অমর মিত্র
এ-পাড়ায় যে তার একজন পাঠক আছে, হিতেন রায় তা নিজেই জানত না। হিতেন লেখে। কেউ-কেউ তা পড়ে। কেউ আবার দ্যাখে। দেখে ভ্রু কোঁচকায়, হাসে, মনে-মনে বলে, কী যে করে হিতেন, লিখে কী হয়। কেউ আর এক কাঠি, বলে, ও আবার লিখল কবে, এ-বাজারে সবাই লেখক। তবু হিতেন লম্বা-লম্বা দূরের চিঠি পায়, মোবাইলে মেসেজ পায়, আবার দূর থেকে তার বাড়িতেও এসে বলে যায় কেউ-কেউ। বাড়িতে যে-পাঠক আসে, তাদের অনেকের ভেতরে অভিভূত ভাব থাকে। রানাঘাট থেকে এসেছিল বছর ষাটের এক সন্ন্যাসীর মতো মানুষ, এতখানি কাঁচাপাকা দাড়ি আর বাবরি চুল, সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসী ভাব। চোখে গোল ফ্রেমের আদ্যিকালের চশমা, ধুতি-পাঞ্জাবি; লোকটা যেন পঞ্চাশ বছর আগে থেকে হেঁটে এসেছে। গায়ে পুরনো গন্ধ। কাঁধে ঝোলা ব্যাগ। বইয়ে বেশ ভারী। তার ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে কত কথা। হাতে হিতেনের বইয়ের তালিকা। সব 888sport alternative link-গল্প তাঁর সংগ্রহ-তালিকায় আছে। তিনি হিতেনের লেখা কত পড়েছেন?
হিতেন রায় তখন শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের স্টাইলে বলেছিল, আমার প্রেম নেই পড়েছেন?
তিনি বলেছিলেন, ওটি তিনি বছর তিরিশ আগে গৌরকিশোর ঘোষের কাছ থেকে নিয়ে এসেছিলেন, গৌরবাবু তাঁকে আরেকটি বইও দিয়েছিলেন, পরের অংশ প্রতিবেশ, আর শ্যামলবাবুর শাহজাদা দারাশুকোও তিনি শ্যামলবাবুর কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন, স্বর্গের আগের স্টেশন, শ্রেষ্ঠ গল্প সব তাঁর সংগ্রহে আছে।
সেই হরেন সাধু তার কাছ থেকে দুটি সুবৃহৎ 888sport alternative link নিয়ে গেল ফ্রিতে। দাম পঁচিশ পারসেন্ট কমিশন বাদ দিয়েও হাজার টাকা হতো। এই বই পাবলিশারের কাছ থেকে আবার যদি নেয় হিতেন, তার রয়্যালটি থেকে হাজার টাকা কেটে নেবে। তার প্রাপ্য কপি সে নিয়ে নিয়েছে ছমাস আগে। বই হাতে পেয়েই ব্যাগে ঢুকিয়ে নিল। একটা ডায়েরিতে তার কাছ থেকে লিখিয়ে নিল, হরেন সাধু, প্রীতিভাজনেষু আপনার পুস্তক পাঠে আগ্রহ দেখে আপনাকে আমি আমার নদীর ধারের মানুষ এবং কুমারী মেঘের দেশ নাই গ্রন্থদুটি উপহার দিলাম। সেই ডায়েরিতে প্রেমেন্দ্র মিত্র, রমাপদ চৌধুরী, বিমল কর থেকে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব গুহ, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রফুল্ল রায় কার না লেখা নেই। কিন্তু বইয়ে লিখিয়েই তো নেয় সকলে। হিতেন একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করায় হরেন সাধু বলেছিল, তার মৃত্যুর পর ওই ডায়েরি মহামূল্যবান হয়ে উঠবে। কত 888sport sign up bonusর ভার নিয়ে আছে ওই ডায়েরি। জার্মান লেখক গুন্টার গ্রাসের লেখা পর্যন্ত আছে তার ভাঁড়ারে। তবে তা অন্য ডায়েরিতে। অমর্ত্য সেন থেকে নবনীতা দেবসেন – সকলেই আছেন। সব বই সে যত্ন করে পড়ে। তারপর নির্দিষ্ট জায়গায় সাজিয়ে রেখে দেয়। হরেন তার গ্রামে যেতে আমন্ত্রণ করল হিতেনকে। কোথায় সেই গ্রাম। না স্যার, ঠিক রানাঘাট নয়, রানাঘাট বনগাঁ লাইনে গাংনাপুর স্টেশনে নামতে হয়। সেখান থেকে এগারো মাইল উত্তরে, ট্রেকার মিলবে। তবে সার্ভিস ভালো নয়, রাস্তা তো খারাপ। নদীর ধারে তার বাড়ি। আরে, এ যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই গল্প, গরুগাড়ি করে গিয়েছিল না সেই ফ্যামিলিটা কলকাতা ত্যাগ করে, শ্যামলী আর যদুনাথ, গ্রামের নাম বল্লভপুর।
ইয়েস স্যার, ওই গ্রামেই আমার বাড়ি, নদীটা ইছামতিরই শাখা হবে, এখন মজে গেছে; কিন্তু গ্রাম তেমনি গাছগাছালিতে কী ছায়াময়, কী নিস্তব্ধ, বই পড়ার পক্ষে আদর্শ, বই পড়তে-পড়তে বইয়ের ভেতরে প্রবেশ করা যায় সব অর্থে।
কী রকম?
