ডায়াসপোরা : ডায়াসপোরা শব্দটি গ্রিক। ’dia’ মানে দূরে, ’speirein’ অর্থ ছড়িয়ে পড়া। ব্যুৎপত্তিগত অর্থে ফসলের বীজ ছড়িয়ে পড়া হলেও শব্দটির অন্য ব্যবহার লক্ষ করা যায় খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০ শতাব্দীর দিকে। ইসরায়েল থেকে নির্বাসিত ইহুদিদের প্রথম ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ওই সময় আলেক্সান্দ্রিয়ার পণ্ডিতরা হিব্রু বাইবেল বা ‘তোরাহ’র প্রথম পাঁচটি বই গ্রিক ভাষায় 888sport app download apk latest version করেন। এই 888sport app download apk latest versionে গৃহহীন ইহুদিদের জন্য ক্রিয়াপদ ’diaspeirein’ এবং বিশেষ্যপদ ’diasporá’ ব্যবহার করা হয়। এই শব্দ দ্বারা ইহুদিদের জন্মভূমি থেকে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ভেতর যে আধ্যাত্মিক এবং মানসিক কষ্ট তৈরি হয়, সেটা প্রকাশিত হয়। ঊনবিংশ শতকে এসে, বিশেষ করে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন দেশ থেকে নানা-কারণে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের বোঝাতে ডায়াসপোরা শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়। এখন সম্প্রসারিত অর্থে, কেবল বহিষ্কৃতরা না, জীবিকার জন্য স্বেচ্ছায় দেশান্তরি হয়ে বিভিন্ন স্থানে বসতি গড়েছেন এমন লোকদেরও ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারতীয় ইতিহাসের অধ্যাপক ভিনয় লাল বহিষ্কৃতদের বলছেন ’diaspora of labour’ এবং স্বেচ্ছায় দেশত্যাগীদের বলছেন ’diaspora of longing’ ।
ভারতীয় ডায়াসপোরার প্রকারভেদ : ভারতীয় ডায়াসপোরাকে এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে মোটা দাগে তিনটি ভাগে আলাদা করা যায়। যেমন –
ক. উপনিবেশ-পূর্ব ডায়াসপোরা : সমুদ্রপথে বাণিজ্য করার জন্য ভারতীয় বণিকেরা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। অনুরূপভাবে অন্য দেশের বণিকেরা ভারতবর্ষে আসে। এই কারণে তাদের ‘ম্যারিটাইন ডায়াসপোরা’ও বলা হয়। ১৮২০ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় শ্রমিক চীন, পারস্যদেশ এবং ক্যারিবীয় দ্বীপাঞ্চলে বাণিজ্য করতে গেছে। পাশাপাশি এখানে অভ্যন্তরীণ ডায়াসপোরার ঘটনাও ঘটেছে। বৃহৎ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বণিক এবং শ্রমজীবী মানুষ শ্রীলংকা, বার্মা বা মিয়ানমারে গেছে। তবে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এই ম্যারিটাইম কিংবা দেশের ভেতরকার ভূমিভিত্তিক (ল্যান্ড-বেসড) ডায়াসপোরা-কালে সেই অর্থে সৃজনশীল বা মননশীল 888sport live football সৃষ্টি হয়নি। এর কারণ, যাঁরা গেছেন তাঁদের অধিকাংশ ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন ব্যবসায়ী বা শ্রমিক।
খ. ঔপনিবেশিক ডায়াসপোরা বা মধ্যযুগীয় ডায়াসপোরা : ভারতীয় ডায়াসপোরা 888sport live football আমরা পাই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কাল থেকে, যখন এ-অঞ্চলের মানুষ স্বেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে ভারত থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গেছে, বিশেষ করে ক্যারিবীয় দ্বীপাঞ্চলে। এ-সময় দুটি বড় ঘটনা ঘটে বিশ্ব-শ্রমবাজারে। এক. ১৮৩০ সালে বিশ্বে বৈধ দাসপ্রথা নিষিদ্ধ হয়; দুই. 888sport live chatবিপ্লব এবং পুঁজির বিকাশ ঘটতে শুরু করে পশ্চিমে। শহর তৈরি হতে থাকে বাণিজ্যনির্ভর দেশগুলোতে। বিশ্বের সম্প্রসারিত শ্রমবাজারে শ্রমিকের যে-শূন্যস্থান সৃষ্টি হয় সেটা পূরণ করার জন্য ভারতবর্ষ থেকে শ্রমিক আমদানি করা হয়। এ সময় থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত কয়েক মিলিয়ন দক্ষিণ এশীয় শ্রমিক বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে আফ্রিকার দ্বীপাঞ্চলে। এদের অনেকেই আর পরে স্বাধীন ভারতে ফিরে আসেনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় 888sport promo codeদের বিয়ে করে তারা সেখানেই ঘর বসিয়েছে। পরে তারা সেখানে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর নিজেদের প্রয়োজনে শিক্ষিত ভারতীয়দের চাকরি দিয়ে নিয়ে গেছে। যেমন মহাত্মা গান্ধীকে আফ্রিকায় আইনজীবী হিসেবে নিয়ে যান গুজরাটের এক ব্যবসায়ী। এই প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে খ্যাতিমান ভারতীয় ডায়াসপোরা লেখক হলেন ভি এস নাইপল। তিনি দ্বৈত ডায়াসপোরা লেখক। পরবর্তী অংশে তাঁকে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে।
