সাধারণত রূপকথার গল্পগুলোয় আমরা মৎস্যমানবের কথা পড়ে থাকি। হয়তো অবাক হবো যদি জানি, বাস্তব জীবনে একজন ‘মৎস্যমানবে’র আসলেই অস্তিত্ব ছিল, আর হয়তো আরো বিস্মিত হবো, যদি জানতে পারি, তিনি একজন 888sport live chatীও ছিলেন। 888sport live chatী হিসেবে সর্বপ্রথম তিনি সমুদ্র-তলদেশের ভূদৃশ্যের চিত্রকলা সৃষ্টি করেছিলেন। রূপকথার মতো অদ্ভুত রঙিন সেই রাজ্যের সঙ্গে তিনি আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে তিনি ক্রান্তীয় সামুদ্রিক মাছ আর প্রবাল প্রাচীরের দৃশ্য এঁকেছিলেন সত্যিকার বর্ণিল রং ব্যবহার করে, যা শুধুমাত্র ডুবুরিদের কাছেই তখন পরিচিত ছিল। আর এই দুরূহ কাজটি তাঁকে করতে হয়েছিল প্রাক্-আধুনিক ডুবুরির পোশাক এবং পানিনিরোধী উপকরণ ও উপাদান ব্যবহার করে। বর্তমানে তিনি বিস্মরিত হলেও তাঁর সময়ে তাঁর চিত্রকর্ম প্রশংসিত হয়েছিল, এবং সেগুলো কিনেছিলেন রাজপরিবারের সদস্যরা এবং প্রাকৃতিক ইতিহাসের জাদুঘরগুলো; এছাড়া বিশ্বব্যাপী বহু গ্যালারিতে সেগুলো প্রদর্শিত হয়েছিল। ১৯২৬ সালে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘আমি কোনো 888sport live chatী নই, আমি একজন প্রকৃতিবিদ, যে আঁকতে জানে।’ কিন্তু অবশ্যই জীবনের একটি পর্বে তিনি মূলত 888sport live chatী হতেই চেয়েছিলেন।
‘মৎস্যমানব’ বা ‘The Merman’ নামে খ্যাত ওয়াল্টার হাউলিসন ম্যাকেঞ্জি প্রিচার্ড (Walter Howlison Mackenzie Pritchard) ১৯০৯ সালে পিতা-মাতার দেওয়া নামটি বদলে নিজের নাম রেখেছিলেন ‘জার’ এইচ.। ফার্সি ভাষায় ‘জার’ শব্দের অর্থ হলো আলো। তিনি 888sport free betতত্ত্বে বিশ্বাস করতেন, সে-কারণেই নাম বদলানো। নামকরণটি যথার্থ, কারণ জার পানির নিচে আলোর খেলা ক্যানভাসে বন্দি করার ক্ষেত্রে নিজের একটি জায়গা করে নিয়েছিলেন। ১৮৬৬ সালের ২৬ মার্চ, আইরিশ বংশোদ্ভূত প্রিচার্ড জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভারতের মাদ্রাজে; তবে দশ বছর বয়সে তাঁকে স্কটল্যান্ডে পাঠানো হয়েছিল শিক্ষাজীবন শুরু করতে। এখানেই ফার্থ অব ফোর্থে – পোর্টোবেলো উপসাগরের অগভীর পানিতে তিনি সাঁতার কাটতে ভালোবাসতেন, যে-জায়গাটিতে তাঁর পরবর্তী জীবনকে প্রভাবিত করা জুল ভার্ন প্রায় দুই দশক আগে বেড়াতে এসেছিলেন। বালক প্রিচার্ড জুল ভার্নের অমর কাহিনি টোয়েন্টি থাউজ্যান্ডস লিগস আন্ডার দ্য সি সম্বন্ধে জানতেন এবং বন্ধুদের সঙ্গে পাল্লা দিতেন – কে সবচেয়ে বেশি সময় পানির নিচে থাকতে পারে, আর যখন তিনি পানির নিচে চোখ খুলেছিলেন, পানির পৃষ্ঠের নিচের রং আর আলো তাঁকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল, তিনি যাকে নাম দিয়েছিলেন ‘সাগরতলে রূপকথার দৃশ্য’। তিনি পানির নিচে ডুব দিয়ে মনের ক্যামেরায় সেই দৃশ্যগুলো বন্দি করে রাখতেন; তারপর ওপরে এসে সেগুলো 888sport sign up bonus থেকেই আঁকতেন। একটি 888sport slot gameকাহিনির বইয়ের ছবি দেখে তিনি শিগগিরই গরুর শিং আর চামড়া দিয়ে পানির নিচে দেখার উপযোগী গগলস তৈরি করে নিয়েছিলেন। এছাড়াও ধারণা করা হয় যে, চার্লস কিংসলের দি ওয়াটার বেবিস বইটিও তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