এত গভীর নির্জনতা যে, আপনি যদি আরণ্যক পড়েন, পড়তে-পড়তে সেই লবটুলিয়া, নাড়া বৈহার, ধনঝরি পাহাড় দেখতে পাবেন মানসচক্ষে।
এমন পাঠক হয় না। বিভূতিবাবুর গল্পের গ্রাম থেকে তার কাছে এসেছে। এমন ঘটনা তো প্রায় অলৌকিক। রানাঘাট-বনগাঁ লাইনে গাংনাপুরে নেমে গরুগাড়ি চেপে উত্তরে এগারো মাইল। সকালে কলকাতা থেকে বেরিয়ে সন্ধেয় তারা পৌঁছেছিল সেই গ্রামে। মস্ত দালান। বড়-বড় ঘর। সেই বাড়িই কিনেছে যদুনাথ। জীবনে একবার তো ঝুঁকি নিতে হয়। নিলে বড় কিছু করা যায়, তাই কলকাতার নোংরা বসতি আর প্রতিবেশীদের ছেড়ে অতদূর যাওয়া। আহা! নদীর ধারে সেই বাড়ি। লোকটা চলে যেতে মিলিয়ে নিতে হিতেন বিভূতি রচনাবলী এক-এক করে ঘেঁটে অষ্টম খ- থেকে গল্পটি খুঁজে বের করল, গল্পটির পাতা আবার খুলল, ‘মাঠ ও বনজঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এ-গ্রাম ও-গ্রাম পেরিয়ে চলল গাড়ি। বেলা প্রায় তিনটের সময় সামনের একটি ঝাঁকড়া বটগাছ দেখিয়ে গাড়োয়ান বললে – ‘ওই বুঁদিপুরের বনবিবিতলা দেখা যাচ্ছে – ওর পরেই বল্লভপুর।’ শিহরণ জাগল সমস্ত শরীরে। সেই যে মস্ত এক জমিদারের কাছারিবাড়ি, ভেতর মহল, বারো মহল। খালি বাড়িতে একটা বুড়ি মেঝেয় শুয়ে অবেলায় ঘুমোচ্ছিল…। ওই বাড়িতে বসে একজন তার বই পড়ে কত রাত অবধি। তখন চাঁদ চলে যায় নদীর ওপারে। বিভূতিভূষণ দাঁড়িয়ে থাকেন সেই অস্তগামী চাঁদের নিচে।
অচেনা জায়গার অচেনা লোক তার বই পড়ে; কিন্তু টালার লোক তাকে চেনে কি-না সন্দেহ। হিতেন এই কথা সাড়ম্বরে বলেছিল তার এক লেখকবন্ধু সোহরাবকে। সে বলল, আর হরেন, সে তো অতদূর থাকে না, পায়রাডাঙা, বুক কালেক্টর। ওর বাড়িতে বইয়ের পাহাড়; কিন্তু কোনো বই পড়ে বলে সন্দেহ, বেচে দেয় হয়তো, ভালো ব্যবসা।
বই না পড়লে বিভূতিভূষণের গল্পের সেই নদীর ধারে বাড়ির কথা বলতে পারে?
