স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে 888sport appsের আর্থ-সামাজিক ক্ষক্ষত্রে যেমন পরিবর্তন সূচিত হয়েছে তেমনি 888sport live chat-888sport live footballও হয়েছে সমৃদ্ধতর। বাংলা ভাষা-888sport live footballের গতিপথ বাঁকবদল করে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে করেছে ধারণ। বাংলা 888sport live footballের বিভিন্ন শাখায় মুক্তিযুদ্ধের অবিমিশ্র গৌরবগাথা চিত্রিত হয়েছে বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনায়। বিষয় ও ভাবনার দিক থেকে বাংলা 888sport live footballে যেমন মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব পড়েছে, তেমনি আঙ্গিক-প্রকরণ ও পরিচর্যায়ও মুক্তিযুদ্ধের প্রভাব সুস্পষ্ট। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তরকালে 888sport appsের সর্বক্ষক্ষত্রের মতো 888sport live chat-888sport live football নিয়েও চলেছে নিরীক্ষা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাসত্মবায়িত করতে একদল লেখক চালিয়েছেন নিরন্তর প্রচেষ্টা। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত হয়েছে 888sport app download apk, 888sport alternative link, ছোটগল্প, নাটক, 888sport live, আত্মজীবনী। একদল প্রতিভাবান গল্পকার মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে লিখেছেন চিত্তাকর্ষক ছোটগল্প। আমরা এ-888sport liveে 888sport appsের স্বনামধন্য ছোটগল্পকারদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক একটি করে গল্প নিয়ে আলোচনা করার প্রয়াস পেয়েছি।
সত্যেন সেনের (১৯০৭-৮১) ‘পরীবানুর কাহিনী’ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় রচিত একটি অনন্য ছোটগল্প। মুক্তিযুদ্ধের মতো বিশাল কর্মযজ্ঞে বাঙালি 888sport promo codeর যে বিরাট ভূমিকা ছিল তা আজ অবধি অব্যক্ত ও অনুচ্চারিতই থেকে গেছে। অথচ বাঙালি জাতিরাষ্ট্র গঠনে বাঙালি 888sport promo codeর বহুমাত্রিক ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধকে আরো বেশি বেগবান ও তাৎপর্যবাহী করে তুলেছিল, লেখক সেটা কথাটিই অকৃপণচিত্তে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন শৈল্পিক সৌকর্যে। একজন স্কুলশিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা হারুনের হৃদয়-নিংড়ানো দেশপ্রেম ও তার স্ত্রী পরীবানুর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ কোনো সমাজবিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এ-যেন আবহমানকাল ধরে লালিত স্বপ্নজারিত বাঙালি 888sport promo code-পুরুষের স্বাধীনতাকামী চেতনারই বহিঃপ্রকাশ। বহু যুগ-কাল পরে বাঙালি স্বাধীনতা স্বপ্নে বিভোর হলো। 888sport promo code-পুরুষ নির্বিশেষে হাতে তুলে নিল অস্ত্র। এই গল্পে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের অপর্যাপ্ততা, অস্ত্রপ্রাপ্তির আকাঙক্ষা হারুন ও তার শিক্ষকের কথোপকথনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। লেখক এ-গল্পে পরীবানুর চরিত্রের মাধ্যমে পাকিসত্মানি শাসকেরা বাঙালি 888sport promo codeসমাজকে যে অবরোধবাসিনী করে রাখার অপচেষ্টা চালিয়েছিল তা ছিন্ন করে বাইরের আলোর জগতে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাঙালি 888sport promo code তার স্বপ্ন-লালিত স্ত্রীত্ব বিসর্জন দিয়ে পাকিসত্মানি সৈন্যদের শয্যাসঙ্গী হয়েছেন, করেছেন হত্যার মতো নির্মম কাজ। ‘মুগ্ধ পতঙ্গের দল সেই মেয়েদের পেছন পেছন অনুসরণ করে তাদের ঘরের মধ্যে ঢুকলো। আর এই মেয়েরা জেনে, শুনে, স্বেচ্ছায় তাদের পশু প্রবৃত্তির কাছে আত্মসমর্পণ করলো।… সেই স্বৈরিণীদল সৈনিকদের মুখের কাছে পানপাত্র তুলে ধরল। সেই সুধা পানের ফলে ওদের চেতনা একটু একটু করে ঝিমিয়ে পড়ছিল। উপযুক্ত মুহূর্ত বুঝে সেই স্বৈরিণীরা রণরঙ্গিনীর মূর্তি ধরে লাফিয়ে উঠল, তারপর ধারালো দা দিয়ে ওদের কুপিয়ে কাটল।’ বাঙালি 888sport promo codeর আকাঙিক্ষত ও সযত্নে রক্ষিত সতীত্বের এমন আত্মদান বৃথা যায়নি, বৃথা যেতে পারে না। অথচ মুক্তিযুদ্ধে 888sport promo codeর অংশগ্রহণের স্বীকৃতি তারা আজো পাননি। গল্পের শেষে লেখক কলকাতায় আশ্রিত তথাকথিত রাজনৈতিক ব্যক্তি ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে স্কুলমাস্টার হারুন ও তার স্ত্রী পরীবানুর দেশপ্রেম ও যুদ্ধে অংশগ্রহণের ধরনের মধ্যে একটি প্রতিতুলনারও ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন।
ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন ও ধর্মীয় চেতনার ভিত্তিতে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনে মদদ জুগিয়ে অনেক বাঙালি লেখক আত্মতুষ্টিতে ভুগলেও শওকত ওসমান (১৯১৭-৯৮) বরাবরই ছিলেন ভিন্নপথের যাত্রী। সাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিসত্মান নামক রাষ্ট্রযন্ত্র যে কাঙিক্ষত রাষ্ট্র প্রসবে ব্যর্থতার পরিচয় দেবে সে-সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় রচিত ‘দুই ব্রিগেডিয়ার’ তাঁর অনবদ্য ছোটগল্প। গল্পের প্রধান চরিত্র সয়ীদুর রহমান ভূঁইয়া একজন ফায়ার ব্রিগেডের কর্মকর্তা। তিনি দায়িত্ব পালনে সদাপ্রস্ত্তত। দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত আত্মত্যাগের এমন নিদর্শন কমই দেখা যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক বড় বড় অগ্নিকা- তিনি নিভিয়েছেন। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে 888sport app শহরে পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনাকালে গণহারে হত্যাকা- ও অগ্নিসংযোগ করে। বিভিন্ন স্থানে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। গুলির শব্দে তার ঘুম ভেঙে গেলে আগুনের লেলিহান শিখা তিনি দেখতে পান। কর্তব্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরিবারের সদস্যদের সাবধানে থাকতে বলে তিনি বেরিয়ে পড়েন ফায়ার স্টেশনের উদ্দেশে। সহকর্মীদের নিয়ে আগুন নেভানোর উদ্দেশ্যে গাড়ি নিয়ে বের হলে হঠাৎ হানাদারা বাহিনীর ঝাঁক ঝাঁক বুলেটের আঘাতে তাঁর সহকর্মীরা মৃত্যুমুখে পতিত হন। তার বুকেও লাগে একটি বুলেট। তিনি কাত হয়ে পড়ে যান গাড়িতে। এমন সময় পাকিসত্মানি দুজন অফিসার গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে আসে তার কাছে। সে বলে ‘ভাইলোগ, আপলোগ মেরা সব ফায়ারম্যান কো কিউ মরা… হামলোগ সব ডিউটি মে নিকালা শহর মে আগ (আগুন) লাগা… হামলোগ সব ফায়ার ব্রিগেড কা আদমি…।’ এর উত্তরে পাকিসত্মানি দুই অফিসার প্রায় একসঙ্গে চিৎকার করে বলে, ‘শোন বাঙালিকে বাচ্চা হামভি ডিউটি নিকালা। মেরা আব ডিউটি হ্যা আগ (আগুন) লাগানা জায়সা তোমরা হ্যা বুজানা (নেভানা)… সমঝা… ?’ বাঙালি ও পাকিসত্মানি অফিসারদের যুদ্ধকালে কী ধরনের ভূমিকা ছিল সেই মৌল বিষয়টিই লেখক এখানে উপস্থাপন করার প্রয়াস পেয়েছেন। তিনি আসলে গল্পটিতে দেখাতে চেয়েছেন বাঙালি ও পাকিসত্মানি অফিসারদের কর্তব্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যের বিষয়টি। একশ্রেণির মানুষ কর্তব্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে অগ্নিকা- নেভাতে আর একশ্রেণির মানুষ কর্তব্যবোধের কারণে অগ্নিকা- ঘটাতে সহায়তা করছে। অথচ এরা সবাই রাষ্ট্রের সেবক বলে নিজেরা দাবি করেছে।
আবু রুশদ (১৯১৯-২০১০) রচিত ‘খালাস’ গল্পটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সমগ্র 888sport appsেরই যেন বাসত্মবচিত্র তুলে ধরে। যুদ্ধকালীন সময়ে হঠাৎ কেউ গুম হয়ে আর ফিরে না আসা, গুম হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের পাকিসত্মানি সৈন্যবাহিনীর দোসরদের নিকট সন্ধানের আশায় ধরনা দেওয়া। দেশব্যাপী হত্যা, লুণ্ঠন,
জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া জনপদের বীভৎসরূপ এই গল্পে নিপুণভাবে ফুটে উঠেছে। ‘এক পুকুর পাড়ে তিনটা লাশ, শেয়াল খাওয়ার পর একটা লাশের বুকের পাঁজর দেখা যাচ্ছে, তবে মাথায় চুল আর কানে দুল দেখে অনুমান হয় এক কিশোরী ছিল। আর একজন মা ভক্ষিত নাক ও ঠোঁটের নিচে মলিন দাঁত দেখা যায়, শেষ চেষ্টায় নিহত ছেলেকে রক্ষা করার জন্য তার দিকে নিজের ডানহাত খ্রিষ্টের দাক্ষক্ষণ্যে ছড়িয়ে দিয়েছে।’ আবু রুশদ অত্যন্ত সমাজসচেতন সূক্ষ্ম অনুভূতির ও অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টিভঙ্গিকে ব্যবহার করেছেন গল্পের চরিত্র ও পারিপার্শিবক অবস্থা তুলে ধরতে। বরকত পাকিসত্মানি সৈন্যবাহিনীর অফিসারদের দালাল। কর্নেল সেজান নামে এক পাকিসত্মানি অফিসারকে সে মদ ও 888sport promo code সরবরাহ করে। তারপরও সে পাকিসত্মানি সৈন্যদের আস্থাভাজন হতে পারে না। হঠাৎ বরকতের চাচার সম্বন্ধীর মেয়ে শাহানা আপার একটি চিঠি পায় সে। চিঠিতে শাহানা আপা তার কাছে একশ টাকা চেয়ে পাঠায়। কৈশোরে ভালোলাগা শাহানা আপার চিঠি তাকে নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত করে তোলে। চিরকুমারী শাহানা আপা একটি মফস্বল শহরে মেয়েদের জুনিয়র স্কুলে শিক্ষকতা করেন। শাহানা আপার প্রতি দুর্নিবার টান ও তার বর্তমান অবস্থা জানার জন্য সে টাকা দিতে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে সে যে সত্য আবিষ্কার করে তা তাকে বিমূঢ় করে। শাহানা আপা তাকে দেখে অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়। সে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে বরকতকে বলে, ‘দেখ, চোখ ভরে দেখ। মিলিটারি পেট কেমন করেছে খতিয়ে খতিয়ে দেখ। তারপর ফিরে গিয়ে রসিয়ে রসিয়ে গল্প করিস।’ শাহানা আপা কোনো বিশেষ 888sport promo code নয়, তিনি নির্বিশেষ, সমগ্র 888sport appsের 888sport promo code সমাজেরই প্রতিনিধি। যুদ্ধকালীন 888sport appsের 888sport promo code সমাজকে এমনই এক সংকট, উৎকণ্ঠা ও আত্মসম্ভ্রম বিসর্জন দেওয়ার মধ্যে ফিরে যেতে হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ-উত্তরকালে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার বাসত্মবচিত্র উঠে এসেছে সরদার জয়েন উদ্দিন-রচিত (১৯২৩-৮৬) ‘যে ঋণে দেওলিয়া’ গল্পে। যুদ্ধকালে লেখক 888sport app শহর ছেড়ে আশ্রয় গ্রহণ নেন পাবনা জেলার আতাইকুলো গ্রামে শ্যালকের বাড়িতে। এই বাড়িতে রাতের অাঁধারে গোপনে আশ্রয় নেয় একদল মুক্তিযোদ্ধা। এই দলে ছিল আতাইকুলো গ্রামেরই এক বিধবা মায়ের কিশোর সমত্মান মুক্তিযোদ্ধা হারান। বন্দুক কাঁধে ঝুলিয়ে পেয়ারাসদৃশ হ্যান্ড গ্রেনেড পাশে রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘুমানোর দৃশ্য দেখে লেখক রোমাঞ্চিত হতেন। দেশ স্বাধীন হলে লেখক নিজ কর্মে 888sport app ফিরে আসেন। শত ব্যসত্মতার মধ্যেও লেখক তাঁর শ্যালকের কাছ থেকে চিঠির মাধ্যমে হারানের খোঁজখবর রাখতেন। একদিন জানতে পারলেন হারান সন্ত্রাসীদের খাতায় নাম লিখিয়েছে। হারানের এই বিনষ্টি ও অপচয়িত হয়ে যাওয়া লেখককে পীড়া দেয়। হঠাৎ একদিন লেখকের শ্যালকের চিঠি হাতে করে রুগ্ণ হারান হাজির হয় লেখকের কাছে। লেখকের দেখা জ্যোতির্ময় সেই হারান এখন ন্যুব্জদেহ কঙ্কালসার হয়ে গেছে। লেখক জানতে চাইলেন কোনো প্রেসক্রিপশন, কাগজপত্র সঙ্গে আছে কি না। সে তার থলি থেকে একগাদা কাগজ বের করতেই জেনারেল ওসমানীর স্বাক্ষর করা একটি প্রায় ছিন্ন মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট বেরিয়ে এলো। লেখক জানতে চাইলেন, এটা দিয়ে কোনো চাকরির চেষ্টা করোনি। সে বলে, ‘করেছি, অনেক করেছি, সে মাথা নিচু করে জবাব দিলো।’ তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দুঃখ করে বলল, ‘কত অফিসে কতবার ঘুরেছি – একে লেখাপড়া কম জানা, তাছাড়া আত্মীয়-স্বজন কেউ নাই তাই কিচ্ছু হয় নাই।’ লেখক চেষ্টা-তদ্বির করে হারানকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে আত্মশস্নাঘায় ভোগেন এই কথা ভেবে যে, একজন মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি সাহায্য করতে পেরেছেন। হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিয়ে তিনি আর হারানের কোনো খবর রাখেননি। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন ভগ্নশরীরে ক্লান্ত অবসন্ন হারান এসে উপস্থিত হয়। সে লেখককে জানায়, যুদ্ধের সময় তার পিঠে গুলি লেগেছিল, যা এখনো শিরদাঁড়ার ভেতরে আটকে আছে। ডাক্তার বলেছে তার অপারেশন করাতে হবে। ওষুধ ও রক্ত কিনতে হবে। যার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। লেখক তাকে কল্যাণ ট্রাস্টে দরখাসত্ম করতে বলে। সে জানায়, একবার দরখাসত্ম করেছিল ২৫ টাকা পেয়েছে। তারা বলেছে, এর বেশি দেওয়া সম্ভব নয়। লেখক তাকে ৫ টাকা দিয়ে রিকশা ভাড়া করে হাসপাতালে ফিরে যেতে বলে। কিন্তু সে টাকাটা না নিয়ে ফিরে যায়। একদিন খবরের কাগজে লেখক দেখতে পান ‘হাসপাতালের দুতলা ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মুক্তিযোদ্ধা হারান শেখ আত্মহত্যা করেছে। চিঠি লিখে গেছে, তার আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ী নয়। বাঁচবার জন্য ঔষধ ও রক্ত কেনবার জন্য টাকা জোটাতে না পেরেই সে এ কাজ করেছে।’
সমাজ-সচেতন কথা888sport live chatী আবু ইসহাকের (১৯২৬) ‘ময়না কেন কয়না কথা’ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিকায় রচিত তাৎপর্যবাহী ও চিত্তাকর্ষক ছোটগল্প। ‘জয়বাংলা’ শব্দটি উচ্চারিত হলে মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে যেমন অপরিমেয় শক্তির হিলেস্নাল দোলা দিত, তেমনি পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর আলবদর, আলশামস, রাজাকার বাহিনীর হৃদয়ে ভীতির কম্পন শুরু হয়ে যেত। সেই ঘটনাকে উপজীব্য করেই গল্পের কাহিনি এগিয়েছে। একজন রাজাকার সোলায়মান ‘জয়বাংলা’ সেস্নাগান একটি বাড়িতে শুনতে পেয়ে পাকিসত্মানি মিলিটারিদের খবর দেয়। মুক্তিবাহিনীর খোঁজে পাকিসত্মানি মিলিটারি বাহিনী সেই বাড়ি তলস্নাশি করে। তলস্নাশি করে মেজর জানজুরা জানতে পারে ‘জয়বাংলা’র উৎস হচ্ছে একটি ময়না পাখি। মেজর ক্ষক্ষাভে ময়নাটিকে ব্যারাকে নিয়ে যায়। তারপর একজন সেপাইকে দায়িত্ব দেয় ময়নাটিকে জয়বাংলার পরিবর্তে পাকিসত্মান জিন্দাবাদ শেখাতে। কিন্তু কোনোভাবেই ময়নাটিকে দিয়ে পাকিসত্মান জিন্দাবাদ শব্দটি বলাতে পারে না। বারবার ‘জয়বাংলা’ শব্দটি কানের কাছে শুনে বিরক্ত মেজর খাঁচা থেকে ময়নাটাকে মুক্ত করে দেয়। মুক্তবিহঙ্গ মুক্তির উলস্নাসে বনে পাড়ি না জমিয়ে বাড়ির নিকটে গাছে বসে আবার খাঁচার কাছে ফিরে আসে আর ‘জয়বাংলা’ উচ্চারণ করে। একদিন অপারেশন থেকে ফিরে গাছে বসা ময়নাটিকে জয়বাংলা বলতে শুনে ক্ষুব্ধ মেজর গুলি ছোড়ে। ময়নাটি পূর্বদিকে উড়ে চলে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই ময়নার ডাক বেশ কিছুদিন শোনা গেলেও হঠাৎ সে-ডাক বন্ধ হয়ে যায়। ‘তারপর মুক্ত হয়েছে দেশ, স্বাধীন 888sport appsে অনেক দিন পর্যন্ত শোনা গেছে পাখিটার সেই ডাক। এখন আর সে-ডাক শোনা যায় না। পাহাড়ি ময়নাটা বোধহয় পাহাড়েই চলে গেছে। সে আবারো বুঝতে পেরেছে, এখানে কথা বলা আর নিরাপদ নয়।’ দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছর পরই স্বাধীন 888sport appsের স্থপতি জাতির জনককে হত্যা করা হয়। দেশে প্রচলিত হয় পাকিসত্মানি ভাবদর্শের শাসনব্যবস্থা। যে ধর্মনিরপক্ষেতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও সাম্যবাদী ভাবাদর্শ সামনে রেখে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিল তা বিতাড়িত করা হয় রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে। লেখক গল্পের শেষে ময়না পাখির ডাক বন্ধের বিষয়টি রূপকের আড়ালে দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার কণ্ঠরোধের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন।
