্রনাথের।

হাজারিবাগ যাত্রা কবিকে সুখ দিতে পারেনি, তবে আনন্দ দিয়েছে। এখানে তিনি প্রকৃতির সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। এখানে এসেছিলেন কবি পীড়িত কন্যা রেণুকার স্বাস্থ্যোদ্ধারে। ‘স্ত্রী প্রয়াত হবার ঠিক দশমাস পরেই মৃত্যু হল কন্যা রেণুকার। শুধু হাজারিবাগের 888sport sign up bonus রইল অমলিন – আজীবন।’

রবীন্দ্রনাথ ১৯০৪ সালে এক বছরের বেশি সময় ছেলেমেয়েদের নিয়ে গিরিডিতে ছিলেন। তাঁর বন্ধু শ্রীশচন্দ্র তখন সেখানে Land Acquisition Deputy হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনিই কবির জন্য বারগান্ডা মোড়ে ‘জোড়াবাংলো’ নামে টালির ছাতের একটি বাংলোবাড়ি নিয়েছিলেন। এখানে এসে কবির স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছিল। গিরিডি শহর সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের 888sport sign up bonusচারণ থেকে জানা যায়, বারগান্ডার যে কয়েকটি বাঙালি পরিবার ছিলেন তাঁদের স্বদেশি আন্দোলনের বিষয়ে সন্তোষ এবং রথীন্দ্রনাথ অবহিত হয়েছিলেন। গিরিডির আইনজীবী হরিনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর লেখা প্রকৃতি নামে একটি গ্রন্থ রবীন্দ্রনাথের নামে উৎসর্গ করেছিলেন। সুনির্মল বসুর বর্ণনামতে, গিরিডিতে রবীন্দ্রনাথ একটি বাড়িতে স্বরচিত গান গেয়ে শুনিয়েছিলেন। গান দুটি হলো :  ‘কেন জাগে না, জাগে না অবশ পরান’ এবং ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’। একজন প্রবীণ বাঙালির ভাষ্যমতে সেই বাড়িটি হেরম্ব মৈত্রের বাড়ি হবারই সম্ভাবনা বেশি। গিরিডিতে কবির স্বাস্থ্যের উত্তরোত্তর উন্নতি হয়েছিল। সে-সময়ে গিরিডিতে বেড়াতে এসেছিলেন ত্রিপুরার মহারাজা রাধাকিশোরের মধ্যম পুত্র ব্রজেন্দ্রকিশোর। তিনি রবীন্দ্রনাথ এবং মৃণালিনী দেবীর কাছে ছিলেন সন্তানতুল্য।

গিরিডিতে কবি তাঁর সৃজনকার্যে সক্রিয় ছিলেন। এখানেই তিনি স্বদেশি 888sport app download apk এবং সংগীত রচনা করেছিলেন যা ভান্ডার ও বঙ্গদর্শন পত্রিকায় এবং বাউল পুস্তিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গের দুশ্চিন্তায় বিষাদগ্রস্ত ও বিপর্যস্ত হৃদয়ে কবি তাঁর 888sport app download apkয় মহারাষ্ট্রের অন্যতম দেশনায়ক বা মহানায়ককে 888sport app download for android করেছেন। ইতোমধ্যে স্বদেশি গান ‘আমার   সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ কলকাতা শহরকে দিয়েছে নতুন এক দেশভক্তির উন্মাদনা : ‘বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে ১৯০৫-এর ৭ আগস্ট যে বিশাল সভা হয় তাতে এই গানটি গাওয়া হয়।’

কবি ১৯০৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বারের জন্য গিরিডি রওনা হন ক্লান্তিমোচন, স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার এবং প্রিয় সন্তানদের সঙ্গে মিলিত হবার লক্ষ্যে। তবে এবারের গিরিডি 888sport slot game গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আছে স্বদেশি গান রচনার জন্য।

গিরিডিতে বসে তিনি বহুসংখ্যক গান রচনা করেছিলেন। সেসব গান কলকাতায় গায়কদের কণ্ঠে গীত হচ্ছিল।

এই গানগুলি রচনার মধ্যবর্তী সময়ে রবীন্দ্রনাথ ২৭ সেপ্টেম্বর সাবিত্রী লাইব্রেরিতে স্বধর্ম সাধন সমিতির একটি বিশেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করতে কলকাতায় আগমন করেন। ২৯ সেপ্টেম্বর আবার গিরিডি ফিরে যান। গিরিডি থেকে কয়েকদিনের জন্য দেওঘরে গমন করেন স্বর্ণকুমারী দেবীর কন্যার বিবাহ উপলক্ষে। গিরিডিতে অবস্থানকালে রথীন্দ্রনাথ ও সন্তোষচন্দ্রকে কৃষিবিদ্যা শেখার জন্য কবি আমেরিকা পাঠাবার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

১৯০৫ সালের ৪ অক্টোবর কবি কলকাতায় ফিরে এলেন। ১৯০৬ সালে তৃতীয়বার মাত্র কয়েকদিনের জন্য রবীন্দ্রনাথ গিরিডি গমন করেন। এবার তিনি গিরিডি এসেছিলেন মীরার জন্য জমি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। মীরা দেবীর ভীষণ দুঃখের দিনে রথীন্দ্রনাথকে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন : ‘ওর জীবনের প্রথম দন্ড ত আমিই ওকে দিয়েচি – ভাল করে না ভেবে না বুঝে আমিই ওর বিয়ে দিয়েছি। যখন দিচ্ছিলুম তখন মনে খুব একটা উদ্বেগ এসেছিল।’

রবীন্দ্রনাথ চতুর্থবার গিরিডি গিয়েছিলেন ১৯০৭ সালের ২৭ জানুয়ারি। হয়তো বন্ধু শ্রীশচন্দ্রের কাছ থেকে গিরিডিতে জমি পাবার কোনো আভাস পেয়েছিলেন। তৃতীয়বার গিরিডি অবস্থানকালে এক প্রাতঃ888sport slot gameে বেরিয়ে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে এই বোধ সঞ্চারিত হয় যে, দেশের শিক্ষা-সমস্যার একমাত্র প্রতিকার হলো স্বদেশি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। এই ভাবনায় নিমগ্ন হয়ে কবি গিরিডি ছেড়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হলেন। কলকাতায় জাতীয় শিক্ষা পরিষদে ভাষণ দেবার পর কবি চতুর্থবার গিরিডি গমন করেন। এখানে তিনি কলকাতায় জাতীয় শিক্ষা পরিষদে পড়বার জন্য ‘বিশ্ব888sport live football’ নামে লেখা তৈরি করেছিলেন।