আঠারো বছর বয়সে এডিনবরায় কলেজে পড়ার সময় তিনি 888sport live chatকলায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। তাঁর গ্রীষ্মগুলো কাটাতেন পানি নিচের দৃশ্য উপভোগ করে আর সেগুলোর ছবি এঁকে – বিশেষ করে নাটকীয় রূপ নেওয়া পাথরগুলোর। জার প্রথমদিকে ৩০ থেকে ৪০ ফুট পানির নিচে ডুব দিতে পারতেন। আমরা স্কটল্যান্ডের ঠান্ডা বাতাসে কম্পমান প্রিচার্ডকে কেবল কল্পনা করতে পারি, বারবার পানিতে ডুব দিচ্ছেন আর ফিরে এসে স্কেচবুকে ড্রইং শেষ করছেন। পানির নিচের এই দৃশ্যগুলো তিনি ইংল্যান্ডে বিক্রি করার চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু কেউ তা কেনেননি, সমালোচকরাও পছন্দ করেননি তাঁর কাজ। হতাশ এবং দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে গেছে সেই সময়ের সেরা মঞ্চাভিনেত্রী সারা বার্নহার্ডের নাটক দেখার সুযোগ হয়েছিল তাঁর। পরদিন প্রিচার্ড সারার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে শুদ্ধ ফরাসি ভাষায় জানান, তাঁর পানির নিচের দৃশ্যের মঞ্চসজ্জা ঠিক হয়নি। সারাই তাঁকে প্রথম কাজ দেন। পরবর্তী বারো বছর তিনি মঞ্চ ও পোশাক সজ্জার কাজ করেছিলেন, সেগুলো সবই ছিল পানির নিচের কোনো দৃশ্যের।
১৯০২ সালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে ডাক্তারের পরামর্শে মিসরে যাওয়ার বদলে তিনি দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই সময়ে কাটালিনা দ্বীপের কাছে সাঁতার কাটা আর তলদেশে ডুবসাঁতার কাটা বেশ জনপ্রিয় ছিল, কেউ কেউ সফলভাবে পানির নিচে ছবিও তুলেছিলেন। এখানে প্রিচার্ডের সঙ্গে সান্টা বারবারার কবি রবার্ট ক্যামেরন রজার্সের পরিচয় হয়েছিল, যাঁকে তিনি তাঁর পানির নিচে ছবি আঁকার ধারণাটির কথা বলেছিলেন, দৃশ্যটি সরাসরি দেখে সব রং ব্যবহার করে। রজার্স তাঁকে তাঁর প্রিয় স্থানগুলোয় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং তাহিতির কথা বলেছিলেন, যেখানে সাগরতলদেশের দৃশ্য আসলেই অতুলনীয় সুন্দর।
এর এক দশক আগেই তাহিতি আরেকজন 888sport live chatীকেও সম্মোহিত করেছিল, তিনি 888sport live chatী পল গঁগা। গঁগা পরীক্ষামূলক রং আর সিনথেসিস্ট ঘরানায় ক্যানভাসে স্থানীয় মানুষ, ভূপ্রকৃতি এবং একটি হারিয়ে-যাওয়া সময়কে অমর করেছিলেন উত্তর প্রজন্মের জন্য। ১৯০৪ সালে আসা প্রিচার্ড সম্মোহিত হয়েছিলেন জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ তাহিতি সাগরতলে প্রবাল প্রাচীরগুলোর বিস্ময়কর সৌন্দর্যে এবং এখানে, তিনি পানির নিচে শ্বাস ধরে রেখে বহু রেখাচিত্র এঁকেছিলেন ক্রেয়ন ব্যবহার করে, কাচের ওপর তেলে ভেজানো কাগজ টেপ দিয়ে আটকে রেখে। একবার কাজের খোঁজে নিউজিল্যান্ডে এলে সেখানকার এক আদিবাসীপ্রধান পানির নিচে ছবি আঁকার জন্য তাঁকে লিনসিড তেলে ভেজানো চামড়ার ক্যানভাসের কথা বলেছিলেন, যা পানির নিচেও রং ধরে রাখতে পারে।