ওইটাই তো ওর কায়দা, এরপর কাউকে বলবে ভাগলপুরে থাকে, বনফুলের বাড়ির পাশে তার বাড়ি, বইয়ের ব্যবসা, কিছু তো পড়তেই হবে, লেখকদের মন মজাতে হবে তো।
বিশ্বাস হয়নি সোহরাবের কথা। বিভূতিভূষণের নদীর ধারে বাড়ি গল্পটি তার অত্যন্ত প্রিয়। সে লিখেছেও সেই গল্প নিয়ে। হঠাৎ তার মনে হয়, সেই 888sport liveটি বেরিয়েছিল একটি সংবাদপত্রে। হরেন সাধু তা পড়েছিল হয়তো। কে জানে? হাজার টাকার বই ফ্রিতে নিয়ে গেল। বইয়ের পাতায় কলম ছোঁয়াতে দিলো না পর্যন্ত। অথচ উলটো ঘটনাই তো ঘটে। লেখকের সই তার বইয়ে নেওয়ার জন্যই কত আগ্রহ মানুষের। মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল। বিভ্রান্ত হয়ে চুপ করে গেল হিতেন।
সেই হরেন সাধুর সঙ্গে আর একবার দেখা হয়েছিল কলেজস্ট্রিটে। সে দেখতে পায়নি, কিন্তু হরেনই তাকে দেখতে পেয়ে ছুটে এসে আঁকড়ে ধরেছে, স্যার, আপনার নতুন বইটা দিন প্লিজ।
আগের বই পড়েছিলেন? হিতেন জিজ্ঞেস করেছিল।
শুধু আমি, আমার লাইব্রেরি থেকে নিয়ে বল্লভপুরের কতজন পড়েছে স্যার, ইউ আর গ্রেট রাইটার, আমি আপনাকে বল্লভপুর নিয়ে যাব বিভূতিভূষণের জন্মদিনে, যাবেন তো স্যার?
আর কী কোনো কথা হয়? আরো কিছু প্রশংসায় হিতেন গলে গেল। হরেনের কথার তোড়ে ভেসে গেল। হরেন বই নিয়ে মহাত্মা গান্ধী রোড ধরে শিয়ালদার দিকে হাঁটল। চলে যাওয়ার পর হিতেনের মনে হলো, আবার সে ঠকে গেল; কিন্তু করবে কী? তবে আজ হরেন তার ফোন নম্বর নিয়েছে। নিয়ে মিসড কল দিয়ে যাচাই করে নিয়েছে। সে কী মনে করে হরেনের নম্বর সেভ করে রাখল। ভাবল কদিন বাদে সে ফোন করে যাচাই করে নেবে কটি গল্প পড়ল হরেন। ফোকটে বই কালেকশন করা বুঝে নেবে সে। হিতেন এরপর অন্য এক প্রকাশকের কাছে যায়। গিয়ে শুনল, তার অনুরোধে তার অমনিবাস তিনি দিয়েছেন হরেন সাধু নামে এক ব্যক্তিকে। হিতেন বলল, সে তো কোনো অনুরোধ করেনি, শুনে প্রকাশক বামাবাবু বললেন, তিনি নাকি আপনার বিবলিওগ্রাফি তৈরি করছেন, আমি বলেছি আপনাকে নিয়ে তাঁকে একটি বই করতে, ছাপব।
কোথায় থাকেন উনি?
বললেন তো চাকদা।
আমাকে বলেছে গাংনাপুর থেকে এগারো মাইল দূরে একটা নদীর ধারে বল্লভপুর গ্রামে।
প্রায় ওইদিকেই তো। বামাবাবু বললেন।
একজন বলল, আসলে ও থাকে পায়রাডাঙা।
হবে হয়তো, লোকটা প্রচুর বই কেনে বলল।
আপনার কাছ থেকে কিনেছে আগে?
না, কয়েকবার এসে বই দেখে গেছে, আজই বই নিল প্রথম।
সে তো ফ্রিতে।
বামাবাবু হাসলেন, একটু-আধটু ফ্রি দিতে হয়, ফ্রি দিয়ে বড় কাজ উদ্ধার হয়। ও বলল, ওদের গ্রামে একটা লাইব্রেরি হবে, এক লাখ টাকার বই কিনবে, বুঝলেন, আমি সাপ্লাই করব।
ভালোই বুঝিয়েছে মিথ্যেবাদী হরেন। রাগ হচ্ছিল হিতেনের। কিন্তু করবে কী? ফোন করবে? ছোট হয়ে যাবে। এমনি বুক কালেক্টর আর একজন আছে। গৌতম নন্দী। তারও কাজ বই সংগ্রহ। উফফ, সে আবার বলে, রিভিউ লিখবে। 888sport live লিখবে। আসলে সে কোনোটাই করে না। আবার এমন-এমন বই নিয়ে লেখে যেসব বইয়ের তেমন কোনো দামই নেই। কিন্তু লেখকের দাম আছে, বড় আমলা, রাজনৈতিক নেতা, এসব। শোনা যায়, তাঁরা ওকে টাকা দিয়ে লিখিয়ে নেন।
হিতেন বলল, আর দেবেন না বই, মুখের কথায় বই দেন কেন?
