এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের কর্ম ও জীবন নিয়ে বহু লেখা হয়েছে এরই মধ্যে এবং নিশ্চয়ই আরো হবে। তাঁর জীবৎকালে এবং প্রয়াণের পর অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী, বন্ধু-স্বজন তাঁকে নিয়ে লিখেছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ২০২০ সাল থেকে আমৃত্যু কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আমার এই লেখাটি তাঁর সঙ্গে কালি ও কলম এবং আমার সংযোগের 888sport sign up bonusচারণ।
প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার সকালে একটা তাড়া থাকত দ্রুত অফিসে পৌঁছানোর। এদিন কালি ও কলমের সাপ্তাহিক সভা হতো। উপস্থিত থাকতেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কালি ও কলমের সম্পাদক সুব্রত বড়ুয়া এবং আমি। কখনো কখনো হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও যোগ দিতেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য লুভা নাহিদ চৌধুরী। তিনি যোগ না দিলেও অন্তত একবার এসে কুশলবিনিময় করে যেতেন। সুব্রত স্যার সপ্তাহে দুদিন, কখনো কখনো তিনদিনও আসতেন। কিন্তু মনজুর স্যার সাধারণত একদিনই আসতেন। পত্রিকার প্রয়োজনে অবশ্য কখনো কখনো সপ্তাহে
দু-তিনদিনও আসতে হতো তাঁকে।
প্রতি মঙ্গলবার সকালে একটা কল আসত আমার মোবাইল ফোনে অবধারিতভাবে। কলটি করতেন মনজুর স্যার। ফোনের আলাপ ছিল এমন –
– আশফাক, তুমি এসেছো?
– জি স্যার, আমি অফিসে।
– আচ্ছা, তাহলে আমি কিছুক্ষণ পরে আসছি। তুমি কাজগুলো একটু গুছিয়ে রেখো। এসে বাকি কথা হবে।
এই কথোপকথন একেবারে বাঁধা ছিল। অফিসে এসে তিনি ও সুব্রত স্যার পত্রিকার 888sport free bet-পরিকল্পনা, পরবর্তী কর্মকাণ্ড, বিশেষ কোনো আয়োজন থাকলে তার পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করতেন। স্বভাবতই সেসব আলোচনায় যুক্ত থাকতাম। এত সাবলীলভাবে যে-কোনো সমস্যার সমাধান মনজুর স্যার দিয়ে দিতেন যে ভাবতে অবাক লাগত, তিনি কীভাবে পারেন?
ইউল্যাবে স্যার পড়াতেন। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান-আয়োজনে তাঁকে অনুরোধ-উপরোধে যেতে হতো। এসবের মধ্যেও কালি ও কলমে সময় দেওয়ার কথা ভুলতেন না। কখনো মঙ্গলবার আসতে না পারলে অন্য কোনো দিন ঠিকই সময় করে আসতেন।
মনজুর স্যার যখন আমাদের মাঝে ছিলেন, তখন মঙ্গলবার ছিল অন্যরকম একটা দিন। শুধু লেখা বাছাই নয়, বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতো আমাদের সেই বৈঠকে। আমি মূলত শ্রোতা। মনজুর স্যার ও সুব্রত স্যারের বিচিত্র অভিজ্ঞতার বর্ণনা, বিশ্লেষণ এবং ভাবনার সরল প্রকাশ আমাকে ঋদ্ধ করত। এখন মনজুর স্যার নেই, তবে সুব্রত স্যারের কাছে সময় পেলে অভিজ্ঞতার পাঠ নিতে ভুল হয় না। কাজের ব্যস্ততায় হয়তো সবসময়ে হয়ে ওঠে না। এর মাঝে যখনই সময় পাই, সুব্রত স্যারের বিচিত্র-বিস্তৃত পাঠ ও 888sport live football-সংস্কৃতির নানা বিষয়ে ঝোঁকের বর্ণনায় বিস্মিত হই।