এর কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তাহিতির রানি মারাউয়ের ভাই নারি সালমনের সঙ্গে, যিনি তাঁকে সুন্দর প্রবাল প্রাচীরগুলো দেখিয়েছিলেন। কোনো একদিন মদ্যপ অবস্থায় নারি সালমনের সঙ্গে বাজি ধরেছিলেন, পানির নিচে তিনি ক্যানভাস নিয়ে আঁকতে পারবেন। পাঁচশো ডলারের সেই বাজিতে জেতার জন্য দরকার ছিল তাঁর পানির নিচে ব্যবহার করার জন্য ডুবুরির পোশাক। তখন দ্বীপে ডুবুরির পোশাক একটাই ছিল, সেটাও সৌভাগ্যক্রমে ছিল নারি সালমনেরই। তখনকার ‘ডাইভিং স্যুট’ ছিল খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের এবং সত্যিকার অর্থে বিপজ্জনক। ১৮৩০-এর দশকে জার্মান-ব্রিটিশ প্রকৌশলী অগাস্টাস সিবে জর্জ এডওয়ার্ডের তৈরি করা একটি হেলমেটকে আরো পরিশীলিত করে নিজেই একটি হেলমেট তৈরি করেছিলেন প্রিচার্ড, যা তিনি যুক্ত করেছিলেন পানিনিরোধী ক্যানভাসের তৈরি একটি ডুবুরির পোশাকের সঙ্গে। এই ধরনের পোশাকে শ্বাস নেওয়ার প্রয়োজনীয় বাতাস দেওয়া হতো পানির ওপর থেকে একটি পাম্পের মাধ্যমে, যা একটি দীর্ঘ নলের মাধ্যমে ডুবুরির হেলমেটের সঙ্গে যুক্ত থাকতো।
পানির নিচে কাজ করতে প্রিচার্ড তেলে ভেজানো ভেড়ার চামড়া ব্যবহার করেছিলেন, সেই সঙ্গে পুরোপুরি তেলে ভেজানো তুলি। তিনি ডুবুরির হেলমেট পরতেন, যেখানে বাতাস পাম্পের মাধ্যমে সরবরাহ করতো পানির ওপরে থাকা একটি নৌকা। পাথরের বা প্রবালের ভার ব্যবহার করে সমুদ্র তলদেশে নামতেন প্রিচার্ড, পছন্দমতো দৃশ্য নির্বাচন করতেন, তারপর ওপর থেকে ক্যানভাস আর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো নিচে নামিয়ে নিতেন এবং প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে আঁকতেন। সমুদ্রতলদেশে তিনি তাঁর ভারবাহী পাথরের ওপরে বসতেন। মাঝে মাঝে তাহিতির মাঝিরা তাঁর হেলমেটে বাতাস পাম্প করতে ভুলে যেত। তিনি তাদের প্রায় উন্মত্ত হয়েই সংকেত দেওয়ার চেষ্টা করতেন, যখন শ্বাস বের হবার নালিতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করতো। তিনি প্রায় ত্রিশ ফুট নিচে নামতেন, যেখানে আলো সবচেয়ে সুস্পষ্ট মনে করতেন, যদিও তিনি সর্বোচ্চ পঞ্চাশ ফুট নিচেও কাজ করেছেন। তাহিতির কাছে শান্ত পানির স্রোতের কারণে এমনকি তিনি তাঁর ইজেলকে সমুদ্রতলদেশে রেখে আসতে পারতেন; পরদিন ফিরে গিয়ে তাঁর স্কেচ শেষ করতে পারতেন।
তাহিতি এটলের সেই সাগরতলের নীরব জগতে হাঙর, অক্টোপাস থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে পৃথিবীর প্রথম পানির নিচে আঁকা হয়েছে এমন একটি চিত্রকর্ম শেষ করেন। নারি সালমন তাঁর বাজিতে হেরে গিয়ে একটুও মন খারাপ করেননি। প্রিচার্ডের ক্যানভাসে সাগরতলের আলোর খেলা তাঁকেই প্রথম মুগ্ধ করেছিল। একের পর এক ক্যানভাস শেষ করেন প্রিচার্ড। সমুদ্র তলদেশের ভূচিত্র, ওপরদেশের চিত্র এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের চিত্র তিনি অঙ্কন করেছিলেন। জারের অভিজ্ঞতায় সমুদ্রতলের দৃশ্যাবলি ছিল অত্যন্ত উজ্জ্বল। তিনি জলের নিচে আলোর খেলাগুলো ধরতে চেয়েছিলেন তাঁর ক্যানভাসে।