সাধু প্রকৃতির মানুষ মনে হলো। এক ব্যাগ বই কিনে টাকা ফুরিয়ে গেছে বলল, চাকদা ফিরবে, তাই দিলাম।
হরেন সাধুর কথা হিতেন আরো কয়েকজনকে বলে বিভিন্ন জায়গায় ওর বাড়ির কথা শুনল, রানাঘাট, দত্তফুলিয়া, নাকাশিপাড়া, চাকদা, মাজদিয়া, পায়রাডাঙা… মেনলাইনের নানা স্টেশনের নাম। অদ্ভুত। একদিন তার লেখকবন্ধু সমীরণ দাস সহাস্যে বলল, তার কাছে একটা লোক এসেছিল, হরনাথ কু-ু, মাজদিয়া বাড়ি, কত বই পড়েছে তার, এমন পাঠক পেলে লেখা সার্থক।
বিড়বিড় করে হিতেন, সেই কেষ্টনগর, বহরমপুর লাইনেই, তার নাম হরেন সাধু না?
না না, তার কথা তো তুমি আমাকে বলেছিলে হিতেন, সে এলে আমি অ্যালাউ করতাম না, এর নাম হরনাথ কু-ু।
হুঁ, হিতেন জিজ্ঞেস করে, কেমন দেখতে, গালভর্তি দাড়ি?
না না, আমি সেই দিকেও নজর রেখেছিলাম, গোঁফ-দাড়ি সব কামানো, ছোট করে ছাঁটা চুল, বেশ ফিটফাট মানুষ, অ্যারাউন্ড ফিফটি।
ধুতি আর হলুদ পাঞ্জাবি?
না হিতেন, প্যান্ট আর চেক হাওয়াই শার্ট।
হিতেন সমস্তটা গুছিয়ে বলছিল শ্যামল চন্দকে। শ্যামল দাঁতের ডাক্তার। তারই পাড়ার, তারই বয়সী। এক ক্লাসে পড়ত ইশ্কুুলে। সেখান থেকে বেরিয়ে একজন দাঁতের ডাক্তার, আর একজন লেখক। শ্যামলের চেম্বার বাগুইয়াটিতে। আর সে প্রেসিডেন্সি ও আলিপুর জেলের হাসপাতালেরও ডাক্তার শুনেছে হিতেন। কয়েদিদের দাঁত পরীক্ষা করে। জেলার থেকে পাহারাদারদের দাঁতও দেখে দেয়। সকালবেলায় শ্যামল রায় গম্ভীর মুখে বসে থাকে বাজারের ফুল-দোকানের পাশে একটি ছোট তক্তপোশে। বসে খবরের কাগজ পড়ে। নানা বিষয়ে নিজের মন্তব্য প্রকাশ করে। তার দুপাশে দুজন থাকবেই। তারা শ্যামলের কাছে দাঁত দেখায়। শ্যামল তাদের একটার পর একটা দাঁত তুলে নিচ্ছে, নমাস, ছমাস অন্তর। বাঁধিয়ে দিচ্ছে। তার ভেতরে হিতেন নেই। তার তিনটে দাঁত নিয়েছে মোহনলাল স্ট্রিটের ডাক্তার গণেশ বসাকের নাতি ডাক্তার চন্দন বসাক। বাঁধিয়েও দিয়েছে তার টেকনিশিয়ান। চন্দন বসাক ডেন্টাল হসপিটালের পাশআউট নয়, তামিলনাড়–র ডেন্টাল স্কুল থেকে ডিপ্লোমা। হাত খুব ভালো। কিন্তু শ্যামল বলে, তামিলদের দাঁত আর বাঙালির দাঁত আলাদা। তামিলনাড়– থেকে ডিপ্লোমা নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গলে দাঁত দ্যাখে কী করে চন্দন? চন্দন ডাক্তারই নয়, রিস্কি ওর কাছে যাওয়া।
ওসব কথা থাক। এই কাহিনি তো দাঁত নিয়ে নয়। এই কাহিনি শ্যামল এবং হরেন, হরনাথের। শ্যামলের সঙ্গে হিতেনের তেমন কথা হতো না। তার সময় নেই সকালে শ্যামলের পাশে বসে তার কথায় হুঁ-হাঁ করে। শ্যামলই বরং গত পুজোর পর আচমকা একদিন তার কাঁধে হাত রেখেছিল, তোমার 888sport alternative linkটা পড়লাম।
চমকে উঠেছিল হিতেন। এ-পাড়ায় কেউ যে তার লেখা পড়ে সে-বিষয়ে তার কোনো ধারণাই ছিল না। সে যে পুজোয় 888sport alternative link লেখে, গল্প লেখে, টিভিতে পুজোর লেখা নিয়ে নিজের অভিমত প্রকাশ করে, তা যেন এ-পাড়ায় কেউ জানেই না। সে যে-পত্রিকায় লেখে সেই পত্রিকা এ-পাড়ায় বুঝি একটিও ঢোকে না। কেউ কেনে না। কিনলেও তার লেখা সযতেœ পরিহার করে। টিভির যে-চ্যানেলে সে 888sport live footballবিতর্কে থাকে, সেই চ্যানেল কেউ দ্যাখেই না। কে রে লোকটা, সকালে থলে ভর্তি করে বাজার করে, নুন-তেল-চিনি কিনতে গোবিন্দর দোকানের সম্মুখে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে সামনের খরিদ্দারের লম্বা লিস্টের কেনাকাটা, ঝগড়া শেষ হওয়া পর্যন্ত, অথচ পলতা, বারাকপুর, চাকদা, কল্যাণী, পায়রাডাঙা, গাংনাপুর, রানাঘাট, মাজদিয়া, দত্তফুলিয়া, নাকাশিপাড়া, পলাশীর হরেন সাধু কিংবা হরনাথ কুণ্ডরা তার বই পড়েছে। তার বাড়ি এসে জিজ্ঞেস করে, আপনি কখন লেখেন স্যার?