কালি ও কলমে প্রতিনিয়ত অনেক লেখা আসে। সেগুলো বাছাই করতে হয়, সম্পাদনা করতে হয়, তারপর প্রকাশ। এই গুরুদায়িত্ব ছিল সুব্রত স্যার, মনজুর স্যার এবং আমার ওপর। মঙ্গলবারের আলোচনায় এসব বিষয়ে সবসময়ই একটা গণতান্ত্রিক আবহ থাকত এবং এখনো আছে। গণতান্ত্রিক বলছি এ-কারণে, মনজুর স্যার বা সুব্রত স্যার কেউ কখনো কোনো লেখার বিষয়ে তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা চাপিয়ে দিতেন না। তাঁরা যে-কোনো লেখা নিয়ে আলোচনা করতেন, আমার মতামতও নিতেন। সম্মিলিত আলোচনায় কোনো লেখা সম্পর্কে সবাই একমত হলে তবেই সেটা প্রকাশ হতো, অথবা বাদ যেত। সেই ধারাবাহিকতা এখনো বহাল আছে। যে-কোনো লেখা নিয়েই মনজুর স্যার আমাকে প্রশ্ন করতেন, ‘তুমি পড়েছো?’ আমার উত্তর পাওয়ার পর তিনি বলতেন, ‘তোমার কাছে কেমন মনে হয়েছে?’ আমার মতামত পাওয়ার পর তিনি তাঁর অভিমত ব্যক্ত করতেন। এরপর সিদ্ধান্ত। মূলত সুব্রত স্যার সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই রেওয়াজ চালু করেন এবং তাতে মনজুর স্যারও যোগ দেন।
কালি ও কলমের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও সম্পাদক আবুল হাসনাত ২০২০ সালে করোনাকালে প্রায় ছ’মাসের ব্যবধানে পরলোকগমন করেন। তাঁদের আকস্মিক প্রয়াণে পত্রিকার হাল ধরেন সুব্রত বড়ুয়া ও সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তাঁদের উভয়েরই অভিমত ছিল, যে মানদণ্ডে কালি ও কলম পৌঁছেছে তাকে অবনমিত হতে দেওয়া যাবে না। আবুল হাসনাত ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের দেখানো পথ ধরেই মূলত কালি ও কলম এগিয়ে যাবে। এর সঙ্গে বাড়তি কিছু যোগ করতে হলে তা করা হবে। মনজুর স্যার অকস্মাৎ চলে যাওয়ার পরও সেই ধারা বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ কালি ও কলম।
মঙ্গলবারের আলোচনায় প্রায়ই উঠে আসতো একটি বিষয় – ভালো মানের 888sport liveের ঘাটতি। অবশ্য কালি ও কলমের শুরু থেকেই এই ঘাটতি ছিল এবং এখনো আছে। প্রতি 888sport free betর আগে লেখা নিয়ে বসলে মনজুর স্যার খুব মনোযোগ দিয়ে লেখাগুলো পড়ে অনেক সময়ই হতাশা ব্যক্ত করতেন। 888sport live-সংকটের মধ্যে যেগুলো পাওয়া যেত তাতেও থাকত অনেক সমস্যা। মনজুর স্যার, বিশেষ করে 888sport liveের বেলায়, তথ্যসূত্রের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘তথ্যসূত্র ছাড়া একটা উদ্ধৃতি, একটা বক্তব্য ছেপে দেওয়া কোনো কাজের কথা নয়। 888sport live পড়ে পাঠকের যদি কখনো মনে হয়, তাঁরা উদ্ধৃতাংশের মূল লেখাটি পড়বেন – সে-সুযোগ পাবেন না, কারণ তাঁরা কোথায় খুঁজবেন সেই লেখা যদি সূত্র না থাকে।’ এজন্য অনেক নামী লেখকের লেখাও তিনি হয় পুনর্লিখন করিয়েছেন অথবা না পারলে বাদ দিয়েছেন। এতে তাঁর মন কখনো দ্বিধান্বিত হয়নি।
মনজুর স্যার ইংরেজির অধ্যাপক ছিলেন। তাই বিশ্ব888sport live football নিয়ে তাঁর পঠন-পাঠন থাকাটাই স্বাভাবিক। এছাড়া বিশ্বের সমসাময়িক 888sport live football-সংস্কৃতির প্রবণতা সম্পর্কেও তাঁর আপ-টু-ডেট ধারণা ছিল। অনেক 888sport app download apk latest version লেখা আসে কালি ও কলম-এর দফতরে। সেসব লেখার ব্যাপারে মনজুর স্যার ছিলেন অত্যন্ত সচেতন। তিনি সব সময়ই বলতেন, ‘888sport app download apk latest version হলে অবশ্যই মূল লেখাটি পাঠাতে হবে।’ এর বিকল্প তিনি মানতে চাইতেন না। এ-কারণে অনেক সময়ই 888sport app download apk latest versionকদের কাছে মূল লেখাটি চেয়ে আমাকে ফোন, এসএমএস, ইমেইল করতে হয়েছে এবং এই পন্থাই যথার্থ। এমনও হয়েছে অনেক লেখা মনজুর স্যার পড়ে মঙ্গলবারের আলোচনাতে বলেছেন, ‘মূল লেখায় প্রথম যে লাইনটা আছে সেটাই নেই 888sport app download apk latest versionে।’ এছাড়া 888sport app download apk latest versionে মূল লেখাও পরিবর্তন হয়ে যায় অনেক সময়। সে-বিষয়ে মনজুর স্যার বলতেন, ‘888sport app download apk latest version হলে ঠিক করে করতে হবে। আর ভাবানুবাদ বা রূপান্তর হলে সেটা উল্লেখ করতে হবে। লেখককে বুঝতে হবে – কোনটা 888sport app download apk latest version, কোনটা ভাবানুবাদ, কোনটা রূপান্তর।’ এ নিয়ে অনেকেই ক্ষুণ্ন হতেন, কিন্তু তাতে মনজুর স্যারের সিদ্ধান্তের কোনো হেলদোল হতো না।
কথা888sport live footballে মনজুর স্যারের হাঁটাচলা ছিল সপ্রতিভ। কালি ও কলমে প্রতি 888sport free betর জন্য অনেক গল্প পড়তে হতো মনজুর স্যারকে। তিনি বেশ আনন্দের সঙ্গেই সেগুলো পড়তেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই বাদ পড়ে যেত। যেগুলো টিকতো সেগুলো নিঃসন্দেহে মানসম্পন্ন। আর কোনো গল্প নিয়ে তিনি দ্বিধায় থাকলে সুব্রত স্যার ও আমার সঙ্গে আলাপ করে নিতেন। নবীন লেখকদের লেখা প্রকাশের ক্ষেত্রে মনজুর স্যার ছিলেন অত্যন্ত আগ্রহী। প্রতি মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠিতদের পাশাপাশি নতুন লেখকদের লেখা নিয়ে কথা হতো আমাদের মধ্যে। কাউকে পত্রিকায় স্থান দেওয়া যায় কি না
– সে ব্যাপারে আমাদের প্রাণপণ চেষ্টা থাকত এবং এখনো আছে। মনজুর স্যারের সঙ্গে অনুজ লেখকদের ভালো সংযোগ ছিল। কালি ও কলম গল্প888sport free bet করার সময় তাঁর পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা অনেক কাজই সহজ করে দিত।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের লেখালেখি শুরু হয়েছিল 888sport app download apk দিয়ে। তাঁর একটি 888sport app download apkর বইও আছে – সমুদ্রের স্বরলিপি। পরবর্তীকালে অবশ্য তিনি 888sport app download apkর পথ ছেড়ে গদ্যের পথে হাঁটা শুরু করেন। এক মঙ্গলবারে আমাকে বেশ উষ্মার সঙ্গে মনজুর স্যার বলেছিলেন, ‘888sport app download apkগুলো নাকি ভালো হচ্ছে না আশফাক? আমাকে দেখাবে এখন থেকে 888sport app download apk।’ আমি তাঁর কথা অনুসারে 888sport app download apk দেখাতে শুরু করলাম। প্রতি মঙ্গলবার তিনি 888sport app download apk দেখেন। একসময় বললেন, ‘888sport app download apk তুমি আর সুব্রত দাদা দেখছ, তাহলেই হবে, আমার দেখার প্রয়োজন নেই।’ পরে জানালেন, কোনো এক অনুষ্ঠানে তাঁকে কালি ও কলমের 888sport app download apk নিয়ে কেউ কিছু বলেছিলেন, সেটা সেই মুহূর্তে তাঁর ভালো লাগেনি। পরে অবশ্য এ-বিষয়ে তাঁকে আর অভিযোগ করতে শুনিনি।
২০২৪ সালে কালি ও কলমের কুড়ি বছর পূর্তি উপলক্ষে 888sport live football সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই আইডিয়াটা প্রথম আসে লুভা আপার মাথায়। পরে তাতে সায় দেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও সুব্রত বড়ুয়া। এর আগে ২০১৭ সালে সিলেটে বেঙ্গল উৎসবে তিন দিনব্যাপী 888sport live football সম্মেলনের আয়োজন হয়েছিল। সে-সময় আবুল হাসনাতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়। এবার