তিনি বহুশত স্কেচ আর চিত্রকর্ম নিয়ে তাহিতি থেকে ক্যালিফোর্নিয়া ফিরে আসেন, যার অনেকগুলোই আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোয় তাঁর প্রথম প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছিল; কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯০৬ সালে শহরটিতে হওয়া ভূকম্পন আর আগুনে সেগুলোর অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে যায়। তবে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে তাঁর পুড়ে-না-যাওয়া স্কেচগুলো ব্যবহার করে নতুন বেশকিছু ছবি এঁকেছিলেন। কিছু আঁকা হয়েছিল শামোয়া হিরিন অথবা বাছুরের চামড়ার ওপর শুষ্ক রং ব্যবহার করে। তিনি অনুভব করেছিলেন, এই মাধ্যম পানির নিচের আলো-আঁধারিকে সফলভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
প্যাসাডেনায় নিজের স্টুডিও থেকে নিজস্ব পূর্ণ ডুবুরির পোশাক নিয়ে তিনি প্রায়ই কাটালিনা দ্বীপে যেতেন। এরপর তাঁকে আমরা বহু জায়গা 888sport slot game এবং পানির নিচের দৃশ্য আঁকতে দেখি। আবারো তাহিতি, তারপর ফিলিপিন্স, জাপান, সামোয়া, ব্রাজিল, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডায়। তাঁর এই অভিযান বিপদমুক্ত ছিল না, মাঝে মাঝে তাঁকে পানি নিচের বাসিন্দাদের হাতে নাজেহালও হতে হয়েছে। ১৯১০ এবং ১৯২০-এর দশকে তিনি বেশ কয়েকটি দেশে ও শহরে তাঁর চিত্রকর্মের প্রদর্শনী করেন – জাপান, ইংল্যান্ড, ব্রাজিল, লন্ডন, নিউইয়র্ক। সমালোচক এবং সাংবাদিকরা স্বপ্নিল, কাব্যিক কিংবা প্রশান্ত ইত্যাদি বিশেষণ ব্যবহার করেছিলেন তাঁর চিত্রকর্ম নিয়ে। 888sport live chatী হিসেবে তাঁর সময়ে কোনো 888sport live chatকলা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না; যেমন – কিউবিজম, এক্সপ্রেশনিজম বা ইমপ্রেশনিজম। সমালোচকচক্রের বাইরে তাঁর ছবির একটি ভিন্ন ধরনের আবেদন ছিল, সেগুলো বেশ ভালোই বিক্রি হয়েছিল। একজন 888sport live chatসমালোচকই তাঁকে ‘দ্য মারম্যান’ নাম দিয়েছিলেন, যে-খেতাবটি তিনি দারুণ উপভোগ করতেন।
পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছিল কয়েক বছর পরে, যখন তিনি একজন প্রকৃতিবিদ 888sport live chatী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এবং সায়েন্টিফিক আমেরিকানে তাঁকে নিয়ে লিখেছিল এবং তিনি তাঁর ছবি আঁকার কৌশল ও পানির নিচের সেই জগৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়ামগুলোয় বক্তৃতা দিয়েছিলেন। 888sport apkী এবং দাতারা উৎসাহের সঙ্গে তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন এবং সঠিকভাবে সাগরতলের দৃশ্য চিত্রিত করার জন্য তাঁর কাজের প্রশংসা করেছিলেন। বেশ উচ্চমূল্যে তাঁর বেশকিছু চিত্রকর্ম এসময় বিক্রি হয়েছিল একাধিক জাদুঘরে।