ঘুম থেকে উঠে ঠিক করি কখন লিখব।
আজ কখন লিখবেন স্যার?
আজ আর লিখব না। হিতেন হেসে-হেসে জবাব দেয়।
তাহলে কী কাল লিখবেন?
হিতেন শিবরাম চক্কোত্তির ঢঙে বলেছে, এখনো তাই ঠিক আছে।
কাল কখন লিখবেন স্যার?
কাল ঠিক করব।
কিন্তু সেই পাঠক তো মাজদিয়া কিংবা দত্তফুলিয়ার লোক। বর্ধমান, কাটোয়ারও হতে পারে। তার বাড়িতে বইয়ের পাহাড়। এ-পাড়ার লোকের তার প্রতি কোনো আগ্রহই নেই। এ-পাড়ার কেউ তাকে জিজ্ঞেস করে না, কী লিখছেন এখন কিংবা আপনার অমুক 888sport alternative linkটি পড়লাম, খুব ভালো লেগেছে। সেই প্রথম একজন, শ্যামল তাকে বলছিল, তুমি ভালো লোকটাকে মেরে দিলে কেন, সুইসাইড করিয়ে দিলে, এ ঠিক হয়নি।
তুমি পড়েছ? বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যায় হিতেন।
ইয়েস, আমি তোমার লেখা কিছু পড়েছি, কিন্তু তুমি তো রহস্য লেখ না।
না, রহস্য হয় না আমার।
হয় না আবার কী, আই লাইক ডিটেকটিভ নভেল, তুমি তোমার সামাজিক 888sport alternative linkে ভালো লোকটাকে সুইসাইড করালে, নো নো, আই ডু নট লাইক ইট। লেখকের কাজ এইটা নয় যে, নিরপরাধ লোকটি সুইসাইড করবে আর অপরাধী সমাজের গণ্যমান্য হয়ে উঠবে এইসব লেখা, এ কি ঠিক করেছ তুমি?
বেশ লাগল শুনতে। সে দুঃখ প্রকাশ করল ভালো লোকটির আত্মহত্যার জন্য। বলল, স্যরি।
তখন শ্যামল বলল, ঠিক আছে ঠিক আছে, আর করো না, তুমি রহস্য লেখ?
ইচ্ছে হয় না।
কেন ইচ্ছে হয় না। এই লেখা পড়ে মনে হয়েছে তুমি পারবে, তোমার লেখায় সেই এলিমেন্ট আছে। শ্যামল চন্দ্র গম্ভীর মুখে
ধীরে-ধীরে তাকে বলল।
আছে বলছ?
ইয়েস আছে। তুমি একটা ধারাবাহিক রহস্য লেখ, রোববার রোববার দুপুরে আরাম করে পড়ব, মার্ডার অ্যান্ড মিস্ট্রি।
আচ্ছা চেষ্টা করব। হিতেন বলে।
চেষ্টা নয়, লিখতেই হবে।
তুমি রহস্য-888sport alternative link পড়তে ভালোবাস?
ইয়েস হিতেন। রহস্য ছাড়া আর কিছুই ভালো লাগে না আমার। তোমার লেখা রহস্যের কোনো বই আছে?
আমি তো একটাও লিখিনি শ্যামল।
লেখ না, বেশ গা ছমছম করবে পড়তে-পড়তে, মাথা কাজ করবে মিস্ট্রি সলভ করার জন্য, কে খুনি, কী মোটিভ, কে হাতিয়ে নিল নীলকান্তমণি, কোথায় লুকিয়েছ?