গ. উপনিবেশ-উত্তর ডায়াসপোরা/ আধুনিক ডায়াসপোরা : ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে ডায়াসপোরা নতুন মাত্রা পায়। বৃহৎ-পরিসরে ইউরোপীয়-এশীয় এবং আমেরিকীয়-এশীয় ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়। শিক্ষিত ভারতীয় জনগোষ্ঠী তখন বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। শ্রমবাজারের পাশাপাশি শিক্ষিত বা অ্যাকাডেমিক ডায়াসপোরার সৃষ্টি হচ্ছে। ডায়াসপোরা 888sport live footballের ভারতীয় তাত্ত্বিক বিজয় মিশ্র তাঁর ‘ডায়াসপোরাস’ 888sport liveে বলছেন, ‘যুদ্ধোত্তর দক্ষিণ এশিয়া, চীন, আরব এবং কোরিয়ার জনগণ ব্রিটেন, ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠী হিসেবে বসতি শুরু করেছে।’ এই সময় দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো একইসঙ্গে ভারতবর্ষ স্বাধীন এবং ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত হওয়া। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান (আজকের 888sport apps ও পাকিস্তান) থেকে হিন্দুরা যেমন ভারতে গেছে, তেমনি ভারত থেকে মুসলমানরা তৎকালীন পাকিস্তানের দুই অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে ভারতে অভ্যন্তরীণ ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়েছে।
দুটি বিশ্বযুদ্ধের পরে জাতীয়তাবোধের ভাবনাটি তীব্র হয়ে উঠলে ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠীর ভেতর অস্তিত্বের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অনাবাসী ভারতীয় হিসেবে তাঁরা না হোন ভারতীয়, না হোন যে-দেশে বাস করছেন সে-দেশের স্থানীয়। যেমনটি ব্রিটিশ-888sport appsি নৃত্য888sport live chatী আকরাম খান তাঁর ডায়াসপোরা নৃত্যনাট্য দেশে বলছেন, ‘আমি আর 888sport appsি নই, এবং, আমি কখনোই ব্রিটিশ হতে পারবো না।’ তাত্ত্বিক বিজয় মিশ্র এই কারণে বলছেন, দুটি সংস্কৃতির মাঝখানে পড়ে ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠীর জন্য কোনো সংস্কৃতিই তার আত্মশুদ্ধির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে না, ফলে জাতিসত্তার প্রশ্নে শিকড়হীন অবস্থা তৈরি হয়। এই কারণে ব্যক্তির সঙ্গে দু’দেশের একটা ট্রাবলড রিলেশন গড়ে ওঠে, যা মূলত উঠে আসে স্থানচ্যুত লেখকদের গল্প-888sport app download apk-888sport alternative linkে; যাকে আমরা ডায়াসপোরা 888sport live football বলছি।
ডায়াসপোরা 888sport live football : ডায়াসপোরা পরিস্থিতিতে বাস করছেন অর্থাৎ কোনো কারণে নির্বাসনে থেকে বা জীবিকার অন্বেষণে নিজ দেশ ছেড়ে ভিনদেশে বাস করছেন – এমন পরিস্থিতিতে কোনো লেখক যে-সৃজনশীল 888sport live football রচনা করেন সেটি ডায়াসপোরা 888sport live football। অনুরূপভাবে ডায়াসপোরা থিয়েটার, live chat 888sport, চিত্রকলাও এখন আলাদাভাবে স্টাডির বিষয় হয়ে উঠেছে। এখন প্রশ্ন হলো, ডায়াসপোরা অবস্থায় একজন লেখক যা লিখবেন সেটাই কি ডায়াসপোরা 888sport live football বলে বিবেচিত হবে? যদি তিনি অভিবাসী জীবনের সংকট ও পিতৃ-মাতৃভূমির প্রতি যে-নস্টালজিয়া এবং ক্ষয়ে যাওয়া সময়ের জন্য হাহাকার কিংবা আগন্তুক হিসেবে নতুন জীবনের কথা উপজীব্য করে কিছু না লেখেন সেটি ডায়াসপোরা 888sport live football হবে কিনা? এক অর্থে হবে, আবার আরেক অর্থে হবে না। প্রত্যক্ষ ডায়াসপোরা 888sport live football হলো সেসব 888sport live footballসৃষ্টি যেখানে ডায়াসপোরা জীবনে থেকে স্বদেশ (হোমল্যান্ড) এবং আশ্রিত দেশের (হোস্টল্যান্ড) মধ্যকার টানাপড়েন উঠে আসবে। আর যদি কোনো লেখক যে-দেশে বাস করছেন সে-দেশের সংকট বা জনজীবন উপজীব্য করে কিংবা পিতৃ-মাতৃভূমির কোনো রাজনৈতিক-সামাজিক বিষয় নিয়ে কোনো গল্প-888sport alternative link-888sport app download apk লেখেন তাহলে সেই পার্টিকুলার টেক্সটটি প্রত্যক্ষ ডায়াসপোরিক টেক্সট হিসেবে গণ্য হবে না। তবে পরোক্ষভাবে হবে এই কারণে যে, কোনো লেখক স্বদেশ (প্রথম প্রজন্মের ডায়াসপোরা লেখকদের ক্ষেত্রে) বা পিত-মাতৃভূমির (দ্বিতীয় প্রজন্মের ডায়াসপোরা লেখকদের ক্ষেত্রে) প্রসঙ্গ ধরে যদি কোনো গ্রন্থ লেখেন তাহলে সেই গ্রন্থ বাইরের লেখক হিসেবে স্বদেশে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে সেটিও বিবেচ্য বিষয় হয়ে ওঠে। যে-কারণে ভারত ও পাকিস্তান সৃষ্টি এবং 888sport apps স্বাধীন হওয়ার মুহূর্তের ইতিহাস নিয়ে ভারতীয় ডায়াসপোরা লেখক সালমান রুশদি যখন মিডনাইট চিলড্রেন লেখেন তখন ভারতে তাঁর বিরুদ্ধে ‘ইতিহাস বিকৃতি’র অভিযোগ ওঠে। এবং রুশদিকে তখন ডায়াসপোরিক লেখক হিসেবে নিজ দেশের ইতিহাসের বিশ্বস্ত কথক রূপে ভারতীয় পাঠকরা বিবেচনা করেন না। ফলে মিডনাইট চিলড্রেন ডায়াসপোরিক টেক্সট না হলেও ডায়াসপোরিক লেখকের টেক্সট হিসেবে পঠিত হয়।
বেশ কয়েক বছর থেকে ইউরোপ এবং আমেরিকায় যে ডায়াসপোরিক লেখকদের রাজত্ব চলছে তার অধিকাংশই বৃহৎ-এশীয়। এক্ষেত্রে আমরা দেখছি স্বদেশ বা পিতৃ-মাতৃভূমের চেয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় এসব ডায়াসপোরিক লেখকের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। ডায়াসপোরিক লেখকদের এই গ্রহণযোগ্যতা তৈরির কারণ হিসেবে ২০১৭ সালে 888sport live footballে নোবেলজয়ী এশীয় ডায়াসপোরিক লেখক ইশিগুরো বলছেন : ‘আশির দশকে ঔপন্যাসিক হিসেবে ব্রিটেনে আমি যে দ্রুত জায়গা করে নিতে পেরেছি এর অংশত কারণ আমি এমন একটা সময় লিখতে শুরু করেছি যখন এই নব্যধারার আন্তর্জাতিকতাবাদের বড় রকমের চাহিদা তৈরি হয়েছিল। লন্ডনের প্রকাশক,
