বেদনা আর স্নিগ্ধতার 888sport sign up bonusচিত্র

রবীন্দ্রনাথ তাঁর নিজের ছেলেবেলা সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘যে মূর্তিকার আমাকে বানিয়ে তুলেছেন, তাঁর হাতের প্রথম কাজ 888sport appsের মাটি দিয়ে তৈরি। একটা চেহারার প্রথম আদল দেখা দিল। সেটাকেই বলি ছেলেবেলা, সেটাতে মিশোল বেশি নেই। তার মাল-মসলা নিজের মধ্যেই জমা ছিল, আর
কিছু-কিছু ছিল ঘরের হাওয়া আর ঘরের লোকের হাতে।’ নিজের-নিজের ছেলেবেলা সম্পর্কে এমন অভিজ্ঞতা শুধু রবীন্দ্রনাথের একার নয়, আরো অনেকের। তাঁদের মধ্যে অলকানন্দা প্যাটেলও রয়েছেন। অন্তত তাঁর পৃথিবীর পথে হেঁটে (আগস্ট ২০১৭) গ্রন্থটি সে-সাক্ষ্যই দেয়। বইটি অলকানন্দা প্যাটেলের ছেলেবেলার 888sport sign up bonusকথা বটে; কিন্তু এর কেন্দ্রে রয়েছেন তাঁর পিতা অর্থনীতিবিদ-অধ্যাপক অমিয়কুমার দাশগুপ্ত (১৯০৩-৯২)। আর সে-সূত্র ধরেই অনেকটা সাংগীতিক-গড়নে, নানাভাবে নানারকম মানুষকে ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা। সেইসঙ্গে জীবনের বিচিত্র ঘটনা ও তার অভিঘাতের বিবরণ। এককথায় তাঁর ছেলেবেলার ওপর ভর দিয়ে আমরা অলকানন্দা প্যাটেলের গোটা জীবনের একটা পরিচয় পেয়ে যাই।

 

দুই

কবি অজিত দত্ত তাঁর তরুণ বয়সে লিখেছিলেন, ‘ব্যাচেলর অমিদা/ যদি কোনো জমিদা-/ রের মেয়েকে বিয়ে করে ফেলেনই,/ তাহলে কী আশাতে/ আসিবো এ-বাসাতে,/ সে-কথা তো কেউ ভেবে দ্যাখেনি।’ এই ‘অমিদা’ হলেন অধ্যাপক অমিয়কুমার দাশগুপ্ত, যাঁর কথা আমরা পেয়েছি সরদার ফজলুল করিমকে দেওয়া অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের আলাপচারিতায়। যিনি ৯৫০ টাকা বেতনের সরকারি চাকরি ছেড়ে তাঁর প্রাণের 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়েই আবার ফিরে এসেছিলেন ১২৫ থেকে ২০০ টাকা বেতনের অধ্যাপনায়। আজকের দিনে এমন ব্যাপার আমরা কল্পনাতেই শুধু ভাবতে পারি। অন্যদিকে, অর্থনীতিবিদ-রাজনীতিবিদ অশোক মিত্র বলেছিলেন, ‘যিনি আমার ভবিষ্যৎ জীবনচর্যার অন্যতম প্রধান নিয়ামক, তিনি অমিয়কুমার দাশগুপ্ত। অর্থনীতির তত্ত্ব নিয়ে তাঁর মতো তন্নিষ্ঠ গবেষণা ইতিপূর্বে আমাদের দেশে কেউ করেননি। তাঁর চেয়ে দক্ষতর শিক্ষকও আমি দেশে-বিদেশে কোথাও পাইনি। তাঁর বিদ্যা ও পড়ানোর উৎকর্ষ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবাদপ্রতিম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দশকের পর দশক ধরে তিনি 888sport appয় প্রতিভাধর এন্তার ছাত্র তৈরি করেছেন। পরে কটকে র‌্যাভেনশ কলেজে, কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং দিলিস্নতে, একই জ্ঞানচর্চার পরম্পরা।’ সেই অমিয়কুমার দাশগুপ্তের মেয়ে অলকানন্দা প্যাটেল। যিনি নিজেও নিজের গুণেই গুণী অর্থনীতিবিদ, গবেষক। পাশাপাশি সংগীতশাস্ত্রেও তিনি তাঁর কৃতিত্বের পরিচয় রেখেছেন।

 

তিন

অলকানন্দা তাঁর 888sport sign up bonusকথার শুরুতেই জানিয়েছেন, ‘দুটি জিনিস মানুষের অবিচ্ছেদ্য সম্পদ, কেউ তা কেড়ে নিতে পারে না। যতদিন মানুষ জীবিত থাকে। অনুভূতি ও 888sport sign up bonus।’ তাঁর 888sport sign up bonusকথায় আমরা ঘটনার বিবরণের পাশাপাশি এই অনুভূতি আর 888sport sign up bonusর নানা পরিক্রম দেখতে পাই। 888sport sign up bonus তো কখনো-কখনো বেপথু হয়। সেইটি জানতেন বলেই অলকানন্দা নিজের অন্তর্গত তাগিদ থেকেই এ-বিষয়ে তাঁর ‘মায়ের চিঠির ঝাঁপি ও ডায়েরির পাতা’র সহায়তা নিয়েছেন। তুলে ধরেছেন

‘১৯৩৩-এর পর থেকে অন্তত ষাট বছরের ইতিহাস।’ যার কেন্দ্রে রয়েছে শহর 888sport app। অলকানন্দার ‘888sport app শহর বহুমাত্রিক; তবু মনে হয় আমার 888sport app শহরের আত্মা ছিল সম্পর্কের, বন্ধুত্বের, বন্ধনের।’ অলকানন্দা জানাচ্ছেন, ‘আমার জন্ম 888sport appয়, গে-ারিয়ার সতীশ সরকার রোডের ‘উমা কুটিরে’র দক্ষিণের ঘরে। দিনটি ছিল ২৩ কার্তিক, ১৩৪৪, ইংরেজি ৯ নভেম্বর, ১৯৩৭।… গে-ারিয়ায় জন্ম, আর এই গে-ারিয়ার বাড়ি থেকেই ১৯৪৬-এর ২ অক্টোবর পুলিশের পাহারায়, পুলিশের গাড়িতে 888sport app ছেড়েছিলাম।… পুরো নয় বছর নিশ্চয়ই নয়, কিন্তু শেষের চার-পাঁচ বছরের 888sport sign up bonus আছে। আমরা বড় হয়েছি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা, স্বাধীনতা সংগ্রামের মাঝে। আনন্দ-আতঙ্ক দুই-ই পাশাপাশি ছিল, আমরা ছোটরা কিন্তু আনন্দ নিয়েই থেকেছি, মন থেকে আতঙ্ক মুছে ফেলতে সময় লাগেনি।’ সব মিলিয়ে একেবারে নিজের কথা, নিজেদের পরিবারের কথাই তিনি বলেছেন, সেইসঙ্গে এমনটিও আশা করেছেন যে, ‘আমাদের নিজস্ব কথা থেকে 888sport app শহরের একটি সমাজের কিছুটা ছবি পাওয়া যাবে।’ বইটির নিজস্ব মূল্য যদি কিছু থেকে থাকে, তাকে খুঁজতে হবে এখানেই। বাবা-মায়ের একটি পরিচয়ও দিয়েছেন অলকানন্দা, ‘আমার বাবা, অমিয়কুমার দাশগুপ্ত, গৈলা বকশীবাড়ির পার্বতীকুমার দাশগুপ্ত ও ষষ্ঠীমণি দাশগুপ্তের কনিষ্ঠ সন্তান। ওঁর ছেলেবেলা কেটেছে গ্রামে, গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন। স্কুল পাশের পর দুবছর বরিশাল শহরে ব্রজমোহন কলেজে পড়ে 888sport app যান উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে। ১৯২৬ সালে 888sport app ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি স্নাতক, ১৯২৬ থেকে ১৯৪৬ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন।’ মাকে বাদ রাখেননি। জানিয়েছেন, ‘শহর 888sport appর মেয়ে, আমার মা, শান্তি দাশগুপ্তা, ইডেন স্কুল ও কলেজ পড়া, 888sport app ইউনিভার্সিটির সংস্কৃতের স্নাতক।’ তাঁর ‘বাবা-মার প্রথম সংসার ছিল সেগুনবাগানে (আমরা সেগুনবাগিচা বলতাম না)।… পরিবেশ নির্জন।’ আমরা অনেকেই জানি, অলকানন্দাও জানিয়েছেন, সেইসময় ‘অধ্যাপকদের পারিতোষিক কম ছিল, তদুপরি মধ্যবিত্ত পরিবারে পারিবারিক দায়িত্ব থাকত, টানাটানি না থাকলেও খুব একটা স্বসিত্মর সঙ্গে খরচ করার মতো টাকা থাকত না। বাবা-মার প্রথম সংসার খুব পোশাকি ছিল না।’

