সদ্ভাবশতক ও কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার

যে জন দিবসে মনের হরষে,

জ¦ালায় মোমের বাতি,

আশু গৃহে তার দেখিবে না আর,

নিশীথে প্রদীপ ভাতি।

কিংবা,

কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে

দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে।

888sport app download apkর এই পঙ্ক্তিগুলি ছাত্রজীবনে ভাবসম্প্রসারণ হিসেবে পড়েছি আমরা। কিন্তু যখন আমরা পঙ্ক্তিগুলো সম্প্রসারণ করেছি তখন কী জেনেছি বিখ্যাত এই প্রবাদবাক্যতুল্য চরণগুলির রচয়িতা কে? এই চরণগুলির রচয়িতা স্বনামধন্য বাঙালি কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার। কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার জন্মেছিলেন ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে মে খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলাধীন সেনহাটি গ্রামে। ব্রিটিশ আমল থেকেই সেনহাটি গ্রামটি শিক্ষা, 888sport live football ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। তাঁর পিতা মানিক্যচন্দ্র মজুমদার, মাতা ব্রহ্মময়ী। কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ছিলেন মূলত নীতি888sport app download apk রচয়িতা। ঊনবিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় এই কবি 888sport live footballচর্চার পাশাপাশি শিক্ষকতা ও পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়ে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। উনিশ শতকে এদেশে যে নবজাগরণের সূত্রপাত হয়েছিল তা 888sport live footballের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসে। আধুনিক যুগের 888sport app download apkয় মানুষের বাস্তব জীবন ও সমাজের চিত্র যথাযথভাবে রূপায়িত হয়। তাই সেখানে জীবনের সমস্যা-ঘেরা অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকেরও প্রতিফলন ঘটে। ঠিক সেই সময়ে কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের নীতিবাদিতামূলক 888sport app download apkগুলি তাঁকে কবিখ্যাতি এনে দেয়।

কৃষ্ণচন্দ্রের বয়স যখন ছয় মাস তখন তিনি পিতৃহারা হন। পাঁচ বছর বয়সে গ্রামের পাঠশালায় কবির লেখাপড়ার হাতেখড়ি। জানা যায়, জনৈক গিরিশচন্দ্র সেনের কাছে তাঁর ফার্সি শিক্ষা শুরু হয়। শিশুকালে পিতৃহারা হওয়ার কারণে অনেক কষ্টের মধ্যে তাঁর বেড়ে ওঠা। দারিদ্র্যের কারণে একসময় মা ব্রহ্মময়ী সেনহাটি ছেড়ে শিশুপুত্রকে নিয়ে চলে যান বাবার বাড়িতে। কবির মাতামহ প্রসন্নকুমার ছিলেন বরিশালের কীর্তিপাশার জমিদার। সেখানেই তিনি সংস্কৃত ও ফার্সি ভাষাতে বিশেষ পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তারপর কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার তাঁর এক আত্মীয়, 888sport app জজ কোর্টের নামজাদা উকিল, গৌরচন্দ্র দাশের কাছে আশ্রয়লাভ করেন। গৌরচন্দ্র দাশের সহযোগিতায় 888sport app নর্মাল স্কুলে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে তিনি এন্ট্রাস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর 888sport app থেকে আবারো ফিরে যান জন্মগ্রাম খুলনার সেনহাটিতে। জন্মভূমির প্রতি শিশুকাল থেকেই তাঁর ছিল গভীর ভালোবাসা। যে-কারণে যখন যেখানে গিয়েছেন ফিরে-ফিরে এসেছেন ভৈরব পাড়ের দিঘলিয়ার নিজ গ্রাম সেনহাটিতে।

