888sport live chatকলা-বিষয়ে বাংলা পরিভাষার সমস্যা

মৃণাল ঘোষ

 

888sport live chatকোষ

শরীফ আতিক-উজ-জামান

ধ্রম্নবপদ

888sport app, ২০১৫

১৮৯ টাকা

 

শরীফ আতিক-উজ-জামান-রচিত 888sport appর ‘ধ্রম্নবপদ’ থেকে প্রকাশিত 888sport live chatকোষ বইটি দৃশ্যকলায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ইংরেজি শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ-সংকলন। বর্ণানুক্রমে সাজিয়ে প্রায় ২৫০টি প্রতিশব্দ নির্দেশ করেছেন লেখক। কিছু বাংলা প্রতিশব্দ প্রচলিত রয়েছে। কিছু প্রতিশব্দ লেখক তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। এটি একটি জরুরি কাজ। প্রাতিষ্ঠানিক স্তরে এতদিনে একটি 888sport live chat পরিভাষাকোষ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু হয়নি। ফলে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন পরিভাষা ব্যবহার করেন। এতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। পাঠকের বোঝার সমস্যা হয়। যেমন ‘image’ কথাটিকে প্রতিমা, প্রতিমাকল্প, রূপকল্প, বিম্ব ইত্যাদি নানা অভিধায় অভিহিত করা হয়। ‘expressionism’ শব্দটিকে কেউ লেখেন প্রকাশবাদ, কেউবা ‘অভিব্যক্তিবাদ’। বানানের ক্ষেত্রে যেমন, তেমনি পরিভাষার ক্ষেত্রেও বিকল্প-বর্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অর্থাৎ একটি শব্দকে একই অর্থে সকলে ব্যবহার করবেন, এটাই বিধি হওয়া উচিত। ইংরেজিতে বা ইউরোপীয় দেশগুলিতে সেটাই হয়ে থাকে। কিন্তু স্বাধীনতাপ্রাপ্তির এতদিন পরেও আমাদের দেশে সেটা করা সম্ভব হয়নি মূলত প্রাতিষ্ঠানিক স্তরে সচেতনতার অভাবে।

সেদিক থেকে শরীফ যেটা করেছেন সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি শুধু প্রতিশব্দ সংকলন করেই কাজ শেষ করেননি, প্রতিটি শব্দের অর্থও ব্যাখ্যা করেছেন। ফলে যাঁরা জানতে চান, তাঁরা বইটি থেকে যথেষ্ট উপকৃত হবেন। লেখকের উদ্যোগ সম্পর্কে বিসত্মৃত আলোচনার আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিভাষা তৈরি নিয়ে যে-কাজ হয়েছে স্বাধীনতা-পূর্ব সময় থেকে সে-সম্পর্কে একটু আলোকপাতের চেষ্টা হয়তো অপ্রাসঙ্গিক হবে না।

888sport live chatকলা নিয়ে বাংলায় লেখালেখি হচ্ছে অনেক দিন থেকে। সে-ঐতিহ্য যথেষ্ট উজ্জ্বল। ১৮৭৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল শ্যামাচরণ শ্রীমানীর সূক্ষ্ম 888sport live chatের উৎপত্তি ও আর্যজাতির 888sport live chatচাতুরী বইটি। বাংলা ভাষায় 888sport live chatকলা নিয়ে লেখার সেটাই ছিল প্রথম উদ্যোগ। তারপর থেকে অনেক বিদগ্ধ মানুষ 888sport live chatকলা নিয়ে বাংলা ভাষায় লিখেছেন। বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুকুমার রায়, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু প্রমুখ। সাম্প্রতিককালে আরো অনেকেই লিখছেন দুই বাংলা মিলিয়ে। তবু আজো বাংলা পরিভাষা কোনো নির্দিষ্টতা পায়নি।