 

চার

নিজের 888sport app শহর সম্পর্কে বলতে গিয়ে অলকানন্দা জানিয়েছেন, ‘আমার 888sport app শহর ছিল অত্যন্ত সীমিত, পুরানা পল্টন ছিল আমার জগৎ।’ তাঁর মাধ্যমে আরো জানতে পারছি, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই পুরানা পল্টনে থাকতেন – পরিমল রায়, অজিত সেন, মন্মথ ঘোষ, সত্যপ্রসাদ রায়চৌধুরী, সবাই আমাদের প্রতিবেশী এবং বাবার বন্ধু হিসেবে আমাদের কাকা বা মেসো। এঁদের স্ত্রীরা ছিলেন মায়ের বন্ধু, আর এঁদের মেয়েরা আমার খেলার সাথী।’ অলকানন্দা নিজের 888sport sign up bonusর রেখা টানতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমার প্রথম 888sport sign up bonus পুরানা পল্টনের ৫ নং বাড়িকে ঘিরে। নিরিবিলি পাড়া, অনেকটা জমি নিয়ে বেশিরভাগ একতলা বাড়ি। কুন্দ, দোলনচাঁপা, মাধবীলতা, জুঁই-কাঞ্চন ছাড়াও অনেক বাড়িতে ছিল মৌসুমী ফুলের বাগান।’ আর এই পুরানা পল্টনের কথা বলতে গিয়ে তার টানেই হয়তো-বা খুব স্বাভাবিকভাবেই গে-ারিয়া, ওয়ারী, লক্ষ্মীবাজার, নবাবপুর বাজার, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, আরমানিটোলা, ফরাশগঞ্জের কথাও উঠে এসেছে। এসেছে সেদিনের ধানম–র কথাও। অলকানন্দা লিখেছেন, ‘ধানম– তো প্রায় বাঘ-ভালুকের দুনিয়া, সেখানে কেউ থাকে বা যায় সেটা বিশ্বাস হতো না। সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ছিল নীলক্ষিত; যেন আকাশছোঁয়া অনেক খোলা মাঠ, দিগন্তরেখা সেখানে নেমে এসেছে। এই সুদূরের হাতছানি খুব আকর্ষক হলেও আমরা আমাদের পুরানা পল্টন নিয়েই খুশি ছিলাম।’ সেইসঙ্গে লেখিকা এ-ও জানিয়েছেন, ‘মায়ের হিসাবের খাতা থেকে দেখছি, ১৯৪০-এ ৫ নম্বর-এর ভাড়া : ৪২ টাকা, যখন কেটেকুটে বাবার মাইনে ছিল ১২৫ টাকার আশেপাশে।’ তার মানে বেতনের একটা বড় অংশই খরচ হয়ে যেত বাড়িভাড়ার পেছনে। আজকের দিনের 888sport appর ভাড়াটিয়া সম্প্রদায় এই হিসাব থেকে খানিকটা হলেও সান্তবনা পাবেন। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে গিয়ে সেখানকার অধ্যাপকদের কথা এসেছে, এসেছে সেখানকার পরিবেশের কথাও, যা একটি ছোট মেয়ের চোখে এখনো ভেসে আছে : ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নানা এলাকায় বেশিরভাগ বাড়িতে সুন্দর বাগান ছিল। নীলক্ষেতের বাগান ছিল বিখ্যাত। বিশেষ করে প্রফেসর সত্যেন বোসের বাগান, সেখানে উনি পায়চারি করতেন। আমার বাবার মতো, মালি কাজ করলেও গৃহস্বামী নিজেই বাগানের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতেন।’ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক-কবি মোহিতলাল মজুমদারের (১৮৮৮-১৯৫২) গোলাপ-বাগানের কথাও অনেকেরই 888sport sign up bonusকথায় আমরা পেয়েছি।

 

পাঁচ

নিজেদের ঘর-গৃহস্থালির খুঁটিনাটি সব বিবরণ অলকানন্দা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ‘আমাদের সব বাড়িতে আসবাবপত্র ভালো হতো; গোছানো, পরিচ্ছন্ন থাকত; কিন্তু সাজানোর জন্য শখের জিনিস বিশেষ রাখা হতো না, বড়জোর হাতের কাজ বা লেসে তৈরি টেবিলের কভার।’ সেইসঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, ‘৫ নং বাড়ির ভেতরের উঠোনের আকর্ষণ ছিল প্রচুর। কুয়ো থেকে জল তোলা, কয়লা ভাঙা, গুল দেওয়া, কাঠ কাটা, গেরস্থালির কত কাজ সেখানে হতো। উঠোনের দরজায় দাঁড়িয়ে দুই কাঁধে বাঁশে ঝোলানো হাঁড়িতে দুধ, ঘি, গুড় বিক্রি করতে নানাজনের আনাগোনা, কাবুলিওয়ালার হাঁক, মুশকিল আসানের গান… এই উঠোনেই পুরনো ধুতি গায়ে জড়িয়ে বাবা বসতেন আর নাপিত তার দক্ষ হাতে কাঁচি দিয়ে চুল ছেঁটে দিত। পেছনের বারান্দায় চলত ঝামা দিয়ে পা পরিষ্কার করে আলতা পরা, চুল বাঁধা আমার বিনুনি, মায়ের খোঁপা; লুডু খেলা, ছবির বই দেখা, জলছবি লাগানো যেন মেয়েদের, ছোটদের আলাদা মহল।’ ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের সূত্র ধরে সে-সময়কার কেনাকাটার একটি চিত্র পাই, ‘কাপড়চোপড় কেনাকাটা মানেই ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়। লেপ-তোশকের কাপড়, মার্কিন, লং ক্লথ, শালু থেকে বেনারসি শাড়ি অবধি, সব কিছুতেই এই দোকানের নাম দেখতে পাই পুরনো কাগজপত্রে। মার্কিন, লং ক্লথ কিন্তু হেলাফেলার ছিল না, এ দুটি ছাড়া সংসার করা ভার। শুধু ওয়াড় কেন, মার্কিন দিয়ে তৈরি হতো ছেলেদের নিমা, ছোটদের মেয়েদের হালকা জামা, যাতে কুঁচি করা কাপড় এদিক-ওদিক লাগালেই হয়ে যেত বাহারের ফ্রক। বড়দের সেমিজ, হালকা পর্দার প্রয়োজন হলে পর্দা, প্রায় হলুদের গুঁড়োর মতো। লং ক্লথ একটু শৌখিন, শুধু পাজামা নয়, অল্পবয়সীদের শার্ট, পাঞ্জাবিও বানানো হোত এ দিয়ে। বাবা-কাকাদের পাঞ্জাবির জন্য আসত আদ্দি। সবকিছু পাওয়া যেত এক ছাদের নিচের ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ে। বছরের পর বছর কেটেছে, মায়েদের পছন্দের দোকান বদলায়নি।’

