শুরুতে মনে হতে পারে 888sport alternative linkটি বোধকরি বিসিএস ক্যাডারবিষয়ক নসিহতনামা। আদতে পৃষ্ঠা জুড়ে শিক্ষিত তরুণ বেকার প্রজন্মের অনুকূলে বিশেষ ব্যবস্থাপত্র! জীবিকার ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার’ পাড়ি দিতে কতবার হোঁচট খেতে হয়। কতবার শিরদাঁড়ায় নতুন উদ্যম সঞ্চয় করতে হয়।
বিসিএস ক্যাডার ম্যানিয়া-আক্রান্ত নব্য যুবসমাজের আদ্যোপান্ত মর্মভেদী আশা-নিরাশার দোলাচল চাকরিনামা। হারুন পাশা বহুকৌণিক তরিকার ইশতেহারও দিয়েছেন। মূলত বেকারত্ব যেখানে জীবনের সারসত্য ঝাপসা করে দিতে উদ্যত, অবশ্যই লাগাতার লড়াইয়ে জয়ের পথ বিস্তৃত হয়, কিংবা ঘুরপথে জীবিকার সম্ভাবনা সুপ্ত থাকে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে যে-সাফল্য তার স্বাদও বহুবিচিত্র।
চাকরিনামা প্রচলিত কথা888sport live footballের নিরিখে অভিনব। চরিত্রশাসিত আখ্যান এ-888sport alternative link। প্রকৃতি, চারপাশের ভিটেমাটি, জনমানুষের যাপিত জীবনের ইশারা, বর্ধিত সামাজিক জীবনের দূরাগত কোলাহল ইত্যাদি বয়ানে লেখক আগ্রহী নন। জামির, আয়ান, রিমু, মাহিন, জামসেদ, আনাফ, সবুজপরী এরাই সর্বেসর্বা। এদের কথোপকথনের তরঙ্গ ঘটনার রশি টেনে নিয়ে গেছে উপসংহারে।
লেখক পর্দার আড়াল থেকে চরিত্রের পুতুলগুলোকে নিখুঁত বিন্যাসে নাচিয়েছেন। তথাপি তিনিই হাজির সর্বত্র। লেখকের যাপিত জীবনের দহন, লড়াই, স্বপ্ন, বিবিধ পরিকল্পনা, বিস্তর হতাশা এবং ঘুরে দাঁড়াবার অন্তিম সাধনা পাতায় পাতায় লতিয়ে উঠেছে।
সোনার হরিণ বিসিএস ক্যাডার! বন্ধুদের আড্ডায় তাবৎ প্রজ্ঞা পর্যালোচনায় চা জুড়িয়ে যায়, অপক্ব প্রেম নিরুদ্দেশ, চলতে থাকে তুমুল বিসিএস ক্যাডার পর্যালোচনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও মোটামুটি চলনসই একটি চাকরি মিলছে না। বিসিএস ক্যাডার জপমালা স্বপ্নে জাগরণে জপতে হয়! পুলসিরাত পার হওয়া কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে ওঠে। এ-888sport alternative linkে ভাগ্যবান কেউ কেউ পর্বত লঙ্ঘন করতে সমর্থ হয়েছে। এরপর সহাস্যে বাড়ি, গাড়ি, 888sport promo code নিয়ে ‘স্বাস্থ্যকর’ জীবনযাপন করছে। তারও প্রায়শ মনে পড়ে, তাকেও বারবার টুকরো টুকরো আঘাতে চুরমার হতে হয়েছে। শিরদাঁড়া বেয়ে হতাশার সুতানলি হিসহিস করেছে; কিন্তু শতেক বিষফণায় মনোবল ধরে রাখতে হয়েছে। অবশেষে জয়যুক্ত হতে পেরেছে। কয়েকটি পঙ্ক্তি সেই অমূল্য সারকথাটি শোনায় : ‘ঝিনুক নীরবে সহো/ ঝিনুক সহো, ঝিনুক নীরবে সহে যাও/ ভিতরে বিষের বালি, মুখ বুজে মুক্তা ফলাও।’ 888sport alternative linkটির সারকথাটি, অবিশ্রান্ত লড়াইয়ের মধ্যে সুপ্ত থাকে আলোর জোনাক। নেভে জ্বলে; কিন্তু বিনাশ হওয়ার নয়।