তারা ফুটপাতে পাতা ফুলওয়ালার তক্তপোশে বসে আলাপ করছিল। শ্যামল বেশ স্থূলকায়। ভারি মুখ। ধীরে-ধীরে কথা বলে। হিতেন কোনোদিন এভাবে আলাপ করেনি তার সঙ্গে। শ্যামলের দুই অনুরাগী সামনে দাঁড়িয়ে। তাদের ভেতর একজন আজন্ম বেকার, মাসির পয়সায় বাবুয়ানা করা গুঞ্জন বলল, হাঁ-হাঁ, লেখ, শ্যামলদা বলছে যখন লেখ, ডিটেকটিভ বই যদি না লিখতে পারো, তবে কিসের লেখক তুমি।
শ্যামল বলল, এই চুপ কর।
গুঞ্জন বলল, স্যরি, কিন্তু আমিও স্বপনকুমার কম পড়িনি শ্যামলদা।
শ্যামল খুশি হলো, ইয়েস স্বপনকুমার, তুমি স্বপনকুমার পড়োনি হিতেন?
হিতেন হেসে বলল, হুঁ, কে না পড়েছে, দীপক আর রতনলাল।
শ্যামল বলল, ওই স্টাইলে লেখ। তুমি খুব তাড়াতাড়ি বিখ্যাত হয়ে যাবে।
আচ্ছা ভাবি। হিতেন উঠতে চায়। তাকে বসিয়ে দেয় শ্যামল চন্দর অন্য সাগরেদ, পার্টির হোলটাইমার নিধিরাম, সে বলল, প্লিজ লিখুন। শ্যামলদা ডিটেকটিভ নভেলের পোকা, আপনি লিখুন, আপনার হবে, ‘হ’ দিয়ে নাম আপনার।
ঘাবড়ে গেল হিতেন, ‘হ’ দিয়ে নাম মানে?
আপনি তো হিতেন, এইচ, হ।
তো কী হয়েছে?
হোমস, হিচকক, হেমেন্দ্র রায়, হেডলি চেজ, দেখুন সকলের নামের আদ্যাক্ষর এইচ, আপনিও এইচ, এর মানে হ বে, হঅঅবে, এইচ। বলে নিধিরাম সিগারেট ধরায়। এই অদ্ভুত যুক্তি শুনতে-শুনতে হিতেনের মাথা ঝনঝন করতে লাগল। তখন শ্যামল তার সাগরেদকে সমর্থন করে বলে, কথাটা কিন্তু ও ভুল বলেনি হিতেন, নীহাররঞ্জন গুপ্ত, সেখানেও এইচ আছে।
উৎসাহ পেয়ে নিধিরাম বলল, এইচজি ওয়েলস, সায়েন্স ফিকশন অ্যান্ড মিস্ট্রি, হবে তো শ্যামলদা?
শ্যামল বলল, ইয়েস হবে, আমি পড়েছি দু-একটা, ভালোই লেগেছিল।
নিধিরাম বলে, হারকুল পোয়ারো, হবে তো শ্যামলদা?
হিতেন বলে, হারকুল নয়, এরকুল পোয়ারো।
কিন্তু বানানে এইচ আছে যে? জিজ্ঞেস করে নিধিরাম।
এইচ উহ্য থাকে, ফ্রেঞ্চ উচ্চারণে।
ও, তাই, কিন্তু এইচ তো আছে। নিধিরাম বলে।
তখন গুঞ্জন না থাকতে পেরে বলে, হারকিউলিস তো হবে।
উফ, হারকিউলিস কি ডিটেকটিভ? শ্যামল বিরক্ত হয়। তারপর বলে, হেবি লেগেছিল হারকিউলিসের সিনেমা দেখে, লাইক হরর ফিল্ম। সহাস্য মুখে তখন গুঞ্জন বলে, স্টিফেন হকিং।
হে-হে করে হাসে নিধিরাম, আরে হকিং কি রহস্যভেদী?
তখন শ্যামল চন্দ বলে, ব্রহ্মা-ের রহস্য ভেদ করেছেন উনি, ব্ল্যাক হোলের রহস্য ভেদ করেছেন, রহস্যভেদী তো বটেই।
হিতেন বলল, আমি উঠি।
মনে থাকবে তো, এইচ, তোমার প্রথম 888sport alternative linkের নাম ব্ল্যাক হোল দিও, এইচ আছে হোলের ভেতর, হাইফাই রহস্য লেখ।
আচ্ছা তাই হবে। উঠেছিল হিতেন। কিন্তু হয়নি। হবে কী করে? তার মনে হয়, সব রহস্য উন্মোচন করলে পাঠক তার লেখা নিয়ে কী ভাববে? যদি পাঠক না ভাবে, সে লিখবে কেন? কিন্তু এরই ভেতরে হরেন সাধু আর হরনাথ কু-ুর কাহিনি তার কাছে এসে গেছে। দুজন লোক এভাবে বই সংগ্রহ করে বেড়াচ্ছে, কেন? পুলিশে যাওয়া যায় না। পুলিশ বলবে, ডিটেকটিভ 888sport alternative linkের কেস আনুন স্যার, বই কালেকশন নিয়ে কি কেস হয়? ধরেই জামিন।
শ্যামল সব শুনে বলল, এইটা লেখ।
লিখব? হিতেন ঘাবড়ে যায়।
ইয়েস, ব্ল্যাক হোল তো লিখবে না, তা আমি সেদিনই বুঝেছি; কিন্তু এই রহস্য তুমি তোমার নভেলে ভেদ করো, বুঝতে পারলে?