রাজনারায়ণ বসুর ডায়েরি থেকে রবীন্দ্রনাথের দেওঘর যাবার তথ্য পাওয়া যায়। তিনি ১৮৯৫ সালের ১৭ আগস্ট সেখানে পৌঁছেছেন এবং ১৮ আগস্ট রাত্রে সেখান থেকে রওনা হয়ে কলকাতা ফিরে এসেছেন। রাত্রের ট্রেনে তিনি স্বপ্নে তাঁর মানসপটে রাজর্ষির দর্শন পেয়েছিলেন। ফলে পাঠক পেয়েছেন রাজর্ষি 888sport alternative link এবং পরবর্তীকালে বিসর্জন নাটক। এজন্য দেওঘরের গর্বের সীমা নেই। রবীন্দ্রনাথ দ্বিতীয়বার দেওঘর যান সরলা দেবীর বিবাহ উপলক্ষে ১৯০৫ সালের ৪  অক্টোবর। ৭ অক্টোবর তিনি আবার গিরিডি ফিরে আসেন। এরপর অক্টোবরের মাঝামাঝি রবীন্দ্রনাথ কলকাতায় ফিরে আসেন বলে গবেষকেরা মনে করেন।

রবীন্দ্রনাথ কার্মাটারে গিয়েছিলেন ১৮৯৩ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের শেষ জীবনের আবাসভূমি সাঁওতাল পরগনায়। বিদ্যাসাগর কার্মাটারে মনের মতো একটি বাড়ি কিনেছিলেন। সে-সময়ে রবীন্দ্রনাথ কিশোর। তখন পর্যন্ত কার্মাটার শহরটি সম্পন্ন, বর্ধিষ্ণু এবং বাঙালি অধ্যুষিত নয়। সেখানে সাত-আট ঘর নিম্নমধ্যবিত্ত এবং শিক্ষাদীক্ষাহীন বাঙালি বসবাস করত, বিদ্যাসাগর মাছ কিনে ভাগ করে তাদের সকলের বাড়ি পাঠাতেন।

সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর বিদ্রোহের বিষয়ে একটি 888sport live লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ১৮৯৩ সালে। 888sport liveটির নাম – ‘ইংরাজের আতঙ্ক’। সে-সময়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কোনো অধিকারই স্বীকৃত হয়নি। মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী সমাজ তাদের উপেক্ষা ও অবজ্ঞার চোখে দেখত। আর ‘নিরীহ সাঁওতালদের তাজা লাল রক্ত ইংরেজ সরকারের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল।’ তিনি পনেরো দিনের জন্য বিশ্রাম নিতে গিয়েছিলেন কার্মাটারে। সাঁওতাল পরগনা এবং ক্যামেলিয়া ফুল নিয়ে রচিত ‘ক্যামেলিয়া’ 888sport app download apkটি – ‘কালো গালের ওপর আলো করা’। অবশ্য কার্মাটারে কবির পনেরো দিন উপস্থিতির তেমন কোনো বিশদ ইতিহাস পাওয়া যায়নি : ‘মাত্র দুটি চিঠি এবং অজ্ঞাত ব্যক্তিকে লেখা অসম্পূর্ণ একটি চিঠির উল্লেখ আছে প্রশান্তকুমার পালের রবিজীবনীতে।’

১৮৯৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কার্মাটার থেকে ইন্দিরাকে একটি অপরূপ সুন্দর চিঠি লিখেছিলেন, সেই চিঠির প্রতিটি বাক্যে গোলাপ এবং শিরীষ ফুলের সৌন্দর্যের প্রতি কবির একাকার হয়ে যাবার অনুভূতি ব্যক্ত হয়েছে। এই চিঠিতে আর একটি চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে। তা হলো, একজন ভদ্রমহিলা রবীন্দ্রনাথের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এ যাত্রা ফিরে এসে আশ্বিনের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি আবার সপরিবারে কার্মাটারে আগমন করেন। এখানে দুদিন থেকে স্ত্রীপুত্রকন্যাকে পাঠিয়ে দেন গাজিপুরে। বিহারসংলগ্ন উত্তর প্রদেশের এই ‘রোমান্টিক শহর’ গাজিপুরে ছিল গোলাপের ক্ষেত। সপরিবারে গাজিপুর 888sport slot game রবীন্দ্রনাথের জীবনের একটি বিশেষ পর্ব। কবি নিজে কলকাতা ফিরে আসেন ১৮ আশ্বিন। কার্মাটার 888sport slot gameের প্রায় তিন দশক পরে রবীন্দ্রনাথ তাঁর একটি 888sport app download apkয় 888sport app download for android করেছিলেন ছোট এই শহরটিকে। সে-সময়ে গাজিপুরে তিনি উঠেছিলেন সুকিয়া স্ট্রিটের মহেন্দ্রনাথ শ্রীমানীর বাড়িতে। বাড়িটি ‘গোলাপ বাগান’ (Rose Garden) নামে বিখ্যাত ছিল। এখানকার গোলাপ পৃথিবীর নানা দেশে রপ্তানি হতো। মহেন্দ্র শ্রীমানী সেখানে একটি ডাকঘর প্রতিষ্ঠা করেন যার নাম ‘Rose Garden Post Office’.

ঝাড়খন্ডে রবীন্দ্রনাথের শেষ সফর ছিল নান্দনিক প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা সাঁওতাল অধ্যুষিত সুবর্ণরেখা নদীর কোলে একটি ছোট্ট শহর ঘাটশিলায়। সেখানে তিনদিন কাটাতে তিনি ১৯১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর পরিবারের কয়েকজন সদস্যসহ ডাকবাংলোয় উঠেছিলেন। এ প্রসঙ্গে চিত্র888sport live chatী মুকুল দে আমাদের জানাচ্ছেন : ‘ঘাটশিলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে গুরুদেব মুগ্ধ হয়ে যান। সুবর্ণরেখার মতো নদী, পার্বত্য টিলার বক্রতা, বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত, আকাশে উড়ে যাওয়া বকের পাঁতি দেখতে দেখতে তন্ময় হয়ে যেতেন।’ ঘাটশিলায় রবীন্দ্রনাথ গিয়েছিলেন সুস্থতার আকাঙ্ক্ষায়, সেই 888sport sign up bonus পুনরুজ্জীবিত হয়েছে ১৯৩৫ সালে একটি চিঠিতে। তিনি যখন ঘাটশিলায় গেছেন, তখন তিনি বিশ্বনন্দিত। চারিদিকে সাজসাজ রব হওয়াটাই স্বাভাবিক।

ঝাড়খন্ডের প্রান্তিক শহর সরাইকেল্লার ছৌ নৃত্য রবীন্দ্রনাথকে বিমোহিত করেছিল। তিনি সেই সৌন্দর্য-সুষমা আহরণ করেছিলেন বিশ্বভারতীর জন্য। সেখানকার 888sport live chatীরা বিশ্বভারতীতে এসে কবির আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন। সরাইকেল্লার সিং দেও রাজদরবারে কবির সঙ্গে 888sport live chatীদের ছবি আজো সযত্নে রক্ষিত রয়েছে।

গ্রন্থটি অখন্ড বিহারে রবীন্দ্রনাথের 888sport slot gameবিষয়ে রচিত হলেও লেখক এই গ্রন্থে 888sport slot gameসম্পৃক্ত নানা বিষয়ের পারম্পর্য উপস্থাপন করেছেন। নানা তথ্য, উপাত্ত এবং ছবি সংযোজিত হয়েছে এতে। গ্রন্থটির ভাষা ঋদ্ধ এবং প্রাঞ্জল। গ্রন্থটি পাঠ করে পাঠক উপকৃত হবেন এবং আনন্দ লাভ করবেন। r

 

রূপান্তরিত সমাজের

বয়ান

সোলায়মান সুমন

 

রূপান্তরের গল্পগাথা

মঞ্জু সরকার

 

অনুপ্রাণন

ডিসেম্বর ২০১৪

 

২৮০ টাকা

 

মঞ্জু সরকারের সাম্প্রতিক গল্পগ্রন্থের নাম রূপান্তরের গল্পগাথা। নয়টি ছোটগল্প আর একটি বড়গল্প নিয়ে লেখকের একাদশততম গল্পগ্রন্থ এটি। কোনো গল্পের নামে বইয়ের নামকরণ হয়নি। তাই পড়ার আগে প্রশ্ন জাগে, কীসের রূপান্তরের গল্প বলতে চেয়েছেন লেখক? তাঁর গল্পের বিষয় বা ফর্মের? সমাজ-সময়ের যুগলে বাঁধা বাস্তবতার নাকি অন্যকিছুর?