১৯২১ সালের একটি প্রদর্শনীর সময় মোনাকোর রাজা প্রথম আলবার্ট তাঁকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন সাগরতলের সৌন্দর্যকে সাধারণ মানুষের জন্য এভাবে উপস্থাপন করার জন্য, যার বর্ণনা চল্লিশ বছর ধরে রাজা শুনে এসেছিলেন তাঁর ডুবুরিদলের সদস্যদের কাছ থেকে। রাজা এরপর তাঁর এগারোটি চিত্রকর্ম কিনেছিলেন তাঁর মিউজে ওশানোগ্রাফিকের জন্য। প্যারিসে প্রদর্শনী চলাকালে ফরাসি সরকার শিক্ষা এবং 888sport apkে অবদানের জন্য তাঁকে জাতীয় সম্মানে ভূষিত করেছিল (অর্ডার ডে পাম অ্যাকাডেমিক)।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভূদৃশ্য 888sport live chatকলার একটি জনপ্রিয় শাখায় পরিণত হয়। অনাবিষ্কৃত এলাকাগুলো আবিষ্কারের অভিযানের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়েছিল বৈচিত্র্যময় ভূদৃশ্যের সম্ভার। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে অনাবিষ্কৃত পৃথিবী ক্রমশ সংকুচিত হতে শুরু করলেও একমাত্র সমুদ্রতলদেশই তার রহস্যময়তার আকর্ষণ ধরে রেখেছিল। স্বভাবত সাগরতলের দৃশ্য দর্শকদের কল্পনায় আবেদন রেখেছিল। সাগরতলের এই ভূদৃশ্য আঁকার প্রচেষ্টা হয়েছে এর আগেও, অস্ট্রীয় কূটনীতিবিদ জীব888sport apkী 888sport live chatী ইউজেন ভর রাজোনেট-ভিলে (১৮৩৮-১৯২৬) লোহিত সাগর, শ্রীলংকা, ডালমেশিয়ান উপকূলে ফ্রাঙ্ক কেসলারের আবিষ্কৃত ডাইভিং বেল ব্যবহার করে পানির নিচের প্রবাল প্রাচীরের দৃশ্য এঁকেছিলেন কিছু। তবে প্রিচার্ড ছিলেন প্রথম 888sport live chatী, যিনি আবিষ্ট হয়েছিলেন এই রহস্যময় জগৎটি নিয়ে, যেখানে রং এবং আলো তাদের স্বতন্ত্র চরিত্র নিয়ে আবির্ভূত হয় – যে-দৃশ্যটিকে বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রকাশ করতে তিনি পানির নিচে দাঁড়িয়ে প্রকৃতপক্ষে চিত্রকর্ম সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর চিত্রকর্মগুলো দেখে সেই সময়ের সুখ্যাত মৎস্য888sport apkী ডেভিড স্টার জর্ডান ১৯১৬ সালের সেপ্টেম্বরে লিখেছিলেন, ‘একটি বুদ্ধিমান, চিন্তাশীল মাছ যেভাবে দেখে, তেমনি পানির তলদেশের দৃশ্য দেখে আমিও অভিভূত।’
তাঁর সৃষ্টির কৌশলকে স্বপ্নিল, কাব্যিক, অনেকটা ইম্প্রেশনিস্টিক মনে হতে পারে; তাঁর রঙের ব্যবহার কোমল, মসৃণ, প্যাস্টেলের মতো। রোমান্টিসিজমের মতো বাস্তবতা থেকে কিছুটা দূরে। সাঁতার কাটা মাছগুলোকে মনে হতে পারে উড়ন্ত পাখি, প্রবালের সারি দেখে মনে হতে পারে বৃক্ষরাজি বা বনভূমি; অনেক সময় মনে হয়, অদ্ভুত আকারের স্থাপত্য বা পর্বতশৃঙ্গ বা গিরিখাত। যেহেতু পানির নিচে বসে সামনাসামনি তিনি আঁকেননি, তাই তাঁর চিত্রগুলো জড়জীবনের মতো প্রাণহীন, অসাড় বা কাল্পনিক মনে হতে পারে। জীবিত অবস্থায় জার বেশ খানিকটা খ্যাতি অর্জন এবং সেই সময়কার বিখ্যাত অনেকের নজরে পড়লেও পরবর্তীকালে মতামতদানকারীদের সমালোচনার তোপের মুখে পড়ে তাঁর নাম হারিয়ে যেতে থাকে। তাঁকে তাঁরা ভাবতে থাকেন একজন অপেশাদার নকশাকার বা প্রকৃতিবাদ, যিনি ঘটনাক্রমে ছবি আঁকতে জানেন।