অলকানন্দা প্যাটেল জানিয়েছেন, ‘ছোটবেলার প্রধান 888sport sign up bonus হচ্ছে আমার ভাইয়ের জন্ম। ভাইবোন কেউ আসছে আমাকে বোঝানো হলেও, এর তাৎপর্য বুঝতে পারিনি। সেজমারা বাড়িতে হৈচৈ সবসময়। হঠাৎ একদিন এক ঘোড়াগাড়ি এলো, দুই ইংরেজ বা বিদেশি মহিলা নামলেন, নীল-সাদা গোড়ালি অবধি নিচু বিদেশি বেশ, গলায় ক্রস। মাকে পরীক্ষা করতে এসেছেন এঁরা ডাক্তার। ভয় ঢুকে গেল, মা নিশ্চয়ই অসুস্থ। এই ভয়ের জন্যই বোধহয় গাড়ি থেকে নেমে দুই শ্বেতাঙ্গী মহিলা গেট দিয়ে ঢুকছেন, এ ছবি আমার চোখের সামনে থেকে কখনো মুছে যায়নি।’ তিনি আরো জানিয়েছেন, ‘একদিন শুনলাম আমার ভাই হয়েছে। আনন্দ, ঈর্ষা কিছু মনে পড়ে না, শুধু মনে পড়ে দিশাহারা হয়ে গিয়েছিলাম। বাবা যত্ন নিলেও আমার দৈনন্দিন জগৎ পালটে গেল, আমি মায়ের কাছ থেকে দূরে।… ছেলে হয়েছে সবাই সেই আনন্দে ব্যস্ত, আমার দিকে তাকাবার কারো সময় নেই। হঠাৎ একাধিপত্য চলে গেল, আমি বাইরের কেউ হয়ে গেলাম।… সেকালে একটি কন্যাসন্তানের মনে ঈর্ষা নয়, ব্যথা হতে পারে তা নিয়ে আত্মীয়-পরিজন বড় একটা চিন্তা করতেন না।’ অভিযোগ গুরুতর সন্দেহ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, এখনকার সময়ের অভিভাবকরাও কি এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব একটা সচেতন? অলকানন্দার 888sport sign up bonusতে ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষের কথা তেমন-একটা না পেলেও তিনি এইটুকু জানাতে ভোলেননি, ‘ভাইয়ের জন্মের কমাস পরই দুর্ভিক্ষ শুরু হলো, বিবন ভাইয়ের নাম দিল ‘আকালবাবু’। সারাদেশের মতো 888sport appতেও এই দুর্ভিক্ষের ছায়া পড়েছিলো তীব্রভাবেই।’ সরদার ফজলুল করিমের 888sport sign up bonusকথায় এটা পাই, যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘১৯৪৩ সালটি মনে রাখা দরকার। ১৯৪৩ মানেই হচ্ছে বাংলা ১৩৫০। ১৩৫০ সালে হয়েছিল সেই নিদারুণ দুর্ভিক্ষ, যার নাম ’৪৩-এর মন্বন্তর। এই দুর্ভিক্ষটা আমাদের প্রভাবিত করে। এতে যত না কংগ্রেস কর্মী, ফরওয়ার্ড বস্নক, আর. এস. পি. আই. এরা বেরিয়ে আসে, তার চেয়ে বেশি বের হয়ে আসে কমিউনিস্ট কর্মী।… আমি তখন সক্রেটিস, পেস্নটো, হেগেল এসব নিয়ে পড়াশুনো করছি। একদিন আমার এক কমরেড এসে বলছে, ‘তুমি কী এত লেখাপড়া করো? হেগেল তোমাকে কোথায় নিয়ে যাবে? তোমার মা-বোনেরা যেখানে মারা যাচ্ছে সেখানে তুমি হেগেল পড়ে কি করবে?’ আমি নিজেও নিজেকে প্রশ্ন করছি, এই পাঠ দিয়ে আমি কোথায় যাব?… সুতরাং আমি আমার হেগেলের কাছে থাকতে পারলাম না। পরদিন আমাকে যেতে হল নয়া বাজারে সিরাজদৌলস্না পার্কে। ৪৩-এর দুর্ভিক্ষের সময় আমি বন্ধুদের সঙ্গে গ্রামেও গিয়েছি রিলিফের কাজে।’

 