আবার দীর্ঘ ব্যবহারের পরম্পরায় কোনো-কোনো শব্দ অর্থের দ্যোতনায় সর্বজনগ্রাহ্য হয়ে গেছে – এরকম দৃষ্টান্তও আছে। যেমন ‘রূপ’ শব্দটি। এর আভিধানিক অর্থ মূর্তি, শরীর, আকৃতি, চেহারা, সৌন্দর্য, শ্রী, শোভা ইত্যাদি। 888sport live chat-আলোচনায় ‘রূপ’ শব্দটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ‘form’ শব্দের সমান্তরাল অনুষঙ্গ প্রকাশ করে। Form শব্দটি আভিধানিকভাবে বহু অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন গঠন, গড়ন, অবয়ব, অঙ্গসৌন্দর্য, আকার, বাহ্য বা দৃশ্যরূপ, মূর্তি, আঙ্গিক, 888sport live chat-আঙ্গিক, অঙ্গ, প্রকরণ ইত্যাদি-ইত্যাদি। তবু ‘রূপ’ আর ‘ফর্ম’ যে 888sport live chat-আলোচনার ক্ষেত্রে এক জায়গায় মিলতে পেরেছে তার পেছনে অনেক
মনীষীর চিন্তা রয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ১৯২৮ সালে (২৩ আষাঢ়) সুধীন্দ্রনাথ দত্তকে লেখা এক চিঠিতে ‘ফর্ম’ ও ‘রূপ’ এই শব্দদুটির সম্পর্ককে সুন্দরভাবে বুঝিয়েছেন। বলেছেন,

রূপ বললে ইংরেজিতে যাকে form বলে শুধু তাই নয় – অর্থাৎ যার আয়তন আছে ওজন আছে outline আছে তা নয়। রূপ বলতে এমন form যাতে বিশেষ রসের যোগে আমার অহেতুক ঔৎসুক্য জাগায়।… এই রূপ সৃষ্টিই আর্ট – যে রূপের মধ্যে আমি একান্তভাবে অহেতুক ঔৎসুক্যের সঙ্গে reality-কে দেখি।

এখানে লক্ষণীয় কয়েকটি ইংরেজি শব্দের ব্যবহার। ইংরেজি শব্দের ওপর নির্ভরতা 888sport live chatকলা নিয়ে লেখালেখির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে আছে আজো।

‘রূপ’-এর গভীর ব্যঞ্জনাকে বুঝিয়েছেন অবনীন্দ্রনাথ বাগেশ্বরীতে। ‘রূপের মান ও পরিমাণ’ 888sport liveে বলেছেন ‘রসের আশ্রয় হলো রূপ’। আবার ‘রূপ’ নামের 888sport liveে দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝিয়েছেন 888sport live chatকলায় ‘রূপ’ অভিধার গভীরতর ব্যঞ্জনা। পাষাণেরও একটা রূপ আছে কিন্তু সে-রূপ 888sport live chatঋদ্ধ নয়।

কিন্তু রূপদক্ষের কাছে পাষাণী অহল্যা নিয়তিকৃত নিয়মের থেকে স্বতন্ত্র নিয়মে যখন রূপ পেলে, তখনো সে পাষাণ, কিন্তু তার সুখ দুঃখ মান অভিমান জীবন মৃত্যু সবই আছে।

বাইরের জগতের রূপ আর 888sport live chatের জগতের রূপ – এই দুইয়ের মধ্যে এই হলো ব্যবধান।

‘রূপ’ কথাটি এভাবে হয়তো অনেকটা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। কিন্তু একেবারে কি বিকল্পবর্জিত হতে পেরেছে? ‘ফর্ম’ কথাটিকে অনেকে এখনো সরাসরি
ব্যবহার করেন। আবার ‘আঙ্গিক’ কথাটিও সমান্তরালভাবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের আলোচ্য গ্রন্থে শরীফ আতিক-উজ-জামান ‘form’-এর বাংলা পরিভাষা দিয়েছেন ‘রূপরীতি’। আর তার ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে : ‘ত্রি-মাত্রিক 888sport live chatকর্মের বিপুলতা ও আকার, তুলির আঁচড় না পড়া ক্ষেত্রসহ, কারণ সামগ্রিকভাবে তা 888sport live chatকর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’ কাজেই দেখা যাচ্ছে ‘form’ কথাটির পরিভাষা এখনো বিকল্পবর্জিত হয়নি। আর দৃষ্টান্ত বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। পরিভাষা-সংক্রান্ত সমস্যার খানিকটা আভাস হয়তো পাওয়া গেল।