এ-প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পাঠকের অবিনাশী আয়োজন, মৃত্যুবান গল্পগ্রন্থ থেকে আজকের আলোচ্য গল্পগ্রন্থ রূপান্তরের গল্পগাথা পর্যন্ত একটা ধারাবাহিক পাঠ থাকা জরুরি। রূপান্তরের গল্পগাথা গ্রন্থের সূচনাগল্প ‘টাকার উপরে মেয়েটি’ রচিত হয়েছে ব্যাংকের এক যুবতী ক্যাশিয়ারের সঙ্গে মধ্যবয়সী ফার্নিচার ব্যবসায়ীর প্রেম নিয়ে। স্বাভাবিক প্রেমের সম্পর্ককে লাভ-লোকসানের হিসাব কীভাবে প্রভাবিত করে, পুঁজিবাদী অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে কতটা বড় হয়ে উঠতে পারে চিরন্তন প্রেম – এমন প্রশ্নকে কেন্দ্রে রেখেই যেন সুখপাঠ্য এক গল্প লিখেছেন লেখক। বিষয় হিসেবে নতুন কিছু নয়, তবে শেষের ইঙ্গিতটা পাঠককে এক নতুন ভাবনায় বুঁদ করে ফেলে। নতুন করে পড়তে ও ভাবতে বাধ্য করে। লেখক কতটা শক্তিমান হলে পরে এই পুঁজিবাদী সমাজের জটিল মুখটা এমন সরল বর্ণনায় স্পষ্ট করা সম্ভব! গল্পটির পাঠ শেষে এমন বোধের সামনে এসে দাঁড়াবে পাঠক। মঞ্জু সরকারের গ্রামীণ পটভূমিতে দারিদ্র্যপীড়িত প্রান্তিক জনজীবন নিয়ে লেখা গল্পের সঙ্গে যারা পরিচিত, তারা এই গ্রন্থের গল্পগুলোতে সেই গ্রামসমাজের রূপান্তরের নানা প্রকাশ দেখতে পাবেন। ‘কুড়িয়ে পাওয়া মোবাইল ফোন’ ও ‘অশ্বশক্তি’ গল্পে উত্তরবঙ্গের একসময়ের মঙ্গাপীড়িত খেটে-খাওয়া মানুষের হালফিল জীবনসংগ্রাম ও দ্রুত পরিবর্তনশীল সময়ে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়াস বিশ্বস্ততার সঙ্গে অাঁকা হয়েছে। সামন্তবাদী সমাজের আবহে একদা যে এমাদ টাকার হাঁড়ি পাওয়ার   স্বপ্নবাস্তবতায় বিশ্বাসী ছিল, সে একটা মোবাইল ফোন কুড়িয়ে পেয়েও দিশেহারা প্রতিক্রিয়ায় আক্ষেপ করে – ‘হায় আল্লাহ! সারাজীবন তোমার কাছে চাইলম কী, আর তুমি হামাকে দিলেন এ কী যন্ত্রণ্ণা!’ ‘অশ্বশক্তি’ গল্পেও দেখি ঘোড়াদাদা ফকিরের ঘোড়ার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখত যে হেকু, সে এখন ঘোড়ায় টানা ভ্যানের মালিক হওয়ার স্বপ্ন ব্যর্থ হওয়ার পর নিজেই ঘোড়ার শক্তি নিয়ে ভ্যান টানতে বাধ্য হয়। ‘দলেবলে ও বিলবোর্ডেও হুমায়ূন’ গল্পটি সাম্প্রতিক দলীয় ও ক্ষমতার রাজনীতিগ্রস্ত যুবকের সঙ্গে মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে। অর্থবিত্ত ও ভূসম্পত্তির মালিকানা নিয়ে সীমাহীন লোভ ও ভোগবাদ এই সময়ে ধনী-দরিদ্র সব পরিবারের মধ্যেই নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাত, ভাঙন সৃষ্টি করছে। এক ধরনের বিচ্ছিন্নতাবোধের সৃষ্টি হয়েছে সমাজে, যা আমাদের হাজার বছরের গড়ে ওঠা সুস্থ পরিবারকাঠামো ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এরই স্বাভাবিক প্রতিফলন দেখি ‘নবিতুন বেওয়ার দুই আনা গল্পের’ মুমূর্ষু বৃদ্ধা চরিত্রেও। গল্পটিও বিশ্বস্ততা ও সমাজবাস্তবতার নিরিখে মনে দাগ কাটে। কারণ এ-সমাজ আমাদের চেনা। কষ্টগুলো আমাদেরই। আমাদের চারপাশের বদলে যাওয়া মানুষগুলোর এমনই চেহারা। তারা আসলে বদলায় না। বদলাতে বাধ্য হয়। ‘সাবিত্রীবালার শত্রুমিত্র’ গল্পে প্রবীণ নায়কের শৈশবপ্রেমের বর্তমান পরিণতি এবং ‘শৌখিন টুরিস্টগাইডের স্বপ্নযাত্রা’য় আমেরিকান যুবতীকে নিয়ে ইংরেজি-জানা যুবকের স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের গল্পেও দেশকালের রূপান্তরের চিত্র স্পষ্ট হয়। ‘ইব্রাহিম দারোগার শৌর্যবীর্য’ ও ‘আত্মসমপর্ণ’ গল্পদুটির পটভূমিও গ্রাম। লোকসমাজের দৃষ্টিতে লেখা ঘুষখোর ইব্রাহিম দারোগা কিংবা মসজিদের চাঁদা সংগ্রাহক আবদুর রহমানের ব্যক্তিগত ন্যায়-অন্যায় কীর্তি ও পাপবোধ ছাপিয়ে লোকজীবন ও তার সংস্কারই কি বড় হয়ে উঠছে গল্প দুটিতে? এমন প্রশ্ন জাগাতে পারে। ব্যক্তির প্রয়োজনের কাছে অনেক সময় ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ পরাজিত হয়। তার পরও পাঠকের গল্প দুটির কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোর ওপর ঘৃণা তৈরি হয় না। কারণ তারা জীবনকে ভালোবাসে এবং জীবনের জন্য তাদের এ-পতন। কেন জানি পাঠক এর জন্য পরিবর্তিত সমাজব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বাধ্য হয়। এই যে নিরুক্ত অবস্থান থেকে চরিত্র নির্মাণের নৈপুণ্য – সেখানেই মঞ্জু সরকারের নৈপুণ্য।