ছয়

তাঁর সময়কার পড়াশোনার কথা বলতে গিয়ে অলকানন্দা জানিয়েছেন, ‘একটু বড় না হলে, অন্তত সাত-আট বছরের না হলে, আমরা স্কুলে ভর্তি হতাম না। প্রথমত, শুধু পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভর করে, সীমাবদ্ধ সিলেবাসের ওপর পড়াশোনা করা আর লম্বা সময় ছোটদের স্কুলে কাটানো, অনেক মা-বাবাই পছন্দ করতেন না। এর থেকে বাড়িতে বড়দের কাছে নানা বিষয়ে লেখাপড়া শেখানোতে ছিল এঁদের বিশ্বাস।’ সেই পড়াশোনাটা আজকের মতো এতটা নির্দয় যে ছিল না, সেটিও অলকানন্দার কথা থেকে বুঝে নিতে পারা যায়। তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে বেশি আনন্দের সঙ্গে শেখা হতো মৌখিকভাবে কথাবার্তার মাধ্যমে প্রায় খেলাচ্ছলে।… টেবিলে বসে গেস্নাব দেখে পৃথিবীর নানা দেশ, শহর সম্বন্ধে শিখতাম। তখনো পড়তে শিখিনি, অক্ষর-পরিচয় হয়নি, কিন্তু গেস্নাবে কোথায় কোন শহর দেখিয়ে দিতে পারতাম।… যতই স্বাধীনভাবে পাড়াতে ঘুরে বেড়াই না কেন, বাড়ি ফিরতে হতো আলো থাকতে থাকতে, সন্ধের অনেক আগে। হাত-পা ধুয়ে, কাপড়-জামা বদলে বই-খাতা নিয়ে বসতাম দাদার সঙ্গে।’ পড়াশোনার পাশাপাশি উলেস্নখ করেছেন প্রিয় বন্ধুদের সাহচর্যের 888sport sign up bonus। যাদের মধ্যে ছিল কৃষ্ণা (পরিমল কাকার ভাইঝি), মিষ্টিদি (অজিত সেন মেসোর মেয়ে), টুটু (বাবার বন্ধু অরুণ দত্ত মেসোর মেয়ে)। অবাক করা ব্যাপার এই যে, দেশবিভাগের পরেও সম্পর্কের এই সুতোগুলো একেবারে ছিন্ন হয়ে যায়নি, বরং কখনো-কখনো দেখি অটুটই থেকেছে। পড়াশোনা বা বন্ধুত্বের 888sport sign up bonusই শুধু নয়, তার পাশাপাশি সেই সময়কার পুজো-পার্বণের বিবরণটাও লেখিকা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘দুর্গাপূজা ছিল বছরের সবচেয়ে বড় উৎসব, নতুন জামা-কাপড় পরে, ঢাকের ধ্বনি, পুজোর মন্ত্রপাঠ, চ-ীপাঠ শুনতে শুনতে সবাই একত্র হয়ে পুজো দেখার মতো আনন্দ বছরে কমই আসে।… প্রতি বছর অষ্টমীর দিন কয়েক পরিবার মিলে যাওয়া হতো রামকৃষ্ণ মিশনে, অষ্টমীতে কুমারী পুজো, আলো ঝলমলে পুজো। সারাদিন ওখানেই কেটে যেত। নবমীর দিন যাওয়া হতো ঢাকেশ্বরী মন্দিরে।’ দুর্গাপুজোর চেয়ে বাড়িতে সরস্বতী পুজোর প্রতি যে-আকর্ষণ বেশি ছিল সেটিও অকপটে বলেছেন, ‘আমরা ঘটা করে বাড়িতে সরস্বতী পুজো করতাম। এই দিন বই-খাতা খোলা মানা, পুজো, প্রসাদ, শাড়ি পরা সম্ভব হলে বাসমত্মী রঙের শাড়ি, সারাদিন নির্ভেজাল আনন্দ। একটি মুশকিল ছিল; সরস্বতী পুজোর আগে কুল বা বরই খাওয়া মানা, বাড়ির কুলগাছ ফলে ভরে যেত, নিচে ছড়িয়ে থাকত, অতিকষ্টে লোভ সংবরণ করতাম। বিদ্যার দেবী, নিয়ম অমান্য করা যায় না। পুজোর ব্যাপারে পরিমলকাকার মা বলতেন, ‘মূর্তির প্রয়োজন কী, বই-খাতা, পেনসিল, দোয়াত-কলম পুজো করো।’ 888sport appর জীবন থেকে শুরু করে আজো প্রতি বসন্তপঞ্চমীতে তাই করছি। এখন তো আর পাঠ্যপুস্তক নেই, পছন্দের বই, পরিবারের কারো লেখা বই, তানপুরা, তবলা ফুল সাজিয়ে প্রণাম করি।’ এভাবেই লেখিকা, তাঁর এই বইতে, ছেলেবেলা থেকে বর্তমানে বারেবারে ফিরে এসেছেন। এছাড়া এসেছে তাঁর মা-মাসিদের কথাও, ‘মা-মাসি-কাকিমারা পাড়ার বাইরে বিশেষ যেতেন না, অভিভাবক ছাড়া কখনই নয়। বাইরে যেতে হলে ঘোড়াগাড়ি আনা হতো। অবস্থাপন্নরা যেতেন ফিটনে করে। বিকেলে গা-ধুয়ে, পাটভাঙা শাড়ি পরে পাড়ার মধ্যে বেড়াতে গেলেও সন্ধ্যার মধ্যে সবাইকে বাড়ি ফিরতে হতো। সংসারের কাজ শুধু নয়, ছেলেমেয়েদের এটা ছিল পড়ার সময়। তাছাড়া গৃহলক্ষ্মী কথাটা মনে রাখা হতো, ধূপধুনোর সঙ্গে সঙ্গে গৃহলক্ষ্মী শাঁখ বাজিয়ে দেবী লক্ষ্মীর আবাহন করতেন।’ মাসি-কাকিদের জীবনযুদ্ধের কথাও এখানে-ওখানে প্রসঙ্গক্রমে চলে এসেছে। যা লেখিকা অত্যন্ত গর্বভরে 888sport app download for android করেছেন। সে-সময়কার নিজেদের সংসারে 888sport promo codeর মর্যাদা বিষয়ে অলকানন্দার মূল্যায়ন, ‘কোনো তাত্ত্বিক বিশেস্নষণের আলোচনা না হলে সব আড্ডাতেই বাবা-মেসো-কাকাদের সঙ্গে মা-মাসি-কাকিদের সমান স্থান ছিল। এঁদের নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল, সিঁড়িতে বসে বা খোলা বারান্দায় কত সময় নিজেরা গল্পগুজব করতেন। ‘সারাদিন হেঁসেল ঠেলছি’ এই অনুশোচনা শুনিনি। আশ্চর্য, এত কাজের মাঝেও মায়েদের বই পড়া, পাড়ায় অল্প বেড়ানো, দুপুরে একটু গড়িয়ে নেওয়া বা সেলাই করা সবকিছুর সময় থাকত।’

 