এই আয়োজনের সার্বিক দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মনজুর স্যার। কাকে কাকে বক্তা হিসেবে আনা হবে, তিনদিনে কয়টি সেশন হবে, কী কী বিষয়ে আলোচনা হবে – এমন বিভিন্ন বিষয়ে সভার পর সভা চলতে লাগল সুব্রত স্যার, মনজুর স্যার, লুভা আপা ও আমার মধ্যে। সে এক ভীষণ ব্যস্ততার সময়। পরিবেশ-পরিস্থিতি, গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নবীন-প্রবীণের একই মঞ্চে উপস্থিতি নিশ্চিত করা যে কতটা ঝক্কির ব্যাপার সেটা আয়োজক মাত্রই জানেন। সে-সময় যখনই কোনো বিষয়ে আটকে গেছি তখনই সমাধান বাতলে দিয়েছেন মনজুর স্যার। অত্যন্ত সফলভাবে তিনদিনের এই 888sport live football সম্মেলন সমাপ্ত করার চ্যালেঞ্জ বেশ ভালোভাবেই উতরে গিয়েছিল কালি ও কলম। অবশ্য এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় লুভা আপার কথা। এছাড়া কালি ও কলম এবং বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সকলের নিরলস শ্রম-চেষ্টা আয়োজনকে সাফল্যমণ্ডিত করেছিল।
করোনাকালে যখন অফিস-আদালত বন্ধ, স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি – সে-সময় সপ্তাহে একদিন, মঙ্গলবার, কালি ও কলমের সভা হতো পত্রিকার দফতরে। অনেক বিধিনিষেধ মেনে কোনো রকমে বেঙ্গল 888sport live chatালয়ের চতুর্থ তলায় আমরা বসতাম। সেসব সভায় যেসব আলোচনা হতো তা বাস্তবায়নের ভার পড়তো আমার ওপর। অবশ্যই নির্দেশনা থাকত সুব্রত স্যার ও মনজুর স্যারের। তখন দেখেছি মনজুর স্যার স্বাস্থ্য সম্পর্কে কতটা সচেতন। আমাদের চা-কফি-শিঙাড়া মিলিয়ে দুই-এক প্রস্থ টিফিন হয়ে যেত; কিন্তু মনজুর স্যার শুধু এক কাপ গ্রিন টি ও বিস্কিটেই সন্তুষ্ট। পরবর্তীকালে সব স্বাভাবিক হয়ে এলেও মনজুর স্যার কখনো অফিসে লাঞ্চ করেননি।
যথারীতি কাজ সেরে দুপুর ১টার মধ্যে বাসায় ফিরতেন। আমি কয়েকবার স্যারকে অনুরোধ করেছি; কিন্তু স্যার বলতেন, ‘তোমার ভাবি অপেক্ষা করে আছেন। তাছাড়া আমি দুপুরে বিশেষ কিছু খাই না। সব নিয়ম করা আছে। সেভাবেই চলছি।’ পরে জানতে পারি, ভাবি অসুস্থ। তাই স্যার কখনো তাঁকে ছাড়া দুপুরের খাবার খেতেন না। এছাড়া ভাবির সার্বিক দেখাশোনা বলতে গেলে তিনি এক হাতেই করে গেছেন আমৃত্যু। নিজের রোগশোকের কথা কখনো বলেননি। সবসময় সুস্থ-সবল প্রসন্ন দেখেছি। কখন কীভাবে তিনি দুর্বল হয়ে পড়ছিলেন সেটা আর জানা হলো না।
কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক 888sport app download bd দেওয়া হচ্ছে ২০০৮ সাল থেকে। দেশে তরুণদের 888sport live footballচর্চার জন্য এত বেশি অর্থমূল্য অন্য কোনো 888sport app download bdে দেওয়া হয় বলে আমার জানা নেই। প্রতিবছর 888sport app download bd দেওয়া হয় জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। ২০২৪ সালে ২০২৩-এর 888sport app download bd দেওয়ার সময় শুধু গতানুগতিক অনুষ্ঠান নয়, নতুন কিছু যুক্ত করার কথা বললেন লুভা আপা। সেই অনুসারে আলোচনায় সাব্যস্ত হলো দিনব্যাপী একটি কর্মশালা করা হবে। কী বিষয়ে কর্মশালা? মনজুর স্যার বললেন, ‘গল্প নিয়ে করা যায়।’ এবার কর্মশালার নাম ঠিক করার পালা। এবারো মনজুর স্যারই সমাধা বাতলে দিলেন – ‘গল্পের কলকব্জা’। সুব্রত স্যার ও লুভা আপাও তাতে সায় দিলেন। শুরু হয়ে গেল ‘গল্পের কলকব্জা’র তোড়জোড়। প্রশিক্ষক কারা হবেন, কীভাবে প্রশিক্ষণার্থীদের বাছাই করা হবে, কীভাবে সেশনের সময় ভাগ করা হবে ইত্যাদি বিষয়ে লুভা আপা ও আমি যে পরিকল্পনা করলাম তা সাজিয়ে-গুছিয়ে ঠিকঠাক করে দিলেন মনজুর স্যার। তাঁর পরামর্শ ও নির্দেশনায় বেশ ভালোভাবেই সম্পন্ন হলো ‘গল্পের কলকব্জা’ এবং ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেল তরুণদের কাছ থেকে। এই আয়োজনে অন্যতম বিষয় ছিল শেষ সেশনে মনজুর স্যারের বক্তব্য। তরুণ লেখকদের গভীর মনোযোগে শুনতে দেখেছি তাঁর বক্তব্য। তাঁর কথা বলার ধরন সে-সময় একটি ম্যাজিক্যাল আবহ তৈরি করত, যাতে সহজেই সম্পৃক্ত হয়ে যেতেন উপস্থিতজনেরা। এবারো, ২০২৫ সালে, একইভাবে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বিষয় ছিল 888sport app download apk। শিরোনাম ছিল ‘888sport app download apkর কলাকৌশল’। মনজুর স্যারেরই দেওয়া শিরোনামটি।
জীবন চলার পথে অনেক রকম অভিজ্ঞতাই আমাদের হয় প্রতিনিয়ত। মনজুর স্যারকে দেখেছি সবার ব্যাপারে, বিশেষ করে সমস্যা-সংকটে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। নির্দ্বিধায় তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন অন্যকে সহায়তার জন্য। এমনও দেখেছি, অনেক বছর আগের পরিচয়ের সূত্র ধরে কেউ হয়তো তাঁর কাছে কোনো বিষয়ে সহায়তা চেয়েছেন। স্যার সব শুনে-বুঝে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছেন সহায়তা করতে। নিদেনপক্ষে সৎ উপদেশ দিয়েছেন যাতে সহায়তাপ্রার্থনাকারীর কাজে লাগে।
এই লেখার নাম ‘মঙ্গলবারের হাওয়া’ দেওয়ার অনুপ্রেরণা এসেছে মনজুর স্যারের সেই জনপ্রিয় কলাম, দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত, ‘অলস দিনের হাওয়া’ থেকে। মনজুর স্যারের সেই কলামে বিশ্ব888sport live footballের নানা বিষয়-আশয় উঠে আসত। এই রচনায় মনজুর স্যারের সঙ্গে কালি ও কলমের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিঞ্চিৎ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। এর বাইরেও সব বিষয়ে মনুজর স্যারের অংশগ্রহণ ও দিকনির্দেশনা ছিল আমাদের পাথেয়।
মনজুর স্যারের সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ। যথারীতি মঙ্গলবার। সেদিন অফিসে এলেন, অনেক কথা হলো, পরিকল্পনা হলো। তবে তাঁকে একটু যেন বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। প্রশ্ন করেছিলাম, ‘স্যার, শরীর ঠিক আছে?’ বললেন, ‘একদম ঠিক আছে।’ এরপরই তিনি যেন স্বরূপে ফিরে গেলেন। এর মধ্যে সুব্রত স্যারও চলে এসেছিলেন। আলোচনা, লেখা বাছাই, সম্পাদনা শেষে যাওয়ার সময় আমাকে বলে গেলেন, ‘আশফাক, আমি আগামী মঙ্গলবার আসছি। এর মধ্যে জরুরি কিছু হলে জাকিরকে (কালি ও কলমের অফিস সহকারী) বাসায় পাঠিয়ে দিও। আমি দেখে দেব।’ কিন্তু তিনি আর এলেন না, কিছু দেখতে পারলেন না। চলে গেলেন। ২০২০ সালের ১লা নভেম্বর যেদিন আবুল হাসনাত মারা যান, সেদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি ছিল। মনজুর স্যারও যেদিন চলে গেলেন, সেদিনও একটানা বৃষ্টি ঝরছিল। প্রিয়জনের বিদায়বেদনায় বুঝি প্রকৃতিও কেঁদে ওঠে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.