888sport live chat-সংক্রান্ত পরিভাষার ক্ষেত্রে বিকল্পবর্জন হয়তো 888sport apkের পরিভাষার মতো সহজসাধ্য নয়। 888sport apk যুক্তির ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। যে-কোনো শব্দের অর্থের নির্দিষ্টতা তার ক্ষেত্রে অপরিহার্য। কিন্তু 888sport live chatকলার অনেক শব্দই আছে যা ভাবব্যঞ্জক। একাধিক অর্থের ছায়া-প্রচ্ছায়া থাকে তার মধ্যে। ব্যক্তির নিজস্ব চিন্তার প্রতিফলনও থেকে যায়। তাই একই শব্দের ব্যবহারে বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে কিছু অর্থান্তর ঘটার সম্ভাবনাও এড়ানো যায় না। কিন্তু প্রকরণ-সম্পর্কিত বা 888sport live chat-ইতিহাস ও আন্দোলন-সম্পর্কিত শব্দগুলির ক্ষেত্রে বিকল্পবর্জন হয়তো ততটা সমস্যার নয়। জলরং, তেলরং ইত্যাদি শব্দ বিকল্পহীনভাবেই ব্যবহৃত হয়। তবু ইংরেজি শব্দও যে কেউ-কেউ একেবারে ব্যবহার করেন না, তা নয়। কিন্তু ‘টেম্পারা’ বা ‘গুয়াশে’র বাংলা পরিভাষার ব্যবহার খুবই সীমিত। টেম্পারাকে ‘অনচ্ছ বর্ণ’ লেখেন কেউ-কেউ, বা ‘গুয়াশ’কে অস্বচ্ছ জলরং। শরীফ আলোচ্য বইতে ‘গুয়াশ’কে ‘গুয়াশ’-ই রাখতে চেয়েছেন। ‘টেম্পারা’ শব্দটির উলেস্নখই নেই তাঁর বইতে।

888sport apkের ক্ষেত্রে দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও চিন্তা-ভাবনা চলেছে বাংলা পরিভাষা নিয়ে। ১৮১৮ সালে উইলিয়ম কেরির নেতৃত্বে শ্রীরামপুর মিশনারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮২৩-এ সেখান থেকেই প্রকাশিত হয় কেরির পুত্র ফেলিকস কেরির লেখা ব্যবচ্ছেদ বিদ্যা। এটিই 888sport apk-পুস্তক ও বাংলায় বৈজ্ঞানিক পরিভাষা রচনার প্রথম প্রয়াস। এরপর থেকে ঔপনিবেশিক ও উত্তর-ঔপনিবেশিক পর্বে বহু প্রকল্প গঠিত হয়েছে বৈজ্ঞানিক পরিভাষা নির্ধারণে। তা থেকে সুষ্ঠু ও সুচিন্তিত পরিভাষা গড়েও উঠেছে। বিভিন্ন প্রকল্পে পরিভাষা গঠনের যে-সমস্ত সূত্র নির্ধারিত হয়েছে, 888sport live chatের পরিভাষা নির্ধারণেও তা সহায়ক হতে পারে। সেরকম দু-একটি প্রকল্পের উলেস্নখ করা যেতে পারে এখানে।

