তপস্যা ঘোষ
রবীন্দ্রনাথ ‘সাধারণ মেয়ে’র আখ্যান লিখতে বলেছিলেন শরৎবাবুকে। দুঃখী সাধারণ মেয়ে, নিতান্ত তুচ্ছ মেয়ে, যদি কোনো অসাধারণত্ব থাকেও, তার অন্বেষণ করার জন্য, কেউ হয়তো থাকে না। ‘কাঁচা বয়সের জাদু’তে তারা বিকিয়ে যায় ‘মরীচিকার দামে’। এখানেই অবশ্য রবীন্দ্রনাথের কলম থেমে যায়নি; তিনি চেয়েছিলেন এই সাধারণ মেয়েটি অসাধারণ হয়ে উঠুক কলমের এক আঁচড়ে। বড়ো-বড়ো নামজাদার সভার মাঝখানে যেন সে অনায়াসে আপন অহঙ্কারে হয়ে থাকতে পারে উন্নতশির, এগিয়ে যেতে পারে চারদিকের হাততালিকে উপেক্ষা করে। এই স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন শরৎবাবুই। করেছেনও বটে! পঁচিশ বছর একটানা মেয়েদের গল্পই লিখে গেছেন শরৎচন্দ্র। ১৯১৩ থেকে ১৯৩৮ – তাঁর কোনো ব্যতিক্রম ঘটেনি। সাধারণ মেয়ের আখ্যান, আটপৌরে রোম্যান্টিক ঠাসবুনোট গপ্পো, নিপাট সহজ ভাববিভোর ভাষা – এই হলো তাঁর পুঁজি। অবিরত লিখে গেছেন প্রেমাকুল মেয়েদের গল্প। পতিতা, বিধবা, বৈষ্ণবী, সতী, অরক্ষণীয়া অথবা বিয়ে-বহির্ভূত প্রেম – তা সে যেমনটাই হোক না কেন, শরৎচন্দ্র অভিভূত হয়ে থাকতেন তাদের প্রেমে।
শরৎচন্দ্র দিলীপকুমার রায়কে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘জীবনে যে ভালোবাসলে না, কলঙ্ক কিনলে না, দুঃখের ভার বইলে না, সত্যিকার অনুভূতির অভিজ্ঞতা আহরণ করলে না, তার পরের মুখের ঝাল খাওয়া কল্পনা সত্যিকার 888sport live football কতদিন জোগাবে?…সবচেয়ে জ্যান্ত লেখা সেই, যা পড়লে মনে হবে গ্রন্থকার নিজের অন্তর থেকে সবকিছু ফুলের মতো বাইরে ফুটিয়ে তুলেছে। দেখোনি 888sport appsে আমার সব বইগুলোর নায়ক নায়িকাকেই ভাবে এই বুঝি গ্রন্থকারের নিজের জীবন, নিজের কথা। তাই সজ্জন সমাজে আমি অপাংক্তেয়।’
শ্রীকান্ত সম্পর্কেও এই একই অভিমান শ্রীকামেত্মর। আত্মীয়-অনাত্মীয় সকলের একটানা ছি-ছি বর্ষণে তাঁর মন হতাশ হয়ে পড়েছিল, জন্মেছিল আত্মধিক্কার। জীবনের শুরম্নতে যে ছিছিক্কার তাড়না করেছিল শ্রীকান্তকে, জীবনের উপামেত্ম পৌঁছে সেই ধিক্কারকে মেনে নিতে মন সায় দেয়নি তাঁর। তাঁর ‘ভবঘুরে জীবনের অপরাহ্ণে’ পৌঁছে বিগত 888sport sign up bonus রোমন্থন করতে-করতে শ্রীকান্ত বিচিত্র সৃষ্টিকে উপভোগ করেছিল, অন্বেষণ করেছিল নিজের কাছের যৌক্তিকতা। এই বৃত্তামেত্ম মগ্ন হতে-হতে বারবার শরৎচন্দ্রের জীবনযাপনই মনে আসে। মানুষের অন্তরের অনন্ত রহস্যে ডুব দিয়েছিলেন শরৎচন্দ্র; 888sport alternative linkের শ্রীকান্ত। তাই শ্রীকান্ত বলে, জগতের অনেক বাসত্মব ঘটনা কল্পনাকে অতিক্রম করে কোথায় যে চলে যায়, তা বলে বোঝানো দায়।
রেঙ্গুন-888sport slot gameের প্রায় শেষে লিখলেন এই শ্রীকান্ত প্রথম পর্ব। পেলাম আমরা ইন্দ্রনাথকে, পেলাম রাজলক্ষ্মীকে। রাজলক্ষ্মীর পিয়ারীবেশ হয়তো কল্পনা, কিন্তু রাজলক্ষ্মী শরৎচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ বাল্যসঙ্গিনী, দেবানন্দপুরে যে-কিশোরীটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল, শরৎচন্দ্রের, সে তাঁর ‘উৎপাত ও উপদ্রবেরও পরম সহিষ্ণু পাত্রী ছিল’। অবশ্য লেখক একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘রাজলক্ষ্মীকে কোথায় পাবে? ওসব বানানো মিছে গল্প। শ্রীকান্ত একটা 888sport alternative link বই ত নয়; ও-সব মিছে জনরবে কান দিতে নেই। কাহিনীটি কি সত্যি?’ শ্রীকামেত্মর পড়াশোনার বিবরণও কিন্তু শরৎচন্দ্রের বাল্যজীবনের সঙ্গে একাকার হয়ে যায়। অথবা ইন্দ্রনাথ? ভাগলপুরের বন্ধু রাজু তথা রাজেন্দ্রনাথ মজুমদারের অবিকল গপ্পো। সন্ন্যাসী শ্রীকান্ত যেভাবে জীবনকে প্রত্যক্ষ করে, তার সঙ্গেও প্রত্যক্ষ সাদৃশ্য আছে সন্ন্যাসীবেশী ভ্রামণিক লেখকের। শ্রীকান্ত 888sport slot game করেছিল, শরৎচন্দ্র সেই 888sport slot gameকে প্রকাশ করেছিলেন। শ্রীকান্ত দাবি করেছে, সে নাকি যা দেখে, অবিকল দেখে, ‘কবিত্ব’ সৃষ্টিতে সে অপারগ। শরৎচন্দ্রের জিত সেখানেই, তিনি সত্য কথা সোজা করে বলতে গিয়ে কবিত্ব করতে পারেন – বাসত্মব এবং কল্পনা একাকার হয়ে যায়। এই 888sport alternative linkে তাই স্পষ্টতই দুটি সত্মর, আত্মকাহিনি এবং আত্ম-সমালোচনা।
বস্ত্তত এটা বোধহয় তাঁর আরো অনেক লেখাতেই প্রকট। ‘শ্রীকামেত্মর শরৎচন্দ্র’তে মোহিত লালের বিশেস্নষণ, ‘ইহার নায়ক একাধারে আত্মও বটে, পরও বটে। লেখক যেন আপনাকেই বাহিরে একটু তফাতে ধরিয়া দেখিতেছেন।’ চন্দ্রনাথ পড়েও মনে হয়, এ তো শরৎচন্দ্রের শামিত্মদেবীকে বিয়ে করার কাহিনি। রেঙ্গুনে থাকাকালীন লেখক যে-বাড়িতে থাকতেন, তার নিচের তলায় থাকতেন এক বাঙালি ব্রাহ্মণ, পেশায় সে মিস্ত্রি। মাতাল চক্রবর্তীর সংসারে ছিল একমাত্র কন্যা শামিত্ম, যাকে মাতাল বাবার অনেক অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করতে হতো। এরকমই একদিন শামিত্ম শরণাপন্ন হয়েছিলেন লেখকের। চক্রবর্তীকে অনেক বুঝিয়েও যখন কাজ হলো না, তখন শরৎচন্দ্র নিজেই শামিত্মকে বিয়ে করেন এবং সুখেই চলেছিল দিনযাপন। চন্দ্রনাথ 888sport alternative linkে চন্দ্রনাথ-সরযুবালার বিয়েও অনেকটা এমনভাবেই ঘটেছিল।
পেস্নগাক্রান্ত শামিত্মদেবীর মৃত্যু হলে শরৎচন্দ্র বিয়ে করেন হিরণ্ময়ী দেবীকে, বিতর্ক ঘনিয়েছিল এই বিয়ে নিয়েও। বিয়ে কোথায় কীভাবে হয়েছিল, তা নির্দিষ্ট করে বলাও মুশকিল। তবে রাধারানী দেবীর লেখা থেকে জানা যায়, এই বিয়ের কোনো অনুষ্ঠান হয়নি। এই সম্পর্কটিকে আইনগত বৈধতাও দেওয়া হয়নি। তবে শরৎচন্দ্র তাঁকে চিরকাল স্ত্রীর সম্মান দিয়েছেন এবং তাঁর উইলে সম্পত্তির উত্তরাধিকার দিয়েছিলেন তিনি হিরন্ময়ীকেই। স্বামী-অনুরাগিণী এই স্ত্রীর সাহচর্যে থাকার ফলে উচ্ছৃঙ্খল লেখক তাঁর 888sport live footballচর্চা অব্যাহত রাখতে পেরেছিলেন। শেষ প্রশ্ন 888sport alternative linkেও তাঁর কমল মানতে চায়নি বিয়ের বন্ধনকে! এই বন্ধন তাঁর কাছে প্রেমের সমার্থক নয়। শিবনাথের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনকে সে স্বীকার করে নিতে চায়নি, আবার অজিতের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনেও সে নিজেকে আবদ্ধ করেনি। তার মতে আসল বন্ধন থাকে মনে। এমনকি কমলের অভিমত, ‘চাটুবাক্যের নানা অলঙ্কার গায়ে আমাদের জড়িয়ে দিয়ে যারা প্রচার করেছিল মাতৃত্বেই 888sport promo codeর চরম সার্থকতা, সমসত্ম 888sport promo codeজাতিকে তারা বঞ্চনা করেছিল।’ এমন কোনো আচার-অনুষ্ঠানে কমলের ভারি অবজ্ঞা, যে আচার-বিচার-বুদ্ধির ওপর একটা পর্দা ঝুলিয়ে দেয়। হয়তো এসব ভাবনারই উৎস তাঁর নিজের জীবনযাপন। বিয়ে নিয়ে শিবনাথ-হরেন্দ্রর-অবিনাশের চাপান উতোরেও প্রতিফলিত হয়েছে শরৎচন্দ্রের নিজের জীবনযাপন। শিবনাথ তার দ্বিতীয় বিয়েটি করেছিল শৈব মতে। এতে ক্রুদ্ধ অবিনাশের মন্তব্য, ‘অর্থাৎ, ফাঁকির রাস্তাটুকু যেন দশদিক দিয়েই খোলা থাকে, না শিবনাথ?’ বিচলিত হয় না শিবনাথ, পাল্টা তার জবাব, ‘এটা ক্রোধের কথা অবিনাশবাবু। নইলে বাবা দাঁড়িয়ে থেকে যে বিবাহ দিয়ে গিয়েছিলেন, তার মধ্যে তো ফাঁকি ছিল না, অথচ ফাঁক যথেষ্টই ছিল।’