888sport live football-সমালোচক এবং সাংবাদিকরা এমন এক নতুন প্রজন্মের লেখকদের চেয়েছেন যারা প্রচলিত ইংরেজি 888sport live footballের ঐতিহ্য থেকে আলাদা – এবং আমি মনে করি, আমাকে সেখানে 888sport live footballমঞ্চের দৃশ্যপটে স্থান দেওয়া হয়েছে কারণ আমাকে আন্তর্জাতিক লেখক বলে তাঁরা ভেবেছেন।’
ভারতীয় ডায়াসপোরা 888sport live footballতত্ত্ব : শারীরিকভাবে স্বদেশ থেকে অন্যদেশে চলে গেলেও মনটা স্বদেশ এবং আশ্রিত দেশের মাঝখানে আটকে থাকে। বিষণœতার সৃষ্টি হয়। ছেড়ে আসা স্বদেশের সংস্কৃতি ও 888sport sign up bonusর জন্য বিলাপ প্রকাশের জন্য নয়া-নির্মিতি হিসেবে ইন্দো-ফিজিয়ান কবি সুদেশ মিশ্র হিন্দি 888sport app download apkর ‘বিদেশিয়া ট্র্যাডিশন’কে গ্রহণ করেছেন। ডায়াসপোরা মানুষের সংকটকে চিহ্নিত করে ডায়াসপোরা অ্যান্ড দি ডিফিকাল্ট আর্ট অব ডায়িং শিরোনামে তিনি কাব্যগ্রন্থও লিখেছেন। ডায়াসপোরা 888sport live footballতত্ত্বের বিবেচ্য বিষয় হিসেবে সুদেশ মিশ্র তাঁর ডায়াসপোরা ক্রিটিসিজম গ্রন্থে বলছেন, ‘ডায়াসপোরা সমালোচনা তত্ত্ব ‘ডায়াসপোরা’ ধারণাকে কেন্দ্র করে সমকালীন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে স্থানচ্যুত জনগোষ্ঠীর সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে।’
ভারতীয় ডায়াসপোরা 888sport live footballতাত্ত্বিক বিজয় মিশ্র তাঁর ‘দি লিটারেচার অব ইন্ডিয়ান ডায়াসপোরা : থিওরাইজিং দ্য ডায়াসপোরিক ইম্যাজিনারি’ 888sport liveে বলছেন, ‘সকল ডায়াসপোরা মানুষ অসুখী, তবে প্রত্যেকে তাদের নিজেদের মতো করে অসুখী। ডায়াসপোরা বলতে তাদের বোঝায় যারা তাদের পাসপোর্টে অন্বয়সাধিত (non-hyphenated) আত্মপরিচিতি নিয়ে সন্তুষ্ট না।’ এই Ônon-hyphenatedÕ শব্দবন্ধনীকে আমাদের সামনে আরো খোলাসা করেছেন তাঁর ‘দ্য ল অব দ্য হাইফেন অ্যান্ড দ্য পোস্টকলোনিয়াল কন্ডিশন’ গদ্যে। এখানে তিনি বলছেন, ÔThe hyphen — Indo-Americans, Indian-Americans, Hindu-Americans, Muslim-Britons — signals the desire to enter into some kind of generic taxonomy and yet at the same time retain, through the hyphen, the problematic situating of the self as simultaneously belonging ÔhereÕ and Ôthere.Õ তিনি আরো বলছেন, এই ‘হাইফেন’ একইসঙ্গে একজন লেখকের জন্য নেতিবাচক এবং ইতিবাচক অভিজ্ঞতা বয়ে আনে। দুটি সংস্কৃতির মেলবন্ধনে যেমন তৃতীয় এক সমৃদ্ধ সংস্কৃতির জন্ম হয়, তেমনি ভেতরে ভেতরে জন্ম হতে থাকে অতৃপ্তি ও অনিশ্চয়তার। মিশ্র এই পরিস্থিতিতে স্থানচ্যুত হওয়া লেখকদের 888sport sign up bonusর ভেতর দিয়ে নিজের স্বদেশকে খোঁজার প্রয়াসকে বলছেন ডায়াসপোরিক ইম্যাজিনারি।
এই নেতিবাচক এবং ইতিবাচক অভিজ্ঞতা কেবল ডায়াসপোরিক লেখকদের মধ্যে নয়, ডায়াসপোরিক লেখকদের কারণে স্বদেশি লেখক ও পাঠকদের ভেতরেও সৃষ্টি হয়। ভারতীয় ডায়াসপোরিক পণ্ডিত জাসবির জেইন তাঁর ‘দ্য ইন্ডিয়ান ডায়াসপোরিক এক্সপেরিয়েন্স’ 888sport liveে বলছেন, ইতিবাচক দিক হলো ডায়াসপোরিক লেখকেরা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারতীয় (বা স্বদেশি) ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরছেন। তাঁর ভাষ্যে, Ô…histories of diaspora act like myriad mirrors which reflect on our notions of Indianness, Indian history and identity|Õ অন্যদিকে এর মন্দ দিক হলো, ডায়াসপোরা লেখকদের আন্তর্জাতিক প্রভাব ও গ্রহণযোগ্যতার কারণে ভারতীয় লেখকদের নিজস্ব কণ্ঠস্বর হারিয়ে যায়। তাঁর ভাষায়, ‘ডায়াসপোরা লেখকরা আমাদের মতামত প্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করে, আমাদের কণ্ঠস্বরকে রোধ করে। এবং সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে, ওরা কিভাবে আমাদের অভিজ্ঞতা, বাস্তবতা ও ইতিহাসকে কাজে লাগায় সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তিত থাকতে হয়।’
সুদেশ মিশ্র ডায়াসপোরা 888sport live footballকে তাত্ত্বিকভাবে দুটি ভাগে বিভক্ত করেছেন; একটি ÔSugar DiasporaÕ অন্যটি ÔMasala DiasporaÕ । ফ্রম সুগার টু মাসালা : রাইটিংস বাই দ্য ইন্ডিয়ান ডায়াসপোরা’ গদ্যে তিনি বলছেন, ডায়াসপোরা 888sport live football-প্রসঙ্গে কথা বলতে গেলে আমাদের ‘গৃহ’ (home) ধারণাটি নতুন করে নির্মাণ করতে হবে; যেহেতু Ôthis (home) occurs aginst the backdrop of the global shift from the centring or centripedal logic or monopoly capitalism to the decentering or centrifugal logic of transnational capitalism. Whereas for the Sugar Diaspora ÔhomeÕ signifies an end to itinerant wandering, in putting down the roots, ÔhomeÕ for the masala diaspora is linked to the strategic espousal of rootlessness, to the constant mantling and dismantling of the self in makeshift landscape.Õসুদেশ মিশ্র অবস্থানগতভাবে আবার ডায়াসপোরাকে দুভাবে ভাগ করছেন; একটি হলো পুরনো ডায়াসপোরা, অন্যটি নয়া ডায়াসপোরা। পুরনো ডায়াসপোরার ভেতর পড়ে যারা মনের দোটানার ভেতর ফিজি, ত্রিনিদাদ, মরিশাস, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া এবং গায়ানার মতো কৃষিনির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোতে গেছেন। নয়া ডায়াসপোরার ভেতর পড়ে যারা অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যের মতো বাণিজ্যনির্ভর মহানগরগুলোতে গেছেন।