১৩১৫ বঙ্গাব্দে (১৯০৮) বঙ্গীয় 888sport live football সম্মিলনীর দ্বিতীয় বার্ষিক রাজশাহী অধিবেশনে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়কে সভাপতি করে ‘বৈজ্ঞানিক পরিভাষা কমিটি’ গঠিত হয়েছিল। পরিভাষা নির্মাণে প্রফুল্লচন্দ্রের অনেক অবদান আছে। ১৩১৩ বঙ্গাব্দের (১৯০৬) 888sport live football পরিষদ পত্রিকার চতুর্থ 888sport free betয় তাঁর ‘বৈজ্ঞানিক পরিভাষা’ নামে একটি 888sport live বেরোয়। তাতে পরিভাষা রচনার চারটি সূত্র দেন তিনি। সেগুলি হলো – ১. আমাদের দেশে প্রচলিত উপযুক্ত শব্দ গ্রহণ; ২. নূতন শব্দ প্রণয়ন; ৩. 888sport app দেশীয় বৈজ্ঞানিক শব্দ স্থানবিশেষে কিঞ্চিৎ পরিবর্তিতভাবে গ্রহণ; ৪. 888sport app জাতি যে সমস্ত শব্দ বা সাংকেতিক চিহ্ন কোনো এক বিশেষ অর্থে ব্যবহার তৎসমুদয় কোনো স্থলে কেবল অক্ষরান্তরিত করে গ্রহণ ও কোনো বিশেষ স্থানে অক্ষরান্তরিত না করে গ্রহণ। তাঁরই মত ছিল যে,
oxygen ইত্যাদি শব্দ বাংলায় রূপান্তরিত না করেই গ্রহণ করা উচিত।

স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৪৮-এ গঠন করেন ‘পরিভাষা সংসদ’ এবং ১৯৬৪-তে ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যভাষা বিধান কমিশন’। ১৯৬১-তে ভারত সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের উদ্যোগে গঠিত হয় Commission for Scientific and Technical Terminology। পরিভাষা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় এর ওপর। এর সভাপতি ছিলেন ড. ডি.এস কোঠারি। পরিভাষা বিষয়ে কোঠারি কমিশনের প্রধান সূত্রগুলি ছিল এরকম : ১. আন্তর্জাতিক শব্দগুলির চলিত ইংরেজি রূপ যথাসম্ভব অবিকৃত রাখা হবে। ২. বৈজ্ঞানিক কল্পনামূলক শব্দগুলি (conceptual terms) ভাষান্তরিত হবে, গঠিত শব্দগুলি সরল, যথার্থ অর্থবহ ও সহজবোধ্য হওয়া দরকার। ৩. পরিভাষারূপে গঠিত শব্দগুলি সংস্কৃত থেকে ব্যুৎপন্ন হলে অন্য প্রদেশেও চলতে পারে। ৪. অন্য ভাষা থেকে গৃহীত শব্দ যথা ইঞ্জিন, মেসিন, টর্চ, প্রিজম ইত্যাদি অবিকৃত বজায় রাখা যাবে। ৫. সংস্কৃত বিশেষ্য, বিশেষণ পদ ধাতুর মতো ব্যবহার করে উপযুক্ত প্রত্যয় যোগে নতুন শব্দ গঠন করা চলবে। যেমন, শিলন (freezing), বাষ্পন (vaporization) ইত্যাদি। ৬. দেশজ নবসৃষ্ট ও 888sport app শব্দে সরলতার জন্য ব্যাকরণের কিছু নিয়ম শিথিল করা চলবে। এ পর্যন্ত বাংলা পরিভাষা নির্মাণেও এই সূত্রগুলি কাজে লেগেছে। গোলকেন্দু ঘোষের সংসদ 888sport apk পরিভাষা কোষ গ্রন্থটি এই সমস্ত সূত্রের ভিত্তিতেই রচিত হয়েছে। এটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি গ্রন্থ।

বৈজ্ঞানিক পরিভাষা সম্পর্কে এই যে বিসত্মৃত কাজ হয়েছে, সেটা অনুসরণ করলে 888sport live chatের পরিভাষা-সংক্রান্ত ভাবনায় আমরা কিছু সূত্র পেতে পারি। কিন্তু 888sport live chatের পরিভাষা নিয়ে সেরকম নির্ভরযোগ্য কোনো কাজ হয়নি। শরীফ আলোচ্য বইয়ের ভূমিকায় 888sport appsের বাংলা একাডেমি কর্তৃক ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত 888sport live football
সমালোচনা ও নন্দনতত্ত্ব পরিভাষা
নামে গ্রন্থটির উলেস্নখ করেছেন, যার নন্দনতত্ত্ব পরিভাষার অংশটি রচনা করেছিলেন সে-দেশের অগ্রণী 888sport live chat-সমালোচক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এ-বাংলায় সেরকম কোনো প্রচেষ্টা হয়নি। খুবই ভালো হয় যদি দুই বাংলা যৌথভাবে এরকম কোনো পরিভাষা কোষ তৈরির উদ্যোগ নেয়।