এই বিয়েগুলোর আগে শরৎচন্দ্র একবার উন্মত্ত হয়েছিলেন একটি মেয়েকে নিয়ে, তাঁর নাম গায়ত্রী দেবী। প্রতিবেশী যুবকের প্ররোচনায় গায়ত্রী গৃহত্যাগ করেছিল এবং বহু অপমানও তাকে সহ্য করতে হয়েছিল এ-সময়। শরৎচন্দ্র গায়ত্রীর দুঃখে কাতর হয়ে বলেছিলেন, সমাজের চোখে গায়ত্রী পতিতা; অতএব আত্মীয়-স্বজনের ঘরে ঠাঁই পাবে না সে। অথচ এই মেয়েটির চোখের জলের হিসাব কোনোদিন নেবে না সমাজ। এই সমবেদনাই রূপান্তরিত হয়েছিল প্রেমে। তবে গায়ত্রী শরৎচন্দ্রের প্রস্তাবে সায় দেয়নি। এ ধরনের ঘটনাও তাঁর 888sport alternative link রচনায় পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলেছিল। রেঙ্গুনে ও পেগুতে থাকাকালীন শরৎচন্দ্র যে-উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন, সেই অভিজ্ঞতাও বোধহয় তাঁকে 888sport alternative linkের কাহিনি-রচনায় প্রণোদিত করেছিল। মদ্যাসক্তি এবং বেশ্যাসক্তি ছিল তাঁর। তিনি যে এজন্য আত্মীয়-পরিজনের কাছে ধিকৃত এবং নিন্দিত হতেন, তাও জানা ছিল তাঁর। সপ্তাহের কোনো কোনো দিন তিনি অফিসেও যেতেন না। এরকম বর্ণনাও পাওয়া যায়, ‘মাসের মাহিনা হাতে পেলেই বন্ধুদের সঙ্গে পাড়ি দিতেন একটু আনন্দলাভের আশায়। নির্দিষ্ট স্থানের কোন স্থিরতা ছিল না – যখন যেখানে খুশী, দল বেঁধে যেতেন, হৈ-চৈ করে রাত কাটিয়ে আসতেন বাসায়।’ শরৎচন্দ্রের নামের সঙ্গে জড়িয়েছিল অনেক পতিতার নামই, তবে তার সত্যতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত নন। এরকম কাহিনিও লিখিত হয়েছে। বাসমত্মী নামে এক পতিতার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এতটাই বেশি ছিল যে, এই মেয়েটির পেস্নগ হলে শরৎচন্দ্র তার সেবা করেছিলেন এবং মৃত্যুর পর শেষকৃত্যও করেছিলেন।
বাসমত্মী ও গায়ত্রীর সঙ্গে লেখকের ঘনিষ্ঠতার গল্প ‘চরিত্রহীনে’র সতীশ-সাবিত্রীর প্রসঙ্গ 888sport app download for android করায়। শরৎচন্দ্র যে-ভালোবাসায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন, সেই ভালোবাসায় মগ্ন হয়েছিল সতীশ-সাবিত্রী। প্রসঙ্গ ভিন্ন, প্রেক্ষাপটও আলাদা, কিন্তু ভালোবাসার গল্পটা এক। ওই বাসমত্মীর গল্পটির আঁচে কি তৈরি হয়েছে দেবদাসের চন্দ্রমুখী-দেবদাস কাহিনি? অথচ শরৎচন্দ্র দেবদাস রচনার জন্য লজ্জিত হয়েছেন; একবার একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘ওটা immoral, বেশ্যা চরিত্র তো আছেই, তাছাড়া আরও কি কি আছে বলে মনে হয়।’ যেজন্য তিনি দেবদাসকে প্রত্যাখ্যান করছেন, সেই জীবনযাপনেই তো অভ্যসত্ম ছিলেন শরৎচন্দ্র।
অথচ শরৎচন্দ্র যখন 888sport promo codeর মূল্য লেখেন, তাঁর 888sport live footballজীবনের প্রারম্ভে, তখন 888sport promo codeর যে-মূল্য নির্ধারণ করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে সঙ্গতি নেই তাঁর কালযাপনের। এই লেখাগুলি যমুনা পত্রিকায় যখন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়, তখন সেখানে ছিল ছদ্মনাম – অনিলা দেবী। এটি লেখকের দিদির নাম। কেন? কোন সংকোচে এমন ছদ্মনামের ব্যবহার? নাকি 888sport promo codeর পক্ষে সওয়াল করার জন্য তিনি আড়াল খুঁজেছিলেন একজন 888sport promo codeর? অথবা নিজের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনই এর অন্তর্নিহিত কারণ?