লেখক যে রূপান্তরের গল্পগাথা শোনাতে চান, তা সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে ‘জান্তব’ নামের বড়গল্পে। ত্রিশ পৃষ্ঠার গল্পটিকে নভেলও বলা যেতে পারে কিংবা একটি বড় 888sport alternative linkের প্রাথমিক প্রস্ত্ততি…। গাঁয়ের বেহদ্দ কৃষকপরিবারের সন্তান আবদুল আজিজ লেখাপড়া শিখে সরকারি পশুসম্পদ অফিসে ভ্যাটারনিটি ফিল্ড অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে চাকরি পেয়েছিল। অবসর নিয়ে সে-গাঁয়ের ব্যস্ত গো-চিকিৎসক হয়েছে। সাব-হেডিংয়ের কাব্যিকতায় গো-চিকিৎসক আজিজের একদিনের জীবনযাত্রার বয়ানে এবং তার 888sport sign up bonusপ্রবাহের ভেতর দিয়ে গ্রামসমাজের রূপান্তর যেমন ধরা পড়ে, তেমনি পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের চিত্রগুলো হিংস্র পাশবিকতায় মুখর হয়ে ওঠে। আবদুল আজিজের অন্তিম জীবনের হতাশা, ব্যর্থতা ও যন্ত্রণা মর্মস্পর্শী হয়ে ওঠে।

যে গ্রামীণ সমাজকে নিয়ে মঞ্জু সরকার গল্প লেখা শুরু করেছিলেন আশির দশকে, আজ সে-সমাজ নেই। তার রূপান্তর ঘটেছে। মানুষগুলোর মধ্যেও এসেছে পরিবর্তন। এক সৎ888sport live chatী হিসেবে সেই সত্যটিকে তুলে আনা হয়েছে এ-গ্রন্থে। মঞ্জু সরকার সমাজসচেতন ও দায়িত্বশীল গল্পকার হিসেবে 888sport live footballমহলে পরিচিত। তবে সমাজ-সময়ের দ্রুত রূপান্তরের প্রভাবে তার গল্পের প্রকাশভঙ্গিতে নতুনত্ব বা রূপান্তর এসেছে বলে খুব একটা মনে হয় না। বাস্তবতার নববিন্যাস ও রূপায়ণে গল্পে নতুন নিরীক্ষার প্রত্যাশা পাঠক হিসেবে করাই যেতে পারে। তার পরও রূপান্তরের গল্পগাথা বাস্তববাদী গল্পের ধারায় সফল ও উল্লেখযোগ্য সংযোজন বলে বলে আমার বিশ্বাস। বইটির দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদটির কৃতিত্ব সমর মজুমদারের। বইটির সার্বিক সাফল্যের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। r

 

888sport app download apkয় জীবনের উৎসব

 

বিপ্রদাশ বড়ুয়া

 

কফিনে কাঠগোলাপ

নওশাদ জামিল

 

ঐতিহ্য

888sport app, ২০১৪

 

১২০ টাকা

888sport app download apk নির্মাণকলায় কবি অন্ধ ও উদ্দেশ্যহীন পথের যাত্রী নন। 888sport app download apkর সারা শরীর তিনি নানারকম অলঙ্কারে সাজিয়ে তোলেন। সেই ভূষণেরও আছে শব্দগন্ধচিত্রমাখা। পাঠক-পাঠিকা সেই বাকবৈভব বা চিত্রকল্প বা বাকপ্রতিমায় সওয়ার হয়ে যান লক্ষ্যের দিকেই। এতে কবির উদ্দেশ্য ও মনোভঙ্গি পাঠকের মনে অভিঘাত সৃষ্টি করে, 888sport app download apkপাঠের আনন্দ উপভোগ্য হয়ে ওঠে বিশেষ কতগুলো বাকবৈভব বা চিত্রকল্পের আয়োজনে।

কবি নওশাদ জামিলের কাব্যগ্রন্থ কফিনে কাঠগোলাপ পড়তে পড়তে মনে পড়ল এই কথা। কাঠগোলাপ সাদা, গোলাপি, গাঢ় লাল, হলুদ এবং সাদা-হলুদের পাশে ডোরাও থাকতে পারে। কবি তাঁর চিত্রগুচ্ছে ওই নানা রঙের ফুলকে শুধু বর্ণিল করেননি, করেছেন শোক ও দহনেরও প্রতিমা। মৃত মাকে উৎসর্গ করা দশ পঙ্ক্তির 888sport app download apkয় আছে বাকপ্রতিমা বা চিত্রকল্প।

শির শির করে নড়ে ওঠে বাঁশপাতা

কেঁপে ওঠে কবরের ধূলি – আর্তধ্বনি

হারায় সুদূরে।

প্রথমে ‘শির শিরে’ শব্দপ্রতিমা, ‘নড়ে ওঠে বাঁশপাতা’য় দৃশ্যমান। ‘কেঁপে ওঠে কবরের ধূলি’তে জাড্য ও গতিমান প্রতিমা যুগপৎ সঞ্চরমান। ‘আর্তধ্বনি হারায় সুদূরে’ বাকবন্ধে আছে শোক-বেদনা ও মনস্বিতার বাগ্বৈভব। এ যেন কবির সতর্কবাণী পাঠকদের জন্য। দ্বিতীয় স্তবকে আছে কাঁঠালছায়া, মেঠোপথ, ধুলো ও ধোঁয়ার চিত্রগন্ধ। 888sport app download apkর বইয়ে প্রবেশের আগে যেন কবি আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন অথবা নিয়ে চলেছেন মাঠঘাট পার করে আস্তে-আস্তে দূরে কোথাও! তারপরেই আছে মাকে হারানোর বেদনা, অর্থাৎ মননশীল বাকপ্রতিমা।

888sport app download apkটির তৃতীয় দু-পঙ্ক্তির স্তবকে আছে ‘পেছনে সবুজ তেপান্তর’ এবং পেছন থেকে ধীরে-ধীরে ছুঁয়ে যাওয়া এবং শেষে মায়ের মৃত্যুর অভিঘাত তীব্র কিন্তু সহনশীলতার মননশীল বাকপ্রতিমা এনে জানিয়ে দেন কবি, ‘আজ সরে গেল ছায়া’। মায়ের ছায়া সরে যাওয়ায় কোথাও হাহাকার নেই, কিন্তু ওই নেই-এর মধ্যে মননশীলতার বাকবৈভব লুকানো রয়েছে। এ যেন ‘অনেক কথা যাও যে বলে কোনো কথা না বলি’ রবীন্দ্রসংগীতের অভিঘাত।