ভারতীয় 888sport promo codeবাদী তাত্ত্বিক চন্দ্র মোহন্তী তাঁর ‘ডিফাইনিং জেনেলজিস : ফেমিনিস্ট রিফ্লেকশনস অন বিং সাউথ এশিয়ান ইন নর্থ আমেরিকা’ 888sport liveে হোম বা গৃহ বলতে প্রশ্ন করছেন : গৃহ আসলে কোনটা – যেখানে আমি জন্মেছি? যেখানে আমি বড় হয়ে উঠেছি? যেখানে আমি পেশাজীবী হিসেবে আছি? যেখানে আমি আমার নিজের লোকজনকে পাচ্ছি? এরপর তিনি প্রশ্ন করছেন, আমার নিজের লোকজন বলতে আমি কাদের বুঝব? গৃহ কি তবে ভৌগোলিক-আবেগযুক্ত স্থান? ডায়াসপোরা 888sport live footballতাত্ত্বিকদের জন্য এসব প্রশ্ন এখন বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। এবং এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে তাঁরা উপলব্ধি করছেন ‘গৃহ’ আসলে ব্যক্তির রাজনৈতিক-পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত। এই ধারণার সঙ্গে আরো কতগুলো বিষয় যুক্ত; যেমন – আচ্ছন্নতা, 888sport sign up bonusতাড়না, পূর্বপুরুষের ইতিহাস এবং আত্ম-অন্বেষণ; যার সম্পূর্ণ প্রকাশ ঘটে নাইপলের লেখায়। কিন্তু এভাবে ছবির ফ্রেমে বা 888sport sign up bonusচিহ্ন দিয়ে আত্মপরিচয় নির্মাণ করতে গেলে সংকটও তৈরি হয়। তুলনামূলক 888sport live footballের শিক্ষক রুশ লেখক সভেতলানা বউম
যে-কারণে বলছেন, ডায়াসপোরা 888sport live footballে হারানো গৃহের প্রতি 888sport sign up bonusকাতর হয়ে ওঠার ভেতর দিয়ে একজন লেখক তাঁর ক্ষয়িষ্ণু আত্মপরিচয় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারেন না। একই কথা নাইপলও বলছেন তাঁর এ ওয়ে ইন দ্য ওয়ার্ল্ড 888sport alternative linkে। তিনি বলছেন, ‘আমরা (ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠী) বংশানুক্রমে যা ধারণ করি, সবকিছু বুঝে করি না। ফলে কখনো কখনো আমাদের নিজেদের কাছে নিজেদের অপরিচিত মনে হয়।’
ভারতীয় ডায়াসপোরা 888sport live footballের প্রেক্ষাপটে নাইপল
এই মুহূর্তে বিশ্বে চীনের পর দ্বিতীয় বৃহত্তর ডায়াসপোরিক 888sport live footballের দেশ ভারত। ভারতীয় কয়েক প্রজন্মের 888sport promo code-পুরুষ এখন সংকর (হাইব্রিড) ও অন্বয়সাধিত (হাইফেনেটেড) পরিচয় নিয়ে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছেন। তাঁরা তাঁদের সৃজনশীলতার ভেতর দিয়ে বৈশ্বিক মানবতাবাদের ওপর ভিত্তি করে নতুন মূল্যবোধের অনুসন্ধান করছেন। ভারতীয় ডায়াসপোরার সংকট ও সম্ভাবনাকে নিজেদের 888sport live footballের বিষয়বস্তু করে তুলেছেন সালমান রুশদি, রোহিনটন মিস্ত্রি, অমিতাভ ঘোষ, ঝুম্পা লাহিড়ী, অনিতা দেশাই, রাজা রাও, বিক্রম শেঠ, অমিত চৌধুরী, কিরণ দেশাই, অরুন্ধতী রায়, ভারতী মুখার্জী থেকে শুরু করে এমজি ভাসানজি, শ্যাম সেলভাদুরাই, বিক্রম চন্দ্র, ফারুক ঢোন্ডি, রমেশ গণেশকেরা, কেতকী কুশারী ডাইসন, ভেন বেগামুদ্রে, চিত্রা ব্যানার্জী, গীতা মেহতার মতো খ্যাতিমান লেখকরা। এমনকি রুপি কাউর, সাউনা সিং বাল্ডুইন, অখিল শর্মা, সন্ধ্যা মেনন, তনজ ভাটিয়া, নিশা শর্মা, সায়ন্তনী দাশগুপ্তের মতো নতুন লেখকরাও ভারতীয় ডায়াসপোরিক জীবনের সংকটকে উপজীব্য করে তুলেছেন তাঁদের গল্প-888sport alternative linkে।
তবে ভারতীয় ডায়াসপোরা 888sport live footballে নানাদিক থেকে প্রতিনিধিত্বশীল এবং অনুকরণীয় লেখক হলেন সদ্যপ্রয়াত স্যার ভি এস নাইপল। এই প্রেক্ষাপটে একমাত্র 888sport live footballে নোবেলজয়ী লেখক তিনি। বুকার 888sport app download bdও পেয়েছেন ডায়াসপোরিক গল্পসংকলন ইন এ ফ্রি স্টেটের (১৯৭১) জন্য। ডায়াসপোরিক জীবনে তাঁর মতো বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আর কোনো লেখক হননি। জন্ম ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ত্রিনিদাদে। নিজের জাতিসত্তার প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন তাঁর ÔMany-Sided BackgroundÕ থেকে। নাইপলের পরিবার কাজের জন্য ব্রিটিশ ভারত থেকে ব্রিটিশ ত্রিনিদাদে যায়। এরপর আর ভারতে ফিরে আসেনি। নাইপল সেখানে হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠলেও মিশেছেন,পড়াশোনা করেছেন খ্রিষ্টান মহল্লায়। এরপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করে লন্ডনে থেকে যান। এই অর্থে ত্রিজাতীয় সংস্কৃতির প্রেক্ষাপট থেকে লেখক নাইপলের জন্ম। ডায়াসপোরা 888sport live footballতত্ত্বের বিবেচনায় তিনি দ্বৈত ডায়াসপোরিক লেখক – অর্থাৎ ভারতীয়-ত্রিনিদাদীয়-ব্রিটিশ লেখক তিনি। ফলে ডায়াসপোরিক চেতনা ও নির্বাসিত জীবনের সংবেদনশীলতা সম্পর্কে ধারণা না নিয়ে কোনো পাঠকের পক্ষে নাইপলের 888sport live football সম্পূর্ণরূপে বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। বর্তমান গদ্যে ডায়াসপোরিক ফ্রেমওয়ার্ক থেকে নাইপলের কিছু লেখার মধ্যে দিয়ে তাঁকে ও তাঁর 888sport live footballে আত্মপরিচয় অন্বেষণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটবে।