সাত

অতীতের সেই দিনগুলোর কথা 888sport app download for androidে রেখে লেখিকা বলেছেন, ‘আমাদের জীবন ছিল সাদামাটা, নিয়মে নিয়ন্ত্রিত। খেলনা, সাজগোজ, 888sport free bet login কিছুরই প্রাচুর্য ছিল না। প্রাচুর্য না থাকলেও জীবনযাত্রা সুঠাম, পরিচ্ছন্নভাবে চালানো হতো। সাজের মধ্যে প্রজাপতি আকারের ক্লিপ পেলেই খুশি। প্লস্টিক আসেনি, গ্যাটাপার্চারের হলে তাকে অত্যন্ত সৌখিন মনে হতো। কিছুটা কারণ নিশ্চয়ই অর্থের অসংকুলান; শুধু তাই নয়, হেলাফেলার প্রাচুর্যকে অনেকেই সুনজরে দেখতেন না। যেন সংস্কৃতি, ঐতিহ্যহীন হঠাৎ-বড়লোক। পাড়ায় এরকম দুএকজন ছিলেন, পরিমলকাকা তাঁদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতেন।’ সাদামাটা মধ্যবিত্ত জীবন, কিন্তু সে-জীবন ছিল শুভবোধে-মঙ্গলালোকে কানায়-কানায় পরিপূর্ণ। অলকানন্দা জানিয়েছেন, ‘মধ্যবিত্ত পরিবারের ভূষণ ছিল বই আলমারি ভরা বই। শুধু অধ্যাপক মহলে নয়, প্রায় বাড়িতেই থাকত ইংরেজি ও বাংলা 888sport live football গদ্য এবং পদ্য, 888sport slot gameকাহিনি বা ভক্তিমূলক বই। পাঠ্যপুস্তক ছাড়া ছোটদের জন্য আনা হতো গল্পের বা শিক্ষামূলক বই, যাতে ছোটরা একটি বৃহত্তর পৃথিবীর ছোঁয়া পায়। এছাড়া আসত নানারকম মাসিক পত্রিকা, যেমন প্রবাসী, ভারতবর্ষ, বসুমতী। ১৯৩০-এর দশকে দেখেছি ‘প্রবাসী’ শুরু হতো রবীন্দ্রনাথের 888sport app download apk দিয়ে, তারপর বিশ্বের নানা সংস্কৃতির ওপর 888sport live, নানা গল্প ও ধারাবাহিক 888sport alternative link। পড়ুয়াদের ব্যস্ত রাখবার রসদ কম ছিল না। গৃহিণীরা সংসারে শত কাজের মাঝেও সময় করে দুপুরে একটু বই পড়ে নিতেন; দৈনন্দিন জীবনের বিশেষ অঙ্গ ছিল বই পড়া।’ এই প্রবাসী পত্রিকা বিষয়ে সনৎকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলা সাময়িকপত্র প্রকাশনার প্রবাহে প্রবাসী দিকচিহ্নপ্রতিম। বস্ত্তত বিশ শতকের প্রত্যুষে প্রকাশিত এই সাময়িকপত্র বাঙালির রাষ্ট্রিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের বাঁকবদলের কালবিন্দুকেই যেন চিহ্নিত করে রেখেছে। 888sport live footballক্ষেত্রে যে বিপুল অর্জন নিশ্চিত হয়ে গেল, রাষ্ট্রক্ষেত্রে প্রগাঢ় দেশচেতনার নানা স্রোত-প্রতিস্রোত যেভাবে উন্মথিত হল, সংস্কৃতির অন্য নানা আঙিনা যে সোনালি ফলনে সমাকীর্ণ হল, তার প্রতিভাস মিলে যাবে ‘প্রবাসী’-র অক্ষরসমারোহে, অলংকরণ, অঙ্গসজ্জা, আলোকচিত্র ও চিত্রবহুলতার আয়োজনে। প্রবাসী এবং তার জন্মদাতা ও স্বপ্নদ্রষ্টা রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় প্রায় সমার্থক শব্দ।’

অলকানন্দা আরো জানিয়েছেন, ‘সেইসময়কার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাড়িতে নিজেদের বিষয়ের বই থাকত নিজস্ব গ্রন্থাগারে। বাবার পড়ার ঘরের আলমারিতে কালো বাঁধাইতে সোনালি অক্ষরে নাম লেখা অর্থনীতির ওপর পুরনো, নতুন কত বই ছিল, বেশিরভাগ দ্বিতীয় বা তৃতীয় খেপে কেনা।… যখনকার কথা বলছি তখন অনেক বইয়ের বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকের। এগুলোর শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে বহু বছর, ব্যবহারে জরাজীর্ণ বই, আজ আমার গ্রন্থাগারের ভূষণ।’ সব শিক্ষকের পক্ষে সযত্নে তাঁদের বই গুছিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। অনেকেই আবার দাঙ্গায় বই হারিয়েছেন। অলকানন্দার খেদোক্তি : ‘একজন অধ্যাপকের পক্ষে একটি বই হারানো দুঃখের, এ তো তাঁর বহু বছরের সঞ্চয়।’

 

আট

প্রতিটি শহরের এবং সেই শহরের মানুষের কিছু-না-কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে। 888sport appরও ছিল। শুধু ‘ছিল’ বললে হয়তো ভুলই হবে; বলা যায় এখনো আছে। অলকানন্দার মতে, ‘888sport appর অপর নাম ‘আতিথেয়তা, খাতিরদারি’ আজো এর পরিবর্তন হয়নি। ভরা বাড়ি, ভরা টেবিল মা ভালোবাসতেন… বাবা ছিলেন বন্ধুবাৎসল মানুষ। যেমন একাগ্রভাবে অধ্যাপনা ও গবেষণার কাজ করতেন, বাগান করতেন, তেমনি উদ্যম নিয়ে আড্ডা দিতে পারতেন। বাড়িতে সান্ধ্য আড্ডা নিয়মিত চলত বকশীবাজার, পুরানা পল্টন, ওয়ারী, দিলস্নী বা শান্তিনিকেতন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা বা অর্থনীতিবিদরা বাবার বন্ধু ছিলেন… তবে বাবার বন্ধুত্ব এঁদের মধ্যে আবদ্ধ ছিল না; শুধুই সমবয়সীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল তাও নয়। বাবার বন্ধুমহল ছিল যেন খোলা আকাশ, বিভিন্ন জগৎ থেকে তাঁরা আসতেন।’ কারা-কারা আসতেন তার একটি তালিকাও দিয়েছেন লেখিকা। আসতেন ‘জ্যোতির্ময় রায়, নামি লেখক ও live chat 888sport পরিচালক; সুধীশ ঘটক, ফটোগ্রাফিতে মার্গ প্রদর্শক; শচীন চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ হলেও তিরিশ-চলিস্নশের দশকে বহুকাল বোম্বাইতে নিউ থিয়েটার্সের সঙ্গে সংশিস্নষ্ট, কবিবন্ধুদ্বয় বুদ্ধদেব বসু ও অজিত দত্ত; কলকাতায় থিয়েটারের মঞ্চে অভিনেতা রামকৃষ্ণ রায়চৌধুরী; সুধীর সেন, যিনি একসময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেক্রেটারি ছিলেন।’ এঁদের মধ্যে শচীন চৌধুরীর কথা একটু বিশেষভাবে বলতেই হয়। শচীন চৌধুরীর Economic Weekly ভারতের চিন্তাশীল, বিদ্বান সমাজে পরিচিত। ‘এরই উত্তরসূরি, Economic and Political Weekly আজ সারা পৃথিবীতে সমাদৃত।’ অর্থনীতিবিদ-রাজনীতিবিদ অশোক মিত্রের 888sport sign up bonusকথায় পেয়েছি, ‘নিজের প্রতিভার প্রাখর্যে শচীনদা সর্বত্র সম্মানিত, সংবর্ধিত, কেতাবি কৃতিত্ব না থাকলেও অর্থশাস্ত্রে তাঁর পা–ত্য উচ্চপ্রশংসিত, লেখার মুন্শিয়ানা জনে-জনে তারিফ কুড়িয়েছে।’

তাঁর এই বন্ধুদের সঙ্গে অমিয়কুমার দাশগুপ্তের কীরকম আত্মিক বন্ধন ছিল তার একটি উদাহরণও দিয়েছেন অলকানন্দা। তিনি জানিয়েছেন, ‘কলকাতায় ইংরেজির অধ্যাপক, কালিপদ ব্যানার্জি ছিলেন… বাবার নিকট বন্ধু। বাবার কাছে ওঁর মাস্টারমশায় লাওনেল রবিন্সের (Lionel Robbins) লেখা An Essay on the Nature and Significance of Economic Science বইটির দুটি কপি ছিল। একবার আমি একটি কপি নিয়ে চলে
আসছি, বাবা বললেন, ‘এ বইটা তুই নিস না, অন্য কপিটা নে।… যেটা তোর আছে, তাতে কালিপদ ব্যানার্জির হাতে আমার নামটা লেখা আছে। কালিপদ তো নেই, বইতে অন্তত ওর হাতের লেখাটা তো দেখতে পাব।’ এই যে বন্ধুর হাতের লেখা দেখে তাঁকে 888sport app download for androidে রাখা, এটা থেকে ওই মানুষটির হৃদয়বোধের একটি গভীর
পরিচয় পাই। এমন একজন বাবাকে নিয়ে অলকানন্দা গর্ববোধ করতেই পারেন।