তবে ১৮৭৪-এ শ্যামাচরণ শ্রীমানী থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত অনেক লেখক বাংলা ভাষায় 888sport live chatকলা বিষয়ে লিখেছেন। তাঁদের চর্চার মধ্য দিয়ে বাংলা পরিভাষা যথেষ্ট সমৃদ্ধও হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিকল্পবর্জিত সর্বজনগ্রাহ্য কোনো রূপ তার তৈরি হয়নি। আমরা এখন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন লেখকের পরিভাষা প্রবণতাকে একটু দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব।

শ্যামাচরণ শ্রীমানী তাঁর আর্য্যজাতির 888sport live chatচাতুরীতে বিদেশি শব্দের সংস্কৃত-ঘেঁষা পরিভাষা তৈরি করেছেন। পাশাপাশি দুটোই উলেস্নখ করেছেন। যেমন প্রস্তাব বা উত্তীরা-Entablature, স্তম্ভ-Column, উপপীঠ-Pedestal, উপান-Plinth ইত্যাদি। কোথাও-কোথাও তিনি বিদেশি শব্দই 888sport app download apk latest version না করে বাংলা অক্ষরে ব্যবহার করেছেন যেমন, রামরাজ এই বন্ধটিকে করনার (corona) সদৃশ বলিয়াছেন, কিন্তু আমি ইহাদিগের মধ্যে কোন সৌসাদৃশ্য দেখিতে পাই না; বরঞ্চ ডোরীক সাইমেশিয়ম (cymatiam) অথবা একিনস (echinus) ইহাদিগের অন্যতর কোনটিকে বিপরীতভাবে স্থাপন করিলে কপোতবন্ধের সদৃশ হইতে পারে।

প্রথম প্রয়াসে শ্যামাচরণ পরিভাষা নির্মাণে অসামান্য সফলতার পরিচয় দিয়েছিলেন।

সুকুমার রায়ই প্রথম ইউরোপীয় আধুনিক চিত্রকলা বিষয়ে বাংলায় আলোচনা করেন। বিদেশি শব্দই কোথাও-কোথাও তিনি সরাসরি ব্যবহার করেছেন।
Pre-Raphaelite, Impressionist ইত্যাদি শব্দ তিনি ইংরেজি অক্ষরেই প্রয়োগ করেছেন। আবার realism ও idealism লিখে তার বাংলা পরিভাষাও তৈরি করেছেন ‘বাস্তব 888sport live chat’ ও ‘ভাবপ্রধান 888sport live chat’ বলে। Exaggeration-এর বাংলা করেছেন ‘অত্যুক্তি’, ‘Mannerism’-কে বলেছেন ‘ভড়ং’।

পরিভাষা রচনায় অবনীন্দ্রনাথ সংস্কৃত 888sport live football থেকে অকৃপণভাবে গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি ইংরেজি শব্দও ব্যবহার করেছেন। তাকে বাংলায়ও রূপান্তরিত করেছেন। ইংরেজি ও বাংলা রূপ পাশাপাশি লিখে গেছেন। যেমন, বাগেশ্বরীর ‘888sport live chat ও ভাষা’ 888sport liveে লিখছেন, শাস্ত্রীয় 888sport live chat (অ্যাকাডেমিক আর্ট), লোক888sport live chat (ফোক আর্ট), পর888sport live chat (ফরেন আর্ট), মিশ্র888sport live chat (অ্যাডাপটেড আর্ট)। ইংরেজি বাংলা জুড়েও শব্দ তৈরি করেছেন। যেমন ‘888sport live chatে অনধিকার’ 888sport liveে লিখেছেন ‘888sport live chat-ইনসপিরেশন’। বাংলা পরিভাষার পাশাপাশি ব্র্যাকেটে ইংরেজি শব্দটিও উলেস্নখ করে দিয়েছেন। যেমন, ‘888sport live chatের অধিকার’ 888sport liveে লিখেছেন : ‘আর্টিস্টের অন্তর্নিহিত অপরিমিতি (বা ইনফিনিটি), আর্টিস্টের স্বতন্ত্রতা (ইনডিভিজ্যুয়ালিটি) – এই সমস্তর নির্মিতি নিয়ে যেটি এলো সেইটেই আর্ট।’