নাইপল যখন প্রথম লেখালেখির কথা চিন্তা করেন তখন লেখার উপকরণ কোনো একটি নির্দিষ্ট সাংস্কৃতিক পরিচয়ে নির্ধারিত ছিল না। নাইপল দেখলেন, যে ইংরেজি ভাষায় তিনি লিখতে চাচ্ছেন সেই ইংরেজি 888sport live football-ঐতিহ্য তাঁর নিজের নয়। আবার ত্রিনিদাদে তিনি যে ভারতীয় জনগোষ্ঠীর ভেতর বেড়ে উঠেছেন সেখানে ভারতীয় 888sport live football-ঐতিহ্য বলে কিছু দাঁড়ায়নি। তার চেয়ে বড় কথা, ত্রিনিদাদি বা ভারতীয় সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ নাইপলের কোনোদিনই পছন্দ হয়নি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, ‘আমি জানতাম, বিশাল পৃথিবী পড়ে আছে বাইরে। আমি যা-কিছুর মধ্যে বেড়ে উঠেছি, সেই কৃষিজীবী ও ঔপনিবেশিক সমাজকে গ্রহণ করতে পারিনি।’ এমন পরিস্থিতিতে একজন নতুন লেখক কি নিয়ে লিখবেন? এই প্রশ্ন থেকেই যেন লেখক নাইপলের জন্ম। আত্মপরিচয়ের এই সংকট থেকে নাইপল বুঝে নেন প্রচলিত-প্রতিষ্ঠিত কোনো পথ তাঁর গন্তব্যযাত্রা নয়। নিজের প্রয়োজনেই তাঁকে নতুন পথ সৃষ্টি করতে হবে। এটাই যেন লেখক নাইপলের জন্য ভবিতব্য ছিল। এক্ষেত্রে তিনি কিছু নির্দেশনা পেয়ে যান তাঁর বাবার কাছ থেকে। বাবার গল্প থেকে নাইপল তাঁর লেখকজীবনের বিষয়বস্তু খুঁজে পান। ত্রিনিদাদে তখন অধিকাংশ ভারতীয় পেশায় শ্রমজীবী হলেও নাইপলের বাবা ছিলেন সাংবাদিক। বাবার লেখার ভেতর নাইপল তাঁর 888sport live football-ঐতিহ্য খুঁজে পান। তিনি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে সঞ্চয় করে আরো মহাবয়ানের দিকে ঝুঁকে পড়েন, প্রেক্ষাপট হিসেবে ব্যবহার করেন ঔপনিবেশিক এবং উত্তর-ঔপনিবেশিক ত্রিনিদাদ ও ভারত। উপজীব্য হয়ে ওঠে ত্রিনিদাদ ও ইংল্যান্ডে বসবাসরত ভারতীয় ডায়াসপোরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক সংকট।
সাংস্কৃতিকভাবে নির্দিষ্টতাবোধের অভাব থেকে নাইপলের ভেতর জন্ম নেয় বিচ্ছিন্নতাবোধ ও অস্তিত্বের সংকট। নাইপলের শুরুর দিকের 888sport alternative linkগুলোতে দেখি ঔপনিবেশিক ত্রিনিদাদবাসী তাঁদের নিজস্বতার অন্বেষণ করছে। এবং আগন্তুক ভারতীয়দের জন্য নিজস্বতার বিষয়টি ‘গৃহ’ ধারণার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। যেমন এ হাউজ ফর মি. বিশ্বাস 888sport alternative linkে বিশ্বাস মনে করেন, পুরুষত্বের ধারণাটা একটা বাড়ির মালিকানার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার যেহেতু নিজস্ব কোনো গৃহ নেই, ফলে তিনি নিজেকে পুরুষ মানুষ হিসেবে অযোগ্য ভাবেন। বাড়ির মালিকানার সঙ্গে তিনি ব্যক্তির পরিচয় যুক্ত বলে মনে করেন। এ বেন্ড ইন দ্য রিভার 888sport alternative linkে সেলিম তার অ্যাপার্টমেন্টকে নিজের বাড়ি বলে ভাবতে পারে না। আগের ভাড়াটিয়ার দেয়ালে সাঁটা নোংরা ছবিগুলো সে তুলে ফেলে না, সেগুলো সবসময়
তাকে মনে করিয়ে দেয় এটা তার গৃহ নয়। এভাবেই নতুন এক 888sport live football-ঐতিহ্যের জন্ম হয় নাইপলের হাত দিয়েই। বন্ধুলেখক পল থেরক্স যথার্থই বলেছেন, ÔWith Naipaul, his tradition begins with him.Õ
নাইপলের 888sport live footballে ভারতীয় স্বদেশি, ভারতীয় অভিবাসী, ত্রিনিদাদবাসী ও ব্রিটিশ জনগণ চরিত্র হয়ে উঠলেও তিনি কখনো কারো একার লেখক হিসেবে চিহ্নিত হননি। তিনি কি ভারতীয়, নাকি ত্রিনিদাদীয়, নাকি ব্রিটিশ? এ-প্রশ্নের কোনো সরল উত্তর তাঁর ক্ষেত্রে আমরা খুঁজে পাই না। এর অংশত কারণ কোনো দেশের ইতিহাসই নাইপলের নিজের ইতিহাস হয়ে ওঠেনি। ইশিগুরো যেমনটি বলছেন, প্রকৃত ইতিহাস আবেগ থেকে আসে না, আসে ঐতিহাসিক বিচ্ছিন্নতা থেকে। ইশিগুরো বলছেন, ‘জাপান সম্পর্কে আমার যে জানাশোনার ঘাটতি, দায়িত্ববোধের অভাব, এটা আমি মনে করি আমাকে গৃহহীন লেখক হিসেবে ভাবতে বাধ্য করেছে। আমাকে নির্দিষ্ট করে কোনো সামাজিক ভূমিকা পালন করতে হয়নি কারণ আমি বিশুদ্ধ ইংরেজ না, আবার জাপানিও না। ফলে আমাকে আক্ষরিক অর্থে কোনো দায়িত্ব পালন করতে হয়নি, কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা সমাজ নিয়ে লিখতে হয়নি। কারো ইতিহাস আমার ইতিহাস হয়ে ওঠেনি।’ [সাক্ষাৎকার; কেনজাবুরো ওয়ে গৃহীত] এই ‘স্বদেশি’ বোধ ও দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নিজেকে মুক্ত মনে করেছেন নাইপলও। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ÔI was born in Trinidad, I have lived most of my life in England and India is the land of my ancestors. That says it all. I am not English, not Indian, not Trinidadian. I am my own person.’ [টাইমস অব ইন্ডিয়া, ২০০২