শরৎচন্দ্রের মনে হয়েছিল 888sport promo codeসুলভ বলে তার যথার্থ মূল্য নির্ধারণ আদৌ সম্ভব নয়। যেদিন 888sport promo code হয়ে যাবে দুর্লভ, সেদিনই সমাজ অনুধাবন করতে পারবে 888sport promo codeর যথার্থ মূল্য। সমাজ 888sport promo codeর মূল্য নির্ধারণ করে তার সেবাপরায়ণায়, সেণহশীলতায়, সতীত্বে এবং সহনশীলতায়। 888sport promo code কতটা সুবিধা দিতে পারে – সেই মানদ–ই যাচাই হয় 888sport promo codeর মূল্য। অথবা ‘তিনি কতটা রূপসী – অর্থাৎ পুরম্নষের লালসা ও প্রবৃত্তিকে কতটা পরিমাণে তিনি নিবদ্ধ ও তৃপ্ত রাখিতে পারিবেন।’ 888sport promo codeর মূল্য উপলব্ধির এই একমাত্র পথ। লেখকের স্পষ্ট দৃঢ় সিদ্ধান্ত, ‘যে ধর্ম বনিয়াদ গড়িয়াছে আদিম জননী ইভের পাপের উপর, যে ধর্ম সংসারের সমসত্ম অধঃপতনের মূলে 888sport promo codeকে বসাইয়া দিয়াছে, সে ধর্ম সত্য বলিয়া যে-কেহ অন্তরের মধ্যে বিশ্বাস করিয়াছে, তাহার সাধ্য নয় 888sport promo codeজাতিকে 888sport apk download apk latest versionর চোখে দ্যাখে।’ লেখক মনে করেন না যে পুত্রপ্রসবার্থেই 888sport promo codeর সার্থকতা। 888sport promo codeর অবমাননার প্রকৃতি নির্ধারণ করতে গিয়ে শরৎচন্দ্র পিতা-ভ্রাতা-স্বামী – সব পুরম্নষেরই হীনতার দিকটি লক্ষ করেছেন। পুরম্নষ যে তার নিয়মে সমাজকে গ্রাস করে, আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে চালায়, তার বিরম্নদ্ধেও লেখকের জেহাদ। এই পিতা-ভ্রাতা-স্বামী সকলেরই তখন একটাই পরিচয়; কী? না, তারা পুরম্নষ। আর 888sport promo codeও তাদের আত্মীয় নয়, তারা শুধুই 888sport promo code। যাবতীয় ধর্ম, যাবতীয় শাস্ত্র এ-বিষয়ে একই সুরে গলা মেলায়। লেখক প্রসঙ্গত বিধবাবিবাহ নিয়ে ব্যক্ত করেছেন তাঁর বিরূপতা। বিধবামাত্রই কি কুলত্যাগিনী?
অথবা বিধবারা কি কুলত্যাগিনী হওয়ার জন্য আকুল? তাঁর কথা, ‘বিধবাদের জোর করিয়া ব্রহ্মচর্যের গ-ীতে আবদ্ধ রাখা আমার অসহ্য মনে হয়। জোর করিয়া বিধবাদের বিবাহ দেওয়া যেমন অন্যায়, জোর করিয়া তাহাদের বিবাহ না দেওয়াও তেমনি অন্যায়।’ এর পরের বাক্যটিতে আছে গায়ত্রীকে কেউ ধর্মমতে বিয়ে করতে চাইলে তাতে কোনো দোষ থাকতে পারে না। অথচ ঠিক আগের বাক্যটিতে নিজের বিয়ের ব্যাপারে একজন বিধবার সম্মতি-অসম্মতিকে গুরম্নত্ব দিতে চেয়েছেন শরৎচন্দ্র। তাহলে গায়ত্রীকে বিয়ের ব্যাপারে কি তার মতই একমাত্র বিবেচ্য নয়? তখন কি আসলে শরৎচন্দ্র আচ্ছন্ন হয়েছেন নিজের ভালোবাসার মোহে?