কফিনে কাঠগোলাপ কাব্যগ্রন্থের প্রথমেই সিরিজ 888sport app download apk, শিরোনাম ‘সুরের সুড়ঙ্গ’। এক নম্বর 888sport app download apkয় কবি নিয়ে এসেছেন ‘সাগর’, ‘স্ফটিক সময়’, ‘ঢেউকেলি’, ‘ঢেউগুলি’, ‘ভাসমান মেঘ’, ‘বালি’ ও ‘সন্ন্যাসজীবন’ আর এই চিত্রকল্প কাব্যজুড়ে প্রতিনিধিত্বশীল হয়ে উঠেছে। দুই নম্বর 888sport app download apkয় যুক্ত হয়েছে ‘ঘুম’, ‘জাগরণ’, ‘হাওয়া’, ‘বাসনা’ প্রভৃতি। তিন নম্বর আবার ‘বালুতট’ এসেছে 888sport sign up bonusজাগানিয়া হয়ে। প্রথম 888sport app download apkর ‘বালির প্রাসাদ’ এখানে 888sport sign up bonusর কাঁপন হয়ে শূন্যতার হাহাকারে পরিণত। ফুলদানি 888sport app download apkয় বালি, ঢেউ, নিঝুম দ্বীপ দৃশ্যময়, শব্দময় থেকে সংহার সৃষ্টিকারী হয়ে উঠেছে, সামুদ্রিক ঝড় হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘরের পাঁজরে।

ঢেউ আসে, ঢেউয়ের ওপর ঢেউ এসে

আছড়ে পড়ে ভেঙে পড়ে ঘরের পাঁজরে

ফুলদানি ডোবে, ভাসে শুধু ঝরা ফুল!

কবি সেই ‘বালির ওপরে অাঁকি ঘর, অাঁখি তোমার অধর’ লেখেন ‘পাগল প্রলাপ’ 888sport app download apkয়। ‘সন্ধ্যার সানাই’ 888sport app download apkয় ওই সংহারক ঢেউ প্রিয়তমার আগমনে হয়ে ওঠে, ‘আহ্লাদে-আশ্লেষে ছুঁয়ে যায়/ স্তব্ধ রাত স্তব্ধ ঢেউ’। জলোচ্ছ্বাসের করাল ঢেউ জীবনকে স্তব্ধ করতে পারে না, জীবন বয়ে চলে।

‘সাগরকুড়ানি’ 888sport app download apkয় সাগর, ঢেউ, সাগরের সুর, রাত্রি, জ্যোৎস্না, ফুল, পাখি, বালুকাবেলা, সবুজ পাতা, শিউলি, হাওয়ার চাবুক, রংধনু, সূর্য, চাঁদ, পূর্ণিমা এবং সাগরের রূপসাগর হয়ে ওঠার আন্দোলন শোনা যায়। সাগর যেমন রূপসাগর, তেমনি পাখিও হয়ে ওঠে জলধোয়া। সাগর হয়ে ওঠে উত্তাল, জীবন চলে যায় মৃত্যুর বালুকাবেলায় সমাহিত হয়ে। মেঘগুলো হয়ে যায় আবেগের, সব নিয়ে গেছে সাগর, কিন্তু শেষ করে দিয়ে যেতে পারেনি।

…হিংস্রতায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাই

তোমার চিবুক, অশ্রুবিন্দু। একরাশ

রংধনু ভাসার পরে মিলিয়ে মিলিয়ে

ছেড়ে দিই সব নীল, সমুদ্রশুক্রাণু।

অনাহারে, তীব্রদাহ নিয়ে জেগে থাকে

পলল ব-দ্বীপ। এইখানে পেশিগুলো

ফেটে পড়ে নেচে ওঠে ক্রোধে, চিৎকারে।

এ যেন কবির বাকবৈভব রচনার মুক্তিযুদ্ধযাত্রা। দৃশ্যমান, শ্রব্যমান, গন্ধময়, মননজাত সব রকম শৈলীতে সমুদ্রমন্থন। ঢেউয়ের মতো প্রবহমান বাকবৈভব রচনায় অপরাজেয় অক্লান্ত। সম্পূর্ণ 888sport app download apkটিই একটি বিশাল চিত্রপট ওই সমুদ্রের মতো, কবি এঁকেই চলেছেন দশ হাতে, ছত্রিশ রাগিণীতে।

সমস্ত শরীরে বালি মেখে, জলে ভিজে

দাঁড়িয়েছি ঢেউয়ের ফণায় – জীবনের

দায়-দেনা আর নেই। মরণের সঙ্গে

জীবন জেগেছে, প্রেম এসে জাগিয়েছে

ভালোবাসা – আমার তো আর ভয় নেই!

বোঝা যায়, কবি নওশাদ জামিল বঙ্গোপসাগরকে ভালোবেসেছেন। বাংলা 888sport live footballে অবহেলিত বঙ্গোপসাগর মন্থনের এই কবিকে তাঁর বাগবৈভব নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতিতে সুপ্রভাত জানাতে পারি।

কাব্যগ্রন্থের প্রথম পর্ব এখানে সমাপ্ত। 888sport app 888sport app download apkর মতো এই অংশে ‘সমুদ্রকুড়ানি’ প্রতিনিধি 888sport app download apk। দ্বিতীয় পর্বে 888sport app download apkগুলি গদ্যে লেখা। গদ্য888sport app download apkয় এসেও পাখি, পাহাড়, নদী, মেঘ ও মেঘলা হাসি, সুর, ঢেউ, রোদ্দুর, ধুলো, রংধনু, চুম্বন, সবুজ, গাছপালার বাকপ্রতিমা কবির মনোভঙ্গির প্রকাশে উত্তুঙ্গ। বইয়ের এই পর্বের নাম ‘কফিনে কাঠগোলাপ’। এখানে মৃত্যু ও জীবন রূপান্তরিত ও চলমান। পূর্ববর্তী মেঘ, সূর্য, আকাশ, ফুল, সবুজ, নদী বা সাগরের স্রোত, বালুকাবেলা, তরঙ্গ, কামনাবহ্নি, বৃষ্টি, গাছপালা, পোকামাকড় পরিবর্তিত হয়েছে নতুন ও পরিবর্তিত বাকপ্রতিমায়। এই চলমান জীবনে মৃত্যু এসে খেলা করে, কিন্তু জীবন তেমনি প্রবহমান মায়ের মৃত্যুতেও। তারই চিত্রকল্প পরিণত হয়ে উঠেছে ছয় নম্বর 888sport app download apkয়।

তোমাকে দেখি না, তা নয়। সুরের ভেতর দিয়ে, ঘুমের ভেতর দিয়ে দেখি অপস্রিয়মাণ রেখা খেলা করে তোমার দীঘল চুলে, মুখের আভায়। এখন তো ওই রেখা নেই, ধূলিওড়া দিন নেই। তবুও হঠাৎ উড়ে আসে শালপাতা হাহাকার।

বিকালের মরা রোদ নিয়ে ফিরে আসি খেয়াঘাট থেকে। পেছনে তখন শীর্ণ বুড়িগঙ্গা পড়ে আছে গভীর ছায়ায়। ছায়াগুলো বড় আনমনে। উড়ে এসে জুড়ে বসে ছোট কাটরার ভাঙা জানালায়। রাতের কালচে দাগ মুছে দিয়ে ভুলে যাব যদি এই ইতিহাস – তবে কেন জেগে ওঠে মানুষের বেদনা সুর?