কোনো জাতিগত দায়বদ্ধতা না থাকা বা জাতীয়তাবোধের আবেগ দ্বারা আক্রান্ত না হওয়ার একটা সুবিধাও আছে। নির্মম সত্যও অতি সহজে বলে ফেলা যায়। নাইপল এই সুবিধার চর্চাটা ভালোমতোই করেছেন। লেখক হিসেবে নিজেকে কঠোর সমালোচক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিজের জন্মস্থান ত্রিনিদাদকে তিনি বলছেন তাঁর জন্য Ôunimportant, uncreative and cynicalÕ (The middle passage, 1962)| তিনবার নিজের পূর্বপুরুষের দেশ ভারত-888sport slot gameের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন তিনটি বই : অ্যান এরিয়া অব ডার্কনেস (১৯৬৪), ইন্ডিয়া : অ্যান উনডেড সিভিলাইজেশন’ (১৯৭৭) এবং ইন্ডিয়া : এ মিলিয়ন মিউটিনিজ নাউ (১৯৯০)। বইগুলোর শিরোনাম পড়েই বোঝা যায় ভারতীয়দের জন্য সুখকর কিছু লেখেননি তিনি। তিনি লিখেছেন : ‘ভারতে লোকে সর্বত্র মলত্যাগ করে। রেললাইনের ধারে, মাঠের ধারে, রাস্তার ধারে, নদীর ধারে, সমুদ্রতীরে কোথাও হাগতে বাকি রাখে না।’ ভারত বহুভাষাভাষী মানুষের দেশ। সব ভাষার 888sport live football সম্পর্কে বিশদ না জেনেই মন্তব্য করেছেন : ‘ইংরেজি ছাড়া অন্য ভারতীয় ভাষায় এখন কোনো লেখালেখি হচ্ছে না।’ ভারতীয় বাঙালিদের সম্পর্কেও তাঁর মন্তব্য যথেষ্ট নেতিবাচক। এক জায়গায় লিখেছেন : ‘… লোকটা খারাপ। শুধু বাঙালি আর অপরাধীদের সঙ্গে মেশে।’ মুসলিম-বিশ্বে সমালোচিত হয়েছেন ইরান, ইরাক, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া 888sport slot gameের অভিজ্ঞতা থেকে লিখিত অ্যামাং দ্য বিলিভারস : অ্যান ইসলামিক জার্নি (১৯৮১) এবং বিয়ন্ড বিলিফ : ইসলামিক এক্সকারশনস অ্যামাং দ্য কনভার্টেড পিপলস (১৯৯৮) গ্রন্থদুটির কারণে। ইসলাম সম্পর্কে নাইপল বলেন, ÔIt (Islam) has had a calamitous effect on converted peoples. To be converted you have to destroy your past, destroy your history. You have to stamp on it, you have to say Ômy ancestral culture does not exist, it doesnÕt matter.Õ (পাঠোন্মোচন, হাফ এ লাইফ, কুইন্স এলিজাবেথ হল, ইংল্যান্ড) আফ্রিকার উগান্ডা সফরকালে তিনি বলেন, ‘আফ্রিকানদের খালি লাথি মারা দরকার। লাথির ভাষাটাই কেবল তারা বোঝে।’ আফ্রিকার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নাইপলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’
লেখক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন, সেই অক্সফোর্ড সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য হলো ÔWhat I learnt from Oxford in 6 years, it took me 12 years to unlearn|Õ (888sport app লিট ফেস্ট, 888sport app ২০১৭) এভাবে কেবল ভারত, আফ্রিকা কিংবা মুসলিমবিশ্ব নয়, সামগ্রিকভাবে নাইপল গোটা বিশ্ব নিয়েই চরমভাবে হতাশ একজন মানুষ ছিলেন। তাঁর প্রমাণ আমরা পাই মার্কিন 888sport slot gameলেখক ও কথা888sport live footballিক পল থেরক্সকে যখন তিনি বলেন, ÔThe melancholy thing about the world is that it is full of stupid people; and the world is run for the benefit of the stupid and common.Õ
নাইপল এসব কথা হয়তো মিথ্যা বলেননি। কিন্তু এগুলো আংশিক সত্য। পুরোপুরি সত্য নয়। নাইপল নিজেকে কোনো পরিচয়ের সঙ্গে একাত্ম করতে না পারার কারণে নিজের মতো করে সত্যকে গ্রহণ ও নির্মাণ করেছেন। তিনি হয়ে উঠেছেন সীমানাহীন ভাসমান পৃথিবীর কথক। এর কারণ তাঁর ডায়াসপোরিক পরিচিতি। এই পরিচিতি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা না করে নাইপল এর একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে চেয়েছেন। না-ভারতীয় না-ত্রিনিদাদীয়, মাঝামাঝি একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি নির্মাণের চেষ্টা তাঁর 888sport live footballজুড়ে আছে।
প্রথম 888sport alternative link দি মিসটিক মসিউরে (১৯৫৭) আমরা দেখি গণেশ নামে একজন ভারতীয় গুরু ঔপনিবেশিক ত্রিনিদাদে রাজনৈতিকভাবে শক্তিমান হয়ে উঠছে। ত্রিনিদাদে বসবাসরত পূর্ব ভারতীয় জনগোষ্ঠীকে উপজীব্য করে 888sport alternative linkটি লেখা। 888sport alternative linkের কথক বলছেন যে, গণেশের (888sport alternative linkের কেন্দ্রীয় চরিত্র) ইতিহাস, আমাদের সময়ের ইতিহাস। কাজেই আমরা ধরে নিতে পারি, গণেশের মধ্য দিয়ে ত্রিনিদাদে ভারতীয় জনগণের উত্থান-পর্বের ইতিহাস রচিত হয়। গণেশ হলো পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া পূর্ব ভারত থেকে আসা প্রথম প্রজন্মের প্রতিনিধি। প্রথম প্রজন্মের ভারতীয়দের জন্য সাংস্কৃতিকভাবে আত্মপরিচয় নির্মাণের কাজটি আরো কঠিন ছিল। গল্পের কথক কিশোর গণেশের প্রতি সহানুভূতির সঙ্গে তার সে-সময়ের সংগ্রামের কথা উঠিয়ে এনেছেন। স্কুলে প্রথম দিনই গণেশ সাংস্কৃতিকভাবে নিগৃহীত হয়। 888sport app শিক্ষার্থী তার ভারতীয় আচরণ ও পোশাক নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। সেই প্রথম গণেশ ভারতীয় হিসেবে নিজেকে সমাজের প্রান্তিক মানুষ বলে মনে করে। সে লজ্জিত হয়ে ভারতীয় পরিচয় আড়াল করার চেষ্টা করে। নাইপলের ভাষায় : ‘সে (গণেশ) তার ভারতীয় নাম নিয়ে এতটাই লজ্জায় পড়ে যায় যে একটা পর্যায়ে বলে বেড়ায় যে আসলে তাকে ডাকা হতো গরেথ নামে।’ গণেশ তখন অন্যদের সংস্কৃতি নকল করার চেষ্টা করে। সে ভারতীয় গুরুবিদ্যা প্রচার করলেও ভারতীয় তান্ত্রিকদের পোশাক না পরে, পরে ইউরোপীয়দের পোশাক। তার খাবারের টেবিলে ভারতীয় ডাল-ভাত-রুটির পাশাপাশি চলে আসে পশ্চিমা খাবার। এভাবেই নতুন দেশে পূর্ব ভারতীয়রা দ্বৈতজীবন যাপন করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তারা ভালো করে ইংরেজি বলতে পারে না, আবার অন্যদিকে হিন্দি ভাষা একেবারে ভুলে যায়। প্রাচ্যের সঙ্গে পশ্চিমের এই সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বের মাঝে আটকা পড়ে গণেশ। সে যখন তার প্রাচ্যের আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে পশ্চিমের জ্ঞানকে মেলাতে পারে, তখনই সে সফল হয়। সে যখন বলতে শেখে, ‘সব ধর্মই এক’, তখনই সে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টান সকলের মানুষ হয়ে ওঠে। গণেশ ভারতীয় ত্রিনিদাদি হিসেবে নয়, কলোনিয়াল প্রোডাক্ট হিসেবে নির্বাচনে জয়লাভ করে। এরপর যখন গণেশকে আমরা লেখক হয়ে উঠতে দেখি তখন আমাদের বুঝে নিতে সমস্যা হয় না, গণেশ একইসঙ্গে নাইপলের জীবনী ও ইতিহাস।
মিগুয়েল স্ট্রিট (১৯৫৯) গল্পসংকলনে স্থান পাওয়া তিনটি গল্পে উপজীব্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ত্রিনিদাদে বসবাসরত 888sport free betলঘু পূর্ব ভারতীয় জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক সংকট। ভাকু ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি লিখতে পারে বলে তার স্ত্রী গর্বের সঙ্গে সেটি প্রচার করে বেড়ায়। ভাকুরা 888sport free betগুরু নিগ্রোদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখে। এখানে প্রত্যেকে একে অন্যের থেকে আলাদা। নিগ্রোরা 888sport promo code ও শিশু নির্যাতনে অভ্যস্ত। বউ পেটানোটা ভাকুর জন্যও আচারে পরিণত হয়। সে ক্রিকেট খেলার ব্যাটকে এ-কাজে খুব উপযোগী মনে করে। তার স্ত্রীও ব্যাটটি যত্ন করে হাতের কাছে-কিনারে রেখে দেয়। দাসজীবন থেকে বের হয়ে এলেও সেই জীবনের কিছু বদঅভ্যাস নিগ্রোরা ছাড়তে পারেনি। 888sport alternative linkের অল্পবয়সী কথক পানশালা ও ব্রথেল গমনে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে তার সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মা তাকে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেয়। মিগেল স্ট্রিট গল্পসংকলনে নাইপল একটি সংস্কৃতির ভেতর দিয়ে আরেকটি সংস্কৃতিকে দেখার চেষ্টা করছেন। তখন তিনি ইংল্যান্ডে, ইউরোপীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় তিনি এক কিশোরের দৃষ্টি দিয়ে তাঁর জন্মশহর ত্রিনিদাদের বহু-সাংস্কৃতিক রীতিনীতি পর্যবেক্ষণ করছেন। দূর থেকে অন্য আলোয় নিজের অতীত খনন করছেন নাইপল।
গণেশের মতো মিগুয়েল স্ট্রিটের আর সব বাসিন্দা দ্বৈতজীবন যাপন করে, এটা তাদের ওপর আরোপিত বাস্তবতা, অন্যটা তাদের কল্পনা। পানশালা, বস্তি, ব্রথেল, অনাহার, নৃশংসতা তাদের যাপিত জীবনের অংশ। তারা হলিউডের সিনেমা দেখে ফ্যান্টাসি জগৎ তৈরি করে তাদের আশ্রয়ের জন্য। কবি বি. ওয়ার্ডসওয়ার্থ ইউরোপীয় কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থের ‘আত্মার ভাই’ হিসেবে নিজেকে ভাবেন। তিনি ইংরেজিতে তাঁর মহৎ 888sport app download apkটি লিখবেন বলে প্রচার করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক লাইনের বেশি লিখতে পারেন না।
ব্যক্তির নাম আধুনিককালে একজন মানুষের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। অথচ বি. ওয়ার্ডসওয়ার্থের নামটি তাঁর নিজের নয়। একধরনের অস্তিত্বের সংকট থেকে চরিত্র নিজেই তাঁর জন্য অন্য একটি নাম নির্বাচন করেছেন। তিনি যে-নামটি বেছে নিয়েছেন সে-নামটি তাঁর নিজের দেশীয় সংস্কৃতির বা গোত্রের নাম নয়। তিনি বিখ্যাত ইংরেজ কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থের নামটি নিজের জন্য নির্বাচন করেছেন। তিনি কবি হতে চান, নিজের মতো করে নয়, ওয়ার্ডসওয়ার্থের মতো করে। কিন্তু তিনি যে সাদা চামড়ার ওয়ার্ডসওয়ার্থ হতে পারবেন না, এটিও তিনি তাঁর মাথায় রেখেছেন। এজন্যে তিনি নামের আগে ‘বি.’ অর্থাৎ ‘ব্ল্যাক’ শব্দটা যোগ করে রেখেছেন। লক্ষ করার বিষয়, গল্পটির কথক এক স্কুলপড়–য়া কিশোর। ধরে নিতে পারি নাইপল নিজেই। ফলে পাঠক সরাসরি বি. ওয়ার্ডসওয়ার্থের ভাবনাটা জানতে পারছে না। এই বর্ণনাশৈলী থেকেও বোঝা যায়, বি. ওয়ার্ডসওয়ার্থের অস্তিত্ব অন্যের কাছে গচ্ছিত। এভাবেই দীর্ঘদিন ব্রিটিশ উপনিবেশ থাকার কারণে ত্রিনিদাদে আগন্তুক ভারতীয় কিংবা আফ্রিকানদের ভেতর অস্তিত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। তারা ভুল আলোয় নিজের চেহারা দেখার চেষ্টা করছে। এখন প্রশ্ন হলো, যে-দেশটি ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে স্পেন, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের উপনিবেশ ছিল তারা কেন অর্থনীতি ও শিক্ষা-দীক্ষায় এত পিছিয়ে? ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলো তো তাদের নিজেদের ভাষায় ‘এনলাইট’ করতেই গিয়েছিল! মিগুয়েল স্ট্রিট এমন অনেক প্রশ্নের সামনে আমাদের দাঁড় করিয়ে দেয়।