আজ প্রিচার্ডের বহু কাজই বেশকিছু জাদুঘর থেকে হারিয়ে গেছে, হয়তো স্টোররুমের কোনো আলমারিতে পড়ে আছে। অদ্ভুত মনে হতে পারে, কিন্তু পানির নিচের আলোকচিত্র তাঁর কাজকে হয়তো অপ্রয়োজনীয় করে তুলেছিল। এটি দুর্ভাগ্যজনক, কারণ চিত্রকর্মগুলো এমন কিছু প্রদর্শন করে যা ফ্ল্যাশসহ ক্যামেরা দিয়ে তোলা আলোকচিত্রগুলো পারে না। প্যাস্টেল রং আর অস্পষ্ট হয়ে আসা পার্সপেক্টিভ, যা আসলেই ডুবুরি-সাঁতারুরা দেখতে পায় সেই গভীরতায়। যে-ডুবুরিরা প্রিচার্ডের কাজ দেখেছেন, তাঁরা এখনো সেগুলোকে 888sport live chatকলা আর 888sport apkের সত্যিকার কাজ হিসেবে স্বীকার করেন। তাঁরা বলেন, আসলেই নিচের পরিস্থিতি এমন।
কোনো সন্দেহ নেই, জার প্রিচার্ডের কাছেও পানির নিচের এই জগৎটির অসাধারণ একটি আবেদন ছিল। তিনি লিখেছিলেন, ‘এটি একটি স্বপ্নের জগৎ, যেখানে সবকিছুই আবৃত করে রেখেছে কোমল একটি দীপ্তি। নিচে পৌঁছানোর পর মনে হবে যেন সাময়িকভাবে কোনো দূরবর্তী গ্রহের একটি দ্রবীভূত হতে থাকা খণ্ডাংশের দিকে আপনি তাকিয়ে আছেন। মধ্যভাগ পেরিয়ে কোথাও কোনো কিছু আপনার চোখে ধরা দেবে না এবং বস্তুগত রূপগুলো অবোধ্যভাবে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে পারিপার্শ্বিক রঙের চাদরের পেছনে।’
ছয় ফুট দীর্ঘ আর ইস্পাত-শীতল নীল চোখের জার প্রিচার্ড চিরকুমার ছিলেন। প্রিচার্ডের শেষজীবন সম্বন্ধে তেমন বেশি কিছু জানা যায় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে তিনি হয়তো ইংল্যান্ডে এসেছিলেন, তবে ১৯৪৫ সালে তাঁকে সান দিয়েগো কাউন্টিতে পাওয়া যায়, যেখান থেকে তিনি মোনাকোর মিউজে ওশানোগ্রাফিককে লিখেছিলেন, তাঁর কিছু কাজ তিনি উইল করে তাদের দিতে চান। সে-বছরই ডিসেম্বরে তিনি সেগুলোকে নিজেই নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন; কিন্তু সেটি আর হয়ে ওঠেনি। ১৯৪৯ সালে টেক্সাসে এসেছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে 888sport live chatকলা শেখাবেন বলে। কিন্তু পরিকল্পনাটি ব্যর্থ হয়েছিল, কারণ তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় খাটানো পুঁজি হিসেবে তাঁর জীবনের শেষ সঞ্চয় হারিয়ে টেক্সাস রাজ্যের স্বল্পপরিমাণ পেনশন নিয়ে তিনি তাঁর শেষজীবন দারিদ্র্যের মধ্যে কাটিয়েছেন। ১৯৫৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি মারা যান। প্রিচার্ড যে-সাহসিকতা প্রদর্শন করে চিত্রকলা নির্মাণ করেছেন, তেমন সাহস আসলে প্রকৃত 888sport live chatীদেরই অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। সাহস তাঁকে উৎসাহ দিয়েছিল নতুন সৃষ্টির, নতুন উদ্ভাবনের। তাঁর চিত্রকলাকে প্রথম সমুদ্রতলের জানালা বলে বিবেচনা করা হয়। এসব কারণেই তাঁর চিত্রকলার গুণাগুণ নিয়ে সমালোচকদের প্রশ্ন থাকলেও তাঁর সাহসিকতা এবং কল্পনাশক্তি নিয়ে কারো কোনো দ্বিমত থাকার কথা নয়। তাঁর সাহসই অন্য 888sport live chatীদের ঈর্ষার বিষয়। আমরা এখন প্রিচার্ডকে অনায়াসে সেই সময়কার ডেভিড অ্যাটেনবুরো বলে ডাকতে পারি।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.