প্রথম অংশে দশ নম্বর 888sport app download apkয় সুর এসেছে কীভাবে দেখুন, ‘কাঁদে না কাঁপে না সুর দূরের হাওয়ায়/ এত সুর নয় অন্ধ সানাইপ্রহার/ কোথা থেকে এল? উদগ্রীব হয়ে শুনি/ সুর সে তো তোমার মতো একা নয়।’ এই সুর মৃত্যুর নয়, বড় জোর অন্ধ কিন্তু শোনার আকুতি জাগায়।’ কিন্তু পরে এই সুর বাকপ্রতিমা এসেছে মৃত্যুর দুয়ার ধরে। এই বাকপ্রতিমা মননজাত, এই সুর কোনো বাদ্যযন্ত্র থেকে সংবেদনজ্ঞাপক নয়। বাকপ্রতিমার  রূপান্তর ঘটেছে এখানে। কাব্যে এই রূপান্তর ঘটে সচলতায়, স্বতঃস্ফূর্ততায়। রসবতী-রসিক পাঠকরাও এই সচেতনতার অধিকারী। ফলে কফিন বাক্সোতে এখন আর মা নয়, আছে অন্য এক শোক। সেই শোক দিগন্ত ও অন্তরপ্লাবী।

মাঝেমধ্যে এতো দুঃখ হয় যে, ভার বহন করতে পারি না, হাঁটতে পারি না। বশ্যতা স্বীকার করি, শুয়ে শুয়ে প্রার্থনা করি। ঘুমের ভেতর লাফিয়ে উঠি ভোররাতে। আমারই কাটামুন্ডু কেউ কি ভাসিয়ে দিয়েছে গভীর তরঙ্গে?

সারাক্ষণ মাথার ভেতর ঘোরে উড়ন্ত এক কফিন। নীলচে রঙের কফিন। সুদূর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে এসেছে এইখানে, থেমেছে আমারই ঘাটে।

রাত্রি, কাটামুন্ডু, তরঙ্গ, কফিন, ভূমধ্যসাগর, খেয়াঘাট আর আগের মতো নেই। আগের এসব বাকপ্রতিমা বা চিত্রকল্প        রূপান্তরিত হয়ে গেছে। এমনকি ব্যক্তিগত না থেকে কাছের সাগরেও ভূমধ্যসাগর এসে বিলীন হয়ে গেছে। আশা করি এও শেষযাত্রা নয়। সুরছন্দ-গন্ধচিত্রময় কবির এই মানসযাত্রায় সঙ্গী যেমন কাব্যের শাশ্বত উত্তরাধিকার, তেমনই সঙ্গী প্রকৃতির রূপরস। আমার বিশ্বাস, নওশাদ জামিলের এই 888sport app download apkমালা হয়ে উঠেছে আমাদেরও নির্মল আনন্দ-বেদনার কাব্যগাথা। r

 

অন্য ভাষার 888sport app download apk

শিহাব শাহরিয়ার

 

অন্যস্বর : নির্বাচিত মণিপুরী 888sport app download apk

এ কে শেরাম

 

কথামালা প্রকাশন

২০১১

 

১৮০ টাকা

 

বাংলা ভাষার পাশাপাশি এদেশে 888sport app যে-কটি ভাষায় 888sport live football-চর্চা হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের মণিপুরি ভাষা। এই ভাষার অনেক কবি ও লেখক প্রাচীনকাল থেকেই তাঁদের মাতৃভাষায় 888sport live football-চর্চা করছেন। একইসঙ্গে বিশেষ করে স্বাধীনতা-উত্তরকালে তাঁরা বাংলা ভাষাতেও লেখালেখি করছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অনেক মণিপুরি ভাষার মূলধারার লেখক নানা কারণে 888sport apps থেকে পাড়ি জমিয়ে চলে গেছেন পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে। মূলত মণিপুর রাজ্যে। আমরা সবাই জানি, মণিপুরি নৃত্য জগদ্বিখ্যাত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না, মণিপুরি 888sport live footballও অনেক উঁচুমানের। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মণিপুরে একটি 888sport live football উৎসবে যোগদান করে এর অনেক প্রমাণ আমি পেয়েছি। 888sport appsেও এ-সময়ে বেশ কজন শক্তিশালী মণিপুরি ভাষার লেখক রয়েছেন। দুদেশেই নাম করছেন তাঁদের নিজেদের সৃজনশীল লেখার মাধ্যমে। এঁদেরই অন্যতম একজন হলেন এ কে শেরাম।

এ কে শেরাম একাধারে কবি, লেখক, 888sport app download apk latest versionক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। দুই ভাষায় মিলিয়ে ইতোমধ্যে তাঁর বারোটি বিভিন্ন বিষয়ে গ্রন্থ বেরিয়েছে এবং এসব 888sport live footballকর্মের জন্য তিনি 888sport apps, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশকিছু 888sport app download bdও পেয়েছেন। বলা যায়, এই সময়ে 888sport appsে মণিপুরি ভাষার প্রধানতম লেখক তিনি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখলেও মূলত তিনি কবি। 888sport appsের 888sport app download apk শাখায় এ কে শেরাম একটি উল্লেখযোগ্য নাম। একজন সম্পাদক হিসেবেও তিনি অনেক দক্ষ। এর প্রমাণ পাই আমরা তাঁর সম্পাদিত চমৎকার গ্রন্থ অন্যস্বর : নির্বাচিত মণিপুরী 888sport app download apkয়। এই গ্রন্থে 888sport appsের চারজন, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের একজন, ত্রিপুরা রাজ্যের তিনজন, আসাম প্রদেশের চারজন এবং মণিপুর রাজ্যের আটাশজন মণিপুরি ভাষার কবির 888sport app download apk বাংলা 888sport app download apk latest version 888sport app download apk ও কবিদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিসহ সম্পাদনা করেছেন কবি এ কে শেরাম। গ্রন্থের শুরুতেই তিনি প্রসঙ্গকথায় একটি চমৎকার ভূমিকায় মণিপুরিদের প্রখর প্রাচীন ইতিহাস ও 888sport live football সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। তিনি বলেছেন : ‘888sport appsে মণিপুরী বসতি প্রায় তিনশত বৎসরের সময়কালে মণিপুরী 888sport app download apkর সামগ্রিক একটি পরিচয় তুলে ধরা সম্ভব এমন একটি গ্রন্থ হিসেবে বাংলা 888sport app download apk latest versionে মণিপুরি 888sport app download apkর পূর্ণাঙ্গ কোনো সংকলনগ্রন্থ এর আগে প্রকাশিত হয়নি। ১৯৯০ সালে প্রথম 888sport appsের ১০ জন মণিপুরি কবির প্রত্যেকের দুটি করে 888sport app download apk নিয়ে পাশাপাশি বাংলা 888sport app download apk latest versionসহ 888sport appsের মণিপুরী 888sport app download apk শিরোনামে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তার দীর্ঘ 888sport cricket BPL rate বছর পর ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়, যেখানে কবি ও 888sport app download apkর 888sport free bet বৃদ্ধি করে মোট ১৭ জন কবির ৫৫টি 888sport app download apk অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সকল ক্ষেত্রেই মূল মণিপুরি 888sport app download apkর পাশাপাশি বাংলা 888sport app download apk latest version দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালে মণিপুরি ভাষার কবি মনিপুরের বর্তমান মহিলা কবিদের এক অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্ব^র ভারতের 888sport live football একাডেমি 888sport app download bdপ্রাপ্ত কবি এস ভানুমতি দেবীর নির্বাচিত 888sport app download apkর বাংলা 888sport app download apk latest versionে প্রকাশিত হয় এস ভানুমতি দেবীর নির্বাচিত 888sport app download apk। কিন্তু এসবই মণিপুরি 888sport app download apkর এক খন্ডচিত্র মাত্র। ফলে প্রাচীনতায় ও ঋদ্ধতায় যথেষ্ট গরীয়ান মণিপুরি 888sport app download apkর যথাসম্ভব সামগ্রিক চিত্রকে এক মলাটে আবদ্ধ করে বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের সামনে তুলে ধরার আকাঙ্ক্ষা আর প্রয়োজনীয়তাটুকু সবসময়ই অনুভব করেছি। সেই অনুভবেরই রূপায়ণ এই গ্রন্থের প্রকাশ – অন্যস্বর : নির্বাচিত মণিপুরী 888sport app download apk।