আত্মপরিচয়ের সংকট, নিজস্বতার অনুসন্ধান, আগন্তুক-অনুভূতি, সাংস্কৃতিকভাবে পরাভূত যাবতীয় অনুষঙ্গের যথার্থ প্রকাশ ঘটেছে নাইপলের মহাকাব্যিক 888sport alternative link এ হাউজ ফর মিস্টার বিশ্বাস-এ (১৯৬১)। 888sport alternative linkের বর্ণনাকারী কিশোর আনন্দ তার ভূমিহীন-গৃহহীন বাবা মিস্টার বিশ্বাসের জীবনের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেছে। আমরা জানি, নাইপল তাঁর নিজের এবং বাবার জীবনের ছায়াচরিত্র হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এ-দুই চরিত্র। 888sport alternative linkের প্রথম অংশে নাইপল ত্রিনিদাদে আখ-চাষের শ্রমিক হিসেবে ভারতবর্ষ থেকে আসা লোকজনের হিন্দুধর্মীয় আচার, কুসংস্কার, দর্শন ও সংস্কৃতি চর্চা নিয়ে কথা বলেছেন। পিতৃমাতৃভূমি থেকে তারা হাজার হাজার মাইল দূরে নতুন দেশে এসে তাদের নিজস্ব কৃষ্টি যেন আরো প্রবলভাবে ধরে রাখতে চাইছে। ভিনদেশে এক টুকরো স্বদেশ তৈরি করার আকুতি থেকে তারা জোর দেয় তাদের ফেলে আসা সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু ঔপনিবেশিক শক্তি আরো প্রবল সামর্থ্য নিয়ে আঘাত করে। হিন্দুদের অনেকেই এখন মৃতদের শরীর শ্মশানে না নিয়ে কবরস্থ করে। শুরুতে হিন্দুসমাজে এক জাতের 888sport promo code-পুরুষের সঙ্গে অন্য জাতের 888sport promo code-পুরুষের বিয়ে মেনে নেওয়া না হলেও পরে এই
জাত-ভেদাভেদ উঠে যায়। তবে সাংস্কৃতিক ডিলেমা তাদের ভেতর থেকে যায়। যেমন, মিস্টার বিশ্বাসকে কানাডীয় মিশন স্কুলে ভর্তি করা হলেও পরে তাকে পণ্ডিত জয়রামের কাছে পাঠানো হয়। লোকের বাড়িতে থেকে কাজ শিখতে গিয়ে বিশ্বাস চোরের অপবাদ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। মাকে দৃঢ়তার সঙ্গে বলে ÔI am going to get a job of my own. And am going to get my own house too.Õ মি. বিশ্বাস মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মারা যায়। কিন্তু সে শেষ পর্যন্ত নিজে একটা বাড়ির মালিক হয়। ফলে গৃহের প্রশ্নে ভারতীয় ত্রিনিদাদিরা আর এশিয়ার পরিচয়ে পরিচিত থাকে না, তারা তখন নতুন পৃথিবীর অংশ হয়ে ওঠে। নাইপল বলছেন, ÔImmigrants are people on their own. They cannot be judged by the standards of their older culture. Culture is like language, ever developing. There is no right and wrong; no purity from which there is decline. Usage sanctions everything.Õ
দ্য মিমিক মেন (১৯৬৭) 888sport alternative linkে রঞ্জিত কৃপাল সিং নামে এক ক্যারিবিয়ান রাজনীতিক লন্ডনে রাজনৈতিক নির্বাসনে থেকে তাঁর আত্মজীবনী লিখছেন। তিনি এমন এক অতীত নিয়ে লিখতে শুরু করেছেন যেখানে তাঁর নিজস্ব অস্তিত্ব গ্রন্থিত হওয়ার আগেই বলা হয়েছে, তুমি তোমার গৃহত্যাগ করো এবং আর কখনো ফিরে এসো না। এই অবস্থায় রঞ্জিত সিং কীভাবে লিখবেন তাঁর আত্মকথন? সিংয়ের বাবা-মা ভারত থেকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ক্যারিবীয় দ্বীপে আসে। এখানে তার জন্ম হয়। 888sport alternative linkে ইসাবেলা শহরে ভারতীয় যৌথ পরিবারে বেড়ে ওঠার দিনগুলোর কথা তুলে ধরে রঞ্জিত সিং। নাইপল এখানে ইসাবেলা এবং লন্ডনের মাঝে আটকে যাওয়া কৃপাল সিংয়ের মধ্য দিয়ে ঔপনিবেশিক ক্যারিবীয় অঞ্চলে ভারতীয় জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয়ের সংকট তুলে ধরেছেন। সিং তাঁর আত্মজীবনী লিখছেন লন্ডনে বসে, যেটি তাঁর নিজের দেশ নয়, যে-দেশটি তাঁর জন্মভূমি সেটি আবার তাঁর পিতামাতার দেশ নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম প্রজন্মের ভারতীয় হিসেবে তাঁকে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক, রাজনৈতিক সবধরনের সংকটের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।
ইন এ ফ্রি স্টেট (১৯৭১) গ্রন্থে নামগল্পের পাশাপাশি বিষয়সংশ্লিষ্ট আরো দুটি গল্প স্থান পেয়েছে। ‘ওয়ান আউট অব ম্যানি’ গল্পে সন্তোষ বম্বেতে কাজ করে। যখন তার মালিক ওয়াশিংটন ডিসিতে চলে যাবেন বলে ঠিক হয়, তখন সন্তোষ গ্রামে তার দরিদ্র পরিবারের কাছে ফিরে না গিয়ে মালিকের সঙ্গে আমেরিকায় চলে আসে। এখানে আসামাত্রই সে নিজেকে বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করে। দেশত্যাগের জন্য তার মনে অনুশোচনার জন্ম হয়।
এভাবেই নাইপল তাঁর প্রায় প্রতিটি গল্প-888sport alternative linkে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বসবাসরত ভারতীয়দের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শারীরিক এবং মানসিক স্থানচ্যুতের বিষয়টি উঠিয়ে এনেছেন। তিনি নিজে মিশ্র সংস্কৃতির ভেতর আত্মপরিচয় অনুসন্ধান করেছেন। মি. বিশ্বাসের নিজস্ব বাড়ির অন্বেষণ নাইপলের সেই প্রতীকী অন্বেষণ।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.