সুচরিত চৌধুরীর ‘সেদিন রাত শান্ত ছিল’ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত একটি অনিন্দ্যসুন্দর ছোটগল্প। লেখক গল্পের কাহিনি বর্ণনার চেয়ে যুদ্ধকালীন 888sport appsের গ্রামীণ চিত্র বাসত্মবানুগভাবে তুলে ধরার প্রতি অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। যুদ্ধকালীন গোটা 888sport appsে যে সাধারণ অসহায়-নিরপরাধ মানুষের পলায়নপর মনোবৃত্তি, শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে আরো অজগ- গ্রামে আশ্রয় লাভের প্রচেষ্টা ছিল, লেখক তা গল্পটিতে তুলে ধরেছেন নান্দনিক সৌন্দর্যে। যুদ্ধ যে ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবার জীবনে এক অনিশ্চয়তা বয়ে এনেছে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এই বৌদ্ধপাড়ার পলস্নীগ্রামে। যেখানে এক চায়ের দোকানদারের গোয়ালঘরে আশ্রয় নিয়েছে শহর থেকে আসা একজন ক্ষয়িষ্ণু-নিষ্প্রভ জমিদার। একদা আভিজাত্যের দ্যুতি ছড়ানো, বিলাসব্যসনে জীবনযাপন করা জমিদারের পরিবারের আশ্রয় হয়েছে গ্রামের এক গোয়ালঘরে। গল্পের শেষে এই ক্ষয়িষ্ণু জমিদারের চরম পরিণতি ঘটতে দেখি। জমিদারের লাঠিয়ালের হাতে নিহত হওয়া এক ব্যক্তির মৃত্যু প্রতিশোধ নিতে হত্যা করা হয় তাকে। গল্পটিতে বর্তমান থেকে অতীত, অতীত থেকে আবার বর্তমানে ফিরে আসার প্রবণতা সিনেমার ফ্ল্যাশব্যাক ও চেতনাপ্রবাহ রীতিকে অনুসরণ করেই অনুসৃত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ যে শুধু ব্যক্তিজীবন কেড়ে নিয়েছে তা নয়, কেড়ে নিয়েছে ব্যক্তির একান্ত আবেগ, অনুভূতি, প্রেম-ভালোবাসা, সুখ-দুঃখবিজড়িত দাম্পত্য জীবনও। বিপন্ন হয়েছে ব্যক্তির সত্তা, ব্যক্তিকে করেছে সমাজ-সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন। আলাউদ্দিন আল-আজাদ (১৯৩২-২০০৯) রচিত ‘আমাকে একটি ফুল দাও’ গল্পটি এমনি একটি দাম্পত্য জীবনবিচ্ছিন্ন হওয়ার মর্মামিত্মক করুণ কাহিনি। ওমর ফারুক নামক এক যুবক দেশের ক্রামিত্মলগ্নে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়। পাকিসত্মানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে তার কাঁধে গুলি লাগে। সে অজ্ঞান হয়ে গেলে তার সহযোদ্ধারা তাকে মৃত ভেবে পশ্চাদ্পসরণ করে। ওমর ফারুকের সহযোদ্ধা হায়দার ছিল তার বিশ্ববিদ্যালয় সময়কার বন্ধু। যুদ্ধশেষে দেশ স্বাধীন হলে ওমরের বাড়িতে হায়দারই তার মৃত্যুসংবাদ পৌঁছে দেয়। ওমর ফারুক পায় মরণোত্তর বীরপ্রতীক খেতাব। ওমরের যুবতী স্ত্রী স্বপ্না ও শিশুকন্যা সোনিয়াকে অসহায়ত্বের হাত থেকে বাঁচাতে ওমরের পিতা-মাতা স্বপ্নার সঙ্গে ওমরের ছোট ভাই ফয়সালের বিয়ে দেয়। স্বাধীনতার দুবছর বাইশ দিন পর দেশে ফিরে আসে ওমর। কাঁধে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অলৌকিকভাবে একটি জিপ এসে ওমরকে তুলে নিয়ে ভারতের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে ওমর তার বন্ধু হায়দারের বাড়িতে যায় এবং তার কাছ থেকে স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ের খবর শুনতে পায়। ছাত্রাবস্থায় হায়দার সবসময় মিথ্যা বলত, তাই হায়দারের কথায় বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে কম্পিত হতে থাকে তার হৃদয়। সে রাতের অাঁধারে বেরিয়ে আসে হায়দারের বাড়ি থেকে। পৌঁছে যায় 888sport sign up bonusবিজড়িত সেই পরিচিত বাড়িতে। দরজার সামনে দেখা হয়ে যায় মা, বাবা, স্ত্রী, কন্যা, ছোটভাই সবার সঙ্গে। উসকো-খুসকো চেহারা, লম্বা চুল আর বড় বড় দাড়িতে মুখ ভরে থাকায় কেউ তাকে চিনতে পারে না। সে তার স্ত্রীর দিকে চেয়ে দেখে সে সমত্মানসম্ভবা।
‘গর্ভবতী স্ত্রী পাশে, সমত্মানকে ধরে আছে, পরম আদরে বা হাতের ওপরে বিলিয়ে তরুণ ফয়সালকে দেখাচ্ছে সফলকাম স্বামী, গর্বিত পিতা।’ স্ত্রী, কন্যা, ভাইয়ের এ-অবস্থা দেখে ওমর আর নিজের পরিচয় দিতে পারে না। ছোট্ট সোনামণির গাল টিপে দিয়ে মেয়েটির হাত থেকে একটি ফুল নিয়ে দ্রম্নত গেট পেরিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে সন্ধ্যার ঘরফিরতি লোকদের সঙ্গে মিশে যায়।