888sport app থেকে ফিরে আসার পরই তিনি 888sport live footballসাধনা শুরু করেন। তারপর জীবিকার তাগিদে বরিশালের কীর্তিপাশা বাংলা বিদ্যালয়ে প্রধান পণ্ডিতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিছুদিন সে-দায়িত্ব পালন করার পর পুনরায় চলে যান 888sport appয়। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে 888sport appয় ‘বাঙ্গালাযন্ত্র’ নামক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হলে কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের সম্পাদনায় মাসিক মনোরঞ্জিকা ও 888sport app download apkকুসুমাবলী প্রকাশিত হয়। ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে 888sport app থেকে প্রকাশিত প্রথম বাঙলা সাপ্তাহিক 888sport app প্রকাশ কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছিল। পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২৫শে ফাল্গুন, ১২৬৭ বঙ্গাব্দ/ ৭ই মার্চ, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে। 888sport app প্রকাশ প্রতি বৃহস্পতিবার বাবুবাজারের ‘বাঙালাযন্ত্র’ থেকে ২৫০ কপি ছাপা হতো। তিনি স্কুলের চাকরি ছেড়ে মৌলভি আব্দুল করিমের মালিকানায় ২৫ টাকা বেতনে 888sport app প্রকাশে সম্পাদক হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন। ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে 888sport app প্রকাশ ছেড়ে দিয়ে বিজ্ঞাপনী নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় যোগ দেন। সম্পাদক হিসেবে এই পত্রিকাটি তিনি দেড় বছর অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদনা করেন। তারপর আবার ফিরে আসেন 888sport app প্রকাশ-এ। ১৪ বছর তিনি সাংবাদিকতা পেশা ও পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার-সম্পাদিত প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা 888sport app প্রকাশ-এর 888sport free betগুলিকে জীবন ও জনগণের অসামান্য দলিল হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাংলা 888sport live footballের পাঠক ও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত। পত্রিকার চাকরি ছেড়ে তিনি পুনরায় শিক্ষকতা পেশায় ফিরে আসেন এবং ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্ম সমাজের ‘ব্রাহ্ম স্কুলে’ চাকরি গ্রহণ করেন। সেখান থেকে ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে যশোর জিলা স্কুলে হেড পণ্ডিত হিসেবে যোগদান করেন। ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই স্কুলে চাকরি করার পর তিনি স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন আদর্শবান ও ন্যায়পরায়ণ।

শিশুকাল থেকেই তাঁকে নানা প্রতিকূল অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। যশোর জিলা স্কুলে চাকরি করলেও পত্রিকা সম্পাদনার নেশা তাঁকে ছাড়েনি। তাই তিনি এখানে বসেই ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে দৈভাষিকী নামে বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। সম্পাদনা ছাড়াও তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় লিখতেন। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার নিয়মিত লেখক ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের 888sport free bet ১৫টি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ সদ্ভাবশতক (১৮৬২), মোহভোগ (১৮৭১), জীবনীগ্রন্থ রা. সের ইতিবৃত্ত (১৮৬৮), 888sport liveগ্রন্থ কৈবল্য তত্ত্ব (১৮৮২)।

কৃষ্ণচন্দ্রের রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ সদ্ভাবশতক। এই কাব্যগ্রন্থের অনিন্দ্য সৃষ্টিগুলি আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তিনি ছিলেন স্বদেশভক্ত ও মানবপ্রেমী। সদ্ভাবশতক কাব্যগ্রন্থের বহুল প্রচলিত ‘সুখী দুঃখীর দুঃখ বুঝে না’ শিরোনামের 888sport app download apkয় তিনি লিখেছেন –

চিরসুখীজন ভ্রমে কি কখন

ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে

কী যাতনা বিষে, বুঝিবে যে কীসে

কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।

নীতি 888sport app download apkর কবি হিসেবে তিনি যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন বোধকরি তা আজো ঈর্ষণীয়। তাঁর প্রতিটি রচনাতে ফুটে উঠেছে যেমন নৈতিক মূল্যবোধ তেমনি দেশপ্রেমের অনন্য সমন্বয়। মাত্র ২৪ বছর বয়সে ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের প্রথম এবং শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ সদ্ভাবশতক প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থটি বেশ কয়েকবার পুনর্মুদ্রিত হয়েছে। এর অধিকাংশ 888sport app download apkই নীতি888sport app download apk। ‘দুঃখ বিনা সুখ হয় না’ 888sport app download apkয় তিনি লিখেছেন –

কি কারণ, দীন! তব মলিন বদন?

