বিরোধ ছাপিয়ে

আমেদ আলি ও বিষ্ণু দে

কলকাতারই কলেজে পড়াতেন।

শুনেছি কাহিনী, হিন্দু-মুসলিম

দাঙ্গার সময়ে,

আমেদ বলেন একদা Ñ ‘বিষ্ণু এই দাঙ্গার ভয়ে

তুমি যদি না-ই আসো

আমার বাড়িতে

তাহলে তুমি ও আমি মেনে নিই ঘৃণ্য এই দুর্ঘটনা যেন

কলকাতার বুকে

যা কখনো না হওয়ারই কথা ছিল।’

দুজনে চলেন তাই আমেদের বাড়ি

কলেজের পরে।

আমেদের খানসামা, বাবুর্চি, চাকর

একটিই লোক, খুবই দক্ষ সে

শিককাবাব প্রস্তুতে ব্যস্ত।

দুই শিক্ষক – নানান 888sport live footballকথা গল্পে মগ্ন,

সন্ধ্যা ঘনায়!

উদ্বিগ্ন বিষ্ণু দে বলেন ‘আমেদ,

বাড়িতে ভাববে খুকু’

(তাঁর স্ত্রী) ‘এবার এগোই,

বাড়িতে তো বলা নেই এখানে আসার কথা।’

আমেদ বলেন ‘এই তো কাবাব ক’টা,

অল্পই হতে বাকি

তাছাড়া বিষ্ণু, আমিও তোমার সঙ্গে যাবো কিছুদূর।’

কাবাব ভোজন সাঙ্গ। গাঢ় অন্ধকারে

ধপধপে পাঞ্জাবি ধুতি মুসলমান পাড়ায়

থমথম করে। সন্দেহ ঘনায়।

ক্ষীণকায় দীর্ঘদেহ আমেদ বলেন

‘বিষ্ণু ভেবো না। আমাকে শেষ না করে

তোমাকে ছুঁতেও পারবে না কেউ।’

দীর্ঘদেহ শীর্ণকায় অবিচল দুজন মানুষ

হাঁটেন রাস্তায়।

প্রফেসর মামুদ তখন সে পথে,

হঠাৎ দেখেন ‘একি বিষ্ণুবাবু

আপনি এ সময়ে এখানে এভাবে?’

আমেদ জবাব দেন ‘আমিই এনেছি বিষ্ণুকে এখানে’

মামুদ, শুনেছি, অসমসাহসী, মিলিটারি ট্রেনিং ছিলো,

দাঙ্গার সময় অনেককে বঁাঁচান।

সেদিন সন্ধ্যায় মিলিটারি মেজাজেই

মামুদ হাঁটেন ফুটপাথ ধরে, পাশে বিষ্ণু দে

তার পাশে আমেদ আলি, সজাগ নয়ান।

হঠাৎ দৃশ্যটি চোখে খেলে গেলো

ক’টা দিন আগে।

নিউ ইয়র্ক সাবওয়ে স্টেশনে, ছোটখাটো সংঘর্ষ

কালোয় সাদায়।

তারই কিছু পরে, শ্বেতাঙ্গিনী

প্ল্যাটফর্মের গোলমাল ছাপিয়ে

পাশের প্ল্যাটফর্মে নিগ্রো মহিলা

এ্যানিকে ডাকেন, ‘হাই এ্যানি

সুখী হোক তোমার জীবন ॥’