 

নয়

হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের ব্যাপারটি অলকানন্দার 888sport sign up bonusকথায় নানাভাবে উঠে এসেছে। তিনি সে-সময়কার কথা বলতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আমাদের কোনো বাড়িতে কালাইর বাসন থাকত না, কানাঘুষো শুনেছি, ‘রাম, রাম, কালাইয়ের বাসন, আমাগো বাড়িতে ঢোকে না। মুসলমান বাড়িতে ওইগুলা ব্যবহার হয়।’ ছোট ছিলাম, এই উক্তির তাৎপর্য বুঝিনি, এটুকু বুঝতাম এর ভেতরে আরো কিছু আছে বাসনের তো ধর্ম থাকে না। শুধুই মুসলমান বাড়িতে বাড়িতে ব্যবহার হয়, এ কথা একেবারেই অসত্য। আমাদের ৩২ নম্বর পুরানা পল্টনের বাড়ির পেছনে এক কোণে একটি কুঁড়েঘরে এক দুস্থ বিধবা মহিলা থাকতেন, তাঁর বাসনও কালাইর ছিল। বাসন তো ঠিক ধর্ম অনুপাতে চলে না, অর্থ-সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করে। গরিব হিন্দু, গরিব মুসলমান সস্তা জিনিস ছাড়া কিছুতে নজর ফেরাতে পারে না, তাদের জীবন নির্বাহের সামগ্রীর একই লক্ষ্য, সস্তা কোন জিনিসটা।’ লেখিকার মতে, ‘জাত’ পাগল, ‘ধর্ম’ পাগল, ‘অর্থ’ পাগল সমাজ এসব ভেবে দেখে না। একটা অতি অনাবশ্যক, অনিষ্টকর, মনগড়া বিধান দিয়ে, সমাজে পাঁচিল খাড়া করে।’

হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই ১৩১৪ বঙ্গাব্দে বলেছিলেন, ‘হিন্দু-মুসলমান সম্বন্ধ লইয়া আমাদের দেশের একটা পাপ আছে; এ পাপ অনেক দিন হইতে চলিয়া আসিতেছে। ইহার যা ফল তাহা না ভোগ করিয়া আমাদের কোনোমতেই নিষ্কৃতি নাই।… আমরা বহুশত বৎসর পাশে পাশে থাকিয়া এক খেতের ফল, এক নদীর জল, এক সূর্যের আলোক ভোগ করিয়া আসিয়াছি; আমরা এক ভাষায় কথা কই, আমরা একই সুখদুঃখে মানুষ; তবু প্রতিবেশীর সঙ্গে প্রতিবেশীর যে সম্বন্ধ মনুষ্যোচিত, যাহা ধর্মবিহিত, তাহা আমাদের মধ্যে নাই। আমাদের মধ্যে সুদীর্ঘকাল ধরিয়া এমন-একটি পাপ আমরা পোষণ করিয়াছি যে, একত্রে মিলিয়াও আমরা বিচ্ছেদকে ঠেকাইতে পারি নাই। এ পাপকে ঈশ্বর কোনোমতেই ক্ষমা করিতে পারেন না। আমরা জানি, 888sport appsের অনেক স্থানে এক ফরাশে হিন্দু-মুসলমান বসে না, ঘরে মুসলমান আসিলে জাজিমের এক অংশ তুলিয়া দেওয়া হয়, হুঁকার জল ফেলিয়া দেওয়া হয়।’ কথাটি যে কতটা সত্যি সেটি অলকানন্দার লেখা পড়েই বুঝতে পারা যায়। তিনি স্বীকার করেছেন, ‘তখন বুঝিনি, এখন মনে হয় স্কুলে ছাড়া আমার তো কোনো মুসলমান খেলার সাথী ছিল না। আমরা আলাদা আলাদা এলাকায় থাকতাম, সামাজিক যোগ একেবারেই ছিল না। মুসলমান সহকর্মী, ছাত্ররা আসতেন, খাওয়া-দাওয়া করতেন, বাবা-কাকারাও হয়তো যেতেন, কিন্তু আমরা পরিবার হিসেবে কোনো মুসলমান বাড়িতে কখনো যাইনি।… আমার 888sport sign up bonusতে ১৯৫০ সালে আমেরিকাতে ওয়াশিংটন যাবার পরই মুসলমান ও 888sport app ধর্মীয় পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়েছে।’ এ-প্রসঙ্গে অধ্যাপক তপন রায়চৌধুরীর (১৯২৬-২০১৪) কথা মনে পড়ে। তিনি বলেছিলেন, ‘হিন্দু সামন্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণি পূর্ববঙ্গে অচ্ছেদ্যভাবে পরস্পর সম্পৃক্ত। মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি অবজ্ঞা তাদের সহজাত। যখন রাজনীতি এবং দাঙ্গার পথে পূর্ববঙ্গের মুসলমান তাদের ন্যায্যতা দাবি করল, তখন এই অবজ্ঞা ঘৃণায় পরিণত হয়। ঘৃণার ফল বিদ্বেষ।’

 

দশ

অলকানন্দা জানিয়েছেন ‘১৯৪৫-৪৬-এ ছমাসের ব্যবধানে দুজনেই 888sport app ছেড়ে চলে গেলেন সুদূর দিলিস্ন, বাবা কমার্স কলেজে, পরিমলকাকা রামযশ কলেজে। কারণ যুদ্ধের বাজার, কালোবাজার, মুদ্রাস্ফীতি ডি.এ. বৃদ্ধিতে কর্তৃপক্ষের আপত্তি, পদোন্নতিতেও আপত্তি সব মিলিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছিল।’ এ-বিষয়ে পরিমল রায় (১৯০৯-৫১) লিখেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় অন্যায়, অবিচার, অনাচার কায়েমি হইয়া উঠিল। যোগ্যতার 888sport app download bd অন্তর্নিহিত হইল। কিন্তু যুদ্ধের পুরা ছয় বৎসর 888sport appতেই কাটাইয়া আসিয়াছি। ডি.এ-র জন্য দরবার করিয়াছি, বেতন বৃদ্ধির চেষ্টা করিয়াছি, চলিস্নশ টাকা মণে চাল কিনিয়াছি, নিজ বাড়ি মিলিটারিকে ভাড়া দিয়া ছোট ভাড়া বাড়িতে উঠিয়া গিয়াছি। এই দুর্ভাগ্য 888sport appয় বসবাসের জন্য নয়, সভ্যতার মহাসংকটে পড়িয়া আমাদের যেন সবার গলা আটকাইয়া গেল।… এই গস্নানির হাত হইতে রক্ষা পাইবার জন্য… 888sport app পরিত্যাগ করিলাম।’ এ থেকে মনে হয়, আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই অবিচারের ধারাটি বোধহয় যুগ-যুগ ধরে টিকে আছে।