এই মোহেই বিভ্রান্ত তিনি অনেক সময়। পতিতার আখ্যান যখন বিবৃত হয় শরৎ888sport live footballে, তখন তার গস্নানি-ক্লেদ-তিক্ত-অসম্মানিত জীবনের কোনো রূঢ়তার বর্ণনায় লেখক আগ্রহী নন। ওই পঙ্কিলতার কোনো ছবি আঁকতে আগ্রহী হন না শরৎচন্দ্র, সবার ওপরে সত্য হয়ে থাকে তার প্রেম – প্রেমের একনিষ্ঠতা – প্রেমের রোম্যান্টিকতা। পতিতাটি তখন একমনে ভালোবাসে তার দয়িতকে – সেই ভালোবাসায় সে মহান হয়ে যায়। পিয়ারী বাইজি বাল্যপ্রণয়ের টানে আজীবন শ্রীকান্তনিষ্ঠ হয়ে থাকে, সাবিত্রী-সতীশের মধ্যে চলে প্রেমের আকর্ষণ-বিকর্ষণের খেলা, চন্দ্রমুখী অনুরক্ত হয়ে রইল দেবদাসের প্রতি, বিজলী সত্যেন্দ্রের প্রেমে বাইজি পেশা ছেড়ে দিয়ে বলল, ‘যে রোগে আলো জ্বাললে আঁধার মরে, সূর্যি উঠলে রাত্রি মরে – আজ সেই রোগেই তোমাদের বাইজী চিরদিনের জন্য মরে গেল।’ কিন্তু বাসত্মব এত সাদাসিধে নয়। এই পতিতারা ব্যক্তিবিশেষের আস্থাভাজন হয়, কিন্তু সামাজিক সম্মান অর্জন করে না – সমাজের সঙ্গে তাদের কোনো টানাপড়েন তৈরি হয় না আদৌ। তাদের স্বাতন্ত্র্য-ব্যক্তিত্ব-অসিত্মত্বের লড়াই বিলীন হয়ে যায় কোনো এক পুরম্নষের মধ্যে। প্রেমের সামাজিক স্বীকৃতি হয়তো সম্ভব নয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের একটাই কথা, ‘বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না – ইহা দূরেও ঠেলিয়া ফেলে। ছোটখাটো প্রেমের সাধ্যও ছিল না – এই সুখৈশ্বর্য-পরিপূর্ণ স্নেহ-স্বর্গ হইতে মঙ্গলের জন্য কল্যাণের জন্য আমাকে আজ একপদও নড়াইতে পারিত।’
বৈধব্য জীবনের রূঢ়তার বর্ণনার ক্ষেত্রেও এই একই অনাগ্রহ লেখকের। সমাজের যে-দায় বহন করতে হয় বিধবাকে, শরৎচন্দ্র সে-বিষয়ে মনোযোগী নন! তাঁর সমসত্ম অভিনিবেশ বিধবার প্রেমে। প্রেমই তাঁর উত্তরণের একমাত্র পথ। অবশ্য পলস্নীসমাজে নিছক প্রেম আচ্ছন্ন করেনি রমাকে – প্রেমের বাইরেও রয়েছে তাঁর স্বতন্ত্র অভিব্যক্তি। পলিস্নসমাজ দেওয়াল হয়ে ব্যবধান তৈরি করেছে রমা-রমেশের। পরিণতিতে রমাকে কাশীবাসী হতে হয়েছে। কিন্তু বড়দিদির মাধবী, চরিত্রহীনের কিরণময়ী বা পথনির্দেশের হেমনলিনীর জীবনে শুধু সত্য হয়ে থাকে প্রেম, কিরণময়ীর মতো বুদ্ধিমতী, আত্মনির্ভরশীল 888sport promo codeর জীবনে যে ভয়ানক বিপর্যয় দেখানো হয়েছে, তা তো আসলে সামাজিক শাসিত্ম। কিরণময়ীর উন্মত্ততা অনেকটা যেন চোখের বালির বিনোদিনীর আদলে ভাবা হয়েছে। বৈধব্যের অতৃপ্তি কিরণময়ী বা বিনোদিনীকে উদ্দেশ্যহীন করে তুলেছে।
অথচ সতী 888sport promo codeর ইমেজ তৈরিতে লেখক কোনো কার্পণ্য করেননি। শত লাঞ্ছনা ও বঞ্চনা সত্ত্বেও স্বামীর প্রতি একনিষ্ঠ প্রেম – এই হলো সতীত্বের ধারণা। এই সতীত্বের সবচেয়ে বড় উদাহরণ অন্নদাদিদি। অন্নদাদিদির বর্ণনায় শরৎচন্দ্র লেখেন, ‘যেন ভস্মাচ্ছাদিত বহ্নি! যেন যুগযুগান্তরব্যাপী কঠোর তপস্যা সাঙ্গ করিয়া তিনি এইমাত্র আসন হইতে উঠিয়া আসিলেন।’ স্বামীর প্রতি অন্নদা এতটাই একনিষ্ঠ যে, সেই স্বামীর জন্যই সে কুলত্যাগিনী হয় এবং সেই কলঙ্ক বয়ে নিয়ে চলে। অন্নদাদিদিকে দেখেছিল বলেই শ্রীকান্ত 888sport promo codeর কলঙ্কে সহজে বিশ্বাস করত না। গৃহদাহের অচলার ঘর ভেঙেছিল ঠিকই, অচলা সম্পর্কেও অনেক ভ্রামিত্ম তৈরি হওয়ার অবকাশ ছিল, কিন্তু অচলা শেষ পর্যন্ত স্বামী মহিমের প্রতিই ছিল অবিচলিত। অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে অচলা ছিল সতী। বিরাজ বৌ 888sport alternative linkেও বিরাজকেও ভয়ানক যাতনা সইতে হয়েছে স্বামীর কাছ থেকে। পাকেচক্রে বিরাজ গৃহত্যাগ করেছিল ঠিকই, কিন্তু তার সতীত্বের অবমাননা ঘটেনি। অথচ তাকে জীবন পণ রেখে সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। প–তমশাই 888sport alternative linkের শুরম্নতেই কুসুম স্বামীর অবিচারের প্রতিবাদ করেছিল। স্বামী বৃন্দাবন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যুর পরে পরিত্যক্ত প্রথম স্ত্রী কুসুমকে আবার গ্রহণ করতে চাইলে কুসুম বলেছিল, ‘আমি বিধবা। কেন? একি কুকুর-বেড়াল পেয়েছ যে, যা-ইচ্ছে হবে, তাই করবে?… আমার স্বামী মরেছে, আমি বিধবা।’ কারণ স্বামীর পরিত্যাগের পরে কুসুমের মা তার সঙ্গে এক বৈরাগীর হয়তো বা কণ্ঠীবদল করিয়েছিল এবং তারপর বৈরাগীটি মারা যায়। ফলে কুসুম নিজেকে বিধবা হিসেবে প্রতিপন্ন করে গভীর আত্মসম্মানে। 888sport alternative linkের শেষে সেই কুসুম বৃন্দাবনের কাছে আত্মনিবেদন করে। এভাবেই সতীত্বের একটা ধারণা করে দেন শরৎচন্দ্র।
১৯২০ থেকে ১৯৩০-এর মধ্যে যা লিখেছিলেন শরৎচন্দ্র, সেগুলির মধ্যে সক্রিয় হয়ে আছে তাঁর রাজনীতিবোধ। পথের দাবি 888sport alternative linkে তাঁর প্রকাশ সর্বাধিক, তবে দেনা পাওনা 888sport alternative linkেও তার প্রমাণ মেলে। কংগ্রেস আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকার সুবাদে জন-আন্দোলন সম্পর্কে তিনি সবটাই সচেতন ছিলেন। চাষির ওপর জমিদারের অত্যাচারের সংবেদনশীল বর্ণনার মধ্য দিয়ে তাঁর সমাজতান্ত্রিক ভাবনার আভাস মেলে। বস্ত্তত শচীনন্দন চট্টোপাধ্যায়ের শরৎচন্দ্রের রাজনৈতিক জীবন বইতে আছে, জমিদারি-লোপ ও পুঁজিবাদের বিরম্নদ্ধে নতুন নতুন যেসব ভাবনার স্ফুরণ দেখা গেল, তা নিয়ে যেসব বৈঠক হলো, তার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল শরৎচন্দ্রের। বাংলায় একটি সোশ্যালিস্ট পার্টি গঠনের পরিকল্পনা ঠিক করে দেন তিনিই। ফলত দেনাপাওনা 888sport alternative linkে জমিদার-চাষির সংঘাতে চাষিদের ঐক্যবদ্ধ শক্তির কথা বলেছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ-সমস্যার চেয়ে অনেক মুখ্য হয়ে যায় অলকা তথা ষোড়শী-জীবানন্দের সম্পর্ক। ষোড়শীকে মর্মামিত্মকভাবে পরীক্ষা দিতে হয় সতীত্বের। অত্যাচার-জর্জর অলকা অক্লান্ত সেবায় সুস্থ করে তোলে স্বামী জীবানন্দকে। এতে চ-ীর ভৈরবী অলকার কুলটার কলঙ্ক জুটল, তবু সে নিরম্নপায়। স্বামীর প্রতি একাগ্রতা যে-কোনো 888sport promo codeরই কর্তব্য – এমনই ভাবনায় দেনাপাওনা তৈরি হয়।
ঠিক এতটা না হলেও পথের দাবি 888sport alternative linkেও এই মানবিক সম্পর্কের টানাপড়েন একটা বড় জায়গা নিয়ে রয়েছে। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় পথের দাবি। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার আগে এটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল বঙ্গবাণী পত্রিকায়। গ্রন্থাকারে প্রকাশের ইচ্ছা প্রকাশ করেন এম. সি. সরকার অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী সুধীরচন্দ্র সরকার, কিন্তু কিছু-কিছু অংশ বাদ দিতে চেয়েছিলেন তিনি। লেখক রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত রমাপ্রসাদ এবং উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আনুকূল্যে বইটি ছাপা হয় কটন প্রেসে। প্রকাশ পাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই বাজেয়াপ্ত হয় বইটি। এ নিয়ে যথেষ্ট তোলপাড় শুরম্ন হয়। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, রবীন্দ্রনাথ বইটি সম্পর্কে তাঁর আপত্তি জানিয়ে চিঠি লেখেন কয়েক মাস পরেই। তাঁর মতে, ‘বইখানি উত্তেজক। অর্থাৎ ইংরেজের শাসনের বিরম্নদ্ধে পাঠকের মনকে অপ্রসন্ন করে তোলে।…’ আমি নানা দেশ ঘুরে এলাম – আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে এই দেখলাম – একমাত্র ইংরেজ গভর্নমেন্ট ছাড়া স্বদেশী বা বিদেশী প্রজার বাক্যে বা ব্যবহারে বিরম্নদ্ধতা আর কোনো গভর্নমেন্টই এতটা ধৈর্যের সঙ্গে সহ্য করে না।… শক্তিমানের দিক দিয়ে দেখলে তোমাকে কিছু না বলে তোমার বইকে চাপা দেওয়া ক্ষমা।… বলা বাহুল্য, এই চিঠি খুবই আহত করেছিল শরৎচন্দ্রকে। এর উত্তরে যে-চিঠিটি লিখেছিলেন শরৎচন্দ্র, তা অবশ্য পাঠানো হয়নি, তবে চিঠিতে তিনি তাঁর ক্ষোভ এবং অভিমান প্রকাশ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, তিনি সত্য কথা বলায় ইংরেজরাজের এই অপ্রসন্নতা – ‘আমি যখন লিখি এবং ছাপাই তার সমসত্ম ফলাফল জেনেই করেছিলাম। সামান্য-সামান্য অজুহাতে ভারতের সর্বত্রই যখন বিনা বিচারে, অবিচারে অথবা বিচারের ভান করে কয়েদ, নির্বাসন প্রভৃতি লেগেই আছে, তখন আমি যে অব্যাহতি পাবো, অর্থাৎ রাজপুরম্নষেরা আমাকেই ক্ষমা করে চলবেন, এ-দুরাশা আমার ছিল না।… যা উচিত বলে মনে করি তা বলতে পেরেছি কিনা এইটেই আসল কথা। নইলে ইংরেজ সরকারের ক্ষমাশীলতার প্রতি আমার কোন নির্ভরতা ছিল না।’ এমন একটি সম্ভাবনাময় 888sport alternative linkেও প্রেমের অনেক টানাপড়েন অকারণ অনেক জায়গা জুড়ে রয়েছে। অপূর্ব, ভারতী, শশীকবি, নবতারা – এদের পারস্পরিক সম্পর্ক অনেক জায়গায় একটু বেশিই গুরম্নত্ব পেয়েছে। এমনকি সব্যসাচী এবং সুমিত্রার মধ্যে যে সুপ্ত নীরব বোঝাপড়া – সেটাও 888sport alternative linkটিকে মনোরম করেছে। এর ফলে রাজনীতি প্রসঙ্গটি সবসময় যথাযথ মূল্য পায়নি।
একবার একটি 888sport live football অধিবেশনে শরৎচন্দ্র বলেছিলেন, 888sport live footballসেবাই তাঁর পেশা। বিশেষত 888sport alternative linkেই তাঁর আগ্রহ। প্রসঙ্গত এটাও বলেছিলেন, ‘গোটা দুই শব্দ আজকাল প্রায়ই শোনা যায়, Idialstic and Realistie. আমি নাকি এই শেষ সম্প্রদায়ের লেখক। এই দুর্নামই আমার সবচেয়ে বেশি। অথচ কি করে যে এই দুটোকে ভাগ করে লেখা যায়, আমার অজ্ঞাত।’ বাসত্মবকে তিনি উপেক্ষা করতে চান না; কিন্তু বাসত্মব-অবাসত্মবের মেলামেশায় ‘কত ব্যথা, কত সহানুভূতি, কতখানি বুকের রক্ত দিয়ে এরা ধীরে ধীরে বড় হয়ে ফোটে’ – সে-কথা জানেন কেবল লেখকই। সুনীতি-দুর্নীতিকে গুরম্নত্ব দেন না লেখক, কারণ 888sport live football কোনো নীতিগ্রন্থ নয়। এ-কারণেই বঙ্কিমচন্দ্রের কৃষ্ণকামেত্মর উইলে রোহিণীর মর্মামিত্মক পরিণতি পছন্দ হয়নি শরৎচন্দ্রের। তাঁর মনে হয়েছিল পিসত্মলের গুলিতে রোহিণীর এই মারা-যাওয়াটা 888sport live footballের পক্ষে অনুপযুক্ত, হিন্দু সমাজ অবশ্য পাপীর শাসিত্মতে তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলে বাঁচল। কিন্তু ‘যেটা সবচেয়ে পুরাতন, এদের চেয়ে সনাতন – নর-888sport promo codeর হৃদয়ের গভীরতম, গূঢ়তম প্রেম?’ তার পরিণতি কী হলো? বঙ্কিমচন্দ্র নীতির কোপে 888sport live footballকে জলাঞ্জলি দিলেন। এর ফলে মৃত্যু হলো সত্য, সুন্দর আর্টের। তাঁর সিদ্ধান্ত, ‘888sport alternative linkের চরিত্র শুধু 888sport alternative linkের আইনেই মরতে পারে, নীতির চোখরাঙানিতে তার মরা চলে না।’ শরৎচন্দ্রের পলস্নীসমাজের রমা এজন্য গাল খেয়েছিল। এ-গাল তো আসলে 888sport live footballের নয়, সমাজের। শরৎচন্দ্র সমাজ-সংস্কারক হতে চাননি, 888sport live footballে সে-দায়ও নেই। তিনি এমন কথাও বলেছেন, ‘পুরম্নষের তত মুশকিল নেই, তার ফাঁকি দেবার রাস্তা খোলা আছে, কিন্তু কোথাও কোন সূত্রেই যার নিষ্কৃতির পথ নেই সে শুধু 888sport promo code। তাই সতীত্বের মহিমা-প্রচারই হয়ে উঠেছে বিশ্রদ্ধ 888sport live football।’ শরৎচন্দ্র চেয়েছেন শুধু একনিষ্ঠ প্রেমের মর্যাদা দিতে। বলেছেন, ‘সতীত্বের ধারণা চিরদিন এক নয়। পূর্বেও ছিল না, পরেও হয়ত একদিন থাকবে না। একনিষ্ঠ প্রেম ও সতীত্ব যে ঠিক একই বস্ত্ত নয়, এ-কথা 888sport live footballের মধ্যেও যদি স্থান না পায়, ত এ-সত্য বেঁচে থাকবে কোথায়?’ আবার তাঁর মতে 888sport live footballের অনেক কাজের মধ্যে একটি কাজ জাতিগঠন এবং 888sport live footballের ideaটি ভাষা ও জাতির কল্যাণকর কি-না সেটাও বিবেচ্য বিষয়।
শরৎচন্দ্রের চরিত্রভাবনায় তাই নিছক realistic দৃষ্টিক্ষেপ অনুপস্থিত। realistic শব্দটি তাঁর কাছে যে দুর্নাম! বরং idealism-ই তার বেশি অভিপ্রেত। দুয়ের মেশামেশিতে তাঁর ঝোঁক ছিল নিশ্চয়ই, কিন্তু ওই ভাববাদিতাকে তিনি প্রশ্রয় দিয়েছেন তাঁর চরিত্রায়নে। ব্যথা-ভালোবাসা-বুকের রক্ত দিয়ে নির্মাণ করেছেন যাদের, অনেক সময় 888sport alternative linkে তারা তাদের ভালোবাসার জোরে জিতে গেছে – যেমনটা চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘সাধারণ মেয়ে’ 888sport app download apkয়। ফলে 888sport alternative link এগিয়ে যায় ঝড়ো হাওয়ার গতিতে – অনেক ঘটনা তার ক্রম হারায়, যুক্তি লঙ্ঘিত হয়, কিন্তু ইচ্ছাপূরণ ঘটে যায়। শরৎবাবুর মেয়েরা জীবনের রূঢ়তায় পর্যুদসত্ম হয় না, সর্বদাই প্রেমে মহীয়সী হয়ে থাকে। তাদের স্বাতন্ত্র্য শুধু উন্মীলিত হয় তাদের প্রেমে। শরৎচন্দ্রের বিশ্বাস ছিল যে প্রেমে, যে-প্রেমে কলঙ্কিত হতে তাঁর এতটুকুও আপত্তি ছিল না, সেই প্রেমে রঞ্জিত তাঁর মেয়েরা – প্রেমের একাগ্রতায় বা একনিষ্ঠতায় তারা আসলে প্রত্যেকেই সতী। তাদের ব্যক্তিত্ব বা অসিত্মত্বের সংকট মিটে যায় এই একনিষ্ঠতায় বা বলা যায় ‘সতীত্বে’। ভালোবাসার কোনো অবমাননা করে না তারা। রোহিণীর মতো গুলি খেয়ে হয়ত মরে না শরৎবাবুর নায়িকারা, কিন্তু তাদের সমাজ-অননুমোদিত প্রেম কিন্তু গৃহীত হয় না সমাজে। রোহিণী গুলি খায়, কিরণময়ী আধপাগলা হয়ে মর্মামিত্মক কোনো মুহূর্তে অঘোরে ঘুমোতে থাকে। বঙ্কিমচন্দ্র সম্পর্কে শরৎচন্দ্রের যে-অভিযোগ, সেই নীতিকে কিন্তু তিনি নিজেও অগ্রাহ্য করতে পারলেন না! রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘কী করে জিতিয়ে দেবে?/ উচ্চ তোমার মন, তোমার লেখনী মহীয়সী।/ তুমি হয়ত ওকে নিয়ে যাবে ত্যাগের পথে/ দুঃখের চরমে, শকুন্তলার মত।’ বস্ত্তত শরৎচন্দ্রের মেয়েরা এভাবেই জিতেছে – ‘আত্ম-অচেতন’ পুরম্নষ মানুষকে ভালোবাসার মধ্যে তারা খুঁজে পেয়েছে জীবনের সার্থকতা। একাকার হয়ে গেছে সতীত্ব এবং একনিষ্ঠ প্রেম। তাই শরৎবাবুর মেয়েরা শুধুই সেবাপরায়ণ, স্নেহশীল, সহনশীল।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.