এই গ্রন্থে 888sport appsের কবি এ কে শেরাম, কবি খোইরোম ইন্দ্রজিৎ, কবি শেরাম নিরঞ্জন ও কবি হামোম প্রমোদ, মেঘালয়ের কবি রাজমণি নোংথোম্বা, ত্রিপুরার কবি নিংথৌখোংজম দিলীপ, কবি থাংজম রথীন্দ্র, কবি সোরোকখাইবম গম্ভিনী, আসামের সৌগাইজম ব্রজেশ্বর সিংহ, শগোলশেম ধবল, কবি খৈরুদ্দিন চৌধুরী, কবি লাইতোনজম নীলমনি এবং মণিপুরের কবিহিজম অঙাংহল সিংহ, কবি খবাইরাকপম চাউবা, কবি লামাবম কমল, কবি হিজম ইরাবত সিংহ, কবি অশাংবম মীনকেতন সিংহ, কবি রাজকুমার সুরেন্দ্রজিৎ সিংহ, কবি এলাংবম নীলাকান্ত সিংহ, কবি লাইশ্রম সমরেন্দ্র, কবি কাঙজম পদ্মকুমার সিংহ, কবি য়েংখোম বিহারী সিংহ, কবি যুগেশ্বর ওয়াইখবা, কবি নোংথোম্বম শ্রীবীরেন, কবিসলাম তোম্বা, কবি নন্দ মৈতৈ, কবি রাজকুমার মধুরীর সিংহ, কবি এস ভানমতি দেবী, কবি থাংজম ইবোপিশক, কবি য়ুমলেম্বম ইবোমচা, কবি রাজকুমার ভুবনসণা, কবি মেমচৌবী, কবি মোইরাংথেম বরকন্যা, কবি রঘু লৈশাংথেম, কবি দিলিপ ময়েংবম, কবি বিরেন্দ্রজিৎ নাউরেম, কবি লাইরেল্লাকপম ইবেমহল, কবি শরতচান্দ থিয়াম, কবি লনচেনবা মীতৈ ও কবি কোইজম শান্তিবালাসহ মোট ৪০ জন কবির সংক্ষিপ্ত জীবনীসহ ৮২টি 888sport app download apk স্থান পেয়েছে। গ্রন্থের প্রথম ফ্ল্যাপে বলা হয়েছে – ‘মণিপুরী 888sport app download apkর প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হয় ‘ঔগ্রী’কে, যা ৩৩ খ্রিষ্টাব্দে মহারাজ পাংবার সিংহাসনারোহণকালে সূর্য-দেবতার উদ্দেশে নিবেদিত হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। সেই হিসেবে মণিপুরী 888sport app download apkর বয়ঃক্রম প্রায় দুই হাজার বৎসরের। তবে প্রাপ্ত প্রথম লিখিত 888sport live footballের নিদর্শন হলো ‘পোইরৈতোন খুনথোকপা’, যার রচনাকাল তৃতীয় শতাব্দী বলে অনুমিত। 888sport appsে মণিপুরি 888sport live football চর্চার প্রাতিষ্ঠানিক সূচনা ১৯৭৫ সালে ‘পূজারী 888sport live football সংসদ’ গঠনের (দুবছর পরে যা ‘888sport apps মণিপুরী 888sport live football সংসদ’ নামকরণ করা হয়) এবং সংসদের মুখপত্র হিসেবে মণিপুরি ও বাংলা ভাষার দ্বিভাষী সংকলন ‘দীপান্বিতা’ প্রকাশের মাধ্যমে। প্রাচীন ও ঋদ্ধতায় যথেষ্ট গরীয়ান মণিপুরি 888sport app download apkর যথাসম্ভব সামগ্রিক চিত্রকে এক মলাটে আবদ্ধ করে বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের সামনে তুলে ধরার আকাঙ্ক্ষা আর প্রয়োজনীয়তা থেকেই ‘অন্যস্বর : মণিপুরী 888sport app download apk’ – এই গ্রন্থের পরিকল্পনা।’ ফ্ল্যাপে আরো বলা হয়েছে – ‘নানা সীমাবদ্ধতা এবং বিভিন্ন অন্তরায়ের কারণে মণিপুরী 888sport app download apkর সম্পূর্ণ পরিচয় বা 888sport app download apkর ধারাকে পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপনে সক্ষম এমন কোনো গ্রন্থ হয়তো হয়নি এই সংকলনগ্রন্থ। তবু এই গ্রন্থে আধুনিক মণিপুরী 888sport app download apkর বিশেষত বিংশ শতাব্দীর মণিপুরী 888sport app download apkর একটি সাধারণ চরিত্র অনুসন্ধিৎসু পাঠকের সামনে পরিস্ফুট করতে সক্ষম হবে এই বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা থেকেই গ্রন্থটি বাংলাভাষী 888sport app download apkপ্রেমী পাঠকের হাতে তুলে দেয়া হলো।’