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জহির রায়হান (১৯৩৫-৭২)-রচিত ‘সময়ের প্রয়োজনে’ 888sport world cup rateধর্মী ছোটগল্প। লেখক ব্যক্তিগত জীবনে সাংবাদিকতা ও live chat 888sport নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন; এ কারণে তাঁর গল্পে 888sport world cup rateধর্মী আমেজ ও অতিনাটকীয়তা পরিলক্ষিত হয়। তিনি গল্পটি সাংবাদিকের অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টি দিয়ে বর্ণনা করেছেন, যা যুদ্ধকালীন প্রকৃত 888sport appsের চিত্র সেলুলয়েডের রুপালি ফিতার মতো ‘বাসত্মব ও জীবন্ত’ করে তোলে। লেখক মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহের জন্য একটি ঘাঁটিতে গেলে ক্যাম্প কমান্ডার তাকে একটি ডায়েরি পড়তে দেন। ডায়েরিটিতে যুদ্ধকালীন যে-চিত্র উঠে এসেছে তা স্থানিক নয়, বরং সমগ্র 888sport appsেরই প্রতিচ্ছবি। একজন মুক্তিযোদ্ধার দেশপ্রেম, আবেগ, উচ্ছ্বাস, ভবিষ্যৎ 888sport apps নির্মাণের স্বপ্ন এবং কেন এই মুক্তিযুদ্ধ? – সেই আত্মোপলব্ধি ডায়েরিটির পাতায় পাতায় খোদিত হয়েছে রক্তাক্ষরে। চারদিকে এত ধ্বংসযজ্ঞ, হত্যা, লুণ্ঠন, লোকক্ষয় কিসের জন্য? লেখক এই মৌল প্রশ্নটি রেখেছেন। আবার নিজেই এর জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ‘কেউ বলেছিল আমরা প্রতিশোধ নেবার জন্য লড়ছি। ওরা আমাদের মা-বোনদের কুকুর বেড়ালের মতো মেরেছে তাই। এর প্রতিশোধ নিতে চাই। কেউ বলেছিল আমরা আসলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছি। ওই শালারা বহু অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর। শোষণ করেছে তাই ওদের তাড়াবার জন্য লড়ছি। কেউ বলেছিল অতশত বুঝি না মিয়ারা। আমি শেখ সাহেবের জন্য লড়ছি।… কিসের জন্য লড়ছি আমরা? এত প্রাণ দিচ্ছি, এত রক্তক্ষয় করছি? হয়তো সুখের জন্য, শামিত্মর জন্য। নিজের কামনা-বাসনাগুলোকে পরিপূর্ণতা দেবার জন্য। কিংবা শুধুমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদে। নিজের অসিত্মত্ব রক্ষার জন্য অথবা সময়ের প্রয়োজনে। সময়ের প্রয়োজন মেটাবার জন্য লড়ছি।’
ডায়েরিটি পড়লে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধকালীন আবেগ, অনুভূতি, মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-পরিজন, প্রেয়সী-পুত্র-কন্যা থেকে দূরে থাকার বিচ্ছেদবেদনা হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। গল্পটিতে কাব্যের আস্বাদ পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত এমন বাসত্মবভিত্তিক জীবন্ত গল্প বাংলা ছোটগল্পে দুর্লক্ষ্য।
মুক্তিযুদ্ধকে পটভূমি করে রচিত ‘কলিমদ্দি দফাদার’ আবু জাফর শামসুদ্দীন (১৯১১-৮৮)-রচিত একটি 888sport live chatসফল ছোটগল্প। গল্পে লেখক অত্যন্ত সুসংহতভাবে কলিমদ্দি দফাদারের চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন। একজন দফাদার রাজাকারের চরিত্রের অন্তরালে কীভাবে হৃদয়ের মধ্যে দেশপ্রেম লালন করেছিল ও খানসেনাদের হত্যার নীলনকশা তৈরি ও বাসত্মবায়নে সফল অভিনেতার মতো অভিনয় করেছিল তার প্রকৃত উদাহরণ কলিমদ্দি দফাদার। আর্থিক দৈন্য ও সরকারি চাকরির কারণে সে খানসেনাদের সহায়তা করলেও তার অন্তরে ছিল দেশমাতৃকার প্রতি দায়বদ্ধতা ও পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনীর প্রতি প্রবল ঘৃণা। লেখক অত্যন্ত সতর্কভাবে কলিমদ্দি দফাদার চরিত্রটি বিকশিত করেছেন, যাতে করে পাঠক গল্পের শেষে এসে জানতে পারে তার দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা সত্তাটিকে। কলিমদ্দি দফাদারের চরিত্রের পাশাপাশি লেখক এই গল্পে 888sport promo codeর প্রতি খানসেনাদের পাশবিক অত্যাচারের কাহিনিও তুলে ধরেছেন। বিশেষভাবে 888sport free betলঘু 888sport promo codeদের প্রতি যে খানসেনাদের লোলুপদৃষ্টি ছিল সে-বিষয়টিও এ-গল্পে উঠে এসেছে। খানসেনাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে হরিমতি ও সুমতি নদীতীর থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে একটি স্কুলঘরে আশ্রয় নিলেও শেষ পর্যন্ত আত্মরক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। ‘কিছুক্ষণ মা-মেয়ের আর্তনাদ ওঠে, পরে নিঃশব্দ হয়ে যায় স্কুলঘর। হরিমতি ও সুমতিকে ওরা হত্যা করে না। রক্তাক্ত অজ্ঞান ফেলে রেখে খানসেনারা রাইফেল কাঁধে স্কুল ত্যাগ করে। ওদের চোখে-মুখে তখন বহুদিন পরে ভূরিভোজনের পরম তৃপ্তি এবং যুদ্ধজয়ের উলস্নাস।’ নির্বিচারে হত্যা ও ধর্ষণ করে উলস্নাস করলেও মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ঘুম কেড়ে নেয়। ধর্ষণ করে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনী তাদের আক্রমণ করে হত্যা করে একজনকে, সঙ্গীকে ফেলে পালিয়ে প্রাণে বাঁচে অন্যরা। কলিমদ্দির বাল্যবন্ধু মাইজদ্দির ষোলো বছরের কিশোর ছেলেকে মুক্তি ভেবে হত্যা করে পাকসেনারা। তবুও কলিমদ্দিকে নির্বিকার থাকতে হয়, পালন করতে হয় খানসেনাদের হুকুম। গল্পের শেষে কলিমদ্দি দফাদারের দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা সত্তাটি প্রকাশিত হয়। যুদ্ধশেষে ১৬ ডিসেম্বরে চায়ের স্টলে 888sport app মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কলিমদ্দিকে দেখা গেলেও অন্যদের মতো তার মুক্তিযোদ্ধা সত্তার স্বরূপটি সবার কাছে অপ্রকাশিতই থেকে যায়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানব হৃদয়ের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপড়েন ও অন্তর্দ্বন্দ্বে ক্ষতবিক্ষত মননের মনসত্মাত্ত্বিক বিশেস্নষণধর্মী ছোটগল্প শহীদ আখন্দের (১৯৩৫-) ‘একাত্তরে ছিন্নভিন্ন ভালবাসা’। উত্তমপুরুষে বর্ণিত চেতনাপ্রবাহ রীতিতে রচিত এই গল্পের প্রধান চরিত্র আফজাল হোসেনের অসহায়ত্ব ও ভগ্নহৃদয়ের করুণ আর্তি পাঠককে বেদনাহত করে। যৌবনে প্রথম দর্শনে ভালোলাগা 888sport promo code রেখাকে বিয়ে করে আফজাল ঘরে আনে। বিয়ের কয়েক বছর পরই আকবর খান নামে একজন সৌম্য দর্শন যুবকের হাত ধরে রেখা ঘর ছাড়ে নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্নে। যুদ্ধ শুরু হলে রেখা আকবরকে হত্যা করে ফিরে আসে আফজালের কাছে। চট্টগ্রাম থেকে ফেনীতে আসার পথে রেখা বন্দি হয় পাকবাহিনীর হাতে। স্থান হয় বন্দিশিবিরে। বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে এসে আবার ওঠে পুরনো স্বামী আফজালের কাছে। স্ত্রী ত্যাগ করে গেলেও তার হৃদয়ের গহিনে স্ত্রীর প্রতি এক ধরনের সুপ্ত ভালোবাসা বজায় ছিল। ফলে রেখাকে পুরুষ সাজিয়ে পাকবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা লক্ষ করা যায়। লেখক এই গল্পে বোঝাতে চেয়েছেন যে, প্রকৃত প্রেম কখনো মরে না। বহু ঘাত-প্রতিঘাত, বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সে বেঁচে থাকে স্ব-মহিমায়।
সব্যসাচী বহুমাত্রিক লেখক সৈয়দ শামসুল হকের (১৯৩৫-২০১৬) ‘ভালো করে কিছুই দেখা যাচ্ছে না বলে’ মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে লেখা একটি অসাধারণ ছোটগল্প। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন একদিন তারাবিহ নামাজের সময় দুজন সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মসজিদ থেকে পাঁচজন শামিত্মবাহিনীর সদস্যকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। দেশের চরম সংকটকালে মুক্তিযোদ্ধাদের এই মহৎকর্ম দেশকে স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছর পর এমনি সময়ে মসজিদে মুসল্লিরা যখন নামাজ পড়ছিল তখনই হঠাৎ দরজার বাইরে অস্ত্রহাতে দুজনকে দেখতে পেল। বাইরে তখন প্রচ- বৃষ্টি, বৃষ্টির ঝাপটা আর আলো-অাঁধারির অস্পষ্ট আলেয়ায় তাদের দুজনকে চেনা যাচ্ছিল না। সমবেত মুসল্লিদের মনে পড়ে গেল সেই পুরনো 888sport sign up bonus। দুটি ঘটনা দুটি পৃথক তৎপর্য বহন করে। প্রথম দুজন দেশের চরম সংকটে ক্রামিত্মবীরের ভূমিকা পালন করেছে। আর দ্বিতীয় দুজন দেশের সংকটকালে অশুভ, গর্হিতকর্মের ইঙ্গিত বহন করে।
বশীর আলহেলাল-রচিত ‘শবের নিচে সোনা’ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছোটগল্পে একটি 888sport free betলঘু পরিবারের বসতভিটা থেকে উন্মূল হয়ে শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় গ্রহণের কাহিনির মধ্য দিয়ে লেখক গোটা 888sport appsেরই চিত্র তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। এই গরিব পরিবারের কর্তা গদাধর ও তার ছোটভাই হলধর আটদিন পর ফিরে আসে তাদের ফেলে যাওয়া বসতভিটায়। চারদিকে যুদ্ধের বিভীষিকা, ধ্বংসযজ্ঞ, হত্যা, লুণ্ঠন চললেও মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে তারা ফিরে আসে তাদের পিতৃ-প্রদত্ত বাস্ত্তভিটায়। গদাধর বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাভি উঠানে কুলগাছে বেঁধে রেখে গিয়েছিল। আটদিন পর ফিরে এসে দেখে গাভিটি মারা গেছে। গাভীটির শব যেখানে পড়ে আছে তার নিচেই একটি পাত্রে পুঁতে রাখা আছে সোনার গহনা, মোহর, যা তারা নিতে এসেছে। গাভিটির এমন মর্মামিত্মক মৃত্যু গদাধরকে নিদারুণ পীড়া দেয়। সে সিদ্ধান্ত নেয় গাভির শব সরিয়ে সে এই স্বর্ণ নিয়ে যাবে না। কিন্তু ছোটভাই হলধর এই স্বর্ণালংকার নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সংকল্পচ্যুত হয় না। তাই সে এই যুদ্ধাবস্থায় বের হয়ে গাভিটি সরানোর জন্য মানুষ খুঁজতে থাকে।
বিষয়-ভাবনায় নতুনত্ব, শাণিত নির্মেদ গদ্যশৈলী ও চমকপ্রদ কথনরীতির কারণে বাংলা ছোটগল্পে হাসান আজিজুল হক এক নিজস্ব জগৎ সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছেন। হাসান আজিজুল হকের ‘ভূষণের একদিন’ মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত জীবনঘনিষ্ঠ তৎপর্যবাহী ছোটগল্প। প্রামিত্মক চাষি ক্ষিতমজুর ভূষণের জীবনাচার ও শারীরিক কাঠামোর যে বর্ণনা লেখক দেন তা যেন এসএম সুলতানের অাঁকা সংগ্রামী চাষিদেরই প্রতিকৃতি। ভূষণ আবহমানকালের বাংলার কৃষক সমাজের প্রতিনিধি। ক্ষিত-খামারে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাদের হাত-পায়ের পেশি উঁচু হয়ে পাকিয়ে গেছে। হাত-পায়ের পেশিতে ইস্পাত-কঠিন রূপ। কিন্তু পরম পরিতাপের বিষয়, এসব প্রামিত্মক চাষির নিজস্ব কোনো জমি থাকে না। অন্যের জমিতে বর্গাচাষ করে ফসল ফলায় তারা। ভূস্বামীদের ভাগের অংশ আর সুদখোর মহাজনদের প্রাপ্তি মিটিয়ে অবশিষ্ট আর তেমন কিছুই থাকে না। অভাব, দারিদ্র্য এদের নিত্যদিনের সাথি। ভূষণ মল্লিকদের বাড়ি কাজ করতে গিয়ে তিনজন মুক্তিযোদ্ধার দেখা পায়। তারা ভূষণকে বলে দেশের এই সংকটকালে তাকে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হবে। প্রাকৃতজন গরিব চাষি ভূষণ জানে না এই যুদ্ধের মর্মার্থ। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের অস্ত্র শুধু তার মনে ভীতিই সঞ্চার করে। মল্লিকদের বাড়ি থেকে পাওয়া দেড় টাকা নিয়ে সে হাটে যায়। হাটে গিয়ে সে তার বখে যাওয়া ছেলে হরিদাসকে দেখতে পায়। হরিদাসকে সে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয়। এমন সময় প্রচ- শব্দে বোমা ফাটে। হাটের সমসত্ম লোক সত্মব্ধ হয়ে যায়। এরপর হঠাৎ কোথা থেকে একদল পাকসেনা হাজির হয়ে সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। পাখির মতো মরতে থাকে মানুষ। ‘মেয়েটি বাচ্চার মাথায় হাত রাখে। ভূষণ দেখে মেয়েটার হাত দিয়ে গলগল করে রক্ত আসছে – শেষে রক্ত মেশানো সাদা মগজ বাচ্চাটার ভাঙা মাথা থেকে এসে তার মায়ের হাত ভর্তি করে দিলো। মেয়েটি ফিরে দাঁড়াল, বাচ্চার মুখের দিকে চাইল, পাগলের মতো ঝাঁকি দিলো তাকে কবার, তারপর অমানুষিক তীক্ষন চিৎকার করে ছুড়ে ফেলে দিলো বাচ্চাটাকে, দু-হাতে ফালা ফালা করে ছিঁড়ে ফেলল তার ময়লা বস্নাউজটাকে। তার দুধে ভরা ফুলে ওঠা সত্মনদুটিকে দেখতে পেল ভূষণ। সে সেই বুক দেখিয়ে চেঁচিয়ে উঠল, মার হারামির পুত, খানকির পুত – এইখানে মার। পরমুহূর্তেই পরিপক্ব শিমুল ফুলের মতো একটি সত্মন ফেটে চৌচির হয়ে গেল। ছিটকে এসে পড়ল সে তেঁতুলতলায়।’ এ-ঘটনার পরমুহূর্তেই ভূষণ তার ছেলে হরিদাসকে চোখের সামনে ঢলে পড়তে দেখল। সে তার ছেলের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে ডাকল, ‘বাবা হরিদাস, বাপ আমার, মানিক আমার।’ এই বলে সে তার রুক্ষ হাত ছেলের মাথায় বোলাতে লাগল, এমন সময় একটি বুলেট এসে ভূষণের হৃৎপি- ভেদ করে বেরিয়ে গেল। বারদুই ঝাঁকি খেয়ে পৃথিবীর সব দুঃখ-শোকের ঊর্ধ্বে চলে গেল সে।
অভিনব কথনরীতি, স্বকীয় গদ্যশৈলী আর জীবনঘনিষ্ঠ বাসত্মবানুগ গল্পকার হিসেবে হাসনাত আবদুল হাই স্বতন্ত্র অভিযাত্রিক। তাঁর ‘একাত্তরে মোপাসাঁ’ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা অনবদ্য ছোটগল্প। গল্পে লেখক পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনীর 888sport promo code-লোলুপতার কদর্য চিত্র তুলে ধরেন গভীর মনোনিবেশে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দেশের 888sport promo codeসমাজ পাকিসত্মানি বাহিনীর ঘৃণ্য-লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য যে-ভীতি ও উদ্বেগ নিয়ে দিনাতিপাত করেছে তার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন লেখক। একটি পাকিসত্মানি জিপ ক্রুদ্ধ পশুর মতো গর্জন করতে করতে মফস্বল শহরের আবাসিক এলাকার একপ্রামেত্মর সর্বশেষ বাড়িটার গাড়ি বারান্দায় থামে। সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের নর-888sport promo codeর বুকের মধ্যে কাঁপুনি ওঠে, ভয়ে উত্তেজনায় শীতের রাতেও তারা ঘেমে ওঠে। যতক্ষণ না বাড়িটার তিনতলার পূর্বদিকের ফ্ল্যাটে বুটের আওয়াজ না মিলিয়ে যায় ততক্ষণ সবাই উৎকণ্ঠিত থাকে। এই তিনতলার ফ্ল্যাটে একজন পাকিসত্মানি মেজরের প্রতিরাতে আগমন ঘটে। রমা নামে এক রূপসী 888sport promo codeর সৌন্দর্যে মুগ্ধ এই মেজর প্রতিরাতেই নিয়ম করে ভোগ করে তাকে। মেয়েটির অসহায় পরিবার মেয়েটাকে সান্তবনা দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। কিছুদিনের মধ্যেই জানাজানি হয়ে যায় এ-খবর। প্রতিদিন রূপসী 888sport promo codeর কাছে দর্শনার্থী বাড়তে থাকে। তাদের সবার অনুরোধ প্রায় এক রকম। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান নেওয়া, বন্দি পুরুষদের মুক্তির ব্যবস্থা করা, হঠাৎ যাতে পাকবাহিনী রাতে বাড়িতে ঢুকে না পড়ে তার জন্য ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। ধনী ও সম্ভ্রান্ত মহিলাদের অভিব্যক্তি ভিন্ন : ‘রূপসী যুবতী গান গাইতে জানে, নাচতেও পারে। এসব দিয়েই মেজরকে তুষ্ট করেছে সে, বলাই বাহুল্য। এতে দোষের কিছু নেই। সমসত্ম শহরের অধিবাসীদের তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। রূপসী যুবতী প্রায় একার চেষ্টা দিয়েই শহরের সম্ভ্রান্ত ঘরের মেয়েদের সম্ভ্রম রক্ষা করেছে। এসব বলার পর তারা নিজেদের অনুরোধ প্রকাশ করে। কারো স্বামীর ব্যবসায়ের সুবিধা, কারো স্বামীর পদোন্নতি, কারো নিখোঁজ আত্মীয়র খবর – এসব অনুরোধের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে।’ কয়েক মাস পর একসময় দেখা গেল মেয়েটির পেট স্ফীত হচ্ছে। বাড়ির লোক তাকে নষ্ট করতে বললে সে বলে মেজর সাহেবের তা পছন্দ নয়। যুদ্ধের নয় মাসের মাথায় মেয়েটি যখন সাত মাসের গর্ভবতী তখন যুদ্ধের গতিপথ ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। পাকিসত্মানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে দেশে ফেরার প্রস্ত্ততি গ্রহণ করে। মেজর একটি চিঠির মাধ্যমে যুবতী মেয়েটাকে তার সঙ্গে যাওয়ার জন্য বলে। গল্পটি এখানে শেষ হতে পারত; কিন্তু লেখক মেয়েটির পরিণাম সম্পর্কে তিন ধরনের মন্তব্য জুড়ে দিয়েছেন – প্রথমত যুবতী মেয়েটি বিনাবাক্যব্যয়ে মেজরের অনুমিত পথ অনুসরণ করে। দ্বিতীয়ত মেয়েটি ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে। তৃতীয়ত শহরের লোকজন সেস্নাগান দিয়ে সমবেত হয়ে মেয়েটিকে পাকিসত্মানি বাহিনীর কলাবরেটর হিসেবে বিচার দাবি করে। তখন মেয়েটি শান্তস্বরে বলে, চলুন, বিচার হোক।