‘আর্ট’ কথাটিকেও কি অসামান্য প্রজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করেছেন অবনীন্দ্রনাথ! এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের আলোচ্য বইটির ‘Art’ শব্দের পরিভাষার দিকে একটু তাকাই। শরীফ ‘আর্ট’-এর বাংলা করেছেন ‘888sport live chat’। ‘কলা’ শব্দটিও খুবই প্রচলিত। ‘888sport live chatকলা’ বা ‘কলা888sport live chat’ও বলেন অনেকে। এতগুলি বিকল্পের মধ্যে যদি একটি গ্রহণের বিধি থাকত, সেটাই হতো ‘বিকল্পবর্জন’। শরীফ এরপর ‘আর্ট’ কথাটির সংজ্ঞা নির্ণয় করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘একজন 888sport live chatীর সমগ্র সৃষ্টি যা তার সৃষ্টিশীলতা বা কল্পনা বা উভয়েরই প্রকাশ ঘটিয়ে থাকে যেখানে কোনো ভাব, অনুভূতি বা কোনো গল্প থাকে; সব মিলিয়েই তার সৃষ্টিসমগ্র।’ আর্ট-এর প্রকৃত সংজ্ঞা এরকম হতে পারে কিনা, সেটা ভেবে দেখার।

নন্দলাল বসু তাঁর 888sport live chatকথা পুস্তিকাটিতে অজস্র পরিভাষা তৈরি করেছেন, যা আজো গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবহৃত হয়। কয়েকটির উলেস্নখ করা যায় : মনোবেগ (emotion), শরীরের ভারসাম্য (balance), কাঠামো (construction), মনগড়া (conventional), প্রমাণ (proportion), পরম্পরা (tradition), অলংকার মুদ্রা (ornamental motif), করণ (tool), কৌশল (technique) ইত্যাদি। ‘টেকনিক’ কথাটিকে নন্দলাল বলেছেন ‘কৌশল’। অনেকেই টেকনিককে ‘প্রকরণ’ বলেন। সরাসরি এই ইংরেজি শব্দটি ব্যবহারের নজির আছে। এর মধ্যে কি একটি শব্দকে বেছে নেওয়া যায়? এটাই পরিভাষার সমস্যা। আলোচ্য গ্রন্থে শরীফ অবশ্য ‘টেকনিক’ শব্দটির উলেস্নখ করেননি।

বাংলা 888sport live chat-আলোচনার দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়। তিনিও বাংলা পরিভাষার পাশাপাশি ইংরেজি শব্দটির উলেস্নখ না করে পারেননি। যেমন, ‘ভারত888sport live chat’ 888sport liveে তিনি যখন লেখেন : ‘সংক্ষেপে কর্ষ ও ছন্দে ভারত888sport live chatে বৈচিত্র ও প্রবাহ অক্ষুণ্ণ থেকেছে।… এই জন্যই ভারত888sport live chatে দৈহিক গঠনের নমনীয়তা ও দৃঢ়তার অভাব নেই।’ এর পরেই ব্র্যাকেটে লিখেছেন ‘(অর্থাৎ elasticity আছে)’। ‘পট ও পটুয়া’ 888sport liveে নাথদ্বারের পট প্রসঙ্গে তিনি লিখছেন : ‘কাজলটানা চোখ, ভুরু, হাত-পা-অঙ্গুলি-মণিবন্ধ গ্রীবা সবকিছুর মধ্যে যে বিচিত্র একটি হেলানো ভঙ্গী অদ্ভুত একটি ভাষাময় বাঙ্ময়তা কর্ষণগুণ আছে (tilt and tension) বৌদ্ধ চিত্ররীতিতে সেটি অতিদুর্লভ।’ – এখানে ‘বিচিত্র একটি ঈষৎ হেলানো ভঙ্গি’কে নির্দিষ্ট করে বোঝাতে তাঁকে ব্যবহার করতে হলো ‘tilt’ শব্দটি। কর্ষণগুণ বোঝালেন ‘tension’ লিখে।

