888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ যে শুধু 888sport apps নয়, ভারত ও এপার বাংলার জীবনে কতটা গভীরভাবে পরিব্যাপ্ত হয়ে গিয়েছিল তা আজকের এই ইতিহাসহীন কবন্ধ সময়ে বলে বোঝানো যাবে না। আমার ক্ষুদ্র জীবনে, আমার বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজনের জীবনে আজো তা রক্তকণিকার মধ্যে মিশে আছে। আমার বালক বয়সের চেতনায় তা একদিন রুদ্রবীণার মতো বেজে উঠেছিল।
আমি তখন বারো। আমার ভাই দশ। সে-ও ছিল সেই অপরূপ আবিষ্কারের শরিক। এত আলো, এত আকাশ আগে দেখিনি।
এপার বাংলাতেও তখন 888sport appsের ‘জাতির পিতা’ শেখ মুজিবুর রহমান রক্তদীপময় একটা নাম, যা মৃত্যুময়তাকে প্রতিহত করে নতুন করে জ্বালিয়ে দিত স্বর্ণদীপমালা। মুজিব মানে প্রতিরোধ, সাহস, মুজিব মানে বড় করে ভাবা। বাঙালির এক নতুন দেশের জন্ম হচ্ছে বিশ্বমানচিত্রে। এ কি কম কথা?
আমার পিতা-মাতা দুজনেরই পূর্বপুরুষ ছিলেন পূর্বতন পূর্ব বাংলার মানুষ। বাবা বরিশালের, আর মা পাবনার। যেমন এপারে আরো কোটি কোটি ঘর হারানো, জমি খোয়ানো, শিকড়চ্যুত মানুষ। কিন্তু এটা হলফ করে বলতে পারি যে, শুধু ভূতপূর্ব পূর্ব বাংলার নয়, পশ্চিমবঙ্গের কেউ বাকি ছিল না মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়াতে। ধর্ম কথাটার তখন অন্য মানে। ধর্ম তখন মানবধর্ম। ধর্মের যা হওয়ার কথা ছিল।আবহমান ধর্ম আসলে যা।
প্রতিদিনের খবর তখন আমাদের কাছে আসছে। পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে শেখ মুজিবকে গ্রেফতারের খবর ততটাই বিচলিত করছে, যতটা আমার বাবাকে করলে হতো। অংশুমান রায়ের গানে তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে (‘দাবায়া রাখবার পারবা’) মনে হতো জ্যোতির্ময়তায় তিনি সুভাষচন্দ্রের সমান। ইন্দিরা গান্ধী তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হচ্ছেন।
বেতার তখন সীমান্তরেখার মাঝে দাঁড়িয়ে। সদ্য প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবরে জানা যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের অপূর্ব বীরত্বের কথা, মিত্রবাহিনীর জয়ের কাহিনি। অনেক পরে যখন জেনেছি সেই ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ আসলে ছিল কলকাতায়, তখন খুব হতাশ হয়েছিলাম।
একাত্তর সালে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আমি বিহারের শিমুলতলায় ঠাকুরদা-ঠাকুমার কাছে বেড়াতে গিয়েছি। সেটা ডিসেম্বর মাস। অর্থাৎ ভারত-পাক যুদ্ধ, বলা উচিত 888sport appsের মুক্তিযুদ্ধ, তখন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে চলেছে। পাহাড়ের কোলে ছোট্ট স্টেশনটিতে চেঞ্জারদের ভিড়। অধিকাংশই গণ্যমান্য ব্যক্তি। যুদ্ধ ছাড়া কারো মুখে কোনো কথা নেই।
আমাদের শিমুলতলার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে থাকতেন এক পিসি, ইন্দুপিসি, রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও রক্তের সম্পর্কের ঢের বেশি। তাঁর আপনভাই থাকতেন যশোরে। যুদ্ধের আগুন এড়াতে তিনি তাঁর ছেলেকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শিমুলতলায়। সেই অতিসুন্দর ছেলেটি একদম আমার একই বয়স, একই ক্লাসের ছাত্র। সেই ছেলেটি ছিল আমাদের কাছে মস্ত এক বিস্ময়।
