মিত্রমশায়, অন্য কিছু লিখুন

গত নভেম্বরের ১ তারিখে কালি ও কলম সম্পাদক, কবি, প্রাবন্ধিক আবুল হাসনাত প্রয়াত হয়েছেন নিউমোনিয়া হয়ে; শুনছি করোনা, আবার করোনা নয়। তিনি 888sport appর মানুষ। 888sport app বিদেশ তো সত্য। ভিসা না হলে যাওয়া যায় না। আর করোনাকালে তো সেই শহর আমার এই কলকাতা শহর থেকে দূর-দূর লক্ষ আলোকবর্ষ দূরের হয়ে গেছে।  888sport apps ভারত আলাদা দেশ। কিন্তু আমি বাংলাভাষী, বাঙালি, তিনিও। ওই দেশ বাংলাভাষার দেশ। বাংলায় সব হয়। সরকারি কাজ থেকে কোম্পানির বিজ্ঞাপন পর্যন্ত। আমি বাংলায় লিখি। বাংলায় কথা বলি। সুতরাং 888sport live football, 888sport live chatসূত্রে হাসনাতভাই আমার আত্মজন। বাংলাভাষার ওই দেশ এখন পরবাস হয়ে গেছে। বিদেশ। বিদেশে আমার আত্মজনের প্রয়াণ হয়েছে। তিনি পরবাসী না আমি পরবাসী তা নিয়ে আমার ধন্ধ আছে। তাঁর কাছে আমি পরবাসী, আমার কাছে তিনি। আমি অনুভব করি বরিশাল, সাতক্ষীরা, 888sport app, নেত্রকোনা, পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় আমার যেমন অধিকার আছে, ওপারের মানুষেরও কলকাতা, দিল্লি, জয়পুরে তেমন অধিকার আছে। দেশটা খণ্ডিত হোক আমরা তো চাইনি। খণ্ডিত দেশকে জুড়তে চেয়েছে কালি ও কলম, আমি কৃতজ্ঞ। আবুল হাসনাতভাইয়ের প্রয়াণ আমার কাছে বড় শোক। যেমন শোক হয়েছে একই দিনে, গত ১৪ই মে দেবেশ রায় এবং আনিসুজ্জামান স্যারের মৃত্যুতে।  শোকের সীমান্ত নেই, দেশ-বিদেশ নেই। কিন্তু এমন এক সময় পার করছি আমরা, দেবেশ রায়কে শেষবারের মতো দেখতে যেতে পারিনি। সারাদিন কোভিড সন্দেহে হাসপাতালে রেখে দিয়ে মধ্যরাতে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়েছিল। তখন দশ-পনেরো মাইল পথ হয়ে গিয়েছিল কয়েক আলোকবর্ষের পথ। পরবাস। পদ্মাপার। আসলে আমার ভয় আর অপারগতা নিয়ে এত কথা বলা। সম্পাদক এবং ব্যক্তি আবুল হাসনাতের প্রয়াণ এতই আকস্মিক যে বুঝে উঠতেই সময় গেল। করোনা এপার-ওপার, দুই পারের, অনেক শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে নিয়ে নিয়েছে। এই  শোক যাওয়ার নয়। কালি ও কলম পত্রিকা সম্পাদনাসূত্রে আবুল  হাসনাতভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয়। তিনি মূলতই সাংবাদিক। 888sport appsের জন্ম থেকেই  দৈনিক সংবাদপত্রে 888sport live footballের পাতার দায়িত্বে ছিলেন শুনেছি। গুণমানে তা ছিল অনেক উচ্চস্থানে, তা শুনেছি বন্ধুদের কাছে।   কিন্তু তাঁর আসল পরিচয় যা আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো তিনি কালি ও কলম পত্রিকার সম্পাদক, যে-পত্রিকার তুল্য পত্রিকা এই উপমহাদেশে নেই। হ্যাঁ নেই।  কালি ও কলম সেই পত্রিকা যেখানে লিখতে পারলে সকল লেখকই সম্মানিত বোধ করেন। আমাদের  কলকাতায়  একটি পত্রিকা ছিল, যার আয়ু ছিল বছর-দশ, প্রতিক্ষণ।  