আর দৃষ্টান্ত বাড়িয়ে লাভ নেই। এর পরেও আজ পর্যন্ত অনেক 888sport live chat ঐতিহাসিক ও 888sport live chatতাত্ত্বিক বাংলা ভাষায় লিখছেন। অনেকেই নিজের মতো করে পরিভাষা তৈরি করে নিচ্ছেন। অনেক শব্দের ক্ষেত্রেই সর্বজনগ্রাহ্য বিকল্পবর্জিত কোনো একক পরিভাষা নেই। এ-বিষয়ে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগ পশ্চিমবঙ্গে দেখা যায়নি।

শরীফ আতিক-উজ-জামানের 888sport live chatকোষ বইটি সেদিক থেকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উদ্যোগ। তাঁর এই একক প্রয়াসের জন্য তাঁকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। বলেছি আগে, ২৫০টি ইংরেজি 888sport live chatকলাবিষয়ক শব্দের বাংলা পরিভাষা সন্ধান ও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। যা শিক্ষার্থী ও 888sport live chatানুরাগীদের নানাভাবে সাহায্য করবে। এ ধরনের কাজ কখনোই বিতর্কহীন হয় না। আরো সম্পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন সবসময়ই থেকে যায়। সেজন্য তাঁর লেখায় যে-সমস্ত বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছি, সেগুলির উলেস্নখ করা হয়তো অসমীচীন হবে না।

888sport live chatকলা-সংক্রান্ত অনেক ইংরেজি শব্দই তাঁর এই 888sport live chatকোষে নেই। সেগুলি থাকলে তাঁর প্রয়াস সম্পূর্ণতর হতো। সেরকম কয়েকটি শব্দের উলেস্নখ করা যেতে পারে : Modern, Image, Linear form, Aquatint, Intaglio, Planography, Wood engraving, Serigraph/silk-screen, Fibre-glass, Emulsion, Tempera. Tradition, Tcehnique, Tension, Exaggeration ইত্যাদি-ইত্যাদি। পূর্ববর্তী আলোচনায় এর কয়েকটি শব্দের বাংলারূপ আমরা পেয়েছি।

modern শব্দটির উলেস্নখ তাঁর বইয়ে নেই। কিন্তু modernism বা ‘আধুনিকতাবাদ’ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন। আধুনিকতাবাদের সংজ্ঞা দিয়েছেন তিনি এভাবে, ‘আধুনিক চিন্তা, বৈশিষ্ট্য ও চর্চার নামই আধুনিকতাবাদ।’ তাই যদি হয়, তাহলে আধুনিকতার সঙ্গে আধুনিকতাবাদের পার্থক্য
কোথায়? এ-সম্পর্কে আমরা একটু আলোচনা করতে পারি।