মাহমুদুল হকের (১৯৪০-২০০৮) ‘বেওয়ারিশ লাশ’ মুক্তিযুদ্ধের ভীতিপ্রদ, উৎকণ্ঠিত ও উত্তেজনাময় সময়কে ধারণ করে রচিত। যুদ্ধকালীন একটা ‘বেওয়ারিশ লাশ’ একটা মধ্যবিত্ত পরিবারে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এই গল্প। চাকরিজীবী জামসেদ চৌধুরী তার বাড়ির জানালার পাশে একটা বেওয়ারিশ লাশ দেখতে পেয়ে একাধারে চিমিত্মত, ভীত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় কী করণীয়, সে সম্পর্কে তিনি সন্দিহান হয়ে পড়েন। প্রতিবেশী তরফদার এসেও কোনো জুতসই সমাধান দিতে পারেন না। পরে দুজন রাজাকার এলে তাদের হাতে পঞ্চাশ টাকা বখশিশ দিয়ে জামসেদ চৌধুরীর স্ত্রী লাশটাকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। স্ত্রীর বুদ্ধিমত্তায় জামসেদ চৌধুরীর স্ত্রীর প্রতি প্রেম জেগে ওঠে। যুদ্ধ, লাশ, আতঙ্ক এসব ছাপিয়ে তার ইচ্ছা করে ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রীকে কিছুক্ষণ একামেত্ম নিবিড়ভাবে আদর করতে।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘রেইনকোট’ গল্পে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়কে শব্দের বুননে যেভাবে চিত্রিত করা হয়েছে তা যেন সচেতন 888sport live chatীর ক্যানভাসে অাঁকা নগরজীবনের শঙ্কিত ও রক্তাক্ত প্রতিকৃতি। নাগরিক জীবনের পলে পলে শঙ্কা, ভীতি, পলায়নপর মনোবৃত্তির যে প্রবহমানতা সৃষ্টি হয়েছিল লেখক তা নুরুল হুদা চরিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। পাকিসত্মানি বর্বর সামরিক অফিসারদের কাছে যে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-গরিব কেউ সেদিন সম্মান পায়নি, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এ-গল্প। কলেজের রসায়ন বিভাগের লেকচারার নুরুল হুদাকে ডেকে পাঠান অধ্যক্ষ। কলেজের পিয়ন ইসাহক পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনীর দোসর। বৃষ্টির মধ্যে ইসাহক এসে খবর দেয় যে, অধ্যক্ষ সাহেব নুরুল হুদাকে ডাকছে। পাকিসত্মানি সামরিক অফিসার এসেছে, কি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে। প্রচ- বৃষ্টির মধ্যে রাসত্মায় বের হওয়ার সময় নুরুল হুদার স্ত্রী আসমা তার মুক্তিযোদ্ধা ভাই মিন্টুর রেখে যাওয়া রেইনকোটটি নুরুল হুদাকে গায়ে দিয়ে যেতে বলেন, তাতে করে বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লাগবে না। রেইনকোটটি গায়ে দিয়ে নুরুল হুদার মনের জোর বেড়ে যায়। গাড়িতে তাকে দেখে অনেক চোর-বাটপার ভীত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধার কোট পরে সে আত্মশস্নাঘায় ভুগতে থাকে। কলেজে পৌঁছলে তাকে এবং আবদুস সাত্তার মৃধা নামে অন্য একজন অধ্যাপককে চোখ বেঁধে নিয়ে আসা হয় একটি স্থানে। সেখানে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় কিছুদিন আগে কলেজে যে লোহার আলমারিগুলো নিয়ে আসা হয়েছিল সেগুলো কারা বয়ে এনেছিল। নুরুল হুদা জানান, তিনি কিছুই জানেন না। মিলিটারি শান্ত গলায় তথ্য সরবরাহ করার ভঙ্গিতে বলে, মিসক্রিয়েন্টরা কলেজে ঢুকেছিল কুলির বেশে। এটা তার চেয়ে ভালো জানে কে? তারা আজ ধরা পড়ে নুরুল হুদার নাম বলেছে। তাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ নিয়মিত, সে গ্যাংয়ের একজন সক্রিয় সদস্য। এতে নুরুল হুদা উৎকণ্ঠিত হয়ে উৎফুলস্ন হন। তিনি বলেন, ‘আমার নাম তারা সত্যি বলেছে?’ এরপর তাকে প্রশ্নের পর প্রশ্নে জর্জরিত করা হয়। মিলিটারি বলে, মিসক্রিয়েন্টদের ঠিকানা বলে দিলেই তাকে সসম্মানে ছেড়ে দেওয়া হবে। নুরুল হুদা বলেন, তাদের ঠিকানা তার জানা আছে কিন্তু তিনি বলবেন না। এরপর তার ছোটখাটো শরীরটাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ছাদে লাগানো একটা আংটার সঙ্গে। এরপর তার পাছায় পড়তে থাকে চাবুকের বাড়ি। কিছুক্ষণ পর চাবুকের বাড়িগুলোকে নুরুল হুদার মনে হয় স্রেফ উৎপাত।
এছাড়াও স্বনামধন্য অনেক গল্পকার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে 888sport live chat-সফল ছোটগল্প লিখেছেন। স্বল্পপরিসরে তাঁদের গল্প নিয়ে আলোচনার সুযোগ পাইনি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরো যাঁরা গল্প লিখেছেন তাঁরা হলেন – সেলিনা হোসেন, শাহরিয়ার কবির, আফসান চৌধুরী, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী প্রমুখ। মুক্তিযুদ্ধের মতো বিশাল ক্যানভাস ছোটগল্পের মাধ্যমে চিত্রিত করা সহজসাধ্য নয়। তারপরও বাংলা ছোটগল্পে মুক্তিযুদ্ধের খ- খ- চিত্রের মাধ্যমে সমগ্র মুক্তিযুদ্ধেরই অখ- ছবি ফুটে উঠেছে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.