শুরুর দিকে বিসিএস ক্যাডার ভজনা বা ব্যবচ্ছেদ। খানিকটা আলুনি লাগতে পারে পাঠকের কাছে; কিন্তু অন্য ব্যাখ্যাটি প্রণিধানযোগ্য। বিষয়টি তরুণ প্রজন্মের অনুকূলে দিকনির্দেশনাও বটে। লেখক হারুন পাশার কৃতিত্ব এখানেই, প্রতীক্ষার অচল সময়েও আশা আর স্বপ্নের গোলাপপাশ থেকে ক্রমাগত ছিটাতে থাকেন সুগন্ধি আতর, যা যাপিত স্যাঁতসেঁতে জীবনের জন্যে অপরিহার্য। 888sport alternative link থেকে : ‘বিসিএস পুরাপুরি জুয়াখেলা। এ খেলায় কেউ বাজিমাত করছে। কেউ বারবার খেলছে, হচ্ছে না। ফকির হয়ে যাচ্ছে। নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। … খুব অল্পজন বাজিমাত করে। … নাইনটি সেভেন পারসেন্ট ফকির হয়ে যাচ্ছে। অন্য চাকরি হচ্ছে। সেকেন্ড ক্লাস বা থার্ড ক্লাস। কিন্তু বিসিএস হচ্ছে না। ক্যাডার হচ্ছে না।’
888sport appsে চাকরি মানেই ক্যাডার? মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বেকার প্রজন্মের ‘ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই’ ধ্বনি-প্রতিধ্বনি করোটির খাদ্য। একবার, দুইবার, তিনবার আর কত বার?
পরিবারের স্নেহ-ভালোবাসার পারদ নিম্নগামী। চারপাশের স্বজন-বন্ধুর চোখের চাওয়ায় করুণা, কখনো বিরক্তি। চারদিকে আনন্দ উদ্যাপন – আহা কর্মহীন বলে সে আত্মমগ্ন বিষণ্নতায় একা! চরিত্রের মুখে : ‘আন্তরিকতা কিংবা ভালোবাসা অনেকটাই ফেলনা। লেনদেনের মাধ্যমে এসব হিসাব হয়। বাবা মা ছাব্বিশ সাতাশ বছর ধরে ইনভেস্ট করলো তার ফিডব্যাক দিতে হবে না? … লক্ষ্য পূরণে আগাতে হবে।’ মোদ্দা কথা, ‘মুখ বুজে মুক্তা ফলাও।’
বেকার যুবকের বিয়ের বাজারে চিরমন্দা। ঘাটে ঘাটে সহজলভ্য প্রেম-প্রীতির অভাব নেই। দারুণ হাওয়াই মিঠাই। এর পেছনেও কর্মহীন ডিগ্রিধারী নিছক কিছুটা সময় অপচয় করে।
চরিত্রগুলোর দায়িত্ব কথার বুননে কাহিনি বয়ান। পুরো গ্রন্থের প্রকাশভঙ্গিতে আছে অভিনবত্ব। প্রচলিত কাঠামোগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে লেখা। এখানেও একপ্রকার শৈল্পিক প্রতিবাদ।
পরবর্তী পর্যায়ে কোটা আন্দোলনে মাঠে নামার ঘটনা। চাকরির বয়সসীমা তো লড়াই করতে করতেই কর্পূরের মতো উধাও হয়ে যাচ্ছে। প্ল্যাকার্ডে জ্বলজ্বল করে, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটা বৈষম্যের ঠাঁই নাই!’ ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, এর মধ্যে অসম প্রেম বা পরকীয়ার কিছু নমুনা দেখা দেয়। বাড়িওয়ালির সঙ্গে অপরিণামদর্শী ভাববিনিময়ে সংক্ষিপ্ত কিস্সা-কাহিনি এবং অনতিবিলম্বে খানখান হয়ে ভেঙে যাওয়া কাচের সেতুবন্ধ।
সবুজপরী নামে চরিত্র স্বামীর ঘরে অধীনস্থ অবলা মাত্র। সে তর্জনীর আস্ফালন, রক্তচক্ষুর শাসনে নিতান্তই অভ্যস্ত। তার সন্তান আছে, আছে ভরা গেরস্থালি। নেই পরস্পর সম্মানবোধ। আয়ান চোরাবালিতে পা দিয়ে কিছুদিন হয়তোবা চাকরির চক্র থেকে নিস্তার পেয়েছিল। শেষতক মেয়েটির নিরাপদ সংসারীমন বেকার আয়ানকে ঠেলে দিলো ঘোর অন্ধকারে। এমনটিই ঘটে থাকে সমাজ-সংসারে।
আবারো সংগ্রামের পথ। ‘কোটা আন্দোলনের ঘণ্টা বাজে। একসময় কোটার ইতিহাস ছিল মানুষের মুক্তির অংশ, এখন অনেকটাই কারাগার।’ …
888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনের সূত্রপাত করে। ঔপন্যাসিক হারুন পাশা কোটাবিষয়ক খবরাখবর পর্যায়ক্রমে তুলে ধরেছেন। এই তথ্যগুলো গবেষণা পর্যায়ের কাজ বটে।