রূপে-গুণে সে যেন যুদ্ধরত 888sport appsের প্রতীক। চেঞ্জার বাবুরা তাকে প্রশ্ন করলে মনে হতো আমাদের সেই পরম বন্ধুর ব্যক্তিগত জগতে কেউ অনুপ্রবেশ করছে।
তারপর এলো মধ্য-ডিসেম্বরের সেই স্বপ্নিল মুহূর্ত, যখন পাকিস্তানি সেনাপতি নিয়াজি মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করল। বিহারের রুক্ষ ভূমিতে ফুটে উঠল হাজার সোনালি ফুল। আমার, আমার পরিবারের, আমার জানা সমস্ত ভারতীয়ের কাছে। শেখ মুজিব হয়ে উঠলেন বিশ্বের প্রিয়তম রাষ্ট্রের জনক।
বেতারে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ গানটি শুনে তখন যেভাবে মন্দ্রিত হতাম, আজো হই। মনে হয় এ তো আমারই গান। আমার স্নায়ুশিরা বেয়ে যা জুঁই ফুলের মতো ঝরে পড়ে, কেবলই ঝরে পড়ে।
আর শেখ মুজিবুর রহমান, অত্যাশ্চর্য সেই বাঙালি, উপমহাদেশের নতুনতম দীপশিখা। তিনি যেন কালপুরুষ।
তখন প্রায়ই 888sport apps বেতার শুনি। ১৯৭৫ সালের সেই অমানিশাময় অন্ধকার দিনেও শুনেছিলাম সেই দুঃসংবাদ, যা আজো হাড়ের খোঁড়লে হিম জল ঢেলে দেয়।
মুজিব-হত্যা ছিল গান্ধী-হত্যার মতো ভয়ানক।
তারপর 888sport apps বেতারে শুনলাম কাজী নজরুলের 888sport app download apk ‘কাণ্ডারী হুঁশিয়ার! ’ এখনো মনে আছে কাজী সব্যসাচীর কণ্ঠে প্রচারিত সেই 888sport app download apkয় ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন’ লাইনটি সেন্সর করা হলো! বুঝলাম মৃত্যুগহ্বরের তলপেট থেকে উঠে আসছে বিষ!
তারপর বহু যুদ্ধের পর শেখ হাসিনার হাত ধরে গণতন্ত্র এলো। বঙ্গবন্ধু নতুন করে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হলেন। পরে যখন 888sport appsে গিয়েছি, তখন এক উজ্জ্বল প্রগতিশীল মানবসমাজ দেখেছি, যাকে আমার স্বদেশের অনেকের চেয়ে মুক্তমনা মনে হয়েছে। তালিকা দেব না, সেটি বেশ দীর্ঘ। জানি, 888sport appsের এই প্রদীপ্ত রূপ জাতির পিতা মুজিবুর রহমানকে খুশি করত।
কষ্ট পাই যখন দেখি, রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতার কারণে অথবা উদ্ধত ইতিহাসহীনতায় অনেকে এই রক্তের বন্ধনের কথা গেছে ভুলে। রাগ ও অভিমানও এর মধ্যে জুড়ে আছে অনেকখানি জায়গা।সম্প্রতি 888sport appsের এক অতিবিশিষ্ট ঐতিহাসিক এসে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার ভূমিকাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেন। ক্ষোভ হয়নি, শুধু বঙ্গবন্ধুর মুখখানি মনে পড়েছে। আর মনে পড়েছে পঁচাত্তর সালের সেই ভয়াবহ দিনের কথা। যেদিন রক্ত গড়িয়ে পড়েছে, কেবলই গড়িয়ে পড়েছে।
উপমহাদেশের সমস্যার শেষ নেই। তবু এক মুহূর্তের জন্য আমরা যেন না ভুলি, ভুললে যে শেখ মুজিবুর রহমান নামের এই আশ্চর্য মানুষটি দুঃখ পাবেন।
আমরা যে আপনাদের রক্তের দোসর। কালপুরুষ জানে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.