পরিমল রায়, কে এই পরিমল রায়? অলকানন্দা জানিয়েছেন, ‘888sport appর কথা, আমার ছেলেবেলার কথা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি পরিমলকাকা সম্বন্ধে আলাদা করে না লিখি। সে সময়কার অনেক আনন্দমুহূর্ত ওঁর সঙ্গে জড়িয়ে আছে।’ অর্থনীতিবিদ-রাজনীতিবিদ অশোক মিত্র লিখেছেন, ‘অর্থনীতি বিভাগে অন্যতম শিক্ষক পরিমল রায় : বাইরে যাঁর গাম্ভীর্যের মুখোশ, কিন্তু অন্তর রসে টইটম্বুর। ইনিও… বুদ্ধদেব বসু-র বন্ধু। আশ্চর্য ভালো ছড়া ও ব্যক্তিগত 888sport live লিখতেন। তাঁর রসালো 888sport liveের একটি সংগ্রহ ইদানীং।… তবে তাঁর লেখা অমূল্য ছড়াগুলি সংগৃহীত হয়নি; বাংলা 888sport live footballের পক্ষে সেই ক্ষতি অপূরণীয়।’ অন্যদিকে, বুদ্ধদেব বসু (১৯০৮-৭৪) লিখেছিলেন, ‘পরিমল রায়’ এই নামের সঙ্গে আবাল্য আমি পরিচিত ছিলুম। ‘মৌচাকে’ ধাঁধার উত্তরের পাতায় মাসে-মাসে প্রথম পঙ্ক্তিতে ঐ নাম দেখেছি; একবার টেলিগ্রামে ধাঁধার উত্তর পাঠিয়ে এই অচেনা বালক আমাকে এমন তাক লাগিয়ে দিলে যে নামটি ভুলে যাবার উপায় রইলো না। যখন দেখা হলো তখন দুজনেই বালকত্ব পরিহার করেছি, থাকি একই নতুন পাড়া পুরানা পল্টনে, যে-বিদ্যালয়ে তিনি সাইকেল চেপে যান, আমাকেও হেঁটে-হেঁটে সেখানে পৌঁছতে হয়। দেখা হলো, পরস্পরের প্রেমে পড়তে দেরি হলো না, দ্রম্নত সম্পন্ন হলো বন্ধুতা।’ বুদ্ধদেব বসু তাঁর এই বন্ধু সম্পর্কে আরো বলেছেন, ‘পরিমলের মেধা ছিলো সর্বগ ও পক্ষপাতহীন, অর্থাৎ যে-কোনো বিষয়ে সমান সক্ষম ও উৎসাহী; ধন888sport apkের বদলে প্রাকৃত 888sport apk, বা তার বদলে 888sport live football নিলে তাঁর কৃতিত্বের তারতম্য হতো না; অধ্যাপক না-হয়ে ডাক্তার, অথবা ডাক্তার না-হয়ে আইনজীবী হলেও তাঁর সিদ্ধিলাভ হতো অনিবার্য। আমরা দেখলুম, যেমন তিনি মুখে-মুখে পদ্য মেলাতে পারেন, তেমনি তিনি ধাঁধার সমাধানে ক্ষিপ্র; যেমন ধন888sport apkে স্বচ্ছন্দ তাঁর অধিকার, তেমনি 888sport live footballের দিকে সহজ তাঁর নৈপুণ্য।’ তাঁর একটি 888sport app download apkয় বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন, ‘পদ্য যদি লিখতে তুমি, পরিমল,/ মুগ্ধ হতাম সকলে,/ হার মানাতে নামজাদা সব কবিদের/ ছন্দ মিলের দখলে।/ যত কথা আজগুবি আর অসম্ভব/ ঘুরছে তোমার মগজে,/ দয়া করে কলম নিয়ে একটানা/ লিখতে যদি কাগজে।’ এঁদের আরেক বন্ধু কবি অজিত দত্ত (১৯০৭-৭৯) তাঁর 888sport sign up bonusকথায় বলেছেন, ‘পরিমল ছিল অপেক্ষাকৃত মৃদুভাষী ও মিতভাষী। তুমুল চেঁচামেচিতে যোগ না দিলেও অনেক সময় সে দু-একটি বুদ্ধিদীপ্ত টিপ্পনী কাটত বা মুখে মুখে ছড়া বানাত। পরিমলের মতো এরূপ সুররসিক, পরিচ্ছন্ন রুচি, স্বল্পভাষী কিন্তু বাক্চতুর, প্রকৃত সমালোচক বন্ধু পাওয়া একটি দুর্লভ সৌভাগ্য। সে অর্থনীতির ছাত্র ছিল, কিন্তু তার ‘ইদানীং’ বইটি যাঁরা পড়েছেন তাঁরাই ওর রচনাশক্তি ও রসবোধের পরিচয় জানেন।’ অলকানন্দা জানিয়েছেন, পরিমল রায় ছড়াকে ‘ছড়া’ বলতেন না, বলতেন পদ্য। সিগারেটের প্যাকেটের কাগজে পেনসিল দিয়ে লিখেছেন – ‘টাকা আছে, চাল নাই,/ নুন, তেল, ডাল নাই,/ চাল মারা বন্ধ/ সেটা নয় মন্দ।’ বুঝতেই পারা যায় ‘১৯৪৩-এর দশকের জীবনযুদ্ধে’র এক টুকরো চিত্র এখানে লুকিয়ে আছে। পরিমল রায়ের গদ্য থেকে এক টুকরো উদ্ধৃত করি : ‘বড় একটা খবর বহন করিয়া আনাও গৌরবের বিষয়। যুদ্ধ যখন আরম্ভ হইল, প্রত্যেকের মুখে এক কথা। ‘জানেন তো যুদ্ধ লেগেছে’, যেন জার্মানীর পোল্যা- আক্রমণের ব্যাপারে তাঁহার কোথাও একটু হাত ছিল। ‘ক’-র নিকট ‘খ’ যাহা শুনিল, তাহাতে তাঁহার মন উঠিল না। একটু বাড়াইয়া বলিল তেমনি আবার গ ঘ ঙ। বরফের বলের মত মূল সংবাদটি যত গড়াইতে লাগিল, আকারে তত বাড়িতে লাগিল। তিলটি তাল হইয়া আপনার নিকট পৌঁছিল। আপনি উহাকে তরমুজে পরিণত করিয়া অপর কাহারও তৃষ্ণা দূর করিলেন।’ (‘গুজব’)। অলকানন্দ লিখেছেন, ‘পরিমলকাকাকে হারানোর শোক নিজের দিদি, দাদাদের হারানোর থেকে কম ছিল না।’

 

