বর্ষার হাইকু

মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
কয়েকশ বছর ধরে জাপানের কবিরা হক্কু বা হাইকু 888sport app download apk মক্স করে আসছে। মূলে এ পাঁচ-পংক্তির 888sport app download apk টান্কা-র প্রথম অংশ ছিল। অনেক সময়ে দুজনে লিখতো, একজন তিন লাইন, অন্য দুজন অন্য দুই লাইন। কালক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণ রীতি হিসেবে হাইকুর বিকাশ ঘটে।
হাইকুতে সতেরোটি সিলেবল থাকে, প্রথম ও তৃতীয় লাইনে পাঁচটি এবং দ্বিতীয় লাইনে সাতটি। মওশুম বা মওশুম-সংক্রান্ত একটা কুঞ্জিকা-শব্দ থাকে। যা থেকে মওশুমের ঠিকানা আন্দাজ করা যায়। দু-একটা কথা থেকে পাঠক বা শ্রোতা আবহাওয়া, গাছ-গাছড়া বা পোকা-মাকড়ের ইঙ্গিত পায়। হাইকুতে অনেক সময়ে ঋতুসংবাদ বা প্রকৃতিচিত্র ছাড়া আপাতদৃষ্টিতে পরস্পরবিরুদ্ধ দুটি ভাবের অন্তর্নিহিত এক সমন্বয়েরও ইশারা থাকে।
হাইকু-সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জাপানযাত্রীতে বলেন, – ‘এ ছবি দেখার 888sport app download apk, গান গাওয়ার 888sport app download apk নয়।’
সবচেয়ে নামকরা হাইকু কবি বাশো (১৬৪৪-৯৪) জেন বৌদ্ধধর্মের অনুসারী ছিলেন। এরপর দুজন নামকরা কবি হচ্ছেন বুসন (১৭১৫-৮৩) ও ইসা (১৭৬২-১৮২৬)। হাইকু 888sport app download apk latest version করা কঠিন। এর মধ্যে উদ্ধৃতি, উপমা, অধ্যাস এবং দ্ব্যর্থবোধক ভাব রয়েছে। এ ছাড়া বহুসিলেবল-বিশিষ্ট জাপানি ভাষা থেকে 888sport app download apk latest version করাও বেশ কঠিন। হাইকু অনেক সময়ে সমগ্র কোনো ভাব বা সম্পূর্ণ কোনো বক্তব্যের নিদর্শন নয়। পাঠক তার চিন্তা, কল্পনা ও কামনা-বাসনার রঙে রং মিশিয়ে হাইকু পড়বেন স্বাধীন নির্ভার মন নিয়ে।
আধুনিক জাপানি কবিদের অনেকেরই ধারণা বাশো সঙ্গে হাইকুর শুরু এবং শেষ। এখানে আমরা বর্ষার হাইকু বাশোকে দিয়ে শুরু করছি।

বাশো (১৬৪৪-৯৪)

শীতের বৃষ্টি
বাঁদরও খোঁজ করে
একটা বর্ষাতির।

শরতের হিমেল বৃষ্টি
ফুজি পাহাড়ের পর্দা করে
তাই তাকে আরো সুন্দর দেখায়।
বুসান (১৭১৫-৮৩)

বৃষ্টি ঘাসের ওপর পড়ে
চাকার দাগ দেয় ভরে
উৎসব শকটের।

এক দীর্ঘ কঠিন পথ
বৃষ্টি ভেঙে যায় মহাসড়কের সংযোগস্থল
যেন ভবঘুরের পায়ে।

মরশুমের বৃষ্টিতে
নামহীন নদীর ধারে
ভয়েরও নাম নেই।

শ্যাওলার ওপর শীতের বৃষ্টি
নিঃশব্দে 888sport app download for android করে
সুখী হারানো দিনের।

ইসা (১৭৬২-১৮২৬)

এক পশলা বৃষ্টি
শুধু একটা মানুষ
চেরি ফুলের ছায়ায়।

বসন্তের বৃষ্টি
না-খাওয়া হাঁসগুলো
কোয়াক কোয়াক করে।
সোগি (১৪২১-১৫০২)

সামান্যই সময় এ পৃথিবীর জীবন
আশ্রয়ে কাটানো
শীতের বর্ষা থেকে।

শীতের হালকা বৃষ্টি
ইঁদুর-পায়ের ভোঁ-দৌড়
আমার কোটো বাদ্যের ওপর দিয়ে।

বসন্তের বৃষ্টি
যেতে যেতে এক গল্প করে।
খড়ের মাথাল, ছাতা।

বসন্তের বৃষ্টি
আমাদের পালকিতে
তোমার নরম ফিসফিসানি।

বসন্তের বৃষ্টি
একটা লোক এখানে বাস করে
দেয়ালের ভেতর দিয়ে ধোঁয়া।

বসন্তের বৃষ্টি
ছাদে ভিজছে
শিশুর ন্যাকড়ার পুতুল।

হঠাৎ বর্ষণ
ঘাসের ডগা কড়ে
একঝাঁক চড়–ই।

তাকাকুয়া রাংকো (১৭২৬-৯৮)

শীতের ঝড়বৃষ্টি
ঢোসাঢুসি করতে শিং আটকেছে
মাঠে ষাঁড়ের দল।

সূত্র:
The Sound of World, Haiku by Basho, Buson, Issa and other poets. Translated by Sam Hamill, Shambhala Boston & Loadon 2000.
The Penguin Book of Japanese Verse translated with an introduction by Geoffrey Bowans and Anthony Thwaite (1964).