সেই পত্রিকার কথা কিছুটা মনে আসে আবুল হাসনাত ও কালি ও কলম প্রসঙ্গে লিখতে বসে। প্রতিক্ষণ দুই বাংলার ভেতরে একটি সেতু হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তখন প্রতিক্ষণ দফতরে দেখেছি শামসুর রাহমান, আবুবকর সিদ্দিকী, তরুণ প্রশান্ত মৃধা এমন অনেককে। কিন্তু সেই সেতু থাকল না। বন্ধ হওয়ার ক-বছর বাদে ২০০৪ নাগাদ 888sport appয় কালি ও কলম প্রকাশিত হলো। দু-পারের মিলন-সেতু। এবং এই সেতু পোক্ত অনেক অনেক। এমন পত্রিকা আমি আর দেখিনি। আমাদের এক্ষণ, অনুষ্টুপ, বারোমাস, পরিচয় পত্রিকার ভেতরে এক্ষণ, বারোমাস বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এগুলি সেই অর্থে অতি উচ্চমানের লিটল ম্যাগাজিন। কিন্তু বাণিজ্যিক পত্রিকা যে কত উচ্চমানের হতে পারে তা কিছুদিন প্রতিক্ষণ পত্রিকাকে দেখেছিলাম। তারপর কালি ও কলমকালি ও কলম আরো বিশিষ্ট, আরো ব্যাপ্ত। একটি পত্রিকা 888sport app এবং কলকাতা থেকে প্রকাশিত হচ্ছে, এমন আগে কখনো ঘটেনি। বাঙালির একটিই জাতিসত্তা, দেশ আলাদা হয়ে গেলেও বাঙালি এক, এই বার্তা কালি ও কলম দিয়েছে।   একটি মননশীল বাণিজ্যিক পত্রিকা তরুণ লেখকদের আশ্রয় হয়ে উঠেছে দুই দেশেই, এর চেয়ে বড় কিছুই হয় না। কালি ও কলম পত্রিকার সম্পাদক সীমান্তের কাঁটাতার ছিন্ন করে দিয়েছিলেন। সেতু তৈরি করে দিয়েছিলেন 888sport apps এবং পশ্চিমবঙ্গের ভেতরে। ভাবতেই পারি না, একটি পত্রিকায় পশ্চিমবঙ্গের লেখক নীহারুল ইসলাম, মৃত্তিকা মাইতি লিখছে আবার 888sport appsের অতি তরুণ  মুস্তাফা আয়ুভি লিখছেন। লেখাই মূল বিবেচ্য। লেখক নন। পশ্চিমবঙ্গের  তরুণ  লেখকদের কাছে লেখার জায়গা কম।  কালি ও কলম তাদের জায়গা দিয়েছে। এই কাজটি করেছেন আবুল হাসনাত। কালি ও কলমের বয়স বছর-আঠারো প্রায়। আমি কবে প্রথম লিখেছি তা এখন মনে নেই, বছর-পনেরো তো হবেই।  সম্পাদককে চিনি না, কিন্তু আমার লেখা তিনি নিয়মিত ছাপছেন। কলকাতার সুশীল সাহা লেখা চাইছেন, সম্পাদকের স্বাক্ষর করা আমন্ত্রণপত্র দিচ্ছেন। আমি লেখা দিচ্ছি। একবার বিশেষ 888sport free betয় 888sport alternative linkিকা লিখলাম। তারপর পত্রিকা কলকাতা এবং 888sport app থেকে বেরোতে থাকল। আমার ওপর হাসনাতভাইয়ের এমনই পক্ষপাতিত্ব ছিল যে, কয়েক বছর আগে কলকাতা সংস্করণ কালি ও কলমে যে-গল্প লিখেছি সেপ্টেম্বরে শারদীয়তে, 888sport app সংস্করণে সেই গল্প নভেম্বর 888sport free betয় বেরিয়েছে। পরে এই প্রসঙ্গে আমাকে বলেছিলেন, গল্পটি 888sport appsের পাঠকেরও পড়া উচিত। তখনো তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে খুব চিনি না। ২০১৮ সালের নভেম্বরে কলকাতার 888sport apps বইমেলায় তাঁর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন সুহৃদ সুশীল সাহা। তিনি তার আগে কালি ও কলম বার্ষিক 888sport free betর জন্য একটি গল্প চেয়েছিলেন। আমি তখন ময়মনসিংহের পটভূমিতে একটি 888sport alternative link লিখছিলাম। সেই 888sport alternative link থেকেই ৫০০০ শব্দের একটি অংশকে গল্পে পরিণত করেছি। সেই গল্প পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। পরে মনে হলো অত বড় লেখা ওঁদের পক্ষে অসুবিধার হতে পারে। অতটা জায়গা। তাছাড়া 888sport alternative link থেকে লেখা গল্প কেন দেব? সময় আছে। নতুন গল্প লিখে দিই। কলকাতায় দেখা হতেই বললাম সব কথা। ওই লেখাটি থাক। বার্ষিক 888sport free betয় লেখার জন্য সময়সীমা তো পেরিয়ে যায়নি। তিনি হেসে বললেন, লেখাটি নভেম্বর 888sport free betতেই বেরোবে, তাঁর  পছন্দ হয়েছে এতটাই। তারপর