প্রকৃত অর্থে, এর আগে মণিপুরি 888sport app download apk বা 888sport live football বাংলা ভাষায় এমন 888sport app download apk latest version আমরা পাইনি। আমি এ কে শেরাম-সম্পাদিত আলোচ্য অন্যস্বর : নির্বাচিত মণিপুরী 888sport app download apk গ্রন্থটির 888sport app download apkগুলো মন দিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছি। বাংলা অঞ্চলে এবং এর আশেপাশে মণিপুরিরা বসবাস করায় তাদের 888sport live footballও বাংলা 888sport live footballের সঙ্গে বিষয় ও আঙ্গিকে অনেক মিল লক্ষণীয়। মূলত উনিশ শতকের শেষভাগে মণিপুরিরা আধুনিক 888sport live footballের ধরায় আসে। জানা গেছে, তখনো মণিপুর অঞ্চলে বাংলায় রচিত চৈতন্য-প্রবর্তিত বৈষ্ণব ধারার প্রবল প্রতাপ ছিল। পাশাপাশি আরো একটি কথা বলা দরকার যে, বাঙালিদের মতো মণিপুরিরাও শোষিত জাতি। ফলে তাদের 888sport live footballেও প্রতিফলন ঘটেছে সেই শোষণ, শাসন, বঞ্চনা, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা, মুক্ত-মাতৃভূমিতে সূর্যের আলোর সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া। বিশেষ করে পাহাড়ের পাদদেশে প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমিতে বাস করে এই ভাষার মানুষেরা বড়বেশি প্রকৃতি-নিসর্গ, মানবপ্রেম আর দেশপ্রেমেও খুবই উন্মুখ। ফলে তাদের 888sport live footballে সহজেই ফুটে ওঠে উল্লিখিত উপাদানসমূহ। তারা মা, মাটি, মাতৃভূমিকেও দারুণ ভক্তি করে। আর ব্যক্তিগত প্রেম সৌন্দর্যানুভূতি তো আছেই। আমরা কয়েকজন কবির কয়েকটি 888sport app download apkর অংশ বিশেষ এখন উপস্থাপন করছি। লক্ষণীয় যে, এঁদের 888sport app download apkর ভাষা সহজ-সরল ও সাধারণ। প্রয়োজনীয় উপমা ছাড়া মনের ভাবকে সরাসরি ব্যক্ত করেছেন অধিকাংশ কবি। যেমন :

 

নানা কাজের ভারে ক্ষতবিক্ষত/ গায়ে কাঁটা দেয়া আমার মায়ের আঙুলগুলো/ সস্নেহে সে বুলিয়ে দিতো আমার মুখে-পিঠে/ মনে পড়ে আজ; ইচ্ছে হয় আজও দিক/ যখন ক্লান্ত আমি, নিরুপায় অবসন্ন। (মায়ের আঙুল, এস ভানুমতি দেবী, মণিপুর, পৃ ৬০)।

প্রথমে নিভিয়ে দিই আলো, মোমবাতি, বাল্ব/ বন্ধ করি জানালা দরোজা সব/ সব পর্দা ঝুলিয়ে দিই, বন্ধ করি সব ফাঁক-ফোকর/ তারপর তৃতীয় জনমানবের                অস্তিত্বহীন নিশিছদ্র অন্ধকারে/ তুমি-আমি আমরা দু’জন চুপচাপ/ না-বলা কথাসব বলে ফেলি/ না-করা সব কাজ সেরে ফেলি/ তাতেও যদি মন না ভরে হে অতৃপ্ত হৃদয়/ তোমার কোমল হাত আর আমার কঠিন হাত/ একসাথে খেলা করুক উত্তর-দক্ষিণ, উত্তর-দক্ষিণ। (একটি মধুর স্বপ্ন, হামোম প্রমোদ, 888sport apps, পৃ ১২৫)।

কিছু কালো কাক ছিঁড়ে-খুঁড়ে নিতে চায় আমার হৃদয়,/ তাদের তীক্ষ্ণ চঞ্চুর আঘাতে -/ কিন্তু তবু রক্তাক্ত করতে পারে না;/ কারণ,/ আমার হৃদয়ে জ্বলে স্বপ্নের এক উজ্জ্বল আলো। (রাত্রির গোপন যন্ত্রণার ভেতর, শেরাম নিরঞ্জন, 888sport apps, পৃ ১২৩-১২৪)।

নগ্নপদে হেঁটে যাচ্ছি?/ খু-উ-ব ধীরে/ যেন পায়ে-চাপ ঘাসগুলোর/ একটুও ব্যথা না লাগে/ পৃথিবীও যেন কোনোক্রমে টের না পায়/ কিন্তু কেন?/ কোনো প্রশ্ন করো না আমাকে।/ হেঁটেই চলেছি আমি – এভাবেই -? কোথায়? জানি না তা-ও। (করো না প্রশ্ন কোনো, সোরোকখাইবম গম্ভিনী, ত্রিপুরা, পৃ ১১০)।

অস্তায়মান সূর্যের/ রক্তিম রঙে রঞ্জিত পশ্চিম আকাশে/ সেদিন দেখি একঝাঁক পাখি/ ক্লান্ত ডানা তাদের দিয়েছে মেলে,/ অন্তহীন আশার 888sport app download apkকুঞ্জে… (নক্ষত্রের হাসি, শগোলশেম ধবল,  আসাম)।

কাল যা ছিল কলি/ আজ তা প্রস্ফুটিত ফুল,/ যা ছিল পূর্ণ বিকশিত/ তা’ই আজ ঝরে পড়া মাটির বুকে।/ একদিন ছিলো পূর্ণিমার রাত/ অমাবশ্যা আসে তার পিছু পিছু,/ সূর্য ছড়ায় আলো দিনের বেলা/ রাত্রি হলে বদলে যায় তার রূপ। (সময়ের স্রোতে, রাজামণি নোংথোম্বা, মেঘালয়, পৃ ১১২)।

ধীরে ধীরে জ্বলে উঠছে প্রদীপের আলো।/ ভরাট হয়ে যাওয়া খালের খানা-খন্দে/ কাগজের নৌকা ভাসিয়ে দিয়ে/ যে সব শিশুরা খেলা করেছিল আনন্দে/ তাদের সবাই এখন নৌকা ফেলে রেখে/ একে একে ফিরে গেছে ঘরে।/ সন্ধ্যার শান্ত বাতাসে/ একটু একটু করে ভেসে চলে/ কাগজের নৌকা;/ আর সেই নৌকা কেবল অপেক্ষা করে/ কখন ভোর হবে। (সন্ধ্যায়, শরতচান্দ থিয়াম,  মণিপুর, পৃ ৮৭)।

বাংলার মণিপুরী হৃদয়ের প্রাণরসে রঞ্জিত/ হে কৃষ্ণচূড়া – বর্ণিল বসন্তের রক্তলাল কুসুম।/ আমাকে স্বাগত জানালে তুমি মিষ্টি হাসির সাদর সম্ভাষণে/ তোমার নিবিড় জনপদের শ্যামল সৌন্দর্যে/ দু’চোখ ভরে আমি দেখেছি তোমাকে, হে সুন্দরী/ দেখেছি তোমার পদ্ম, শাপলা আর শালুকে ভরা/ হিজল বৃক্ষের সারিতে শোভিত বিল আর হাওর/ তোমার ধীরপ্রবাহিনী নদীতে, হে সুন্দরী বাংলা/ ভাটিয়ালি সঙ্গীতের যে সুর বাজে/ বিষণ্ণ দুপুরে পদ্মার তীরে তীরে। (বাংলা, তোমার 888sport sign up bonus, খৈরুদ্দীন চৌধুরী, আসাম, পৃ ১০৩)।

ভালবাসা একদিন স্পর্শ করেছিল পাহাড়ের চূড়া/ বরফ গলে গলে ভাসিয়ে দিলো পাথর-প্রান্তর/ সেই থেকে জন্ম হলো নদীর।/ ভালবাসা একদিন ছুঁয়েছিল বিষাদের তীক্ষ্ণ কাঁটা/ রক্তাক্ত হৃদয়ে তবু হেসে উঠেছিল সে অপরূপ,/ সেই থেকে হলো গোলাপ। (জন্ম, এ কে শেরাম, 888sport apps,  পৃ ১১৭)। r