888sport live chatীর আত্মতার প্রকাশ আধুনিকতার একটি লক্ষণ, যার সূচনা হয়েছিল ইউরোপে ইতালীয় রেনেসাঁসের (১৩০০ থেকে ১৫৫০ খ্রি.) মধ্য দিয়ে। রেনেসাঁসে যার সূচনা সেটাই পরিপূর্ণতা পেয়েছিল অষ্টাদশ শতকে জ্ঞানদীপ্তি বা এনলাইটেনমেন্টের মধ্য দিয়ে। পার্থিবতা, মানবতাবাদ, ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার – এগুলিই ছিল আধুনিকতার ভিত্তি। জ্ঞানের বিকাশ প্রযুক্তিরও উন্নতি ঘটাল। ঊনবিংশ শতকের শেষার্ধ ও বিংশ শতকের গোড়ায় প্রযুক্তির এই উন্নতি, যন্ত্রসভ্যতার বিমানবিক বিসত্মৃতির প্রতিফলনে আধুনিকতার মধ্যেই জেগে উঠেছে নতুন প্রতিবাদীচেতনা। তারই প্রকাশ ঘটেছে আধুনিকতাবাদ বা ‘মডার্নিজমে’। Clement Greenberg  (জন্ম ১৯০৯) ১৯৬০-এ প্রকাশিত তাঁর ‘Modernist Painting’ 888sport liveে বলেছেন, ‘Modernism used art to call attention to art’. এর আগে আধুনিকতায় আর্টকে ব্যবহার করা হতো আর্টকে আবৃত করার জন্য বা লুকিয়ে ফেলার জন্য (‘using art to conceal art’)। এর চেয়েও বড় কথা, 888sport live chatীর যে আত্মগত ও মনস্তাত্ত্বিক সংকট তার তীব্র প্রকাশই আধুনিকতাবাদের একটি লক্ষণ।

এরকম আরো দু-একটি বিষয়ের উলেস্নখ করে এ-লেখা শেষ করব। Perspective বা ‘পরিপ্রেক্ষিত’ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন : ‘বিষয়বস্ত্তর উচ্চতা, দৈর্ঘ্য, গভীরতা, অবস্থান ও দূরত্ব অনুযায়ী চিত্রাঙ্কনবিদ্যা’। এরকম না বলে যদি এভাবে বলা যায় তাহলে কেমন হয় – ‘perspective’ বা পরিপ্রেক্ষিত এমন একটি অঙ্কনশৈলী যা দিয়ে দ্বিমাত্রিক চিত্রপটে ত্রিমাত্রিকতার বিভ্রম ফুটিয়ে তোলা যায়; যেখানে একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিবিন্দু থেকে পরিসরে দূরত্বের বিন্যাস করা হয়। Primitive Art বা আদিম 888sport live chat-সম্পর্কে লেখা হয়েছে, ‘যে 888sport live chatে লোক888sport live chatের চিত্রকল্প আছে, যা মূলত রূপরীতি বা প্রকাশভঙ্গির ওপর গুরুত্ব দেয় এবং শিশুসুলভ দেখায়।’ কিন্তু প্রাগৈতিহাসিক আদিম মানুষ যে-888sport live chat সৃষ্টি করেছিল সেটাই কি Primitive Art নয়? সেই আদিম মানুষের বংশধর যাঁরা এখনো অরণ্যচারী এবং সভ্যতার আলো পায়নি তাঁদের 888sport live chatপ্রকাশেও আদিমতার লক্ষণ থাকে।  Space-কে বলা হয়েছে শূন্যস্থান। ‘পরিসর’ কথাটি কি আরো যথোপযুক্ত হতে পারে না? ‘still life’-এর পরিভাষা লেখা হয়েছে ‘জড়জীবন’। ‘স্থিরবস্ত্তচিত্র’ কথাটি হয়তো আরো সুপ্রযুক্ত। Surrealism কি ১৯২০ সালে শুরু হয়েছিল, না  ১৯২৪-এ। তখন থেকেই এটি আন্দোলনের রূপ পেয়েছিল। Volume-এর বাংলা ‘পুরুত্ব’ না হয়ে ‘আয়তন’ হলে কেমন হয়? এটাই তো বহুল প্রচলিত। watercolor বা জলরং সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘পানিমিশ্রিত রং যা রঞ্জকের অস্বচ্ছ যৌগ’। কিন্তু স্বচ্ছতাই তো জলরঙের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বর্ণ বা pigment-কে পানি বা জলে দ্রবীভূত করা হয় বলেই মাধ্যমটির নাম জলরং।

এরকম আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে দ্বিমত ব্যক্ত করা যায়। সেটা বড় কথা নয়, লেখক ব্যক্তিগত স্তরে যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন সেটাকে আরো পরিপূর্ণতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় কীভাবে, সেটাই ভাবার। r