বললেন, বার্ষিক 888sport free betর জন্য আবার লিখতে, লেখা হলেই তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিতে। এরপর 888sport apps বইমেলার মঞ্চে একটি 888sport live footballসভায় আমি আর তিনি পাশাপাশি। ছিলেন সেলিনা হোসেন, 888sport apps পুস্তক প্রকাশক সমিতির সভাপতি এবং আরো কয়েকজন। মৃদুভাষী হাসনাতভাই বললেন, আমি যে লেখাটি লিখব, কালি ও কলম পত্রিকায় যেন পাঠিয়ে দিই। ওঁর নিজস্ব মেইল ঠিকানা আমাকে দিলেন। এতটা জীবনে আমাকে কোনো সম্পাদক এমন কথা বলেননি। বললাম, বই রিভিউ করে দেবো, এক তরুণ ঔপন্যাসিকের 888sport alternative link ভালো লেগেছে। বললেন, দিন। বলেইছি তো আপনার যেমন মনে হবে আমাকে দেবেন। আপনি কালি ও কলমে সবসময় স্বাগত। বন্ধু সুশীল সাহার কাছে শুনেছি তিনি কবি, আজীবন সম্পাদনার কাজেই নিমগ্ন ছিলেন। 888sport appsের সংবাদপত্র দৈনিক সংবাদের 888sport live footballের পাতা ২৪ বছর ধরে সম্পাদনা করেছেন। যথারীতি সেই  888sport live footballের পাতা অতি উচ্চমানের হতো। আর কালি ও কলম কেন আলাদা, তা হলো এর সম্পাদনার বৈচিত্র্য। এই পত্রিকা যেমন মননশীল গল্প, 888sport alternative link ছাপে, তা বাদ দিয়ে এর বড় একটি অংশ হলো 888sport live। সেই 888sport live এতই উচ্চ মানের এবং তার এতই বিষয়বৈচিত্র্য যে, সংরক্ষণ করে রাখতে হয়। কালি ও কলমের বিশেষত্ব হলো, এই পত্রিকা চিত্রকলা নিয়ে যতটা জায়গা দেয়, তা আমাদের পশ্চিমবঙ্গের কোনো পত্রিকাতেই দেখি না। তিনি নিজে 888sport live chatবোদ্ধা ছিলেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন করতে বলেছিলেন, তাঁর নিজের সংগ্রহে অনেক বড় বড় 888sport live chatীর মূল কাজই আছে। কালি ও কলম পত্রিকা ছাড়া চিত্রকলা-ভাস্কর্য বিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা 888sport live chat ও 888sport live chatীর সম্পাদক তিনিই ছিলেন। আমাদের এদিকে এমন পত্রিকা নেই। কালি ও কলম পত্রিকায় নাট্যকলা, গান – 888sport live chatের প্রতিটি ক্ষেত্র নিয়ে অতি উচ্চমানের 888sport live প্রকাশিত হয়। এমন সুচারু সম্পাদনার ধারাটি তিনি  প্রবর্তন করে গেছেন, যা বিরল নিশ্চয়। সম্পাদক 888sport live football বোঝেন, চিত্রকলার সমঝদার, এমন দেখিনি। পশ্চিমবঙ্গে ভালো পত্রিকার অভাব নেই। কিন্তু তা অনিয়মিত এবং অবাণিজ্যিক। বাণিজ্যিক 888sport live footballপত্র এমন মননশীল হয়, এই মুহূর্তে এই বঙ্গে তেমন দেখি না। আমি শেষ যে 888sport free betটিতে লিখেছি তা বঙ্গবন্ধু শতবার্ষিকী 888sport free bet। তার আগে রমাপদ চৌধুরীকে নিয়ে একটি লেখা। মধ্যে গল্পও লিখেছি। কালি ও কলম পত্রিকায় যিনি আমাকে সব সময় স্বাগত জানিয়েছিলেন, লিখলেই কালি ও কলমে পাঠিয়ে দেবেন, সেই পত্রিকায় আবুল হাসনাতভাইকে নিয়ে লিখতে হচ্ছে। এই লেখাটি তাঁর মনোমত হবে কি?  তিনি মৃদু কণ্ঠে বলতেন, কী লিখলেন বলুন দেখি মিত্রমশায়, আর একবার ভাবুন দেখি। জীবনে একবারই আমাকে ধমক দিতেন বড়ভাইয়ের মতো, অন্য কিছু লিখুন, অন্য কিছু। হয়তো সেই কথাই বলবেন তিনি লেখাটি প্রকাশিত হলে। আছেন নিশ্চয় কালি ও কলম পত্রিকার পাতায় পাতায়, অক্ষরে অক্ষরে তিনি, আবুল হাসনাত।