তুমি তো এত রহস্য পড়ো, তোমার কী মনে হয়?
ভেবে দেখি, শার্লক হোমসের মতো বলল শ্যামল।
পারবে? হিতেন জিজ্ঞেস করল।
ইয়েস, কিন্তু আমার জন্য ভালো কিছু এনে দাও। শ্যামল বলে।
রহস্য?
ইয়েস। বলল শ্যামল চন্দ।
দেখি, আমার কাছে শরদিন্দু আছে, নেবে, ব্যোমকেশ বক্সির গল্প।
শ্যামল বলল, তার কাছে আছে শরদিন্দু, নীহাররঞ্জন, স্বপনকুমার সমগ্র, কিন্তু আর কি নেই লেখক, হিতেন নিশ্চয় জানে।
হিতেন তার প্রকাশকের কাছ থেকে বিশ্বের সেরা গোয়েন্দা গল্প নিয়ে এলো। বিশ্বের সেরা মানে ওই রকম। দু-তিনটে বিদেশি গল্পের 888sport app download apk latest version, বাকি সব স্বদেশি। স্বদেশি আবার কয়েকজন বিখ্যাত লেখক, বাকি সব অচেনা লেখক। সেই বই নাকি বছরে দুহাজার কপি হেসেখেলে বিকোয়। শ্যামল বই পেয়ে খুব খুশি, বলল, একটু মোটা দেখে আনবে বুঝলে। হিতেন স্বীকৃত হলো মোটা দেখে আনতে। আর শ্যামল বলল, সে ভাবছে, দুটো লোক একই অঞ্চল থেকে বই কালেক্ট করছে কেন? দুজনের নামের আদ্যাক্ষর এইচ, মিস্ট্রি এখানেই, সন্দেহ এখানেই।
তাই। সেটা খেয়াল করেছিল হিতেন, জিজ্ঞেস করল, কী হবে?
শ্যামল চন্দ বলে, ইয়েস, আর রহস্য বই কালেক্টর না হলে না হয় বোঝা যেত। এমনি বই কালেক্ট করছে তারা, এমনি মানে সামাজিক বই। অভাব-অভিযোগ, দুঃখ-কষ্ট, প্রেম-বাৎসল্য ইত্যাদি, এটাও রহস্য।
হুঁ, ওইসব সামাজিক দুঃখ-দুর্দশার লেখা পড়ে কী পায় মানুষ? গুঞ্জন বলল। নিধিরাম ইন্টেলেকচুয়াল, বলল, সামাজিক ব্যাপার সব বইয়েই থাকে, ডিটেকটিভ 888sport alternative linkেও, তুমি হাউন্ড অব দ্য বাস্কারভিল পড়েছ তো শ্যামলদা?
আমিও পড়েছি। হিতেন বলল।
তখন শ্যামল বলল, দ্যাখো, হাউন্ডের ভেতরেও এইচ আছে, এইচ হলো রহস্যের লক্ষণ, হিতেন তুমি এবার শারদীয়ায় রহস্যই লেখ।
লিখব তো, রহস্যটা ভেদ করে দাও।
ভাবছি, তুমি আমাকে রহস্য, রোমাঞ্চ, ভয় এনে দাও হিতেন।
চেষ্টা করে দেখি। হিতেন বলল।
হিতেনের একমাত্র এক লেখকবন্ধু শমীক মাঝে-মাঝে হরর অ্যান্ড সাসপেন্স নিয়ে লেখে। হিতেন না পেরে তার বাড়ি গিয়েছিল। শমীক প্রায়ই ডাকত, আয় একদিন আড্ডা দিই। আরে রহস্য লিখি বলে আসিস না নাকি? হিতেন যেতে সে কথায়-কথায় বলল, হরনাথ কু-ু তোর বাড়ি গিয়েছিল?
আবার সেই হরনাথ! সে বলল, না তো, কে সে, বুক কালেক্টর?
কী ভালো পড়ুয়া রে হিতেন, আমার সব গল্প পড়েছে, এসেছিল।
কেমন দেখতে, দাড়ি আছে?
না, দাড়ি নেই, তবে রাখতে আরম্ভ করেছে।
তার মানে?