এগারো

অমিয় চক্রবর্তী (১৯০১-৮৭) তাঁর ‘অনতিক্রান্ত’ 888sport app download apkয় যেমন বলেছিলেন, ‘দেশ পেরনো যায় না।’ অধ্যাপক অমিয়কুমার দাশগুপ্তও তাঁর সারাজীবনে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়কে পেরোতে পারেননি। অলকানন্দার সাক্ষ্য থেকে জানতে পারছি, শেষজীবনে ছোট্ট একটি খাতায় তিনি লিখে গিয়েছেন, ‘888sport app ইউনিভার্সিটির কথা ভেবে আনন্দ হয়। গতানুগতিক শিক্ষার ভেতরে না গিয়ে এখানকার লক্ষ্য ছিল ধর্ম-জাত-বিত্ত নির্বিশেষে ভিন্ন প্রকৃতির শিক্ষা দেওয়া। আমার মতো গ্রামের ছেলে শুধু 888sport appতেই এই উঁচুমাপের শিক্ষা পেতে পারতেন। আমাদের জীবন শুধু পড়াশোনা, ক্লাস বা নিজেদের বিষয়ের মধ্যে নিবদ্ধ ছিল না; 888sport live football, সংগীত, নাট্য আলোচনা, নানা ধরনের বক্তৃতা – সবই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গ ছিল। শিক্ষা ও সংস্কৃতির পরিবেশ 888sport appর মতো আমি আর কোথাও দেখিনি।’ বলা যায়, 888sport app শহর তাঁর এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে অমিয়কুমার দাশগুপ্তের বুকের মধ্যিখানে চিরজাগরূক ছিল। অলকানন্দা আরো জানিয়েছেন, ‘মা-বাবা কখনো 888sport app ফিরে যাবেন কল্পনা করেননি। (১৯৭৫ সালের প্রথম দিকে) রাজ্জাক সাহেবের বাড়িতে ভ্রাতৃবধূ হেলির যত্নে, প্রচুর আনন্দে কটা দিন কাটিয়েছেন। নিরাশ হলেও বাপের বাড়ি উমা কুটির দেখে এসেছিলেন, ৫ নং পুরানা পল্টনে আপ্যায়ন পেয়েছেন, সর্বোপরি বহু অতীতের বন্ধুত্ব স্নেহ-ভালোবাসার দেশে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এর থেকে বড় গুরুদক্ষিণা কেউ দিতে পারতেন না।’ এটা জেনে আমরাও আনন্দিত হই। শেষজীবনে অন্তত এই প্রবাদপ্রতিম মানুষটি তাঁর প্রিয় 888sport app শহরে কটা দিনের জন্য হলেও ফিরতে পেরেছিলেন। অলকানন্দাও লিখেছেন, ‘বাবার 888sport sign up bonus 888sport appয় থাকবে… রাজ্জাক সাহেবের মতো ছাত্র, নতুন প্রজন্মের ছাত্রদের মধ্য দিয়ে।’

 

বারো

এ-বই পড়তে গিয়ে বারবারই জানতে ইচ্ছে হয়েছে অলকানন্দা প্যাটেল কি 888sport appয় কখনো এসেছিলেন? সেই যে ১৯৪৬-এর ২ অক্টোবর যিনি 888sport app ছেড়েছিলেন। অলকানন্দা জানিয়েছেন, ‘888sport app যাওয়ার কথা ভাবিনি তা নয়, যাওয়া হয়ে ওঠেনি। অনেকটাই ইচ্ছাকৃত, অতীতে ফিরে যাওয়া যায় না, বর্তমান মনকে ব্যথা দিতে পারে। বিদেশে যাচ্ছি ভেবে 888sport appsে যাওয়া সম্ভব নয়, দ্বিধা আসে নানা দিক থেকে। তার থেকে ছেলেবেলার নির্মল আনন্দ মনে রেখে এগিয়ে যাওয়া ভালো।’ তারপরও ২০০২ সালের ডিসেম্বরে লেখিকা অলকানন্দা প্যাটেলকে 888sport appয় ফিরে আসতে হয়। ফিরে গিয়েছেন কি কোনো বেদনাবোধ নিয়ে? খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। বইয়ের শেষভাগে এসে তিনি জানিয়েছেন, ‘দেশবিভাগ আমার ব্যক্তিগত জীবনে আপাতদৃষ্টিতে সেরকম শূন্যতা আনেনি। তবু মনের কোণে একটা অভাববোধ থেকে গেছে। মানসিক-উদ্বাস্ত্ততাও তো মনে হয়।… আজ এত বছরে সময়ের গতিতে, জীবনের গতিতে এ-ছায়া খানিকটা সরে গেছে। হিসাব-নিকাশ না করে দেশবিভাগ অবশ্যম্ভাবী ছিল মেনে নিয়েছি। আর আজকাল সবকিছুই আন্তর্জাতিক, আমাদের সবার নানারকমের সত্তা।’ তিনি বেশ দৃঢ়তা নিয়ে বলেছেন, ‘আমি ভারতীয়, আমি বাঙালি, আমি দুই বাংলার বাঙালি, গৈলা আমার দেশ, 888sport app আমার বাড়ি, এই সত্য উপলব্ধি করে আনন্দ পাই। আমি আজ আর শেকড়হীন নই। তবু মনে হয়, বারবার মনে হয়, এই ভাগ-বাটোয়ারা, এই সীমান্তরেখা না হলেও তো পারত।’ এই দীর্ঘশ্বাসটাও বোধকরি অলকানন্দার একার নয়। এই বইয়ের ‘ভূমিকা’য় অশোক মিত্র বলেছেন, ‘অলকানন্দার মস্ত সৌভাগ্য তাঁর পিতামাতা তাঁকে… আদরে, আনন্দে শৈশব থেকে কৈশোরে অতিবাহন করিয়েছিলেন। তাঁর শৈশব-কৈশোরের 888sport sign up bonus তাই নিবিড় ভালোবাসায় সমৃদ্ধ।… দীর্ঘদিন ধরে গভীর অধ্যবসায়ের পরে তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তাঁর বালিকাবয়সের 888sport sign up bonusচারণ করেছেন। 888sport sign up bonus হয়তো মাঝেমধ্যে কুয়াশায় 888sport app, পুরনো চিঠিপত্র, পুঁথিপত্র আবিষ্কার করে, একাগ্রচিত্তে চিন্তাভাবনা করে যতটা সম্ভব তিনি একটি বিশেষ সময়ের আবহাওয়াকে ফুটিয়ে তুলেছেন।… 888sport app শহরে আবিষ্ট অলকানন্দার এই বইটি 888sport app download for androidবেদনার বরণে আঁকা এবং স্নিগ্ধতায় ভরপুর।’  পৃথিবীর পথে হেঁটে বইটি পাঠশেষে সেই 888sport app download for androidবেদনা আর স্নিগ্ধতাকে আমরা যেন নতুন করে আস্বাদন করি। অলকানন্দা প্যাটেল তাঁর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে গিয়ে বলেছেন, ‘আবুল হাসনাতের সঙ্গে পরিচয় হওয়া সৌভাগ্যের, ওঁকে সম্পাদক হিসেবে পাওয়া আরো বড় সৌভাগ্যের।… ওঁর উৎসাহ, সাহায্য না থাকলে এই আন্তর্জাতিক প্রয়াস সম্ভব হতো না।’ বইটির ভূমিকা-লেখকের সঙ্গে সহমত পোষণ করে আমরাও বলি যে, ‘888sport apk download apk latest version ও ভালোবাসায় 888sport app এই 888sport sign up bonusচারণ গ্রন্থটির মূল্য অপরিসীম।’ r