যতন করহ লাভ হইবে রতন।

কেন পান্থ! ক্ষান্ত হও হেরি দীর্ঘ পথ?

উদ্যম বিহনে কার পুরে মনোরথ?

কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে,

দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কী মহীতে?

মনে ভেবে বিষম-ইন্দ্রিয়-রিপু-ভয়

হাফেজ, বিমুখ কেন করিতে প্রণয়?

সদ্ভাবশতক কাব্যগ্রন্থটি তিনি উৎসর্গ করেছিলেন দীনবন্ধু মৌলিককে। বর্তমান সময়ের প্রচলিত উৎসর্গ থেকে তাঁর এই কাব্যগ্রন্থটির উৎসর্গের ক্ষেত্রে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। তাঁর মৃত্যুর পর ১৩১৪ বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে কলকাতার ৭নং অভয়াচরণ মিত্র স্ট্রিট থেকে শ্রীকামিনী কুমার গুহ সদ্ভাবশতক-এর একটি সংস্করণ প্রকাশ করেন। সেখানে লক্ষ করা যায়, উৎসর্গপত্রে কবি কৃষ্ণচন্দ্র লিখেছেন – ‘উৎসর্গ-পূজ্যপাদ শ্রীযুক্ত বাবু দীনবন্ধু মৌলিক মহাশয় শ্রীচরণকমলেষু, অসংখ্য প্রণিপাত পূর্ব্বকং নিবেদনমেতৎ-মহাত্মন, এই পর্যন্ত আমার যে যৎকিঞ্চিত উন্নতি হইয়াছে, আপনার অনুগ্রহই তাহার মূলীভূত। আমার যেরূপ দুরবস্থা ছিলো, তাহাতে আপনি যদি আমাকে তাদৃশ অনুগ্রহ না করিতেন আমি কখনই এ উন্নতিটুকু লাভ করিতে পারিতাম না। আমি চিরকাল আপনার নিকট দুর্ভেদ্য কৃতজ্ঞতাপাশে বদ্ধ থাকিব। সম্প্রতি সেই কৃতজ্ঞতার চিহ্নস্বরূপ এই ক্ষুদ্র পুস্তকখানি আপনার নামে প্রচার করিলাম। যদিও ইহা আপনার নাম সংযোগের উপযুক্ত নহে, ভরসা করি তথাপি স্বীয় ঔদার্যগুণে ইহাতে কদাচ বিরক্তি প্রকাশ করিবেন না। – প্রণত শ্রী কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার।’ পূর্বেই উল্লেখ করেছি কাব্যগ্রন্থটি বেশ কয়েকবার মুদ্রিত হয়েছে। জানা যায়, চরম দারিদ্র্যের কারণে সদ্ভাবশতক-এর গ্রন্থস্বত্ব তিনি নন্দকুমার গুহের কাছে বিক্রি করে দেন। তবে কত টাকায় তিনি গ্রন্থস্বত্ব বিক্রি করেছিলেন তা সঠিক জানা যায় না। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, গ্রন্থস্বত্ব ১৫০ টাকা, কিংবা ২৪৫ টাকা, কিংবা  ৩০০ টাকায় তিনি বিক্রি করেছিলেন।