পাতলা দাড়ি হয়েছে, বলছে শেভ করলেই অ্যালার্জি হচ্ছে, দাড়ি রাখতে হচ্ছে তাই, তোর অনেক বই আছে ওর কাছে, কলেজ স্ট্রিট থেকে কেনে, আবার অর্ডার দিয়েও আনায় রানাঘাট বুক স্টোর থেকে।
রানাঘাট থাকে?
না, গাংনাপুর থেকে মাইল এগারো দূরে একটা নদীর ধারে।
হিতেন বলে, নদীর ধারে বাড়ি?
ইয়েস, ইছামতির শাখা একটা নদীর ধারে বাড়ি, নদী মজে গেছে, আমার হরর সমগ্রের দুটো পার্ট নিয়ে গেল, পড়বে আর পড়াবে তার গাঁয়ের ডাক্তারকে, এমন পাঠককে বই দিয়ে আনন্দ।
হরর সমগ্র, এইচ?
হ্যাঁ এইচ, ওই হরনাথও ঠিক তোর মতো বলেছিল, এইচ, এইচ ফর হরর, তোকে দেব বলেই আসতে বলেছিলাম, পড়েই দ্যাখ না কেমন লাগে।
হিতেন বাড়ি ফিরতে-ফিরতে ভাবে, আবার আবির্ভাব হবে হরেন সাধুর। তার ব্যাগে হরর সমগ্র। বাড়ি ফিরে রাত্তিরে সে ফোন করল সেই হরেন সাধুকে। বেজে গেল কেউ ধরল না। পরের দিন সকালে দেখা শ্যামলের সঙ্গে। দুই অনুচর নিয়ে বাজারে তার নির্দিষ্ট জায়গায় বসে রহস্যালাপ করছে। তাকে দেখে ডাকল, আরে এসো রাইটার, আমি নিজে লিখতে পারি না; কিন্তু আন্দাজ করতে পারি, এইচ ফর হাউন্ড, হরর, হিচকক, হেডলি চেজ, হেমেন্দ্রকুমার, হোমস… অ্যান্ড হিতেন, হরেন, হরনাথ, তোমার ব্যাপার প্রায় সলভ হয়েই এসেছে, একটা ক্লু সলভ করতে পারছি না, হয়ে যাবে। আমার জন্য বই এনো, মাথা সাফ করতে হবে।
হিতেন বাজারের থলের ভেতর থেকে বের করল, এইচ ফর হরর, হরর সমগ্র। শ্যামল চন্দ খুব খুশি, বলল, আমি তোমাকে রহস্য ভেদ করে দেবি, লেখতে আরম্ভ করেছ?
ইয়েস, আরম্ভ হয়ে গেছে। বলল হিতেন।
ভেরি গুড। শ্যামল এবার জিজ্ঞেস করল, ওই বুক কালেক্টর কি রহস্য 888sport alternative link কালেক্ট করে, না হিতেন, নম্বরটা আমাকে দিয়ো তো, ফোন করে দেখব, দরকারে গুঞ্জন গিয়ে নিয়ে আসবে, বাড়ি কোথায়?
তখন হিতেন রায় বলল, একটা স্টেশন আছে গাংনাপুর, রানাঘাট-বনগাঁ লাইনে, সেখানে নেমে এগারো মাইল গরুগাড়ি, ওই বুঁদিপুরের বনবিবিতলা দেখা যায়। ওর পরেই একটা নদীর ধারে বাড়ি, সেই বাড়িতে দুটি লোক থাকে, অনেক বই সেই বাড়িতে, বিশ্বের যত রহস্য সেখানে, যাবে?
শ্যামল রায় জিজ্ঞেস করল, সত্যি নিয়ে যাবে, এ তো প্রায় বাস্কারভিল যাত্রা।
বলতে পারো। হেসে বলল হিতেন।
যাব। শ্যামল বলল, আই মাস্ট গো। তার চোখের মণির অন্ধকারে ভেসে উঠল বুঝি আলেয়ার আলো। হ-য়ে হাউন্ডের চোখের কোণে ফসফরাস জ্বলছে। বাস্কারভিল গ্রামের দুর্গের মতো প্রাচীন অট্টালিকা। তার দুই অনুচর চুপ। কী বলবে বুঝে উঠতে পারছে না।
দু-তিন মাস লাগবে, একটু টাইম দাও, লেখাটা শেষ করে নিই।
হিতেন জানে তিন মাসের ভেতরেই দাড়ি আর বাবরি চুলে আবার হরেন সাধুর আবির্ভাব হবে। তিন মাসের মধ্যে তার প্রথম রহস্য কীর্তির উন্মোচন হবে। আগামী তিনমাস খুব গুরুত্বপূর্ণ তার কাছে। তিনমাস বাদে বাস্কারভিল অভিযান। শ্যামল চন্দ, গুঞ্জন আর নিধিরাম দিন গুনছে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.