ছাত্রসমাজের এই আন্দোলনে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন : ‘আমার মনে হয় না বর্তমানে দশ শতাংশের বেশি কোটা থাকা উচিত।’ এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন : ‘এটা পরিষ্কারভাবে অগ্রহণযোগ্য। আমলারা দেশ চালাতে বড় ভূমিকা রাখেন। … অন্যদিকে যারা মেধাবী ছাত্র, যারা পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাবে আশা করেন, তাদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হচ্ছে।’
চরিত্রের মতে, ‘এটা মেনে নেওয়া যায় না। একটা দেশে ছাপ্পান্ন ভাগ কোটা – মেধা মাত্র চুয়াল্লিশ ভাগ। মেধার থেকে কোটা কখনোই বেশি হতে পারে না। … আন্দোলনকারীরা চেয়েছিল কোটা থাকবে কিন্তু পরিমাণটা কম হবে। যেখানে মেধাবীরাও সুযোগ পাবে, সুযোগ থাকবে কোটাধারীদেরও।’
এমন ব্যবস্থা হলে বেকারত্বের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত হবে তরুণ প্রজন্ম, একই সঙ্গে দেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে।
আয়ানের বন্ধু এবং অন্যরা প্ল্যাকার্ড হাতে নেমে পড়ে রাস্তায়। লেখা থাকে তাতে, ‘তরুণের রক্ত/ আগুনের চেয়েও গরম বেশি/ দাবী মেনে নেন পড়তে বসি।’ কেউবা পিঠের গেঞ্জিতে লিখেছে, ‘প্লিজ কিল মি অর রিফোর্ম কোটা।’ কেউ লিখেছে, ‘পারলে মাথায় গুলি কর। তাহলে মেধা মারা যাবে। কিন্তু বুকে গুলি করিস না। এখানে বঙ্গবন্ধু ঘুমায়। বন্ধু জেগে উঠলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে।’ ইত্যাদি।
আশা-জাগানিয়া বাঁক আছে 888sport alternative linkের শেষের দিকে। চার বন্ধু অবশেষে জয়যুক্ত হয়েছিল।
জামসেদ কৃষি আবাদে সফল হয়। প্রশিক্ষণ নিয়ে পৈতৃক জমিতে বিপুল উদ্যমে চাষাবাদ শুরু করে। মাছ-হাঁস-মুরগি এবং গরুর খামারও গড়ে তোলে। জামসেদ তাই সুশিক্ষিত শস্যজীবী আর পরিতৃপ্ত খামারি! নিজের জীবিকার ক্ষেত্র খুঁজে নিতে হয় নিজেকেই। মেধা-শ্রম কখনো বৃথা যায় না।
888sport alternative linkের পরতে পরতে এ-সময়ের শিক্ষিত বেকার প্রজন্মের আর্দ্র দীর্ঘশ্বাস এবং রাহুমুক্তির ইশারা। বলা যায়, অমূল্য দিকনির্দেশনার ইশতেহার।
হারুন পাশার চাকরিনামা 888sport alternative link দৃশ্যত ধূলিচিত্রিত! তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে বিচ্ছিন্নতা বোধ, অস্তিত্বের সংকট। অতঃপর কিন্তু স্বপ্ন ও সম্ভাবনার চমকিত জরির ঝালর নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় না। লেখকের ভাষাভঙ্গি সহজ-সরল। অলংকারের বাহুল্য নেই। নির্মেদ, বেগবান ভাষা। আঞ্চলিক ভাষার সামান্য ব্যবহার দেখি। সমাজব্যবস্থা, দেশ ও মধ্যবিত্তের অগুনতি সংকট লিপিবদ্ধ করেছেন মুন্শিয়ানার সঙ্গে। চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ প্রজন্মের অনুকূলে এই গ্রন্থটি হবে অভিজ্ঞতা ও পরিত্রাণের আকর গ্রন্থ। সমাজসচেতন পাঠক পাবেন সংকট থেকে উত্তরণের জিয়নকাঠির হদিস। গ্রন্থটি পাঠকসমাদৃত হবে বলে আশা রাখি।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.