১৩১৪ বঙ্গাব্দের বৈশাখ সংস্করণে প্রকাশক শ্রীকামিনী কুমার গুহ প্রকাশকের কথায় লিখেছেন – ‘অষ্টাদশবারের বিজ্ঞাপন … ঈশ্বর নন্দকুমার গুহ মহাশয় বিশেষ কারণাধীনে আদি “সদ্ভাবশতক” গ্রন্থের অনেকাংশ বাদ রাখিয়াছিলেন ও কতকাংশ পরিবর্তন করিয়াছিলেন, তাহাতে মূল পুস্তকের অতিশয় ক্ষতি হইয়াছে। অনেক পাঠক আক্ষেপ করিয়া এই মর্মে আমাকে লিখিয়া জানাইয়াছেন। আমি অনেক … সম্পূর্ণ মূল পুস্তকখানি সংগ্রহ করিয়া এই বারের সংস্করণে তাহা মুদ্রঙ্কিত করিলাম।’ লক্ষ করা যায়, এই সংস্করণে মোট 888sport app download apkর 888sport free bet ১৩৩টি। সূচির পরই গ্রন্থের পরের পৃষ্ঠায় প্রকাশক লিখেছেন, ‘এই পুস্তক 888sport appর ‘স্টুডেন্ট লাইব্রেরীতে’ এবং কলিকাতায় ৬৭নং কলেজ স্টিটস্থিত ‘স্টুডেন্ট লাইব্রেরিতে’ ও ৭ নং অভয়াচরণ মিত্রের স্ট্রিট প্রকাশকের নিকট পাওয়া যায়। এই পুস্তকের সমস্ত স্বত্ব প্রকাশকের রহিল। প্রকাশকের বিনা অনুমতিতে এই পুস্তকের কোনও অংশ কেহ উদ্ধৃত করলে আইন অনুসারে দণ্ডনীয় হইবেন।’ অর্থাৎ সে-সময় সদ্ভাবশতক কাব্যগ্রন্থখানা কলকাতার পাঠকদেরও আকৃষ্ট করেছিল। কাব্যগ্রন্থের প্রথম 888sport app download apkটির শিরোনাম  হলো ‘দুরাশা’, যেখানে তিনি লিখেছেন –

নেত্র নাই, বাঞ্ছা হেরি বিধুর বদন!

কর্ণ নাই, চাই শুনি ভ্রমর-গুঞ্জন!?

নাসা নাই, আশা করি সুবাস গ্রহণে!

রসনা-বিহীন, সুধা বাসনা বসনে!

সদ্ভাবশতকের 888sport app download apkগুলি নীতিগর্ভ ও হৃদয়গ্রাহী বলে তা ব্যাপকভাবে শিক্ষার্থীসহ সকলকে প্রভাবিত করেছিল এবং তাঁর জন্মের ১৮৭ বছর পরে এসেও এসব 888sport app download apk প্রাসঙ্গিক। তাঁর 888sport app download apkগুলি জীবনকে কল্যাণের পথে এগিয়ে দেয়। যেমন তিনি ‘চিন্তা করিয়া কথা বলা উচিত’ 888sport app download apkয় বলছেন –

যে কথা বলিবে, ভাবিয়া দেখিবে,

আগে ভাগে দোষগুণাদি তার;

কহিনু কি সব, না ভেবে কি কব?

এ ভাবনা ভাব সহস্রবার।

আবার তিনি ‘উপদেশকের কদাচার দেখিতে নাই’ 888sport app download apkয় লিখেছেন –

যদ্যপি তোমারে গুরু বলেন যেমন,

না করেন কভু তিনি আপনি তেমন;

তবু তার উপদেশ হেলা না করিয়া,

শুন মন দিয়া সদা শুন মন দিয়া।

মানুষের যৌবন যে চিরস্থায়ী নয়, সেই প্রসঙ্গে তিনি তাঁর ‘যৌবন 888sport app download apkয় বলেছেন –

সকলেই কয়,  অতি সুখময়,

সুখের যৌবনকাল।

হায়! এ যৌবন, হইবে পতন,

রহিবে কি চিরকাল?

জীবন কমল, করে টল টল

চারু দেহ সরোবরে।

আবার তিনি ‘অন্যর দুঃখ দেখিয়া তোমার দুঃখ দূর হইবে’ 888sport app download apkয় লিখেছেন –

একদা ছিল না ‘জুতা’ চরণ যুগলে,

দহিল হৃদয়বন, সেই ক্ষোভানলে।

ধীরে ধীরে চুপি চুপি দুঃখাকুল মনে,

গেলাম ভজনালয়ে ভজন কারণে।

দেখি তথা এক জন পদ নাই তার,

অমনি ‘জুতার’ খেদ ঘুচিল আমার।

পৃথিবীর সবকিছু যে একরকম নয়, ফুল হলেই যে সব ফুলে সুন্দর গন্ধ থাকবে, কিংবা বৃক্ষ হলেই যে সব বৃক্ষে সুমিষ্ট ফল হবে না সেই প্রসঙ্গে অত্যন্ত চমৎকারভাবে ‘সকলে একরূপ নয়’ 888sport app download apkতে তিনি বলেছেন –

সকল কুসুমে নাই গন্ধ মনোহর,

সকল শুক্তিতে নাই মুক্তা চারুতর,

ফলে না সকল বৃক্ষে সুমধুর ফল,

সকল সারসী জলে ফুটে না কমল,

সকল নিশিতে শশী না হয় প্রকাশ

সকল প্রসূনে অলি না করে বিলাস

অনেকে বলেন, বাংলা 888sport app download apkর নবজন্মের পূর্বাহ্নে কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ফার্সি কবি শেখ সাদী ও শামসুদ্দিন হাফিজের 888sport app download apkয় প্রভাবিত মৌলিক কবি। কৃষ্ণচন্দ্রের 888sport app download apkয় জীবনের গভীর উপলব্ধি, বিস্ময়, বিশ্লেষণ, সৎচিন্তা, সদুপদেশ ইত্যাদি বিষয় ফুটে উঠেছে। তাই তাঁর 888sport app download apkর চরণগুলি প্রবাদবাক্যের মতো তত্ত্বকথার বাহন হিসেবে যুগ যুগ ধরে সমাদৃত হয়ে আসছে। তবে কবির বহুল নীতিমূলক 888sport app download apkর লাইনগুলি মুখে মুখে থাকলেও বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ও তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ সদ্ভাবশতক-এর পরিচয় নেই। 888sport apps তথা তাঁর জন্মভূমিতেও কবির নামে তেমন কোনো 888sport sign up bonusস্মারক নেই। কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের নামে ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে একটি ইনস্টিটিউট সেনহাটি বাজারে স্থাপিত হলেও তার তেমন কোনো কার্যক্রম লক্ষ করা যায় না।

কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মময় জীবন শেষে ফিরে এসেছিলেন জন্মস্থান খুলনার ঐতিহ্যবাহী সেনহাটি গ্রামে। সেনহাটি গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা ভৈরব নদ, সে-সময়কার সারি সারি নারকেল গাছ, আর  কবির প্রিয় কামিনী ফুল গাছ তাঁকে জন্মভিটাতে ফিরিয়ে এনেছে বারবার। কবির ব্যাকুল হৃদয়ের বাসনা তাঁর 888sport app download apkর চরণে – ‘এই ত সে প্রিয়তম মম জন্মস্থান,/ যার তরে ছিল সদা ব্যাকুলিত প্রাণ।’ কবি গ্রামে ফিরে আসার পর ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন। ১৩১৩ বঙ্গাব্দের ২৯শে পৌষ, ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ই জানুয়ারি নীতি888sport app download apkর প্রাণপুরুষ, আদর্শবান শিক্ষক ও প্রথম বাংলা সংবাদপত্রের দক্ষ সম্পাদক কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার মৃত্যুবরণ করেন। ‘ধার্মিকের মৃত্যুর প্রতি উক্তি’ 888sport app download apkয় তিনি বলেছেন –

ওহে মৃত্যু! তুমি মোরে কি দেখাও ভয়?

ও ভয়ে কম্পিত নয় আমার হৃদয়।

তথ্য-সহায়ক

১. বাংলা 888sport live footballের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম, দ্বাদশ সংস্করণ, ২০০৪, খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি, 888sport app।

২. সদ্ভাবশতক, কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার, অষ্টাদশ সংস্করণ, ১৩১৪ বঙ্গাব্দ, প্রকাশক শ্রীকামিনী কুমার গুহ, কলকাতা।

৩. ‘যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি’, ওয়াহিদা আক্তার, দৈনিক সমকাল, ৮ জুলাই ২০২৩।

৪. ‘স্বদেশ ও মানবপ্রেমী কবি ও সাংবাদিক কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের ১১২ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের 888sport apk download apk latest versionঞ্জলি’, নূর মোহাম্মদ নূরু, গণমাধ্যমকর্মী।

৬. উইকিপিডিয়া।